বিভাগের আর্কাইভঃ জীবন

পুরাতন ভৃত্য কিংবা নতুন মোবাইল

মোবাইল ফোনে আমি টুকটাক লেখালেখি করি। প্রযুক্তির উৎকর্ষ আমাকেও প্রভাবিত করেছে। কলম আর কাগজের সঙ্গম যেন ভুলে গেছি, হয়তো বিশ্বাস করবেন না; চেষ্টা করে দেখেছি কাগজে লিখতে গেলে কলম চলে না, যদিওবা চলে পড়তে গিয়ে অক্ষর গুলো চিনতে পারিনা। হাতের লেখার এমন দুরবস্থা হয়েছে যে ব্যস্ত ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনও আমার চেয়ে সহজবোধ্য মনে হয়। চর্চার অভাবে হাতের লেখা মরে গেছে, মরে গেছে লেখার গতি।

মোবাইল অথবা আইপ্যাডে লিখতে যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি কাগজ-কলমে এখন আর তেমন স্বচ্ছন্দতা আসে না। অর্থাৎ কাগজ কলমে লিখে আগের মত আরাম পাই না। কাগজের বুকে সোনালী অক্ষরের জন্য মনটা কাঁদে; কিন্তু নিরুপায়। প্রযুক্তি আমাদের অনেক কিছু ধ্বংস করে ফেলেছে, অনেক অকৃত্রিম জিনিস কৃত্রিম প্রযুক্তি গিলে ফেলেছে। যেমন ইচ্ছে করলেও শৈশবের পুকুরে সাঁতার কাটতে পারিনা কৃত্রিম ঝর্ণায় এখন মুক্তি খুঁজি।

মোবাইল ফোনে মাঝেমধ্যে লেখি, কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছে আমার ফোনটা আগের মতো সাড়া দিচ্ছে না। আমি যে তালে আংগুল টিপে যাচ্ছি সে তালে অক্ষর গুলো স্ক্রিনে ভেসে উঠছে না। আমি ভাবলাম সমস্যা কী আমার না ফোনের। আমার বয়স পঞ্চাশের উপর শরীরের উচ্ছলতা অনেকটা স্তিমিত হয়ে এসেছে। মনের উচ্ছলতা যদিও পনেরো-ষোলো বছরের কিশোরের মত তবু মোবাইল ফোন হয়তো আমাকে বৃদ্ধই ভাবছে।

মোবাইল ফোন আমাকে বৃদ্ধ ভাবছে ব্যাপারটা আমার অহং এ আঘাত করল। আমি বৃদ্ধ নই প্রমাণ দিতে মোবাইল ফেলে আইপ্যাডে লিখতে শুরু করলাম, দেখলাম আইপ্যাডের সাড়া মন্দ নয় আমার সাথে সমান তালে পাল্লা দিতে পারছে। বুঝা গেল মোবাইলে আমার বৃদ্ধত্ব সমস্যা না সমস্যাটা মোবাইলের।

হিসাব করে দেখলাম আমি বৃদ্ধ হইনি বৃদ্ধ হয়েছে মোবাইল। প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই মোবাইল ব্যবহার করছি। তার যা নির্ধারিত আয়ু আমাকে সার্ভিস দিতে গিয়ে ব্যয় করে ফেলেছে। এখন সে আর আগের মত পাল্লা দিতে পারছে না। রবীন্দ্রনাথের ‘পুরাতন ভৃত্য’ পড়তে গিয়ে মনের ভিতরে যে বেদনা জেগেছিল এখন সে বেদনা অনুভব করছি। আমার প্রিয় মোবাইল প্রভুর বেদনা উপশম করতে গিয়ে নিজেকে তিলে তিলে নিঃশেষ করে দিল। পাঁচ বছরের সাথী মোবাইলকে ফেলে দিতে হবে। তার সাথে যত সময় কাটিয়েছি নিজের স্ত্রীর সাথে ভাব, ভালোবাসায় তত সময় কাটাইনি। তাকে ফেলে দিতে ব্যথিত হচ্ছি কিন্তু বাস্তবতাকে অস্বীকার এর কোন উপায় নেই। বাস্তব হচ্ছে অচল মাল চলে না। মানুষ মানুষকে ফেলে যায়, পরিত্যাগ করে। একদিন আমাকেও হয়তো এভাবে কেউ ফেলে দেবে; আর মোবাইল তো এক নিষ্প্রাণ যন্ত্র, পরিত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোন সমাধান নেই।
আমার মোবাইল ঠিক মতো কাজ করছে না খাবার টেবিলে এমন কথা দুই একবার উচ্চারণ করেছি; দেখলাম কেউ কোনো সাড়া দিচ্ছে না। আমার পকেটের অবস্থা ভালো না কিছুদিন হলো দেশ থেকে ফিরেছি। ধার দেনা হয়ে গেছে এসব শোধ না করে নতুন মোবাইল কেনা সম্ভব না। ভেবেছিলাম স্ত্রী-সন্তানদের কেউ দয়াপরবশ এগিয়ে আসে; দেখলাম এই ব্যাপারটায় কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। পুনরায় ভাবনা মনে এলো আমি নিজেও কি বৃদ্ধ হয়ে গেছি, অচল হয়ে গেছি; আমাকেও কি ফেলে দেয়ার সময় এসেছে! পাত্তা না পেয়ে অভিমানে কাজে চলে গেলাম।

রাতে কাজ থেকে ফিরেছি, স্ত্রী যথারীতি খাবার নিয়ে হাজির। কোন ভনিতা ছাড়াই খাবার খেলাম। কথাবার্তা আজ আর তেমন এগুলো না। রাত বারোটার পরে টেলিভিশনের ক্রাইম পেট্রোল গিলে যখন ঘুমোতে গেলাম বালিশে মাথা রাখতে গিয়ে শক্ত কিছু অনুভব করলাম। স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার ইচ্ছায় যেই চিৎকার দিতে যাব দেখলাম চৌকা একটা প্যাকেট বালিশে ঘুমিয়ে আছে। প্যাকেট খুলে আমি অবাক, নতুন মডেলের মোবাইল। আনন্দে চোখে জল এসে গেল।

কাজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাবার পরেই ছেলে মেয়ে এবং স্ত্রী মিলে পরিকল্পনা করেছে কিভাবে আমাকে সারপ্রাইজ দেয়া যায়। আমার ছেলে মেয়েরা বাংলা পড়তে পারে না, স্ত্রী ডিগ্রি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। ছেলেমেয়েরা বাংলা পড়তে না পারলেও বাবার লেখালেখি যাতে নির্বিঘ্নে হয় সে ব্যাপারে সবসময় সচেষ্ট। আমি রাত জেগে লেখালেখি করলে স্ত্রী ঘুমোতে যাবার আগে কফি বানিয়ে যেতে ভুলে না।

পুরাতন মোবাইলে আগের মতো সার্ভিস দিচ্ছে না এটা তাদেরকেও চিন্তিত করেছে তাই লেখালেখি এবং অন্যান্য কাজ নির্বিঘ্ন করতে তৎক্ষণাৎ নতুন মোবাইল ক্রয় করে এনেছে। বাবার প্রতি ছেলে-মেয়েদের এমন ভালোবাসা পুনরায় আপ্লুত করেছে।

মানুষ হওয়ার একটা সুবিধা আছে এক মানুষ অন্য মানুষের জন্য মায়া, আদর, ভালবাসা অনুভব করে। ভালবাসার উপর বিশ্বাস রাখতে গিয়ে মনে হল, বৃদ্ধ হলে আমাকে হয়তো ফেলা হবে না আদর করে কবরে শুইয়ে রাখা হবে। পুরনো মোবাইলকে আমি ফেলে দিতে পারিনি, সযত্নে একটা কৌটায় রেখেছি; যেখানে আরো কিছু মূল্যবান জিনিষ রাখা আছে।

নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দ

28400

বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ রয়েছে। ৮টি বিভাগে রয়েছে ৬৮ হাজার গ্রাম। এই ৬৮ গ্রামের মানুষ কিন্তু শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলে না। শুদ্ধ বাংলা ভাষা যে বলতে পারে না, তা কিন্তু নয়। অনেকেই শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে। তারপরও যে যেই অঞ্চলের, সে সেই অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলতে বেশি পছন্দ করে।

কারণ মাটির টার আর মাতৃত্বের টান তো সবারই থাকে। যেমন; যাদের জন্ম চট্টগ্রাম, তারা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষাতেই কথা বলতে পছন্দ করে। এমনই নোয়াখালীর মানুষ নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। বরিশাল অঞ্চলের মানুষ বরিশালের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে।আমি নারায়ণগঞ্জের মানুষ। তাই আমি নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পছন্দ করি।

তো আমি বাংলাদেশের গুটিকয়েক অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা জানি এবং কথাও বলতে পারি। অন্য অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা জানলেও, আমি অন্য অঞ্চলের ভাষা নিয়ে কিছু লিখছি না। আমি নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দের সাথে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। তো আসুন, দেরি না করে শুরু করা যাক!

শুদ্ধ শব্দ – আঞ্চলিক শব্দ
নারায়ণগঞ্জ=নানগঞ্জ
এখানে=এনো
ওখানে=হেনো
এদিক=এন্দা
এদিক দিয়ে=এদিকদা
আসেন=আহেন

ওইদিকে=ঐদিকদা বা হেন্দা
কোনদিক দিয়ে=কোন্দা
কাঁঠাল=কাডাল
শোনেন=হুনেন
শুনছেন=হুনছেন
শুনবেন=হুনবেন

যাচ্ছি=যাইতাছি
যাবো=যামু
যাবো একসময়=যামুনে একসুম
যেতে হবে=যাওন লাগবো
একসময়=একসুম
কখন=কোনসুম
কখন থেকে=কোনসুম তে
যেসময়=যেসুম

আসবো=আমু
আসবো একদিন=আমুনে একদিন
নদীর পাড় দিয়ে=নদীর পাড়দা
নদী=নদী বা গাঙ
পাড় হবো=পাড় ওমু
হবো=ওমু
খাবো=খামু

হতাম=ওইতাম
দেখাতাম=দেখাইতাম
দেখবো=দেখমু
দেখাবো=দেখামু
দিবো=দিমু
বুঝেছি=বুঝছি
বোঝাবো=বুঝামু
বুঝেছেন=বুঝছেন

খেয়েছেন=খাইছেন
গিয়েছেন=গেছেন
এসেছেন=আইছেন
গেয়েছে=গাইছে
গাইবে=গাইবো
গাইবো=গামু

খাবে=খাইবো
রান্না=পাক
রান্না করা=পাক করা
রান্নার কাজ=পাকের কাম
কাজ=কাম
কাজকর্ম=কামকাইজ
কেটেকুটে=কাইট্টাকুট্টা
খেটেখুটে=খাইট্টাখুট্টা

কোনরকম=কোনোমতে
ভালো লাগে না=ভাল্লাগে না
ভালো লাগে=ভাল্লাগে
বিয়ে=বিয়া
বিয়েবাড়ি=বিয়াবাড়ি
হেলেদুলে=হেইল্লাডুইল্লা
মোটামুটি=মোডামুডি

ঘামাবো=ঘুমামু
ঘুমাও=ঘুমা
ঘুম আসে না=ঘুম আহে না
যেভাবে=যেম্নে
এভাবে=এম্নে
ওইভাবে=হেম্নে
কীভাবে=কেম্নে

পারবো না=পারতাম না
পারবো=পারুম
বলবো না=কইতাম না
চাবো না=চাইতাম না
খাবো না=খাইতাম না
শোবো না=হুইতাম না।
শুনবো না=হুনতাম না
মরবো না=মরতাম না

মরবো=মরুম
মারবো=মারুম
করবো=করুম
করাবো=করামু
ধরবো=ধরুম
ধরাবো=ধরামু
পড়বো=পড়ুম

আজকে এ-পর্যন্ত। এখানেই শেষ!
বি:দ্র: এর আগেও আমি শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)-এ নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দ এবং নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দের দুই-তিনটা পোস্ট করেছিলাম। ভাগ্যগুণে শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)-এর অ্যাডমিন সেগুলো উনার ব্যক্তিগত ব্লগে চিরস্থায়ী করে রেখে দিয়েছেন। কারণ একই দেশের ভাষা অনেকরকম থাকলেও সেসব ভাষা সম্বন্ধে একই দেশের সবারই জানা দরকার মনে করে সেই পোস্টগুলো ব্লগে রেখেছেন। সেজন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।

তো আজকে শুধু আমাদের নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার কিছু শব্দ এখানে দেখালাম। তারজন্য দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। যদি ভুল করে থাকি, তাহলে মন্তব্যের ঘরে অথবা ইনবক্সে জানালে কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানাবো।

অশান্তির ফুটপাত

28887

ফুটপাত,
কিছুতেই কমছে না হকারদের উৎপাত
এতে শত উন্নয়ন-ই হয়ে যাচ্ছে ধূলিসাৎ,
পথচারীদের মাথায় পড়ছে বজ্রপাত
ফুটপাতের কারণেই যানজটের সূত্রপাত!

ফুটপাত,
শহরের রাস্তা মাত্র কয়েক হাত
তারমধ্যে অর্ধেক রাস্তাই ফুটপাত,
সরাতে গেলে পেটে লাগে আঘাত
কেউ বলে গরিবের উপর কষাঘাত!

ফুটপাত,
তাহলে কীভাবে হবে মুক্ত ফুটপাত?
যদি না থাকে বিশিষ্টজনের দৃষ্টিপাত,
শহরের উন্নয়ন সৌন্দর্য সবই ধূলিসাৎ
নির্বিঘ্নে হাঁটার বিঘ্ন ঘটাচ্ছে ফুটপাত।

.
ছবি নারায়ণগঞ্জ কালীর বাজার সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল ও নারায়ণগঞ্জ কলেজ’র সামনে থেকে।

ভাবের অভাব

12-Habits

এখন এখানে ভাতের অভাব নাই
শুধুই ভাবের অভাব দেখতে পাই
ভাতের অভাব নাই টাকার অভাব
চুরি করে চোর হয়ে গিয়েছে স্বভাব
কত টাকা প্রয়োজন তাও জানা নাই
এখন এখানে ভাতের অভাব নাই।

আড়ি ভাব আড়ি ভাব সেই ভাব নাই
হৃদয়ে হৃদয়ে হৃদ্যতা স্নিগ্ধতা নাই
এখন হৃদয়ে টাকার ঝংকার পাই
চাহনিতে টাকা চোখের পলকে টাকা
মায়ার ভিতরে টাকা সুদ ঘুষে টাকা
চাকরিতে টাকা ব্যবসা হলেও টাকা
হালাল হারামে টাকা সাদা কালো টাকা
যেখানে যেভাবে পারো ধরো মারো টাকা
নইলে জীবন হবে অহেতুক ফাঁকা।

এখানে এখন টাকার অভাব নাই
এখানে এখন ভাতের অভাব নাই
শুধুই ভাবের অভাব দেখতে পাই
অভাবে স্বভাব বলে আর কিছু নাই
স্বভাবে অভাব শুধুই দেখতে পাই
অভাব স্বভাব আর যাই কিছু বলি
ভাবের অভাব সব বাড়ি ওলি গলি
এখন এখানে ভাতের অভাব নাই
কেবল ভাবের অভাব দেখতে পাই।

.
ছন্দঃ মাত্রাবৃত্ত
পর্বঃ ৬ + ৬ + ২
মাত্রাঃ ১৪
অনুপ্রাসঃ ভাব ( বৃত্তানুপ্রাস)
রুপকঃ ভাব
স্তবকঃ ৬ + ৯ + ৯
পঙতিঃ ২৪

নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা

2882

কই যাইতাম?

পারিনা বউয়ের কথা সইতাম, পারিনা মরতাম,
পারিনা সংসার হালাইয়া দূরে গিয়া থাকতাম।
অহন কী করতাম? পারিনা কারো কাছে কইতাম,
না পারি কামাইতাম, না পারি কারো কাছে চাইতাম!

বাজারে দেহি, মাইনসে মাছ-মাংস করে দরদাম,
আমারঅ মনডায় কয় সামনে যাইয়া জাগাইতাম!
জিগাই না ঢরে, যাই হুটকি আলু বাইগুন কিনতাম,
বেশি টেকা থাকলে, মাছ কিন্না বাইত যাইতাম।

আমরা গরিব মানুষ, মনডায় চায় কতকিছু খাইতাম,
পারিনা দামের লাইগা, দাম কম অইলে পারতাম!
পারিনা খাইতাম, পারিনা পোলাপাইনেরে পড়াইতাম,
পারিনা হেগো বই খাতা-কলমের খরচ সামলাইতাম।

দেশে অহনকা চাইল ডাল হগলকিছুর বেশি দাম!
কামাই রোজগার কম, পারিনা সংসার চালাইতাম।
ঘরে গেলে বউ ঝিয়েরা করে ঘ্যানঘ্যান হামতাম,
মনে মনে কই, কী করতাম! আমি কই যাইতাম?

.
ছবি নিজের তোলা।

তালের শাঁস

28725

স্বাদের তাল,
তালের মৌসুম হলো বর্ষাকাল
রসে তাড়ি হচ্ছে বহুকাল
তাড়ি খেয়ে হয় মাতাল!

স্বাদের তাল,
কেটে বেচে কচি তাল
সুস্বাদু শাঁস দামও আজকাল
শক্ত হলেই হয় তালবেতাল।

তালের স্বাদ,
তাল গুলিয়ে খেতে স্বাদ
সাথে মুড়ি আরও স্বাদ
বেশি লবণে পুরোটাই বাদ!

তালের স্বাদ,
তাল গুলিয়ে ভাজা বড়া
যার নাম তালের বড়া
ভাজা যদি হয় কড়া
খুবই সুস্বাদু তালের বড়া!

.
ছবিতে বিক্রেতা মো: সজীব। গোদনাইল, রসূলবাগ।

বাবা

2894

তপ্ত রোদে মরুর বুকে
যেমন –বটের মায়া
মাথার উপর বাবা শুধু
হয়ে থাকেন ছাঁয়া।
এই ছায়াতে সুখে দুঃখে
যাদের জীবন যাপন
তারা জানে এই জগতে
বাবার’চে কে আপন!

হাতটি ধরে বাবা যখন
হাঁটতে নিয়ে শেখান
দূর আকাশে তারার মতো
দূরের পথটি দেখান।
হোঁচট খেয়ে পড়লে কখন
ভীষণ পেতাম ভয়
বাবা মনে সাহস দিতেন
এনে দিতেন জয়!

বাবার হৃদয় আকাশ সম
প্রশস্ত তার ছাতি…
অন্ধকারে সবার আগে
বাবাই দেখান বাতি।
পথ হারালে আবার যখন
বাবার পথেই হাঁটি
জীবন নামের বাঁকে বুঝি
বাবাই ছিলেন খাঁটি।

আব্বা

আমার আব্বা তাঁর দশ সন্তানকে কী কিছু শিখিয়ে যেতে পেরেছিলেন! সেরকম চেষ্টা করেছেন বলে মনে হয় না। প্রথাগত সদুপদেশ হয়তো শুনিয়েছেন অনেকবার কিন্তু আমল করার জন্য জোর করেননি। আমার আব্বার স্বভাবে জোর জবরদস্তি ছিল না।

তবে একটা কথা মন্ত্রের মত সবসময় আওড়ে যেতেন সেটা হচ্ছে ‘ভাল থাকা’। বলতেন ‘নিজে ভাল থেকো, অন্যকে ভাল রেখো’। তিনি সারাজীবন তাই করেছেন চরম দরিদ্রবস্থায়ও তিনি ভাল থেকেছেন, তাঁর ছেলে-মেয়েরা যখন যোগ্য হয়ে উঠেছে তখনো তাঁর ভাল অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ তিনি উচ্ছ্বসিত হননি, দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাননি।

আমার আব্বা অল্পে তুষ্ট মানুষ ছিলেন। জীবনের প্রতি তাঁর তেমন চাওয়া ছিল না। উচ্চাকাঙ্ক্ষার পিছনে দৌড়াতে হয়নি বলেই তিনি সৎ থাকতে পেরেছিলেন। আল্লাহ এবং তাঁর নবীর (সাঃ) প্রতি আব্বার ছিল শর্তহীন বিশ্বাস, আমাদের জানামতে কখনো কোন নামাজ কাযা করেননি। আল্লাহ যতটুকু নিয়ামত তাঁর জন্য বরাদ্দ রেখেছিলেন আব্বা তাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন। তাঁর জীবনে কোনদিন দুঃখবোধ ছিল না, নিজের প্রতি হতাশা ব্যক্ত করতে কোনদিন দেখিনি।

আব্বার অনেককিছু আমরা পাইনি কিন্তু ভাল থাকার মন্ত্র আমাদের দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। আমরা ভাই-বোনেরা নিজেদের মত ভাল থাকি, অন্তত নিজেদের ভালোর জন্য অন্য কারো মনোবেদনার কারণ হই না।

হে আল্লাহ দয়া করো

bonna

টানা বৃষ্টি, ভারত থেকে আসা উজানের ঢল আর নদীর পানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হার মানিয়েছে সকল প্রস্তুতিকে। ক্রমশ বাড়ছে পানির উচ্চতা। দুর্ভোগ বর্ণনাতীত। গলা পানিতে ভেসে থাকা মানুষগুলো খড়কুটো ধরে ভেসে থাকার প্রাণান্তকর চেষ্টা করছে। উদ্ধারকর্মীদের নৌকা দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে আটকে পড়া মানুষ। পানিতে ভেসে গেছে বাজার ঘাট। ঢলের পানি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে স্থানীয় মুদি দোকানগুলো। একদিকে আশ্রয়ের খোঁজ। অন্যদিকে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও কাজ করছে না। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ইন্টারনেট সেবাও। ফলে আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দারা দেশে ও দেশের বাইরে থাকা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় স্বজনরা।

আর্তনাদ করছে মানুষ। ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। বৃষ্টি থামছে না। অঝোরধারায় হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নেই। একটু আশ্রয়ের আশায় পরিবার নিয়ে ছুটছে মানুষ। অভুক্ত অবস্থায় কাটছে দিন। জীবন বাঁচানোর জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা। ঢলের কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতাও। বাড়িঘর থেকে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সড়কে। বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এই মুহূর্তে সিলেটের মানুষ কঠিন সময় পার করছেন।

অথচ আমরা বলি দেশ এখন সিঙ্গাপুর, দেশ এখন কানাডা। মানুষের মাথাপিছু আয় এখন আকাশসম। তবে কিছু লোক ধনী হতে ধনী হয়েছে আর কিছু লোক গরিব হতে গরিব হয়েছে। এই গরিবের সংখ্যা বেশী তা বুঝা যায় কম দামে পণ্য কিনতে দৌড় দেখে। রাস্তায় পড়ে যাওয়া চাউল শিশুর কুড়ানো দেখলে। নতজানু হওয়ার কারণে সময় অসময় স্বামী নামক দেশটা পানি দিয়ে ভাসিয়ে দেয় চুপ থাকি আমরা।

মন্ত্রী বলেছেন ঢাকাতে ফ্লাট-প্লটের মালিক অবৈধ টাকার কুমির। এখন ধরেন তাদের,কালো টাকা দিয়ে পানিতে বন্দি মানুষকে খাবার দিন পানি দিন ঔষধ দিন। বিদেশে পাচার টাকা ফেরত আনেন তা দিয়ে ঠিকসই বাঁধ নির্মাণ করে দিন। সিঙ্গাপুর প্রকৃতিকে জয় করেছে বহু আগে। আর আমরা স্বামীর দেওয়া পানিতে তলিয়ে যাচ্ছি নিরবে।

Picture # manobzamin

নয় ভাবনার ছয় কথা

নয় ভাবনার ছয় কথা


কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে নিরপরাধ প্রমান করবার ব্যার্থ চেষ্টা নিয়েও দেখি কোথাও যেন জেগে উঠছে নতুন চর। চরের দখলদারিত্ব নেবার সৎ সাহস নেই বলেই এড়িয়ে যাচ্ছি এই শোকবার্তা। আমরা মানবিক নই। এখনও ভয় পাই সামনে এগিয়ে যেতে। একজন ঋষি অনেক আগেই বলেছিলেন, ‘পেছনে তাকিয়ো না। যারা তাকায় তারা পাথর হয়ে যায়।‘ হয়তো তাই নিজের পাথুরে অবস্থান নিয়ে গর্বিত হয়েও কাঠাগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকি ঠাঁয়। সদা হাস্যময় আছি বলে কেউ জানেনা আসলে আমি কতটা স্থবির!


বিকেল বেলায় লনের দোলনাটা নড়ে উঠলো। বসে আছি রোদ্দুরহীন এক জনপদে। এখানে পাহাড় নেই, পাহারা আছে। পাহাড় ঠেললেও সরে না, পাহারাও ঠেলে সরাতে পারছি না। সামনের আমগাছের ডালটাকে একমনে চিরে যাচ্ছে বোকা কাঠঠোকরা। প্রজাপতির নামে হুলিয়া জারি হয়েছে। মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়েও তাই বাতাসের সাথে যুদ্ধে নেমেছে। আমি একহাত দূরে বসে নামতা মুখস্থ করে যাচ্ছি অনর্গল—দুই একে দুই, দুই দুগুণে ছয়।

(দুই একে দুই, দুই দুগুণে ছয়
হিসাব মেলেনি তো?
বলবে দুই, দুই চার? কিনতু—
তুমি-আমি এক হলেই সংসার
দু’টো ফুটফুটে শিশু
এখনো বলবে দুই দুগুণে ছয় নয়?)


ভুল করিনি, ভুল আমার হয় না। নির্বাচনে কারচুপি না হলে আমলাতন্ত্র নিয়ে কথা বলা যেত। রাত নামলে কিছু তারা চিনিয়ে দেব। যেসব তারারা এক সময় সারারাত ঝগড়া করতো আজ ওরাও কেমন নিষ্প্রভ হয়ে আসছে। আসলে মনের মত মন না হলে বিবাদেও মন ভরে না।

তোমরা কি ভাবো আমার শরীরের এই কাঠামোর ভেতর নির্জিব কোনো প্রেত বসত করে? আমার তো মনে হয় এটা শ্মশ্বান ঘাট।


এখন লিপস্টিক বিষয়ক উপাখ্যান লিখতে বসিনি যে রক্ত আর রঙের ফারাক বুঝব না। আমার তো মনে হয় সবটাই চোরাবালি। ডুবে ডুবে জল খাওয়া আর লুকিয়ে চুমু খাওয়া খুব মিষ্টি। অনশন ভেঙ্গে জল খাওয়া যায় বৈ কি! চুমু খেলেই কেউ কেউ চোখ ঠেরে চায়, যেন এসবে কত্তো অপরাধ। ঠোঁট তো মাটির ঘড়া নয় যে ভেঙ্গে যাবে। ঠোঁট হলো অথৈ সাগর। অনশন ভাঙতে চাইলে এর চেয়ে মিষ্টি আর কি আছে, বলো!


এবারের বৈশাখীতে নাগরদোলায় চড়া হলো না, হয়নি গত ক’য়েকটি বছরও। বয়স বাড়ছে না কমছে এ নিয়ে যেমন বিতর্ক আছে তেমনি সামনে আর কতগুলো জ্যৈষ্ঠি স্মৃতিময় বাহারী রঙ্গে উল্লসিত হবে এ নিয়েও কম দ্বিধা নেই। চলন্ত ট্রেনের পেছনের সিটে বসে চলে যাচ্ছে সময়। আয়নায় শোকগাঁথা লিখে রাখছি। আজ থেকে পাঁচবছর আগেও এত কুঞ্চন পড়েনি ত্বকে। ঠিক এইমূহুর্তেও যেমন ঝরে গেল ত্বকের আরেকটি কোষ। পাঁচবছর পর হয়তো আবার টের পাব এই দিনে কেমন করে তার মৃত্যু হয়েছিল। আজকের দিনের জন্যে এটিই ছিল সর্বশেষ শোক সংবাদ।


একটা মানচিত্র এঁকে দেবে? এতে থাকবে লোনা জল, সতেজ চা-গাছ আর কিছু জ্যামিতিক বিন্যাস। এই ধরো ত্রিভূজ, বৃত্ত আরো কি সব। একটা বন্য শুকরও দিতে চাও? দাও তো! কিছুই ফেলে দেব না। ভয়াবহ কিছু চিত্র ছাড়া একটা দ্বীপ পরিপূর্ণ হয় না। এসো তবে দ্বীপ বিষয়ে ভাবতে বসি। কথা ছিল এখানে শুধুই আমাদের বসবাস হবে—তুমি আর আমি। সমুদ্রের নীচ থেকে পম্পেইয়ের ধ্বংসাবশেষ উঠে আসলে আমরাও হিসাব দিয়ে দেব কতটা পেয়েছি বা পাইনি। পরিপূর্ন মানচিত্রে কেবল দু’টো পুতুল এঁকে দিও বেশ আয়েশে। তাহলে হিসাব হবে বরাবর।

বিশ্ব বাবা দিবসে বাবা তোমায় স্মরণ করি

28896

বাবা আমার বাবা,
তোমাকে ভালবাসার জন্য, তোমাকে কাছে পাবার জন্য, তোমাকে স্মরণ করার জন্যই আজকের এই “বিশ্ব বাবা দিবস”।

তুমি আমার জন্মদাতা। তুমি যদি বাবা জন্ম না দিতে, তবে তো এই সুন্দর পৃথিবীতে আমার আসা হতো না ৷ তুমিই বাবা আমার সৃষ্টির একমাত্র উৎস্য ৷ সৃষ্টিকর্তা আমাকে সৃষ্টি করেছে শর্ত জুরে দিয়ে। সেই শর্ত মেনে সৃষ্টিকর্তার উপসনা করতে হবে। সদা সত্যকথা বলতে হবে। মানুষ হয়ে মানুষের উপকার করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর সৃষ্টিকর্তার শর্ত না মানলে আমি হয়ে যাই পাপিষ্ঠ! সেই পাপের হবে বিচার।

আর তুমি বাবা আমাকে জন্ম দিয়েছ নিঃশর্ত ভাবে। দিয়েছিলে শুধু উপদেশ। আমার জন্মের প্রতি তোমার কোন শর্তই ছিল না বাবা৷ তোমার কারণে আজ আমি এই সুন্দর পৃথিবীতে জন্মেছি। এই সুন্দর পৃথিবীতে আসতে পেরেছি৷ সেই ছোট্ট শিশু থেকে এখন অনেক বড় হয়েছি। বর্তমানে কমবেশি সবই আছে আমার। শুধু তুমি নেই। তুমি নেই বলে আজ আমি বড়’ই এতিম বাবা।

তুমিতো ছিলে আমার বটবৃক্ষের ছায়া৷ সেই সুশীতল ছায়াতলে থাকতাম নির্বিঘ্নে নিরাপদে। এখন তুমি পরলোকে। তবু মনে হয় তুমি আছো ইহলোকে। আছো আমার অন্তরের মণিকোঠায়৷ দুচোখ বুঝলেই তোমায় দেখতে পাই আমার আমার মনের টেলিভিশনের পর্দায়৷ তোমাকে বাবা সব চাইতে বেশি মনে পড়ে তখন, যখন এই পৃথিবীর সব মানুষের বাবাকে ভালবাসার জন্য একটি দিবস পালন করে। সেই দিনটি পালিত হয় প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার। তোমাকেই স্মরণে রাখার জন্য এই দিবসটির নাম হয়, “বিশ্ব বাবা দিবস”৷

বাবা,
বছরের এই দিনে তোমায় ভীষণ মনে পড়ে। তোমাকে গভীরভাবে স্মরণ করি। এ শুধু আমি কেন বাবা ? এই পৃথিবীর সকল সন্তানেরা এই দিনটিকে তোমার মতো প্রিয় বাবার জন্য সব দিন থেকে আলাদা করে নিয়েছে৷ এই দিনটি হলো, জুন মাসের তৃতীয় রবিবার, “বিশ্ব বাবা দিবস” ২০২২ ইংরেজি।

বিশ্ব বাবা দিবসের ইতিহাস:
ইতিহাসে জানা যায়, ১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টে এক গির্জায় এই দিনটি প্রথম পালিত হয় ৷ আবার সনোরা স্মার্ট ডড নামের ওয়াশিংটনের এক ভদ্রমহিলার মাথায়ও বাবা দিবসের আইডিয়া আসে ১৯০৯ সালে। ভার্জিনিয়ার বাবা দিবসের কথা তিনি একেবারেই জানতেন না। ডড এই আইডিয়াটা পান গির্জার এক পুরোহিতের বক্তব্য থেকে৷ সেই পুরোহিত আবার মা’কে নিয়েও অনেক ভালো ভালো কথা বলছিলেন৷ তখন উনার তার মনে হয়েছিল, তাহলে বাবাদের নিয়েও তো কিছু করা দরকার৷

ডড আবার তার বাবাকে খুব ভালবাসেন৷ এর পর তিনি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগেই পরের বছর অর্থাৎ, ১৯শে জুন ১৯১০ সাল থেকে “বাবা দিবস” পালন করা শুরু করেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন পিতৃ দিবসকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন৷

সেই থেকেই প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার সারা বিশ্বে এই দিনটাকে “বিশ্ব বাবা দিবস” হিসাবে পালন করে আসছে৷ আমাদের বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় এই দিনটিকে পালন করা হয়৷ পৃথিবীর সকল মানুষের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমিও স্মরণ করি আমার জন্মদাতা বাবাকে।

পরিশেষে:
বিশ্ব বাবা দিবসে পৃথিবীর সকল বাবাদের প্রতি অবিরাম ভালোবাসা ও ভক্তিপূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়ে একটা কথাই বলবো যে, যাদের বাবা এবং মা এখনো জীবিত আছে, আপনারা বাবা এবং মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন৷ বাবা মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা মানেই হলো, পরম করুণাময়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা।

১৯/০৬/২০২২ইং, রবিবার। বিশ্ব বাবা দিবস।

বাদাম বিক্রি করে লেখাপড়া করেও হেরে গিয়েছি অভাবের কাছে

28593a দেশ স্বাধীন হবার আরও অনেক আগে থেকে আমার বাবা নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিত্তরঞ্জন কটন মিলের আউট অফ সাইট ক্যালেন্ডারে চাকরি করতেন। ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে একদিন দুপুরবেলা চিত্তরঞ্জন কটন মেলে আউট অফ সাইটক্যালেন্ডার মেশিনের আমার বাবার বাম হাতের চারটে আঙুল থেঁতলে যায়। তারপর থেকে বাবার হাতের অবস্থা দিন-দিন খারাপ হতে থকে।

আমার মা আর আমি একদিন পর-পর বাবাকে নিয়ে চিত্তরঞ্জন কটন মিলের অফিসের সামনে ফকির মিসকিনের মতো বসে থাকতাম, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাহায্যে বাবার ঔষধ কেনার টাকার জন্য। দুই-তিন দিন ঘুরা-ঘুরির পর একদিন তাঁদের দয়া হতো, নাহয় আরও দুই-তিন গিয়ে অফিসের সামনে ভিক্ষুকদের মতো বসে থাকতে হতো। মাস শেষে মূলবেতন পাওয়া যেতো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দয়ার উপর নির্ভর করে। তাও মিলের সব শ্রমিকদের বেতনের পরই পাওয়া যেতো।

একারণে আমাদের সংসারে তখন নতুন করে দেখা দিলো ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। সংসার চলতো একমাত্র বড় দাদার বেতনে। তখন বড়দাদা যেই টাকা বেতন পেতো, সেই টাকায় আমাদের ৯ সদস্যের সংসার ১৫ দিনও চলার মতো ছিল না। দোকান বাকি জমতে জমতে একসময় গলা সমান গয়ে গেলো। এর সাথে শেষ হয়ে যাবার উপক্রম হলো আমার লেখাপড়া। বাবা অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার পর থেকে আমার স্কুলে যাওয়াও আগের চেয়ে কমে গেলো। সপ্তাহে দুইদিন স্কুলে গেলে বাকি চারদিন স্কুলে থাকতাম অনুপস্থিত। বাসায়ও বই নিয়ে কখনো পড়তে বসতাম, সময়তে পড়তাম না। বাবার অসুস্থতার কারণে পড়তে বসতে মনও চাইতো না।

স্কুলে না গিয়ে সারাদিন থাকতে হতো বাবার সাথে, আর মিলের ডেলি কাজ পাবার আশায়। একদিন কাজ পেতাম, দুইদিন বসা থাকতাম। এভাবে কেটে গেলো কয়েকমাস। এভাবে আমার কিছুতেই মন ভালো লাগছিল না। তখন সংসারের অভাব আর বাবার হাতের ব্যথার ডাক-চিৎকারে আমার ঘরেই থাকতে মন চাইতো না।

একদিন একটা চুক্তি কাজ পেলাম। কাজটা হলো মাটি কাটার কাজ। আমরা ছিলাম ছয়-সাত জন। দুইদিন মাটি কাটার কাজ করে ৩৫টাকা হাতে পেলাম। সেই টাকা পেয়ে সাথের একজনের সাথে আলাপ করলাম, ‘নারায়ণগঞ্জ থেকে কাঁচা বাদাম এনে বাসায় ভেজে বিকাল বিকাল মিলের গেইটে বসে বিক্রি করলে কেমন হয়!’ লোকটা বললো, ”ভালোই তো হবে। বাদামে লাভ আছে! করতে পারলে ভালো হবে।”

এর পরদিন আমি ৩৫ টাকা সাথে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নারায়ণগঞ্জ গেলাম কাঁচা বাদাম আনতে। ২০ টাকা দিয়ে ৪ সের কাঁচা বাদাম কিনলাম। ছোট দাঁড়িপাল্লা-সহ প্রয়োজনীয় বাটখারাও কিনে আনলাম। মাকে বললাম, বাদামগুলো ভেজে দিতে। আমার মা তো আগেই মূড়ি ভাজার ওস্তাদ ছিলেন। তাই কীভাবে বাদাম ভাজতে হবে, তা আর মাকে কিছুই বলতে হয়নি। মা বালুর সাহায্যে খুব সুন্দরভাবে বাদাম গুলো ভাজলেন। আমি পরদিন বিকালবেলা একটা মুড়ির টিনে করে বাদাম নিয়ে মিলের গেইটে গিয়ে বসলাম, বিক্রি করার জন্য।

সেসময় আদর্শ কটন মিলের গেইটের সামনে আর কেউ বাদাম বিক্রি করতো না। গেইটের সামনে আমিই ছিলাম একমাত্র বাদামওয়ালা। মায়ের হাতে ভাজা বাদাম গুলো ১০ টাকা সের দামে, আধা ছটাক, এক ছটাক, আধা পোয়া, একপোয়া করে মুহূর্তে সব বাদাম শেষ করে ফেললাম। লাভ হলো ১০-১২ টাকার মতো। পরদিন সকালে আবার কাঁচা বাদাম আনতে চলে গেলাম নারায়ণগঞ্জ। এদিন কাঁচা বাদাম আনলাম ৫ সের। সেগুলো ভেজে আগের দিনের মতো বিকালবেলা আবার মিল গেইটের সামনে গিয়ে বসলাম। এদিনও সব বাদাম বিক্রি করলাম।

এভাবে প্রতিদিন সকালবেলা আমি নারায়ণগঞ্জ পায়ে হেঁটে যেতাম, আবার বাদাম মাথায় করে পায়ে হেঁটে বাসায় আসতাম। আমার এরকম কষ্ট দেখে একদিন আমার বড়দাদা আমাকে ৫০ টাকা হাতে দিলেন, বেশি করে বাদাম আনার জন্য। যাতে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ যেতে না হয়। তা-ই করলাম। বড় দাদার দেওয়া ৫০টাকা আর আমার কাছে থাকা কিছু টাকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে একসাথে ২০ সের (আধা মণ) কাঁচা বাদাম কিনে আনলাম। এতে অন্তত ৫/৬ দিন নারায়ণগঞ্জ যাওয়া-আসার ভেজাল শেষ করলাম।

প্রতিদিন ৪-৫ সের বাদাম মিল গেইটে নগদে বাকিতে মিলিয়ে বিক্রি করতাম। বিক্রি করে যা পেতাম, সব মায়ের কাছে এনে দিতাম। লাভের টাকা থেকে মা কিছু সংসারেও খরচ করতো। টুকটাক বাবার ঔষধ কিনে আনতো। মায়ের পান-সুপারি আনতো। আমি মাঝে-মধ্যে স্কুলে যাওয়া সময় আমাকেও চার আনা, আট আনা দিতো। সেসময় এভাবেই চলতে থাকলো আমাদের দুর্ভিক্ষের সংসার।

তখন আমাদের দুর্ভিক্ষপীড়িত সংসারের দায়িত্ব যেন বড় দাদার সাথে আমার উপরেও বর্তাল। আমি তখন মাঝে-মধ্যে স্কুলে যেতাম। বাবাকে নিয়ে চিত্তরঞ্জন কটন মিলেও যাতাম। আবার প্রতিদিন বিকালবেলা শ্রমিকদের ছুটি হবার আগেই মিল গেইটে বাদামের টিন নিয়ে বসে থাকতাম। বাদাম বিক্রি শেষে আবার সময়তে সন্ধ্যার পর ওই ডেলি লেবারদের সাথেও কাজ করতাম। তবু্ও আমরা দুই ভাই-সহ আমাদের ৯ সদস্যের সংসারে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে কোনো-কোনো সময় দিন রাতে কিম্বা সকালে দুপুরে না খেয়েই থাকতাম। তবুও লেখাপড়া চালিয়ে যাবার ইচ্ছেটা মনের ভেতরের পুষিয়ে রাখতাম। কিন্তু না পারিনি। অভাব অনটনের কাছে আমি হেরেই গেলাম।

স্ত্রী বন্দনা

285a

স্ত্রী:
স্ত্রী হলো একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। আর নারী হল পৃথিবীর সকল নারীপুরুষের মায়ের জাতি। প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষের সাথে যার যার ধর্মমতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর আমাদের দেশীয় ভাষায় তাঁদেরই বলা হয় স্ত্রী। কিন্তু এঁরা মায়ের জাতি নারী। যৌবনকালে এঁরা কারো-না-কারোর স্ত্রী হয়।

ভুমিকা:
এঁদের ভূমিকা আদিকাল থেকেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অপরিসীম। কিন্তু আগেকার সময়ে আমাদের এই মা জাতিকে গৃহপালিত জীব এবং পুরুষের দাসত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কোনও কোনও দেশে নারীদের নিলামেও বেচাকেনা করতে দেখা যেত। বর্তমান সভ্যজগতে এখন আর সে রকম কিছু চোখে পড়ে না।

এখন মায়ের জাতি নারীগণ সেসব বাঁধা অতিক্রম করে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। প্রাচীনকাল হতে এযাবৎকাল পর্যন্ত অনেক নারীর বীরত্বের কথাও ইতিহাসে লেখা রয়েছে। ইতিহাসে লেখা রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের অগ্রণী ভূমিকার কথা। সাহসের সাথে রাজ্য পরিচালনায় অনেক নারীদের অনেক ইতিহাসও রয়েছে। বর্তমানে আমাদের এই দেশটাও পরিচালনা করছেন মায়ের জাতি এক নারী। সাথে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন অনেক নারী। এঁরাও কারো-না-কারো সহধর্মিণী (স্ত্রী) হয়ে ছিলেন বা আছেন। বলা যায় বর্তমান সভ্যজগতে মায়ের জাতি নারীদের এখন জয়জয়কার সময়। তবুও অনেক স্থানে অনেক পুরুষেরা নারীদের দাসী হিসেবেই মনে করে, এবং আমাদের দেশসহ অনেক দেশের অনেক স্থানে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমনকী মিথ্যে অপবাদ আর কলঙ্কের বোঝা মাথায় দিয়ে সংসার থেকেও বিতাড়িত করা হচ্ছে।

আকৃতি:
মা জাতি নারীদের আকৃতি সাধারণত পুরুষ থেকে একটু খাটো। চেহারায় থাকে মায়াবী মায়াবী ভাব। এঁদের পোষাক পুরুষের মতন নয়। এঁরা সালোয়ার কামিজ ও শাড়ি পড়তে বেশি পছন্দ করে। কেউ কেউ আবার এই সভ্যসমাজে পুরুষের মতন শার্ট-প্যান্ট পড়ে।অনেক সময় রাস্তাঘাটে যুবতি মেয়েদের হাফপ্যান্ট পড়েও ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।

মা জাতি নারীদের মাথায় লম্বা চুল থাকে। মাথার চুলকে তাঁরা জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। তবে বর্তমান ডিজিটাল যুগে কিছু-কিছু নারীরা বিদেশীদের মতন মাথার চুল কেটে ছোট করে রাখে। এটা একপ্রকার আধুনিক ফ্যাশন। এঁদের শত সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকার পরও সেজেগুজে থাকতে বেশি পছন্দ করে। মা জাতি নারীদের নাক ও কান ফোঁড়ানো থাকে। উঠতি বয়সেই এঁদের নাক-কান ফোঁড়ানো হয়। সেই ফোঁড় দিয়ে তাঁরা সোনা অথবা রূপার তৈরীকৃত জিনিস ঝুলিয়ে রাখে। নাকে রাখে নাকফুল, আর কানে ঝুলিয়ে রাখে কানের দুল। মাথার লম্বা চুলে ক্লিপ, ব্যান্ড ব্যবহার করে। অনেকে মাথার লম্বা চুল খোপায় বেঁধে রাখে।

স্বভাব ও প্রকৃতি:
মায়ের জাতি নারীদের কথায় থাকে মধুমাখা। কণ্ঠে থাকে সুমধুর কোকিলের মতো সুর। অনেক নারীদের গলার সুর থাকে উচ্চস্বর। ওইসব উচ্চস্বর শুনলে অনেক সময় অনেক পুরুষের মাথা এমনিতেই গরম হয়ে যায়। আবার কিছু কিছু নারীদের কথা শুনতে হুবহু পুরুষের গলার স্বরের মতন। তবুও এঁরা আমাদের মায়ের জাতি স্ত্রী (নারী)। লজ্জাই তাঁদের একমাত্র সম্বল। কথায় আছে, ‘লজ্জা নারীর ভূষণ।’ এই লজ্জা যেন মা জাতির কাছে এক অলংকার স্বরূপ। কিছু ব্যতিক্রম থাকা সত্ত্বেও বলবো, নারীর লাজুক বৈশিষ্ট্যতা একমাত্র বাঙালি নারীর মধ্যেই বেশি দেখা যায়।

উপকারিতা:
মা জাতি স্ত্রী (নারী) সব দুঃখকষ্ট নীরবে সয়ে যায়। তাঁরা পুরুষের শত অত্যাচার সয়ে-সয়ে নিজের গর্ভজাত সন্তান ও স্বামীর সংসার আগলে রাখার চেষ্টা করে। নিজে না খেয়ে থেকেও স্বামী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেয়। আমাদের সমাজে অনেক নারীকে শত কাজ আর শত দুঃখকষ্টের মাঝেও, স্বামী-সন্তান, ঘর-সংসার দেখভাল করতে দেখা যায়। এমন কর্তব্য পালনে কোনোরকম কমতি দেখা যায় না। জ্ঞানীগুণীদের মতে এসব নারীই হচ্ছে, আমাদের সমাজের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার সেরা উপহার।

অপকারক:
সময়-সময় এর উপকারের বিপরীতে অপকারও দেখা যায়। দেখা যায়, অনেক মায়ের জাতি স্ত্রী (নারী)’রা থাকে নিজের সুখ আর স্বার্থ আদায়ের ধান্ধায়। নিজের সুখের কথা ভেবে সোনার সংসারে অনেক সময় আগুন জ্বালিয়ে দেয়। একজন পুরুষের সহধর্মিণী হয়েও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরপুরুষের প্রেমের টানে নিজের গর্ভজাত সন্তানাদি ছেড়ে অন্যের ঘরে চলে যায়। অনেক সময় পরকীয়ার মরণব্যাধির কারণে অনেক স্থানে খুনখারাপি হয়ে থাকে। আবার অনেক স্ত্রী স্বামীকে গৃহপালিত প্রাণী হিসেবেও মনে করে। (যেমন আগেকার সময়ে স্বামীরা স্ত্রীর গলায় রশি বেঁধে রাখতো, ঠিক তেমনভাবে এ যুগের কিছু কিছু নারীরাও নিজের স্বামীর গলায় রশি বেঁধে রাখতে চায়)। তাঁরা নিজের বিবাহিত স্বামীকে যখন-তখন আদেশ উপদেশ দিয়ে থাকে। যাকে বলা হয় হুকুম।

এইরূপ হুকুমের হেরফের কিছু হলেই, সংসারে লেগে যায় আগুন। শুরু হয় ভাংচুর, সাংসারিক কাজে অনীহা, সন্তানের প্রতি অবহেলা, শ্বশুর-শ্বাশুরির প্রতি করা হয় চরম বেয়াদবি। এসবের মূল কারণ হল, স্বামী থেকে নিজেকে বুদ্ধিমান মনে করা। এসব (স্ত্রী) নারীরা তাদের বিবাহিত স্বামীকে হুকুমের গোলাম হিসেবেই বেশি গণ্য করে থাকে। তাদের কাছে মনে হয় যে, এই স্বামী নামের প্রাণীগুলোকে যে-ভাবে খুশি সে-ভাবেই পোষ মানানো সম্ভব। এইরূপ অতি কুবুদ্ধি পূর্ণ স্ত্রীদের জ্ঞানী গুণীজন এই সমাজের ঝঞ্ঝাট মনে করে থাকে।

কারণঃ এরূপ নারীদের এরকম ব্যাবহারের ফলে স্বামী নামের একজন পুরুষ মানুষের সুন্দর মন-মানসিকতা নষ্ট হয়ে চরিত্রবান থেকে দুশ্চরিত্রবান লম্পট সেজে সমাজের আরও দশজনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আবার কোনোকোনো পুরুষ নিজের বিবাহিত স্ত্রীর জ্বালা-যন্ত্রণা সহ্য করে ঠিক একটা গৃহপালিত পশুর মতনই সংসার জীবন চালিয়ে যায়। আবার কোনোকোনো জেদী পুরুষ ঐরকম স্ত্রীদের রাখে প্রহার ও মাইরের উপর।

অবহেলিত স্ত্রী (নারী):
বলা যায় বর্তমান সভ্যজগতে মায়ের জাতি নারীদের এখন জয়জয়কার সময়। তবুও অনেক স্থানে অনেক পুরুষেরা স্ত্রীদের দাসী হিসেবেই মনে করে থাকে। আমাদের দেশসহ অনেক দেশের অনেক স্থানে তাঁদের প্রাপ্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়। মাঝে-মাঝে যৌতুক আদায়ের জন্য অসহায় স্ত্রীদের ওপর সাঁড়াশি অভিযানও চালানো হয়। যৌতুক দিতে স্ত্রীর পরিবার থেকে অপারগতা প্রকাশে সইতে হয় নানারকম নির্যাতন। লোভী পুরুষেরা যৌতুক আদায়ে ব্যর্থ হয়ে, এক সময় মিথ্যে অপবাদ দিতে শুরু করে। এর ফলস্বরূপ অবলা নারীকে কলঙ্কের বোঝা মাথায় দিয়ে সংসার থেকেও বিতাড়িত করা হয়। এমনকি অনেক সময় অনেক স্থানে কাপুরুষ নামের জানোয়ারগুলো যৌতুক আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অবলা নারীদের নির্মমভাবে মেরেও ফেলে। কেউ এর সঠিক বিচার পায়, কেউ আবার পায়ও না। তবু থেমে নেই আমার মায়ের জাতি নারীদের পথচলা আর সংসার গড়া।

উপসংহার:
নারী বলতে পৃথিবীর অন্যতম প্রাণী মানুষের স্ত্রী-বাচকতা নির্দেশক রূপটিকে বোঝানো হলেও, সময় সময় এই স্ত্রীর (নারী) কারণেই অনেক সোনার সংসার ধ্বংস হয়ে যায়। মুহূর্তেই তছনছ হয়ে যায় কাঁচের স্বর্গ। তবুও এঁরা আমার মায়ের জাতি। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তাঁদের নিয়ে সংসার গড়ি, সমাজ গড়ি।

দ্রষ্টব্য: এখানে মায়ের জাতি নারীকে ছোট করে দেখা হয়নি। ভুল হলে পোস্ট খানা মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

ছবিতে আমার সহধর্মিণী।

মনোরোগ বা “mental disorder”

১. আমরা আবেগ দিয়ে কি করতে পারি? আমরা আবেগ দিয়ে কোনরকম কোন কর্ম করতে পারব না। কোন ঘাস কাটতে পারব না, হাল চাস কিম্বা আবেগ দিয়ে কারো উপকারে আসতে পারবো না। চোখের মায়াকান্নার মাধ্যমে আবেগকে প্রকাশ করা যায় না; সেটাকে অভিনয় বলে। আবেগ দিয়ে সফলতা ছুতে পারব না সেই ক্ষেত্রে আবেগ দিয়ে ইমোশনাল সফলতা অর্জন হতে পারে কিন্তু সেটা সাময়ীক। বাস্তবতা আবেগ দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয় না।

আবেগের বশে অপরাধ হয় আর আবেগের বশে অনেক ক্ষেত্রে ভালো কর্ম করে বসে মানুষ; কিন্তু সেই ক্ষেত্রটা খুবই নগণ্য। আবেগ দিয়ে আবেগ সৃষ্টি করা আর ইমোশন সৃষ্টি করা ছাড়া আর কোন কিছুই হতে পারে না। মানুষ আবেগের বশে ভুল কাজটাই সবচাইতে বেশি করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। আবেগ মানুষকে অন্ধ বানিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। আবেগ দিয়ে অন্ধ বিশ্বাস করা যায় বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে আবেগকে সাজিয়ে কোন কিছুর বস্তুনিষ্ঠ সত্যকে অবজ্ঞা করা যায় না, এমনকি প্রমান করাও যায়না।

আপনি আবেগ দিয়ে নিজের ভেতরের চাপা কষ্টকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারেন বা অন্যের বেদনায় ব্যতীত হতে পারেন অথবা সাথে আপনার সুখ-দুঃখ আবেগপ্রবণতা মাধ্যমে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন। আবেগ আপনাকে অনেকক্ষেত্রে ক্রাইম করতে বাধ্য করে। আবেগ যদি ক্রাইম করতে বাধ্য করে তবে সেটা অত্যন্ত ভয়ানক অপরাধ। আবেগ যদি আপনাকে ক্র্যাইম করতে বাধ্য করে তাহলে মনে করবেন সেটা কোনভাবেই আবেগ নয়। এটা অন্যায় সেটা অপরাধ আর সেটা চরম মাপের অসদাচরণ।

সেটা আবেগ থেকে মানসিক রোগের দিকে চলে গিয়েছে মানসিক রোগ শুধু যে একজন অসুস্থ মানুষের ভেতরেই রয়েছে তা নয় একজন সুস্থ সবল মানুষের ভেতরেও এমন আবেগ রয়েছে যা তারা সে মানসিক রোগের শিকার। একজন মানুষকে আবেগপ্রবণ হওয়ার আগে একজন মানুষকে বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ হতে হয়। ভালো-মন্দ পার্থক্য নির্ণয় করার মত জ্ঞান রাখতে হয়। যদি সে মানুষের আবেগ বিবেক ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা ভেতর থেকে না অনুভব করতে পারে তাহলে সে অপরাধী হতে পারে। একজন মানুষের ভেতরে যদি আবেগ না থাকে তাহলে তার ভেতরে কোনোভাবেই আবেগের সুন্দর আলোক বর্তিকা তার ভেতরে জ্বলতে পারে না।
আমার আপনার প্রত্যেকের এখানেই জানবার বিষয় রয়েছে বুধবার বিষয় রয়েছে চিন্তা করার বিষয় রয়েছে। এখানেই ভাববার বিষয় আর এখানেই উপলব্ধির বিষয় যা বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ দ্বারা উপলব্ধি করা যায়।
এই উপলব্ধিটুকু তারা করতে পারে না যারা কোনোভাবেই সত্যকে ধারণ করে না আর যারা এসবকে অনুভব করে বুঝবার জন্য জানবার জন্য সত্যকে আবার মুখোমুখি নিয়ে আসার জন্য তারাই তারাই আলোকিত মানুষ। তারাই সত্যকে ধারণ করে আর সত্যকে বলতে দ্বিধা করে না যারা সত্যকে ছেড়ে চলে যায় কারণ মিথ্যা আবর্তে ঘূর্ণায়মান এরাই সবচেয়ে বেশি মুখোশের আড়ালে বিদ্যমান।

যারা সত্যের সাথে বসবাস করে মিথ্যাকে অন্ধকারে পতিত করে। এমন না হলে কোনভাবেই জীবন চলেনা এমন না হলে জীবন অন্ধকার এমন না হলে জীবনের কোনও অস্তিত্ব থাকে না একজন অস্তিত্বশীল মানুষের ভেতরে এটাই মানুষের কর্ম ধর্ম নীতি এবং বহমান পৃথিবীর নিয়ম। একজন মানুষের ভেতরে প্রবেশ করতে হলে আবেগের প্রয়োজন রয়েছে তবে সে মানুষটার কাছাকাছি আসা যায় আবেগ এখানে তার সঠিক পথ নির্ণয় করে আবেগ দ্বারা মানুষকে বোঝানো যায় যে তোমার জন্য আমি ব্যথিত তোমার সুখে আমি সুখী তোমার যন্ত্রনায় আমি যন্ত্রনাতে তোমার ভাবনায় আমি ভাবনা তাড়িত এটাই হচ্ছে আবেগ আবেগ এর ভেতরে কোন অসৎ উদ্দেশ্য নেই যদি থাকত তাহলে তাকে আবেগ বলে গণ্য করা হতো না। তবে অতিরিক্ত আবেগটা ও মানসিক রোগের লক্ষণ বলে বিবেচনা করা হয় তবে এক্ষেত্রে বোঝা যাচ্ছে যে অতিরিক্ত আবেগ থাকা একজন মানুষের জীবনের বিপদজনক এবং নানা রকম বিপদ বয়ে আনতে পারে।

২. মানসিক রোগ মানে যে পাগল তা নয়। আমরা অনেকেই এই ক্ষেত্রে ভুল বুঝে থাকি। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের ওপরে হিসাব করলে দেখা যায় যে তাদের ভেতরে মানসিক রোগের প্রবণতা অত্যন্ত বেশি বেশি কয়েকটি কারণ রয়েছে একটি বায়োলজিক্যাল ও আরেকটি জেনেটিক। তবে এই দু’টি আক্রান্ত মানসিক রোগ খুব বেশি না হলেও অন্যভাবে দেখা যায় যে মানসিক রোগীর সংখ্যা সৃষ্টি হয় পারিবারিক সামাজিক অথবা অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে যার ভিতর দারিদ্রতা অন্যতম কারণ।

এক্ষেত্রে আরও একটু যদি পরিষ্কার করে বলি তাহলে বোঝা যায় এখানে পারিবারিক অসঙ্গতি সবচাইতে মারাত্মকভাবে মানসিক রোগের কারণ হতে পারে যেটা অকল্পনীয়। এক্ষেত্রে মানসিক রোগীরা অত্যন্ত বিপদজনক এবং এরা সর্বদা আবেগ দ্বারা সহজ চিন্তাভাবনাগুলোকে অত্যন্ত জটিল করে তোলে। যার পরিণতি ভোগ করে সে নিজে পরিবার সমাজ এবং আশপাশের মানুষজন। আরেকবার পরিষ্কার করে বলি মানসিক রোগ মানেই পাগল তা নয়। মানসিক রোগ হলে যে সে মানুষটা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর সেটাও বলা যায় না। আমাদের সমাজে অসংখ্য শিক্ষিত যুবক রয়েছে যুবতী রয়েছে যারা চাকরির অভাবে অনেক ভাবেই ডিজে পয়েন্ট হয়ে যায় হতাশ হয়ে যায় যে হতাশাগ্রস্ত মানুষকে কখন কী করবে সেটা অতিসত্বর দিককুল কিম্বা কোন কূল কিনারা খুঁজে পায়না এমত অবস্থায় তার সাথে কোন রকম যদি কোন চটকদার চাকরির অফার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

একজন মানসিক রোগীর সাথে কোনভাবেই নিকৃষ্ট ঘৃণ্য অথবা খারাপ আচরণ করা কাম্য নয়। সামাজিক পারিবারিক কিংবা রাষ্ট্রের অধিকারের ক্ষেত্রে যদি বলা যায় একজন মানসিক রোগীকে পাগল বা মানসিক রোগী বলে আখ্যা দেয়ার কোনো উপায় নেই। কারণ তারা যে কোনো ভাবেই এর শিকার হতে পারে সেটা পরিবার সামাজিক পারিপার্শ্বিক এম্বা সংসার জীবনে অসচ্ছলতা দারিদ্রতা বা অন্যের নির্যাতনে কিংবা ভালোবাসা পর্যাপ্ত অভাবের কারণে অথবা শিক্ষা জীবনের ইতি ট্রেনে ফাইবার পেছনে ছুটতে ছুটতে জুতার তলা ক্ষয় করে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে ও মানসিক রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

এই মানসিক রোগ তার ভিতরে বাসা বাঁধতে পারে এমন আরও অনেক দিক রয়েছে। সীতাভোগ অসুস্থতা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর জন্য আমাদের দেশে তেমন কোন সুব্যবস্থা না থাকলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনেক সাইক্রেটিস রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত ও তাদের চিকিৎসা সেবা করে যাচ্ছেন। মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশের সাইক্রেটিস এর অভাব আর বাংলাদেশের সাইক্রেটিস দের যে অবমূল্যায়ন সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি পরিবারের গার্ডিয়ানদের সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরী তাদের সন্তান সন্ততি কিরকম ভাবে জীবন যাপন করছে সেটা লক্ষ্য রাখা এবং তারা কি চায় তারা কি অনুভব করছে তারা কি করছে কার সঙ্গে চলছে এগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এমনকি তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ এর মাধ্যমে তাদের সাথে স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধুর মতোই কথা বলা যাতে তারা তাদের মনের কথা অকপটে বলতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটা হতে পারে যে কাজটি করতে তারা ভয় পায় সে কাজটাকে সহজ করে দেয়ার জন্য তাকে বারবার সেই কাজটি করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা। এবং একবার দুইবার তিনবার করার মাধ্যমে যেটা সে সহজ করে নিতে পারে এবং এক্ষেত্রে ভয়টাও কেটে যেতে পারে এ কাজটি করার কোনো বিকল্প নেই। মানুষের মধ্যে যখন মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন সে মানুষটা অত্যন্ত বিপর্যয় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত করে যা স্বাভাবিক মানুষের মধ্যে সে গুণাবলীগুলো থাকেনা।

অনেকভাবে দেখা যায় মানসিক রোগীরা মানসিক সমস্যার মধ্যে অবস্থান করে অনেক ভুল করতে পারে। সে ক্ষেত্রে যখন আপনি আপনার পরিবারের কোনো সদস্যকে এই সমস্যার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করতে দেখবেন তখন সর্বদা তাকে নজরদারির ভিতর রাখা উচিত এবং সে যাতে এমন কোন ভুল কাজ না করে যা তাড়াতাড়ি জীবনের অনেক জটিল সমীকরণ গুলো পরিবর্তন হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় রিহাব সেন্টার গুলোর ড্রাগ এডিক্টেড মানুষদেরকেই চিকিৎসা দিয়ে থাকেন তবে আমাদের দেশে মানসিক রোগের জন্য কোন সুব্যবস্থা রয়েছে বলে তেমন কোন এনজিও কোন সংস্থাকে দেখাই যায়না বলা চলে।

তবে আমি আগেও বলেছি মানসিক রোগ মানে যে একজন মানুষ পাগল তা না। তবে পাগলদের জন্য একটা সুন্দর হাসপাতাল রয়েছে যেখানে তাদেরকে নানাভাবে ট্রিটমেন্ট এর মাধ্যমে সুচিকিৎসার মাধ্যমে সেরে তোলা হয় কিন্তু পারিবারিক সামাজিক অর্থনৈতিক দারিদ্রতা ও বেকারত্বের কারণে যে সমস্ত ছেলে মেয়েরা মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হন তাদের জন্য অবশ্যই সাইক্রেটিস এর প্রয়োজন। এদেশে সুদখোর ঘুষখোর ফ্রড চাঁদাবাজ ছিনতাইকারী এমনকি নানা ধরনের সামাজিক অপরাধের মধ্যে জড়িত এমন সব মানুষের জন্য কোন চিকিৎসার সুব্যবস্থা নেই যাদের কে ট্রিটমেন্ট এর মধ্য দিয়ে একটা সুন্দর জীবন উপহার দেয়া যায়।

আমাদের দেশে মেডিকেল সাইন্স এতটা উন্নত নয় তবুও যতটুকু রয়েছে আমি যদি আমরা নিয়মিত যাওয়া আসা করি সংসার করি বা সাইন্টিস্ট সাইক্রেটিস্ট দের পরামর্শ গ্রহণ করি তাদের আলোচনায় অংশগ্রহণ করি তবে আমরা অনেক কিছুই নিজেদের মধ্যে থেকে সংশোধন করতে পারি। বহিঃবিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়তাদের মধ্যে শারীরিক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক অসুস্থতা অত্যন্ত বেশি হয়ে থাকে যে কারণে সাইকেলটি তাদের মূল্যায়ন অত্যন্ত বেশি। এমনকি তারা নিয়মিত সাইকেলিস্ট দের আলোচনা শুনতে যায় এবং তারা একটা সময়ে সুস্থ হয়ে ওঠে।

একজন সাধারন মানুষ একজন মানসিক রোগের সমস্যার লেভেলটা বুঝতে না পারলেও একজন বোধ সম্পন্ন মানুষ বুদ্ধিমান মানুষ তার বুদ্ধিমত্তা দ্বারা সেই মানুষের মানসিক সমস্যার লেভেলটা অনুভব করতে পারে। যারা এই সমস্যা গুলোকে ক্যারি করে চলছে তারা যেকোনো মানুষের কাছে বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। এটা আবার কোনো অবকাশই নেই যে সে মানুষটা ক্রেজি হয়ে উঠবে না। এবং অন্যের ক্ষতি করে বসবে না এর জন্য সে নিজের চেতনাবোধ কে ব্যবহার করে না তবে এই চেতনাবোধ কে ব্যবহার না করলেও তাদের মানসিক সমস্যা টা এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যায় যার দ্বারা সে মানুষটা একটি চরম দুর্ঘটনা ঘটানোর জন্য প্রভাবিত হয়।

আর এই প্রভাবিত হওয়ার কারণে নানা ধরনের ভুল কাজ করে বসে এবং অপরাধ জগতের মধ্যে হাত বাড়ায় যে অপরাধ টা তার দাঁড়ায় করার কোন কথাই ছিল না। আরো দুইটি মানসিক রোগের কথা আমি পরিষ্কার করব এক হল নিউরোসিস ও অন্যটি হলো ফাইব্রোসিস নিউরোসিস মৃদু মানসিক রোগ এ ক্ষেত্রে রোগী নিজেই বুঝতে পারেন সে কি করছে আফসোস হলো সাইক্রোসিস রোগী তার নিজের মস্তিষ্ক জ্ঞানের যেকোনো ধরনের গায়েবি নির্দেশ শুনতে পারেন মানে বোঝা যাচ্ছে যে সেই মানুষটি তাঁর মানসিক রোগের কারণে বাস্তব জগত থেকে বিচ্ছিন্ন। যেমন ধরেন সাইক্রোসিস রোগী বাইরে অথবা ঘরে অবস্থানকালীন ঘরের বাইরের যেকোনো মানুষের আচরণের কারণে যে কোন একটা দুর্ঘটনা ঘটাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না কারণ সেই মানুষটা তার সাইক্রোসিস রোগের মধ্যে এতটাই গভীর ভাবে ডুবে যান যে সে নিজে কি করছে নিজে কি বলছে নিজে কি অনুভব করছে সেটাই সে জানেনা।

একজন সাইক্রোসিস রোগের দ্বারা একজন মানুষকে হত্যা করা খুবই সহজ ব্যাপার এটা একটু অত্যন্ত জটিল রোগ। রোগের লক্ষণ টা আমাদের সমাজে পরিবারের অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যমান। ”মানসিক ব্যাধি” সন্দেহপূর্ণ আচরণ বা সন্দেহ করা একটি বড় ধরনের মানসিক ব্যাধি এই ব্যাধির সমস্যা সৃষ্টি করা একজন সুস্থ মানুষের দ্বারা কখনো সম্ভব নয়। সুস্থ মানুষরা কখনোই এ ধরনের আচরণগত জটিলতার মধ্যে পরেনা এই ব্যাধির সংস্পর্শে আসে তারাই যারা সহসাই মানসিক সমস্যার মধ্য দিয়ে নিজেকে অতিক্রম করছেন। মানসিক রোগ কিম্বা বা মনোরোগ ইংরেজিতে যাকে বলে “mental disorder.”

মানসিক রোগ বা মনোরোগ এক ধরনের ব্যবহারিক কিংবা মানসিক দুর্দশা যা সাধারণত সামাজিক পারিবারিক কিংবা সাংস্কৃতিক বিষয় দ্বারা মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। যুক্তি ও বিজ্ঞানের উন্নত যুগে প্রবেশ করে আমরা বুঝতে পারছি এই ধরনের অনেক নিয়ম-নীতিকে পরিবর্তন করে নতুন নতুন তথ্যের মাধ্যমে তার নাম দেয়া হচ্ছে। এমন কি সময়ের সাথে সাথে সমাজ সংস্কৃতি নানা ধরনের তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে জ্ঞান বিজ্ঞানের সহায়তায় সেই সকল সমস্যার গ্রহণযোগ্যতার পরিধিকেও পরিবর্তন করে আসছে। যদিও এর অনেক কিছুই সমাজ স্বীকৃত। বিজ্ঞানের বর্তমান ধারণা অনুযায়ী বোঝা যায়। জিন বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জটিল পারস্পারিক ক্রিয়া-কলাপ এর মাধ্যমে জটিল এবং কঠিন রোগের (মনোরোগ) বিস্তার লাভ করে। এসব হওয়ার পেছনে মস্তিষ্কের জটিল ক্রিয়া-কলাপগুলো সচেতন কোষ দ্বারা দুর্বল হওয়ার ফলেই এই সমস্যাগুলো তার গঠন ক্রিয়াকে যোগ করে থাকে।

বা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা যায় “মানসিক রোগের জিনতত্ত্ব ও সম্ভাব্য ফলাফল সেই ব্যক্তির জৈবিকও পারিপার্শ্বিক পরিকাঠামোর সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত” তবু আমরা অনেক ক্ষেত্রে জানতে পারি যে মানসিক রোগের কারণ গুলো অনেক ক্ষেত্রেই অসুস্থ থাকে যা আমরা খুব সহজভাবে নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয় সেটি নিয়ে আমাদের আরও গভীরভাবে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তার পরেও রোগের সমস্যার উপর ভিত্তি করে তার তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে কিংবা নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে খুঁজে বের করা অসম্ভব কিছু নয়। তবুও এর ফলাফল গুলো একই দিক নির্দেশ করতে পারে যার দ্বারা রোগের স্বাভাবিক ট্রিটমেন্ট পরিচালনা করা সহজ ভাবে সৃষ্টি হতে পারে।
আমরা দেখতে পারি মানসিক রোগ সাধারণত একজন ব্যক্তির আচরণ অনুভূতির সমন্বয় দ্বারা সংঘটিত হয় কিংবা তার মতানৈক্য কার্যকলাপ ও রোগীর সাথে একজন মানুষ কি ধরনের আচরণ করছে ঠিক তার দ্বারাই সংজ্ঞায়িত হতে পারে বা নির্দেশ করতে পারে।

মানসিক রোগীর আচরণ তার মস্তিষ্কের বিশেষ অঞ্চলের যে কোষগুলো রয়েছে ফাংশনগুলো রয়েছে তার সাথে সংযুক্ত। আমাদের মানসিক ব্যাধি একটি মানসিক রোগের দিক নির্ণয় করে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত।
এ ধরনের জটিল কঠিন সমস্যাগুলো মোকাবেলার জন্য কিংবা কমিয়ে আনার জন্য পারিবারিক সামাজিক পারিপার্শ্বিক নিয়ম ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা উচিত বলেই বিবেচনা করে থাকি যা একটি রোগীকে সুস্থতা দান করার জন্য যথেষ্ট সহায়ক বলে বিবেচনা করা হয়।

আমার ঘর হতে বাংলাদেশ খুব কাছে

GOCnGRpteniHFeYlfLOflwOyxUT

আগুন আগুন স্লোগানে মুখরিত রাজপথ
আগুনের কসম করে বাকবাকুম নেতাজি
দ্রব্য মূল্যের আগুনে পুড়িয়ে মারবো
গুম করবো, খুন করবো, মাদকের সুগন্ধি দিবো
মিথ্যার জোয়ারে আয় বাড়াবো, ইউরোপের নাগরিকও করবো।

এক শিয়ালের হুক্কাহুয়ায় সব শিয়াল
সুর করে বাজনা বাজাবো, তাল লয় বিহীন মিউজিক বাজিয়ে আকাশে উড়বো।

আগুনে পোড়ানোর বর্জ তেল নদে ঢেলে জল করবো,
টুকরো টুকরো মানুষ বানাবো, ভয় পেয়ে কাঁদলে কেউ গ্যাস বিদ্যুৎ এর তাপ দিবো।

মানুষের চোখে মুখে ফরমালিন দিবো
কখনো কখনো ভালো বিচারের প্রহসন করবো
এইসব দেখে চুপ না থাকলে টুপ করে জলে ভাসাবো।

জল জমা রাখতে নদীর সাথে সন্ধি করবো।
বাতি নিভানোর মতো সূর্যকে আড়ালে করে কিছুটা অন্ধকারের আয়োজন করবো।

তারপরও নিদ হীন চোখ জুড়ে‚ আলোর খোয়াব
তুমি যাকে নগণ্য বলো‚ আমি তাকে মানব ভাবি।