আলমগীর সরকার লিটন এর সকল পোস্ট

আলমগীর সরকার লিটন সম্পর্কে

আলমগীর সরকার লিটন। লেখকের প্রথম কবিতা প্রকাশ হয় ‘দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘ভিজে যাই এই বর্ষায়’ এরপর লেখকের অন্যান্য কবিতা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে থাকে যেমন- ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা "মেঘফুল", ত্রৈমাসিক পত্রিকা ’পতাকা’, মাসিক ম্যাগাজিন, সংকলন ‘জলছাপ মেঘ’। এছাড়া অনলাইন পত্রিকায় লিখে থাকেন। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ’’মেঠোপথের ধূলিকণা’’ প্রকাশিত।

চিনেও চিনে না

ma

রাত নিঝুম আকাশের গায়ে নাকি চাঁদ
দেখা যায় না; যত অদ্ভুত কর্মকাণ্ড মাটির
স্পর্শে! অথচ ভোরের স্নিগ্ধতায় বিবেক
শূন্য উঠনে সাত পাতার গাছে গোলাপ
ফুটে না- যাহার কোন অর্থবহ হয় না
বুঝেও না- সূর্যের কিরণ মনে; তারপরও
চঞ্চল ঘোড়ার গাড়ি রাস্তাও চিনেও চিনে না
উত্তর দক্ষিণ শুধু রাজনৈতিক যত সব
ঠোঁট বাঁকানো কথার উত্তাপে দেহ অনল
প্রেমপ্রীতি জ্বলেও জ্বলে না- উজ্জ্বল চাঁদ-
দক্ষিণা জানালাতেও উকি মারে না আর
নিস্তব্ধ আঁধারমুখি যত সব মাটির স্তূপ।

১৬ ভাদ্র ১৪২৯, ৩১ আগস্ট ’২২

বিপদ ছাড়ে না

223

বিপদের গায়ে ঠাণ্ডা বাতাসে
জল গড়ে না। মেঘলা মন
মাটির দোসর ঘাসফড়িঙে!
মনের দ্বারে দক্ষিণা আকাশ
পূর্ণিমা ফুরায়- বিপদ ফুরায় না
ঘার ঘাপটি মেরে থাকে রাস্তার
মোড়ে! অথচ মেঠোপথ ধু -ধু
শ্মশান, রাত গড়িয়ে দুপুর সন্ধ্যা;
অতঃপর বিপদ ছাড়ে না নদীর
চারিধার বালুচর কিংবা কাজল।

১৩ ভাদ্র ১৪২৯, ২৮ আগস্ট ’২২

অক্লান্ত ঘাস

home-1অক্লান্ত ঘাস

ভাদ্ররী মেঘলা আকাশ
বর্ণ চূড়ায় বিষাদের অনল
তবু পুড়ছে না মাটির মন
ভাদ্ররী মেঘলা আকাশ;
এই সরিষা ফুলের মাঠ
এতো বর্ষায় ভাসছে পাপড়ি
অথচ বৃষ্টির আনন্দ নেই;
যত সরিষা ফুলের মাঠ!
মেঘ শূন্য আঁধারে আর্তনাদ
ঘন রাতদুপুরে সর্বনাশ-
স্নিগ্ধ ভোরে অক্লান্ত ঘাস!
বলো কে বায় বাতাস?

০৮ ভাদ্র ১৪২৯, ২৩ আগস্ট ’২২

নাশী

1609065304_5fe8635893557_2

হু গদ্য আর পদ্য
বুঝলাম না চৌদ্দ!
ছন্দের হাত পাও-
শব্দের মুখে খাও;
বিষয়বস্তু ভাবনার
জল- বুকের পারে
খল; তবু ত্রি-রাশি
ছন্দের বাশি-বাজাও
বড় কাশি-এ জগতে
ছন্দেই দুলে নাশী!
গদ্য আর পদ্য- মন
গভীর জলশুকনো পদ্ম।

০৫ ভাদ্র ১৪২৯, ২০ আগস্ট ’২২

সাপ

Dendroaspis_viridisPCCA20051227-1885B সাপ-২

সময় এখন যে, চিরস্থায়ী মনোভাব
লোভ লালসায় ঢাকে না তার খাপ;
মাছির মতো ছুটতে চায় অলিগলিতে
চোখে মুখে ফুটাবে নাকি সরিষা ফুল
সাহস হারাস না ধানশালিক- ফিঙ্গের
দিকে তাকিয়ে লাভ নেই- অলিগলিতে
উড়তেই হবে শালিক! মনের চারপাশে
ভেবে রাখ বেহেশত-ভাবো না জাহান্নাম
নাম- যশ খোঁজ না অলিগলি- বেহেশতে
ঐ দেখো এগে আসছে কর্মের ফলে সাপ।

০১ ভাদ্র ১৪২৯, ১৬ আগস্ট ’২২

রাতের চিল

4fb9f

রোজ রোজ আকাশ দেখি নীল
মনের মাঝে কষ্ট সব খিল!
মেঠো পথে সোনালি গন্ধের টানে
উড়ে যায়- পূর্ণিমা রাতের চিল
চিল তো নয় বুঝি শঙ্খচিল!
ঘাস ফুলের বাগানে এক নোনা বিল
দেখতে যদি পাই পিরিতির ঢল;
সুখের নায়ে জল শুকন বালুচরে মিল।
যত সব দেখো না মাটির ঘর-
এক নিমেষেই কতদূর করলে যে পর।

২৭ শ্রাবণ ১৪২৯, ১১ আগস্ট ’২২

শৃঙ্খলা

1650

এক দলা মাটি কিংবা ইট পোড়া বাসনা
হরদম চলছে বুক পাঁজরে- অথচ মেঘ
বৃষ্টির ভয় নেই-রক্তক্ষরণে জলাশয় নদ;
মনের গভীরে ইট ভাটার অনল জ্বেলে
শান্ত হতে বল মাটির চূড়া-তারপর
অহমিকা চোখের আঙ্গুলে চিনো না
এমনকি বুঝো না- এক বিদ্বেষীর তরী
ভাসাচ্ছ রোজ- রোজ! মনের সিঁড়ি কিংবা
দেওয়াল পার্থক্য করতে পারও সহজ ভাবে,
ভাঙ্গতে পারো না মৃত্যুর শৃঙ্খলা; অতঃপর
প্রাইমারি হাইস্কুল কত রেখেছিলাম-
জ্ঞানের কোষে আওয়াজ তুল একটা শৃঙ্খলা।

২২ শ্রাবণ ১৪২৯, ০৬ আগস্ট ’২২

শেষ বেলা

images শেষ বেলা-২

হাসির দাঁতে- চাঁদ ঢেকেছে ঠোঁট;
মাটির পরশ আর কতখানি দোসর
সবই মাথার মুকুট ঝলসে উঠে-
নদীর পার কিংবা নদের বালুচর
হাসির কান্না এক অদ্ভুত গোধূলি বেলা
সন্ধ্যা যেনো আনন্দ মুখর ভোরের প্রত্যাশা
অথচ চোখ নুনের খনি সম্পদ;
নীরবে দীর্ঘশ্বাস গোপনে হেঁটে চলা-
কতদূর প্রণয়ের দোসর, সোনালি দেহের
খেলা, সংসার শ্রাবণ প্রাসঙ্গিক শেষ বেলা।

১৭ শ্রাবণ ১৪২৯, ০১ আগস্ট ’২২

গন্তব্য

Ghuturi-1580884238-8072adc_xlargeগন্তব্য-২

ট্রেনের শেষ স্টেশন কথায়?
ঘুম যার মাটির ঘাসফুল- না
বিছানা তার ধূলি বালি- চাপা
মৃত্তিকার নরম দুল! তবু বুঝি
স্টেশনের পটে সুখ নাই- দুঃখ
নিঃশ্বাসে দুর্গম ছুটে ছু্টে চলা
চোখ মুখ সবই বন্ধ; কে বুঝে
দু’চাকা ট্রেনের শেষ গন্তব্য।

১৫শ্রাবণ ১৪২৯, ৩০জুলাই’২২

বুক পাঁজরের ঢেউ

main

মৃত্যুর চোখে ধরণির
যত সব স্বার্থপরতার উকুন
কঠিন রোগের থেকেও কঠিন;
অথচ কবরের মাটি একদিন অদৃশ্যের
ছায়া উঠনে জল ভূমি কিংবা
অট্টালিকার ছাদ- তবু পূর্ণিমা
চাঁদের ঝলকানি দিবে না; কারণ
সেতো মৃত চোখ ওপারের খেয়া নেই
শুধু তরি ভাসমান জলের নদ!
অতঃপর ছলাত ছলাত বুক পাঁজরের ঢেউ।

১০শ্রাবণ ১৪২৯, ২৫জুলাই’২২

কচু ভর্তা

images কচু ভর্তা

হঠাৎ কেনো কচুর গালে লোডশেডিং
অন্ধকারে কি চুলকায়- তবু স্বপ্ন দেখি
উঠন জুড়ে হরেক রকম কচুর চাষে;
আমি বাবু পছন্দ করি কাঠকচু! জন্মে
থাকে গোলঘরের পিচু- ওলকচু ভাবো
তাই উন্নয়নে সবকিছু, কচুর জম নাই
এলার্জিটা মাঝে মাঝে ঘার ঘুরে কাঁদে
রক্তচক্ষু মন ভাবনা বিশ্বাস বাসি দেখে
রাত আটার পরে দোকানপাট বন্ধ কর
ঘরে বসে কচু ভর্তা লোডশেডিংয়ে মাখ।

০৫ শ্রাবণ ১৪২৯, ২০জুলাই’২২

ছলনার রূপ

sadia

আষাঢ়ের গল্প হয়ে যাচ্ছে-
অনেক কিছু অথচ শ্রাবণ
সুধায় অনেক খানি কারণ
সোনালি ক্ষণ যত সব ঋণ;
শুঁকে গেছে মরুময় যত ক্ষত

তবু আষাঢ় ফিরে কিন্তু প্রাণ
আকাশে বাদল, মাটিতে কাদা
এই কি তোমার ছলনা রূপ;
ফাল্গুন দেখো স্বার্থের পূজারী
আগুন নিভাও না কালবৈশাখী।

০১ শ্রাবণ ১৪২৯, ১৬জুলাই’২২

চাপা

images চাপা

রাস্তা রাস্তা ও রাস্তা
চাপা দিলে চাপা লাগে
না দিলে ঝগড়া!
আমায় বন্ধু কষ্ট লাগে
বর্ষা দিনে কাঁদা-
ফাল্গুন রাতে আগুন
ঐ পাড়ার রাস্তা;

ধূলি বালি উড়ে যায়
মেঘের বাড়ি- মাটির
গন্ধে পিরিতি বন্ধু!
কেনো রাখো আড়ি;
ফুলের মতো হতে চাই
অযথা কেমনে মার যাতা
তবুও পাপে জড়াও কাঁথা;

২১আষাঢ় ১৪২৯, ০৫জুলাই’২২

কবুল বলা

index কবুল

কবুল বলার সাথে সাথে
অধিকার অহংকার হয়েছে;
অথচ ভালবাসা বুঝে না?
ক্ষমতার জুড়িয়ে দখল করতে
চায় সবকিছু কিন্তু মনের উপর
কাবিল নামার অধিকার চলে না;
অতঃপর ভালবাসা বুঝো- নিবিড়
ভাবে- যাহা জোছনা রাত হয়!
ভোরের শিশির স্নিগ্ধ বয়- এভাবেই
একদিন কবুলের অধিকার রয়।

১৮আষাঢ় ১৪২৯, ০২জুলাই’২২

কথার বন্যা

Kurig

গর্বে অহংকারে
ভরে উঠেছে নদ নদী!
খর স্রোতে ভাঙ্গছে-
বুক পাঁজর-তবু দুঃখের
অন্ত নেই! খর মুখে
অভিনয়ে যত সব খেলা!
যতদূর সুখের ভেলা;
মাথা নেই যার দুপুর বেলা
কে সুধায় রাতের কায়া
মেঘ বৃষ্টি চেয়ে থাকে সোনা
গর্বে অহংকার ভরে যায়-
কনটুসি দেহের ভাজে কান্না
কে শুনে কথার বন্যা।

১১আষাঢ় ১৪২৯, ২৬জুন’২২