বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

সত্য মিথ্যার জয় পরাজয়

ffrt

সত্য কথায় জীবন যায়
যেতে হয় কারাগারে,
ন্যায়বিচার খুব কমই হয়
মিথ্যার জয় বিচারে।

মিথ্যে কথায় পুরস্কার মেলে
মেলে সম্মানী পদবী
জোর-জুলুমের হয় উন্নতি
পক্ষে থাকে দেবদেবী।

উচিৎ কথা বলতে মানা
বলতে গেলেই কিল,
সাথে থাকে লাত্থি গুতা
আরও থাকে ঢিল।

মিথাবাদীরা দেয় ধর্মের দোহাই
সেটাই শুনে সর্বজনে,
কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা
যাচাই করে কয়জনে?

.
নিতাই বাবু
১২/০৪/২০২৩ইং।

জীবন পথে

eo

জীবন চলে ঘড়ির মত
কখনো যেই থামে,
জীবন তাই দুঃখে ডুবে
চোখে অশ্রু নামে।

অসৎ পথে ঘোড়ার মত
মানুষ দ্রুত চলে,
সময় শেষে কষ্টে মরে
হৃদয় দাহে জ্বলে।

হৃদয়ে যেন সতত রয়
প্রেম-মমতা মায়া,
না পায় কেহ কষ্ট মনে
থাকে শান্তি ছায়া।

পরের তরে সাধ্যে যত
বাড়িয়ে দাও হাত,
মানুষজনে হিংসা নহে
না দিও কভু ঘাত।

মনে রাখবে ধরার বুকে
এসেছি মোরা কেন ?
এই সমাজে গরিব দুখী
কুশলে রহে যেন।

মাত্রাবৃত্তঃ ৫+৫/৫+২

তৃষ্ণাতৃপ্ত ঋণ

vvv

সবুজের আড়ালে দেয় উঁকি
সদ্যোজাত পুষ্পিতা
বৃক্ষের পাঁজরের ঘুমিয়ে লজ্জাবতী
মৃত্তিকার গভীরে
প্রোথিত শেকড় ছুয়ে যায় খরস্রোতা!..

প্রাণের স্পন্দনে প্রাণের সুর
জীবনের আবেগ ভর করে একতারায়
যৌবনের মৌ-বনে উদ্বেলিত মধুরতা
স্বপ্ন নাচে অবিরত প্রজাতির অস্থির ডানায়!

একটি রোদসী দিন
বৃষ্টি এসে করে গেলো তৃষ্ণাতৃপ্ত ঋণ।।

২১/৩/২৩

অযথায় নেটে সময় কর না অপচয়

ytre

কিছু একটা কর, মন দাও সৃজনশীলে কাজে
ইনকামের পথ খুঁজে নিয়ে নিজেকে সাজাতে পারো নতুন সাজে
অনলাইন সে সুযোগ দিয়েছে তোমায়
অযথা কেন পড়ে থাকবে চ্যাটিংয়ের কোমায়!

দিনভর পড়ে থাক নেটের আড্ডাখানায়
লাইক কমেন্ট পেলেই বেশি উড়ো কল্প ডানায়
রূপ দেখিয়ে কী আর হবে ছবি আপলোড করে,
সময় অপচয়ের অনুতাপ আনো এবার মনঘরে।

ব্যবসা করতে পারো যতটুকু পাও অবকাশ
নিজের সৃজনশীলতাই করো বিশ্বে প্রকাশ
নিজের ইনকামে পড়াশোনা যেতে পারো চালিয়ে,
যেয়ো না নেটের প্রেমে কারো হাত ধরব পালিয়ে।

নিজের রূপ গোপন রাখো, বিশ্ব তোমার রূপে হবে না পাগল
বাড়াতে পাপ রেখো না খুলে আর রূপের আগল,
কিছু একটা করো মনোযোগে যাতে থাকে না পাপ ,
রূপ তোমার বুড়ো হবে একদিন করতে হবে অনুতাপ।

চ্যাটিংয়ে না দিয়ে মন, পড়াশোনায় হও আগ্রহী
যে পথ কাঁটাযুক্ত, সে পথ নয় তোমার জন্য সহী,
মোহ পথে যদি একবার বাড়াও পা,
সে পথ হতে ফিরতে পাবেনা প্রভুর কৃপা।

যতটুকু পারা যায় শালীন থাকো,
ইসলামের বিধিতে এবার মন রাখো,
মানবিক হতে শিখো, মোহ পথে এগিয়োনা আর,
হালাল ইনকামে লাগাতে মন হও ইচ্ছে দৃঢ় বিশ্বাসের পিঠে সওয়ার।

চৌষট্টি নগর

মাঘের সন্ধ্যা মুছে কী সব ভুল বকে
মানুষের আদলে তৃতীয় গান গায়
গোপন দাসের অতর্কিত পাখিগুলো;

শরীর মেলিয়ে ছুঁয়ে যায়-হাওয়া
আর সংক্রমণ ডালের ওপর দুপুর
শান্ত সবুজ পঞ্জিকায় দিন লেখে
কখনো খুঁয়ে ফেলানো সহজ সংখ্যা
প্রজাপতি হয়, প্রজাপতি উড়তেই
শ্যামা রঙের উন্নত ঘাস, সুহৃদ নদী-
ডানাখোঁটা কঙ্কালে কাকভেজা শিশু
সূর্যপুরাণ থেকে অম্লান সংগীত চর্চা
এসবের শিরোনাম তুমি চৌষট্টি নগর!

.
১৫ ফেব্রুয়ারি ২৩, ঢাকা।

দুটি কবিতা

বিজ্ঞাপনের শ্রমগল্প

ডায়লগটা একটা বিজ্ঞাপনের। আমাদের চারদিকে এখন দাদ, বিখাউজ,
কোমরের মোটা দাগ মিইয়ে দেবার বিজ্ঞাপন। আমাদের গোটা পরিকল্পনা
জুড়েই এখন রাজপথ। ফুটপাথ নেই। ফলে হেঁটে যাবার রাস্তা নেই। যারা
গাড়ির মালিক তাদের যাবার পথ আছে। আমাদের নেই। আমরা শ্রমজীবি
মানুষেরা জানি না, শিলাবৃষ্টি আমাদের বোরোধান তলিয়ে নিলে – দাঁড়াবো
কোথায়!নগরে প্যাকেজ রাজনীতি চলছে। খাদির পাঞ্জাবী পরে নেতারা
উদ্ধার করছেন আমাদের ভবিষ্যত। আর আমাদের সন্তানেরা হামাগুড়ি দিচ্ছে
ডোবায়। যে ডোবায় এখন পানিও নেই। শুধুই নর্দমা। কাদার ছড়াছড়ি।
সময় এলে অনেকেই আমাদেরকে চিনতে পারেন। সময় চলে গেলে আর চেনার
দরকার মনে করেন না। এই যে ধাউড় সম্প্রদায়, তারাই আমাদের নিয়ামক।
মাঝে মাঝে দূরে দাঁড়িয়ে তারাও বলেন- চেনা চেনা লাগে !

একটা চাকরির খোঁজে যে ছেলেটি গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়েছিল, সে-ও
অর্ধচন্দ্র খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কর্পোরেট অফিসটির সদর দরোজায়।
তার পিঠে বেদনার জন্মদাগ। কর্কট রোগে আক্রান্ত পিতার মুখ সম্বল করে
তার হাঁটু’টি আর চলতে চায় না। চলতে চায় না এখন অনেক কিছুই।
এই নগরটা পুড়ে গেলেও ক্ষতি নেই। কখনও কখনও পোড়া-ই ভাগ্যের
বলিরেখা। পোড়াবাড়িতেই গড়ে উঠে যে প্রাসাদ, কংকালগুলো তার সাক্ষী
হয়েই থেকে যাক আপাতত।
#

বরফজমা রোদের জামা

আরেকটি পোশাক পরিয়ে দিতে থাকি হিমকন্যার গায়ে। জমে থাকা হিমালয়ের মতো
বিচূর্ণ হয়ে আছে এই নিউইয়র্ক নগরী। দেখেছি এর আগেও সহবাসের দীর্ঘশ্বাসগুলো
কত মায়ায় মিতালী গড়ে চাঁদের সাথে। কত দরদ নিয়ে ইষ্ট রিভারের পারে জাগে
সূর্য। আমি যাযাবর সূর্যের সাথে হাঁটতে হাঁটতেই একদিন পালন করেছিলাম ভালোবাসা
দিবস। আর প্রকৃতিকে বলেছিলাম, তুমিও পালন করো ধারাবাহিক ছুটিতালিকা। একটি
জীবনে অবসরের প্রয়োজন হয় খুব। প্রত্যন্ত বরফেরা আমার কথা মন দিয়ে শোনে।
রোদের হাসি এসে ভুলিয়ে দেয় দুঃখ, জলবীজে মিশে ছায়া-প্রেমের, নিভৃতে-সংগোপনে।

বৈশাখের কবিতা

পহেলা বৈশাখ আছে থাকবে চিরকাল
পহেলা বৈশাখ ভেঙে ফেলে ধর্মের বেড়াজাল,
পহেলা বৈশাখ মনুষ্যত্বের গুণ বাড়ায়
পহেলা বৈশাখ মানুষের বৈরিতা তাড়ায়।

পহেলা বৈশাখ ধর্মের নয়
পহেলা বৈশাখ বাঙালির কথা কয়।
পহেলা বৈশাখ বাঙালির জ্যোতি
পহেলা বৈশাখ ধর্মান্ধ’র করে ক্ষতি।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে কেন হইচই
পহেলা বৈশাখ না থাকলে বাঙালিত্ব কই?
পহেলা বৈশাখ না থাকলে থাকবে না বাঙালি জাতি
পহেলা বৈশাখ বাঙালির আঁধার ঘরের বাতি।

পহেলা বৈশাখ নিয়ে বন্ধ করো ষড়যন্ত্র
পহেলা বৈশাখ বাঙালির কণ্ঠ।
পহেলা বৈশাখ এর বিরুদ্ধে লড়িস ক্যান
পহেলা বৈশাখ কি খেয়েছে তোমার জ্ঞান?

পহেলা বৈশাখ বাঙালির পরিচয়
পহেলা বৈশাখ না থাকলে বাঙালির হবে ক্ষয়
পহেলা বৈশাখ করে না কাউকে ভয়
পহেলা বৈশাখ বাঙালির জয়….

গাইবান্ধা, বাংলাদেশ

গরিবের পহেলা বৈশাখ

poh

কতো বৈশাখ আসে কতো বৈশাখ যে যায়,
পহেলা বৈশাখে ধনীরা ভালো খাবার খায়।
জানেন, পহেলা বৈশাখে গরিবরা কী খায়?
বারোমাস যা খায়, তা-ই খেয়ে বৈশাখ কাটায়!

যাদের আছে প্রচুর তারা খায় পান্তা-ইলিশ,
মোদের মতো গরিবেরা খায় পান্তা-কাঁচামরিচ।
অনেকেই খায় কোরমা পোলাও মাছ মাংস,
এই দুর্মূল্যের বাজারে গরিবরা হচ্ছে ধ্বংস!

বৈশাখের কতো আয়োজন নাচ-গানে ভরপুর,
গরিবের বারোমাসই দুঃখ অভাব হয়না তো দূর!
বৈশাখে ধনীর দুলাল পরে নতুন জামা-কাপড়,
গরিবের নতুন একটা জামা মানে মরণকামড়!

তবুও গরিবদের প্রার্থনা বৈশাখ আসুক বারবার,
হয়তো আগামী বৈশাখে ভালো কিছু হবে তার।
এবার নাহয় বৈশাখে অনন্দ-উল্লাস করুক ধনীরা,
পরের বৈশাখে গরিবেরা আনন্দে হবো দিশেহারা।

.
সবাইকে পহেলা বৈশাখের আন্তরিক শুভেচ্ছা!
শুভেচ্ছান্তে: নিতাই বাবু
১৪/৪/২০২৩ইং,
পহেলা বৈশাখ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।

আঙ্গিনা

tyu

আগুনের কাজ জ্বলতে
ভালোবাসা চায় পুড়তে- পুড়তে
এটাই তো দৃষ্টি বহর শুধু
বাতাস বয় নিশ্বাসে নিশ্বাসে;
ফাল্গুনের হাটবাজারে
কত রঙের মেলা, কিনবো বলো
সরিষার চারা- সোয়া চন্দন পিটের ফুরা
ধোয়া ছাই শুধু সোনালি মোড়ে
আগুনে পোড়া- পোড়া-
এ ভালোবাসার ঘর আঙ্গিনা।

২৯ চৈত্র ১৪২৯, ১২ এপ্রিল ২৩

মৃত্যুর কোলে

mmc

শিশু কালটাই ছিলো ভালো
থাকতাম মায়ের কোলে,
ছিলো না কোনও ভাবনা চিন্তা
থাকতাম হেসে খেলে।

যখন একটু হাঁটতে শিখলাম
হাঁটি হাঁটি পায়ে,
দুষ্টুমি-টা বেজায় বাড়লো
সারা পাড়া গাঁয়ে।

আরেকটু যখন বড় হলাম
তরতাজা এক কিশোর,
তখন কী-আর থাকতাম বাড়ি
মাঠেই হতো ভোর।

কিশোর থেকে যুবক যখন
যৌবন দেখা দিলো,
যৌবনের আগুনে জ্বলে পুড়ে
সব হলো এলোমেলো।

জীবনসঙ্গী ঘরসংসার সবই হলো
হলো সন্তানাদি কতো,
হোঁচট খেলাম বার্ধক্যের টানে
জন্মদানকারী মা-বাবার মতো।

অবশেষে মায়ামমতা ছিন্ন করে
থাকলাম মৃত্যুর কোলে,
মৃত্যুই আমায় নিয়ে গেলো
ঐ পরপারে চলে।

.
নিতাই বাবু
১১/০৪/২০২৩ইং।

মৃতের বিবৃতি

আমাকে ইন্দ্র মোহন রাজবংশী
করে যদি পাঠাতে

অন্তত একদিনের জন্য
সম্মানের পুনরুজ্জীবন পেতাম।

এই যে মরে গিয়ে চিহ্ন হীন এক কবরে
শুয়ে আছি। এই যে কবরের ফাঁক গলে
শেয়াল প্রতিদিন হিসু করে।

বলো খোদা এটা কি ন্যায় বিচার!

জীবিত আমি তুচ্ছ ছিলাম
অনেকের জুতোর শুকতলা
জিহ্বা দিয়ে চেটেছি।

তারা কুকুরের মতো দূর দূর করে
তাড়িয়ে দিয়েছে।

রাস্তার ট্রাক দানব যখন থেতলে দিল;
আঞ্জুমানে মফিদুল
দয়াপরবশ সাদা কাপড়ে পেঁচিয়ে
নিয়ে এলো এই রুগ্ন কবরে।

আঞ্জুমানের কাছে কৃতজ্ঞ
শেষ মুহূর্তে এক টুকরো
কাপড় অঙ্গে দিয়েছে।

তবুও মনে খেদ; রাজবংশী
মরেও মরেনি, আর আমি
জীবিত থাকতে ছিলাম মৃতের মত
মরে; রুগ্ন কবরে প্রতিদিন
শেয়ালের হিসুতে জর্জরিত হই।

এপ্রিলের ফুল

এপ্রিল এলেই মনে হয় জন্ম নেবার এখনই সময়
এক নারীর প্রসব সুখে লু্কনো অসুখ
লিকলিকে হাতে স্পষ্ট শিশুর উল্লাস
মনে পড়ে যায়, এপ্রিল আমার জন্মমাস।

কবে যেন মা বলেছিল, যুদ্ধের দিনে জন্ম বলেই
অমনিতর খাপছাড়া তলোয়ার আমি
চশমাটা হাতে নিলে কেবলি দু’টো গোল্লা দেখি, ফ্রেম আঁটা
অথচ নাকি দেহধারনকালে আমার চোখ ছিল বাদামী।

পিতা আর ফেরেননি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে
শোনা হয়নি, ‘আয় খুকু আয়’ বলে কোনো ডাক
তবু এপ্রিল এলেই তেজী এই পুরুষের শার্ট চেপে ধরি আর বলি,
যুদ্ধে যাবি না ছেলে, খবরদার।

এপ্রিল শেষতক দুর্বিনীত বর্ধাপণ দিনের অপর নাম
প্রতি মূহুর্তেই জন্ম নেবার, আঁতুরঘরের গন্ধ শোঁকার অদম্য সময়
এ মাসেই বাকিংহাম প্যালেস ঠিকরে আলো চমকায়
এপ্রিল বড় অদ্ভুত মাস, এলিয়টের ক্রুয়েলেস্ট মান্থ; আমার জন্মমাস।

অংকবাজি

yuio

জীবনে
অংকবাজি শিখিনি
ভালবাসলে অন্তর থেকে ভালবেসেছি
ঘৃণা করলেও অন্তর থেকে…
যদিও
ঘৃণার মানুষ নাই আমার
ভাল না বাসি, ঘৃণা করিনা।
করলেও তাকে জানিয়ে দিই!
সে জানুক কেউ তাকে ঘৃণা করে…
ভালবাসি নিভৃতে
নীরবে
শ্রদ্ধা করলে অন্তর থেকেই করি।
তেল মারিনা
খুশি করতে রঙ মাখি না!
খুব কম মানুষ কে অশ্রদ্ধা করি-
যারা দ্বিমুখী স্বভাবের তাদের সবচেয়ে বেশী অশ্রদ্ধা করি।
তবু যে তাকে ঘৃণা করি তা নয়।
যাকে আপন ভাবি তাকে কখনোই পর ভাবি না।
ভাবলে নিজেকে বেঈমান মনে হয়।
আমার ঈমান ততটাই শক্ত যতটা বেঈমানের জন্য আমি কঠিন হই।
ধর্না ধরি না
নিজের মত করে এগোই…
তবে একবার ধর্না ধরেছিলাম- বিশ্বাস, ভালবাসা আর শ্রদ্ধার অধিকারে
কিন্তু সে অংকে আমি ফেল!
যে অংকবাজিতে তারা সেরা-
সে অংকবাজি নির্লজ্জ বেঈমানি, কৌশলিক, ঘৃণিত!
আমি নিরীহ সেই সবের সামনে।
আমি পরাজিত স্বার্থপরতার চালবাজিতে…
আর একারণেই
আমি পেছনের কাতারে, লাস্ট বেঞ্চে
আমি উপেক্ষিত
যদি সবার মত ভেসে যেতাম,
যদি একিই তেলে মর্দন যোগ্যতা অর্জন করতাম,
যদি মাথা নোয়াতাম,
যদি কুকুর ছানার মত কুই কুই করে যেতাম-
তবে আমার সব হতো-
বাড়ি হত, গাড়ি হত, তালিয়া বাজতো, মদ- মাতাল- তোষামোদ হতো!…
কিন্তু আমি অকর্মা
আমি বেখাপ্পা
আমি জোয়ার চিনি না
স্রোতে ভাসি না
বৃষ্টির দিক বুঝি না, ছাতা ধরি না…
আর সে জন্যই আমি বৃষ্টিতে ভিজি, রোদে পুড়ি!
ব্যথা লাগে
উহ! করে কাঁকিয়ে উঠি না
ব্যথা সয়ে যাই নতুবা ব্যথা না লাগার উপায় বের করি।
তবু ব্যথা লাগে
খুব ব্যথা লাগে- বিশ্বাসে… ভালবাসায়…শ্রদ্ধায়…
এক সময় ব্যথার স্থলে দাগ লাগে
দাগ রুঢ় হয়
প্রবীণ চাপ পড়ে
দাগে দাগ লেগে কলঙ্কিত হয়!
তবু ঘৃণা করিনা
ভাবি,
বুঝি,
আর ভিন্ন পথ খুঁজি…।

কখনো কখনো হতাশ হইনা এমন নয়। তবু লড়াই জারি থাকে
কারো বিশ্বাস কলুষিত বলে-
আমার বিশ্বাস দৃঢ় হবেনা কেন?
আমি বিশ্বাস করি
দাগ না মোচন করে দাগের পরিধি, দাগের দ্রাঘিমায় সরল রেখা আঁকি
কখনো বৃত্ত
কখনো প্রবৃত্ত
ঘুরে ফিরে আবার উঠে দাঁড়াই…
কারণ
আমি তো জানি আমি কি
না
বিত্ত ভৈবব এর নেশা নেই,
মোহ নেই
কিন্তু আমি জানি আমি কি চাই।
আমাকে কোন পথে এগুতে হবে।
জানি,
সব কিছু ভেস্তে যাবে
থাকবে -আমার বিশ্বাসের আলো… ভালবাসার ছন্দ…শ্রদ্ধার মহিমা…
ততদিন অপেক্ষা- যতদিন এই অবারিত রাত ভোর না হচ্ছে
একদিন সকাল হাসবে
একদিন পাখি গাইবে
একদিন বাতাস আমার হবে
বৃষ্টি আমাকে ছোঁবে
একদিন রোদ্দুর আমাকে আলিঙ্গন দেবে
একদিন জাগবে কবিতা
একদিন ফুটবে স্পর্ধা!…
একদিন রঙ, একদিন বুননে হাসবে আড়ং
একদিন জানবো নিজেকে
জানবো তোকে,তাকে, তাহাদেরকে
একদিন জানাবো
একদিন দেখবো আলোর ঊষা
একদিন হবো আলো
একদিন পৃথিবী ডাকবে আমাকে
তাবৎ অপেক্ষাকে জিইয়ে রাখছি তাই…
চন্দ্রমল্লিকা ছোঁবে শিশির
থামবে অশ্রু… অধীর!

বাঁশের সাঁকো আহা স্মৃতিময় দিনগুলো সেই

ui

বাঁশের সাঁকো দেখলেই মনে পড়ে যায় বিদ্যালয় স্মৃতি
ভুল শুদ্ধতার কাটাকাটিতে ভরে যায় তখন মন জ্যামিতি;
কী ঝড় কী তুফান আমরা সাঁকো পেরিয়ে যেতাম বিদ্যালয়ে
ফিরতাম বিকেল হলেই সাঁকো ধরে আপন আলয়ে।

খোয়াই নদীর উপর সেই বাঁশের সাঁকো
ফিরে যেতে সেখানে মন এখনো করে আকুঁপাকু;
কত হাসির টাট্টায় কেটে যেত পথের পর পথ
বান্ধবীরা এক সাথে থাকার সেদিন নিয়েছিলাম শপথ।

কেউ সাঁকো পা রাখতেই জলে টুপ করে পড়ে যাওয়ার আওয়াজ
ওঠতো সুর হাসির কুচকাওয়াজ
ভয়ে দুরু দুরু বুক কাঁপে, ভয় দেখায় কে কারে;
যেতে হত তবুও সাঁকো বেয়ে ওপারে।

আমাদের ভালোবাসার খোয়াই নদী
আজো বয়ে যায় জল কলকল নিরবধি;
তার বুঁকে কত সাঁকো একদা হতো তৈরী
ভয় হতো খাড়া সম্মুখে আবহাওয়া হলে বৈরী।

এখন নদীর মাঝ বরাবর ব্রীজ আছে,পিলার সাজানো থরে থরে
মানুষ এখন আগায় পথ কত সুবিধার হাত ধরে
আমাদের খোয়াই নদী শীতের শুকনোতে ভাসে বালিচর
এখন যে বৃদ্ধা, যৌবনাবতী তখন ছিল, সাঁকো বুকে নিয়ে বেঁধেছিল ঘর।

বিদ্যালয়ের পোষাক পরে আমরা বান্ধবীরা সাঁকো ধরে
এগিয়েছি পথ, কখনো ঝাপটে ধরেছে অথৈ বৃষ্টি ঝরে;
সেই স্মৃতিগুলো আজও মনে আছে গেঁথে,
সেখানে যদি পারতাম ফিরতে, উঠতাম আবার সুখে মেতে।

(ক্যানন ৬০০ডি, জিন্দাপার্ক, নারায়ণগঞ্জ)