দাউদুল ইসলাম এর সকল পোস্ট

দাউদুল ইসলাম সম্পর্কে

সব সময় নিজেকে বলি- মানুষ হবি যদি- অন্ধকার ঘরে যখন একা থাকবি তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিস তুই কতটা মানুষ। কতটা তোর সভ্যতা কতটা তোর ভদ্রতা! স্নান ঘরে যখন একা শাওয়ারের নিচে দাঁড়াস- তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করিস কত টা আছে তোর মনুষত্বের রুচি! জিজ্ঞেস করিস কতটা তুই ভদ্র, সভ্য!

মায়ের প্রস্থান নাই

301

মাটির গন্ধে মিশে থাকে
নিবিড়তার সুবাস,
শব যাত্রীরা চলে গেলে-
পড়ে থাকে দীর্ঘশ্বাস!
দূর আকাশে উড়ে যায়
স্বজনের কান্না
চল্লিশ কদমে স্মৃতির সংলাপ
বিশদ বিলাপ-
নিষিক্ত বীণা…
চোখে চোখে মায়ার মন্থন
ডুকরে কাঁদে কন্যারা, পুত্রের বুকে গুপ্ত ক্ষরণ…
অসহায় কণ্ঠ জড়িয়ে আসে
দূর কৈলাসে ভালো নেই হিমাংশুর মন;

আজ বুঝি অবুঝ সবাই।
সান্ত্বনার পরশে-
কাছে এসে নির্বাক আপনজন!
মা চলে গেছে
ছিন্ন করে সমস্ত মায়ার বন্ধন-
কেউ জানবে না-
অন্তরে তার কোন প্রস্থান নাই, বিচ্ছেদ নাই
সংসারে যিনি চিরন্তন ছায়া… আশ্রয় আজীবন …
.

(গত ১৫ই আগষ্ট ছিলো আমার শাশুড়ী আম্মার প্রয়াণ দিবস। উক্ত কবিতাটি মমতাময়ী মা কে নিবেদন করে লেখা। আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসীব করুন )

খন্ড কবিতা

309

ছাই চাপা বুকের কপাট খুলে- দ্যাখো
ফুলের নাম করে চেয়ে গেছে হেমলক, সংক্রমিত বিষ
এভাবে আরো কিছু ঘা, অসংগতি, রক্তঘাতি শাপ
মরণের আহ্বানে গলিত পাথর- হিমবাহের স্রোত
বইছে অশ্রু-নদী শতদ্রু…

তাপসীরে…
অলীক সাধনের রাত পোহালে
আসিস শুদ্ধ স্নানে! নইলে
রক্ত গমনে আত্মা’রা সাক্ষী হয়ে ফুটবে
সংরক্ষিত বাগানে…

আত্মানুভব

আত্মানুভব (২)

images (36)

আকাশের কোন পাখিকে ধরে এনে
তাকে যদি দামী সুস্বাদু খাবার দিয়ে
সোনার খাঁচায় রেখে লালন পালন করা হয়
তবু সে সুখী হয়না, হতে পারেনা;
তেমনি আমারা মানুষের বেলায়ও,
মানুষ চৈতন্যভরা মহা জীবাত্মা,
স্রষ্টা সমর্পণ ও একাত্মতা প্রকাশেই যার
আসল সাফল্য ও পরমানন্দের সন্ধান মেলে!

অন্যথা সে যতোই সম্পদশালী হোন
ধনবান হোন
প্রকৃত পক্ষে সে ভিখারির চেয়েও অধীক অভাবগ্রস্থ ও অস্থির চিত্ত!
যা শুধু স্রষ্টায় সমর্পিত মানুষই অনুধাবন করতে সক্ষম।

Scre

দাউদুল ইসলাম
৯/১০/২২

জলুস ভরা মেহফিল

12

… তারপর পল্লবিত পুষ্পের মসৃণ পাপড়ি গুলো হলো রক্তাক্ত !
হেমলকের বিষ মাখা রেণু আর সমস্ত বিদ্বেষ চাপা অনুক্ত স্বপ্ন,
কাজল ডাগর চোখের নিচে জমাট বেধে রইল পৃথিবীর সমগ্র ক্লেদ
না, জল নাই
অশ্রু নাই… কান্নার মাতম হীন নীরবতায় নেমে এলো ঘুট ঘুটে রাত।

বড় আশার ভেলায় ছড়েছিল জীবন
তার চেয়েও বড় আঘাত পেয়ে রুদ্ধ হলো গগন মুখো দ্বার!
এখানে আর কোন দিন জোছনা নামবে না, বৃষ্টির রিনঝিন ছন্দ
অথবা আনন্দে হাসবে না গোধূলির হিজল রাঙ্গা ঠোঁট; কেবলই অন্ধকার
আর নিকোটিন পোড়া উজাড় জীবন।

সত্যি আজব এই পৃথিবী! এই উদ্যান… রঙ্গমঞ্চ
বড্ড আজব এক একটি চরিত্র,
ডায়লগের স্তূপে পড়ে থাকে ভালোবাসা, মানবতার প্রেম
গ্লাস ভর্তি সুরায় ডুবে থাকে সুখের সমস্ত আরাধনা; নিষ্প্রেম আগুনে
একের পর এক সিগারেট পোড়ে, তবু
কি অবলীলায় আওড়ায় প্রতিটি ডায়লগ.. সুর… অন্তরা

এত কিছুর পর চিনতে পারবে কি?
হে সতীর্থ…… শুভানুধ্যায়ী
হে জলুস ভরা মেহফিল
পারফিউমের ভারী আস্তর ভেদ করে তোমাদের নিঃশ্বাসে আমি আছি কি?
খোশ গল্পের রসনায় কিংবা বিষয় বস্তুহীন কোন আলোচনায় পৌঁছবে কি এই কবিতা!

শেখ হাসিনা, বেচে থাকুন বাংলাদেশের জন্য

Poli

মানবতার জননী
দেশরত্ন, বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন!..
দীর্ঘায়ু লাভ করুন
বেঁচে থাকুন বাংলাদেশের জন্য!..

আজ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠা কন্যা, স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭৫ পরবর্তী সময়ে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, মাদার অফ হিউম্যানিটি, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন গবেষণা সংস্থা দ্য স্টাটিসটিকস্ এর সেরা প্রধানমন্ত্রী জরিপে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নব পর্যায়ের বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা। হিমাদ্রী শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কাণ্ডারি। উন্নত সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার। বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার একান্ত বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্নসারথি। বিশ্বরাজনীতির উজ্জ্বলতম প্রভা, বিশ্ব পরিমণ্ডলে অনগ্রসর জাতি-দেশ-জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র, বিশ্বনন্দিত নেতা। বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ‘নীলকণ্ঠ পাখি’, মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্ত মানবী। তিমির হননের অভিযাত্রী, মাদার অব হিউম্যানিটি। আত্মশক্তি-সমৃদ্ধ সত্য-সাধক। প্রগতি-উন্নয়ন শান্তি ও সমৃদ্ধির সুনির্মল-মোহনা। এক কথায় বলতে গেলে সমুদ্র সমান অর্জনে সমৃদ্ধ শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেধা-মনন, সততা, নিষ্ঠা, যোগ্যতা, প্রাজ্ঞতা, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদার মুক্ত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। এক সময়ের কথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশকে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতে হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণমুখী নেতৃত্বে সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রাম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান। এই নিভৃত পল্লীতেই ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। মাতার নাম বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। তিনি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। শৈশব কৈশোর কেটেছে বাইগার নদীর তীরে টুঙ্গিপাড়ায় বাঙালির চিরায়ত গ্রামীণ পরিবেশে, দাদা-দাদির কোলে-পিঠে। পিতা শেখ মুজিবুর রহমান তখন জেলে বন্দি, রাজরোষ আর জেল-জুলুম ছিল তাঁর নিত্য সহচর। রাজনৈতিক আন্দোলন এবং রাজনীতি নিয়েই শেখ মুজিবুর রহমানের দিন-রাত্রি, যাপিত জীবন। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনে ব্যস্ত পিতার দেখা পেতেন কদাচিৎ। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শেখ হাসিনা ছিলেন জ্যেষ্ঠা সন্তান। তার কনিষ্ঠ ভাই-বোন হলেন- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। শেখ হাসিনা গ্রামবাংলার ধুলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সাথেই বেড়ে উঠেছেন। গ্রামের সাথে তাই তাঁর নিবিড় সম্পর্ক।

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তাঁর পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসনে। পুরানো ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন। পরে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য নির্বাচিত হলে আবাস স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বসবাস শরু করেন ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর। এ সময় শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। একই বছর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন এবং ৬-দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬-দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্তস্ত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় প্রচণ্ড দমন-নির্যাতন-নিপীড়ন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তাঁর জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা, অনিশ্চয়তা ও অসহনীয় দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলিতেই, কারাবন্দী পিতার আগ্রহে ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় বাঙালি জাতির ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে যখন পাকহানাদার বাহিনী গ্রেফতার করে পাকিস্তানের করাচিতে নিয়ে যায় তখন বঙ্গবন্ধুর গোটা পরিবারকে ঢাকায় ভিন্ন একটি বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই গৃহবন্দি থাকাবস্থায় শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তিনি মুক্ত হন। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর তার কন্যা সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল জন্ম লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এসময় বিদেশে থাকায় পরম করুণাময় আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক কাউন্সিল অধিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশ-মাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সামরিক জান্তা, স্বৈরশাসন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে চলে একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেলজুলুম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাঁকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তাঁর সরকারের আমলেই ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি। সম্পাদিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। বাংলাদেশ অর্জন করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মুদ্রাস্ফীতি নেমে আসে ১.৫৯ শতাংশে। দারিদ্র্য হ্রাস পায়। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনার প্রথমবারের (১৯৯৬-২০০১) শাসনকাল চিহ্নিত হয় ’৭৫ পরবর্তী সময়ের স্বর্ণযুগ হিসেবে।

২০০১ সালের ষড়যন্ত্র ও কারচুপির নির্বাচনের পর বিএনপি-জামাত অশুভ জোট ক্ষমতা গ্রহণ করে। এ সময় দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে জোট সরকার সারাদেশে কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব। হত্যা করা হয় ২১ হাজার দলীয় নেতা-কর্মীকে। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তদানীন্তন বিএনপি-জামাত জোটের সরকারি মদদে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে চালানো হয় পরিকল্পিত নারকীয় গ্রেনেড হামলা; যার প্রধান লক্ষ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। গুরুতরভাবে আহত হলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। তবে এই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেন অসংখ্য নেতা-কর্মী। বাংলাদেশ পরিণত হয় এক মৃত্যু উপত্যকায়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের মদদে সারাদেশে ধর্মীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ব্যাপক উত্থান ঘটে। আর তাদের এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান অকুতোভয় শেখ হাসিনা। বাংলার আপামর মানুষ তাঁর আহবানে রাজপথে নেমে আসে। ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনের অবসান হলেও সংবিধান লঙ্ঘন করে বিএনপির রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন আহমেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ দখল করেন। হাওয়া ভবনের নির্দেশে চলতে থাকে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নির্বাচনী প্রহসনের প্রস্তুতি। গর্জে উঠে বাংলাদেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। শুরু হয় গণ-আন্দোলন। বাতিল হয় পাতানো নির্বাচন। প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন ইয়াজউদ্দিন। ঘোষিত হয় জরুরি অবস্থা। ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

১/১১-এর পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে আসার সময় বেআইনিভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু সাহসিকা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারি নিষেধাজ্ঞা, ষড়যন্ত্র ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৭ মে ফিরে আসেন প্রিয় স্বদেশ ভূমে। কিন্তু এর মাত্র দু’মাস পর ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজ বাসভবন সুধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে দানবীয় কায়দায় গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা। কারাগারে তাঁর জীবননাশের ষড়যন্ত্র চলে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জীবন মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে চলতে থাকে গণসংগ্রাম ও আইনি লড়াই। আওয়াজ ওঠে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন নয়। বদলে যায় দৃশ্যপট। জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অমিত সম্ভাবনার শক্তিশালী ভীত রচিত হওয়ায় জনপ্রিয়তার অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যান শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নের্তৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আজ সফলতার সাথে টানা তৃতীয় মেয়াদে চতুর্থবারের মতো দেশ পরিচালনা করছেন। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে দেশবাসী আজ সুফল পাচ্ছে। অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে সকল প্রতিবন্ধকতা সমস্যা-সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। ২০০৯ থেকে বিগত এক দশকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের বিনির্মাণের অভিযাত্রায় যুক্ত হয়েছে অজস্র সাফল্য-স্মারক।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চুড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি ও সমুদ্রবক্ষে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৯০৯ ডলারে উন্নীত, প্রবৃদ্ধি ৮.১ শতাংশ, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাওয়া, ৯৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ-সুবিধার আওতায় আনা, যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, স্বাক্ষরতার হার ৭৩.৯ শতাংশে উন্নীত করা, বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ফোর-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন জননেত্রী শেখ হাসিনার। সাফল্য গাঁথা এই কর্মময় জীবন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকাকীর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারা নির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বার বার তাঁর জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ২০ বার তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।

সহজ সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোন প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো প্রকার ছাপ নেই। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান ও ধার্মিক। নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরান তেলওয়াতের মাধ্যমে তাঁর দিনের সূচনা ঘটে। পবিত্র হজব্রত পালন করেছেন কয়েকবার।

একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইতোমধ্যে তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ পদক, পুরস্কার আর স্বীকৃতিতে।

নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ় মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সকল আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। ’৭৫ পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ গোটা বাঙালি জাতির জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।

২৮.৯.২২
দাউদুল ইসলাম
( কবি ও প্রাবন্ধিক)

ডুবে আছি

3003

আমি কোথাও যাইনি
জেগে আছি
রাতের পাঁজরে চন্দ্রিকা বনে
একটি নক্ষত্রের ভালোবাসা অন্বেষণে

আমি জানি সে আসবে
আছি সত্তার নিবড়ে
চেয়ে আছি কণ্টক বিস্তর সড়কের পাণে
একটি স্নিগ্ধ গোলাপের প্রত্যাশায়।

রাতের তৃতীয়া পক্ষের অভিসারে
ডুবে আছি
একটি অমর্ত্য প্রেমের আশায়

দায় স্বীকার

3004

আমি নির্বোধ
মূর্খ
পিপাসাক্রান্ত নাদান!..
তুমি চাইলেই
নিতে পারো শোধ
ক্ষমাও
দিতে পারো করুণা দান।

আমি হীনবল
পাপিষ্ঠ
লঙ্ঘন করেছি সীমানা প্রাচীর!..
তুমি সর্বোত্তম
করতে পারো কুক্ষিগত
মুক্তও
দয়ার আধার হতে পারো অধীর….

রঙ্গমঞ্চের কালো পর্দা

daud

সহস্র বিষণ্ণ রাত পাড়ি দিয়ে
বাগানের অজস্র ফুল মাড়িয়ে বপন হয় একটি স্বপন!
সেই স্বপন ভাংতে কতক্ষণ?
একটি স্বপ্নের আয়োজনে বিভাজিত আপন -পর, মিত্র- দুশমন
যোজন বিয়োজনের নির্মম অধ্যায় পেরিয়ে, পৃথিবীর তাবৎ মোহ ত্যাগ!
দিকভ্রান্ত পাখির ভাগ্য নির্ভর ডানা মেলে উড়াল দেয়া অ-দিগন্ত পথে!
সেই স্বপন ভাংতে কতক্ষণ?

প্রিয়তমার চোখে রঙ্গমঞ্চের কালো পর্দা
আড়ালের ছায়া, আবহ কণ্ঠ
জীবন ভর্ত্তি যানবাহনে পেট্রোল বোমার প্রজ্বলিত দাহ
আদর্শচ্যুত রাজনীতির বলি হতে কতক্ষণ? শোকাবহ
স্বজনের অশ্রুতে জ্বল জ্বল করে ঘৃণা, ক্ষোভ, প্রতিশোধের স্পৃহা!
ইথারে ধুকে এক একটি স্বপন
জীবন!!

টুক টুকে লাল লিপস্টিকের ঝলকে লকলক করা লোলুপ জিহ্বা
চোখের পাতায় রহস্য তিথির কারুকার্য,
সুডোল বুকের উষ্ণ শাঁখ থেকে বেরোয় বোঁটকা গন্ধ!
আহ!!
দারুণ!
অসম!!
স্বর্গীয় অপ্সরা
ডানা কাটা পরী!!
কতো কি বাহবা, অভিনন্দন, শুভেচ্ছা, শুভানুধ্যান
আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম স্বপ্ন কি?
নেড়ি কুত্তার মতন কুই কুই করে মনিবের পা চাটতে পারিনি যদিও!
সভ্যতার হাত ধরে
সততার অনু চক্রে স্থাপন করতে চেয়েছিলাম মহার্ঘ স্বপন!
অনাকাঙ্ক্ষিত জ্বালাও পোড়াও থেকে অনেক দূরে
অবাঞ্ছিত জঞ্জাল হতে অনেক অনেক দূরে…
যেখানে মন – মানবতার বিচারে জীবন ধারণ করে।

কতক্ষণ লেগেছিল প্রাণ গুলো অঙ্গার হতে?
কত টুকু আহাজারি উঠেছিল প্রাণ হতে প্রাণ নিঃশেষ হতে
কতক্ষণ জ্বলেছিল
কতক্ষণ লেগেছিল ভেঙ্গে যেতে একটি স্বপন?

দিনলিপি

3

মন মন্দিরে
আজন্ম সন্ন্যাসের বাস
নির্ঘুম
দীঘল রজনী — ভবঘুরে দিবস
রোজ ফোটে ঘাস ফুলের আদলে
রোজ
ঝরে যায়…
রোজ কাঁদে মন..
বুকফাটা কটকটে তৃষ্ণায়!

ঘোর তপস্যায়
পেরুচ্ছি কণ্টকময় পথ
উপেক্ষা করে
জগত সংসারের তাবৎ নিয়ম নীতি
মোহগ্রস্ত দিনলিপি শেষে
ফিরি
নিরবতায়, অশ্রুত কবিতায়।.

নৈবেদ্য বিলাস

3049

ভুলে যাই
দমের পরতে পরতে তলিয়ে দিই উদ্বেগ
হারিয়ে যেতে দিই স্বপ্ন, বিপুলা আবেগ
দূরে বহুদূরে
সীমানা ছাড়ায়ে উড়িয়ে দিই দৃষ্টি
নামিয়ে আনি
মেঘের গভীরে লুকানো বৃষ্টি!…

প্রাণের উদ্যানে সবুজ মখমল
পুস্পিতার শিথান
নিঝুম মস্তকে
এঁকেবেকে বয়ে চলে নদী
কলকল ধ্বনি…
শুনি
পরিযায়ীর গান, নৃত্য মুখর ধ্যানী মুনি
তলাচ্ছি
ঝড়াচ্ছি
সুরের লহরে
ছন্দের জঠরে….
বিমোহিত ঘূর্ণিপাক রূপোলী হাতছানি!…

আহ….. প… র…মা..
আহ.. উৎসের উৎস নিরুপমা ঝর্ণা
তারও উর্ধ্বে
না তারও গভীরে
ডুব সাঁতারের ইতিহাস
উৎসের উৎসে রয়েছি মিশে
সেটাই আমার আদি নিবাস।

শেকড়ে আমি
শিখরে আমি
শান্ত সকালে কুয়াশা বিলাস,
দহনে আমি
নিপুণে আমি
উজ্জ্বল দিনের শৌর্য নির্যাস,
আমি রণবীর
আমিই হিমাদ্রীর
গভীর ঘুমার্চ্ছন্ন তৃপ্ত পিয়াস।

আলোর অভিসারে
বুনছি নৈবেদ্য মালা
তাহার জন্য গুনছি প্রহর বিশুদ্ধ লীলা
তাহার পাণে বাড়াচ্ছি হাত
একবিন্দু কৃপার আশায় জাগছি অনন্ত রাত!

চল… বৃষ্টি মোহন জোছনায় নামি

305

বৃষ্টি মোহন জোছনায় নামি
চলো…
চোখের অতলে
টলকে উঠা নেশার মাদকতায়
চলো ভিজি,
যৌবনের উচ্ছল সম্মোহনে
চলো দু’জনে মিলে বৃষ্টি চুমি !

দেখো
শিউলি ঝরা উঠোনে বুদ বুদ নৃত্য
রতি মত্ত পতঙ্গের মত
মুঠো মুঠো জোছনা
আর
বৃষ্টির অদ্ভুত আলিঙ্গন!…

চলো ভিজিয়ে নিই
আগুনের হল্লামাখা বহুদিনের পুরনো দহন
ভিজিয়ে নিই বুকের শ্মশান,
উতলা চপলে কর্দমাক্ত জলে বিলিয়ে দিই
আমাদের রুক্ষ অতীত!
চলো
সতত জোছনায় , বৃষ্টির নিনাদে
চলো উন্মুক্ত হই দুর্মদ অবাধে।…

বহুকাল ধরে
নিঃশ্বাসের যেই অস্বস্তি
আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে
সেই নিঃশ্বাসে
আজ তোর চুলের বন্য সুবাস নিতে দে,
নির্বাণ দহনে
বুকের যেই গ্রন্থি এত কাল ছিলো রুদ্ধশ্বাস!
জোছনা চাদরে
আজ তাকে পেতে দে-
ভরা বৃষ্টির আস্বাদনে;
তুই ও ধুয়ে নেয়
সাত জনমের কষ্টের কাহন, নির্লজ্জ খিদে!..

প্রাণের তাগিদে-
প্রাণ ভরে পুঁতে দে
বিরহী অস্তিত্বের সন্তরণ !

এটি কবিতা নয়

2090

এটি কবিতা নয়
এই যে অক্ষর গুলো, শব্দগুলো..
এ সবিই নিভৃতের কান্না
কালিমাময় বেদনা
অশ্রুতে কখনো কবিতা হয়না..
এই যে দাড়ি কমা, সেমিকোলন
এসবিই দীর্ঘশ্বাসের অনুকম্পা ;

মৌন প্রস্তরখণ্ডের আদিম আঘাত
মৃতের মতো শীতল
বৃষ্টিস্নাত পরিত্যক্ত ঝর্ণা প্রপাত।

আর যাই হোক
এসব কখনোই কবিতা নয়!..

ঐ যে-
শিশিরের শব্দে একাকার নিতি নৃত্য
পাতা ঝরার ছন্দে শুনতে কি পাওনা
পৃথিবীর তাবত কবিদের গুপ্ত কান্না!
শূন্য দৃষ্টি মেলে
অতলান্তিক দহনে পোড়ায় আলেখ্যদর্শন,
পুড়ে যায় সমূহ চেতনা
প্রাগৈতিহাসিক মন!
কতো
আর কতো নিঃশেষ পতন
কতো আর অধীর ঝুলন..
কবিতাহীন
নির্বাক-ধূসর জীবন!..

কান্না
থামে না
নিশিদিন ঝরছে বেদনা’শ্রু
নির্বাসনের রোষানলে
ঝরছে প্রাণ
স্বপ্ন শতদ্রু…
চেনা অক্ষরে
চেনা শব্দে- অচেনা গোঙানির মতো
অস্পষ্ট কবিতা
যেনো
বুলি ফোটা কবুতরের ছোট্ট ছানা
তালিম নিচ্ছে “বাকবাকম’…..বাকবাকম…

১১/৯/২২

সিক্ত হব অমৃত সুরায়

13719

তুমি আরো কিছুদিন দূরে থাকো
আমি একটু বিরহে কাতর হয়ে নিই
আর একটু জ্বালাময়ী আকাঙ্ক্ষায়
হৃদয় খণ্ড বিখণ্ড হোক-

–তারপর আরো কিছু কাল পর তুমি এসো
লালচে কালো শাড়ীটা পড়ে
মেকী হাতার ব্লাউজটার সাথে ম্যাচিং করে
চুল গুলো নরম খোপায় বেঁধে
জানো- তোমার খোপার নিচে খোলা পিঠ টুকু
যেনো মনে হয় মেঘ কেটে নির্গত একফালি চাঁদ
আমি উদগ্রীব হয়ে থাকবো হাত বাড়িয়ে
তুমি একটু লাজুক
একটু দ্বিধা কিংবা একটু কানি অহংকারে দিতে পারো বাধা
আমিও খুব জোর করবোনা
বহু বিরহে কাতর দেহ শক্তি পাবেনা যে-
তবুও আগলে নিতে চাইবো।

আমার এক একটি স্পর্শে শির শির করে কেঁপে উঠবে তুমি
লজ্জাবতী লতার মত নেতিয়ে যাবে
তবু তোমার এক একটি উষ্ণ নিঃশ্বাস
ছুঁইয়ে যাবে আমার বুক
তোমার বুকের সুচালো ছোঁয়ায়
ভয়ানক সাপের ফানার মত ফুসে উঠবে আমার সর্বশীর
আমি আরো নিবিড়তা চাইবো
বহু দিনের জমানো জ্বালা নেভাতে চাইবো
তুমি নব বধূর মত ভাব করবে
লজ্জা লজ্জা ভাব
যেন এখন তুমি নব তন্বী-যেন অক্ষত কুমারী
আমি তর না সইতে পেরে অনুভব করবো তীব্র তৃষ্ণা
রাগ অনুরাগ মান অভিমান
লাজ লজ্জা সব ভুলে তুমি উন্মোচিত হবে
জ্যোৎস্নার প্রফুল্ল ধারায় স্নান করবে
আমিও সিক্ত হব অমৃত সুরায়–