
আগামীকাল চাঁদের সাতদিন। মহরম মাসের এই সপ্তম দিবসেই কারবালা প্রান্তরে হজরত হোসেন, তাঁর পরিবার পরিজন ও সৈন্য বাহিনীর খাদ্য পানীয়ের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হল। সবদিক দিয়ে ফোরাত নদী ( ইউফ্রেটিস) ঘিরে ফেলা হলো। নারী শিশু,যারা কস্মিনকালেও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, জল দেওয়া হয়নি তাদেরও একবিন্দু জল দেওয়া হল না। শিশু আসগর জল খেতে গেলে তীর ছুঁড়ে গেঁথে দেওয়া হয়েছে কচি গলার সঙ্গে জল- অঞ্জলিবদ্ধ হাত। এই ঘটনার স্মরণে সারাদিন ব্যাপী পালিত হবে ‘দুফুরে মাতম’।
৮ই মহরম ছিল দুই পক্ষের যুদ্ধ বিরতি। তবু পিপাসার জল দেওয়া হল না এক ফোঁটাও।এদিন পালিত হবে ‘বিজরেন’। ৯ই মহরম আবারও যুদ্ধ শুরু। সমস্ত দিনরাত ধরে চলতে লাগল ভয়ানক আক্রমণ – প্রতি-আক্রমন। এক এক করে পতন ঘটতে লাগল রথী- মহারথী সেনাপতিদের। ১০ই মহরম ‘আশুরা’র দিন। শুক্রবার। হিজরী সন ৬১। ৬৮৩ খ্রিস্টাব্দ। অশেষ দুঃখ – কষ্ট – যন্ত্রণা- শোক – অপমান- লাঞ্ছনা সহ্য করে অসম যুদ্ধে শহিদ হলেন ইসলামি জগতের বাদশা হজরত হোসেন। বয়স হয়েছিল পঞ্চান্ন বছর পাঁচ মাস পাঁচ দিন। এজিদের সেনাপতি বাহাত্তরটি খণ্ডিত মস্তক, যার মধ্যে নবী বংশের শহীদ সতেরো জন এবং অনুগত শিষ্য শহীদ পঞ্চান্ন জন, মোট বাহাত্তরটি খণ্ডিত মস্তক দামেস্কে এজিদের দরবারে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করল। আর অগনিত অশ্বারোহীকে হুকুম দিল লাগাতার ছুটে যেতে মৃত দেহগুলির ওপর দিয়ে যতক্ষণ না সেগুলি ছিন্নভিন্ন হয়ে ধূলিস্যাৎ হয়ে যায়। পরে নবীবংশের অনুগতেরা বহু চেষ্টা করেও বিন্দুমাত্র চিহ্নটুকুও খুঁজে পায়নি। ভক্তজন বিশ্বাস করল স্বয়ং আল্লাহতালা ফেরেস্তা পাঠিয়ে তুলে নিয়েছেন তাঁর বেহেস্তে সরাসরি। সে সময় সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি মর্যাদার সঙ্গে লাশগুলির দাফন করা। সেই না করতে পেরে ওঠা কর্তব্যের ভার আজও গভীর দুঃখের সঙ্গে বহন করে চলেছে মুসলিম জগৎ। প্রতি ১০ ই মহরম তাই হোসেনের তাবুত অর্থাৎ মৃতদেহ বহন করে সূর্য ডোবার আগে দাফন করা হয় নকল কারবাালায়। পালিত হয় মর্যাদা সহকারে ‘মঞ্জিল মাটি’।
কৃষ্ণাকে খুবই আন্তরিক ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন তার শ্বশুরমশাই, কিভাবে- কোন্ কোন্ পর্যায়ক্রম অনুসরন করে মহরমের অনুষ্ঠান পালন করে এসেছেন তাঁরা,- “তারপর চোদ্দই মহরমের দিন পালিত হবে ‘চাহারম’ এর অনুষ্ঠান। ব্যস, পুরো চাঁদ শেষ। কিন্তু মহরমের মর্মান্তিক শোক চিরস্থায়ী হয়ে রয়ে যাবে ভক্তজনের হৃদয় জুড়ে”।
_________________
সন্ধ্যে আটটা নাগাদ শুরু হয়ে গেল জলসা। শুরুতেই দরুদ ( = হজরত মহম্মদের প্রশংসা বাণী) পড়ে নিয়ে অতি সুন্দর দরাজ অথচ সুমিষ্ট গলায় গজল গাইলেন,
– আল্লা, রসুল ও রসুলের প্রিয়আহলে বায়েতদের (= হজরত আলি, ফতেমা ও তাঁদের পুত্রদ্বয় হাসান ও হোসেন) মহিমান্বিত করে। তারপর হাদিসের সুত্র ধরে সরাসরি চলে গেলেন তাঁর গুরু বংশের রচনা করা আরবি- পারসি মিশ্রিত ঊর্দু গজলে :
আয় মোমেনো দিলসে করো গম্ হোসেন কা
ইস্ মাহমেঁ জরুরি হ্যয় মাতম্ হোসেন কা।।
জান ও দিল হাবিব মেঁ সিবতায়নে মুস্তাফা।
রুতবা পয়াম্বরুঁ সে নেহি কম হোসেন কা।।
দিল বন্দে মুস্তাফা মেঁ জিগর বন্দে মুস্তাফা।
হম্ শানে মুস্তাফা মেঁ জিগর বন্দে মুস্তাফা।।
মাহরাজে কুল শাহাদাত সুলতানে কারবালা
মিলে আরজে হক্ পে রুতবা মোসাল্লম
হোসেন কা।।……..
….হে ইমানদারেরা, অন্তর দিয়ে হোসেনের জন্য শোক কর। এই মাসে অপরিহার্য হোসেনের জন্য মাতম্ করা।
একটার পর একটা মূল গজল গেয়ে চলেছেন তিনি, আর তাঁর শিষ্য সেটার অনুবাদে পরিবেশন করছেন বাংলা গজল। মধ্যে মধ্যে রয়েছে তাঁর উদাত্ত গলার ভাষন:
– ‘আশুরা’ কি? আশুরা হল আল্লার সাথে তাঁর বান্দার দহরম-মহরমের দিন। কালে কালে যুগে যুগে সময়ের অন্তরে এই আশুরার দিনটিতেই তো তুমি বেশুমার ফজিলত নসীব করিয়েছো। আমার সাধ্য কি যে তার গননা করি! — হে রহমানের রহিম আল্লা— এই আশুরার দিনেই তো তুমি এই সসাগরা দুনিয়া, চন্দ্র,সূর্য, গ্রহ, তারা সৃষ্টি করেছিলে। — হে গাফুরুর রহিম আল্লা
-এই আশুরার দিনেই তো তুমি প্রথম মানব আদম ও হাওয়া বিবিকে সৃষ্টি করেছিলে, তাদের স্থান দিয়েছিলে বেহেস্তে, আবার অবাধ্য হবার কারনে সময়ান্তরে তাদের নির্বাসিতও করেছিলে এই আশুরার দিনটিতেই,– দীর্ঘকাল সাধনার পর আবার বেহেস্তে স্থান দিয়েছিলে এই আশুরার দিনেই,–হে জলিলুর রহিম আল্লা — এই আশুরার দিনেই সৃষ্টি ধ্বংস হবে তোমার নির্ধারিত, তবে কেন, কোন্ গুনাহ্ র কারনে আমার নবীর লাল হাসান- হোসেন কে এই আশুরার দিনেই অমন জল্লাদের হাতে মৃত্যুবরণ করতে হল? তোমার নাজাত তারা কেন পেতে পারল না?
হে জাব্বারুর রহিম আল্লা, এই আশুরার দিনেই তুমি কুরান শরিফ সমেত বিশ্বের সমস্ত মজহাবের আশমানি কিতাব নাজেল করায়েছ, হজরত নূহ কে তাঁর কিস্তি সমেত তরায়েছ প্রলয়ঙ্করী তুফান ও জলোচ্ছ্বাস থেকে, হজরত ইব্রাহীমকে রক্ষা করেছ শত্রুর অগ্নিকুণ্ড থেকে, হজরত মুসাকে নবি হিসাবে স্বীকৃতি দান করেছো– তুর পাহাড় ভস্মিভূত হয়েছে— অত্যাচারী ফেরাউনের ঘটেছে সলিল সমাধি, তুমিই হজরত আয়ুবকে কুষ্ঠরোগ থেকে মুক্তি দিয়েছিলে–
— আরো কত- কত উপহার দিয়েছ তুমি এই আশুরার দিনটিতেই, তবে কেন শুধু ওই দুটি নবির লালের জন্য তুমি কেন হে নির্দয়?
হাউ হাউ করে কাঁদছেন বক্তা। কাঁদছেন সমগ্র শ্রোতৃমণ্ডলী। কাঁদতে কাঁদতেই গজল ধরলেন আবার। বিষয়বস্তু কারবালার অসম যুদ্ধ। গজলের মাধ্যমে এক এক করে বর্ননা করে চলেছেন কিভাবে হজরত হোসেন কুফা যাবার পথ হারিয়ে সপরিবার – সবান্ধব এসে পড়লেন কুরুক্ষেত্র সদৃশ মারণভূমি কারবালা প্রান্তরে, কিভাবে বালিতে ঘোড়ার নাল ঢুকে যাওয়া দেখে বুঝে নিলেন যে এই তাঁর শেষ শয্যার স্থান, আশপাশের গাছ- গাছালি ফেটে রক্ত পড়া দেখে নিশ্চিত্ হলেন আগামীর রক্তক্ষয়ী ভয়াল অন্তিম সংগ্রামের বিষয়ে, কি ভাবেই বা তিনি বক্ষরোমশুন্য সীমার কে দেখে সনাক্ত করলেন যে এই তাঁর নিশ্চিত্ হন্তারক,— এ সমস্ত কিছু বিবৃত হতে লাগল মর্মস্পর্শী গজলের মাধ্যমে। যেমন সুর, তেমন শব্দচয়ন,তেমনি পাল্লা দেওয়া যন্ত্রণাকীর্ণ মরমী গলার আওয়াজ।
সংক্রমিত শোকে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে লাগলো কৃষ্ণা। আশমানি নরম করে ওর পিঠে- মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকল।
মর্মস্পর্শী গজলের মাধ্যমে বর্ণিত হয়ে চলেছে নিদারুণ কারবালা হত্যাকাণ্ড। কারবালা মরুপ্রান্তর রক্তস্রোতে নিজবর্ণ হারিয়েছে। লালে লাল হয়ে গেছে দশদিক। স্রেফ কারবালা প্রান্তরটির বর্ণনাতেই গজলে ব্যবহৃত হয়েছে অগুন্তি বিশেষণ :
মাসুমে কারবালা, মজলুমে কারবালা, শহিদে কারবালা, পিয়াসে কারবালা, সাবেরে কারবালা, হয়রানে কারবালা, মেহবুবে কারবালা, বাদশাহে কারবালা, সর্দারে কারবালা, শাহানশাহে কারবালা, ওসিয়ে কারবালা, মুর্শেদে কারবালা, মওলায়ে কারবালা, হাবিবে কারবালা, রহমতে কারবালা, কোরবানে কারবালা, নাইয়ারে কারবালা,— এমত আরো বহুবহু বিশেষণ। কারবালা যেন একটা ভৌগলিক স্থানমাত্র নয়, বর্ণনায় মনে হচ্ছে অসংখ্য বীর সেনানীর মতো কারবালা নিজেও একটা সক্রিয় মহাকাব্যিক চরিত্র বিশেষ।…
শোকাবেগের তীব্রতায় কৃষ্ণা কিছুতেই সুস্থ হয়ে বসে থাকতে পারছিল না। সেই যেমন ছোট বেলায় রামলীলা শুনতে গিয়ে আবেগে বিহ্বল হতো।.. ওকে ঘরে নিয়ে এল আশমানী। আসর ছেড়ে যতই ঘরের দিকে এগোচ্ছে কৃষ্ণা, তত যেন ধাওয়া করছে ওই বুক ভেঙ্গে দেওয়া গজলের করুণ সুর – শব্দ- মর্মবাণী :
হ্যায় শবে আশুরা কেয়ামত কি রাত।
রঞ্জেগমে দর্দো মুসিবত কি রাত।।
আয়ে নবিকে লিয়ে আফাত্ কি রাত।
শিব্ তে পয়াম্বর কি শাহাদত্ কি রাত।।…..
কৃষ্ণা বিছানায় পড়ে থাকতে থাকতে, চোখের জলে বালিশ ভিজোতে ভিজোতে, শেষতক ক্লান্ত – অবসন্ন হয়ে ওর চোখ লেগে গেল। আর কেউ না জানুক, ও নিজে জানে ওই চোখের জল শুধুমাত্র হাসান- হোসেনের জন্য নয়। ওই চোখের জলের ভাগীদার তার অসংখ্য কাছের দূরের আপনজনেরা। কোন একটা বিষয় নিয়ে বুক তোলপাড় হলে, সারি দিয়ে সব ধেয়ে আসে তারা। এই পৃথিবীর অকারণ অশান্তি – অপমান-লান্ছনা বিনা দোষে তোলা থাকে যাদের জন্য, সেইসব আপনজনের জন্য যন্ত্রনায় বুক ভেঙ্গে যেতে চায় ওর। আর এটাই তো ওর অসুখ। অগুন্তি সুখ- সমাহারের মধ্যে বসে থেকেও টনটনিয়ে ওঠে বুক।…. ক্রমশ সময় গড়িয়ে যেতে
ঘুমের অতলে তলিয়ে গেল ও।…..সেই ছোট্টবেলার মতন বাপি ডিউটি থেকে ফিরতেই বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে যেমন আদরে গলে যেতো,—- বাপি দেখো, আমাকে না মা-আর দিদা আজ অনেক অনেক কাজ করিয়েছে। দেখো হাত -পা কেমন খড়ি ওঠা সাদা হয়ে গেছে।
– তাই! খুব করে বকে দিচ্ছি ওদের।
– বাপি, আমি তোমাকে খুব দুঃখ দিয়েছি, তুমি আমাকে খু-ব বকো বাপি।
– না- মা, তুমি আমায় দুঃখ দেবে কেন মা! তুমি আমার সোনার মেয়ে, হিরের টুকরো মেয়ে আমার।
-না বাপি, আমাকে কাউকে বলে দিতে হবেনা বাপি,…. কাঁদতে কা্ঁদতে বাপির বুকে মুখ ঘষতে ঘষতে বলে চললো,…আমি নিজে জানি, আমি তোমাকে খুব খুব দুঃখ দিয়েছি, বাপি।
– তোমাকে কতদিন দেখতে পাইনা… তো মেয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলে সব বাবারই এমন কষ্ট হয়, মামনি।
– সেটা একটা কারন, সবটা নয় বাপি। আমার জন্য কত লোকের কাছে তোমায় কতকিছু শুনতে হচ্ছে যে…
– সেতো ওই লোকগুলোর ওইরকম বাজে স্বভাব, তাই ওসব বলছে।
-কিন্তু বলছে তো আমার জন্যই। আমিই তোমাকে দুঃখটা নিজে হাতে করে বয়ে নিয়ে এসে দিলাম, বাপি।
– না মা। তোমার জন্য বলবে কেন? ওদের সংকীর্ণ মানসিক গঠনের জন্য বলে। সামাজিক পরিস্থিতির জন্য বলে। সমাজটা তো আমরা এখনো পাল্টাতে পারিনি…
-তাহলে অ-ত অ- ত দিন যে তুমি বাড়িঘর ছেড়ে ছুড়ে খেয়ে- না- খেয়ে, কোথায় কোথায় গা- ঢাকা দিয়ে আন্দোলন করলে, তার কি কোন ফল হল না, বাপি।
– সব ফল কিছু হাতে- হাতে পাওয়া যায় না, মা। ধৈর্য্য ধরতে হয়।
– তাহলে কালকে যে মেহেবুব সাহেব বক্তৃতায় বলছিলেন, হৃদয়ের ভালবাসা আর ভক্তি দিয়ে প্রার্থনা করলে, সব মনস্কামনা পূর্ণ হয়ে যাবে। আমিও যে প্রার্থনা করলাম, পূর্ণ হবে তো, বাপি?
-নিশ্চয়ই। তোমার কোন আশা অপূর্ণ থাকবে না, মা। কিন্তু কি প্রার্থনা করলে, মামনি?
-বেশি না, একটাই। আমি শুধু চেয়েছি, যাতে আমার মা- বাবা – দিদা- ভাইদের সঙ্গে এ বাড়ির সব্বার সুসম্পর্ক তৈরি হবার মতো সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তন খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যায়।
– ওরে বাবাঃ! কী করেছো মামনি! এ যে একেবারে সাবিত্রী বা ধ্রুবের প্রার্থনার মতো। খুব সহজ কিছু নয়, মা।
– আমার তাহলে কোন আশা নেই, বাপি?
ফোঁপাতে থাকে কৃষ্ণা।
– আশা তো আছেই। তবে একটু সময় লাগবে।
– কিন্তু আমার হাতে যে বেশি সময় নেই, বাপি। তোমাদের ছেড়ে আমি বেশিদিন বাঁচবো না, বাপি….
…ছুটতে ছুটতে ছোট ননদিনী এসে ডেকে তুুললো কৃষ্ণাকে,….. এই মাত্র খবর এলো তোমার বাবা, এক দাদা আর তমিজদ্দি ভাই বাড়ির কাছে এসে পড়েছেন। আব্বা মহরম দেখার দাওয়াত দিয়েছিলেন।
তখন, সেই সাতসকালে ঘরে বসে থেকেই কৃষ্ণা মানস চক্ষে দিব্যি দেখতে পেল, কাল রাতের সেই চরাচর ব্যপ্ত করা তুমুল অলৌকিক চন্দ্রালোকের বন্যায় যাত্রা শুরু করে সাক্ষাৎ তিন বার্তাবাহী দেবদূতের মতই উজ্জ্বল তারকা চিহ্নিত পথ কেটে কেটে অস্পষ্ট অবয়বে এই ভেদদীর্ণ চরাচরের তাবৎ তুচ্ছতাকে সাহসী ভাবনার ডানায় সাপ্টে নিতে নিতে এক- পা এক- পা করে এগিয়ে আসছেন ওঁরা। ওঁরা তিনজন।
সমাপ্ত।