আলমগীর সরকার লিটন এর সকল পোস্ট

আলমগীর সরকার লিটন সম্পর্কে

আলমগীর সরকার লিটন। লেখকের প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় ‘দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘ভিজে যাই এই বর্ষায়’ এরপর লেখকের অন্যান্য কবিতা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে যেমন- ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা "মেঘফুল", ত্রৈমাসিক পত্রিকা ’পতাকা’, মাসিক ম্যাগাজিন, সংকলন ‘জলছাপ মেঘ’। এছাড়া অনলাইন পত্রিকায় লিখে থাকেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ’’মেঠোপথের ধূলিকণা’’ প্রকাশিত।

উষ্ণ হয় না

tyui

বরফ স্তরে হেঁটে যাচ্ছে
ইচ্ছার পায়রা পাখির দল;
উষ্ণ পা পিছলে যায় বৈকি-
অথচ কৃষ্ণচূড়া পাহাড় থেকে
শিমুল ঝরা রাত- পলাশের
হাসির আড়ালে বুঝলো না
কতখানি বেদনার রঙে আকাশ;
তবু মন শান্তির পায়রা ভেবে-
উড়ছে ইচ্ছার যতগুলো ডানা!
তারপরও স্বপ্ন রঙিন উষ্ণ হয় না।

১৮ কার্তিক ১৪২৯, ০৩ নভেম্বর ’২২

খড় জ্বর

d5a

দেহের আনাচে কানাচে
খড় জ্বরের প্রভাব পরেছে;
দৃষ্টির কাছাকাছি প্রেমের
সাগর জুড়ে স্বপ্ন বিল ভেসে
যাচ্ছে- সোনালি এলার্জির ব্যথা
শিশির সিক্ত ভোরের অঞ্জলি;
উত্তাপ থেকে উত্তল সারাবেলা
কৃষ্ণচূড়া রাঙা পথে উষ্ণতা
তবু থামাতে পারি না রাতের গুঞ্জ
স্বপ্ন ভেজা প্রণয়ের খড় জ্বর!

১৪ কার্তিক ১৪২৯, ৩০ অক্টোবর ’২২

তার গড়ন

index গড়ন

মেঘ তুমি দাঁড়িয়ে থেকো না
ছুঁয়ে যাও মাটির দেহ পুস্পকল্লানে
গন্ধ ছড়ুক- এভাবেই ভেজা বৃষ্টি
আকাশ বুকে শান্তি থাকুক;
ক্ষিদে পেটে মনের রূপ বড়ই রসহ্যময়!
স্বরূপ চেতনার- গন্ধ ধীরে ধীরে বয়
কি নিয়ম তার, এক সময় কোথায় জানি
চলে যায় আর ফিরে না মন, কিন্তু
মিশ্রিত দেহটা কেমন মায়ায় রূপান্তর করে
এই হলো মন সংসারের সমারোহণ
মেঘ তুমি বলো কার সাথে চলন!
মন পিটে কি রেখে গেলে তার গড়ন।

০৭ কার্তিক ১৪২৯, ২৩ অক্টোবর ’২২

মন চোখ

imag

তোমরা যে চোখে দেখছো সবাই
সেই চোখের দেওয়ালে স্বার্থপরের
বারুদ লেগে আছে; আমার নাকে
বারুদের গন্ধ আর হাহাকার চিহ্ন-
মন সাগর ঢেউয়ে- ঢেউয়ে ভাঙ্গছে
চোখের সীমানা পার- তাকেই বলছো
অথৈ সুখের ঠিকানা, মাটির ভাবনায়
ভেবে দেখো কি আর্তনাদ, দোআঁশ?
দুচোখ অন্ধ হলো- কিছুই বোঝবে না
সময়ের মূল্য! সময়ে দেখো মন চোখ।

০৩ কার্তিক ১৪২৯, ১৯ অক্টোবর ’২২

একাকী

83e644a4-be23-45cd-a02e-f0f4f3eaeeda_lg একাকী

সবুজ আকাশটা কেমন জানি
নীল- নীল লাগছে-কাল মেঘে
ধুয়ে যাচ্ছে বন্ধু হারানো শোক;
বৃষ্টির গায়ে দুঃখ কষ্ট নেই- নিরবধি
হাত ছুঁয়া মাটির ঘরে শুধু একাকী।
হয় তো অপেক্ষা করছে প্রিয় বন্ধু
কিছু ঋণের পরিশোধ চাওয়া পাওয়া,
ভাবিস না- অন্ত ক্ষরণ বয়ে যাচ্ছে
তোর খুব কাছাকাছি- আগের মতো
দুষ্টমি আনন্দ আড্ডা হবে না- জানি!
শুধু দেখে যাবো দুজনা-আকাশ মাটি-
এই ভেবেই যাচ্ছি,কবে হবো একাকী।

২৯ আশ্বিন ১৪২৯, ১৪ অক্টোবর ’২২

সেই সাতটি বার

103

শনি, মঙ্গল দুই হাটই গেলো
বাড়ির সামনে আর নৌকা বাঁধে না
জল শুকনো বালুচর প্রায়;
কয়েরবিলের কথা খুব মনে পরছে
কচুরিপানার ফুল, শাপলা তুলা
জলে সাঁতার কাটা- আর কত কি?
রবি, সমও গেলো বদমদাড়ি, বউছি
খেলার মাঠ বিবর্তন, চিনাই যায় না
বুধ বৃহঃ গেলো ধুলিবালি খেলাধূলার ঘাট
শুক্রবারও গেলো টিভিতে সিনেমা
চঞ্চল ক্ষণ, অম্লান করে স্মৃতির পটে
এভাবে চলে গেলো ফিরে না আর-
সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা- সেই সাতটি বার!

২৮ আশ্বিন ১৪২৯, ১৩ অক্টোবর ’২২

লাল পানির সরোবর

d132

কয়েক জন প্রেম সন্ন্যাসী
গলা ভরে লাল পানি গিলে গিলে
হৈ হুল্লর আনন্দ করে- করে
ঢেউ তুলে যায় বিসর্জন দেহ!

কি এমন মায়ায় স্রোতে ডুবে মরল!
ভাবে না কয়েক জনের ভবিষ্যৎ-
তবু লাল পানির তাতে কি আসে গেলো
ধর্ম কর্মের চিহ্ন মাটিতেই মিশে থাকল-

নিঃশ্বাসে বড় ধন, বাতাসে বয়ে যায়
মাতাল উৎসবমুখর কোন ধর্মের কর্ম নয়
চাঁদ তারার মতো আকাশে শুধু অভিনয়!
এভাবেই ঘটে যায় লাল পানির সরোবর।

২৫ আশ্বিন ১৪২৯, ১০ অক্টোবর ’২২

ফিরে যাই শিশুকাল

Joy-o

গরু কিংবা ছাগলের বাচ্চাদের
কিছু দিন পর গলায় দড়ি লাগাই
জানেন, কি কারণে দড়ি লাগায়;
দড়ি না লাগলে চার পায়ের বাচ্চারা
খেত খামারে র ফসল বিনষ্ট করবে;
এমন কি শিং দিয়ে ডিসাডিসি করবে।
সবকিছুরি নিয়ম কানুন ধর্ম কর্ম আছে;
কিশোর কিংবা যৌবন ব্যাপ স্বাধীনতার
কণ্ঠে জয় গান ধরি! শিশুকাল ভুলে যাই-
চলো না শিশুকালে, থাকবে না কোন বাঁধা
অতঃপর আর ফিরতে পারব না শিশুকাল
মেনে নিতে হয় নিয়ম কানুন ধর্ম কর্ম।

১৯ আশ্বিন ১৪২৯, ০৪ অক্টোবর ’২২

গন্ধ ছড়ুক

908

মেজ ছেলে তুরজাউল সরকার আকুক
তুমি কি জানো এই দিনে উয়া- উয়া শব্দ
আওয়াজ,পৃথিবীকে আলোকিত করেছে?
গ্রাম বাংলার ধূলি বালি, শহরে অট্টালিকার ইট
পাথরে ঘসে- ঘসে আটটি বছরে পা দিলে !
জন্মদিন উপলক্ষ্যে নতুন কাপড় জুতা কিনলে।
অথচ গত বছরের কথা ভুলে গেলে শুধু
চোখে মুখে দুরন্তপনা, চঞ্চল রাতে কি স্বপ্ন দেখো?
বড় হচ্ছো বেশ, তোমার জন্মদিনে অনেক কিছু
প্রত্যাশার ফুল জমা হচ্ছে- অনেক বড় হবে! অপেক্ষা শুধু
সময়; হাজার জন্মদিন এভাবে ভাল কাজে গন্ধ ছড়ুক!
দোয়ার সাথে শুভ জন্মদিন তুরজাউল সরকার আকুক।

১৪ আশ্বিন ১৪২৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ’২২

অনেক বড় হও

69605

71889

মোঃ ওয়াসিউন সরকার আফিক
এই দিনে উয়া- উয়া শব্দ আওয়াজ করেছো;
আর বড় বড় অট্টালিকা, ইট পাথরে সাথে
ঘসে- ঘসে চার বছরে পা দিলে! নতুন কাপড় জুতা কিনেছো।

আরও জোরে জোরে হাঁট বলে- ভাইয়ের স্কুলে যাবে;
জন্মদিনের আনন্দটা ভাগ করবে মেজ ভাইয়ের জন্মদিনে
তার কষ্ট নেই- দুঃখ নেই দুরন্ত চঞ্চল! স্বপ্নের
কোন নির্দিষ্ট নেই; দোয়া কালাম কিছু বুঝে না আনন্দটাই মুখ্য
অনেক বড় হবে এটাই আর প্রত্যাশা! তোর ইচ্ছা
পুরোন হোক- শুভ শুভ জন্ম দিন-অনেক অনেক বড় হও।

১৩ আশ্বিন ১৪২৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ’২২

অমাবস্যার মোড়

images (3)৪৫৬৭৬৫৪

রঙ্গমঞ্চে জীবনের রাস্তা মোড়!
কখন ধূলি বালির সাথে মিশে যাই!
জ্যামিতি কিংবা পরিমাপ
যন্ত্র কেউ হার মানায়;
কোন মেঘের বজ্রপাতে
পাড়াপড়শী জেগে উঠে না।
খিড়কি মনের দরজা জানালা বন্ধ-
রাগ অভিমানে সবই অন্ধ;
হয় তো কিছু ক্ষণের জন্য
পাড়াপড়শীদের বিবেক জেগে উঠবে-
কিন্তু মন আনন্দে স্পর্শ ছুঁইবে না
কারণ মাটির প্রেমেই শেষ; এই হলো
জীবন! চারপাশে অমাবস্যার মোড়।

১০ আশ্বিন ১৪২৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ’২২

বেশ হচ্ছে

images বেশ হচ্ছে

বেলকনির পাশে ডেঙ্গুর আনাগোনা বেশ হচ্ছে
রূপালি দেহ বরাবর জানালাটাও খোলা;
চুলের নাকি হাত পা আছে- হেঁটে- হেঁটে
রান্না করা পাতিলের মধ্যে ডুবে সাঁতার কাটে;
আজ কাল তেলাপোকারাও বেশরম হয়ে যাচ্ছে
মাছ কিংবা মাংসের সাথে মজাদার রোস্ট হচ্ছে
তেলাপোকা আর পেটের মূত্রনালী ডাইরেক্ট হচ্ছে
টয়লেটে। অথচ কবিতার আর্তনাদ বুঝেও বুঝে না
দ্রোহের মিছিল এ খাট ও খাট জুড়ে
নগ্ন ভাষার গল্প বেশ হচ্ছে হাসপাতালের দিকে
দেহ ছুটে যাচ্ছে মৃত্যুর কুলে বাহ বেশ হচ্ছে।

০৫ আশ্বিন ১৪২৯, ২০ সেপ্টেম্বর ’২২

ঠিকানা

imag

পশু জবাই রক্ত জানি
সুখের উড়া পায়রা!
কালমেঘের আাকাশ জানি
কষ্টের ধোয়া আয়না;
আইল পাথারে খুঁজে পাই
সবুজ ঘ্রাণের মুখ!
মাটির বুকে ফুটেছে সব
রক্ত জমার সুখ
ভাসায় যত রক্ত জলে
মাটির কান্না দুখ
দুর্বঘাসের নিচে মাটির ঠিকানা
ডাকি কত শুনে না।

৩১ ভাদ্র ১৪২৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ’২২

নদের মেঘ

pexe

টিনের চালে বৃষ্টির মেঘ
গড়ে গড়ে অবশেষে
ঐ অট্টালিকার ছাদ;
রোদ বৃষ্টি মিষ্টি হাসি
সবই তার পূর্ণিমা চাঁদ!
আলিঙ্গন শুধু হীরাপান্নার
দরজা জানালা এমন কি
সোনার পালঙ্কে কাঁথা বালিশ;
খানিকটা দুপুর সন্ধ্যা ভোর
শিশির ভেজা আগলা মন-
এখানেই নিকুঞ্জ বিষাদের উঠন
বর্ষা জলে ভরেছে নদের মেঘ;

২৭ ভাদ্র ১৪২৯, ১১ সেপ্টেম্বর ’২২

জন্মের গুণে

20

একমুঠো সাদা আকাশের জন্মদিন
আবেগ অনুভূতি উপলব্ধি ছুঁয়ে যাচ্ছে-
রাস্তার মোড়ে কৃষ্ণচূড়া লালে লাল!
মিছিলে- মিছিলে সুবাসিত গন্ধ ভাসছে
অন্তহীন দেহের ভাজে- ভাজে;
অথচ কাপুরুষ ভীতুর দল নোংরা
বর্ণমালা গাঁথছে আর গাঁথছে- যত
নর্দমার ভাষা, জল মাটি, গাছপালা
লতাপাতা বিমুখ; তবু যুগ যুগান্ত ধরে
গন্ধবিরল ফুটুক ফুল, জন্মের গুণে।

২০ ভাদ্র ১৪২৯, ০৪সেপ্টেম্বর ’২২