বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

স্বাধীনতার সুখ

কোন সুখে বাবুই পাখি
করে শিল্পের বড়াই
যেই সুখেতে মুক্তিযোদ্ধা
করেছিলেন লড়াই।

কোন সুখে একটি শিশু
পতাকার ছবি আঁকে
যেই সুখেতে একটি শিশু
মা…মা বলে ডাকে।

কোন সুখেতে মাঝি ভাই
ধরে নৌকার হাল
যেই সুখেতে বয়ে চলেছে
বাংলার নদী খাল।

কোন সুখেতে বৃষ্টি ঝরে
মায়ে ফুলায় বুক
যেই সুখেতে চাষি ভাই
সব ভুলে যায় দুখ।

কোন সুখে দামাল ছেলে
আকাশে ওড়ায় ঘুড়ি
যেই সুখেতে দাদা-দাদু
খুলে গল্পের ঝুঁড়ি।।

দূর কোনো আকাঙ্ক্ষায় কল্পনা ছিল

একটা ছাতির নিচে আলাদা কোনো নীরবতা নিয়ে
ফেরা হচ্ছিল। খুব সহজ ছিল না, ঘাসের শেকড়ে
প্রবেশ করছিল টানা রোদ, ঝিরঝিরে একটা দখল
ভাব। ঢুকে পড়ছিল শব্দহীন কল্পনা,ব্রিজ রেখে
গ্রামে যেতে হয়, পৌছলে পুরোনো শৈশব। শহরে-
বাদামের ফেরিওয়ালা দুপুর হতে ভালোবাসে। যেমন
ডুবন্ত বিকেলের আকসা বাতাস, কটা তারিখ নিয়ে
কালো জিপ গাড়ির হুইসেল থামিয়ে রেডিও শোনাত
সাত নক্ষত্র পৃথিবীতে এলে, খুঁজত পলাকা কথা।

জ্যোৎস্নার সাথে রূপালি ইলিশ, রাখালি তরমুজ-
বাড়িগুলোর উঠানে-কবে বর্ষাকাল দেখা হয়েছে
মনে নেই। অভিজাতের মধ্যে মৌসুমি পুঁইগাছ, ফুলের
রেণু, মরা মাছের গোসল,মনে আসতেই একটা
শরীর যেন শীতকালীন ভাব নেয়। ভাপ ওঠানো চা
কাপে-গল্প। কত রুপকথা, সেগুলোতে কেউ ফিরছিল।

হয়তো তোমাকে খুঁজতে বেরোলে, দূর পৃথিবীর শেষে আকাঙ্ক্ষা,
কল্পনা ভেঙে যাবে তরল কোনো স্পর্শে।

০৮ এপ্রিল ২৩

ব্যাখ্যা বিষয়ক বচনপঞ্জিকা

তুমি অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করতে পারো।

‘জল’কে কেউ কেউ কেন ‘পানি’ বলে,
‘গোরস্থান’ কে ‘কবরস্থান’- কিংবা ‘খোদা হাফেজ’কে ‘আল্লাহ হাফেজ’। কেন কেউ
কেউ মাঝে মাঝে ‘তস্কর’ কে ‘লস্কর’ বানিয়ে বাজারে সেরে নিতে পারে মামুলি
বেচাকেনা। ‘বাতাসা’ খেতে গিয়ে যারা ‘বাতাস’ খেয়ে তৃপ্ত হয়ে নগরে ফিরেছিল
আমি তাদের গন্তব্য চিনি। জানি কীভাবে তারা সেরে নিয়েছে মাটির সাথে শেষ
মোলাকাত। কাদায় পা ডুবে যেতে পারে-এই ভয়ে যারা কাঁধে তুলে নিয়েছে পা,
আমি তাদেরকে প্রতিবন্ধী বলতেই পারি। অথবা পাঠশালায় গিয়েও যারা পড়েনি
চন্দ্র-সূর্যের জন্মইতিহাস, তাদেরকে বলতেই পারি অন্ধ। আমি তোমাকে আপাতত
‘ব্যাখ্যক’ হিসেবেই অভিহিত করতে চাই। কারণ এ পেশায় আমাদের কিছু সুদক্ষ
তালিবাজ প্রয়োজন।

এই সন্ধ্যা … উৎসর্গীত তোমার নামে

340

প্রিয়তমা……
প্রতিটি বিকেলের মতো
আজো পশ্চিমা আকাশ লালিমায় ছেয়ে আছে,
খরস্রোতা নদীটি
বুকের কপাট খুলে দিয়েছে
অস্তমিত সূর্যকে গিলে নিতে,
আয়েশি ভঙ্গিতে পাখীদের নীড়ে ফেরার আয়োজন
এবং
বাতাসে কুয়াশার ধূম্র মিলেমিশে
প্রকৃতিতে ফেলছে শান্ত অবয়ব…
এই সবই ঠিক আছে!
কেবল একটাই ব্যতিক্রম
আজ আমার বুকের হেরম জুড়ে নীলকন্ঠী রাত
চলছে অসম তাণ্ডব লীলা।

হৃদপিণ্ডের দপ দপ বেড়েই চলেছে;
জানি এসব ক্ষয় অবক্ষয়ের গল্পে
তোমারও মন বিচলিত হবে, অস্থির হবে,
জানি
শিকল বাঁধা হরিণীর মতন তুমি ছট পট করবে।
তবুও
তোমাকে জানাতে হবে
সহস্র মন খারাপ রাত্রির নিঃসঙ্গ দহন সয়ে সয়ে
এই আমি দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছিলাম জীবন।
কারণ
আমি যে
এই দহন তাপে খুঁজে পাই তোমারই উষ্ণতা ;

আমি সয়ে গেছি বিনিদ্র যন্ত্রণা
সয়ে গেছি যন্ত্রণার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মন্দ্রিত তুপান
বিদগ্ধ স্মৃতি ; জানো-
পোড়া মাটির গন্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই
মাটির কর্দমাক্ত কর্ষণে
নির্মাণ করি তোমারই প্রতিমা!…
তুমি ঠিকই জানতে
জানতে যেভাবেই হোক আমি বেঁচে থাকবো,
যেমনই হোক হার না মানার মানুষ আমি।
তুমি জানতে
আঘাতের ভয় নেই আমার ,
তুমি হারিয়ে গেলে
নেই- আর কিছু হারাবার ভয়!
প্রলয় তাণ্ডবে
আমি ধারণ করবো সুনামির রূপ
ভাসিয়ে নেবো কজ্জল কালিমা
আমি উঠে দাঁড়াবো………
পাবোনা জেনেও
ছোঁবোনা জেনেও
আমি বার বার হাত বাড়াবো তোমারই পাণে!
জানতেই বলেই
তুমি রূপ বদলের নেশায় উন্মত্ত হলে
উড়তে লাগলে
বৃক্ষ হতে বৃক্ষে, প্রান্ত হতে প্রান্তরে
উড়ে বেড়ানোর নেশায় ডুবে রইলে…
শুধু জানতে না
উড়তে উড়তে একদিন উড়ে যাবে অচীন আকাশে..

তবুও
তোমার প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই।
আমি পেয়েছি তোমাকে আমার অনন্ত প্রাণে
যে দিন ঝর্না স্নানে
সিক্ত হতে হতে নিজের বুকের কপাট উন্মুক্ত করে
আমাকে নিবিষ্ট করেছিলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আলিঙ্গনে!আমি জীবন পেলাম সেই নিবিড় ধ্যানে
বসন্ত দিনে
স্ফুটিত পরাগ চুম্বনে..
পেয়েছিলাম পৃথিবীর সমস্ত সুর সংগীত
অনবদ্য আনন্দ স্পন্দন!..

তুমি ফিরো
আর নাই ফিরো
আজকের এই সন্ধ্যা
এই পূজা উৎসর্গীত হলো তোমার নামে!
শুধু
এক অনন্তের আক্ষেপ
যার বুকে ছুঁড়ে দিলাম জ্বলন্ত দিয়াশলাই……

ভালো থেকো।

তোমারই “শুভ”

ঘুমায়ে পড়ি যদি কোন দিন

ঘুমায়ে পড়ি যদি কোন দিন
আর জাগবো না জেনে,
সেদিন তোমাদের সাথে
বহিবে কী এই বুড়ি বংশী
অপরূপা মীনকণ্যাদের ল’য়ে!
ভাসিবে কী কচুরি ফুল-
কাটিবে কী সাঁতার দুরন্ত শুশুক
তাহার রূপোলি জলে!

এ জীবন শুকায়ে গেলে কোন দিন,
পূর্ণিমার চাঁদ দিবে কী ডাক
এই বংশীর জলে বাঘা পুঁটিদের প্রাণে!
তাহাদের দেহ মধ্যরাতে
ভাসিবে কী অমরাবতীর জোস্নায়!
জাগিবে কী নতুন প্রাণ
চুপিসারে জলের সোঁদা গন্ধে
কোন একদিন…এ জীবন ফুরায়ে গেলে!

আনন্দ ভাগ করে নিতে তুমিও

কিছু করব ভেবে বেশ কটা আনন্দকে ভাগ করে নিই
মুড়ি-ভাজার প্যাকেটে দু চারটে কাঁচামরিচ ভরে
শির শির করে ওঠে গোলাপি জিহ্বা, যেমন একই
রকমের পুরোনো গল্প, তারিখগুলো মনে ফিরলে
ছাপিয়ে যায়। খালপাড়ের শেষ মাথায়-দাদির কবর;
চারটে তালগাছ। অভিজাত পৃথিবী ছুঁয়ে …
সব শিশুর মায়া নিয়ে প্রথম গান শোনাত, ভাঙা সুর-
তরুণ হয়ে উঠতো সেই চারকাটা জমির পাকা ধান
পৃথিবীতে যেমন ভাবে ফিরেছিল নিথর রাত্রি, ত্বকে-
মেখেছিল বুনো বেলিফুলের ভাপে দু পুকুরের জল
মাছগুলোর ঠাণ্ডা চোখে তখন নেচে ওঠে খাস সমুদ্র।

এখনো শুক্রবার এলে ওয়াক্ত ধরে নারকেল গাছ
কোনো দিন তার পাতার বাঁশিতে নাচতে দেখা যায়নি
মিয়াবাড়ির সরু তেজপাতা গোছের উঠতি মেয়ের
কিংবা শহরে নামায়নি ডিস ক্যাবলে সন্ধ্যা ধূপ-বাতি
কেবল জমে উঠেছে সেই জমে থাকা কথার কথা
লাল বাড়িটার শিরীষ গাছ ডিঙিয়ে যেতে পারে কেউ!

০৭ এপ্রিল ২৩

গৌর সারং

tru

ঘাসের উপর শিশির হবো
যদি দাও নির্মল শৈশব।
অথবা ভোরের স্নিগ্ধতা হব
অস্তিত্বে আহির ভৈরব।

হব ভীষণ অভিমানে
দহনের আগুন রং।
অথবা নির্জন দুপুরে
মৌন মুখর গৌর সারং।

দিন অবসানে সান্ধ্য আজানে
হব পবিত্র শান্ত মন।
বেদনায় ভালবাসা মিশিয়ে
হয়ে উঠবো বেহাগ বা ইমন।

অস্তিত্ব

‘বাস্তবতা বড় কঠিন’ আর পাঁচজনের সাথে চলতে গেলে
যে ধীরে চলে সে তাল মেলাতে পারে না; পেছনে থেকে যায়
তার ছায়া ক্রমশ গন্তব্য থেকে বহুদূর… যে দ্রুত চলে সে হোঁচট খায়
তার চোখ ধূসর, একই স্বপ্ন দেখেছিল পাঁচজন।
শীতে শুকিয়ে যায় নদী; ভয় হয় পাতা ঝরা বৃক্ষ দেখলে হঠাৎ
যারা উঠে গেছে ওপর তলায়, তাদের ছাদে শোভিত ফুল
একদিন ধূসর রোদ হঠাৎ তাদের বেলকুনিতে
স্থির চশমায় খোঁজে গন্তব্য, ডুবে যাওয়ার পূর্বে দেখে আরো পাঁচজন।

যে গাছ মরে গেছে, নিয়মমাফিক মাটিতে মিশেছে ফসিল
তার ডালে পাখির কূজন স্বপ্নের মতো ধূসর এখন
আর যাকে করা হয়েছে টুকরো টুকরো, সাজানো হয়েছে চিতায়
বহু শতাব্দী কেউ কেউ জাদুঘরে প্রাণহীন প্রদর্শক।
তাদের গন্তব্য পাঁচজনের স্বপ্নে অনুপস্থিত চিরকাল।
একই পথে যাত্রা তবু যে যার মতো দল থেকে বিচ্ছিন্ন
আপাদমস্তক অপ্রস্তুত তৃষ্ণার্ত প্রায় প্রত্যেকে আঙুল কামড়ায়,
যে পৌঁছে যায় সে ফেরে না, যে হারিয়ে যায়, সে হারিয়ে যায়।

রেখে যাবো না

কিছুই রেখে যাবো না। শ্লোক, শিলা, শিশ্ন- কিছুই
রেখে যাবো না পৃথিবীর জন্য। এমন কি শিকড়-ও
উপড়ে ফেলে এই চাঁদকে বলবো- তুমি গ্রহণ করো
আঁধারের পরিচ্ছদ- আমি কোনো আলো চাই না আজ,
বরং গণিকালয়ের মধ্যসত্ত্বভোগীর মতো, তারাগুলোকে
পাশে রাখো হে চন্দ্র, তারপর নিজকে বিসর্জনে ভাসাও।

রেখে যাবো না কিছুই। বিচ্ছেদ, বিনয়, বিনির্মাণ-
এসবের কোনো পাহারাদার নেই, যে মৃত্তিকায়-
তার জন্য রেখে যাওয়া কখনও সমীচীন নয়-
বরং সাথে নিয়ে যাবো সব পাপ, প্রস্রাব, পতন

এখানে কিছু রেখে যাওয়া মানেই আত্মহত্যা করা,
এখানে কিছু রেখে যাওয়া মানেই প্রতারকদের সাথে
হাত মিলিয়ে বলা- ‘আমিও তোমাদের তল্পিবাহক’।

মনের যত চিন্তা

মনের যত চিন্তা আমাকে নিয়ে।
মন বলে পৃথিবীতে একা হয়ে যাও,
নিঃসঙ্গ হয়ে যাও,
সারা পৃথিবী গুড়ে বেড়াও,
নিজে উপার্জন করে ইচ্ছে মতো উড়াও,
বন্ধুদের সাথে সময়ে অসময়ে আড্ডা দাও,
নিশি রাতে একা একা রাস্তার অন্ধকারে ভিজো,
অচেনা মানুষের সাথে ঘুরতে যাও নির্জন পাহাড়ে,
নিজের টাকা দিয়ে অন্যের হাসি কিনো।

যা করে বেড়াই,
টাকার বিনিময়ে ভালোবাসা আর শান্তি খুঁজে বেড়াই।
টাকা ফুরিয়ে গেলে আবার স্তব্ধ হয়ে যাই।

রঙিন টিভি

ttvv

নিশ্চিয় এক চেয়ারে বসে গেছি
দেখছি দুনিয়ার ছবি সব অলি গলি;
কত এলো সাইক্লোন, হ্যারিকেন, টনর্ডো
তবু চেয়ার ভাঙ্গে না- প্রভু গেছেন মিশে
যাত্রাপালা মঞ্চ নাটক ভুলেই গেছি-
এসব চলে কি আর, সবকিছু আজ আধুনিক!
অভিনয়টাও স্মার্ট- চমৎকার রঙিন টিভি-
চেয়ারটা ভেঙ্গে যাবে যাক- আমি থাকি চাঁদ
আমার সুখে চেয়ার হাসে, বাঁচলে বাপের নাম;
আমজনতা লিচুচোর সমুদ্র হলেও কিছু আসে না।

২৩ চৈত্র ১৪২৯, ০৬ এপ্রিল ২৩

লেলিহান অগ্নিতে

images-6

আজি যত্রতত্র সাইরেন বাজছে,
লেলিহান অগ্নিতে দেশটা যে পুড়ছে,
সীতাকুণ্ড থেকে বঙ্গবাজার কোথাও কি শান্তি-
মরিছে মানুষ দগ্ধ শত স্বপ্ন।

জনৈক ব্যাপারীর আহাজারি,
পুড়ে শেষ স্বপ্ন শত লাখের,
আগুনের লেলিহান লালসায়-
বঙ্গবাজারের বুকে নেমেছে প্রলয় তাণ্ডব।

দোকানের চৌহদ্দিতে প্রবেশে অপারগ,
মানুষের স্বপ্ন গুলো পুড়ে যায় দেখ,
লেলিহান অগ্নিতে পারে না আত্মাহুতি-
আমাদের দেশটা ক্ষণে ক্ষণে পুড়ছে।

ভাইয়া আমার সব শেষ,
করুণ আহাজারিতে আকাশটা হচ্ছে ভারী,
নিয়তির দোষে বুঝি-
এমন লেলিহান অগ্নিকাণ্ড।

আমাদের দেশটা পুড়ছে সর্বত্র,
সেই সীতাকুণ্ড থেকে আজকের বঙ্গবাজারে,
অসহায় ব্যাপারীর কান্দনে,
কি সান্ত্বনা দিবো জানি না আজ।

অসহায় চাহনিতে তাকিয়ে,
স্বপ্নগুলো পুড়ে শেষ মুহূর্তের ব্যবধানে,
লেলিহান অগ্নিতে বঙ্গবাজার পুড়ছে,
এই বুঝি নিয়তির দোষে বেদনাহত।

পরার্থে সেবিতে শত মানুষের ভীড়,
তবুও অগ্নিতে পুড়ে ছারখার সব,
আমাদের দেশটা পুড়ছে ক্ষণে ক্ষণে আজ-
স্বপ্নসমেত মানুষের আত্মাহুতি।

আজি যত্রতত্র সাইরেন বাজছে,
লেলিহান অগ্নিতে দেশটা যে পুড়ছে,
কত প্রাণ কিংবা স্বপ্নের বিলিনে-
শান্ত হবে আমাদের দেশটা।

বুকফাটা আহাজারিতে আকাশটা ভারী আজ,
শত স্বপ্ন ঝরে গেলো,
লেলিহান অগ্নিতে-
বঙ্গবাজারে।

সংযোগ

তোমার সাথে আমার আর দেখা হবে না
হবেনা মানে হবেইনা
তুমি ডান দিকের দরজা খুলে বাঁদিকে ঢুকবে
আকুলি বিকুলি করবে
কি কি ভুল হয়েছিল মনে করবার চেষ্টা করবে
তোমার সব মনযোগ জুড়ে থাকব আমি
আমার অবশ্য খুব একটা ক্ষতি হয়নি
তুমি অবিবেচকের মতো চলে গিয়েছিলে, এই তো
এটা আর এমন কি ক্ষতি বলো!

আস্তে আস্তে তোমার মনে পড়তে থাকবে
ওই দিনটার কথা
যেদিন আমাকে বাজে কথা বলেছিলে
সবিতা নামের মেয়েটার কথা গোপন করেছিলে
আর আমাকে বিশ্রীভাবে একঘেঁয়ে বলেছিলে
তোমার সব মনে পড়তে থাকবে।

আমি যেহেতু সব ভুলে গেছি
আমি যেহেতু তোমাকেও ভুলে গেছি
আমার মন খুব একটা খারাপ হবেনা।

তুমি দরজা খুলে আলো দেখাবার ছলে আমাকে
দেখতে চাইবে
তুমি সেতারের বাজনাটুকু নতুন করে শোনাবে
আর আমরা দুজনেই সুরে মগ্ন হতে হতে ভাববো
ভাগ্যিস আমরা কখনো ব্যবচ্ছিন্ন হইনি
তাই তোমার সাথে আমার আর দেখা হবেনা
হবে না মানে হবেইনা।

এয়ারগানের ফুলগুলো

এয়ারগানের ফুলগুলো হত্যাপ্রবণে হাসছে
তারপর…
ঘড়ি কাঁটা বিয়োচ্ছে হাড়-গোড়, স্বাস্থ্য সুন্দর
আর ছোট্ট তুলতুলে প্লাস্টিক খরগোশ দৌড়ায়
এভাবে গত কিংবা আগামী, অন্য এক সন্ধ্যা-
মানুষের রং শুকোচ্ছে প্রতিটি নীল শিঙা থেকে
অথচ তোমার সম্মুখে যতবার ঘুরছি, চেনো না!

ক্লান্তির পরে এরকম একটা কল্পিত তা ধরেছি
পৃথিবীর নিঃসঙ্গ পুরুষ, পিতা কিংবা প্রেমিক
এমন সংস্করণ নেমপ্লেটে জমে গেছে-সব, শব;
একধরনের আলোশূন্য সকাল-অসুস্থবোধ করি
আর নিজের অজুহাতে টের পাইয়ে দিই
কী সুন্দর আমাদের সরকারি সম্পর্ক, এবং তুমি
আমরা একে অন্যের ভেতরে ফলাচ্ছি-শিশু
শিশুস্বভাবের অবিশ্রাম কুঁড়ি-নিবিড় চওড়া দৃশ্য
সেইসব ফুলের অধীন থেকে মৃত্যু উপেক্ষা আয়ু …

শূন্য স্থানের বাক্যটি

150

দুঃখ খাচ্ছি
শোক খাচ্ছি, চোখের জলে মেটাচ্ছি সীমাহীন তৃষ্ণা
রাগ খাচ্ছি
ক্রোধ খাচ্ছি, বুকের আগুনে শোধ করছি হৃদয়ের ঋণ।

কৃষ্ণ-কালো আঁধার খাচ্ছি
উষ্ণ-দাহের খরা খাচ্ছি, জখমে ভরা বুকের কষ্ট খাচ্ছি
দীর্ঘশ্বাসের শোক খাচ্ছি
বেদনার শ্লোক বুনে মেটাচ্ছি সমবেদনার মলিন সান্ত্বনা।

একাকীত্বের নিষ্ঠ রাতে হাত পেতেছি আকুতির সীমাহীন মুদ্রায়
ব্যাকুল চিত্তে গোগ্রাসে গিলেছি পাত্র অপাত্রে ভরা বিষ
প্রাণান্ত মিনতির নির্বাক আবেদন, শুনতে পায়নি কেউ
অবলার এই বাঁচার রোদন!
মরতে মরতে বেঁচে যাই দুর্ভাগ্যের আরেকটি কৃপায়
পুড়তে পুড়তে ছাই হবার বাকী যখন-
আলোক বৃন্তে তখন কোন স্বপন উঁকি দিয়ে যায়!

অপেক্ষার ত্যক্ত তিক্ততা খাচ্ছি, খাচ্ছি-
বিষাদের নীলাভ সন্ধ্যায় কামিনীর মো মো গন্ধের উপহাস
বকুল তলায় এক খানা ভেজা কাক
ফিস ফিস করে সুক্ষ্ণ ভাষায় বলে যায়-
অবাক করা একটি বাক্য!”…………” সর্বনাশ!