আবু মকসুদ এর সকল পোস্ট

বঙ্গবন্ধুর পুনরুজ্জীবন

শোক দিবসের শেষে বঙ্গবন্ধু পুনরুজ্জীবিত হলেন
মতি মিয়ার চা-শালায় এক কাপ দুধ চা

অনেকদিন বিরতিতে তাঁর চেহারা বদলে গেছে
আগের সৌম্য কান্তি মুখে কিছু পরিমাণ
ক্লান্তি যুক্ত হয়েছে, চোখের উজ্জ্বলতায়
তিনি সাত মার্চ ধারণ করে আছেন
লোকজন তাঁকে চিনতে পারছে কিন্তু
কেমন বিশ্বাস করতে পারছে না

তিনি নিজ থেকে বলছেন না কিছুই
একমনে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন

মতি মিয়ার বয়স তেহাত্তর পূর্বে
একবার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গ লাভ হয়েছিল
বঙ্গবন্ধু তাঁকে দেখে মিটিমিটি হাসছেন
মতি মিয়ার ধন্দ্ব কাটছে না
সে পুরোপুরি বিস্ময়াভূত

বঙ্গবন্ধু ফিরেছেন শুনে ভীড় জমে গেছে
অনেকেই তাঁকে দেখতে আসছে
অনেকেই কৌতুহল আর প্রশ্ন নিয়ে আসছে

বঙ্গবন্ধু কিছুই বলছেন না, তিনি ভীড়ের
মুখ গুলো দেখছেন কাকে যেনো খুঁজছেন

বঙ্গবন্ধু কাকে খুঁজছেন জানি না
ভীড়ের মাঝে মোস্তাক টুপি পরিহিত
দুয়েকজন দেখা যাচ্ছে

বঙ্গবন্ধু হঠাৎ উঠে দাঁড়ালেন এবং
হাওয়া হয়ে গেলেন, মোস্তাক সম্প্রদায়
আক্রোশে হাত কচলাতে থাকলো

মোস্তাকদের অস্তিত্ব নিশ্চিত হতে
তিনি ফিরেছিলেন কি না নিশ্চিত নই
তারা যে এখনো আছে এটা নিশ্চিত

পনেরোই আগষ্ট

একদিন ঘোর সন্ধ্যায়
একদল বাজ তাণ্ডব ঘটিয়ে…

সন্ধ্যায় সূর্য বিশ্রামে যায় বটে
ভোরে কে রুখে তাঁর গতি

বাজের উল্লাস স্তিমিত হলে
নতুন আলোয় চারদিক আলোকিত হয়

আলোকের এই ঝর্ণাধারা
প্রমাণিত সত্যের মতো

সূর্যের কোন ক্ষয় নাই, অক্ষয়
জীবনের পথে সে হেঁটেছে

অবিনশ্বর সময়ের পাড়ে তাঁকে
খুঁজতে হয় না, সে প্রকাশিত

আপন মহিমায়, ঈশ্বরের মতো
উজ্জ্বাল্য ছড়িয়ে সে প্রকাশিত

সেই সব শকুন নিশ্চিহ্ন হয়েছে
জুতা উৎসবের পরে তাদের

দেহ বিসর্জিত হয়েছে পুরানো
টাট্টিখানায়, এখন সেখানে নির্মিত

বেশ্যাদের শৌচাগার, উপযুক্ত
সমাধিতে শকুনেরা শ্বাস নেয়

নিয়তি কিছুই ভুলে না, ফিরিয়ে দেয়
বাজ শকুন এ থেকে শিক্ষা নিতে পারে

দিবাস্বপ্ন

দিবাস্বপ্ন

পাশের পার্কে শিশুদের হল্লা
মায়েরা পরকীয়া চর্চায়
পিতারা মদিরার ক্যানে

বাসস্টপের ব্যানারে উত্থিত
বক্ষের প্রতিমা
সাড়ে বারো বাস
তেত্রিশ মিনিট লেট

ঘড়িতে তিনটা তেতাল্লিশ
বাসস্টপের পাশে পার্ক
ঘাসের উপর সাঁটা বেঞ্চে
তিরিশ মিনিটের বিরতি
হঠাৎ অভিঘাতী মেঘের মতো
তেড়ে আসে উত্থিত বক্ষা
তাকে সামলাতে গিয়ে
জড়িয়ে যাই নিদারুণ বেকায়দায়

সাড়ে পাঁচটায় কাজের সময়
প্যান্টের অযাচিত উপদ্রব
কাজ মিস করিয়ে দেয়

উত্থিত বক্ষা পিছু ছাড়ে না
তাকে সামলাতে কাজের বদলে
ফিরতে হয় ঘরে

একদিন কাজের অনুপস্থিতি
৪৭ পাউন্ডের জরিমানা
উত্থিত বক্ষা দিবাস্বপ্নের
ময়দানে বেপরোয়া হলে
ভুলে যাই সাতচল্লিশ পাউন্ডের শোক

জলাতঙ্ক বনাম ইভটিজিং

জলাতঙ্ক বনাম ইভটিজিং

ইভটিজিং একটা মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মহামারীর রূপ নিচ্ছে। এর থেকে সত্বর প্রতিকার পেতে হবে। কিন্তু উপায় কি, ইভটিজিং কিভাবে নির্মূল করা যাবে!

জলাতঙ্ক বলে একটা রোগের নাম ছোট বেলায় শুনতাম, কুকুর বাহিত রোগ। কুকুর দেখলে ভয় এবং আতংকে অন্তরাত্মা বেড়িয়ে আসতো। পাগলা কুকুর জলাতঙ্ক ছড়ায় কিন্তু কোন কুকুর পাগল এবং কোনটা পাড়ার পোষা নেড়ি দেখে ঠাওর করতে পারতাম না বলে কুকুর দেখলেই উল্টো দিকে দৌড় দিতাম।

জলাতঙ্কের সাথে ইভটিজিং এর কিছু সাদৃশ্য আছে অর্থাৎ দুটোই অস্বাভাবিকতায় ঘটে, রেবিস ভাইরাস কুকুরকে আক্রমণ করে ক্রমান্বয়ে জলাতঙ্কে রূপ নেয়, এসময় কুকুর তার স্বাভাবিক প্রবাহ ভুলে যায়। তার আচরণ মারমুখো এবং অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। সে যে কাউকে কামড়ে দিতে উদ্যত হয়। ইভটিজিং এর রাসায়নিক গবেষণা হলে আমি নিশ্চিত আক্রান্তের শরীরে রেবিস ভাইরাসের জিনোম পাওয়া যাবে, এ রোগের আক্রান্তরাও স্বাভাবিক জীবনাচারণ ভুলে যায়, সভ্য কিংবা শুদ্ধ চিন্তা এদের জন্য রহিত হয়ে যায়। কুকুরের মতো এরাও কাউকে কামড়ে দিতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। কামড়ে উপশম হবে এই চিন্তায় এরা সমাজ, সামাজিকতার তোয়াক্কা করা ছেড়ে দেয়।

জলাতঙ্কের আতংক এখন অনেকাংশে কমে এসেছে। এ রোগের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ত্বরিত সিদ্ধান্তে আক্রান্ত কুকুরকে নির্মূল করা হয়েছে অর্থাৎ পাগলা কুকুর যেন জলাতঙ্ক ছড়িয়ে বেড়াতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে কুকুরকে গুলি করে কিংবা অন্য প্রক্রিয়ায় হত্যা করা হয়েছে। ফাঁকফোকরে হয়তো দুয়েকটা আক্রান্ত রয়ে গেছে কিন্তু এতে সমাজ তেমনভাবে আর প্রভাবিত হচ্ছে না।

ইভটিজিং নির্মূলে জলাতঙ্কের মতো ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখনই সময়। এই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত না নেয়া গেলে ইভটিজার কুকুরেরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এদের এখনই থামাতে হবে।

চারপেয়ে কুকুরদের নির্মূল করা সহজ কিন্তু দু’পেয়ে কুকুরদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা সভ্য সমাজে কিছুটা অসুবিধার কারণ হতে পারে সে জন্যই প্রয়োজন ত্বরিত সিদ্ধান্তের। এই পশুদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

একজন নারীর জন্য সবচেয়ে অপমানের বিষয় হচ্ছে লিঙ্গের কারণে নিগৃহীত হওয়া। আজকের ইভটিজার কালকের ধর্ষক কিংবা খুনি। নারী তথা মানবের সম্মান সমুন্নত রাখতে এখনই ইভটিজিং নির্মূল করা হউক!

গল্পের সীমানায়

গল্পের সীমানায়

জীবনের গল্পে প্রত্যাবর্তন করবো
এই ভেবে বস্তাবন্দীকরণ প্রক্রিয়া শুরু
এতোদিনের অগোছালো গল্পের কিনারা
লাগাতে হবে, গল্পহীন প্রান্তর অনেক দেখেছি
অনেক হাঁটা হলো শূন্য গল্পের সীমানায়
অযোগ্য আস্ফালনের পরিমাণ যাচাই হলো
অগল্পের ময়দানে অনেক ত্যাগিত হলো শরীরের ঘাম

জীবনের নিষ্ফলতায় কাটিয়ে দিলাম দীর্ঘদিন
এবার কিছু ফলের সন্ধান হউক
বন্ধ্যা ভূমির অপর পাশে উর্বরা সবুজ ক্ষেত
যেখানে গ্রহণ বারোমাস তাকে নিয়তি ভেবে
চূড়ান্ত পর্যন্ত বসে থাকবো কেন
বরং গ্রহণ উত্তর সময়ের সন্ধানে পা বাড়ানো
উত্তম, সূর্যালোকে নিজের প্রতিবিম্ব প্রতিস্থাপন
করে নিজেকে প্রমাণিত করতে হবে

জগতকে জানাতে হবে নিজেরও এক গল্প
আছে, অন্যের গল্পের মতো হাত পা নাড়িয়ে
নিজেকে জানান দিতে হবে

আর কতো অন্যের গল্পের ক্ষুদ্র চরিত্র হয়ে থাকা
আর কতো অন্যের ছায়ায় নিজেকে আড়াল করা

নিজের গল্প নিজের জবানিতে লিখতে হবে
নিজেকে উন্মোচন করে ফিরতে হবে
নিজের কাছে, নিজের কায়ায় প্রতিষ্ঠিত
করতে হবে নিজের ছায়া

অন্যের অঙ্গুলি নির্দেশনায় মঞ্চ কাঁপানো
থামিয়ে দর্শককে জানাতে বসে
পরিপাটি পোষাকের নেপথ্য কথা

এইখানে এক গল্প ছিল, এইখানে
এক গল্প আছে… দ্বিধা ঝেড়ে
বলে যেতে হবে অলিখিত গল্পকথা

মাঠের কবি

আমার কবিতা তুচ্ছ মূল্য
কবিতা আর না হাঁটে
বাঘের ছেলেরা কবিতা লিখছে
কবিতা হচ্ছে মাঠে।

আমরা পড়িব তাদের কবিতা
পড়িব নতুন ছন্দে
মাঠের কবিরা কবিতা লিখছে
সৃষ্টির মহানন্দে।

তাহারা লিখছে মহান কাব্য
লিখছে মহান গদ্য
তাদের হাতে সৃষ্টি হচ্ছে
নতুন যুগের পদ্য।

তাহারা লিখছে নব চেতনায়
লিখছে নতুন গান
নব গীতিতে করছে ধারণ
বাংলা দেশের প্রাণ।

মাঠের কবিরা সবুজ ভুমিতে
গাইছে নতুন সুর
ব্যাটে আর বলে আনবে তাহারা
নতুন দিনের ভোর।

#অভিনন্দন #বাংলাদেশ

মেজরের মেঝ মেয়ে

মেজরের মেঝ মেয়ে
জাঁদরেল জাঁদরেল

লেফট রাইট লেফট রাইট
এবাউর্ট টার্ন

মনজিল মকসুদ
মুশকিল মুশকিল

প্যারেডের অন্তে
শ্বাসঘাত শ্বাসঘাত

তিন জোড়া সন্তান
নুন আটা চিনি পান

মেঝ মেয়ে মেজরের
জাঁদরেল জাঁদরেল

শর্করা

শর্করা

আমি নিয়ম করে পান করি, চিনির শরবত
লেম্বু বিহীন খাঁটি শরবত আমার পছন্দ
কৈশোর কালে গৃহ শিক্ষক কানে মন্ত্র দিয়েছিলেন
চিনিতে শর্করা প্রচুর সুযোগ পেলেই সাদা
দানায় মুখ ভরে নেবে
গৃহশিক্ষকের কথা আপ্তবাক্য মেনে
চিনিরোগ চালিয়ে যাচ্ছি

মিষ্টান্ন আমার প্রিয়, মোহনভোগ,
চমচম, গোলাবজাম, অমৃতি
রসমালাইয়ের রসসিক্ত বদন
আমি তাড়িয়ে তাড়িয়ে খাই

চালশে বয়সে শরীরে
অতিরিক্ত শর্করা জমা হলে
রাস টেনে ধরার চেষ্টা করে
চোখের ডাক্তার, দৃষ্টি ক্রমশ ম্রিয়মাণ
এক্ষুনি বন্ধ বা হলে সর্বনাশের শেষ থাকবে না
ডাক্তারকে ঘাতক ভেবে এড়ানোর চেষ্টা করি
ষড়যন্ত্রী হিসাবে নিজের স্ত্রী ডাক্তারের পক্ষ নিলে
অসহায় বোধ করতে থাকি

চিনি ত্যাগ প্রাণত্যাগের চেয়ে কঠিন মনে হয়
তবু আত্মসমর্পণ করা ছাড়া উপায় থাকে না
ছেলের বয়স আঠারো মেয়ে একুশ
একদিন প্রধান ষড়যন্ত্রকারী স্ত্রী সহ
আমার উপর হামলে পড়ে
তাদের চোখের জল নায়েগ্রাফলসের
জলকে হার মানায়, আমি ক্ষ্যান্ত দেই

এক রান করতে পারলেই অর্ধসেঞ্চুরি
পরিবারের ইচ্ছা আমি সেঞ্চুরি করি
সেঞ্চুরি করতে পারলে মন্দ হয় না
ধীরেসুস্থে ঠান্ডা মাথায় খেলতে হবে
হটকারি সিদ্ধান্ত অমঙ্গল
তাই আপাতত চিনির সাথে বিচ্ছেদ

মরে গেলে মরে গেলাম কিন্তু
ছেলে মেয়ের সাধু, সুস্বাদু ষড়যন্ত্রের
শেষ দেখতে না পেলে কেমন হয়
স্ত্রীর মধুর শর্করা ফেলে অকালে
কোথায় যাবো, এই ভেবে চিনি
বিসর্জনই দেয়াই চূড়ান্ত করে ফেলি

সেকেলে

সেকেলে

তোমাদের কাছাকাছি কোনদিন পৌঁছাতে পারবনা
আমি আউটডেটেড, সেকেলে, গেঁয়ো
তোমাদের মজলিশে আমি বেমানান

আমার কাঁঠাল কিংবা আম ভক্ষণ
তোমাদের কাছে বিষদৃশ্য

আমার চলনে, বলনে তোমরা হেসে মরো
পরনের পরিধেয় তোমাদের মনে বিমবিষা জাগায়

সত্যি বলছি তোমাদের আসরের যোগ্য আমি নই
কাঁটাচামচের বাহারি মজা তোমাদের থাকুক

শুধু বলে রাখি
কবজি ডুবিয়ে রসসিক্ত মালাই
তোমাদের নসিব হবে না, নুলো সব
অমৃতের স্বাদ তোমরা কোনদিন পাবে না

খাতার পৃথিবী

খাতার পৃথিবী

ছুঁয়ে দিলে অভিমানী হাত
আমি প্রতিবিম্ব ধারণ করি
আর পাঠাই নিরুদ্দেশ সংবাদ।

দৈবাৎ দ্বি-প্রহরে কমলার ঝুড়ি
নিরামিষ মাংসের স্বাদ, ভাত ঘুম
অর্গল অতিথি লিখে খাতার পৃথিবী।

পুনরায় হেঁটে গেলে ফুরানো রাস্তায়
ব্যর্থ পরিহাসের ঘিঞ্জি পৃষ্ঠা
আঁকড়ায়, পদচিহ্ন কর্কট সারায়।

ইশারায় ডাকে সুদৃশ্য চাদর
অস্তিত্বের ডালে বসে লক্ষ্মীপেঁচা
সহায় বাতাস চাখে মায়ের আদর।

অনুধাবন

অনুধাবন

সৃষ্টিকে, তার লীলাকে বুঝতে ধ্যানে বসবো
শুনে আমাদের মহীম সন্যাসী
বললো ব্যাটা ধ্যানে বসে অকেজো
অক্ষম মানুষ, সৃষ্টিকে পেতে
তার লীলা অনুসন্ধান করতে
মহীম হতে হবে না, নিজের অন্দরে ঝুকে
দেখ, দেখবে সৃষ্টি বিরাজমান

চাইলাম মহীম সন্যাসীর চোখে
জিজ্ঞাসা অনুধাবন করে
দূর অতীতে থেকে ফিরে বললো, ব্যাটা
আমিও বিভ্রান্ত ছিলাম
হিমালয়ের চূড়ায় ভগবান থাকেন জেনে
তাকে খুঁজতে গিয়ে নিরাশ হয়েছি
হিমালয়ে কঠিন শিলা, সেথায় ভগবান নাই

ভগ্নমনে ফিরবার পথে ভগবান উদয় হলেন
বললেন মিছেমিছি এতোদূর এলি
আকাশে পাতালে পাহাড়ের গুহায় খুঁজতে
হবে না, আমাকে পাবি যদি নিজেকে খুঁজে পাস

ঈশ্বর তোকে ধারণ করে আছে, খোঁজাখুঁজি অর্থহীন
নিজকে চিনতে পারলেই জানবি ঈশ্বর পেয়েছিস

স্বাধীনতা

স্বাধীনতা

তীব্র রোদ খেতে খেতে যে মানুষ হেঁটে যাচ্ছে
তার বুকে স্বাধীনতা আছে
রোদের উত্তাপে হাপিয়ে যে খুঁজছে সুশীতল জল
তার বুকে স্বাধীনতা আছে

মাথায় ইটের পাহাড় নিয়ে যে ভাঙ্গছে সিঁড়ি
পৌঁছে দিচ্ছে তেতালার উপর, সেই মজুর
তার বুকে স্বাধীনতা আছে

যে ভিক্ষুক গেরস্থের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছে
দরাজ দিলের গেরস্থের হাত থেকে নিচ্ছে কড়কড়ে নোট
তার বুকে স্বাধীনতা আছে

গণিকা বাড়ির রুদালি, পরের মৃত্যুতে যে কান্নার জন্য
ভাড়া খাটে সেও স্বাধীন, তার বুকে স্বাধীনতা আছে

চৌমোহনার মোড়ে খাবার কুড়ায় যে পাগলি
বদ মানুষের বদ চোখ উপেক্ষা করে
প্রতিদিন নিজের কাছে ফিরে
তার বুকে স্বাধীনতা আছে

অফিসের যে কনিষ্ঠ কেরানি উর্ধতনের ভয়ে কম্পমান
অফিসের অবকাশে টং দোকানের বেঞ্চে
চায়ের সাথে সিগারেটের সুখটান দেয়
তার বুকে স্বাধীনতা আছে

ভোটার বিহীন নির্বাচনে এমপি বনে যাওয়া
ইয়াবা বদী কিংবা তার স্ত্রী মহিলা ইয়াবা
তাদের বুকে স্বাধীনতা আছে

ফেইসবুকে টুকটাক আঁকিবুঁকি করা এই আমি
আমিও স্বাধীন, স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে
রূপপুরের বালিশের সমালোচনায় পিছ পা হই না
তবু গোপনে প্রার্থনা পরজন্মে যেন বালিশ হই
৫৯৫৭ টাকার শরীরে ৭৬০ টাকার চওড়া কাঁধ
এই আবাল স্বাধীনতার চেয়েও বেশী কাঙ্ক্ষার

আভিজাত্য

আভিজাত্য

আমার পূর্বপুরুষ ডোম ছিলেন
শ্মশানে মরা পোড়াতেন

আমি অবশ্য নিজেকে বাগদাদী ভাবি
প্রমাণের জন্য পাছা খুলে
দেখাতে পিছ পা হই না

চাড়াল পরিচয় ধুয়েমুছে ফেলেছি
পাছায় মেখে নিয়েছি পাকা রঙ

বখতিয়ারের ঘোড়ায় লণ্ডভণ্ড লক্ষণ সেন
মওকা বুঝে ভোল পাল্টেছি
নিরস্ত্র লক্ষণের কাটা মুণ্ডু
আমার জাত্যভিমান বাড়িয়েছে

ইয়ামেনী বাবার সঙ্গী হয়ে
আমিও হয়ে গেছি সমাজের বিশিষ্টজন
আমাকে বহিরাগত বলবে
কার আছে বুকের পাটা
অন্যকে অবলীলায় আবাদি ডেকে
জাহির করি আভিজাত্য

আমার পূর্বপুরুষ চামার ছিলেন
আমি মুচির ছোঁয়া এড়িয়ে চলি

শিশ্নের লালের জোরে আমি ঐশ্বর্যবান
আমার চলনে বলনে বাগদাদী ঐতিহ্য

মেথর চাড়াল মুচি নাপিত আমার পূর্বের ধারা
এমন অবিশ্বাস্য সত্যে হেসে উঠি

বাগদাদের সৌগন্ধ শরীরের পরতে পরতে
আমাকে হেয় করতে পারে
এমন আদম এখনো জমিনে আসে নি

এসো নারী

এসো নারী

এসো বোন, মাতৃ
এসো প্রিয় আত্মজা
এসো সহধর্মিণী
জীবনের পূর্ণতা উপলব্ধ হউক

ধর্ষকের শিশ্নে প্রতিভাত
হউক জন্ম তোমাদের

নারীরা মানুষ না, তারা নারী
তারা মেয়েমানুষ
অপাংক্তেয় জন্ম তাদের

মানুষের সারিতে বসতে হলে
দেবতাকে খুশি করতে হয়, শিশ্ন দেবতা
শিশ্নই নারীর চরম নিয়তি

নারী, কি করে সহ্য করো!
হে মাতৃ, হে কন্যা, জায়া, ভগিনী
এইবার রুখে দাঁড়াও
অসম্মতির শিশ্ন কর্তন করো

ধর্ষকের শিশ্ন কর্তন করে
সেঁটে দাও তার কপালে
জানিয়ে দাও তারও মানবজন্ম হয় নি
কদাকার শিশ্ন ছাড়া তার
অন্য কোন পরিচয় নাই

কোষ্ঠকাঠিন্য

কোষ্ঠকাঠিন্য

ডাকঘরে চিঠি আসে, বেলের চিঠি
ঔষধি গুণাগুণে ভরা
কোষ্ঠ মহৌষধের চিঠি
শরবতের কয়েক ঢোকের পরে
যন্ত্রণা প্রশান্তির চিঠি

ডাকঘরে চিঠি আসে, পালং শাকের
লঘুকরণের চিঠি
কাঠিন্যের পরতে রক্তের ধারা
রোধে সুধীর সূত্রের চিঠি
সহজ বিধির পরে
তরলায়িত জীবনে প্রত্যাবর্তনের চিঠি

ডাকঘরে চিঠি আসে, তুলসী পাতার
ইসব লগ্নে তুলসি তলার চিঠি
এমন চিঠিতে ইসবগুলের
পরিমাপে বাড়ে, চিঠি পরতে থাকে
মাত্রা নির্ধারণ, মুক্তি আসবে সত্বর

ডাকঘরে চিঠি আসে, সর্ষে তেলের
উনিশ মিনিটের যোগাসন চিঠি
কুসুম গরম জলের মিশ্রণ
অঙ্কদেশে আরামের চিঠি
সর্ষে দেশের পরে হর্ষের চিঠি

ডাকঘরে চিঠি আসে, নিমের পাতার
তিতকুটে জলে উপশম চিঠি
উপশম ঝুলানো শেষ, বাকি থাকে সব
মানতের চিঠি তবু বেহিসাবি
বিফলে মূল্য ফেরত আসে তেমন চিঠি

ডাকঘরে চিঠি আসে, বয়সের কাছে
লুকানো গেলনা কিছু, চোখের জ্যোতি
চুল, অম্বলের ঢেকুর, বিগত রজনী
অঘুমের দেশে নায়িকা আবির্ভাব
পাইলস, সব বিফলে গেলো

২-

ডাকঘরে চিঠি আসে, সাতাশ বছর
সে তিনি রোজ লিখে উপদেশ মালা
ডাকঘর বাড়ি আসে উনত্রিশ বার
পদে পদে তবু বাড়ে কোষ্ঠের জ্বালা

কবিরাজি, আয়ুর্বেদ, বনাজি, বাজারি
এলোপ্যাথ, হোমিওপ্যাথ, প্যাথ সব শেষ
পির মুর্শিদ কিংবা যোগী তান্ত্রিক
সর্ব আর্জি আমার হয়ে গেছে পেশ

চিঠি চিঠি খেলা আর উপদেশ গিলে
উদর হয়ে গেছে ভোঁদরের মতো
দু:খ হতো না যদি সাতাশ বছরে
মনখুলে মলত্যাগ একবার হতো!