ইকরামুল শামীম এর সকল পোস্ট

ইকরামুল শামীম সম্পর্কে

ইকরামুল হক ( শামীম ) পেশা : সমাজকর্মী, লেখক ও আইনজীবী । জন্মস্থানঃ ফেনী বর্তমানঃ ঢাকা, বাংলাদেশ স্ট্যাডি ব্যাকগ্রাউন্ডঃ ১.মাস্টার্স ইন ভিক্টিমলজি & রেস্টোরেটিভ জাস্টিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ২. মাস্টার্স ইন পলিটিক্যাল সাইন্স। ৩. ব্যাচেলর ডিগ্রী অব সোশ্যাল সাইন্স। ৪. ব্যাচেলর অব 'ল'। কর্মঃ ১. ফাউন্ডার, বাংলাদেশ রেস্টোরেটিভ জাস্টিস সোসাইটি. ২. জুনিয়র ল'ইয়ার, জেলা জজ কোর্ট। ৩. এক্স এ্যাস্ট. কো-অর্ডিনেটর, বিশ্ব সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরোধী সংস্থা, বাংলাদেশ। ৪. এক্স- ট্রেইনার(HIV & DOWRY), টালফ অর্গানাইজশন, বিডি। বর্তমানে তিনি " ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা এবং অপরাধীদের সংশোধন" নিয়ে কাজ করছেন। রাজনীতিঃ দেশপ্রেম। প্রিয় লেখকঃ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নির্মলেন্দু গুন। সখঃ ভ্রমণ করা, কবিতা পড়া এবং দাবা খেলা।

সুবিধাবাদী

Untitled-1-1 copy
আমরা মুসলমান
দাঁড়ি রেখে টুপি মাথায় মিথ্যা বলি,
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি
তসবিহতে আল্লাহ আল্লাহ জিকির,
পরনিন্দায় বেঁহুশ আমি
কারে মেরে কি খাবো এই ধান্ধায় জীবন চলি,
হায়রে! বাঙ্গালী মুসলমান,

দিন শেষে বেশ্যার ঘরে
ওয়াজ নছিয়ত টিভির ভিতরে
টিভিকে কিন্তু শয়তানের বাক্স বলি
আমি ভাই বাঙালী মুসলমান,

মা বাবাকে খুঁশি রাখতে
পাড়া পড়শীর বাহ্ বাহ্ পেতে
কালো বোরকা হিজাবে ঢুকে
পর পুরুষের বাহু তলে রঙ্গ করি
আমি ভাই পর্দাতে মুসলমান,

হজ্ব করেছি, নাম করেছি
তবে কথায় কথায় গীবত ধরি,
মহল্লার মসজিদের ইমাম আমি
অমুকের বাড়ির খাবার কেমন বসে বসে চিন্তা করি
রাতের বেলায় ফেইসবুকেতে
লাভ ওয়াও ইমুজিতে ব্যস্ত থাকি,
বাহ্! বাহ্! আমি সুবিধাবাদী কিন্তু মুসলমান,

গান-বাজনা হারাম
তবে বিয়ে বাড়িতে হইহুল্লোড় হিন্দি গান,
সুদ খাওয়া মায়ের সাথে যেনা করা সমান
তবে উপড়ি কামাইয়ে টাকা লাগাই
আমি মুসলমান,

পরনারী দেখা হারামহুজুর মিয়া বুলি ছাড়ে
পানি পড়া আর তাবিস লেখে
পরো নারীর মুখোমুখি হুজুর কিন্তু এইসব সারে,
মাওলানা ভাই ওয়াজ ঝাড়ে মা-বাবার সেবা করো
তবে নিজের বেলায় মা আজ তোর ঘরে
কাল মেজো ভাইয়ের, পরশু সেজো’র ঘরে খাবে
একা হলে বৃদ্ধাশ্রমে
ও ভাই! আপনি কেমন মুসলমান?

রমজানেতে বেস ধরি, খালি পেটে সব করি
ইদ এলে নতুন খুঁজি, বিকেল হলে মদে মাতাল
প্রতিযোগিতায় কোরবান করি, তাল পড়েছে হাতে নিলাম
দোষ কি তাতে! আমি কিসে মুসলমান?

লিখতে গেলে সাগর হবে, আমি বললে নাস্তিক মোরতাদ
নিজের দিকে তাকিয়ে দেখুন কি আছে নিজের ঈমানে
গাড়ি বাড়ি, টাকা পয়সা কাল কি যাবে তোমার-আমার কাফনে?

এইসব কিছুর মূলে আমি নামের মুসলমান
মানুষ কবে হবে খাঁটি মানুষ জানে রাহিমুর রহমান।

২৩:৫০
২১/০৯/১৮ইং

আক্কেল সেলামী

873947

শীতের কোনো এক সন্ধ্যা! বাড়ি থেকে চট্টগ্রাম যাবো, আমার অনেকদিনের ইচ্ছা বিনা টিকেটের যাত্রীদের মত আমিও ট্রেনে যাই। তাই ভাইয়ের গাড়িতে না গিয়ে চলে গেলাম ফেনী রেল ইস্টিশনে। অপেক্ষার প্রহর শেষে ১৮:০৫’র ট্রেন আসলো ১৯:১০টায়। টিকিট ছাড়াই উঠে পড়লাম ‘ঠ’ বগিতে। ভিতরে দেখা হল আমার এক বন্ধুর সাথে। সে সিলেট থেকে তার স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছে। তাদের সাথে কুশল বিনিময় করতে করতে ট্রেন ছেড়ে দিল। আমি যে বিনা টিকেটের যাত্রী তার বৌর সামনে কেমনে বলি তাই সিগারেট খাওয়ার নাম করে আমি চলে এলাম দরজার পাশে। শীতের সন্ধ্যা বেলার বাতাস লাগছে; আমি চাদর মুড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছি আর কল্পনার রাজ্যে নিজেকে হারিয়ে দিলাম। হঠাৎ চা ওয়ালার ডাক; আমার ঘোর কেটে গেলো। এক কাপ চা খেয়ে দরজার পাশে পা দিয়ে মেঝেতে বসে পড়লাম। জোৎস্না রাতে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগে মগ্ন ছিলাম। হঠাৎ অনুভব করলাম আমার পিঠের সাথে নরম কি যেন লাগছে, পিছনে তাকাতেই দেখলাম তিনটা মেয়ে আমার মাথার উপর দিয়ে বাহিরে উঁকি দিতে চেষ্টা করছে। আমি কিছু না বলে বাহিরের দিকে মনোনিবেশ করলাম। তারা আমাকে উঠানোর জন্য কখনো গণ্ডার ( ঠান্ডা পড়ছিল) আবার কখনো চাচা ( চাদর মুড়িয়ে বসেছিলাম) বলে কটূক্তি করছিল। অনেক চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে নরম সুরে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকছিল। আমিও নাছোড় বান্দা, শুনেও না শোনার ভান করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। শেষ মেশ উপায় না পেয়ে আমার পিঠের উপর হাত রেখে ডাকছিল। তারপর আমি উঠে জানতে চাইলাম-

কি সমস্যা?
আমরা দরজার সামনে দাঁড়াবো, আপনি সরেন।
আমি বললাম- মাইয়াদের ইয়েনে আইয়ুন নিষেধ।
আন্নেরা ইয়েনতুন যান।
একজন বলল-
আমরা এইখান থেকে যাব না, any problem?
আমি- ইংরাজি বুঝিনা, বাংলায় কন।
তারা হাসতে হাসতে আমাকে ক্ষেত, পাগল-ছাগল বললো, আমরা না গেলে আপনার কি সমস্যা?
আমি- আঁরতুন সিট নাই, হিল্যেই আঁই ইয়নে বইছি।
তারা- আমাদের সিটে গিয়ে বসেন।
আমি – না।
তারা- তাহলে আমাদের পিছনে দাঁড়াই থাকেন।
আমি কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।
তারা ইংরেজি বাংলা মিশ্রণে ছেলেদের নিয়ে বকবক করেই চলছে।

[১৫মিনিট পর]
আমি – এইযে আপনারা সরেন।
একজন- No.
আমি ইংরেজীতে কয়েকটা বাক্য তাদের উদ্দেশ্যে বললাম।
তাদের একজন- বাহ্ ! বেশি চালাক।
আমি- চেষ্টা করছি, এখন চলে যান।
আবার তারা ভুলভাল ইংরেজী বলছে।
আমি – আপনারা কি করেন?
অনেক ভনিতার পর তাদের একজন- আমি JSC দিলাম, উনি আগ্রাবাদ মহিলা কলেজে HSC 1st year আর অন্যজন অনার্সে ভর্তি হবে। আপনি কি করেন?
আমি – এম.এ, এল.এল.বি পড়ছি।
তারায় মাথায় হাত দিয়ে ভাইয়া অনেক ডিস্টার্ব করেছি, sorry..
আমি – its ok.
চলে গেলো তারা।

আমি সিগারেট ধরালাম আর মনে মনে হাসলাম, এই বয়সের মেয়েরা বুঝি পাখির বাসায় পাখা গোছানো ছোট পাখির মত উড়াউড়ি করতে চায়, এক পর্যায় হঠাৎ করে নিচে পড়ে যায়। যাইহোক, কিছক্ষণ পরে আসলো দুইজন। ( মনে হচ্ছিল ৩০ কি ৩২ বছরের দুইজন মোহনীয় মহিলা)
না তারা মহিলা নয় হিজড়া।
হিজড়া- এই দাঁড়া, দাঁড়া আমার পেয়ারে লাল।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
হিজড়া এসে আমার একদম মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো-
টাকা দে; নইলে তোর ঠোঁট কামড় ধরবো।
আমি তাড়াতাড়ি একশ টাকা বের করে দিলাম।
টাকা নিলো না। আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললো আমি কি শুরু করবো?
আমি ওদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দুইশত টাকা দিলাম। তারপর আমার গালে একটা টোকা দিয়ে চলে গেল।

ট্রেন ও এসে ইস্টিশনে থামলো। ৮০ টাকা দিয়ে টিকেট না করে ২০০ টাকা হিজড়া কে দিতে হলো।

দীর্ঘ নিঃশ্বাস

223133

রাগ হয় না
কিম্বা ঘেন্না, কিছুই না
শুধু আপসোস,
বুঝলে না, তুমি জানলেও না
শুধু রাবনের চরিত্রে আমায় ধারন করো
কিন্তু এ ক্ষিতির মাঝে পূর্ণিমার শীতলতা
কখনই অনুভব করতে চাওনি,
এ আমার ব্যর্থতা,
একান্ত ভালবাসার নিরস পরাজয়।

নির্বাসিত একাকী যাত্রার লগ্নতায়
ফের আমায় রুদ্র করে, রুক্ষ করে
দু’চোখের প্রান্তর সাহারা মরুভূমির চেয়ে উত্তপ্ত
একফোঁটা নেত্রজল নেই; যে কষ্ট চুষে নেবে!
তবুও বেঁচে আছি ফের যদি বুঝো কিম্বা জানো
অথবা প্রত্যাবর্তনের প্রতিক্ষার দায়ে বেঁচে থাকা।

ভালবাসার একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাসের প্রতিক্ষা নিয়ে
নতুন রুপে তুমি আসবে তাই
আমি একশতো কোটি বছর তোমার হাত ধরে
জ্বলতে চাই, জ্বালাতে চাই।

পরিমনি: যত দোষ নন্দ ঘোষ

Sc211052_1

সম্রাট আর পরিমনিই কি শুধু দোষী! নেপথ্যে যারা, তারা কারা?

মদ হারাম। মদ পান শাস্তিমূলক অপরাধ। দণ্ডবিধিতে মদপানের শাস্তি ২৪ঘন্টা থানা হাজত অথবা ১০টাকা জরিমানা। মানলাম কিন্তু বুঝতে পারলাম না তাই জানতে চাই, বাংলাদেশে এতো মদের বার কেন? বিদেশী মদ আসে কোথায় থেকে? কে বা কারা ইমপোর্ট করে?

আমরা বেশ্যা বলি। দেহব্যবসায়ী বলি। সমাজে নষ্টা বলি। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে আমরা পুরুষরাই তাদের ভোগ করি। আমি বেশ্যাদের সম্মান করি কারণ তারা তাদের জীবিকার তাগিদে তুমি পুরুষের শয্যাশায়ী হয় কিন্তু যারা প্রেম-ভালবাসার নামে অবৈধ মেলামেশা করে তাদের কি বলবেন?

বাংলাদেশে যদি টাকার বিনিময়ে সেক্স করাকে নিকৃষ্ট মনে করা হয় তাহলে ৯৫ভাগ যুবক-যুবতী প্রেমের নামে রাসলীলায় লিপ্ত হয় তাদের যৌনাচারকে আপনারা কি বলবেন? আমার দৃষ্টিতে সবাই বেশ্যা এবং চরিত্রহীন পুরুষ।

কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা সংবিধান বর্হিভূত। কেউ যদি অপরাধ করে তাকে আদালতে অপরাধী হিসেবে আখ্যায়িত করবে এবং শাস্তি প্রদান করবে অথচ আমাদের দেশে পুলিশ প্রশাসনের বরাতে মিডিয়া যে কাউকে মাদক কারবারী, রাতের রানী উপাধিতে ভূষিত করেন, এইটা কি সংবিধান বর্হিভূত নয়? কোন আইন বলে বাকস্বাধীনতা হরণ করে?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কত শতাংশ নেতা-কর্মী মদ পান করে না! আমার তো মনে হয় ৯৫শতাংশই মদপান করে থাকেন। বিশ্বাস হচ্ছে না? চলেন বিভাগীয় শহরগুলোর নামী-দামী হোটেল গুলো ঘুরে আসি তাহলে দেখতে পাবেন, কে বা কারা মদ খায়। বোট ক্লাবে বসে মদ খাওয়া যাবে কিন্তু বাসায় রেখে খাওয়া যাবে না এইটা কোন ধরনের আইন?

যে সমাজ বলে পরিমনি বেশ্যা, সম্রাট ক্যাসিনো ব্যবসায়ী আমি তাদের বলি, কষ্ট করে আপনি আপনার নিজের কথা ভাবুন আপনি কতখানি সৎ, আপনার বন্ধু-বান্ধব কতজন সৎ, আপনার সমাজে কতজন সৎ? তাহলে বুঝতে পারবেন, যত দোষ নন্দ ঘোষ।

আমরা পরিবর্তন চাই, আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু যখনই পরিবর্তনের কথা বলা হয় তখনই নাস্তিক, মাদকাসক্ত, মাদক কারবারী, বেশ্যা কলঙ্ক নিয়ে জেল হাজতে যেতে হয় কিংবা নির্বাসিত হতে হয়। তবে কেন?

রাজনৈতিক নিছক স্বার্থের জন্য আমরা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমনকি হলুদ সাংবাদিকদের জালে আমরা বন্দি। মুক্তি চাই। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন দেশে সাধারণ নাগরিক হিসেবে সজীব নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচতে চাই।

পরিশেষে বলতে চাই, মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন ঘটানোর প্রয়োজন তাই প্রগতিশীল হওয়ার আহ্বান রইল।

নিশ্চুপ প্রভু

0320

ধর্ম তবে কিসের তরে
ধর্ম যদি মানুষ মারে!
ধর্ম এখন ব্যবসা ভাই
অমুক ধরো, তমুক মারো, আমি বেঁচে যাই।

ইমাম, ঠাকুর, ভিক্ষু, পাদ্রী
ধর্মের বাণীতে পোড়ায় মানবতা,
কিসের ধর্ম, কিসের বাণী
যদি না থাকে সহমর্মিতা।

কোন বাণীতে কোথায় আছে সাম্প্রদায়িকতা
খুলে দেখাও কোরআন, বাইবেল, ত্রিপিটক, গীতা।
আমি জানি, সবই জানি কিন্তু মানি না,
এমন ধর্ম কেন প্রভু যে ধর্মে মানুষ বাঁচে না!

আস্তিক নাস্তিক মারামারিতে
প্রভু এখন নিশ্চুপ এই মেদিনীতে।

নারী তোমারে সেলাম

7376

নারী তুমি অহংকার
সে-তো মা
শাসনের ছলে ভালবাসার ঝংকার।

নারী তুমি প্রচন্ড টান
সে-তো বোন
কখনো খেলার সাথী কখনো হাতেখড়ির দান।

নারী তুমি অর্ধেক জীবন
সে-তো সহধর্মিণী
রস-কষে চলা আমরণ।

নারী তুমি ইতিহাস
তেরেসা,রোকেয়া এমনকি অজানা বহু নারী
অনেক কিছু শেখার বাণী।

নারী তুমি প্রেম
গুপ্ত ভালবাসায় ভেসে গেলাম
তোমারই আমার সেলাম।

আপন ভাবি

41692023

আপন ভাবি
আপন ভেবে পাশে চলি
আপন আপন করে সব কথা বলি
সীমারের মত তীর ছুঁড়ে আপন যাদের মানি।

পথে পথে কতজনের দেখা
কত-শত হিসেব কষে আপন হলো যারা
মুখে মুখে আপন তাদের, অন্তরে বিষ ভরা
আপন হতে পারে কয়জন স্বার্থ ছাড়া!

আপন আপন করে আপন হতে গিয়ে
উষ্ঠা খেলাম বারংবার আপন পায়ে,
বহুপথ পাড়ি দিলাম আপন সাথে নিয়ে
মাঝপথে বুঝ এলো, আপন কেউ নারে।

আপনের মাঝে আপন খুঁজি
আপন কেউ না,
আপন কারা! আপন তারা যাদের আছে বেশি
আপন হতে পয়সা লাগে
পয়সা ছাড়া স্বার্থ লাগে,
অর্থ দিয়ে আপন হবে, ক্ষণিক মায়ার ঘাটে।

সময়ের, ফুরসতে যখন সর্বহারা
আপন তখন স্বার্থ নিয়ে চলে যাবে, তুমি দিশেহারা,
বেসামাল উন্মাদ যখন তুমি নীড়ের খোঁজে
তোমার আপন কেউ না তখন তুমি বিনে।

আপন পথে সফল হও,
সফল হলে আপন হবে জনে জনে,
আপন মনে শান্তি ভেঙে
স্বার্থপরতার ঢাল চুরমার করে
হিংসুটে মনে মানবতার প্রদীপ জ্বালিয়ে দাও।

১৮ঃ৪০
১০/০৩/২০২১ইং

তোমার দৃষ্টান্ত

IMG_201

তুমি গ্রীষ্মের তীব্র কিরণ
তুমি হিমেল সমীরণ,
তুমি চঞ্চলায় চমকানো রাত্রী
তুমি শরতের শুক্ল অম্বুদের উঁকি।

তুমি হিমাংশুর প্রভা
তুমি আগ্নেয়গিরির লরুণ আভা,
তুমি অচেনা পতত্রীর কিচিরমিচির
তুমি নিশাবসানের একফোঁটা শিশির।

তুমি মহীধ্রের নির্ঝর
তুমি জোনাকি ভরা শর্বর,
তুমি অবনীর এক প্রতীতি
তুমি আমার নেত্র দৃষ্টি।

সরিৎ যেমন অম্বুধির সাথে মিলত হয়
আমিও তেমন তোমায়
কল্পনায় এঁকেছি, ভাবনায় পুষেছি, স্বপ্নে সাজিয়েছি।

১৬:১০
৩১/০৩/২০২১ইং

স্বাধীনতা তুমি কি

poster

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো হবে এই অদমে বিলীন
নাকি উত্তপ্ত পিচঢালা পথ
হবে রক্তে রক্তাক্ত রঙ্গীন,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো নুয়ে পড়া লজ্জাবতী কাঁটা
নাকি বালিকার আত্মচিৎকার বদ্ধঘর
হবে নীলিমার নীল নীলাঞ্জনার ভাটা,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো রবে কৃষকের মুখে হাসি
নাকি উজানে পালিয়ে যাওয়া স্রোত
হবে কালো কালান্তর কালিয়া রাশি,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো সইবে বেকারের অর্থ
নাকি এলিট মঞ্চের মুখো বানী
হবে লাল লালার লালায়িত ব্যর্থ,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো বইবে নিরীহের নিপীড়ন
নাকি জনদরদী তারার ঝলকানি
রইবে ডুব ডুবরীর ডুবন্ত বিচরণ,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো পাবে ত্রিশ লক্ষের স্বাদ
নাকি কালচে মেঘের আড়ালে ধূমকেতু
যাবে! না নিয়ে নেমন্তন অন্তিম বিষাদ,

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো আসিবে মিলন সুখের রজনী
নাকি বই পৃষ্ঠে অংকিত শুধু ইতিহাস
কবে হবে জীব জীবন্ত জীবিকায় সৃষ্টিতে ধরণী

স্বাধীনতা তুমি কি
কখনো ফুটবে সুভাসিত রজনীগন্ধা ফুল
নাকি তোমার-আমার হাতে ঐ দেশের মিষ্টি নেশা
হবে বিষ বিশেষণে বিষায়িত সমাজকুল!

বিদায় জানাবো

3439333

একদিন
সবাইকে বিদায় জানাবো,
সে বিদায় হবে
হয়তো অনিচ্ছাকৃত বিদায়,
তবুও আমি জানাবো।

যারা হেয় করে হাসে
যারা হিংসার দৃষ্টিতে কলুষিত করে
যারা ছোট করতে উঠে পড়ে লাগে,
যারা অন্যের কাছে নিচু করতে ব্যস্ত থাকে,
আমি তাদের খুশি করবো,
খুব শীঘ্রই আমি তাদের জয়ী করবো।

জীবন মরুভূমিতে হাঁটতে হাঁটতে
খুব তৃষ্ণার্ত, সে তৃষ্ণা নিয়ে
এক ফোঁটা জলের নেশায় হোঁচট খেয়ে
বারংবার পড়ছি লুটিয়ে।

দুর্বল পথিক, বেসম্ভব মাতাল পরাজয়ে
এই দুর্বলতার সুযোগে
যারা রেখেছে তাদের হাসিতে,
দু’চার পয়সা করুণার বিনিময়ে
যারা কাছে টানে,
আমি তাদেরও মুক্তি দিবো, বিদায় জানাবো।

খুব শীঘ্রই
জীবন খেলার সমাপ্তিতে
তোমাকে জিতিয়ে
আমি সবাইকে বিদায় জানাবো।

আশার উঁকি

CYMERA_20

হতাশার চাদরে স্বপ্ন
তবুও সাজিয়ে বহুদূর
চলতে চলতে হঠাৎ
পথের মাঝে ধর্ষণ,
ভাগ্য ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা
জারজ হয়ে চাহিদার জন্ম,

এক একটি চাহিদা
অট্টহাসির আঘাতে
থেতলে গিয়ে পচন ধরেছে,
মুমূর্ষু
হয়তো এই পচন ক্যান্সারে
কেমোথেরাপিতে ন্যাড়া হবে
অথবা মৃত্যুপুরীতে
শেষ তীর্থ।

তবুও
এক চিমটি আশার উঁকিতে
মনের পরিত্যক্ত ভিটায়
আবার স্বপ্নের আবাস,
আরেকটু সময় মাঙছি
শত চেষ্টায়
ফুল ফোটাবো
যদি শেষবার কথা দাও।

তাদের কি বলবো

কাকে বলবো?

পরিবার! সমাজ! রাষ্ট্র!
চিন্তাধারা পরিবর্তনের কথা বলতে চাই
তবে কাকে বলি?
বলার মত তেমন কোনো মানুষ নাই।

যে পিতা নিপীড়িত মানুষের মুক্তির মহানায়ক
সাড়ে সাতকোটি মানুষের আস্থা
যে পিতার একটি তর্জনীর হুংকারে
ধর্মের ভেদাভেদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে
যে পিতা নিরীহ জাতির জন্যে
জালিম শাসকের সাথে ছিলো আপোষহীন,
সে তুমি পিতার জীবন-যৌবন ত্যাগে যে ভূখন্ডের জন্ম,
সে ভূখন্ড তার পিতার বুক ঝাঁঝরা করে
রক্তাক্ত অবস্থায় সিঁড়িতে ফেলে দিতে দ্বিধাবোধ করেনি,
যে দেশ শিশু রাসেলের বুকে বুলেট চালাতে
একটুও লজ্জিত হয়নি
সে দেশ পিতার খুনী, ছোট্টশিশুর খুনী।

এই খুনীদের কাছে কি আর বলবো!

যে ভূমিতে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ,
ভাইয়ের হাতে ভাই খুন,
সন্তানের কাছে লাঞ্ছিত পিতা মাতা,
দিন শেষে পুত্রবধুর ঝলসে যাওয়া কাহিনী,
যেখানে প্রেমিক-প্রেমিকার বিশ্বাস ফাঁসির দড়িতে,
যেথায় পরকীয়ার জেরে গলা টিপে সন্তান হত্যা,
যে দেশে বাতাসে বয়ে বেড়ায় ধর্ষিতা তরুণীর কান্না ,
অথচ এই দেশ চলে ধর্মের বাণীতে, ধর্মের দোহাই দিয়ে।
মুখে মুখে ধার্মিক বটে কিন্তু
অন্তরালে বর্বর, পিশাচ, অসভ্য এক জাতি।

সে তাদের কি বলবো!

যে দেশ চলে অশিক্ষিত নেতাদের দাপটে
অথচ উচ্চ শিক্ষিতরা থাকে তাদের পকেটে,
যে দেশ দুর্নীতিবাজ আমলাদের দখলে
যে দেশ রাজনৈতিক চোরাকারবারিদের হাতে বন্দি বলে
লাখো বেকার একটি কাজের সন্ধানে চাতকের মত একরাশ হতাশা নিয়ে বেঁচে থাকে,

এইসব মানুষদের বলে কি লাভ!

যেখানে অজস্র মানুষের রাত কাটে ফুটপাতে,
যে দেশে ধনীদের ফেলে দেওয়া ডাস্টবিনের খাবার
ছিন্নমূল মানুষের ক্ষুধা নিবারণের শেষ ভরসা,
যে দেশের মা সদ্য প্রসব করা সন্তান বিক্রিতে
কিংবা মাথার চুল বিনিময় করে পেটের ভাত যোগায়,

সেদেশের এই মানুষদের কি বলবো!

শুধু হৃদয়ের গভীর থেকে ভেসে আসে- হায়!
মানুষ তুমি দৃষ্টিভঙ্গি বদলিয়ে সমাজ বদলে দাও।

কষ্টের ফেরিওয়ালা

IMG_20210309_211023

আমি উদাসীন
আমি কষ্টপুরে থাকি
আমি নিরবে কাঁদাই, কাঁদি
কষ্ট নিয়ে চলি, কষ্ট ফেরি করি
আমি কষ্টের ফেরিওয়ালা।

স্বপ্ন দেখিছি সুখের শাসক হতে
তাই সুখের রাজ্য খোঁজে
সেইদিন রাজ্যপথে সবে যাত্রা একসাথে,
দু’কদম পা ফেলতে না ফেলতে বিবেক ক্ষয়ে
ইচ্ছার অজান্তে “ভুল” নামক যানবাহনে
উঠে গেলাম দু’জনে,
হঠাৎ উদাসীনতার প্রহসনে
অগনতি ত্রুটির সৃষ্টিতে,
থমকে দাঁড়ালাম মাঝপথে।

কোথায় আমি? কষ্টপুরে!
একক বাসিন্দা হয়েছি,
বণিকও বটে
কষ্ট মজুদে, আমি কষ্টের ফেরিওয়ালা।

যাতনার প্রেমিক আমি
গুপ্ত মনে ভালবাসি
ভালবাসা দিয়ে কষ্ট কিনি,
অশ্রু ঝরিয়ে বিশ্বাসের দাম দিতে জানি
কিন্তু তুমি বুঝোনি,
তোমার অন্তর চিলেকৌঠায়
অহেতুক চিন্তার লালনে
গড়ে তুললে ভুল ভাবনার বসতি,
আমার প্রতি
তাই কখনোই কোনো ভালবাসার জন্ম হয়নি, বরং
তোমার হৃদয়ে যতটুকু মায়া রেখেছিলে
তা তুমি ভুল বুঝে
সন্দেহের আগুন জ্বালিয়ে
কাছে থেকেও তুমি যোজন যোজন দূরে।

একাকীত্ব অনুভূতির অভিশাপে
নিজেকে পুড়িয়ে
নির্জনে
ভালবাসি একান্ত মনে,
সময়ের স্রোতে
অহেতুক ব্যবধান সৃষ্টিতে
আজ আমি কষ্টের ফেরিওয়ালা।

নিষিদ্ধ হয়েছি
১৪৪ জারি তোমার অন্তর বাগানে
তাতে কি?
ভ্রমরের বেশে
সেই বাগানে
নিশ্চিত আমি ভালবাসার ফুল ফুটিয়ে
সাজাবো নতুর বাসর, সে তোমাকে নিয়ে।

চাঁদ-সূর্য যেমন আকাশে
পৃথিবী যেমন সৌরজগতে
অমাবস্যা যেমন কালো রাতে
জোনাকি যেমন পুর্ণিমাতে,
আমিও তেমন অনীহা সরিয়ে
ভালবেসে, ভালবাসা রেখেছি একান্ত গোপনে।

ভুলের সমাহারে
যে ভাবনাদের সৃষ্টিতে
তুমি-আমি কাছে থেকেও দূরে
সেই ভুল পোড়াবো কষ্ট আগুনে,
অতঃপর
অনুতাপের দহনে এই আমি
আবার প্রেমিক মনে প্রেমিকার তরে
আবেগ, অনুভূতি, বিশ্বাস দিয়ে কষ্ট কিনে
কষ্টের বিনিময়ে
ভালবাসার রাজমহল গড়ে
সেই রাজমহলের প্রেম মসনদে
তুমি হবে রাণী, আমি ভালবাসার বিনিময়ে
কষ্ট কিনে
তোমাকে সাজাতে
আমি এখন কষ্টের ফেরিওয়ালা।

রচনার সময় কালঃ ২০:২০
০৯/০৩/২০২১ইং

বদল

IMG_2020

মেয়েটির রাগ যেমন জেদটাও তেমন
তবে তার মন শরৎ এর সাদা মেঘে ঢাকা
হঠাৎ পরিচয়ে জানতে পারি
তোমার আমার সম্পর্কের অবসানের সাথে একদম মিল
হীনমন্যতা নিয়ে মাঝে মাঝে বিরক্ত দিয়ে কথা বলার সুযোগ খুঁজি
আজ কথোপকথন…!

সেইসময়ের পাগলামীগুলো এখন আমার হাসি পায়
বিশ্বাসের মৃত্যুতে সাদা কাপড়ে সম্পর্ক আজ বিধবা
তাই আবেগ, অনুভূতির দাফনে
অতীত এখন শুধু হাসি বৈ আর কিছুই নয়।

তেমনই একদিন তুমি এই অধমকে স্বরণ করে মনে মনে বলবে-
পাগলটা ঠিকই বলেছিল- ” অতীত মানেই শুধু হাসি ”
তোমার হৃদয় রক্তাক্ত, যার বয়স বেশি হয়নি
আবেগের ঘা থকথকে, তাই এমন ভাবছো যে
কেন আবেগগুলো চিৎকার দিয়ে কাঁদছে?

আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, তুমিও একদিন বলবে-
তার জন্য আমার করা পাগলামীর কথা মনে পড়লে
নিজের অজান্তেই তোমার হাসি পায়
ভালবাসা, ক্রোধ কিংবা ঘৃণা কিছুই নেই, আছে শুধু অজস্র জিগাসা।

দেখো! আমি খুব ভালোই আছি
বাবুনীর বাপ আমার কত যত্ন নেয়!
বিনিময়ে শুধু মায়া ছাড়া আর তেমন কিছুই নেই আমার
অনীহা থাকা সত্ত্বেও রাতে প্রেমহীন যৌনতায় মিথ্যে হাসি দিতে হয়
কারণ ভালবাসা নেই, ভালবাসা কবেই খুন হয়েছে
তবুও নিয়মের ঘনীভূত চাহিদায়
সংসার নামক কর্কট রোগ নিয়ে বেঁচে থাকার নামই জীবন

আমি বলি বদলাতে হবে, এখনই সময়
ভাবীক্ষণে হাসির চেয়ে আবেগুলোকে চিতায় তুলে আগুন জ্বালিয়ে দাও
নতুন ভাবনায়।

সঙী হবে

061632947

মাংস নেই বললেই চলে, হাড্ডি আর চামড়ায় আমি
কুঁচকানো জামা পরিধান আমার স্বভাব
পথের ধারে সস্তা দোকানে খাওয়ার অভ্যেস
পকেট থাকে প্রায় ফাঁকা; নেই সময়ের অভাব
তাই দূরত্বেও হেঁটে যাই, ধূলাবালি গায়
ভালবাসবে আমায়??

চেহারাটা কন্দর্প, দেখতে শ্রী নয়তো বেশ।
অনিয়মের পঞ্চখানা আমাতে আমি; থাকে না হুঁশ
কারো দৃষ্টিতে পাগল আমি; আবার কারো সর্বনাশ
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন বুনি যদিও পাপ, কি করি বল
রাত-বিরাতে চাঁদের জ্বোৎস্না হয়ে থাকো আমার পাশে!
পূর্ণিমা দেখার মত আমার পানে হবে আনমনা?

চুলগুলো প্রায় আউলা-ঝাউলা, দাঁত কালচে
বিড়ির নেশা অনেক, সিগেরেট ক্রয়ে নেই পয়সা
মাঝে মাঝে বন্ধুদের দেওয়া অর্ধেকটাই টান দিয়ে ভাব
এই আমার বাউন্ডুলে জীবন। তবুও তোমার নেশায়
অজানা গন্তব্যে হেঁটে চলা, কালো রাতের সঙী হবে?