মরুভূমির জলদস্যু এর সকল পোস্ট

Joba_1_ (12)

ফুলের নাম : বহুদল জবা

কিছুদিন আগে থেকে “ঝুমকো জবা”“পঞ্চমুখী জবা” ফুলের কিছু ছবি দিয়েছিলাম। আজ তারই ধারাবাহিকতায় দেখাবো আমার তোলা কিছু “বহুদল জবা” ফুলের ছবি।

বহুদল জবা
আপনারা জানেন জবা ফুলের কয়েকশত প্রজাতির গাছ রয়েছে। এদের কয়েকটি পরিচিত বাংলা নাম হচ্ছে জবা, রক্তজবা, পঞ্চমুখী জবা, জবা কুসুম, মরিচা জবা ইত্যাদি। এদের মধ্যে একটি বিশেষ জবা হচ্ছে বহুদল জবা

সাধারন জবা থেকে বহুদল জবা দেখতে বেশ আলাদা। কারণ একে দেখে মনে হবে দুটি জবা একসাথে হয়ে আছে, আসলে সেখানে কিন্তু একটি জবাই থাকে। বহুদল জবা দেখতে অনেকটাই পঞ্চমুখী জবার মতো।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় বেরাতে গিয়ে বেশ কিছু বহুদল জবা ফুলের ছবি তুলেছি আমি। তাদের ৭টি ছবি আজ দেখালাম এখানে।

আগামী পর্বে দেখাবো “সাদা জবা”

Joba_1_ (12)

ফুলের নাম : পঞ্চমুখী জবা

কিছুদিন আগে “ঝুমকো জবা” ফুলের বেশ কিছু ছবি দিয়েছিলাম। আজ তারই ধারাবাহিকতায় দেখাবো আমার তোলা কিছু পঞ্চমুখী বজা ফুলের ছবি।

পঞ্চমুখী জবা
আগেই বলেছি জবা ফুলের কয়েকশত প্রজাতির গাছ রয়েছে। এদের কয়েকটির পরিচিত বাংলা নাম হচ্ছে জবা, রক্তজবা, পঞ্চমুখী জবা, জবা কুসুম, মরিচা জবা ইত্যাদি। এদের মধ্যে একটি বিশেষ জবা হচ্ছে পঞ্চমুখী জবা

সাধারন জবা থেকে পঞ্চমুখী জবা দেখতে বেশ আলাদা। কারণ একে দেখে মনে হবে কয়েকটি জবা একসাথে হয়ে আছে, আসলে সেখানে কিন্তু একটি জবাই থাকে।

পঞ্চমুখী বজার মতোই দেখতে আরেকটি জবা রয়েছে যাকে বলাহয় বহুদল জবা। আগামী কোন একদিন বহুদল জবার কিছু ছবিও হাজির করার ইচ্ছে রইলো।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় বেরাতে গিয়ে বেশ কিছু পঞ্চমুখী জবা ফুলের ছবি তুলেছি আমি। তাদের ৮টি ছবি রইলে এই পোষ্টে।
উপরের প্রথম চারটি ছবি তুলেছি টাঙ্গাইলের আতিয়া মসজিদের কাছেই বাবা আদম কাশ্মিরীর মাজার থেকে।

৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম ছবিগুলি তুলেছি মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে এবং ৮ম ছবিটি তুলেছি ময়মনসিংহের ইশ্বরগঞ্জরে আঠার বাড়ী জমিদার বাড়ির কাছের একটি শিবমন্দিরের কাছ থেকে।

আগামীতে দেখাবো বহুদল জবা।

Joba_1_ (12)

ফুলের নাম : ঝুমকো জবা

আগের লেখায় বলেছিলাম জবা ফুলের কয়েকশত প্রজাতির গাছ রয়েছে। এদের কয়েকটি পরিচিত বাংলা নাম হচ্ছে জবা, রক্তজবা, পঞ্চমুখী জবা, জবা কুসুম, মরিচা জবা ইত্যাদি। এদের মধ্যে একটি বিশেষ জবা হচ্ছে ঝুমকো জবা বা ঝুমকা জবা। এটি দেখতে অনেকটাই ঝুমকার মতো বলেই এই নামকরণ করা হয়েছে।

ঝুমকো জবার ইংরেজি নাম Fringed Rosemallow, Japanese lantern, Coral hibiscus, Spider hibiscus ইত্যাদি।
আর এর বৈজ্ঞানিক নাম Hibiscus schizopetalous.

সাধারণ জবা ফুল থেকে এই ঝুমবো জবা অনেকটাই ভিন্নতর হয় দেখতে। এটি ডালের আগায় ঝুলন্ত হয়ে ফুটে। ৫টি পাপড়ি থাকে প্রতিটি ফুলে। পাপড়িগুলি উপরের দিকে বাঁকা আর কিনার ঝালরের মতো কাটাকাটা থাকে। পরাগদন্ড বেশ লম্বা হয় এবং ফুলের নিচে ঝুলে থাকে।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় বেরাতে গিয়ে বেশ কিছু ঝুমকো জবা ফুলের ছবি তুলেছি আমি। তাদের ৮টি ছবি রয়েছে লেখায়।

শেষ করছি “ফররুখ আহমদ” এর একটি ছড়া দিয়ে।

ঝুমকো জবা
ফররুখ আহমদ
ঝুমকো জবা বনের দুল
উঠল ফুটে বনের ফুল।
সবুজ পাতা ঘোমটা খোলে,
ঝুমকো জবা হাওয়ায় দোলে।
সেই দুলুনির তালে তালে,
মন উড়ে যায় ডালে ডালে।

KB-01- 00

খনার বচন – ৩

খনা ও খনার বচন সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কম বেশী ধারণা আছে। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকেই ধারনা করেন এগুলি কোন একক ব্যাক্তির লেখা নয়, বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের বলা বা লেখাগুলি খনার নামে প্রচলিত হয়েছে। যাইহোক, এই বিতর্কে না যাই।

আমাদের পরিচিতো অনেক খনার বচন আছে, সেখান থেকে কিছু কিছু বচন এখানে শেয়ার করবো ব্যাখ্যা সহ।

১। খনা ডেকে বলে যান
রোদে ধান ছায়ায় পান

ব্যাখ্যা : পান লাগাতে হয় ছায়াতে, আর ধান লাগাতে হয় রোদে।

২। সমানে সমানে দোস্তি
সমানে সমানে কুস্তি।


ব্যাখ্যা : সমান সমান না হলে কোন কিছুই জমে না।

৩। এক পুরুষে রোপে তাল,
অন্য পুরুষে করে পাল।
তারপর যে সে খাবে,
তিন পুরুষে ফল পাবে।


ব্যাখ্যা : তাল গাছে প্রথম ফলন আসতে কমপক্ষে ১২ বছর সময় লাগে। দীর্ঘ এই সময়ের জন্যই এই ভাবে বলা।

৪। নিত্যি নিত্যি ফল খাও,
বদ্যি বাড়ি নাহি যাও।


ব্যাখ্যা : প্রতিদিন ফল খেলে শরীর ভালো থাকে।

৫। দিনের মেঘে ধান,
রাতের মেঘে পান।


ব্যাখ্যা : দিনে বেলা বৃষ্টি হলে ধানের জন্য ভালো, আর রাতের বৃষ্টি পানের জন্য ভালো।।

৬। জৈষ্ঠতে তারা ফুটে,
তবে জানবে বর্ষা বটে।


ব্যাখ্যা : এটা দিয়ে কি বুঝানো হয়েছে আমি বুঝতে পারি নি।

৭। যদি বর্ষে মাঘের শেষ,
ধন্য রাজার পূণ্য দেশ।


ব্যাখ্যা : মাঘ মাসের শেষে বৃষ্টি হলে ফলন ভালো হয়।

৮। সাত হাতে, তিন বিঘাতে
কলা লাগাবে মায়ে পুতে।
কলা লাগিয়ে না কাটবে পাত,
তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।


ব্যাখ্যা : নির্দিষ্ট দূরত্বে কলাগাছ লাগালে তাতে ফলন ভালো হয়।

৯। লাঙ্গলে না খুঁড়লে মাটি,
মই না দিলে পরিপাটি
ফসল হয় না, কান্নাকাটি।


ব্যাখ্যা : ঠিকমত চাষ না করলে ভালো ফসল পাওয়া যায় না।

১০। সবলা গরু সুজন পুত
রাখতে পারে খেতের জুত।


ব্যাখ্যা : ভাল গরু থাকলে আর চাষে ছেলের সাহায্য পেলে কৃষকের কোন সমস্যা থাকে না।

বি.দ্র. ছবি গুলি নেট থেকে সংগ্রহীত।

KB-01- 00 - Copy

ফুলের নাম : অশোক

অশোক বন্দনা
গত মার্চ মাসের ১৭ তারিখে বৃক্ষকথার কয়েকজন সদস্য মিলে আমরা গিয়েছিলাম ঢাকার মিরপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। ঘুরে ফিরে অনেকটা সময় ধরে আমরা চেনা অচেনা নানা ফুল আর গাছ দেখেছি, ছবি তুলেছি। ঐ সময়টা ছিল অশোক ফোটার সময়।

অল্পসংখ্যক উদ্ভিদ আছে যারা তাদের কাণ্ড ফুড়ে থেকে ডালপালা জুড়ে ফুল ফোটায়। তাছাড়া অশোকের প্রস্ফুটন কাল অতি দীর্ঘ বলে এই সময় গাছগুলি ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। বোটানিক্যাল গার্ডেনের দ্বিতীয় গেটটা পার হলেই শুরু হয় পথের দুই ধারে অশোকের সারি। ফুলে ফুলে ছেয়ে ছিল গাছগুলি। এমন দৃশ্য দেখেই হয়তো রবীন্দ্রনাথ বলে ছিলেন –

“রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোক পলাশে
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত আকাশে
নবীন পাতায় লাগে রাঙা হিল্লোল।”

আমি দেখেছি রবীন্দ্রনাথের অনেক অনেক কবিতা ও গানে ঘুরে ফিরে এসেছে এই অশোকের কথা। সেসব থেকে কিছু কিছু অংশ আজ তুলে দিব এই লেখায়। তাছাড়া অশোকের সাথে হিন্দু ও বোদ্ধ ধর্মের সুগভীর সম্পর্ক আছে,তারও কিছু ছোঁয়া থাকবে। আর থাকবে আমার তোলা কিছু অশোকের ছবি।

বাংলা, হিন্দি, সংস্কৃত মিলিয়ে অশোক ফুলের অনেকগুলি নাম আছে, যেমন –
অপশোক, বিশোক, কঙ্গেলি, কর্ণপূরক, কেলিক, চিত্র, বিচিত্র, দোষহারী, নট, পল্লবদ্রুপ, প্রপল্লব, পিণ্ডিপুষ্প, বঞ্জুলদ্রুম, মধুপষ্প, রক্তপল্লবক, রাগীতরু, শোকনাশ, সুভগ, স্মরাধিবাস, হেমপুষ্প, হেমাপুষ্প, হিমাপুষ্পা, অঞ্জনপ্রিয়া, মধুপুষ্প, পিণ্ডিপুষ্পা, সিটা-অশোক ইত্যাদি।

অশোকের ইংরেজি নাম হচ্ছে – Ashoka, Sorrowless, Yellow Ashok, Yellow Saraca ইত্যাদি।
আর এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে – Saraca indica

হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে গৌরী দেবী এই বৃক্ষের নিচে তপস্যা করে সিদ্ধি লাভ করে শোক থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই কারণে এই বৃক্ষের নাম অশোক হয়েছে। শুধু কি তাই! রোগ নিরাময়ে, ভেষজ গুণে,শীতল ছায়ায়,পুষ্প প্রাচুর্যের মত কারণেই অশোকের নামকরণ সার্থক।

রামায়ণে বলে সীতাকে অপহরণ করে অশোকবনে রাখা হয়ে ছিল।

হিন্দু ধর্ম মতে অশোকষষ্ঠী বলে একটি পূজা আছে। চৈত্র মাসের শুক্লা-ষষ্ঠীতে মায়েরা সন্তানের কল্যাণ কামনা করে অশোক ফুল দিয়ে অশোকষষ্ঠী পূজা করেন। তাছাড়া চৈত্র মাসের শুক্লা-অষ্টমীতে পালিত হয় অশোকাষ্টমী পূজা।

কামদেবের পঞ্চশরের অন্যতম শর এই অশোক ফুল দিয়ে সজ্জিত, তাই অশোক ফুল প্রেমের প্রতীক। হয়তো এই কারণেই রবীন্দ্রনাথ অশোককে এতো বার হাজির করেছেন নিজের সৃষ্টিতে।

কথিত আছে গৌতম বুদ্ধ লুম্বিনিতে অশোক গাছের নিচে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এবং মহাবীর এই অশোক গাছের নিচে ধ্যান করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। তাই হিন্দু ও বৌদ্ধদের কাছে এই অশোক গাছ ও ফুল অত্যন্ত পবিত্র।

অজস্র ফুলে ঘনবদ্ধ অশোকমঞ্জরি বর্ণ ও গড়নে আকর্ষণীয়। তাজা অশোক ফুলের রং কমলা, কিন্তু বাসি হলেই ফুলের রং হয় লাল। অশোকের পরাগকেশর দীর্ঘ।

রবীন্দ্রনাথ অশোক বন্দনার কিছু নমুনা রইলো –

১।
আসত তারা কুঞ্জবনে চৈত্র জ্যোৎস্নারাতে
অশোক শাখা উঠত ফুটে প্রিয়ার পদাঘাতে।

২।
আকাশেতে উঠে আমি মেঘ হয়ে গেচি।
ফিরিব বাতাস বেয়ে রামধনু খুঁজি,
আলোর অশোক ফুল চুলে দেবো গুঁজি।

৩।
নদীতে লাগিল দোলা, বাঁধনে পড়িল টান,
একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান।
সেই গান শুনি. কুসুমিত তরুতলে
তরুণতরুণী. তুলিল অশোক,
মোর হাতে দিয়ে তারা কহিল,
এ আমাদেরই লোক।

৪।
দূর সাগরের পারের পবন, আসবে যখন কাছের কূলে
রঙিন আগুন জ্বালবে ফাগুন,মাতবে অশোক সোনার ফুলে।

আজ এই টুকুই।

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ৩

আলস্য ভোগ করতে হলে আপনাকে একটি বিশেষ শ্রেণীর লোক হতে হবে, অথবা আপনার পর্যাপ্ত অর্থ-সম্পদ থাকতে হবে। তা যদি না হন বা না থাকে তাহলে আপনার আলস্যের সুযোগটা ঘেচাং করে কেটে নেয়া হবে।

ধরুন একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক দুনিয়ার যত পিন দরকার তা প্রস্তুত করছে। ধরুন তারা দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করে। এবার আমাদের প্রযুক্তির কল্যাণে এমন একটি উপায় পাওয়া গেল যার মাধ্যমে প্রতিটি লোক দ্বিগুণ পিন উৎপন্ন করতে পারবে সেই একই পরিমাণ সময়ে।

কিন্তু দুনিয়াতে দ্বিগুণ পিনের প্রয়োজন নেই, এবং পিনের দাম এত সস্তা যে এর দাম কমালেও বাড়তি পিন কেউ কিনবে না। এখন সমস্যা হচ্ছে – পিন শ্রমিকরা যদি দিনে ৮ ঘণ্টাই কাজ করে তবে প্রয়োজনের দ্বিগুণ পিন তৈরি হবে। ফলে অর্ধেক পিন তৈরি কারখানার মালিক হবে দেউলিয়া

এখানে এই সমস্যার যে সমাধানটা করা হয় তা হচ্ছে – অর্ধেক শ্রমিক ছাটাই
এই ছাটাইয়ের ফলে অর্ধেক শ্রমিক হচ্ছে বেকার আর কর্মরত বাকি অর্ধেক হচ্ছে অতিকর্ম ভারে ভারাক্রান্ত

এই সমস্যার সবচেয়ে সহজ সমাধান ছিল পিন প্রস্তুত কাজে নিয়োজিত লোকগুলি এখন থেকে ৮ ঘনটার পরিবর্তে ৪ ঘণ্টা কাজ করবে এবং বাকি সব কিছুই আগের মত চলতে থাকবে। এর ফলে সমস্ত শ্রমিকরাই পেতো তাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত আলস্যের স্বাদ। কিন্তু তা হয় না……

আসল ব্যাপার হল দরিদ্র লোকেরা আলস্য ভোগ করুক তা ধনীরা কখনই চায় নি। শ্রমিকদের এই আলস্য ভোগের ভাবনাই তাদের সর্বদা আহত করতো।

উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে একজন শ্রমিক দিনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা কাজ করতো, শিশুদেরও প্রায় তাই করতে হতো। কমসে কম ১২ ঘণ্টা কাজতো করতেই হতো। অন্যের ব্যাপারে নাকগলানো যাদের অভ্যাস (মানবাধিকার কর্মী) তারা যখন খোঁচাতে শুরু করলো এতো দীর্ঘ সময় কাজ করার বিষয়টি নিয়ে, তখন তাদের বলা হল যে- “কাজ বয়স্কদের সুরাপান থেকে বিরত রাখে, আর শিশুদের বিরত রাখে অপকর্ম থেকে।”
আপনার কি মত এই যুক্তি সম্পর্কে?

বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

Joba_1_ (12)

ফুলের নাম : জবা

জবা আমাদের অতি পরিচিত একটি ফুল। এককালে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে এই জবা ফুলের গাছ দেখতে পাওয়া যেত। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে এই গাছ থাকতোই।

জবার ইংরেজি নাম : Chinese hibiscus, China rose, Hawaiian hibiscus, shoeblackplant ইত্যাদি
জবার বৈজ্ঞানিক নাম : Hibiscus rosa-sinensis

জবা ফুলের কয়েকশত প্রজাতির গাছ রয়েছে। এদের কয়েকটি পরিচিত বাংলা নাম হচ্ছে জবা, রক্তজবা, ঝুমকা জবা, জবা কুসুম, মরিচা জবা ইত্যাদি।

জবা ফুল ঠোঙ্গা আকৃতি, পঞ্চমুখি ও থোকা আকারের হয়ে থাকে। এছাড়াও বাভিন্ন ধরনের জবা বিভিন্ন রকমের হয়েছে। কিছু কিছু জবা আছে যেগুলি সম্পূর্ন ভিন্ন রকমের হয়। যেমন ঝুমকা জবা ও মরিচা জবা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের।

তাছাড়া জবা গাছের বিভিন্ন রকমের সংকর প্রজাতি আছে, যাদের ফুলের রঙ সাদা, হলুদ, কমলা, লাল, এমনকি মিশ্রও হতে দেখা যায়।

জবা ফুলে নানান ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে। ফুল, পাপড়ি ও গাছের ছালও ঔষধি গুনসম্পন্ন। চোখ ওঠা রোগ দূর করতে, সর্দি ও কাশিতে, চুলের বৃদ্ধির জন্য, হাতের তালুতে চামড়া উঠা ইত্যাদি রোগের ঔষধি গুনাগুণ রয়েছে।

জবা একটি চিরসবুজ গুল্ম বা ঝোপ জতীয় গাছ। সাধারণত: সাত আট ফুট উচ্চতায় হয় থাকে। এর পাতাগুলি চকচকে ও করাতের মত খাজকাটা হয়। জবা গাছের ডাল বর্ষা কালে সেঁত স্যাঁতে মাটিতে রোপন করে সহজেই বংশবিস্তার করা সম্ভব। জবা গাছ আবাদী ও অনাবাদী বনজ সব ধরনের হয়ে থাক।

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যায়গায় বেরাতে গিয়ে বেশ কিছু জবা ফুলের ছবি তুলেছি আমি। তাদের কিছু ছবি এখানে দিলাম।

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ২

আগেই বলা হয়েছে –

কাজ দুই প্রকার।
মোটা দাগে প্রথমটি হচ্ছে – পৃথিবীর উপরিভাগে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনই হল কাজ।
আর দ্বিতীয়টি হল – অপরকে প্রথম কাজটি করতে বলা

উপরোক্ত দ্বিতীয় কাজটি যারা করেন তাদের পরিধি বিস্তর। শুধুমাত্র যারা প্রথম কাজ করার জন্য আদেশ প্রদান করেন তারাই নন, বরং কি আদেশ প্রদান করা উচিত তার পরামর্শ ও উপদেশ যারা দেন তারাও দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত।

এই সমস্ত উপদেষ্টার পারিশ্রমিকের পরিমাণ কি হতে পারে তার আলোচনা করা অবান্তর। আমাদের মত দেশের প্রেক্ষিতে তাদের এই উপদেশের জন্য ব্যয় হচ্ছে অন্য যেকোনো ব্যয়ের তুলনায় আকাশ ছোঁয়া। আমাদের রাস্তা-ঘাট, সেতু ইত্যাদি তৈরির ব্যয়ের সিংহ ভাগ যায় উপদেষ্টাদের পকেটে সেটা সবাই জানেন।

এই উপদেষ্টাদের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আমাদের মনে রাখতে হবে। বৈশিষ্ট্যটি হচ্ছে- “স্বাভাবিক ভাবে একযোগে পরস্পর বিরোধী দুটি উপদেশ প্রদান করা; এর নামই রাজনীতি।” আর রাজনীতি নিয়ে কোন কথা আমি কখনো বলি না বলে চুপ রইলাম। বাকিটা আপনারা বুঝে নেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বলতে হয় এই ধরনের কাজের দক্ষতা এখন শুধুই মানুষকে প্রভাবিত করার উপযোগী বক্তৃতা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ

অন্য দিকে আমাদের সরল সাধারণ গ্রামের দিকে তাকাই। গ্রামে এক শ্রেণীর লোক রয়েছেন যাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশী ভূসম্পত্তি রয়েছে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অন্য আরেক শ্রেণীর প্রয়োজনের জমি টুকুও নেই।

এই সম্পদশালী ভূস্বামীরা কি অলস?
না, তারা কখনোই অলস নন, কারণ তাদের পরিশ্রমটুকু করে দিচ্ছে যাদের ভূসম্পত্তি নেই তারা। বাস্তবিকপক্ষে, এই শ্রেণীর লোকদের আরামদায়ক আলস্যের বাসনা থেকেই ঐতিহাসিকভাবে কাজের প্রশংসা-শ্রমের মর্যাদার জন্ম হয়েছে। আবার এই শ্রেণীর লোকেরই একটা জিনিস কখনোই কামনা করে না, তা হল “তাদের উদাহরণ অন্যেরা অনুসরণ করুক”

বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ১

“শয়তান এখনো দুষ্কর্ম সাধনের জন্য অলস হাত খুজে পায়।”
যেমন এখন এই মুহূর্তে খুঁজে পেয়েছে আমার হাতকে। এখন লিখবো আলস্যের কথা, আলস্যের পক্ষের কথা।

একজন ব্যাক্তির কথা ভাবুন যার বাঁচার মত যথেষ্ট সঙ্গতি রয়েছে। তবুও তিনি আলসেমী না করে প্রতিদিন কিছু কাজ করতে চান, যেমন স্কুল শিক্ষক, বা অফিস সহকারী ইত্যাদি। একটু চিন্তা করলেই দেখতে পারবেন তিনি কিন্তু একজনের মুখের ভাত কেড়ে নিচ্ছেন। অতএব তিনি একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তার উচিত ছিলো কোনো প্রকার কাজ না করে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আলস্যকে উপভোগ করা। এতে করে অন্য আরেক জন, যার খাদ্যের প্রয়োজন তার কর্মসংস্থান সহজ হতো, সেই সাথে সরকারেরও কর্ম সংস্থান নিয়ে এতো মাথা ব্যথা থাকতো না।

উপরের অংশটুকু থেকে এতোটুকু ঠিক ঠিক বুঝা যায় যে- “একজন ব্যাক্তি যতটুকু আয় করেন, তার সেই আয় দ্বারা তিনি ঠিক ততটুকুই অপরের মুখের আহার্য কেড়ে নেন।

কিন্তু!
হেঁ কিন্তু, আপনি যতটুকু আয় করলেন ততটুকু যদি ব্যয় করে ফেলেন তাহলে আপনি দুষ্টু প্রকৃতির লোক নন। কারণ আপনার ব্যয় যতটুকু ঠিক ততটুকুই অন্য অপর আরেক জনের আয়।

তাই এই আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে “যে ব্যক্তি আয় করে সে দুষ্টু প্রকৃতির নয়, বরং যিনি আয় করে সেই আয় সঞ্চয় করে রাখে, অর্থাৎ ব্যয় করেন না তিনিই দুষ্ট প্রকৃতির লোক।”

অর্থাৎ আপনি যখন সঞ্চয়ের জন্য আয় করছেন তখনই অন্য আরেক জনের মুখের খাবার কেড়ে নিচ্ছেন। তাই কতটুকু কাজ করবেন ভেবে চিন্তে ঠিক করুন।

এখানে বলা দরকার কাজ কি? এবং কাজ কত প্রকার?

কাজ দুই প্রকার।
মোটা দাগে প্রথমটি হচ্ছে – পৃথিবীর উপরিভাগে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনই হলো কাজ।
আর দ্বিতীয়টি হলো – অপরকে প্রথম কাজটি করতে বলা

প্রথম কাজটি কষ্টকর ও বিরক্তিকর, আর তার জন্য প্রারিশ্রমিকও অনেক কম পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় কাজটি অত্যান্ত মজাদার এবং এর জন্য বিরাট প্রারিশ্রমিক পাওয়া যায়, যদিও এর জন্য কোনো পরিশ্রম করতে হয়না বললেই চলে।

বি.দ্র. : “বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

KB-01- 00 - Copy

ফুলের নাম : রাজ অশোক

রাজকীয় রাজ অশোক

বাংলায় “রাজ অশোক” নামটি রাখেন বলধা গার্ডেনের প্রয়াত তত্ত্বাবধায়ক শ্রী অমৃতলাল আচার্য। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের ৪ নং তফসিল অনুযায়ী এ “রাজ অশোক” সংরক্ষিত। এই গাছের আদি নিবাস বার্মা / মায়ানমার।

রাজ অশোক মাঝারি আকৃতির বৃক্ষ, সাধারণত ৮ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু পারে। মজার বিষয় হচ্ছে আমাদের কমন অশোক আর হলুদ অশোকের সাথে এই রাজ অশোক ফুলের কোন মিল নেই। না ফুলের রং, না ফুলের আকা। সব দিক থেকেই আলাদা। বরং ফুল দেখতে কিছু কৃষ্ণচূড়ার সাথে মিল আছে। রাজ অশোক ফুল অর্কিডের মতো প্রশাখাময় হয় বলে Orchid tree বলা হয়।

তাছাড়া রাজ অশোকের আরেক নাম “উর্বশী”, যার মানে হচ্ছে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা ও অনন্তযৌবনা অপ্সরা। শুধু মাত্র এই কারণেই অনেকে মনে করেন এই ফুলের নাম পারিজাত। তারা ধারনা করেন যেহেতু পারিজাত স্বর্গের ফুল আর উর্বশী হচ্ছে স্বর্গের অপ্সরা তাই রাজ অশোকই পারিজাত। তবে এই ধারনাটা ভুল।

রাজ অশোকের ফুল হেমন্ত থেকে বসন্ত পর্যন্ত ফুটতে থাকে। এমনকি গ্রীষ্মকালেও মাঝে মাঝে ফুল দেখা যায়।

তবে হে, রাজ অশোকের পাতা, ডাল ও কাণ্ড কমন অশোকের মতই দেখতে। অর্থাৎ ফুর না দেখে রাজ অশোক কে আলাদা করে চেনা বেশ কষ্ট।

রাজ অশোকের ফুল আরে বেশ বাহারি। গাছের উপরিভাগের কাণ্ড ও ডালপালা থেকে হাত খানেক লম্বা মঞ্জরি দণ্ড বের হয়। সোনালুর মতই নিচের দিকে ঝালরের মত ঝুলে থাকে। মঞ্জরি দণ্ডে বিপরীত সজ্জায় চার-পাঁচটি ফুল থাকে। মঞ্জরির গোঁড়ার দিকের ফুলটি প্রথমে ফোটে, তারপর ক্রমশ পরের কলিগুলো ফোটে।

যদিও উর্বশীর কাহিনী সাথে রাজ অশোকের কোন যোগসূত্র নেই তাই কিছু বলছিনা। তবে কবিগুরুর লেখা দীর্ঘ কবিতা “উর্বশী” থেকে বাছাই করা কয়েকটা লাইন দেয়ার লোভ কিছুতেই সামলানো গেলো না।

উর্বশী
নহ মাতা, নহ কন্যা, নহ বধূ, সুন্দরী রূপসী,
হে নন্দনবাসিনী উর্বশী!

বৃন্তহীন পুষ্প-সম আপনাতে আপনি বিকশি
কবে তুমি ফুটিলে উর্বশী!

কোনোকালে ছিলে না কি মুকুলিকা বালিকা-বয়সী
হে অনন্তযৌবনা উর্বশী!

যুগযুগান্তর হতে তুমি শুধু বিশ্বের প্রেয়সী
হে অপূর্বশোভনা উর্বশী!

সুরসভাতলে যবে নৃত্য কর পুলকে উল্লসি
হে বিলোলহিল্লোল উর্বশী!

স্বর্গের উদয়াচলে মূর্তিমতী তুমি হে উষসী,
হে ভুবনমোহিনী উর্বশী!

ওই শুন দিশে দিশে তোমা লাগি কাঁদিছে ক্রন্দসী
হে নিষ্ঠুরা বধিরা উর্বশী!

ফিরিবে না, ফিরিবে না– অস্ত গেছে সে গৌরবশশী,
অস্তাচলবাসিনী উর্বশী!

ফুলের নাম : রাজ অশোক
অন্যান্য নাম : উর্বশী, সোকরে, মিয়ানমার ফুল ইত্যাদি।
ইংরেজি ও কমন নাম : Pride of Burma, Orchid tree, Tree of heaven ইত্যাদি।
বৈজ্ঞানিক নাম : Amherstia nobilis
ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ১৭/০৩/২০১৮ ইং

7 - Sonakand Durgo (66) - Copy

জলদূর্গ

১৬৫০ সালের দিকে মোঘল আমলে যখন মীর জুমলা বাংলার সুবাদার ছিলেন তৎকালীন সময়ে সমৃদ্ধ শহর ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকাকে নদী পথে আগত মগ ও পর্তুগিজ শত্রুদের আক্রমণ প্রতিহত করতে ও জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষ্যা করার জন্য নদীর তীরে ৩টি দূর্গ তৈরি করা হয়। এই তিনটি দূর্গকে “জলদূর্গ” বলা হতো। ৩টি জলদূর্গের ২টি হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে। একটি শীতলক্ষ্যার পশ্চিম পাড়ে “হাজীগঞ্জ দূর্গ”। অন্যটি শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে “সোনাকান্দা দূর্গ”। ৩য়টি মুন্সীগঞ্জের “ইদ্রাকপুর দূর্গ”


সোনাকান্দা দূর্গ


হাজীগঞ্জ দূর্গ


ইদ্রাকপুর দূর্গ

প্রথম তিনটি ছবি বিভিন্ন সময়ে আমার নিজের তোলা। শেষ ছবিটি গুগল ম্যাপ স্যাটেলাইট ভিউ থেকে তৈরি করেছি আমি।

পথের হদিস :
ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে চলে আসুন নারায়ণগঞ্জ। বাস বা ট্রেন স্টেশন থেকে রিক্সা নিয়ে চলে আসুন হাজীগঞ্জ কেল্লা। হাজীগঞ্জ কেল্লা দেখা শেষে খেয়া নৌকায় শীতলক্ষ্যা পার হয়ে আবার রিক্সা নিয়ে চলে যান সোনাকান্দা দূর্গে।

ঢাকা থেকে বাসে চলে আসুন মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর। মুক্তারপুর থেকে রিক্সা বা অটোরিক্সায় ইদ্রাকপুরের কেল্লা যাওয়া যায়।

10 T Fuler Chobi_11_ (20)

ফুলের নাম : রুদ্রপলাশ

ফুলের নাম : রুদ্রপলাশ

ইংরেজি নাম : African Tulip, Flame of the Forest, Squirt Tree, Fountain Tree, Nile Flame, Nandi Flame, Uganda Flame, African Tulip Tree

বৈজ্ঞানিক নাম : Spathodea campanulata

অনেকে বলেন রুদ্রপলাশ নামটি দ্বিজেন শর্মার দেয়া আবার কারো কারো মতে নামটি দিয়েছেন রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর

সে যাইহক, রুদ্রপলাশের আদি নিবাস আফ্রিকা হলেও ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, পাপুয়া নিউগিনি, কোষ্টারিকা, শ্রীলঙ্কায় এর দেখা মেলে। বাংলাদেশে রুদ্রপলাশ গাছ খুব একটা দেখা যায় না। আমি দেখেছি ঢাকার বলদা গার্ডেনে আর মিরপুরেরর বোটানিক্যাল গার্ডেনের শেষ মাথায়। শুনেছি রমনাতেও আছে রুদ্রপলাশে গাছ, তবে দেখিনি।

চিরসবুজ রুদ্রপলাশ গাছ সাধারণত ২৫ থেকে ৮০ ফিট লম্বা হয়ে থাকে। বসন্তের শুরুতে গাছের চূড়ায় রাশি রাশি রুদ্রপলাশের ফুল ফুটতে দেখা যায়। গাঢ় সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উজ্জ্বল লাল রঙের রুদ্রপলাশ দেখতে অসাধারণ লাগে।

রুদ্রপলাশ ফুলের কুঁড়ি দেখতে আমাদের পলাশ ফুলের কুড়ির মতোই অনেকটা। গাছের ডালের শীর্ষে গোলাকার মঞ্জরিতে ফুল আসে। মঞ্জরির সমস্ত কুঁড়ি একসাথে ফোটে না, ধাপে ধাপে দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে ফুটতে থাকে।

উজ্জ্বল লাল রুদ্রপলাশের ভেতরের অংশ লালচে সোনালি আর পাপড়ির কিনারা কোঁকড়ানো এবং চারপাশে হলুদ বর্ডার। ফুল ১০ সেন্টিমিটার লম্বা ও ৫ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। রুদ্রপলাশের পাঁপড়ি থাকে ৫ টি। তবে পাঁপড়ি গুলি একসাথে যুক্ত থাকে বলে ফানেলের মত মনে হয়।

ফুল ফোটার পর গাছে ফল আসে। একটি মঞ্জরি থেকে ২ থেকে ৪ টি লম্বা লম্বা ফল ধরে। পরিনত ফলে পেকে গিয়ে লম্বালম্বি ভাবে ফেটে যায়। ফলের ফাটা অংশ দুটি নৌকার মত দেখতে হয়। প্রতিটি ফলের ভিতরে প্রায় ৫০০ টি স্বচ্ছ ডানা যুক্ত ক্ষুদ্র হৃদয় আকৃতির বীজ থাকে।

সবগুলি ছবি তোলার স্থান : বলদা গার্ডেন, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ১৬/০৩/২০১৭ ইং

AD_4_ (9)

১০টি ভ্রমণ চিত্র – ৭

সময়, সুযোগ আর অর্থ, এই তিনটি জিনিসের সমন্বয় করা খুব কঠিন। একটার ব্যবস্থা করলে অন্যটি পিছলে যায় হাতের মুঠো থেকে। কিন্তু যখন তিনটির সমন্বয় করা যায় তখনই একটা ভ্রমণে বেরিয়ে পরা যায়। সমন্বয় করতে পারা সেই সব ভ্রমণের ছবিগুলি থেকে ১০টি ছবি থাকবে এই পর্বে যেগুলি আগেই ফেবুতে শেয়ার করা হয়েছে।

১। আহসান মঞ্জিল

ছবি তোলার স্থান : আহসান মঞ্জিল, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ৩০/০৯/২০১২ ইং
পথের হদিস : ঢাকা > পুরনো ঢাকার ইসলামপুরে > আহসান মঞ্জিল।
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°42’30.9″N 90°24’21.6″E

২। শতবর্ষী বটবৃক্ষ

ছবি তোলার স্থান : বটতলা, আলুটিলা, খাগড়াছড়ি।
ছবি তোলার তারিখ : ২৬/০১/২০১৪ ইং
পথের হদিস : ঢাকা > খাগড়াছড়ি > বটতলা।
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°04’36.9″N 91°53’07.7″E

৩। রেল লাইন

ছবি তোলার স্থান : ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্কের পিছনে।
ছবি তোলার তারিখ : ১৩/০৩/২০১৬ ইং

৪। নভথিয়েটার

ছবি তোলার স্থান : নভথিয়েটার, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ২০/০১/২০১২ ইং

৫। দেবদারু

ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ০৬/০৩/২০১৭ ইং
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°49’11.8″N 90°20’31.9″E

৬। লেক ভিউ

ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ০৬/০৩/২০১৭ ইং
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°49’24.8″N 90°20’55.8″E

৭। সৈকত

ছবি তোলার স্থান : কলাতলী সমুদ্র সৈকত, কক্সবাজার।
ছবি তোলার তারিখ : ২০/০৫/২০১৪ইং
পথের হদিস : ঢাকা > কক্সবাজার > কলাতলী সমুদ্র সৈকত।
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 21°24’53.9″N 91°58’56.2″E

৮। বেতাব ভ্যালী

ছবি তোলার স্থান : বেতাব ভ্যালী, কাশ্মীর, ভারত।
ছবি তোলার তারিখ : ২৭/০৫/২০১৫ ইং
পথের হদিস : ঢাকা > কলকাতা > পেহেলগাও > বেতাব ভ্যালী।
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 34°03’11.2″N 75°21’29.7″E

৯। জলপরি

ছবি তোলার স্থান : নুহাশপল্লী, পিরুজালী।
ছবি তোলার তারিখ : ৩১/০৮/২০১২ইং
পথের হদিস : ঢাকা > হোতাপারা > পিরুজালী > নুহাশপল্লী
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 24°09’30.4″N 90°21’47.0″E

১০। লালন শাহের মাজার

ছবি তোলার স্থান : ছেউড়িয়া, কুষ্টিয়া।
ছবি তোলার তারিখ : ১৭/০৮/২০১২ইং
পথের হদিস : ঢাকা > কষ্টিয়া > ছেউড়িয়া > লালনের আখড়া।
জিপিএস কোঅর্ডিনেশন : 23°53’44.7″N 89°09’07.3″E

KB-01- 00

খনার বচন – ২

খনা ও খনার বচন সম্পর্কে আমাদের সকলেরই কম বেশী ধারণা আছে। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। আনুমানিক ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত। অনেকেই ধারনা করেন এগুলি কোন একক ব্যাক্তির লেখা নয়, বরং বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জনের বলা বা লেখাগুলি খনার নামে প্রচলিত হয়েছে। যাইহোক, এই বিতর্কে না যাই।

আমাদের পরিচিতো অনেক খনার বচন আছে, সেখান থেকে কিছু কিছু বচন এখানে শেয়ার করবো ব্যাখ্যা সহ।

১। উঠান ভরা লাউ শসা,
খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।

ব্যাখ্যা : যে বাড়ির উঠানে বাড়ির বৌঝিরা সবজী ফলায় সেই বাড়িতে কখনোই অভাব দেখা দেয় না।

২। যে চাষা খায় পেট ভরে
গরুর পানে চায় না ফিরে
গরু না পায় ঘাস পানি
ফলন নাই তার হয়রানি।

ব্যাখ্যা : নিজের গরুর যত্ন না নিয়ে শুধু আরাম আয়েশে ঢুবে থাকলে সেই কৃষকের কপালে হয়রানির শেষ নাই।

৩। যদি বর্ষে ফাল্গুনে
চিনা কাউন দ্বিগুণে।

ব্যাখ্যা : ফালগুন মাসে বৃষ্টি হলে চিনা আর কাউনের ফলন ভালো হয়।

৪। সকাল শোয় সকাল ওঠে
তার কড়ি না বৈদ্য লুটে

ব্যাখ্যা : রাতের বেলা তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে সকাল সকাল উঠে পড়লে শরীর সুস্থ থাকে।

৫। যে করে পরের আশ
সে খায় বনের ঘাস।

ব্যাখ্যা : কাজ না করে অন্যের আশায় বসে থাকলে কপালে খাবার জোটে না।

৬। হাত বিশ করি ফাঁক
আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ

ব্যাখ্যা : আম আর কাঠাল গাছ লাগানোর সময় ২৫/৩০ ফুট দূরে দূরে লাগাতে হয়।

৭। আউশ ধানের চাষ,
লাগে তিন মাস।

ব্যাখ্যা : আউশ ধান চাষ করলে ৩ মাসেই ফসল ঘরে তোলা যায়।

৮। বাঁশের ধারে হলুদ দিলে,
খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।

ব্যাখ্যা : বাশ ঝারের ধারে হলুদের চাষ করলে তার ফলন ভালো হয়।

৯। সকল গাছ কাটিকুটি
কাঁঠাল গাছে দেই মাটি।

ব্যাখ্যা : কিছু কিছু গাছ আছে যেগুলির ডাল কেটে দিলে ফলন ভালো হয়। কিন্তু কাঠালের বেলা তার উলটা। ফলন ভালো পেতে হলে কাঠাল গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে নতুন মাটি দিয়ে দিতে হয়।

১০। হালে নড়বড়, দুধে পানি
লক্ষ্মী বলে ছাড়লাম আমি।

ব্যাখ্যা : যে কৃষকের চাষের হাল নড়বড়ে, দুধের সাথে পানি মিশায় সেই কৃষকের উন্নতি হয় না।

বি.দ্র. ছবি গুলি নেট থেকে সংগ্রহীত।

14

বিভিন্ন দেশের জাতীয় প্রাণীসমূহ – ১৪ (সমাপ্ত)

পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই সেই দেশের জাতীয় পশু, জাতীয় মাছ, জাতীয় পাখি ইত্যাদি প্রাণী নির্বাচন করা আছে।
আমাদের বাংলাদেশে যেমন আছে-
জাতীয় পশু – রয়েল ব্যাঙ্গল টাইগার।
জাতীয় মাছ – ইলিশ।
জাতীয় পাখি – দোয়েল।
জাতীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী – শুশুক।

এই চারটি আলাদা-আলাদা ক্যাটাগরির জীবকে একসাথে বুঝানোর জন্য আমরা বলছি “জাতীয় প্রাণীসমূহ”

প্রতিটি পর্বে ১০টি দেশের প্রাণীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো, সেই ধারাবাহিকতায় আজ শেষ ৭টি দেশের প্রাণীদের হাজির করেছি। আসুন পরিচিতো হই তাদের সাথে।

১২৯। যুক্তরাজ্য (United Kingdom)
সিংহ (Lion)

ইউরোপিয়ান রবিন (European Robin )

(হরিণ) Red Deer

লাল শিয়াল (Red Fox )

মুক রাজহাঁস (Mute Swan)

Unicorn (কাল্পনিক)

বুলডগ (Bulldog)

লাল চিল (Red Kite)

১৩০। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ঈগল (Bald Eagle)

আমেরিকান বাইসন (American Bison)

১৩১। উরুগুয়ে Uruguay
Rufous Hornero (বাংলা নাম জানা নেই)

১৩২। ভিয়েতনাম Vietnam
বাঘ (Tiger)

মহিষ (Water Buffalo)

ড্রাগন (Dragon)

১৩৩। ভেনেজুয়েলা Venezuela
Turpial (বাংলা নাম জানা নেই)

১৩৪। জাম্বিয়া Zambia
ঈগল (African Fish Eagle)

১৩৫। জিম্বাবুয়ে Zimbabwe
এ্যান্টিলোপ (Sable Antelope)

তথ্য ও ছবি : সংগ্রহীত