বিভাগের আর্কাইভঃ সাহিত্য

এই আষাঢ়ের চিঠি

দূরের পাখিরা জানে এই আষাঢ়ের অন্যনাম- তোমার চিঠি। অথবা ভালোবাসার
পুরনো খাম- নতুন অক্ষরে সাজানো একটি কদমফুল। ভুল করে উজানে বয়ে
যাওয়া নদীর প্রশ্বাস জমা রাখা দুপুর।

হতে পারে ভোর- কিংবা বাঁশির সুর। যে সময়ের কাছে রেখে এসেছি আলোর অতীত।
মনে পড়ে ? এই আষাঢ়েই আমরা গেড়েছিলাম আরেকটি বিশ্বাসের ভিত !

আর জীবনের সপ্তকলায় পরস্পরের
মুখ দেখে দেখে-
ঝড়ের প্রতীক্ষায় কাটে দিন- মাস
নতুন কোনো সংগ্রামের
মানচিত্র এঁকে।

পাখি না ব্ল্যাকবোর্ড

কতদূর সুনামগঞ্জ, পারাবত ঘুম খুলে পৌছে যাই।
মান্দারফুলের কেকাধ্বনি যদি রেখে দেয় একবার
শুক্রবারের সৌন্দর্য—তাতে দূরের পথ এসে
ছড়িয়ে—ছিটিয়ে দেবে শহর। বাদামজাত বিকেল—
চেয়ে দেখা যাবে পেছনের ব্ল্যাকবোর্ড, একখণ্ড চক
এঁকেছিল নেচে ওঠা পাখিদের গীতরত জীবনভার
দেখি—ভেতরে ক্রীতদাস প্রাণ ছড়ায়—অনেকখানি

জেনেছি মানুষ—জীবন চূড়ান্ত জুয়াঘর, ইশারাগুলো
নিশ্চুপ পড়ে থাকে কাটা সিঁড়ির মতো; কেউ ফলে—
কেউ ফলায়—কুহুক ডাক, উপশম; তোমার দোস্তি
প্রণয়ে—পায়চারি করে সাইবার চাঁদ, দূরবিন আত্মা।

সয়ে যায় শান্ত ক্রোধ, ভেতরে ছুটে আসে হামাগুড়ি
বসে থাকি—কুয়াশার মতো; একা—যেতে যে হবে!

.
১৩ আগস্ট ২০২৩

দেদার ঢর

635771073297014161-oriental-plum-tree

বানভাসি ভাদ্রের আগমন
সামান্য কদমের হাসিটা প্রায়
শেষ প্রান্তর, রৌদ্রোজ্জ্বল কান্না
শুধু জমে বরফ হলো শ্রাবণ;
তবু কোথায় প্রশ্ন থেকে যায়
দেহ কম্পন আমরণ গন্ধ!
ভাদ্রের দেখা- এই শুরু বজ্রপাত
খালে বিলে- বনে জঙ্গলে
পথে ঘাটে- ঘরে ফিরে
আর কত কি- এখন আমি
বর্ষার পুজারী অনেক খানি-
যখন তখন নামে দেদার ঢল।

০৫ ভাদ্র ১৪২৯, ২০ আগস্ট ২৩

সুরে সুরে ঋতু

পিয়ানোর রিডগুলি সুরের মূর্ছনায় ভেঙে পড়ে
শিল্পী তাঁর মনোহর সুর ও তালে
প্রকৃতির ঋতু পরিবর্তনের মহিমা গেঁথে যান।

তাঁর সুরের বিস্তারে গাছের ডালে ডালে
সঞ্জীবনী মন্ত্র ঢেলে দেয় শরৎ,
সবুজ পাতায় পাতায় ভরে ওঠে গাছের শাখা প্রশাখা।

সুরের মোহময় আকুতি গাছের পাতা ঝরানোর সুর তোলে
হলুদ, লাল শুকনো পাতা খসে গাছের তলায় জমা হয়,
কিছু বা হাওয়ার ঘূর্ণিতে ঘুরপাক দেয়,
শুকনো ডালপালার ফাঁক দিয়ে রোদের সোনালী আলো
বন বনান্তরে ছড়িয়ে যায়।
মলিন পৃথিবী যেন উত্তাপ পেয়ে হেসে ওঠে।

শিল্পীর সুর উঁচু লয় তুলে আবার নিচু হয়ে আসে।
পিয়ানোর রিড লয় কমিয়ে শীতের আহ্বান করে।

হে আমার সন্ন্যাসীরা…

আজ আপনাদের এই শেষ কথা বলার ছিল যে,
দর্শনের গতি চক্রাকার
রাতের জুঁইফুল, তবু সারাদিন যে-গন্ধের শবদেহ
বয়ে বেড়াতে হবে তার নাম যৌনতা
পা টলমল করছে, অথচ মাথা নীচু
সে হচ্ছে সন্তান

একদিন দৈবাৎ গেলাস উঁচু ক’রে জল খেতে গিয়ে
মানুষের চোখে আকাশ পড়ে গেছে
ওমনি আকাশ-সাঁতলানো হাওয়া নেমে এসে
কিছুটা কচুপাতার চিবুকে, তো কিছুক্ষণ ফুসফুসে
আর বাকি অংশ সাইকেলের গতির ভেতরে।
জানানোই শ্রেষ্ঠ জানা ভেবে মানুষ বাক্য লিখে গেছে
আমাদের সব ভাষা অন্যের, কৃত্রিম
আমাদের যত গল্প নিজের, পুরনো

তাই আগামিকাল যেভাবে শেষ হল,
গতআজও তেমন অস্ত যাবে
কাকের মধ্যে বায়স, পায়রার দেহে কবুতরকে
আবিষ্কার করব আমরা
উঠোনের দুপাশে ফুল আর কুড়ুলে
ভেঙে পড়া দুই গাছ
মাঝখানে যে খর্বকায় মুক্তির দেবতা
তার ডানায় শেষ চুম্বন রাখব
যেভাবে সন্ত্রাসবাদী তার বিস্ফোরকে চুমু খায়

.
[‘তিনটি ডানার পাখি’ কাব্যগ্রন্থ থেকে]

অকবিতা

বাড়ছে বয়স চর্যাপদের গীতে
বনস্পতির ছায়ায় শুকোই ঘাম,
বোতাম ছেড়া শার্ট
ভীষণ আনস্মার্ট
হয়নি শেখা বাঁধতে জুতোর ফিতে,
পারফিউমের দেইনি কোনো দাম।

আমার নেশা কাঁঠালচাঁপার ঘ্রাণে
ঘোড়ার চালেই কিস্তি বাজিমাৎ,
আগুন বনে একা
ফুলকি ছুঁয়ে দেখা
ভস্ম করার খায়েশ প্রবল প্রাণে,
পুড়তে পুড়তে পোড়াই অকস্মাৎ।

কলার জুড়ে ঘামের মলিন দাগ
কলব ভরা অনেক হিসেব ঋণে,
তোমার চোখে রাখা
ইকারুসের পাখা
আমারও চাই ভালবাসার ভাগ,
উড়ালকাতর আলিঙ্গনের দিনে।

.
অকবিতা/২০১৭

এই অনল

images (3)

যত দেখি বাড়ে তৃষ্ণা
নদীর তো নেই কোন সীমানা
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসবো বলে
ঝাঁপ দিয়েছি গহিন জলে।

বসন্তে সেজেছে কার আঙিনা
ফুলের গন্ধে আর ঘুম আসে না
জোস্নার সাথে রাত জাগবো বলে
পথহারা হয়েছি তার কবলে।

জলপরী যখন মেঘকন্যা
উড়ে যেতে তার নেই তো মানা
বৃষ্টিতে একদিন ভিজবো বলে
আটকে থাকি ওই মায়াকাজলে।

হাসছে কে সে অনন্যা
মনে হয় যেন পাহাড়ি ঝর্না
সত্যি সত্যি বুনো হবো বলে
পুড়ছি নিশিদিন এই অনলে।

অনাগত রূপ

এই বৃষ্টির দিনে— শহর ঘুমায়, পাখিদের গাছ
কোনো এক সন্ধ্যায় ডাইনিপনা নাচ এনে
দূরের জানালায় ছড়িয়েছে রামধনু আলো
হলুদনির্জন নেমে যায় দো—ছায়া শাদা তোড়
অথচ তুমি নামছ না, পাতার চিরকুট এখানে
তুড়িয়া বাজায়—এক গোসলে—এক পৃথিবী

খালি পায়ে—নিরক্ষর হাওয়া, মৃত তারাদের
হরবোলা তির্থনাচ এমন—পোড়া সবুজ
আমার গানের হল্লাসুরে কেঁপে ওঠে—ফুল
গীত শিরার গহিনে চেঁচিয়ে যায় চলন্ত ট্রেন
দুপাশ দাঁড়ানো ঝরে পড়ছে অনাগত রূপ—
বহুদূরে ছেড়ে যায় বেড়ালের ডাক, প্রেতনৃত্য;

এত রক্তপাতের পরও

যে কাঁটা গলায় বিঁধার কথা ছিল, তা বিঁধেছে চোখে
কিছুই দেখছি না আর,
কিছুই মনে করতে পারছি না, আদৌ
মানুষ ছিলাম কী না, কোনো জনমে
দাঁড়িয়েছিলাম কী না- কোনো মানুষের পাশে।

উড়ে যাচ্ছে পাথর। উড়ছে রক্ত- বাষ্প হয়ে
তারপরও আমাদের নিষ্ক্রিয় নাসারন্ধ্র, পাচ্ছে না
কোনো গন্ধ, পরখ করতে পারছে না বর্ণের ভাষা।
আর আমাদের পবিত্র(!) জনেরা বসে আছেন
যে পিঁড়িতে,
সে স্থান বড় উঁচু, যেখান থেকে মোটেও
দেখা যায় না সমতল পৃথিবী। তাদের মুখে
এঁটে আছে যে কুলুপ, সেটাও প্রাগৈতিহাসিক,
কালো কোনো দৈত্যের মৃত দাঁতখণ্ড।

আজ আকা‌শে উ‌ড়ে শুভ্র মেঘ

ch

জন্ম‌দি‌নের বার্তা নি‌য়ে মে‌ঘেরা উ‌ড়ে আকা‌শের সীমানা ঘে‌ঁষে
আ‌মি আজ গি‌য়ে‌ছি মানু‌ষের ভা‌‌লোবাসায় ফে‌ঁসে,
ফিসফিস, চু‌পিচু‌পি শু‌নি ব‌সে চুপচাপ
আকা‌শে বা‌জে জন্ম‌দি‌নের দফ ধুপধাপ।

শুভ্র ‌মে‌ঘের মত মন, ম‌নের অ‌লিগ‌লি‌তে মেঘ উ‌ড়ে
কতই না সু‌খের ক‌লি উ‌ঠে আজ বক্ষ ফু‌ঁড়ে;
নেই মন আকা‌শে একটুও কা‌লো মেঘ
ক‌বিতায় রে‌খে দিলাম ছ‌ন্দে তাল ল‌য়ে ম‌নের আ‌বেগ।

মন আকা‌শে নেই নী‌লের ‌ছোঁয়া
আজ মন উ‌ঠো‌নে যেন কাশফু‌লের চারা রোয়া
‌সে চারায় ফুল ফু‌টে, হাওয়া এ‌লে পাপ‌ড়িগু‌লো উ‌ড়ে যায়
‌কে রে, কে এ‌সে ম‌নের তা‌রে সু‌খের বাজনা বাজায়?

ভু‌লে‌নি কেউ আমায়, ভু‌লি‌নি তো ক‌বিতার ছন্দ
ভা‌‌লোবাসায় আচ্ছন্ন আ‌মি, নেই কা‌রো সা‌থে আজ দ্বন্দ্ব;
আ‌মি যেন আকাশ, মন যেন মেঘ
মন উ‌ড়ে স্বাধীনতায় পে‌লেই সুখ হাওয়ার বেগ।

থাকুক স্মৃ‌তিগু‌লো ক‌বিতার ছ‌ন্দে, অক্ষ‌রে অক্ষ‌রে
থাকুক সুখগু‌লো সাজা‌নো মন ঘ‌রে থ‌রে থ‌রে;
থাকুক মন আকাশটা আজ শুভ্র মে‌ঘে ভরা;
আজ নেই মন উ‌ঠো‌নে ‌চৈ‌‌ত্রের খরা।

‌কে যেন ব‌লে যায় এ‌সে কা‌নে কা‌নে
শুভ জন্ম‌দিন……..সু কামনা গা‌নে গা‌নে;
মন আকা‌শে তাই উ‌ড়ে মে‌ঘের কণা
কী যে সুখ ম‌নে আ‌মি ছাড়া কাউ‌কে বল‌বো না।
.
(স‌্যামসাং এস নাইন প্লাস, ভিস্তারায় আকাশ পথে)

আত্মহুতি

dau

আমি চলে যাচ্ছি প্রস্থানের পথ ধরে, নিজেকে নিয়ে যাচ্ছি বাধ্যতামূলক অবসরে…
তুমি থাকো… দিগ্বিজয়ের নেশায় বুদ হয়ে আরো কিছু স্বপ্ন আঁকো…। তুমি একা নও জৌলুস ভরা জলসায় ; তোমাকে রেখে যাচ্ছি ভীড়ের নিভৃতে!

অনেকেই ফিরে গেছে আঁধার বনে, কেউ কেউ বেছে নেয় নির্বাক-ধূসর শূন্যতা ; কেউ কেউ অগ্নিপথ কিংবা খরস্রোতা নদী, জানো নিশ্চয়ই বেচে থাকা মৃত্যুর মতো সহজ নয় ; কষ্টের দুর্গম পারাপারে কখনো কখনো খুইয়ে যায় আজন্ম কালের স্বপ্ন!

তবুও কবিতা রচিত হয়
অনেক পাখিরা তাদের উষ্ণীষ বগলে আগলে রাখে অবহেলিত কবির কবিতা! অনেক রাখাল ক্লান্ত দুপুরে বাঁশির সুরে ফিরিয়ে আনে নির্লিপ্ত বাউলের মন। এমন উদাস যাপনে আরো কিছুকাল অতিবাহিত হোক তোমার নিঃসঙ্গ জীবন!..

আমার প্রস্থান তোমাকে ভেঙে যাওয়া মৌচাকের রানী মৌমাছির মতো উত্তেজিত করুক
আমি চাই.. পৃথিবীর তাবত কবিরা জানুক –
সর্বভুক একটি গ্রাস তছনছ করে দিয়েছে আমাদের যৌথ উদ্যান….
যেই ইতিহাসের মর্মরে গুঞ্জরিত হচ্ছে অজস্র ঘাসফুলের করুণ আত্মহুতি!….

মাথায় ঋণের বোঝা

ni

এই জীবনে করিনি ঋণ তবুও আমি ঋণী,
মাথায় ঋণের বোঝা চেপে দিলেন যিনি।
তিনি আর কেউ নয় স্বয়ং আমার রাষ্ট্র,
দেশে ঋণের বোঝায় এখন আমি পথভ্রষ্ট।

এক নয় দুই নয় পঁচানব্বই হাজার টাকা,
তাইতো দেখি আমার পকেট হচ্ছে ফাঁকা।
এমনিতে চলে না সংসার দুর্মূল্যের বাজার,
সামান্য বেতন আমার মাত্র কয়েক হাজার।

কী করে চলি এখন কোথায়-ই-বা যাই,
কী করি ভেবে মরি পথ খুঁজে না পাই।
স্বল্প বেতন অল্প টাকায় চলি কী করে,
যদি হয় রোগ-ব্যধি যেন যমে টেনে ধরে।

মরি মরি করেও মরণ কেন হয় না,
বলি বলি করেও দুঃখ বলা হয় না।
যার কাছে বলবো সে-ও একজন দুখী,
ঋণের বোঝা মাথায় সবার কেউ নয় সুখী।

নিতাই বাবু
১৭/০৮/২০২৩ইং।

ছোট্ট গাড়িটা

CL_1692278062355

জ্যামের শহরে আটকে আছি,
ক্লান্তিতে চোখের পাতা লেগে আসছে,
অসুখী মেঘের বুকফাটা আর্তনাদ-
বৃষ্টিতে এ শহর সয়লাব হবে।

ছোট্ট গাড়িটা থেমে যায়,
প্রকাণ্ড পেশিবহুল যন্ত্রের চিৎকারে,
গতরাতের ঘুমহীনতা জ্বালাচ্ছে বড্ড বেশি-
চোখের পাতা খোলা রাখা দায়।

সহসা গগনবিদারী চিৎকারে বৃষ্টির আগমন,
জরাজীর্ণ একখানা কাপড়ে,
ব্যর্থ চেষ্টায় অসফল-
শরীরটা ভিজে জবুথবু অবস্থা।

ছোট্ট গাড়িটা দু’কদম চলে,
এখন ঘুমের লেশমাত্র নেই,
জরাজীর্ণ কাপড়ে নিজেকে ঢেকে রেখে-
জ্যামের শহরে মুখোমুখি যানজটে।

অন্ধকার চারপাশে বিষণ্নতা,
আকাশের গর্জনে ভয়ার্ত জনাকয়েক আমরা,
ছোট্ট গাড়িটা থেমে যায়-
বেরসিক যানজটে বৃষ্টির কি আসে।

চার ঘন্টার অসহ্য যন্ত্রণার অবসান,
মেঠোপথ ধরে চলছে গাড়িটা,
দু’পাশের সারি সারি গাছ ভয়ানক দৃষ্টিতে-
ছোট্ট গাড়িতে দোয়ায় মশগুল আমরা।

হালকা বৃষ্টিতে বাতাসকে সরিয়ে,
গন্তব্যে ছুটছে গাড়ি,
জ্যামের শহর থেকে ঢের ভালো-
বৃষ্টিও সুখকর এখানে।

গাড়িটা শেষবারের মতো থামলো,
আত্মীয়ের হাঁক-ডাক,
ভয়ের অবসান শেষে বিজয়ের হাসি-
কত পথ পিছনে ফেলে এসেছি জানিনা।

উত্তর পুরুষ

হামাগুড়ি না দিয়েই যে শিশু হাঁটে সে কতোটা শিশু?
বাবা বলতেন, কালের আগে আগে চলতে শিখো
সবকিছুর মতো কালও নাকি রুপান্তরিত শিলাস্তর!

আমার পাললিক প্রেম মাঝেমধ্যে পথিক হয়
তখন পৌষের চিরকেলে কেবল চাকার শ্লোগান
দাদা বলতেন, সাদ্দামের প্রতিটি আঙুলই এক একটি
স্টেনগান!

আমিও মন্ত্রমুগ্ধের মতোন শুনে যেতাম উত্তর পুরুষ
অতঃপর পুরো মাঠ একাই খেলে গেলো নির্মম বুশ
আমি নতমুখে শাস্তিগুহার কথা ভাবি
অবরোহী হবো নাকি আরোহী হবো.. ভাবতে ভাবতেই
দেখি শেকড় ছাড়াই শিখরে আরোহনের ধ্রুপদী গল্প
মা বলেন, খোকা বাগাড়ম্বর করে হালে পানি পাওয়া
যায় না; মধ্যমপন্থাই উত্তম পন্থা; সবকিছুতেই অল্পস্বল্প!

রঙ বদলানো জীবন

298

জীবন যখন তার অস্তিত্ব ভেঙ্গে
অভেদ্য দুর্গ গড়ার সময় রচনা করেছে
তখনই প্রতারিত হয়েছে।
কেউ হয়েছে প্রিয়জনের দ্বারা;
প্রিয় মানুষের দ্বারা
এমনকি পরিবার পরিজনের দ্বারা।

তবুও জীবন থেমে যাওয়ার কথা নয়
যে মানুষ দ্বারা আপনি অমূল্যায়িত হয়েছেন
তারা কখনও আপনার আপন নয়
সময়ের দূরত্ব আসার সাথে সাথে মানুষ তার রঙ বদলায়।

কেউ অহংকারী হয়
কেও নিষ্ঠুর হয়
কেউ ভুলে যায়
পরগত সময়ের সেই স্মৃতি
তাইতো মানুষ পর হয়
পড়ন্ত বিকেল শেষে রক্ত ঝরায়।

জীবনতো আলকেমিস্ট এর গল্প নয়
এই জীবন এক পৃথিবীর ভ্রমণ ক্ষেত্র
যেখানে সবার সমান আনন্দ
সমান অধিকার।

জীবন নিজের প্রবৃত্তিকে অতিক্রম করে
গুরুত্বপূর্ণ হতে যাওয়া সঞ্চয়
অন্তহীন সময়ের পথ বেয়ে ছুটে চলেছে
আন্দালুশিয়ার পথে পথে
কোন এক বিশ্বস্ত জীবনের খোঁজে
জীবনের এই চারণভূমি
আজ কষ্টের মহাসাগরে ভাসমান।

আমরা এই পৃথিবীর মহাসমুদ্রে
সমুদ্রগামী নাবিক ও ভ্রাম্যমান ফেরিওয়ালা
কেউ প্রকৃত জীবনের খোঁজ করতে করতে
অবশেষে নোঙ্গর ফেলে থিতু হয়।
হয়তো সে জীবনই প্রকৃত জীবনের আলোয় উদ্ভাসিত।