ধবধবে সাদা খাতায় কাঠপেন্সিল দিয়ে যখন আঁকিবুঁকি করতেছিলাম নানান ধরনের কিছু কঠিন শব্দ,
অর্থ না বুঝার কারণে ক্ষোভে দস্যুর মতো খুন করি প্রত্যেকটি শব্দ!
তখন শব্দগুলোর চিৎকার আমার হৃদয় ভেদ করেনি,
কেবলি কানপেতে ওদের চিৎকার শুনে বারংবার খুন করি!
কারুণ কিছু শব্দের ভার এতোই বেশী মনে হচ্ছে,
যা বহনক্ষমতা আমার নেই!
তাই আর্তনাদ শুনেও শুনিনা!
ইচ্ছে মতো তচনচ করি!
আর অপ্রত্যাশিতভাবে ছিড়ে ছিড়ে অন্ধকারে ফেলি!
এভাবেই দিন কেটে যায় বিষণ্ণতায়!
শব্দগুলোর ভেতরের একফোঁটা আলোও
উত্তোলন করতে পারিনি!
আঙ্গুুলের ফাঁকফোকর দিয়ে ঝরে পড়ে অর্থহীন শব্দগুলোর রক্ত!
একদিন মাকে বলেছিলাম, মা— আমার ওই শব্দগুলোর অর্থ বলে দাওনা?
ও-মা— দাওনা একবার বলে?
মা বললো— খোকা আমার আরও বড় হও।
এই বলে মা ঘরগিরস্থালির কাজে কোথয় যে চলে গেলো।
আমি আরও এলোমেলো হয়ে গেলাম! বিষণ এলোমেলো!
তবুও একাকী খুঁজতে লাগলাম,
অসম্ভব কঠিন শব্দগুলোর অর্থ,
কঠিনের মুখে চুমু খেয়ে বললাম— আমাকে উদ্ধার করো?
হঠাৎ মা এসে বললো— খোকা আমার তোমার দুঃখ কি আমি বুঝিনা? চেষ্টা করো,
তুমি পারবে, তোমাকে পারতেই হবে।
তবে বড় হও আরও বড়,
আর ধীরে ধীরে খোঁজো, খুঁজতেই থাকো।
তারপর কেটে গেলো অনেক বছর।
এখন আমার বয়স ২৫/ ২৬/ হবে।
এখন আমি কাঠপেন্সিল রেখে কলম ধরেছি।
এখন আমার অনেক শব্দ মুখস্থ।
একন আমার অনেক শব্দ আয়ত্বে।
এখন আমি নতুন নতুন শব্দগঠন করি।
এখন আমি শব্দের মাঝে লুকিয়ে থাকি।
এখন আমি শব্দের ভেতরে দিনরাত হাঁটু গেড়ে বসে থাকি।
এখন আমার কোনরকম বিষণ্ণতা নেই।
এভাবেই ঘুরেফিরে শব্দের ভেতর।