ট্যাগ আর্কাইভঃ ফকিরের কবিতা

দেশের গান

এখন পৃথিবী আমার আবাস নয়
এখন আমাকে দিয়াছে বিদায় ঝুপ
আমার সাথীরা গিয়েছে হারিয়ে চুপ
আকাশ ছাড়িয়ে কোথাও হয়েছি লয়।

ফেরেশতা আমাকে ফিরিয়ে এনেছে উড়ে
বেহেশত ফটক খুঁজেছে আমায় খুব
আমিতো পাইনি আপন সুবাস ফিরে
তাইতো থাকিনি চাইনি অসীম সুখ।

ও খোদা তুমিতো আমার হৃদয় চিন
কে আছে বন্ধুর আসনে তোমার মত
তোমাতে আমার না যদি হয় গো নাড়ী
তখন ও খোদা কোথায় খুজব পথ!

আমার ছিল যে এক দয়াময়ী মা
ঘুরিয়া বেড়াত মহিমান্বিত ভূমিতে
বারেবারে তার স্বপ্নীল মায়াবি হাতে
থামতে পারি না যতক্ষণ দেই চুমা ।

বেহেশতের চারিধারের পাঁচিল খোলে
সেই মা পাইনি অনেক মানুষ ভীড়ে
আমিতো বুঝিনি ওখানে আমার নাড়ী
সকলে যদিও সব সুখ চেয়েছে দোলে।

ওগো মা তুমিতো আমার হৃদয় চিন
কে আছে বন্ধুর আসনে তোমার মত
তোমাতে আমার না যদি শোধে গো ঋণ
তখন ওগো মা কোথায় খুজব পথ !

যে পথে শহীদ রক্তের সৌরভ বয়
যে পথে আপন সূর সদা জেগে রয়
সে পথে বিজয় উল্লাসে মা খোঁজে পাই
উচ্চকণ্ঠে নিজ দেশের গান তাই !

এ গান গেয়েছি সকল হইতে ফিরে
এ গান বেঁধেছি স্বর্গীয় শিল্প নিয়ে
এ গান আমার মায়ের নাড়ী জুড়ে
এ গান আমার সকল স্বত্বা দিয়ে।

শূন্য গ্লাস থেকে সমুদ্র যাত্রা

এর মাঝে? তাকিয়ে থাকি।
বৃষ্টির দিনে ঘরের ভিতর ছাতা খুলে রাখি।
জুতা জোড়া দিয়ে পাতিলে
দেই তাপ আগুনে।
হায়রে ভুল, কেবলি ভুল।
ভুল মজ্জাগত, অকুল।

শৈশব থেকে আমি সেই জন, ছোট খাট,
কুঁকড়ানো কালো চুলের সংক্ষিপ্ত ছাট-
অনুগত ছিলাম, বয়স্করা ফুট-ফরমাশ খাটিয়ে নিত
অন্য ছেলেমেয়েদের ভয়ে কুঁকড়ে থাকতে হতো।
বদলাইনি আমি কোনদিন,
কিন্তু ভয় জয় করে ঘুরে দাড়ালাম হাতে নিয়ে লাঠি
ফলে গ্লাসের ভিতরে,
বোধের বিমূর্ত জোয়ারে
রাতারাতি অনুগত থেকে বিদ্রোহী হয়ে উঠি।

এটা কি সমুদ্র ছিল বিশালতা জাগানিয়া?
ঐশ্বরিক শক্তির প্রতিক্রিয়া?
আমি প্রর্থনা করি যেন নিরাপদ থাকি।
আমি ভালো মানুষ হতে চেষ্টা করি। একি?
পরবর্তীতে মনে হলো,
যার শুরু বিদ্রোহে হলো
এবং পরিমাপক হলো আত্মনিমগ্নতা
তা প্রকৃতপক্ষে বিকশিত করল আমার মানবিকতা।

আমার বন্ধুরা কি বুঝাতে চেয়েছিল?
অবশেষে আমার হাতে রেখে হাত বলেছিল-
আনুগত্যের অপব্যবহারটা বুঝতে পেরেছি
কিন্তু আমি ঘৃণাকে গ্রহন করেছি
বুঝিয়েছিল আমি কিছুটা অসুস্থ,
অনেক ছোট ব্যাপারে দিয়েছি অনেক বেশি মূল্য।

তারা বুঝাতে চেয়েছিল আমি ভালো ছিলাম-
একজন ভালো বন্ধু, একজন ভালো মানুষ। আজীব
আমি জানি আমি ছিলাম উদ্দীপনাহীন জীব!

আমি নির্লিপ্ত থাকি।
আমি সূর্যের মতো সুস্পষ্ট ছিলাম, রুক্ষতা ধিকিধিকি
সকলে আকর্ষণীয় অনুমানে তৈরি করছে নিজেকে।
যা কিছু ঘটে তার জন্য বিশ্বাস করে না প্রচেষ্টাকে
অবশ্যই কিছু জিনিস সামান্য প্রচেষ্টায় পাওয়া যায়।
অবশ্যই সুবিশাল জ্ঞান, অসীম ক্ষমতা দেখা যায়।
ভালোকে খারাপে পরিচালিত করার প্রচেষ্টা সচল।

এসব ছাড়া আমরা কারা চলি অবিরল?
অন্ধকার হাতড়ে বিশ্বে পরিভ্রমণকারী-
আলোর দিকে ভ্রাম্যমান আধারের যাত্রী।

আমাদের কি আছে তাহলে?
দুঃখজনক নোনা কৌশলে,
সিড়ি এবং জুতা, শুদ্ধ প্রেরণা, প্রতিরোধের ছাতা
আলোকিত চরিত্র গঠনের পদক্ষেপ, মানবিকতা।

এই বিশাল শক্তি কি আমাদের উপর ক্রুদ্ধ হয়ে আছে? বিশাল শক্তিকে শান্ত করার আমাদের কি করার আছে?
এবং দিনশেষে আমি ভাবি-
এটা সেই প্রশ্ন, অতৃপ্ত মনের ছবি
যা টাইটানিক ধ্বংস হবার পর উঠেছিল জেগে
সমুদ্রের বুকে অদম্য জাহাজ ছুটছিল সগর্ব বেগে
অদৃশ্য অজানা শক্তি রূপ নিয়ে বরফে
হয়ে উঠলো প্রাণঘাতী, অস্থির, বিক্ষোভে।
তারা উদ্যত ছিল অহংকারে
ভেবেছিল সবকিছু প্রচেষ্টা নিয়ন্ত্রণ করে।
সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হবার নয়।
আমরা কেবল ভুল করতে করতে করে ভয় জয়
আবিষ্কার করতে পারি মানবিকতার স্বরূপ।
আর বলতে পারি-
আমার কিছুই নাই, আছি তোমার ক্ষমায় অপরূপ।

সন্তানের প্রতি

আমরা স্বপ্নদ্রষ্টা!
আমরা জানি না আমরা কারা!

কিছু প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় আমরা তৈরী হয়েছি,
পৃথিবীর কিছু সংকীর্ণ উপাদানে যা বিদ্যমান,
তারপর একে পরিশুদ্ধ করার প্রচেষ্টা।

আমরা স্বপ্ন!
আমরা মনে করতে পারি না!

পরিবার,
লোমশ অন্ধকার,
মায়ের জঙ্গল।
মায়ের শরীর ;
তার ভিতরে পরিচ্ছন্ন শহর।

তারও আগে; মৃত্তিকা জল।
পাথরের ভিতরের শৈবাল, টুকরো পাতা, ঘাস।
মহান অন্ধকরের লুকিয়ে থাকা কোষ।
তারও পরে পৃথিবীর পর্দা ভেদ করা চিৎকার।

এসব কারণে এভাবে তুমি জন্মেছিলে;
আমার স্তব্ধতায়
আমার পিতা মাতার কোষগুলি,
তোমাতে মৌলিক রূপান্তর,
একটা মহান শিল্পকর্মে।

আমি অসম্পূর্ণ;
আমি কখনো জানতে পারিনি।
এখন তোমার সময়,
তুমি জানতে চাইতে পার;
কেন আমি এসেছি?
কেন আমি এতটা অজ্ঞ?

মহান অন্ধকারের ভিতরকার কোষ।
কিছু প্রাকৃতিক পক্রিয়াতে আমরা জন্মাই;
এখন তোমার পালা, সেই পুরাতন জিজ্ঞাসার-
আমি কিসের জন্য? আমি কিসের জন্য?

অর্ধেক মানবিক আর অর্ধেক পশু

একটা সময় মানুষ কিছু করে
একটা সময় মানুষ কিছু বলে
একটা সময় মানুষ ঘুম ঘোরে
একটা সময চুমোয় সৃষ্টির গালে

একটা সময় মানুষ ঘর ছাড়ে
একটা সময় মানুষ ঘরে ফিরে
একটা সময় আকাশ পানে ছুটে
একটা সময় সাগর টানে হাটে
একটা সময় মানুষ হতে চায়
একটা সময় পশুতে ফিরে যায়।

ফকির মালেক পায় না খুঁজে দিশা
মানুষ অর্ধেক তরল অর্ধেক শিশা
মানুষ পাগল বিশেষ অবুঝ শিশু
অর্ধেক মানবিক আর অর্ধেক পশু।

আহা প্রেম-৩ (ঝর্ণা মিশে নদীর সাথে)

ঝর্ণা মিশে নদীর সাথে
নদী মিশে সাগরে,
বাতাস বহে মৃদুমন্দে
আরাম দিয়ে আহারে।
জুটি ছাড়া নয় কিছু পৃথিবীর
সব চলে প্রকৃতির নির্দিষ্ট আইনে
একজন অন্যজনে মিশে যেতে অধীর
তবে আমি থাকব কেন তুমি বিহীনে?

পাহাড় কেমন ছুঁতে চায় আকাশ
ঢেউগুলো পরস্পর মিলে মিশে দেয় তালি
ফুলগুলো সব খুঁজে নেয় বাতাস
আপন ফুলে করতে মিতালী।
সূর্য আলো ছুয়ে যায় পৃথিবী
চন্দ্র আলো চুমু দেয় উদার বিশাল সাগর
আনমনে ভাবি
আমায় তবে তুমি কেন করে দিচ্ছো পর?

আহা প্রেম-২ ( কতটুকু ভালোবাসি তোমায়)

..
কতটুকু ভালোবাসি তোমায়? থাম, এসো খুঁজে দেখি
ভালোবাসি তোমায় দৈর্ঘ্যে, গহীনে, উচ্চতায়।
থাকো যদি দৃষ্টি সীমা বাইরে তবু হৃদয়ে দাও উঁকি
তুমি সৌন্দর্যানুভূতিতে অস্তিত্বের শেষ সীমায়।
ভালোবাসি তোমায় নিত্যদিনের প্রত্যেকটি স্তরে স্তরে
যেমনি করে সূর্য আলো, জল-বায়ু ঘিরে থাকে জীবন
ভালোবাসি মুক্তভাবে, অধিকারের জন্যে যেমনি লড়ে
আমি ভালোবাসি শুদ্ধতায়, করে বর্জন মহিমাকীর্তন।

আমি ভালোবাসি তোমায় সমস্ত গহীন আবেগ দিয়ে
আমার সকল চিত্তক্ষোভ আর শৈশব নির্মল বিশ্বাসে
আমি ভালোবাসি তোমায়, সেই ভালোবাসা যেন হারিয়ে
খোঁজা চড়ুইভাতি সাথীর মত, ভালোবাসি প্রতি নিশ্বাসে
প্রতি কান্না হাসি এই জীবনে, এবং খোদা যদি চায়
মৃত্যুর পরে জেগে, কেবল তোমাকে যাব ভালোবেসে।

আহা প্রেম-১ ( নেই কোন আশা)

নেই কোন আশা? এসো কাছে বসে চলে যাই দূরে-
শুধু কিছুক্ষণ পাশাপাশি! গ্রহণ যদি না-ই করো
কি করতে পারি ! আমার হৃদয়ের সব প্রান্ত ঘিরে
জমেছিল মেঘ, বৃষ্টি ঝরে ঝরে, মুক্ত হবে আরো?
এই হাতে রাখো হাত শেষবার। ছুঁয়ে পুরান ব্যাথা
থেমে যাই যদি কোন অচিন কালে হয়ে মুখোমুখি
খুঁজে নেব সেই, যাহা ছিল না এই কপালে লেখা
আবার পড়বে মনে প্রেমালোক, হবে দেখাদেখি?

এখন এই প্রেম উচ্ছ্বাসের শেষ নিঃশ্বাসের কালে
যখন নাড়ি তার থমকে চুপচাপ হয়ে যায় স্থির
যখন বিশ্বাস মৃত্যুর কোলেতে পড়ে যায় ঢলে
আর সরলতা মৃত্যু বিছানায় থমকে যায় ধীর।

এখন যদি তুমি চাও, সকল খেলা হয়ে যাবে শেষ?
মৃত্যু থেকে জেগে উঠে, খুঁজব সব আবেগের রেষ।

ব্যক্তিপুজা

আমার অনুকরণ করিও না।
হৃদয় আমার নানা ঘটনা প্রবাহে প্রভাবিত,
নিরপেক্ষ নয়।
আমিতো আমাকে চিনি,
মনোবিজ্ঞানীর মত শুনতে শিখেছি আমি।
গভীর ভালোবাসা নিয়ে কিছু বলি যখন,
তার উপর সামান্য বিশ্বাস রাখতে পার,
যেমন এখন বলছি।

এটা দুঃখজনক!
সারা জীবন আমার বুদ্ধিমত্তা,
ভাষার উপর আমার দখল,
আমার গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রশংসিত হয়েছে-
দিনশেষে এগুলো অপচয়।

কখনো নিজেকে দেখিনি।
সামনের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করেছি
হাত ধরে অগ্রজের, হিসাব করতে পারিনি,
তার হাতটা কতটুকু খোলা।

আমার নিজের পথে আমি যখন অদৃশ্য;
আমি বিপদজনক।
যারা আমার অন্ধ অনুসারী, মনে হবে তারা নিঃস্বার্থ।
আমরা উভয়ে পঙ্গু, মিথ্যবাদী।
সত্যের খাতিরে আমাদের আলাদা মত থাকা দরকার।

যখন সত্য উদয় হয় আমি স্থির হই।
একটা পরিষ্কার আকাশ, মেঘগুলো শুভ্র সাদা
নিচে ধুসর বাড়ি, চমৎকার ফুলে ঘেরা।

যদি তুমি সত্য জানতে চাও
তোমার অগ্রজকে দূরে ছুড়ে ফেলো।
আমি যখন এই আঘাতটা করতে পারি-
আমার গভীর ভাবনাগুলো বদলে যায়।

আমি পরিপূর্ণ বিশ্বস্ত নই।
তোলপাড় করা হৃদয়, পথকে বদলে দেয়।

গরু খাওয়া ও মুসলিম, গাভীর দুধ খাও

1448729017

কেউ বলে রমজানে শয়তান বন্দী, শয়তান বন্দী,
কেউ বলে শয়তান শিকলে বাঁধা, সারা মাসের জন্যে
অনেকে বলে গোলাপের সাথে তার হয়েছে সন্ধি
এখন নয়া রূপে উঠেছে জেগে, ইজরায়েলি সৈন্যে।

প্রতিদিন ঘরছাড়া, ধরে নিয়ে যায় যুবক পুরুষেরে
প্রতিদিন বাস্তুহারা, দিন দিন বেড়ে যায় মৃত্যু মিছিল
দখলদাররা ক্ষমতার শীর্ষে নাচায় বিশ্ব মোড়লেরে
মানবতা রুদ্ধশ্বাসে অসহায় আজকে, বেদনায় নীল।
তাদের অনেক বুদ্ধি টাকা, তাদের অনেক বুদ্ধি টাকা
তাদের অনেক বুদ্ধি টাকা, তারা কাজ করে মগজে
আমরা দুইটা পাথর ছুড়ি, ডাংগুলিতে মাটির চাকা
তাদের প্রতিরক্ষা, আমরা সন্ত্রাসী মিডিয়া কাগজে।

আমাদের তারা ছয় ফুট লম্বা, লম্বা টাকার বান্ডিল
সরাপ পিয়ে শুয়ে থাকে, বিছানায় যৌবতী তম্নী নারী
আবার যারা হাদিস মাখায় কুরান ভাতে, মারে ঢিল
আপন জাতে, চলছে লড়াই নিজের সাথে মনোহরী!
কেউ বলে রমজানে শয়তান বন্দী, শয়তান বন্দী,
কেউ বলে শয়তান শিকলে বাঁধা, সারা মাসের জন্যে
অনেকে বলে গোলাপের সাথে তার হয়েছে সন্ধি
এখন নয়া রূপে উঠেছে জেগে, ইজরায়েলি সৈন্যে।

গরু খাওয়া ও মুসলিম, গভীর দুধ খাও, হে মুসলিম
দুধু খাও, দুধু খাও, গাভীর দুধ খাও প্রত্যেহ সকালে
আপন পায়ে দাঁড়াও, মেরুদণ্ড সোজা কর এইদিন
এখন সময় এক জোট বাঁধার সব বিভেদ ভুলে।
কেউ বলে রমজানে শয়তান বন্দী, শয়তান বন্দী,
কেউ বলে শয়তান শিকলে বাঁধা, সারা মাসের জন্যে
অনেকে বলে গোলাপের সাথে তার হয়েছে সন্ধি
এখন পশুরূপে উঠেছে জেগে, ইজরায়েলি সৈন্যে।

স্বাধীনতার সহজ পাঠ

Dug4uB

ও প্রিয়,
কি ঘটেছিল এই জমিনে, পেয়েছো তোমরা শুনতে
করেছিল বারণ আইনে, মা’কে দেয়নি ‘মা’ ডাকতে
হয়নি রঙের কোন মিল, ওদের সাথে তাঁদের দিলে
তাই মায়ের নোলক খুঁজে খুঁজে বিলীন হলো লালে।

স্বপ্নে ভাসানী’র হাতে রাখি হাত, চেয়েছেন জানতে
দেশটার বয়স কত হলো, পেরেছে কি দাঁড়াতে?
সবচেয়ে দুখীনি করা হলো তাকে, বঙ্গবন্ধু’র কালে
সবুজ পোষাক পড়াতে চেয়ে বিলীন হলেন লালে।

তাই সবুজ পোষাক পড়তে
তাই সবুজ পোষাক পড়তে
নর আর নারী লাখে লাখে
সবুজ পোষাক পড়তে চেয়ে বিলীন হলো লালে।

পিতার হাতকে করা হলো প্রতিরোধে রঞ্জিত
সন্তানেরা ভুলবো না, দেশটা বহু রক্তে অর্জিত
এখানে আপন ধর্ম পালন করো নিরাপদে নির্বিঘ্নে
এখানে অনেক ঝরেছে লাল, সবুজ পোষাকের জন্যে।

শহীদেরা গভীর ভালোবেসে ঘুমায় এ দেশের বুকে
আমরা লড়ছি আমরন ছড়াতে সন্মান চারিদিকে
মায়ের চোখের নোনাজল মিষ্টি হয়ে উঠবে আহ্লাদে
সবুজ ধ্বনি উঠছে বেজে মিশিয়ে লালের সংগীতে।

তাই সবুজ পোষাক পড়তে
তাই সবুজ পোষাক পড়তে
নর আর নারী লাখে লাখে
সবুজ পোষাক পড়তে চেয়ে বিলীন হলো লালে।

কিন্তু অবশেষে আমরা ভাঙ্গি বাংলাদেশের হৃদয়?
পিতার রক্তের অপমান যদি আমাদের অবক্ষয়!
ভাবি উদার সাগর পারের সবুজ ডাকা দেশটাতে
ধনী গরীব এক কাতারে পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে।

সুশাসনের হাতে আমাদের দেশ এগিয়ে চলে যদি
মুক্তিযোদ্ধার সন্মান বাড়বে দুনিয়া জুড়ে নিরবধি
আবার কেউ আঘাতে ভাঙতে চায় যদি স্বাধীনতা
আবার সবুজ পোষাকে লাল মাখাবে বীর জনতা।

তাই সবুজ পোষাক পড়তে
তাই সবুজ পোষাক পড়তে
নর আর নারী লাখে লাখে
সবুজ পোষাক পড়তে চেয়ে বিলীন হলো লালে।

তাই সবুজ পোষাক পড়তে
তাই সবুজ পোষাক পড়তে
নর আর নারী লাখে লাখে
সবুজ পোষাক পড়তে চেয়ে বিলীন হলো লালে।

মায়ের গান

মা মারা গেছে গত রাতে।
মা মারা গেছে গত রাতে?
মা মারা গেছে গত রাতে!

রাত্রি তার ডানা মেলে ঝাপটে ধরে আছে পুকুরটাকে
গোল চাঁদ টর্চ জ্বালিয়ে রূপালী দাত মেলে হাসছে।
পোনারা ঝাঁক বেঁধে ছুটে চলে মা মাছের পিছু পিছু
চাদের আলোর প্রতিফলনে সেই আলোতে
দেখি আমার মায়ের মুখখানি!

আমরা শুনতে পাচ্ছিলাম
বাবু গান গাইছে দূরদেশ থেকে-
আমি কত একা
এই ধরনের গান।

আমি কত একা
মার বুকে নেই,
আমার মাথা যেন কী ফাঁকা!

গোল চাঁদের নিচে
পুকুরে চিৎ সাতার দেই
অন্ধকার জঙ্গলে জোনাকি বিন্দুর মত
আকাশের ছোট ছোট আলোগুলি স্মৃতিতে আমার
মায়ের একই মুখ একে চলছে।

আমরা শুনতে পাচ্ছিলাম
বাবু গান গাইছে –
আমি কী একা! কিন্তু দেশের সঙ্গীতে
আমার একাকীত্বই আমার আনন্দ।

সবুজ পোষাকে সবুজ গিটারের মূর্ছনায়
মৌটুসী আর পাপিয়ার সুরে ফোটে লাল গোলাপ
ভিনদেশে থাকা বাবুর গাওয়া গানের আবেগ
পুকুর ধারে রাত্রিতে সবুজ ঘাসে শুয়ে দেখা আকাশ
এক হয়ে যায়, মিশে যায়।

অন্ধকারের বিজ্ঞাপন

কাণার হাটবাজারে, কানায় কানায় ঠেলাঠেলি
মঞ্চ করে মাইক বাজিয়ে করছে গালাগালি
এখানে দিন কাণা, পরের ক্ষেতে দিচ্ছে হানা
ওখানে রাত কাণা আলোর পথে দিচ্ছে মানা
কেউ দেখি ভাই হয় মাজহাব কাণা
কেউ দেখি পীর খোঁজে হয় ফানা ফানা
নবীর প্রেমের কথা বলে নবীরে ফেলে দূরে
যে জন বড় জনা তাকিয়ে দেখি কাণার ভীড়ে

ডক্টর কাণা অহংকারে, মোল্লা কাণা অবিচারে
আমি কবি বলে, দোষ আসে আমার নীড়ে
কাণায় কয় কাণারে কাণা পথ তোর ভালা না
জ্বালিয়ে নিয়ে আলোর বাতি তাদের দেখিনা, না

আলো ভেবে নিব আলো এই করি পন,
দেখি, ধর্ম নামে অন্ধকারের বিজ্ঞাপন।

মনে মনে মেশামিশি

মন ছুটে মন ধরে আনে, জানের কাছে দিতে জান
মনে মনে না মিশিলে, হয় কি কভু মন জুড়ান
মনে মনে মেশামিশি, ক্ষনে কান্না ক্ষনে হাসি,
এইতো ভালো বাসা বাসি, সজল হাসির গান।

আখি নীড়ে আনে টেনে,
মন মনের কাছে
চোখের জল আর প্রাণের টান,
তা বিনে কি মন্ত্র আছে?
আকুল করা করুণ স্বরে, ডাকার মতো ডাকলে পরে
অমনি এসে ভালোবেসে, আনন্দেতে হৃদয় নাচে
খেলায় খেলে প্রাণের পুতুল,
দোল্ দোলা দোল্ দেদুল দেদুল
যে দেখেছে সে দোলেছে,
সকল কিছু সে ছেড়েছে
আভাস পেয়ে প্রেমিক কবি উঠল নেচে
গাছ তলাতে করছে রোদন
ছুটবে কি তার কাজের বাধন
জন্ম মরন যাবে ঘুচে?

ডাক দেখি মন ডাকার মত
ডাক শুনে না আসে, দেখবো তার সাধ্য কত?
প্রেম ভরে মধুর স্বরে, ডাক দে তারে প্রাণ ভরে
আকুল প্রাণে ডেকে তারে কে কবে গিয়াছে ফিরে?
তারে কাছে ডেকে আন, তারে কাছে ডেকে আন
যারে দেখতে পুড়ায় আখি, ডাকলে জুড়ায় প্রাণ।
ডাক দে তারে হৃদয় কাঁপা গান
শিশুর মতো সকল ভুলে আসবে ছুটে মন জুড়ান।
মনে মনে মেশামিশি, ক্ষনে কান্না ক্ষনে হাসি,
এইতো ভালো বাসা বাসি, সজল হাসির গান।

খেলায় খেলে প্রাণের পুতুল,
দোল্ দোলা দোল্ দেদুল দেদুল।

শুধু পাঁচ জেগে রবে

পুরাতন ঘড়ি টিকটিক চলছে নাতো ঠিক!
বস্’কে শুধাই বিকাল পাঁচে থাক যত পিক
আওয়ার, হারিয়ে যাবার লাগবে আজ ছুটি।
কখনও কি, হয় কাজে এতটুকু ত্রুটি?
আজকে আমার মনটি ভরা আছে দারুণ আবেগে
চাইছে যেতে তার কাছে অরুণ আলোর বেগে
সাড়ে বারো এখন, বল তাতে কি কিছু হয়!
দুনিয়ার কোন প্রান্তে পাঁচটা ঠিক বেজে রয়।

ঘন্টা হিসাবে বলা কাজ, চলে বহু মিনিট
আমার বস জাষ্ট ক্রশ করে যায় লিমিট
তাকে কিছু বলা আমার পছন্দ না ঠিক
সাবধান একদিন ধরা খাবে সোনা মানিক!
মনে মনে ডাকি আয় ছুটি বিপুল তান্ডবে
তুফান যেন তছনছ আমার অনুভবে
সাড়ে বারো এখন, বল তাতে কি কিছু হয়!
দুনিয়ার কোন প্রান্তে পাঁচটা ঠিক বেজে রয়।

দুপুরের খাবার খাই বিকেলের বেলা
কখন সন্ধ্যা নীরবে এসে করে যায় খেলা
পাইনা টের, রাত্রি কখন হয়ে যায় ভোর!
কে কি বলে, আমি বলি এ দোজগপুর।
যা হয় হোকনা করব না বারণ চরাচরে
বিকেলটা আজ দেয়া আছে শুধু তাহারে
সাড়ে বারো এখন, বল তাতে কি কিছু হয়!
দুনিয়ার কোন প্রান্তে পাঁচটা ঠিক বেজে রয়।

পাঁচটা জেগে রয় পৃথিবীর কোন্ কোনে
কোন দেশ তাহা বল কোন টাইম জোনে
মন ছুটে যায় উড়ে দুটি ক্ষুব্ধ আত্মা
কণ্ঠে জাগে প্রেমের করুণ তীব্র ব্যাকুলতা
হাত ধরে, চল ছুটে যাই সেই দেশে
শুধু পাঁচ জেগে রবে, সব যাবে মিশে।
সাড়ে বারো এখন, বল তাতে কি কিছু হয়!
দুনিয়ার কোন প্রান্তে পাঁচটা ঠিক বেজে রয়।

আজ যারা সুখে বেঁচে আছো

আজ যারা সুখে বেঁচে আছো, পান করে যাচ্ছো জল
বায়ু মাঝে ডুবে নিচ্ছ শ্বাস, খেয়ে যাচ্ছো মুল ফল
দেখছো আছে এখানে কেহ, ঘুরে পথে প্রান্তরে
উদাস হয়ে প্রাণের টানে চলে যায় বহুদূরে
তাদের মাঝে কেউ আছে শুধু সুখ খোঁজেনি মিছে
তাদের কাল কাটেনি কেবল জন্মে জন্মানো পিছে।

এখানে ধুম কান্নাকাটি, নত বিচারের বাণী
ঝরে পড়ে মানুষের ঘাম, বিনিময়ে শূন্য ঘানি
ঘুরিয়ে দিয়ে জীবন চাকা, ঘুরে নিজে হাহাকারে
বংশের ধারা চলছে তারা সেই এক কারাগারে
এদের মাঝে পায়নি কেহ এতটুকু স্বস্তি খোঁজে
তাদের কাল কেটেছে কেবল খাদ্য খাওয়া পিছে!

এখানে বাজে নিয়ম তাল, সরল ধর্মের সুরে
এখানে জ্বলে আগুন শিখা ঈর্ষার ছোবল ঘিরে
অতীব বড় কে কার চেয়ে, অতীত স্মৃতির গাথা
‘এখন’ কাঁদে বনে জঙ্গলে, বুক ভরা তার ব্যাথা
এদের মাঝে যারা আছে ছুটে নাই অতীতে মিছে
তাদের কাল কাটেনি কেবলই তর্কাতর্কি পিছে।

আজ যারা চোখ বুঁজে আছো, মুছে নিয়ে নোনা জল
ছাড়ছো দীর্ঘ করুণ শ্বাসে, দুখ গাঁথা অবিরল,
‘শুধু একান্ত মানুষ হও, সব ফেলে বহুদূরে’
শুননি দীপ্ত তাঁদের ডাক, ঘুরে ফিরে বারেবারে?
কখনো তাঁরা এখানে এসে সুখ খোঁজে নাই মিছে
তাদের কাল কাটেনি কেবল জন্মে জন্মানো পিছে।