আলমগীর সরকার লিটন এর সকল পোস্ট

আলমগীর সরকার লিটন সম্পর্কে

আলমগীর সরকার লিটন। লেখকের প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় ‘দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘ভিজে যাই এই বর্ষায়’ এরপর লেখকের অন্যান্য কবিতা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে যেমন- ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা "মেঘফুল", ত্রৈমাসিক পত্রিকা ’পতাকা’, মাসিক ম্যাগাজিন, সংকলন ‘জলছাপ মেঘ’। এছাড়া অনলাইন পত্রিকায় লিখে থাকেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ’’মেঠোপথের ধূলিকণা’’ প্রকাশিত।

উষ্ণ বাউর

rtyu

নয় তো মাটির চাপায় উড়ে বসবে
এক নাক দুর্বলা ঘাসের বাসনা;
এ কি দর্পণের গায়ে অনল জ্বেলে না
শুধু সেলফিতে ভূত পুত রঙিলা
আজও দেখি দৃশ্যপটে কান্না!
ভাদ্র শেষে আশ্বিনের মার্জনা
আর উষ্ণ বাউর বাজনা;
মনের ময়লা কতখানি পরিষ্কার
এই কার্তিকে হবে পরীক্ষা-
জোছনা সলক আর বুঝি চায় না
গলার মালা সেলফিতে বয় না।

৩০ ভাদ্র ১৪৩০, ১৪ সেপ্টেম্বর ২৩

পদদলিত

alm

৯৬ ফেল, ৯৭ পাশ ৯৮ কথোপকথন
অভিমান আকাশ ছুঁয়া, তারপর
দেড় যুগ জল পিণ্ডে ভাসমান
দুঃখ কষ্ট লাঞ্ছনা গঞ্জনা বিচ্ছিরি কাণ্ড
তারপর ২০০০ অচিনা স্মৃতির মাতল
সোনালি মাঠে রক্তাক্ত কায়া;
তবু না কি তেলে জলে মিললো না
কি নির্দয় পাষাণ-সংসার ধর্ম!
তারপর- তারপরও মৃত্যু বুঝও না
অহমিকার পদতলে, মাটি পদদলিত;
এভাবেই সংসার ধর্ম কর্ম গুণান্বিত-
অতঃপর অবুঝ জ্ঞান শূন্য অনন্ত।

১৯ ভাদ্র ১৪৩০, ০৩ সেপ্টেম্বর ২৩

দেদার ঢর

635771073297014161-oriental-plum-tree

বানভাসি ভাদ্রের আগমন
সামান্য কদমের হাসিটা প্রায়
শেষ প্রান্তর, রৌদ্রোজ্জ্বল কান্না
শুধু জমে বরফ হলো শ্রাবণ;
তবু কোথায় প্রশ্ন থেকে যায়
দেহ কম্পন আমরণ গন্ধ!
ভাদ্রের দেখা- এই শুরু বজ্রপাত
খালে বিলে- বনে জঙ্গলে
পথে ঘাটে- ঘরে ফিরে
আর কত কি- এখন আমি
বর্ষার পুজারী অনেক খানি-
যখন তখন নামে দেদার ঢল।

০৫ ভাদ্র ১৪২৯, ২০ আগস্ট ২৩

ভাবতে পারি না

images ধূলি

ভাবতেই পারি না
তুমি নেই- না ফেরার দেশে
কি অভিমান করে
চলে গেলে- চলে গেলে,
সারা আঙ্গিনা জুড়ে
খুঁজে ফেরি- মা গো- মা;

তোমার রান্না ঘর-
ধান শুকনো উঠান,
পায়ের চটি- থাল গ্লাস
সবই দাগ লেগে আছে!
স্মৃতির ভেলা যাই ভেসে;

দুচোখে বর্ষার ভেজা
খই ফুটানো নোনা জল;
এভাবে ক্যান্সারের কাছে
পরাজয় হবে, মা গো- মা
আমরণ কষ্ট- সহ্য করা দায়-
ভাবতেই পারি না।

.
২৬ শ্রাবণ ১৪২৯, ১০ আগস্ট ২৩

খুঁজতে

খুজতে

আমি তারার দেশে
যাচ্ছি- খুঁজতে-
কি হারালাম- কি হারালাম
জানলো জোছনা রাত!
ঝিঁঝিঁপোকার গায়েন;
আমি তারার দেশে-
যাচ্ছি- খুঁজতে।
খুঁজতে খুঁজতে পেলাম
মা হারনার যন্ত্রনা
চাঁদের বুকে অসীম সীমানা
জনম তরীর আলপনা
মায়ের মুখ মলিন করা
দেখছি সবই অনমরা
কি পেয়ে হারিয়ে গেলো
এই নিঠুর দুনিয়া;
যন্ত্রনাটা হাজার বছরে
পুষলাম শুধু তারার দেশে-
খুঁজতে- খুঁজতে!

.
২৫ শ্রাবণ ১৪২৯, ০৯ আগস্ট ২৩

মনের দৌড়

rt

মনের যত দৌড়
আকাশ সীমা-
রঙ ছুঁয়ে যায়
মাটির কায়া;

মেঘের ঝড় বৃষ্টি
চোখে নেই মায়া!
বট বৃক্ষ, বাঁশ
চাটাই বুঝে না-
কার কেমন ছায়া;

রঙধনু জোছনা রাত
প্রেম যমুনায়
আসে না চাঁদ-
চাঁদের গায়ে রঙিন বাড়ি
শূন্য মনে কত আড়ি;
কার কি এসে যায়-
মাটির স্পর্শ ছোঁয়া;

১৭ শ্রাবণ ১৪২৯, ০১ আগস্ট ২৩

কবরের মাটি

100images

মা গো তোমার কবরের মাটি
এখন আমার বুকের মাঝে-
নিঃশ্বাসের আগে গন্ধ পাই যত!
আগে কোন দৃশ্যময় ছিল না মা-
এখন গুমরে মরা, বাতাসের আগে
দৃশ্যময় ভেসে যায় মা গো- মা
মেঘহীন বৃষ্টিগুলো চোখ থেকে
বুক গড়ে গড়ে হাতের মুঠোই
অসহ্য কষ্ট; আরটুকু আয়ু দিলে না
কোন আল্লাহ্? মৃত্যু কেনো নিঠুর।

০৯ শ্রাবণ ১৪২৯, ২৪ জুলাই ২৩

শ্রাবণ জল

hj

আজ শুধু শ্রাবণের প্রথম দিন
নরম ঘাস পালঙ্ক ভেজে গেলো-
গোলাপের মন আনন্দে বাসর রাত!
অথচ এখানে বর্ষার রাস্তা ঘাট
জলে থৈ থৈ; শ্রাবণ তুমি কদম
ছুঁইলে কেন? নাকি অন্যকিছু-
যুগে যুগে কালো মেঘ বজ্রপাত
কলঙ্কের জল শ্রাবণে একাকার;
তবু রঙধনু মেঘ দেখে না আর-
যুগ যুগান্তর ভাসালে শ্রাবণ জল।

০২ শ্রাবণ ১৪২৯, ১৭ জুলাই ২৩

গন্ধ পাই

out.

জন্ম আমি দেখিনি;
তোমাদের জন্ম দেখে
উপলব্ধি করি; স্বাদ পাই
গন্ধ পাই আর কত কি?
তবু জন্ম, জন্ম দিন বলে কথা!
জন্ম নিয়ে কত স্বপন কত ইতিহাস
রয়ে যায় সোনালি মনে মৃত্যুর ঘরে
ভেবো না জন্মের ব্যর্থতা
অশুভ কোন চিন্তা; সবই নিখুঁত
কর্মের গুনে জন্মের অমরত্ব!

.
৫/৭/২৩

অভাগা বৈকাল

অভাগা বৈকাল

কঠিন আর সহজ
কখন যে একাকার হয়ে বসে
মনে ভাবা মুশকিল;
নিয়ম আর অনিয়ম চমৎকার
খেলা হচ্ছে শুধু ‍শুধু!
আমাদের উঠন জুড়ে-ফসলি
মাঠ বড় অভাগা বৈকাল
মনে আনন্দ নেই যেনো শ্মশান
তবু ধৈর্য দেখা যাক-
সময়ের চাকা কোন দিকে যায়;
এক অভাগা বৈকাল।

১১ আষাঢ় ১৪২৯, ২৫ জুন ২৩

কদম পাপড়ি

কদম পাপড়ি ঝরা

কদম হেসেছিল বর্ষার কোণে
শাপলা বিলে ভেলা ভাসে- ভাসে
প্রাণচঞ্চল সাদা মেঘে ফাগ্লুনের লুকোচুরি।
আগুন যেনো সবুজপ্রান্তর দুর্বলা ঘাস
আইল পাথার আর থৈ থৈ খাল বিল
সবই আজ অম্লান কদম পাপড়ির ঘ্রাণ,
কৃষ্ণচূড়া রাস্তার মোড়ে রাঙা উঠন
তবু একাকার যত সব রূপালি সোনালি
স্মৃতিময় কদম চোখ- এখন আর কদম ছুঁয়া
হয় না- ছুড়াছুড়ি, অন্তরে কদম পাপড়ি।

০৪ আষাঢ় ১৪২৯, ১৮ জুন ২৩

দেহের কান্না

kanna

আকাশের গায়ে মেঘ বৃষ্টি নাই
কাঁদতে ভুলে গাছে- তাই চোখ
আর কাঁদে না! দেহ জুড়ে যত
কান্নার স্লোগান; প্রভুর প্রেমে
শোকাহত- হইতো এভাবেই
চলছে- মেঘ বৃষ্টি নাই- বৃষ্টি নাই
শুধু শুধু প্রেম সাগরে বালুচর
এই দেহের চারপাশ পুড়া তাপদাহ
কৃত্রিম বাতাসও বন্ধ মহাবিপদ
প্রভু তুমি ছাড়া বাঁচার সাধ্য নাই
রক্ষা করো, থামাও এই দেহের কান্না!
বাতাস দাও মেঘ বৃষ্টি শান্তির কয়লা।

২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ০৭ জুন ২৩

ভিসা ভোট

vissa

অবাধ সুষ্ঠু ভোট দানে
আমেরিকার ভিসা
বাহ বাহ কি চমৎকার!
কেউ আর বলতে পারবে না
মামা বাড়ির আবদার;

কি সাঙ্ঘাতিক চিন্তা রে বাবা
হোক না অবাধ সুষ্ঠু ভোট
ইতিহাস শুধু সাক্ষী থাক
অসুষ্ঠু ভোটে ভিসা নাপাক
নতুন আঙ্গিকে হোক ভিসা ভোট।

১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ২৯ মে ২৩

ফুঁ দিয়ে যা

ফু দিয়ে যা

দালালবাদ আর পুঁজিবাদ
একই ধান্দাবাদের বাতাস
মুখোচোর আর জুতোচোর
একই ঘরে শিং খুরার রাত;
কে শিক্ষিত- কে মূর্খ বুঝা
বড় ভার! পেন্ট শার্টে বাহার;
সব একই মাটির দেহ পা
জীবন চলে শূন্য ফুঁ দিয়ে যা!
দালালবাদ আর পুঁজিবাদ
একই সূত্রে ফুলের মালায় কাদ।

০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ২১ মে ২৩

টক বক বক

খট খট

১৫ কোটি খেলোয়াড়
খেলছে সময়ের সেকেন্ডে হরদম!
স্লোগানে মুখরিত চোখ মুখ দাঁত
এমন কি হাত পা ভেসে যাচ্ছে-
জলশুকনো মাঠ ঘাট; মেঘশুকনো
ভেজা বৃষ্টিতে খেলা হবে! খেলা, দম দম;
অথচ গাঁয়ে পারের খেলোয়াড় দাঁড়িয়ে
দেখছে শুধু মায়ের শূন্য আচল
আউশ ধানের নবান্ন উঠান আর জ্যৈষ্ঠের
গন্ধ বাতাস উড়ে- হাতের তর্জনী ভার
যত ভাজ ঠোঁটের আড়াল
খেলা হবে! খেলা, খট খট, টক বক বক।

০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ১৫ মে ২৩