সাইদুর রহমান১ এর সকল পোস্ট

সাইদুর রহমান১ সম্পর্কে

স্নাতকোত্তর (চলমান), সমাজকর্ম বিভাগ, ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তারনাকা, হায়দ্রাবাদ-500007, তেলেঙ্গানা স্টেট, ভারত প্রকাশিত গ্রন্থঃ তিনটি, যথাক্রমে- মনঃপীড়া, মায়াজাল এবং পার্বতী রক্তের গ্রুপঃ এ পজিটিভ, জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী।

সর্প মানব

আয়েশ করেই কাটাইলি জীবন, পাইলিনারে দুঃখের দেখা
অর্থহীন তোর সকল আমোদ, যতই দেখাস ভাগ্য রেখা
বিত্ত-বৈভব আর ক্ষমতার দাপটে, করেছিস কত দস্যিপণা
বাহুবলে সব লুটিয়ে নিয়েছো, ভেবেছো ওরা তো শস্যকণা

বাবা দারোগা আর মামা মন্ত্রী, আরও কত শত এমপি-বাবু
ক্ষমতার দাপটে অসহায় মানুষকে, অস্ত্রের মুখে করেছিস কাবু
নিরীহ জনতার সর্বস্ব লুটে, বানিয়েছিস মহা আলিশান বাড়ি
অবৈধ সম্পদের পবিত্রকরণে, দিয়েছিস অনেককে বিলাসী গাড়ি

তোদের খড়গে ছন্নছাড়া জীবন, মামলার জালে কত শত জন
বিচার-আদালতের বাহানায় পড়ে, নির্ঘূম রাতি ও আতঙ্কিত মন
মধ্যবিত্ত আর অসহায় গরীব, স্বপ্নেই খুঁজে ফেরে শান্তনার নীড়
বেঁচে থাকাই যেথায় বড্ড প্রাপ্তি, এতেই ভীষণ আত্মতৃপ্তি!!!!!

আপনার প্রকাশিতব্য বইয়ের বিজ্ঞাপন শব্দনীড় এ দিন

সম্মানিত লেখক পাঠক বন্ধুগণ! শব্দনীড় একটি মুক্ত প্লাটফর্ম। প্রতিনিয়ত লেখক, প্রকাশক, বহু পাঠকের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র এই শব্দনীড়। অনেক প্রতিভাবান লেখক এই শব্দনীড় থেকেই তাদের লেখালেখির উৎসাহ পেয়েছেন। আসলে শব্দনীড় কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয় বরং এটি এমন একটি অলাভজনক কমিউনিটি প্লাটফর্ম যার উদ্দেশ্য হলো সুস্থ সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে লেখক পাঠকদের মধ্যিখানে একটা সেতুবন্ধন তৈরি করা। তারই ধারাবাহিকতায় শব্দনীড়ের প্রত্যাশা আপনার প্রকাশনার গল্পকে ত্বরান্বিত করে তিন বাংলা যথাক্রমে এপার, ওপার এবং প্রবাস বাংলা সহ লক্ষ পাঠকের হাতে পৌছে দেয়া।

মুক্ত বাক্ স্বাধীনতার ব্লগিং-প্লাটফর্ম হিসেবে শব্দনীড় ব্লগ একটি অবাধ ক্ষেত্র।

আগামীকাল থেকে শুরু হবে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো নতুন-পুরোনো লেখকদের অনেক বই বের হবে, বাতাসে ভাসবে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, যদিও ভার্চুয়াল লাইফে বইয়ের ঘ্রাণ পাওয়া অসম্ভব। তবুও সারা মাস জুড়ে শব্দনীড় আপনাকে জানাবে প্রকাশিত বইয়ের যত আপডেট, এছাড়াও আপনার কিংবা আপনার খুব কাছের কারো বই এবারের বইমেলায় প্রকাশ পেলে তার “প্রচ্ছদসমেত বিজ্ঞাপন” শব্দনীড়ে নামমাত্র মূল্যে অথবা বিনামূল্যে
সহজ শর্ত বা আলোচনা সাপেক্ষে প্রকাশ করতে পারবেন।

আপনার প্রচ্ছদ এবং বইয়ের সারসংক্ষেপ লিখে পাঠিয়ে দিন-

ই-মেইল: [email protected]
মোবাইল যোগাযোগ : 01758 419 024

আপনার প্রকাশিতব্য বইয়ের বিজ্ঞাপন দিন। শব্দনীড় গ্রন্থাগারকে সমৃদ্ধ করতে প্রকাশনার একটি সৌজন্য কপি কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিন নিচের ঠিকানায় :

আজাদ কাশ্মীর জামান
ফোন : 01743 918 919
অফিস ডেলিভারি
এস এ পরিবহন / সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস লিঃ
বগুড়া প্রধান শাখা, বগুড়া।

নতুন বৎসরের শুভেচ্ছা

অনেকদিন পর ফিরে এলুম আমার প্রিয় সাহিত্য ঘর ‘শব্দনীড়’এ। সবার সাথে শব্দছন্দে মন ও ভাবের বিনিময়ে আবারো দোল খাবো শব্দনীড়ের সর্ববৃহৎ শিবিরে। নতুন বৎসরে সমৃদ্ধ হোক আমাদের ভূবন।

অম্লান স্মৃতিসূধা

৯ই মে, ২০১৮ বিদায় অনুষ্ঠানটি (স্নাতক) জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। দীর্ঘ সময়ের সহপাঠীদের ভালবাসা আর আদর সোহাগে সত্যিই অভিভূত হয়েছি। কত গ্রেডে উন্নীত হয়েছি সেটি আজ গুরুত্বপূর্ণ নয়, যে ভালবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ ও মমতায় সিক্ত হয়েছি তা অম্লান। জীবনের এই আনন্দঘন মাহেন্দ্রক্ষণে নিজেকে সত্যি ভাগ্যবান মনে হচ্ছে কারণ, আমার এই স্বল্প পথচলায় যা পেয়েছি তা জীবন প্রবাহ ধারাকে ভবিষ্যত সম্ভাবনায় এগিয়ে যেতে রসদ যোগাবে। যাদের ভালবাসা আর বিনিময়হীন মঙ্গল কামনায় আমার এই গৌরবময় অর্জন সেই প্রিয় মা-বাবা, ভাই, স্বজন আর প্রতিবেশী। যাদেরকে আজ বুক ফুলিয়ে স্বরণ করছি আনন্দের সাথে।
শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি মরহুম আলহাজ্ব অধ্যাপক মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন খান-স্যারকে। যার পার্শ্বে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়ে নিজেকে ঋদ্ধ করেছি। আজ এই বিজয়ের গল্প তিনি শুনতে পারলে অনেক খুশি হতেন এবং নিজেকে ধন্য মনে করতাম। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, লে.কর্ণেল. এএফএম খাইরুল বাসার, মোহিত প্রধান, ড. নাজিম উদ্দিন স্যারদ্বয়কে মনে পড়ছে যাদের সহযোগীতায় কর্মে থেকেও ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম।

ইউআইটিএস-এর স্কুল অব লিবারেল আর্টস এন্ড সোস্যাল সায়েন্সে (ইউআইটিএস) এর মাননীয় ডিন, এবং আমার প্রিয় সমাজকর্ম বিভাগের সম্মানীত বিভাগীয় প্রধান ড. আরিফাতুল কিবরিয়া ম্যাডাম জীবনে অম্লান হয়ে থাকবেন। যার অনুপ্রেরণা, দিকনির্দেশনা, মাতৃ আদর আর পিতৃস্নেহ, শাসন, ভালবাসা আর শুভ কামনায় সিক্ত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে বিশ্বজোড়া স্বপ্ন দেখাতে যিনি সর্বদা সাহস দেখিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা জীবনে (অনার্স) যাদের পরশ পেয়েছি তারা হলেন- অধ্যাপক ড. কে.এম সাইফুল ইসলাম খান, মোহিত প্রধান, ড. আরিফাতুল কিবরিয়া, জাকিয়া সুলতানা, অধ্যাপক ড. এস.আর. হিলালী, ড. নাজিম উদ্দিন, নিঝুম ম্যাডাম, সিলভিয়া খৃষ্টীনা গমেজ, তানিয়া তাবাস্সুম তানু, পিংকি দত্ত, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, কাজী তাছলিমা নাসরিণ জেরিণ, ওয়াহিদুর চাঁদ প্রমূখ।

আমার ছোট্ট বেলার প্রিয় বন্ধু সিফাতুল্লাহ। যার সাথে আজও একপথে চলছি। ফার্মেসি বিভাগের বিশ্বজিৎ ভাইকে মিস করছি। যার সাথে সুদীর্ঘ সময় একই বিছানায় রুমমেট হিসেবে থাকার ও ২ সেমিস্টার পড়ার সুযোগ পেয়েছি। রায়হান, মুসরাত-কেও খুব মিস করব জীবনের চলমান পথে।

আমি যাদের সাথে একই ছাদের নিচে বসে অধ্যায়ন করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার প্রিয় বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ- অগ্রজ সাদিয়া আপু, জেমি আপু, স্নেহাস্পদ- নাইম, সানজিদা, লিমা, আলমগীর, কামরুন্নাহার, মরিয়ম, শারমিন, সাব্বির, টিশা, নেছার, স্নিগ্ধা, সম্পা, মাহমুদুল হাসান, রাকিব, স্বর্ণালতা (ডি মারিয়া) আর আমার সহপাঠী- মাবেয়া, সিফাত, স্বর্ণা, মিষ্টি-কেও খুব মিস করব।

জীবনের অবুঝ বেলা হতে কণ্টকময় জনাকীর্ণ পথ চলার অসম্ভাব্যতা থেকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেছি। যা সফল হতে অবদান রেখেছেন শিক্ষা জীবনে প্রাইমারী হতে অদ্য পর্যন্ত গুণীজনেরা। সোনাপুরা রেজিঃ বেসঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম বহুবছর পূর্বে। কালাম স্যারের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হতো। ফারুক স্যারের বেতের মারের ভয় আজও মনে পড়ে। স্কুলের দুষ্টামি গুলো আজ বড্ড মিস করছি। তৃতীয় শ্রেণীর পর আর সুযোগ হয়নি প্রাইমারিতে পড়ার। অতঃপর চলে আসলাম বাড়ির পার্শ্বে ইবতেদায়ী মাদ্রাসায়। আজ আমি যেই নামে পরিচিত (মোঃ সাইদুর রহমান) এটি দিয়েছিলেন শ্রদ্ধেয় হাবিবুর রহমান স্যার। যিনি আজও আমাকে গ্রামের পথে দেখা হলে বুকে টেনে নেন। আমাকে নিয়ে গর্ব করেন।

সুবিদখালী দারুস সুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছিলাম ২০০৫ সনে। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আলহাজ্ব আবদুল আযীয নেছারী (রহ.) হুজুরের সান্নিধ্যে দীর্ঘ সময় থাকার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য করতে পেরেছি। মাদ্রাসার বোর্ডিং সুপার এবং স্বনামধন্য শিক্ষা শ্রদ্ধেয় মাওলানা খলিলুর রহমান হুজুরের চোখ রাঙানি আর ভালবাসা আজ অর্জিত গল্পের বিশেষ দাবীদার। কত শিক্ষার্থীকে হারিয়ে যেতে দেখেছি জলজ্যান্ত চোখে। প্রিন্সিপ্যাল হুজুর, মোশারফ ভাই, লতিফ ভাই -কেও আজ শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি। মোশাররফ ভাইয়ের সাথে দীর্ঘ সময় একত্রে থেকেছি। লতিফ ভাইয়ের অগাধ দয়া করে আমাকে রাইচ মিলের কাজ শিখিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।

আশা করি সবার শুভ কামনা নিয়ে এগিয়ে যাবো আগামীর পথে। আর আমাদের অনুজদের জন্যও রইলো আন্তরিক প্রীতি।

unnamed

তোমায় সত্যিই অনেক ভালবাসি

তোমায় সত্যিই অনেক ভালবাসি।
মিথ্যে ছন্দে, নাটকীয় ঢঙে হয়তো কখনো
বলতে পারি না একথা। কিন্তু এটাই যে সত্যি।
প্রতিটি ক্ষণে অহর্নিশ তুমি জড়িয়ে থাকো
আমারই ভালবাসার হৃদয় কুটিরে-
বলো, সত্যি করে বলো,
এগুলো কি তুমি বুঝতে পারো না?
হাজারো ছন্দ আজ গোলক ধাঁধায় চাপা পড়ে আছে
কারণ, তোমায় দেখলে তো ছন্দ তাল হারিয়ে যায়
সত্যি! তোমার অনেক রাগ, অনেক অভিমান আছে।
কিন্তু, সে যে আরও আনন্দের।
কারণ, তুমি যখন রাগ কর তখন বেশীই সুন্দর লাগে।
গোলাপী ঠোঁটের কোণে কোমল হাসিটি তখনও
স্থির থাকে।
আবার মাঝে মাঝে বেশী রাগলে
একদমই কথা বলো না।
কি বল, সত্যি বলছি না?
আচ্ছা, তুমি এমন কেনো?
চক্ষুপানে, অন্তরালে দু’পাশেই তোমার বিচরণ
রাতের অন্ধকারে, জোস্নার তারকার মেলায় সদা
তুমি ভেষে থাকো নীরবে। আমি দেখি আর হাসি
বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে অনেক ভালভাসি।

কাল্পনক

রঙ্গশালা

কত রঙে, কত ঢঙে, চলছে জীবন বক্রতালে
কত সময়ে-অসময়ে হারিয়ে যাচ্ছি মায়াজালে
কত জীবন মুহুর্মুহ, তলিয়ে যাচ্ছে সম্মুখপানে
কত মানুষ দলছুট হয়ে, ঘুরে বেড়াচ্ছে সন্দর্পনে

শত মানব গড়ছে সদা, পবিত্র ধরা রঙ্গশালা
শত জনে করছে গল্প, কথার মধ্যে মিথ্যে মশলা
শত জনম চলছে এমন, আগামী বিশ্ব অপেক্ষমান
শত যুগের ইতিহাস দেখো, এটাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ

পৃথিবীর এই আবাসভূমে, করছে মানুষ কত কর্ম
পৃথিবীর সেই আদি থেকে, চলছে শত বাণিজ্য ধর্ম
পৃথিবীর সেই শুরু থেকে আসছে চলে শত মেলা
পৃথিবীর এই মানুষ সকল বানিয়েছে ধরা রঙ্গশালা

Untitled

তৈল

বেশ ক’বছর চাকুরী শেষে আজ সত্যিই মনে হল:
বেকার থাকার চেয়ে কর্মময় জীবন অনেক ভাল
কিন্তু, সেখানে সফলতার জন্য রয়েছে অনেক পথ
যা অর্জিতে চাইলে চিনতে হবে অত্যাধূনিক এই রথ

দেখ, তোমার সাথের এক বন্ধু এক বছরেই অফিসার
আর তুমি? যত কাজই করো সবাই বলে সেটি অন্তঃসার
অথচ, তোমার মনে এসব দেখে ও ভেবেই ভীষণ কষ্ট
কিন্তু, বর্তমানে এতটা সরল হলে জীবন হবে নষ্ট

তাহলে এবার ভেবে বলো, তোমার ভুল কোথায় আছে?
কাজে নাকি ড্রেসআপে, সততায় নাকি ব্যর্থতার কাছে
কিছুই খুঁজে পাচ্ছো না! এভাবে খুঁজে কোনদিনই পাবে না
খুঁজতে হবে অন্যপথে যা তুমি এতদিনে একবারও ভাবলে না

তোমার বন্ধু যিনি অফিসার হয়েছেন তাকে দেখ
প্রতিদিনের আসা-যাওয়ার কার্যকলাপগুলো মনে রেখ
দেখ, তার বস্ নয়তো প্রতিষ্ঠানের মালিকের অফিস
সর্বদা গিয়ে করে প্রশংসা আর গোপন কথায় ফিসফিস

বাজার থেকে ইলিশ মাছ কিনে উপহার দেয় অফিস কর্তাকে
অতঃপর বলে, মা দিয়েছে পুকুরের মাছ, দুয়া করবেন তাকে
অন্যের নামে মিথ্যা, কুৎসা বলে প্রশংসায় ভিজায় বস্রে মুখ
অবশেষে বস্ তাকে আপন ভেবে বলে, ব্যাটা চিন্তা করিস না।
থাকবে না তোর কোন দুঃখ…

বাল্য বিবাহের একটি চিত্র

বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের বর্তমান প্রেক্ষাপট, কারন এবং এর প্রতিকার ও তার আইন

“একটি সুস্থ জাতি পেতে প্রয়োজন একজন শিক্ষিত মা”— এই উক্তিটি প্রখ্যাত মনীষী ও দার্শনিক নেপোলিয়ন বোনাপার্টের। কিন্তু আমরা আজ এই একুশ শতকে এসেও বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ নারী এখনো শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, আর এর প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ।গত এক দশক ধরে কিশোরী মাতৃত্বের হারের দিক থেকে পৃথিবীর শীর্ষ তিনে রয়েছে বাংলাদেশ। যেটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এবং Digital Bangladesh অর্জনের পথে বাংলাদেশের জন্য বড় বাধা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকরা মনে করেন, কিশোরী বয়সে মা হলে, মা ও সন্তান দুজনেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যায়।দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের মধ্যে প্রজনন হার প্রতি এক হাজারে ১৩৫ জন। যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। কিশোরী মাতৃত্বের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে শীর্ষ দশে রয়েছে বাংলাদেশ ।
বাল্য বিবাহ কি ? :
বাল্য বিবাহ বলিতে সেই বিবাহকে বুঝায় যাহাতে সম্পর্ক স্থাপনকারী পক্ষদ্বয়ের যেকোনো একজন শিশু। শিশু বলিতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝাইবে যাহার বয়স পুরুষ হইলে একুশ বৎসর কম এবং নারী হইলে আঠার বৎসরের কম।
বাল্যবিবাহের তথ্য:
১. জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৮ বছরের আগে ৬৬ শতাংশ মেয়ে এবং একই বয়সের ৫ শতাংশ ছেলের বিয়ে হচ্ছে ।মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে – মাত্র একহাজার টাকার দেনমোহরে বিয়ে হচ্ছে এই সব সুবিধা বঞ্চিত মেয়েদের যাদের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে – কোন দেন মোহরই ধার্য করা হয়নি এমনকি বিয়ের রেজিষ্ট্রেশনও করা হয়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে বড় অংকের যৌতুক দাবী করছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির পরিবার।
২. ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ১০-১৯ বছর বয়সের দুই তৃতীয়াংশ কিশোরী বাল্য বিবাহের শিকার হয় ।
৩. সেভ দ্যা চিলড্রেন এর ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ৬৯ শতাংশ নারীর ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ।
৪. জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের হার ২০০৯ সালে ছিল ৬৪ শতাংশ, যা ২০১১ সালে এসে দাড়িয়েছে ৬৬ শতাংশে।
৫. বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভে এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীর বিয়ের গড় বয়স ১৫ বছর ৩ মাস ।
৬. ইউনিসেফের পাপ্ত তথ্য মতে দেশে আঠারো বছর পূর্ন হবার আগে বিাহের হার ৬৬% এবং ১৫ বছরের আগে বিবাহের হার ৩২%। ৭. বাংলাদেশে গর্ভবতি নারীদের মধ্যে ৫৭% বয়স উনিশ এর নিচে। বাল্য বিয়ের কারনে ৪১% মেয়ে স্কুল ত্যাগ করে।

বাল্য বিবাহের কারনসমূহ:
১.সাধারনত মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বাল্যবিবাহে উৎসাহিত করে ছেলেদের পরিবার।
২.কখনও কখনও তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রবনতা থেকেও বাল্য বিবাহের দিকে ঝুকে পড়ে গ্রাম্য পরিবারগুলো।
৩.ভবিষ্যতে ‘কন্যাদায়’ যেন বড় খরচের দায় হয়ে না দাঁড়ায় সেকথা মাথায় রেখে অল্পবয়সে বিয়ে সেরে ফেলতে পারলে একটা “খরচের দায়” কমে গেল, এই ভাবে ।
৪. ইভটিজিং এ দেশের সমাজ ব্যবস্থা এখনও নারীকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারে না, তাই তারা তারি মেয়েদের বিয়ে দেন।
৫.অধিকাংশ পিতামাতা ছেলেকে শিক্ষিত ও উপার্জনক্ষম করায় যতটা মনযোগ দেন মেয়ের জন্য ততটা দেননা, বরং তাকে ‘বিদায়’ করতেই আগ্রহী থাকেন, যা বাল্য বিবাহের অন্যতম কারন

বাল্য বিবাহের প্রধান কুফলঃ
১.নারী শিক্ষার অগ্রগতি ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বাল্য বিবাহের কারনে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ মা হতে গিয়ে প্রতি ২০ মিনিটে একজন মা মারা যাচ্ছেন।
২. প্রতি ঘন্টায় মারা যাচ্ছে একজন নবজাতক৷ নবজাতক বেঁচে থাকলেও অনেকসময় তাকে নানা
শারীরিক ও মানষিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়৷
৩. অপ্রাপ্তবয়স্ক মা প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদান করতে পারে৷
৪.বাল্য বিবাহের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের আশংকা তৈরী হওয়া ছাড়াও নানা পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়৷ ।
৫. বাল্যবিবাহ শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি করে না, পারিবারিক, সামাজিক এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনেও সহায়ক হয় । যেমন, শিক্ষার আলো এবং স্বাস্থ্যগত কারণে অল্প বয়সের মেয়েটি তার নিজের সম্পর্কে সচেতন নয়, সুতরাং পরিবার সম্পর্কে তার ধারণা না থাকায় স্বাভাবিক বিষয়।

বাল্য বিবাহ নিবারণ করার জন্য আইন

বাল্য বিবাহকারীর শাস্তি:
যে কেউ একুশ বত্স র বয়সোর্ধ্ব পুরুষ বা আঠারো বয়সোর্ধ্ব মহিলা হয়ে কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, একমাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ শাস্তিযোগ্য হবে।
৫। বাল্যবিবাহ সম্পন্নকারীর শাস্তি :
যে কেউ যেকোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান, পরিচালনা বা নির্দেশ করলে তিনি এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে, এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করেন যে, তার বিশ্বাস করার কারণ ছিল যে, উক্ত বিবাহ কোন বাল্যবিবাহ ছিল না।
৬। বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতার বা অভিভাবকদের জন্য শাস্তি :
যেক্ষেত্রে কোন নাবালক কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে ঐ নাবালকের ভারপ্রাপ্ত যেকোন ব্যক্তি, পিতা-মাতা হইক বা অভিভাবক হইক বা অন্য কোন সামর্থ্যে হউক, আইনসম্মত হউক বা বেআইনী হউক যদি উক্ত বিবাহে উত্সাহ প্রদানের কোন কাজ করেন, অথবা উহা অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুন ব্যর্থ হন, তিনি এক মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য বিনাশ্রম কারাবাসে বা একহাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাই কারাবাসে শাস্তিযোগ্য হবে না।
এই ধারার উদ্দেশ্যে যদি না এবং যতক্ষণ না বিপরীত কিছূ প্রমাণিত হয়, এই অনুমান করতে হবে যে, যেক্ষেত্রে কোন নাবালকের বাল্যবিবাহের চুক্তি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে উক্ত নাবালকের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঐ বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুণ ব্যর্থ হয়েছেন।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উপায়ঃ
১. বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনটি বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রচার/প্রচারনা করা প্রয়োজন৷
২. রেডিও, টেলিভিশনে ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা যেতে পারে৷
৩. গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠক ও মা সমাবেশ এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হবে৷ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ করা যেতে পারে৷
৪. জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যতীত কোন অবস্তুায়ই নিকাহ রেজিষ্টার যেন বিবাহ নিবন্ধন না করেন, সেরূপ আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে৷
৫. প্রতিটি ইউনিয়নে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷
৬. নবম ও দশম শ্রেনীর পাঠ্য বইতে এ বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা হলে এর সুফল পাওয়া যাবে৷
৭. জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বেসরকারী সংস্তুাগুলোও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে৷ আমরা যারা উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছি- পরিসংখ্যান ও বাস্তবতার দিক থেকে সফলতা দেখালেও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে শিশু বয়সী মেয়েদের বিবাহের মাত্রা সামাজিক অস্থিরতা, নিরাপত্তার অভাব, বেকারত্ব, দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, পারিবারিক ভাঙন ও অবক্ষয়ের কারনে। যে সব সুবিধাবঞ্চিত মেয়েরা স্কুলগামী হচ্ছে তারা ঝরে পড়েছে এবং তাদেরকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে একটা অনিশ্চত জীবনের দিকে। দেখতে হবে শিশুবান্ধব স্কুলের জন্য যে যে অপরিহার্য শর্ত রয়েছে তা আছে কিনা।এই প্রয়াসে আমাদের জানা প্রয়োজন “শিশুবান্ধব স্কুল” (Child Friendly School)কি? কি কি বিষয়ের উপর আমাদের নজর দিতে হবে। আইনকে কার্যকর করার সাথে সাথে মেয়ে শিক্ষার সুফল প্রকাশ্যে দেখানোর জন্য যে কোন ভাবে সরকারের আরো উদার নীতি গ্রহন করার প্রয়োজন । গ্রাম্য কৃষি উন্নয়নে শিক্ষিত মেয়েদের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো, স্বাস্থ্যখাতে মেয়েদের আরো সম্পৃক্ততা এবং শিক্ষার হার বাড়ানোতে মেয়েদের মেধা কাজে লাগিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করায় মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে । মেয়েদেরকে এবং অসহায় পরিবার সমুহকে বাল্য বিবাহ থেকে মুখ ফেরাতে হলে অবশ্যই মেয়েদের আত্ননির্ভরশীল করার প্রতি জোর দিতে হবে । এজন্য গ্রামে গ্রামে কারিগরি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন পদ্ধতি চালু করা খুবই কার্যকরি পদক্ষেপ হতে পারে । ইলেক্ট্রনিক পন্যের প্রসারে কারিগরি শিক্ষা সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হতে পারে মেয়েদের আত্ননির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে ।

শেষ কথাঃ
দিন বদলের অঙ্গীকার রয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা হবে৷ ২০২১ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩.৮ থেকে কমিয়ে ১.৫ করা হবে৷ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা না গেলে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না৷ বাল্য বিবাহ সংকুচিত করে দেয় কন্যা শিশুর পৃথিবী৷ আমরা যদি সবাই সচেতন হই তাহলে কন্যা শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে৷ দেশে মা ও শিশুর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে৷ সমাজের উঁচুস্তর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের; বিশেষ করে আমাদের রাষ্ট্এবং প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সবার আগে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।

violence-against-children-73753550

শিশু নির্যাতন কি বেড়েই চলবে?

আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশু নির্যাতন রোধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও ভয়াবহ যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে পারছেনা শিশুরা। দেশের ভবিষ্যৎ ফুলের মতো শিশুদের মমতা আর ভালোবাসা দিয়ে সমাজের প্রতিটি নাগরিকের যেখানে গড়ে তোলার কথা সেখানে এই সমাজেরই কিছু বিকৃত রুচি সম্পন্ন মানুষ রুপি পশু তাদের ওপর চালাচ্ছে জঘন্যতম নির্যাতন। এমনকি ঘৃণ্য এই অপরাধের হাত থেকে মানসিক প্রতিবন্ধি শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। দেশব্যাপী শিশুদের ওপর হওয়া নির্যাতনের ধরণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় শুধু অপরিচিত ব্যক্তি নয় পরিচিত, নিকটাত্মীয় প্রতিবেশীর দ্বারাও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এদের কেউ শিশুদের জোর করে আবার কেউবা খাবার বা খেলনার প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে এ অত্যাচার চালাচ্ছে।

শিশু নির্যাতনঃ
শিশু নির্যাতন দুইভাবে হয়ঃ
ক্স মানসিকভাবে, ও
ক্স শারীরিকভাবে
মানসিকভাবে নির্যাতনগুলো হয় শিশুকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোন কিছু দ্বারা চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন লাঠি/অস্ত্র দিয়ে তাকে নানাভাবে আঘাত করা হলে শারীরিকভাবে শিশু নির্যাতিত হয় এবং একই সাথে মানসিকভাবেও। বাংলাদেশের শিশু নির্যাতনের অন্যতম চিত্র দেখা যায় রাস্তায় বড় হওয়া শিশু, যৌনকাজে যারা নিযুক্ত তাদের সন্তান এবং যাদের বাবা-মা ডিভোর্স তাদের এবং যেসব শিশু অন্যের ঘরে কাজ করে।

শিশু নির্যাতনের ধরণঃ
শিশু নির্যাতনের মধ্যে অন্যতম কারণ হল দরিদ্রতা। বাংলাদেশে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা বেশীরভাগ সময়ই অর্থাভাবে শিক্ষার সুযোগ পায় না। ফলে অর্থের যোগান দিতে গিয়ে অল্প বয়সেই রোজগারের জন্য নামতে হয়। শিশুদেরকে মালিকরা কম বেতন দিয়ে থাকে এবং অনেক সময়ই তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়।
আর একটি কারণ আছে, তা হলো অবাদ যৌনাচার আচরণ শিশুদের দিয়ে। বেশিরভাগ শিশুদেরকে ক্রেতার কাছে বিক্রয় করা টাকার বিনিময়ে এবং ক্রেতারা তাদেরকে যৌনতার কাজে বাধ্য করে। এমনকি শিশু হত্যার চিত্রও অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিসংখ্যান অনুযায়ী। চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে সারাদেশে বিভিন্নভাবে খুন হয়েছে ৪৫ জন শিশু। গেল বছরের বছরের প্রথম দুইমাসে শিশু হত্যার সংখ্যা ছিল ৪৮। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে একজন করে শিশু খুন হচ্ছে।
পরিসংখ্যাণ থেকে দেখা যায়, বাড়ছে শিশু ধর্ষনের প্রবণতা। ২০১৬ সালে তিন শতাধিক শিশু ধর্ষনের শিকার হয়ে যায় বছরের ওেমাট ধর্ষনের মোট অর্ধেকের। ধর্ষনের শিকার হওয়া শিশুদের অর্ধেকের বয়স ১২ বছরের নিচে। এদের মধ্যে ছয় বছরের কম বয়সী শিশুও রয়েছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাও বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, ২০১৬ সালে ধর্ষনের ঘটনা ৭২৪টি। এর মধ্যে ৩০৮টি শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫৭টি শিশুর বয়স ১২ বছরের কম। ছয় বছরের নিচে আছে ৪৬টি শিশু।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে শিশু অধিকার সুরক্ষায় আইন-২০০৩ থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। পথশিশুরা তো বটেই। এমনকি পরিবারের নিরাপদ গন্ডির মধ্যে থেকেও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাছাড়া গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদেরও এ নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। মূলত এ বিষয়গুলোর প্রতি নজরদারী এবং নির্যাতন রোধে দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ না থাকায় শিশুদের ওপর হওয়া এই নৃশংসতা রোধ করা যাচ্ছে না।
আসুন আমরা সবাই শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করি। এবং সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ কাজে লাগিয়ে সুষ্ঠ সমাজ গঠনে উৎসাহিত হই এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি

প্রচ্ছদ

একটি বইয়ের আত্মকথনঃ

প্রচ্ছদ
প্রচ্ছদ

স্বপ্নহীন মানুষ প্রাণহীন জড়বস্তুর সমান। তাইতো মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করে। যেখানে থাকে ভালবাসা, ভাল লাগার অম্লান অনুভূতি। একজন মানুষের জীবনে স্বপ্নগুলো যখন ডানা মেলে উঁকি দিতে শুরু করে, তখন তার হৃদয়ের অতল গহীন রেঙ্গে ওঠে অনাবিল সুখ আর প্রশান্তির স্বর্ণালোকে। কিন্তু সেই স্বপ্নে রাঙ্গানো জীবনকে কখনো কখনো ঘিরে ফেলে দুঃস্বপ্নের গাঢ় নীল বেদনা। তবুও সুখ-দুঃখ, কষ্ট-ভালবাসা নিয়েই বয়ে চলে জীবন। এর মধ্যেই একজন মানুষের বেড়ে ওঠা। এ নবীন কাব্য শিল্পীর কবি চেতনার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনন্তলোকের অন্তরদেবতার উদ্দেশ্যে এ আনন্দ-বেদনার অর্ঘ খানির নান্দনিক নিবেদন। আর এ অনুভূতিগুলোই কাব্যচটে বন্দি হয়েছে।

এ সারমর্ম ধারণ করেই লিখিত হয়েছে এ কাব্যগ্রন্থটি। আশা করি পাঠকদের ভাল লাগবে। আন্তর্জাতিক বইমেলা-2017 এর 265 নং স্টলে, সাহিত্যদেশ প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে। পাঠকদের মূল্যবান কমেন্টস্ আমার আগামী পথকে বেগবান করবে।

শৈশব স্মৃতি

অমোচনীয় আজ পিছু যাওয়া বৈকালের সেই বেলা
স্বৈরভাবে কাটিয়েছি সেসব রঙ্গদশার মেলা
কেটেছে কত নির্ঘুম রাতি ফেঁসেছি কত দুষ্ট জালে
মায়ার চাদর বিছিয়ে দিয়েছি বন্ধু মহলে আড্ডাকালে

স্মৃতির পাতায় আজ জড়ানো শৈশব খুঁজিফিরি
যৌবন শেষে করছি হেসে দাদাগিরি
হৃদকুঞ্জের গহীন বনে ভাবনা দোলায় দিবানিশি
অম্লান সেই ফেলিত লঘন কেটেছে নিগূঢ় হাসিখুশি

গ্রামের সেই পাঠ্যশালায় পড়েছি যখন হেলেদুলে
কেঁদেছি কত বেতের মারে হেসেছি হৃদয় প্রাণ খুলে
বারংবার স্বরি বাল্যবেলা আসবে কি আর সম্মুখপানে!
অসম্ভবকেও জপছি কারণ হৃদপিঞ্জের মায়ার টানে

খেলেছি পাশা সদলবলে কানামাছি, বৌ-ছি নয়কো ফেলে
ঝিনুক তুলেছি পানি ডুবে ধরেছি মাছ সেজেছি জেলে
কাবাডির সেই ডু’র তালে মেলেছি বাহু বক্র তালে
কখনো হেরে কেঁদেছি দলে আবার হেসেছি বিজয়কালে

দুর্বার গতিতে চলছে সময় ভাসছে স্মৃতি নয়ন পানে
স্বস্তি খুঁজি জপে তাকে গহীন মনে এক ধ্যানে
ভাবনাটাই আজ খোদাই করা তাইতো দেখি চলন পথে
ভাগ্যদেবী নয়কো দিবে যাত্রা ছেড়ে উল্টো রথে

15094241_127361284410337_2178655413927432297_n

অভিমান

তুমি যদি একটু রেগে থাকো
সারাটা দিন বেজায় কষ্টে থাকি
মান-অভিমান করো যদি তুমি
মনকে বলো ক্যামনে দমে রাখি

তোমার হাসি মুখটি দেখার জন্য
চাতকের ন্যায় তাকিয়ে রই আমি
মনটা বেজায় শান্ত নিভীড় থাকে
মিষ্টি কথা বলো যখন তুমি

রাগ করিলে বাঁচবোনাকো ধরায়
কবিতার সুরে গেয়ে শুনালাম তোমায়
তবুও যদি মনটা করো কালো
ভালো থাকি কেমনে আমি বলো

কবিতা পড়ে মুচকি হেসে তুমি
লাজুক ঢঙ্গে পাশে ডাকো আমায়
সকল কষ্ট ভুলে যাব আমি
পাগল হয়ে বাসব ভালো তোমায়

মুনাজাত

হে প্রভু!
যতদিন তুমি বাঁচিয়ে রাখো, এই যে ধরণীতে
সুখ কি-বা দুঃখ আসুক, ভাবনা নেই তাতে
পাশে শুধু থেকো তুমি, এটাই আমি চাই
পথ হারিয়ে কভূ যেনো, বিপথে না যাই

শক্তি শুধু তুমি আমার, নয়কো অন্য কিছু
শয়তানের ঐ ছোবল যেনো, নেয়না আমার পিছু
কেঁদে কেঁদে দুহাত তুলে, তাই মুনাজাত করি
ধরার বুকে যদ্দিন আছি, তোমায় যেনো স্বরি

চলতে পথে আসতে পারে, বাঁধার পাহাড় যত
শক্তি দিও ধৈর্য্য ধরে, থাকতে পারি তত
তবুও তুমি ক্ষমা করো, ওহে আমার প্রভু
এক লহমাও রেখো না দূরে, তোমার থেকে কভূ