তোমাকে ভালোবাসি
তুমি উষ্ণতায় চুম্মন দাও, ভিজিয়ে দাও উর্বর শরীর। বৃষ্টির মতো ভালোবাসি তোমায়, তোমার শৈপ্লীক অনুভবে শীতল দেহ, তোমাকে ভালোবাসি এক দুপুর বৃষ্টি জলের মতো।
তোমাকে ভালোবাসি সারা রাতের বৃষ্টি বিলাসে।
তোমাকে ভালোবাসি
বৃষ্টি ভেজা জোছনা আর জোনাকি মতো।
তোমাকে ভালোবাসি, অজর আষাঢ়ে বৃষ্টির মতো বিজলী ভেজা ভোরে।
শান্ত চৌধুরী এর সকল পোস্ট
সমুদ্র উল্লাস
স্বচ্ছ সুনীল আকাশ, নীলজল
নোঙ্গর করে ঝাউবন ছুঁয়ে
দারুচিনি দ্বীপে।
মাতাল ঢেউ নীলজল ছুঁয়ে
ঝিলমিল বালুকাবেলায়
আছড়ে পরে।
কিছু গাঙচিল উড়ে
দূরের স্রোতে নোঙ্গর করে,
উত্তাল তরঙ্গে বিলাসে।
শ্রাবণের বৃষ্টি ভেজা রাত
ঝাউবন ছুঁয়ে অন্ধকার নামে।
মহাসমুদ্র ছুঁয়ে আলো-
আধারের মিছিল।
প্রবালের বুকে শীতল প্রবাহ
ঢেউ উল্লাস, প্রবল স্রোত
কেয়াবন স্পর্শ করে
রাজ্যের সব অন্ধকার
মুক্তার মতো চিকচিক করে
নক্ষত্র বিলাস।
নব যাতকের মতো
স্বচ্ছ জল ছুঁয়ে।
নিয়ন্ত্রণহীন উল্লাস।
অবরুদ্ধ
অবরুদ্ধ আজ চোখ
কোথাও নিয়ন্ত্রণ নেই !
বধির আজ কান
কোথাও প্রবেশ অধিকার নেই !
উৎসব নেই !
উল্লাস নেই !
প্রেয়সী নেই !
অবরুদ্ধ!
সব কিছু অবরুদ্ধ ।
মঞ্চ নেই !
সমাবেশ নেই !
লংমার্চ নেই !
সব কিছু অবরুদ্ধ।
অবরুদ্ধ, প্রেমিক !
অবরুদ্ধ, ভালোবাসা,
জঞ্জাল আর
মুখোশের আড়ালে।
দেয়ালে বন্দী জোছনা
বিষণ্ণ বিকেল, বৃষ্টি হতে হতে
আর হলোনা!
শহরের যান্ত্রিকতা
ছুঁয়ে যাওয়া সন্ধ্যা।
দূরের আকাশে চাঁদ
দেয়ালে বন্দী জোছনা!
পথের বাঁকে, দেয়ালের ফাঁকে
মিটিমিটি আলোয়
মায়াময় জোছনা।
হৃদয়ের গহীনে, বেদনা নোঙ্গর করে
কোন পাখির উড়ে যাওয়ার মিছিলে,
নিঃসঙ্গ গাঙচিলের মতো জোছনা।
বেদনার রঙে মিশে যায়
অন্তহীন পথে।
প্রকৃতির বিলবোর্ড
একমুঠো বৃষ্টি জলে তোমাকে খুঁজেছি
উৎসব, উল্লাস ছুঁয়ে ছিলো তোমায়
তুমি মিলিয়ে গেছো বিজলি উৎসবে।
একমুঠো সাগর জলে তোমাকে খুঁজেছি
তুমি গাঙচিল হয়ে নীলাকাশ, নীলজল
ছুঁয়ে নোঙ্গর করেছো দূরে।
একমুঠো রোদ্র-দুপুরে তোমাকে খুঁজেছি
তুমি তপ্ত বালুকণা হয়ে মিশেছো
প্রকৃতির কোলাহলে।
একমুঠো বিজলি উৎসবে তোমাকে খুঁজেছি
তুমি আসমান ছুঁয়ে চলে গেছো
অন্তহীন আঁধারে।
একমুঠো জোছনায় তোমাকে খুঁজেছি
তুমি জোনাকি পোঁকার মিটিমিটি
আলোয় ছায়া হয়ে মিলিয়ে গেছো।
একমুঠো অন্ধকারে তোমাকে খুঁজেছি
তুমি সাদা শুদ্র গোলাপের পাপড়ির
মিতালি আর সুগন্ধ বিলিয়ে, তুমি ছুঁয়ে
গেছো রাতের মেলবন্ধনে।
একমুঠো স্নিগ্ধ ভোরে তোমাকে খুঁজেছি
তুমি নবদীপ্ত সূর্যোদয় হয়ে ছড়িয়ে পড়ছো
মানুষের কোলাহলে।
আমি যাযাবর হয়ে প্রতিদিন তোমাকে
খুঁজেছি,ফুল, পাখি, প্রজাপতি আর
প্রকৃতির বিলবোর্ডে।
ইচ্ছে ঘুড়ি (গান)
উড়ে উড়ে যাও ইচ্ছে ঘুড়ি
অবকাশ অবসরে স্বপ্নপূরী।
ঐ নীল আকাশ ঐ দিগন্তে
ভালোবাসার সীমান্তে।
সুরের মুর্ছনায় ভাসিয়ে ভেলা
উড়ো উড়ো সাতরঙের খেলা।
কখনও প্রজাপতি হয়ে
তপ্তরোদে ভাবনার ক্যানভাসে।
বৃষ্টি মাদল সুরের লহরী
মৃদু দক্ষিণা হাওয়া।
ভেসে যাওয়া স্রোতের জলে
ডুবে যাবো কাগজের নৌকো হয়ে।
ইচ্ছে ঘুড়ি (গান)
__শান্ত চৌধুরী
তোমার ছোয়া (গান)
আমার ভাবনা গুলো
শুধু তোমাকেই ছুঁয়ে যায়
কোন এক শুভ্র বিকেল
মায়াবী তোমার বারান্দায়।
তুমি আমার স্বপ্ন ঘুড়ি
উড়ো হৃদয় ক্যানভাসে
ভালোবাসার এক বিকেলে
উড়বো তোমায় নিয়ে।
দিন ছিল রোদ্র ঝলমল
গোধূলির আবির মাখা
শীতল তোমার রেশমী চুল
তোমাকেই ছুঁয়ে দেখা।
কাশফুলের পাপড়ি গুলো
প্রজাপতির ডানায় চড়ে
এসে ছিল কোন এক বিকেলে
তোমায় ছুঁয়ে যাব বলে।
তোমার ছোঁয়া (গান)
__ শান্ত চৌধুরী
শহুরে জীবন (গান)
ধূসর ধূলিকণায় মিশে গেছে এ শহর
নিস্তব্ধতায় নেমে গেছে কোলাহল।
খেয়ালের জানালায়
উকি দিয়ে যায় নিঃসঙ্গতা।
অনাদরে অবহেলায় হারিয়ে
যায় মায়ের চিরকুট।
এই শহুরে জীবন চলছে
অবিরাম কালের স্রোত।
প্রতিক্ষার প্রহর নেই
এলোমেলো ভাবনায় কেটে যায় বেলা।
ফেরারী স্টেশনে থেমে নেই কোন গাড়ী
রঙ তামাশার শহর জুড়ে
শুধু মিথ্যে ছলনা।
সব কিছু লুট হয়ে গেছে
নাগরিক অধিকার লুট হতে দেখেছি।
মানুবিক মূল্যবোধ লুট হতে দেখেছি।
মানুষের বিবেক লুট হতে দেখেছি।
সব কিছু লুট হয়ে যেতে দেখেছি।
লুট হতে হতে ডান হাত, বাম হাত,
শরীর, কিছুই লুট হওয়ার বাকী নেই!!
তবে কি ? সব কিছু লুট হওয়ার পরও
মানুষ, মানুষের মতো আকৃতি নিয়ে,
অবলীলায় সমাজের অধিপতির
আসন আলংকৃত করে।
জানোয়ার তার হিংস্র থাবায়
সব লুটে নেয় যখন-তখন
আর মানুষ তার অবয়ব রূপে
ঈশ্বর সম আসনে বসে ভগবান।
জীবনের মোহনা
থেমে আছে সব গাড়ি,
কোলাহল নেই স্টেশন।
যত্রতত্র নেই যাত্রীর সমাগম।
নিরবচ্ছিন্ন এক, একটি প্লাটফ্রম
অহেতুক নেই কোন জনসমাগম।
কিছুতেই নেই নিজস্বকরণ,
আহবান নেই কোন প্রেমিক যুগোল।
থমকে আছে রেলগাড়ি,
থমকে আছে কার-বাস।
থমকে আছে বৃত্ত-ভৈরব
থমকে আছে জীবনগাড়ি।
কোথায়ও নেই উৎসব
আবেদন নেই প্রতীকী উচ্ছ্বাস।
জীবনের মোহনা, ভাবনা কতসম
সভ্যতার উদারতা বিলিয়ে
উৎপল মুহূর্তে সম্মিলিত আহবান।
অসমাপ্ত।
মৃত্যুর মিছিল
মৃত্যুর মিছিল থেমে নেই
থেমে নেই জীবন প্রবাহ।
উচ্চ-মধ্য-নিম্ন বলে কোন
শ্রেনী ব্যবধান নেই।
মৃত্যুর কোন জাত-ধর্ম নেই
সময়ের সঙ্গমে উচ্চ থেকে নিম্ন
আদেশ, উপদেশ বলে কোন
শাখা-প্রশাখা নেই।
মৃত্যুর কোন রাজসিক সভা নেই,
মন্ত্রী পরিষদ নেই।
নেই কোন ক্ষণগণনা,
নেই কোন বিষয় ভিত্তিক অধ্যায়।
মৃত্যুর মিছিল বহমান,
মানব জাগতিক- আর যান্ত্রীক
কলহে ডুবে ভুলে যায় জীবন
মানেই মৃত্যুর মিছিল।
শার্টের বাঁ পকেট
তখনও এলোমেলো চুল তোমার উড়ছিলো
দখিনা দ্রোহী বাতাসে।
বকুলের ঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত;
নীলাকাশে কিছু শুভ্র মেঘমালা,
অনন্ত উচ্ছ্বাসে এলোমেলো ছুটে চলা।
শার্টের বাঁ পকেটে জমা ছিলো কিছু উচ্ছ্বাস,
কিছু অন্তকরণ,
তোমার সাথে পত্র মিতালি।
তুমি কি জানতে শার্টের বাঁ পকেটে কতো কিছু
জমা ছিলো তোমার জন্য ?
তোমার জন্য যত্ন করে রাখা গোলাপের পাপড়ি,
কিছু চিরকুট, কিছু আহবান।
বর্ষার হিজলের গাঢ় সবুজ পাতায়
মোড়া রক্তিম ফুলমালা।
শার্টের বাঁ পকেটে জমা সহস্র শতাব্দীর কথোপকথন,
আর তোমার সেই প্রিয় রজনীগন্ধা ফুল।
তোমার অন্তরঙ্গে
তুমি সমুদ্রের নগ্ন বালু
স্পর্শ করো
আমি তোমাকে ছুঁয়ে যাই
বালুকাবেলায়।
তুমি উত্তাল ঢেউয়ে নিমগ্ন
স্নান করো
আমি তোমাকে ছুঁয়ে যাই
উত্তাল ঢেউ
লহরী উচ্ছ্বাসে।
তুমি দূরের ঢেউ থেকে বালিকণা
তুলে উল্লাস করো
সমাবেশ করো
সমুদ্রের ঢেউ
আমি তোমাকে ছুঁয়ে যাই
নিঃসঙ্গ গাঙচিলে।
তুমি জলের তরঙ্গে
গাঙচিল হয়ে উড়ো
আমি তোমাকে ছুঁয়ে যাই
তোমার ছায়ায়।
আমি মিশে যাই
তোমার অন্তরঙ্গ অনুভবে।
চাঁদের শহর
চাঁদের শহরে আজ এলোমেলো-মেঘের
উচ্ছ্বাস নেই! উৎসব নেই জোনাকির।
এই শহরে চাঁদের উঁকিঝুঁকি
দীপ্ত নিয়ন আলোয় মিলিয়ে যায়
নবদীপ্ত কোলাহলে! এক টুকরো
মেঘের ছায়া পরেনা, কোথাও নেই
জোনাকির মেলা।কোথাও নেই।
অথচ জোছনা-মেঘ-জোনাকির
মেলবন্ধন প্রকৃতি ছুঁয়ে যায়।
দূরের কোন গাছের ডালে লক্ষি পেঁচা
রাত জাগা কণ্ঠে ডাকেনা, ডানা ঝাঁপটায়’না।
শহরে’ শহরে ট্রানজিট
দেয়ালে’ দেয়ালে সন্ধি,
মানবতা আজ রুঢ় কঙ্কাল
চাঁদের শহরে আজ আলো নেই।
নিষিদ্ধ শহর
নিষিদ্ধ শহরে
কোন সভ্যতা নেই
কোন মানবতা নেই
কোন ভালোবাসা নেই।
অথচ জীবনের প্রয়োজনে
এই শহরে যুগ-যুগান্তরের আবাস গড়ে।
বুনিয়াদ মাতাল তিলোত্তমা ডুবে যায়
উষ্ণতা খোঁজে নারীর দেহে।
নিয়ন আলোয় নেমে আশে
স্বর্গের স্পর্শ।
মহাজন নৈমিত্তিক উচ্ছ্বাসে
এলোমেলো বকে যায়।
কালের ঘড়ি টিং টিং সময়ে
ছুটে চলে আপন ঠিকানায়।
বাস্তবতায় ডুবে যায় নগর
অনন্তের পথে সীমাহীন গন্তব্যে।