আবু মকসুদ এর সকল পোস্ট

ফেইসবুক…

ফেইসবুক…

তোমাদের কালে তোমরা যখন
খেলেছ পুতুল খেলা
আমরা এখন সেই বয়সেই
ফেইসবুক করি মেলা…

কাটাই সময় লাইক মেরে মেরে
কমেন্টে দেই ঝাঁকি
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ঝুলিয়ে রেখে
ইনবক্সে রঙ মাখি

স্ট্যাটাস পাল্টাই মিনিটে মিনিটে
প্রফাইল ছবিও পাল্টাই
ফটোশপের ম্যারপ্যাচ দিয়ে
ফেইসবুকে মারি ফালটাই

চিনি না যাদের বন্ধু বানাই
তাদের চড়াই ঘাড়ে
আসল বন্ধু ফেইসবুকে নাই
তারে আর ডাকি নারে

ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল হই
এনালগ দূরে কাঁদে
আসল বন্ধুর নীল চিঠি খানা
আটকে যে যায় ফাঁদে

আটকে গেছি ফেইসবুক ফাঁদে
বাচার যে পথ নাই
মহামারি থেকে কি করে বাচব
কোন পথে বলো যাই…

মোনাজাতের মহিমা

মোনাজাতের মহিমা

গণিকা বাড়ির দরবারে দরবেশের ধ্যান
সমৃদ্ধির মোনাজাতে পরিবেশ
জটিল হলে উত্তেজিত জনতার ব্যথা
উপশমে অন্দরমহল থেকে প্রকাশ্য প্রান্তরে
উপস্থিত হয় মেহেরজান। তার আগমনে
উতপ্ত বেলুন ফুটো হয়ে যায়, বিশিষ্ট কয়েক
বিতণ্ডাকারী নিজেদের শিশ্নে গরম
অনুভব করেন। পাততাড়ি গোটাবার মানসে
পিগলিত হাসির ম্যারাথনে গলির
কুকুরের মতো তাড়া খাওয়া তারা দূরত্বে
নিজেদের জলসাকে পরিমিত পর্যায়ে
পৌঁছান। নিজের ঘরের ছিদ্র দিয়ে
অহরহ বদ্ বায়ু প্রবাহিত হলে
অন্যের মূল্যবৃদ্ধিতে অসহিষ্ণু হতে হয়
না, এই বোধ জাগ্রত হলে দরবেশ
নির্বিঘ্নে আপন কার্য সমাধা করে…

গণিকা বাড়ির মেহেরজান মাথার
ঘোমটা ফেলে বিশিষ্টজনের পাতে
পরিবেশন করে সুস্বাদু পোলাও
শিশ্নের উত্তাপ উপেক্ষা করে পোলাও
মগ্ন তারা মেহেরজানের উত্তরোত্তর
সমৃদ্ধি কামনা করে। ঘিয়ের সুগন্ধি
নাকে লাগিয়ে তারা ফিরে আপন গণিকালয়ে

দৃঢ়চেতা

দৃঢ়চেতা

যন্ত্রণার রঙে ছেয়ে গেলে বরফকুচি আকাশ
শরীরে কাঁটা দেয় মৃত্যুর বান্ধব
চিরঋণী জলের কন্যা অস্ফুট যন্ত্রণার সাথী
কাঠকুটো খুঁটে খায় শঙ্খের শব।

সাড়া দাও শঙ্খিনী হাড়হাভাতে মানুষের দেশে
এখানে শোকাতুর যতসব জন্মান্ধ
থেঁতলে পড়ে থাকে মরা কোকিলের অভিশাপে
পালকে থাকেনা কোন প্রফুল্ল গন্ধ।

মানুষ দীর্ঘ জীবন কাটায় সাপের তীক্ষ্ণ শীৎকারে
কোন এক দৃঢ়চেতা থেকে যায় শীর্ষবিন্দুর আকারে…

সমঝোতা স্মারক

সমঝোতা স্মারক

পাহাড়ের জুমচাষীদের সাথে সমঝোতায় আসা গেল;
তারা পাহাড়েই থাকবে, গরু চরাবে, ধান বুনবে
পুরুষেরা শম্বর শিকারের প্রস্তুতি নেবে,
তাদের নারীরা সময় সুযোগে বাচ্চা বিয়াবে,

তাদের ক্ষেতের ধানে আমরা মাড়া দিতে গেলে
তারা প্রতিবাদী হবে ধনুক আর তীরের বীরত্বে
কাছা বাঁধবে, বাঁশের বর্শায় ক্ষেতের শষা বেঁধে
বুক টান করে দাঁড়াবে, তফাতে দাঁড়িয়ে আমরা হাসব।

আমাদের দেশপ্রেমিক সৎবাহিনী জানে
কিভাবে হানাদার প্রতিহত করতে হয়,
তারা এও জানে কিভাবে হানাদার হতে হয়
রোমেল চাকমা হত্যায় তাদের বীরত্ব প্রস্ফুটিত।

মাঝেমধ্যে জুমচাষীদের বাড়ি পুড়বে, পোয়াতি
নারীরা ধর্ষিত হবে, পুরুষেরা অক্ষম আস্ফালনে
অর্জুনের খোঁজে যাবে, নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তির ওপারে
লাশ তড়পাবে, বীভৎস দুঃস্বপ্ন হামাগুড়ি খাবে।

জুমচাষীদের সাথে একটা সমঝোতায় পৌঁছা গেছে;
অন্যায়, অত্যাচারের বদলে আমরা ফেসবুক বিপ্লব করব
সামাজিক মাধ্যমে কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনের মাধ্যেমে
দেখাব সর্বোচ্চ মানবতা, তারপর আরামে নিদ্রা যাবো…

নষ্টালজিক

নষ্টালজিক

গাছের আড়ালে একদিন শৈশব লুকিয়েছিল
তারে খুঁজতে খুঁজতে পেরেশান
দুরন্ত সময় এভাবে হারিয়ে গেলে
বিলাপ করতে ইচ্ছে করে কিন্তু বিলাপে
কি ফল লভিবে, এই ভেবে বিলাপ
স্থগিত রেখে সামনে এগোই

গাছের আড়ালে শৈশব অবহেলায়
তড়পাতে তড়পাতে
ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরে

আমি তড়িঘড়ি কৈশোর পাড়ি দিয়ে
যৌবনের মদমত্ত জীবন এনজয় করতে থাকি
আহ! এর নামই লাইফ
বিয়ারের ক্যানে ঠোঁট ছুঁয়ালেই
অন্য আমি হয়ে উঠি পরিপূর্ণ যুবক
ড্যাম কেয়ারে পার করি রঙিন সন্ধ্যা

রাতের ঘনত্ব মনোযোগ কাড়তে ব্যর্থ হলে
সাকির কোমর সুরামত্ত সংগীতে বাজে
আমি শৈশব বৃক্ষের তড়পানি ভুলতে ভুলতে
সাকির ওষ্ঠে লেপে দেই মদমত্ত যৌবন

গাছের আড়ালে শৈশব লুকিয়ে থাকুক
আমার সময় নাই তাকে খুঁজতে যাওয়ার
অনেক কাজ বাকী পড়ে আছে
সাকির ঠোঁট পাড়ি পৌঁছাতে হবে মালয় সাগরে

এক বোন পারুল (শেখ হাসিনার জন্মদিনে, শুভেচ্ছা…)

এক বোন পারুল
(শেখ হাসিনার জন্মদিনে, শুভেচ্ছা…)

খুনির খাবলে একে একে ঝরে পরছে ফুল
গ্রহণের দিনগুলি অতিকায় দীর্ঘ হয়

মরমের শরম চাঁদ জানায় অমাবস্যার রাতে
সময় থেমে থাকুক, কারোরই মুখ দেখাবার
যো নেই, জ্যোৎস্না প্লাবিত প্রান্তরে যে ঘোড়া
দুরন্ত দাপটে ছুটে আসতো কতিপয় নেড়ি
তাঁর গতিরোধ করেছে। নিরস্ত্র হত্যার পৈশাচিক
আনন্দ শেষে হানাদার বান্ধব সারমেয়
নিজেদের মাতৃ পরিচয় ভুলে জারজত্বকেই
নিজেদের ভিত ভাবে, জারজ বরাহদের
তাণ্ডব স্তিমিত হলে পশ্চিমাকাশের অস্তমিত
সূর্য অপেক্ষায় থাকে, সূর্য অস্তমিত থাকে না
ভোরের প্রয়োজনেই তাঁকে উত্থিত হতে হয়

একে একে ভোর জড়ো হলে পৃথিবী জেনে যায়
তাঁর আগমনের বার্তা, উদ্দীপনার দিন ঘোষিত
হলে ফুলেরা, পাখিরা, গাছেরা, অপার আকশের
মেঘেরা, অতল সাগরের জল, দারুচিনি দ্বীপের
বাতাস নিজেদের উজ্জীবিত করে, অন্ধকার
রাতের পরে আসবে পেলব ভোর, দিকহারা
জাহাজের নাবিক দৃঢ় আত্মবিশ্বাসে পৌঁছাবে
এই আত্মবিশ্বাসই তাঁকে চালিত করে…

ঝড় তাণ্ডবের রাতের পরে চম্পা ডালে ফুটে
থাকা সাত ভাই জেনে যায় এসে গেছে
এক বোন পারুল, আর কোন ভয় নেই
অশুভ দানবের অন্ত সমাগত, পারুলের
পরিচর্যায় পুনরায় পৃথিবী সুজলা সুফলা হবে
অপার আকাশ পুনরায় সূর্যের বসতি হবে…

নতুন শহর-২

নতুন শহর-২

শহরের বাতাসে আমন্ত্রণের চিঠি
পিঠাপিঠি বোনের মতো খুনসুটি
সেরে ক্লান্ত হলে পাখির পালকের
বালিশ ঘুমের পথ দেখায়, ঘুমের

রাত অঘুমে কেটে গেলে ভোরের
পাখি হলদে ডানায় আকাশ দেখায়
আলোর আভায় নিজস্ব দিন প্রস্ফুটিত
হতে থাকলে আমি ভাবি যে দিন গেছে

তাকে নিয়ে ভাবিত হবো না সামনের
দিগন্তের হাতছানি আত্মস্থ করে দূর
প্রদেশের নাবিকের মতো দারুচিনি
দ্বীপে নোঙর ফেলব, অনিশ্চিত সময়

একদিন সুস্থির হবে এই আশায় পুনরায়
রোপে যাই সোনালি ধান ফসলের আশায়…

অ-শুচির জন্য

অ-শুচির জন্য

সুচির পাতে নরমাংস
খাচ্ছে শিশুর ঝোল
সুশ্রী মুখে মাখছে পালিশ
বাঁধছে সুখে চুল

সুশ্রী কোথায় অসুর নারী
আঁধার তাহার বুক
নারী শিশুর রক্ত খেতে
পিচাশটা উন্মুখ

শান্তি মালা তার গলাতে
ঝুলবে হয়ে ফাঁসি
এই দৃশ্য দেখব বলে
হাতে নিয়ে বাঁশি

দাঁড়িয়ে আছি দেখব বলে
মগ রাজ্যের কাকী
কুকুর হয়ে মরে গেছে
মল শরীরে মাখি…

অধিকার

অধিকার

প্রত্যেকেরই বলার অধিকার আছে
থাকতে হয়, নইলে সৃষ্টি বিপন্ন হয়
পর্যবেশিত হয় অরাজক অনাচারে

সূর্যের অধিকার আছে অন্ধকার তাড়ানোর, পেলব আলোয়
ভোরের পাখিদের বলা দিবস এসেছে
চাঁদের অধিকার আছে দিক ভুলা নাবিকের
চোখে দারুচিনি দ্বীপ হয়ে ধরা দেয়া
গাছের অধিকার আছে কার্বনের বিষাক্ত গ্যাস
শরীরে ধারণ করে নানামুখী প্রক্রিয়ায়
অক্সিজেন রূপান্তরিত করা
মাছেরও অধিকার আছে পুকুর খাল বিলে
সাঁতরাতে সাঁতরাতে নদীমুখো হওয়া
পাখিদের অধিকার আছে আকাশের নীলে
উড়ে পালকের গায়ে মাখা সোনারোদ

তক্ষকের ডাকে আমরা ভীতু হই
তা বলে তক্ষক ডাকবে না তা নিশ্চয়
আমরা কেউ চাই না
কাকের বাজখাঁই আওয়াজ আমাদের কানে
কর্কশ লাগে তবু কাক হীন জনপদ
আমরা কামনা করি না

বিষাক্ত সর্পের সামনে অন্তরাত্মা বেড়িয়ে আসে
তবু সাপের ভয়াল সৌন্দর্য আমরা কি করে
অস্বীকার করি…

বিশ্ব বেহায়া আজও চড়ে খাচ্ছে
টিভি পর্দায় তার কিম্ভূত চেহারা
আমরা নির্দ্বিধায় সহ্য করে যাচ্ছি

রাজাকারের বাচ্চারা ছুঁয়ে যাচ্ছে
প্রাণের পতাকা, তাদের বিটকেলে
হাসিতে পুড়ছে সবুজ জমিন
তবু তাদের পাথর ছুঁড়ে হত্যা করতে হবে
এমন আওয়াজ আমরা নিশ্চয় তুলছি না

প্রত্যেকেরই বলার অধিকার আছে
তাকে সে অধিকার দিতে হবে
হোক সে ধার্মিক অথবা নাস্তিক…

কথা…

কথা…

কথায় কথার পাহাড় চড়ি
কথায় পাড়ি নদী
কথার সুরে কথারা সব
গায় যে নিরবধি

গানের ভাষায় প্রাণের ভাষায়
কথার হাঁটাহাঁটি
চরের লাগি হয় যে জড়ো
কথার পলিমাটি

কথার আকাশ গভীর নীলে
কথায় থাকে ছেয়ে
সবুজ বনের হরিণগুলো
কথায় থাকে চেয়ে

দূর সাগরে কথার পানি
ছাড়ে কথার ঢেউ
নোনাজলের কষ্ট কথা
বলছে তারে কেউ

পাখির মত কিচিরমিচির
হয় যে কথা যত
কথার বনে কথায় কথায়
উড়ে পাখি শত

মাঝ নদীতে ভাসছে কথা
যায় যে ভেসে কথা
মৎস্যপুরাণ ভাংছে দেখি
কথার নীরবতা

রোদের আলোয় কথা বাড়ে
রোদ পোহানো ভোরে
শুকনো পাতার কথামালা
রোদ সকালে পুড়ে

তপ্ত দুপুর ঘামের বেলা
কথার ভয়ে ঘামে
কথার ভয় লিখে কবি
কাব্য কথার নামে

পেলব বিকেল কথায় কথায়
সন্ধ্যা বুঝি হয়
রাতের সাথে কথা ঝুড়ির
হয় যে পরিচয়

গল্প কথায় আধার এলে
জ্যোৎস্না কথা আসে
দূর আকাশের চাঁদের বুড়ি
কথাই ভালবাসে

কথায় কথায় রাত্রি নামে
কথার নামে ঘুম
ঘুম পরিরা স্বপ্নে এলে
কথারা দেয় চুম

কথার চুমে ঘুমায় কথা
জাগে কথার চুমে
শীত প্রহরে দিন কাটাবে
কথার ওমে ওমে

কথার ওমে দিন কাটাবে
কথার ওমে রাত
এসো প্রিয় কথায় কথায়
ধরি কথার হাত…

নতুন শহর-১

নতুন শহর-১
(শেফিল্ডের প্রথম রাত)

নতুন শহরে খোলস খোলে গড়াগড়ি খাব
এতোদিন যা পুঁজিপাটা জড়ো করেছিলাম
তা বিলাবো বলেই সঙ্গে এনেছি, ঐ মাটিতে
পোঁতে রাখা নাড়ী সুড়ঙ্গ খুঁড়ে এ মাটিতে
মিতালী পাতাবে, যোগসুত্রতা তৈরি হবে

দীর্ঘ দিনের পরে আমিও আমাদের যৌথ
চলা নতুন পথের দিকে ধাবিত হবে এই
ভাবনায় বুকের বল্কলে লিখে রাখি আগত
দিন। পথের অপর প্রান্তে বিরাম। পাড়ি দিতে
পারলেই দুই আকাশ এক হয়ে মিলে যাবে…

প্রান্তের আকাশ

প্রান্তের আকাশ

পৃথিবীর প্রান্তে একজন মানুষ জন্মালে
আমি জিজ্ঞাসিত হই, ইচ্ছুক উত্তরে
আমার আত্মা মানব জনমের দৃঢ়তায়
মোহনীয়তায়, কমনীয়তায় আপ্লুত হলে
প্রান্তের আকাশ দেখায় উজ্জ্বল তারা ।

কপর্দকশূন্য অস্তিত্বে অনাদি আত্মা
আবশ্যিক কারণে ভগ্ন মনোরথে
ধাবিত হলে তারার উজ্জ্বলতা
দিক ভ্রষ্ট নাবিকের
কম্পাসের মত আস্থায় ফিরে আসে।

আমি ভাবি- একদিন সমুদ্র পাড়ি দিতে হবে
পরে নিতে হবে আগুনের মুকুট
বিকেলের রোদে বাড়ি ফিরে
পুনরায় দাঁড়াতে হবে শপথের মাঠে।

আমার পৌরুষ পিতা মানুষের মাঠে
তর্জনী হেলিয়ে ছিলেন
পিছু নিয়েছিল লক্ষ কোটি মুষ্টিবদ্ধ হাত
তাঁর শিক্ষায়, পথ নির্দেশনায়
মানুষ শিখেছে সূর্য করায়ত্তের বিদ্যা
পৌরুষ পিতার পদতলে
গড়াগড়ি খেয়েছে সময়
তর্জনীর বিভায় পুড়েছে
অসংখ্য কালের রাখাল।

তাঁর উচ্চতায় হিমালয় খাটো হলে
অবাক লাগে না, নিজস্ব জীবন মন্থনে
পাওয়া অমৃত পান করে
পিতা পেরিয়েছেন অমরত্বের সকল স্তর
জগতের যাবতীয় অর্জন তাঁর তেজের কাছে তুচ্ছ।

আমার পৌরুষ পিতা আকাশের প্রান্তে
হয়ে আছেন ঝলমলে আকাশ
ছেয়ে আছেন বাংলাদেশ- বাঙ্গালীর অন্তরীক্ষ
এ জাতির ঈশ্বরত্ব তাঁকেই মানায় ।

বাংলাদেশের আকাশ…

বাংলাদেশের আকাশ…

মুজিব মানে জাতির পিতা
মুজিব মানে জাতি
টুঙ্গি পাড়ার শেখের ব্যাটা
বীর বাঙালীর জ্ঞাতি

তাঁর নামেতে রক্ত ঝরায়
বুকের বাধন খুলে
তাঁর নামেতেই বীর বাঙালী
উচ্চে মাথা তুলে

এ দেশে সে জন্মে ছিল
এদেশ হলো ধন্য
বাংলা নামের দেশটা পেলাম
ঠিক তাঁহারই জন্য

নাই হয়ে সে তবুও আছে
পদ্মা নদীর বাঁকে
দেশের মাঝে ছায়া দিতে
আকাশ হয়ে থাকে…

পাশের দেশে ভ্রমণ

পাশের দেশে ভ্রমণ

অনির্ধারিত এক কবরের পাশে হেঁটে যেতে যেতে
হটাতই মনে হল
এবেলা যদি ডাক আসে
দয়াপরবশ কেউ কি সঙ্গী হবে
আবার ভাবি দয়া দাক্ষিণ্য কেউ না দেখালে
একা কোথায় যাব, সঠিক ঠিকানায় কি পৌঁছানো হবে
পাড়া প্রতিবেশী হিসাবে
যাদের পাব তাদের সাথে কি সখ্য হবে
তারা কি আমাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত
নাকি নিজেরাই কি মুক্তির লড়াইয়ে ব্যস্ত

অথবা আমি কি তৈরি
অবগাহন জলে পর্যাপ্ত সাঁতার কি সম্পন্ন হয়েছে
নীলের নীচে যে সবুজ ভূমি তার কর্ষিত ফসলে
আমার কি কোন অবদান আছে, লাঙলের ফলা দিয়ে
চেরা মাটিতে কোন দাগ কি রাখতে পেরেছি

জানি রাজার সমন এলে ভাবা-ভাবির সময় মেলে না
তবু কেউ কেউ তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে পেয়াদার সাথী হয়

অপূর্ণতার অতৃপ্তি যাদের তাদের কি গতি হয়
জানতে সাধ জাগে, জানা কি একেবারেই অসম্ভব

যেতে তো হবেই, যাব, নির্ধারিত সময়ে অনির্ধারিত কবরে
শুতে যাবার আগে জানিয়ে যাব আমিও তো বেঁচে ছিলাম…

কবিতার রাজ্যে

কবিতার রাজ্যে

ভাবের রাজ্যে হাওয়া খাওয়া হয় বটে
তবে পেট ভরে না,
কবিতা চিন্তা শান্ত হলে
অর্থকরী চিন্তা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে
নান্দনিকতায় পেট ভরে না,
কবিতার রুটি স্বাদহীন
পেটের খিধেয় প্রয়োজন দুধ সাদা ভাত

বাজারে বাজারে যা বিকোয়
তাকে আলু, বেগুণ, পটল
কিংবা ঢেঁড়স নামে চিনি
এগুলোর ভিন্ন নামও দেয়া যায়
আলুকে আল কুমারী, বেগুনকে বেগবতী
পটলকে ফটকাবাজি, ঢেঁড়সকে ভাণ্ডি বাজার

ভাবের রাজ্যে খিধে লাগে না তাই
আলু ভর্তাকে অমৃত ভেবে নেয়া যায়
পটল ভাজির সাথে অক্কার যোগসূত্র
ভেবে মহাকালের চিন্তায় বিভোর
হয়ে রচনা করা যায় ওপার কবিতা

তবু কবিকে ফিরতে হয় বাস্তব রাজ্যে
চিনির, তেলের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হয়
বাচ্চার দুধের ভাউচার সংগ্রহে
দৌড়াতে হয় শিশু অধিদফতরে
বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের ঘাপলা মিটিয়ে
ঘর্মাক্ত শরীর জুড়াতে হয় কলের জলে

মানুষকে হাঁটতে হয়, জ্যোৎস্নায় জুড়াতে হয়
নীল ওড়নার প্রলোভনে বিভ্রান্ত হতে হয়
খাদ্যের বাজারে আলু পটল খরিদ শেষে
গিন্নির চা-পর্ব অন্তে খুলতে হয় কবিতার খাতা

মানুষের জীবন বড় জটিল, আরও জটিল
সময়ের গতিপথ তবু পাড়ি দিতে হয়
পাড়ি দিতে দিতে মানুষ হয়ে উঠে কবিতাময়,
কবিতার ওপারে যে থাকে সেও মানুষ…