জানুয়ারী ২০২৫ থেকে শব্দনীড়কে শব্দলিপি নামে পুনরায় চালু করা হয়েছে সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে শব্দলিপি চালু আছে। শব্দলিপির আয়ের নির্দিষ্ট কোন উৎস নেই। এই সাইট চালু রাখতে ডোমেইন ,সার্ভার,হোষ্টিং,ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আপনার প্রতিষ্টানের বিজ্ঞাপন শব্দলিপিতে দিতে পারেন। এক কালীন বা মাসিক ভিত্তিতেও অনুদান বা সাহায্য করতে পারেন ।
আপনার অনুদান ছোট হলেও ক্ষতি নেই। শব্দলিপি হিসাব খাতে স্বনাম প্রকাশ অথবা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিসেবেও আপনি থাকতে পারেন শব্দলিপির পাশে। শব্দলিপি অনলাইনে রাখার জন্য আপনার সহায়তা কামনা করছে।
বিজ্ঞাপন বা অনুদান দিতে মন্তব্যে জানালে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করবো, সাথে থাকুন ।
ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের কান্না ও আমাদের প্রত্যাশা
একটা কথা শুনা যাচ্ছে, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে তিন/চার/পাচ বছর কাজ করার সুযোগ দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর /মালয়েশিয়া ইত্যাকার উন্নত রাষ্ট্রের অনুরূপ হয়ে উঠবে।
লি কুয়ান ইউ, জিসিএমজি, সিএইচ, এসপিমেজে (জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ – মৃত্যু: ২৩ মার্চ, ২০১৫) স্ট্রেইট সেটেলম্যান্টসে (ব্রিটিশ আমলের সিঙ্গাপুর) জন্মগ্রহণকারী সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতার পর ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করেন। তিন দশকেরও অধিক সময় রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তাকে ‘সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে পকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে দেশ স্বাধীন হয়। তার শাসন আমলে দেশে কোন কোন উন্নয়নের সূচনা হয়েছিল বটে কিন্তু তিনি সফল হন নাই। বরং বাংলাদেশের মানুষ আরও গরীব হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নড়বড়ে। ১৯৭৪ সালে নেমে আসে দুর্ভিক্ষ। কংকালসার মানুষ হয়ে পড়ে বাংলাদেশের সিম্বল।
স্বাধীনতার পর আমরা আগাইনি। বরং আর্মিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা পরস্পর রাজনৈতিক খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়ে পরে।
১৯৭৪ সালে জাসদ তাদের চিন্তাধারা তৈরি হলো, “আন্দোলন মানে সশস্ত্র সংগ্রাম আর সংগঠন মানে সেনাবাহিনী।”
সেজন্য জাসদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠে বিপ্লবী গণবাহিনী। এছাড়া সামরিক বাহিনীর মধ্যে ১৯৭৩ সালে থেকে কাজ করছিল বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।
১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইং হতে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘটে যায় সামরিক বাহিনীর নানা ক্যু পাল্টা ক্যু। অবশেষে মেজর জিয়াউর রহমান চলে আসেন ক্ষমতায়। বাংলাদেশের মানুষের আছে ইসলাম ধর্মের প্রভাব, আছে সমাজতন্ত্রের প্রভাব, আছে হিন্দু সাংস্কৃতিক চর্চা, আছে মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার দ্বন্ধ । এই সকল প্রভাবের মাঝে মেজর জিয়াউর রহমান হয়ে উঠেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এমনকি যাদের প্রত্যক্ষ মদদে তিনি ক্ষমতার শীর্ষে আসেন, তাদের তিনি সামরিক কায়দায় নিয়ন্ত্রণ করেন। এবং তিনি স্বৈরাচারী নীতি গ্রহণ না করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাস্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করেন।
সিঙ্গাপুর যেভাবে এগিয়েছে জিয়াউর রহমান সেদিকে যান নি। সামরিক বাহিনীকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন সিভিল সোসাইটির প্রতি তিনি সেই ভাবে আগান নি। তিনি সকল রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত দ্বন্দ্বগুলিকে ঐক্যের ভিত্তিতে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকাংশে সফল হয়েছিলেন । তিনি বুঝেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন হওয়া রাস্ট্রগুলি গণতান্ত্রিক পথে ধরেই রাজনৈতিক খুনাখুনি এড়িয়ে সিভিল প্রসাশনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারাকে নিয়ে এলেন রাজনীতিতে। এদিন রাস্ট্র ছিল সমাজতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার ধারক ও বাহক। বরং শেখ মুজিবর রহমান দেশকে কমিউনিউজমের মতাদর্শের চরম মতামতে দিকে দেশকে পরিচালিত করতে চেয়েছিলেন । ১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা পেয়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি সকল প্রকার মতাদর্শের মাঝে একটা ঐক্য গড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। দেশ পেয়ে যায় গণতান্ত্রিক পথ। কিন্তু তিনিও সামরিক হানাহানির করুন স্বীকারে পরিনত হন। আর ছিটকে যায় দেশ। আবার স্বৈরাচার ঝেপে বসে দেশের নেতৃত্বে।
১৯৯০ সালের ও ২০২৪ সালের পটপরিবর্তনের ইতিহাস আমরা জানি। আমরা জানি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে চক্রকারে ঘুর্নায়মান রাজনীতি। হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও, পুড়াও, রাজপথে গণপরিবহনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ আজও আমাদের কানকে ভারী করে তুলে। কিন্তু যে-ই ক্ষমতায় যায় সেই নির্বাচন পদ্ধতিকে টেম্পারিং করে নিজের গদীকে চিরস্থায়ী করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫ সুদীর্ঘ ৩৫ টি বছর রাজনৈতিকভাবে দেশ এগোয়নি এক রত্তি। কিন্তু দেশ থেমে থাকেনি।
১৯৭২-৭৩ সালে তাজউদ্দীন আহমেদ যে বাজেট দেন তার আকার ছিল ৭৮৬ কোটি, ১৯৭৬-৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাজেট দেন তার আকার ছিল ১৯৮৯ কোটি, ১৯৭৭-৭৮ সালে লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান যেই বাজেট দেন তার আকার ছিল ২১৮৪ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ সালে আ হ ম মোস্তফা কামাল যেই বাজেট দেন তার পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ ৬১ হাজর ৭৮৫ কোটি টাকা।
সময়ের চাকা ঘুরছে আর অর্থনীতির আকার বেড়েছে। বাংলাদেশিদের মাথা চক্কর দিয়াছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ডামাডোলে। কি বিশাল কর্মকাণ্ড! আর এর অন্তরালে চলছে দূর্নীতির মহা উৎসব। এমনকি এক পর্যায়েতো দূর্নীতিতে পর পর পাঁচ বার পৃথিবীর সেরা পদ অলংকৃত করেছে। এরপর বাংলাদেশ দেখল মেগা প্রজেক্টের মেগা ডাকাতি, ব্যাংক লুটপাটের কাহিনি। আই ওয়াশ করে দুইটি পরিবারের লুটপাট দেখেছে মানুষ। আর শুনা গেছে উন্নয়নের বাদ্যবাজনা। কখনও এক পরিবার লুট করেছে তাদের স্বার্থরক্ষাকারী সহযোগিতায় আবার কখনও অন্য পরিবার আর তাদের রাজনৈতিক অনুসারীরা।
মানুষ! ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পরবর্তীতে গরীব মানুষ যেই অবস্থায় ছিল আজও সেই অবস্থায় আছে। ধনিক শ্রেণী আর চালাক সুবিধাবাদীরা রাস্ট্রীয় লুটপাতে অংশীদার হয়ে একটা অতি ধনিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে। আর গরীব দিন দিন ক্রমে গরীব থেকে গরীব হয়েছে।
অতি উচ্চমাত্রার প্রচার প্রচারনায় বাংলাদেশের এই প্রকৃত চিত্রটি হারিয়ে গিয়াছিল। নব্বুইয়ের দশকেও বাজেট ঘোষিত হলে বলা হত গবীর মারার বাজেট। কিন্তু গত এক দশকে তেমন শ্লোগান শুনেছি বলে মনে করতে পারি না। সবকিছু ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, মুখগুলো ছিল তালাবদ্ধ। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে কথা বলার লোক ছিল না। ছিল দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব। এক পক্ষে লুটের মহোৎসব করেছে, আর এক পক্ষে ছিল হাহাকার। জনগণ বুঝে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলন হল ভাগ না পাওয়ার বা লুটে নেতৃত্ব দিতে না পারার ক্রোধ। তাই সব আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছিল।
কিন্তু যখনই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নামে আন্দোলন হল শুরু, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিল যুব সমাজ আর মরল কাতারে কাতারে। দেশের মানুষ নেমে এলো রাজপথে । শুরু হলো গণ-জোয়ার। হলে গেল গণঅভ্যুত্থান। এক পক্ষ পালাল। অন্যপক্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠল। অভ্যুত্থানের তিন দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন দেয়ার জন্য সভা সমাবেশ করল। কারন তারা জানে এই নির্বাচন ব্যবস্থা তাদের পেশিশক্তি ও অর্থশক্তির উপর নির্ভর। ঢ়েহেতু এক পক্ষ পালাইছে অন্য পক্ষের কাছে নির্বাচনে জয়ী হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।
কিন্তু বাধ সাধলো বৈষম্য বিরোধীরা। তারা আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে এসে সরকার প্রধান করে দিল। সেনাপ্রধানের সমর্থনে সর্বজনীনভাবে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠলেন এই অর্থনীতিবিদ। প্রাথমিক ঝক্কি সামলাতে সামর্থ্য হওয়ার পর তিনি যখন অল্পসময়ে একে একে সফল হতে লাগলেন, তখন নানা মহল থেকে দাবী উঠলো দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে তাকে রেখে দিতে হবে ক্ষমতায়।
কিন্তু এই সন্মানিত ব্যক্তিত্ব একি করলেন! দেশ বিদেশ থেকে গণ্যমান্য প্রভাবশালী কোম্পানির ডেকে এনে তাদের সামনে বাংলাদেশকে উলঙ্গ করে দিলেন! তিনি কেঁদে উঠলেন! এদেশের গরীব মানুষের কথা স্মরণ করে কেউ কাঁদে! তাও আবার ব্যবসায়িদের মিলনমেলায়। ব্যবসায়ীরা পুজির পুজো করে। প্রফিট করাই যাদের মুল কাজ। তাদেরকে কেঁদে কেঁদে বললেন, আমরা খুবই গরীব। এখানে চার কোটি মানুষ দৈনিক ১০০ টাকায় চলে। তিনি এখানে ইনভেস্ট করার আহ্বান করলেন। তিনি এখানে তার সামাজিক ব্যবসার কথা বললেন। তিনি গরীব মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরনের।
আর স্পষ্টতই তিনি এদেশ নিয়ে যারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হবার স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই চাওয়াকে পাশকাটিয়ে সারাজীবন তিনি যা চেয়েছেন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী সেই দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।
কিন্তু তিনি কিভাবে নির্মাণ করবেন বৈষম্য হীন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী! যেখানে তার নিজের দেশে রয়ে গেছে গরীবের অনেক বেশি ছড়াছড়ি। অন্তত একটি দেশেতো তার থিওরির বাস্তবায়ন দেখাতে হবে। সমস্ত পৃথিবীর প্রশ্নতো আসবে পরে। অন্তত একটা দেশতো করে দেখাতে হবে দরিদ্রমুক্ত বেকারমুক্ত।
অনেকে সিঙ্গাপুরের, মালয়েশিয়ার আবদার নিয়ে আসছে, কিন্তু দেশর মানুষ চেয়ে আছে তার দিকে কিভাবে তিনি গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত দেশ করতে চান তার সঠিক পথনির্দেশনার দিকে।
অপেক্ষায় রইলাম।
ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী করার পরিকল্পনা ফাঁস
৫ আগস্টের পর বাংলাদেশিদের মাথায় ভর করেছে একটা নাম- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।
ওয়াজের সুপারস্টার মিজানুর রহমান আজারি, মুফতি ইব্রাহিম, রফিকুল্লাহ আফসারী, আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন মনমানসিকতার ইসলাম প্রচারকসহ- রমজানে দেশের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ আজ একটা নাম উচ্চারণ করছে- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। আপনি যদি জনগণের কন্ঠস্বরকে উপলব্ধি করতে পারেন তবে বুঝতে পারবেন- ডক্টর ইউনুস ইজ অন প্রেইজড। প্রসংশার বানে ভাসছেন – ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।
বাঙালি ভূতগ্রস্তের মত আচরণ করছে। আর ভুত তাড়নী ওঝা হয়ে আসছে আর এক উচ্চারিত ইসমে আজম- নির্বাচন নির্বাচন।
৭১ পূর্ববর্তী বাঙালি জাতিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এক সাধারণ লেবাসের মাওলানা ও গরীব মানুষের সমাজতান্ত্রিক কন্ঠস্বর মহান নেতা মাওলানা ভাসানী ও ৭৫ পরবর্তী আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিন্তানায়ক ও রূপকার মেজর জিয়াউর রহমান। এই দুই নেতাই ছিলেন সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যতদ্রষ্টা, চালচলনে সাধারণ। এই দুই নেতা বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে ভালোবাসার সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।
উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে! অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই। সুযোগ পেয়েই তিনি নিজেকে আস্তে আস্তে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।
জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। যেন তাকে ভূতে ভর করেছে- আবোলতাবোল বলে বসলেন- তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার ইচ্ছা লালন করেন । মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।
ওদিকে ভূতছাড়ানো জপমালা- নির্বাচন, নির্বাচন। এদিকে সরসিজ নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে দেখা!!! নাহ্, ভাবা যাচ্ছে নাহ্।
কি ভাবে সম্ভব?
কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে দীর্ঘমেয়াদী পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন। আর দিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক খেলায় মাতিয়ে তুলবেন। কিন্তু নিজ দেশ ও জাতি তাকে চাইছে। এ চাওয়া আরও দৃঢ হচ্ছে।
তাহলে? কোন উপায় কি নেই?
এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।
আমি মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি মাওলানা ও মেজর সাহেবের পর তিনি হতে পারেন অনন্য গ্রহণযোগ্য নেতা। তিনি যেমনি আন্তর্জাতিক ভাবে কোয়ালিফাইড ও স্বীকৃত, তেমনি গরীব গন মানুষের জন্য আছে তার অর্থনৈতিক ভাবনা। পুঁজিবাদ ও কমিউনিস্ট মতাদর্শের ব্যর্থতার পর তার মতবাদ আলোচিত, স্বীকৃত। যদি তার অর্থনৈতিক মতবাদ থেকে সুদকে বাদ দেয়া যায় তবে বিস্মিত হয়ে লক্ষ করা যায় যে, তার চিন্তাধারা ইসলামি আদর্শের বিপরীততো নয়ই বরং সমার্থক। ( এই ব্যাপারে আলোচনা চলতে পারে)। ফলে এই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তার মতবাদ জনগন কতৃক সমাদৃত হতে পারে।
আমরা কেবল বলতে পারি। কিন্তু তিনি যোগ্যতা রাখেন। তার চালচলন অনাড়ম্বর, বেশভূষা সাধারণ, মানুষকে প্রভাবিত করার অনন্য দক্ষতা আছে তার। তাকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভূতগ্রস্ত মানুষের ডাকে।
তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী কয়েক মাসের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। কেমন হবে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামো। এটা তার মানের হলে হয়ে উঠবে একটা রাজনৈতিক দলের ইশতেহার।
বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে।
এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে পাস করিয়ে নেয়া হতে পারে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।
এর মধ্যে আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ফিরে আসবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় কোন অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় থাকলে আইনমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সংশোধিত করে নিতে হবে।
এই বর্তমান সরকারের মধ্যে হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে যাদের কাজ হবে নির্বাচন করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের পদ হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা।
।। ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে সুদৃঢ করতে হবে এবং নির্বচনের প্রস্তুতি নিবে।।
স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা সর্বস্তরের ব্যাপক সাড়া ও সফলতা পাওয়া যাবে।
এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির ইতিহাসে অনন্য কর্ণধার।
রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী
রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ
প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি উঠতে বসতে সিনায় সিনায় একটা জিগির তুলছেঃ নির্বাচন নির্বাচন। ৫ আগষ্টের চেতনা তারা ধারণ করে না, এটা স্পষ্ট বরং এই ৫ আগষ্টের কথা বললে যেন তাদের অন্তর হয় ছেড়া বেড়া। নির্বাচনকে পেশী মুক্ত, কালো টাকা মুক্ত, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল প্রকার নির্বাচনের যে কোন প্রস্তাবই দেয়া হোক না কেন তারা কেবল বলে, না। নির্বাচন দাও নির্বাচন দাও জিগির তোলে কিন্তু যদি বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক তখন তারা বলে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, যখন বলা হয় আগে স্থানীয় নির্বাচন তখন তারা বলে আগে জাতীয় নির্বাচন হোক তারপর সরকার এসে স্থানীয় নির্বাচন করে নেবে। ঠিকাছে আস জাতীয় নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য সংস্কার শেষ করি, তারা বলে আগে নির্বাচন হোক পরে যারা ক্ষমতায় যাবে তারা সংস্কার করা যাবে। এবং হুমকি দেয় যদি সংস্কার কিছু করাও হয় তবে তারা সেই সংস্কার বদলে দেবে।
ড.ইউনুসের হাতের কোন সংস্কার BNP মেনে নিবে না এমনকি ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার পাল্টে ফেলবো বলে ছাত্র জনতাকে হুমকি দিলেন BNP’র মির্জা আব্বাস।
“ওদের হাতের (ইন্টেরিম সরকারের) কোন সংস্কার আমরা মেনে নিবো না, সংস্কার করলেও আমরা ক্ষমতায় এসে চেঞ্জ করে ফেলবো”- মির্জা আব্বাসের এই দাম্ভিক বক্তব্য নতুন কিছু নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র!
স্মরণ করি,নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালের শাহাবুদ্দীন সরকার ২৯টি সংস্কার কমিটি গঠন করে। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে ২৯টি সংস্কার কমিটির প্রস্তাবিত তেমন কোন সুপারিশই বাস্তবায়ন করেনি।
এমনকি এরশাদ পতনের পর তিন দলীয় যে রূপরেখা হয়েছিল, ১৯৯৪ সালের মাগুরার উপ ইলেকশনে বিএনপিই সেই রূপরেখা প্রথম ভায়ালেট করে।
সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বেশিরভাগ মানুষের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজেদের অধীনেই নির্বাচন করে।
মনে পড়ে? তখন জামাত, আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। গঠিত হয় জনতার মঞ্চ। আন্দোলনের তোপে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় বিএনপি।
তারপর বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ২০০১ সালে। ২০০১ সালের লতিফুর সরকারের সময়ে টিআইবি কে দিয়ে ১৬টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ করা হয়। বিএনপি সেগুলোও অনুসরণ করেনি।
তারপর ২০০৪ সালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সংবিধানের বিতর্কিত চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স বৃদ্ধি করে নেয়। যাতে করে নিজেদের লোক তত্বাবধায়ক সরকারে বসাতে পারে।
এই বিতর্কিত সংশোধনীকে কেন্দ্র করেই লগি-বৈঠা আন্দোলন শুরু হয়। আওয়ামী লীগ লাশের উপর নৃত্য করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে এক এগারো সরকার আসে।
রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় টিকে থাকার এই অতীত ইতিহাস সম্পর্কে এই প্রজন্ম ভালো করেই জানে। সংস্কার মানি না, সংস্কার চেঞ্জ করে ফেলবো এসব নতুন ইতিহাস নয়। আগেও হয়েছে।তাই ওদের হাতের সংস্কার আমরা মেনে নিবো না বলে মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য দিসে, সেটা তাদের দলেরই ঐতিহাসিক রূপকে প্রতিফলিত করে।
জুলাই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সেই কমিশন নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তাবনাও অলরেডি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাবমিট করেছে।
জুলাই যদি ব্যর্থ হয়, সংস্কারকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো অপোজ করে তাহলে মনে রাইখেন ইতিহাস সচেতন এই প্রজন্ম আর কাউকে ছেড়ে দিবে না,ইনশাআল্লাহ।
এদিকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম ছয় মাসে অগোছালো হলেও আস্তে আস্তে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনি তার জাত চিনাতে শুরু করেছেন। রমজান ২০২৫ (মার্চ ২০২৫) এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সামর্থ্য হয়েছেন তার সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দব্যমুল্যের উর্ধগতিকে থামাতে এই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ কাজে দিয়াছে, ঈদে মানুষের যাত্রাকে সহজ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশ সফল, চীন সফরে মাথা উচু করা ভূমিকা, সর্বপরি বিমসটেক সম্মলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্মানসূচক কথোপকথন আমরা বাংলাদেশির ব্যাপক আমোদিত করেছে।
আর এই অভাগা জাতি আমরা এইটুকু সফলতাতে এত বেশি আবেগাপ্লুত যে, ইউসুস স্যারকে কমপক্ষে ৪/৫ বছরের জন্য ধরে রাখতে চাই।
কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব?
অনেকেই অনেকের কথা বলেন কিন্তু আমি মনে করি মাওলানা ভাসানী বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তার বেশভূষা ছিল গরীবি, টাইটেল ছিল মাওলানা, অত্যন্ত বাকপটুতা যাকে অনন্যতা এনে দিয়েছিল। ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে যিনি বাঙালি জাতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।
এবং তার তরুন উদিয়মান শিষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো বটে কিন্তু স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব ভুলে তার গুরুর গুরুত্বের কথা।
পরবর্তী পর্যায়ে নানা পটপরিবর্তনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলেন। মাওলানা ভাসানীর তখনকার দল ন্যাপ ছিল, রাজনীতিতে তখনও তিনি ছিলেন সক্রিয়, শেখ মুজিবের সমালোচক ছিলেন। তিনি সমর্থন দেন জিয়াউর রহমানকে। জিয়াউর রহমানের অনাড়ম্বর জীবন ও রাস্ট্র পরিচালনায় অনন্য দক্ষতায় বাংলার মানুষের হৃদয়ে সেই যে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আজও তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রয়ে গেছে।
গত চুয়ান্ন বছরে দুইজন নেতা মাওলানা ভাসানী ও জিয়াউর রহমান বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।
উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে। অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই।
অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।
এরই মাঝে জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। তিনি তার মনের এক ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।
কিন্তু কি ভাবে সম্ভব? কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন।
তাহলে? কোন উপায় কি নেই?
এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।
তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী ছয় মাসের ভিতর কিংবা সম্ভব হলে আরও কম সময়ের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে। এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব পাস করিয়ে নেয়া হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।
তাহলে এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ হয়ে যাবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের প্রদান হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা। এই সরকারের মধ্যে হতে কিম্বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে।
ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপি নির্বচনের প্রস্তুতি নিবেন।
স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা যায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।
এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির অনন্য কর্ণধার।
খোলা চিঠি
প্রিয়তমা,
কলম হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। কী লিখব, কোথা থেকে শুরু করব, বুঝে উঠতে পারছি না। বুকের মধ্যে একরাশ কষ্ট আর অপরাধবোধ জমাট বেঁধে আছে। তবুও আজ তোমার কাছে মনের সবকিছু খুলে বলতে চাই।
তুমি কেমন আছো? এই প্রশ্ন করাটা হয়তো বোকামি, কারণ আমি জানি, তোমার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবই আজ আমার ব্যর্থতার সাথে জড়িয়ে আছে। তোমার মুখের সেই নির্মল হাসিটা বহুদিন দেখিনি। তোমার চোখের গভীরে যে স্বপ্নগুলো ছিল, সেগুলো যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে, আর আমি শুধু নির্বাক দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে দেখছি।
জানো, আমি কতটা চেষ্টা করি? প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে চাই, প্রতিদিন প্রতিজ্ঞা করি যে, তোমার জীবনটাকে সুখের আলোকিত পথে নিয়ে যাবো। কিন্তু বাস্তবতা আমাকে প্রতিবার থামিয়ে দেয়। একের পর এক ব্যর্থতা আমাকে গ্রাস করে, আর আমি ধীরে ধীরে এক অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। তবু তুমি আছো, আমার পাশে, নিরব সাক্ষী হয়ে।
আমি জানি, আমার অভাব-অনটন তোমাকে কষ্ট দেয়। হয়তো অন্যদের মতো তোমার জীবনটা সুন্দর হতে পারত, নিশ্চিন্তে কাটাতে পারতে তোমার দিনগুলো। কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারিনি তোমাকে, কিছুই না! শুধু এই অপরাধবোধে আমি প্রতিদিন নিজেকে শাস্তি দিচ্ছি।
তবুও আমি তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি, এক নিঃশ্বাসে, এক অন্তরের গভীরতম কোণ থেকে। তুমি আমার জীবনের সেই আলো, যে আমাকে বারবার ভেঙে পড়ার পরও বাঁচতে শেখায়। তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি এখনো স্বপ্ন দেখি, এখনো বিশ্বাস করতে চাই, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
যদি কখনো মনে হয় আমি তোমার বোঝা, যদি কখনো মনে হয় আমার ব্যর্থতা তোমাকে দাবিয়ে ফেলছে—তবে একটিবার আমার হৃদয়ের ভেতরটা অনুভব করো। দেখবে, সেখানে শুধু একটাই নাম লেখা—তোমার নাম!
তুমি আমার শ্বাস, আমার অস্তিত্ব, আমার শেষ আশ্রয়। যদি আমি শতবারও ভেঙে পড়ি, তবুও আমি তোমার হাতটা ছাড়বো না। কারণ, আমি তোমাকে সত্যি সত্যি, নিখুঁতভাবে, অসম্ভব রকম ভালোবাসি।
চিরদিনের জন্য,
অকৃতজ্ঞ এক মানুষ
অবচেতন ইশারা
থুথু ফেলে দিয়ে আবার
মাটি থেকে চেটে খাওয়ার অভ্যাস নেই আমার,
তবুও মাঝে মাঝে সন্দেহের বোরাক
চেপে ধরে মাটিতে।
তখন অসহ্য যন্ত্রণায় তিতো লাগে সকল অস্তিত্ব,
একটু বেঁচে থাকার জন্য
হাঁসফাঁস করতে করতে উঠে বসি।
বর্তমান তরঙ্গের সাথে
বাঁচা-মরার প্রতিশ্রুতিতে আক্ষেপ থেকে যায়,
সেও বুঝি চোখ বন্ধ করে!
হৃদয়-চোখে হাজার প্রশ্নের ঝড় তুলে,
লণ্ডভণ্ড করে আমায়!
কি জানি! কি পাপ করেছি এ প্রকৃতির সাথে,
যে শুধু দাবিয়ে রাখার খেলায়
আমি একটি বস্তু মাত্র—
অবচেতন ইশারায়
আমাকে বারবার ঠুকি দিয়ে চলে যায়।
মনগড়া কলেমায় আমি থেকে যাই
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের খলনায়ক চরিত্রে।
কে জানে!
নিয়তির এ দুর্গমগিরির অন্ধকার পথে,
পাশে থেকেও,
আর কতটা পথ একা একা হাঁটা লাগে?
ঈদ মুবারকঃ কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন
হাই হ্যালো।
কেমন আছেন?
সকলকে জানাই ঈদ মুবারক। সকলে আমার পক্ষ থেকে গ্রহণ করুন লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।
আচ্ছা, ঐ যে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সাদা শুভ্র সফেদ পাঞ্জাবি পড়া ক্লিনম্যান আমেজের মান্যবর। কি বললেন? এই শুভকামনা আপনি গ্রহন করবেন না!!! কি আশ্চর্য, কেন?
ঃ কারণ তার আগে চাই নির্বাচন।
আচ্ছা সব কথায় আপনি নির্বাচন টেনে আনছেন কেন?
ঃ আপনি বক্তৃতার ভাষায় শুনভেন, নাকি কবিতায়। আমি একটা কবিতা লিখেছি। চাইলে আপনাকে শুনাতে পারি।
আচ্ছা, তবে তাই করুন।
ঃ আমি কোন শুভেচ্ছা নিব না আজ। আমি আপনাদের একটা কবিতা শুনাবো…
আচ্ছা বুড়ো বাবু সোনা কবিতা আবৃত্তি করুন।
ঃ শুনুন আমার কবিতাটি
কবিতার নাম
ঈদ মুবারক, কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচনঃ
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একসেট সোনার গহনা, নিদেনপক্ষে নাকের নোলক একখানা।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি আশ্চর্য সুন্দর ইজিপ্সীয়ান কার্পেট।
মখমল-নীল শাড়ি প’রে তুমি ভেসে বেড়াবে সারা ঘরময় রাজহাঁস;
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি ছোট্র সুন্দর লেফটহ্যান্ড ড্রাইভ গাড়ি,
হলুদ, খয়েরী, নীল- যা চাও।
তুমি মধুপুর কিংবা ঢাকায় ছুটে যেতে পারবে দ্রুত, আরামে,
যখন যেমন ইচ্ছে।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
জাপানের সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার টিকেট,
কিংবা কক্সবাজারের ধু ধু বেলাভূমি, নীল সাগরের ঢেউ,
শৈলচূড়ার মেঘ আর আন্তর্জাতিকতাময় নীলাকাশ…।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন কিনে দেবো
একটা সবুজ রঙের হাঙ্গেরিয়ান ব্রা এবং একটি আশ্চর্য লাল সূর্যের মত স্কার্ফ।
তোমার নরোম কোমল কোল জুড়ে নিশ্চয়ই একদিন
সবুজ পাতার মতো ফুটফুটে শিশু ফুটবে, বৃষ্টিধারার মতো
পর্বতের ঢালু বেয়ে নেমে আসবে তার খহিলখিল হাসির শব্দ।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।
একদিন নিশ্চয়ই আমাদের পৃথিবী আর এরকম থাকবে না,
একদিন নিশ্চয়ই অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে।
অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে…
আর কবিতায় থাকতে পারছি না। ভাইসব, সব বাদ। সংস্কার হবে, সব হবে, আমার মত করে হবে, আপনারা আমাকে ভালোবাসেন না!!! আমি যেভাবে চাই সেভাবে চলবে চলতে হবে! কিন্তু তার আগে চাই আমার ক্ষমতা। কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন। তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণী চাই।
বাংলাদেশ জিয়াউর রহমানকে পেয়েছিল একবার, এবার ড. ইউনুস
দেশের সাধারণ মানুষ বিএনপির পক্ষে, এটা বহুদিন শুনে আসছি। দেখেও আসছি মানুষ বিএনপিকে কতটা পছন্দ করে। দেখে মনে হয়, সব মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। বিএনপির নেতৃত্ব বোধ হয় এটা জানে না। তারা পেশিশক্তির উপর নির্ভর করছে, করছে বিদেশি শক্তির উপর। যেহেতু নির্বাচন হয় না বহুদিন তাই বলা যায় না বিএনপির সেই ভোট এখনও আছে কিন। তবে ধারণা করি- বিএনপির সেই স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে ভাটা পরছে। বিএনপি ২৪ এর বিপ্লবকে ধারণ করেনি। তাই তরুনদের দল ভোটের রাজনীতিতে ভালো করুক এটা এখন অনেকের প্রত্যাশা। এরাই বাংলাদেশকে সেবা করার সুযোগ করে দিয়াছে ড. ইউনুসের মত কোয়ালিটি নেতার। আশা করা যায় জনগন নির্বাচনের মাধ্যমে এই তরুণদের সুযোগ করে দিলে ডক্টর ইউনুস স্যারকে আবার আমরা যথাযথ মর্যাদায় দেখতে পাব।
ড. ইউনুস ধীরে ধীরে স্টেটসম্যান হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। তার চলার গতি ধীর এবং মাপা – তবে গন্তব্য এক প্রকার নিশ্চিত।
এমন না যে তিনি এরই মধ্যে খুব বড় কিছু করে ফেলেছেন – তবে পলিটিক্সে জনগণের পারসেপশন যতটা ম্যাটার করে, রিয়েলিটি ততটা করে না।
মার্চ মাসের রেমিট্যান্সের দিকে তাকালে এটার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ৩ বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্স কিছুটা বাড়তে পারে – তবে এভাবে হাই জাম্প দিয়ে আকাশে উঠে যেতে পারে না।
জিনিসপত্রের দামের কথাই চিন্তা করুন। গত বছর ১৫ টাকা পিস দরে ডিম কিনতে হয়েছে। এবার প্রায় অর্ধেক! এত সস্তায় যে ইহজন্মে ডিম খেতে পারবো সেটা কি ৬ মাস আগেও ভেবেছিলাম?
ড. ইউনুসের প্রতি সরকারের আস্থা অনেকটা বাড়ছে। রেমিট্যান্স বেড়ে কোথায় পৌছেছে! রমাজেনে জিসিপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে, বিদ্যুতেনলোড শেডিং এক প্রকার নেই বললেই চলে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্তত এই রমজানে অনেকটা স্থিতিশীল ছিল অন্তত এটা বোঝা গেছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাইয়া যাইতাছেন,মানুষতো অবাক সময়মত ট্রেন আসছে আর যাত্রী নিয়ে সময়মত যাইতাছে, বাসগুলিতে কমছে হয়রানি, রাস্তায় রাস্তায় যে চাঁদার মহোৎসব বইত তা দেখা যাইতাছে কম। মনে হইতাছে, ডা. ইউনুসের দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা দ্বারা সকলে প্রভাবিত হইতাছে।
ড. ইউনুসের আগে এতটা দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা এবং দক্ষতা নিয়ে স্রেফ একজন মানুষই সরকার চালিয়েছিলেন – জিয়াউর রহমান। আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে তিনি বেশিদিন সময় পাননি, ইউনুসও সম্ভবত পাবেন না।
জিয়াউর রহমানের জন্ম বগুড়ায়, যৌবন কেটেছে পশ্চিম পাকিস্তানে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার মনে হলো যে ঢাকায় কিছু সম্পদ থাকা দরকার। সাভারে একটা বাড়ি পছন্দ হলো। বুকিং মানি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পর পর দুটো কিস্তি মিস করলেন। চিঠি পাঠিয়ে সময় চাইলেন। তাকে সময় দেয়া হলো। তবে লাভ হয়নি – পরের কিস্তিটাও মিস হয়ে গেল। তিনি আবারও চিঠি দিলেন – বগুড়ায় তার পৈতৃক জমিটা বিক্রি করে টাকা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওটা বিক্রি করতে পারেননি। ফলে সাভারের বাড়িটা আর কেনা সম্ভব হবে না। জরিমানা দিয়ে বুকিং মানি ফেরত নিয়ে গেলেন জিয়া।
তার মৃত্যুর পর দেখা গেল – স্ত্রী আর দুই ছেলের মাথা গোঁজার মতো একটা বাড়িও রেখে যেতে পারেননি তিনি।
জিয়া স্টেটসম্যান হতে পেরেছেন, কারণ তার মাথায় নিজের জন্য কিছু করার চিন্তা ছিল না। যা করেছেন, সবটাই দেশের জন্য।
ইউনুসেরও নিজের জন্য কিছু করার প্রয়োজন নেই। এই দুনিয়াতে একজন মানুষ যতভাবে সম্মানিত হতে পারে তার সবটুকুই তিনি এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন। ফলে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করাটা তার জন্য সহজ।
যেখানে বাইডেনের সাথে সল্ফি তুলতে পাইরা অনেক দেশনেতাদের আনন্দের সীমা থাকে না সেখানে ইউনুস স্যারকে বাইডেন নিজে ডেকে নিয়ে গেলেন। জড়িয়ে ধরে ছবি তুললেন।
চীনেও সফলতা দেখাইছেন। শি জিনপিং এর থেকে শেখ হাছিন আদায় করেছিল ১৪ কোটি ডলার – সেটাও অনেক মুলোমুলির পর। ইউনুসকে জিনপিং দিচ্ছেন ২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান যে বিশ্বনেতাদের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে না দাঁড়িয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন, ছবি তুলবেন – এটাই তো আমরা কোনোদিন ভাবিনি। এর আগে জিয়াকে দেখেছিলাম জিমি কার্টারের পাশে পায়ের ওপর পা তুলে কথা বলতে। এবার দেখছি ইউনুসকে।
গরিব দেশের সরকারপ্রধানকে স্মার্ট হতে হয়। জিয়া স্মার্ট ছিলেন। সৌদি আরবে যাওয়ার সময় তিনি উপহার নিয়ে গেলেন ৫০০টা নিম গাছের চারা। বললেন, মহামান্য বাদশা! আমি গরিব দেশের প্রতিনিধি। কী আর দিতে পারি আপনাকে? এই কয়েকটা গাছ দিলাম শুধু।
বাদশা জড়িয়ে ধরেছিলেন জিয়াকে। জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশের জন্য উনি কী করতে পারেন। জবাবে জিয়া ভিক্ষা চাননি। বরং চাইলেন চাকরি। বাঙালি শ্রমিকদের যেন মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি দেয়া হয়।
শুরু হলো আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী খাতটা – প্রবাসী আয়।
ইউনুসও ভীষন স্মার্ট। এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে জাতিসংঘ মহাসচিবকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিয়ে ইফতার করালেন ইউনুস। মাতৃভাষায় বললেন, আগামী ঈদ আপনারা নিজের দেশে করবেন। প্রতিবেশী পরাশক্তিকে এভাবে থোড়াই কেয়ার করার সামর্থ্য সবার থাকে না। ইউনুসের আছে। রোহিঙ্গাদের সামনে তিনি খুব সহজ অথচ খুব ভয়ংকর একটা মেসেজ দিয়ে এসেছেন।
জিয়ারও ছিল। সুন্দরবনের কাছে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। ভারত সেটাকে নিজেদের বলে দাবি করে ইন্ডিয়ান নেভির একটা জাহাজ পাঠিয়ে দখল করে নিয়েছিল।
জিয়া সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোস্টগার্ডের গানবোট পাঠিয়ে ভারতীয় সেনাচৌকিতে হামলা চালান তিনি। বিপদ বুঝতে পেরে ভারত চুপ করে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়।
এত বড় বুকের পাটা খুব বেশি লোকের থাকে না আসলে।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার সময় কী বলেছিল মনে আছে? বলেছিল যে, ১৬ কোটি মানুষকে আমি খাওয়াতে পারি, আর ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে পারবো না?
খোদাতালা অহংকারীকে পছন্দ করেন না!!!
জিয়াউর রহমান শহিদ হওয়ার পর গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব একটা এগোতে পারেনি। জিয়া যেখানে রেখে গিয়েছিলেন, সেখানেই আছে। তেমন কোনো নতুন সেক্টর তৈরি হয়নি, তেমন কোনো ডাইভার্সিফিকেশন হয়নি। সবাই শুধু ক্ষমতা আর সম্পদ চেয়েছে, দেশের ভালো ছিল গৌণ ব্যাপার।
এই প্রথম একজন কেউ এসেছেন, যার কাছে ক্ষমতা মুখ্য না। যিনি বারবার বলছেন যে ডিসেম্বর অথবা জুন – এরপরে তাকে ধরেবেঁধেও বসিয়ে রাখা যাবে না। উনার কথা না শুনলে উনি আরো আগেই চলে যাবেন।
এই প্রথম কেউ একজন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাচ্ছে – তবু আমরা ভাবছি, ইশ! লোকটাকে যদি আরো কিছুদিন রেখে দিতে পারতাম!
প্রায় নব্বই ভাগ দূর্নীতিগ্রস্থ একটা দেশে জিয়াউর রহমানের মত দেশনায়ক বাংলাদেশ পেয়েছিল একবার, তারপর এবার ড. ইউনুস। জিয়া বেশিদিন সময় পান নাই, এবারও ভোট ভোট করে তাকে বিদায় করার জন্য উঠে পরেছে জিয়াউর রহমানের নিজের হাতে গঠন করা দল বিএনপি!!!
অনেক বছর পর আর একজন দেশপ্রেমিক নির্লোভী দক্ষ বিচক্ষণ একজন বিশ্বমানের নেতার কাছে এসেছে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব।৷ আমরা বড়ই অভাগা এক জাতি।
মন্তব্যের ঘরে লেখাটার রেফারেন্স লিংক দিয়ে দিলাম।
২৪ এর ২য় স্বাধীনতাঃ প্রত্যাশা ও সম্ভবনা
৭১ আর ২৪ নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। জিগাইতে মন চায় তুলনা আসছে কেন? আইছা, তুলনাই হোক।
৭১ আর ২৪ দুইটা আলাদা সময়ের।
৭১ এর ঘটনা ঘটেছে ৪৭ এর স্বাধীন রাস্ট্র পাকিস্তানে। ভৌগোলিক , ভাষা, সংস্কৃতিতে একই রাস্ট্রের দুই প্রদেশের ভিতর বিস্তর ফারাক ছিল। কিন্তু এই ফারাকের কারণে নয় বরং শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরনের কারণে প্রদেশ দুইটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আলাদা হয়ে যায়। জন্ম নেয় স্বাধীন রাস্ট্র বাংলাদেশ। ৭১এর ইতিহাস বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস। সেই সময় সারা পৃথিবীতে চলছিল কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিজয় কাল। এই মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে ছিল সারা পৃথিবী। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতারা তার ব্যতিক্রম ছিল না। মাওলানা ভাসানীর মহামানব সুলভ পোষাক, আচরণ, বাগ্মিতা, বাম ধারার চিন্তা চেতনা এই অঞ্চলের মানুষকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল। মাওলানা ভাসানী ও তার সুযোগ্য শিষ্য বঙ্গবন্ধু উপাধি পাওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক নেতৃত্বে প্রভাবিত হয়ে একটি গোটা জাতি জুলুমের প্রতিবাদে সংগ্রাম মুখর হয়ে পরে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে জন্ম নেয় একটি স্বাধীন রাস্ট্র ভাগ হয়ে আর একটি স্বাধীন রাস্ট্র।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ অঞ্চলের মানুষের মননে তৈরি হয় শোষণ বঞ্চনাহীন এক বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের। কিন্তু হতাশার কথা তেমন সমাজতো পাওয়া যায়নি বরং রাজনৈতিক ও সামরিক বাহিনীর হানাহানির কারণে রাজনৈতিক খুনাখুনি অব্যাহত থাকে। মানুষের মাঝে জন্ম নেয় হতাশা আর ক্ষোভ। স্বাধীনতা এলো বটে, কিন্তু জনগন কিছুই অর্জন করতে না পাওয়ার বেদনায় মর্মাহত হয়।
একটা রক্তক্ষয়ী ও বিপুল নর নারীর ইজ্জত সম্ভ্রম আর জীবনের আত্মত্যাগের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের তরুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধারা প্রবীণদের অস্বীকার করে। সামাজিক, রাস্ট্রীয়ভাবে, সামরিক বাহিনীর ভিতরে তরুন মুক্তিযুদ্ধারা পরস্পর খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়। এই ধারা অব্যাহত থাকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। এর পর হতে রাজনৈতিক নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হতে থাকে।
২৪ ঘটেছে ৭১ এর স্বাধীন রাস্ট্রের শাসকদের অর্ধশতকব্যাপী রাজনৈতিক নেতাদের ব্যর্থতা ও শোষণের কারণে।
মুক্তিযুদ্ধে তরুনেরা অংশগ্রহণ করে কিন্তু নেতৃত্বে ছিল প্রবীন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদরা, প্রকাশ্য ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ভারত সরকারের সামরিক সহযোগিতায় ডরুনেরা একটি রাস্ট্রের সূচনা করে। এবং জড়িয়ে পরে নানা রকমের অনৈতিক ক্ষমতার চর্চায়। দেশ গঠনের অনন্য সুযোগ পাওয়ার পরও একটি প্রতিবন্ধী রাস্ট্র হিসাবে থেকে যায় কেবল মাত্র সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতা ও অসাধুতার কারণে জনগন পরাধীন জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়।
২৪ এ প্রবীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের শোষন, ফ্যাসিবাদী জুলুম এবং বিরোধী দলের চরম ব্যর্থতার কারণে তরুনদের নেতৃত্বে এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে আর একবার দেশের জনগন মুক্তির স্বাদ উপভোগ করে। এক অনন্য সুযোগ হাতে চলে আসে দেশকে পুনর্গঠনের। এমন এক নেতৃত্ব চলে আসে রাস্ট্রীয় পর্যায়ে যারা কখনওই কলুষিত রাজনৈতিক চর্চায় নিজেদের নিয়োজিত করে নাই। মানুষের কাছে এ আরেক স্বাধীনতা। একে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা যায়। যারা একে স্বাধীনতা বলতে দ্বিধাবোধ বা বিরোধিতা করছে তারা স্বাধীনতার এই সুযোগকে জনগনের দরজায় পৌছে দিতে চায় না। তারা পূর্বের মত হানাহানি ও জুলুম পীড়ন ফ্যাসিবাদী আচরণ অব্যাহত রেখে শোষন অব্যাহত রাখতে চায়।
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধাদের মত ২৪ এ নেতৃত্বদেয়া তরুণদের মাঝে দেখা যায় পারস্পরিক বিভিক্তি। শুধু তাই না ৭১ ও ২৪ সংগ্রামকারী তরুনেরা প্রবীণদের চোখে বেয়াদপ আখ্যা পাচ্ছে। যতটুকু বুঝা যাচ্ছে, এই তরুণরা করে যাচ্ছে সমাজ ও রাস্ট্রের নিয়ন্ত্রণ।
২৪ নিয়ে মুল্যায়ন করার সময় এখন হয় নাই। তবে ২৪ এর অর্জনকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হিসাবে স্বীকৃতি না দেয়ার কোন কারণ নেই। এটা ২য় স্বাধীনতা। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে কতটুকু কাজে লাগাতে পারবে তা নির্ভর করবে এই দূর্নীতিতে সয়লাব হয়ে যাওয়া দেশে, দূর্ণীতির ফাদ থেকে নিজেদের মুক্ত রেখে তরুনরা কতটুকু পজেটিভ ভূমিকা রাখতে পারবে তার উপর।
আপাতত তাদেরকে সমর্থন ও পরামর্শ দিয়ে সঠিক পথে পরিচালনা করার চেষ্টা করা ছাড়া কোন বিকল্প দেখছি না। এখানকার প্রভাবশালী প্রবীণ নেতৃত্ব পচে গেছে। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া লুটপাট দেখে তরুণদের উপহার দেয়া স্বাধীনতা পেয়ে নিজেরা সেই রেজিমের মত অবৈধ ভোগবিলাসের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে।
৭১ এর স্বাধীনতার ফসল জনগনের ঘরে উঠেনি। ২৪ এর স্বাধীনতাকেও কি হারিয়ে ফেলছি কিনা তারজন্য সতর্ক সাবধান হতে হবে। যে সুযোগ সঠিক নেতৃত্বের হাতে দেশ পরিচালনার সুযোগ এনে দিয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে এবং পরবর্তীতে তরুন প্রজন্মের হাত ধরে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ হয়ে উঠুক এক মর্যাদাবান কল্যান রাস্ট্র এই প্রত্যাশা রইল।
স্বাধীনতা তুমি কি?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো হবে এই অদম্য প্রেরণা বিলীন?
নাকি উত্তপ্ত, রক্তাক্ত পথ ধরে
হবে এক নতুন ইতিহাস রঙিন?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো হবে নতজানু লজ্জাবতীর কাঁটা?
নাকি বদ্ধ ঘরে নির্যাতিত কিশোরীর আর্তনাদে
ফুরাবে নীলিমার নীল আলো ছাটা?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো থাকবে কৃষকের হাসিতে?
নাকি উজান বয়ে যাওয়া স্রোতের মতো
মিশে যাবে কালো অন্ধকারের কণ্ঠরোধিত রীতিতে?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো সইবে বেকারের হাহাকার?
নাকি এলিট শ্রেণির মুখোশী ভাষায়
হবে স্বপ্ন ভঙ্গের নিষ্ঠুর উপহার?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো বইবে নিরপরাধের আর্তনাদ?
নাকি জনদরদী তারার মতো
ঝলমলিয়ে হারাবে অবিচারের বিষাদ?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
পেয়েছো কি ত্রিশ লক্ষ প্রাণের প্রতিদান?
নাকি কালো মেঘের আড়ালে ঢাকা
একটি ধূমকেতুর মতো দিশাহীন উড়ান?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো আসবে মিলনের স্বপ্ন নিয়ে?
নাকি বইয়ের পাতায় আঁকা ইতিহাস হয়ে
হারাবে জীবনের বাস্তব সৃষ্টিতে?
স্বাধীনতা, তুমি কি?
কখনো ফুটবে সুবাসিত রজনীগন্ধা ফুল?
নাকি বিষাক্ত সমাজের রুগ্ন হাতে
হয়ে যাবে বিষে ভেজা এক কুটিল ভুল?
যা দেখছি সব বলে দিবঃ চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই-১
যা দেখছি সব বলে দিব
চাচার কবর কই চাচী কান্দে কই
………..
সারাদেশে যারা দেখে, যারা বুঝে, তারা বলছেন আমাদের দেশের যেই রাজনৈতিক কালচার আছে তাতে পরিবর্ধন, পরিমার্জন করা দরকার। যাকে বলা হইতাছে সংস্কার। রাজনৈতিক সংস্কার হতে হলে রাজনৈতিক দলগুলির মাঝে এই একটা বিষয়ে একমত হতে হইবে যে, কিছু বিষয়ে আমরা সকলে একমত তারপর যার যার মতাদর্শে দল চলবে পরে যে দায়িত্ব পাবে সে রাস্ট্র পরিচালনা করবে।
একটা সাধারণ কথা বলি। আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন সবাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যেমন স্কুলে বিভিন্ন টেস্ট, মাসিক, ত্রৈমাসিক, বার্ষিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি ব্যবস্থায় বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষার অংশগ্রহণ করে যে যার মেধা ও পরিশ্রমের ভিত্তিতে রেজাল্ট নিয়ে কর্মজীবনে ডুকতে হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নপত্র প্রনয়ন, উত্তর পত্র দেখা, ফলাফল প্রকাশ সব কিছু একটা নির্দিষ্ট নিয়মের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। নিশ্চয়ই এই পদ্ধতি কি হবে তা নির্ণয় করা ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ নয়। অটোপাশ একটা আপৎকালিন সিস্টেম। এটাকে বিবেচনায় আনা যাবে না যদিও এর মাধ্যমে পাশ করা ছাত্র ছাত্রীদের পাশ হিসাবেই বিবেচনায় আনতে হবে।
এখন এই সাধারণ আলোচনার পর আমি কিছু প্রশ্ন উদ্ভব করতে চাই। এই পরীক্ষার সিস্টেম সেটা কি ছাত্ররা নিজেরা নির্ধারণ করবে? নিশ্চয়ই না। সিস্টেম ডেভেলপ করতে হয় এক্সপার্ট দিয়ে। যদি কখনও সিস্টেমের কিছু পরিবর্তন করতে হয় তবে দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়।
এতক্ষণ আমি শুধু এইটা বলতে চাইছি ছাত্র-ছাত্রীরা কেবল একটা সিস্টেমের ভিতর দিয়ে নিজেকে প্রমানিত করে দেশ ও রাস্ট্রের সরকারি বেসরকারি নানামুখী কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে এবং নিজ যোগ্যতা অনুসারে পদ পদবী দায়িত্ব পাবে।
এখন সেদিকে যাওয়ার চেষ্টা করি যা বলতে চাইছি।
ইতিহাসের প্রায় সকল পর্যায়েই একথা প্রতিষ্ঠিত ছিল প্রজা চলবে রাজার অধীনে। রাজা নিজের ইচ্ছা মত কতগুলি নীতি নির্ধারণ করে দিবে সেইভাবেই প্রজাদের চলতে হবে। যারা যেভাবে ইচ্ছা চলবে তাকে কোন নিয়মে রাখা যাবে না। তার ভোগ বিলাসের জন্য প্রজাদের চাঁদা দিতে হবে যার রাষ্ট্রীয় সমার্থক শব্দ কর। এই কর আদায় করে রাজা তার বিলাসবহুল জীবন চালাইতে পারবে, ক্ষমতা আরও বাড়িয়ে নিতে আশেপাশের অঞ্চলগুলি যুদ্ধ বিগ্রহ ও নানামুখী কৌশলে দখলে নিয়ে সাম্রাজ্য গড়তে ও বাড়াতে পারবেন। এই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য, কর আদায় করার জন্য সৈন্য সামন্ত বাহিনী, নানা ধরনের কেরানি কর্মচারী লালন পালন করছে। এই সব কর্মচারীরা রাজার কাছাকাছি গিয়ে নিজেরাও ভোগবিলাসী জীবন যাপন করেছে, প্রজারা এদের রসদ যোগাইয়াছি । কিন্তু এই শ্রেণীটি রাজা নন, রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। রাজা যা চাইবেন তাই সকলে মিলে বাস্তবায়ন করে যাবে। শুধু তাই না, অন্য কে রাজা হবার সুযোগ পাইবে এটা চলবে বংশানুক্রমিকভাবে। রাজার পোলা হবে রাজা। কখনও রাজার বড় ছেলে হবে রাজা, কোথাও বা অন্যকোন ব্যবস্থা। এই জন্য এই উত্তরাধিকারীদের মাঝে চলে নানা গোপন কারসাজি, পারিবারিক কুটনীতি, কূটকৌশল । এখানে অন্য কোন কথা নেই, সারাজীবন রাজা রাজাই থাকবে কেবল মৃত্যু হইলে বা নিহত বা বন্ধী হলে বা দেশ থেকে বিতাড়িত হইলে ক্ষমতার পালাবদল হয়। এটাই রাজতন্ত্র। সারা পৃথিবীতে ছিল সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও রাজতন্ত্র। এমন কি এখনও কোথাও কোথাও রাজতন্ত্র রয়ে গেছে।
মানব জাতির ইতিহাসের এই সবেমাত্র কয়েক শত বছর আগে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের এক ভয়াবহ দাবানল সৃষ্টি হয়। প্রজারা আর প্রজা হয়ে থাকতে চায়নি। ১৭২৯ সালে ফ্রান্সে ঘটে যায় এক ব্যাপক উলট পালট। এই উলট পালটের ব্যাপারটার রাজনৈতিক টার্ম হইতাছে বিপ্লব। ফ্রান্সের সেই উত্তাল সময়ের ইতিহাস উলট পালট করা বিপ্লবকে নাম দেয়া হয়েছে ফরাসী বিপ্লব। সারা পৃথিবীতে অনেক ধর্মীয় পরিবর্তন এসেছে, অনেক যুদ্ধ, অনেক রক্তপাত, খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, জুমুল চলেছে পৃথিবীর মানুষের উপর, চলেছে নানা প্রতিবাদও। সব কিছুর মুল বিষয় এই ক্ষমতার স্বাদ গ্রহন ও অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ। আধিপত্য বিস্তার। ভোগবিলাসী জীবন। শৈল্পিক কারুকাজে প্রাসাদ, মিনার নির্মাণ, রাণীর সৌন্দর্য স্পৃহা, স্বর্ণ, হীরা মতির সুনিপুণ কারুকার্যময় অলংকারের পিছনে চলে গেছে বহু অর্থ যার জোগান দিতে হয়েছে প্রজাদের। কিন্তু ফরাসি বিপ্লব কেবল প্রজাদের এনে দিয়েছে নিজের শাসন নিজে করার অধিকার। প্রায় একই সময়ে ঘটে যাওয়া আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ, স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ইত্যাদি পৃথিবীতে এনে দিয়াছে রাজতন্ত্রের বিপরীতে প্রজাতন্ত্রের ধারা। আর আস্তে আস্তে ডেভলব করেছে এক সুমহান ব্যবস্থা গণতন্ত্র।
সেই ইতিহাসের বিস্তারিত বর্ণনা৷ ও বিশ্লেষণ আমি এখানে দিতে চাইছি না কারণ আমি বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে আলোচনা করতে চাইছিলাম। এছাড়া ফরাসি বিপ্লব, আমেরিকার গনতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করলে অবশই অথেনটিক সোর্স থেকে আলেচনা করতে হবে, নানা বইপত্র রেফারেন্স দিতে হবে। কেউ আগ্রহী হলে খোঁজে নিতে পারেন সেইসব ইতিহাসের আাদ্যপান্ত।
আমি কেবল ফরাসি বিপ্লব পরবর্তী সময়ের পরিবর্তন পৃথিবীর কিছু চিত্র উল্লেখ করতে চাই। ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী সময়ে পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়াছে ইসলামি ভাবধারার রাজতন্ত, মুসলিম সাম্রজ্য। ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল জুড়ে শাসন করত অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতানরা। সুলতানী রাজত্বের অবসান হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে। ফরাসি বিপ্লবের পর সেই সাম্রাজ্যের পতন হয় নানা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার মাধ্যমে। সাম্রাজ্যগুলি ভেঙে দেশে দেশে বিভক্ত হয়। প্রজাদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে একেক দেশে। মানুষের রাজনৈতিক নিপীড়নে মুক্তির কারণে জ্ঞান বিজ্ঞানের ব্যাপক চর্চা শুরু হয়। এমন কি ধর্মীয় প্রভাব থেকেও তারা আলাদা হয়ে যেতে থাকে। তাদের মাঝে জন্ম নিতে থাকে ধর্মনিরপেক্ষ ধারণা। তারা রষ্ট্রকে ধর্ম থেকে আলাদা করে নেয়। ফলে মানুষের ধর্মীয় বিভেদগুলি ব্যক্তি পর্যায়ে নেমে আসে। রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা চলে আসে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে। ফলে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হয়। মানুষ এগিয়ে যায়। রাষ্ট্র অনেক ক্ষমতাবান হয়। কিন্ত গরীব প্রজাদের ভাগ্য থেকে জুলুম নির্যাতন মুক্ত হয়নি। মানবতার মুক্তিকামী মানুষের মাঝে আবার শুরু স্বাধীনতার স্পৃহা। আর একটি বিপ্লব সংগঠিত হয় কমুনিষ্ট বিপ্লব। ফরাসি বিপ্ববের পরবর্তীতে সংগঠিত এই বিপ্লবের মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে আবার সাম্রাজ্যের সুচনা হয়। ইউরোপের অনেকগুলি রাষ্ট্র যুক্ত হয়ে গঠিত হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন।
অন্যদিকে আমেরিকায় কৃশাঙ্গ ও শেতাঙ্গ বিরোধের কারণে গৃহযুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে আব্রাহাম লিংকনের গনতন্ত্রের ধারণা। নানা রাজতন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীতে নেতৃত্বদানকারী শাসন ব্যবস্থার অভিজ্ঞতা অর্জনকারী বৃটিশ সাম্রাজ্যের অবসান হওয়া রাষ্ট্র ব্রিটেনের রাজাকে প্রতীক হিসাবে রেখে এক ধরণের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন হয়।
ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে এই বিপ্লবের মুল ধারনা সাম্য, স্বাধীকার, নারী স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, মানবতাবাদ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য নিয়া দুই ধারার চিন্তা চেতনায় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। একদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন অন্যদিকে আমেরিকা, বৃটেন প্রভৃতি ইউরোপীয় রাষ্ট।
পরবর্তী সময়গুলিতে এই দুইটি মতবাদের প্রভাবেই সারা পৃথিবী চলতে থাকে।
চলবে
যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়া পড়শীর ঘুম নাই
যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়া পড়শীর ঘুম নাই। আচ্ছা, এটা কি প্রবাদ? নাকি গ্রাম্য একটা কথার কথা?
সেই যাই হোক আমি আজকে এই বাক্যটাকে প্রসঙ্গিক করে তুলব। ঠিকাছে!!!
হাসনাত আবদুল্লাহ একটা পোস্ট দিল। সারসিজ আলম কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করে আর একটা পোস্ট দিল। পাটোয়ারী বলে বসল, ফেসবুকে এভাবে পোস্ট দেয়া শিষ্টাচার বহির্ভূত। আর এক নেতা হান্নাম মাসুদ প্রকাশ্য নিজ দলের যে কোন একজনকে মিথ্যা বলছে রায় দিল। এদের কার্যকলাপকে অনেকে নাবালক সুলভ বলে আখ্যা দিল।
এনপিপির তথাকথিত নাবলক ছেলেরা এমন একটা অবস্থান তৈরি করেছে বারবার তারা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছে। এমন কি নেত্র নিউজ, আমি আগে কখন এর নাম শুনিনি, তারা সেনাপ্রধানের বক্তব্য কোড করেছেন। এবি পার্টির ব্যরিস্টার ফুয়াদ শিস্টাচার বহির্ভূত ভাবে সেনাবাহিনীকে প্রজাতন্ত্রের চাকর বলে কড়া উগ্র বক্তব্য দিলেন। বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল তাদের মত দিতে শুরু করলেন।
সকলের মতকে যদি একসাথে একত্রিত করা যায় তাহলে এটা বলা যায় যে, আওয়ামী লীগকে রিফাইন্ড করে তারা নির্বাচন করতে মাঠে নামতে দিবন কি দিবেন না, এ বিষয়ে নানা জন যার যার মত দিতাছেন, বক্তব্য দিতাছেন। বেশ জমে উঠেছে, এতটাই জমে উঠেছে যে, কেই কেউ গৃহযুদ্ধের পদধ্বনি শুনতে পাইছেন। আমরা শংকিত হয়ে উঠছি। কথা ঠিক।
কিন্তু আমার মনে একটা চিন্তা হইতাছে, যে আওয়ামী লীগকে নিয়ে এত আলোচনা তারা কি রিফাইন্ড হয়ে নির্বাচন করতে চাইছে? এই দলটি দেড় দশক ধরে নির্বাচনকে পেশিশক্তির সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ কথাতো বলাই যায় তারা কোন নির্বচন চায়নি। তারা জয়ী হতে চেয়েছে, ক্ষমতা চেয়েছে। এমন কি এখনও তারা পেশিশক্তির প্রয়োগকারী হিসাবে দেশে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে আছে। বিদেশে বসে দেশের ভিতর হুমকি দিতাছে।
যখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন শাখাওয়াত সাহেব তখন তিনি আওয়ামী লীগকে সঠিক পরামর্শ দিয়েছিলেন। মনে পড়ে, তিনি বলছিলেন আপনারা নিজেদের দলকে গুছান, ঠিক ভাষাটা মনে নেই তবে সব্ভবত তিনি এখন যেই রিফর্মেশনের কথা বলা হইতাছে তেমন কিছুই বলতে চাইছিলেন। এবং বলেছিলেন, (আমি আমার ভাষায় বলচি) পেশিশক্তির যে ব্যবহার করতে চাইছেন, এই আন্দোলন, সেই আনসার বাহিনীকে মাঠে নাইতাছেন আরও এই চট করে ঢুকে যাইতাছেন, হরতাল ডাকতাছেন এসব বাদ দিন, এসব করে কোন লাভ হবে না।
শাখাওয়াত সাহেবকে বদলে ফেলা হল। এই পক্ষ ও পক্ষ কেউ তার কথার মূল্যায়ন করলো না। আমাদের শতভাগ ঠান্ডা মস্তিষ্কের প্রফেশনাল সেনাপ্রধানও বলে বসলেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন ইনক্লুসিভ হবে না। তাই তিনি তাদের রিফাইন্ড গ্রুপকে নেতৃত্ব এনে নির্বাচনে দেখতে চান।
আমার মনে প্রশ্ন, আওয়ামী লীগ নিয়ে এত কথা, সমালোচনা। ফেসবুক পোস্ট, তর্ক বিতর্ক। আওয়ামী লীগ কি কেথাও কোন পর্যায়ে নিজেদের শুদ্ধ হবার কোন প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছ?
আমি কোথাও দেখি নাই। আমি আমার মনে বেজে উঠছে!যার বিয়া তার খবর নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাই!!!
পোস্টমর্টেম : আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন
বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দুইটি পোস্ট আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। পোস্ট দুইটি পাশাপাশি রেখে আলোচনা চলতে পারে।
পোস্ট -১
শনিবার নেত্র নিউজকে দেয়া সেনা সদরের এক বিবৃতিতে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে যে সেনানিবাসে খোদ সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গেই ১১ মার্চ বৈঠকটি হয়েছিল। তবে হাসনাত আব্দুল্লাহকে “ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদেরকে প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগে”র অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বরং হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার দলের আরেক মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের আগ্রহেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি সেনা সদরের বক্তব্যে অস্বীকার করা হয়নি। সেখানে বলা হয় আলোচনায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ উঠে আসলে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান নিজের অভিমতের কথা ছাত্রনেতাদের জানান।
বিবৃতিতে সেনাপ্রধানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, “আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা ফৌজদারি মামলায় জড়িত নয় ও ক্লিন ইমেজের অধিকারী তাদের সমন্বয়ে নতুন আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ফলপ্রসু ও আন্তর্জাতিক মহলে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকার ও সব রাজনৈতিক দল মিলে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।”
হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক স্ট্যাটাসকে তার দলের লোকেরাই শিষ্টাচার বহির্ভূত বলেছে। আমরা তাকে বা তার পোস্টকে আমলে না নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অর্থপূর্ণ মনে করি। তিনি তার বক্তব্যে জোর করে কোন কিছু চাপিয়ে না দিয়ে বরং বলেছেন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলিকে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। খুবই পজেটিভ ভাবে দেখছি তার বক্তব্য।
আজকেই নিচের পোস্টটি নজরে এলো। পোস্টের লিংকটি মন্তব্যের ঘরে দিয়ে দিলাম।
https://www.facebook.com/share/p/16F2ySxoLm/
পোস্ট -২
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা ফেরত আনার প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছেন। সরকারি কাজে তিনি যুক্তরাজ্যে থাকাকালীন আমার সুযোগ হয় UK পার্লামেন্টের Anti-Corruption ব্রিফিংয়ে অংশ নেয়ার—যেখানে আলোচনা হলো, কীভাবে বাংলাদেশ থেকে সুসংগঠিতভাবে টাকা পাচার হয়েছে এবং Democratic Transition in Bangladesh—কিভাবে সাপোর্ট করা যায়।
গভর্নর বললেন, ২০১৭ সালের পর ৮-৯টি ব্যাংক Systemic Robbery-র শিকার হয়েছে। এমনকি DGFI—এর ক্ষমতা ছিল Fund Divert করার !
শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, চুরি যাওয়া টাকার পরিমাণ নাকি ৭০ বিলিয়ন ডলার ছুঁতে পারে! যদি এটি ফেরত আনা যায়, তাহলে এটাই হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় Asset Recovery.
এ প্রসঙ্গে গভর্নর যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, তারা এই পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে and take a global lead in Anti-Corruption.
‼️আমার প্রশ্ন ছিল—এই দীর্ঘ ও জটিল Asset Recovery প্রক্রিয়ায় সাধারণ জনগণের উপর কতটা চাপ পড়বে? How much price the ordinary citizens have to pay❓যেহেতু একটা পরিসংখ্যান বলছে, আগামী ১০০ বছর যদি বাংলাদেশিরা নিয়মিত Tax দেয়, তবেই এই লুটপাট করা টাকার পরিমাণের সাথে সামঞ্জস্য আসবে!
গভর্নরের response ছিল unfiltered and painful—“Yes, citizens will have to pay the full price, and even future generations will suffer the consequences.”
দেখেন, money laundering is not a victimless crime. This is a direct violation of people’s economic and civic rights. এটা শুধু টাকার হিসাব না, it will have long-term consequences on future generations—impacting their overall quality of life.
Just pause and think—একটা স্বৈরশাসনের লুটপাট শুধু বর্তমানই না, দেশের ভবিষ্যৎকেও ধ্বংস করে দিয়ে গেছে!
……….
জুলাই আন্দোলন ২০২৪ চলাকালীন সমশ ও দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যে সকল ফৌজদারী অপরাধ করেছে, এইসকল অপকর্মের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচার অবশ্যই করতে হবে। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের আলোকে যদি সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি আলোচনায় বসে তবে আমরা সাধারণরা উপরের দুই নম্বার পোস্ট বিবেচনায় নিয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানাব।
আওয়ামী থ্রেট ও সেনাপ্রধানের প্রস্তাবনা: একটি ব্যতিক্রমি পর্যালোচনা
দেশ এখন এক ক্রান্তিকালীন সময় পার করছে, নানা রকমের পেনিক ছড়ানো হচ্ছে ফেসবুকের মাধ্যমে। বর্তমানে ফেসবুক হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় গণমাধ্যম। খুব সহজেই যে কোন বক্তব্য প্রকাশ করা যায়। এটা বাস্তবতা, এটা মেনে নিয়ে কাজ করতে হবে। যখন কেউ একটা মাধ্যমে কাজ করে, প্রযুক্তির বদলের কারণে সেই মাধ্যমটি হয়ে পরে অনুপযোগী। অনেক ডিমান্ডেবল পেশাও একেবারে গুরুত্বহীন হয়ে পরে ট্যাকনোলজির বদলের কারণে।
এক সময় আমি ব্লগে লেখালেখি করেছি। কিন্তু লেখালেখি ব্লগগুলি এখন আর লোকেরা তেমন পড়ে বলে মনে হয় না। তবু ব্লগের সেই যে এক ধরণের লেখা অভ্যস্থ হয়ে গেছি তার থেকে বের হয়ে ফেসবুকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। কখনও গুরুত্বপূর্ণ লেখক ছিলাম না। ব্লগের ব্যাপারটা এমন যে, সেখানে লেখকই পাঠক, আবার পাঠকই লেখক। সেই ক্ষেত্রে আমি যেমন অনেকের পাঠক ছিলাম, আমার পাঠকও বেশ অনেক পরিমানেই ছিল। কিন্তু ফেসবুক ব্যাপারটা এমন নয়, সত্যি কথা এখনও ফেসবুকে অভস্ত্যতা হয়ে উঠে নাই। তবু ফেসবুকে নজর থাকে। আর গত কয়েকদিন যাবৎ ফেসবুকে ঢুকে শংকিত হয়ে পরি। কোনটা যে গুজব আর কোনটা বাস্তব তা বুঝে উঠাই দায় হয়ে উঠেছে।
কয়েকদিন যাবৎ এক শ্রেণির পোস্টে দেখছি বারবার টাইম বলে দেয়া হচ্ছে কেউ যেন দেশ ছাড়তে না পারে। এয়ারপোর্টে পাহারা বসাতে বলা হইতাছে। বলা হইতাছে আওয়ামীলীগ ভীষণ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে, ফলে যারা এখনে এনসিপি, বিএনপি,জামায়াতের লোক আছে তারা যেন পলাইয়া যাইতে বাধ্য হয়। এই শ্রেণিটি কিন্তু নিজেরাই বিদেশে আছে, তবু হুমকি দিয়া যাইতাছে। নিঝুম মজুমদারের মত লোকেরা পর্যন্ত এমনভাবে কথা বলছে যেন এখানে একটা ক্যু হয়ে যাবে, কিম্বা ইন্ডিয়া এ্যাটাক করে বাংলাদেশকে তছনছ করে শেখ হাছিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়ে যাবে। এই ঘটনাগুলি খেয়াল করছিলাম।
এদিকে হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্টগুলি পড়ছিলাম। কয়েকদিন যাবৎ সে আওয়ামী রাজনৈতিক অবস্থা নিয়া পোস্ট দিতাছিল। অবশেষে এক বিস্ফোরণ পোস্ট দিল। সকল রাজনৈতিক আগ্রহের বিষয় পরিনত হলো সে স্ট্যাটাস। তার পোস্ট থেকে কোড করছি-
“আমাদেরকে আরো বলা হয়-রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।
আমাদেরকে এই প্রস্তাব দেওয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন।
এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোন ধরণের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং ‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’। ”
এর মধ্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইঁয়া আর এক তথ্য ফাঁস করলেন যে, সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ্জামানের সম্মতি ছিল না প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের দায়িত্ব দেবার ব্যাপারে। আসিফ মাহমুদ এর ভাষ্য মতে- তিনি বলেছেন তিনি বুকে পাথর বেঁধে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।
অনেক বড় বড় অনলাইন এক্টিভিস্টদের মাঝে পিনাকীসহ কয়েকজন দেখলাম সেনাপ্রধান ওয়াকার উজ্জামানের উপর বিল্লা হয়ে আছে বেশ আগে থেকে। তারা ক্রডিাাট নিতাছে তারা এই দেশে ইন্ডিয়া বিরোধী মনোভাব তৈরি করেছে। সেনাপ্রধান ইন্ডিয়াপন্থী।
এইসব ফেসবুকের পোস্ট চিন্তা চেতনা আক্রান্ত হই বারবার। বের করতে চেষ্টা করি প্রকৃত ঘটনা। আমি আমার মত করে কিছু ভাবনা চিন্তা করি। এটা আমার একান্ত নিজের চিন্তা, কারোর সাথে মিল না হলেও এটা করার এবং প্রকাশ করার অধিকার আমার আছে।
আওয়ামী লীগের ইন্টারন্যাশনাল লবি, ভারতীয় গোয়ান্দা বিভাগ র সহ অনেকেই আওয়ামী লীগকে এখানে প্রতিষ্ঠিত করার নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা নিজে চট করে ঢুকে পারবেন বলে অডিও ভাইরাল হয়, এমনকি তারা হরতাল ডাকেন। ঐদিকে অপি পিয়াল গং ব্যাপক প্রচারণা চালাইতে আছে যে, এই ঢুলে গেল তারা। এগুলি একেবারে এমনি এমনি বলছেন তা নয়।
সেনাপ্রধান অনেক বছর এই প্রফেশনে জড়িত। শুধু আওয়ামী আমলে নয় এই পর্যায়ে যেতে হলে অনেককিছু মেনেজ করেই যেতে হয়। ডিনিও তাই করেছেন। তিনি শেখ হাসিনার আত্মীয়ও বটে। তাই সব ধরনের যোগাযোগ তাকে রাখতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ধারণা করি, তাকে বলা হয়েছে একটা কিছু করতে, তিনি বলছেন আচ্ছা দেখি। কেন এমন ধারণা হলো? তাকে যেমন পেয়েছি আমরা তাতে মনে হয়েছে তিনি হান্ড্রেড পার্সেন্ট প্রফেসনাল একজন মানুষ। নিজের ডিপার্টমেন্টের উপর যখন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষীবাহিনীতে কাজ হারাবারের প্রশ্ন উঠেছে তখন তিনি রাজনীতি, আত্মীয়তার সম্পর্কে চেয়ে নিজের প্রফেসনকে তিনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন। তিনি অনেক রক্তপাত এড়াতে সক্ষম হয়েছেন। শেখ হাসিনাকে নিরাপদ এক্সিট দিয়েছেন। নিজে সামরিক শাসন জারি করতে পারতেন। তা না করে জাতীয় উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন – তিনি সকলের জান মালের হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন এবং তার পছন্দের বাইরে প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের দায়িত্ব দেবার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। এখানে তিনি যেই কমিটমেন্টটি দেখিয়েছেন তা সম্পূর্ণ রূপে একজন প্রফেশনাল দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। আর নিজের অজান্তেই গণতন্ত্রের একটা প্রয়োগ উদাহরণ হিসাবে দেখাইয়া দিলেন। নিজের মতের বিরুদ্ধে যখন অন্য মত প্রবল হয় তখন বুকে পাথর বেঁধে তা মেনে নেওয়ার নামই গণতন্ত্র।
এখন আসি যে প্রসঙ্গে বলছিলাম সেদিকে। এই যে থ্রেটগুলি দেয়া হচ্ছিল, আওয়ামী প্রতিষ্ঠা, শেখ হাসিনার ফেরত আসা, অনেকের উগ্র চিন্তানা ইত্যাদি সবই সেনাবাহিনীর প্রধানের নলেজে ছিল। আমরা ধারণা তিনি তাদের বলেছেন- আচ্ছা দেখি। এবং বাস্তবতা মিলিয়ে আবারও রক্তপাতের সম্ভবনা দেখে তিনি একটা নেগোসিয়েশনের কথা ভেবেছেন। তাই তিনি হাসনাত আবদুল্লাহদের এমন একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। হাসনাত আবদুল্লাহ তা প্রত্যাখান করেছে এবং দশ দিন পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সকলের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন এবং এখনও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এখানেও আমি গণতান্ত্রিক চর্চার সুমহান নিদর্শন দেখতে পাইছি। মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটা উদাহরণ দেখতে পারছি। অনেকে অনেক কথা বলেন, আমি শুধু সেনাপ্রধানের ভাষনে ইউনুস বলে সম্বোধন করাকে একমাত্র নন-প্রফিজম হিসাবে পেয়েছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত তার ভুমিকা এই দেশটিতে মানুষের রক্তপ্রবাহ কমাতে বিশাল ভুমিকা রেখে চলেছেন এবং কামনা করি তিনি নিজকে সংযত করে পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম হবেন।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে ড. ইউনুসের আন্তর্জাতিক সফলতা
গতকাল তারাবিতে হুজুর যখন ফিলিস্তিনের মানুষদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া ধরলেন হাউ মাউ কেঁদে উঠল সকলে। অনেককেই বলতে শুনছি, আমরা শুধু দোয়া করি, কিছুই করতে পারি না। কথা ঠিক । আমাদের কিছুই করার নেই। ঐ সব পিতারা যখন তাদের সন্তানদের রক্তমাখা শিশুদের হাতে নিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করে তখন অন্তর ফেটে যায়। আমরা আর্তনাদ করে উঠি। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি। আমাদের যুব সমাজের অনেকে প্রতিবাদ মিছিল করে। কিন্তু আমরা সকলেই জানি ফিলিস্তিনের মানুষদের জন্য কিছু মানবিক সাহায্য ও দোয়া করা ছাড়া আমরা বড়ই অসহায়।
আবার এদিকে আমরা দেখি ভারতে এই রমজানের মধ্যে মুসলমানদের উপর জুলুম হইতাছে। এখানে আমরা একটা টু শব্দও করি না। আমরা অসহায় ভাবে জুলুমগুলি অবলোকন করি। আমরা সকলেই জানি ভারতীয় মুসলমানদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আমরা বড়ই অসহায়।
সাম্প্রদায়িকতা এমনই এক বিষয় যে, আমাদের এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার জুলুম করা হয়, রাজনৈতিক নানা সুবিধা আদায় করার জন্য। এখানে হিন্দুরা সব সময় কেমন জানি ছোট হয়ে থাকে। একবার আমার এক ভাড়াটিয়া বলে বসল, আপনারা আমাদের দেখবেন, আপনি আমাদের মা বাপ। তার কথায় আমি লজ্জিত হয়ে যাই। ওরা আমার উপর ভরসা করছে, আমি কখনও আল্লাহ ছাড়া এভাবে কারোর উপর ভরসা করি না, তাই বড়ই লজ্জিত হইয়া গেছি। আমি হিন্দু ভাড়াটিয়াকে বলি, শুনেন আপনি আমার ভাড়াটিয়া, অন্য মুসলমানর ভাড়াটিয়া যেমন, তেমনি। শুনেন এখানে আপনার উপর কেউ কিছু বলতে আইলে আমি আপনার পাশে আছি। কিন্তু লড়াইটা আপনাকেই করতে হবে। এদেশটা কারোর বাপের না, এখানে আপনি যেমন নাগরিক আমিও তেমনি নাগরিক।
ভদ্রলোক বলল, আপনারা এখানে স্থানীয়, বাড়ি করে আছেন অনেক বছর। ভাই, আমরা তাই আপনার কথা বললাম। আমি তাকে বললাম, কেউ কিছু কইছে? বলল, না কেউ কিছু কয় নাই তবু ভয়ে থাকি।
আমার মত আপনাদের মাঝে কারো কারো এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছে নিশ্চয়ই।
আমি রাজনৈতিক নেতাদের মুখে সংখ্যালঘুদের উপর যাতে নির্যাতন না হয় তেমন আহ্বান শুনেছি। ধন্য হয়েছি, গুনগান গাইছি। কিন্তু এবারই প্রথম শুনেছি এই কথাটা যে, সংখ্যালঘু বলে কিছু নাই, আমরা সবাই বাংলাদেশি। শুধু যে মুখের কথা তাও নয়। দেখেছি, হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিতে গেছেন কেউ কেউ, যাদেরকে মনে করা হয় মুসলিম সাম্প্রদায়িক সম্প্রদায়।
আমাদের এখানে হিন্দুদের কোন নিরাপত্তা ঝুকি দেখিনি। মহল্লাবাসী সকলে আগের মতই আছি। কিন্তু এখনও হিন্দুদের মাঝে কেমন জানি একটা হীনমন্যতা দেখি।
৫ আগস্টের পর রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। শেখ হাসিনা পালাইছে। তার অনুসারীদের বেশিরভাগই পালাইছে। কিন্তু এখনও রয়ে গেছে তাকে নিঃশর্ত সমর্থন দেয়া অনেকে। এর মাঝে মুসলিম আছে, হিন্দুদের বেশিরভাগ তার সমর্থক। শেখ হাসিনার সমর্থক আছে ভারতের সরকারি ও বিরোধীদলসহ সেই দেশের মিডিয়া। ভারতীয় সাংবাদিকরা যেখানেই সুযোগ পাইতাছে, বলে বেড়াইতেছে যে, বাংলাদেশের ভিতর হিন্দুদের উপর ব্যাপক জুলুম হইতাছে। তারা আমেরিকার উচ্চ পর্যায়ে যেখানে সুযোগ পাইছে সেখানে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে কথা বলছেই।
এর মধ্যে এলেন আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগের হাই প্রোফাইলের ক্ষমতাধর একজন ভারতীয় বংশদ্ভূত মহিলা। তিনি যখন বলছিলেন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির কথা। সত্যি ভয় পেয়ে গেছি। একদিকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের উপর নৃশংসভাবে জুলুম করে বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের মেরে ফেলছে, আমেরিকা এই অমানবিক জুলুমকে সমর্থন করছে। আবার প্রসিডেন্ট ট্রাম্প বলছে মুসলিমরা হেইটার, তাদের হেইট করে।
সার্বিক বিবেচনায় মনে হতে থাকে এই বুঝি আমেরিকার সহযোগিতায় ভারত বাংলাদেশে হামলা করছে। কিন্তু না। আমেরিকা বলছে ডা. ইউনুসের সরকার যেই ভুমিকা রাখছে তা আমেরিকা সমর্থন করে। আর একটি সফলতা দেখতে পাওয়া গেল ড. ইউনুস স্যারের।
এই বাংলাদেশে আমরা সবাই বাংলাদেশি। এটা আমাদের দেশ। এই নীতিতে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।
আহা! আরও কিছু বেশি সময় যদি ইউনুস স্যারকে দেয়া যেত!!!