বিভাগের আর্কাইভঃ রাজনীতি

অবৈধ

ব্যভিচারীর লালসার স্বীকার লাঞ্চিত কোনো নারীকে,
অবৈধ সন্তান প্রসবের অভিযোগে অভিযুক্ত কোরোনা কখনো।
ব্যভিচারীর ক্ষমতা দম্ভের উল্লাস, লালসা পূরণের তৃপ্তিতে নয়
লাঞ্চিত নারীর নিঃসীম লজ্জা, অশ্রুজলেই লুকানো সভ্যতা।
লজ্জার চাদর ছাড়া সভ্যতাহীন জীবন,
মানুষের নয় স্বেচ্ছাচারীর,গা জোয়ারি হিংস্র শ্বাপদের জীবন।
ক্ষমতা দম্ভে লালসা উন্মত্ত কোনো স্বেচ্ছাচারিকে তাই,
খামোশ বলে রুখে দাঁড়াবার সময় হয়েছে এবার।

বিজয় মাসে গনতন্ত্র, সুশাসনের চাদরহারা দেশ উলঙ্গ,
ক্ষমতা সম্ভোগে উন্মত্ত শাসকের লালসায় লাঞ্চিত এবং লজ্জিত।
অবৈধ সরকার প্রসবকারী বাংলাদেশের পলি মাটিকে বলোনা ক্লেদাক্ত,
নদীর স্রোতে খুঁজোনা স্বৈরাচারের বীর্যের দাগ।
ইচ্ছে বিরুদ্ধ ক্ষমতা সম্ভোগের উন্মত্ত শাসন বীর্যপাতে,
অবৈধ সরকার প্রসবের লজ্জায় ম্রিয়মাণ দেশের সকল সবুজ।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বপ্নঘাতকের গণতন্ত্রের বধ্যভূমিতে আরো একবার,
বাক, ব্যক্তি, ভোটস্বাধীনতার দাবিতে প্রতিবাদের ফিনিক্স পাখি হোক বাংলাদেশ।

মেসি তুমিই বলো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কেন দরকার …

মেসি, তোমার ফুটবল জাদুতে মুগ্ধ পৃথিবী ।
নিঝুম কত রাত নির্ঘুম কাটে ছয় মহাদেশে,
দেখতে সবুজ মাঠে তোমার অনায়াস, স্বচ্ছন্দ বিচরণ !
রক্ষণ ছিন্নভিন্নকারী তোমার চোখ ধাঁধানো গতি, ড্রিবল
কত সহজে বিজয়ী স্বপ্নের বীজ বুনে সমর্থক মনে !
শেষ মুহূর্তে জালে জড়ানো তোমার রংধনু শটগুলো
কি অপার্থিব উন্মাদনা ছড়ায় গ্যালারি জুড়ে !
যেন স্বয়ং দেবতা বর নিয়ে নেমেছে সবুজ মাঠে।
কিন্তু বলো, পারবে কি সবুজ মাঠে এমন স্বপ্ন মায়া ছড়াতে
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যদি না থাকে?

ধরো, তোমার দিকে মাঠ মসৃন, যেন সবুজ কাশ্মীরি গালিচা,
আর বিপক্ষ দিক যেন পুলিশি রিমান্ডে ক্ষত বিক্ষত
নিহত বিরোধী দলীয় নেতার বেওয়ারিশ কোনো লাশ !
সেই মাঠে সাথে থাকলেও নেইমার ও দুরন্ত এম্বেপে,
মাতাতে পারবে কি গ্যালারি তুমি বা তোমার দল?
আক্রমণে এম্বেকি কি পাবে দুরন্ত অশ্বারোহীর গতি?
নেইমারের মাটিঘেঁষা শটগুলো কি হবে না লক্ষ্যচূত?
সবুজ ক্যানভাসে আঁকা ভ্যান গগের ছবির মতো গোলগুলো
তোমার, পাবে কি তিন কাঠির সঠিক ঠিকানা?
অযোগ্য ব্যবস্থাপনায় আদৌ যায় কি খেলা নান্দনিক ফুটবল?

তেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়েছে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে,
দলদাস পুলিশ সেজেছে আক্রমণের ঘোড়া ।
ঘরে বাইরে, নগরে বন্দরে অননুমোদিত গ্রেফতার, পুলিশি রিমান্ড,
নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রাপ্য আজ জেল,গুলি,এবং নির্বিচার সন্ত্রাস।
শ্বাপদ হিংস্রতায় ছিন্নভিন্ন ঘর বাড়ি,পোস্টার,নির্বাচনী আশ্বাস,
গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে স্বৈরাচারের দিচ্ছে আজ প্রকাশ্যে উঁকি ঝুঁকি !
যে গণতন্ত্র থাকার কথা ছিলো দেশের সবুজ মাঠে, গ্রামে ও শহরে,
সে গণতন্ত্র আজ মিটি মিটি জ্বলে হয়ে দূর আকাশের শুকতারা ।
তবুও ইসি লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড গড়েছে বলে আনন্দে বাগবাগ,
সিইসি গর্বিত নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে, সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ !

মেসি, বলো এইরকম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে পারতে কি তুমি,
লা লীগার রেলিগেটেড কোন দলকেও হারাতে?

টেন্টালাসের তৃষিত জীবন আজ বাংলাদেশ

দিগন্ত জোড়া সাগর জলে ভাসা জীবন ছিল তোমার
তবুও এতটুকু তৃষ্ণা মেটেনি, টেন্টালাস !
হাত বাড়ালেই সাগর,
তবুও কি দুর্লভ জলহীন তৃষিত এক জীবন কাটলো !
তাই বুঝি হাজার বছর পরে পুনর্জন্ম নিলে টেন্টালাস,
ষোলো কোটি জনগণের প্রতিচ্ছবি হয়ে এই বাংলাদেশে?
নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে জল হয়তো পেতেও পারো একটু,
কিন্তু জল খাবার স্বাধীনতা পাবে কি এই পুনর্জন্মে?
ছদ্মবেশী দেবী কি দেবে এবারও জীবন বাঁচাবার স্বাধীনতা?
করুণার বারিধারায় ভিজবে কি তার জিঘাংসু হৃদয়?

একশো তিপ্পান্ন অনির্বাচিত সাংসদের অবৈধ খুঁটিতে
গড়া দেবীর ক্ষমতার প্রাসাদ।
ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুটেপুটে খেয়েছে সব চেলা চামুণ্ডা,
সুইস ব্যাংকে স্ফীত লক্ষীর প্রসাদ।
দেবী শাসনে উন্নয়নের সুনামিতে নাকি ভাসে নগর বন্দর!
মধ্যম আয়ের দেশে আমজনতার নুন আন্তে পান্তা ফুরোয়।
তবুও চাইনি ছিনিয়ে নিতে দেবীর অবৈধ লক্ষীর ঝাঁপি,
অথবা অবৈধ ক্ষমতার বিলাসী প্রাসাদ।
চেয়েছিলাম শুধু গণতন্ত্রের একটু মৌল আশাবাদ,
চাওয়া ছিল একটা সুষ্ঠু নির্বাচনী আশ্বাস।

সেই সামান্য চাওয়াতেই দেখি দেবীর শাসন উত্তাল,
বিলীন গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌল সব চাওয়া।
বিলীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়বার সব আশ্বাস,
দেবী দুঃশাসনে নির্বাসিত গণতন্ত্র আজ দূর দ্বীপবাসিনি।
সে দ্বীপে যাবার সহজ কোনো ভেলা নেই,
শুধু রক্ত নদীতে নিরন্তর ভেসে চলা।
দলদাস আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা মামলায়,
বিপর্যস্থ বহুদলীয় সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল পথ ও প্রান্ত।
টেন্টালাস, দিগন্ত জোড়া সাগরেও তোমার ছিল তৃষিত জীবন,
গণতন্ত্রের দেবীর সুশাসনেও আমার তৃষ্ণা অধরা গণতন্ত্রের!

তবুও টেন্টালাস, ষোলো কোটি মানুষ তৃষিত জীবন বয়ে চলি,
বিজয়ের মাসে অধরা গণতন্ত্রের গভীর আশ্বাসে।

রূপকথার সেই পাগলা হাতিটা আনো

রূপকথার পাতা থেকে:

রাজপথের দু’ধার উপচে পরছে, উত্তেজিত প্রজাবৃন্দ অপেক্ষমান,
ঐতো রাজহস্তিশালের পাগলা হাতি হয়েছে ধাবমান !
গণনা মতে মানুষের ভীড়ে লুকিয়ে আছে রাজ্যের ভাবী কাণ্ডারী,
পাগলা হাতি খুঁজে নেবে আজ মৃত রাজার সুযোগ্য উত্তরসুরী।
পাগলা হাতি তুলে ছিল পিঠে এক কান্তিমান যুবক,
অতঃপর সুখে শান্তিতে রইলো তারা পেয়ে সুযোগ্য অভিভাবক।

বাংলাদেশ ২০১৮:

স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আজও
রূপকথার সেই রাজ্য হয়ে আছে বুঝি এই দেশ।
মাথাভারী সরকারি সমাবেশে আছে নখদন্তহীন রাষ্ট্রপতি,
প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী,অনির্বাচিত একশো তিপ্পান্নজন সাংসদ!
অনুগত প্রশাসন,আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ তবুও
গুম,খুনের অবিরাম রক্তস্রোত আর অশ্রুজলে প্লাবিত এই সমতল।
স্তাবক গোষ্ঠীর সরকারি ব্যাংক, শেয়ার বাজার লুণ্ঠনের কালো কালিতে
লেখা হয় সর্বস্ব হারানো কোনো অনেক মফিজের আত্মহত্যার ঠিকানা।

দলবাজির নীলদংশনে ধ্বংস শিক্ষা ব্যবস্থা, শাসন ও প্রশাসন,
ধ্বংস নিরপেক্ষ নির্বাচন,জনমুখী প্রশাসনের স্বাপ্নিক চাওয়াগুলো।
ধ্বংস এই দেশে বাক, ব্যক্তি স্বাধীনতার সকল অবশিষ্ট,
কে এই সবুজে শ্যামলে অক্লান্ত বাজায় নিরোর ধ্বংস বাঁশি?
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া একাত্তরের বাংলাদেশে
আজ শোনা যায় কোন পরাজিত স্বৈরশাসকের কলহাস্য?
গণতন্ত্র, বাক ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রত্নতত্বে গড়া বাংলাদেশ যেন
আজ স্বৈরাচারের শ্বাপদসংকুল এক বিচ্ছিন্ন ব-দ্বীপ।

মৃত্যুর আল্পনা আঁকা এই গাঙ্গেয় ব-দ্বীপই কি আমার দেশ?
এ’দেশেই কি শহীদের রক্তে ভেজা শিমুল ফুটেছিলো কোনো ফাগুনে?
কুয়াশা বেলা শেষে আলোর মিছিল হয়েছিলো কখনো এই পৌষেই?
ভোট স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা কি ছিল বীরশ্রেষ্ঠের স্বপ্ন?
না,যাও তন্ন তন্ন করে খুঁজে আনো রূপকথার সেই পাগলা হাতিটাকে।
এই অগণতান্ত্রিক, অনির্বাচিত সরকার বাতিল করে,
জনসংখ্যার ভারে নুব্জ্য ষোলো কোটি মানুষের মেলা থেকে-
খুঁজে নিক সে দেশ পরিচালনার কোনো সুযোগ্য উত্তরসুরী।

(আমি ভেবেছিলাম একবার আমার কবিতাটা উৎসর্গ করি প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। কিন্তু ভরা জ্যোস্নার একটা পূর্ণিমা পেতেওতো একটা উজ্জ্বল চাঁদ লাগে ! তাঁকে উৎসর্গের করার মতো কবিতা লেখার হাত কোথায় আমার ? তাই ইচ্ছেটা চেপেই রেখেছিলাম।কিন্তু আজ বড়োদিনে তার চলে যাবার খুব কষ্টের খবরটা পেলাম। তাই আমার সব লজ্জ্বা চেপে রেখে এই কবিতায় মনে করছি শ্রদ্ধাভাজনেষু প্রিয় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে।)

**এই কবিতার মতো একটা কবিতা বছর তিনেক আগে অন্য একটা ব্লগে লিখেছিলাম। অনেকটা একই শিরোনামে। অনেক পরিবর্তন করে আবার এই কবিতাটা লিখলাম। খুবই কম কিন্তু তবুও অল্প কিছু অংশ একই থাকলো।  

নেংটো রাজার বাংলাদেশ

ফটো : ইন্টারনেট (প্রথমআলো)

রাজা নেংটো হয়েই হাঁটছিল রাজপথে,
সবাই কিন্তু দেখতেও পাচ্ছিলো তার নগ্ন পদচারণা !
তবুও সবাই চিৎকার, উচ্ছাস উল্লাসে বাগবাগ,
তোষামুদেরা সব সুর করে বলছিলো,
আহাহা কি সুক্ষ, কি অপূর্ব সুন্দর, রাজকীয়
আমাদের রাজা মশাইয়ের পরিধেয় বস্ত্র !
সেই জন সমাগমে কেউ ছিল মোসাহেব,
উচ্ছন্ন ভোগী, কেউ সুবিধাবাদী কেউবা
ক্ষমতা বলয়ের থাকা ছোট উপগ্রহ বিশেষ।
কেউবা সত্যি সত্যি জিম্মি রাজরোষের,
কেউ কেউ হতে পারে ভীত বা আত্মবিশ্বাসহীন।
কিন্তু এই ক্লীব প্রজাবৃন্দের ভিড়ে
নিজের আত্মা বিক্রি না করা একটি শিশুও ছিল,
সহজ সরল সত্যবাদী একটি দেবশিশু।

রূপকথার সেই গল্পটা কিন্তু সবারই জানা।
রূপকথার সেই রাজ্য যেন আজকের বাংলাদেশ,
ছদ্মবেশী স্বৈরাচার শাসনে গণতন্ত্র উলঙ্গ আজ !
বসনহীন গণতন্ত্রের গা থেকে একে একে খুলে গেছে
বাক ব্যক্তি স্বাধীনতার কারুকার্যময় পোশাকগুলো সব।
সবাই দেখছে যে দেশে গণতন্ত্র মৃতপ্রায়
সরকারের কথায় কাজে অবৈধ স্বরাচারের নিনাদ।
ইসি, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার বিভাগ সবাই ব্যস্ত তাঁবেদারিতে।
উলঙ্গ গণতন্ত্রে ধ্বংস বাক্ ব্যক্তি স্বাধীনতা,
সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা আর সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান।
তবুও রূপকথার স্তাবকবৃন্দের মতই আজ
জ্ঞানী গুণী সুশীল সমাজের কেউ কেউ ভাব করছে
যেন গণতন্ত্র, সুশাসনের উন্নয়ন সুনামিতে
জনগণের জীবনে চলছে সুখের বানভাসি!

কিন্তু এতো জ্ঞানী গুণী সুশীল আর উচ্ছিষ্টভোগীর ভিড়ে
সেই দেবশিশুটি কোথায় ?
উলঙ্গ গণতন্ত্রের গায়ে সুশাসনের ছদ্ম লেবাস পরাবার কারিগর
শাসক গোষ্ঠীর সামনে মোসাহেবীর লেজুড় ছিড়ে,
দেশের জনারণ্যে থেকে সেই শিশুটি নির্ভয়ে বেরিয়ে আসুক।
সহজ কণ্ঠে শাসক গোষ্ঠীকে জিজ্ঞেস করুক,
বাক, ব্যাক্তি স্বাধীনতাহীন দেশের উলঙ্গ গণতন্ত্রের গায়ে
বহুমতের কারুকার্যময় রেশমি কাপড়টা কোথায় গেলো?

—শ্রদ্ধাভাজনেষু কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আপনি এখনো লিখলে আমি আপনার লেখা এই কবিতাটা পড়তাম (জানি এই কবিতাটা তখন আরো মুগ্ধ কাব্য হতো)!

দ্বিতীয় পর্বের স্বাধীনতা

বাংলা দেশের স্বাধীনতার গল্পটা কিন্তু সবাই জানে,
তবুও সবাই ভুলে যায়, বার বার ভুলে যায় গল্পটা।

কোটি মানুষের মুখের ভাষা স্তব্ধ করতে
কায়েদ-ই-আজমের শব্ধ সন্ত্রাস.
মৌলিক গণতন্ত্রের মোড়কে ছিনতাই স্বাধীনতা!
তখনো সরকার সমর্থক কিছু বুদ্ধিজীবী, কিছু মিডিয়া,
তারস্বরে বলেছিলো বাহ বাহ্ একেইতো বলে গণতন্ত্র
যেন সাক্ষাৎ ‘অফ দা পিপল, ফর দা পিপল বাই দা পিপল’!
মৌলিক গণতন্ত্রের আদলে রুদ্ধশ্বাস শাসন,
ছদ্মবেশী স্বৈরাচারের শিকল ভাঙতে
দেশের সবুজ মাঠে,নগরে বন্দরেই ছিল কিন্তু প্রস্তুত,
স্বাধীনতার ডাকে পাগলপারা নির্ভিক জনগণ।
নেতা জেলবন্দি, অন্যরা পলাতক
তবু স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল তাদের বুকের লাল আকাশ চিড়ে।

স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে আজও
দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা ছিনতাইকরি শাসক শ্রেণীর গলায়,
মৌলিক গণতন্ত্রের গতবাধা গান !
সবাই দেখতেই পাচ্ছে প্রকাশ্য,নগ্ন পক্ষপাতিত্ব করছে
ইসি, সরকার ও প্রশাসন যন্ত্র ।
তবু কেউ কেউ আগের মতোই বলছে
কি চমৎকার গণতন্ত্র, বহুদলীয় নির্বাচনের আমেজ দেশে !
এর মধ্যে কেউ দলদাস, কেউ দলবাজ,
কেউ ব্যাংক লুটেরা দস্যু,কেউ কৃপাপ্রার্থী,
কেউ আসলেই ভীত র্যাব,পুলিশ,হেলমেট বাহিনীর !
দশ বছরের সীমাহীন অত্যাচারে মুমূর্ষু
কারো কারো কাছ থেকে এই চিন্তা অভাবিত নয় ।

কিন্তু প্রায় অর্ধশতক আগে গর্জে ওঠা
সেই নির্ভিক জনগণ ও তার উত্তরাধিকার,
আজো আছে দেশের ধুলো জড়ানো মাঠে,ঘাটে,শহরে ও বন্দরে।
বাক,ব্যক্তি স্বাধীনতা আর ভোট অধিকার রক্ষার
এবার পৌষের যুদ্ধে,
তারা যদি গর্জে উঠে আরেক বার?

ভালোবাসা নির্বাচন ২০১৮

সরকারি, বেসরকারী, গোপন, প্রকাশ্য জরিপের ভিত্তিতে
জানি, তোমাকে ছাড়া বহতা ব্যস্ত জীবন হবে স্তব্ধ নদী।
কোনো ভালোবাসা সেতু নির্মিত হবে না, স্যাটেলাইট উড়বে না,
বেশুমার লুটপাট হবে ভালোবাসার ব্যাংক, স্টক মার্কেট।
তোমার বৈধতা ছাড়া হতে পারে মধ্যম আয়ের হৃদয় উন্নয়ন স্থবির,
মনের ব-দ্বীপ হানা দিতে পারে ভালোবাসা চেতনা বিরোধী গোষ্ঠী।
সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় তাই দিতেই হবে
বছর শেষে, বহু প্রতীক্ষার ভালোবাসা নির্বাচন।

তোমাকেই মনোয়ন প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী
এমন কি চাও যদি নখদন্তহীন রাষ্ট্রপতি পদ -তাতেও।
মনোয়ন বোর্ডে শুধু রেখেছি নিজেকে,
পকেটস্থ ইসি, সিইসি, কমিশনার, ও সব নির্বাচনী যন্ত্র।
কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী, বিদ্রোহী প্রার্থী বিহীন সাজাবো সাধের নির্বাচন,
চাইনা কোনোই বিরূপ শব্দ সন্ত্রাস।
তোমার মনোয়ন কনফার্ম হৃদয় রাজধানীর সব আসনেই,
এসো, নির্বাচিত হও বিনা ভোটে, ‘হে ভালোবাসা জননী’।

তোমাকে পেতে নির্বাচনের প্রাক্কালে নিষিদ্ধ সব নাগরিক অধিকার,
বাক্ ব্যক্তি স্বাধীনতা থাকুক অন্তরীণ স্বৈরাচারী কারাগারে।
ঐক্যমত্য পোষণের নাগরিক শাসন বাতিল ঘোষিত আজ,
যদি সোনার হরিন হারায় জবাবদিহিতার নিষ্পেষণে!
তাই সাবধান, বিন্দুমাত্র বিক্ষোভে হবে নির্বাচন ভণ্ডুল,
দখল নেবে সেনাবাহিনী, হেলমেট বাহিনী, দলীয় দস্যু এই সতেজ ব-দ্বীপ।
তাই এসো বাহুডোরে, অবাধ্য মরুভুমিসম তৃষিত হৃদয় আমার,
নজির বিহীন উন্নয়নে আরো পাললিক করো ভোটারবিহীন নির্বাচনেই।

“যেমন কর্ম তেমন ফল-নেতা নির্বাচনে থাকুন সচেতন”

হ্যালো!
হ্যালো!!
হ্যালো!!!
রিক্সাওয়ালাকে নিজের দিকে তাকাতে বাধ্য করতে কয়েক বার হ্যালো হ্যালো বলার পরও তিনি শুনছেন না। রিক্সাওয়ালা সোজা রিক্সা থামালেন এক অফিসের দরজায়। রিক্সায় আরোহী ভদ্রলোক অবাক! তার গন্তব্যের বিপরীতে চলে আসায় অনেকটা রাগ হয়েই বললেন।
-আরে বেটা তোরে একটা চড় দিতে মন চায় বুঝলি, তুই যাবি আমার অফিসে আর তুই এলি এদিকে।
-স্যার, রাগ কইরেন না…সময় শেষ তাই আজই কিনতে হবে।
-মানে!
-মানে স্যার নমিনেশন পেপার। আমি ইলেকসনে খারাইমু।
ভদ্রলোক এবার হার্টফেল করার অবস্থা। বলে কি বেটা!।ভদ্রলোকের মুখভঙ্গি দেখে রিক্সাওয়ালাও একহাত নিলেন।
-কেন স্যার! আমরা কি মানুষ না এ দেশের জনগণ না?
-তা কেনো! আমি ভাবছি ইলেকশন করতে হলে তো সামান্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে তাছাড়া নমিনেশন পেপার কিনতে আর জমা দিতে কম করে হলেও পঁচিশ ত্রিশ হাজার টাকা লাগবে।
-কোন সমস্যা নাই স্যার, আমি মেট্রিক পাস আর টাকা! আমার আরো দুটো ব্যাটারী রিক্সা আছে ওগুলা বিক্রি কইরা দিমু।
-এর পর তুমি চলবে কি করে?
-কি যে কন স্যার, আমি পাস করলে কি আর এগুলা চালামু!
-আগে তো পাস করবি তারপর না হয় ভাববি।
-কেন? এ দেশে এতো এতো চোর মাস্তান পাস করতে পারলে আমি পারমু না কেন? হুনছি আমাগো খেলোয়ার মাশরাফি, হিরো আলমও নাকি নির্বাচন করব আমি হেগো থেকে কম কিসে? পরিশ্রম করে খাই হুম। তাছাড়া আর কত কাল এমন গরিবী হালে থাকমু কন? পাস যদি নাই করতে পারি তবে ইলেকসন খারানোর কারনে এলাকায় মানষে আমারে এমপি সাব কইয়া ডাকবো তাতেই আমি কোটিপতি হইয়া যামু। বুঝলেন স্যার, আস্তে আস্তে কই-এদেশে রাতরাতি কোটিপতি হইতে রাজনিতীই হইল এহন উত্তম জায়গা। দেহেন না এহন রাজনিতী কে না করে বলেন! দেশের সব কিছুর কেন্দ্র বিন্দুই এহন রাজনিতীর কাতারে।

ভদ্রলোক ভাবলেন এর সাথে তর্কে পারা যাবে না। এ দিকে অফিসের সময়ও যায় যায়।
-ঠিক আছে ঠিক আছে, এই নাও তোমার ভাড়া।
রিক্সাওয়ালা ভদ্রলোকের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন।
-ছি ছি স্যার লজ্জা দিয়েন না, ভাড়া লাগবে না শুধু দোয়া চাই।
এ কথা বলে রিক্সাওয়ালা রিক্সার চাকায় লক করে নমিনেশন পেপার কিনতে দিলেন দৌড়। ভদ্রলোকটি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়। আর ভাবেন হায়রে রাজনিতী তুই এখন কোন পর্যায়ে চলে গেলি। না আছে বংশপরায়নপর রাজনীতির অভিজ্ঞতা না আছে শিক্ষা আর জনপ্রিয়তার আলো। ইচ্ছে হলেই, যে কেউ নেতা হতে চায়, হয়েও যায়।

অফিশিয়াল ব্যাগটি হাতে নিয়ে মাথা নীচু করে কিছুটা হেটেই যাচ্ছিলেন তার অফিসের দিকে। হঠাৎ সামনে এসে দাড়ালেন তার এক সহকর্মী।
-আরে স্যার যে, হেটে হেটে কি অফিসে যাচ্ছেন?
-আরে না ভাই রিক্সায় আসছিলাম হঠাৎ রিক্সাওয়ালার সাধ জাগল নেতা হবার। সে অনেক কথা। চলুন ঐ চা দোকানটায় একটু চা পান করে রেষ্ট নিয়ে নেই।

ব্যাস্ত শহরে আজ কাল মানুষের ঢল। আসছে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ জাতীয় নির্বাচন। তাই নমিনেশন পেপার কিনতে মানুষের জোয়ার। নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে তেমন কঠিন কোন নিয়ম নীতি না থাকায় দিন দিন বাড়ছে নেতা বা প্রার্থীর সংখ্যা। কখনো দেখা যায় একই ঘরে স্বামী-স্ত্রী, দেবর-ভাবীর নমিনেশন নেয়া এবং নির্বাচনী লড়াই। আজব মানুষ আমরা কোন একটা সেক্টর বা উৎসতে প্রফিটেবল দেখলে যেন আমরাই হ্যামিলনের বাশিঁর সূরে মেতে উঠি।

চায়ের কাপে চুমুক দিতে না দিতেই সেই দোকানে দল বল নিয়ে হাজির হলেন এক নির্বাচনী প্রার্থী। মার্কার কাগজটি জনে জনে বিলি করছেন তার কর্মীরা আর সে নিজে যখন, যেখানে যাকেই পাচ্ছেন বুকে বুক লাগিয়ে দোয়া ও দাওয়া চাচ্ছেন। ঠিক সেই সময় সেখানে হঠাৎ উদয় হলেন এক উড়নচন্ডী পাগলের। পাগলের শরিরের অবস্থার কথা বর্ননা নাই বা দিলাম তার শরির হতে নির্গত দুগন্ধ যেন আমাদের রাস্তাঘাটে ফেলে দেয়া পচা ডাষ্টের চেয়েও অসহনীয়। সেই পাগল আচমকা প্রার্থীকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকেন… যাবে যাবেগো এবার যাবেগো ইত্যাদি পাগলের যা প্রলাপ।

বেচারা প্রার্থী! নিজেকে খিচ মেরে সংযত রেখে পাগলের আলিঙ্গনকে স্বাগত জানালেন। তৎক্ষনাত তার কর্মীরা এসে পাগলটিকে ধীরে ধীরে নেতার কাছ হতে সরালেন। নেতার শরীরে জামা পুরোটাই ময়লা আর পাগলের মুখের লোল পড়ে নষ্ট হয়ে গেল। চায়ের দোকানে আর সবাইকে সালাম দিয়ে তড়িৎ তিনি চলে গেলেন তার দলবল নিয়ে। দোকানদারও কিছুটা স্বস্তি পেলেন। সেই দোকানেই বসা দুজন লোকাল বাসিন্দা বলাবলি করছেন।

১ম জন-শালায় একটা ভন্ড!গত বারও এ ভাবে ভোট ভিক্ষা চাইয়া এলাকায় কোন কাম করে নাই খালি নিজের পকেট ভরেছে।
২য় জন-তাতো হবেই! দেখতে হবে না ওর বংশ পরিচয়! ওর জাত খান্দান! ও’তো নন মেট্রিক,ট্রাকের হেলপারি করত। দিন আনতো দিন খেতো। মায় করত বেশ্যাগিরি বাবা করত কুলিগিরি… ও আর কত ভালা হইব! ট্রাকষ্টেসনের সদস্য হইয়া কিছু টাকা কামাইছিলো! সেই টাকার গরমের নির্বাচনে দাড়াইয়া টাকা উড়াইয়া পাস করছিলো। এই বার কি করবে?
পাশেই বসে চা পান করছিলেন ভদ্রলোক ও তার সহকর্মী। লোকাল বাসিন্দাদের এমন তর্কে যেন কিছু বলতে ইচ্ছে করছে তার মন। এক সময় তর্কের সাথে তাল মিলালেন। মাঝে মধ্যে তার সহকর্মীও দু একটা কথা বলে ফেললেন।
-হ্যালো! ভাইজানরা কি এখানকার লোকাল পাবলিক?
-হ’ভাই।
-আচ্ছা, এই যে তর্ক করছেন দুজনে, এখানে কি আমি কিছু কথা বলতে পারি? যদি অনুমতি দেন।
লোক দুটো খুব উৎফুল্ল ভাব নিয়ে অনুমতি দিলেন।
-জি জি বলেন।
-আপনাদের কথায় বুঝতে পারলাম তিনি মানে ঐ যে কিছুক্ষণ আগে একজন নির্বাচন প্রার্থী এসেছিলেন ভোট চাইতে। তিনি সাবেক সাংসদ ছিলেন তাইতো?
১ম জন- জি, এমপি ছিলেন।
-আচ্ছা ঠিক আছে, তো তিনি এমপিতে পাস করলেন কি ভাবে? আপনারা মানে জনগণ কি তাকে ভোট দিয়ে পাস করান নাই? নাকি সে ভোট ছিনতাই করে সন্ত্রাসী কায়দায় এমপি হয়েছেন?
২য় জন- না, না, সে ভোট পেয়েই পাস করেছিলো।
-তাহলে তার এমপি হওয়াতে তার দোষটি কোথায়? আপনি আমরাইতো তাদেরকে ভোট দেই তাই না? যদি আমরা আমাদের দেখবালের প্রতিনিধি নির্বাচনে সঠিক যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকে বেছে নিতে না পারি তবে তার এমপি হওয়ার পরবর্তী অপকর্মের দায় কার? নিশ্চয় আমাদের?
১ম জন মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললেন।
-এবার আসি আপনার শেষের কথায়। আমাদের দেশে প্রতি পাচ বছর অন্তর অন্তর আমরা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেই। ভোট দেয়া একটি পবিত্র দায়ীত্ব এবং মৌলিক অধিকার। এখন আপনি আমি যদি সেই পবিত্র ভোটটিকে অপবিত্র করি টাকা খেয়ে তবে দোষ কার? আমি আমার কর্মফল ভোগ করব এটাই চিরন্তন সত্য, তাই নয় কি? সেতো আপনাকে আমাকে টাকার বিনিময়ে কিনে ফেলল এ অবস্থায় তার কাছ থেকে কি আর কোন সুবিদা আশা করতে পারি? সেতো ভোটে পাস করে তার লগ্নি তুলবে এটাই স্বাভাবিক নয় কি?

তর্ক করা দুজনেই একদম বোবা হয়ে গেলেন। এবার ভদ্রলোকটির সহকর্মী বললেন।
-আর ঐ যে বললেন বংশ পরিচয়!। ভাল এবং যোগ্য নেতা হতে হলে ভাল কোন বংশ পরিচয় লাগে না। জগতে এ রকম বহু উদাহরণ আছে যারা মুচির ঘরে জন্মেও সমাজ সেবায় জীবন দিয়েছেন, হয়েছেন জগৎ বিখ্যাত। তাইতো গুণিজনেরা বলে গেছেন ”জন্ম হোক যথা তথায় কর্ম হোক ভাল”।
আর একটা কথা মনে রাখবেন, যে দেশের রাজনৈতীক নেতারা কেবল মাত্র তাদের স্বার্থ সম্বলিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া কি ভাবে হবে তা ঠিক করতেই পার করে দিয়েছেন দীর্ঘ ৪০/৪৫টি বছর সে দেশের জনগণ হয়ে আমাদের আরো সচেতন হতে হবে আমাদের ভবিষৎ ভাল করার নেতা নির্বাচনে। শুধু অন্যের দোষ নয় নিজেকেও মাঝে মধ্যে আয়নায় দেখতে হবে নিজের চেহারাটা কেমন। তাই আসছে নির্বাচনে সঠিক নেতা নির্বাচনেই দেশ ও দশের উন্নয়ণ ঘটবে নতুবা আমরা যেই আছি সেই থেকেও পিছিয়ে পড়ব বহুগুণ দূরে।

তর্ক কারীদের মুখ বন্ধ-মাথা নত। শুধু মুখে বলে যাচ্ছেন, জি জি….স্যার।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

ছবি:অনলাইন সংগ্রীহিত।

২১শে আগষ্টঃ পরাজিতদের নৃশংস হামলা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লিগ কে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলার করার মতো ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ছাড়া আর কোন রাজনৈতিক দল গঠন হয় নি। তাই স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের রাজনীতি তে আওয়ামী লীগ কে টিকে থাকার জন্য ষড়যন্ত্র আর খুন খারাবীর মোকাবেলা করতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে অব্যহতি পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা ষড়যন্ত্র, নানা মুখী শুভ অশুভ শক্তির সমীকরণ। নানা শত্রুর সমীকরণ বলয়ে আওয়ামী বিরোধী চক্রান্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। অতীতে হয়েছে এখনো চলছে। এই অশুভ তৎপরতা কখনো থেকে না। যেমন হয়েছে ৫৪ সালে, ৭১ সালে তা নিয়ে যায় স্বাধীনতা সংগ্রামে, মুক্তি সংগ্রামে। এর পরে ৭৫ এর মর্মান্তিক ১৫ই আগষ্ট ছিলো পৃথিবীর ইতিহাসে ঘৃণিত এক ইতিহাস। রাতের অন্ধকারে একদল বেইমানের দল জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করে৷ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে শুধুমাত্র কিছু বিপথগামী সামরিক অফিসারই ছিল না, এক প্রতিশোধ স্পৃহা কাজ করেছে। এই প্রতিশোধ স্পৃহা ছিলো মার্কিনীদের, পাকিস্তানি সরকারের আর এ দেশীয় কিছু পরাজিত দালালদের। এখানে যোগ হয়েছে ডান বামের জন সম্পৃক্ততা হীন কিছু রাজনৈতিক নেতা ও দলের। যারা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধাচরণ করে এসেছেন কিন্তু কোন গন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেন নাই।

এরপরের ইতিহাস আরো জঘন্য৷ ২১ বছর ধরে এদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃতি করা, স্কুল কলেজে মিথ্যা ইতিহাস পড়ানো, দেশ কে ধর্মের নামে পাকিস্থানী করন করা। এই কাজে বিচারপতি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় কাজ করে গেছেন। এমনকি ৯০এর স্বৈরাচার পতনের ফসল যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারাও একই পথ অবলম্বন করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ কে ক্ষমতায় ফিরতে বাধার সৃষ্টি করেছে।

প্রায় ২১ বছর পর ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইতিহাস বিকৃতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করে, ইতিহাসের জঘন্য তম আইন ইন্ডেমনিটি বিল বাতিল করে বংগবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পথ প্রসস্ত করে। এইসব ইতিহাস সবাই জানে।কিন্তু আওয়ামী বিরোধী এবং জাতির জনক এর পরিবারকে ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র তা কিন্তু থেমে থাকে নি। আজো সেই চক্রান্ত চলছে।

২১শে আগষ্ট সেই চক্রান্তের এক নারকীয় দিন। এইদিন ততকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতির জনকের কন্যা, আজকের প্রধানমন্ত্রী এবং সেই সময়ের বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ভাগ্যক্রমে তিনি অক্ষত থাকলেও মারা যায় প্রায় উনত্রিশ জন। আহত হন শতাধিক। শেখ হাসিনা নিজেও অসুস্থ্য হয়ে পরেন। এই কুখ্যাত হামলার পরেও আরো কয়েকবার হামলা চালানো হয়েছে। সারাদেশে টার্গেট করে আওয়ামী লীগের নেতা, সাংসদ, মন্ত্রী, বুদ্ধিজীবি, লেখক কবি, প্রকাশক, মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যা করে জাতিকে, আওয়ামী লীগ কে পংগু করার এক অশুভ চক্রান্তে আজো ততপর একটা চক্র। এই চক্র ৭১ এর পরাজিত শক্তি, এই চক্র পচাত্তরের পুরানো ঐক্যবদ্ধ শক্তি। যারা আন্দোলন দিয়ে আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে পারে না।

এক্ষেত্রে আবারো এক পুরানো কথা বলতে হয়, আওয়ামী লীগ যখন জিতে তখন সে একা জিতে, আর যখন হারে তখন সবাইকে নিয়ে হারে।

আগষ্ট মাসকে সামনে রেখে এগুলি কিসের আলামত ???

জয়বাংলা শ্লোগান, গলায় নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে কেন্দ্র দখল করে ধানের শীষে সিল মারা, আমার দেশ পত্রিকার বির্তকিত ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপর আদালত চত্বরে হামলা, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উপর একই মালিকের তিনটি গাড়ির বেপরোয়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থী হত্যা, কোমলমতি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে পুলিশের কলার ধরে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন, ছাত্রদের শান্তিপূর্ন প্রতিবাদকে ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টা আসলে কিসের আলামত ?

সরকারের উর্ধ্বতন মহলসহ গোয়েন্দা সংস্থাকে গভীর ভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। সামনে একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রকারী কুচক্র মহলের কোন ষড়যন্ত্র কিনা ? আগেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মেরে ফেলার জন্য আগষ্ট মাসেই বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রদের উপর বাস তুলে দিয়ে ছাত্র হত্যা, সারা দেশে নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপদানের লক্ষ্যে বিরোধীদের তৎপরতা কি সরকারকে বেকায়দায় ফেলার কোন ষড়যন্ত্র ? নিজেদের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ঘরের শত্রুদের কোন গভীর ষড়যন্ত্রের তৎপরতার জানান নয় তো? বঙ্গবন্ধু হত্যার সেই ষড়যন্ত্রের নীলনকশা আজও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। এখনও ষড়যন্ত্রকারীরা আগষ্ট মাসকে সামনে রেখে তাদের ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তারের চেষ্টারত। এই আগষ্ট মাসেই জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর হামলা হয়েছে তাকে মেরে ফেলার যা এখনও চলমান। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণে জানা যায় জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বর্তমানে আওয়ামী লীগে প্রধান দুটি সমস্যা হলো— অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নিজ নিজ গ্রুপ ভারী করতে বিরোধী মতাদর্শীদের দলে অনুপ্রবেশ।

বাস চাপায় ছাত্র হত্যায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাবালে নূরের যে তিনটি বাসের রেষারেষিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে, আসলে এটা কি একই মালিকের তিনটি বাসের রেষারেষি নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নাকি সরকার বিরোধী আন্দোলন সৃষ্টির ইস্যু তৈরীর কোন ষড়যন্ত্র কিনা খতিয়ে দেখা দরকার। যে বাস গুলির রেষারেষিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, যেটা চালাতেন মাসুম। ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ বাসটি চালাতেন জুবায়ের অপরটি ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০, এটা চালাতেন সোহাগ। এরমধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় মারা যায় দুই শিক্ষার্থী। মাসুম বিল্লাহর বাসের রেজিস্ট্রেশন আর ফিটনেস ঠিক থাকলেও রুট পারমিটের মেয়াদ ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর শেষ হয়েছে। আর সোহাগ আলির বাসটির রেজিস্ট্রেশন ঠিক থাকলেও ফিটনেটের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২০ জুন। রুট পারমিট ও ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৪ মার্চ। আর জুবায়েরের চালানো বাসটির রেজিস্ট্রেশন ঠিক থাকলেও ফিটনেস ও ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ১৮ মে। রুট পারমিটের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৭ সালের ১৯ মে। রাস্তায় চলার অনুমোদনহীন বাসের চাপায় ছাত্র হত্যা কেমন যেন রহস্যাবৃত। আবার পরিবহন শ্রমিক সংগঠন নামধারী কিছু মোড়লের গোষ্ঠীস্বার্থের আধিপত্যও সড়কে অরাজকতার জন্য অনেকাংশে দায়ী। ‘দুর্ঘটনার নামে মানুষ হত্যা, আহত শিক্ষার্থীকে আবার পানিতে ফেলে দিয়ে হত্যা করা, ফুটপাতের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষার্থীর ওপর বাস তুলে দেয়া- এটা দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড।’

আমাদের নীতিহীনতা, বিবেকহীনতার গা শিউরে ওঠা উদাহারণ সামনে আসছে একের পর এক। অথচ আমরা নিশ্চুপ! নিশ্চুপ মন্ত্রী সকল, নিশ্চুপ নাগরিক সমাজ। অদ্ভুত এক নির্লজ্জতা গ্রাস করেছে আমাদের ! এভাবেই জাতির সামনে ভবিষ্যতের অন্ধকার সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে; অথচ দেশের কর্ণধারদের কোনো বিকার নেই।

আমাদের বিবেক আর কত নিচে নামলে আমরা প্রকৃত বিবেকবান হবো ?

বাহ্

বাহ্
মানুষ বোঝেনা।

রাজনীতি বোঝনা ক্ষমতা বোঝো
পেট্রোলের বদলে বোঝো পেট্রোল বোমা
মানুষ বোঝনা গুম বোঝো খুন বোঝো।
জনতার সম্পদ লুটপাট বোঝো।
বাহ্ চমৎকার গুণ তোমার চমৎকার হিংস্র দুটি চোখ।

অভিশপ্ত ছাত্ররাজনীতি

শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতির প্রবেশ, দলীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রণে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশে পঠন পাঠনের ঘোর অবনতিই সূচীত করে!

জীবনের সমগ্র পরিসরে শিক্ষার্জনের সময়সীমা খুবই সীমিত! সেই সীমিত কালসীমায় যে বিদ্যার্জন এবং মেধার বিকাশ সাধন হয়, তার উপরেই সাধারণত বাকি জীবনের সুখ শান্তি কর্ম ও পরিতৃপ্তি নির্ভর করে! নির্ভর করে একটি জাতি, একটি দেশের উন্নতিও! রাজনীতির অঙ্গনে, সে নিজের ব্যক্তিগত আখের গোছানোর দূর্নীতিই হোক কিংবা সুনাগরিকের দেশপ্রেমে অভিষ্ট দেশসেবা ও দেশের উন্নয়ণ প্রক্রিয়ায় সদর্থক ভূমিকা রাখাই হোক; কর্মমুখর হয়ে ওঠার জন্যে সারা জীবন পাওয়া যাবে! কিন্তু শিক্ষার্জনের জন্যে নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনই জীবনে পাওয়া যায়!

জীবনের সেই স্বল্প কয়টি দিন, যা কার্যকরি শিক্ষার্জনের জন্যেই নির্দিষ্ট তা কখনই রাজনীতিচর্চার ক্ষেত্র হতে পারে না! শিক্ষার্জনের এই পর্বটি ছাত্রছাত্রীর মৌলিক মেধা বিকাশের প্রস্তুতি পর্ব! তারা এই কালসীমায় শিক্ষা আহরণ করবে, আত্তীকরণ করবে! সেই অধীত বিদ্যায় তাদের মেধা পুষ্ট হতে থাকবে! বিকশিত হয়ে ওঠার পথে দ্রুত গতিশীল থাকবে! এবং পর্বে পর্বে তাদের মৌলিক চিন্তা শক্তির বিকাশ ঘটবে! পারদর্শী হয়ে উঠবে কোনো না কোনো কার্যকরী বিদ্যায়! যে পারদর্শিতায় তারা তাদের কর্মজীবনে ক্রিয়াশীল থাকবে জীবনের মূলপর্বে! তাই সমগ্র জীবনের প্রেক্ষিতে শিক্ষাজীবনের এই মূল্যবাণ পর্বটি জীবন গড়ার জন্যেই নির্দিষ্ট থাকা উচিত!

কিন্তু! দুই বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্র আজ ছাত্ররাজনীতির অভিশাপের করাল গ্রাসে! কেন এমন হলো? সেটা বুঝতে গেলে একটু ফিরতে হবে ইতিহাসে! বৃটিশ এসে শাসনকার্য পরিচালনা এবং শোষণকার্য চালু রাখার জন্য বশংবদ রাজভক্ত কর্মচারী তৈরীর কারখানা স্বরূপ পত্তন করল আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা! যে শিক্ষাব্যবস্থা সমাজদেহের অন্তর থেকে গড়ে উঠল না! বিদেশী শোষক চাপিয়ে দিলো বাইরে থেকে! ফলে দেশের নাড়ির স্পন্দন থেকে বিচ্যুত, জাতির ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকারের সাথে সম্পর্কহীন, স্বদেশের প্রাণের সাথে শিকড়হীন এমন এক শিক্ষা পদ্ধতি চালু হল, যা মেরুদণ্ডহীন অনুকরণ প্রিয় নকলনবীশ মুখস্ত বিদ্যায় পারদর্শী ডিগ্রী সর্বস্ব চাকুরী প্রার্থী তৈরী করে!

ফলে শিক্ষার উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ালো চাকুরী সন্ধান! মৌলিক মেধা বিকশের জন্যে সমগ্র জীবনের উদ্বোধন নয়! সুচতুর বৃটিশ বুঝেছিল শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথমেই যদি জাতির মেরুদণ্ডটি ভেঙ্গে দেওয়া যায়, তবে সেই জাতিকে শতাব্দীব্যাপি বশংবদ করে রেখে শোষণ প্রক্রিয়াকে সুনিশ্চিত করা যায়! আর স্বাধীনতার নামে ভারতবর্ষে বৃটিশের তাঁবেদারদের হাতে শর্ত সাপেক্ষে ক্ষমতা হস্তান্ততরের পর, স্বদেশী শোষককুল সেই একই শোষণ ব্যবস্থা জারি রাখার উদ্দেশ্য বৃটিশ প্রবর্তীত শিক্ষাব্যবস্থাকেই বজায় রাখল! আগে যেখানে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কারখানায় বৃটিশভক্ত রাজকর্মচারী তৈরী হতো; এখন সেখানেই রাজনৈতিক দলীয় কর্মী তৈরীর ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেল!

স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল রাখার উদ্দেশ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ নেতাকর্মীর নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের প্রবাহ বজায় রাখার জন্যে শিক্ষাক্ষেত্রকেও রাজনীতির পরিমণ্ডলে নিয়ে আসা হল ছাত্ররাজনীতির নাম করে! ছাত্ররাজনীতি শিক্ষাক্ষেত্রকে নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করল! আর ছাত্ররাজনীতির নিয়ন্ত্রণ থাকল রাজনৈতিক দলগুলির হাতে! ছাত্ররা ব্যবহৃত হতে থাকল দলীয় রাজনীতির স্বার্থে! শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য গৌন থেকে গৌনতর হতে থাকল! কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রাজনৈতিক দলেগুলির আখড়ায় পরিণত হল! শিক্ষাক্ষেত্রও হয়ে উঠল রাজনৈতিক দলগুলির অঞ্চল দখলের লড়াইয়ের ময়দান! নষ্ট হয়ে গেল স্কুলকলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের পরিবেশ! ছাত্র শিক্ষক সুসম্পর্ক!

শিক্ষাক্ষেত্রে এরফলে নেমে এসেছে এক চরম নৈরাজ্য! এবং সেটা কাঁটাতারের উভয় পাড়েই সত্য হয়ে উঠেছে! পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে সরকারী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে পরস্পরের রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াইয়ের একটা বড়ো ময়দান হয়ে উঠেছে শিক্ষাক্ষেত্রগুলি! শিক্ষাঙ্গনের ছাত্ররাজনীতিতে তারই স্পষ্ট প্রভাব পড়ছে! আর পড়েছে বলেই বারবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে মুক্ত চিন্তাশক্তি ও মৌলিক মেধা বিকাশের পথটি! ছাত্ররা হাফপ্যাণ্ট পড়া থেকেই দেশের বা রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির দলদাসে পরিণত হয়ে পড়ছে! তথাকথিত ছাত্ররাজনীতি ছাত্রছাত্রীদেরেই স্বার্থের পরিপন্থী হয়ে দাঁড়িয়েছে! যেহেতু সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিরই স্বার্থ এক তাই এই অভিশাপ চলবে!

পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের চৌঁত্রিশ বছরের শাসন আমলে ছাত্ররাজনীতিকে ক্যাডার তৈরীর প্রক্রিয়া হিসেবে প্রায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়ছিল! এবং সাংগঠনিক দৃঢ়তায় ছাত্ররাজনীতিকে কার্যত বিরোধীশূন্য করে, বামফ্রন্টের একছত্র আধিপত্য রাজ্যে এক বিরোধীশূন্য গণতান্ত্রিক পরিসরের সংস্কৃতির পত্তন করেছিল! ছাত্র থেকে শিক্ষক, পঠনপাঠন থেকে কর্মসংস্কৃতি সর্বত্র বামরাজনীতির ছাত্রসংগঠনটি নিঃশ্ছিদ্র আধিপত্ত বিস্তার করেছিল! তাতে শিক্ষাবিস্তার হোক না হোক, রাজনৈতিক আধিপত্ত বিস্তারের কাজটি হয়ে ছিল নিখুঁত! পরিবর্ত্তনের কাণ্ডারীরা এইখান থেকেই ক্ষমতা দখলের সূত্রটি গ্রহণ করে!

পরিবর্ত্তনের কাণ্ডারীরা ক্ষমতায় এসেই রাতারাতি বাম আমলের চৌঁত্রিশ বছর ধরে গড়ে তোলা আধিপত্ত, দুদিনের মধ্যেই কায়েম করতে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সরাসরি পেশিশক্তির আস্ফালনের উপর নির্ভর করতে শুরু করল! যার প্রত্যক্ষ প্রভাব দেখা দিতে থাকল বিভিন্ন কলেজে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে! অধ্যাপক অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই যে শিক্ষাক্ষেত্রের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এর জন্যে বর্তমান সরকারি দলের প্রত্যক্ষ মদত নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে না! এবং এই প্রবণতা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এক কলেজ থেকে আর এক কলেজে! এক অঞ্চল থেকে আর এক অঞ্চলে!

এবং রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াইয়ে ব্যবহৃত পেশিশক্তিই সরাসরি ছাত্ররাজনীতির নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারী দলের তাঁবেতে নিয়ে আসতে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁপিয়ে দিচ্ছে স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ! সমস্ত রাজ্য জুড়ে এই যে পেশিশক্তির দাপটের আস্ফালন আছড়ে পড়ছে শিক্ষাঙ্গনের চত্বরে, অবশ্যই এর পেছনে সরকারী দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে! তারা ভাবছেন, বাম আমলের সাড়ে তিনদশকের রাজত্বের অন্যতম স্তম্ভ এই ছাত্ররাজনীতিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে তাদেরও দীর্ঘমেয়াদী সময়সীমায় শাসন ক্ষমতা দখলে রাখা সহজ সাধ্য হবে! তাই গণতন্ত্রের পরিসরে স্বৈরতন্ত্রের অভিলাষ চরিতার্থের এই প্রয়াস চলছে!

এই যে ক্ষমতা দখলের রাজনীতির অভিশপ্ত নাগপাশ গ্রাস করে ফেলেছে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে, এখানেই কপাল পুড়েছে বাংলা ও বাঙালির! পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ জুড়ে চিত্রটা মূলত একই রকম! এর পরিণতি ভবিষ্যতে যে ভয়াবহ সে কথা সহজেই অনুমেয়! যে শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড স্বরূপ সেই শিক্ষাব্যবস্থার আগাগোড়া ঘূণে ধরে গেলে সে জাতির উন্নতি কোনোদিনও সম্ভব নয়! নয় বলেই উন্নত বিশ্বের জাতিগুলির শিক্ষাব্যবস্থা এই ঘূণ থেকে মুক্ত! সেসব দেশে শিক্ষাক্ষেত্র রাজনৈতিক কলুষতা মুক্ত! শিক্ষাক্ষেত্র সেখানে জাতির ভবিষ্যত সুনাগরিক গড়ে তোলার অঙ্গন! মৌলিক মেধা বিকাশের সুবিস্তৃত মুক্ত পরিসর! জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার পীঠস্থান!

সুচতুর বৃটিশের প্রবর্তীত শিক্ষাব্যবস্থা, ও তাদের তৈরী করে দেওয়া ভোট সর্বস্ব ক্ষমতালোভী গণতন্ত্রের যুগলবন্দীর ফল ফলেছে আজ কাঁটাতারের উভয় পাড়ের বাংলায়! সেই ফলেরই অভিশপ্ত ফসল এই ছাত্ররাজনীতি! সারা বাংলা জুড়ে আজ তাণ্ডব চালাচ্ছে! কিন্তু এই অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করতে গেলে সমাজ বিপ্লব ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই! যে রোগ সমাজদেহের ভিতরে শিকড় ছড়িয়েছে; সমাজদেহের গভীর থেকে তার মূলোৎপাটন করতে গেলে সমাজ সংস্কার করতে হবে আগাগোড়া! আর সেই সমাজসংস্কার সম্ভব একমাত্র সমাজ বিপ্লবের পথ ধরেই! এই অভিশপ্ত ছাত্ররাজনীতির কবল থেকে শিক্ষাঙ্গনকে মুক্ত করতে না পারলে বাংলা ও বাঙালির ভবিষ্যত যে অন্ধকার সে কথা বিতর্কের উর্দ্ধেই!

শ্রীশুভ্র

শেখ মুজিব একটি নাম, একটি ইতিহাস

মানুষের যতগুলো অনুভূতি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি হচ্ছে ভালবাসা । আর এই পৃথিবীতে যা কিছুকে ভালবাসা সম্ভব তার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র ভালোবাসাটুকু হওয়া উচিত মাতৃভূমির জন্য । যে মাতৃভূমিকে ভালবাসতে পারে না কোন কিছুকেই তার পক্ষে ভালবাসা সম্ভব না । আমাদের এই ছোট্ট সোনার বাংলাদেশ, যার রয়েছে বীরত্বপূর্ণ গৌরব গাঁথা ইতিহাস । আর এই সাফল্যগাঁথা ইতিহাসের পিছনে রয়েছেন কয়েকজন মহানায়ক।যাদের ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারবো না ।তাদের মধ্য অন্যতম হচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।যার জন্ম না হলে এই বাংলাদেশ হত না । যার জন্ম না হলে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক কোন দেশের নাম থাকতো না । এই বাংলাদেশ, এই মায়ের সৃষ্টির জনক হচ্ছে আমাদের জাতীয় পিতা শেখ মুজিবুর রহমান । এই সুন্দর বাতাস, এই সুন্দর নদী, এই স্বাধীনতা যাকে ছাড়া সম্ভব ছিল না তিনি হলেন আমাদের জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । যার কথা আজো আমাদের বুক নাড়িয়ে দেয়, আমাদের বাহুতে শক্তি এনে দেয় তিনি হচ্ছে আমাদের পরম বন্ধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।কিন্তু এই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে কিছু কিছু কুলাঙ্গার এই নেতার বিরুদ্ধে কথা বলে । জাতীয় পিতার গৌরব গাথা ইতিহাস ম্লান করে দিতে চায় । তার ইতিহাস মুছে দিতে চায় ।এই বাংলার মানুষ কি এতই নিমকহারাম যে মাত্র ৪৭ বছর আগের ইতিহাস ভুলে যাবে? জাতির পিতার মহান অবদান অস্বীকার করবে?

‘তবু তোমার বুকেই গুলির পর গুলি চালালো ওরা
তুমি কি তাই টলতে টলতে বাংলার ভবিষ্যৎকে
বুকে জড়িয়ে সিঁড়ির ওপর পড়ে গিয়েছিলে?’

১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মর্মস্পর্শী দৃশ্যপট এভাবেই চিত্রায়িত হয়েছে কবিতায়। সেই রক্তাক্ত ১৫ আগস্ট জাতি দু’দিন পর পালন করবে, শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আঁধার রাতের রূপকল্প কেবল কবিতায় নয়, গানের কলিতেও প্রকাশ পেয়েছে_ ‘সেদিন আকাশে শ্রাবণের মেঘ ছিল, ছিল না চাঁদ’। প্রবীণরা বলেন, সেই রাতে ঢাকার আকাশে কালো মেঘ ছিল, ছিল না বৃষ্টি, ছিল না আঁধার বিদীর্ণ করা নীল জ্যোৎস্না। শ্রাবণের আঁধারে ডুব দিয়েছিল বৃষ্টিহীন রুক্ষরাত। আর এই অমানিশার অন্ধকারে রচিত হয়েছিল ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। রাজধানীর আকাশে-বাতাসে তখনো ছড়ায়নি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ থেকে আজানের সুরেলা ধ্বনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘোর কৃষ্ণপ্রহরে হায়েনার দল বেরিয়ে আসে। নিদ্রাচ্ছন্ন নগরীর নীরবতাকে ট্যাঙ্ক-মেশিনগানের গর্জনে ছিন্নভিন্ন করে ওরা সংহার করে তাঁকে_ ‘লোকটির নাম বাংলাদেশ। শেখ মুজিবুর রহমান।’স্বাধীনতার মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘তার মৃত্যু অমোচনীয় কলঙ্কের চির উদাহরণ কোনোভাবেই কাটবে না অমাবস্যার ঘোর কৃষ্ণপ্রহর কোনো কিছুতেই ঘটবে না এর অপরাধমোচন।’৪২ বছর আগে শেষ শ্রাবণের সেই মর্মন্তুদ দিনে বিশ্বাসঘাতকরা যাকে বিনাশ করতে চেয়েছিল সেই মুজিব মরেননি, বাঙালির হৃদয়-মননে অবিনাশী হয়ে রয়েছেন_

‘ওই তাকে দেখা যায়।
দেখা যায় ওই দিনের রৌদ্রে, রাতের পূর্ণিমায়।
মুজিব! মুজিব!

জনকের নাম এত সহজেই মোছা যায়!’বঙ্গবন্ধুর জলদগম্ভীর কণ্ঠ থেকে উচ্চারিত হয়েছিল তা বাঙালির শিরায় শিরায় এখনো শিহরণ তোলে। সেই আহ্বান বাক্সময় হয়ে আছে কবিতায়_

‘শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে অতঃপর কবি শোনালেন তার অমর কবিতাখানি এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের।’বাংলাদেশের হৃদয়সম এ মানুষটির অমরত্বের কথা_

‘সহসা দেখি আমার ছোট্ট ঘরখানির দীর্ঘ দেয়াল জুড়ে দাঁড়িয়ে আছেন শেখ মুজিব;/গায়ে বাংলাদেশের মাটির ছোপ লাগানো পাঞ্জাবি হাতে সেই অভ্যস্ত পুরনো পাইপ চোখে বাংলার জন্য সজল ব্যাকুলতা’

কাগজ ছিঁড়ে যায়, পাথর ক্ষয়ে যায়, কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম রয়ে যায়। সেই নাম শেখ মুজিব।ইতিহাসই তার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ। ‘তার জন্ম একটি জাতির উন্মেষ, নতুন দেশের অভ্যুদয় তার মৃত্যু অমোচনীয় কলঙ্ক, এক করুণ ট্র্যাজেডি বঙ্গোপসাগর শোভিত ব-দ্বীপে জ্বলজ্বল তার নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’ তিনি কোনো বিশেষ দলের নন, দল-মত নির্বিশেষে সমগ্র জাতির। তার মর্যাদা সর্বজনীন।

এই বাংলার আকাশ-বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি
হেরিতে এখনও মানব হৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা-পিতা-বোন-ভ্রাতা।

—-‘ডাকিছে তোমারে / কবি সুফিয়া কামাল

যতকাল রবে পদ্মা-যমুনা-গৌরী মেঘনা বহমান,
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
—-কবি অন্নদাশংকর রায়
<

১৫ই আগষ্ট। জাতীর জন্য এক কলঙ্কময় দিন। জাতীয় শোক দিবস। ৪২ বছর আগে ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপদগামী পাক হায়েনাদের প্রেতাত্মা তথা সেনাবাহিনীর একটি চক্রান্তকারী চক্র সপরিবারে হত্যা করে বাঙালী জাতীর জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাঙালী জাতীর অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৭, ৫২, ৬৯, ৭০ সহ বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুর দ্বার হতে বার বার ফিরে এসেছিলেন, ৭১-এ পাকিস্তানী হায়েনারা যা করতে পারে নাই, সেই কাজটিই অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে সম্পাদন করে পাপিষ্ঠ ঘাতকরা। ওরা মানুষ নামের হায়েনার দল, ওরা শয়তানের প্রেতাত্মা। ওরা জঘন্য। ওরা বিপদগামী হিংস্র জানোয়ারের দল।একদিন যে অঙ্গুলী উচিয়ে বাঙ্গালী জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন, বলেছিলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” সেই স্বাধীন বাংলাদেশে তাঁর অঙ্গুলি চিরদিনের জন্য নিস্তেজ করে দেয় ঘাতকরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর ঐতিহাসিক সেই বাড়িতে। আর কোনদিন ঐ অঙ্গুলি আমাদেরকে প্রেরণা দিতে আসবেনা, দিবেনা মুক্তির বারতা। তবে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে তিনি মৃত্যুহীন। প্রাণী হিসেবে মানুষ মরণশীল বলে সবারই একটি মৃত্যুদিন থাকে। তবে কোনো কোনো মানুষের শুধু দেহাবসানই ঘটে, মৃত্যু হয় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যিনি আমাদের জাতীর পিতা, তার কি মৃত্যু হতে পারে ? না তিনি মৃত্যুহীন। চির অমর।

১৫ আগষ্টের প্রেতাত্মা ও তাদের দোসররা আজও সক্রিয়। আজ ২০১৭ সালের ১৫ আগষ্ট। জাতীর জনকের কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী। তিনি ও তার পুরো পরিবার এখনও সেই ১৫ আগষ্টের প্রেতাত্মা ও দোসরদের কাছ থেকে নিয়মিত হত্যার হুমকি পাচ্ছেন। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা করে ৭৫ এর ১৫ আগষ্টের নায়কদের উত্তরসুরিরা তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে। এভাবে কয়েকবার তারা বোমা হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালায়।গুলশানে জঙ্গী হামলা, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলা করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে তৎপর এখনও পচাত্তরের খুনিরা। আজ তারা সংবিধান সংশোধন করা নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে আর একটি ১৫ আগষ্টেরও হুমকি দিয়েছে। তাহলে সত্যিই শেখ হাসিনাকে বা তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকেও ঐ ১৫ আগষ্টের মত নির্মম হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ? আমরা কি দেশে আর একটি ১৫ আগষ্ট চাই বা কামনা করি ? জাতির বিবেক কী বলে ?
************
হামিদুর রহমান পলাশ
সাবেক সহসভাপতি, দোহার থানা ও ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ।
যুগ্ন আহ্ববায়ক, দোহার পৌরসভা কৃষকলীগ।

তথ্যসূত্র :
সাইফুজ্জামান খালেদ-চতুর্মাত্রীক, দাদা ভাই ও জাহাঙ্গীর আলম- সামু, উইকি পিডিয়া, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা-আবুল হোসেন, সৈয়দ আবুল মকসুদ-প্রথম আলো।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ব্যাপারে বলন কাঁইজির ভবিষ্যদ্বাণী

(Bolon Kaiji’s prediction about the Third World War)

বলন কাঁইজির ভবিষ্যদ্বাণী (The prophecies of Bolon Kaiji)
বলন কাঁইজি গত ২০০০ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী করেন। অতঃপর; তাঁর জ্ঞানশিষ্যগণ তা লেখে রাখেন। গত ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তাঁর জ্ঞানশিষ্যদের উদ্যোগে কাঁইজির গ্রন্থিত প্রায় ৫০০ বলন সংকলিত হয়। অতঃপর; উক্ত বলন হতে ৩১৩ বলন সংকলন করে ‘বলন তত্ত্বাবলী’ নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ঐ গ্রন্থের ২৮ পৃষ্ঠায় ‘বলন কাঁইজির ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ’ উপশিরোনামে নিচের এই ভবিষ্যদ্বাণীটি ছাপা হয়। এটি এক নং ভবিষ্যদ্বাণী।

পরবর্তীকালে কাঁইজির আরেক জ্ঞানশিষ্য নাগর কাঁইজি (ছিদ্দিক কাঁইজি) ‘বলন কাঁইজির সংক্ষিপ্ত জীবনী’ গ্রন্থ নির্মাণ করেন। এই গ্রন্থটি এখনও প্রকাশিত হয় নি। এই গ্রন্থেও কাঁইজির ভবিষ্যদ্বাণীগুলো স্থান পেয়েছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিষয়ক জ্ঞানার্জনে কিছুটা হলেও সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করি।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ (The third world war)
মানুষের নিকট এমন এক সময় অতিক্রম করবে; যখন বিশ্ব দুই বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এক পক্ষে থাকবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য দল এবং অপর পক্ষে থাকবে বৃহৎ শক্তিশালী মাত্র ২টি দল। উক্ত দল দুটির প্রধান লক্ষণ হলো; তাদের এক দলের বসন হবে সাদা এবং অপর দলের বসন হবে কালো। তারা অভেদ্য দূর্গের মধ্যে কঠিনভাবে অবস্থান করবে। বর্তমান বিজ্ঞানের নির্মাণ কোন যন্ত্রই তাদের গোপন দূর্গের সন্ধান করতে পারবে না। তারা সেখান থেকে স্বয়ংকৃত অস্ত্রের সাহায্যে তুমুল যুদ্ধ করবে এবং সারা বিশ্বে অবর্ণনীয় ক্ষতি সাধন ও ধ্বংসযজ্ঞ সংঘঠিত করবে। এ যুদ্ধে নিরপেক্ষ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দেশগুলোও বাঁচতে পারবে না। উক্ত দল দু’টি গোপনে গোপনে এত শক্তি অর্জন করে বসে থাকবে যে; বিশ্ববাসী তা টের করতেও পারবে না। এ যুদ্ধে এমন সব আধুনিক মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হবে; যা পূর্বে একবার হয়েছিল। তবে; পূর্বে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির চেয়ে অনেক শক্তিসম্পন্ন যন্ত্রাংশ এ যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে।

দেশ দু’টি ১০ ধাতু যোগে দূরপাল্লার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এমন সব বিমান নির্মাণ করবে; যা নাকি একবার মাত্র ব্যবহার হবে। বিমানগুলো মৌমাছির মত ঝাঁকে ঝাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তারা নির্ভুলভাবে অভিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানবে। তারা যেখানে আঘাত হানবে; তা চিরতরে ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। সাথে সাথে বিমানটিও বিধ্বস্ত হবে। যেখান হতে যেটিকে পাঠান হবে; তা আর কোনদিন দূর্গে ফিরিয়ে আনা হবে না। যেমন; তীরন্দাজ বাহিনীর নিক্ষিপ্ত তীর একবার ছুড়ে দিলে আর ফিরে আসে না। আধুনিক বিজ্ঞানের অনেক শক্তিশালী যন্ত্রও সে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিমানগুলোকে প্রতিহত করতে পারবে না। বিশ্বের সব বিজ্ঞানী একত্র হয়েও উক্ত দেশ দু’টির গোপন দূর্গগুলো চিহিৃত ও ধ্বংস করতে পারবে না। অথচ; দূর্গগুলো থাকবে তাদের দূর্গের সামনেই। এমনভাবে; দুর্ভেদ্য ভাসমান দূর্গ তারা নির্মাণ করবে; যা সহজে স্থানান্তর করা যাবে। যেখান থেকে যুদ্ধ করা হবে; তা চিহিৃত হলেই তারা তা জানতে পারবে। শত্রুপক্ষ আক্রমণ পরিচালনা করার পূর্বেই তারা উক্ত ভাসমান দূর্গগুলো অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিবে। তাদের এ অভিনব যুদ্ধ কৌশল দেখে সেদিন সারা বিশ্ববাসী হতবাক ও বিস্মিত হবে। তাদেরকে লক্ষ্য করে যেসব অস্ত্রাদি নিক্ষেপ করা হবে; তাতে নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উক্ত দেশ ২টির তেমন কোন ক্ষতিই হবে না।

অবস্থান (Location)
উক্ত দেশ দু’টির অবস্থান হবে ভূভাগের মধ্য ভাগের পশ্চিমে। দেশ দু’টি খনিজ সম্পদ ও বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে অত্যন্ত অগ্রসর হবে। তারা নৈতিক আচরণেও বিশ্বের সেরা হবে। যুদ্ধোত্তর ৩ দশকে তারা নিজেরাই ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।

সূচনা (Start)
সামান্য একটি ভূখণ্ডের পুনরুদ্ধারকে কেন্দ্র করে এ ধ্বংসশীল মহাযুদ্ধের সূচনা হবে। যুদ্ধটি এমন সময় আরম্ভ হবে; যখন উক্ত দেশ দু’টি ব্যতীত সারা বিশ্ববাসী একজনকে বিশ্ববরেণ্য ও মহাশক্তিশালী নেতা রূপে গ্রহণ করবে।

স্থায়িত্বকাল (Stability)
মহাধ্বংসশীল এ যুদ্ধটি নয় মাস স্থায়ী হবে।

ক্ষয়ক্ষতি (Damage)
মরণঘাতি এ মহাযুদ্ধে বিশ্বের তিন ভাগের দুই ভাগ লোকই মারা যাবে। সর্ব প্রকার বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বিকল হবে। আধুনিকতা বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এমনকি; মাত্র ২৮ মাইল দূরে কোন সংবাদ পাঠাতে পুরো একদিন সময় লাগবে। কিন্তু উক্ত যুদ্ধবাজ দেশ দুটির তেমন কোন ক্ষতি হবে না।

সূচনাকাল (Start time)
যে মাসের ৩ তারিখ শনিবার হবে; সে দিনই যুদ্ধ আরম্ভ হবে। তা যে কোন সময় হতে পারে।

আত্মরক্ষার উপায় (Bulwark)
যদিও; আত্মরক্ষার কোন উপায় থাকবে না। তবুও; একমাত্র কুকুর প্রিয় লোকগণ আত্মরক্ষা পাবে। বেঁচে যাওয়া অধিকাংশ পুরুষ তাদের পুরুষত্ব হারিয়ে নারীত্ব বরণ করবে। রাস্তাঘাটে নারীদের একচেটিয়া উপদ্রপ হবে। নারীরা যত্রতত্র সমর-সংগ্রাম সৃষ্টি করবে। চিকিৎসাবিদ্যা প্রায় বিলুপ্ত হবে। চিকিৎসার অভাবে অবশিষ্ট লোকের অধিকাংশই মারা যাবে।

সূত্রতথ্য;
বলন তত্ত্বাবলী;
লেখকঃ বলন কাঁইজি
আনন্দ পাবলিশার্স; ৩৮/৪ক, বাংলাবাজার, ঢাকা- ১১০০
প্রকাশকাল; ২৯ ফাল্গুন, ১৪১৪ বঙ্গাব্দ; ১২ মার্চ, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ।

বলন কাঁইজির জীবনী; লেখকঃ নাগর কাঁইজি (ছিদ্দিক কাঁইজি)

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরঃ কিছু তথ্য কিছু প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো নানা ধরনের কথা বার্তা বলছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে এটিকে ‘দেশ বিক্রির চুক্তি হিসেবে’ অভিহিত করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে এ নিয়ে তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না।

শেখ হাসিনার সফরের আগে বাংলাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছিল, কারণ, বাংলাদেশে সাবমেরিন পৌঁছানোর পর যেভাবে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসে চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং একের পর এক ভারতীয় কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর শুরু করেছিলেন, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। ফলে জনমনেও এ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা আছে।

এদিকে অন লাইনেে নানা সূত্র থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো নিয়ে উঠেছিলো বিতর্ক। ভারত সরকার প্রথমে প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তরুণ বাবুল কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী। ভারতের মৃলধারার জনপ্রিয় বাঙালি গায়ক। ‘কহনা পেয়ার হ্যায়’ গানটির জন্যে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এতে ঠো’ট মিলিয়েছিলো বলিউড তারকা ঋতিক রওশন। অভিনেতা রাকেশ রওশনের সন্তান, সন্জয় খানের সাবেক জামাতা। গায়ক-রাজনীতিক বাবুল সুপ্রিয় পশ্চিমবঙ্গের সন্তান, সাবেক ব্যাংকার।মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী’র ‘তারকাদখল’ প্রকল্পমুক্ত সৌখিন রাজনীতিক। বিজেপির ‘তারকা-আহরণ’ প্রকল্পের বঙ্গবাহাদুর। বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার বিশেষ ভক্ত। ।

গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। বাঙালিত্ব ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেই ভারতের নীতিনির্ধারকেরা তাকে গুরুত্ব দিয়েছিলো। ভেবেছিলো, বাঙালি জাতীয়তাবাদের নেত্রী তাতে বিগলিত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারকেরা তাতে বিরাগভাজন হয়েছিলেন!

অবশেষে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

একটি অন-লাইন পত্রিকা জানায় বাংলাদেশ- ভারতের সামরিক সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে নানা কথাবার্তা হলেও এই সমঝোতা স্মারকে আসলে কি আছে- তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কোনো কথা বলেনি। ঢাকা ও নয়াদিল্লীর বিভিন্ন সূত্রে যোগাযোগ করে সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে ।
প্রাপ্ত তথ্যগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে দুই দেশের সামরিক খাতে ৬টি বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে :

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতা (লাইন অব ক্রেডিট)
(২) সামরিক সহযোগিতা
(৩)যৌথ প্রশিক্ষণ উদ্যোগ ও বিনিময়
(৪) প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা
(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা
(৬)উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতার আওতায় ভারত বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহযোগিতা দেবে। এই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে কোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জামাদি কিনতে পারবে বলে সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।

সচেতন লোকেরা বলাবলি করছে,
৫০০ কোটি ডলার ইন্ডিয়া থেকে সুদে ধার নিয়ে ইন্ডিয়ার “গার্বেজ” কিনে আনা চুক্তির একটি শর্ত ?? একটি স্বাধীন দেশ কখন আর্মস কিনবে, কার কাছ থেকে কিনবে সেইটা ঠিক করের দেবে আরেকটি দেশ ??? গদি রক্ষার দালালী আর কারে কয় ?/

(২) সামরিক সহযোগিতায় বলা হয়েছে, নিজেদের দক্ষতা এবং কর্মপরিধি অনুসারে আন্তর্জাতিক আইন, নিজ নিজ দেশের জাতীয় আইন ও পরিস্থিতির আলোকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

(৩) যৌথ প্রশিক্ষন উদ্যোগ ও বিনিময় সহযোগিতায় বলা হয়েছে,
ঢাকার সূত্রগুলো অবশ্য বলছে, এর অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে এখনো অনসৃত হচ্ছে। সমঝোতা স্বারকের ফলে এগুলো নিয়মিত এবং দাপ্তরিক কার্যকমের আওতায় চলে আসবে।

(৪) প্রতিরক্ষা শিল্পখাতের সহযোগিতায় যৌথ উদ্যোগের (জয়েন্ট ভেঞ্চার) মাধ্যমে পরষ্পরকে প্রতিরক্ষা শিল্পখাতে সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এবং ভারত পরষ্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। প্রশিক্ষণ,তথ্য বিনিময় এবং সংশিল্ট বিজ্ঞানী প্রকোশলীদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এই সহযোগিতা হতে পারে।

(৬) উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা হিসেবে বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার পর্যায়ে বৈঠকঅনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিরক্ষা সচিব পর্যায়ে বৈঠক করে সামরিক ইস্যূ নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে মমতা ব্যানার্জির অনেক গুণ; এই মহুর্তে উনি পশ্চিম বংগের চীফ মিনিস্টার; কমপক্ষে ৬/৭টি মিনিস্ট্রি উনার অধীনে; তিনি তৃণমুল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা; এর আগে অনেক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন; চুরিধারীর অপবাদ নেই; কঠিন জীবন যাপন করেন; নিয়মিত ব্যায়াম করেন, সাধারণ কাপড় পরেন, সুন্দর বক্তৃতা দেন, ভালো খান; পাক-ভারতের রাজনীতিতে আদর্শ।

উনি হয়তো এখনো টের পাননি যে, উনি মিথ্যা কথা বলেছেন, “তিস্তায় পানি নেই”; উনি গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানিকে গংগায় নিয়ে গেছেন; সবাই জানে, মোদীও জানে। সবাই জানার পরও কিভাবে এত দায়িত্বশীল, এই আদর্শবাদী মহিলা মিথ্যা বললেন?