সুজন হোসাইন এর সকল পোস্ট

সুজন হোসাইন সম্পর্কে

জগতের সব কিছু নিয়ে ভাবি,আর ভেবে যা পাই তা লিখে রাখি মহা কালের পাতায়।

অপেক্ষা

ভাঙনের সুরে বুকের পাড়ে
যে ঢেউ আছড়ে পড়ে
চোখের ধারায় যে পথিকের
পথ নদী হয়ে বয়ে যায় ।।

নির্ঝরের মত যার অবিরত চোখের ঢেউ সময়ে সময়ে
মোহন বাঁশরী বাজায় তারও একদিন সব কিছু ছিল ।।

কান্নার রোল তুলে যে বাউল
ঘর ছাড়ে সন্ন্যাসী হবে বলে
তারও একদিন স্থায়ী ঘর হয়
চোখের নদী শুকিয়ে গেলে ।।

শুধু সময়ের অপেক্ষা,
কার কখন কূল ভাঙে,কার কখন ভাঙার গান সাধে
কার কখন কূল গড়ে, কার কখন নতুন জীবন বাঁধে ।।

১৬/০১/২০২০

কথোপকথন-০৭

— জানেন, আজকাল কেউ একজন আমার
বুকের ভিতর সংগোপনে বাস করে।
বুকের উঠোন জুড়ে ঘর বাঁধে। বেলকনি আঁকে।
জানলা দিয়ে চাঁদ দেখে, জোৎস্না গায়ে মাখে।
ইচ্ছে হলেই পাহাড় গড়ে, ঝর্ণা হয়ে ঝরে চোখের
কোণে।
— বাহ্! কি রোমান্টিক! প্রেমে পড়ছেন বুঝি ?
— না তো,,আমি প্রেমে প…ড়…ব…?
— প্রেমে পড়লে এমনই হয়। বুঝলেন তো !
— তাই বুঝি!
— হ্যাঁ তাই। তো আর কি কি করে শুনি?
— দরজা খুলে বাইরে আসে। উঠোন জুড়ে হাঁটতে থাকে।
নূপুরের সুরে পুষ্পবৃষ্টি ঝরে মনের নিখাঁদ বাসনায়।
তারপর — তারপর, তৃষিত মুখ, উষ্ণ শ্বাস ছুঁয়ে যায়
হৃদয় গভীরতা।
— তারপর…?
— বাতাসে উড়িয়ে দেয় দূরত্ব। কপালে এঁটে নেয় লাল
রঙের আনন্দ। একে একে ডেকে যায় বিষন্ন দুপুর,
নিঝুম বিকেল, উদাসীন সন্ধ্যা।ধরা না দিয়েও হৃদয়
ছুঁয়ে যায় নীরবে।
— এবার ধরেই ফেলেন,?
— সেই তো ধরা দিতে চায় না! রোজ রোজ কথা বলে।
রোজ রোজ মান অভিমান করে। কারণে অকারণে
অনুযোগ অভিযোগ করে তবুও দূরে থাকে।
— রোদ্দুরে ভেজা নৈঃশব্দ্য নদীকে ছুঁয়ে দেখতে নেই।
অনুভব করাই শ্রেয়। তার আঙুলের ডগায় চোখের
বিস্ময়, শখের অরণ্যে রোদ মেঘ বৃষ্টি। আগুন হয়ে
ঝরে যায় অনর্গল। “সাহস করে বললেই তো পারেন। ”
— ভয় হয় যদি ফিরিয়ে দেয় !
— নাও ফেরাতে তো পারে ! বলে তো দেখতে পারেন।
— এই যে আপনি, আমার ঘুম ভাঙানিয়া পাখি হবেন
প্রতিটি ভোরের, আমায় দেখার আয়না হবেন প্রতি
স্নানের শেষে অমন সমুদ্র চোখে।
সন্ধ্যে নামার বিকেল হবেন, হবেন কি আমার ঘরের
একশো আরতি দীপ জ্বলা সন্ধ্যা বাতি।
হবেন কি আপনি আমার এই জীবনের একান্ত তুমি,
তুই আর রাগ অনুরাগ,মান অভিমান।
— চুপ! মোটু, আপনি একটা শয়তান। চুপ! হাসবেন না?
এই যে শুনেন আপনার অমন গ্লুকোজ মার্কা হাসি
আমার খুব সুইট লাগে বুঝলেন তো। ব্যাঁ, ব্যাঁ ব্যাঁ ।
— আ্যাঁ কি তাই,,,,,!
— হ্যাঁ তাই , চুপ,,!

০৪/১২/১৯

নিলাম

বয়সী দুপর এঁকে দিচ্ছে
বিকেলের একগলা রোদ্দুরে
দ্বিপ্রাহরিক নিলাম।
দিগন্ত অবধি গলা চেঁচিয়ে বলছে
” নিলাম, নিলাম, নিলাম! ”

নিলাম হবে সকাল বেলার বাসি বকুল ফুল
নিলাম হবে বুকের ভিতর উথালপাতাল স্বপ্ন ।

বুকের পশমে অগ্রহায়ন এর জল জমেছে,
আজ এক চিমটি গোধূলির নিলাম হবে।
রাতের মুখ হয়েছে ভার, কুয়াশার দখলে তার ভূমি।
আমার কিছু মৃদু-উষ্ণ হাওয়া ওমের আকাশ,
যত্নে রাখা শীতের কিছু ওম,নিলাম হবে ।

আর নিলাম হবে ” যত্নে রাখা প্রেম ”
তোমার বুকের আগল খুলে নিবে কি ?

সারাক্ষণ শুধু ঘন্টা ধ্বনি বাজে বুকের তলে
দিনরাত্রি রাত্রিদিন জলের ঢেউ। আলগা মাটির ক্ষয়।
সন্ধ্যার উঠোনে আগুন জ্বলে ধিকিধিকি ।

ঘন অন্ধকার । শুন সান রাত্রি ।
তবুও কেউ বাজিয়ে যায় ওষ্ঠের কম্পন, মাতাল ভঙ্গিমা।

মাঝে মাঝে বুকের ভিতর সীমাহীন ধুক ধুক।
শব্দহীন। তাও কানে বাজে,
” নিলাম, নিলাম, নিলাম! ”

৩০/১১/১৯

নাকফুল

যে রমণী এখনো নারী হয়ে ওঠেনি
সে এখনো অবুঝ মেয়ে।
যে রমণী রোজ নাক ফুল পরে-অথচ
বুঝেনি তার মানে, সে এখনো পৃথিবী দেখেনি।

যে রমণী এখনো জানেনি নাকফুল শুধু নাকফুল নয়,
নাকফুল একটি জীবন,
নাকফুল একটি পরিচয়,
নাকফুল এর প্রতি কুঁচির ভাঁজে থাকে হাজার স্বপ্ন।
নাকফুল একটি জীবনের না বলা একটু একটু গল্প।
নাকফুল একটি রমণীর আশা, আকাঙ্খা, হাসি, কান্না ।
নাকফুল মানেই সারা জীবনের সুখ দুঃখের
হিসেব না মেলা জটিল গণিত ।

যে রমণী সতত মায়া মমতা স্পর্শ ভুলে কাছে
টেনে নিয়েছিল প্রিয় “নাকফুল”,
পরেছিল নাকের ডগায় ঝুলে থাকা চাঁদের স্বপ্ন আলোয়।
বুকে গেঁথে নিয়েছিল স্বেচ্ছায় গিলতে না পারা বিষ কাঁটা।
সে রমণীও ভেবেছিল, নাকফুলে মেয়েরা হয়ে যায় পূর্ণ নারী।

২৬/১১/১৯

একটি চুম্বন

তোমার একটি চুম্বনে
রক্তের বিষাদ থেকে একটি অঙ্কুরিত স্বপ্ন
চোখের পল্লব জুড়ে পুষ্পের মত ঝরে পড়ে।

একটি চুম্বন, পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলে
আরক্তিম ঠোঁটের অমর-সম্ভারে।
অথচ সকল সুখের আষ্টেপৃষ্ঠে কোনো চুম্বন নেই।
দিগন্ত ছোঁয়া আকাশ, দুপুরের রৌদ্রে
রাত্রির জোছনায় জ্বলে কোনোখানে
তোমার একটিও চুম্বন নেই।

আর কতকাল থাকে এই নির্জনতা, এই বিষণ্নতা,
নিঃস্বতার দেহে শুধু শূন্য কঙ্কাল-সার।

লজ্জায় আঁচলে মুখ ঢাকা যায়
লুকানো যায় নিজেকে সবার থেকে আড়ালে।
কিন্তু,
বেদনায় ক্ষতবিক্ষত বুকের ভিতর যে মন থাকে
তাকে কিছুতেই ঢাকা ও লুকানো যায় না।

যেখানে প্রথাগত, নীতিগত, এমনকি শৃঙ্খলিত সুখ
সেখানে হেরেমে’র মতো পুষ্পশোভা দেখে
হৃদয় পুড়িয়ে লাভ নেই ।

তোমার একটি চুম্বনের জন্য
মূলত আমি ঈশ্বরের ভিক্ষুক…!

তুমি রাজরাণী, মাথায় রাজ্যের মুকুট
তোমারই হেরেম, আছে উদ্বেলিত সুখ।
নীল রজনীর গোপন আকাশে তোমার আলোকিত
মঞ্চ, উদ্বেল উন্মাদ জনতা।
আমার ভীষণ বিষাদে বুকের রক্ত পাত
বাসি ফুলের শোকধ্বনিতে মন্দিরে বাজে শঙ্খ-ঘন্টা।

২৯/১০/১৯

মধ্যবিত্ত

মধ্যবিত্ত,
একটি গল্পের নাম, যা এখনো শেষ হয়নি।
অনাদিকাল ধরে চলছে তো চলছে
আরও কত বৎসর চলবে জানা নেই।

মধ্যবিত্ত,
একটি অলিখিত প্রেমের নাম, যা কখনো লেখা হবে না।
মধ্যবিত্তে ভালোবাসলে নারীরা হয়ে যায় পাহাড়
ছেলেরা হয়ে যায় অর্নগল ঝরে পড়া ঝর্ণা।
মেঘের আঁচল টেনে বুকে তুলে ঝড়ের বজ্রধ্বনি।

মধ্যবিত্ত,
একটি ফুলের নাম, যার সুভাস দুর্গন্ধ ছড়ায় কেবলই।
জ্বলন্ত কাঠের মতো হৃদয় পুড়বে
তবুও চন্দন জলে কেউ বৃষ্টি পাঠাবে না।

মধ্যবিত্ত,
একটি স্বপ্নের নাম, শ্মশান বুকে শুধু মেঘ জমিয়ে রাখা।
মেঘের ঢেউয়ে আঁচল ভরে সযত্নে কষ্ট লুকিয়ে রাখা।

০১/১১/১৯

দূরত্ব

এই যে শুনছেন,
আপনার এই ছোট্ট ছোট্ট খুনসুঁটি,এই ছোট্ট ছোট্ট আবদার গুলো আমার ভীষণ রকম ভালো লাগে।

আপনার এমন সব ছেলে মানুষি দেখতেই ভালো লাগে। সত্যি বলতে—
আপনাকেই আমার খুব ভালো লাগে! বলতে পারি না,।
কারণ,
আমার আর আপনার মাঝে পথের দূরত্ব সহস্র আলোক
বর্ষ দূরের পথ।

এই তো সেই দিন,
আশ্বিনের ইলিশগুঁড়ি বৃষ্টি স্নাত বিকেলে
এক রিকশায় দুজনে দুজনের ঘরে ফিরছি।
হঠাৎই, আপনার ফুচকা খাবার শখ,
তাও আবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রাস্তার কোনো মোড়ে,
অবাধ্য মেয়ের মতন রিকশা থেকে নেমে গেলেন
পিছন পিছন আমিও_____!

বৃষ্টি স্নাত ওই রূপে যে আপনার এত লাবণ্য এত সৌন্দর্য্য
লুকানো ছিল সেই দিন না দেখলে হয়তো আমার তা
অজানায় থেকো যেতো চিরকাল।
আপনার চোখের সমুদ্রে নেমে আমি সহস্র বার মৃত্যুকে
মেনে নিতে পারি।

অথচ আমি তা বলতে পারি না আপনাকে,!

আপনার একটু ঠান্ডা লাগলেই অসুখ হয়
গলা ব্যথা হয় প্রচন্ড রকমের, মাথা ঝিম ধরে আসে।
তারপরও আমার কাছে আইসক্রিম খাওয়ার তুচ্ছ
আবদার করে বসেন আপনি ৷

আমি অনুনয়ের চোখে যদি বলি আপনার শরীর এখন
ভালো না পরে খাবেন।
শাসনের চোখে তাকিয়ে বলেন আমায়,
আমি আনতে বলেছি আপনি আনবেন।
তাছাড়া আপনার এত কথা কেন-?হ্যাঁ!

এই যে আপনার অনুযোগ,অনুশাসন আমার বড্ড বেশি
ভালো লাগে। অথচ আমি বলতে পারি না।
কারণ,
আমার আর আপনার মাঝে পথের দূরত্ব সহস্র আলোক বর্ষ দূরের পথ।

২৫/০৯/১৯

শহর থেকে দূরে

দূরে যাবো দূরে,শহর থেকে নির্জনে সবুজ কোনো বনে
জোনাক খামে কিছু স্বপ্ন আনবো তোমার জন্যে কিনে ।

রাখালিয়া পথে রাখালিয়া বাঁশির সুরে
ভুলেই যাবো এমন ব্যস্ত-কোলাহল
এমন পাথুরে শহর।

মন ভুলানিয়া পাখির গানে গানে শুধুই
মন মাতিয়ে সাজবে অপরাহ্নে ওই
নীরব নিথর প্রহর ।

দূরে যাবো দূরে,অচিন কোনো গায়ে অচিন কোনো ঘরে
ছোট্ট সেই ঘর প্রেম সুধায় থাকবে নিত্য স্বর্গ সুখে ভরে।

০৩/১০/১৯

আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো

তুমি একটা পেটুক,
মস্ত একটা রাক্ষস!
তুমি একটা কালো ভূত,
আস্ত একটা মোটু!

বলব নাকো কথা,শুরু হলো আঁড়ি
নাকের নোলক চাই,সাথে নীল শাঁড়ি।

তুমি চাইলে আকাশ দেবো
আকাশ ভরা তারা,স্বর্ণ নীল আলোকছটা,
নিবে কি তুমি___?
তবে দু কদম এগিয়ে এসো-
জোছনা দেখার ইচ্ছে হলে চাঁদকে তোমার
ঘরের জানলা বানিয়ে দেবো।

আর কিছু দিই বা না দিই–
হৃদয় ভরে ভালোবাসা দেবো।

তুমি একটা মিথ্যুক,
কথার ছলে রঙিন ফানুস!
তুমি একটা স্বার্থপর,
চোখের জলে হৃদয় কিনো!

তোমায় দেখার ইচ্ছে হলে আকাশ দেখবো
কাজল জলে চোখ ভাসিয়ে স্বপ্ন ভাসাবো।

তুমি চাইলে মাতাল হবো
চুলের গন্ধ মেখে পাগল হবো
প্রেমের দায়ে দেউলিয়া হবো।
দেখবে কি তুমি___?
তবে হাত বাড়িয়ে আঙুল ধরো–
পা বাড়িয়ে দূরের কোনো পথে
ছন্নছাড়া উন্মাদনায় লাজের বাঁধন খুলে
দুজন দুজনের কাছে আসবো।

তুমি একটা মিথ্যে কবি
কথার সুরে হৃদয় বাঁধো!
তুমি একটা মায়ার ছবি
তোমার ভুলে ভুল সবই !

হঠাৎ করেই তোমার থেকে হারিয়ে যাবো-ফিরবো না
মনের ভুলে চাইলে তোমায় আমায় ফিরিয়ে দিও না।

তোমায় নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল
তোমার মাঝে আমার অনেক কথা ছিল
তোমাকে আমার অনেক কিছুই বলার ছিল।
এ জন্মে তা আর পূর্ণ হলো না।

আর কিছু হই বা না হই–
তোমার চোখের কাজল হবো,পায়ে পায়েল হবো।
বৃষ্টি সুরে সুরে গান শোনাবো।
আর কিছু হই বা না হই–
তোমার কানের দুল হবো,খোঁপায় গাঁথা বেলি হবো।
বাদল দিনের কদম হবো।
আর কিছু হই বা না হই–
তোমার ঘরের আয়না হবো,অপলকে তোমায় দেখবো।
চোখের তারায় আকাশ আঁকবো।
আর কিছু হই বা না হই–
তোমার নাকের নোলক হবো,শ্বাসপ্রশ্বাসে ছোঁয়া পাবো।
এ জন্মের দূরত্বটা এক নিমিষেই ভুলে যাবো।
তোমায় নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল
এ জন্মে তা আর পূর্ণ হলো না।

২৯/০৯/১৯

দূরত্ব

এই যে শুনছেন,
আপনার এই ছোট্ট ছোট্ট খুনসুঁটি,এই ছোট্ট ছোট্ট আবদার গুলো আমার ভীষণ রকম ভালো লাগে।

আপনার এমন সব ছেলে মানুষি দেখতেই ভালো লাগে। সত্যি বলতে—
আপনাকেই আমার খুব ভালো লাগে! বলতে পারি না,।
কারণ,
আমার আর আপনার মাঝে পথের দূরত্ব সহস্র আলোক
বর্ষ দূরের পথ।

এই তো সেই দিন,
আশ্বিনের ইলিশগুঁড়ি বৃষ্টি স্নাত বিকেলে
এক রিকশায় দুজনে দুজনের ঘরে ফিরছি।
হঠাৎই, আপনার ফুচকা খাবার শখ,
তাও আবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে রাস্তার কোনো মোড়ে,
অবাধ্য মেয়ের মতন রিকশা থেকে নেমে গেলেন
পিছন পিছন আমিও_____!

বৃষ্টি স্নাত শরীরে যে আপনার এত লাবণ্য এত সৌন্দর্য্য
লুকানো ছিল সেই দিন না দেখলে হয়তো আমার তা
অজানায় থেকো যেতো চিরকাল।
আপনার চোখের সমুদ্রে নেমে আমি সহস্র বার মৃত্যুকে
মেনে নিতে পারি।

অথচ আমি তা বলতে পারি না আপনাকে,!

আপনার একটু ঠান্ডা লাগলেই অসুখ হয়
গলা ব্যথা হয় প্রচন্ড রকমের, মাথা ঝিম ধরে আসে।
তারপরও আমার কাছে আইসক্রিম খাওয়ার তুচ্ছ
আবদার করে বসেন আপনি ৷

আমি অনুনয়ের চোখে যদি বলি আপনার শরীর এখন
ভালো না পরে খাবেন।
শাসনের চোখে তাকিয়ে বলেন আমায়,
আমি আনতে বলেছি আপনি আনবেন।
তাছাড়া আপনার এত কথা কেন-?হ্যাঁ!

এই যে আপনার অনুযোগ,অনুশাসন আমার বড্ড বেশি
ভালো লাগে। অথচ আমি বলতে পারি না।
কারণ,
আমার আর আপনার মাঝে পথের দূরত্ব সহস্র আলোক বর্ষ দূরের পথ।

২৫/০৯/১৯

পুনশ্চঃমুখোমুখি

গোধূলি সিঁথির ভাঁজে নির্জনে রাত নেমে আসলে
মেয়েলি হাতের স্পর্শে শিউলির জানালা খুলে দেয়
বাতাসে ঝিঁঝিঁর গন্ধ!

শিয়রে দাঁড়িয়ে রূপবতী চাঁদ-মুখোমুখি “তুমি আমি”!
জোছনার উঠোন জুড়ে নিঃশব্দময় আকুলতা
তুমি বলবে না আমি বলবো এই দ্বিধাদ্বন্দের ব্যকুলতা।

দিন মাস বছর ঋতু শেষে আজ তুমি নিরুত্তর,
রঙিন সম্পান জোড়া ভ্রু,রেল লাইন সমান্তরাল ঠোঁট
ভোরের নদীর মতো শান্ত কোমল।

মুখোমুখি ” তুমি আমি”,নিঃশ্চুপ গাঢ় রাত্রি
ধূসর মৃত্যুর চোখ আহ্লাদে ভরা- যেন নগ্ন খুনি জোছনা ।
আলো মাড়িয়ে আসা নীরব সন্ধ্যা,
এই রাত থমকে গেছে আমাদের মধ্যমায়।

প্রণয়ী অন্ধকার ভোরের উপকূলে ঝরে পড়া
কবুলের মতো নিশ্বাস নিতে নিতে বলে –
যেতে হবে দূরে, দূর থেকে বহুদূরে।
দেখে নাও এই ঠোঁট, এই চোখ, এই চুল,
আর এই যে আঙুল যা একদিন তোমার আপন ছিল।

বলা না বলা কথা রয়ে গেলো বুকে,চলে গেলে তুমি,
অথচ একটি রাত কেটে গেলো আমাদের
মুখোমুখি “তুমি আর আমি” পুনশ্চঃ ভোরে, পুনশ্চঃ রাতে।

২৪/০৯/১৯

মুক্তি

এ পাশে অন্ধকার। ওপাশে নীলময়ী খোলা আকাশ।
আছে মুক্তি। আছে সুখ-ভালোবাসা। আছে প্রশান্তি।
হাত বাড়িয়ে আকাশ ছোঁয়া যায়। ওই সবুজ দিগন্তও।
পা বাড়িয়ে হয় না যাওয়া কোথাও। দেখা হয় না কিছুই।

মুক্তি! অনেক দূরের পথ। সীমাহীন অন্ধকার।
প্রায়ই খুঁজে চলি সেই একটি পথ। কোথায় সে?
মুক্তি! যেভাবে আলো সরিয়ে দেয় অন্ধকার
সেভাবে তুমি আসো। তোমার অপেক্ষায় আছি।

মুক্তি! দিন গুনে বছর শেষ। তবুও অপেক্ষা শেষ নয়।
শুধু অপেক্ষা করছি মুক্ত হওয়ার জন্যে।
এপাশে অন্ধকার। ওপাশে নীলময়ী জোছনা
হাত বাড়িয়ে আমায় ডাকে। দাঁড়াও একটু আমি আসছি।

১৩/০৯/১৯

নিমন্ত্রণ

এই যে মেয়ে শরৎ রাণী আকাশ জুড়ে মেঘেদের ঢল
তোমায় দেখার একলা আকাশ কাশ ফুলেদের ছল।
নীলচে জলের আয়না কারুকাজ নূপুর পায়ে দুপুর
ঘাস ফড়িঙের ডানায় চড়ে স্বপ্নগুলো যাচ্ছে কত্তদূর।
অচিন পুরের অচিন মেয়ে নিখাদ চোখে অরুণিমা মন
শাপলা শালুক পদ্ম কমল তোমায় যে করছে নিমন্ত্রণ।

হাতের মুঠোয় নীলচে জোনাক আলোক ভরা জ্যোতি
হৃদয়পুরে উঠোন জুড়ে চলছে আজ কোন সে আরতি।
ভাদ্র মাসের তালের পিঠা নতুন ধানের চিড়া মুড়কি খঁই
ঘুমস্নিগ্ধ ঘাসফুলে আলতো পায়ে এসো ওই ভোর ছুঁই।
একগুচ্ছ বিকেল কাঁচের চুড়ি নীল শাড়ি কত্ত আয়োজন
ভিজা চুল আয়নায় উঁকিঝুঁকি করছে আজ ভীষণ নিমন্ত্রণ।

০২/০৯/১০

তুমি রিযিক দাতা

তুমি রিযিক দাতা,জীবন দাতা
মালিক সবারই,
তোমার নামে চলে বিশ্বনিখিল
করুণা তোমারই ।

দয়ার সাগর তুমি আকাশ নীলে
সীমাহীন কৃপায় ভরিয়ে দিলে।।
কুরআন সবার জীবন বিধান প্রেরিত বাণী
সেই আলোকে জীবন গড়ি।

করছি শুধুই পাপ নিজের ভুলে
দাও নি তবুও তুমি দূরে ঠেলে।।
রেখেছো তুমি খুলে ক্ষমার দুয়ার চিরদিনই
নতহয়ে তাই সিজদা করি।

২৭/০৫/১৯

তোমার ইচ্ছে হলে

তোমার ইচ্ছে হলে বৃষ্টি পাঠিয়েও
মেঘলা আকাশ
বাদল ঝরো দিনে !

তোমার ইচ্ছে হলে কদমে সাজিয়েও
বৃষ্টি সুরে সুরে
একলা আনমনে!

তোমার ইচ্ছে হলে আমার খবর নিও
একলা আকাশ
দেখার সময় করে!

তোমার ইচ্ছে হলে আমায় ভাবিয়েও
শ্রাবণও দিনে
জানালার গ্রীল ধরে!

তোমার ইচ্ছে হলে উড়ো চিঠি লিখিও
মনের সব
না বলা কথা দিয়ে!

তোমার ইচ্ছে হলে সোনা চলে আসিও
আমার কাছে
আলতা রাঙা পায়ে!

তোমার ইচ্ছে হলেই উঠোন ভাসিয়েও
জোছনা নদীর
নীলময়ী ঢেউয়ে!

তোমার ইচ্ছে হলেই দীপন্তি ভালোবাসিও
একলা একাকে
নিজের মত করিয়ে।
২৮/০৭/১৮