লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী এর সকল পোস্ট

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (তৃতীয় পর্ব)

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি
বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (তৃতীয় পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

5

অঘ্রানে নতুন ধান পায়েস রন্ধন,
ঘরে ঘরে নবান্নের হয় আয়োজন।
নতুন আখের গুড় এই মাসে হয়,
নতুন চালের পিঠে খেলে পেটে সয়।

সকালের সোনারোদ আঙিনায় ঝরে,
নবান্নের উত্সব প্রতি ঘরে ঘরে।
খেজুরের রস আর নলেনের গুড়,
বাতাসে গুড়ের গন্ধ স্বাদে ভরপুর।

অঘ্রানে ধানের খেতে চাষী ধান কাটে,
রাখাল বাজায় বাঁশি, অজয়ের ঘাটে।
আর পারে তালবন, খেজুরের গাছে,
নতুন মাটির ভাঁড় গাছে বাঁধা আছে।

ধান কেটে আসে চাষী সাঁঝের বেলায়,
চাঁদ উঠে তারা ফুটে আকাশের গাঁয়,
জোছনায় নদীজল ঝলমল করে,
কল কল বহে নদী সারারাত ধরে।

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (প্রথম পর্ব)

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি
বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (প্রথম পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

2

নবান্ন বাংলার একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। এই নবান্ন শব্দটির মধ্য দিয়েই বোঝা যায় এক সময় সুজলা সুফলা শস্য-শ্যামলা ছিল বাংলা। আর সেজন্যই হয়তো নবান্ন উৎসবের সূচনা হয়েছিল। তবে গোটা বাংলার থেকে ভিন্ন রীতিতে নবান্ন উৎসব পালন করে উত্তরবঙ্গের প্রাচীন রাজবংশী সমাজ। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজে এই উৎসব কে বলা হয় নয়া খাওয়া বা নয়া খই উৎসব। কেউ বা বলে অগনলক্ষ্মী। অঘ্রান মাসের পয়লা তারিখে রাজবংশী মহিলারা সকাল সকাল ঘরদোর পরিষ্কার করে লেপে মুছে শুদ্ধাচারে জমিতে যান ধানের গুচ্ছকে বরণ করে আনার জন্য। নাইলন কুলায় ধূপ, ধুনা, গোছা (প্রদীপ), গুয়া পান (পান সুপারি), ফুল, জল, নিমচা পাত সাজিয়ে একটি কলার ম্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয় জমিতে পূজো দিতে। সেখানে পাকা ধানের একটি গুচ্ছকে নিমচা পাত (কলার পাতার উপরের দিক টা) দিয়ে মুড়িয়ে তাতে সিঁদুর লাগানো গুয়া পান ফুল, জল নৈবেদ্য দিয়ে পূজা দেওয়া হয়। সেই গুচ্ছটিকেই আবার তুলে নিয়ে কলার ম্যান্ডতে ভরে মাথায় করে বাড়িতে নিয়ে আসেন বাড়ির গৃহকর্ত্রী। বাড়ির ঠাকুরমারিতে মাটি খুঁড়ে সেই ধানের গুচ্ছ লাগানো হয়। আর দুধ, দই, চিড়া, ফলমুল দিয়ে পূজা করে গৃহকর্ত্রী কাচি দিয়ে সেই ধানের গুচ্ছ কেটে নিয়ে ঘরে তোলেন। এই রীতিকে বলে “ধানের শিষ “নেওয়া। উত্তরবঙ্গে মূলত হেউতি ধানের শিষ নেওয়ার প্রচলন ছিলো।

এরপর অধিকারী ঠাকুর বা ব্রাহ্মণ ঠাকুরকে দিয়ে করানো হয় পার্বণ শ্রাদ্ধ। বাড়ির কর্তা নতুন ধানের চিড়া, আতপ চাল, দই দুধ, ফলমূল নিবেদন করেন তার পূর্বপুরুষ কে। সবার আগে নতুন ধানের খাদ্য সামগ্রী পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যেই গতান করে দেওয়া হয়। নয়া খাওয়ার দিন বাড়িতে দিনের বেলায় প্রসাদ, দই চিড়া এসবই খাওয়া হয়। সন্ধ্যার সময় নতুন চালের ভাত রান্না করা হয়। ভাতের সাথে থাকে ঠাকুরি কলাই বা মাষকলাই এর ডাল, সরিষা শাক, মাছ বা মাংস আরো নানান রকম তরিতরকারি। রান্না হয়ে যাওয়ার পর একটি চেলার উপর কতগুলি কলার ঢোনা রেখে তাতে নতুন ধানের ভাত, সবজি, জল সাজিয়ে বাড়ির বাইরে জমিতে নিয়ে যায় গৃহকর্তা। সেখানে সেই ঢোনার খাবারগুলি মাটিতে রেখে শেয়াল কুকুরের উদ্দেশ্যে ফুল, জল দিয়ে ভক্তি নিবেদন করে খাবার গুলি রেখে আসা হয়। পশুপাখিদের উদ্দেশ্যে এই যে খাবার ঢোনা নিবেদন করার রীতি একে বলে মাহাবারিকের পূজা। মাহাবারিকের উদ্দেশ্যে নিবেদনের পর বাড়ি এসে সবাই মিলে একত্রে নতুন ধানের অন্ন গ্রহণ করে।

2

নয়া খাওয়া উৎসবে রাজবংশী সমাজে এক অদ্ভুত শ্রদ্ধার পরিমন্ডল দেখা যায় যা সম্পূর্ণভাবে মৌলিক। বিশ্ব চরাচরে পূর্বপুরুষের যে আত্মা বিলীন হয়ে গেছে তাঁকে সবার আগে পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে প্রথম নতুন খাদ্য নিবেদন করা হয়। সেই সাথে দেখা যায় মানুষ, প্রকৃতি ও জীবজন্তুর যে সহাবস্থান তার দিকে লক্ষ্য রেখে ভালোবাসার সাথে তাদের উদ্দেশ্যেও নিবেদন করা হয় মাহাবারিকের ঢোনা যা তাদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসাকেই পরিস্ফুট করে। এই নয়া খাওয়া উৎসবের মধ্য দিয়ে রাজবংশী সমাজের জীবাত্মা পরমাত্মার প্রতি শ্রদ্ধার এক অনন্য দিক ফুটে ওঠে আমাদের সামনে।

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (প্রথম পর্ব)

অঘ্রানে ধানের খেতে….. সোনা ধানের হাসি
বাংলার ঘরে ঘরে নবান্ন উত্সব (প্রথম পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

1

অঘ্রানে ধানের খেতে হাসে সোনা ধান,
দূরে কোথা ভেসে আসে বাউলের গান।
সকালের সোনারোদ ধান খেতে ঝরে,
চাষী সবে ধান কাটে, সারা দিন ধরে।

মাঠে মাঠে ধান কাটে গাঁয়ে সব চাষী,
ধান কাটে আঁটি বাঁধে ধান রাশি রাশি।
ধান লয়ে গরু গাড়ি চলে ধীরে ধীরে,
অবশেষে আসি থামে অজয়ের তীরে।

বামে রাখি নদীতীর সোজা ঢুকে গাঁয়ে,
দুই ধারে ছোট বাড়ি, সবুজের ছায়ে।
পদ্মদিঘি কালো জলে স্নান করে সবে,
ছোট ছোট ছেলে সবে মাতে কলরবে।

ঘুঘু পাখি ডাক দেয় সোনা ধানখেতে,
উত্তরে হাওয়া বয়, প্রাণ উঠে মেতে।
চাষী ভাই ঘরে ফেরে সাঁঝের বেলায়,
সাঁঝের আঁধার নামে আমাদের গাঁয়।

ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা (প্রচলিত গল্প ও লোককথা)

ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা উত্সব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

2

ভাইফোঁটা হিন্দুদের একটি উৎসব। এই উৎসবের আর এক নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া । কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত। সেখানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে বিজয়াদশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব।

4

হিন্দুদের সামাজিক উৎসব হল ভাইফোঁটা। প্রতিবছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের ভ্রাতৃদ্বিতীয়া নামেও পরিচিত। গোটা দেশ জুড়েই পালিত হয় এই উৎসব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। হিন্দিভাষীদের কাছে ‘ভাইদুজ’, বাঙালিদের ‘ভাইফোঁটা’, মহারাষ্ট্রে ‘ভৌ বিজ’ , দক্ষিণ ভারতে ‘যমদ্বিতীয়া’ আবার নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব ‘ভাইটিকা’ নামে পরিচিত।

এটি ভাই-বোনের অটুট বন্ধনের উৎসব। সারাবছর ধরে এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ভাই-বোনেরা। পুরো বছরে হয়ে আসা রাগ-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট, ঝগড়া, খুনসুটি, সেই ভাইয়ের মঙ্গল কামনার জন্য কপালে ফোঁটা দেওয়ার অপেক্ষায় থাকে বোনেরা। পশ্চিমবঙ্গে ভাইফোঁটা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান হলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এই উত্সব পালিত হয়।

1

ভাইফোঁটা উদযাপন করার পদ্ধতি ভাইফোঁটার দিন বোন বা দিদিরা তাদের দাদা বা ভাইদের কপালে কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে দই বা চন্দনের ফোঁটা দেয় এবং ছড়া কেটে বলে – “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দিল যমকে ফোঁটা, আমি দিলাম আমার ভাইকে ফোঁটা।” এই শ্লোক বাক্যের মাধ্যমে বোনেরা তার ভাইদের কপালে তিনবার ফোঁটা দেয়। এরপর বোন তার ভাইয়ের মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখে। এই সময় শঙ্খ বাজানো এবং উলুধ্বনি দেওয়া হয়। এরপর দিদি তার ভাইকে আশীর্বাদ করে এবং বোন ভাইকে প্রণাম করে আর ভাই বোনকে আশীর্বাদ করে থাকে। এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। ভাই-বোনের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান হয়। তবে ভাইফোঁটার নিয়ম পরিবারের রীতিনীতিভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

3

ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনী এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। আশীর্বাদ স্বরূপ যম তার বোনকে বরদান করে বলেছিলেন, বোনের কাছ থেকে যারাই ফোঁটা নেবে তাদের নরক যাত্রা থেকে মুক্তি লাভ হবে। ভাইফোঁটার আরেকটি কাহিনী হল, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।

ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা উত্সব (ধর্মীয় সামাজিক কবিতা)

ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা উত্সব
(ধর্মীয় সামাজিক কবিতা)
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

1-2

(ভাইফোঁটা হিন্দুদের একটি উৎসব। এই উৎসবের আর এক নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া। কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত। সেখানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে বিজয়া দশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব।)

ভ্রাতৃ-দ্বিতীয়ার দিন ভাই ফোঁটা হয়,
শুভক্ষণে ফোঁটা দিলে কাটে যমভয়।
ঘরেঘরে ভাইফোঁটা ফোঁটা দেয় বোন,
ভ্রাতার ললাটে শোভে সুগন্ধি চন্দন।

সুগন্ধি চন্দন সহ ধূপ দীপ আর,
গুঁয়াপান ধান্যদূর্বা যতেক প্রকার।
সুমিষ্টান্ন ফল-মূল উপহার নানা,
ভাইফোঁটা ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা।

বর্ষে বর্ষে ভাইফোঁটা আসে একবার,
ভগিনীকে দেয় ভ্রাতা, নানা উপহার।
সবশেষে গুঁয়াপান দেয় বিধিমতে,
সারাদিন হৃষ্টচিত্ত ভ্রাতার সহিতে।

ভাইবোন সারাদিন করে আলাপন,
ভাইফোঁটা কাব্য লিখে শ্রীমান লক্ষ্মণ।

কালী কালী মহাকালী…… কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা দেবী মহাকালী আগমনী স্তুতি (দ্বিতীয় পর্ব )

কালী কালী মহাকালী…… কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা
দেবী মহাকালী আগমনী স্তুতি (দ্বিতীয় পর্ব )

স্তুতিপাঠ ও কলমে লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

images

(শংখধ্বনি ও ঢাকের বাদ্য সহ কাঁসর-ঘন্টাধ্বনি)

(গীত)

ঔঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী
দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোহস্তুতে।
ঔঁ কালী কালী মহা কালী কালিকে পাপনাশিনী
সুধা তমক্ষরে দেবী কালিকায়ৈ নমোহস্তুতে।

স্তুতিপাঠ

দেবী আসছেন! বেজে ওঠে মহাশঙ্খ।
ঢাকের শব্দে, কাঁসরের ঝংকারে
আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়।
চতুর্ভূজা মা কালী দেবীচণ্ডিকার আবির্ভাবে
তাঁর আগমনী বন্দনা গীতিতে
বিশ্ববাসীর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়।

“কোথা তুমি শঙ্খ চক্র খড়্গ মহাস্ত্রধারিণী
কালী কপালিনী মা ছিন্নমস্তা!
তুমি ওঠো তুমি জাগো।
তুমি নেমে এসো ধরার বুকে পুনর্বার।
বাজাও তোমার প্রণববিষাণ মহাহুঙ্কারে,
মিলে যাক, মিশে যাক!
অধর্মের আছে যত ব্যভিচার।
সৃষ্টি হোক নতুন এক ধর্ম, নতুন এক যুগ।
জাগো জাগো মা!
তুমি না জাগলে সন্তানকূল ঘুমিয়ে পড়বে।
সন্তানকে অভয় দাও মা আদ্যাশক্তি মহামায়া”।

তুমি শক্তি, তুমি ভক্তি!
তুমি কলাকাষ্ঠা, কালরূপে অবস্থিতা,
তোমার পূণ্য স্তবগাথায় দিকে দিকে
ধ্বনিত হোক মঙ্গলশঙ্খ, জ্বলে উঠুক
মঙ্গল দীপ, প্রজ্বলিত হুতাশনের
দেদীপ্যমান কিরণে ধরণীর কোণে কোণে
ঘনঘোর তমসা বিদুরিত হোক।
ধরণী হোক প্রাণময়ী। হে মা কল্যাণময়ী!
তোমার আগমনে সারা বিশ্বচরাচরে
বিশ্ববাসীর স্বীয় কল্যাণে বিশ্ববাসী
গেয়ে উঠুক–

তারা তুমি, তুমি মা কালী,
তুমি দুর্গা মহামায়া।
তুমি শক্তি, তুমি মা ভক্তি
তুমি কালরূপী ছায়া।

প্রণাম মন্ত্র:
কালী কালী মহাকালী কালিকে কালরাত্রিকে।
ধর্ম কাম প্রদে দেবী নারায়ণী নমোহস্তুতে।।

কালী কালী মহাকালী…… কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা আগমনী গীতিকবিতা (প্রথম পর্ব )

কালী কালী মহাকালী…… কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা
আগমনী গীতিকবিতা (প্রথম পর্ব )

তথ্যসংগ্রহ ও কলমে লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

1

[মা কালী কখনও মা, কখনও মেয়ে। তবে ভুল হলে তিনি যেমন রেগে যান তেমনই বুকে জড়িয়ে ভালোবাসেন। তাই এই শক্তির কাছে সকলেই নত। তিনি কালী। হিন্দু পুরাণ মতে, কালী দুর্গারই একটি শক্তি। সংস্কৃত ভাষার ‘কাল’ শব্দ থেকে কালী নামের উৎপত্তি। কালী’ শব্দটি ‘কাল’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ। এই শব্দের অর্থ ‘কৃষ্ণ’ (কালো) বা ‘ঘোর বর্ণ’। হিন্দু মহাকাব্য মহাভারত-এ যে ভদ্রকালীর উল্লেখ আছে, তা দেবী দুর্গারই একটি রূপ। মহাভারত-এ ‘কালরাত্রি’ বা ‘কালী’ নামে আরও এক দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। ইনি যুদ্ধে নিহত যোদ্ধা ও পশুদের আত্মা বহন করেন। কালীপুজো শক্তির পুজো। জগতের সকল অশুভ শক্তিকে নাশ করে শুভশক্তির বিজয়মধ্যেই রয়েছে কালীপুজোর মহাত্ম্য।]

আগমনী গীতিকবিতা (প্রথম পর্ব )
কলমে লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

কালী কালী মহাকালী এসো মাগো ধরাতলে,
তব পূজা করি মাগো ব্যথায় ভরা অশ্রুজলে।
তোমার নামে তোমার গানে
জাগে পুলক হৃদয় প্রাণে,
কালী কালী আদ্যাশক্তি আবির্ভূতা ভূমণ্ডলে।
কালী কালী মহাকালী এসো মাগো ধরাতলে।

দয়াময়ী তুমি যদি মা খড়্গ কেন তব কর তলে,
চামুণ্ডারূপিণী কালী নর মুণ্ডমালা কেন তব গলে?
মন সঁপেছি তারা নামে,
এসো মাগো ধরা ধামে,
আবাহন স্তুতি জানি মা ভাসি সদাই নয়ন জলে।
কালী কালী মহাকালী এসো মাগো এ ধরাতলে।

কে বলে মা তোমায় কালী তুমি মা ভুবন মোহিনী,
যার রূপে মা ভুবন আলো তুমি কালী করালবদনী।
শ্যামা মায়ের চরণ তলে,
শিব কেন পড়ে ভূতলে,
শিবদ্যুতি চামুণ্ডাকালী তুমি মা গো নৃমুণ্ড মালিনী।
কে বলে মা তোমায় কালী তুমি মা ভুবন মোহিনী।

আমার কবিতাগুচ্ছ দ্বিতীয় পর্ব

বাংলা মায়ের বাংলা ভাষা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

বাংলা মায়ের বাংলা ভাষা
মাতৃভাষা আমার,
বাংলা আমার প্রাণের ভাষা
আমার অহংকার।

এই ভাষাতেই আমের গাছে
কোকিল গাহে গান,
এই ভাষাতেই আমরা শুনি
নদীর কলতান।

বাংলা আমার প্রাণের ভাষা
আমার অহংকার।
বাংলা আমার মায়ের ভাষা
সুন্দর চমত্কার।

এই ভাষাতেই বাংলার বাউল
একতারাটি ধরে,
মধুর সুরে বাউল গান গায়
হৃদয় ওঠে ভরে।

বাংলা আমার প্রাণের ভাষা
আমার অহংকার।
বাংলা মোদের মেটায় আশা
ভরসা সবাকার।

এই ভাষাতেই গান গেয়ে ভাই
চাষীরা করে চাষ,
রোদে পুড়ে জলে ভিজে ঘাম
ঝরায় বারোমাস।

বাংলা আমার মুখের ভাষা
ভারি চমত্কার।
বাংলা আমার প্রাণের ভাষা
আমার অহংকার।

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা……. দেবী বিসর্জন এসো মাগো বসো ঘরে (বিসর্জন পর্ব)

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা……. দেবী বিসর্জন
এসো মাগো বসো ঘরে (বিসর্জন পর্ব)

কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

3

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা দেবী বিসর্জন,
এক বর্ষ পরে পুনঃ দেবী আগমন,
দেবী বিসর্জন আজি অপরূপ সাজে,
চলে সবে নদীতটে ঢাকঢোল বাজে।

আলতা সিঁদুরে করে দেবীর বরণ,
সাজানো বরণ ডালা সুগন্ধি চন্দন।
ধান্য খই বাতাসা ও সুমিষ্টান্ন ফল,
বিসর্জনের বাজনা মহা কোলাহল।

নদীঘাটে আসে সবে লইয়া প্রতিমা,
সকলে বন্দনা করে দেবী আরাধনা।
জয় মহালক্ষ্মী বলি গাহে জয়গান,
নদীজলে বিসর্জন দেবীর ভাসান।

লক্ষ্মী বিসর্জন কাব্য করি সমাপন,
মালক্ষ্মীর কৃপা মাগে শ্রীমান লক্ষ্মণ।

পৌরাণিক পালার পটভূমিকায় সামাজিক নাটক করোনা-ঘাতিনী দেবী দুর্গা

পৌরাণিক পালার পটভূমিকায় সামাজিক নাটক করোনা-ঘাতিনী দেবী দুর্গা
করোনা আবহে সাড়া জাগানো এবছরের প্রথম
পৌরাণিক পালার পটভূমিকায় সামাজিক নাটক
করোনা-ঘাতিনী দেবী দুর্গা

0

চরিত্রলিপি:

দেবী দুর্গা- ডাক্তার (চিকিত্সক)
লক্ষ্মী- নার্স (সেবিকা)
গণেশ- পুলিশ অফিসার
সরস্বতী- অধ্যাপিকা
কার্তিক- সাফাইকর্মী

মহিষাসুর- করোনাসুর

প্রস্তাবনা

নেপথ্যে ঘোষিত হবে

মহিষাসুর ভগবান ব্রহ্মের একনিষ্ঠ উপাসক ছিলেন। বহু বছর তপস্যার পর ব্রহ্মা তাঁকে একটি বর প্রদান করেছিলেন। মহিষাসুর নিজের শক্তি নিয়ে গর্বিত ছিলেন। তিনি ভগবান ব্রহ্মার কাছ থেকে অমরত্বের বর চেয়েছিলেন, এবং তাঁর ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর কোনও মানুষ বা প্রাণী তাঁকে যেন হত্যা করতে না পারে। ব্রহ্মা তাঁকে এই বর প্রদান করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি একজন মহিলার কাছে পরাস্ত এবং নিহত হবেন।

মহিষাসুর তাঁর শক্তির ওপর এতটাই আস্থা করতেন যে তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, এই পৃথিবীতে কোনও মহিলাই তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। মহিষাসুর তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে ত্রিলোক (স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল) আক্রমণ করেন এবং ইন্দ্রলোকও (ভগবান ইন্দ্রের রাজ্য) জয় করার চেষ্টা করেন। তাঁর অত্যাচারে সারা জগৎ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।

দেবতারা মহিষাসুরের সাথে যুদ্ধ করলেও ভগবান ব্রহ্মার আশির্বাদের ফলে কেউ তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি। এরপর, দেবতারা ভগবান বিষ্ণুর কাছে সাহায্য প্রার্থী হন। মহিষাসুরকে বধ করার জন্য সমস্ত দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব তাঁদের সমস্ত শক্তি একত্রিত হয়ে সৃষ্টি করেন দেবী দুর্গার।

যা দেবী! সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।
যা দেবী! সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।
যা দেবী! সর্বভূতেষু শান্তিরূপেন সংস্থিতা।
নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ।।

সুত্রধর মাইকে ঘোষনা করবেন:

বিশ্বত্রাস করোনা পৃথিবী জেলখানা। দিকে দিকে লক ডাউন। সারা পৃথিবী জুড়ে হানা দিল বিশ্বত্রাস করোনা। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে চলা লকডাউনে পুলিশের ভূমিকা একজন প্রথম সারির করোনা যোদ্ধা হিসেবে।

1

চিকিৎসক রূপে দেবী দুর্গা করোনারূপী অসুরকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বধ করছেন। মা লক্ষীকে নার্সের রূপে ও দেবতা গণেশ পুলিশের ভূমিকায়। দেবী সরস্বতীকে দেখানো হয়েছে অধ্যাপিকার ভূমিকায় আর দেব কার্তিক সাফাইকর্মী রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন।

2

রোগীর সেবায় নিয়োজিত দেবী লক্ষ্মী সেবিকা রূপে বিরাজমানা। সাফাইকর্মী হিসেবে যাঁরা নিরলস পরিষেবা দিয়ে চলেছেন কার্তিকেয় সাফাইকর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।

প্রায় সাত মাস ধরে করোনাসুরের সাথে দেবী দুর্গার লড়াই চলে। করোনাসুর একের পর এক আলাদা আলাদা রূপে সকলকে গ্রাস করতে থাকে। অবশেষে, চিকিৎসক রূপে দেবী দুর্গা করোনারূপী অসুরকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বধ করছেন। করোনাসুরমর্দিনী অর্থাৎ করোনা-ঘাতিনী দেবী দুর্গা।

যাত্রার মঞ্চ হসপিটালের মতোই চিত্রিত করা হবে। একাংশে আলোর বিচছুরণে আইসোলেশন রুমের মতই মনে হবে। আলোর বিচ্ছুরণে দেখা যাবে এক একটি কক্ষ। অপারেশন থিয়েটার নার্স ডাক্তার স্টেথোস্কোপ, মেডিসিন সবকিছুই মঞ্চের একাংশে দৃশ্যমান হবে। আলো নিভে যায়।

প্রথম অঙ্ক- প্রথম দৃশ্য
(মঞ্চের আলো জ্বলে উঠে। মিউজিক বাজতে থাকবে)

[চিকিত্সকের বেশে দেবী দুর্গার প্রবেশ]

দেবী দুর্গা:

স্বর্গ হতে আগমন মম মর্ত্যধামে।
করোনা অসুরে করিব সংহার।

[মিউজিকের তালে তালে করোনা অসুর প্রবেশ করে]

করোনা অসুর:

হাঃ হাঃ হাঃ (বিকট অট্টহাসি)

দেবী দুর্গা:

চিকিত্সক আমি। হাতে মম ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ
তাই দিয়ে করিব অসুর সংহার।

করোনা অসুর:

হাঃ হাঃ হাঃ (বিকট অট্টহাসি)
অসম্ভব! করোনা অসুর অজর অমর।
কার সাধ্য রোধে মোর গতি।
সকলেরে করিব আমি গ্রাস। (পুনরায় অট্টহাসি) প্রস্থান

দেবী দুর্গা:

সকলের অবধ্য হলেও আমার হস্তে
হবে তোর বিনাশ।
শোন ওরে মদ-দর্পী করোনা অসুর,
যেমতি তুই একে একে সর্ব ভুখণ্ডে
করিলি অবাধ গতি। সেই হেতু তোরে
আজি অকালে তোরে করিব নিধন।
আজি হতে হব আমি…. করোনা-ঘাতিনী দেবী দুর্গা
নাশিতে করোনা অসুরে সিরিঞ্জ লয়ে হাতে
বধিব অবোধ তেমতি তোরে।
সংহার- সংহার- সংহার।

দৃশ্যন্তর

এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – দেবী আবাহন মা লক্ষ্মীর আরাধনা – (ধর্মীয় কবিতা) আদি পর্ব

এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – দেবী আবাহন
মা লক্ষ্মীর আরাধনা – (ধর্মীয় কবিতা) আদি পর্ব

তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা, পাঁচালি রচনা ও পাঠ- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

15

বৈদিক লক্ষ্মী কিন্তু শস্য-সম্পদের দেবী ছিলেন না। বরং নদীরূপিনী সরস্বতী শস্যদাত্রী হিসেবে গণ্য হতেন। কেন? কেন আবার, নদী পলি মাটি ভরাট করে উর্বর করত ভূতট। এর পরে তো বৈদিক আর্যরা চাষাবাদ শিখল ‘নিম্নবর্গ’-এর কাছে। সম্পদ এল আর্যদের হাতে। শাসক বা শোষক হলেন তাঁরা।

আবার লক্ষ্মীর স্বামী একটা কাঁচা কাজ করে ফেললেন। কেমন কাঁচা? বেদম কাঁচা।

দুর্বাসা মুনির গোঁসার কথা ত্রিভূবনবাসী জানে। তিনি ভালবেসে ইন্দ্রকে দিলেন পারিজাত ফুলের মালা।
এরপর ইন্দ্র রম্ভা-সম্ভোগে যখন মত্ত, ওই মালা নিজের বাহন ঐরাবতের গলায় ছুঁড়ে দেন। হাতি বুঝবে ফুলের কদর?

সে মালা ছিঁড়ে ফেলল ঐরাবত। দুর্বাসা গেল ক্ষেপে। অভিশাপ দিল। অভিশাপে ইন্দ্রের ইন্দ্রপুরী হল শ্রীহীন, লক্ষ্মীছাড়া দশা।

স্ত্রী লক্ষ্মী, ইন্দ্রের অনুমতি নিয়ে পাতালে, মানে সমুদ্রে প্রবেশ করলেন। পরে সমুদ্র-কন্যা হয়ে জন্মাচ্ছেন। সেই লক্ষ্মী আরও পরে সমুদ্র মন্থনে উঠে আসছেন অমৃত পূর্ণ কুম্ভ বা কলস নিয়ে। তবে উপপুরাণের অর্বাচীন পৃষ্ঠায় লক্ষ্মী একবার তুলসী, একবার ঘোটকী হয়েও জন্মান।

জ্যোৎস্না প্লাবিত এই পৃথিবীর হেমন্তে আসেন শুধু একটি রাতের অতিথি হয়ে। এসো মা লক্ষ্মী, বসো ঘরে। বাংলার ঘরে ঘরে তার আকুল আহ্বান।

16

বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে কোজাগরী লক্ষ্মীপূজার আয়োজন ।

কোজাগরী শব্দটি এসেছে `কো জাগর্তী` থেকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কোজাগরী পূর্ণিমা রাতে দেবী লক্ষ্মী ধন-ধান্যে ভরিয়ে দিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আসেন। আর ধন-ধান্যের আশায় এই পূজার আয়োজন করে হিন্দু সম্প্রদায়।

শাস্ত্রমতে, দেবী লক্ষ্মী ধন-সম্পদ তথা ঐশ্বর্যের প্রতীক। এ ছাড়া আধ্যাত্মিক ও পার্থিক উন্নতি, আলো, জ্ঞান, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের দেবীও তিনি। শারদীয় দুর্গোৎসব শেষে প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে এই পূজা করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, লক্ষ্মী দেবী সন্তুষ্ট থাকলে সংসারে অর্থকষ্ট থাকবে না। ভক্তের ডাকে সাড়া দিয়ে এদিন লক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন। বাঙালি বিশ্বাসে লক্ষ্মীদেবী দ্বিভূজা ও তার বাহন পেঁচা এবং হাতে থাকে শস্যের ভাণ্ডার। প্রায় প্রতিটি বাঙালি হিন্দুর ঘরে লক্ষ্মীপূজা করা হয়। এ উপলক্ষে হিন্দু নারীরা উপবাস ব্রত পালন করেন।

কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা……. দেবী আবাহন
এসো মাগো বসো ঘরে (ধর্মীয় কবিতা)

কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

14

শুক্ল পূর্ণিমাতে হয় লক্ষ্মী আরাধনা,
সযত্নে সাজায় ঘট দিয়ে আলপনা।
ধান্যদূর্বা দেয় ঘটে রাখি আম্রশাখা,
দেবীর সম্মুখে ফুল বিল্বপত্র রাখা।

সুগন্ধিত ধূপ দীপ, প্রসাদের থালা,
দেবীর মঙ্গলঘটে শোভে ফুলমালা।
উলুধ্বনি দেয় সবে যতেক রমণী,
জয় মহালক্ষ্মী বলি দেয় জয়ধ্বনি।

ভক্তিভরে পূজি মাগো চরণ তোমার,
জনম জনম থাকো ঘরেতে আমার।
বিধিমতে লক্ষ্মীপূজা হয় সমাপন,
পূজা অন্তে অন্নভোগ করয়ে গ্রহণ।

লক্ষ্মীর পাঁচালি কাব্য শুনে যেইজন,
মা লক্ষ্মী সদয়া হন, কহয়ে লক্ষ্মণ।

https://www.youtube.com/watch?v=1YOr2JDtQ3M

মনে রাখবেন:-
* বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে- পূর্ণিমা তিথি আরম্ভ- বাংলা তারিখ: ১৩ কার্তিক শুক্রবার ১৪২৭, ইংরেজি তারিখ: ৩০ অক্টোবর, শুক্রবার, ২০২০। সময়: সন্ধ্যা ০৫টা ৪৬ মিনিট। পূর্ণিমা তিথি শেষ- বাংলা তারিখ: ১৪ কার্তিক, শনিবার ১৪২৭, ইংরেজি তারিখ: ৩১ অক্টোবর, শনিবার ২০২০।সময়: রাত ৮টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত। পূর্ণিমার নিশিপালন ও শ্রী শ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপুজা ১৩ কার্তিক (৩০ অক্টোবর) শুক্রবার।

* গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে-পূর্ণিমা তিথি আরাম্ভ- বাংলা তারিখ : ১৩ কার্তিক শুক্রবার ১৪২৭। ইংরেজি তারিখ: ৩০ অক্টোবর, শুক্রবার, ২০২০। সময়: সন্ধ্যা ০৫টা ১৯ মিনিট ২৪ সেকেন্ড। পূর্ণিমা তিথি শেষ- বাংলা তারিখ: ১৪ কার্তিক, শনিবার ১৪২৭। ইংরেজি তারিখ: ৩১ অক্টোবর, শনিবার ২০২০। সময়: রাত্রি ৭টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত। পূর্ণিমার নিশিপালন ও শ্রী শ্রী কোজাগরী লক্ষ্মীপুজা- ১৩ কার্তিক (৩০ অক্টোবর) শুক্রবার।

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭ শ্রী শ্রী মহাদশমী পূজার কবিতা (ষষ্ঠ পর্ব)

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭
শ্রী শ্রী মহাদশমী পূজার কবিতা (ষষ্ঠ পর্ব)

কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

11

শুভ বিজয়া দশমী পূণ্য শুভক্ষণ,
বিধিমতে দশমীর পূজা আয়োজন।
সুশোভিত মণ্ডপেতে শোভে ফুলমালা,
দেবীর সম্মুখে শোভে বরণের ডালা।

ঢাক বাজে কাঁসি বাজে শঙ্খধ্বনি আর,
উলুধ্বনি, জয়ধ্বনি মণ্ডপ মাঝার।
মন্দিরেতে পুরোহিত বসিয়া আসনে,
দশমী বিহিত পূজা, করে ভক্তিমনে।

পুষ্পাঞ্জলি দেয় সবে দেবীর চরণে,
আয়ুবৃদ্ধি যশবৃদ্ধি জয়ী রণে বনে।
পুষ্পাঞ্জলি শেষে পূজা হয় সমাপন,
সকলে প্রসাদ ভোগ করয়ে গ্রহণ।

মহা দশমীর পরে দেবী বিসর্জন,
দশমীর কাব্য লিখে ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।
…………………………………..
দশমী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ– ৮কার্তিক, ১৪২৭, রবিবার।
ইংরেজি তারিখ – ২৫/১০/২০২০
সময় – সকাল ১১টা ১১ মিনিট ০৫ সেকেন্ড থেকে।

দশমী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ – ৯কার্তিক, ১৪২৭, সোমবার।
ইংরেজি তারিখ– ২৬/১০/২০২০
সময় – সকাল ১১টা ২৯ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড পর্যন্ত।

কাল বেলানুরধে সকাল ৭টা ০৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড মধ্যে, পুনরায়সকাল ৮টা ৩১ মিনিট ০৫ সেকেন্ড থেকে সকাল ৯টা ২৭ মিনিট ৩৩ সেকেন্ড মধ্যে শ্রীশ্রী শারদীয়া দুর্গাদেবীর দশমী বিহিত পূজা সমাপনান্তে বিসর্জন প্রশস্তা।কুলাচারানুসারে বিসর্জনান্তে অপরাজিতা পূজা।বিজয়া দশমীকৃত্য। দশহরা।

12

মনে রাখবেন-
• পূজা প্রাঙ্গনে সকলের মাস্ক পরা প্রধান ও পবিত্রতম কর্তব্য।
• পূজার প্রাঙ্গনে প্রবেশের আগে হাত ধুয়ে নিন।
• স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
• প্রতিটি পূজা প্যাণ্ডেলে স্যানিটাইজার রাখা বাঞ্ছনীয়।
• সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
• ভিড় থেকে নিজেকে ও পরিবারকে দূরে রাখুন।
• সকলকে জানাই শুভ বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা আর শুভকামনা।
• বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলা বর্জিত।
• পারস্পরিক কোলাকুলি করা নয় শুভেচ্ছার বিনিময়ে বিজয়া দশমী পালন করুন।
• দূর থেকে প্রণাম করে আশীর্বাদধন্য হয়ে উঠুন।

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭ শ্রী শ্রী মহানবমী পূজার কবিতা (পঞ্চম পর্ব)

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭
শ্রী শ্রী মহানবমী পূজার কবিতা (পঞ্চম পর্ব)

কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

10

মহাশক্তি আরাধনা বিখ্যাত জগতে,
মহা নবমীর পূজা হয় বিধিমতে।
ঢাক বাজে শাঁখ বাজে বাজিছে কাঁসর,
পূজার আনন্দে মাতে বিশ্ব চরাচর।

প্রজ্বলিত ধূপ দীপ বরণের ডালা,
সুমিষ্টান্ন ফলমূল প্রসাদের থালা।
মন্ত্রপাঠ হোমযজ্ঞ অঞ্জলি প্রদান,
সবশেষে যূপকাষ্ঠে ছাগ বলিদান।

বলিহারী দুর্গাপূজা পশু রক্তে পূজা,
জীবের দূর্দশা হেরি কাঁদে দশভূজা।
করোনা আবহে হেথা অসুস্থ পৃথিবী,
তবু শত ছাগ হত্যা, নৃশংস ছবি।

নর করে জীবহত্যা হাসে অন্তর্যামী,
বন্ধ কর জীব হত্যা কহিলাম আমি,
বলি অন্তে নবমীর পূজা সমাপন,
নবমীর কাব্যে কবি লিখেন লক্ষ্মণ।

…………………………

নবমী তিথি আরম্ভ:
বাংলা তারিখ– ৭ কার্তিক, ১৪২৭, শনিবার।
ইংরেজি তারিখ– ২৪/১০/২০২০
সময় – সকাল ১১টা ২২ মিনিট ৩০ সেকেন্ড থেকে।

নবমী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ–৮কার্তিক, ১৪২৭, রবিবার।
ইংরেজি তারিখ– ২৫/১০/২০২০
সময় – সকাল ১১টা ১১ মিনিট ০৪ সেকেন্ড পর্যন্ত।

পূর্বাহ্ন সকাল ৯টা ৭ মিনিট ২৯ সেকেন্ড মধ্যে শ্রীশ্রী শারদীয়া দুর্গাদেবীর কেবল মহানবমী কল্পারম্ভ ও মহানবমী বিহিত পূজা প্রশস্তা। সকাল ৯টা ৭ মিনিট ২৯ সেকেন্ড মধ্যে বীরাষ্টমীব্রত ও মহাষ্টমীব্রতের পারণ।

মনে রাখবেন :
– ২৫ জন এর বেশী লোক জমায়েত হতে পারবে না।
– সর্দি কাশি বা জ্বর থাকলে অনুষ্ঠানে যোগদান নিষেধ।
– ১.৫ মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
– মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
– স্যানিটাইজ করতে হবে।
নিয়ম না মানলে কড়া শাস্তির ভয়। এ দিকে দুর্গাপুজোর অঙ্গ, যেমন শাঁখ বাজানো, উলু দেওয়া- সে সব মাস্ক পরে সম্ভব নয়। তাছাড়া মেলামেশাও তো পুজোর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। সেটাও এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। এত সব মেনে কি আর আনন্দ করা সম্ভব!

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭ শ্রী শ্রী মহাঅষ্টমী পূজার কবিতা (চতুর্থ পর্ব)

মহাশক্তির আরাধনা ……দেবীর বন্দনা -১৪২৭
শ্রী শ্রী মহাঅষ্টমী পূজার কবিতা (চতুর্থ পর্ব)

কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

7

শ্রী শ্রী মহা অষ্টমীর পূজা শুভক্ষণে,
ঢাকঢোল কাঁসি বাজে মন্দির প্রাঙ্গণে।
উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি, ধূপ দীপ জ্বলে,
দেবী শক্তি আরাধনা পূজার্চনা চলে।

অষ্টমীর সন্ধিপূজা শাস্ত্রের বিধান,
সন্ধিক্ষণে দিতে হয় ছাগ বলিদান।
পশুরক্তে দেবীপূজা মিথ্যা কভু নয়,
বন্ধ হোক পশু বলি কহিনু নিশ্চয়।

করোনাপ্রকোপে কাঁপে বিশ্বচরাচর,
তবু কেন পশুহত্যা করে মূঢ় নর?
শুনহ জীবের জীব- আমার বচন,
জীবরক্তে দেবীপূজা না হয় কখন।

বলিহীন হোক পূজা শুন সর্বজন,
অষ্টমীর কাব্যে কবি লিখিল লক্ষ্মণ।
…………………..

মনে রাখবেন :
– ২৫ জন এর বেশী লোক জমায়েত হতে পারবে না।
– সর্দি কাশি বা জ্বর থাকলে অনুষ্ঠানে যোগদান নিষেধ।
– ১.৫ মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
– মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
– স্যানিটাইজ করতে হবে।
নিয়ম না মানলে কড়া শাস্তির ভয়। এ দিকে দুর্গাপুজোর অঙ্গ, যেমন শাঁখ বাজানো, উলু দেওয়া- সে সব মাস্ক পরে সম্ভব নয়। তাছাড়া মেলামেশাও তো পুজোর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। সেটাও এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। এত সব মেনে কি আর আনন্দ করা সম্ভব!

বাংলা কবিতা আসরের কবি শহীদ খাঁনের অমর স্মৃতিতে আমার কবিতা

বাংলা কবিতা আসরের কবি শহীদ খাঁনের
অমর স্মৃতিতে আমার কবিতা

p232201-150x150

“যে ফুল না ফুটিতে…………”
কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

কবিতার পাঠশালা কবিতা আসর,
কবিগণে বাঁধে হেথা নিজ নিজ ঘর।
নিত্য নব আসে কবি কবিতা আসরে,
কেহবা লয় বিদায় চিরদিন তরে।

কেহ আসে কেহ যায় এই খেলাঘরে,
কেহ আসি বাঁধে ঘর হেথা বালুচরে।
সাগর সৈকতে হেথা বসি নিরালায়,
রচনা করেন কাব্য আপন পাতায়।

সকালে বিকালে কভু রজনী নিশীথে,
কবিতার ফুল ফোটে প্রত্যহ প্রভাতে।
কেহ লেখে কেহ পড়ে কবিতা সকল,
দিনে দিনে বিকশিত কাব্য শতদল।

অকালেতে বৃন্তচ্যুত আশার মুকুল,
কবির স্মৃতিতে মোর কবিতার ফুল।

গায়ক কবি কাব্য উপহার 28.06.2018 তারিখে প্রদান করা হয়েছিল
কবি শহিদ খাঁন মহাশয়কে।

গায়ক কবি কাব্য উপহার
– লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

বাংলা কবিতা আসরের স্বনামধন্য কবি শহিদ খাঁন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কবিতার আসরে আছেন।
কবিতা আসরে তিনি বহু কবিতা উপহার দিয়েছেন। প্রিয়কবির লেখায় ও গানে বিমুগ্ধ হয়ে
আমরা সকলেই তাকে গায়ক কবি কাব্য উপহার প্রিয়
গায়ক-কবির করকমলে উত্সর্গ করলাম।

গায়ক কবি কাব্য উপহার
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গায়ক কবি সুরকার শিল্পী
কবি শহিদ খাঁন,
গায়ক কবিরে কাব্য উপহার
করিলাম প্রদান।

কবির জন্মস্থান কলারোয়ায়
সাত-ক্ষীরাতে জানি,
বর্তমান নিবাস কেশবপুরে,
যশোরে থাকেন তিনি।

সঙ্গীত শিল্পী গায়ক কবি
তিনি যে সুরকার,
করকমলে দিলাম তুলে
এ কাব্য উপহার।

সুকণ্ঠশিল্পী গায়ক বন্ধু
বাংলাদেশের কবি,
প্রিয়কবির কবিতায় হেরি
দুই বাংলার ছবি।

পদ্মা ও মেঘনা মিলিয়াছে যেথা
সেই নদীর মোহনায়,
দূরের কবি গান গেয়ে যায়
বসে শুনি নিরালায়।

বাংলার এই কবিতা আসরের
যত কবিগণ আজ,
সুরকার কবির গাহে জয়গান
এই আসরের মাঝ।

সুরের ঝংকারে দূরের সাথী
গেয়ে যাও তব গান,
গায়ক কবিরে দিলাম আজিকে
গায়ক কবির সম্মান।

বাংলা কবিতা আসরের কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর লেখা কবিতায় মন্তব্যের পাতা থেকে গৃহীত।
কবি শহীদ খাঁন-এর কলমে

কবিতা আসরের সুমহান কবি ব্যক্তিত্ব প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী জনাব, লক্ষ্মন ভান্ডারী মহাশয় বাবুকে
আজ থেকে আমি আমার হৃদয় মন্ডিত হৃদপিন্ড থেকে শুধু বন্ধু নয়। নিজের একজন ভাই হিসাবেই
গ্রহন করলাম দাদা। যেমনটি করেছি অতীতে আসরের সুমহান কবি ব্যক্তিত্ব
ডঃ সুজিতকুমার বিশ্বাস বাবুকে। যাইহোক, আসরের
তরফ থেকে আমি একজন কন্ঠশিল্পী হিসাবে
আমার হৃদয়-বিজড়িত কবি দাদা ভাইকে স্বকন্ঠে
গান শোনাতে চাই। তার জন্য চাই শুধু দাদা ভাইয়ের মোবাঃ নং টা।
আমার নং ০১৭৪২-৭৭৪৬৪৪। ধন্যবাদ।
শহিদ খাঁন ০৩/০৭/২০১৮, ০১:০৫ মি:

বাংলা কবিতার আসরের কবি বৃশ্চিকের কবিতায় লেখা তার একটি মন্তব্যের পাতা থেকে গৃহীত।
কবি শহীদ খাঁনের কলমে–

আপনাকে প্রাণঢালা হদয় নিংড়ানো অসংখ্য ধন্যবাদ সুপ্রিয় কবি বন্ধুবর। আমার কবিতা আসরের অনেক শুভাকাঙ্খী
কবি বন্ধুরাই আমার এই কঠিন ও মারাত্মক রোগটার ব্যাপারে কম-বেশী
জেনে গেছেন এবং তারপর হতে আমার
পরম হিতাকাঙ্খী কয়েকজন আমাকে নিয়ে
লিখেছেনও বটে। বাকী কন্ধুরা তাদের
স্বহৃদয় গভীরের লেখণীতে কান্নার উক্তিও
পড়েছি এবং আমার সার্বিকময় মঙ্গলের
জন্য বার বার যথেষ্ট দোয়া ও আশীর্বাদও
করেছেন বা এখনো যে করেন,তার হাজার
ও প্রমাণ তাদের ভক্তিপূর্ণ লেখণীর মাঝে
আজও খুঁজে পাই কবি বন্ধু। কিন্তু সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে,আপনি মাত্র এক দিনের সামান্য সময় মোবাইল আলাপের
মাঝেই, আমাকে এতই ভালবেসে ফেলাতে আমি সত্যিই আপনার উপরে
এতটাই আপ্লুত হয়েছি,যা কোন ভাষা
দিয়ে বা লিখে প্রমাণ করার অযোগ্য।
গোটা আসরের সমস্ত কবি বন্ধুদেরকে
ছোট-বড়, ভাল-মন্দ,জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে
আমরা সবাই একই সংসার ভুক্ত একান্ত কাছের একে অপরের ভাই ও বোন হিসাবেই দেখি বা লেখা-লেখি করে আসছি। এই সবে মাত্র বিগত ৪ মাস
কাল অনুষ্ঠানে ঢোকার পর থেকেই। আর
আপনের আপন হয়ে এই অসুস্থতার মধ্য
দিয়ে প্রতি দিনই লেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি
ভাইয়া। বর্তমানে,আপনাদের প্রাণখোলা
দোয়া ও আশীর্বাদের ব-দৌলতে এবং সকলের উৎসাহ মূলক সাহস যোগানো উদ্দীপনায় মনকে অনেকটা শক্ত করেই
ফেলেছি বন্ধু।
যাই হোক ভাইয়া, আমাকে হঠাৎ করে
এত আপন করে আসরের সমস্ত বন্ধুদের
মাঝে এরকম সুস্পষ্ট ভাবে তুলে ধরার
জন্য, আমি আমাকে উৎসর্গ করে দিলাম
আপনার হাতে বন্ধু।
আজ থেকে শুধু আসরের ভাই বা বন্ধু নয়।
জানবেন,আমি আপনার সহদর ভাই।
আপনার উপরে আমার অসুস্থ শরীরের
সর্বাঙ্গীন মঙ্গলকামী আত্মিক দোয়া রইল।
ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ভাইয়াটাকে মনে রাখুন।
আল্লাহ হফেজ। ভাবিকে আমার সালাম
দিবেন এবং ছোট আব্বু-আম্মুকে আমার
স্নেহচুম্বন ও স্নেহাশীষ জানাবেন।
…………………………………………………
যে ফুল না ফুটিতে…………
অমর কবি শহীদ খাঁনের অকাল মহাপ্রয়াণে কবিতার আসর শোকস্তব্ধ।
কবির শোকাহত পরিবারবর্গকে জানাই সমবেদনা।
জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!