আনন্দ খেলাঘর

ঘুরে ফিরে বারে বারে হয় কত কারুকাজ
শুক্লপক্ষের জ্যোছনায় ভেসে যায় আকাশ!
হালকা ধাচের সাদা মেঘ অরূপ মায়ার সাজে
খানিক আধারে চুমু দিয়ে ছুটে চলে যায় লাজে!
চারদিকে দিগন্তজোড়া দালানের উঁচু নিচু ছাদ।
পাতাভরা গাছের মাথায় উঁকি দিয়ে চাঁদ-
যাচ্ছে লুকোচুরি খেলে
সুন্দর আজ প্রাঙ্গনে হেসেছে অবগুণ্ঠন মেলে।

এই যে আকাশ ভরা তারা
সংখ্যাতে হতে হয় দিশেহারা
বৈচিত্র্যময় গ্রহ, নক্ষত্র, উল্কা, ধুমকেতু
নীহারিক, গ্যালাক্সি ঘূর্ণন হেতু
কোথা থেকে কোথা চলছে ছুটে
আমিও তাদের অংশ হয়ে থাকি চিত্রপটে।

এই যে জলবাহী পবনের উড়ন্ত স্রোতধারা
আছড়ে পড়ে মিটায় জমিনের খড়া
গাছ গাছালি মাটি ফুড়ে এসে
কেঁপে কেঁপে উঠে প্রাণের উল্লাসে।
আগে শুন্য, অজানা রইল পর
শুধু এইখানে আজ বুঝি এই আনন্দ খেলাঘর!
আমার হৃদয়ের অপার্থিব স্পন্দিত ফল্গুধারা
সাগর- ঊর্মি, হরিত- প্রান্তর, প্লাবিত বসুন্ধরা
আমারে ডুবায়ে নিয়ে যায়, ভাসায়ে নিয়ে যায়,
আমারে না জানি কোথায় হারাইয়া লইয়া যায়!

ভেবে দেখেছো কিঃ ১

সবসময় ক্ষমতার সাথে থাকা, ক্ষমতাবানদের সাথে থাকা- মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। মানুষ সবসময় তাকে নিরাপদে রাখতে চায়। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে জীবনের মুল লক্ষ্য মনে করে। নীতি নৈতিকতা বাহুল্য মনে হয়। এজন্য ক্ষমতাবানদের মধ্যে দুর্নীতিবাজদের দলটা ভারী। সৎ মানুষের সংখ্যা কম।

কঠোর আইন দন্তবিহীন হলেও, প্রকৃতির আইন কিন্তু দন্তবিহীন না। প্রকৃতির প্রতিশোধ ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ। এই প্রতিশোধ দুর্নীতি না থামাতে পারলেও, দুর্নীতিবাজদের ঠিকই থামিয়ে দিবে।

হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাআলা সমস্ত আকাশমণ্ডলীকে ভাঁজ করবেন এবং সেগুলোকে ডান হাতে নিয়ে বলবেন, ‘আমিই বাদশাহ। অত্যাচারী ও যালিমরা কোথায়? অহংকারীরা কোথায়?

অতপর সমস্ত জমিনগুলোকে ভাঁজ করবেন। অতপর সেগুলোকে বাম হাতে নিয়ে বলবেন, আমিই মহারাজ। অত্যাচারী ও যালিমরা কোথায়? অহংকারীরা কোথায়? (মুসলিম)

সুতরাং সামান্য মশা ও পিপড়ার কামড় সহ্য করার ক্ষমতা যাদের নেই। তাদের অহংকার করা মানায় না, ক্ষমতার দাপট দেখানো মানায় না।

করোনাকালীন সময়ে সামান্য এক ভাইরাসের দাপটে ঠাণ্ডাজ্বরে যারা অস্থির হয়ে ওঠে, সেই মানুষ অন্যায়ভাবে অর্থ সম্পদ উপার্জন করার পূর্বে, অন্যের উপর জুলুম করার পূর্বে একবার ভেবে নেয়া উচিত এই অর্থ আর ক্ষমতা সত্যিকারের প্রয়োজনে একেবারে মূল্যহীন।

ভেবে দেখেছো কি, কতটা নশ্বর এই উপার্জিত সম্পদ, কতটা অসহায় ক্ষমতার দাপটে অন্ধ হওয়া মানুষগুলি।

নারীর শ্রেষ্ঠত্ব

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

পৃথিবীর সব দেশেই অপরাধীদের মধ্যে পরিসংখ্যানে নারীদের চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। চুরি ডাকাতি খুনের মতো যাবতীয় সাধারণ অপরাধের খতিয়ান দেখলে পুরুষ অপরাধীদের তুলনায় নারী অপরাধীর সংখ্যা নগণ্য। চুরি, জালিয়াতি করলেও নারী ডাকাত দল তেমন শোনা যায় না। ব্যতিক্রমী কিছু দস্যুরানী পুরুষ ডাকাত দলে পুরুষদের খুন ধর্ষণের ঢালাও অনুমতি দেওয়ার বিনিময়েই ক্ষমতা ভোগ করে থাকে। অবশ্য ড্রাগ পাচার ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মেয়েরা হামেশাই ব্যবহৃত হয় যা মুলত পুরুষরাই নিয়ন্ত্রণ করে।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

আমাদের দেশে থানায় ডায়রি থেকে মেয়েদের বিরুদ্ধে অপরাধের চিত্র থাকলেও পুরুষের তুলনায় নারী অপরাধীর অনুপাতের কোনও রেকর্ড নেই। যা আছে তা হল বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মহিলার কীর্তিকলাপের বর্ণনা ও তাদের নিয়ে কাহিনী। অন্যদিকে আমেরিকান ও ইওরোপীয় দেশগুলোতে অপরাধের লিঙ্গ ভিত্তিক পরিসংখ্যান যথেষ্ট বিশদে রাখা হয়। যার থেকে অপরাধ জগতে নারীর ভূমিকা কতটা তার একটা ছবি পাওয়া যায়। যেমন ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে নিক্ষিপ্ত আসামীর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা (৫,০৩৭,০০০) মহিলাদের (৫৮১,০০০) তুলনায় ৯ গুণেরও বেশি ছিল।

২০১৪ সালে অসামাজিক কাজের জন্য গ্রেপ্তার হওয়া মানুষের ৭৩% ছিল পুরুষ। এর মধ্যে হিংসাত্মক অপরাধের জন্য ধরা পড়া পুরুষের সংখ্যা ৮০.৪% এবং সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ৬২.৯%। United States Department of Justice ১৯৮০ থেকে ২০০৮-এর মধ্যে খুনের একটা পরিসংখ্যান একত্রিত করে দেখা যায় – মোট অপরাধের ৯০.৫% করেছে পুরুষ বা ছেলেরা। অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!
…….

২০০২ সালে কানাডায় বার্ষিক মোট অপরাধী চিহ্নিত মানুষের মধ্যে পরিণত পুরুষ ৩,২৬,৫৩৬ জন, পরিণত মহিলা ৭১,০৫৮ জন, অপরিণত ছেলে ৭৪,৫১৩ জন এবং অপরিণত মেয়ের সংখ্যা ২৪,৪৮৭ জন। দেখা যাচ্ছে ছেলেরা অপরিণত বয়সেও মেয়েদের তুলনায় এমনকি পরিণত নারীর তুলনাতেও অপরাধে চাম্পিয়ান।
অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!

পুরুষালি হিংস্রতার পেছনে পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরনের (testosterone) ভূমিকা সংক্রান্ত প্রথম তত্ত্ব Challenge hypothesis অনুযায়ী- বয়ঃসন্ধিক্ষণে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ বৃদ্ধির ফলেই জননক্ষমতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভাব বেড়ে যায় যা আগ্রাসী আচরণের অন্যতম কারণ। বাস্তবে জেলে হিংস্র অপরাধীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে রক্তে টেস্টোস্টেরণের মাত্রা ও হিংস্রতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক প্রমাণ হয়েছে।

Merton’s theory of anomie অনুযায়ী নারীদের অপরাধ প্রবণতার পেছনে অনেক সময় তার মধ্যে পুরুষালি ভাবকে দায়ী মনে করা হয়। যেসব মেয়েরা সমাজ নির্ধারিত মেয়েলি ভূমিকা প্রত্যাখ্যান করে ‘টম বয়’ গোছের হয় তাদের মধ্যে অন্যান্য সাধারণ মেয়েদের তুলনায় অপরাধ প্রবণতা বেশি। একটু ডানপিটে ও স্বাধীনচেতা মেয়ে হলেই সে নিষ্ঠুর ও অপরাধী মনোবৃত্তির হবে এমন নয়। কিন্তু আগ্রাসী মনোভাব, অপরাধ ও হিংসার সাথে কোনওভাবে বিজ্ঞানীরা পুরুষালী বৈশিষ্ট্যের বিশেষত পুরুষ হরমোনের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। যেমন টেস্টোস্টেরন এই পুরুষ হরমোনটি নারী দেহেও কাম ও অন্যান্য উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

পুরুষদের মাঝে টেস্টোস্টেরন বিপাক হার নারীদের তুলনায় ২০ গুণ বেশি।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!৷
………

পৃথিবীর সকল নারীকেই প্রাকৃতিক একটি পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমাদের মা-খালারাও উঠতি বয়সে মাসিক বা ঋতুচক্রের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। একজন নারীকে ভবিষ্যতে সন্তানসম্ভবা হতে শারীরিকভাবে প্রস্তুত করে এই মাসিক প্রক্রিয়া। বাড়ন্ত কিশোরীর শরীরে মা হবার প্রক্রিয়া একেবারে প্রকৃতিভাবে যুক্ত করে দিয়েছে।

একজন কিশোরীর জন্য এটি প্রথম সংকেত যা বলে দেয় যে সে তার বাড়ন্ত কৈশোরে পা রাখতে যাচ্ছে। প্রতি মাসে ডিম্বাশয় একটি ডিম্বাণু উৎপাদন করে। সবচেয়ে পরিপক্ক বা পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণুটি ডিম্বনালির মধ্য দিয়ে জরায়ুতে চলে যায়। জরায়ু হচ্ছে দেহের এমন একটি অংশ যেখানে শিশু সুরক্ষিত থাকে ও প্রতিনিয়ত পুষ্টি পায়। যখন ডিম্বাণু পরিপক্ক হয় তখন শরীর জরায়ুতে রাসায়নিক সংকেত পাঠায়। ফলে জরায়ুর ভিতরের অংশ পুরু হয়ে ওঠে। ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্বাণু বেরিয়ে এসে ডিম্বনালীতে অবস্থান নেয়। এই পুরো প্রক্রিয়াকে বলে হয় ডিম্বাণু উৎপাদন প্রক্রিয়া।

ডিম্বানুটি শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত হলে গর্ভসঞ্চার হয়। গর্ভবতী অবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণুটি ডিম্বনালীর মধ্য দিয়ে জরায়ুতে আসে। ৬ দিনের মধ্যে নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুতে সৃষ্ট নরম, পুরু আবরণের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। আর যদি গর্ভবতী না হয়, তাহলে অনিষিক্ত ডিম্বাণুটি নষ্ট হয়ে যায়। জরায়ুর ভেতরে কোন শিশু জন্ম না নেওয়ায় নরম ও পুরু আবরণটিও ভেঙে যায়; শরীর থেকে রক্তের আকারে বের হয়ে আসে। এভাবেই মাসিকের শুরু হয়। প্রকৃতি একজন নারীকে মাসের সাত দিন (কম বেশি হতে পারে) অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ সময় জননী হওয়ার প্রক্রিয়ায় যুক্ত রাখে। যেখানে পুরুষ প্রকৃতিগতভাবে বেশি অপরাধ প্রবণতায় যুক্ত।

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!৷

এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কে আমার উত্তম আচরণ পাওয়ার বেশি হকদার?’ তিনি বললেন ‘তোমার মা’; সে বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা’; সে আবারও বলল, ‘তারপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা’। সে পুনরায় বলল, ‘এরপর কে?’ তিনি বললেন, ‘তোমার পিতা’। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

প্রিয় নবী (সা.) আরও এরশাদ করেন, ‘জান্নাত মায়ের পদতলে’। (মুসলিম)৷

অতঃপর তুমি নারীর শ্রেষ্ঠত্বের কোন কোন তথ্যকে অস্বীকার করবে!!

তিন শূন্যের পৃথিবী

তিন শূন্যের পৃথিবী
সাইদুর রহমান.

সবুজ শ্যামল সোনার বাংলার
এত উর্বর মাটি,
গরিব কৃষান ভাবে দেশটি
যেন শস্যের ঘাঁটি।।

তবুও হায় রে দারিদ্রতা
ছাড়ে না তার পিছু,
কখনো হায় উপোষ কাটায়
জুটে নাকো কিছু।

মোদের সকল ছেলে মেয়ে
শিক্ষা নিয়ে শেষে,
কাজের খোঁজে সকল দ্বারে
ঘুরে চাতক বেশে।

বাবা মায়ের বুকের স্বপ্ন
ভেঙে হয় গো চুরমার,
বেকারত্বের সে কি জ্বালা
কে শুনে সে চিৎকার ?

আজ কী শুধু শব্দ দূষণ
খাদ্যে ভেজাল চারপাশ,
হেথা হোথা কার্বন দূষণ
বিষে ভরে নিঃশ্বাস।

ছড়ায় ক্যানসার আয়ু কমে
প্রাণ স্পন্দন যায় থেমে
পাই পরম সুখ কার্বন দৃষণ
শূন্যে যেই যায় নেমে।

দেশে বেকার আর দারিদ্র
যদি আর না থাকে,
এই পৃথিবীর সবাই ভাববে
তখন স্বর্গ তাকে।

মূলঃ নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ ইউনূস
ছন্দ মাত্রা স্বরবৃত্তঃ ৪+৪/৪+২

সিনায় সিনায় জিকির উঠে নির্বাচন নির্বাচন

Civil_Rights_March_on_Washington,_D.C._(Leaders_of_the_march_posing_in_front_of_the_statue_of_Abraham_Lincoln..._-_NARA_-_542063_(cropped)

১.
এমনভাবে বলা হয়ে থাকে যেন নির্বাচন ব্যবস্থা সাম্যবাদী। ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সমান চোখে দেখে। চরিত্রের বিবেচনায় তাই নির্বাচনকে সমাজতান্ত্রিক বলেও চিহ্নিত করা যায় বৈকি! একথা সত্যি বটে নির্বাচন সকলের জন্য, তাত্ত্বিকভাবে ধনী গরীব আলাদা করে না। এক্ষেত্রে নির্বাচনকে শ্রেণি নিরপেক্ষ বলা যেতেই পারে। কিন্তু রাষ্ট্র কাঠামো ও সমাজ ব্যবস্থা নিরপেক্ষ নয়।

২.
রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচন বিষয়ে জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণাগুলো আমরা সবাই দেখছি। একটা বিশেষ দল রাজনৈতিক ক্ষমতায় এলেই সব সমস্যার সমাধান। সব জায়গাই বলেছে, নির্বাচনে থাকুন। বেশি বেশি করে স্মরন করে দিতাছে আপনারা এখন যারা দেশ পরিচালনা করছেন তারা সব অনির্বাচিত। বলে দিয়েছেন নেতা প্রতিদিনই স্মরণ করিয়ে দেয়া হবে। জনগনকে বলছে, নির্বাচন নির্বাচন করুন। যাদের শুনার ক্ষমতা আছে তারা শুনতে পারছে- জনগণের এক অংশ তাদের বলছে প্রোটিন-জাতীয় খাবার আর ফল-মূল ও শাক-সবজি খান। মানে এগুলো খেলে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। শরীরের প্রতিরোধের কাছে ধরাশায়ী হবে রোগশোক। তবে কি তারা অসুস্থ! তবে কি তারা করোনায় আক্রান্ত! জনগণের এই অংশ কি নির্বাচন আকাঙ্খা কারীদের ঘরে অবস্থান করতে আহ্বান করছে!

কিন্তু প্রোটিনের উৎস মাছ-মাংস-ডিম-দুধ-বাদাম। দামী খাবার। উচ্চবিত্তের খাবার। ধরে নিচ্ছি, নিম্ন-মধ্যবিত্তরাও মোটামুটি প্রোটিনের ব্যবস্থা করতে পারলো। কিন্তু গরীবের উপায় কী? গরীবদের শুধু ডাল। ডালে প্রোটিন আছে। তা বটে! মোটা চালের ভাত আর ডাল। ডালই শেষ আশ্রয়।

গরীবের টাকা নেই। সিস্টেম মতো সন্তানের জন্য উচ্চশিক্ষা নেই; ভালো চাকরী নেই; বড় চাকরী নেই, বড় বেতন নেই। ভালো বাসস্থান নেই এবং ডাল ছাড়া পুষ্টিকর খাবার নেই; রোগ-বালাইয়ের শেষ নেই; বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। তাতো যাবেই। তাইতো?

গরীব নির্বাচন খাবে! গরীবের দরিদ্রতা নিরসনে নির্বাচনের আর ক্ষমতাই কতটা?
গরীব ধরাশায়ী।

৩.
রাষ্ট্রের বড় মাথা। বড় ভাবনা। নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্টযন্ত্র দখল করে নিবে বড় বড় ব্যবসায়ীরা। সংসদের ভিতর কতজন বণিক শ্রেণীর জানা আছে তো? তাই বড় মাথায় বড় বড় বণিকের কথা থাকে। তাদের জন্য প্রণোদনা আসে। ডুবে যাওয়া লঞ্চকে টেনে তুলতে যায় উদ্ধারকারী জাহাজ। আর শিল্পপতিদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ।

এসব প্রণোদনার অর্থ আসে কোত্থেকে? বাণিজ্যের পেছনে ঢেলে দেয়া হয় রাষ্ট্রের কোষাগারে থাকা কৃষক-কামার-কুমার-তাঁতি-জেলের অর্থ, বিদেশের মাটিতে কামলা খাটা গণমানুষের পাঠানো রেমিট্যান্স অপমান আর ঘাম থেকে। নির্বাচিত সাংসদরা আর বণিকেরা লাভ গুলো গচ্ছিত রাখে নিজেদের একাউন্টে। আর লোকসানের ভারটুকু চাপিয়ে দেয় জনতার কাঁধে।

এভাবে চক্করে পরে গরীব হয় প্রতারিত। নির্বাচন নির্বাচন মহামারির এই দিনে মুক্তিকামী গরীব শ্রেণী নাভিশ্বাস উঠে মরছে। কিন্তু রাষ্ট্রের মগজে নির্বাচন ব্যবসায়ীদের দখলে। তারা লুটপাটে মেতে উঠেছে!

৪.
এই দুর্দিনে কীভাবে চলে কৃষক-শ্রমিক-কুলি-মজুর-তাঁতি-জেলে-কুমার-দেহপসারিনী-গৃহপরিচারিকাদের সংসার? উবার-পাঠাও চালিয়ে, টিউশনি করে, কাপড় আয়রন করার দোকান দিয়ে, পার্ট-টাইম সেলসম্যান এর কাজ করে যারা চলতো, কী করে চলছে তাদের?

বহু মধ্যবিত্তের জীবনও প্রকাশ করতে না পাড়ার বোবা কান্নায় নীরব হাহাকার। একেবারে গরীবের তো মাথা ঢাকলে পা উদাম। কাজ নেই। আয়-রোজগার নেই। সঞ্চয়ও কারো শেষ, কারো বা তলানিতে। প্রায় ছয় কোটি মানুষ দিনে ১০০ টাকা আয়ে চলে! এরা কি সত্যি চলে?

The Prime Minister, Shri Narendra Modi meeting the Prime Minister of Bangladesh, Ms. Sheikh Hasina, on the sidelines of the 4th BIMSTEC Summit, in Kathmandu, Nepal on August 30, 2018.
The Prime Minister, Shri Narendra Modi meeting the Prime Minister of Bangladesh, Ms. Sheikh Hasina, on the sidelines of the 4th BIMSTEC Summit, in Kathmandu, Nepal on August 30, 2018.

৫.
প্রতিদিন একজনকে দেখতাম উন্নয়নের নানা তথ্য নিয়ে আসতো। মিডিয়াগুলো উন্নয়ন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত নারী-পুরুষের অনুপাত জানিয়ে দেয় কি? মিডিয়া বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানও রসিয়ে রসিয়ে বলেন যেন কত সুখকর কাহিনী বলে যাচ্ছেন। আমার তো মাঝে মাঝে এক বয়োবৃদ্ধ অর্থমন্ত্রীর মতো বলতে ইচ্ছা করতো-রাবিশ। আপনারা কি ভাবেন? যা খুশি ভাবুন। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন ভাইরাসে আক্রান্তদের শ্রেণি-পরিচয় জানতে পান কি?

আমরা খবর পাই উন্নয়ন মন্ত্রের দখল নিতে নির্বাচন নির্বাচন জপ করা অধিকাংশই অভিজাত শ্রেণির বাসিন্দা। শুনতে পেয়েছিলাম, তখন বেদনাক্রান্ত হয়ে শুনতে পাই পাশ্ববর্তী দেশগুলো থেকে থেকে এয়ার এম্বুলেন্সে ডজন খানিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এনেও বাঁচানোই যায়নি না রাজনৈতিক অভিজাতদের।

ব্যাস হয়ে গেল! কথা কি এখানে শেষ?

ধনী অভিজাতদের চিকিৎসার সুযোগ ও সামর্থ্য বেশি। তারা বিদেশে চলে যায় চিকিৎসা করাতে। কিন্তু গরীবের মধ্যেও যারা একেবারে গরীব, অজপাড়াগাঁ, দুর্গম চর বা হাওরাঞ্চলে যারা থাকে অথবা মফস্বলে ও উপজেলা অঞ্চলে যে গরীব জনগোষ্ঠী আছে, চিকিৎসার সামান্যতম সুযোগ না থাকায় তারা যে স্বাস্থ্য পরীক্ষাই করাতে পারছে না, বেহুদা মরে যাচ্ছে বেখবরে তার তদন্ত বা পরিসংখ্যান হাসিমুখে বর্ণনা করে কি কোন অভিজাত নির্বাচন প্রত্যাশী জনতার কন্ঠস্বরের দাবীদারেরা?
করে না। তারা জনগনের মাঝেও এটা ছড়িয়ে দিতে পারছে নির্বাচনই সমাধান।

৬.
রাজনীতির কর্ণধার আর সরকারি কর্তাদের জন্য প্রণোদনার ঘোষণা এসেছে। এইতো মাত্র একটি নির্বাচন। দামী প্রাণ ওদের। সরকারতো ওদেরই, লাগে টাকা দেবে করদাতাগণ।
হায়! বেসরকারি প্রাণ। আহা! আধমরা হয়ে কেবল বেঁচে থাকা। মুড়ি -মুড়কির চেয়েও সস্তা। উন্নয়ন উন্নয়ন, ধনতন্ত্রের উৎসবের অকাতরে বলি হয় এইসব প্রাণ।

দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার আদলে রূপান্তরের রূপকথার গল্প চলছে হরদম।
FB_IMG_1743206802817

৭.
উন্নয়ন বহু যুগ উপর থেকে নিচে চুঁইয়েছে, এবার নিচ থেকে উপরে যাবার বন্দোবস্ত করে দেখুন। লুটপাটের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে রাজনীতিকে নিয়ে আসি নিয়ন্ত্রণে। জবাবদিহিতা করি নিশ্চিত আর ক্ষমতা পারিবারিক বলয়ে আটকে না রেখে উন্মুক্ত করে দেই গণতান্ত্রিক ধারায়। যার যোগ্যতা আছে দেশকে কিছু দেবার, তাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসি। গাছের শেকড় থেকে যেভাবে কাণ্ড ও পাতায় যায় প্রাণ রস, সেইভাবে উন্নয়নকেও চালনা করুন। এই আহ্বান জানিয়ে লেখাটি শেষ করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমি জানি এভাবে হয় না কিছুই। অধিকার কেউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়।

কোথায় সেই প্রচেষ্টা?

কষ্ট

নিয়ে কষ্ট ঝোলা, ডাকে ফেরিয়লা-পুব রাস্তা ধারে
বসে বসে ভাবি, আছে অভাবী আজব এ সংসারে
কষ্ট কিনতে চায়! চুপি চুপি সুধায়- “এসো ভাই
ফুরিয়ে গেছে সব কষ্টের কলোরব কষ্ট নাই?”
ছেলে মেয়েরা, গুটিয়ে বই পড়া বারবার চায়
তাদের কষ্ট চাই, উপায় নাই- কষ্টরা কোথায়!
এসব হবে নাকি? গিয়ে দেখি কষ্টের ফেরিয়লা
এনেছে এমন এতো আয়োজন ডাকে মনভোলা!

নানান কষ্ট লাল নীল নষ্ট দেখতে পেয়ে ভাবি
চাপা ঘাসে সাদা আনে একগাদা- আসল এ সবি?
ফেরিয়লার ঝোলা হলে খোলা কপাল পুড়া গন্ধ
একেবারে আসল, নয় কিছু ছল- কাটলো দ্বন্ধ
কে দেবে পুষ্ট তার মত কষ্ট বলছে বারবার
হৃষ্টপুষ্টগুলি রেখেছে ঝুলি বাহারি কারবার!
আমায় দেখে হেসে, বলে অবশেষে – “শব্দ কান্ডরী
নাও কিনে কিছু ছুটিয়া পিছু কেন করছ দেরি।”

“শব্দ এমন হৃদয়ে হরদম তোলে তোলপাড়
প্রকাশের যাতনা অগ্রন্থিত কামনা হাহাকার
আনন্দ উচ্ছ্বাস অযত্ন পরিহাস উঠবে ভাসি
আকারে সরব করবে কলোরব ফুটাবে হাসি
কবুতরের ডাক,কালো কাক, লাল রক্তকরবী
শিশির পতন, বাতাস, বন চিত্রিত হয় সবি
কষ্ট হতে, নাও ভরে দুহাতে-ওরে চিত্র দিশারী
চিত্ররূপ হবে যে অপরূপ তবু করছ দেরি?”

“যা স্মরণীয়, বহু বরণীয় বোধগুলো দুঃখের”
ফেরিয়লা আমায় বলে যায়-“বেলা হয়েছে ঢের
অলংকারে মুগ্ধতা চারিধারে যদি ছড়াতে চাও
কাছে এসে স্তব্ধতা ভালোবেসে কষ্ট কিনে নাও।”
শুধাই বারবার থাক সংসার সব নিব কিনে
মাল গাড়িতে নিব দুহাতে ফিরব না দুঃখহীনে
কান্ড একি! ঝোলাতে নাই বাকি, এখন কি যে করি!
কখন চুপিসারে সব কষ্ট নিয়ে চলে গেছে সুন্দরী!

তিন শূন্য সমীপে

Tin_Shunner_Prithibi-Dr_Muhammad_Yunus-0254a-454383

তিন শূন্য সমীপে…
ফকির আবদুল মালেক

আকাশে উড়বে টাকা
সিঙ্গাপুর সিটি! ঢাকা-
কবি তুমি লিখ কবি’তা
রঙীন কল্পনা বাহ্বা!

তোমার মানুষ ভুখা
দিনে খাবার হয়না
শব্দের উপর শব্দ
কবি তুমি নিস্তব্ধ!

ওই শুনি মুক্ত ক্ষুধা
বেকার মুক্তির ধাঁধা
কার কাছে তুমি চাও
ঢাকা সিউল বানাও!

পৃত্থি নিয়া উনি আছে
বক্তৃতা দিতাছে মিছে
নিজ দেশের মানুষ
ভুখা আছে নেই হুশ!

কবি ধনী বাসনা ছাড়
যারা আছে নিচে, ধর-
খাই যদি এক মুঠো
খাব একসাথে , ওঠ।

image-52538-1738221104

আবেদন …

জানুয়ারী ২০২৫ থেকে শব্দনীড়কে শব্দলিপি নামে পুনরায় চালু করা হয়েছে সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে শব্দলিপি চালু আছে। শব্দলিপির আয়ের নির্দিষ্ট কোন উৎস নেই। এই সাইট চালু রাখতে ডোমেইন ,সার্ভার,হোষ্টিং,ব্যবস্থাপনার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আপনার প্রতিষ্টানের বিজ্ঞাপন শব্দলিপিতে দিতে পারেন। এক কালীন বা মাসিক ভিত্তিতেও অনুদান বা সাহায্য করতে পারেন ।
আপনার অনুদান ছোট হলেও ক্ষতি নেই। শব্দলিপি হিসাব খাতে স্বনাম প্রকাশ অথবা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিসেবেও আপনি থাকতে পারেন শব্দলিপির পাশে। শব্দলিপি অনলাইনে রাখার জন্য আপনার সহায়তা কামনা করছে।
বিজ্ঞাপন বা অনুদান দিতে মন্তব্যে জানালে আমরা আপনার সাথে যোগাযোগ করবো, সাথে থাকুন ।

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের কান্না ও আমাদের প্রত্যাশা

একটা কথা শুনা যাচ্ছে, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে তিন/চার/পাচ বছর কাজ করার সুযোগ দিলে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর /মালয়েশিয়া ইত্যাকার উন্নত রাষ্ট্রের অনুরূপ হয়ে উঠবে।

Lee_Kuan_Yew

লি কুয়ান ইউ, জিসিএমজি, সিএইচ, এসপিমেজে (জন্ম: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩ – মৃত্যু: ২৩ মার্চ, ২০১৫) স্ট্রেইট সেটেলম্যান্টসে (ব্রিটিশ আমলের সিঙ্গাপুর) জন্মগ্রহণকারী সিঙ্গাপুরের বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ছিলেন। সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতার পর ১৯৬৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ পরিচালনা করেন। তিন দশকেরও অধিক সময় রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। তাকে ‘সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে পকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে দেশ স্বাধীন হয়। তার শাসন আমলে দেশে কোন কোন উন্নয়নের সূচনা হয়েছিল বটে কিন্তু তিনি সফল হন নাই। বরং বাংলাদেশের মানুষ আরও গরীব হয়েছে, বিচার ব্যবস্থা ছিল একেবারেই নড়বড়ে। ১৯৭৪ সালে নেমে আসে দুর্ভিক্ষ। কংকালসার মানুষ হয়ে পড়ে বাংলাদেশের সিম্বল।

স্বাধীনতার পর আমরা আগাইনি। বরং আর্মিতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা পরস্পর রাজনৈতিক খুনাখুনিতে লিপ্ত হয়ে পরে।

১৯৭৪ সালে জাসদ তাদের চিন্তাধারা তৈরি হলো, “আন্দোলন মানে সশস্ত্র সংগ্রাম আর সংগঠন মানে সেনাবাহিনী।”

সেজন্য জাসদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠে বিপ্লবী গণবাহিনী। এছাড়া সামরিক বাহিনীর মধ্যে ১৯৭৩ সালে থেকে কাজ করছিল বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা।

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দৃশ্যপট বদলে যায়।

IMG_20210119_132651

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইং হতে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ ইং পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘটে যায় সামরিক বাহিনীর নানা ক্যু পাল্টা ক্যু। অবশেষে মেজর জিয়াউর রহমান চলে আসেন ক্ষমতায়। বাংলাদেশের মানুষের আছে ইসলাম ধর্মের প্রভাব, আছে সমাজতন্ত্রের প্রভাব, আছে হিন্দু সাংস্কৃতিক চর্চা, আছে মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার দ্বন্ধ । এই সকল প্রভাবের মাঝে মেজর জিয়াউর রহমান হয়ে উঠেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। কঠোর সামরিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এমনকি যাদের প্রত্যক্ষ মদদে তিনি ক্ষমতার শীর্ষে আসেন, তাদের তিনি সামরিক কায়দায় নিয়ন্ত্রণ করেন। এবং তিনি স্বৈরাচারী নীতি গ্রহণ না করে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাস্ট্র পরিচালনার নীতি গ্রহণ করেন।

সিঙ্গাপুর যেভাবে এগিয়েছে জিয়াউর রহমান সেদিকে যান নি। সামরিক বাহিনীকে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন সিভিল সোসাইটির প্রতি তিনি সেই ভাবে আগান নি। তিনি সকল রাজনৈতিক ও মতাদর্শগত দ্বন্দ্বগুলিকে ঐক্যের ভিত্তিতে একত্রিত করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকাংশে সফল হয়েছিলেন । তিনি বুঝেছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্বাধীন হওয়া রাস্ট্রগুলি গণতান্ত্রিক পথে ধরেই রাজনৈতিক খুনাখুনি এড়িয়ে সিভিল প্রসাশনের নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারাকে নিয়ে এলেন রাজনীতিতে। এদিন রাস্ট্র ছিল সমাজতান্ত্রিক চিন্তাচেতনার ধারক ও বাহক। বরং শেখ মুজিবর রহমান দেশকে কমিউনিউজমের মতাদর্শের চরম মতামতে দিকে দেশকে পরিচালিত করতে চেয়েছিলেন । ১৯৭৫ এর পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা পেয়ে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা শুরু করেছিলেন। তিনি সকল প্রকার মতাদর্শের মাঝে একটা ঐক্য গড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। দেশ পেয়ে যায় গণতান্ত্রিক পথ। কিন্তু তিনিও সামরিক হানাহানির করুন স্বীকারে পরিনত হন। আর ছিটকে যায় দেশ। আবার স্বৈরাচার ঝেপে বসে দেশের নেতৃত্বে।

১৯৯০ সালের ও ২০২৪ সালের পটপরিবর্তনের ইতিহাস আমরা জানি। আমরা জানি নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে চক্রকারে ঘুর্নায়মান রাজনীতি। হরতাল, অবরোধ, জ্বালাও, পুড়াও, রাজপথে গণপরিবহনে পুড়ে যাওয়া মানুষের আর্তনাদ আজও আমাদের কানকে ভারী করে তুলে। কিন্তু যে-ই ক্ষমতায় যায় সেই নির্বাচন পদ্ধতিকে টেম্পারিং করে নিজের গদীকে চিরস্থায়ী করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত রাখে। ১৯৯০ থেকে ২০২৫ সুদীর্ঘ ৩৫ টি বছর রাজনৈতিকভাবে দেশ এগোয়নি এক রত্তি। কিন্তু দেশ থেমে থাকেনি।

১৯৭২-৭৩ সালে তাজউদ্দীন আহমেদ যে বাজেট দেন তার আকার ছিল ৭৮৬ কোটি, ১৯৭৬-৭৭ সালে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাজেট দেন তার আকার ছিল ১৯৮৯ কোটি, ১৯৭৭-৭৮ সালে লে. জেনারেল জিয়াউর রহমান যেই বাজেট দেন তার আকার ছিল ২১৮৪ কোটি টাকা, ২০২৩-২৪ সালে আ হ ম মোস্তফা কামাল যেই বাজেট দেন তার পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ ৬১ হাজর ৭৮৫ কোটি টাকা।

সময়ের চাকা ঘুরছে আর অর্থনীতির আকার বেড়েছে। বাংলাদেশিদের মাথা চক্কর দিয়াছে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের ডামাডোলে। কি বিশাল কর্মকাণ্ড! আর এর অন্তরালে চলছে দূর্নীতির মহা উৎসব। এমনকি এক পর্যায়েতো দূর্নীতিতে পর পর পাঁচ বার পৃথিবীর সেরা পদ অলংকৃত করেছে। এরপর বাংলাদেশ দেখল মেগা প্রজেক্টের মেগা ডাকাতি, ব্যাংক লুটপাটের কাহিনি। আই ওয়াশ করে দুইটি পরিবারের লুটপাট দেখেছে মানুষ। আর শুনা গেছে উন্নয়নের বাদ্যবাজনা। কখনও এক পরিবার লুট করেছে তাদের স্বার্থরক্ষাকারী সহযোগিতায় আবার কখনও অন্য পরিবার আর তাদের রাজনৈতিক অনুসারীরা।

মানুষ! ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পরবর্তীতে গরীব মানুষ যেই অবস্থায় ছিল আজও সেই অবস্থায় আছে। ধনিক শ্রেণী আর চালাক সুবিধাবাদীরা রাস্ট্রীয় লুটপাতে অংশীদার হয়ে একটা অতি ধনিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছে। আর গরীব দিন দিন ক্রমে গরীব থেকে গরীব হয়েছে।

অতি উচ্চমাত্রার প্রচার প্রচারনায় বাংলাদেশের এই প্রকৃত চিত্রটি হারিয়ে গিয়াছিল। নব্বুইয়ের দশকেও বাজেট ঘোষিত হলে বলা হত গবীর মারার বাজেট। কিন্তু গত এক দশকে তেমন শ্লোগান শুনেছি বলে মনে করতে পারি না। সবকিছু ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, মুখগুলো ছিল তালাবদ্ধ। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ে কথা বলার লোক ছিল না। ছিল দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব। এক পক্ষে লুটের মহোৎসব করেছে, আর এক পক্ষে ছিল হাহাকার। জনগণ বুঝে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলন হল ভাগ না পাওয়ার বা লুটে নেতৃত্ব দিতে না পারার ক্রোধ। তাই সব আন্দোলন ব্যর্থ হচ্ছিল।

কিন্তু যখনই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নামে আন্দোলন হল শুরু, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নিল যুব সমাজ আর মরল কাতারে কাতারে। দেশের মানুষ নেমে এলো রাজপথে । শুরু হলো গণ-জোয়ার। হলে গেল গণঅভ্যুত্থান। এক পক্ষ পালাল। অন্যপক্ষ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠল। অভ্যুত্থানের তিন দিনের মধ্যে তারা নির্বাচন দেয়ার জন্য সভা সমাবেশ করল। কারন তারা জানে এই নির্বাচন ব্যবস্থা তাদের পেশিশক্তি ও অর্থশক্তির উপর নির্ভর। ঢ়েহেতু এক পক্ষ পালাইছে অন্য পক্ষের কাছে নির্বাচনে জয়ী হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।

FB_IMG_1743688691458

কিন্তু বাধ সাধলো বৈষম্য বিরোধীরা। তারা আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে নিয়ে এসে সরকার প্রধান করে দিল। সেনাপ্রধানের সমর্থনে সর্বজনীনভাবে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠলেন এই অর্থনীতিবিদ। প্রাথমিক ঝক্কি সামলাতে সামর্থ্য হওয়ার পর তিনি যখন অল্পসময়ে একে একে সফল হতে লাগলেন, তখন নানা মহল থেকে দাবী উঠলো দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে তাকে রেখে দিতে হবে ক্ষমতায়।

কিন্তু এই সন্মানিত ব্যক্তিত্ব একি করলেন! দেশ বিদেশ থেকে গণ্যমান্য প্রভাবশালী কোম্পানির ডেকে এনে তাদের সামনে বাংলাদেশকে উলঙ্গ করে দিলেন! তিনি কেঁদে উঠলেন! এদেশের গরীব মানুষের কথা স্মরণ করে কেউ কাঁদে! তাও আবার ব্যবসায়িদের মিলনমেলায়। ব্যবসায়ীরা পুজির পুজো করে। প্রফিট করাই যাদের মুল কাজ। তাদেরকে কেঁদে কেঁদে বললেন, আমরা খুবই গরীব। এখানে চার কোটি মানুষ দৈনিক ১০০ টাকায় চলে। তিনি এখানে ইনভেস্ট করার আহ্বান করলেন। তিনি এখানে তার সামাজিক ব্যবসার কথা বললেন। তিনি গরীব মানুষের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরনের।

আর স্পষ্টতই তিনি এদেশ নিয়ে যারা সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া হবার স্বপ্ন দেখেন তাদের সেই চাওয়াকে পাশকাটিয়ে সারাজীবন তিনি যা চেয়েছেন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী সেই দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন।

কিন্তু তিনি কিভাবে নির্মাণ করবেন বৈষম্য হীন গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত পৃথিবী! যেখানে তার নিজের দেশে রয়ে গেছে গরীবের অনেক বেশি ছড়াছড়ি। অন্তত একটি দেশেতো তার থিওরির বাস্তবায়ন দেখাতে হবে। সমস্ত পৃথিবীর প্রশ্নতো আসবে পরে। অন্তত একটা দেশতো করে দেখাতে হবে দরিদ্রমুক্ত বেকারমুক্ত।

অনেকে সিঙ্গাপুরের, মালয়েশিয়ার আবদার নিয়ে আসছে, কিন্তু দেশর মানুষ চেয়ে আছে তার দিকে কিভাবে তিনি গরীবমুক্ত, বেকারমুক্ত দেশ করতে চান তার সঠিক পথনির্দেশনার দিকে।

image-52538-1738221104

অপেক্ষায় রইলাম।

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধানমন্ত্রী করার পরিকল্পনা ফাঁস

৫ আগস্টের পর বাংলাদেশিদের মাথায় ভর করেছে একটা নাম- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

images

ওয়াজের সুপারস্টার মিজানুর রহমান আজারি, মুফতি ইব্রাহিম, রফিকুল্লাহ আফসারী, আবদুল্লাহ বিন আবদুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন মনমানসিকতার ইসলাম প্রচারকসহ- রমজানে দেশের দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিবেচনা করে সাধারণ মানুষের একটা বিরাট অংশ আজ একটা নাম উচ্চারণ করছে- ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস। আপনি যদি জনগণের কন্ঠস্বরকে উপলব্ধি করতে পারেন তবে বুঝতে পারবেন- ডক্টর ইউনুস ইজ অন প্রেইজড। প্রসংশার বানে ভাসছেন – ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস।

বাঙালি ভূতগ্রস্তের মত আচরণ করছে। আর ভুত তাড়নী ওঝা হয়ে আসছে আর এক উচ্চারিত ইসমে আজম- নির্বাচন নির্বাচন।

৭১ পূর্ববর্তী বাঙালি জাতিকে মন্ত্রমুগ্ধের মত ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন এক সাধারণ লেবাসের মাওলানা ও গরীব মানুষের সমাজতান্ত্রিক কন্ঠস্বর মহান নেতা মাওলানা ভাসানী ও ৭৫ পরবর্তী আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চিন্তানায়ক ও রূপকার মেজর জিয়াউর রহমান। এই দুই নেতাই ছিলেন সুদূরপ্রসারী ভবিষ্যতদ্রষ্টা, চালচলনে সাধারণ। এই দুই নেতা বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে ভালোবাসার সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে! অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই। সুযোগ পেয়েই তিনি নিজেকে আস্তে আস্তে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যে, অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।

জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। যেন তাকে ভূতে ভর করেছে- আবোলতাবোল বলে বসলেন- তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখার ইচ্ছা লালন করেন । মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

ওদিকে ভূতছাড়ানো জপমালা- নির্বাচন, নির্বাচন। এদিকে সরসিজ নির্বাচিত প্রধাণমন্ত্রী হিসাবে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে দেখা!!! নাহ্, ভাবা যাচ্ছে নাহ্।

কি ভাবে সম্ভব?
কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে দীর্ঘমেয়াদী পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন। আর দিয়ে নিজের আন্তর্জাতিক খেলায় মাতিয়ে তুলবেন। কিন্তু নিজ দেশ ও জাতি তাকে চাইছে। এ চাওয়া আরও দৃঢ হচ্ছে।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

আমি মনে করি, বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি মাওলানা ও মেজর সাহেবের পর তিনি হতে পারেন অনন্য গ্রহণযোগ্য নেতা। তিনি যেমনি আন্তর্জাতিক ভাবে কোয়ালিফাইড ও স্বীকৃত, তেমনি গরীব গন মানুষের জন্য আছে তার অর্থনৈতিক ভাবনা। পুঁজিবাদ ও কমিউনিস্ট মতাদর্শের ব্যর্থতার পর তার মতবাদ আলোচিত, স্বীকৃত। যদি তার অর্থনৈতিক মতবাদ থেকে সুদকে বাদ দেয়া যায় তবে বিস্মিত হয়ে লক্ষ করা যায় যে, তার চিন্তাধারা ইসলামি আদর্শের বিপরীততো নয়ই বরং সমার্থক। ( এই ব্যাপারে আলোচনা চলতে পারে)। ফলে এই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তার মতবাদ জনগন কতৃক সমাদৃত হতে পারে।

আমরা কেবল বলতে পারি। কিন্তু তিনি যোগ্যতা রাখেন। তার চালচলন অনাড়ম্বর, বেশভূষা সাধারণ, মানুষকে প্রভাবিত করার অনন্য দক্ষতা আছে তার। তাকে এগিয়ে আসতে হবে এই ভূতগ্রস্ত মানুষের ডাকে।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী কয়েক মাসের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। কেমন হবে তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামো। এটা তার মানের হলে হয়ে উঠবে একটা রাজনৈতিক দলের ইশতেহার।

বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে।

এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে পাস করিয়ে নেয়া হতে পারে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

এর মধ্যে আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা ফিরে আসবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় কোন অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় থাকলে আইনমন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সংশোধিত করে নিতে হবে।

এই বর্তমান সরকারের মধ্যে হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে যাদের কাজ হবে নির্বাচন করা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের পদ হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা।

।। ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপিকে সাংগঠনিকভাবে সুদৃঢ করতে হবে এবং নির্বচনের প্রস্তুতি নিবে।।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা সর্বস্তরের ব্যাপক সাড়া ও সফলতা পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির ইতিহাসে অনন্য কর্ণধার।

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী

রোডম্যাপ অব ড. ইউনুসঃ
প্রধান উপদেষ্টা টু নির্বচিত প্রধানমন্ত্রী FB_IMG_1743688691458

বিএনপি উঠতে বসতে সিনায় সিনায় একটা জিগির তুলছেঃ নির্বাচন নির্বাচন। ৫ আগষ্টের চেতনা তারা ধারণ করে না, এটা স্পষ্ট বরং এই ৫ আগষ্টের কথা বললে যেন তাদের অন্তর হয় ছেড়া বেড়া। নির্বাচনকে পেশী মুক্ত, কালো টাকা মুক্ত, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল প্রকার নির্বাচনের যে কোন প্রস্তাবই দেয়া হোক না কেন তারা কেবল বলে, না। নির্বাচন দাও নির্বাচন দাও জিগির তোলে কিন্তু যদি বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হোক তখন তারা বলে আগে সংস্কার পরে নির্বাচন, যখন বলা হয় আগে স্থানীয় নির্বাচন তখন তারা বলে আগে জাতীয় নির্বাচন হোক তারপর সরকার এসে স্থানীয় নির্বাচন করে নেবে। ঠিকাছে আস জাতীয় নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করার জন্য সংস্কার শেষ করি, তারা বলে আগে নির্বাচন হোক পরে যারা ক্ষমতায় যাবে তারা সংস্কার করা যাবে। এবং হুমকি দেয় যদি সংস্কার কিছু করাও হয় তবে তারা সেই সংস্কার বদলে দেবে।

ড.ইউনুসের হাতের কোন সংস্কার BNP মেনে নিবে না এমনকি ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার পাল্টে ফেলবো বলে ছাত্র জনতাকে হুমকি দিলেন BNP’র মির্জা আব্বাস।

“ওদের হাতের (ইন্টেরিম সরকারের) কোন সংস্কার আমরা মেনে নিবো না, সংস্কার করলেও আমরা ক্ষমতায় এসে চেঞ্জ করে ফেলবো”- মির্জা আব্বাসের এই দাম্ভিক বক্তব্য নতুন কিছু নয়। ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র!

স্মরণ করি,নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতনের পর ১৯৯১ সালের শাহাবুদ্দীন সরকার ২৯টি সংস্কার কমিটি গঠন করে। ৯১ এ বিএনপি ক্ষমতায় এসে ২৯টি সংস্কার কমিটির প্রস্তাবিত তেমন কোন সুপারিশই বাস্তবায়ন করেনি।

এমনকি এরশাদ পতনের পর তিন দলীয় যে রূপরেখা হয়েছিল, ১৯৯৪ সালের মাগুরার উপ ইলেকশনে বিএনপিই সেই রূপরেখা প্রথম ভায়ালেট করে।

সকল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও বেশিরভাগ মানুষের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীকে অগ্রাহ্য করে বিএনপি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নিজেদের অধীনেই নির্বাচন করে।

মনে পড়ে? তখন জামাত, আওয়ামী লীগ সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তুলে আন্দোলন শুরু করে। গঠিত হয় জনতার মঞ্চ। আন্দোলনের তোপে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় বিএনপি।

তারপর বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ২০০১ সালে। ২০০১ সালের লতিফুর সরকারের সময়ে টিআইবি কে দিয়ে ১৬টি সংস্কার কমিটির সুপারিশ করা হয়। বিএনপি সেগুলোও অনুসরণ করেনি।

তারপর ২০০৪ সালে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সংবিধানের বিতর্কিত চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অবসরের বয়স বৃদ্ধি করে নেয়। যাতে করে নিজেদের লোক তত্বাবধায়ক সরকারে বসাতে পারে।

এই বিতর্কিত সংশোধনীকে কেন্দ্র করেই লগি-বৈঠা আন্দোলন শুরু হয়। আওয়ামী লীগ লাশের উপর নৃত্য করার সুযোগ পায়। পরবর্তীতে এক এগারো সরকার আসে।

রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় টিকে থাকার এই অতীত ইতিহাস সম্পর্কে এই প্রজন্ম ভালো করেই জানে। সংস্কার মানি না, সংস্কার চেঞ্জ করে ফেলবো এসব নতুন ইতিহাস নয়। আগেও হয়েছে।তাই ওদের হাতের সংস্কার আমরা মেনে নিবো না বলে মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য দিসে, সেটা তাদের দলেরই ঐতিহাসিক রূপকে প্রতিফলিত করে।

জুলাই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। সেই কমিশন নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রস্তাবনাও অলরেডি প্রধান উপদেষ্টার কাছে সাবমিট করেছে।

জুলাই যদি ব্যর্থ হয়, সংস্কারকে যদি রাজনৈতিক দলগুলো অপোজ করে তাহলে মনে রাইখেন ইতিহাস সচেতন এই প্রজন্ম আর কাউকে ছেড়ে দিবে না,ইনশাআল্লাহ।

এদিকে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা ড. মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম ছয় মাসে অগোছালো হলেও আস্তে আস্তে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তিনি তার জাত চিনাতে শুরু করেছেন। রমজান ২০২৫ (মার্চ ২০২৫) এ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সামর্থ্য হয়েছেন তার সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দব্যমুল্যের উর্ধগতিকে থামাতে এই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ কাজে দিয়াছে, ঈদে মানুষের যাত্রাকে সহজ করতে পেরেছেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিবের বাংলাদেশ সফল, চীন সফরে মাথা উচু করা ভূমিকা, সর্বপরি বিমসটেক সম্মলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সম্মানসূচক কথোপকথন আমরা বাংলাদেশির ব্যাপক আমোদিত করেছে।

আর এই অভাগা জাতি আমরা এইটুকু সফলতাতে এত বেশি আবেগাপ্লুত যে, ইউসুস স্যারকে কমপক্ষে ৪/৫ বছরের জন্য ধরে রাখতে চাই।

কিন্তু কিভাবে এটা সম্ভব?

অনেকেই অনেকের কথা বলেন কিন্তু আমি মনে করি মাওলানা ভাসানী বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তার বেশভূষা ছিল গরীবি, টাইটেল ছিল মাওলানা, অত্যন্ত বাকপটুতা যাকে অনন্যতা এনে দিয়েছিল। ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে যিনি বাঙালি জাতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছিল।

mawlana-vasani_original_1731830744-750x430
এবং তার তরুন উদিয়মান শিষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপোষহীন নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো বটে কিন্তু স্বাধীনতার পর শেখ মুজিব ভুলে তার গুরুর গুরুত্বের কথা।

পরবর্তী পর্যায়ে নানা পটপরিবর্তনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলেন। মাওলানা ভাসানীর তখনকার দল ন্যাপ ছিল, রাজনীতিতে তখনও তিনি ছিলেন সক্রিয়, শেখ মুজিবের সমালোচক ছিলেন। তিনি সমর্থন দেন জিয়াউর রহমানকে। জিয়াউর রহমানের অনাড়ম্বর জীবন ও রাস্ট্র পরিচালনায় অনন্য দক্ষতায় বাংলার মানুষের হৃদয়ে সেই যে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আজও তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রয়ে গেছে।
IMG_20210119_132651
গত চুয়ান্ন বছরে দুইজন নেতা মাওলানা ভাসানী ও জিয়াউর রহমান বাংলাদেশির মননে সচেতন ও আবচেতনভাবে সুদৃঢ় গাথুনি তৈরি করে গেছেন।

উপরিোক্ত এই দুই মহান নেতার গুণাবলীর সম্মিলন ঘটেছে প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের চরিত্রে। অনাড়ম্বর বেশভূষা, অতি উন্নত আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাবিদ, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সমান তালে তাল মিলিয়ে চলার অন্যন্য দক্ষতা, বরং অনেক ক্ষেত্রে অনেককেই ছাড়িয়ে যাওয়া ব্যক্তিত্ব অথচ কত সাধারণ তার চলাফেরা! কথা বলার ধরণে এক হাসির মাদকতা! অতি উচ্চমানের বক্তৃতা উপস্থাপন করার ক্ষমতা। এই অতি ব্যতিক্রমি চরিত্রটি পৃথিবীব্যাপী চড়ে বেড়ালেও বাংলাদেশীদের কাছে তিনি ছিলেন অপরিচিত এক মুখ যেন। কিন্তু তারণ্যের বিজয়ের মাঝে আমরা তার কার্যক্রম দেখার সুযোগ পেয়ে যাই।

অনেকের মাঝেই এই চিন্তা ভর করে কিভাবে তাকে রেখে দেয়া যায় আমাদের নেতা হিসাবে।
FB_IMG_1741931625398
এরই মাঝে জুলাই বিপ্লবের সামনের সারির নেতা বর্তমানে যিনি নানা কারণে আলোচিত, সমালোচিত তিনি সারজিস আলম। তিনি তার মনের এক ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তিনি তাকে নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান। মূহুর্তে ছড়িয়ে পরে তার এই ইচ্ছার কথা। এ যেন সমস্ত জাতির মনে কথা বলে ফেললেন সরসিজ আলম।

কিন্তু কি ভাবে সম্ভব? কেউ বলছেন, তিনি যেন আজীবন নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় থেকে তার মেধাকে ঢেলে দেন বাংলাদেশ গঠনের কাজে। কিন্তু এভাবে নির্বাচন ছাড়া তাকে পাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তিনি যে সময়ের কথা বলেছেন তিনি সেই সময়েই নির্বাচন দিবেন।

তাহলে? কোন উপায় কি নেই?

এক্ষেত্রে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করি।

তার কাছে যেতে হবে। বলতে হবে আগামী ছয় মাসের ভিতর কিংবা সম্ভব হলে আরও কম সময়ের ভিতর তাকে একটা বই লিখতে হবে, কেমন বাংলাদেশ তিনি চান এবং কিভাবে তিনি তা চান। বলা হয়ে থাকে এনসিপি তার আশীর্বাদপুষ্ট দল। আমরাও চাই তাই যেন হয়। এনসিপি এই পুস্তককে তাদের নিজদের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য হিসাবে ঘোষণা দিবে। এছাড়া নেতৃত্ব নির্বাচন কিভাবে হবে, দলের গঠনতন্ত্র কি রকম হবে তা ইউনুস স্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হবে। এনসিপি তাদের দলের গঠনতন্ত্র সেভাবে গঠন করবে। এর মধ্যে যে সংস্কার করার কথা তা সকল রাজনৈতিক দল বা বেশিরভাগ দলের ঐক্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব পাস করিয়ে নেয়া হবে অধ্যাদেশের মাধ্যমে।

তাহলে এর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ হয়ে যাবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাধানের প্রদান হতে পদত্যাগ করবেন ইউনুস স্যার ও ছাত্রদের প্রতিনিধিরা। এই সরকারের মধ্যে হতে কিম্বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান মতে তিন মাসের জন্য একটি সরকার গঠিত হবে।

ইউনুস স্যারকে সরাসরি সামনে রেখে এনসিপি নির্বচনের প্রস্তুতি নিবেন।

স্যারকে আমরা যারা কয়েক বছরের জন্য রেখে দিতে চাই তারাও সুযোগ পাবে নিজেদের মেলে ধরতে। আশা করা যায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে।

এভাবে হয়ে উঠতে পারেন ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস স্যার এই জাতির অনন্য কর্ণধার।

খোলা চিঠি

রক্ত

প্রিয়তমা,

কলম হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। কী লিখব, কোথা থেকে শুরু করব, বুঝে উঠতে পারছি না। বুকের মধ্যে একরাশ কষ্ট আর অপরাধবোধ জমাট বেঁধে আছে। তবুও আজ তোমার কাছে মনের সবকিছু খুলে বলতে চাই।

তুমি কেমন আছো? এই প্রশ্ন করাটা হয়তো বোকামি, কারণ আমি জানি, তোমার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবই আজ আমার ব্যর্থতার সাথে জড়িয়ে আছে। তোমার মুখের সেই নির্মল হাসিটা বহুদিন দেখিনি। তোমার চোখের গভীরে যে স্বপ্নগুলো ছিল, সেগুলো যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে, আর আমি শুধু নির্বাক দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে দেখছি।

জানো, আমি কতটা চেষ্টা করি? প্রতিদিন নতুন করে শুরু করতে চাই, প্রতিদিন প্রতিজ্ঞা করি যে, তোমার জীবনটাকে সুখের আলোকিত পথে নিয়ে যাবো। কিন্তু বাস্তবতা আমাকে প্রতিবার থামিয়ে দেয়। একের পর এক ব্যর্থতা আমাকে গ্রাস করে, আর আমি ধীরে ধীরে এক অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। তবু তুমি আছো, আমার পাশে, নিরব সাক্ষী হয়ে।

আমি জানি, আমার অভাব-অনটন তোমাকে কষ্ট দেয়। হয়তো অন্যদের মতো তোমার জীবনটা সুন্দর হতে পারত, নিশ্চিন্তে কাটাতে পারতে তোমার দিনগুলো। কিন্তু আমি কিছুই দিতে পারিনি তোমাকে, কিছুই না! শুধু এই অপরাধবোধে আমি প্রতিদিন নিজেকে শাস্তি দিচ্ছি।

তবুও আমি তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি, এক নিঃশ্বাসে, এক অন্তরের গভীরতম কোণ থেকে। তুমি আমার জীবনের সেই আলো, যে আমাকে বারবার ভেঙে পড়ার পরও বাঁচতে শেখায়। তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি এখনো স্বপ্ন দেখি, এখনো বিশ্বাস করতে চাই, একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।

যদি কখনো মনে হয় আমি তোমার বোঝা, যদি কখনো মনে হয় আমার ব্যর্থতা তোমাকে দাবিয়ে ফেলছে—তবে একটিবার আমার হৃদয়ের ভেতরটা অনুভব করো। দেখবে, সেখানে শুধু একটাই নাম লেখা—তোমার নাম!

তুমি আমার শ্বাস, আমার অস্তিত্ব, আমার শেষ আশ্রয়। যদি আমি শতবারও ভেঙে পড়ি, তবুও আমি তোমার হাতটা ছাড়বো না। কারণ, আমি তোমাকে সত্যি সত্যি, নিখুঁতভাবে, অসম্ভব রকম ভালোবাসি।

চিরদিনের জন্য,
অকৃতজ্ঞ এক মানুষ

অবচেতন ইশারা

নিঃস্ব

থুথু ফেলে দিয়ে আবার
মাটি থেকে চেটে খাওয়ার অভ্যাস নেই আমার,
তবুও মাঝে মাঝে সন্দেহের বোরাক
চেপে ধরে মাটিতে।

তখন অসহ্য যন্ত্রণায় তিতো লাগে সকল অস্তিত্ব,
একটু বেঁচে থাকার জন্য
হাঁসফাঁস করতে করতে উঠে বসি।

বর্তমান তরঙ্গের সাথে
বাঁচা-মরার প্রতিশ্রুতিতে আক্ষেপ থেকে যায়,
সেও বুঝি চোখ বন্ধ করে!
হৃদয়-চোখে হাজার প্রশ্নের ঝড় তুলে,
লণ্ডভণ্ড করে আমায়!

কি জানি! কি পাপ করেছি এ প্রকৃতির সাথে,
যে শুধু দাবিয়ে রাখার খেলায়
আমি একটি বস্তু মাত্র—
অবচেতন ইশারায়
আমাকে বারবার ঠুকি দিয়ে চলে যায়।

মনগড়া কলেমায় আমি থেকে যাই
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের খলনায়ক চরিত্রে।
কে জানে!
নিয়তির এ দুর্গমগিরির অন্ধকার পথে,
পাশে থেকেও,
আর কতটা পথ একা একা হাঁটা লাগে?

ঈদ মুবারকঃ কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন

FB_IMG_1743394380296হাই হ্যালো।
কেমন আছেন?
সকলকে জানাই ঈদ মুবারক। সকলে আমার পক্ষ থেকে গ্রহণ করুন লাল গোলাপের শুভেচ্ছা।

আচ্ছা, ঐ যে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। সাদা শুভ্র সফেদ পাঞ্জাবি পড়া ক্লিনম্যান আমেজের মান্যবর। কি বললেন? এই শুভকামনা আপনি গ্রহন করবেন না!!! কি আশ্চর্য, কেন?

ঃ কারণ তার আগে চাই নির্বাচন।

আচ্ছা সব কথায় আপনি নির্বাচন টেনে আনছেন কেন?

ঃ আপনি বক্তৃতার ভাষায় শুনভেন, নাকি কবিতায়। আমি একটা কবিতা লিখেছি। চাইলে আপনাকে শুনাতে পারি।

আচ্ছা, তবে তাই করুন।

ঃ আমি কোন শুভেচ্ছা নিব না আজ। আমি আপনাদের একটা কবিতা শুনাবো…

আচ্ছা বুড়ো বাবু সোনা কবিতা আবৃত্তি করুন।

ঃ শুনুন আমার কবিতাটি
কবিতার নাম

ঈদ মুবারক, কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচনঃ

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একসেট সোনার গহনা, নিদেনপক্ষে নাকের নোলক একখানা।
তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি আশ্চর্য সুন্দর ইজিপ্সীয়ান কার্পেট।
মখমল-নীল শাড়ি প’রে তুমি ভেসে বেড়াবে সারা ঘরময় রাজহাঁস;
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
একটি ছোট্র সুন্দর লেফটহ্যান্ড ড্রাইভ গাড়ি,
হলুদ, খয়েরী, নীল- যা চাও।
তুমি মধুপুর কিংবা ঢাকায় ছুটে যেতে পারবে দ্রুত, আরামে,
যখন যেমন ইচ্ছে।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন আমি কিনে দিতে পারবো
জাপানের সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার টিকেট,
কিংবা কক্সবাজারের ধু ধু বেলাভূমি, নীল সাগরের ঢেউ,
শৈলচূড়ার মেঘ আর আন্তর্জাতিকতাময় নীলাকাশ…।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

তোমাকে নিশ্চয়ই একদিন কিনে দেবো
একটা সবুজ রঙের হাঙ্গেরিয়ান ব্রা এবং একটি আশ্চর্য লাল সূর্যের মত স্কার্ফ।
তোমার নরোম কোমল কোল জুড়ে নিশ্চয়ই একদিন
সবুজ পাতার মতো ফুটফুটে শিশু ফুটবে, বৃষ্টিধারার মতো
পর্বতের ঢালু বেয়ে নেমে আসবে তার খহিলখিল হাসির শব্দ।
-কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন ।

একদিন নিশ্চয়ই আমাদের পৃথিবী আর এরকম থাকবে না,
একদিন নিশ্চয়ই অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে।
অনেক মানুষের স্বপ্ন এসে একটি বিন্দুতে মিলবে…

আর কবিতায় থাকতে পারছি না। ভাইসব, সব বাদ। সংস্কার হবে, সব হবে, আমার মত করে হবে, আপনারা আমাকে ভালোবাসেন না!!! আমি যেভাবে চাই সেভাবে চলবে চলতে হবে! কিন্তু তার আগে চাই আমার ক্ষমতা। কিন্তু তার আগে চাই নির্বাচন। তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণী চাই।

বাংলাদেশ জিয়াউর রহমানকে পেয়েছিল একবার, এবার ড. ইউনুস

দেশের সাধারণ মানুষ বিএনপির পক্ষে, এটা বহুদিন শুনে আসছি। দেখেও আসছি মানুষ বিএনপিকে কতটা পছন্দ করে। দেখে মনে হয়, সব মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। বিএনপির নেতৃত্ব বোধ হয় এটা জানে না। তারা পেশিশক্তির উপর নির্ভর করছে, করছে বিদেশি শক্তির উপর। যেহেতু নির্বাচন হয় না বহুদিন তাই বলা যায় না বিএনপির সেই ভোট এখনও আছে কিন। তবে ধারণা করি- বিএনপির সেই স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে ভাটা পরছে। বিএনপি ২৪ এর বিপ্লবকে ধারণ করেনি। তাই তরুনদের দল ভোটের রাজনীতিতে ভালো করুক এটা এখন অনেকের প্রত্যাশা। এরাই বাংলাদেশকে সেবা করার সুযোগ করে দিয়াছে ড. ইউনুসের মত কোয়ালিটি নেতার। আশা করা যায় জনগন নির্বাচনের মাধ্যমে এই তরুণদের সুযোগ করে দিলে ডক্টর ইউনুস স্যারকে আবার আমরা যথাযথ মর্যাদায় দেখতে পাব।
FB_IMG_1743206802817
ড. ইউনুস ধীরে ধীরে স্টেটসম্যান হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন। তার চলার গতি ধীর এবং মাপা – তবে গন্তব্য এক প্রকার নিশ্চিত।

এমন না যে তিনি এরই মধ্যে খুব বড় কিছু করে ফেলেছেন – তবে পলিটিক্সে জনগণের পারসেপশন যতটা ম্যাটার করে, রিয়েলিটি ততটা করে না।

মার্চ মাসের রেমিট্যান্সের দিকে তাকালে এটার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ৩ বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। ঈদ উপলক্ষে রেমিট্যান্স কিছুটা বাড়তে পারে – তবে এভাবে হাই জাম্প দিয়ে আকাশে উঠে যেতে পারে না।

জিনিসপত্রের দামের কথাই চিন্তা করুন। গত বছর ১৫ টাকা পিস দরে ডিম কিনতে হয়েছে। এবার প্রায় অর্ধেক! এত সস্তায় যে ইহজন্মে ডিম খেতে পারবো সেটা কি ৬ মাস আগেও ভেবেছিলাম?

ড. ইউনুসের প্রতি সরকারের আস্থা অনেকটা বাড়ছে। রেমিট্যান্স বেড়ে কোথায় পৌছেছে! রমাজেনে জিসিপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা গেছে, বিদ্যুতেনলোড শেডিং এক প্রকার নেই বললেই চলে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্তত এই রমজানে অনেকটা স্থিতিশীল ছিল অন্তত এটা বোঝা গেছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাইয়া যাইতাছেন,মানুষতো অবাক সময়মত ট্রেন আসছে আর যাত্রী নিয়ে সময়মত যাইতাছে, বাসগুলিতে কমছে হয়রানি, রাস্তায় রাস্তায় যে চাঁদার মহোৎসব বইত তা দেখা যাইতাছে কম। মনে হইতাছে, ডা. ইউনুসের দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা দ্বারা সকলে প্রভাবিত হইতাছে।

ড. ইউনুসের আগে এতটা দেশপ্রেম, সততা, নিষ্ঠা এবং দক্ষতা নিয়ে স্রেফ একজন মানুষই সরকার চালিয়েছিলেন – জিয়াউর রহমান। আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে তিনি বেশিদিন সময় পাননি, ইউনুসও সম্ভবত পাবেন না।

জিয়াউর রহমানের জন্ম বগুড়ায়, যৌবন কেটেছে পশ্চিম পাকিস্তানে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার মনে হলো যে ঢাকায় কিছু সম্পদ থাকা দরকার। সাভারে একটা বাড়ি পছন্দ হলো। বুকিং মানি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পর পর দুটো কিস্তি মিস করলেন। চিঠি পাঠিয়ে সময় চাইলেন। তাকে সময় দেয়া হলো। তবে লাভ হয়নি – পরের কিস্তিটাও মিস হয়ে গেল। তিনি আবারও চিঠি দিলেন – বগুড়ায় তার পৈতৃক জমিটা বিক্রি করে টাকা দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওটা বিক্রি করতে পারেননি। ফলে সাভারের বাড়িটা আর কেনা সম্ভব হবে না। জরিমানা দিয়ে বুকিং মানি ফেরত নিয়ে গেলেন জিয়া।

তার মৃত্যুর পর দেখা গেল – স্ত্রী আর দুই ছেলের মাথা গোঁজার মতো একটা বাড়িও রেখে যেতে পারেননি তিনি।

জিয়া স্টেটসম্যান হতে পেরেছেন, কারণ তার মাথায় নিজের জন্য কিছু করার চিন্তা ছিল না। যা করেছেন, সবটাই দেশের জন্য।

ইউনুসেরও নিজের জন্য কিছু করার প্রয়োজন নেই। এই দুনিয়াতে একজন মানুষ যতভাবে সম্মানিত হতে পারে তার সবটুকুই তিনি এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন। ফলে নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করাটা তার জন্য সহজ।

যেখানে বাইডেনের সাথে সল্ফি তুলতে পাইরা অনেক দেশনেতাদের আনন্দের সীমা থাকে না সেখানে ইউনুস স্যারকে বাইডেন নিজে ডেকে নিয়ে গেলেন। জড়িয়ে ধরে ছবি তুললেন।

চীনেও সফলতা দেখাইছেন। শি জিনপিং এর থেকে শেখ হাছিন আদায় করেছিল ১৪ কোটি ডলার – সেটাও অনেক মুলোমুলির পর। ইউনুসকে জিনপিং দিচ্ছেন ২ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান যে বিশ্বনেতাদের সামনে কাঁচুমাচু হয়ে না দাঁড়িয়ে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন, ছবি তুলবেন – এটাই তো আমরা কোনোদিন ভাবিনি। এর আগে জিয়াকে দেখেছিলাম জিমি কার্টারের পাশে পায়ের ওপর পা তুলে কথা বলতে। এবার দেখছি ইউনুসকে।

গরিব দেশের সরকারপ্রধানকে স্মার্ট হতে হয়। জিয়া স্মার্ট ছিলেন। সৌদি আরবে যাওয়ার সময় তিনি উপহার নিয়ে গেলেন ৫০০টা নিম গাছের চারা। বললেন, মহামান্য বাদশা! আমি গরিব দেশের প্রতিনিধি। কী আর দিতে পারি আপনাকে? এই কয়েকটা গাছ দিলাম শুধু।

বাদশা জড়িয়ে ধরেছিলেন জিয়াকে। জানতে চেয়েছিলেন, বাংলাদেশের জন্য উনি কী করতে পারেন। জবাবে জিয়া ভিক্ষা চাননি। বরং চাইলেন চাকরি। বাঙালি শ্রমিকদের যেন মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি দেয়া হয়।

শুরু হলো আমাদের অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী খাতটা – প্রবাসী আয়।

ইউনুসও ভীষন স্মার্ট। এক লাখ রোহিঙ্গার সাথে জাতিসংঘ মহাসচিবকে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরিয়ে ইফতার করালেন ইউনুস। মাতৃভাষায় বললেন, আগামী ঈদ আপনারা নিজের দেশে করবেন। প্রতিবেশী পরাশক্তিকে এভাবে থোড়াই কেয়ার করার সামর্থ্য সবার থাকে না। ইউনুসের আছে। রোহিঙ্গাদের সামনে তিনি খুব সহজ অথচ খুব ভয়ংকর একটা মেসেজ দিয়ে এসেছেন।

জিয়ারও ছিল। সুন্দরবনের কাছে দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপ। ভারত সেটাকে নিজেদের বলে দাবি করে ইন্ডিয়ান নেভির একটা জাহাজ পাঠিয়ে দখল করে নিয়েছিল।

জিয়া সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কোস্টগার্ডের গানবোট পাঠিয়ে ভারতীয় সেনাচৌকিতে হামলা চালান তিনি। বিপদ বুঝতে পেরে ভারত চুপ করে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়।

এত বড় বুকের পাটা খুব বেশি লোকের থাকে না আসলে।

শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার সময় কী বলেছিল মনে আছে? বলেছিল যে, ১৬ কোটি মানুষকে আমি খাওয়াতে পারি, আর ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে পারবো না?

খোদাতালা অহংকারীকে পছন্দ করেন না!!!

জিয়াউর রহমান শহিদ হওয়ার পর গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব একটা এগোতে পারেনি। জিয়া যেখানে রেখে গিয়েছিলেন, সেখানেই আছে। তেমন কোনো নতুন সেক্টর তৈরি হয়নি, তেমন কোনো ডাইভার্সিফিকেশন হয়নি। সবাই শুধু ক্ষমতা আর সম্পদ চেয়েছে, দেশের ভালো ছিল গৌণ ব্যাপার।

এই প্রথম একজন কেউ এসেছেন, যার কাছে ক্ষমতা মুখ্য না। যিনি বারবার বলছেন যে ডিসেম্বর অথবা জুন – এরপরে তাকে ধরেবেঁধেও বসিয়ে রাখা যাবে না। উনার কথা না শুনলে উনি আরো আগেই চলে যাবেন।

এই প্রথম কেউ একজন ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাচ্ছে – তবু আমরা ভাবছি, ইশ! লোকটাকে যদি আরো কিছুদিন রেখে দিতে পারতাম!

প্রায় নব্বই ভাগ দূর্নীতিগ্রস্থ একটা দেশে জিয়াউর রহমানের মত দেশনায়ক বাংলাদেশ পেয়েছিল একবার, তারপর এবার ড. ইউনুস। জিয়া বেশিদিন সময় পান নাই, এবারও ভোট ভোট করে তাকে বিদায় করার জন্য উঠে পরেছে জিয়াউর রহমানের নিজের হাতে গঠন করা দল বিএনপি!!!

অনেক বছর পর আর একজন দেশপ্রেমিক নির্লোভী দক্ষ বিচক্ষণ একজন বিশ্বমানের নেতার কাছে এসেছে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব।৷ আমরা বড়ই অভাগা এক জাতি।

মন্তব্যের ঘরে লেখাটার রেফারেন্স লিংক দিয়ে দিলাম।
IMG_20210119_132651images