অনুমান

এমন অন্ধকার! বৃক্ষছায়ার নিচে জড়ো হয়
বাচ্চাদের মতো লুকোচাপা খেলে
পুরোনা অভয়ারণ্য, স্টেশন পেরোলে বাজার
অনেক রাত্রি, বৈচিত্র্য দেখতে রাস্তার ধূলো-
অদৃশ্য মৃত্যুনাচের ভেতরে বিস্ময় চোখ
ঝুড়িভর্তি আলো হোস্টেলের রূপশাদা সাবান
রটিয়ে দিচ্ছে সেসব অনুমান…

হয়তো, এ পথে কারোর আগমন ঘটেছিল
এ্যাকোরিয়ামে নদী ঘুরে বেড়ানো জলঘাট
মেঘ থেকে বৃষ্টি নিছক পাখি দেখতে
আগের প্রস্তুতি সেরে আসা শৌখিন সরোদ
এই পরম যত্ন গড়াতে থাকে একেবারে হৃদয়ে!

তাল ও তেল সমাচা

tty

তালবাজ ও তেলবাজেরা
নিম্নের কবিতা টি থেকে দূরে থাকুন!..

তাল ও তেল সমাচার

তলে তলে তাল মেরে
তিল কে তাল বানানোর নেশায় মাতাল যত্তসব আবালের দল!…
দিনে দিনে আয়ত্ত করে গুরুচন্ডাল হাল!
তালে তেলে টইটম্বুর হলে
খুলে যায় বিশাল সম্ভাবনা, জ্বলে উঠে
আলাদিনের যাদুর চেরাগ!
খুলে যায় ঝাঁপ-তাল; লাজ লজ্জা
এবংকি
চার আঙুলের চকচকে কপাল!..

তালে তালে তালিয়া বাজে
ফন্দিবাজেরা ফন্দি খোঁজে
তলে তলে বুনে যায় নীলনকশার জাল
নৌকার তলায় ছিদ্র বানিয়ে হাওয়ায় তোলে পাল!

মোক্ষ বুঝে লক্ষ্যের পাণে ছুড়ে মারে তীর
গোলে মালে তালে গোলে সেজে যায় বীর!
তালে বেতালে এরাই আবার বাজায় মায়া বীন
তেলে তালে মিলে গেলে ফেরায় মীরজাফরি দিন!
( কি আর বাল পালাবি) তেলের পিচ্ছিলে আছড়ে পড়ে
তালের তলে খোদ তলাবি!!

মন আকা‌শে বিবর্ণ মেঘ

cho

‌বিবর্ণ মে‌ঘে ঢে‌কে যায় মন আকাশ
‌থে‌‌মে থে‌মে বু‌কে উঠানামা ক‌রে দীর্ঘশ্বাস
শুভ্র মেঘ সময় আমার আর নেই, আ‌মি ‌বিষণ্ণ
‌কেউ কী দু’দন্ড শা‌ন্তি নি‌য়ে আস‌বে আমার জন‌্য।

র‌বের কা‌ছে এই ফ‌রিয়াদ
দ‌মে দ‌মে ক‌রি তাঁরই ইয়াদ
ক‌ষ্টের সমুদ্দুর পার হ‌তে চাই, শুভ্র মে‌ঘে রাখ‌তে চাই মন
তাঁর দয়া হ‌লেই ত‌বে হ‌বে আমার সু‌খের ক্ষে‌তে ভ্রমণ।

দুঃখ য‌দি দিলা মাবুদ, সইবার ক্ষমতা দাও
কেন আমায় এত এত এত কাঁদাও
‌ঠো‌ঁটে ধ‌রে রাখ‌তে চাই হা‌সি
ও আল্লাহ তু‌মি জা‌নো, আ‌মি মানুষ‌কেও ভা‌লোবা‌সি।

নরম ম‌নের কিনা‌রে কেন কা‌লো মে‌ঘে‌দের হানা
আমার কেন নাই পি‌ঠে দু‌টো কল্প ডানা
আ‌মি মেঘ হ‌য়ে উ‌ড়ে যা‌বো নী‌লের বু‌কে
‌সেখা‌নে থে‌কে যা‌বো তোমার নাম জ‌পে খুব সু‌খে।

ও আকাশ মন আকা‌শে কিছু শুভ্র মেঘ দি‌য়ে যা
‌দে‌খে যা আকাশ আমার চোখ দু‌টো ভেজা
তুই বৃ‌ষ্টি ঝরাস না অথচ চো‌খে কত বৃ‌ষ্টি
‌তো‌‌কে দেখ‌তে পাই না আকাশ, আমার ঝাপসা দৃ‌ষ্টি।

র‌বের কা‌ছে প্রার্থনা এই, ‌ধৈর্য দাও বাড়া‌য়ে আরও
তোমার দয়া ছাড়া দয়া চাই না কা‌রো;
কষ্ট য‌দি দাও সই‌তে যেন পা‌রি, ‌
শুভ্র মে‌ঘের মত নরম নরম অনুভূ‌তি‌তে ভ‌রে দাও প্রভু ম‌নের বা‌ড়ি।

.
(স‌্যামসাং এস নাইন প্লাস, স্তান অজানা)

প্রেমটেম

নদীর দিকে তাকালে টের পাওয়া যায় সব নিমিষে। তবু ভনিতা করছে নদী নিখুঁতভাবে। এবেলা ছিলো তৃষ্ণা। ওবেলা প্রচন্ড ক্ষুধা। তারপর মুক্ত হতে চাওয়া পাখির মতো। খড়কুটো মুখে এ ডালে- ও ডালে ওড়াউড়ি। কোন নীড় থাকে না অক্ষত। এতো ঝড়বৃষ্টি! বসন্ত এখনো নাকি রয়েছে বাকি! নতুন সুরে গাওয়া হয় গান। যেতে হয় পূর্ণিমা স্নানে। কবিতা লেখা হয় সেসব আদলে। হারিয়ে যাবে সমস্ত পান্ডুলিপি। যেভাবে সযত্নে মালা গেঁথে ছিড়ে ফেলা হয় নীরবে কতবার।

জোয়ার-ভাটায় যে তরী হারাল পথ। খুঁজে পেলে তার খোলস। হাহাকার করছে ফাঁকা বাতাস।

কবরের মাটি

100images

মা গো তোমার কবরের মাটি
এখন আমার বুকের মাঝে-
নিঃশ্বাসের আগে গন্ধ পাই যত!
আগে কোন দৃশ্যময় ছিল না মা-
এখন গুমরে মরা, বাতাসের আগে
দৃশ্যময় ভেসে যায় মা গো- মা
মেঘহীন বৃষ্টিগুলো চোখ থেকে
বুক গড়ে গড়ে হাতের মুঠোই
অসহ্য কষ্ট; আরটুকু আয়ু দিলে না
কোন আল্লাহ্? মৃত্যু কেনো নিঠুর।

০৯ শ্রাবণ ১৪২৯, ২৪ জুলাই ২৩

একদিন যাব

একদিন সত্যিই যাব
গলির সব খানাখন্দ, ভেঙে
পড়া ল্যাম্পপোস্ট এড়িয়ে
সেদিন আকাশ হাসবে
প্রতিবেশীর বাড়ির ফুল
হেসে উঠবে খিলখিল
গঙ্গার প্রত্যেক নৌকা তুরুতুর
তিরতির গল্প বলবে অবিশ্রান্ত
একদিন যাব, সত্যিই
সচকিত সিংহের প্রহরা সরিয়ে
দরজা খুলে রেখো।

ঘাসগল্প

কিছুটা গৌরবগরজ নিয়ে আছি। কিছুটা রক্তাক্ত রাতের শরীরে মিশিয়ে শরীর।
এভাবে থেকে যেতে হয়। বিনয়ের কবিতা পড়ে শিখেছি বিনয়।
আর শক্তির কাছ থেকে ধার নিয়ে শক্তি, খুঁজেছি নির্জনতার ছায়া।

শনাক্ত করতে পারলে বুঝা যায় জলভাষা। দৃষ্টির দিগন্ত ছুঁলে ধরা যায়
বৃষ্টিবর্ণ। প্রতিবেশী প্রেমিকাকে ঘাসগল্প শুনিয়ে ঘুরা যায় নক্ষত্রনগর।

কিছুটা মৌনতা নিয়ে আছি। গৌণ ভুলগুলোর চূড়ায় গোলাপ পাপড়ি
সাজিয়ে বার বার হয়েছি বশ্য। পারলে দিয়ে যেতাম এর অধিক কিছু।
এই শৌর্যের সন্ধ্যাতারার মেলায়, ভার্চুয়াল জোসানারা যেমন ভাসে দ্যোতনায়।

দ্বিচারিণী

যতটা অনুসন্ধানী হওয়া গেলে তোমার অন্তরাত্মার খবর জানা যেতো
ততটা অনুসন্ধানী হতে পারেনি সেই যাযাবর; সুদূর অতীতে-
তোমার ভেতরে বহুমাত্রিক রূপ বিরাজমান
কতকটা অত্যুজ্জ্বল, কতকটা বেশ কদাকার!
অত্যুজ্জ্বল রঙের ছটায় মানুষ বিমোহিত
পাড়ার সদ্যপ্রসূত জীবন মিয়া থেকে
জীবন সন্ধিক্ষণের কদম আলীও-
ওরা তোমার বাইরের রুপটা দেখে শুধু
বহুমাত্রিক অন্তরাত্মার খবর পায়নি কোনোদিন!
তোমারও বেশ ভালো লাগে তাদের বিমোহিত হতে দেখে
রঙের তালে তালে ওরা বেশ নাচতেও জানে বটে;
তুমিও নাচাতে বেশ পটু হয়েছো ইদানিং!
অথচ যে তোমার ভেতরের খবর পেয়ে গেছে
সে আজ অন্ধকার গলিতে ধুকে ধুকে পা বাড়াচ্ছে মৃত্যুর দিকে-
হয়তো সে অচিরেই মুক্তির স্বাদ পেয়ে যাবে!
তোমারও বাইরের রঙের-ছটা ম্লান হবে একদিন
অবশিষ্ট রবে শুধুই কদাকার প্রতিচ্ছবি
তখন অত্যুজ্জ্বল রবি কিরণের মাঝেও তুমি-
শুধুই কদাকার আর কদাকারের প্রতিমূর্তি!

মন কথনিকা

মন কথনিকা-৪৯৫৯
নাস্তিকতা মনের মাঝে রেখে জীবন চালাও
তেলবাজিতে সেরা বাপু বিপদ দেখলে পালাও,
স্বার্থপর সব মানুষের বাস শহর নগর গায়ে,
ঋণ খেলাপী হয়ে কেহ ভাসে পাপের নায়ে।

মন কথনিকা-৪৯৬০
ঘুরি ফিরি ইচ্ছে তবু মনে লাগে ভয়
ভয় পারি না করতে আমি যুদ্ধ করে জয়
একা গেলে যাই হারিয়ে এ ভয় মনে রয়,
বিতৃষ্ণার সাথে তাই একা রোজ বাড়াই প্রণয়।

বৃষ্টির দিন

বৃষ্টির দিন মন কেমন করে। ঘুমঘুম পায়। যদি ঘুম ভাঙে এমন দিনে, বৃষ্টির শব্দ শিহরণ জাগায়। মনে হয় মায়াবী সুরে কেউ পিয়ানো বাজায়! উঁকি দিলে আধখোলা জানলায়, দেখা যায় পদ্ম টলমল। অদূরে ঘাসের জমি ভিজে জবজব। কাঁপছে বন্দী গোলাপ বারান্দায় টবে। শামুক হাঁটতে চায় জিহ্বা লেলিয়ে। যদি খোলা হয় ঘরের দুয়ার। এলোমেলো হবে সব মাতাল বাতাসে। এলোকেশী তখন শুনতে পাবে মেঘের নাদ। কতবার যে বিজলী চমকাবে! পাহাড় দুলবে সে ঝড়ে।

বৃষ্টি হচ্ছে বহুদিন পর। এমন বৃষ্টি চেয়েছে চাতক!

জলবৃষ্টি

জানালার ওধারে অদূরের হিজল গাছ

মধ্যরাতের এক নকশাল হাওয়া এসে
মৃত জোনাকির ছায়া তলে ক্ষয়ে যাচ্ছে
একটা বিস্ময়চিহ্ন, দেখতে আকাশ, মেঘ-

বৃষ্টির সঙে তোমার ছায়া ঘুরে বেড়ায়
তুমি ভিড়ে যাচ্ছ জলের ভেতর;
এই রাতে-পাখির ডানা ঝাপটানো শব্দ
গাছগুলোর পিঠাপিঠি পলাতক
শাদা ঘোড়ার পাশে
অন্যরা সব একে অপরের বুকেপিঠে
দোল খাচ্ছে।ক্রীতদাসী রাত, জলবৃষ্টি!

.
২১ জুলাই ২০২৩

বোলপুর

এই বোলপুরে
নাইন্টিথ্রি-ফোরে
বাড়িঘর অর্ধেকও ছিল না
চাদর নয়, ডানলোপিলো না
এক হেঁড়ে তক্তপোষে মাদুর বিছিয়ে শুতাম
ফরসা ফরসা বাদুড় ঝুলত ছাদ থেকে
মাঝরাতে হাত বাড়িয়ে তাদের তলপেট ছুঁতাম

.
(“ছোটলেখকি” বইয়ের ছড়া)

প্রয়াণের একযুগ! বিনম্র শ্রদ্ধা হে সাহিত্যের জাদুকর হুমায়ুন আহমেদ

fft

আজ (১৯ জুলাই) বাংলার নন্দিত কথাশিল্পী ও চিত্রনির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। দেখতে দেখতে কেটে গেল জন নন্দিত এই কথাশিল্পীর প্রয়াণের একটি দশক। ২০১২ সালের আজকের এই দিনে ক্যান্সার চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি নিউইয়র্কের বেলভ্যু হাসপাতালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান জোছনার গল্প কথক কিংবা হিমু-মিসির আলির এই স্রষ্টা। তার মৃত্যু শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী সব বাঙালির হৃদয়ে গভীর শোকের অন্ধকার ছড়িয়ে দিয়েছিল।

মাত্র ৬৪ বছরের জীবনে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যর প্রায় প্রতিটি শাখা প্রশাখায়। বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের অস্তিত্বের সাক্ষর রাখেন। তার ‘নন্দিত নরকে’ আর ‘শঙ্খনীল কারাগার’ পাঠ করে আবিষ্ট হয়েছিলেন, সেই আবেশ আজও কাটেনি বাংলা ভাষার পাঠকদের। তিনি তাঁর সাহিত্য দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ রেখেছেন বাংলার মানুষকে, তিনি জয় করে গেছেন একেবারে শাদামাটা বাঙ্গালীর মন কে, আবার উন্নত ঐশ্বর্যিক বাঙ্গালিয়ানাকে। নিজেকে তিনি যেভাবে বাংলা কথাসাহিত্যের অঙ্গনে, টেলিভিশন নাটক আর চলচ্চিত্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন তা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক বিরল । তিনি এদেশের সৃজনশীল সাহিত্য প্রকাশনাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বিপুল পাঠকপ্রিয়তা সৃষ্টির মাধ্যমে। ভারতীয় বাংলা গল্প, উপন্যাসে নিমগ্ন পাঠকদের বাংলাদেশি লেখকদের বই পড়তে বাধ্য করেছিলেন তার আশ্চর্য জাদুকরী গল্পের জালে জড়িয়ে। মোহাবিষ্ট পাঠক হুমায়ূন আহমেদের রচনায় মধ্যবিত্ত জীবনের হাসি-কান্নার এমন নিবিড় পরিচয় পেয়েছেন, যেখানে তাদের নিজেদেরই জীবনের ছবি প্রতিবিম্বিত। এক হুমায়ুন আহমেদের পথ ধরে এগিয়ে এসেছেন অসংখ্য প্রতিভা, অসংখ্য মানুষ তার হাত ধরে হয়েছেন অনন্য, একেবারে সাদামাটা মানুষকে তিনি বানিয়ে দিয়েছেন নন্দিত চিত্রতারকা!তাদের অনেকেই হয়েছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী। আমরা তাঁর সৃষ্টিতে খুঁজে পাই অসাধারণ সব নৈপুণ্য, অনন্য নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, খুঁজে পাই আমাদের জীবনের নানান সব ব্যঞ্জনা।

হুমায়ূন আহমেদের অনন্য সৃষ্টি হিমু! সে এক অসাধারণ চরিত্রের নিরন্তর পথ চলা… এক ভিন্ন মেজাজ, ভিন্ন স্টাইল, ভিন্ন রঙ রূপ এর অপূর্ব সমন্বয়, যা আমাদের দেশের বেশিরভাগ তারুণ্য কে ছুঁইয়ে গেছে, আজো ছুঁইয়ে আছে আর আগামী দিনে একিই প্রভাব নিয়ে এই চরিত্রটি টিকে থাকবে।

এদেশে দর্শকনন্দিত নাটকগুলোর একটি বড় অংশ তার সৃষ্টি। তার ছায়াছবিও সমাদৃত হচ্ছে সমানভাবে। প্রয়াণের ছয় বছর পরও বাংলা শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে চলছে তাঁরই আধিপত্য, তারই রাজত্ব, তারই জয়জয়কার! এখনো সমান তালে সমান ছন্দে বিরাজ করছে হুমায়ুন প্রভাব যা রবীন্দ্র নজরুলের পর আর কেউই খাটাতে সক্ষম হয়নি। হুমায়ূন আহমেদ এর পুস্তুক প্রকাশকদের মতে তার নতুন বা পুরনো সব গ্রন্থই সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান করে নেয়। এই হিসেব মতে হুমায়ুন আহমেদ কে আধুনিক শিল্প সাহিত্যের রিদম বলা ভুল হবেনা।

বাংলা টেলিভিশনের জন্য একের পর এক দর্শকনন্দিত নাটক রচনার পর ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়। ২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।

এছাড়া ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ছায়াছবি ‘শ্যামল ছায়া’ , ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমী পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে যেটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এবং বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। একিই বছর মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’। ২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তাঁর পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। যা দেশ-বিদেশে প্রচুর আলোচনায় আসে। তাঁর চলচ্চিত্রের মৌলিক গানগুলো তিনি নিজেই রচনা করেন, যার বেশিরভাগই পায় তুমুল জনপ্রিয়তা।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। ডাক নাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা ছিলেন গৃহিণী। তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার ছোটভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক।
তিনি ১৯৬৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক ও ১৯৭২ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ৯০ দশকের মাঝামাঝি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে লেখালেখিতে পুরোপুরি মনোযোগ দেন।

১৯৭৩ সালে প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর নাতনি গুলতেকিন খানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন হুমায়ূন আহমেদ । হুমায়ূন এবং গুলতেকিন দম্পতির চার ছেলে-মেয়ে। তিন মেয়ে নোভা, শীলা ও বিপাশা আহমেদ এবং ছেলে নুহাশ হুমায়ূন। দীর্ঘ ৩২ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৫ সালে ডিভোর্সের মাধ্যমে তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপর তিনি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুই ছেলে- নিষাদ ও নিনিত হুমায়ূন।

.
লেখকঃ দাউদুল ইসলাম
কবি ও প্রাবন্ধিক।

নির্জীবতা

দরজার নিচ দিয়ে ঢুকছে হাওয়া। এবার শীতকাল দীর্ঘ হচ্ছে মনে হয়। হোক। তাতে কার কি! পাতাঝরা দিনে ভালো হয় পাতার উৎসব। যদি থাকে মুঠোভরতি সাদা হাওয়া। পুড়িয়ে দেয়া যাবে নিশ্চিন্তে এ শব। যেভাবে উড়িয়ে নিচ্ছে স্বপ্নগাঁথা। আবার ছুড়ে ফেলছে অদ্ভুত বাস্তব। তবু কুয়াশা আসে জানলায়। ফিসফিস করে বলে কথা। একদিন পালিয়ে যাবার অপেক্ষা। সে জানে না কতবার মন পলাতক!

আরো শীতলতা নিয়ে বৃষ্টি আসছে। আসছে তুষার। কুকুরকুণ্ডলী হয়ে থাকতে হবে আর কত?

রয়ে যাবে কিছু

nit

যদি বলি জীবনের গল্প
হবে নাতো বলা শেষ
কিছু রয়েই যাবে,
যদি শুরু করি লেখা
কাগজ ফোরাবে হবেনা শেষ
কলমের কালিও ফোরাবে।

তবুও থেকে যাবে কিছু-না-কিছু
কথা আর জীবনের গল্প
মানুষের কাছে অজানা,
হবেনা বলা আর লেখা
হবেনা গাওয়া জীবনের গান
মনের কামনা বাসনা!