বিভাগের আর্কাইভঃ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য

নিমের তেলের অনন্য গুণ

বহু প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদিক ঔষধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নিমের তেল। বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণ এবং ত্বকের সমস্যা নিরাময়ে প্রাকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে নিমের তেল। অনেকেই নিমের তেলের ঘ্রাণ পছন্দ করেন না, কিন্তু নিমের তেলের চমৎকার গুণের কথা জানলে তারাও একে পছন্দ করা শুরু করবেন। চলুন তাহলে জেনে নিই নিমের তেলের চমৎকার গুনাগুণের বিষয়ে।

১। ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে
ত্বকে নিমের তেলের ব্যবহার ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। নিমের তেলে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ব্রণ দূর হতে সাহায্য করে। ব্রণ দূর করার জন্য কয়েকফোঁটা নিমের তেলের সাথে কয়েকফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে নিন। উভয় তেলের মিশ্রণটি মুখের ত্বকে ব্যবহার করুন। সরাসরি নিমের তেল ত্বকে ব্যবহার করবেন না।

২। খুশকি নিরাময় করে
খুশকির সমস্যা দূর করতে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। সাধারণত ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেই হয়ে থাকে খুশকি যা নিমের তেলের দ্বারা পুরোপুরি ভালো করা যায়। খুশকিসহমাথার তালুর অন্যান্য সংক্রমণ দূর করতেও উপকারী নিমের তেল। এজন্য আপনার শ্যাম্পুর সাথে নিমের তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

৩। অ্যাথলিট’স ফুট নিরাময়ে সাহায্য করে
অস্বাস্থ্যকর অবস্থার জন্যই অ্যাথলিট’স ফুটের মত ছত্রাকজনিত সমস্যা হয়। অ্যাথলিট’স ফুট খুবই ব্যথাযুক্ত সমস্যা, কারণ এতে পায়ে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই সমস্যাটির সমাধানের জন্য নিমের তেল ব্যবহার করুন। নিমের তেলের সাথে নারিকেলের তেল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করুন।

৪। ত্বকের উন্মুক্ত রোমকূপগুলোকে কমাতে সাহায্য করে
ত্বকের উন্মুক্ত রোমকূপের সমস্যা নিরাময়ে নিমের তেল চমৎকারভাবে কাজ করে। নিমের তেলের প্রদাহরোধী এবং ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদানের কারণেই ত্বকের উন্মুক্ত রোমকূপগুলোকে বন্ধ হতে সাহায্য করে। মুখের ত্বকের বড় রোমকূপের সমস্যা নিরাময়ের জন্য নিমের তেলের সাথে নারিকেলের তেল মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন।

৫। একজিমা নিরাময় করে
একজিমা ত্বকের সাধারণ প্রদাহজনিত একটি সমস্যা। নিমের তেলের প্রদাহরোধী ও বেদনানাশক গুণের কারণে একজিমা নিরাময়ে সাহায্য করে। আক্রান্ত স্থানে নিমের তেল ব্যবহার করলে একজিমার ব্যথা কমে। কুসুম গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা নিমের তেল মিশিয়ে নিন। এই পানি দিয়ে গোসল করুন প্রতিদিন।

৬। মশা দূর করে
নিম প্রাকৃতিক ও শক্তিশালী মশা নিরোধক হিসেবে কাজ করে। এক কাপের চার ভাগের একভাগ পরিমাণ নারিকেল তেলের সাথে ১০-১৫ ফোঁটা নিমের তেল মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন এতে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাবেন।

৭। ত্বকের শুষ্কতা দূর করে
নিমের তেল ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়। নিমের তেল ত্বককে আর্দ্র হতে সাহায্য করে। নিমের তেলের সাথে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। এটি নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে।

৮। হাইপারপিগমেন্টেশন নিরাময় করে
ত্বকের হাইপারপিগমেন্টেশন এর সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে নিমের তেল। এটি ত্বকের মেলানিনের উৎপাদনকে ধীর হতে সাহায্য করে। নিম তেল ও নারিকেল তেলের মিশ্রণ মুখের ত্বকে ও শরীরে ম্যাসাজ করুন কয়েক মিনিট যাবৎ।

সূত্র: বোল্ডস্কাই সম্পাদনা: কে এন দেয়া বিভাগ: লাইফ স্বাস্থ্য রূপ-রঙ।

যে খাবারগুলো রক্তনালীর ব্লক প্রতিরোধ করে

রক্তনালী ব্লক হওয়া স্বাভাবিক কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। এবং শুধুমাত্র এই কারণে হৃদপিণ্ডের নানা সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় অনেককে। এমনকি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হন অনেক রোগীই। কিন্তু রক্তনালী ব্লক হওয়ার এই সমস্যা থেকে খুবই সহজে মুক্ত থাকা যায় চিরকাল। এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে না একেবারেই। খুবই সহজলভ্য কয়েকটি খাবার রক্তনালীর সুস্থতা নিশ্চিত করবে।

যে খাবারগুলো রক্তনালীর ব্লক প্রতিরোধ করে :

ব্রকলি
ব্রকলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘কে’ যা দেহের ক্যালসিয়ামকে হাড়ের উন্নতিতে কাজে লাগায় এবং ক্যালসিয়ামকে রক্তনালী নষ্ট করার হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। ব্রকলির ফাইবার উপাদান দেহের কোলেস্টেরল কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

তৈলাক্ত মাছ
তৈলাক্ত মাছ বিশেষ করে সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছের ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে হৃদপিণ্ডকে চিরকাল সুস্থ ও নীরোগ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

দারুচিনি
দারুচিনির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্ডিওভ্যস্কুলার সিস্টেমের সার্বিক উন্নতিতে কাজ করে থাকে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা যায় প্রতিদিন মাত্র এক চামচ দারুচিনি গুঁড়ো দেহের কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তনালীতে প্লাক জমে ব্লক হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

কমলার রস
গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন দুই কাপ পরিমাণে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ কমলার রস পান করলে রক্ত চাপ স্বাভাবিক থাকে। এবং কমলার রসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তনালীর সার্বিক উন্নতিতে কাজ করে। ফলে রক্তনালী ড্যামেজ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়।

আপেল
আপেলে রয়েছে পেকটিন নামক কার্যকরী উপাদান যা দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় ও রক্তনালীতে প্লাক জমার প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন মাত্র একটি আপেল রক্তনালীর শক্ত হওয়া এবং ব্লক হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।

তিসীবীজ
তিসীবীজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড যা উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং রক্তনালীর প্রদাহকে দূর করতে সহায়তা করে এবং একই সঙ্গে রক্তনালীর সুস্থতা নিশ্চিত করে।

গ্রিন টি
গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যাচেটিন যা দেহে কোলেস্টেরল শোষণ কমায় এবং হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে। প্রতিদিনের চা কফির পরিবর্তে গ্রিন টি পান করলে দেহের সুস্থতা নিশ্চিত হয়।

স্বাস্থ্য তথ্য সংগ্রহ করা।

গোলাপ ফুলের ভেষজ গুণ

গোলাপ ফুল এটি সবজি বা ফলের ক্যাটাগরিতে পড়েনা। কিন্তু এটি বিভিন্ন ধরণের রান্নায় বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
এছাড়াও ব্যথা সারাতে, বমি বমি ভাব, অবসাদ ভালো করতে সাহায্য করে গোলাপ ফুল। কারণ এতে এস্ট্রিঞ্জেন্ট ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে।
সৌন্দর্য থেকে শুরু করে প্রাচীনকাল থেকেই সাস্থ্য সচেতনায় গোলাপের চর্চা হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশেই গোলাপ ফুল খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। গোলাপের পাঁপড়ি হোক বা কুঁড়ি-সবই খাদ্যগুণে ভরপুর।

গোলাপের পাঁপড়িতে ৯৫% পানি আছে। তাই এর ক্যালোরি কাউন্ট অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন সি। প্রাচীণকালে চীনদেশে বদহজমের সমস্যায় গোলাপের পাঁপড়ি খাওয়া হত। নারীদের ঋতু সমস্যাতেও গোলাপের পাঁপড়ি উপকারী। গোলাপের মনমাতানো গন্ধ অ্যারোমা থেরাপির কাজ করে। গোলাপ ফুল খেলে শরীর ভেতর থেকে তরতাজা মনে হবে।
সূত্রঃ
ইত্তেফাক/সালেহ্
অনলাইন ডেস্ক০৪ মার্চ, ২০১৭ ইং ১০:৪৮ মিঃ

আজ বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস


আজ ১৫ অক্টোবর, ‘বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস’। বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত হয়ে আসছে ১৮৭৪ সাল থেকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ২০০৯ সাল থেকে এ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসটি পালনের মূল্য উদ্দেশ্য- রোগ প্রতিরোধে সাবান দিয়ে সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো।

এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘পরিষ্কার হাত সু-স্বাস্থ্যের উপায়’। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিকভাবে হাত ধুতে পারলে ২০ ধরনের সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি, স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। হাত আমাদের মুখে খাবার পৌছে দেয়, সেই হাতই হয়ে উঠতে পারে জীবানু ছড়ানোর ভয়ংকর মাধ্যম- যদি তা অপরিষ্কার হয়। সারাদিন আমরা হাত দিয়ে কত কিছু স্পর্শ করি। তাই হাতে লেগে থাকতে পারে অনেক মারাত্নক জীবাণু। হাত ধোয়া তাই খুবই দরকার।

“হাত ধুইয়া কী হইব, হাত ধুইয়া খাইলেও মৃত্যু, না ধুইয়া খাইলেও মৃত্যু- হুমায়ূন আহমেদের এক নাটকে এক গ্রাম্য লোকের উক্তি ছিল এটি। আজও হয়তো গ্রামের অনেক লোকের এইরকম চিন্তা-ভাবনা আছে। গ্রামের অনেকেই আছেন যারা শুধু ভাত খাওয়ার আগে হাত ধোয়। অন্যান্য শুকনা খাবার খাওয়ার আগে গামছা কিংবা লুংগিতে হাত মুছে নেয়। ময়লা হাতের মাধ্যমে ছড়ায় এমন একটি মারাত্নক রোগ হলো ডায়রিয়া। শুধু গ্রাম নয় শহরেও এমন অনেক মানুষ আছেন যারা আধুনিক বলে নিজেদের দাবি করেন। হাত না ধোয়ায় পরোক্ষভাবে নিউমোনিয়া ছড়াতে সাহায্য করে। আমরা জানি এর শিকার কারা, এর শিকার বেশির ভাগ শিশুরা। The State of the World’s Children Child Survival. UNICEF অনুযায়ী প্রতি বছর ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়াতে মারা যায় ৩.৫ মিলিয়ন শিশু। শুধুমাত্র নিয়মিত হাত ধোয়ার মাধ্যমে এর বিরাট অংশকেই নিরাপদ রাখা যায়।

হাত ধোয়ার কিছু নির্দিষ্ট ধাপ রয়েছে। ধাপগুলো অনুসরণ না করলে হাত ধোয়া সঠিক হবে না। প্রথমে পানি দিয়ে হাত ভেজাতে হবে। তারপর সাবান নিয়ে দুই হাতে মেখে ফেনা করতে হবে। দুই হাতে সেই ফেনা ব্যবহার করে দুই হাতের উভয় দিক, আঙুলের ফাঁকগুলো, নখের নিচে এবং কিনারে, বুড়ো আঙুলের গোড়া এবং কবজি খুব ভালোভাবে ঘষে নিতে হবে প্রায় ১৫ সেকেন্ড ধরে। তারপর ট্যাপের প্রবহমান পানিতে হাত ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। ট্যাপটি বাম হাতে বন্ধ করতে হবে। পরিষ্কার তোয়ালে বা গামছা দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে হবে। খাওয়ার আগে মোছার প্রয়োজন নেই। এবার শিখে নেয়া যাক কিভাবে হাত ধোয়ার পদ্ধতি।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য চর্চার মাধ্যমে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। হাত ধোয়ার অভ্যাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য চর্চার একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। নিয়ম ও সময় মতো হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস, ডায়রিয়া, কৃমিরোগসহ আরো অনেক জীবাণু দ্বারা সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।

হাত ধোয়া কেন জরুরি?
হাত ধোয়া অবশ্যই জরুরি। হাত ধোয়ার অভ্যাস সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের জন্য সহজ এবং অত্যন্ত কার্যকর একটি উপায়। আমরা যখন হাত দিয়ে নানা কাজ করি, এটা-সেটা ধরি, তখন অসংখ্য জীবাণু হাতে লেগে যায়। এক মিলিমিটার লোমকূপের গোড়ায় প্রায় ৫০ হাজার জীবাণু থাকতে পারে। আর একটা আংটির নিচে ইউরোপ মহাদেশের জনসংখ্যার সমান সংখ্যক জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। এসব জীবাণু খালি চোখে দেখা যায় না। এরপর যখন আমরা সেই হাতে খাবার, মুখ, চোখ, নাক স্পর্শ করি, তখন আমরা সংক্রমিত হই। অন্যকে স্পর্শ করে তাকেও আমরা জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত করতে পারি।

আমরা কখন হাত ধোব?
খাওয়ার আগে ও পরে, খাবার-দাবারে হাত দেয়ার আগে, পায়খানার পরে, কাঁচা মাছ, গোশত, ডিম বা শাকসবজি স্পর্শ করার, শিশুদের ডায়াপর পরিবর্তন করার, ময়লা আবর্জনা স্পর্শ করার, হাত দিয়ে নাক ঝাড়ার এবং হাত দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেয়ার পরে অবশ্যই হাত ধুতে হবে।এ ছাড়া হাত যখন দেখতে ময়লা দেখাবে, তখন তো ধোবোই।হাত না ধুয়ে কখনোই তা দিয়ে মুখের ভেতর স্পর্শ করা যাবে না।

আমরা কী দিয়ে হাত ধোব?
সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাবান কিন্তু জীবাণু মারে না। সাবানের ফেনা হাতে লেগে থাকা ময়লা, চর্বি ও জীবাণুগুলোকে হাত থেকে আলগা করে ফেলে। আর তখন পানি দিয়ে সেগুলোকে সহজেই ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলা যায়। শুধু পানি দিয়ে যতই ঘষা হোক ময়লা, চর্বি ও জীবাণু কখনই পুরোপুরি পরিষ্কার হবে না।

কী ধরনের সাবান ব্যবহার করব?
যেকোনো সাধারণ সাবান দিয়েই হাত ধোয়া যাবে। ছোট সাবান বড় সাবানের চেয়ে ভালো। কারণ তা ঘন ঘন বদলানো যায়। সাবান রাখতে হবে পানি ঝরে যায় এমন সাবানদানিতে। তরল সাবান সাধারণ সাবানের চেয়ে ভালো, তবে খরচ বেশি। তরল সাবানের কনটেইনার আবার ভরতে চাইলে তা আগে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে।

আমরা হাত ধোয়ার সময় কী কী ভুল করি?
হাত ধোয়ার সময় আমরা সচরাচর কিছু ভুল করে থাকি। যেমন, হাতের দুই দিক সঠিকভাবে মাজিনা, আঙুলের ফাঁকগুলো পরিষ্কার করি না, নখের নিচে বা কিনারে পরিষ্কার করি না এবং বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিক মাজি না। অনেক সময় এক হাতে সাবান নিয়ে হালকা করে কচলিয়ে নেই। সব শেষে হাত মোছার জন্য কমন তোয়ালে বা গামছা ব্যবহার করি।আমরা হাত ধোয়ার এই ভুলগুলো করব না।

লেবু সৃষ্টিকর্তার এক অপার নিয়ামত

আপনার হাতের কাছেই আছে মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের অপার কৃপা ভেষজ ও প্রাকৃতিক নানা উপাদান। ফলদ, বনজ ও উদ্ভিজ্জ নানা ফলমূল, সবজি। তেমনি একটি ফলের নাম হচ্ছে লেবু বা লেমন। আর সব সময় পাওয়া যায় এই লেবুতে রয়েছে আশ্চর্যসব গুণ। লেবুতে রয়েছে পলি ফেনলস, ভিটামি সি, ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট সাইট্রিক এসিডসহ নানা উপাদান।

বিশেষজ্ঞগণ গবেষণায় দেখেছেন, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস লেমন ড্রিংক বা লেবুর শরবত পানে পেতে পারেন অন্তত ১২টি উপকার। এসব উপকারের মধ্যে রয়েছে, লেবুর শরবত ওজন কমাতে সাহায্য করে, শরীরের ইম্যিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়, ভিটামিন সি-এর অভাব দূর করে শরীরকে সতেজ করে, লিভার ফাংশন সঠিক রাখে বা লিভারকে সুস্থ রাখে, শরীরের অতিপ্রয়োজনীয় পটাশিয়াম লেভেল ঠিক রাখে, কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে, কিডনীর পাথর সৃষ্টিতে বাধা দেয়, শ্বাস-প্রশাস নির্মল করে, বিপাকীয় কার্যক্রম বা মেটাবলিজম এবং ডাইজেশন ঠিক রাখে এবং সর্বপরি ভিটামিন সি তথা লেমন জুস বা লেবুর শরবত ত্বক মসৃণ ও কোমল রাখে। ত্বক লাবণ্যময় করে। তাই লেবুর শরবত পান করুন। আর সুস্থ থাকুন।

প্রতিদিন একগ্লাস পানির মধ্যে একটি লেবুর এক চতুর্থাংশ থেকে অর্ধেকটা লেবুর রস দিয়ে শরবত তৈরি করুন। তবে যাদের এসিডিটি আছে তাদের লেবুর শরবত আহারের পর পান করা উচিত
ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম০৪ মার্চ, ২০১৭ ইং ০৯:২৩ মিঃ
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
সূত্রঃ ইত্তেফাক

আমাদের ভালো থাকা এবং সাদামাটা কিছু কথা

একঃ বোনের সাথে ফোনালাপ এবং TIA/স্ট্রোক

– ডান হাত পা কেমন যেন হয়ে গিয়েছিল। বোন ফোনে বললো
-কি হয়েছিল? আমি জানতে চাইলাম
-ডান পাশ খুব দুর্বল; বাম পাশ একদম স্বাভাবিক ছিল
-ডান পাশ কি অবশ হয়েছিল?
-হ্যাঁ, অনেকটা তাই। বোধ হারিয়ে ফেলেছিলাম। নাড়াতে সমস্যা হচ্ছিল
-মুখে কিছু?
-হ্যাঁ; কথা আটকে যাচ্ছিল।
-কতক্ষণ অবশ ভাব ছিল?
-কয়েক মিনিট

TIA (Transient Ischemic Attack); মিনি স্ট্রোক বলেন কেউ কেউ। কখনো কখনো এতো অল্প সময়ের জন্য হয় যে রোগী নিজেও তা বুঝতে পারেন না। সেক্ষেত্রে বুঝার উপায় হলো, কথা আটকে যাওয়া বা এক চোখে কম দৃষ্টির সাময়িক অভিজ্ঞতা হয়েছিল কিনা তা মনে করে দেখা।

TIA তে আক্রান্তের দিনই সব ঠিক হয়ে যায়। তবে সতর্ক করে যায় যে, বড় স্ট্রোক আসন্ন। তাই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।
—————————

দুইঃ ঢাকাই ছবির নায়িকা-দিওয়ানা চিরকুমার এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারে হোমিও চিকিৎসা

ভদ্রলোক আমার অনেক সিনিয়র; কিন্তু বন্ধুর মতো। বাংলা সিনেমার এক নায়িকার জন্য ভীষণ দিওয়ানা ছিলেন এবং তার কারণে বিয়েই করলেন না। তার সাথে আড্ডায় সেদিন কথায় কথায় হোমিও চিকিৎসার কথা ওঠলো।

-আমি যখন দ্বিতীয় বর্ষে একদিন অধ্যাপক গোপালচন্দ্র ফিজিওলোজি পড়াতে পড়াতে কেন জানি বলেছিলেন, “হোমিও চিকিৎসাকে বিজ্ঞান এখনো স্বীকৃতি দেয়নি”। আমি বললাম।

-কিছুদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম বিজ্ঞানীরা বলেছে, “হোমিও চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মত নয়”। এই কথাটা বলে চিরকুমার একটা সত্য ঘটনা বললেন।

“এক নিঃসন্তান দম্পতি এক মেয়েকে এডপ্ট করেছিল। মেয়েটাকে বড় করে বিয়েও দিয়েছিল। এক সময় মেয়েটা তার ব্রেস্টে শক্ত কিছু অনুভব করে। পালক বাবা হোমিও প্র্যাকটিস করতেন। তিনি টিউমারের চিকিৎসা দিতে লাগলেন। যখন বুঝলেন হোমিওতে কাজ হচ্ছেনা, মেয়েকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে গেলেন। ডাক্তাররা বললো, দেরি হয়ে গেছে। মেয়েটা বেশিদিন বাঁচেনি। মনের কষ্টে পিতাও”।
চিরকুমার কাহিনি বলা শেষ করলেন।

-জানা গেছে ব্রেস্ট ক্যানসারের দেরিতে চিকিৎসার মূল (৫০%) কারণ হলো হোমিও চিকিৎসায় লেগে থাকা। কিন্তু ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এই ক্যান্সার ভালো হয়ে যায়। আমি বললাম।
-তাইলে কি এইক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসা একটা ইনডাইরেক্ট কিলার? নাকি হোমিও চিকিৎসক ইন্ডিভিজুয়াল এজন্য দায়ি? চিরকুমার প্রশ্ন করলেন।
-আমি নিশ্চিত নই। তবে হোমিও চিকিৎসা বিষয়ে অধ্যাপক গোপালচন্দ্র যা বলেছিলেন এবং পত্রিকায় আপনি যা দেখেছিলেন তা গুরুত্বপূর্ণ । জবাবে বললাম।
—————————

তিনঃ বন্ধুদের সাথে আড্ডা এবং কিডনি ফেইলুরে ভেজাল হারবাল চিকিৎসার দায়

সপ্তাহ খানেক আগে আমার বাড়িতে ক’জন সহপাঠী বন্ধু এসেছিল। সবাই মেডিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ডের। ওদের মধ্যে তিনজন শিক্ষকতা করে, একজন মিলিটারি এবং একজন বিজ্ঞানী।

-তোর ভাই নাকি কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা বাদ দিয়ে চুপি চুপি হারবাল চিকিৎসা নিচ্ছিলেন?
এক বন্ধু আমাকে প্রশ্ন করলো।

-হ্যাঁ। ডিউটি স্টেশনে যাওয়ার আগে সিরাম ক্রিয়েটিনিন ২ এর কিছু বেশি দেখে গিয়েছিলাম। আমার কর্মস্থলে সেবার যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় সময় মতো দেশে আসতে পারছিলাম না। অনিয়মের কথা শুনছিলাম এবং জোর দিয়ে বলেছিলাম, কোনভাবেই যেন হারবাল চিকিৎসা না নেন। কিন্তু হারবাল চিকিৎসকরা তো রোগীকে কনভিন্স করতে অনেক বেশি শক্তিশালী। সিরাম ক্রিয়েটিনিন খুব দ্রুত ৬ এবং তারপর ৮ হয়ে গেল। ডায়ালাইসিস চলছিল। দেশে এসে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য চেষ্টা করলাম। উনার সেই উপযোগিতা ছিলনা। মন খারাপ করে কর্মস্থলে ফিরে গেলাম। উনার শেষ দেখা আমি পাইনি।
জবাবে বললাম।

-আমার দূর সম্পর্কের এক আন্টি, বয়স কম বেশি চল্লিশ। সৌন্দর্য বাড়ানোর (সম্ভবত স্লিম হতে) জন্য হারবাল ওষুধ খাচ্ছিলেন। উনার অন্যকোন সমস্যা ছিলনা। হারবাল নিতে নিতে এক সময় উনার কিডনি ফেইল করল। কিছুদিন আগে মারা গেছেন। আমার গ্রামের বাড়ির সতের আঠার বছরের এক ছেলেরও একই হয়েছে। ছেলেটা এখনো বেঁচে আছে বটে; তবে অবস্থা ভালো নয়।
এক শিক্ষক বন্ধু বললো।

-মানুষ জানে হারবাল ওষুধে কোন সাইড ইফেক্ট নাই। কিন্তু এসব ওষুধে লতাগুল্মের সাথে মারাত্মক ক্ষতিকর উপদান যোগ করা হয় এবং তা বদ অশিক্ষিত হারাবালিস্টরা গোপন রাখে।
বিজ্ঞানী বন্ধু যোগ করলো।

এসব দেখার কেউ নাই। তাই দেওয়ালে দেওয়ালে “কলিকাতা হারবাল”এর এমন আধিপত্য!

শিশুর ডায়াপার কি ক্ষতিকর?

শিশুর ডায়াপার কি ক্ষতিকর?

একবার ভেবে দেখুনতো হাতের নাগালে সবকিছু চলে এলেই কি তার সমাধান সহজ হচ্ছে? আগের দিনে শিশুরা অবলীলায় খেলে বেড়াত, মায়ের নজর কম থাকলেও বিপদ কম হত কিন্তু এখন? যত চিন্তা ততো বিপদ! এখন শিশুদের জন্মের পরেই ডায়াপার পরিয়ে দেয়া হয় কিন্তু অভিভাবকরা একবার ভেবে দেখেন না, শিশুর ত্বকের নীরব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। তাই শিশুকে ডায়াপার পরালেও একটু বুঝেশুনে নিয়ম মেনে পরাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা ডায়াপার নিয়ে নির্ভরযোগ্য মতামত দিয়েছেন, চলুন দেখে নেয়া যাক-

– যতবার পারেন শিশুর ন্যাপি পরিবর্তন করে দিন। এতে তার নিতম্ব পরিষ্কার ও শুকনা থাকবে।

– শিশুকে কিছুক্ষণ ডায়াপার ছাড়া উন্মুক্ত অবস্থায় রাখুন। ফুসকুড়ি দ্রুত আরোগ্য লাভ করে।

– ত্বক আর্দ্রতা মুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন।

– পানিতে আধাকাপ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে শিশুর নোংরা কাপড় ভিজিয়ে রাখুন। কোনো রকম ডিটারজেন্ট বা সাবান ব্যবহার না করে তা ধুয়ে ফেলুন।

– ডায়াপারের র‌্যাশ দূর করতে পেট্রোলিয়াম জেলি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

– শিশুর জামাকাপড় ধোয়ার ক্ষেত্রে সুগন্ধী সাবান অথবা ডিটারজেন্টের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। এগুলো অনেক সময় ফুসকুড়ির কারণ হতে পারে।

– শিশুকে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ওয়াইপ্সের পরিবর্তে ক্ষরহীন সাবান ও হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।

– শিশুকে অন্য ন্যাপি পরানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তার নিতম্বের অংশ সম্পূর্ণভাবে শুষ্ক থাকে।

– গরম পানিতে সামান্য পরিমাণ ওটামিল মিশিয়ে তা দিয়ে শিশুকে গোসল করান।

– শিশুকে প্লাস্টিকের প্রান্ত বিশিষ্ট ডায়াপার পরাবেন না।

– শিশুর নিতম্ব পাতলা তোয়ালে অথবা তুলা দিয়ে আলত করে মুছুন। কখনই জোড়ে ঘষে মুছবেন না।

– যতটা সম্ভব শিশুর শরীরে টেলকাম পাউডার কম ব্যবহার করুন। কারণ এটি অনেক সময় শিশুর শ্বাসযন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে।

যেসব সমস্যা

ত্বকে র‌্যাশ: যেসব শিশুর ত্বক সংবেদনশীল তাদের অধিকাংশেরই নিয়মিত ডায়াপার পরার কারণে র‌্যাশ ওঠে যায়। সারাক্ষণ ভেজা থাকা এবং একেবারেই বাতাস প্রবেশ না করার কারণে ত্বকে র‌্যাশ ওঠার সমস্যাটা দেখা দেয়। যার দরুন শিশুর ভীষণ কষ্ট হয়, এবং কান্নাকাটি করে।

অ্যালার্জি: ডায়াপারে সুগন্ধী সৃষ্টির জন্য বা তার কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য ব্যবহারের নানা প্রকার সুগন্ধী এবং রাসায়নিক উপাদান। অনেক শিশুই এসব রাসায়নিক উপাদানের কারণে অ্যালার্জির শিকার হয়। ফলে ফুসকুড়ি হয়ে, ত্বকের দাগের সৃষ্টি হতে পারে।

রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত: অতিরিক্ত শক্ত করে ডায়াপার পরানোর কারণে শিশুর ত্বকের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে আপনার অজান্তেই আপনার শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির ক্ষতি হয় এবং আপনার শিশু কষ্ট পায় কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারে না।

ইউরিন ইনফেকশন: শিশু যদি দীর্ঘ সময় ধরে মল-মূত্রসহ ডায়াপার পরে থাকে তাহলে, তার ইউরিন ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই শিশুর মল-মূত্র করার সঙ্গে সঙ্গে ডায়াপার বদল করা উচিত। তাছাড়াও একই ডায়াপার ৩ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পরে থাকা স্বাস্থ্যকর নয়। ৩ ঘণ্টা পর পর ডায়াপার বদলে দিন আপনার শিশুর ডায়াপার।

আদার আছে অনেক গুণ

নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করেই দেখুন না, শারীরিক অনেক সমস্যার সমাধান পাবেন আর এ জন্যই আদার গুণাগুণ এবং শারীরিক সমস্যা নিরাময়ে আদার ব্যবহার সবারই জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে চলুন আদার কিছু উপকারিতার কথা জেনে নেই।

১. হজমের সমস্যা রোধে
রক্তের অনুচক্রিকা এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম ঠিক রাখতেও আদা দারুণ কার্যকর। মুখের রুচি বাড়াতে ও বদহজম রোধে আদা শুকিয়ে খেলে বাড়বে হজম শক্তি। আদার মধ্যে ডাইজেসটিভ ট্রাক্টের প্রদাহ কমানোর ক্ষমতা রয়েছে। এটি পাচক রস নিঃসরণ করতে সাহায্য করে। এতে খাবার ও পানি খুব সহজে পেটে নড়াচড়া করতে পারে।

২. বমি রোধে
অনেক সময় আমাদের দেহে অস্থিরতা কাজ করে, তখন কোনো কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। বমি বমিভাব বা বমি হয়ে যায়। এমন সময় আপনি যদি আদা কুচি করে চিবিয়ে খান অথবা আদার রসের সঙ্গে সামান্য লবণ মিশিয়ে পান করেন। তাহলে তাৎক্ষণিক সমাধান পেয়ে যাবেন। গর্ভবতী মায়েদের সকালবেলা, বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম দিকে সকালবেলা শরীর খারাপ লাগে। এই সমস্যা কাঁচা আদা দূর করবে অনায়সে। কারণ গর্ভাবস্থায় বমি কমাতে আদা খুবই উপকারী। এ ছাড়া মর্নিং সিকনেস প্রতিরোধেও এটি কার্যকর।

৩. ক্ষতস্থান পূরণ করতে
দেহের কোথাও ক্ষতস্থান থাকলে তা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে আদা। এতে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট, যা যে কোনো কাটাছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো করে। পেশি ব্যথায় আদা কার্যকর। আদা ২৫ ভাগ পেশির ব্যথা কমাতে কাজ করে।

৪. প্রদাহ প্রতিরোধে
আদার উপকারিতা অনেক। প্রদাহ প্রতিরোধে এর গুণাগুণ তো বলেই শেষ করা যাবে না। ২৪৭ জনের একদল লোকের ওপর একটি গবেষণা করে দেখা গেছে, আদা খুব দ্রুত গাঁটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং গাঁটের ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।

৫। কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে
৮৫ জনের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন মাত্র তিন গ্রাম আদার গুঁড়ো খেলে শরীরের বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। মাইগ্রেনের ব্যথা ও ডায়াবেটিসজনিত কিডনির জটিলতা দূর করে আদা।

৬। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
আদার রস শরীর শীতল করে এবং হার্টের জন্য উপকারী। প্রতিদিন মাত্র ২ গ্রাম আদার গুঁড়ো ১২ সপ্তাহ ধরে খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১০ ভাগ কমে। পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে ১০ ভাগ।

৭। আদা ক্যান্সাররোধী
আদার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক উপাদান। এটি কোলনের ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে। ওভারির ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আদা। সুতরাং ক্যান্সারের অনেক ভালো প্রতিরোধক।

৮। মস্তিষ্কের কার্যক্রম ভালো করে
আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও বায়োঅ্যাকটিভ উপাদান মস্তিষ্কের অকালবার্ধক্য কমাতে সাহায্য করে। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়ে। তাই স্মৃতি বাড়াতে আদার কার্যকারী অনেক।

৯। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতায়
আদা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, আদার রস দাঁতের মাড়িকে শক্ত করে, দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা জীবাণুকে ধ্বংস করে। এছাড়া যারা গলার চর্চা করেন তাদের গলা পরিষ্কার রাখার জন্য আদা খুবই উপকারী।

১০। পেটের রোগ নিরাময়ে
আমাশয়, জন্ডিস, পেট ফাঁপা রোধে আদা চিবিয়ে বা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

১১। সর্দি-কাশি দূর করতে
ঠাণ্ডায় আদা ভীষণ উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট, যা শরীরের রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। জ্বর জ্বর ভাব, গলা ব্যথা ও মাথা ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ঠাণ্ডায় টনসিলাইটিস, মাথা ব্যথা, টাইফয়েড জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ হওয়া, বসন্তকে দূরে ঠেলে দেয় আদা। কাশি এবং হাঁপানির জন্য আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে সেবন করলে বেশ উপশম হয়।

১২। জয়েন্টে ব্যথা দূর করতে
হাতে পায়ের জয়েন্টে ব্যথা হলে সাহায্য নিতে পারেন আদার তেলের। খানিকটা অলিভ অয়েলে আদা ছেঁচে নিয়ে ফুটিয়ে নিন ৫ মিনিট। ঠাণ্ডা হলে ছেঁকে এই তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন হাতে পায়ের জয়েন্টে। আদার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান দূর করে দেবে ব্যথা। তবে রান্না করার চেয়ে কাঁচা আদার পুষ্টিগুণ বেশি।

১৩। পেটের মেদ কমাতে আদা ও লেবু
আদা ও লেবুর মিশ্রণ আপনার ওজন কমিয়ে আনবে জাদুকরী উপায়ে। প্রথমে আদার ছোট ছোট টুকরা করে আধা ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই পানির সঙ্গে আরো পানি মিশিয়ে একটি সম্পূর্ণ লেবু কয়েক টুকরা করে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর সারাদিন এই পানি প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় পান করুন। এতে আপনার ওজন কমার পাশাপাশি শরীরও ডিটক্স থাকবে।

আদা এড়িয়ে চলবেন যারা

১. অন্তঃসত্ত্বার সময় আদা শরীরে কড়া উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। সেজন্য অন্তঃসত্ত্বারা আদা খেলে, প্রিম্যাচিওর শিশু জন্মের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের অবশ্যই আদা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষত প্রেগন্যান্সির শেষ সপ্তাহগুলোতে তো আদা একদম খাওয়া ঠিক নয়।

২. যারা রোগা হতে চান তাদের জন্য আদা বিশেষ উপকারী হলেও, যারা শীর্ণকায় ওজন বাড়াতে উৎসাহী তাদের অবশ্যই আদা এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ আদা খিদে কমায়। এছাড়াও শরীরের চর্বি গলানোর প্রক্রিয়ায় আদা বিশেষ সহায়ক। সেজন্য যারা ওজন বাড়াতে চান, আদা তাদের কোনো কাজে আসবে না।

৩. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যারা ওষুধ খান: আদা ডায়াবেটিসের লেভেল কমাতে কার্যকরী হলেও যারা ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ওষুধ খান তাদের ডায়েট চার্ট থেকে চিরতরে ডিলিট করে দিতে হবে আদাকে। একই কথা প্রযোজ্য উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্যও। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে যারা নিয়মিত ওষুধ খান, তাদেরও অবশ্যই আদাকে এড়িয়ে চলা উচিত।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ভাসমান কুকুরকে দেওয়া হচ্ছে, জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধক ইনজেকশন !


কুকুরের জন্য ভাদ্র আশ্বিন এই দুইমাস এক বিশেষ সময়। এই দুইমাস কুকুরের প্রজনন কাল | এই সময়ে অলিতে গলিতে কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাক মানুষের মনে যতনা বিরক্তি জন্মায়, তার চেয়ে বেশি জন্মায় ভয় | ভয় হলো কুকুরের কামড়ের ভয়, কখন যেন কুকুরের কামড় খেতে হয়! এই দুইমাস সময় ভয়ে ভয়ে পার করতে পারলেই, আর তেমন একটা ভয় মানুষের মনে থাকে না। এরপর ভয়ের বদলে শুরু হয় আনন্দ! অনেকে হয়তো বলবেন, এটা আবার কিসের আনন্দ? আনন্দ হলো কুকুরের নতুন জন্মানো বাচ্চা নিয়ে ছেলে-পেলেদের মহানন্দ। তখন দেখা যায়, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা সুন্দর ফুটফুটে হরেক রঙের কুকুরের বাচ্চাগুলোকে আদর করছে। কেউ রাখছে কোলে, কেউ রাখে পিঠে। শুধু ছোট ছেলে-মেয়েরা কেন, অনেক বড়রাও কুকুরের নতুন জন্মানো বাচ্চাকে পোষার জন্য অতি আদর করে নিজের ঘরে নিয়ে যায়। সেই পোষা অনেকের দীর্ঘস্থায়ী হয়, আবার অনেকের স্থায়ী হয়ে উঠে না। কেউ পনেরোদিন, কেউ একমাস পোষার পর বিরক্ত হয়ে বাচ্চাটিকে রাস্তায় ফেলে দেয়।

আবার অনেক কুকুরের বাচ্চা মানুষের আদরযত্ন থেকে বঞ্চিতও হয়ে থাকে। যাই হোক, ভাদ্র আশ্বিন মাসে জন্মানো সব কুকুরেই শেষমেশ বেওয়ারিশ হিসেবে গন্য করা হয়। এসব বেওয়ারিশ কুকুরগুলো শহরের অলিতে গলিতে বিড়বিড় করতে থাকে। এই কুকুরগুলোর মধ্যে অনেক কুকুর খাবারের অভাবে অনেকসময় পাগলেরমত হয়ে যায়। তখন পেটের ক্ষুধায় পাগল হওয়া কুকুরগুলো অনেকসময় ক্ষিপ্ত হয়ে মানুষকে কামড়ায়। কুকুরের কামড় খেয়ে আমাদের দেশের গ্রাম ও শহরে অনেক মানুষের মৃত্যুও ঘটে। ক্যকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগে ভুগে যখন দুই-একজন মানুষ মারা যায়, তখনই শুরু হয় বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা। প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়, এসব বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে নিধন করার। গণমানুষের দাবির মুখে পড়ে ইউনিয়ন পরিষদ অথবা সিটি কর্পোরেশন শুরু করে দেয়, বেওয়ারিশ কুকুর নিধন করা বা কুকুরকে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধক ইনজেকশন দেওয়া।

আগে দেখা যেত সিটি কর্পোরেশন থেকে ভাদ্রমাস শুরু হবার আগেই, একটা ট্রাক নিয়ে শহরের অলিতে গলিতে কুকুর নিধনের অভিযানে নামতো। এই কাজে নিয়োজিত থাকতো হরিজন সম্প্রদায়ের সুইপার নামের কয়েকজন মানুষ। তাদের হাতে থাকতো বড় লম্বা সাঁড়াশি। বেওয়ারিশ কুকুর দেখা মাত্রই অনেক কলাকৌশল অবলম্ব করে, কুকুরটিকে সাঁড়াশিতে আটকানো হতো। এরপর মোটা লম্বা লাঠি দিয়ে আটকানো কুকুরটির মাথায় আঘাত করে কুকুরটিকে মেরে ট্রাকে ফেলে রাখা হতো। পরে ওইসব মরা কুকুরগুলোকে শহরের বাইরে নির্জন এক জায়গায় নিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হতো। তবে এখন বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে আর আঘাত করে মারা হচ্ছে না। মানবতার দৃষ্টান্ত রেখে বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিষেধক ইনজেকশন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনটা দেখা যায় আমাদের নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী জলাতঙ্করোধে ভাসমান কুকুরকে প্রতিষেধক ইনজেকশন দেওয়া। গত ৩১ জুলাই সকালবেলা গোগনাইল চৌধুরীবাড়ি আরামবাগ রোডে দেখা যায়, অটোরিকশা চড়ে সিটি কর্পোরেশন থেকে আসা পাঁচ ছয়জন সদস্য নিয়ে গঠিত একটা টিম। এই টিমে অংশগ্রহণকারিরা প্রথমে মাছ ধরার নেট দিয়ে কুকুরকে আটকায়। এরপর স্প্রে দিয়ে কুকুরের শরীরে লাল অথবা ব্লু রঙ ছিটিয়ে দেয়। তখন কুকুরটি খুবই উত্তেজিত হয়ে উঠে। তখন অনেক নাড়াচাড়ার কারণে কুকুরের শরীরে ইনজেকশন পুশ করতে সমস্যা হয়। কুকুরটি শান্ত হতে কয়েক মিনিট সময় লেগে যায়। কুকুরটি শান্ত হলে কুকুরের শরীরে ইনজেকশন পুশ করে আটকানো নেট থেকে কুকুরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। নেট থেকে ছাড়া পেয়ে ভাসমান কুকুরটি লেজ নেড়ে হেলেদুলে স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। যথাসময়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের এমন উদ্যোগে মনুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে। অনেকেই সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়রকে ধন্যবাদও জানাচ্ছে।

স্রেফ হাসা পাগলের লক্ষন কি

কোনও কারণ ছাড়াই আপনি কোনও দিন হেসেছেন? কোনও জোক শোনেননি, কেউ কোনও রসিকতাও করেননি, অথচ আপনি হাসছেন৷ কিন্তু এমনটাই ঘটাচ্ছেন অনেক মানুষ যাঁরা সিরিয়াসলি কারণ ছাড়াই হাসতে চাইছেন শুধু হাসবেন বলেই৷ তাঁরা মনে করেন হাসি হল সব সমস্যার সমাধান৷ কেন, জেনে নিন…

ভুগে ভুগে ক্লান্ত? স্রেফ হাসুনj

আমরা সকলেই জানি কাজের চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়৷ জেনে রাখুন, হাসি হল স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশনের অ্যান্টিডোট৷ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে আমাদের ইমিউন সিস্টেমে হাসির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ তাই সিদ্ধান্ত নিন স্ট্রেস আর টেনশনকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য এবার থেকে কারণ ছাড়াই হাসবেন৷ হাসলেই রোগ মুক্তি৷

কাজে উত্‍সাহ পাচ্ছেন না? স্রেফ হাসুন

আমরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময়ে কাজ করতে করতে কাজের প্রতি উত্‍সাহ হারিয়ে ফেলি৷ উত্‍সাহ ফিরিয়ে আনার একমাত্র রাস্তা হল যখনই সময় পাবেন সমস্যাকে তুড়ি মেরে হাসতে থাকুন সহকর্মীদের সঙ্গে৷ লক্ষ্য করবেন পর মুহূর্তেই আপনার স্ট্রেস লেভেল উধাও৷ প্রতিটি কর্মক্ষেত্রেই কর্মাধ্যক্ষের উচিত একটা লাফটার সেশন রাখা৷ এটা থাকলে প্রোডাক্টিভিটি বাড়বে, বাড়বে সংস্থার লাভ৷

লেখা-পড়ার চাপে ভুগছেন? স্রেফ হাসুন

পরীক্ষায় ভালো নম্বরের জন্য বাবা-মা এবং গৃহশিক্ষকদের চাপে বাচ্চাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত৷ বাচ্চারা যদি নিজের মনে খানিক হেসে নেয় তাহলে শরীরে নতুন এনার্জি পাবে এবং লেখা পড়ায় আরও ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়বে৷ গবেষকরা বলেন হাসি শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ায় মনোনিবেশ এবং বুদ্ধি বাড়ানোর ব্যাপারে সহায়ক৷ অতএব, বাচ্চারা বাবা-মা এবং গৃহশিক্ষকদের ভয় না পেয়ে যদি তাদের সঙ্গে অকারণে খানিক হেসে নেয়, তাহলে তাদের উপকারই হবে৷ তাই তাদের হাসতে শেখা উচিত, শেখার জন্য হাসা উচিত৷

সম্পর্কের জটিলতায় ভুগছেন? স্রেফ হাসুন

আপনি পারিবারিক কিংবা লাভ-লাইফের সঙ্কটে ভুগছেন? এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে চান? এরকম জটিল ক্ষেত্রেও গবেষকদের প্রেসকিপশন হল চিত্‍কার করে হাসুন৷ আপনার নিজের সমস্যার কথা ভাবতে-ভাবতেই হাসুন৷ জোরে-জোরে হাসুন, সঙ্গে নিন যাঁকে ঘিরে সমস্যা তাঁকে৷ শুরুর দিকে আপনাদের দু’জনেরই অস্বস্তি হবে এই ভেবে যে মাথার বুঝি ঠিক নেই৷ কিন্ত্ত পরমুহূর্তে লক্ষ্য করবেন সেই অস্বস্তি কেটে গিয়েছে এবং অকারণে হাসতে দু’জনেরই ভালো লাগছে৷ ব্যাপারটা বেশ মজার তাই না? এটা প্রমাণিত সত্য যে হাসি একই সঙ্গে চাপ কমায় এবং যে কোনও ধরনের ব্যাধির সেরা ওষুধ৷ তাহলে অকারণে হাসিকে আমাদের জীবনের অঙ্গ করে নিতে আপত্তি কোথায়? তাই মন খুলে হাসতেই থাকুন৷ স্রেফ হাসুন৷

———-
কালের কন্ঠ। ১ফেব্রুয়ারী ২০১৬

ভালো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসালয়ের ঠিকানা প্রয়োজন

ঢাকাতে ভালো ভালো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসালয়ের ঠিকানা জানা থাকলে দয়া করে ঠিকানা জানাবেন। বিশেষ করে নিজে বা নিজের আত্মীয়দের মাঝে কেউ উপকৃত হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে রেসপন্স আশা করছি।

আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস …

আজ ১৪ জুন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস।

যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের উদ্দেশ্য।

১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক রক্তদান দিবস পালন এবং ২০০০ সালে ‘নিরাপদ রক্ত’-এই থিম নিয়ে পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০০৪ সালে প্রথম পালিত হয়েছিল বিশ্ব রক্তদান দিবস। ২০০৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ দিবস পালনে তাগিদ দিয়ে আসছে।

প্রতিবছর ৮ কোটি ইউনিট রক্ত স্বেচ্ছায় দান হয়, অথচ এর মাত্র ৩৮ শতাংশ সংগ্রহ হয় উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে, যেখানে বাস করে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৮২ শতাংশ মানুষ। এ ছাড়া এখনো বিশ্বের অনেক দেশে মানুষের রক্তের চাহিদা হলে নির্ভর করতে হয় নিজের পরিবারের সদস্য বা নিজের বন্ধুদের রক্তদানের ওপর, আর অনেক দেশে পেশাদারি রক্তদাতা অর্থের বিনিময়ে রক্ত দান করে আসছে রোগীদের। অথচ বিশ্বের নানা দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে জানা যায়, ‘নিরাপদ রক্ত সরবরাহের’ মূল ভিত্তি হলো স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে দান করা রক্ত। কারণ তাদের রক্ত তুলনামূলকভাবে নিরাপদ এবং এসব রক্তের মধ্য দিয়ে গ্রহীতার মধ্যে জীবনসংশয়ী সংক্রমণ, যেমন এইচআইভি ও হেপাটাইটিস সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম।

কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার (১৮৬৮-১৯৪৩) : অষ্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহনকারী এই বিজ্ঞানী ‍যিনি প্রধান রক্তের গ্রুপগুলো (A, B, O) আবিষ্কার করেছিলেন। আজ ১৪ই জুন তারও জন্মদিন। ১৯০১ সালে তিনি তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কারটি করেন এবং প্রথম বারের মত প্রমান করেন একই গ্রুপের রক্ত পরিসঞ্চালন করলে কোন ক্ষতি হয়না। এর পরই ‍তার দুই সহযোগী আলফ্রেড ভন ডেকাষ্টেলো আর আদ্রিয়ানো স্ট্রুলি AB গ্রুপটি শনাক্ত করেন।

রুবেন ওটেনবার্গ ( ১৮৮২ -১৯৫৯) : রক্ত পরিসঞ্চালনের অনেক দীর্ঘ ইতিহাসের ক্রান্তিকালীন মুহুর্তটি আসে ১৯০৭ সালে। যখন প্রথমবারের মতো কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার এর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে রক্তের গ্রুপ মিলিয়ে প্রথম রক্ত পরিসঞ্চালন করেন নিউ ইয়র্কের ‍মাউন্ট সাইনাই হসপিটালের আরেক অসাধারন ডাক্তার এবং বিজ্ঞানী রুবেন ওটেনবার্গ।

ফিলিপ লেভিন (১৯০০-১৯৮৭) : ১৯৪১ সালে রকফেলার মেডিকেল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ফিলিপ লেভিন আবিষ্কার করেন Rh অ্যান্টিজেন। যা থাকলে কোন রক্তের গ্রুপকে আমরা বলি পজিটিভ আর না থাকলে বলি নেগেটিভ। আজ বিশ্বরক্তদাতা দিবসে এই ৩ জনকে স্মরণ করছি, যাদের অবদান জীবন বাঁচিয়েছে অসংখ্য মানুষের।

স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদানকারী আড়ালে থাকা সেসব মানুষের উদ্দেশে, এসব অজানা বীরের উদ্দেশে, উৎসর্গীকৃত ১৪ জুনের বিশ্ব রক্তদান দিবস। ১৪ জুন দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য রয়েছে। এদিন জন্ম হয়েছিল বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনারের। এই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছিলেন রক্তের গ্রুপ ‘এ, বি, ও’।

আসুন জীবন সংহারী রোগ থেকে আর্ত মানুষকে বাঁচাতে নিজে রক্ত দিই। অন্যকে রক্ত দানে উৎসাহিত করি। রক্ত দিন! বাঁচান একটি প্রাণ! এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে শুধু একটি নয় ক্ষেত্র বিশেষে চারটি প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। কেননা এক ব্যাগ রক্তকে এর উপাদান হিসেবে চারটি ভাগে ভাগ করে চারজনের দেহে সঞ্চালন করা সম্ভব। উপাদান গুলো হলোঃ Red Blood Cells, Platelets, Plasma and Cryoprecipitate । এক একজনের জন্য এক একটি উপাদান প্রয়োজন হয়। তাই আপনার এক ব্যাগ রক্ত বাঁচাতে পারে চারটি প্রাণ।

রক্ত দিন! বাঁচান একটি প্রাণ!

জীবনের জন্য প্রয়োজন রক্তের । রক্তের সংকট সাধারণত যারা ভোগেন তারা আমাদেরই স্বজন, ভাই বোন। অপারেশন ছাড়াও বিভিন্ন কারণে শরীরে রক্তের ঘাটতি হতে পারে। এসময় প্রয়োজন বিশুদ্ধ রক্ত। একসময় বেশিরভাগ রক্তই আসতো পেশাদার রক্ত বিক্রেতা ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে। আর পেশাদার রক্ত বিক্রেতাদের অধিকাংশই সিফিলিস, ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস-বি বা এইডসে আক্রান্ত। ফলে এই দূষিত রক্ত পরিসঞ্চালিত হয়ে রক্তগ্রহীতা আক্রান্ত হন দুরারোগ্য ব্যাধিতে।

প্রয়োজন সচেতন মানুষের স্বেচ্ছা রক্তদান :

প্রয়োজনের সময়ে রক্ত পাওয়া এবং দূষিত রক্তের অভিশাপ থেকে মুমূর্ষু মানুষকে রক্ষা করার জন্যেই প্রয়োজন নিরাপদ ও সুস্থ রক্তের। এর জন্য প্রয়োজন সচেতন তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসা। কারণ স্বেচ্ছা রক্তদানের মাধ্যমে যেকোনো সুস্থ মানুষ নিজের কেনো ক্ষতি না করেই একজন মুমূর্ষু মানুষকে বাঁচাতে পারে।
আমাদের দেশে বছরে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এ রক্তের অভাবে অনেকক্ষেত্রে মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসা শুরু করা যায় না। কিডনী জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর ডায়ালিসিস করার পরও রক্তের অভাবে দুশ্চিন্তায় ভোগেন ভুক্তভোগী রোগীর পরিবার। অসহনীয় শারিরীক যন্ত্রণা সহ্য করে অপেক্ষা করতে থাকেন এক ব্যাগ রক্তের জন্য। যখনই খবর পান রক্ত পাওয়া গেছে তখন প্রাণ ভরে তার জন্য দোয়া করেন। স্বেচ্ছা রক্তদাতারা হলেন মানুষের জীবন বাঁচানোর আন্দোলনের দূত। ভালো কাজে মানুষ সবসময় অন্যকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়। বন্ধু রক্ত দিচ্ছে দেখে তার আরো বন্ধুও রক্ত দিতে উদ্বুদ্ধ হয়। রক্তদান একটি মানবিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক অঙ্গীকার। যিনি যে পেশায়ই থাকুন না কেন, সমাজের জন্যে তার কিছু না কিছু করার আছে। এক ব্যাগ রক্তদানের মাধ্যমেও তিনি পালন করতে পারেন তার সামাজিক অঙ্গীকার।

রক্তদানের উপকারিতা-

মানসিক তৃপ্তি : একবার অন্তত ভাবুন, আপনার রক্তে বেঁচে উঠছে একটি অসহায় শিশু, একজন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ। সে মুহূর্তে আপনার যে মানসিক তৃপ্তি তাকে কখনোই অন্য কোনোকিছুর সঙ্গে তুলনা করা সম্ভব নয়।

শারীরিক দিক থেকে : রক্তদান স্বাস্থ্যের জন্যে অত্যন্ত উপকারী। রক্তদান করার সাথে সাথে আমাদের শরীরের মধ্যে অবস্থিত ‘বোন ম্যারো’ নতুন কণিকা তৈরির জন্যে উদ্দীপ্ত হয়। দান করার ২ সপ্তাহের মধ্যেই নতুন রক্ত কণিকা জন্ম হয়ে এই ঘাটতি পূরণ করে। আর প্রাকৃতিক নিয়মেই যেহেতু প্রতি ৪ মাস পর পর আমাদের শরীরের রেড সেল বদলায়, তাই বছরে ৩ বার রক্ত দিলে শরীরের লোহিত কণিকাগুলোর প্রাণবন্ততা আরো বেড়ে যায়।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের আলোকে : ইংল্যান্ডে মেডিকেল পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নিয়মিত স্বেচ্ছা রক্তদাতারা দুরারোগ্য রোগ-ব্যাধি থেকে প্রায়ই মুক্ত থাকেন। রক্তদাতার হৃদরোগ ও হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকিও অনেক কম।

ধর্মীয় দৃষ্টিতে : রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকেও অত্যন্ত পুণ্য বা সওয়াবের কাজ। এটি এমন একটি দান যার তাৎপর্য সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সূরা মায়েদার ৩২নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘একজন মানুষের জীবন রক্ষা করা সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করার মতো মহান কাজ।’ ঋগ্‌বেদে বলা হয়েছে ‘নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘজীবন ও অমরত্ব।’ আসলে সব ধর্মেই রক্তদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি বড় ইবাদত। আনুসঙ্গিক তথ্য কৃতজ্ঞতায় : ডা. দাউদ।

ফেসবুক লিঙ্ক : আজাদ কাশ্মীর জামান।