শেষ বেলার উষ্ণতা
বেলা শেষে অনিচ্ছার কুঁড়েঘরে যদি দ্যাখা হয়ে যায়
দ্যাখা হয়ে যায় তোর ইস্পাত গলা মায়াবী দু’চোখের
অন্ধগলির কোণঠাসা কামড়ায় ধারালো ওষ্ঠের সাথে
তুই কি তখন বক্ষ মাঝে জ্বলন্ত শিখায় শীতলতার স্পর্শ
পেয়ে চিনতে পারবি? কতটা উষ্ণতায় কাতর আমি?
শেষ বেলার উষ্ণতা
বেলা শেষে অনিচ্ছার কুঁড়েঘরে যদি দ্যাখা হয়ে যায়
দ্যাখা হয়ে যায় তোর ইস্পাত গলা মায়াবী দু’চোখের
অন্ধগলির কোণঠাসা কামড়ায় ধারালো ওষ্ঠের সাথে
তুই কি তখন বক্ষ মাঝে জ্বলন্ত শিখায় শীতলতার স্পর্শ
পেয়ে চিনতে পারবি? কতটা উষ্ণতায় কাতর আমি?
ক্ষুধা (পুরোনো লেখা নতুন করে)
ক্ষুধার্ত পৃথিবী, ক্ষুধার্ত প্রাণী, ক্ষুধার্ত আমি;
অতঃপর খাবো খাবো, এবার দেশ খাবো
আর খাবো জনতা,
আকাশ বাতাস তরু-লতা, মিথ্যের প্রতিবাদী
ক্ষুধার্ত মানবতা।
ক্ষুধার্ত সম্পর্ক, ক্ষুধার্ত প্রেম, ক্ষুধার্ত আমি
অতঃপর খাবো খাবো এবার ইতিহাস খাবো
নথি-পত্র সবই খাবো,
গাজী, শহীদ, বুদ্ধিজীবী, আগামী প্রজন্ম খাবো;
ক্ষুধার্ত মমতা।
দুর্বলের সততা, মিথ্যের জড়তা, ভালোর ভালো
জল, মাটি, বায়ু, খাবো খাবো সবই খাবো
পরিসংখ্যান ব্যুরো খাবো,
সুশাসকের মাথা, আলোর দিশারী, সত্যের কাণ্ডারী
ক্ষুধার্ত প্রেম
স্বার্থের রসায়নে মিলিয়ে খাবো তাবত সত্য
ক্ষুর্ধাত পৃথিবী, ক্ষুধার্ত আমি।
মেঘেতে রোদ্দুর
আমি জলোচ্ছাসেও তোমাকে কাছে চেয়েছি সুনামিতেও ভরপুর
বুকের মাঝে রাখতে চেয়েছি তোমাকে সে প্রেমেতেও অচিনপুর
বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি প্রিয়া, তোমার যন্ত্রণাতেও সুখ সকাল দুপুর
তোমার প্রেমহীন একাকিত্বেও আজ পাড়ি দিতে পারি উত্তাল সমুদ্দুর।
কে কার?
প্রতিটি ভোর
নিদ্রা যাপন
সকাল গড়িয়ে রাত
পাপ, পূণ্য, অপরাধ
সত্যের পথে স্বার্থ জড়িয়ে
মিথ্যের যত কারবার
আলো, বাতাস, মাটি, জল
এক ও একে হাহাকার।
পৃথিবী এক, একবারই
সূর্যের মতো
জোয়ারে জল, ভাটার টানে স্থল
আদি-অন্ত
বিবর্তিত সমাজ, বিবর্তিত মানুষ
সু-শৃঙ্খল নাট্যমঞ্চে একাকার
আমি, তুমি, সে, তারা
বলতে পারো কে কার?
পৃথিবী এক ও একার।
ভ্রষ্ট নদ-নদী
ভ্রষ্ট নদীর নষ্ট চিত্রে কাঁদছে পৃথিবী
ভালোর মাঝে আলোয় আঁধার নষ্ট স্বীকৃতি।
পুরুষগুলো নারী সেজে করছে ধর্ষিতা
যৌন স্বাদ নিয়ে কবি লিখছে কবিতা।
কেবা পুরুষ কেবা নারী চেনা বড় দায়
ধর্ম-কর্ম সব হারিয়ে চায় না দিতে সায়।
স্বাধীনতায় ভুলে গেছে পরাধীনতার জ্বালা
সেই সুযোগে নষ্ট ভ্রমর করছে কলি কালা।
ভাবছে বসে সব ঝিনুকে মুক্তা পাওয়া যায়
তাইতো সবে সত্তা ভুলে আপন চিত্ত পোড়ায়।
ভাবছো কি শাশ্বত?
দিনে দিনে সময় গেলো
রাত পোহালো কতো
আজ মরলে কাল দু’দিন
ভাবছো কি অতো?
ঈদ গেলে ঈদ আসে
থাকলে বেঁচে ততো
প্রতিশ্রুতির হয় না মরণ
থাকলে কর্মে ব্রত…
লক্ষ টাকায় দিয়ে কোরবান
ভুললে আদায় যাকাত
কোন তরীতে ভাসছো তুমি
কিসে পাবে নাজাত?
ছটফটিয়ে মরলো পশু
ঝরলো লোনা স্রোত
মানষ তুমি কি ঝরালে
ভাবছো কি শাশ্বত?
বিবর্তিত মানুষ
মেয়ে, তুমি যতই গালমন্দ করো কিংবা
অভিশাপ দাও না ক্যানো, মনে রেখো
পৃথিবী আগেও যেমন ছিলো আজও ঠিক তেমনি আছে
শুধু বদলে গ্যাছে মানুষ, নীতি, কর্ম; সে পুরুষই বলো কিংবা নারীই বলো।
সভ্যতায় ফিরে আসতে একদিন লজ্জাকে গোপন করা হয়েছিল
আজ সভ্যতাকে আধুনিক করতে গিয়ে লজ্জাকে বাজারে তোলা হচ্ছে
ধর্ষণ তখনো হতো, আজও হয়; ব্যাভিচার তখনো ছিলো আজও আছে
সেদিনের সবুজে ঢাকা আকাশ আজ দিগম্বর হয়ে গ্যাছে, ঠিক তেমনি
দিগম্বর হয়ে গ্যাছে নারী ও পুরুষ, ভুলে যাচ্ছে স্ব-স্ব সত্তা।
আজ ব্যস্ত সমাজ, ব্যস্ত দেশ, ব্যস্ত মানবতা, ব্যস্ত গীবত, ব্যস্ত মানুষ
এতো এতো ব্যস্ততার মাঝে সত্যি মনুষ্যত্ব চেনা বড় দায়,
তুমিও বিএ আমিও বিএ তবে বিয়ের কি দরকার!
অতঃপর, ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ধৈর্য আর বিশ্বাস, ভালোবাসা আর কর্তব্য।
প্রত্যয়
এখনো পাহাড় দেখিনি,
উঠতে পারিনি কোনো পাহাড়ের চূড়ায়
তবুও দেখি গভীর ও বিশ্বস্ততার গা বেয়ে
ঝরে পড়া নির্গন্ধ পলাশের মতো টকটকে
লাল রক্ত জবার স্থায়ী ক্ষত।
সেদিন স্বপ্নেরা পথ ভুলে
আকাশ নীলাভ না হয়েও পাহাড় ছুঁয়ে ছিল
আজ, এক সাগর নীল
তারার ঝিলমিল
এক আকাশ জ্যোৎস্না
এক বিরহী নদী
দুকূল ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া আর শরতের ঘ্রাণে
পাহাড় ডিঙাতে চায়, শুধু বলে
ভালোবাসি কিনা জানতে চেয়ো না।
এখানে এখনো নিয়ন আলো কাঁপে
একা থাকার দৌরাত্ম্য কেবল এখানে
বর্ষার মেঘ
বৃষ্টির ছোঁয়া
কিছু অনুভব
কিছু দায়
চোখ মুদে মনকে প্রশ্ন করো দেখবে
ভালোবাসার নেই কোনো সীমানা
কথা দিলাম, পাহাড় ছুঁয়েই পরোপজীব্য
না হয়ে ‘প্রেমিক’ হবো
কথা দিলাম।
কখন আবার আসবে রাত্রি?
কি করছেন?
একটু কষে ব্রেক ধরুন….
বৃষ্টিবাদলের দিন,
বলাতো যায় না, পৌরুষ বলে কথা
দুর্বাঘাস থেকে কালের সাক্ষী বটবৃক্ষ
ভূত-প্রেত থেকে মৃত জীবিত সকল, তারা
ফসকে গেলেই তাদের হুশ দাঁড়ায় শুদ্ধের দ্বারে।
অতঃপর,
সূর্যের ছায়ায় খুঁজে পাবো অন্ধকার
ওপাড়ে মানব সভ্যতা এপাড়ে আমি
ঘুমন্ত শহর নগর পল্লী, নিশ্চুপ পৃথিবী
নেতিয়ে পড়া দেহটা প্রতীক্ষার প্রহর গুনবে ;
কখন আবার আসবে রাত্রি, চির অন্ধকার।
মাঝি আর মেঝেনের ডিঙি নায়ের স্বপ্ন
গতরাতে একটা ডিঙি কিনেছি,
মোহনায় মোহনায় নোঙর ফেলবো বোলে।
নির্ঘুম প্রতিরাতে স্বপ্ন দেখি বোলেই,
দেখি আসমান ফুটো করে জলের নৃত্য; কে যেনো ডাকছে,
কণ্ঠশৈলীতে কখনো কখনো স্পর্শ কোরে ফেলি তাকে
স্বপ্ন ভেঙে গেলে দেখি চিরচেনা লোনাজলের ঢেউ।
জানি, জলের বুকে ঢেউ থাকবেই, যেমন থাকে ভালোবাসায় যন্ত্রণা
খুব ভেবে চিন্তেই গতরাতে ডিঙি কিনেছি,
মাঝি হওয়ার খুব খু–ব ইচ্ছে, কাউকে মেঝেন বানাবো বোলে,
তাকে পাশে কোরে একদিন পূর্ণ করবো তার সকল ইচ্ছে।
কেউ কি মেঝেন হবে? যদি হও তবেই মাঝি হয়ে
নোঙর ফেলবো মোহনায়, দিবো পাড়ি পদ্মা, মেঘনা,
প্রতিটি নির্ঘুম রাতকে করে তুলবো এক একটি মাধবী রাত;
তবে এসো,
মাঝি আর মেঝেনের ডিঙি নায়ে অচিন মোহনায়,
আঁধার রাতের জলনৃত্যে জীবন সাজাই।
গান (ইচ্ছে হলো তাই চেষ্টা করলাম)
********************************
দিনে সাজাও রাতে ভাঙো
নিত্য মনের ঘর
কোথায় গেলে পাবো আমি
বিধি সাজানো সংসার।।
হৃদয় ভেঙে বৃষ্টি ঝরাও
ভাসাও দুই নয়ন
আকাশ ভেঙে তুমি আবার
সাজাও এ জীবন
তপ্ত বাওয়ে শীতল হাওয়ায়
ক্যানো তোলো ঝড়।।
জল দিয়ে জ্বালাও অনল
পোড়ে না এ মন
ভুলতে গিয়ে তোমায় আমি
ভুলি আপন জন
বিধি কোনসে জলে ভাসাও সাগর
ডোবে না মনচর।।
শয়নে ভাবি জাগ্রত ছবি
ভাঙরে ভুলো মন
হারালে সময় পাবি না খুঁজে
বলে রুদ্র আমিন।
মানবতা আর দানবতা
পুড়ছে আকাশ পুড়ছে বাতাস
জল পুড়ে ছাড়খার
পুড়ছে মানুষ পুড়ছে পশু
মানবতার কী দরকার!
তবু,
মানুষের মাঝে মানুষ খুঁজি
বৃক্ষের মাঝে বৃক্ষ
বৃষ্টির কাছে প্রশ্নের ঝুলি
ক্যানো মানুষে দুর্ভিক্ষ?
শুনলাম,
শান্তির নামে উদ্বিগ্ন পৃথিবী
মুখরোচক কোকিল বুলি
মানুষ মরলে জায়গা বাড়ে
তাইতো মানুষ ছুড়ে গুলী
আজ,
মরে যাক ঝরে যাক বৃদ্ধ যুবক শিশু
অং সান সুকি’র মতো আসুক তবু কিছু
দগ্ধতার ক্ষতচিহ্নে নোবেল এঁকেছে যিশু
মানবতা আর দানবতায় নেই ফারাক উঁচু-নিচু
পূর্ণতাই অপূর্ণতা আর অপূর্ণতাই পূর্ণতা
তুমি আছো বলেই কবিতারা এক পৃথিবীর আলো থেকেও মরে যায়, মরে যায় কবি। খুঁজে বেড়ায় দুঃখের যন্ত্রণাময় সুখ, হারিয়ে যায় চিরচেনা সেদিনের চাঁদকালো আকাশটা, আর খুঁজে বেড়ায় তার অবয়বের একফালি কোনো এক ছবি। সত্যি বলতে কি, সুখে সুখ নেই দুঃখের আচড় ছাড়া…
তুমি আছো বলেই সদ্য ভূমিষ্ঠ কাগজের ঘ্রাণ এখন আর মাতাল করে না, খুঁজে পায়না চিরস্থায়ী ক্ষতের রঙধনুর সাত রঙ। অবশেষে বুঝতে পারে, বলতেও পারে; শুধু তুমি আছো বলেই পৃথিবী কতোটা আলোকিত, আঁধারের মাঝে কতটা মধুময় মুগ্ধতা। তবু্ও কি যেন নেই…
অতঃপর পূর্ণতাই সব অপূর্ণতা আর সব অপূর্ণতাই পূর্ণতা…
এক পেত্নীর আত্মকথা
♦
গণ ভবন নয়
গণ কবরস্থান
তার পাশের নদীর ধারে শ্মশানঘাট…
ঐ যে দেখা যায় উজ্জ্বল পতিত জমিনটা
তার পিছনেই এক পেত্নীর বসবাস
অল্পদিনের খুব প্রিয় একজন হয়ে উঠেছে
একাকিত্বে তার অনুপস্থিতি খুব অনুভব করি
যদিও সে কখনোই আমার নয়, তবুও…
তারও দুঃখ আছে, আছে সুখানুভবের অনুভূতি
রাত গভীর হলেইসুখ আর দুঃখের আলাপ করতে
চলে আসে, কখনো জানালার ওপাশে কখনো শিথানে
তাকে কেউ ভালোবাসে না, তার এজগতের কেউ না
বেঁচে থেকে যদি ভালোবাসা পাওয়া না যায় তবে নাকি
অন্য জগতের কেউ ভালোবাসে না, অতীত কর্ম টেনে আনে বারংবার
উঠবস থাকা খাওয়া সব কিছুতেই নাকি বৈষম্য,
এই যে পতিত জমি এখানে নির্বাসিত সে,
আজ সে আনন্দিত, উল্লাসিত, সে শুধু একটি কথাই বলে
পৃথিবীর ভালেবাসা ছাড়া কোনো জগতেই সুখ নেই।
অন্ধকার আছে বলেই আলো এখনো জীবিত …
নিজেকে খুঁজতে গিয়ে বারংবার অন্যকে খুঁজে পাই, কখনো পশু কখনো পাখি কখনো বা হিংস্র জানোয়ার। আঁধার ছাড়া যেমন আলো নেই, মন্দ ছাড়া তেমন ভালো নেই, তেমনি অমানুষ না হলে মানুষ চিনবো ক্যামন কোরে? আমি না হয় অমানুষ হয়েই বেঁচে রইলাম, তুমি মানুষ হয়ে অমানুষ আর মানুষের মাঝে পরিচিতি দাও, বর্ণনা দাও আলো ক্যামন, মন্দ ক্যামন আর অন্ধকারই বা ক্যামন!
শুনলাম তুমি এখন বলতে শিখেছো, বলছো পৃথিবীতে বিশ্বাস বলে কিছুই নেই যা আছে সবটাই মিথ্যে আর প্রতারণা, বড্ড ভয় হয় কখন আবার বলবে পৃথিবীই একটা মিথ্যে জঞ্জাল, বড্ড ভয় হয় কখন যে তুমি তোমার পিতা-মাতাকেও অবিশ্বাস করে বসো!
অতঃপর মিথ্যের ঘরে সবটাই মিথ্যে, অবিশ্বাসে মৃত তুমি আমি আমরা সবাই; বিশ্বাস আছে বলেই পৃথিবী এখনো বসবাসের যোগ্য বাসস্থান হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।