বিভাগের আর্কাইভঃ ছড়া ও পদ্য

ছাব্বিশে মার্চ

bg2019

আমরা পেলাম স্বাধীন বাংলা
রক্ত দানের ফলে,
আজ এলো ঐ ছাব্বিশে মার্চ
সবাই খুশির ঢলে।

ফুল সৌরভে রূপ গৌরবে
কী সুন্দর যে তুমি,
ইচ্ছে মোদের সতত তাই
হে মা ! তোমায় চুমি।

শস্য শ্যামল সবুজ মাখা
দেখলে তোমার হাসি,
নয় গো শুধু ধনীক হাসে
হাসে মজুর চাষি।

নেই তুলনা তোমার মাগো
তুমি মোদের স্বর্গ,
শেখ মুজিবুর ছিলেন বলে
পেলাম তুমি অর্ঘ্য।

মা বোন আরো লক্ষ শহীদ
আনলে স্বাধীন যাঁরা,
সারাজীবন ভুলবো নাকো,
চিরজীবী তাঁরা।

স্বরবৃত্তঃ ৪+৪ / ৪+২

স্বাধীনতার সুখ

27735

কোন সুখে বাবুই পাখি
করে শিল্পের বড়াই
যেই সুখেতে মুক্তিযোদ্ধা
করেছিলেন লড়াই।

কোন সুখে একটি শিশু
পতাকার ছবি আঁকে
যেই সুখেতে একটি শিশু
মা…মা বলে ডাকে।

কোন সুখেতে মাঝি ভাই
ধরে নৌকার হাল
যেই সুখেতে বয়ে চলেছে
বাংলার নদী খাল।

কোন সুখেতে বৃষ্টি ঝরে
মায়ে ফুলায় বুক
যেই সুখেতে চাষি ভাই
সব ভুলে যায় দুখ।

কোন সুখে দামাল ছেলে
আকাশে ওড়ায় ঘুড়ি
যেই সুখেতে দাদা-দাদু
খুলে গল্পের ঝুঁড়ি।।

ওরে বাবা!

12zz

ওরে বাবা! রাত্তিরে
দেখি এক গেছো ভূত,
ঘরে ঢুকে করছে সে
ঘুরে ঘুরে খুঁত খুঁত।
এই সাজে চিতা বাঘ
ভাবি বুঝি দেয় হানা,
ফের দেখি ডেকে উঠে
বিড়ালের কালো ছানা।

বুজলেও দু’টি চোখ
সাপ ফুঁসে দেয় দৌড়,
চুপিসারে দোর খুলে
ভল্লুক সেজে চোর।
টমি এসে মাথা নাড়ে
নিশ্চয় নয় পোষা,
হাতি ছুটে শুঁড় তুলে
হায় হায় একি দশা!

দেহ কাঁপে থর থর
ভেবে আছে আরো কি যে,
শুঁকে জানি বিছানাটা
লোনা জলে গেছে ভিজে।
তবু এলো হনুমান
দেবে না কি ভেঙে ঘাড়?
খাট থেকে পড়ে বুঝি
সব দোষ নিদ্রার!!

ছবিঃ নেট থেকে।

বলতে আছে মানা

images_119

ভীষণ নাকি মুখ্য ব্যাপার
শুনেই তাড়াতাড়ি,
দেখার তরে দৌড় দিয়ে সব
চললো রাজার বাড়ি।

মরলো পথে দীনুর ছেলে
ব্যস্ত চলার ঘাতে,
ছুটলো তবু ঠ্যাং নিয়ে কেউ
আছড়ে পড়া হাতে।

পৌঁছে সেথা দেখলো কি ভাই
বলতে আছে মানা!
বেশ সয়ে ক্লেশ রাণীর বিড়াল
পাড়ছে বলে ছানা।

প্রেমের গুচ্ছ অণুছড়া

2754

এক।।
রূপে গুণে ভারি সুন্দর
ভীষণ মিষ্টি ঠোঁট
পাশের বাড়ির পরী পাবে
আমার পূর্ণ ভোট।

দুই।।
মনে আছে সোমার বন্ধু
ফার্স্ট ইয়ারের রাখি
ভুলতে আজো পারিনা তার
নেশায় ভরা আঁখি।

তিন।।
প্রথম দেখায় যাকে সেদিন
সপে ছিলাম দিল
রূপা নামের ফর্সা মেয়ের
গালে ছিলো তিল।

চার।।
মনে পড়লে আজো তারে
প্রেমেতে খাই দোল
হাসতো যখন সুন্দরী রাই
গালে পরতো টোল।

কল্পনা নয়

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

কল্পনা নয় কল্পনা নয়
সত্যিকারের কথা,
পরীর দেশে ফুল কুড়িয়ে
গাত্র হলো ব্যথা।

পরীর দেশে ফুল বাগানে
নানা ফুলের মেলা,
হরেক রকম প্রজাপতি
সেথায় করে খেলা।

বাহারি ওই ঝর্ণা ধারা
থেকে থেকে ঝরে,
মিষ্টি মধুর ফলে ফুলে
আঁচল খানি ভরে।

রচনাকালঃ
০৫/০২/২০২২

পরীর দেশে

৪+৪ স্বরবৃত্ত ছন্দ

নীল ডানার ওই পরী এসে
নিয়ে গেলে তারই দেশে,
বরণ করলো মিষ্টি হেসে।

মিষ্টি মধুর কথার সুরে
নিয়ে গেলো অন্তঃপুরে,
খেতে দিলে পেটটি পুরে।

নিশি যখন গভীর হলো
নতুন নতুন পরী এলো,
কল্প গল্পে নিশি গেলো।

পরীর দেশে ফুল বাগানে
ফুলও ফোটে পাখির গানে
ছোটে সবাই মনের টানে।

হাসি মজা বিকেল বেলা
সবাই মিলে করে খেলা
পরীর দেশে পরীর মেলা।

রচনাকালঃ
২৩/০১/২০২২

প্রভু তুমি

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

স্মরণ করি প্রভু তোমায়
দিবানিশি ভোরে,
তোমার কৃপা পাওয়ার জন্য
থাকি তোমার দোরে।

তোমার বিধান মানি প্রভু
আমি প্রতিক্ষণে
বিচার দিনে তুমি বিনে
নেই কেউ আমার সনে।

তোমায় খুশি করতে প্রভু
চলি ভালো পথে,
খারাপ পথে চলে গেলে
কষ্ট জীবন রথে।

তোমার বিধান মানলে প্রভু
জীবন ধন্য হবে,
তুমি হলে দয়ার সাগর
একমাত্র যে তবে।

রোজ হাশরে তুমি আমায়
করে দিও ক্ষমা,
হাশরের ওই কথা ভেবে
পূর্ণ্য করি জমা।

রচনাকালঃ
০৪/০৯/২০২১

কি অপরূপ

ফুল বাগানে সবার আগে
পাখিরা সব ডাকে
পূব আকাশে রবির আলো
পড়ে পথের বাঁকে।

শিশির কণা সবুজ ঘাসে
রঙের খেলা করে
মৌমাছি আর ভ্রমরেরা
ওড়ে ফুলের পরে।

দীঘির জলে শালুক ফুলে
চলছে ডিঙি একা
গাছের ফাঁকে ওই যে দূরে
দিচ্ছে রবি দেখা।

হাঁস মোরগে খাচ্ছে খুঁটে
দেখছে আশে পাশে
গরু ছাগল যাচ্ছে মাঠে
কাজের অভিলাষে।

তাই তো খুকি চোখটি মেলে
দেখে এমন শোভা
পৃথিবী জুড়ে কি অপরূপ
দৃশ্য মনোলোভা!

কবি

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

কাব্য লিখি তাই তো সবাই
কবি বলে ডাকে,
নিন্দুক সে জন ছায়ার মতো
পাছে পাছে থাকে।

সমাজের ওই ভালো মন্দ
লেখা আমার কর্ম,
আমার কথা বলবো আমি
পালন তোমার ধর্ম।

সমাজটাকে শুদ্ধের জন্য
আমার কলম চলে,
আমার কাব্য দগ্ধ হয় যে
তীব্র নিন্দার ফলে।

অষ্টপ্রহর জ্ঞানের দৃপ্ত
ছড়াই সমাজ মাঝে,
কাব্যের নিন্দা সর্বত্র হয়
সকাল দুপুর সাঁঝে।

রচনাকালঃ
০৬/০১১/২০২১

মনে কি পড়ে বন্ধু

৪-৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

আমার কথা বন্ধু তোদের
আছে কি ওই মনে,
আমি কিন্তু তোদের কথা
ভাবি প্রতিক্ষণে।

হাসি মজার প্রহর গুলো
দিয়েছি ওই পাড়ি,
কোনো কিছু না পেলে ওই
ধরতাম ভীষণ আড়ি।

কর্মব্যস্ত শহরবাসী
হয়ে গেছিস তোরা,
গাঁয়ে একলা পড়ে আছি
নেই তো কোনো জোড়া।

নিত্য দিনে নিত্য ক্ষণে
পথটা চেয়ে থাকি,
কবে আসবি সেই প্রতীক্ষায়
বুকে আশা রাখি।

আমার হিয়া তোদের জন্য
আজও কাঁদে তবে,
আমায় যাদের নেইতো মনে
দাম্ভিক তারা ভবে।

রচনাকালঃ
১২/০৮/২০২১

অদৃশ্য মায়া

৪+৪/৪+১ স্বরবৃত্ত ছন্দ

ভাই আর বোনের ভালোবাসায়
থাকে না তো খাদ,
নিত্যক্ষণে হাসি মজা
ভিন্ন রকম স্বাদ।

দুখের দিনে ভাইবোনেরা
পাশে তবে রয়,
তখন মনের কোণে কভু
থাকে না তো ভয়।

মন সাহসে জীবন মুখে
একলা চলা যাই,
ভাইবোনের ওই ভালোবাসায়
জনম জনম চাই।

অদৃশ্য এই ভালোবাসা
ভোলা যায় না ভাই,
এমন মধুর বন্ধন বুঝি
দ্বিতীয়টা নাই

রচনাকালঃ
২৪/০৮/২০২১

মৃত্যুর কাছে পরাজয়

ত্রিপদী মহাপয়রা (অক্ষরবৃত্ত): ৯+৯/১১

থাকিতে যে আসিনি ভবে
চলিয়া যাইব যে তবে
যাইবো ছাড়িয়া রঙ্গের ধরা,
যেইদিন মৃত্যু আসিবে
কর্মতে দুনিয়া হাসিবে
স্বজন তো থাকিবে বাড়ি ভরা।

ছাড়িয়া যাইব স্বজন
মৃত্যুদূত নহে আপন
যাইবে না ছড়িয়া মোরে কভু,
রঙ্গের দুনিয়া এ থেকে
যাইবো আমি সবই রেখে
পড়িয়া রহিবে কীর্তিটা তবু।

মানব জীবন এমন
রামধনুকটা যেমন
জীবন নদের সমাপ্তি ভেলা ,
নিখিল দুনিয়ার মাঝে
থাকিবো তো লাশের সাজে
ভঙ্গ হইবে রঙ্গের এ মেলা ।

জীবন নদের এ তরী
সুখেতে ছিলো শুধু ভরি
ক্যামনে সময় গিয়াছে পারি,
বুঝিতে তো পারিনি আমি
সময়টা যে কত দামী
মৃত্যুর কাছে গেলাম রে হারি।

রচনাকালঃ
০৬/০৮/২০২১

গ্রাম ও নদী

wpid

ছবির মতো ছায়ায় ঘেরা আমার ছোট গ্রাম
ধরার বুকে ছড়িয়ে গেছে তার যে কত নাম।
গাঁয়ের পথ বয়ে চলেছে ফুলজোড় এ নদী
নদীর তীরে ভালো লাগে যে পাখিরা গায় যদি।

পাখির গানে কলতানেই ভীষণ লাগে ভালো
নিত্য রাতে জোনাকি ছাড়ে হালকা কিছু আলো।
জেলেরা সব মাছ ধরতে ছুটে নদীর পানে
মুখরিত যে চারদিকটা নানা রকম গানে।

নদীর তীরে চাষিরা ভূমি নিত্য করে চাষ
যাযাবরেরা নদীর তীরে করে যে শুধু বাস।
নানা রঙের বেশে আসে যে ধবল বক কিছু
তাদের সাথে আরো যে আসে অন্য পাখি পিছু।

হেমন্ততে শিশির কণা পড়ে ঘাসের বুকে
গাঁয়ের গাছে পাখিরা সব থাকে যে মহা সুখে।
উদাস মনে রাখাল মাঠে লয়ে যায় রে গরু
আমার গাঁয়ে বন- বাদড়ে বেশি তমাল তরু।

আমার গ্রাম সোনার ছবি ধরার এই বুকে
সবাই থাকে মিলেমিশে তো থাকে ভীষণ সুখে।
চারিদিকেতে মনোরঁজক পরিবেশটা ভালো
রাতেরবেলা চাঁদবিহীন আকাশ থাকে কালো।

৫+৫+৫+২ মাত্রা বৃত্ত ছন্দ
রচনাকালঃ
১০/০৮/২০২১

লোভ লালসা

৪+৪/৪+২ স্বরবৃত্ত ছন্দ

জীবন নদে চাওয়া পাওয়ার
সীমা নাই যে তবে,
আশায় আশায় দিবস কাটে
আরো পাবে কবে।

লাগামহীন তো মনের চাওয়া
মানব জীবন তরে,
লোভী জনের জীবন ওই না
ধুঁকে ধুঁকে মরে।

লোভ জিনিসটা অতি মন্দ
দ্বন্দ্ব লাগায় ভালো,
জীবন মুখে লোভের ফাঁদে
দেখে না তো আলো।

আছে যার ওই যতটা বেশি
আরো চাই সেই লোকে,
পাওয়ার আশায় না পাওয়াতে
জীবন কাটে শোকে।

যা পেয়েছো খুশি থাকো
এই না জীবন নদে,
বেশি চাওয়া বেশি পাওয়া
ভুল যে পদে পদে।

রচনাকালঃ
১৫/০৮/২০২১