বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

ভীষণ আক্ষেপ

ভুলেই যাই ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছে আমার পিতা
যখন দেখি ঐ রাজাকারের গাড়িতে সগৌরবে উড়ে পতাকা ৷
ভীষন কান্না পায় আমার ধর্ষিতা মা বোনের কথা মনে পরলে
ওদের সম্ভ্রম ঢাকা কাপড় আজ পতাকা হয়ে
উড়ে ওদের গাড়িতে ৷

ভীষণ কষ্ট হয় আমার প্রিয় জন্মভূমির মাটির জন্যে
পবিত্র এ মাটিতে আজও ওদের সৎকারের জায়গা জোটে ৷
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে প্রতি ওয়াক্তে এই ভেবে
আমার প্রিয় স্বদেশের বাতাসে ওরা নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচে ৷

ভীষণ অবাক বিস্ময়ে আমি তাকিয়ে থাকি ওদের পানে
যখন ওরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের অংশীদারীত্ব দাবি করে ৷
আমার ভীষণ হাসি পায় যখন আমাকে ওরা দেয় চারিত্রিক সনদ
যারা কিনা লুটতে চেয়েছিলো আমার বাংলা মসনদ ৷

যখন ভাবি আমার ভাইয়ের রক্তে ওরা হোলি খেলেছে
আমার রক্তে তখন প্রতিশোধের আগুন ফিনকি দিয়ে উঠছে ৷
ভীষণ আক্ষেপ নিয়ে আছি আজও অপেক্ষাতে
একদিন ওদের বিচার হবেই এই বাংলার মাটিতে৷

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ৩

আলস্য ভোগ করতে হলে আপনাকে একটি বিশেষ শ্রেণীর লোক হতে হবে, অথবা আপনার পর্যাপ্ত অর্থ-সম্পদ থাকতে হবে। তা যদি না হন বা না থাকে তাহলে আপনার আলস্যের সুযোগটা ঘেচাং করে কেটে নেয়া হবে।

ধরুন একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক দুনিয়ার যত পিন দরকার তা প্রস্তুত করছে। ধরুন তারা দিনে ৮ ঘণ্টা কাজ করে। এবার আমাদের প্রযুক্তির কল্যাণে এমন একটি উপায় পাওয়া গেল যার মাধ্যমে প্রতিটি লোক দ্বিগুণ পিন উৎপন্ন করতে পারবে সেই একই পরিমাণ সময়ে।

কিন্তু দুনিয়াতে দ্বিগুণ পিনের প্রয়োজন নেই, এবং পিনের দাম এত সস্তা যে এর দাম কমালেও বাড়তি পিন কেউ কিনবে না। এখন সমস্যা হচ্ছে – পিন শ্রমিকরা যদি দিনে ৮ ঘণ্টাই কাজ করে তবে প্রয়োজনের দ্বিগুণ পিন তৈরি হবে। ফলে অর্ধেক পিন তৈরি কারখানার মালিক হবে দেউলিয়া

এখানে এই সমস্যার যে সমাধানটা করা হয় তা হচ্ছে – অর্ধেক শ্রমিক ছাটাই
এই ছাটাইয়ের ফলে অর্ধেক শ্রমিক হচ্ছে বেকার আর কর্মরত বাকি অর্ধেক হচ্ছে অতিকর্ম ভারে ভারাক্রান্ত

এই সমস্যার সবচেয়ে সহজ সমাধান ছিল পিন প্রস্তুত কাজে নিয়োজিত লোকগুলি এখন থেকে ৮ ঘনটার পরিবর্তে ৪ ঘণ্টা কাজ করবে এবং বাকি সব কিছুই আগের মত চলতে থাকবে। এর ফলে সমস্ত শ্রমিকরাই পেতো তাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত আলস্যের স্বাদ। কিন্তু তা হয় না……

আসল ব্যাপার হল দরিদ্র লোকেরা আলস্য ভোগ করুক তা ধনীরা কখনই চায় নি। শ্রমিকদের এই আলস্য ভোগের ভাবনাই তাদের সর্বদা আহত করতো।

উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে একজন শ্রমিক দিনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা কাজ করতো, শিশুদেরও প্রায় তাই করতে হতো। কমসে কম ১২ ঘণ্টা কাজতো করতেই হতো। অন্যের ব্যাপারে নাকগলানো যাদের অভ্যাস (মানবাধিকার কর্মী) তারা যখন খোঁচাতে শুরু করলো এতো দীর্ঘ সময় কাজ করার বিষয়টি নিয়ে, তখন তাদের বলা হল যে- “কাজ বয়স্কদের সুরাপান থেকে বিরত রাখে, আর শিশুদের বিরত রাখে অপকর্ম থেকে।”
আপনার কি মত এই যুক্তি সম্পর্কে?

বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

বড় ক্লান্ত আজকে

স্যার একটা চাকরি হবে ?
আগুনলাগা সূর্যটাকে মাথায় নিয়ে
প্রেমিকাকে দেখানো সেই স্বপ্ন নিয়ে
ছুটে চলি শহরের অফিস পাড়াতে ৷

পরিবার আমার দুই’দিন অনাহারে
আর আমি কর্মের সন্ধানে এশহরে
ঈশ্বর কি সৌভাগ্য দিলে আমাকে?
সারাদিন কাটে অফিসে ঘুরে-ঘুরে
আর রাতটা কাটে ফুটপাতে শুয়ে
এ কেমন জীবন ঈশ্বর তুমি দিলে ?

ওয়াসার পানি তৃষ্ণা মেটাতে পারে
কিন্তু কি স্বান্তনা দিবো ক্ষুধার্ত পেটে?
ঈশ্বর বড় ক্লান্ত হয়ে গেছি আজকে
বড্ড বেমানান আজ আমি এশহরে
তাইতো আছি আমি কর্মহীন পরে ৷

কাগজের সার্টিফিকেট সাথে নিয়ে
কর্ম খালি নাই শব্দ পড়তে-পড়তে
পোড়া চোখ পুরোই ঝলসে গেছে ৷
বড় স্বপ্ন নিয়েই এসেছিলাম শহরে
শুনেছি স্বপ্ন পুরন হয় নাকি এখানে
কিন্তু না এখানে স্বপ্নরা শুধু পোঁড়ে ৷

কাল্পনিক – ৪ (চৌরঙ্গীর দিন)

অনেক স্বপ্নের ভীরে
জলের দামে শূণ্য করেছি যে শৈশব
অর্জিত সাত রাজার ধন দিয়েও তাকে আর ফেরত পাবো না
আজ অামি ফিরে যেতে চাই সেই সরল বিশ্বাসে যেখানে
লালাসা জাগরনহীন হয়ে জেগে থাকে শুধুই তোমার সৌখীন সাম্রাজ্য, যেখানে ভেঙে যেতো তোমার হাসির আড়ালে উর্মি উচ্ছলতা,উড়ে যেত প্রজাপতিরর দল তোমাকে ছুঁয়ে,মেঘের চলার পথ বদল করে তোমাকে সিক্তবস্ত্রে আবৃত করতো।
অনেক প্রাপ্তি কখনো কখনো ঘুনে ধরা সমাজ তৈরী করে। যে চঞ্চল প্রান ছিলো হাতের মুঠোয় তাকে ত্যাগ করে বৈষ্ণবী হয়ে প্রাপ্তির খাতায় অংক তুলেছি, সেই হিসাবের খাতা এখন আর ফিরিয়ে দিতে পারে না ধূমায়িত চায়ের কাপে বেহিসাবি আড্ডার কর্নেডের সুর।
এখন শুধুই গীর্জার কোরাস সংগীত, আজানের সুর আর মন্দিরের মন্দিরার শব্দে কেটে যায় যুগ
আমাদের সেই মৌলিক দিন, আমার সেই যৌগিক দিন, তোমার সেই সরল সঙ্গীত হারিয়েছি বিবর্তনের পথে।
আজও কোন সুখের হিমালয়ে বসে পথ খুঁজে ফিরি
ফেলে আসা সেই সবুজ পৃথিবীর যেখানে
জীবন ছিলো উপভোগ্য, বিবাদ গুলো ছিলো ভালোবাসার মোরকে অার আমরা ছিলাম স্বাধীন অতিথি বলাকা।
চৌরঙ্গীর দিন খুবলে খেয়ে নিয়েছে আমাদের সাজানো দিন, দিয়েছে কল্পনার ধূসর জগৎ কৃষ্ণগহ্বরের মাঝে।
০৮১০২০১৮

অলরাউন্ডার শিক্ষার্থী হতে হলে

অলরাউন্ডার শিক্ষার্থী হতে হলে

শিক্ষাজীবন মানেই হচ্ছে নানান রকম প্রতিযোগিতা এবং পড়াশুনার চাপ। আর তার ওপর পরীক্ষা কাছাকাছি আসলে তো কথাই নেই। প্রজেক্ট শেষ করা, ফাইনাল পেপার তৈরি করা, প্রেজেন্টেশন দেয়া এবং অবশ্যই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া—সবকিছু মিলিয়ে একটা হুলুস্থুল অবস্থা। এর পাশাপাশি যদি চাকরিজনিত জটিলতা থাকে, তবে প্রশান্ত মন নিয়ে থাকাটা বেশ মুশকিল হয়ে যায়। এ সমস্ত চাপজনিত টেনশনে থেকেও মনকে প্রশান্ত রাখার জন্য মেডিটেশনের কোনো জুড়ি নেই।

বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, প্রতিদিনের নিয়মিত মেডিটেশন সব ধরনের মানুষের জন্য, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য দারুন কিছু সুফল বয়ে নিয়ে আসে। শুধু তাই নয়, নানা ধরনের মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে এবং শিক্ষার্থী জীবনটাকে আরো আনন্দপূর্ণ করে তোলে নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা। শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন গবেষণা থেকে বেশ চমকপ্রদ ফলাফল পাওয়া গেছে। সেগুলো হলো :

অঙ্ক ও ইংরেজিতে ভালো করেছে শিক্ষার্থীরা
অঙ্ক ও ইংরেজিতে ভালো করতে পারছিল না ক্যালিফোর্নিয়ার এমন ১৮৯ শিক্ষার্থীর ওপর ২০০৯ সালে একটি গবেষণা চালানো হয়। তিন মাস ধরে প্রতিদিন দুবেলা তাদেরকে মেডিটেশন করতে বলা হয়। ফলাফল চমৎকার। দেখা গেল তিন মাস পর এদের মধ্যে ৭৮ জনই শুধু অঙ্ক আর ইংরেজিই নয়, সব বিষয়েই আগের চেয়ে ভালো করছে। বাকিরাও ভালো করছিল তাদের চেয়ে, যারা এই মেডিটেশন প্রোগ্রামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

মানসিক সমস্যার সমাধান এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি
এটেনসন ডেফিসিট হাইপার-এক্টিভিটি ডিস-অর্ডার হচ্ছে এক ধরনের মানসিক সমস্যা, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ দেখা যায়। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে এত বেশি মাত্রায় সিরিয়াসনেস কাজ করে যে, কোনো একটা বিশেষ কাজে তারা মন দিতে পারে না। ফলাফল হলো শুধুই অস্থিরতা। যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে, তাদের জন্য মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা এবং মনোযোগ বাড়াতে মেডিটেশন খুবই ভালো একটি প্রক্রিয়া। জার্নাল অফ সাইকোলজিতে এ নিয়ে গত বছরে দারুন একটা লেখা ছাপা হয়েছে । মাধ্যমিক স্কুলের কিছু শিক্ষার্থীর ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। সেখানে তাদের তিন মাস প্রতিদিন দুই বেলা মেডিটেশন করতে বলা হয়েছে। তিন মাস পরে দেখা গেল, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা এবং এই মানসিক রোগের উপসর্গ প্রায় ৫০% কমে গেছে। গবেষকরা আরো দেখেছেন, মেডিটেশন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা এবং দক্ষতা বহুগুণে বাড়িয়েছে।

মানসিক চাপ থেকে মুক্তি
মানসিক চাপ অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরই একটা বড় সমস্যা। দেখা যায়, ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও মানসিক চাপের কারণে পরীক্ষায় ভালো করতে পারছে না বা নানারকম শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। ২০০৭ সালে সাউদার্ন ইলিনয়েস ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ৬৪ জন মেডিকেল শিক্ষার্থীর ওপর একটি পরীক্ষা করেন। পরীক্ষাভীতি ছাড়াও নার্ভাসনেস, আত্মবিশ্বাসের অভাব, মনোযোগ কম ইত্যাদি নানারকম সমস্যা এদের ছিল। তিন মাস নিয়মিত দুবেলা মেডিটেশনের পর দেখা গেল, এদের মনোযোগ, সচেতনতা এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়েছে এবং পরীক্ষার সময়, যখন নাকি সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপের মধ্যে একজন শিক্ষার্থী থাকে তখনো তারা বেশ রিল্যাক্সড ছিল এবং আগে এসময় যে-সব শারীরিক সমস্যায় তারা ভুগত, এবার আর তা হয় নি।

আচরণের ইতিবাচক পরিবর্তন
মেডিটেশন যে মস্তিষ্কের কর্মকাঠামোতে পরিবর্তন ঘটায় এটা এখন গবেষণাতেই প্রমাণিত। ২০১০ সালে ইউনিভার্সিটি অব ওরিগনের ৪৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর একটি গবেষণা চালানো হয়। এদের মধ্যে ২২ জনকে বাছাই করা হয় মেডিটেশনের ওপর একটা পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নেয়ার জন্যে। বাকিদেরকে শুধু রিলাক্সেশনের মতো হালকা কিছু প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে ব্রেন ইমেজিং পরীক্ষা করে দেখা যায়, যারা মেডিটেশনের কোর্সে অংশ নিয়েছে তাদের ব্রেনে কিছু দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটেছে। বিশেষ করে ব্রেনের যে অংশ আবেগ এবং আচরণকে প্রভাবিত করে, সে অংশে কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন হয়েছে। যার মানে হলো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরোধপূর্ণ আচরণে না জড়ানো এবং মানসিক চাপ সামলানো তাদের পক্ষে এখন বেশ সহজ। মজার ব্যাপার হলো, মাত্র ১১ ঘণ্টা মেডিটেশন অনুশীলন করেই তাদের মধ্যে এ পরিবর্তন দেখা গেছে। অন্যদিকে যারা কন্ট্রোল গ্রুপে ছিল, তাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো পরিবর্তন দেখা যায় নি।

মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি

ড্রাগ বা মাদকে আসক্ত হওয়ার প্রবণতা তরুণদের মধ্যেই বেশি। এদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ আবার শিক্ষার্থী। দেখা গেছে, যারা নিয়মিত মেডিটেশন করে তারা সাধারণত মাদকাসক্ত হয় না। এলকোহলিজম ট্রিটমেন্ট কোয়ার্টারলি-তে প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায়, শিক্ষার্থী হোক বা প্রাপ্তবয়স্ক—মেডিটেশন করলে তাদের সবার মধ্যেই মাদকাসক্তির প্রবণতা কমেছে, কমেছে অসামাজিক আচরণের প্রবণতা এবং এটা সিগারেট থেকে শুরু করে মদ, গাঁজা, হেরোইন ইত্যাদি যে-কোনো মাদকের ক্ষেত্রেই সমানভাবে কার্যকরী বলে দেখা গেছে। এমনকি প্রচলিত কাউন্সেলিং বা সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম যা করতে পারে নি, শুধু মেডিটেশন করেই তার চেয়ে তিনগুণ বেশি ফল পাওয়া গেছে।

অনুপস্থিতির হার কমায়
২০০৩ সালে গবেষক ভার্নন বার্নেস, লিনেট বাউযা এবং ফ্রাংক ট্রিবার কিশোরদের ওপর মেডিটেশনের প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করেন। ৪৫ জন আফ্রিকান-আমেরিকান হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে ভাগ করা হলো। একগ্রুপ চার মাস ধরে নিয়মিত মেডিটেশন করল। আরেক গ্রুপ কিছুই করল না। গবেষণা শেষে দেখা গেল, যারা মেডিটেশন করেছে তারা ক্লাসে অনুপস্থিত কম ছিল। শিক্ষক বা ক্লাসমেটদের সাথে ভালো আচরণ করেছে এবং সবার সাথে সহজভাবে মিশতে পেরেছে। অন্যদিকে যারা মেডিটেশন করে নি, তাদের মধ্যে অস্থিরতা, আবেগের ভারসাম্য না থাকা, সহপাঠীদের সাথে অসহিষ্ণু বা সহিংস আচরণ, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে আত্মবিধ্বংসী আচরণও দেখা গিয়েছিল।

সুখানুভূতির অনুরণন এবং আত্মমর্যাদাবোধ জাগিয়ে তোলা
মেডিটেশন একজন মানুষের মধ্যে ‘আমি সুখী এবং পরিতৃপ্ত’ এরকম একটা অনুভূতি সৃষ্টি করে। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের একদল গবেষক ৬০ জন ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর ওপর একটি গবেষণা করেন। চার মাস নিয়মিত মেডিটেশন করার পর দেখা গেল, আগের চেয়ে তাদের মধ্যে ইতিবাচক আবেগ বেড়েছে, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি এবং মমত্ববোধ বেড়েছে, আত্মমর্যাদাবোধ এবং মানসিক পরিপক্কতা বেড়েছে।

দেহ ও হার্টের সুস্থতা
মেডিটেশন শিক্ষার্থীদের মনের পাশাপাশি দেহের জন্যও বেশ উপকারী। আমেরিকান ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা রিপোর্টে দেখা যায়, প্রতিদিন মেডিটেশন করলে ব্লাড প্রেসার, দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতা বেশ কমে যায়। তেমন কোনো বাছবিচার না করে এ গবেষণাটির জন্যে মোট ২৯৮ জন শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়। এদের কেউ কেউ মেডিটেশন করত, কেউ কেউ করত না। কেউ আবার ছিল উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে এমন ঝুঁকির সম্মুখীন। তিন মাস পর এদের ব্লাড প্রেসার মাপা হলো, দেখা হলো তাদের মানসিক এবং আবেগের অবস্থা। দেখা গেল, বিশেষত উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকা ছাত্রদের এই ঝুঁকি কমে গেছে প্রায় ৫২%।

বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি
ছাত্রজীবনে প্রায় সবাই বেশ চিন্তাগ্রস্ত থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, একজন শিক্ষার্থী যে সমস্ত চাপ, দুশ্চিন্তা এবং বিষণ্ণতায় ভোগে—তা দূর করার জন্য মেডিটেশন হলো সবচেয়ে ভালো সমধান। চার্লস ড্রিউ ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে পরিচালিত গবেষণায় দেখা যায়, যে শিক্ষার্থীরা মেডিটেশন করেছে তাদের মধ্যে বিষণ্নতার উপসর্গগুলো অনেক কমে গেছে। কন্ট্রোল গ্রুপের তুলনায় ৪৮% কম। এমনকি এদের কেউ কেউ ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের রোগী পর্যন্ত ছিল।

বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি
মস্তিষ্ককে শাণিত করার এক চমৎকার মাধ্যম হচ্ছে মেডিটেশন। এজন্যেই বলা হয় নিয়মিত মেডিটেশন করলে বুদ্ধিমত্তা বাড়ে। মহাঋষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মেডিটেশন করে হাইস্কুলের স্টুডেন্টদের সৃজনশীলতা এবং বুদ্ধিমত্তা বেড়েছে। বেড়েছে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা। এমনকি বাস্তব বুদ্ধি আইকিউও বেড়েছে মেডিটেশন অনুশীলনের ফলে।

( কোয়ান্টাম আর্টিকেল থেকে- দাউদুল ইসলাম, কবি ও প্রাবন্ধিক )

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ২

আগেই বলা হয়েছে –

কাজ দুই প্রকার।
মোটা দাগে প্রথমটি হচ্ছে – পৃথিবীর উপরিভাগে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনই হল কাজ।
আর দ্বিতীয়টি হল – অপরকে প্রথম কাজটি করতে বলা

উপরোক্ত দ্বিতীয় কাজটি যারা করেন তাদের পরিধি বিস্তর। শুধুমাত্র যারা প্রথম কাজ করার জন্য আদেশ প্রদান করেন তারাই নন, বরং কি আদেশ প্রদান করা উচিত তার পরামর্শ ও উপদেশ যারা দেন তারাও দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত।

এই সমস্ত উপদেষ্টার পারিশ্রমিকের পরিমাণ কি হতে পারে তার আলোচনা করা অবান্তর। আমাদের মত দেশের প্রেক্ষিতে তাদের এই উপদেশের জন্য ব্যয় হচ্ছে অন্য যেকোনো ব্যয়ের তুলনায় আকাশ ছোঁয়া। আমাদের রাস্তা-ঘাট, সেতু ইত্যাদি তৈরির ব্যয়ের সিংহ ভাগ যায় উপদেষ্টাদের পকেটে সেটা সবাই জানেন।

এই উপদেষ্টাদের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আমাদের মনে রাখতে হবে। বৈশিষ্ট্যটি হচ্ছে- “স্বাভাবিক ভাবে একযোগে পরস্পর বিরোধী দুটি উপদেশ প্রদান করা; এর নামই রাজনীতি।” আর রাজনীতি নিয়ে কোন কথা আমি কখনো বলি না বলে চুপ রইলাম। বাকিটা আপনারা বুঝে নেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বলতে হয় এই ধরনের কাজের দক্ষতা এখন শুধুই মানুষকে প্রভাবিত করার উপযোগী বক্তৃতা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ

অন্য দিকে আমাদের সরল সাধারণ গ্রামের দিকে তাকাই। গ্রামে এক শ্রেণীর লোক রয়েছেন যাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশী ভূসম্পত্তি রয়েছে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অন্য আরেক শ্রেণীর প্রয়োজনের জমি টুকুও নেই।

এই সম্পদশালী ভূস্বামীরা কি অলস?
না, তারা কখনোই অলস নন, কারণ তাদের পরিশ্রমটুকু করে দিচ্ছে যাদের ভূসম্পত্তি নেই তারা। বাস্তবিকপক্ষে, এই শ্রেণীর লোকদের আরামদায়ক আলস্যের বাসনা থেকেই ঐতিহাসিকভাবে কাজের প্রশংসা-শ্রমের মর্যাদার জন্ম হয়েছে। আবার এই শ্রেণীর লোকেরই একটা জিনিস কখনোই কামনা করে না, তা হল “তাদের উদাহরণ অন্যেরা অনুসরণ করুক”

বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

কৃতজ্ঞ হে ঈশ্বর

তীব্র ব্যথায় রাত গভীর হলে বুঝেছি মৃত্যু হয়েছে আজ আটদিন।
তোমার মৃত্যুর কিঞ্চিত আগে।
রিকসার পা দানিতে পা রেখেছ যেদিন
সেদিনই বলেছি মৃত্যু গ্রহীতার মতন।
সুফি গানের রিদমের সাথে ওঠানামা করে আবেগের সুতো।
রোদের ভেতর রোদ আকাশের ভেতর দড়ি পাকানো তুলো –
উপুর হয়েছে আমাদের কবরে।
আমরা শুধু বলেছি সুরা মনে করে
আর কোনো অকৃতজ্ঞতা নেই ঈশ্বর হে –
অনন্ত জীবনে আর একবার ক্ষমা করে পাঠাও
অপার্থিব প্রেম পাঁজরে –

Joba_1_ (12)

আলস্যের জয়গান – ১

“শয়তান এখনো দুষ্কর্ম সাধনের জন্য অলস হাত খুজে পায়।”
যেমন এখন এই মুহূর্তে খুঁজে পেয়েছে আমার হাতকে। এখন লিখবো আলস্যের কথা, আলস্যের পক্ষের কথা।

একজন ব্যাক্তির কথা ভাবুন যার বাঁচার মত যথেষ্ট সঙ্গতি রয়েছে। তবুও তিনি আলসেমী না করে প্রতিদিন কিছু কাজ করতে চান, যেমন স্কুল শিক্ষক, বা অফিস সহকারী ইত্যাদি। একটু চিন্তা করলেই দেখতে পারবেন তিনি কিন্তু একজনের মুখের ভাত কেড়ে নিচ্ছেন। অতএব তিনি একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তার উচিত ছিলো কোনো প্রকার কাজ না করে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আলস্যকে উপভোগ করা। এতে করে অন্য আরেক জন, যার খাদ্যের প্রয়োজন তার কর্মসংস্থান সহজ হতো, সেই সাথে সরকারেরও কর্ম সংস্থান নিয়ে এতো মাথা ব্যথা থাকতো না।

উপরের অংশটুকু থেকে এতোটুকু ঠিক ঠিক বুঝা যায় যে- “একজন ব্যাক্তি যতটুকু আয় করেন, তার সেই আয় দ্বারা তিনি ঠিক ততটুকুই অপরের মুখের আহার্য কেড়ে নেন।

কিন্তু!
হেঁ কিন্তু, আপনি যতটুকু আয় করলেন ততটুকু যদি ব্যয় করে ফেলেন তাহলে আপনি দুষ্টু প্রকৃতির লোক নন। কারণ আপনার ব্যয় যতটুকু ঠিক ততটুকুই অন্য অপর আরেক জনের আয়।

তাই এই আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে “যে ব্যক্তি আয় করে সে দুষ্টু প্রকৃতির নয়, বরং যিনি আয় করে সেই আয় সঞ্চয় করে রাখে, অর্থাৎ ব্যয় করেন না তিনিই দুষ্ট প্রকৃতির লোক।”

অর্থাৎ আপনি যখন সঞ্চয়ের জন্য আয় করছেন তখনই অন্য আরেক জনের মুখের খাবার কেড়ে নিচ্ছেন। তাই কতটুকু কাজ করবেন ভেবে চিন্তে ঠিক করুন।

এখানে বলা দরকার কাজ কি? এবং কাজ কত প্রকার?

কাজ দুই প্রকার।
মোটা দাগে প্রথমটি হচ্ছে – পৃথিবীর উপরিভাগে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনই হলো কাজ।
আর দ্বিতীয়টি হলো – অপরকে প্রথম কাজটি করতে বলা

প্রথম কাজটি কষ্টকর ও বিরক্তিকর, আর তার জন্য প্রারিশ্রমিকও অনেক কম পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় কাজটি অত্যান্ত মজাদার এবং এর জন্য বিরাট প্রারিশ্রমিক পাওয়া যায়, যদিও এর জন্য কোনো পরিশ্রম করতে হয়না বললেই চলে।

বি.দ্র. : “বার্ট্রান্ড রাসেল”-এর “আলস্যের জয়গান” নামক বই এর প্রথম অধ্যায়ের কিছু অংশবিশেষ আমার মত করে উপস্থাপন করলাম।

আমি প্রতিবাদ

আমাকে চেনা যায়?
আমি কে ?
আমি হলাম প্রতিবাদ !

কি ভাবছো ?
৫৬৯৭৭ বর্গমাইলের কাঁটাতারে বন্দী আমি ?
না !!!

আমি হলাম প্রতিবাদ
ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিতে আমার বাস ৷
আমি গর্জে উঠি সেই সময়
যখন সমাজ ব্যাবস্থা হয় অবিচার ময় ,
আমাকে চেনা যায় ?

আমি কিন্তু সংঘাতময় নই
তবুও
অন্যায় অবিচারে প্রতিবাদী হই ৷
আমি প্রতিবাদ
মুক্তিকামীর সত্তায় আমার বাস
অন্যায়ে ঘুরে উঠাই আমার কাজ ৷

আমাকে চেনা যায় ?
ফিরে যাও স্মৃতির পাতায়
আমি ছিলাম, আছি, থাকবো মুক্তিকামীর সত্তায় ৷

খাওন (একটি ভিন্নধর্মী উপলব্ধি)

মানুষের অসাধারণ কিছু গুণাবলির মধ্যে খাবার খাওয়া একটি গুন। খাবার খাওয়ার সময় মুখের অঙ্গ ভঙ্গিগুলো আমি খুব তীক্ষ্ণ ভাবে অবলোকন করি। কি যতন করে যে তার খাবারগুলো মানুষ চর্বন করে তা সত্যিই বিস্ময়কর। প্রথম যখন প্লেটে কেউ ভাত নেয় তখনই দেখবেন মুখের অবয়বটা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়। তরকারি কয়েক প্রকারের থাকলে সবার আগে দেখে নেয় তার পছন্দের কোনটা। ওটা একটু পরে খাওয়া হবে। শুরু হয় চামিচ দিয়ে যেকোন এক ধরণের তরকারি নেওয়া থেকে। খাবার চর্বনের সময় ঠোঁটের ভাঁজের পরিবর্তন, গালে খাবার আটকে যাওয়ার পর জিহবা দিয়ে ভিতর থেকে এনে তা আবার চিবানো এবং কোন বাড়তি কিছু তরকারির সাথে যোগ করে খাওয়ার স্বাদ বাড়ানো যেন এক অসাধারণ সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

লেবু নেওয়ার সময় দেখবেন মুখের পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য। যখন লেবু চিপে রস বের করে ভাতে মাখানোর সময় হয় তখন ঠোঁটের আকুতিই বলে দেবে এখানে টকের উপস্থিতি আছে বলেই তার ঠোঁটের ভাঁজটা এমন ! তারপর ঝাল বা কাঁচা মরিচ খাওয়ার সময় ঠোঁট একটু চোখা করে ভেতরের দিকে বাতাস টান দেওয়াও আলাদা প্রশান্তি আছে।

ডাল বা তরল কিছু দিয়ে খাবার যখন শেষ করার মুহূর্ত আসে তখন যেন আলাদা আনন্দ । পুরো প্লেট থেকে রস নিয়ে তা চেটে খাওয়া ! তারপর একটু পানি ও শান্তির ঢেকুর ! আমার মনে হয় মানুষ যতগুলো সময় একেবারে পবিত্র হয়ে ওঠে তারমধ্যে খাবার খাওয়ার সময়টা অন্যতম। এই অন্যতম পবিত্র হয়ে ওঠার সময়টিকে উদযাপন করুন এবং প্রতিটি খাবারই স্বাদ নিয়ে গ্রহন করুন দেখবেন মনের প্রশান্তিতে আলাদা কিছু যোগ হয়েছে।

অথবা যখন আপনার কোন খাবারই মন ভরাতে পারেনা তখন একজন সুবিধা বঞ্চিত মানুষের খাওয়ার আকুতির কথা ভাবুন দেখবেন খাবার ভালো লাগছে এবং আপনি আর খাবার অপচয়ও করছেন না। শিক্ষার জায়গা অনেক এবং আনন্দেরও। আসুন প্রতিটি শিক্ষা নেই আনন্দের কাছাকাছি গিয়ে।

সাজ ফ্যাশনে ছেলেদেরও চাই সচেতনতা

সাজ ফ্যাশনে ছেলেদেরও চাই সচেতনতা

আবহাওয়া পরিবর্তনে সবারই চায় সচেতনতা। এখনকার ছেলেরাও কিন্তু কম সৌন্দর্য সচেতন নয়। তারাও চোখ কান খোলা রাখছে ফ্যাশন দুনিয়ায়। কোন সময় কিভাবে নিজের যত্ন নিতে হবে সে বিষয়ে ধারনা থাকতে হবে। আজকে ছেলেদের রুপ সচেতনতা নিয়েই আয়োজন ।

রোদ, ধুলাবালি, ঘাম সব মিলিয়ে তাদের ত্বক রুক্ষ ও মলিন হয়ে পড়লে, দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। ব্রণ তো দেখা দেয়ই। তৈলাক্ত ও ঘামে ভেজা ত্বকে ধুলাবালি মিশে লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে এমনটি ঘটে। ব্রণ হলে প্রতিদিন শেভ না করে একদিন পর পর করাই ভালো। শেভ করার পাঁচ-দশ মিনিট আগে কোনো ভালো ময়শ্চারাইজার লাগানো যেতে পারে। শেভের আগে রেজারটি অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে উষ্ণ গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখা জরুরি। শেভিংয়ের সময় রেজার নিচের দিকে টানতে হবে। অনেকেরই শেভ করার পর ত্বকে র‌্যাশ হয়। সে জন্য হালকা কোনো শেভিং ক্রিম বা ত্বকবান্ধব জেল নয়তো ফোম ব্যবহার করুন। র‌্যাশ হওয়ার প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের আফটার শেভ লোশন এড়িয়ে চলা ভালো। শেভিংয়ের পরে কোনো অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বা অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগানো জরুরি।

ব্রণ সমস্যায় করণীয়

ব্রণ সমস্যার জন্য ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে হারবাল ফেসিয়াল করতে পারেন। বাসায়ও সে রকম প্যাক তৈরি করা যায়। ব্রণের উপরে দারচিনি পেস্ট করে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ময়লা জমে ব্রণ হয়, তাই রুটিনমাফিক ত্বক পরিষ্কার করুন। বারবার পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে মুছে নিন। ব্রণে নখ লাগানো ঠিক নয়। এতে দাগ পড়তে পারে। বেশি ব্রণ এবং সে কারণে ব্যথা বা অস্বস্তি তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রচুর পরিমাণ পানি, মৌসুমি ফলমূল ও শাক-সবজি খেলে ব্রণ হয় না। বাইরে থেকে ফিরে বেশি করে পানির ঝাপটা এবং ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। চা কম খাবেন। রাত জাগবেন না।

সানবার্নে করণীয়

গরমে ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ ও সানবার্ন হয়ে থাকে। ছেলেদের হাতে ও মুখে সানবার্ন বেশি দেখা যায়। তাই বাইরে যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন ত্বকে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিমের এসপিএফ ৪০-৫০ হওয়া দরকার। প্রতিদিনের ব্যবহার্য কমপ্যাক্ট পাউডারটিও যেন অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম লাগানোর ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে আবার লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা পর সানস্ক্রিন লোশনের কার্যকারিতা থাকে না। বিকল্প হিসেবে টকদই, গোলাপজল ও মুলতানি মাটি দিয়ে প্যাক তৈরি করে প্রতিদিন ত্বকে লাগালে দাগ কমে যাবে। আটা, টমেটো ও কাঁচা হলুদের রস দিয়েও প্যাক বানানো যায়। ১৫ মিনিট পর গোলাপজল দিয়ে মুছে ফেলুন। নিয়মিত ফেসিয়াল করুন।

ধরন বুঝে ত্বকের যত্ন

যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা ঘুমের আগে ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে স্ক্রিন টোনার লাগাতে পারেন। লেবু, শসা দিয়ে প্যাক বানানো যায়। এতে অয়েলি ভাব কমবে, ফ্রেশও লাগবে। তবে দুধ বা দুধের সর এ ধরনের ত্বকে লাগানো ঠিক নয়। দুধের বদলে তিলের পেস্ট লাগাতে পারেন। শুষ্ক ত্বকে এটি দেয়া যাবে না। এতে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যায়। দুধ বা অলিভ অয়েল দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। ময়শ্চারাইজিং ক্রিম দিতে পারেন ঘুমের আগে। মিশ্র ত্বকে মধু, পেঁপে দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এ ছাড়া ফলের রস ত্বক কোমল করার সঙ্গে সঙ্গে রোদে পোড়া ভাব দূর করে। ঘরে বসে যত্নের পাশাপাশি ত্বকের ধরন বুঝে পার্লার থেকে নেয়া যেতে পারে ডিপ ক্লিনজিং, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, হার্বাল, স্পেশাল হার্বাল, অ্যালোভেরা, ডায়মন্ড ও ফ্লাওয়ার ফেসিয়াল। ভালো মানের পার্লারে ফেসিয়াল করুন। তবে ত্বকে বেশি ঘষামাজা করবেন না।

ভুলে গেছি মানুষ ছিলাম

কবে যে মানুষ ছিলাম বেমালুম ভুলে গেছি
যান্ত্রিক সমাজে দিনেরাতে ভোল পাল্টেছি
কখনো সাধু বেশ , কখনো বা সন্যাসী
তবুও মনুষ্যত্বকে ঠিকই বিকিয়ে দিয়েছি ৷

কবে যে মানুষ ছিলাম বেমালুম ভুলে গেছি
মানুষের মুখোশে শুধু পশুত্বকেই লুকিয়ে গেছি
চোখ বুজে রক্তের হোলি খেলা দেখেছি
আর
কানে তুলো দিয়ে অসহায়ের আর্তনাদ শুনেছি ৷

কবে যে মানুষ ছিলাম বেমালুম ভুলে গেছি
ইট, পাথরের শহরে মানবতাকে হারিয়ে ফেলেছি
নর্দমায় মানুষ কুকুর একসাথে খেতে দেখেছি
তাতে কি ?
আমি তো পোলাও কোর্মায় ভুঁড়ি ভোজ করেছি ৷

কবে যে মানুষ ছিলাম বেমালুম ভুলে গেছি
নারী দেহের দিকে আমার লোভাতুর দৃষ্টি
সুযোগ পেলেই মুখোশের বাহিরে চলে আসি
একথা জানে শুধু সে, আমি আর অন্তর্যামী ৷

কবে যে মানুষ ছিলাম বেমালুম ভুলে গেছি
মুখোশের মিছিলে আজ মনুষ্যত্ব ছদ্মবেশী ৷

ভালবাসা

সুপ্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আস সালামু আলাইকুম, কে কেমন আছেন? স্নিগ্ধ শরতের বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে আনন্দ সুখের ভেলা। আপনজনকে সাথে নিয়ে শুনছেন অদৃশ্য কোন সেতারে মধুর সুর, তাই না? এইতো জীবন পথের ভেলা, এই ভেলায় চরে পাড়ি দিতে হবে দূরের সেই চেনা জগতের অচেনা ভুবনে।
আমারও ভীষণ ভাল লাগছে পরিবারের সাথে এই দিনগুলি কাটাতে। ঢাকা শহরের রাস্তা ঘাটের এই অসহনীয় জ্যাম ডিঙ্গিয়ে সারা দিনের ক্লান্তির পরে বাড়ি ফিরে এসেই স্ত্রী সন্তানের মুখ দেখে সব ক্লান্তি ভুলে বলি আমি তোমাদের কতো ভালবাসি, সারা ইনের ক্লান্তি মুছে গেল। ছট মেয়ে এক গ্লাস পানি এনে দিল তারপরে গিন্নি কিছু হালকা নাস্তা আর তার সাথে এক কাপ গরম চা, আহ! প্রাণটা জুড়িয়ে গেল। আপনারা কে কিভাবে দিন কাটান তাই নিয়ে আসুন আড্ডা দেই।
সু স্বাগতম সবাইকে, যারা বিগত ঈদে বাড়ি গিয়েছিলেন আপন জনের সাথে মিলিত হতে। আপন জন, আত্মীয় স্বজন, পারা পড়শি, বন্ধু বান্ধব, হিতাকাঙ্ক্ষী শুভাকাঙ্ক্ষী সবার সাথে দেখা করেছেন? একান্ত জনকে কি বলেছেন আমি তোমাকে ভালবাসি কিংবা I love you? কিংবা আমি তোমাকে/তোকে কত আদর করি, কত মায়া তোর জন্য, সব সময় তোর কথা আমার মনে হয় কিংবা মা তোমার মত মা এই জগতে আর নেই, তুমি সত্যিই খুব ভাল মা, আমি তোমাকে কতো ভালবাসি মা। মনে করতে পারেন স্ত্রী কিংবা স্বামীকে জীবনে কয়বার বলেছেন আমি তোমাকে ভালবাসি? যদি বলে থাকেন তাহলে ভাল কথা। আর যদি নিতান্ত আনন্দের আতিশয্যে বা ভুলে বা লজ্জায় বা শুধুমাত্র তাচ্ছিল্য করে না বলে থাকেন তাহলে আজই ফোন করে বা নিতান্ত একটা sms করে বলে দিন। “আমি তোমাকে ভালবাসি”। আমাদের জীবন পথের জন্য অন্যান্য যে সব কথা নিত্য বলে থাকি সে তুলনায় খুবই ছোট্ট একটা কথা কিন্তু এর আবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই তিন শব্দের কথা কয়টি বদলে দিতে পারে আপনার আমার সাথে এই পৃথিবীর সম্পর্কের ধরন এবং গতি প্রকৃতি।
ইংরেজি ভাষায় যেমন তিনটি যাদু শব্দ রয়েছে প্লিজ, এক্সকিউজ মি এবং সরি তেমনি এই বাক্যটিতে ও একটু যাদু রয়েছে। ইংরেজরা ওই তিনটি জাদু খুবই সম্মানের সাথে মেনে চলে আমি নিজ চোখে দেখেছি। আমরাও কি পারিনা তেমনি করে এই সামান্য কয়টি শব্দ প্রিয়জনকে বলতে। আমি আমার স্ত্রী সন্তানদের প্রায় প্রতিদিনই এই কথাটি বলি। এমনকি জেনে অবাক হবেন যে আমি সন্তানদের সামনেও স্ত্রীকে এই কথাটা বলি এমনকি আমার নাতি রিজভান রিহানকেও শিখিয়েছি I love you, তোমাকে ভাল বাসি। যেখানে স্বার্থের কোন বালাই নেই যেখানে ভালবাসা অর্থের মাপে মাপা যায় না সেখানে এই কয়েকটি শব্দের মূল্য অনেক অনেক অনেক। এই সুখের স্মৃতি ধরে রাখতে আমাদের ভালবাসা গুলি বিলিয়ে দেই চারিদিকে ছোট বড়, চেনা অচেনা, জানা অজানা সবার জন্য।

আবার নতুন করে শুরু করি বিদ্বেষ, হিংসা, মোহ আর আক্রোশ থেকে বেরিয়ে আসার নতুন এক প্রযুক্তি যার নাম ভালবাসার যাদু।
আসুন আজ থেকে আমরা আবার নতুন করে ভালবাসার প্রকল্প হাতে নিই। আমাদের ভালবাসার নীরব আর অদৃশ্য সৌধ রেখে যাই আমাদের উত্তর পুরুষের জন্য, শূন্যতার অভিশাপ মুছে রেখে যাই আগামীর জন্য। আগামী যেন দাঁড়াতে পারে তার নিজ মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে। আমাদের জীবনের ব্রত হোক সবাইকে হাসিমুখে ভালবাসা, এবং তাকে জানতে দেয়া যে, আমি তোমাকে ভালবাসি।
ধন্যবাদ সবাইকে

একটা পৃথিবী একটাই মানচিত্র

উত্তাল আজ এই পৃথিবীর মানচিত্র;
চারিদিকে আজ যুদ্ধ যুদ্ধ আর যুদ্ধ,
বুঝিনা আমরা এ কেমনতর সভ্য ?

শুনেছি বিবাদে জড়ায় নাকি মূর্খ;
তবেকি মানুষ আজ সুশিক্ষিত মূর্খ
নিজেই নিজেকে করে দেখো প্রশ্ন।

ক্লান্ত চোখে দেখি বিশ্বজয়ের স্বপ্ন
সে স্বপ্নে ঢুঁকে গেছে গভীর ষড়যন্ত্র
হে ঈশ্বর;
সফল যেনো না হয় সেই ষড়যন্ত্র।

একটা পৃথিবী চাই; চাই একটাই মানচিত্র
কাঁটাতার আর জাতিভেদে হবো অভিন্ন,
সকল তন্ত্র ভুলে হবে শুধুই মানবতন্ত্র
এই হোক আমাদের বাঁচার মূলমন্ত্র।