মহাশয় এর সকল পোস্ট

মহাশয় সম্পর্কে

মহাশয় আমার ছদ্মনাম। আমি ভারতীয়। ছদ্মনাম নেওয়ার পেছনে কারণ দ্বিধাহীনভাবে যা ইচ্ছা লিখতে পারার সুবিধা। অনেক সময় আসল পরিচয়ে স্বাধীনভাবে লেখা যায় না। আমি জীবনানন্দ দাসের মতো মনে করি না কেউ কেউ কবি। আমি মনে করি সবাই কবি। প্রতিটা মানুষ প্রেমে-বিরহে, সুখে-দুখে, বিপদে-দুশ্চিন্তায় যখন আবেগী হয় তখন হৃদয়ে কবিতা নেমে আসে। তখন চাইলেই যে কেউ কবিতা লিখে ফেলতে পারে। শিক্ষার বা জ্ঞানের কারণে অনেকের কবিতায় আকর্ষণীয় শব্দ বা বাক্য থাকে না। তবে সেই সময় তারা যা লিখে তা অবশ্যই কবিতা। সবাইকে আমার ব্লগে স্বাগতম।

দোজখনামা

কিচ্ছু ভুলিনি আমি, তুমিও কিছু ভুলো না
সুখের সব স্মৃতিগুলো করছে উন্মাদনা,
থেমে থেমে পথ চলা, ক্লান্তির গভীর ঘুম
পথে খুঁজে পাওয়া অজস্র সুগন্ধি কুসুম।

অতীত সবসময় সুন্দর হয়, প্রাকৃতিক নিয়ম
যতই বুলি আওড়ায় কিছু থাক মনের ইডিয়ম,
অন্য পাখির বাসায় পাখিরা কী বাসা বাঁধে?
কষ্টের তো অনেক ওজন, পারবে নিতে কাঁধে?

কিছু ভুলিনি আমি, ভোলা সম্ভবও নয়
দিন শেষে ভালো থাকার করে যায় অভিনয়,
জীবনের গল্প লিখলে হবে তা দোজখনামা
দিয়েছি মনটা তোমায় করেছি অসিয়তনামা।

জানি কিচ্ছু ভুলবে না তুমি, পথ চেয়ে রইবে
আগুনের উপর হেঁটে যাবে, কষ্টই শুধু সইবে,
এই জীবনে ভালো থাকা আর হয়তো হলো না
তোমার ঘরে অন্য কেউ, আমার ফাঁকা আঙিনা।

মধ্য রাতের প্রেম

কখনও –
মধ্য রাতে হঠাৎ যদি
একলা বড় লাগে
তোমাকে নিয়ে সুখের স্বপ্ন
আঁকতে ইচ্ছে করে।

তখন –
তুমি কি বলো আসবে হেসে
কাছে এসে বসবে পাশে,
আসবে কি তুমি পরীর বেশে
ধরবে জড়িয়ে ভালোবেসে!

তবে –
মধ্যরাতে উঠবে সূর্য
আমার আকাশ জুড়ে
দুঃখের মেঘ সরে এবার
সুখেরা বেড়াবে উড়ে।

তারপর –
তুমি আমি গল্পে হবো মশগুল
রাত দিব্যি যাবে কেটে,
স্বস্তির নিঃশ্বাসে প্রাণ জুড়োবে
আর প্রেম হবে অকপটে।

অসম্পূর্ণ

কত কথা বলা হয় নি তোমাকে
হৃদয় থেকে মুখে আসতে পারেনি,
দম ফুরিয়ে কোথাও হারিয়ে গেছে।
কতদিন জিজ্ঞেস করা হয়নি
এখনও কেন তোমার চোখ লাল?
ডার্ক সার্কেল আরও কতদিন
তোমার দু-নয়নকে অন্ধকার করে রাখবে।
কতদিন তোমায় বুকে জড়িয়ে ধরা হয়নি,
তোমার সব কষ্ট, চিন্তা দূর করিনি এক নিমেষে
খুশিতে তোমার চেহারায় দেখিনি মায়াবী হাসি।
কতদিন দুঃখের নদী থেকে সুখের সাগরে
মিশে যায়নি,
বিরক্তিকর সফর হয় না শেষ,
মোহনা না জানি কত দূর।
কতদিন স্বপ্নগুলো স্বপ্ন দেখা থেকে চাইছে ছুটি
অসম্পূর্ন স্বপ্নের বোঝা তাদেরও না পসন্দ
স্বপ্নপূরণের খুশিতে তারাও হতে চাই মাতাল।
কতদিন এভাবে রাতগুলো কেটে যাবে
বালিশ ভিজিয়ে, স্বপ্ন বুনে, অপেক্ষায়..
ডান কাত হলে কবে দেখবো তোমাকে শুয়ে থাকতে
আমার পাশে, আমার বিছানায়।
কতদিন এই রঙের দুনিয়া লাগবে সাদা কালো
কতদিন দুয়াগুলো কবুল না হয়ে ডুকরে কেঁদে মরবে,
কতদিন পাওয়ার ইচ্ছা আর না পাওয়ার দুঃখ নিয়ে
কাটবে দিন, কাটবে মাস, কাটবে বছর…
একটানা রাত দেখে বিরক্ত। এবার প্রভাত হোক।
এই মন বেচারা, নতুন ভোর দেখতে চাই।

চায়ের আড্ডা

4666_o

রৌদ্দুর যখন ঢুলু ঢুলু চোখে
সন্ধ্যাকে ছুঁতে যায়,
আমারও ইচ্ছে করে ছুঁয়ে দেখি
তোমার ব্যাকুল হৃদয়।

সন্ধ্যাবেলায় পাশাপাশি বসে
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে,
উষ্ণ চায়ে ডুবিয়ে দেবো ঠোঁট
নতুন করে ভালোবেসে।

তোমার চাহনির অদ্ভুত নেশায়
ডুবে যাবো আবার,
গল্প আর আড্ডাও জমবে বেশ
হবে প্রেমও জোরদার।

চায়ের আড্ডাতেই হবে সাহিত্যচর্চা
কবিতার গল্প বুনবো,
তুমি জলন্ত কন্ঠে আবৃত্তি করবে
আমি চুপচাপ শুনবো।

পাচঁটি প্রেমের লিমেরিক

(১)
চলে যাবো তোমায় নিয়ে
সবুজ মাঠের রাস্তা দিয়ে
প্রকৃতির মাঝে
অপরূপ সাজে
দেখবো তোমায় মুগ্ধ হয়ে।

(২)
শান্ত আলোয় গোধূলি বেলায়
ফিরবো এবার তোমারই জেলায়
আসবে আসুক
প্রেমের অসুখ
সুখকে করেছি বুকে সেলাই।

(৩)
তোমায় অনেকটা ভালোবাসি
এই খুশিতে অবেলায় হাসি
লোকে পাগল বলে
ব্যাথা পায়না দিলে
বাজাই প্রেমের সুরেলা বাঁশি।

(4)
আসবে আসুক যতই কঠিন বিপদ
ভুলেনি নিয়েছি আমরা শপথ
সহজে বিয়ে
হয় না গো প্রিয়ে
সুখ তো আসে, বিদায় নিলে আপদ।

(৫)
স্বপ্নে তুমি প্রতিদিন আসো
জড়িয়ে ধরে ভালোবাসো
এটা কী সুখ
নাকি অসুখ
বাস্তবে এবার কাছে এসো।

লুকাছুপি

একদিন দূর হবে বহু দূর
তুমি হবে কাছে
সমস্যা সব ছুটি নেবে
মনে বিশ্বাস আছে।

তুমি হবে সবথেকে প্রিয়
সবার থেকে আপন
হৃদয় জুড়ে তোমারই প্রেম
ঘুমে তোমার স্বপন।

ইচ্ছেরা থাকবে না বন্দি
মনের শাসন চলবে
খুশি মতো করবো সবই
যা খুশি মন চাইবে।

একদিন থাকবে না এই বাঁধা
আকাশ হবে পরিষ্কার
কবিতায় লুকিয়ে রাখার
হবে শেষ রবিবার।

শব্দরাও সব ছাড়া পাবে
বন্দিদশা থেকে
তোমার আমার প্রেমের কাব্য
মুক্তি পাবে শেষে।

ভুল

ভুলগুলোকে মাটিচাপা দিয়ে পুঁতে ফেলি
তারা চারাগাছের মতোই বেরিয়ে পরে
আরো আরো বিশাল আকার নেয়
যেন ছুঁয়ে ফেলতে চায় আকাশ।

জলের খোঁজে মরীচিকার পেছনে ছুটেছি অনন্তকাল
কুয়োর জলের আদূরে নিমন্ত্রণ, আমার পছন্দ হয়নি
আমি সুখের সাগরে ডুবতে চেয়ে ভুল করেছি
দেখেছি সুখ পর্দার আড়াল।

রবার দিয়ে মুছতে চেয়েছি ভুলগুলো
ভুল তো আর রুল পেন্সিলের লেখা নয় !

ভুলগুলোকে কবর দিলাম আবার
মাটি কামড়ে কাঁদলাম এক বিকাল
ভুলগুলো নির্দয়, অশ্রুকে জীবনসুধা করে
এগিয়ে চলল আমার সেকাল!

ইনসাফ একদিন হবে

যতই জুলুম দিয়ে ইতিহাস মুছার চেষ্টা করো
ইতিহাস থাকবে আমাদের অন্তরে অন্তঃস্থলে
যতই অন্ধকার দিয়ে আলো ঢাকার চেষ্টা করো
সত্যের প্রদীপ জ্বলবে, অন্ধকার দূর হবে
মিথ্যার মেঘ সরিয়ে উদিত হবে সত্যের সূর্য
ইনসাফ একদিন হবে।

যতই অবিচার দিয়ে ছিনিয়ে নাও ইনসাফ
একদিন সব অবিচার কাচের মতো চুরমার হবে
যতই অবহেলার হাসি নিয়ে শ্লোগান তুলো
একদিন সেই হাসি কান্নায় পরিণত হবে
সেদিন কাউকে সাহায্যকারী পাবে না
তোমাদের অবিচার তোমাদের তাড়া করে বেড়াবে
পালিয়ে পার পাবে না পৃথিবীর কোন কোনায়
পাবে না কোন আশ্রয় স্থল
কোথাও পাবেনা একটু নিরাপত্তা।
ইনসাফ একদিন হবে।

নিশ্চয় মহান ইনসাফকারীর পাকড়াও বড় কঠিন।
তোমরা একটু আনন্দ করে নাও, হেসে নাও
তাসের ঘর কখনও সুরক্ষা দিতে পারে না
হাওয়ার ঝটিকা এসে সব অহংকার গুঁড়িয়ে দেবে
আমাদের বুক ফাটা চোখের জল
সেদিন সুনামি হয়ে আছড়ে পড়বে
ভেঙে দেবে তোমাদের শখের গড়া বালির প্রসাদ
খুশির আলোর রোশনাই হবে চারিদিকে
ইনসাফ একদিন হবে।

রঙিন কাগজ

রাত জেগে একটা একটা শব্দ বেছে
ভালোবাসার কবিতা লিখলাম। তোমার জন্য।
রুমের কোনায় রাখা পেপারবিনটা কাগজে ভর্তি
কাটাকুটি খেলা, পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলা
আমার কাঁপা হাতে খুব হয়েছে রাতে।
তোমার প্রতি আমার আকাশের সমান প্রেম
কয়েকটা শব্দ দিয়ে, বাক্য গঠন করে
প্রকাশ করা অসম্ভব। তবুও চেষ্টা
শুধু তোমাকে পাওয়ার জন্য।

রঙিন খামটা বুক পকেটে সকাল থেকে রাখা
যেন কবিতা নয়, শব্দ দিয়ে তোমার প্রতি
আমার প্রেমকেই বেঁধে রেখেছি।
রঙিন এক টুকরো কাগজে।

পার্কের গাছের তলায় বসে, তোমার অপেক্ষার মাঝে
বারবার বুক পকেটে হাত। রঙিন কাগজ খুলে দেখা।
এক টুকরো রঙিন কাগজ, কত মূল্যবান আজ
হয়তো তোমার কারণে
ভালোবাসার জন্যে।

তারপর যখন তুমি এলে
আমি প্রেমের প্রস্তাব দিলাম রঙিন খামে
হ্যাঁ বলতে দুবার ভাবতে দেখিনি তোমাকে।
আনন্দে সুখ টগবগ। বুকে খুশির রোশনাই।

তারপর পলক না ফেলে তোমাকে দেখা
অকারণ হাত ধরে এদিক ওদিক হাঁটা।
বাদাম ভাজায় জমেছিল আড্ডা বেশ
কথা হচ্ছিল স্বপ্ন দিয়ে গড়বো সুখের দেশ।
শেষে আইসক্রিম খেতে খেতে দিলাম রওনা..

হঠাৎ দেখলাম
তুমি আইসক্রিমের কাঠি ধরেছ
রঙিন কাগজে।
স্তব্ধ হৃৎপিন্ড !

হতবাক হয়ে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লাম।
প্রচন্ড রোদ আয়রন করছে চামড়ায় !
তুমি হাত ধরে দিলে টান। বললে চলো…
তোমার ঠোঁটের কোনায় আইসক্রিম লেগে আছে
সত্যি বলতে এই পৃথিবীতে এত সুন্দর এই মুহূর্তে
কেউ নেই। তবুও আমার নজর রঙিন কাগজে
প্রেম, সৌন্দর্য সব আকর্ষণ ছেড়ে রঙিন কাগজই
দেখছি। যেন তোমার হাতে আমার রাত জাগা প্রেম!
আমার ভালোবাসা মুড়ে আছে। কাগুজে মাগুজে।

তুমি বিরক্ত হয়ে ছুড়ে ফেললে আইসক্রিম।
রঙিন কাগজকে ঘুড়ি হয়ে উড়তে দেখলাম কিছুক্ষন,
ছায়ার খোঁজে দৌড় দিলে আবেগহীন গাছের দিকে
আমি কুড়িয়ে নিলাম আমার ভালোবাসাকে।
আমার কবিতাকে। রঙিন কাগজ আবার বুক পকেটে।
হাঁটলাম। জানিনা কোন দিকে। অকারণেই।

চাঁদের আলো

শহুরে মধ্যরাত
শীতল হওয়া শরীর ছোয়াছুঁয়ি খেলছে
ব্যালকনির মেঝেতে দুকাপ চা, দুজন মানুষ।
ঝিঁঝিঁপোকারা যেন গাইছে রোম্যান্টিক গান
একজীবনে একটা এরকম মহূর্তই যথেষ্ট
শান্তির শেষ সীমানা যেন। সুখেরও।
তবুও, বুকটা ফাঁকা। মহাকাশের মতো শূন্য!
আমার চঞ্চল দৃষ্টি বোকার মতো কিছু খুঁজছে
এই মধ্যরাতে, এই গলিতে, তুমি?! অসম্ভব
পাগল মন মানছে না, আহাম্মক চোখ
অস্থিরভাবে এদিক ওদিক দেখছে। খুঁজছে।

শহুরে শান্ত রাত
ব্যালকনির মেঝেতে দুকাপ চা, ঠোঁটে চুমুক
সুখের মেলাতেও মন লাগছে না
সব থেকেও কিছুই যেন নেই
চাঁদের আলোর মতো।

দিলখুশ

আমার…
নীল আকাশটা তোমাকে দিলাম
ভোরের শিশির ভেজা ঘাস, আর
জলে নেমে তোলা শাপলাফুল তোমার
যদি আরো চাও তবে বোতল ভর্তি জ্যোৎস্না দেবো
আমার জন্য সাজগোছের সময় গায়ে মেখো
সন্ধ্যার জোনাকি ধরে এনে করবো কপালের টিপ
তোমার রূপ লাবণ্য হবে যেন জলন্ত প্রদীপ।
তুমি বললে চাঁদের অহংকার ভেঙে দেবো
তোমার রহস্যময় হাসির ছবি আঁকবো
সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করে হলেও
আনবো তোমার জন্য খুশির রোশনাই।

তুমি শুধু…
তোমার কোমল হৃদয়ে যত্নে আমায় রেখো
ক্লান্তমন পাশে চাইলে প্রেমের দৃষ্টিতে দেখো
ভ্রূমরের গুঞ্জনের মতো ভালোবাসি ভালোবাসি বলো
তুমি শুধু… আমার দিলখুশ হয়েই থেকো।

ছবি – তৌসিফ হক

তুমি আমি

অভিমান?
আমি কি বললাম?
খুব রাগ?
দেখো ফুলের বাগ।
টপিক পাল্টাচ্ছ?
দেখতে ভালো লাগছ।
মুখটা কেন ওমন?
বলো তুমি কেমন?
যেন বাংলার পাঁচ!
এটা প্রেমের আচঁ!
ছাড়ো এখন।
ধরলাম কখন?
উফফ বিরক্তি।
তুমিই আমার শক্তি!
এবার আসি।
রাত তো বাকি।
আসছে ঘুম।
জাগছে প্রেম।
বুকেই রাখো।
একটু দেখো।
শুনবো এবার।
কী বলবো আর!
ভালোবাসি।
খুউউব বেশি।

তোমাকে চাইবো

যদি এক জীবন ভালোবেসেও তোমাকে না পাই
শেষ নিঃশ্বাসের সময়েও তোমার কোল না জুটে
মাথা রাখার জন্য,
কোন এক স্নিগ্ধ বিকেল না পাই সাথে হাঁটার জন্য
কোন এক বন্ধ ঘর না পাই আদর করার জন্য
রূহ আমার শরীর ত্যাগ করে অন্য দুনিয়ায়
উপস্থিত হলে
ঈশ্বরের সামনে নতজানু হয়ে তোমাকে চাইবো,
যা কিছুর জন্য আমি মুগ্ধ হয়েছি বারবার
যা কিছু আনন্দ দিয়েছে আমার মনে প্রাণে
যা কিছুর জন্য আমি আফসোস করেছি চিরকাল
যা কিছু চেয়ে কেঁদে ভাসিয়েছি কোল বালিশ
সবকিছু চাইবো নতজানু হয়ে।

ভালোবাসি ভালোবাসি

তোমার তো মাইগ্রেনের সমস্যা
ধরো কোনদিন মাথা ব্যাথা করছে
প্রচন্ড বিরক্ত হচ্ছ। কিছুই ভালো লাগছে না
এমন সময় তোমাকে যদি বলি, ভালোবাসো?
তুমি কি বিরক্ত হবে? ধুর বলে দূরে সরিয়ে দেবে
নাকি আমার দিকে প্রেমের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলবে
ভালোবাসি ভালোবাসি।

ধরো কোন দিন বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছো
কাঁধে দুটো ভারী ব্যাগ, বাসের অপেক্ষা করছো
সময় কম, দ্রুত যেতে হবে গন্তব্যে
বাস আসলো, দৌড়ে যাচ্ছ বাসে উঠতে।
পেছন থেকে আমি ডাক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ভালোবাসো?
তুমি কি আমার প্রশ্ন শুনেও বাস ধরবে
নাকি অবাকদৃষ্টিতে আমার দিকে দেখে বলবে
ভালোবাসি ভালোবাসি।

প্রচন্ড গরমের সন্ধ্যা, কারেন্ট নেই
রান্নাঘরে রান্না করছো, ঘেমে সারা শরীর ভিজেছে
শ্বাস নিতেও তোমার কষ্ট হচ্ছে, মনে হচ্ছে সব ভেঙে ফেলি
এমন সময় আমি যদি পেছন থেকে তোমাকে জড়িয়ে ধরে বলি, ভালোবাসো?
তুমি কি থালা বাসন ছুড়ে ফেলা শুরু করবে
নাকি পেছন ঘুরে, আমার কাঁধে দুটো হাত রেখে বলবে
ভালোবাসি ভালোবাসি।

ধরো কোনদিন সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেল
ফোন মেসেজ দেখা কিছুই হচ্ছেনা
যেন অনেক দূরে চলে গিয়েছি দুজনে
আমি যদি মনে মনে তোমাকে জিজ্ঞেস করি, ভালোবাসো?
তুমি কি কিছুই শুনতে পাবেনা…
নাকি বহুদূর থেকেও স্পষ্ট শুনতে পাবে?
দূর থেকেও বলে উঠবে
ভালোবাসি ভালোবাসি।

[সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ভালোবাসি ভালোবাসি কবিতার অনুকরণে]

জীবন মানে তুমি

একদিন তোমার মন খারাপগুলো ছুটি নেবে
সব খারাপ সময়ে তোমার কাঁধে আমার হাত পাবে।
মানুষ তো একজীবনেই সব পেতে চাই
আমিও তো রক্ত মাংসের মানুষ
ব্যতিক্রমী নয় –
এই জীবনেই একদিন তোমাকে চাই
মৌমাছির যেমন ফুল চাই
রঙপেন্সিলের পাতা চাই।
কালো মেঘ যতই অন্ধকার নিয়ে আসুক
সূর্য সব অন্ধকার দূর করে আলোকিত করে দেয়
আমিও আলোর স্বপ্ন দেখি
তোমাকে পাওয়ার স্বপ্ন দেখি।
প্রকৃতি যেমন বসন্তের জন্য অপেক্ষা করে
ফুলের কুঁড়ি যেমন প্রস্ফুটিত হওয়ার অপেক্ষা করে
আমিও তোমার অপেক্ষায় আছি।
তোমাকে ভালোবেসেই বুঝেছি
জীবন মানে বেঁচে থাকা নয়
জীবন মানেই তুমি…