I achieved ‘Distinguished Researcher Award’ during GBC Employee Achievement Awards Celebration on August 29, 2023 at the Fairmont Royal York Hotel, Toronto. For this achievement, I am thankful to the Office of Research and Innovation, Angelo DelZotto School of Construction Management, Centre for Construction and Engineering Technologies, and above all to my Coresearchers and Research Assistants at George Brown College (GBC). You can see it in the following LinkedIn site:
https://www.linkedin.com/in/dr-md-safiuddin-03042019/recent-activity/all/
বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য
ব্যর্থতা, জীবন এবং অন্যান্য!
জীবনের একটা পর্যায়ে গিয়ে কাঁধে হাত দিয়ে ভরসা দেবার মত মানুষের দরকার পড়ে। মানুষটা যখন নিজেকে আর বিশ্বাস করতে পারে না, নিজের ভেতরে অবিশ্বাসের সুতো জাল বুনতে শুরু করে করে তখন এমন একজন মানুষের দরকার পড়ে। মানুষটা হতে পারেন আপনজন কেউ কিংবা অপরিচিত কেউও। বয়ঃসন্ধিকাল পার করে যৌবনে পদার্পণ করার সময়টা বড্ড খারাপ। ক্রমশঃ জীবনের সমস্যাগুলো ঘনীভূত হতে শুরু করে কিন্তু তখন আর বাবা-মাকে সেগুলো বলা যায় না।
সে সময়টাতে যখন আর কারো সাথে শেয়ার করবার মত উপায় থাকে না কিংবা শেয়ার করবার মত মানুষ পাওয়া যায় না তখনই মনের মধ্যে দানা বাঁধতে শুরু করে আত্মহননের পথ বেছে নেবার চিন্তা। যান্ত্রিকতা মানুষকে সামাজিকভাবে কাছে আনার চেষ্টা করলেও মানুষকে সেভাবে আপন করে তুলতে শেখাতে পারেনি।বিশ্বাস করতে শেখায়নি। অবিশ্বাসের জালে আবদ্ধ করে রেখেছে সবকিছু। এসময়ে এসে কারো মনের দুঃখ কিন্তু মনের আক্ষেপ শোনার মত মানুষ খুঁজে পাবার চেয়ে ডুমুরের ফুল খুঁজে বের করাটা বোধ হয় সহজ!
জীবনের একটা পর্যায়ে এসে হাল ছেড়ে দেবার প্রবণতা মানুষের নতুন কিছু নয়। খেই হারিয়ে ফেলা জীবনটাকে আবার নতুন করে তুলে ধরতে দরকার হয় তেমনই কিছু মানুষের। কাঁধে হাত রেখে আশ্বাসের দরকার হয়। নতুন করে বাঁচবার প্রেরণা যোগাতে এমন কিছু মানুষের একটু কথা শোনা কিংবা তাকে কিছুটা সময় দেওয়াটাই অনেকটাই যথেষ্ট। প্রতিবার পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে কিংবা এডমিশন টেস্টের পর এভাবে নতুন করে চেষ্টার সাহস দেওয়া মানুষের অভাবে অনেক জীবন বিপথে চলে যায় কিংবা আত্মহননের পথেও এগিয়ে যায়।
সাফল্য ব্যর্থতা মিলিয়েই জীবন। সাফল্যের সময় পাশে থাকার চাইতে ব্যর্থতার সময় পাশে থাকাটা প্রেরণা যোগায় নতুন সফলতার পথে হাঁটতে! ব্যর্থতার জন্য তিরস্কার নয়, একটু পাশে দাঁড়ান মানুষটার। হাজার রাত জাগার রাতের চেষ্টার পরেও যখন মানুষটা ব্যর্থ,তখন তার কষ্টটা আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না। কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা লাগাবার মতো মানুষের অভাব নেই। কিন্তু ক্ষত সারিয়ে তোলার মানুষটার এ সমাজে বড্ড অভাব!
দরবেশ নিরুদ্দেশ
তবে কি কারো কাছেই
ভূলে থাকার মন্ত্র নাই?
আমি যে রোজ যাচ্ছি মরে
মনে রাখার যন্ত্রণায়!
শেখের বেটী শেখ হাসিনার এক চালেই সব কুপোকাত
দৃশ্যপট ১. চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হবেন শেখ হাসিনা, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন, (শেখ হাসিনার সময়োচিত অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রশংসায় ব্লুমবার্গ। দ্যা ডেইলিস্টার ০১-০৪-২৩)
দৃশ্যপট ২. বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল: মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
(বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল: মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী,
দেশ রূপান্তর ০১-০৪-২৩)
যে আমেরিকা বাংলাদেশের জন্মকে অস্বীকার করে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম তথা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এবং কি এখনও আমেরিকা নিজের স্বার্থের জন্য ক্রমাগত বাংলাদেশের বিরদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত, সেই খোদ আমেরিকার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশ বাকী বিশ্বের কাছে এখন মডেল। এটা ভেবে আনন্দিত হচ্ছি যে আজ আর আমাদের নিজেদের প্রচার করতে হচ্ছে না।
এই বিশ্বায়নের যুগে দেশ, বিদেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি হতে যাচ্ছে। শুধুই অর্থনীতি? না। সামাজিক নিরাপত্তা, সুশাসন থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে আজ বাংলাদেশ অদম্য ও অপ্রতিরুদ্ধ। আর এর স্বীকৃতি দিচ্ছে খোদ বিশ্ব মোড়ল ও তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ, জাইকা, আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ। ওরা নিজ থেকে বলছে শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ বাকী বিশ্বের কাছে এখন উন্নয়নের মডেল। আর বাংলাদেশে পাকি রাজাকারের সাবেক ছানা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলছে, পাকিস্তান আমল নাকি ওদের কাছে ভালো ছিল। ছি, ছি, ছি ধিক তোমাদের দেশপ্রেমকে। লজ্জা পাই তরুণ প্রজন্মের একজন নাগরিক হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের এতগুলো বছর পরেও এসে কতিপয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুখে শুনতে হচ্ছে সেই মুসলিম লীগ, জামাতিদের তোতা পাখির বুলি। আর এর নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি জামাতের ছাপোষা কতিপয় বুদ্ধিজীবী, তাঁদের দোসররা। ওরা বারবার একই ভাঙ্গা ঢোল বাজিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ শ্রীলংকা হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। অথচ তাঁদের পেয়ারে পাকিস্তান এখন দেউলিয়ার পথে। বাক্ স্বাধীনতার নামে যেসব কুলাঙ্গার এই দেশে বসে দেশবিরোধী কথা বলে, স্লোগান দেয়, সাংবাদিকতার আড়ালে অপপ্রচার ও অপসাংবাদিকতার মাধ্যমে ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে তাঁদের জন্য করুণা হয়।
ওরা ভোট ও জনগন ভুলে এখন বিদেশীদের তাবেদারি শুরু করেছে। দেশে বিদেশে বসে নালিশ দিয়ে দেশকে বিশ্বের কাছে অকেজো রাষ্ট্র হিসেবে দেখাতে চায়। কিন্তু বিধিবাম যাকে বলে উল্টো মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওদের মুখে কষে চপেটাঘাত করেছে। ব্লমবার্গ বলেছে আবার টানা চতুর্থবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হতে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দল আওয়ামীলীগ।
এখানে হুবহু তুলে ধরছি ব্লুমবার্গের রিপোর্টের কিয়দংশ-
‘তিনি (শেখ হাসিনা) টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ একই সঙ্গে শেখ হাসিনাকে পুরো তহবিল পেতে আরও সংস্কার করতে হবে বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে টানা চতুর্থ মেয়াদে সম্ভাব্য জয়ী হওয়ার কারণ এটা নয় যে, তার অনেক প্রতিপক্ষ কারাগারে আছেন বা আইনি ফাঁদে পড়েছেন। নিবন্ধে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সাফল্যের কারণেই তার চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হওয়া ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির সময়োপযোগী সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ প্রাপ্তির পটভূমিতে ব্লুমবার্গ দু’টি উপ-শিরোনামসহ ‘বাংলাদেশ লিডার বেটস আইএমএফ-ম্যান্ডেটেড রিগর উইল পে অফ ইন পোলস’ শিরোনামের এই নিবন্ধটি প্রকাশ করে।
এতে বলা হয়, পুরো তহবিল পেতে শেখ হাসিনাকে আরও সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনে তিনি টানা চতুর্থবারের মতো জয়ী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ব্যালট বাক্সে পরাজিত হওয়ার ভয়ে বিশ্বজুড়ে সরকারি দলের নেতারা প্রায়শই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে সম্মত সংস্কার বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মতো নন।”
কি ভাবছেন শেখ হাসিনা কি সরাসরি বলবেন আমি আজ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী? না শেখ হাসিনা জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। দেশের মানুষ শেখ হাসিনার আমলে ভালো আছে বলেই, তাঁরা আবার ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনবে। এটা যেমন দেশের সাধারণ নাগরিকরাও বুঝেছে এবং তাঁরা মুখিয়ে আছে নৌকার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে বিশ্ববাসীও দেখছে এবং প্রকাশ্যে তাঁরা বলছেন। সে জন্য তাঁরা শেখ হাসিনার বিরদ্ধে এখন আর উচ্চবাচ্য করছে না।
কারণ এদেশের মালিক জনগন, তাঁরা যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। তাই আমেরিকা, বিশ্ব ব্যাংক ষড়যন্ত্র বন্ধ করে বাংলাদেশকে নিয়ে, শেখ হাসিনাকে নিয়ে এখন দ্বিতীয়বার ভাবতে বসেছে। বাংলাদেশের পাশে থাকার চেষ্টা করছে। আর এটাই শেখের বেটির রাজনৈতিক দূরদর্শিতার প্রমাণ। এটাই শেখ হাসিনার সফল রাজনৈতিক ও কূটনীতির জয়। এখানেই খালেদা,তারেক, মান্না, রব, অলি, বাম-ডানের পরাজয়। তোমরা দেশে, বিদেশে বসে যতোই ষড়যন্ত্র করো না কেন শেখের বেটির এক চালেই হবে সব কুপোকাত। তোমরা শেখ হাসিনার কাছে রাজনীতির মাঠে এখনো দুধভাত। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছেন, এখন ইতিহাস সৃষ্টি করে আবার ৪ চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসবেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।
জয়তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক,
এইচ আই হামজা
সাংগঠনিক সম্পাদক
কলাবাগান থানা ছাত্রলীগ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
সংস্কৃতিকগত শিক্ষাই মৌলবাদ মুক্তির একমাত্র ঔষধ
“মানুষের পশু বৃত্তিকে ধ্বংস করে নান্দনিক সৌকর্যকে ঋদ্ধ করার ক্ষেত্রে সংস্কৃতির কোন বিকল্প নেই। সংস্কৃতি সংস্কারের বাহন, সংস্কৃতি হলো আদর্শ জাতি গঠনে অপরিহার্য উপাদান”
সংগৃহীত।
আধুনিক তুরস্কের জনক, তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্ক পাশা’র রাজনৈতিক দর্শনকে আমরা ধর্তব্যে নিতে পারি। কামাল পাশা তাঁর রাজনৈতিক দর্শনকে কাজে লাগাতে গিয়ে শক্ত হাতে মৌলবাদকে দমন করে তুরস্ককে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। আজ আধুনিক তুরস্ককে সকলে চেনে সংস্কৃতির ধারক বাহক হিসেবে।
আমাদের উচিত সংস্কৃতিগত পরিবর্তনকে গুরুত্ব দেওয়া। অন্যথায় জাতিগত বিভাজন, ধর্মীয় উগ্রতা থেকে মুক্তি অসম্ভব। কেননা একমাত্র সুশিক্ষা এবং সংস্কৃতিগত শিক্ষায় প্রকৃত শিক্ষা। এই যে আমরা বারবার সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান দেখছি, এই সমস্যার একমাত্র পথ্য বা ঔষধ হলো প্রত্যেক ইউনিয়ন, উপজেলায় একটি করে সরকারিভাবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাঠাগার গড়ে তোলা। এবং অনান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহকে পেট্রোনাইজ করে একটি সাংস্কৃতিক আবহ তৈরি করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিরাপদ সমাজ তথা সুন্দর পরিবেশ উপহার দেওয়া।
ছায়ানট, উদীচী, খেলাঘর বা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ অপরাপর সংগঠনগুলোকে কাজ করার যৌথ পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া। এবং যতোটুকু সম্ভব ধর্মীয় প্রভাব বলয় থেকে রাষ্ট্রকে বিরত রাখা। বর্তমান আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থাপক যারা তাদের এই বিষয়ে এখনই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে এর ফল আমরা অতীতে যেমন ভোগ করেছি, এখনো করছি, হয়তো অদূর ভবিষ্যতেও বড় ধরণের মাশুল দিতে হবে। যেকোনো ধর্মীয়
মৌলবাদ একটি জাতির সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পথ চলার অন্তরায়।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, হাঙ্গামা গুলো মূলত অশিক্ষা, কুশিক্ষা ও আলস্য পূর্ণ এবং রাষ্ট্রীয় বাঁধাহীন, অবাধ নিয়ম নীতিহীন ব্যবস্থার কারণে সংগঠিত হয়। রাষ্ট্র একক কোনো ধর্মকে উৎসাহ বা প্রমোট করবে না। যদিও করে তাহলে সব ধর্মকে সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা, তবে আমার মতে কোনো ধর্মকেই রাষ্ট্র কোনো প্রভাব বিস্তার করতে দিবে না। এই প্রসঙ্গে বলা যায়,
“ধর্ম থাকুক অন্তরে মুসলমান নামাজ পড়ুক,
হিন্দু যাক মন্দিরে”
কেননা বাংলাদেশ একটি ধর্মণিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্র। এই দেশ গঠনে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে অসংখ্য,অগণিত প্রাণ। তাঁরা কোনো ধর্ম পরিচয়কে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধে যায়নি। হিন্দু, মুসলিম,বৌদ্ধ,খ্রিস্টান, আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জাতপাত ভুলে ছাত্র, যুবক, শ্রমিক কৃষক, কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে সর্বস্তরের আপামর জনগণ এই দেশমাতৃকার টানে অকাতরে প্রাণ দিয়েছে। অতএব এই দেশ সবার। এই দেশ কোন মুসলিম বা হিন্দুর দেশ নয়। এই দেশ কোন ধনিক শ্রেনীর রাজা-বাদশার নয়। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক।
এ ছাড়াও আরেকটি বিষয় নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। প্রত্যেক স্কুলে বাধ্যতামূলক নৈতিক শিক্ষা ও প্রগতিশীলতার চর্চা করানো। বড় বড় মনীষী যেমন প্লেটো, রুশো, সক্রেটিস, লালন সাঁই,রাধারমণ, হাছন রাজা, গৌতম বুদ্ধ,রাজা রামমোহন রায়, বেগম রোকেয়া, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, কামাল আতাতুর্ক বা কর্মক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিত্বের জীবনী সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া। মহান মানুষের বাণী সম্বলিত বুকলেট তৈরি করে ক্লাস ওয়ান থেকে এইচএসসি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করা। বা এই মনীষীদের জীবনী পড়ানো যেতে পারে।
আর এসএসসি /এইচএসসি শেষে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে সেনাবাহিনীর অধীনে নিয়ে ৩ মাসের কমান্ডো ট্রেনিং করানো। এতে একদিকে যেমন সুশৃঙ্খল ও সুসংবদ্ধ এবং মানসিকভাবে দায়িত্ববোধ আপনি থেকে জেগে উঠবে। অন্যদিকে ভূমিকম্প,জলোচ্ছ্বাসসহ রাষ্ট্রের যেকোনো দূর্যোগ বা দুর্বিপাকে ও জরুরী প্রয়োজনে যেন তারা দেশ,সমাজ তথা আর্ত মানবতার কাজে আসে সেভাবে তৈরী করা। না হলে ধীরে ধীরে আমরা এই বনসাই মৌলবাদীদের মতো অজস্র অন্ধকারের জীব পাবো।যারা সমাজে উগ্রতাকে উস্কে দেয়, অন্ধত্ব কে আঁকড়ে ধরে, গোঁড়ামিকে শ্রেয় মনে করে আমাদেরকে নিয়ে যাবে সেই আরব্য অন্ধকার যুগের আইয়েমে জাহিলিয়াত যুগের সন্নিকটে।
তাই সংস্কৃতির উন্নয়নের বিকল্প নেই। সমাজবিজ্ঞানের জনক ম্যাক্স ওয়েবার বলেছিল
“মানুষ যা তাই তার সংস্কৃতি”
আমরা এমন মানুষ দেখতে চাই,এমন সমাজ চাই যারা সমাজে হিংসা, বিদ্বেষ ছড়াবে না, নিজেরা হিংস্র হয়ে নিজেদের জ্ঞাতি ভাইদের উপর হামলে পড়বে না। জ্ঞান,মেধা ও মননে হবে মনুষ্যত্বের প্রতীক।গৌরব থাকলেও অহংবোধে ভুগবে না জৌলুস থাকলেও প্রচার করবে না।
পরিশেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর মানুষ কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে উক্ত লেখাটির সমাপ্তি আনতে চাই।
“মূর্খরা সব শোনো, মানুষ এনেছে ধর্ম,
ধর্ম আনেনি মানুষ কোনো ”
এইচ আই হামজা
সাংগঠনিক সম্পাদক
কলাবাগান থানা ছাত্রলীগ।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
বিজ্ঞপ্তি: বই প্রকাশ বিষয়ক পোস্ট
আমার আজকের লেখাটি সেই সব নবীন, প্রবীণ লেখক, কবি বন্ধুদের উদ্দেশ্যে যারা নিজ খরচে বই প্রকাশ করতে আগ্রহী কিংবা নিয়মিত নিজ খরচে বই প্রকাশ করে থাকেন। সম্ভব হলে লেখাটি পড়বেন। ফেসবুকে আমি দেখেছি অনেক প্রকাশনী পাণ্ডুলিপি চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয় আর কিছু জানতে চাইলেই ইনবক্সে আসুন বা যোগাযোগ করুন। তারপর যোগাযোগ করা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আর্থিক বিষয় তুলে ধরে।
আমি জানি অনেক সময় নবীন এমনকি কিছু প্রবীণ লেখক তার নিজের লেখা বই প্রকাশ করতে নানা প্রকাশনীতে যোগাযোগ করে থাকেন এবং ভালো মানের প্রকাশনী ছাড়া বাকি সবাই একটাই শর্ত দেয়, সেটা হলো বই প্রকাশের যাবতীয় খরচ লেখক/কবিকেই বহন করতে হবে। আবার ভালো মানের প্রকাশনীও ক্ষেত্র বিশেষে এমনটি করে। তবে তারা ভালো পাণ্ডুলিপি পেলে নিজ খরচেও প্রকাশ করে থাকে। যেমন ভূমি প্রকাশের সাথে একবার এসব নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম বই প্রকাশে আপনাদের নীতিমালা কী? তারা আমাকে বলেছিল পাণ্ডুলিপি পছন্দ হলে তারাই সব খরচ বহন করবেন আবার পাণ্ডুলিপি পছন্দ না হলে লেখক নিজে খরচ বহন করবে।
এই যে নবীন বা প্রবীণ লেখক/কবিদের বই প্রকাশে প্রকাশকগণ লেখক কবির উপর খরচ চাপিয়ে দেন এর জন্য কিন্তু আমি তাদেরকে দোষ দিতে চাই না। কারণ আপনি কোন মানের লেখক,আপনার পাঠক সংখ্যা কত, আপনার বইয়ে লগ্নি করে লাভের বদলে লসে পড়বেন কি না সেসব বিবেচনা করে একজন প্রকাশক অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এটি তার ব্যবসা। এবং প্রত্যেক ব্যবসায়ী চায় তিনি লাভবান হবেন।
কিন্তু আমি দেখেছি নিজ খরচে বই প্রকাশ করতে গিয়েও লেখক, কবিরা অনেক সমস্যায় পড়ে। প্রকাশক কর্তৃক নাজেহাল হয়। সময় মত বই আসে না। বইয়ের বাইন্ডিং ঠিক থাকে না। প্রচ্ছদে সমস্যা থাকে। প্রুফ রিডারের অভাবে ভুল থাকে প্রচুর। কাগজের মান সমস্যা থাকে। আর সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটা হয় সেটা হলো যত কপি বই প্রকাশ করার কথা ক্ষেত্র বিশেষে সেই পরিমান বই ছাপানো হয় না। যদিও লেখক/কবির কাছ থেকে সেই পরিমান বই ছাপার জন্য টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। যেমন আমি নিজে অন্তত একজন প্রকাশককে চিনি যাকে আমি কয়েকজনের সম্মিলিত একটি গল্প সংকলন করতে দিয়েছিলাম আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে। তারা ৩৫ হাজার টাকাও দিয়েছিল। কিন্তু তিনি কথা রাখেন নি। তিনি ২০০ কপি বই কম দিয়েছেন। সে অনেক কথা সেটা না হয় পরে বলবো কোনো এক সময়ে। আজকের লেখাটি ভিন্ন উদ্দেশ্যে।
নিজ খরচে বই ছাপানোর পর উপরে বর্ণিত সমস্যার বাইরেও অনেক রকম সমস্যায় পড়ে থাকেন লেখক-কবিগণ। প্রথম বছর ছাপার পর সেই বইয়ের আর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায় না সেই প্রকাশনীতে। নিজ খরচে বই প্রকাশ করার পর সেই বইটা প্রকাশক অনেক সময় স্টলেও ঠিকমত রাখে না। যা বিক্রি হয় সেটা থেকেও লেখক কবিকে কোনো সম্মানি দেওয়া হয় না। যদিও প্রকাশককে অগ্রিম সব টাকা পরিশোধ করেই বই ছাপানো হয়েছে।
আমি জানি অনেক লেখক কবি নিজ খরচে বই ছাপার পর কখনো তা প্রকাশ করেন না যে তিনি নিজ খরচে বই প্রকাশ করেছেন। লেখক/কবিরা হয়তো মনে করেন নিজ খরচে বই করা হয়েছে এটা জানাজানি হলে তার প্রেস্টিজে লাগবে। আসলেতো তা নয়। আপনিতো চুরি করছেন না যে নিজ খরচে বই প্রকাশ করার কথাটা গোপনে রাখবেন।
এখন আসি মূল কথায়। এই যে যারা নিজ খরচে বই প্রকাশ করেন এবং অনেক রকম সমস্যার সম্মুখীন হন তাদেরকে বলতে চাই আপনারা চাইলে আমি দারুণ একটি উদ্যোগ নিতে পারি। মানে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রকাশনী শুরু করতে পারি। যে প্রকাশনীর মালিক আমি নই বরং আপনারা সবাই। মানে যাদের বই প্রকাশ হবে তারা প্রত্যেকেই এই প্রকাশনীর মালিক। বাংলা একাডেমীর নিয়ম অনুযায়ী বই মেলায় স্টল পেতে হলে একটি প্রকাশনী থেকে যতগুলো বই প্রকাশ হওয়ার পর তারা স্টল পাবে তা আমার মতে খুব সহজেই পূরণ করা সম্ভব।
এই প্রকাশনী হবে প্রাথমিক ভাবে অলাভজনক। ব্যবসার নিমিত্তে নয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই প্রকাশনীর সব লেখক তাদের বই নিজ খরচেই প্রকাশ করবেন। প্রকাশনী বাবদ খরচ বাদে বাকি সব লেখকরাই পাবেন। যেহেতু বই প্রকাশ বাবদ সব অর্থ লেখক কবি বহন করে থাকেন তাই কোনো লেখকের এক কপি বই বিক্রি হলে তার পুরোটাই অথবা নিজেদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৭৫% বা ৮০% টাকা লেখক পাবেন। বাকি ২৫ বা ২০% ফান্ডে জমা থাকবে। সাধারণত লেখককে প্রকাশনী গুলো ১০% থেকে ২০% পর্যন্ত রয়্যালটি দিয়ে থাকে। এখানে সেরকম কিছু থাকবে না। প্রকাশনী বাবদ যত খরচ তা যেহেতু লেখক পুরোটা বহন করে থাকে তাই বিক্রি হওয়া বইয়ের শতভাগই লেখক পাবেন। আবার তিনি যদি মনে করেন প্রকাশনীতো তারও। সুতরাং প্রকাশনীর একটি ফান্ড তৈরি করতে একটি নির্দিষ্ট অংশ তিনি দিবেন সেটাও দিতে পারবেন।
এটা করলে কী হবে? আপনি ঠকবেন না। কারণ আপনার বই অন্য কোনো প্রকাশক প্রকাশ করছে না বরং আপনি নিজেই প্রকাশ করছেন। আর যে প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশ হচ্ছে সেটাও আপনার নিজের। যদি আপনার মনে হয় আপনি আমার সাথে একমত তবে আমাকে নক দিতে পারেন। আমরা একটা গ্রুপ তৈরি করতে পারি। আমরা টার্গেট করতে পারি আগামী ২০২৪ বই মেলা। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ এর মাঝে আমরা করতে পারি। যেহেতু প্রত্যেকে তার নিজের বইটি প্রকাশের ব্যয় বহন করবে তাই ফান্ডের সমস্যা হবে না।
যদি ১০০ জন এমনকি ৫০ জন এমন লেখক কবি এক হতে পারেন তবে অনায়াসে একটি চমৎকার প্রকাশনী দাঁড় করানো সম্ভব। একটা বিষয় ভেবে দেখুন আপনি হয়তো এর মধ্যে একাধিক বই প্রকাশ করেছেন নিজ খরচে। কিংবা আগামীতেও একাধিক বই প্রকাশ করবেন নিজ খরচে। তাহলে আমি যে পদ্ধতির কথা বললাম সেটি করলেতো আপনার ক্ষতি নেই। আপনি নিজে তত্ত্বাবধায়ন করতে পারবেন। ফাঁকি দেওয়া বা ফাঁকে পড়ার কোনো সম্ভাবনা এখানে নেই।
উল্লেখ্য যদি আপনার লেখা প্রকাশকগণ তাদের খরচে প্রকাশ করে থাকে তবে এই লেখাটি আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়। আমি সেই সব লেখক, কবি বন্ধুদের একত্র করতে চাই যারা নিজ খরচে বই প্রকাশের কথা ভাবছেন। বই প্রকাশে এতো তাড়াহুড়ো না করে আসুন আলোচনা করি। ভিন্ন কিছু করি। উল্লেখ্য এটি কিন্তু প্রকাশকদের বিরুদ্ধে আমার কোনো আন্দোলন নয়। জাস্ট একটি ভিন্ন চিন্তার বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
বই প্রকাশ করতে গিয়ে লেখক কবিদের বিড়ম্বনা দেখে আমার খারাপ লাগে। তাছাড়াও প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনী থেকে সেরা সব লেখকদের বই প্রকাশ হওয়ায় নবীন লেখকদের বই প্রকাশ হলেও স্টলে জনপ্রিয় লেখকদের পাঠকের চাপে নবীণ লেখকদের বই আড়ালেই পড়ে থাকে। নবীন লেখকের দুই চারজন পাঠক স্টলে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে। আমি জানি ওই যে শুরুতেই বলেছি নিজ খরচে বই প্রকাশ করেছি এটা জানাজানি হলে লজ্জা পাবে এটা ভেবে এখনো অনেকেই চুপ থাকবে।
.
ফেসবুক ইনবক্স: জাজাফী
৩০ জানুয়ারি ২০২৩
কোন খানে বিয়া কইরা কোন দেশে গিয়ে ঝামেলা করে
একজন বাংলাদেশী আমেরিকায় গিয়ে নাগরিকত্ব নিলেন। তারপর জাপানে গিয়ে একজন জাপানী নাগরিকের সাথে জাপানী আইন অনুযায়ী বিবাহ করেন। তাদের মধ্যে তিনটি বাচ্চা হবার পর কোন কারনে সমস্যা সৃষ্টি হলে সেই বাংলাদেশী আমেরিকান জাপানের আদালতে ডিভোর্স এর আবেদন করার পর মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে দুই বাচ্চা নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। তারপর দুই মেয়ের অভিভাবকত্বের মামলা করেন। মামলা এখনো চলছে।
সেই বাংলাদেশী আমেরিকান এখনো বলছেন, তাদের মধ্যে এখনও বিবাহ বিচ্ছেদ হয় নাই। বিবাহ বিচ্ছেদ এর আগে সন্তানের অভিভাবকত্ব বা জিম্মা দাবি করা যায় কি?
আবার যে বিবাহ বাংলাদেশের বাইরে নিবন্ধিত সেই বিবাহ বা ডিভোর্স এর সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের আদালত দিতে পারে কি?
সেই বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক বিবাহের পরও নিজেকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলে পরিচয় দিয়ে স্ত্রীর ছোট বোনের বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। ভদ্রলোক যে জাপানী নাগরিককে বিয়ে করেছেন তার ছোট জাপানের একটি বেসরকারি টেলিভিশন এর সাবেক উপস্থাপিকা। তাঁর নাম লিখে অনলাইনে সার্চ করলে পারিবারিক তথ্য অনলাইনে পাওয়া যায়।
জাপানের আইন অনুযায়ী বিবাহ বিচ্ছেদ এর পরও সন্তানদের সাথে দেখা করার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত একজন জাপানী মডেল আছেন, যার নাম ROLA। বাবা বাংলাদেশী, মা জাপানীজ। বাবা মা র বিচ্ছেদ এর পরও রোলা এবং তার ভাই এর দায়িত্ব বাবার কাছে ছিল, জাপানী আইন সম্পর্কে বাংলাদেশী আমেরিকান যা বলেছেন তা ঠিক নয়।
মোরাল অব দ্যা পোস্ট-
স্বামী স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদ এর আগে সন্তানের অভিভাবকত্ব বা জিম্মা দাবি করা যায় কি? কোনটা আগে?
গ্রাম বাংলার টুসু উৎসব … টুসুপূজা ও টুসুগান [দশম পর্ব – দশম পরিচ্ছেদ]
গ্রাম বাংলার টুসু উৎসব ……..টুসুপূজা ও টুসুগান
[দশম পর্ব – দশম পরিচ্ছেদ]
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
টুসু উৎসব পালনের সময় পৌষ মাসের শেষ চারদিন চাঁউড়ি, বাঁউড়ি, মকর এবং আখান নামে পরিচিত। চাঁউড়ির দিনে গৃহস্থ বাড়ির মেয়েরা উঠোন গোবরমাটি দিয়ে নিকিয়ে পরিস্কার করে চালের গুঁড়ো তৈরী করা হয়। বাঁউড়ির দিন অর্ধচন্দ্রাকৃতি, ত্রিকোণাকৃতি ও চতুষ্কোণাকৃতির পিঠে তৈরী করে তাতে চাঁছি, তিল, নারকেল বা মিষ্টি পুর দিয়ে ভর্তি করা হয়। স্থানীয় ভাবে এই পিঠে গড়গড়্যা পিঠে বা বাঁকা পিঠে বা উধি পিঠে ও পুর পিঠা নামে পরিচিত। বাঁউড়ির রাত দশটা থেকে টুসুর জাগরণ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মেয়েরা জাগরণের ঘর পরিষ্কার করে ফুল, মালা ও আলো দিয়ে সাজায়।
পৌষ সংক্রান্তির আগের রাতে মেয়েরা গোবর দিয়ে পৌষ বুড়ি তৈরী করে সন্ধ্যেবেলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে গান করতে করতে সারা রাত পৌষ আগলায়। এই পৌষ আগলানো মানে ফসল আগলানো। খেতে পাকা ফসল, পুরুষেরা রাতে সেখানে পাহারায় ফসল আগলানোতে ব্যস্ত। মেয়েরা তাই গৃহের রক্ষক, একা রাত জাগা যায় না। তাই দলবেঁধে উৎসব।
টুসু ঘরের মেয়ে, ফসল রূপী আবাদের দেবী। এই আরাধনা কবে থেকে চলে আসছে তার সঠিক তথ্য না পাওয়া গেলেও সম্রাট অশোকের আমলে এই একই ধরনের সমান্তরাল উৎসবের বর্ণনা পাওয়া যায় ধৌলি ও জৌগাডা শিলালিপিতে পাওয়া যায়। সমগ্র ধলভূম, বরাভূম ও মানভূমগড় জুড়ে একটা প্রচলিত কাহিনী শুনতে পাওয়া যায় কান পাতলেই। কাশীরাজের কন্যা টুসু ও ভাদু ইত্যাদি ইত্যাদি.. কান্তু গবেষনায় স্পষ্ট হওয়া গ্যাছে যে এই গল্প গল্পই।তার কোন সারবত্তা নেই কুড়মি সংস্কৃতি বা রুচির সাথে।
তাই এই ঘরের শস্যরূপী দেবীর কাছেই যত আবদার, অভিযোগ এবং তার কাছেই আনন্দের প্রকাশ। গানগুলিতে তারই প্রকাশ ঘটে।
# চাল উলহাব রসে রসে
মুঢ়ি ভাজব রগড়ে
সতীন মাগি মইরয়েঁ গেলে
কাঠ চালাব সগড়ে
সতীন মইরল্য ভাল হল্য
ছাতির ভাত মর হেঁট হল্য
সতীন ছিল চৈখের বালি
তাই আগে অকে লিল
#
“টুসুর মাচায় লাউ ধরেছ্যে
ধরেছ্যে জড়া জড়া
হাত বাড়াঞে ধইরতে গেলে
পায় জড়া পানের খিলি
জড়া জড়া পানের খিলি
যাঁতি কাটা সুফারি…
# ১) টুসুর চালে লাউ ধইরেছে
লাউ তুল্যেছে বাগালে
যবে বাগাল ধরা যাবি
বড়বাবুর হুজুরে
যখন বাগাল ধরা যায় মা
তখন হামরা বাঁধঘাটে
ঘাটের হল্যৈদ ঘাটে দিঞে
হামরা যাই মা দরবারে
দরবারে যে গেছলে টুসু
মকদ্দমায়ঁ কি হল্য
মকদ্দমায় ডিগরি হল্য
নীলমনি চালান গেল
বা
# ২ )”উপরে পাটা তলে পাটা
তার উপরে দারোগা
ও দারোগা সইরাঞ বস গ
টুসু যাবেক পুরুল্যা
পুরুল্যা যে গেছলে টুসু মকদ্দমায় কি হল্য
মকদ্দমায় ডিগরি হল্য
নীলমনি চালান গেল”(এই দু ভাবেই গাওয়া প্রচলিত)
রাত পোহালে আসে মকর।
“তদের ঘরে টুসু ছিল
দিন করি আনাগনা
কাইল ত টুসু চল্যে যাবে
হবে গ দুয়ার মানা”
গানে গানে টুসু নিরঞ্জন। রঙীন সুদৃশ্য চৌড়লে চাপিয়ে টুসুকে ভাসিয়ে দেওয়া হয় বড়ো জলাশয় বা নদীতে। সবেধন নীলমণি কন্যারত্নটিকে জলে ভাসিয়ে দেওয়ার সময়, গ্রাম্য রমণীদের সে কি শোকবিহ্বল চেহারা! অশ্রুসিক্ত বদনে তখন সেই মন খারাপের গান-
“আমার বড়ো মনের বাসনা,
টুসুধনকে জলে দিবো না।”
মকর পরবের অপরিহার্য অঙ্গ টুসু গান। মানুষের চিরন্তন আশা আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয় এইসব টুসু গানে। মানভূমের ভাষা আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গের দিনে মানুষকে সচেতন করার কাজে টুসু গানের এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে।প্রকৃত অর্থেই টুসু কুড়মিদের মহামিলনের পরব।
শুরুতে মাঝের কোনো স্টেশনে থামবে না মেট্রোরেল
ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল চালু হচ্ছে আর এক দিন বাদেই, অর্থাৎ বুধবার। শুরুতে মেট্রোরেল চলবে দিনে চার ঘণ্টা—সকাল ৮ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলার সময় ট্রেনগুলো মাঝপথে কোথাও থামবে না।
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ধীরে ধীরে মেট্রোরেল চলাচলের সময় ও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন
জাতীয় সংসদ থেকে হারুনুর রশীদের পদত্যাগ
একাদশ জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে হারুনুর রশীদ নিজের পদত্যাগপত্র দেন।
হারুনুর রশীদ আজ বেলা ১১টার দিকে পদত্যাগপত্র নিয়ে জাতীয় সংসদ ভবনে যান। দুপুর ১২টার দিকে তিনি সংসদ ভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের কাছে নিজের পদত্যাগের কথা জানান তিনি।
সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য ছিলেন সাতজন। তাঁরা ১০ ডিসেম্বর দলের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পরদিন ১১ ডিসেম্বর বগুড়া-৬ আসনের জি এম সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের (৫০) রুমিন ফারহানা জাতীয় সংসদ ভবনে গিয়ে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ বিদেশে থাকায় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার অসুস্থ থাকায় তাঁরা সেদিন সশরীর পদত্যাগপত্র দিতে পারেননি। তবে তাঁদের পক্ষ থেকেও সেদিন স্পিকারকে পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্যের পদত্যাগপত্র তিনি পেয়েছেন। তবে হারুনুর রশীদ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ই-মেইলে, তাঁর স্বাক্ষর স্ক্যান করে বসানো হয়েছে। এ কারণে সেটি গ্রহণ করা হবে না। তাঁকে আবার পদত্যাগপত্র দিতে হবে।
১১ ডিসেম্বর রাতে জাতীয় সংসদের ছয়টি আসন শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদ সচিবালয়।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
A Devil Mind
তারপর কোটি কোটি বছর কোন প্রশ্ন ছাড়াই তোমাকে ভালবেসে যাবো।
হঠাৎ একদিন তোমার কোন ইচ্ছার অবাধ্য হবো।
বিতাড়িত হবো,
ইবলিশ হবো,
শয়তান হবো;
আমি কথা দিচ্ছি শেষ দিন অথবা কেয়ামত সংগঠিত হবার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত তোমার কোন ইচ্ছা পূরণ হতে দেবো না।
আর আমি বিতাড়িত হলে তুমিও কি আমার ভালবাসা থেকে বিতাড়িত হবে না?
খেলার আগেই বিজয়ী যারা!
ফুটবল কিংবা ক্রিকেট- বিশ্বকাপ আসলেই উন্মুখ হয়ে থাকে খেলাপ্রেমীরা। তবে খেলার চেয়েও বেশি কৌতূহলী- কোন দল জিতবে বিশ্বকাপ? এ নিয়ে খেলা শুরুর কিংবা দিনক্ষণ ধার্যের অনেক আগ থেকেই চলে জল্পনা-কল্পনা, তর্ক-বিতর্ক।
ভালো লাগা বা ভালোবাসার জায়গা থেকে অনেকেই তার পছন্দের দল বিশ্বকাপ জিতবে বলে একটা মত প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে থাকে। হোক সে দল নতুন কিংবা পুরাতন। মত প্রতিষ্ঠা করলেই কি দল জিতবে? নিশ্চয়ই না! প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে দলের সক্ষমতা, খেলোয়াড়দের মাঠের শক্তি জয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জয়ের দৃঢ় বিশ্বাস বুকে মাঠে নামে দলগুলো। নিজেদের সবটুকু দিয়েই ভালো করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন খেলোয়াড়রা। কিন্তু ভাগ্য সহায় হলে কেউ শেষ অবধি টিকতে পারে নচেৎ/ লজ্জার হার মেনে বিদায় নিতে হয় আসর থেকে। তবে আত্মবিশ্বাসই শেষ কথা নয়, মাঠের পারফর্মের মাধ্যমে জয় ছিনিয়ে আনতে হয়। তবে, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও টুর্নামেন্টে পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি বিশ্বকাপে ‘ওভার কনফিডেন্সিয়াল’ একটি দলকে লজ্জাজনক হার নিয়ে আসর ছাড়তে দেখা গেছে। বছর কয়েক আগেও এমনভাবে হারতে হয়েছিল আরেকটি দলকে। তবে প্রত্যাশা ছিল অনেকটাই বেশি, সাথে দলের শক্তিমজ্জাও ছিল বেশ পোক্ত; এসব কিছু হিসাব কষে অনেকেই জয়ের ভবিষ্যদ্বাণী করে আসছে। কিন্তু শেষ অবধি সেই ভবিষ্যদ্বাণী মুখ থুবড়ে পড়েছে।
প্রযুক্তি আর বিশ্বায়নের যুগে কি কেউ গণকের কথায় পাত্তা দেয় কেউ? দেয়, ‘ওভার কনফিডেন্সিয়াল’ যারা! বিধায় মাঠে নামার আগেই ‘এবার আমরাই জয়ী হবো’ বলে (আমানতউল্লাহর মতো) মতবাদ প্রচার করে। দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির দলগুলো তাদের কাছে নেহায়েত হেলার পাত্র।
―পরমতসহিষ্ণুতা মানবচরিত্রের একটি প্রশংসনীয় গুণ।
সম্ভাব্য খাদ্য সংকট এবং উত্তোরণের উপায়
আগামী বছরের সম্ভাব্য খাদ্য সংকট এবং খাদ্য নিরাপত্তা এখন টক অব দ্যা ওয়ার্ল্ড। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে বিশ্বের ছোট-বড় সকল রাষ্ট্র এ বিষয়ে সোচ্চার এবং শংকিত। আর শংকিত হওয়াটাই একান্ত স্বাভাবিক। কেননা মারাত্মক খাদ্য সংকট মানেই দুর্ভিক্ষ। আর দুর্ভিক্ষ মানেই কোটি কোটি প্রাণহানি। কেবল মানুষ নয়; প্রাণ যাবে অসংখ্য গৃহপালিত গবাদি পশু-পাখির। তাই আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি সম্ভাব্য খাদ্য সংকট এবং এ থেকে উত্তোরণের বিষয়ে যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই যথার্থ সময়।
সম্প্রতি বিশ্ব অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, বিশ্ব ‘মন্দার দ্বারপ্রান্তে’। বিশেষ করে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো এই মন্দায় অধিকতর ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। আঙ্কটাডও এক প্রতিবেদনে বলেছে, উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি, সুদের হার বাড়ানোসহ নানা কারণ বিশ্বকে একটি বৈশ্বিক মন্দা ও স্থবিরতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। তাছাড়া আই এম এফ এবং বিশ্বব্যাংকও একই আশংকার তথ্য জানিয়েছে।
যদিও খাদ্য সংকটের বড় কারণ হিসাবে রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড-১৯, পৃথিবী জুড়ে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব এবং ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু অন্তরালে মজুতদারী, কালোবাজারি, দুর্নীতি, অপচয়, সুষম বণ্টনের অভাব এবং সরবরাহ চেইন সঠিকভাবে কাজ না করাও কম দায়ী নয়। সর্বোপরি খাদ্য সচেতনতার চরম অভাব তো আছেই! এসবের ফলশ্রুতিতে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ অন্যান্য সংগঠন এবং খাদ্য বিশেষজ্ঞগণ আগামী বছর বিশ্ব জুড়ে একটি চরম খাদ্য সংকটের আশংকা প্রকাশ করছেন। আমরাও মনে করি এই আশংকা অমূলক নয়। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মতোন স্বল্প আয়তন অথচ অধিক জনসংখ্যার দেশে আগাম সচেতনতা এবং ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।
সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের ‘গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮০তম। যদিও গত বছরের তুলনায় চার ধাপ এগিয়েছে, তারপরও রাজনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার (৭৯) চেয়ে একধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ। এই পরিসংখ্যানটিও আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাহীতার চিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি আবারো অনুরোধ করছি কোন খাদ্যের অপচয় নয়, যার যেখানে যতটুকু জমি আছে তা চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বাড়ান, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। সারাবিশ্বে যে দুর্যোগের আভাস আমরা পাচ্ছি,তা থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করুন। আমি বিশ্বাস করি সকলের প্রচেষ্টায় এটা করা সম্ভব।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ বক্তৃতার এই চম্বুক অংশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী।
আর তাই দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাদ্য ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অবশ্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কৃষি ঋণ বিতরণ, গবেষণায় অগ্রাধিকার ও প্রণোদনা দেওয়ার ফলে খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পথেই ছিলাম আমরা। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে পরাশক্তিগুলোর নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞাই এখন খাদ্য নিরাপত্তা প্রধান হুমকি। এই হুমকি মোকাবিলায় আমাদেরকে মিতব্যায়ী হতে হবে। রাষ্ট্র যন্ত্র থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত — সকল পর্যায়ে প্রকৃত সাশ্রয়ী মনোভাবাপন্ন হতে হবে। দুর্নীতি, অর্থপাচার, অসাধু ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরে সমূলে উৎপাটন করতে হবে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্যশস্য সংরক্ষণ এবং আপদকালীন সময়ে এর সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করতে হবে। কারো একার পক্ষে এই খাদ্য সংকট মোকাবেলা সম্ভব নয়।
প্রয়োজন সকলের সার্বিক সচেতনতা, যথাযথ কর্মপরিকল্পনা এবং স্বদেশ প্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে সম্পূর্ণ সততা এবং নিরপেক্ষতার সাথে তার বাস্তবায়ন। তবেই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং বাংলাদেশ রক্ষা পাবে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ থেকে।
সেপাই সেপাই ভাই ভাই, অফিসারদের রক্ত চাই!
১৯৭৫ সালের নভেম্বর মাস। ক্যান্টনমেন্ট জুড়ে উত্তাল হাওয়া বইছে। সিপাহীরা বিদ্রোহ করছে। তবে তাদের দাবী স্পষ্ট নয়। একটু পর পর আকাশে গুলি ছোরা হচ্ছে। পরিস্থিতি কোন যাচ্ছে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে মেজর জিয়াকে বন্দি করা হয়েছে। বেগম জিয়া ব্যাকুল হয়ে বার বার জেনারেল ওসমানীকে ফোন করতে লাগলেন। তার একটি কথা স্পষ্ট-স্যার, আমার স্বামীকে নিরাপত্তা দিন! তাকে ছাড়াবার ব্যবস্থা করুন। আমি কথা দিচ্ছি, আমার স্বামী, ছেলেদের নিয়ে গ্রামে চলে যাব। আপনি কিছু একটা করুন। জেনারেল ওসমানি কর্নেল তাহেরকে ফোন করে মেজর জিয়াকে ছড়াবার ব্যবস্থা করতে বললেন। কর্নেল তাহের ছিলেন মেজর জিয়ার ঘনিষ্ট বন্ধু। শুধু বন্ধু নন তারা ছিলেন সহযোদ্ধা। কর্নেল তাহের গাড়ী নিয়ে ক্যান্টনমেন্টের দিকে রওনা হলেন। তার গাড়ী ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে যেতেই সকল সৈনিক তার সাথে যুক্ত হল। সৈনিকরা ছিল কর্নেল তাহেরের পক্ষে। তারা কর্নেল তাহেরকে দেখে অতি উৎসাহী হয়ে পড়লো। কর্নেল তাহের সিপাহীদের উদ্দেশ্য সংক্ষিপ্ত ভাষান দিতে গিয়ে বললেন-প্রিয় ভাইয়েরা আমার, আপনারা জানেন, দেশ আজ স্বৈরাচারীদের দখলে, অফিসাররা সৈনিকদের লাশের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। আমরা কখনো তা হতে দিব না। মেজর জিয়াকে অন্যায় ভাবে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তাকে বেআইনি ভাবে রিটায়ার্ড করানো হয়েছে। আমরা তাকে মুক্ত করে আমাদের অধিকার আদায় করবো। মেজর খালেদ মোশারফ দেশে ফের ভারতীয় সেনাদের প্রতিষ্ঠা করতে চায় আমরা কখনো তা হতে দিব না।
কর্নেল তাহেরের এ বক্তব্যে সৈনিকরা রোশে ফেটে পড়লেন। তারা আকাশ ফাটিয়ে স্লোগান দিতে লাগলেন-
“সেপাই সেপাই ভাই ভাই, অফিসারদের রক্ত চাই!… সেপাই সেপাই ভাই ভাই
সুবেদাররের ওপরে অফিসার নাই”।
সেদিন কর্নেল তাহেরের নির্দেশে সৈনিকরা অফিসারদের খুন করতে লাগলেন। সেনাবাহনীর শৃঙ্খলা সম্পূর্ণ রুপে ভেঙে গেল। সিপাহীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য অফিসাররা পালিয়ে বেড়াতে লাগলেন। জাতি চুপচাপ দেখতে লাগলো এক নারকীয় অধ্যায়।
মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ (বীর উত্তম) অফিসার মেসে বসে আছেন। তার চোখে কালো চশমা, হাতে জ্বলন্ত সিগারেট। মেজর খালেদকে খুব একটা বিচলিত মনে হচ্ছে না। এমন সময় মেজর হুদা এবং মেজর হায়দার এলেন। কিছু সময় মেজর খালেদের দিকে তাকিয়ে বললেন-স্যার কিছু একটা করুন। পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে খারাপ। আপনি মেজর জিয়াকে ছেড়ে দেবার নির্দেশ দিন।
খালেদ মোশারফ সিগারেট টানতে টানতে বললেন-তোমরা কি জানো? বঙ্গবন্ধুর খুনি কে?
– জ্বি স্যার! জানি।
– তোমরা কি জানো দেশে কারা অশান্তি সৃষ্টি করছে?
– জ্বি স্যার! জানি।
– তাহলে তোমরা কেন আমাকে খুনিদের সামনে মাথা নত করতে বলছো? একজন সৈনিক কখনোই খুনিদের সামনে মাথানত করতে পারে না। বঙ্গবন্ধুর খুনি মোশতাক, ডালিম, ফারুক এবং রশিদকে আমি দেশ ছাড়া করেছি। এখন জিয়ার পালা। জিয়াকে আমি হাতির আট পা দেখাবো।
এমন সময় স্টেনগান হাতে নিয়ে দুজন ব্যক্তি অফিসার মেসে ঢুকলেন। তারা হলেন ক্যাপ্টেন আসাদ, ক্যাপ্টেন জলিল। তারা স্টেনগান খালেদ মোশারফের দিকে তাক করলেন। খালেদ মোশারফ ক্যাপ্টেনদের দিকে তাকিয়ে বললেন- তোরা আমাকে খুন করতে চাস? আমি যুদ্ধের মাঠে নিজের জীবনকে বাজি রেখে তোদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করেছি। তোরা কি ভুলে গেছিস? ক্যাপ্টেনরা একে অপরের মুখে দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করতে লাগলেন। তাদের মুখ শুকিয়ে গেল। হঠাৎ এমন সময় বাইরের থেকে কেউ একজন এসে বললেন-শ্যুট দেম! তার কমান্ড শুনে ক্যাপ্টন আসাদ এবং ক্যাপ্টন জলিল স্টেনগান চালাতে লাগলেন। সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন দেশের তিন সূর্য্য সন্তান। কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল চারিদিক।
মেজর খালেদ মোশারফের হত্যার মাধ্যমে দেশের জঘন্যতম সিপাহী বিদ্রোহ শেষ হলো। কর্নেল তাহের মেজর জিয়াকে মুক্ত করে আনলেন। মুক্ত হবার পর মেজর জিয়া কর্নেল তাহেরকে জড়িয়ে ধরলেন, আবেগের সাথে বললেন, আজ থেকে তুমি আমার বন্ধু নও তুমি আমার আপন ভাই। তোমার এ উপকার আমি কখনো ভুলবো না।
ছাড়া পাবার পর মেজর জিয়া ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসেন। সে সময় সিপাহী বিদ্রোহীদের বিচারের দায়িত্ব নেন। মেজর জিয়া এই বিচারের নামে প্রথমেই তিনি কর্নেল তাহেরকে গ্রেফতার করেন। নির্বাচিত সরকার উৎখাত, সেনাবাহিনীতে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত কারার দায়ে কর্নেল তাহেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্রে মেজর জিয়া সাক্ষর করেন। বিচারে ২১ জুলাই, ১৯৭৬ মেজর জিয়ার আদেশে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দেয়া হয়।
প্রাক্তনের সঙ্গে যদি আবার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায় তবে মাথায় রাখতে হবে কিছু কথা
সময় মাঝে মাঝে আমাদের সাথে আজব আচরণ করে। কখনো কোনো রাস্তার বাঁকে চলতে চলতে দেখা হয়ে যায় এমন কারো, যার সাথে একসময় একটা রোমান্সের সম্পর্ক হয়েছিল কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে এই হঠাৎ দেখা থেকে শুরু হয় ফের যোগাযোগ। কথাবার্তা চলতে চলতে দু’জন মিলে হঠাৎই আবিষ্কার করি, একসময় মনের মধ্যে পরস্পরের প্রতি যে অনুভূতি জমেছিল তার ওপর সময়ের পলি পড়লেও গভীরে তা একই রকম টাটকা রয়েছে।
এরকম পরিস্থিতিতে অনেকেরই নতুন করে সম্পর্কটা শুরু করতে চায়। প্রাক্তন নতুন করে সম্পর্ক শুরু করাটা নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার, কিন্তু দ্বিতীয়বার হ্যাঁ বলার আগে মাথায় রাখতে হবে কিছু জরুরি বিষয়।
প্রেমটা কেন ভেঙে ছিলঃ
প্রাক্তনের নতুন করে পথ চলা শুরু করার আগে নিজেকে উপরের প্রশ্নটা করা দরকার। একটা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পেছনে নানারকম কারণ থাকতে পারে। সম্পর্কটা দীর্ঘ বা সংক্ষিপ্ত যাই হোক না কেন, ভেঙে যাওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ ছিল। অনেক সময় এমন সব কারণে সম্পর্ক ভাঙে যার উপর কারো কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। যেমন- পারিবারিক চাপ, চাকরি সূত্রে অন্য দেশে চলে যেতে বাধ্য হওয়া। এরকম কোনো কারণে বিচ্ছেদ হয়ে থাকলে চিন্তার কিছু নেই, নতুন করে জীবন শুরু করতেই পারে যে কেউ। কিন্তু যদি মতের অমিল, ঝগড়াঝাঁটির মতো কারণে আলাদা হয়ে থাকলে, নতুনভাবে সব কিছু শুরু করার আগে একটু ভাবার দরকার আছে। কারণ সমস্যাগুলো যে আবার ফিরে আসবে না, তার কোনো গ্যারান্টি কিন্তু নেই!
অতীতের কথা ভুলে যেতে হবেঃ
যদি সব পার্থক্য উপেক্ষা করে প্রাক্তনেরই নতুন করে জীবন শুরু হয়, তা হলে কিন্তু অতীতের সমস্ত তিক্ততা ভুলে যেতে হবে। পুরোনো বোঝা নিয়ে ঘুরে লাভ নাই।
অতীতের তুলনা করা যাবে নাঃ
নতুন করে সম্পর্ক শুরু মানে আর মতপার্থক্য হবে না, তা তো নয়! কিন্তু তর্কবিতর্কের সময় বর্তমান সময়টাকে অতীতের নিরিখে বিচার করা ঠিক না। বর্তমান সমস্যাটা মেটানোর ওপরে জোর দিতে হবে, সঙ্গীর আচরণে পুরোনো প্যাটার্ন খুঁজে বের করার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। অতীত থেকে বের করে আনতে হবে নিজেকে।
পারফেকশনের পিছনে দৌড়ে লাভ কীঃ
কেউই নিখুঁত হয় না। তাই জুটি কেন পারফেক্ট কাপলের উদাহরণ হয়ে উঠছে না তা ভেবে মাথা নষ্ট করার মানে হয় না। প্রত্যাশার পারদ নামিয়ে রাখতে হবে, জীবনের ছন্দের তাল মেলানোর চেষ্টাই করা উচিত।
পা বাস্তবের মাটিতে রাখা বাঞ্ছনীয়ঃ
যদি প্রাক্তনের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক শুরু করার ব্যাপারে কেউ সিরিয়াস হয়, তাহলে তার খোলামেলা কথা বলতে হবে। তার মতামত জানতে হবে। আগে থেকে খোলাখুলি কথা বলে নিলে ভবিষ্যতে অনেক অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি এড়ানো যাবে।
(বিবাহিত সকল নর-নারী সংসারে সুখী হন।)
.
সূত্র: ফেমিনা/ঢাকা ট্রিবিউন।