বিভাগের আর্কাইভঃ সাহিত্য

সেই সব বনজ দিন

“সেদিন অনেক রাত অব্দি বাঁশী বেজেছিল নবীনা’দিদের পুকুরঘাটে। আমি তো নির্বাক শ্রোতা বা দর্শক। ঝুমুরের চোখ দু’টো করমচার মতো লাল দেখেছি, বুঝেছি অনেক কিছুই। বলতে কি পেরেছি কিছু?”- বলতে বলতে বড়’মা কাঁদছিলেন। বড়মা’র ছোট ফুফু ছিলেন এই ঝুমুর, সমবয়সী। অমন রূপবতী মেয়ে বুঝি আর হয় না, বড়’মার ভাষ্য। একানব্বুই বছর বয়েসী অশীতিপর এই বৃদ্ধা আমার মায়ের নানু, আমার বড়’মা। তিনি বলছিলেন আর আমি দেখতে পাচ্ছিলাম সবকিছুই, দেখছিলাম বড়’মার চোখ দিয়ে—চলে যাচ্ছিলাম অনেক, অনেক যুগ আগে।

লাল ঢাকাই শাড়ী পরনে এগারো বছরের কিশোরী ছুটে যাচ্ছে কলাই ক্ষেতের ভেতর দিয়ে আমি দেখতে পাচ্ছি- কিশোরীর গলায় হাঁসুলী, পায়ে রূপার খাড়ু আর কোমর ছাড়ানো ঢেউ খেলানো চুল। ফর্সা, ঝকঝকে গায়ের রঙ। মেয়েটি দৌঁড়াচ্ছে আর কেউ পিছু ডাকছে, ওরে ঝুমুর, ঝুমুরি রে—দাঁড়া-

আমি সব দেখতে পাচ্ছি—-
মাত্র দু’দিন আগে ঝুমুরের বিয়ে হয়েছে। যদিও মেয়ে শ্বশুরবাড়ী যাবে আরো দু’বছর পর তবু এখনো বাড়িতে বিয়েবাড়ীর আমেজ। আর এই মেয়ে ছুটছে সইয়ের বাড়ী। সাথে আমার বড়’মা আলতা, ঝুমুরের সমবয়েসী ভাইঝি।
—-শোন আলতা আমি শ্বশুরবাড়ী গেলেও ফিরে আসবো, আর যাব না—বলছে ঝুমুর
—ধ্যাৎ তাই কি হয়? দেখো না ঝর্ণা খালা কত্তো কাঁদলো বিয়ের সময়। আর এখন বলে যাই রে, বাপের বাড়ীতে বেশীদিন থাকলেই আমার ছেলের শরীর খারাপ করে। তুমিও অমনই করবে—আলতাও হেসে উত্তর দেয়।
—বলেছে তোকে!
—বলেনি আবার? বলেই খুব হাসছে আলতা
—দেখবো তুই কি করিস?
—এমা আমি তো বিয়েই করবো না, বাবাকে বলেছি—আর বাবাও বলেছে সে-ই ভাল করিস না বিয়ে।

দূরে উড়ে যাওয়া বকের সারি দেখে দু’জনেই থমকে দাঁড়ায়। এমন অসময়ে বকগুলো ওড়ার কারন হঠাৎ বেজে ওঠা বাঁশীর সুর। দু’জনে কি এক টানে পায়ে পায়ে ঝোঁপটার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দেবদূতের মতো দেখতে, একমাথা ঝাঁকড়া চুল উড়িয়ে যে ছেলেটি বসে বসে বাঁশী বাজাচ্ছে ওরা দু’জনেই চেনে তাকে। শ্যামল দাদা, নাবীনাদি’র ছোট ভাই।

—কি রে ঝুমরি তোর নাকি সেদিন বিয়ে হয়ে গেল? এখন তবে কেন এত বন বাদাড় ঘুরে মরছিস। যা, যা ঘরে যা—বললো শ্যামল দা।
—বিয়ে হলেই কি! ও কি এখনই চলে যাচ্ছে না-কি শ্বশুরঘরে?
—এখন যাবে না? বাহ ভালই—

শ্যামলের ঠোঁটের কোনে এক টুকরো বাঁকা হাসি আর ঝুমুরের চোখ ছলছল। সে কেবল পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে মাটি খুঁড়ছে। ভঙ্গিটা কেমন অপরাধীর। একটা নিঃশ্বাস ফেলে শ্যামল’দা আবার বাঁশী বাজাতে লাগলো। পাশেই ঝালিঙ্গী নদীর শীর্ণ এক ধারা কুলকুল করে বয়ে যাচ্ছে। নদীর জলে তীরবর্তী কোন গাছের ছোট ছোট হলদে ফুল ঢেউয়ের তালে দুলতে দুলতে কোত্থেকে যে কোথায় চলে যাচ্ছে। আলতা কেবল দূরের সরিষা ক্ষেতের ভেতর দিয়ে এগিয়ে আসা পড়ন্ত বিকেলের দিকে চেয়ে থাকে। হঠাৎ লক্ষ্য করে ঝুমুর যেন কেমন মগ্ন হয়ে তাকিয়ে আছে শ্যামলদা’র দিকে। বাতাসে শীতের গন্ধ।

তারপরের ঘটনা সুখের না মর্মান্তিক কে জানে! যে আলতা দর্পিত ভঙ্গিতে বলেছিল, “এমা আমি তো বিয়েই করবো না, বাবাকে বলেছি আর বাবাও বলেছে সে-ই ভাল করিস না বিয়ে।“ সে-ই আলতারও বিয়ে হয়ে গেল হুট করেই। আর বাইরে যেতে পারে না আলতা বা ঝুমুর কেউই। তবু কোন কোন উদাস দুপুরে মা-খালারা ঘুমে থাকতে দুই জনে চষে আসে মাঠ-ঘাট। নবীনা’দিদের বাড়ী। শ্যামলদাদার বাঁশী এখনো তেমনি বাজে করুণ থেকে করুণ সুরে। মাঝে মাঝে কেবল ওরা চুপি চুপি পায়ে গিয়ে দাঁড়ায় শ্যামলদা’র সামনে। কি যে হয়েছে ঝুমরিটার ওকে দেখলেই কাঁদে। চোখের জলে ভেসে যায় ওর নাক চোখ মুখ। শ্যামলদা’র চোখটাও কি একটু ভেজে? কি জানি, এ হয়তো আলতার চোখের ভুল!

কথা ছিল দুই ফুফু ভাইঝি শ্বশুর ঘরে যাবে দুই বছর পর যখন ওরা তেরোয় পড়বে। সে-ই দিনও ঘনিয়ে এসেছে। সামনের অঘ্রানের দুই তারিখেই দুই সই পাড়ি জমাবে ভিন গাঁয়ে। বাড়ীতে হাসি-আনন্দ। মা চিড়ে কোটে, দাদী বানায় নাড়ু, শিকায় উঠছে ভাঁড়ের পর ভাঁড় দই। অন্য ফুফুরাও নাইয়র এসেছে। কলকাতা থেকে মেয়েদের জন্যে এসেছে শাড়ী, চুড়ি, ছেলেদের জন্যে জরিপাড়ের লুঙ্গি, কুর্তা। বাড়ীর পরিবেশ জমজমাট। কাজের লোকজনের হাঁক ডাকে বাসায় তিষ্ঠানো দায়। বড় বড় রুই,পাঙ্গাস কুটছে পাড়ার বৌ-ঝি’রা উঠানে বসে। ধামা ভর্তি খই, মুড়কি নিমেষে শেষ হচ্ছে। আর পানের বরজ তো খালি হবার যোগাড়। এমন এক উৎসবমুখর দিনে আলতা আর ঝুমুর কোন ফাঁকে বেরিয়ে পড়েছে কে জানে! আজ কার্তিকের শেষ দিন।

নদীর ঘাটে যে জংলা মাচাং সেও ছাড়িয়ে দু’জনে চলে গেছে নীরব থেকে নির্জনে। অবেলার কুয়াশায় ঢেকে আছে জায়গাটা। কেমন নিঃস্তব্ধ, শুনশান চারিদিক। পাখিদের ঘরে ফেরার কিচিরমিচির শুধু। এরই মধ্যে গলাগলি করে দু’জনের সে কি কান্না। কে শুনবে তাদের এই হাহাকার? কে আসবে মোছাতে চোখের জল? ঘোচাতে বিচ্ছেদ জ্বালা? আলতা বলছে,
—মনে থাকবে ঝুমরি, আমরা কিন্তু ও বাড়ী থেকে ফেরত এসেই বিষ খাব।
—কোত্থেকে যোগাড় হবে রে বিষ?
—সে আমি যোগাড় করে আনব, ভাবিস না।

ঝোঁপের ভেতর থেকে মচমচ আওয়াজে ওরা উঠে দাঁড়ালো। অবাক হয়ে দেখছে এই বিজন বনে আবার কে এলো! বাঘ নয়তো! মা বলেছে আলতাকে, ‘দেখিস যেন ওদিকে কক্ষনো যাবি না। ওখানে বাঘ বেরোয়।‘ তা ওরা তো এখানে আসছে সেই ছেলেবেলা থেকেই। বাঘ কেন বেড়ালও দেখেনি কখনো। তবে ওদের দেশে বাঘের উপদ্রব অনেক। এই তো সেদিনও বাপ-মা মরা এতিম ছেলে শহীদুল্লাহ কে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল বাঘে। ওর বড়ভাই আসাদুল্লাহ পাশেই মাঠের ঘাস কেটে আঁটি বাঁধছিল। কি সাহস ছেলেটার! এক্কেবারে ঘাসকাটার কাঁচি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঘের উপর। আসাদুল্লাহ’র চীৎকার, চেঁচামেচিতে লোক জড়ো হয়েছিল বিস্তর। কিনতু ঐ একলা ছেলেই ভাইকে উদ্ধার করেছিল আর কেঁদে কেঁদে বলেছিল, ‘খোদা হামার মা-বাপ কাইড়্যে নিয়েছ তবু হাউস যায় না, ভাই টাকও নিবার চাও। তুমি এংকা ক্যা খোদা? গরীব দুঃকীর দুক্ক বোঝোনা!’ এসব অবিশ্যি আলতা শুনেছে বাড়ীর ঝি রাসুর মায়ের কাছে। তবে এখন এই সাঁঝলাগা বিকেলে ওর শরীরটাও বাঘের ভয়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছে। ভয়ে ভয়ে চারপাশে তাকিয়ে দেখছে।
যাহ বাঘ কোথায়! কোত্থেকে শ্যামল দাদা এসে দাঁড়ালো ওদের পাশে।

ওরা কিছু বুঝে উঠবার আগেই হঠাৎ করে সে ঝুমুরের ডান হাতটা চেপে ধরে আকুল হয়ে বললো, —শ্বশুরঘরে যাসনা ঝুমুর। প্রথমে দু’জনেই হতচকিত হয়ে মৃদু একটা চীৎকার করে উঠেছিল, শ্যামল’দাকে দেখে আলতার যেন বুকে পানি ফিরে এল। তবে সামলে উঠেই সেও অবাক হয়ে দেখে শ্যামলদা’র হাতের মুঠোয় ঝুমুরের হাত। এতক্ষনে সম্বিৎ ফেরে ঝুমুরের। হালকা ভাবে হাতটা ছাড়িয়ে নিল আর ঘুরে দাঁড়িয়ে মাথায় ঘোমটাটা আরেকটু টেনে নামিয়ে নিয়ে দৃঢ় অথচ অস্ফুট স্বরে কেবল বললো—ছিঃ
তারপরে দু’জনেই ছুট। দু’জনেরই বুক ঢিবঢিব। পেছনে পড়ে গেল কলাই ক্ষেত, সর্ষে ক্ষেত আর শ্যামল দাদা।
ঘরে ফিরেই ঝুমুর বললো,—আলতা ও কথা যেন কাউকে বলিসনা ভাই।

—যাহ ও কি বলবার কথা! হ্যাঁ রে তুই ও কি ওকে—?
— না না কি যে বলিস!
—তা’ও ঠিক। আর ওরা হলো গিয়ে হিন্দু। এ কি সম্ভব?
এবার ঝুমুর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে, ম্লানকণ্ঠে কেমন আনমনে বলে, সে-ই তো।

এই রাত্তিরটাই শেষ। কালই আলতা চলে যাবে শ্বশুরবাড়ি গাইবান্ধা জেলা শহরে আর ঝুমুর পলাশবাড়ীর বাঁশকাটায়। জানীপুর গ্রামের দু’টি মেয়ে কি নিমেষে পর হয়ে যাবে স্বজনদের জন্যে! আর ওরা হাসি তামশায় মেতে উঠবে না। ভাইয়ের কাছে পাখি ধরে দিতে বায়না করবে না। মেয়ে দু’টো এটা মানতেই পারছে না। অথচ দেখো ভাই আর মায়েদের খুশীর অন্ত নেই। যেন ওদের জন্মের পর থেকেই চলছিল ওদেরকে পর করে দেবার এই দূরাভিসন্ধি। সত্যি কি নিষ্ঠুর এই জগত! কেমন করে একটা মেয়ের শেকড় উপড়ে টেনে নিয়ে ফেলে অন্য ঘরে! কেউ এতটুকু উহ করে না, কেউ দেয় না বাঁধা। আলতার বুকে অভিমানের বিশাল পাহাড়। সে ভাবে, আর কক্ষনো ফিরবে না এই বাড়ী, এই নিষ্ঠুর লোকগুলোর মাঝে। ওরা তো কেউ ওকে ভালই বাসে না। থেকে থেকেই ওদের বুক ফেটে একটা করে দীর্ঘশ্বাস বাতাসে ভেসে ভেসে উড়ে যায়। কেউ তা শোনে না। শুধু বাতাস হয়ে রয় সাক্ষী।

আজ সারাদিন ধরে দুই শ্বশুরবাড়ীর লোকজন এসেছে গরুগাড়ী বোঝাই করে। এখন অনেক রাত। তা’সত্ত্বেও বাসন কোসনের ঝনঝন আর খাওয়া দাওয়ার হুল্লোড় লেগেই আছে। শুধু কোনার এক ঘরে কাঠের মতো শুয়ে আছে আলতা আর ঝুমুর। এত হৈ চৈ ওদের কানে যাচ্ছে না। বাইরে করুণ সুরে বাজছে বাঁশী। থেকে থেকেই ফুঁপিয়ে উঠছে ঝুমুর। ঝুমুরের চোখ করমচার মতো লাল। আলতার বুক ভেঙ্গে যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ী যাওয়ার কষ্টের চেয়েও অন্য এক বেদনায়।

সেই অন্ধকার থাকতেই বাড়ীর মেয়েরা টেনে তুলেছে ঝুমুর আর আলতাকে। আজ দু’জনে যাবে দুই পথে। এ নিয়ে অবশ্য আপত্তি তুলেছিল মুরুব্বিরা। একই দিনে বাড়ীর দুই মেয়ে তা’ও আবার ফুফু ভাইঝি’র একত্রিত বিদায়! এ তো শুভ লক্ষণ নয়। আলতার দাদাজান মানে ঝুমুরের বাপজান এসব মানেন না বলে সব আপত্তি উড়ে গেছে আগেই। ওই অন্ধকারেই দু’জন কে গোসল করানো হলো সন্দা-মেথি আর হলুদ বাটা মেখে। সে কি শীত! কাঁপছে দু’জন ঠকঠক করে। বেলা উঠবার আগেই সবাইকে খাইয়ে দাইয়ে বিদায় দিতে হবে। নইলে দূর পথে ওদের ফিরতে সমস্যা হবে। বেলা বেলা বৌ নিয়ে ঘরে না ফিরতে পারলে শ্বশুরবাড়ীর ওরাই বা নিজেদের লোকজনকে কি করে দেখাবে কেমন বৌ এনেছে! তাই এত দ্রুত সব আয়োজন, তাড়াতাড়ি যাত্রার তোড়জোর। ভেজা চুলেই তেল দিয়ে টেনে বাঁধা হয়েছে বিড়া খোঁপা। এমন শক্ত করে বাঁধা যে দু’জনের কপালের পাশের শিরায় চিনচিন করছে ব্যাথা। অবিশ্যি এ বোধটাও এখন ওদের কাছে নস্যি। কখন মা, দাদী, খালা, ফুফুদের সাথে কান্নার পাট চুকিয়ে ওরা গরুর গাড়িতে গিয়ে বসেছে ওদেরই মনে নেই। দু’জনেই ছইয়ের ভেতর থেকে যতটুকু দেখা যায় দেখলো, দুই গাড়ী চলে যাচ্ছে উঁচু নীচু রাস্তা ভেঙ্গে দুই দিকে।

দশদিন পরেই অঘ্রানের তের তারিখে আবার একই জায়গায় পরপর এসে দাঁড়ালো দু’জনের গরুর গাড়ী। সেদিন গিয়েছিল ছইয়ের ভেতর একা বসে। আজ দু’জনেই ফিরেছে পাশে বর নিয়ে। আজ বাড়ীতে আনন্দের ঢেউ তেমনি, সেদিন যেমন ছিল। তবে আজ কিনতু ঝুমুর বা আলতা কাঁদছে না। দু’জনের চোখে-মুখেই চাপা খুশী, লাজুক মুখে ঘুরছে। বারেবারে চাপা হাসিতে মুখ চেপে দেখছে দু’জন দু’জনকে। শুধু মন খুলে কথা বলতে পারছে না নানা আনুষ্ঠানিকতার ব্যাস্ততায়। তা হোক সকাল তো পরেই আছে। কত্তো গল্প জমে আছে দু’জনার অন্তরে!

সকালে কুয়োতলায় দাঁড়িয়ে ঝুমুর। মুখোমুখি আলতা—
—কি রে এনেছিস বিষ?
—কোত্থেকে আনব?
—ও মা তুইই না বলেছিলি যোগাড় করবি!
—না রে এখন আর পারবো না। মানুষটা খুব ভাল।
—কোন মানুষ ভাল রে?
—যাহ জানিনা
হিহিহি করে হেসে ওঠে ঝুমুর। বলে
—আমারটাও জানিস। আমি বাবা এই জীবনে আর মরতে চাই না।
—আমিও
—দ্যাখ আলতা এই শাড়িটা সে আমায় দিয়েছে লুকিয়ে
—বাপরে! এরই মধ্যে ঘুষ দেয়াও সারা? আর কি কি দিয়েছে শুনি?
—সর পাজী কোথাকার!

এবার আলতাও হেসে উঠলো খুব জোরে। কোথায় যেন বাঁশী বেজে উঠলো, কি করুণ সেই সুর! সকালের কাঁচাসোনা রোদ ধুয়ে দিচ্ছে ওদের শরীর। তবু বাঁশীর সুর শুনে দু’জনেই একটু কেঁপে উঠলো যেন।

হঠাৎ একটা হলদে ঝিলিক। রোদের এত তেজ? এমন ঝিলিক? মূহুর্তের জন্যে আলতা টের পায় শরীরে একটা লোমশ ছোঁয়া, গরম। ওরই ভারে আলতা পা ভেঙ্গে পড়ে গেল মাটিতে। কুয়োর পাড়ে ধুপধাপ ক’য়েকটা শব্দ। এত দ্রুত, এত দ্রুত যে আলতা কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি একবার শুধু চোখ বড় বড় করে দেখলো ওর সামনে ঝুমুর নেই। আর ওর বাসার মানুষজনসহ গ্রামের অনেক লোকের হৈ চৈ চীৎকার—
—বাঘ, বাঘ, ওরে ঝুমুরোক বাঘে নিয়া গেল—ওরেএএএ—–কেটা কুন্ঠে আছ, আউগাও বাহে—বাহে—-

ঝুমুরের আধখাওয়া শরীরটা পাওয়া গিয়েছিল সেই জংলা মাচার পাশের ঐ জঙ্গলে। শ্যামল’দাদাই দেখেছিল প্রথম।

অনেক আগেই গল্প শেষ, শুয়ে পড়েছি আমরা। আমি আর বড়’মা। বড়’মা পাশ ফিরে শুয়ে কাঁদছেন। ফুলে উঠছে শরীর। টের পাই সবই। কিছুই বলি না, কাঁদুক। সারা জীবন যে দুঃখ তিনি বুকে বয়ে বেড়িয়েছেন এটুকু শোক তো এই বৃদ্ধা কেঁদে ঝরাতেই পারেন। আচ্ছা শোক কি কাঁদলে ঝরে যায়? নাকি আটকে থাকে বুকে? খুব ভাবছি, শোক আসলে কি? শোক কি এমনই? একহাজার বছর পরেও একই জায়গায় দাঁড়িয়েই থাকে!

(একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে)

পাঠক সংখ্যা এক

যে কবিতাটি আমি একটি জাতীয় দৈনিকে
পাঠিয়েছিলাম, তা আর কেউ পড়েনি। শুধু
পড়েছিলেন ঐ দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদক।
তারপরে ছুঁড়ে দিয়েছিলেন ডাস্টবিনে। সেই
থেকে আমার ঐ কবিতাটির পাঠক সংখ্যা
একজনই।

তিনি ফেলে দিয়েছিলেন, কারণ তার ভালো
লাগেনি কবিতাখানি।

এই ভবের বাজারে, অনেকের অনেক কিছুই
ভালো লাগে না।
কারো ভালো লাগে না যোগাত্মক যন্ত্রনা।
আবার, কারো ভালো লেগে যায় বিয়োগাত্মক বন্দনা।

তা নিয়ে আমার কোনো অনুযোগ নেই
প্রকাশিত কথা হচ্ছে এই ……
যারা কবিতা বুঝতে জানে তারা প্রজাপতির পাশে দাঁড়াবেই।
।।।।।।।।

নিবিড় ছায়া খুঁজি এবেলা

chh

রোদ্দুরে মাখামাখি প্রান্তর, ছায়া চাই এক তিল
চাই সুখ অনাবিল
আকাশজুড়ে রোদ্দুরের হোলিখেলা
বড্ড হাঁসফাঁস কেটে যায় বেলা।

তুমি না হয় ছাতা হও
বামপাশে আমার দাঁড়িয়ে রও
কথা কও হিম হিম মিহি, নয় রোদ্দুর তেজ
নেয়ে ঘেমে একাকার দেহ যেন নিস্তেজ।

এসো রোদ্দুরে হাঁটি পাশাপাশি
কিছু রোদ্দুর গিলি অনায়াসে, দেখি উর্ধ্বমুখী সূর্যের হাসি
কথায় কথায় পার হই উত্তাপের সুপান
কিছু প্রেম কথা বল, হৃদয়ে বয়ে যাক ভালোবাসার তুফান।

সময় ফুরিয়ে যাক, দুপুর যাক গড়িয়ে
ছাতা ধরো মাথায়, নিয়ো না সরিয়ে,
যদি মন থাকে ফুরফুরে
সুখ রইবে না আমাদের হতে দূরে।

কিছু মেঘ উড়ে এসে বসুক চোখে
মনে ছড়িয়ে দিত শুদ্ধতা, প্রেম দিক বুকে
তুমি তাকিয়ো আজ আকাশ পানে
মত্ত হয়ো কিচির মিচির গানে।

.
(স্যামসাং এস নাইন প্লাস,চুনারুঘাট)

আরশের প্রকম্পন

আমরা ভুলে যাই অতীতের আশংকা গ্রস্থ সময়, ক্ষুধা বিধ্বস্ত দীর্ঘ স্মৃতি
সোমত্ত জীবন পেয়ে আমরা ভুলে যাই জীর্ণ কাল, পাষণ্ড যুগের দাসত্ব!!..
যদিও
কেউ কেউ এখনো ঝুলিয়ে রাখে
সতীত্বের ঘন্টা,
লুকিয়ে রাখে
নেকড়ের আঁচড় -কামড়ের নৃশংস ইতিহাস!

আমাদের বগলে- মুষ্টিতে জ্বলন্ত অঙ্গার পিণ্ড!
দলিত মথিত বুকে সহস্রাব্দের দম্ভক নৃত্য,
উন্মত্ত ঊর্ণাজাল..
নিভৃতের দহনে পুড়ছে সৌম্য সকাল
সোনালী দুপুর… পূর্ণিমা প্রহর…
ঘোর অমানিশায় ডুবছে সমগ্র ভবিষ্যৎ!

আশ্চর্য এক স্পর্ধায়
কলংকের শাপ ওদের স্পর্শ করেনা।
নগ্ন উৎসবে প্রকম্পিত আসমান জমিন
কাম মত্ত আগ্রাসন
কুকুরের ঘেউঘেউ..লালায়িত জিহ্বা
সুশীল দুনিয়াকে ভেংচি কাটে
উল্লাসের বেলাল্লাপনা কম্পন তুলে আরশের মঞ্চে!..
কম্পন তুলে ঈশ্বরের বক্ষে
বিবেকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে!…

.
১৪/৭/২৩

কবিতা

ভরসন্ধ্যার খাতা খুলে দেখি
তরঙ্গের ধ্যানমগ্ন মুদ্রার বিন্যাস,
যা কখনো শেখোনি তুমি জোয়ারভাটিতে;
অগাধ জলের শিথানে চোখ রেখে
দেখে গেছো শুধু মাছেদের কেলি
শেখোনি মাছের প্রকারভেদ,
কানকোর ভিন্ন গঠনপ্রকৃতি।

নোনাজল দেখেছো শুধু,
দেখোনি নিষিক্ত চোখের পাথর।

মূল কবিতা : পাবলো নেরুদা

pablo

আমার অত্যন্ত প্রিয় কবি পাবলো নেরুদার আজ একশো উনিশতম জন্মদিন। বহু বছর আগে তাঁর কয়েকটি কবিতার অনুবাদ করেছিলাম। তারই একটা দিয়ে আজ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন …
———
মূল কবিতা : পাবলো নেরুদা
অনুবাদ : রিয়া চক্রবর্তী

বেশি দূর যেওনা কখনো, এক দিনের জন্যেও না।
কারণ …
কারণ,আমি জানি না কিভাবে বলবো,
এক একটি দিন কতখানি দীর্ঘ।
তবুও আমি নিবিড়ভাবে অপেক্ষায় থাকবো তোমার,
সব ট্রেন একে একে ঘুমোতে চলে গেলে,
যেমন নির্জনে থাকে একটি স্টেশন।

কখনো ছেড়ে যেওনা, এক ঘন্টার জন্যেও না,
কারণ
বিন্দু বিন্দু তীব্র যন্ত্রণা তখন মুহূর্তেই নদী হয়ে যাবে
ঘরছাড়া ধোঁয়ারা অবিরাম ঘর খুঁজতে খুঁজতে
আমার ভেতরে ঢুকে শ্বাসরুদ্ধ করে দেবে হারানো হৃদয়।

সমুদ্রের ধারে হাঁটার সময় ছায়াচিত্রের মতো মিলিয়ে যেও না কখনো
তোমার চোখের পাতা যেন শূন্যতায় কেঁপে না ওঠে
এক মুহূর্তের জন্যেও ছেড়ে যেও না, প্রিয়তমা আমার।

কারণ ঠিক সেই মুহূর্তেই হয়ত অনেক দূরে হারিয়ে যাবে তুমি
আর আমি উন্মাদের মতো সমস্ত পৃথিবী উল্টেপাল্টে, আর্তনাদ করে বিভ্রান্তের মতো, প্রশ্ন করবো,
তুমি কি আসবে?
মৃত্যুর কাছে এইভাবে রেখে যাবে আমায়?
=====================

অন্ধকার

নিজেকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে দেখলাম
আমার মা, রক্তের দুটো ভাই
সকলে পৃথক-পৃথক ভেতরে বসে আছে
দুপুরে খাসির গোস্ত, কাটাপেয়াজ, মরিচ
মেলামাইন প্লেটে সাজানো সংসার-
কেবল একে অপরের সঙে চিল করছে।

আমি হাসলাম, শাশ্বত হাসি; রোজ যে
হাসিতে জীবিত ছিলাম
খুলির ভেতরে মেঘ রেখে। রোদ রেখে।
সেসব অন্ধকার জড়ায়া ধরে হাঁটতে থাকি
বুড়ো আয়নার দিকে, জুটমিলের দিকে
নিজ পাশে দীর্ঘ একটা সম্পর্করহিত ছায়া-
ছায়ার সঙে চোখদুটো লাল হতে থাকে।

মৃতনদী অথবা নারী

আজকাল রাতের সাথে কয়জনের কথা হয়?
বড়জোর অন্ধকারের সাথে সন্ধি হয়!
অত:পর ভোর হওয়ার আগেই বিতাড়িত নদী
ফিরে এসে আরেকটি ভোরের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয়!
অতঃপর সেও সন্তর্পনে মন্থর এগিয়ে যায়
কোনোএক মৃতনদী অথবা মৃত নারীর মতোন
অবশ্য এই যুগে কে আর দেবদাস হতে চায়?

অলীক আশ্বাসে যদি ভেঙে যায় দেবতার ঘুম
তবে সে কেমন দেবতা?
উপসর্গের পাঠ অনেক আগেই চুকিয়ে দিয়েছি
বড়ো সস্তায় বিকিয়ে দিয়েছি সভ্যতা
নইলে তুমি যতোই পুজো দাও তারে…আমার
অর্ঘ্য থেকে রেহাই পাবে না কোনো অপদেবতা!

গন্ধ পাই

out.

জন্ম আমি দেখিনি;
তোমাদের জন্ম দেখে
উপলব্ধি করি; স্বাদ পাই
গন্ধ পাই আর কত কি?
তবু জন্ম, জন্ম দিন বলে কথা!
জন্ম নিয়ে কত স্বপন কত ইতিহাস
রয়ে যায় সোনালি মনে মৃত্যুর ঘরে
ভেবো না জন্মের ব্যর্থতা
অশুভ কোন চিন্তা; সবই নিখুঁত
কর্মের গুনে জন্মের অমরত্ব!

.
৫/৭/২৩

চার-ছক্কা হবেই

পাকিস্থান ইনিংসঃ
স্লিপ এরিয়ায়
মেশিনগান রেখে ভয় দেখিয়ে আর কোন লাভ নেই-
ক্যাচ হবেই;
উইকেট এরিয়ায়
কামান দিয়ে স্টাম্প আগলে রেখে আর কোন লাভ নেই-
আউট হবেই।

বাংলাদেশ ইনিংসঃ
স্থল সীমানায়
জলপাই রঙের ট্যাংক রেখে আর কোন লাভ নেই-
চার হবেই;
আকাশ সীমানায়
সামরিক হেলিকপ্টারে টহল দিয়ে আর কোন লাভ নেই-
ছক্কা হবেই।

আহা কী সুন্দর বর্ষার আকাশটা

choo

থোকা থোকা মেঘফুলে ভরে আছে আকাশ
আকাশে আজ যেন মেঘেদেরই বসবাস
দেখে যাও রাতুল, আকাশে মুগ্ধতা সীমাহীন
সুখের ঢেউ উথাল পাথাল মনের গহীন।

রাতুল চলো বর্ষার আকাশে রাখি চোখ
আকাশের বুকে আজ খুঁজি সুখ
কোথাও বসি দুজন, সম্মুখে আকাশ নীল
চলো চোখ রাখি যেখানে আকাশে মেঘ বর্ণিল।

চলো রাতুল, নিয়ে চলো অন্য কোথাও
হয়ে যাই লোকালয় হতে উধাও,
আকাশ দেখি পথে হেঁটে হেঁটে
কিছু কথা আছে বুকে জমা, ইচ্ছে যাই তোমার সাথে বেটে।

আকাশে আজ মেঘেদের হল্লা, মনোহারী রূপ
কী রাতুল হয়ে আছো চুপ?
নিয়ে গেলে বলো, চলো যাই
বুকের তারে সুখের বেহালা বাজাই।

ছুটির দিনগুলো এই, বৃথা দেব না যেতে
খুব ইচ্ছে উঠি সুখে মেতে
তুমি যদি যাও, সুখের সীমানায় হারাবো,
চলো না, খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াবো।

.
(স্যামসাং এস নাইন প্লাস, চুনারুঘাট)

সত্যি মরে পথ্যি ছাড়া

সকল কিছুই নকল এবং
মিথ্যে দেখে দেখে-
চিত্ত জুড়ে নিত্য সবাই
সন্দেহ নেয় মেখে।

সত্যি কি এক রত্তিও নেই
আসল কি নেই কিছু?
উঠছি ভোরে ছুটছি জোরে
মিছের পিছুপিছু!

সন্দেহে মন-দেহের ভিতর
ভাবনা ইতর জাগে-
অবিশ্বাসের বিষ শ্বাস এখন
অবিরতই লাগে।

আসলটাকেও নকল লাগে
ধকল স’য়ে স’য়ে-
সত্যিগুলোও ধুলোয় পড়ে
যাচ্ছে মিছে হয়ে।

সত্যি মরে পথ্যি ছাড়া
আসল মরে ধুঁকে-
মিথ্যে বেড়ায় নৃত্য করে
চিত্তভরা সুখে।

অভিশপ্ত স্মৃতি

Screenshot (4)

ভুলে গিয়েছো?
হয়তো ভুলে গিয়েছো খুব করে।
ভুলবে না কেন!
স্মৃতির পৃষ্ঠা থেকে আমি ছিঁড়ে গিয়েছি বহুদিন হলো।
তোমার হৃদয়ের গলিতে ভালবাসার মিছিলে
আমি এক অচেনা স্লোগানী ছিলাম যা বুঝতে অনেক ফাল্গুন চলে গেল,
তাই হয়তো ঝাপসাতেও মনে নেই আমার অস্তিত্ব।

এখন হয়তো বেশ সুখে আছো!
আমিও চাই তুমি ভালো থেকো অনন্তকাল।
যে ভালো থাকার জন্য আমার হাত ছেড়ে ছিলে
যে সুখে থাকার জন্য আমায় কলঙ্ক দিয়েছিলে,
হয়তো অন্য কোনো ঘামের গন্ধে সে সুখে আছো
তাই আমি এখন তোমার নিঃশ্বাসে নেই।

ঘোলাটে স্মৃতির বেহাল্লাপনায় আমি বেশ আছি
আমাকে ঘিরে যে তার সমস্ত ইচ্ছে, স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়েছে
তাকে নিয়ে রঙ্গনের সুগন্ধ সুখের গভীরতায় মজেছি।

ভালো থেকো নীলকন্ঠ!
কোনো এক রাত দুপুরে দু’ফোঁটা অশ্রু ফেল
ঐ অভিশপ্ত স্মৃতির মলাটে।

দুঃখের অবসানে

CL_1688749542558

থমথমে আকাশটার মেঘগুলো ঝরছে রিমঝিম,
কোথাও কেউ নেই,
বিজন প্রান্তরে একাকী ভিজছি আমি-
আমার দুঃখগুলোকেও বিলাতে বৃষ্টির জলে।

বেশ দিনকয়েক হলো,
ভালো নেই আমি,
বেঁচে থাকার আশাটুকুর লোপ পাচ্ছে-
অস্থিরতার বাহুবলে আবদ্ধ আমি।

একাকী বৃষ্টিতে ভিজছি,
মনে আশা বেঁধে,
রিমঝিম বরষণে হারিয়ে যাবে-
মুছে যাবে চোখের জল মানুষের আড়ালে।

পরিজন ফেলে এসে ইটের শহরে,
প্রতিদিন পুড়ছি,
যন্ত্রণায় মরছি,সীমাহীন কষ্টে-
বুকের আর্তনাদ শুনে না কেউ আজ।

সহসা থেমে গেলো রিমঝিম বৃষ্টি,
বুঝেছি হায়,
আমার কষ্টের ভাগ নিবেনা কেউ-
একাকী বিজন নগরে হাঁটছি।

থমথম আকাশটা সুখী হলো কোন আশে,
নানাবিধ কষ্টে মরছি আমি,
হায় বৃষ্টিও বুঝে না আমায়-
না হলে সহসা থামার মানে কি?

নতশিরে বাড়ির পানে ছুটছি,
আবারো যদি বৃষ্টি নামে,
মনের দুঃখ ভুলতে আসবো-
জলস্রোতে বিলিন করবো চোখের পানি।

বদল বিষয়ক

বদলে যাওয়া মানেই বর্জ‌্যের শেষ তলানিটুকু নয়-
বদলে যাওয়া মানেই- পরে নেয়া নয় পশুত্বের খোলস
বদলাবার নামে যারা পান করতে চাইছে ধুমকেতুর সিগ্রেট
অথবা যারা গাইতে চাইছে দেহদক্ষিণার গান,
তাদের কাছে বদলে যাওয়া মানেই-
গায়ে জড়ানো একটি মৌসুমি হাওয়ার প্রলেপ।

বানর বদলে মানুষ হয়েছে
অথবা মানুষ বদলে হয়েছে পাথর-
এমন অনেক উপাখ্যান পড়তে পড়তে আমরা যখন
আকাশের দিকে তাকাবো তখন দেখবো,
মাটিজীবী রাত্রিই গ্রহণ করে নিয়েছে সকল প্রাণের সারৎসার।

আর বদলের ইতিহাসটি শাণিত হয়েছে নরসুন্দরের ধারালো ক্ষুরে !