নূর ইমাম শেখ বাবু এর সকল পোস্ট

নূর ইমাম শেখ বাবু সম্পর্কে

রোজ কবিতা রচি কবিতার মাঝে বাঁচি, কিন্তু আমি বসত করি মৃত্যুর কাছাকাছি!

সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি


আবেগঘন মোহ নিয়ে ছুটে আসা,
অসম্মানে তুফান ওঠে সর্বনাশা।
মূল্যায়নে দুটি প্রাণের স্বর্গে বাসা,
সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ভালোবাসা।

পরস্পরের কাছে থাকে উভয় শ্রেষ্ঠ,
বিসর্জনে অর্জিত হয় উৎকৃষ্ট।
ভ্রান্তিযোগে হতেও পারে পথভ্রষ্ট,
হতেই পারে প্রলোভনে আকৃষ্ট।

ভালোবাসার অবস্থান তো উচ্চাসনে,
কালি মাখে নোংরা প্রাণের সংক্রমণে।
ত্যাগ তিতিক্ষায় ইচ্ছাকৃত নির্বাসনে,
অহংকারী লোভী পাপীর আস্ফালনে।

তবু একের প্রতি অন্যের অশেষ মোহ,
অফুরন্ত আমৃত্যু সোহাগ স্নেহ।
দ্বিমতে বিপত্তি আসে হয় কলহ,
উপভোগ্য মধুর লাগে সে বিরহ।

অক্ষত রয় মানব প্রাণে ভালোবাসা,
উন্নত রয় তুফান এলেও সর্বনাশা।
না পেলেও পূর্ণতা সব প্রাণের আশা,
সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ভালোবাসা।

চাঁদের দেশে


মনে করো মোরা দুজন মিলে
গিয়েছি চাঁদের দেশে,
সারারাত ধরে জ্যোৎস্না মেখেছি
আকাশের গা ঘেঁসে।

ছুটে চলা ওই মেঘের সারির
নরম চাঁদরে দুজন,
তাঁরার মেলার মহোৎসবে
গড়েছি আপন ভুবন।

তোমায় আমায় বরণ করতে
ধারা নিয়ে বসে বৃষ্টি,
সেই খুশীতে নির্জন চাঁদে
হাজারো প্রাণের সৃষ্টি।

আমাদের দেখে শুরু হয়ে গেল
পাখীদের কলতান,
শুধু তুমি আমি চাঁদের দেশে
করছি জ্যোৎস্না স্নান।

ঝরনা ধারা ঝরতে লাগল
স্তব্ধ চাঁদের দেশে,
মনে করো সেথা অমর হয়েছি
তুমি আমি ভালোবেসে।

তুমি নামের চালিকা শক্তি


তুমি আমার মস্তিষ্কের
প্রধান চালিকা শক্তি,
তুমি বীনা দেহ হতে প্রান
নিতে চায় চির মুক্তি।

আঁধার ঘেরা চলার পথটা
তুমি কর স্পষ্ট,
হাজার আলোয় তুমি হীনা
সুখ হয়ে যায় কষ্ট।

তুমি থাকলে ক্লান্ত দেহ
পায় ফিরে পায় উদ্যম,
পরোয়া করিনা মৃত্যু ভয়কে
যাই করে যাই সংগ্রাম।

তোমার ছোয়ায় পূর্ণতা পাই
প্রাণ হয় পরিপক্ব,
মায়াবী ছোয়ায় ফুলেরা ফোটে
যাই ভুলে সব দুঃখ।

তোমাকে পেতে আবেগী হৃদয়ে
খাড়া হয় শত যুক্তি,
দুর্বলতা কাটিয়ে উঠি
ফিরে পাই নব শক্তি।

মাশরাফির মাঠ


খেলার মাঠ আর রাজনীতির মাঠ
নয়তো বেশী দূরে,
মাশরাফি তা জানিয়ে দিলেন
দেশের সকলেরে।

জনপ্রিয়তার শীর্ষে আসন
দেশকে ভালোবেসে,
তাইতো তোমায় স্যালুট জানায়
দুঃখী লোকেও হেসে।

খেলার মাঠে ঝড় তুলেছো
ছিনিয়ে এনেছো জয়,
রাজনীতিতে দুর্নাম বেশী
সুনাম কমই হয়।

নিজের স্বার্থে তোমায় যারা
করছে ব্যবহার,
শুধু তারাই বলছে আজকে
দারুণ চমৎকার।

মাশরাফি গো আগে ছিলে
ষোল কোটির নেতা,
এখন নেতা সে কজনের
যে কয় ভোটে জেতা।

স্মৃতি


দুরন্ত আমার ছুটন্ত মন
তোমায় খুঁজে ফেরে সারাক্ষন
তুমি অচীন পূরে,
ফুটন্ত ফুল যাচ্ছে ঝরে
দেখে এলাম জগৎ ঘুরে
স্বপ্নে দিন দুপুরে।

প্রান্তর জুড়ে তোমার স্মৃতি
উজ্জীবিত আজো প্রীতি
হৃদয় উথাল পাথাল,
দূর আকাশের তাঁরার মাঝে
তোমায় খুঁজি সকাল সাঝে
লজ্জিত মহাকাল।

ভাবনার ভূল যাতনার তীরে
নোঙর ফেলে যাচ্ছে ফিরে
ডাকছে আবার কেহ,
মনের জ্বালা মনই বোঝে
দিবানিশি তোমায় খোঁজে
কঠিন প্রীতির মোহ।

সামনে এলে দুর্বলতা
জাগে তোমার কোমলতা
আমার ভূবন জুড়ে,
তোমার কষ্টে আমি সাজি
কি যাতনা আমিই বুঝি
হৃদয়ে রাখা মুড়ে।

দুঃখ দেখায় বড্ড বিনয়
কারণ ছিল হয়নি প্রনয়
স্বপ্ন ছায়ায় থেকে,
ব্যথার স্রোতে অবগাহন
ব্যাথী হতে নেইতো বারণ
স্মৃতি বুকে রেখে।

এই জীবন


জীবন কখনো থেকে থাকেনি
মন্দ থাকার জন্য,
হয়তো যাপন করতে গিয়ে
কেউ হয়েছে পণ্য।

হয়তো কারো ঘর ভেঙেছে
দায় হয়েছে বাঁচা,
তবুও প্রাণ চায়নি ছাড়তে
আপন সোনার খাঁচা।

ধন্য সপেছে মান সপেছে
কেউ সপেছে প্রাণ,
কেউ গেয়েছে জীবন নিয়ে
স্বপ্ন ভাঙার গান।

মনি মুক্তোয় মুড়ে থেকেও
কেঁদেছে কেউ দুঃখে,
ছেড়া কাথায় অনাহারে
কেউ হেসেছে সুখে।

চলমান এই জীবন যখন
শেষ প্রান্তে দাঁড়ায়,
অনন্ত এক নতুন জীবন
সানন্দে হাত বাড়ায়।

টান


মনে টানে মন
দেহে টানে দেহ,
স্বপ্নের টানে আশা জাগে
মায়ার টানে স্নেহ।

পাপের টানে পাপ
পুণ্যের টানে পুণ্য,
ধনীকে দেয় সব বিলিয়ে
ভিক্ষার থালা শূন্য!

আকাশ টানে মেঘ
মেঘের টানে বৃষ্টি,
অন্ধ হলে পদদলিত
থেকে কি লাভ দৃষ্টি?

মরু টানে বালু
বালুর টানে পাহাড়,
ভক্তিতে কি মিলবে মুক্তি
বিবেক যখন অসাড়?

সূর্যের টানে পৃথিবী
পৃথিবীর টানে চাঁদ,
দেহের তৃপ্তি বিষাদ করে
হৃদয়ের অবসাদ।

জীবন টানে জীবন
মরণ চায়না কেহ,
ক্ষনিকের সুখ ভূলিয়ে দেয়
পরকালের স্নেহ।

সুখে টানে সুখ
স্বপ্নের টানে জীবন,
তৃপ্ত আত্মা শূন্যে ভাসে
কালের টানে মরণ।

ব্যথার টানে ব্যথা
ভক্তির টানে মুক্তি,
বিবেক মনের আশা টানে
কথায় টানে যুক্তি।

সাগর টানে স্রোত
স্রোতের টানে ঢেউ,
ঢেউয়ে ভাসছে মানবতা
খোঁজ রাখেনা কেউ!

ফিরে আসো


আজকে হঠাৎ তোমার কথা
পড়ছে ভারী মনে,
কোথায় আছো কেমন আছো
কার কাছে কে জানে!

বারান্দাতে ঝুলে থাকা
খাঁচার ময়না পাখী,
নিত্য তোমার মধুর নামে
করে ডাকাডাকি।

আমার হাতে খায়না খাবার
পোশা কবুতর!
বিড়ালটা যে কোথায় গেছে
খোঁজ পাইনি আর!

টবে থাকা ফুল গাছটা-
একুইরিয়ামের লাল মাছটা
কিংবা পুরো ঘর,
যেন ঈর্ষার চোখে তাকায়-
দিতে চায় না একটু সময়,
ময়নাটাও কয়না কথা
সব হয়েছে পর!

সব মিলিয়ে নিঃস্ব একা-
এভাবে আর যায়না থাকা,
প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই আজ
একটা সুযোগ দাও,

কথা দিচ্ছি ভুল হবে না,
কোন দুঃখ আর দেব না!
নিজের ঘরে ফিরে এসো,
সবার সাথে আবার হাসো!
আমার ঘরের সুখের চাবি
তোমার হাতেই নাও!

ভোটের আগে পরে


হঠাৎ সবার কি সুমতি,
মিলছে নানান প্রতিশ্রুতি।
না চাইতে মেঘ বৃষ্টি অতি,
রাতা রাতির অগ্রগতি।

মেলেনি যা হাজার চেয়ে,
সব কিছু তা যাচ্ছে দিয়ে।
চাইছে দিতে হৃদয় ছুয়ে,
ভোট টাকে চাই বিনিময়ে।

এসে গেছে কাজের কাজী,
অনাহারে না কেউ আজি।
মহানন্দে আতশ বাজি,
ভোটের পরে পাজির পাজী!

মাছে ভরবে পুকুর সবার,
ধানে ভরবে গোলা এবার।
কিসে তোদের অভাব আবার,
আমি যখন মাথার উপর?

দেশ আর দেশের উন্নয়নে,
সূর্য চন্দ্র দেবো এনে।
খুশী সবাই বয়ান শুনে,
ভোটের পরে প্রহর গোনে!

অনন্যা


মনে ছিল কষ্ট জমা
ভালোবাসা দেহে,
বুঝেও আমি বুঝিনি গো
আবেগী সেই মোহে।

বাহির জুড়ে দারুণ প্রীতি
ভেতর ভরা ক্ষত,
উজাড় করে দিয়েছিলে
ধৈর্য ছিল যত।

নিঃস্ব হয়ে সপেছিলে
পৃথিবীর সব সুখ,
ঘুনাক্ষরেও বুঝতে দাওনি
কষ্টে ভরা বুক।

আজকে যখন নিঃসঙ্গতায়
সময় করছি পার,
তোমার মহত্ত্বতার কাছে
মানতে হচ্ছে হার।

তোমার মত মহৎ উদার
নয় জগতে কেহ,
ভেতর জুড়ে কষ্ট ছিল
প্রেমে ভরা দেহ।

বেপরোয়া শহর


চলছে গাড়ী বেপরোয়া,
শত জীবন যাচ্ছে খোয়া।
সেইতো উড়ছে কালো ধোয়া,
কি লাভ তবে আইন হওয়া?

করবে যদি যার যা খুশী,
ধরা ছোয়ার বাইরে দোষী!
আর ওই উঁচু তলায় বসি,
হাসবে ওরা সুখের হাঁসি?

আইন আছে শাসন কোথায়?
বিজ্ঞাপনে শোনায় অভয়।
অকালে ওই প্রাণ গুলো যায়,
নিয়ম তখন খাটের তলায়?

নীতিবাক্য পুঁজি করে,
অসৎ লোকে দেশটা ভরে।
সততা তো যায়নি মরে,
জ্যান্ত তাঁরে পাঠায় গোরে!

সেইতো উল্টো লেনেই বহর,
করণ ওরা ক্ষমতাধর।
বেপরোয়া ভীড়ের শহর,
নিয়ম কবে পাবে কদর?

আয়ু


সবটা আয়ু উড়িয়ে দিলাম
ধোয়ার সাথে,
নতুন ভাবে করব শুরু
কাল প্রভাতে।

লাল পানিতে দিতে চাই আর
একটা চুমুক,
ভাবনা গুলো ধোয়ার সাথে
উড়তে থাকুক।

নিকোটিনের পোড়া দাগে
কলজে পুরু,
সেটাই ধুতে এলকোহলের
নেশা শুরু।

তাতেই শুরু পচন ধরা
ভেতর জুড়ে,
ওষুধ দিয়ে যায় কি রাখা
জীবন মুড়ে?

জীবনটাকেই উড়িয়ে দিলাম
ধোয়ার সাথে,
লাল পানির ওই নেশা আগুন
দিল তাতে!

মিথ্যাজাল


আমি পবিত্র হতে চাই,
চীৎকার করে কান্নার সূরে
অপবিত্র হয়ে যাই!

আমার দেহে ভর করে ক্লান্তি,
উদ্যমী আমায় দুর্বলতা
এনে দেয় বিভ্রান্তি।

আমার বসন্তে ভরা চারপাশ,
গ্রীষ্মের খর তাপদাহ এসে
চুষে নেয় সব রসকষ।

সন্ন্যাসী আমি নই,
তাড়নার জালে কেমনে তবু
পাপের বোঝা বই?

আমি সত্য বলতে চাই,
মিথ্যা আমাকে গ্রাস করেছে
মিথ্যাই দিয়েছে ঠাই।

আমি পবিত্র হতে চাই,
অপবিত্রতা আমার রক্তে মিশেছে
বল কার কাছে যাই?

আমি ভয়ে ভয়ে পথ চলি,
ভয়ই আমায় সাহস যোগায়
শোনায় পবিত্র বুলি।

আজকে না হয়


আজকে না হয় দিলে খানিক
মৃদু সুখের পরশ,
প্রেমের তরে না হয় একটু
দেখালে সৎ সাহস।

দেহ অন্তর উজাড় করে
বাসলে না হয় ভালো,
হয়তো তাতে উঠবে জ্বলে
আঁধার ঘরে আলো।

না হয় দিলে একটু ছুঁয়ে
কামনাতে মেতে,
কিছু সময় না হয় রাখলে
বাহুডোরে গেঁথে।

আজকে না হয় এই সুযোগে
সবই সপে দিলে,
পরে যদি এমন সুযোগ
ভাগ্যে আর না মেলে?

আজকে না হয় নিঃস্ব হয়ে
পূর্ণ করলে আমায়,
তাতেই আমি বাসব ভালো
সারা জীবন তোমায়।

অন্ধত্ব


লোকে সদা ব্যর্থ ছাড়তে স্বার্থ,
কেউ বলে কিছু নয় অর্থই অনর্থ ।
ক্ষুধার্তের হাহাকার রোগীর চিৎকার,
তবু নেশা গাড়ি বাড়ি এ কেমন ডাক্তার?

মুখোশের আড়ালে রমরমা ব্যবসা,
নেতা হাতে ছাতা নিয়ে মাদকের বর্ষা ।
বান্ডিল দিলে মেলে সনদের বস্তা
অন্ধ এ সমাজে প্রতিভাই সস্তা?

উচ্চশিক্ষিত তাও আজ বেকার,
উৎকোচ দিলে তবে চাকরি মেলে তার!
ছোটদের রক্তে বড়দের বৈভব,
রাজকোষ খালি করে মন্ত্রীর উৎসব!

দৃষ্টির সীমানায় পথ প্রশস্ত,
অন্ধ হতে তাই সবে অভ্যস্ত।
অভাবের তাড়নায় দেহটাকে বেঁচে খায়,
গ্লানি নিয়ে শেষ করে ক্ষুধার্থ অধ্যায়!

দৃষ্টি আছে তবু না দেখার অভিনয়,
আগামী নিয়ে তাই আজ বড় সংশয়!
চেনা দায় ধোঁকাবাজ কে বিশ্বস্ত,
নিজেদেরই সৃষ্টি এই অন্ধত্ব!