ট্যাগ আর্কাইভঃ প্রেমের কবিতা

মধুরিমা এ আমারই ব্যর্থতা

মধুরিমা,
তোমার খোলা আকাশে
আজকাল পারিজাত ফুলগুলো
বড্ড বেশি রঙীন দেখায়।

তোমার বাহান্ন তীর্থের শরীর
আমায় অনর্থক রাত জাগায়।

তোমার ওই নিটোল কোমর,
বাঁকা ঠোঁট,চঞ্চল পটলচেরা চোখ,
দীর্ঘ কেশ
একহারা গড়ন,চলার ভঙ্গি,
আমার হৃদয়ে কেবলি নিগম তুলে ধায়।

আচ্ছা তুমি এরকম পাকাল মাছের মতো
পিচ্ছিল কেন বলতে পারো?

তুমি কি জানো?
তোমার জন্য আমার এই পৃথিবীতে আসা।
তোমার জন্য আমার সমস্ত কবিতার পঙক্তিগুলো এলোমেলো এবং প্রথাবিমুখ।
তোমার জন্য আমার স্বপ্নদিনের অশ্রুত হাততালি দেয়,
তোমার জন্য আমার যত নিকোটিন পোড়ানো।
জানিনা, জানো কিনা ?

একবার হলেও আহ্লাদি করে বলতে তো পারো !
হোক মিথ্যে করে!
বলতে তো পারো!
ছাড়ো তো এসব ভাবনা চিন্তা আর
বিড়ি সিগারেট , আমার হাতটা ধরো।

জানি তুমি উত্তর দেবে না,
বলবেনা কোন কথা।
হয়তো নৈবেদ্য সমূহ সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি
তোমার মন মন্দিরে।
হয়তো ফুটিয়ে তুলতে পারিনি আমি আমার
মনের ব্যক্তিগত বার্তা সকল,
তোমার মনের মতো করে সাবলীল হরফে।
ঠিক আছে ধরেই নিলাম, এ আমারই ব্যর্থতা।

প্রণয় উষ্ণতার জন্য

তোমার বিশুদ্ধ আগুনে
আমি ঝাঁপ দিতে গিয়ে দেখি,
তুমি অন্যের হাত ধরে,
তার আবেগ, স্ফীতি এবং অনুভূতির প্রতি নিজেকে রক্ষিত করে
চলে গেছো বহুদূর।

বজ্রগর্ভ–অন্তরের গভীর থেকে উঠে আসা চিৎকার,
সগৌরবে বলে, এসো, জেগে উঠি সুপ্রাচীন কোলাহলে।
মিনতি ,আর্তনাদ,আকুলতা।
তুমি সাড়া দাও না।
আমি কান্না লুকাই এখন অনাবৃত সরোবরে।
দেখ দেখি দুঃখগুলো,
কষ্টের স্রোতে কীভাবে যাচ্ছে ভেসে
অকাল বন্যায়।

কতটুকু ভালোবাসা দিলে,
আমার একলা রাতের
নিঃসঙ্গতাগুলো তোমার শীতল অনুষঙ্গে উষ্ণতা ছড়াবে?
কতটুকু ভালোবাসা দিলে,
প্রেমের শান্তি মঙ্গল উঠে দাঁড়াবে বুকসমান উঁচু জলে।
থমকে যাবে তোমার–আমার গল্প
ইচ্ছের প্রাচীর ঘিরে।

প্রকৃতি ও প্রণয়

প্রমত্ত অলিকুল গুঞ্জরিছে কুঞ্জবনে।
সৌহার্দ্যে অনবরত।
সকল নবীন পাতা ফুল,
থমকিয়া চমকিয়া দেখিছে তাহা, প্রকৃতিতে।
নিলাজ দৃষ্টি লইয়া উন্নত চাহনিতে,
অনুষ্ঠিত নানা মান অভিমান পর্ব সকল।
জড়াইয়া লইবার বাসনায় বাসর সোহাগে,
নিজস্ব জীবন চক্রের অর্ন্তভুক্তিতে।

শেষ পরিনাম

চলতে পথে যেতে যেতে কোন একদিন,
মনে হলো এলো বুঝি ফাগুনের দিন।

কেউ একজন বলেছিলো প্রিয়, ভালোবাসি।
হাতছানি দিয়েছিলো, সাথে মিষ্টি হাসি।

কপোলখানি ঢাকা ছিলো উদাসী চুলে,
অধরের হাসিটুকু কি করে যাবো ভুলে?

কুসুম কোমল রূপে তার সোনালী আভা,
পটলচেরা চোখে ছিলো আলোকিত প্রভা।

মনের ভুলে মুগ্ধতায় জানা হয়নি তার নাম ,
স্মৃতিটুকু শুধু রয়ে গেছে শেষ পরিনাম।

শ্রীরাধিকার মন


শ্যামের বাঁশির দোদুল দোলা ,
শ্রীরাধিকার মনে।
প্রেম বিরহে কাটে অহর্নিশ,
দুরন্ত ভরা যৌবনে।

কৃষ্ণ অভিমুখে সদা সর্বদা
রাইকিশোরীর দুনয়ন ।
অন্তর কাঁপে অবিদ্যমানতায়,
অস্থির চঞ্চলমন।

হায় রাধিকা কি হেতু তুমি,
এতোটা অভিমানী।
কৃষ্ণ তোমার, তোমারই আছে ,
রইবে তোমার ই জানি।

অবিনশ্বর প্রেম এমনিতো হয়,
শত অভাব জ্বালা ।
মদিরা মাতাল তব জীবন মন,
যেন কণ্টক মালা।

সাধনার ধন শ্যাম প্রিয়জন,
হৃদয় মানিক্য তোমার।
তাহাতে বিলীন তব মনপ্রাণ
তাহাতেই একাকার।

অপেক্ষা

ইচ্ছে ছিলো মন ভেজাবো,
তোমার হাতটি ধরে।
ভাবনাগুলো দিক হারালো,
অমানিশার ঘোরে।

ফূল ফুটেছে ঝিলের জলে,
জলাকার চিকচিক।
স্বপ্নগুলো মেলবে পাখা,
ফিরলে তুমি ঠিক ঠিক।

সেই আশাতে ই গুনগুনিয়ে,
গাইছি দেখো গান।
রাত নিশিতে ছন্দ সুরের,
মিলিত ঐক্যতান।

কি চাই তোমার মানসীপ্রিয়া,
কিসে তুমি খুশি ?
কি পেলে তুমি হাসবে বলো
মন ভোলানো হাসি?

বলেছিলে ফিরবে তুমি,
আসবে তুমি কাছে।
ভাবনাগুলো আঁকছে ছবি,
অলীক উল্লাসে।

রূপ সোহাগী

ফুল ফুটেছে নিঝুম বনে
জোছনা জাগা রাত্রি।
তুমি আমি এই প্রহরে
একলা পাত্র পাত্রী।

নদীর জলে ঢেউগুলো সব
আঁকছে আঁকি বুকি।
এসো দুজন এই আহ্লাদে,
জোছনা নিয়ে মাখি।

জল কিনারে কাশফুলেরা,
খেলছে মজার খেলা।
গুল্ম লতা জড়িয়ে তারে,
দুলছে দোদ্যুল দোলা।

জোনাক পোকা দুষ্টু ভারি,
জ্বলছে আর নিভছে।
দুর নীলিমার নীলগুলো সব
ঝাপসা ছবি আঁকছে।

বাতাস এসে কানে কানে
আমায় যেন বলল।
জুটি তোমার মানিয়েছে বেশ
নয়কো কারো তুল্য।

তুমি আর আমি

মন মোর চায়, প্রতি সন্ধ্যাবেলায়
পুঁথি নিয়ে বসি পিঁড়িতে
চুপি চুপি পায়, লাল আলতায়
মাখামাখি তুমি মাটির সিড়িতে।।

এখন কি হবে? বুঝিনি তো আগে
তুমি কাঁপো ভয়ে থরোথরো
আমি বলি কানে মুখে, ভেবোনা তুমি, ওকে
তবু তুমি ভয়ে লাজে মরোমরো।।

কেরোসিনের আলো, তোমার রূপ বাড়ালো
লাল পেড়ে শাড়িতে তোমায় মানিয়েছে বেশ
তুমি দেখো আমি দেখি, হাসি লাজে মাখামাখি
হাত খানি ছুঁতেই হঠাৎ কড়া নির্দেশ।।

কি হচ্ছে কি এখন, করেছি না বারণ ?
মেলামেশা যাবে না, ওর আর তোমার
তোমার চোখ ছলো ছলো, কি জানি কি হলো
দিলে ছুট সেই, ফিরলে না আজও আর।।

পরস্ত্রী তুমি সেকথা জানি, মানে না মোর ছোট প্রাণখানি
ভাল থেকো তুমি, ভালো রইবো আমি, দিলাম কথা প্রাণমণি।।

মধুরিমা

মধুরিমা,
বসন্ত তোমাকে সাজিয়েছে নিজ হাতে
তোমার সারা শরীরে তুমি গেঁথে রেখেছো গানের অলংকার
অস্থির অবগাহনে তুমি ছড়ালে ভোরের দীপ্তি নব রবি কিরণে
প্রণাম তোমায় হে ভালোবাসার দেবী।।

তোমার ছায়ায় আমি খুঁজে পেয়েছি বাঁচার সঠিক অর্থ
কঠিন সময় জয় করেছি তোমার ই অনুপ্রেরণায়
তোমার তনু স্রোতস্বিনী সম বয়ে চলে আমার হৃদয় গভীরে
তুমি আরো সিক্ত করো আমায়, নিঃস্ব করো আমায় হে ভালোবাসার দেবী।।

তোমার শরীরের বর্ণ বাহারে আমি হারাই বারবার
আমায় তুমি ভাসিয়ে নিয়ে চলো বানের জলের মতো………..।