বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

অজানা সুর

অজানা সুর

রূপ, তুমি যখন চুপিচুপি এসে আমার গালে
আলতো আঙুল দিয়ে অশ্রুকণা কিছু মুছে দাও
বেশ ভালো লাগে, এ পাড়ায় কিছু সাধু মানুষ
মনের কথা বললে চোখ ভিজিয়ে লাল ফুল করে
আর কিছু বৈরাগিণী অঝোরে দুকূল কান্নায় ভরে
তাই আমিও মিষ্টি কথা না বলে মধুরে শব্দ রাখি।

অজানা পাখিদের সাথে একদিন উড়ে এস রূপ
দুজনে মিলে সমুদ্রের পাড় ধরে হেঁটে হেঁটে যাব,
ভাসমান বোটের ’পরে মানুষদের রুমাল দেখাব,
তারপর চোখে চোখ রেখে নি:শব্দ ভাষা বলবো।

শব্দনীড় ব্লগে কিভাবে আপনার নতুন প্রকাশনা যুক্ত করবেন

শব্দনীড় বন্ধুরা সবাই ভালো এবং অনেক ভালো আছেন আশা করি। আজকের এই পোস্ট নতুন পুরাতন সকল বন্ধুদের জন্য। যারা অতিথি পাঠক হয়ে প্রায় প্রতিদিন শব্দনীড়কে দেখছেন অথবা পড়ছেন, নিজে লিখবেন কিনা ভাবছেন; নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশন করবেন কিনা দ্বিধাগ্রস্ত আছেন; তাদের জন্য এই পোস্ট বেশ সহায়ক হবে মনে করি। ধরে নিই আপনি ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের ফিচার সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন। তারপরও আমি চেষ্টা করছি কিছু নিয়মাবলী শেয়ার করতে, যাতে পোষ্ট লিখতে এবং পোস্টে ছবি যোগ করতে আপনার কোন সমস্যা না হয়। এবার মনযোগ দিয়ে দেখুন :

প্রথমত : শব্দনীড় এর রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করে আপনার নিবন্ধন সম্পন্ন করুন।

উপরের ছবি থেকে ড্যাসবোর্ড বাটনে ক্লিক করে নিয়ন্ত্রন কক্ষ ধরুন।

এবার ড্যাসবোর্ড এর বাম দিকের মেনুগুলো থেকে উপরে প্রকাশনাসমুহ ঘরে নতুন আরেকটি মেনুতে ক্লিক করলে নীচের ছবির মতো খালি পেজ আসবে। ছবিতে অবশ্য ইংরেজী দেখছেন; আপনি পাবেন বাংলায়। মনে সাহস রাখুন। :)

অধ্যায় দুই :

অধ্যায় তিন :

অধ্যায় চার :

অধ্যায় পাঁচ : পোস্টে কিভাবে ছবি যোগ করবেন।

অধ্যায় ছয় : নতুন মিডিয়া যুক্তকরণ এর মাধ্যমে পোস্টে ছবি যোগ করতে পারবেন। অবশ্যি ছবিটি যেন প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

অধ্যায় সাত : এবার ঝটপট আপনি যে বিষয়ে পোস্ট তৈরী করেছেন; ক্যাটাগরি থেকে বিভাগ নির্ধারন করে দিন। মনে রাখবেন বিষয়বস্তুর সাথে যেন সংশ্লিষ্ট হয়। একাধিক বিভাগ বা মূল বিভাগের উপ-বিভাগ নির্বাচন না করাই ভালো।

অধ্যায় আট : লেখা শেষ হলে আপনার যত্নে পোষ্ট কেমন দেখাবে তার জন্য প্রাকদর্শন বাটনে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন। এটা জরুরী। সন্তুষ্ট হলে দেরি না করে এবার প্রকাশ বাটনে ক্লিক করুন। ব্যাস। চলে আসুন ব্লগের প্রথম পাতায়।

যাদের পোস্ট সরাসরি প্রকাশ করার অনুমতি নেই তাঁরা প্রকাশ বাটনের জায়গায় সাবমিট ফর রিভিউ বাটনে ক্লিক দিয়ে সেভ করে রেখে দিন। ব্লগ সঞ্চালক আপনার পোস্ট প্রকাশ করে দেবেন। এই সুযোগে পুরোনো বন্ধুদের বলবো শব্দনীড় প্রথম পাতায় নিজের একটি লেখা থাকলে আপনার সদ্য লেখাটি খসড়া করে রাখুন।

অধ্যায় নয় : আপনার পোস্টের দ্বিতীয় কলামে উপরের ছবি সদৃশ পাবেন। ফেসবুক লোগোতে ক্লিক করে ডাইরেক্ট একটি শেয়ার দিয়ে দিন। আপনার লেখাটি ফেসবুক বন্ধুরাও জানলো আবার শব্দনীড়ও পরিচিতি পেলো। মর্যাদা বাড়লো।

অধ্যায় দশ : হোম পেজ দেখুন। ফেসবুকের শব্দনীড় লাইক পেজ একটা লাইক দিয়ে দিন। ভীষণ ব্যস্ততায় ব্লগে আসার সময় না পেলেও ফেসবুকে থেকে শব্দনীড় এর প্রত্যেকটি পোস্ট প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে কি কি পোস্ট প্রকাশিত হলো তার হাইলাইট স্পট পেয়ে যাবেন। শব্দনীড় নামটি ছড়িয়ে দিন প্রিয়জন বন্ধুদের কাছাকাছি। শব্দনীড় আপনার আমার ও আমাদের সকলের। অনেক কথা হলো আর নয়। ভালো থাকুন। শব্দনীড় এর সাথে থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ।

৪ঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস

স্কুল জীবনে বইয়ের পাতায় স্ট্যাচু অব লিবার্টির ছবি দেখেছিলাম। কখনও ভাবিনি কোন একদিন স্ট্যাচু অব লিবার্টির সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারবো। ২০০১ সালে যেদিন আমেরিকার মাটিতে পা রাখলাম, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমান জে এফ কে বিমানবন্দরের মাথার উপর চক্কর খাচ্ছিলো, দেশ ছেড়ে এসেছি, কান্নাকাটিতে দুই চোখের পাতা ভারী, দুই দিনের প্লেন জার্নিতে দেহ অবসন্ন, সব ভুলে মোটা কাঁচের জানালায় মাথা রেখে খুঁজছিলাম স্ট্যাচু অব লিবার্টি।

বাংলাদেশের মেয়ে আমি, মহান মুক্তিযুদ্ধ আমার অহঙ্কার, পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকের সামরিক শাসনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। রক্তে আমার মুক্তির আনন্দ, পরাধীনতার শিকল ভাঙ্গার গান, আমি তো মুক্তির মশালধারী মূর্তিকে দেখতেই চাইবো। স্বদেশের জন্য কান্না, জার্নির ক্লান্তি ছাপিয়ে সেদিন স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখার তীব্র আকুলতা জেগেছিল, উঁচু আকাশ থেকে দিগন্ত বিস্তৃত নিউইয়র্কের মাটিতে মুক্তির মশালধারী নারীকে ঠিকই দেখতে পেয়েছিলাম।

মুক্তির আনন্দ কে না চায়, স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচতে চায়। জগতের প্রতিটি প্রাণী তার নিজের মত করে বাঁচতে চায়, পরাধীনতার শৃঙ্খলে কেউ বাঁধা পড়তে চায়না। ভারতবাসী বৃটিশ পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গেছিল, বাঙ্গালী ভেঙ্গেছিল পশ্চিম পাকিস্তানীদের শৃঙ্খল। বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল অনেক দেশ, অনেক জাতি। সকলেই শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে। বৃটিশ শৃঙ্খল আমেরিকানরাও ভেঙ্গেছিল, শৃঙ্খল ভেঙ্গে গ্রেট বৃটেনের শাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ নতুন জাতি, ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে ‘ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা’র জন্ম হয়েছিল, ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই তারিখে।

পেছন ফিরে দেখাঃ

গ্রেট বৃটেন নিজেদের আধিপত্য এবং সাম্রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে ১৬০৭ সাল থেকে ১৬৩২ সালের মধ্যে উত্তর আমেরিকা’র ইস্ট কোস্ট অঞ্চলে তেরটি কলোনি স্থাপন করে। সর্বপ্রথম ব্রিটিশ কলোনি স্থাপিত হয় ভার্জিনিয়ায়, এবং সর্বশেষ জর্জিয়ায়। বাকী এগারোটি কলোনি হচ্ছে, ম্যাসাচুসেটস, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, মেরিল্যান্ড, কানেকটিকাট, রোড আইল্যান্ড, ডেলাওয়ার, সাউথ ক্যারোলাইনা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া। উল্লিখিত কলোনিগুলোর রাজনৈতিক, সাংবিধানিক এবং আইন ব্যবস্থায় যথেষ্ট মিল ছিল।

আমেরিকায় ফ্রেঞ্চ কলোনিও ছিল, গ্রেট বৃটেনের সাথে ফ্রান্সের শত্রুতাও ছিল। তাই আমেরিকা থেকে ফ্রান্সের আধিপত্য হটিয়ে দিতে বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধীনস্থ কলোনিগুলোকে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে অনেকবার যুদ্ধ করতে হয়েছে। ১৭৬৩ সালে ফ্রান্স আধিপত্য গুটিয়ে নিয়ে আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হয়।

উত্তর আমেরিকায় স্থাপিত ব্রিটিশ কলোনির সাথে ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের বাহ্যিক যোগাযোগ ছিল ১৭৫০ সাল পর্যন্ত। যদিও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তাদের কোন প্রতিনিধিত্ব ছিলনা, কোনরকম অংশগ্রহণের সুযোগ ছিলনা, কিন্তু তাদেরকে নিয়মিত ট্যাক্স দিতে হতো। ধীরে ধীরে জনসচেতনতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, এক কলোনির সাথে আরেক কলোনির যোগাযোগ এবং সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন এবং আরও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উৎসাহ এবং প্রচারণায় ‘আমেরিকান’ হিসেবে নিজেদের আইডেনটিটি সম্পর্কে জনগণ সচেতন হতে শুরু করে। বৃটিশ পার্লামেন্টে অংশগ্রহণ ব্যতিরেকে ট্যাক্স না দেয়ার দাবীতে সকলের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠে। ব্রিটিশ কলোনিস্ট নয়, আমেরিকান হিসেবে নিজেদের আলাদা স্বীকৃতির দাবীতে ১৭৭৪ সালে গঠিত হয় ‘কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস”, যা ১৭৭৬ সালে গ্রেট বৃটেনের অধীনস্থতা থেকে বেরিয়ে এসে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণা করে, আলাদা আলাদা রাজ্য সরকার গঠণ করে, সকল রাজ্যকে সংযুক্ত করে আমেরিকার নতুন নামকরণ হয় ‘ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা’।

ভারতবর্ষ যেমনি ইংরেজ শাসকদের অধীনে ছিল দুইশত বছর, পৃথিবীর আরও অন্যান্য দেশের মত আমেরিকার ১৩টি রাজ্য গ্রেট ব্রিটেনের অধীনস্থ কলোনি হিসেবে পরাধীন ছিল। কেউ পরাধীনতার শৃঙ্খলে বাধা থাকতে চায়না, পরাধীনতার গ্লানি থেকেই প্রতিবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্ব ছিলনা, কিন্তু প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই আমেরিকানদের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করা হতো। বৃটিশ পার্লামেন্টে আমেরিকানদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়াই বাধ্যতামূলক ট্যাক্স প্রদানকে কেন্দ্র করে বৃটিশরাজের বিরুদ্ধে তের কলোনিতেই অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। তের কলোনিস্টসদের এই অসন্তোষ যেন বিদ্রোহে রূপান্তরিত না হতে পারে, সেজন্য ব্রিটিশরাজ সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেয় আমেরিকানদের বিদ্রোহকে দমন করতে। কিন্তু মিলিটারী দিয়ে সেদিন কলোনিস্টদের বিপ্লব দমন করা যায়নি।

আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, প্রতিবাদ থেকে বিপ্লব, যা ইংরেজীতে বলে ‘রেভুলিউশন। আমেরিকান রেভুলিউশন যখন তুঙ্গে, তখন ১৭৭৬ সালের জুন মাসে ভার্জিনিয়ার কংগ্রেসম্যান রিচার্ড হেনরী লী কংগ্রেসে ‘রেজুলিউশন অব ইনডিপেন্ডেনস’ তৈরীর প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

১৭৭৬ সালের ১১ই জুন ফিলাডেলফিয়াতে কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের অধিবেশন হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে একটি কমিটি গঠিত্ হয়, কমিটি গঠনের প্রথম উদ্দেশ্য ছিল গ্রেট বৃটেনের অধীনস্থতা থেকে বেরিয়ে আসার দিকনির্দেশনা সম্বলিত একটি খসড়া দলিল তৈরী করা। কমিটিতে ছিলেন থমাস জেফারসন, বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন, জন অ্যাডামস, রজার শেরমান এবং রবার্ট আর লিভিংস্টোন। থমাস জেফারসন ছিলেন শক্তিমান লেখক, স্বাধীনতা দলিলের খসড়াটি উনিই তৈরী করেন, জেফারসন রচিত দলিলে ৮৬ স্থানে পরিবর্তন করার পর সেকেন্ড কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস ২রা জুলাই, ১৭৭৬ ভোটের মাধ্যমে রেজুলিউশন অব ইন্ডিপেনডেনস বিল পাস করেন, এবং ৪ঠা জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়।

১৭৭৭ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের প্রথম বর্ষ পূর্তিতে তেরটি ফাঁকা গুলী ছুঁড়া হয়েছিল, সকালে একবার, সন্ধ্যায় আরেকবার।
১৭৯১ সালে ৪ঠা জুলাই ইনডিপেনডেন্স ডে হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।
১৮৭০ সালে ইউ এস কংগ্রেস ফেডারেল এমপ্লয়ীদের জন্য অবৈতনিক ছুটির দিন ঘোষণ আকরা হয়।
১৯৩৮ সালে কংগ্রেসের অধিবেশনে ইনডিপেন্ডেন্স ডে মজুরীসহ ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।

গ্রেট বৃটেনের শাসনের শৃঙ্খল ভেঙ্গে ইউনাইটেড স্টেট অফ আমেরিকার জন্ম হয় ১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই, ৬ই ডিসেম্বার ১৮৬৫ তারিখে আমেরিকা থেকে ক্রীতদাস প্রথা (অফিসিয়ালি) বিলুপ্ত হয়। ক্রীতদাস প্রথা বিলুপ্তির সাথে সাথে আমেরিকার আকাশে বাতাসে গীত হয় শিকল ভাঙ্গার গান, মুক্তির গান! আমেরিকান জনগণ সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হয়। ফ্রান্সের জনগণের তরফ থেকে ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকার জনগণকে উপহার দেয়া হয় ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’, দ্য ‘সিম্বল অফ ফ্রিডম এন্ড ডেমোক্রেসী’।

১৮৮৪ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্সে স্ট্যাচু অফ লিবার্টির সকল কাজ সম্পন্ন হয়। ১৮৮৫ সালের জুন মাসে মূর্তিটি নিউইয়র্কে এসে পৌঁছায়, ১৮৮৬ সালের ২৮শে অক্টোবার প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ‘স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’’র পর্দা উন্মোচন করেন।

ফোর্থ অফ জুলাই
আজ ৪ঠা জুলাই, আমেরিকার ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে, মানে আমেরিকার জাতীয় দিবস, দিনটি আমেরিকান জনগণের কাছে ফোর্থ জুলাই অথবা জুলাই ফোর্থ হিসেবে অনেক বেশী উচ্চারিত হয়ে থাকে।

১৭৭৬ সালের ৪ঠা জুলাই গ্রেট বৃটেনের আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে ‘ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা’ নামে সম্পূর্ণ নতুনভাবে আবির্ভূত হয়েছিল। ইনডিপেনডেনস ডে আমেরিকান জনগণ যথাযোগ্য মর্যাদা এবং আনন্দ উৎসাহ নিয়ে পালন করে। দিনটি সরকারী ছুটির দিন। এই দিনে প্যারেড হয়, মেলা, বেসবল, কার্নিভ্যাল, পিকনিক, কনসার্ট, ফ্যামিলি রিইউনিয়ন তোঁ হয়ই, সারাদিন শেষে সাঁঝের বেলা থেকে শুরু হয় বাজি পোড়ানো, এই সর্বশেষ আতশ বাজির উৎসব দেখার জন্য আমেরিকানরা ঘর ছেড়ে খোলা মাঠে এসে জড়ো হয়। পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব, চেনা অচেনার মেলায় বসে সকলে আকাশের দিকে চোখ মেলে দেখে যায়, আকাশে উৎক্ষেপিত আতশ বাজির রঙবেরঙের মেলা।

আজ আমেরিকার আকাশে বাতাসে আনন্দ, সকলের বাড়ির আঙিনায় জাতীয় পতাকা উত্তোলিত, খাওয়া-দাওয়া হবে, কনসার্ট হবে, খেলা হবে, সবশেষে সন্ধ্যায় পরে আকাশে আতশবাজির মেলা চলবে।

কাকতালীয়ঃ
আমেরিকার স্বাধীনতার দলিলে যে পাঁচজন স্বাক্ষর করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে জন অ্যাডামস এবং থমাস জেফারসন (উভয়েই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন) ৪ঠা জুলাই ১৮২৬, আমেরিকার পঞ্চাশতম স্বাধীনতা দিবসে মৃত্যুবরণ করেন। স্বাধীনতা দলিলে স্বাক্ষর করেননি কিন্তু ফাউন্ডিং ফাদার জেমস মনরো (উনিও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন) মারা যান ১৮৩১ সালের ৪ঠা জুলাই। আমেরিকার ৩০তম প্রেসিডেন্ট কেলভিন কুলিজ অবশ্য জন্মগ্রহণ করেছেন ৪ঠা জুলাই, ১৮৭২।

ফিরে আসি স্ট্যাচু পফ লিবার্টি’র সেই নারী মূর্তির প্রসঙ্গে।
রোমান দেবী লিবার্তা’র অনুকরণে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, যার এক হাতে আলোকবর্তিকা, অন্যহাতে আইনের বই। বইয়ের কভারে খোদাই করা আছে ৪ঠা জুলাই, ১৭৭৬। স্ট্যাচুর পায়ে ছেঁড়া শেকল, যার মানে ‘মুক্তি, এবং স্বাধীনতা’।

কিছু তথ্যঃ
স্ট্যাচু অফ লিবার্টি’র ডিজাইন করেন, ফ্রেঞ্চ স্কাল্পটর ফ্রেডেরিক অগাস্টি বার্থলডি।
নির্মাণে ছিলেনঃ ফ্রেডেরিক অগাস্টে, গুস্তভ আইফেল, ইগুইন ভায়োলেট, রিচার্ড মরিস হান্ট।
নির্মাণ শুরুঃ সেপ্টেম্বর ১৮৭৫
নির্মাণ শেষঃ অক্টোবার ১৮৮৬
মূর্তি তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ঃ কপার, রট আয়রণ, স্টিল
উচ্চতাঃ ৩০৫ ফিট
স্থাপিতঃ লিবার্টি আইল্যান্ড, নিউইয়র্ক।

২০১৫ সালের জুন মাসে গিয়েছিলাম নিউইয়র্ক, বিশাল লঞ্চে চড়ে সরাসরি চলে গেছিলাম লিবার্টি আইল্যান্ড, স্ট্যাচু অফ লিবার্টকে খুব কাছে থেকে দেখতে চেয়েছি। লঞ্চ যত কাছে যায়, মূর্তি ততই বড় দেখায়। লঞ্চ থেকে আইল্যান্ডে নেমে মূর্তির দিকে তাকালাম, মূর্তির বিশালত্বে মুগ্ধ হলাম। স্বাধীনতার মশাল হাতে যিনি দাঁড়াবেন, তিনি অবশ্যই আকাশ ছোঁয়া উচ্চতায় পৌঁছাবেন, নাহলে স্বাধীনতার বিশালত্ব থাকে কি করে! আমার অনুভূতি!

বাংলাদেশে ভাড়া বাড়িতে কেটেছে কাল, তাই জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উড়াতে পারিনি কখনও। এই নিয়ে আমার মনে চাপা দুঃখ ছিল। বাংলাদেশে অবশ্য ‘৭৫ এর পর প্রতি বাড়িতে জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উড্ডয়নের রেওয়াজ আর নেই। আমেরিকায় প্রতিটি জাতীয় দিবসে প্রতিটি বাড়িতে জাতীয় পতাকা উড্ডয়ন করা হয়।

ধারের টাকায় কিনলেও আমেরিকাতেই নিজেদের নামে জীবনের প্রথম বাড়ি কিনেছি। জাতীয় দিবসে পতাকা উড্ডয়ন করিনি এতকাল, কেমন যেন মনে খুঁত খুঁত করতো। এরপর খুঁতখুঁতুনি চলে গেছে, আমেরিকা আমাদের নাগরিকত্ব দিয়েছে, নিশ্চিন্ত নিরাপদ নিরুপদ্রব জীবন, স্বাধীনভাবে চলার নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে কেন নিজেকে আমেরিকান ভাবতে এত খুঁতখুঁতুনি! গত তিন বছর যাবৎ আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসসহ জাতীয় দিবসগুলোতে নিজ বাড়িতে আমেরিকান পতাকা উড়াই।

পতাকা হচ্ছে একটি দেশের পরিচয়। কোন দেশের প্রতি নানা কারণে বৈরী মনোভাব থাকতে পারে, তাই বলে কোন দেশের পতাকাকে অসম্মান করতে নেই। যার যার দেশের পতাকা তার তার কাছে সাত রাজার ধন।

ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন সময় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের পতাকার ছবি দিয়ে অশ্লীল, কুরুচীপূর্ণ মন্তব্য লিখে ট্রল করে। এটা অন্যায়, তেমন ছবি দেখলেই আমার মন খারাপ হয়।

আমি কখনও কোন দেশের জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করিনি, এমনকি পাকিস্তানের পতাকা দেখলেও অসম্মান করার কথা মনে আসেনা। ঈশ্বর পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানুষের জীবন শান্তিময় করুন। আজ ৪ঠা জুলাই, আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস, আমেরিকান নাগরিক হিসেবে সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা!

ইনশাআল্লাহ এবং আলহামদুলিল্লাহঃ

ইনশাআল্লাহ এবং আলহামদুলিল্লাহঃ

উপরিউক্ত শব্দের মধ্যে কোন টা কোন সময়ে বলা প্রযোজ্য তা অনেকে সময় আমরা মিলিয়ে ফেলি। আমি এক দোকানে জিজ্ঞেস করেছিলাম, চিনিপাতা দৈ আছে? উনি বললেন, ইনশাআল্লাহ আছে। ইনশাআল্লাহ শব্দটার যে কতো বড় শক্তি তা বুঝতে পারলে হয়তো ঐ দোকানী এমন উত্তর দিতেন না।

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে এক ইহুদী এসে বলেছিলো, আপনি যদি সত্যি নবী হয়ে থাকেন তাহলে আমি এখন যে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দিতে পারবেন। আর মিথ্যে নবী হলে এর উত্তর দিতে পারবেন না।

ইহুদী প্রশ্ন করেছিলো, “বলুন রুহ কি?”

নবী (সাঃ) যেহেতু আল্লাহর ওহী ব্যাতিরেকে নিজ থেকে কিছু বলতেন না তাই তিনি ওহীর জন্য অপেক্ষা করে ইহুদীকে বললেন, “আগামীকাল বলে দেবো”। কিন্তু নবী (সাঃ) ইনশাআল্লাহ শব্দটি বলতে ভুলে গিয়েছিলেন।

এর পর ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেলো। নবী (সাঃ) ঐ ইহুদী র প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছিলেন না। ১৭ দিন ওহী আসা বন্ধ ছিলো।

তারপর ১৫ দিন কিংবা ১৭ দিন পর আল্লাহ ওহী নাযিল করলেন।

“ইনশাআল্লাহ না বলিয়া কখনোই তুমি কোনও বিষয়ে বলিও না – আমি উহা আগামীকাল করিবো।” (সূরা কাহাফ, আয়াতঃ ২৩-২৪)

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ভবিষ্যৎ এ আমরা যা করবো সেই ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা আবশ্যক আর যা বর্তমানে হচ্ছে বা বর্তমান আছে এবং অতীত এ হয়ে গেছে সেই ক্ষেত্রে আলহামদুলিল্লাহ বলা আবশ্যক।

আমি এখন আমার জানা মতে একটি ইতিহাস বলবো। এটা যদি কেউ রাজনৈতিক দৃষ্টিতে দ্যাখেন তাহলে দেখতে পারেন কিন্তু আমি বলছি ঐতিহাসিক দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে।

বাংলাদেশের এক মহান রাজনৈতিক নেতা বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পুর্ব মুহুর্তে হাজার হাজার জনতার সামনে উনার ভাষনের শেষে বলেছিলেন, “এ দেশ কে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ! ”

মূলতঃ এই ইনশাআল্লাহ বলার কারনেই তখন আল্লাহর সাহায্য নেমে এসেছিলো। আম জনতা তাদের অন্তরের ভেতরে আল্লাহ প্রদত্ত এক দূর্বার সাহস পেয়েছিলো।

সেই স্বাধীনতা যুদ্ধেও বাংলাদেশের পক্ষে আল্লাহর সাহায্য ছিলো বলেই আমার বিশ্বাস।

পশ্চিম পাকিস্তান তখন সামরিক শক্তিতে পুর্ব পাকিস্থান এর চেয়ে অনেক শক্তিশালী ছিলো।
আমি শুনেছি অনেকের মুখে ভারত এবং রাশিয়া বাংলাদেশ কে অস্ত্র দিয়েছিলো। আমার প্রশ্ন, আল্লাহর ইশারা না থাকলে সবচেয়ে পরাশক্তি আমেরিকা পশ্চিম পাকিস্তান এর পক্ষ হয়ে বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধ করতে চেয়েও কেনো যুদ্ধ করতে পারলো না। কেনো সপ্তম নৌ বহর আসতে পারলো না। অনেকে বলেন যে ইন্দিরা গান্ধী সপ্তম নৌ বহর আটকে দিয়েছিলেন। যে কারণে অনেকে মনে করেন ইন্দিরা গান্ধী নৌ বহর আটকে দিয়েছিলেন সে কারণ তখন আমেরিকার কাছে ম্যানেজ করা কঠিন কিছু ছিলো না। এই সেই আমেরিকা যে সৌভিয়েত ইউনিয়ন কে ভেংগে টুকরা টুকরা করে দিয়েছিলো কিন্তু কারোর কিছুই করার ছিলো না।

যিনি বলেছিলেন, “এ দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।”
হয় তিনি সূরা কাহাফের বর্ননা এবং উক্ত হাদীস শুনেছিলেন অথবা নিজেই পড়েছিলেন। মোট কথা তিনি জানতেন ইনশাআল্লাহ শব্দটির শক্তি।

যাইহোক, বলছিলাম ইনশাআল্লাহ এবং আলহামদুলিল্লাহ আমাদের বুঝে শুনে বলা প্রয়োজন কারণ এ শব্দ দুটির অসীম শক্তি আছে।

আলাপন-২

আলাপন-২
……/ইলহাম

এখন বিকেল সাড়ে পাঁচটা। আদ্রিয়ান্না ইউনিভার্সিটিতেই আছে। এই মাত্র যে ক্লাসটি শুরু হোল সেই সাবজেক্টের নাম অর্গানাইজেশনাল বিহ্যাভিওর।
যিনি ক্লাস নিচ্ছেন উনি ঢাকা ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের এসোসিয়েট প্রফেসর।

যেহেতু এটা একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি তাই অন্যান্য অনেক পাবলিক ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি এখানে এসে পার্ট-টাইম কিংবা কন্ট্র্যাক্টে ক্লাস নেন।

আজকের টপিকটা হচ্ছে “ম্যানেজিং স্ট্রেস এন্ড দ্যা ওরার্ক-লাইফ ব্যালেন্স”।

টিচার ইংলিশে লেকচার দিচ্ছেন কোন কোন কাজে বা কোন জবে সবচেয়ে বেশি স্ট্রেস থাকে সে বিষয়ে। উনি বললেন, “সমীক্ষায় দেখা গেছে সব চেয়ে বেশি স্ট্রেস হচ্ছে ইউ এস এ প্রেসিডেন্ট এর পদে এবং এই জবের স্ট্রেস স্কোর 176.6 এবং এর পরে স্ট্রেস বেশি হচ্ছে ফায়ার ফাইটারের জবে যার স্ট্রেস স্কোর 110.9 আর তৃতীয় স্থানে আছে সিনিয়র এক্সিকিউটিভের জব এবং এক্ষেত্রে স্ট্রেস স্কোর 108.6 তবে সবচেয়ে কম স্ট্রেসের জব হচ্ছে বুক কিপারের যার স্ট্রেস স্কোর মাত্র 21.5।

আদ্রিয়ান্না লেকচার শুনতে শুনতে একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেলো।
এম বি এ এর পাশাপাশি ও একটি মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে এক্সিকিউটিভ পদে জব করেছে। সেও একদিন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হবে।

আদ্রিয়ান্না ভাবতে লাগলো, কি দরকার জীবনে এতো স্ট্রেস নিয়ে? ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে গাড়ী, ফ্ল্যাট এবং এক কোটি টাকা লিকুইড মানি করতে হবে – এটা যেনো এই সময়ের ছেলে মেয়েদের জন্য একটা ফ্যশান হয়ে উঠেছে। অথচ আমার বাবার বয়স এখন ৬২ বছর। আমরা এখনও ভাড়া বাসায় থাকি। রিক্সায় চলাফেরা করি। বাবার এক কোটি টাকা লিকুইড মানি-তো অনেক দুরের কথা। বাবা সরকারি চাকুরী করতেন একটি উঁচু পদে। গতো বছর রিটায়ার্ড করেছেন। হয়তো পেনসন স্কিমে অল্প কিছু টাকা পেয়েছেন। তবে বাবার অনেক কলিগদের ছেলে-মেয়েদের দেখি দামী দামী গাড়ীতে চলা-ফেরা করে। ঢাকায় ওদের অনেকের দুই তিনটা বাড়ীও আছে। বাবার কলিগরা এতো কিছু করতে পারলে বাবা কেনো পারলেন না? আমারও কি এখন রিক্সায় না চলে ওদের মতো প্রাডো বা লেক্সাসে চলা-ফেরা করার কথা নয়? বাবার কলিগরা হয়তো চাকুরীর পাশাপাশি অন্য ব্যবসা করতেন অথবা কি করে এতো টাকা উনারা সংগ্রহ করেছেন কে জানে। কিন্তু এই যে এখনকার ছেলে-মেয়েরা দ্রুত ফ্ল্যাট-গাড়ীর মালিক হচ্ছে এটা কি করে হচ্ছে? বুঝলাম মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে অনেক স্যালারী কিন্তু এত দ্রুত এতো কিছু করা সম্ভব কি করে? চাকুরী করে শুধু স্যালারীর টাকা দিয়ে ঢাকায় থেকে বাসা ভাড়া দিয়ে, খেয়ে-পড়ে এত দ্রুত এতকিছু কি করে সম্ভব আমার মাথায় আসে না। আমার এক ফ্রেন্ডকে দেখেছি ব্যাঙ্ক থেকে চল্লিশ লাখ টাকা লোণ নিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছে। অনেক ইন্টারেস্ট সহ বিশ বছরে টাকা শোধ করতে হবে। পঞ্চান্ন হাজার টাকা করে তাকে প্রতি মাসে ইন্সটলমেন্ট দিতে হয়। দু বছর ইন্সটলমেন্ট দেয়ার পর আর চালাতে পারলো না। ব্যাঙ্কের চাপে, নিলামে তোলার হুমকি আর আজে বাজে কথা সয্য করতে না পেরে অবশেষে ফ্ল্যাট টি বিক্রি করে ব্যঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়েছে। মাঝে দু বছর পঞ্চান্ন হাজার করে যে প্রায় ১৪ লাখ টাকা ব্যাংক কে দিয়েছে সেটাই লস। ব্যাঙ্ক অনেক ধরণের জটিল অঙ্ক দেখায়। বলে আগে প্রিমিয়াম ইন্টারেস্ট শোধ হবে তারপর মূল টাকা পরিশোধ হবে। ১৪ লাখ টাকায় নাকি প্রিমিয়াম ইন্টারেস্ট এর অর্ধেকও শোধ হয় নি। আমার সেই ফ্রেন্ড আমাকে বলেছিলো, “আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে। আমি লোন নিয়েছিলাম ৪০ লাখ। ৫৫ হাজার করে বিশ বছর দিতে হলে ৪০ লাখের পরিবর্তে আমাকে দিতে হতো ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা কারন ওরা কি কি সব হিসাব দেখায়। বলে টাইম ইজ মানি, ২০ বছরের ইভ্যালুয়েশনে ঐ টাকা (১ কোটি ৩২ লাখ) একটুও বাড়তি নয়, ইত্যাদি ইত্যাদি।”
আমি অবশ্য এতো চাকচিক্য জীবন চাই না। সিম্পল লাইফই আমার কাছে ভালো লাগে।

-Can you tell me what the stress score of US President is?

মুহূর্তেই সজাগ হয়ে উঠ্লো আদ্রিয়ান্না, বুঝতে পারলো টিচার প্রশ্ন করেছেন। সামলে নিয়ে সে টিচারের দিকে তাকালো।
তাকানোর পর টিচার বললেন,

-Yes, please tell me Audrianna.
-Sir, this is 176.6
-Thank you.

ক্লাস শেষ করে আদ্রিয়ান্না বাসায় ফিরলো। হাত মুখ ধুয়ে খাওয়ার টেবিলে গে্লো।

কি রান্না করেছ মা? আদ্রিয়ান্না তার মাকে জিজ্ঞেস করলো
-বুটের ডালের খিচুড়ি, পটল ভাঁজি আর গরুর গোস
– তাড়াতাড়ি দাও খুব ক্ষুধা পেয়েছে
-একটু অপেক্ষা করো আমি দিচ্ছি

খাবার শেষ করে আদ্রিয়ান্না ওর রুমে গেল। হাই আসছে। বিছানায় শুয়ে পড়লো। কি যেন ভাবছিলো। হঠাৎ চোখ পড়ল বইয়ের শেলফে। মনে পড়লো সেই বইটির কথা। বইটির নাম “আলাপন”।
বইটি হাতে নিলো। লেখকের বৃত্তান্ত আরেকবার দেখে নিলো।
মনে মনে বললো, সেদিন আলাপন-১ পড়ে ভা্লোই লেগেছিলো। আজ দেখি আলাপন-২ তে লেখকটি কি লিখেছে।

আলাপন-২
একটি বালোক ঘুমিয়ে আছে।
হঠাৎ একটি শব্দ ভেসে এলো, কি ভাবছো হে বালোক?
বালোক টি হুড়মুড় করে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলো। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলো অন্ধকার কারণ লাইট অফ করা ছিলো। কিছু দেখা যাচ্ছে না। বালকটি বললো, কে কথা বলছে?
শব্দ: ভয় পেওনা। তুমি সব সময়য় যাকে নিয়ে ভাবো সে আমাকে পাঠিয়েছে।
বালোক: আমিতো স্রষ্টাকে নিয়ে ভাবি। তুমি কে?
শব্দ: ধরো তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন
বা্লোক: কেনো পাঠিয়েছেন?
শব্দ: তোমার মনের ভেতোর যতো আজগুবি প্রশ্ন আছে তার উত্তর দিতে
বালোক: তুমি কি পারবে উত্তর দিতে?
শব্দ: চেষ্টা করে দেখি
বা্লোক: আমি স্রষ্টাকে দেখতে চাই
শব্দ: এটা তো খুব সহজ ব্যাপার
বালোক: কেমন করে বলো তো?
শব্দ: তার আগে বলো তুমি তাঁকে কি রূপে তাঁকে দেখতে চাও?
বা্লোক: তার মানে?
শব্দ: তুমি কি তাঁকে আলো রূপে দেখতে চাও নাকি আগুণ বা অন্য কোনও রূপে দেখতে চাও?
বালোক: না, আমি তাকে তাঁর নিজস্ব রূপে দেখতে চাই
শব্দ: ও হে বালক, তিনি-তো সবার স্বরূপ দিতে দিতে উনার সকল রূপ শেষ হয়ে গেছে। তাই নিজের রূপ এখন আর নাই।
বা্লোক: তাঁর নিজস্ব রূপ নেই?
শব্দ: না। সকল সৃষ্টির রূপ দিতে গিয়ে তাঁর নিজের আর কোনও রূপ অবশিষ্ট ছিল না। তাই তার নিজের আঁকার নাই। তিনি নিরাকার। কেমন করে তাঁকে তুমি দেখবে?
বালোক: তাকে কি আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি?
শব্দ: অনেকেই দেখেছে তবে প্রত্যেকেই কোনও না কোনও মাধ্যমে দেখেছে কারণ তাঁর নিজস্ব কোনও স্বরূপ বা আকার নেই।
বা্লোক: মাধ্যম গুলো কি কি?
শব্দ: এই ধরো আলো অথবা কোনও আগুণের আঁকার ধারণ করে কিংবা অন্য কোনও আকার ধারণ করে তিনি দেখা দিয়েছেন
বালোকঃ কিন্তু আমি তো জানি বেহেস্তে গেলে তিনি বেহেস্তবাসীদের সাথে দেখা দেবেন। তিনি নিরাকার হলে তখন কোন আকারে দেখা দিবেন?
শব্দঃ ও হে বালোক! তুমি তো এখনও বালোক আছো তাই বোঝো না। বেহেস্ত – দোজখ তো কেয়ামতের পরে হবে। তার আগেইতো সকল সৃষ্টি কূলের মৃত্যু হবে। আর সকল সৃষ্টি কুলের মৃত্যু হলেইতো তিনি তাঁর সকল স্বরুপ ফেরত পাবেন। তখন তিনি তাঁর আসল রূপেই দেখা দেবেন।
বালক: ও আচ্ছা
শব্দ: এখন বলো তুমি কোন রূপে দেখতে চাও।
বালক: আমি কোনও আলো বা আগুনের রূপে দেখতে চাই না
শব্দ: তাহলে কোন রূপে দেখতে চাও?
বালক: আমার নিজের রূপে। আমি আরেক জন আমাকে দেখতে চাই
শব্দ: ঠিক আছে। তুমি অতি স্বত্বর আরেক জন তোমাকে দেখতে পাবে

আলাপন-২ এখানেই শেষ হয়ে গেছে দেখে আদ্রিয়ান্না একটু বিরক্ত হলো।
সে ভাবলো এই লেখকটা কি পারতো না সম্পুর্ন লেখা লিখতে? কেনো যে আজকালের লেখকরা মাঝ পথে লেখা শেষ করে দেয় বুঝি না!

প্যারালাল ওয়ার্ল্ডের কথা আদ্রিয়ান্না শুনেছে কিন্তু সেটা কোথায় আছে জানে না। এই পৃথিবী যা যা আছে বা যতো প্রাণী বা মানুষ আছে সব হুবহু সব নাকি প্যারালাল ওয়ার্ল্ডে আছে।

মনে মনে বললো, তাহলেতো আমি আদ্রিয়ান্নাও ওখানে আছি। আমার বাবা-মাও আছেন। কি অদ্ভূত ব্যাপার! ওখানে নাকি কারও মৃত্যু হয় না। আমার মনে হয় বিজ্ঞানীরা কোরআন পড়ে এনালাইসিস করে পরোকালকেই প্যারালাল ওয়ার্ল্ড বলতে চাইছে। কারণ ওখানে এই পৃথিবীতে যতো মানুষ এবং প্রাণী এসেছে এবং ভবষ্যতে আসবে সবাই ওখানে থাকবে এবং ওখানে কারও মৃত্যু হবে না। কর্মফল অনুযায়ী বেহেস্ত অথবা দোজখে থাকবে।

DSC_6890 - Copy

আতা কাহিনী

আতা ফল কোনটি?
আতা আর সীতা কি একই ফল?
আতা আর সরিফার পার্থক্য কি?
আতার আরেক না কি নোনা?

এই প্রশ্নগুলি মাঝে মাঝেই দেখতে পাই। মাঝে মাঝে বেশ ভালো রকমের যুক্তি-তর্কও দেখার সুযোগ হয়। অনেক দিন ধরেই ইচ্ছে ছিল এই বিষয়ে কিছু তথ্য উপস্থাপন করবো, আজ তাই করছি। মনে রাখতে হবে আমি শুধু কয়েকটি বইয়ের তথ্য এখানে উপস্থাপন করছি। লেখার শেষ অংশে আমার উপলব্ধি প্রকাশ করবো। আপনাদেরও তা প্রকাশের সমান সুযোগ রইলো।

আতা বিষয়ে কয়েকটি বইয়ের আলোচনা
১। কালীপদ বিশ্বাস ও এককড়ি ঘোষ লিখিত “ভারতীয় বনৌষধি” প্রথম খণ্ডের ১৩ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা। বইটির ১১ ও ১২ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে – ফলটির বাংলা নাম – আতা, হিন্দি নাম – সীতাফল আর তামিল নাম – সীতা, বৈজ্ঞানিক নাম – Annona squamosa L.।
মাঝারী আকারের গাছ, ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু। পাতা ২-৩ ইঞ্চি লম্বা, আধ ইঞ্চি চওড়া।

২। শ্রীহরিমোহন মান্না প্রণীত “ফলের বাগান” বইতে ৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা বইটির ১৪০ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আতা সম্পর্কে সেখানে বলা হয়েছে –
“ফলগুলির গাত্রদেশ খাঁজকাটা বন্ধুর। ভিতরে শাঁস অতি কোমল।”

৩। নলিনীকান্ত চক্রবর্তী প্রণীত “ত্রিপুরার গাছপালা” বইতে ৫ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা। বইটির ১৩ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -আতা, অন্য নাম – সীতা ফল, বৈজ্ঞানিক নাম – Annona squamosa L.
“squamosa” অর্থ অসমান, এতে ফলের অসমান গায়ের কথা বুঝায়। এই ছোট বৃক্ষটি আমেরিকার উষ্ণ মন্ডলের আদিবাসী। ফল অসমান গাত্র বিশিষ্ট গোলাকার। ফলত্বকের একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উহা নরম সবুজাভ রঙের কতগুলি গোলাকার আঁশ জুড়ে যেন তৈরি। পাকা ফলে এই আঁশের মত অংশগুলি আলাদা করা যায়। ফলের মধ্যে মিষ্টি সাদা রঙের আঁশ থাকে।”

৪। শ্রীঊর্ণচন্দ্র সাহার সঙ্কলিত “আয়ূর্ব্বেদোক্ত উদ্ভিদ সংগ্রহ” বইতে ১৬ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে আতা বইটির ১৬ নাম্বার পাতায় আতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -আতা, সংস্কৃত নাম – আতৃপ্য, হিন্দি নাম – সরিফা, তৈ নাম – সিতাফলম। (“তৈ” তে ভারতের কোন একটা প্রদেশের নাম বুঝানো হয়েছে।) ইংরেজি নাম – custard apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম – Annona squamosa L.।

নোনা বিষয়ে কয়েকটি বইয়ের আলোচনা
১। কালীপদ বিশ্বাস ও এককড়ি ঘোষ লিখিত “ভারতীয় বনৌষধি” প্রথম খণ্ডের ১৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা। বইটির ১২ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম – নোনা আর সাঁওতালি নাম – গম, ইংরেজি নাম – true custard apple এবং বৈজ্ঞানিক নাম – Annona reticulata L.
মাঝারী আকারের গাছ, ২০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু। পাতা ৫-৮ ইঞ্চি লম্বা, দেড় থেকে ২ ইঞ্চি চওড়া।

২। শ্রীহরিমোহন মান্না প্রণীত “ফলের বাগান” বইতে ২৬ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা। বইটির ১৯৭ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নোনা সম্পর্কে সেখানে বলা হয়েছে –
“নোনা আতা জাতীয় ফল, কিন্তু গুণে ইহা আতা হইতে নিকৃষ্ট। ইহা আতার মত অত রসাল ও সুগন্ধি নহে। আতা হইতে নিকৃষ্ট হইলেও খাইতে এ ফলও বিশেষ সুস্বাদু। এ ফলগুলির উপরিভাগে আতার মত খাঁজ নেই। ইহা পাকিলে পীতাভ লালবর্ণ হয়।”

৩। নলিনীকান্ত চক্রবর্তী প্রণীত “ত্রিপুরার গাছপালা” বইতে ৪ নাম্বার উদ্ভিদ হচ্ছে নোনা বইটির ১২ নাম্বার পাতায় নোনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
নামের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ফলটির বাংলা নাম -নোনা, অন্য নাম – রাম ফল, নোনা আতা, বৈজ্ঞানিক নাম – Annona reticulata L.
reticulata অর্থ জালিকাকার, ইহা ফলের উপরের অস্পষ্ট জালিকার বুঝায়। আতা গাছের সাথে এর পার্থক্য এর পাতা অনেক লম্বাটে, ফলের গা সমান,অবশ্য তাতে অস্পষ্ট জালিকাকার খাঁজ রয়েছে। ফলের ভেতরটা অনেকটা আতার মত তবে শাস অনেকটা বালির মত দানাদার এবং এর গন্ধ ততোটা ভাল নয়। ফলের আকার প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের মত।

উপরের সূত্রগুলি মোতাবেক আমার ধারনা হয়েছে “যাহা লাউ, তাহাই কদু।” থুক্কু, “যাহা আতা, তাহাই সীতা বা সরিফা।” কারণ সীতা ও সরিফা নামগুলি শুধুমাত্র আতার সাথে ব্যবহার করা হয়েছে, নোনার সাথে কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। আর আতার বৈজ্ঞানিক নাম – Annona squamosa L. এর squamosa থেকে এবং বইগুলির আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে আতার পৃষ্ঠদেশ হবে অসমান অমসৃণ।

অন্যদিকে নোনার ক্ষেত্রে সকল বইতেই তার নাম নোনা পাওয়া যাচ্ছে। নোনাকে কোন বইতেই সীতা বা সরিফা বলা হয়নি। আর নোনার বৈজ্ঞানিক নাম – Annona reticulata L. এর reticulata থেকে এবং বইগুলির আলোচনা থেকে সহজেই বুঝা যায় যে নোনার পৃষ্ঠদেশ হবে মসৃণ এবং অস্পষ্ট জালিকাকার।

পানি কম পান করলে ব্লাড সুগার বাড়ে

পানি পান করলে ব্লাড সুগার বা রক্তে চিনি কমতে পারে এমন কেউ বললে হয়তবা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারবেন না। কিন্তু বিশেষজ্ঞগণ সম্প্রতি এক গবেষণা রিপোর্টে এমনই দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, গবেষকগণ বলছেন, যারা প্রতিদিন ১৬ আউন্স বা তার চেয়ে কম পানি পান করে (দুই কাপ) তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি যারা স্বাভাবিক পানি পান করে তাদের চেয়ে শতকরা ৩০ ভাগ বেশি। আর কেনইবা পানি পানের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সংশ্রব খুঁজে পেয়েছেন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন গবেষকগণ।

এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, ভ্যাসোপ্রেসিন নামক এক ধরনের হরমোন শরীরের হাইড্রেশন নিয়ন্ত্রণ করে। যদি প্রতিদিন কম পানি পান করা হয় বা কোনো ব্যক্তির যদি পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হয় তাহলে রক্তে ভ্যাসোপ্রেসিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় যা লিভারকে অধিক সুগার তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন মহিলাদের অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা উচিত। আর পুরুষদের এর চেয়ে খানিকটা বেশি পানি পান করা ভালো। তবে পানির পাশাপাশি তাজা ফলের রস পানেও কোনো ক্ষতি নেই। তবে যাদের প্রচুর পানি খাওয়ার অভ্যাস নেই তারা প্রতিবার আহারের পূর্বে অন্তত এক গ্লাস পানি পান করতে পারেন। এমনটি পরামর্শ দিয়েছেন দ্য একাডেমী অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিকস-এর মুখপাত্র কনস্ট্যান্স ব্রাউন বিগস।

সংগৃহীতঃ
লেখক : চুলপড়া, এলার্জি, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
http://www.ittefaq.com.bd/life-style/2016/12/15/95716.html

বাংলাদেশে পার্লার শিল্পের প্রসার

ঢাকাতে সর্বপ্রথম পার্লার প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৬৫ সালে তবে সেটা কোন বাংগালি মালিকানাধীন পার্লার ছিলোনা। স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৭ সালে বাংগালি একজন মহিলা সর্বপ্রথম কাজ শুরু করেন বিউটিশিয়ান হিসেবে। উনার নাম জেরিনা আসগর। উনার প্রতিষ্ঠিত সেই পার্লারের নাম ছিলো লিভিং ডল। এরপর আশি থেকে নব্বইয়ের দশকের শুরু পর্যন্ত ঢাকা আর চট্টগ্রামের পার্লারগুলো পরিচালিত হতো বেশিরভাগ চাইনিজদের দ্বারা। চট্টগ্রামের লুসি এমন একটি পার্লার যা বহুদিন পর্যন্ত একচেটিয়া ব্যবসা করে গিয়েছে। চাইনিজ মালিকানাধীন এইসব পার্লার গুলো মধ্যবিত্ত শ্রেনীর নারীদের হাতের নাগালের মধ্যে ছিলো না কারণ তাদের ছিলো আকাশ ছোঁয়া সার্ভিস চার্জ।

মূলত এমন দামের কথা মাথায় রেখেই বাংগালি মালিকানাধীন পার্লারগুলোর পথ চলা শুরু হয়েছিলো নব্বইয়ের দশকে। উইমেন্স ওয়ার্ল্ড, গীতিস, ড্রিমস এমন বিখ্যাত কয়েকটি পার্লার যেগুলোর নাম মনে রাখার মতো। তারপর বলা যেতে পারে পারসনা, ফারজানা শাকিল এর কথা। সময়ের স্রোতে এখন বাংলাদেশে প্রায় কয়েক হাজারের উপর পার্লার আছে। শুধুমাত্র ঢাকা আর চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ নেই এই পার্লার ব্যবসা। সম্প্রতি একটি বিদেশি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে বাংলাদেশে যেসব মহিলাদের মাসিক আয় ৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ টাকার মধ্যে তাদের মধ্যে প্রায় ৮৮.৩% রেগুলার পার্লার সেবা নিয়ে থাকে। তবে একথা সত্য গ্রামের মেয়েরাও এখন নিয়মিত পার্লারে যায়। গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে বাসার গৃহকর্মী মোটামুটি সবার আনাগোনা থাকে সেখানে। উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্তদের মতো দামি সেবা নিতে না পারলে ও ভ্রু প্লাক এর থ্রেডিংয়ের জন্য হলেও তারা যায়। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই এখন পার্লার আছে নারীদের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য। এক্ষেত্রে পুরুষরাও পিছিয়ে নেই, তাদের জন্য গড়ে উঠেছে বহু পার্লার।

যেসকল পার্লারগুলোতে সুযোগ সুবিধা বেশি থাকে সেগুলো মূলত উচ্চবিত্ত আর উচ্চ মধ্যবিত্ত নারীদের কথা মনে রেখেই গড়ে উঠছে। আর সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে নারী উদ্যোক্তারা। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা মাথায় রেখে পার্লার ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করছে নারীরা। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির চাকরি, সরকারি চাকরি ছেড়ে নিজের মতো করে মুনাফা লাভের আশায় এই ব্যবসায় বহু নারীরা এগিয়ে আসছে। আবার অনেকে মূল কাজের পাশাপাশি বাড়তি ব্যবসা হিসেবে রেখেছে ব্যবসাটাকে। টুকটাক বেসিক কাজ যেমন প্লাক, থ্রেডিং, ট্রিমিং এর কাজ শিখে স্বল্প পুঁজি দিয়ে অনেকে মহিলা স্বল্প পরিসরের এই ব্যবসা পরিচালনা করে। তবে সেক্ষেত্রে তাদের গ্রাহকরা মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত নারীরাই।

দেশের অন্যান্য জায়গায় বিভিন্নতা না থাকলেও ঢাকা আর চট্টগ্রাম শহরে হেয়ার স্টাইল, মেকাপ বিভিন্ন বিষয় মাথা রেখে বিশেষায়িত পার্লার গড়ে উঠেছে আর এসবের সবকিছুই হচ্ছে নারীদের চাহিদাকে মাথায় রেখে। তবে একটা ব্যাপার লক্ষনীয় যে যে কোন বিশেষায়িত পার্লারে আপনি যান না কেন সেখানে উপজাতি মেয়েদের কাজ করতে দেখা যায়। আর সেক্ষেত্রে মান্দি বা গারো মেয়েদের অংশগ্রহণ সবথেকে বেশি। মারমা, চাকমা, মনিপুরি, তংচইংগা মেয়েরা পার্লার পেশায় থাকলেও সেটা স্হানীয় পর্যায়ে। তবে বৃহত্ পরিসরে কাজ করে গারো মেয়েরাই। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, টাংগাইল, নেত্রকোণা জেলাতেই গারোরা বেশি বাস করে। প্রতিবছর হাজার হাজার গারো মেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আড়ি জমায় পার্লারে কাজ করার জন্য।

মূলত কমিউনিটির মধ্যে সহযোগিতা সুলভ মনোভাবের জন্য তাদের এই বিস্তার। একজনের কাজ থেকে আরেক জন ব্যক্তিগত ভাবে কাজ শিখে নেয় তারা। কাজের ক্ষেত্রে ও একজন আরেকজন কে সাহায্য করে চাকরি পেতে। তা ই বলা যেতে পারে গারো মেয়েরা অনেকটা একচেটিয়া পার্লার গুলোর কর্মী হিসেবে। মূলধারার বাংগালি মেয়েরা আগে কম কাজ করলেও আজকাল তারা ও আসছে এই পেশাতে কারণ লাভজনক একটি সেক্টর এখন এটি।

বাংলাদেশ সরকারের একটি আইন অনুসারে পার্লারের মেয়েদের সর্বনিম্ম মজুরি ধরা হয়েছে মাসিক ৩৩০০ টাকা কমপক্ষে। এই মজুরি গার্মেন্টস কর্মীদের থেকে বেশি। বিভিন্ন পার্লার ঘুরে দেখা গিয়েছে যে মেয়েরা এর থেকে বেশি অর্থ উপার্জন করে। যে মেয়েরা ভালো কাজ করে তাদের কে মালিক পক্ষ বেশি মজুরি বা সুবিধা দিয়ে রাখে কারণ তাদের জন্য আছে গ্রাহকদের চাহিদা। আর বেশি মজুরিতে অন্য পার্লারে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তারা মজুরি বেশি হাঁকানোর সুযোগ ও পেয়ে থাকে।

পার্লারের প্রতুলতা, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার প্রভাব, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি নিজেকে সুন্দর করে দেখার মাঝে মূলত পার্লার প্রসারের কারণ। এটি একটি লাভজনক খাত। আর বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী গারো সম্প্রদায় এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্টরা অন্যান্যরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে যা তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়াচ্ছে। তাদের ছেলেমেয়েরা তুলনামূলক ভালো জীবনের সাথে পরিচিত হচ্ছে, লেখা পড়া করছে যা নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে হাইজিন মেইনটেন, ভালো প্রডাক্ট ব্যবহার না করায় গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। কর্মীদের আর মালিকদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় অনেক সময়। সরকারের আরেকটু সুস্পষ্ট নীতিমালা, সুলভ সার্টিফিকেশন কোর্স, কারিগরি শিক্ষায় বিউটিফিকেশনকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে পার্লার ব্যবসা আরো অনেক দূর অগ্রসর হতে পারবে। গার্মেন্টস একটি খাত যা নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারকে সামনে রেখে। সেই নারী ভিত্তিক আরেকটি খাত এটি। সম্পূর্ণ দেশী পরিসর নিয়ে এই সেক্টর। এই সেক্টরের উন্নয়ন নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক অবদান রাখতে সক্ষম।

ফাও

ইন দ্য ইয়ার অফ টু থাওযেন্ড ফৌর, আমাগো জাহিদ দিপার প্রেমে হাবুডুবু খাইতাছে। সপ্তায় দুই দিন ঢাকার থেকা একশো কিলোমিটার দূরে দিপাগো শহরে যায়। রিকশায় ঘুরে। কথা কয়। রেস্টুরেন্টে খায়। প্রত্যেক রাইতে ৩টা ৪টা পর্যন্ত কুটুর-কুটুর কথা তো আছেই।

টু থাওযেন্ড ফাইভের সেপ্টেম্বর থেকা জাহিদ দিপারে বিয়া করনের চাপ দিতে শুরু করলো। মধুমধু গলায় দিনে রাইতে চৌদ্দবার কইরা কইতে শুরু করলো- “জানু, প্রস্তাব দিয়া আম্মারে পাঠাই। তোমার ফ্যামিলি রাজি না হইলে ডাইরেক্ট কোর্ট ম্যারেজ করুম। আমার ফ্যামিলিতে প্রব্লেম নাই।” দিপা খালি কয়, ‘জানটুশ, একটু অপেক্ষা করো। আমি বাবাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছি।”

টু থাওযেন্ড সিক্সের মাঝামাঝি পর্যন্ত দিপা ফ্যামিলিরে ম্যানেজ করতে পারলো না। জাহিদ আর দেরী করতে চায় না। বিভিন্ন আচেনা নাম্বার থেকা মোবাইলে ফোন কইরা প্রায়ই দিপার নামে উলটাপালটা কথা কয়। দিপারে জিগাইলে কসম কাইটা অস্বীকার করে। জাহিদের চাপাচাপিতে দিপা কোর্ট ম্যারেজে রাজী হইলো। ডিসিশন ফাইনাল। সংসার শুরুর আগে দুইজন মিলা ফার্নিচার পছন্দ করল। দিপার পছন্দে খাট আর সোফাসেট বানাইতে দিলো। জাহিদ বাড়ীওয়ালারে পামপট্টি মাইরা চাইরতালার ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ারে দুইমাসের মধ্যে বিদায়ের ব্যাবস্থা করলো। ফ্ল্যাট খালি হওনের পনেরো দিন পরে বিয়া।

এক বিষ্যুদবারে জাহিদের অফিসে এক লোক আইসা হাজির। দিপার ব্যাপারে গোপনে কিছু কইতে চায়। জাহিদ হাসতে হাসতে কইলো- “ভাই, দিপার যদি চাইর বছর আগে একটা বিয়া হয়া থাকে আর দশটা বাচ্চাও থাকে তবেও তারে বিয়া করুম।” লোকটা কয়, “বেশ ভালো কথা। তবে বিয়ের আগে এই মেমোরী কার্ডের ভিডিওগুলি দেইখেন। কিছু জানতে হইলে ফোন দিয়েন। এই কাগজে নাম্বার আছে।”

ভিডিও দেইখা জাহিদ বেদিশা। একবার চিন্তা করলো বিষ খায়া মইরা যাইবো। আবার ভাবলো কার জন্য মরবো! দিপারে মাইরা ফালাইলে পৈশাচিক শান্তি পাইতো। ওর মাথার ভিতরে দুই বার্নারের বিশটা গ্যাসের চুলা দাউদাউ জ্বলতাছে।

জাহিদ বহুতদিন বাদে বারে গেল। লম্বা সময় ধইরা পাঁচ পেগ ভদকা খাইল। মাথা কিছুটা ঠান্ডা হইলো। রিকশায় কইরা বাসায় ফিরনের সময় কলিজায় কামড় দিল- দিপারে কি কেউ ব্ল্যাকমেইল করতাছে! রাইতে দিপারে ফোন দিল-
: জানু, তুমি সত্য কইরা কও কারো সাথে তোমার ফিজিক্যাল এফেয়ার আছে?
: হঠাত, এসব জিজ্ঞেস করছো কেন!
: আইজ একটা মেমোরী কার্ড পাইছি। মেয়েটার চেহারা তোমার মত। তোমার শরীর এখনও খুইলা দেখি নাই। তাই বুঝতাছি না এইটা তুমি না অন্যকেউ।
এইবার দিপা কাইন্দা দেয়, কয়- “জাহিদ, ওরা ব্ল্যাকমেইল করছে। আমাকে রেপ করার সিন মোবাইলে রেকর্ড করেছিল। ভিডিও ফিরিয়ে দিবে বলে দুই দিন ডেকে নিয়ে আবার রেপ করে, মোবাইলে ভিডিও করে। এখন ব্ল্যাকমেইল করে প্রায়ই আমাকে ডাকে আর…” দিপা কথা শেষ করতে পারে না। জাহিদের মাথায় আগুন চইড়া যায়- “এতদিন আমারে কও নাই ক্যান! কাইন্দো না। জানোয়ারগো মাটিতে পুইতা ফালামু- খোদার কসম।”

ইন দিস সিচ্যুয়েশন, জাহিদ পুরা পাগলা কুত্তা। ক্যারাবেরা দুই বন্ধুর কাছে হেল্প চায়। দিপার কাহিনী শুননের ইচ্ছা জানায়া ঐ লোকরে দাওয়াত দিয়া ঢাকায় আনে। মিরপুরের এক আন্ডার কন্সট্রাকশন বিল্ডিংয়ের ছয়তালায় পাঠার মত গলায় দড়ি দিয়া বান্দে। হারামজাদা ডরে প্যান্টে ছোট আর বড় কাম দুইটাই একলগে কইরা দেয়। তারে লেংটা কইরা ভিডিও করে। তারপর বারো ঘন্টার মধ্যে দিপার সব ভিডিও ফিরত দিতে বলে। ১মিনিট বেশী লাগলে লেংটা ভিডিও ইউটিউবে ছাইড়া দিবে আর পোস্টার ছাপায়া জেলা শহরের দেয়াল ভইরা দেওনের হুমকী দেয়। হুমকীতে কাম হয়, লোকটা সকল ভিডিও ফিরায়া দেয়।

বিয়ার আর একমাসের মত বাকী। সারা রাইত দুইজনে মোবাইলে বাকুম বাকুম করছে। সকালে জাহিদ এসএমএস পাইলো- “জানটুশ, মোবাইল নষ্ট। ফোন বন্ধ পেলে টেনশন করো না। টেক কেয়ার উম্মম্মম্মা।”

জাহিদ তিন দিন ধইরা সমানে দশ মিনিট পর পর ফোন দিয়া যাইতাছে। দিপার ফোন বন্ধ। সে ছটফটায়। চিন্তায় মইরা যাওনের দশা। চাইর দিনের মাথায় মোবাইল চালু পায়-
: হ্যালো, কে বলছেন?
: জানু, আমি জাহিদ। ঠান্ডা লাগাইছো কেমনে! গলা এমন কেন?
: আমার ভয়েস এমনই। আপনি কাকে চাচ্ছেন?
: দিপা, রাগ করো কেন!
: হি:হি:হি:হি: আমি দিপা না। আমি দিপার ছোট বোন রিপা।
: দিপা কোথায়! দিপাকে দাও।
: দিপা আপ্পিকে দেয়া যাবেনা।
: কেন?
: দিপা আপ্পি গতকাল রাতের ফ্ল্যাইটে আমেরিকা গেছেন, শিকাগো সিটিতে দুলাভায়ের কাছে।

ইলহাম এর ছোট গল্পঃ আলাপন-১

আলাপন-১

এক ভদ্রলোক রাতে শুয়ে আছে। ঘুম আসছে না। সে সাধারণত একা একা রাতে ঘুমায় না। একা থাকলে রাতে ঘুম আসতে চায় না। অশরীরী কিছু একটা এসে কথা বলে। আজ একা থাকতে হচ্ছে কারণ তার পরিবার বাপের বাড়ি গিয়েছে। ভুত-পেত্নী সে বিশ্বাস করে না কিন্তু জ্বীন বিশ্বাস করে।

তার জ্বীন হাসিলের খুব ইচ্ছা ছিলো। অনেক হুজুরের কাছে গিয়েছে। একেক জন একেক রকম পরামর্শ দেয়। সে আমল করে কিন্তু জ্বীন আসে না। একবার দবির হুজুর বললো, এশার নামাজের পরে মসজিদে বসে সুরা জ্বীন চল্লিশ বার চল্লিশ দিন পড়লে একটা জিন এসে হাজির হবে। আসার আগ মুহুর্তে গাছ-পালা নড়তে শুরু করবে। একটু ঝড় হবে। কস্তুরী আতরের ঘ্রাণ আসবে। হয়তো দেখবেন যে মসজিদে বসে আপনি সূরা জ্বীন পড়ছেন সেখানেই হঠাত তাকিয়ে দেখবেন একজন বসে আছে কিন্তু মাথাটা ছাদের সাথে লেগে গেছে। কিন্তু সব সময় পাকসাফ থাকতে হবে। আর জ্বীন দেখে ভয় পাওয়া যাবে না।

সে চল্লিশ দিন চল্লিশ বার করে সুরা জ্বীন এশার নামাজের পর পড়লো কিন্তু জিন আসলো না।

কিন্তু তার মনে প্রশ্ন জাগে, এই যে রাতে একা থাকলে অশরীরী কিছু একটা এসে তার সাথে কথা বলে এটা কি জিনিস? এই জিনিসটা আসার আগে সে টের পায়।
সেদিন ঘুম আসবে না। এপাশ ওপাশ করতে করতে অনেক রাত হবে। তারপর খালি পায়ে হাটার শব্দ শোনা যাবে। শরীর নাই কিন্তু হাটার শব্দ করে। আশ্চর্য জিনিস!
খালি পায়ে হাটার শব্দটা যখন তার ঘরের দিকে আসে তখন সে বোঝে জিনিসটা এখন ঘরে ঢুকেছে। কিন্তু হাটার শব্দটা কোথায় এসে শেষ হয় এটা বোঝা যায় না।
ওটা কি মাথার দিকে এসে থামে নাকি পায়ের দিকে নাকি বিছানায় উঠে বসে কে জানে।

লাইট জ্বালানো থাকলে এই জিনিসটা আসে না। তাই একা থাকার প্রয়োজন হলে লাইট জ্বালিয়ে ঘুমায়। আজ লাইট অফ করা আছে। এখন উঠে আর জ্বালাতে ইচ্ছে করছে না। খুব ক্লান্ত লাগছে। হাতের কাছে একটা লোহার রড নিয়ে শুয়েছে। আজ ওটা আসলে আচ্ছা মতো সাইজ করা হবে।

ভদ্রলোকের ঘুম আসছে না। এপাশ ওপাশ করছে। অনেক রাত হয়ে গেলো। হঠাৎ পায়ের শব্দ শোনা গেলো। ভদ্রলোকের মেজাজ খারাপ হয়ে গে্লো। ওটার সাথে কথা বলতে ভাল লাগে না। অহেতুক প্যাঁচাল পারে। লোহার রড টা ডান হাতে ধরে আছে।

একটা মোলায়েম কণ্ঠ ভেসে এলোঃ

কি ভাবছো হে মানুষ?

ভদ্র লোক কোনও কথা বললো না।

হটাৎ খাটটা নড়ে উঠলো।

এ তো দেখছি সমস্যা ! দেখাইতো যায় না। কোথায় রড দিয়ে মারবো?
ওটা কিছুক্ষণ কথা বলে চলে যায়।
তার চেয়ে বরং কথা বলে একে বিদায় করাই ভাল।

আবার কণ্ঠটি ভেসে আসলোঃ

কণ্ঠ: আমার কাছে একটি গাছ আছে
ভদ্রলোক: থাকলে থাক, আমার কি আসে যায়
কণ্ঠ: সেই গাছটা অনেক বড়
ভদ্রলোক: হোক বড় তাতে আমার কি
কণ্ঠ: অনেক পাতা
ভদ্রলোক: গাছ নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। আমি গাছ টাছ লাগাই না। তুমি চুপ করতে পারো?
কণ্ঠ: তোমার বয়স চল্লিশ না?
ভদ্রলোক: এই, তুমি কে? তোমাকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো?
কণ্ঠ: দেখতে পাবে
ভদ্রলোক: তোমার কথা শুনি অথচ দেখি না, সমস্যা না এটা?
কণ্ঠ: আমি দেখা দেবো সঠিক সময়ে
ভদ্রলোক: আমার বয়স জানো কীভাবে?
কণ্ঠ: সেটা পরে বলবো। আমার সেই গাছের প্রতিটি পাতায় নাম লেখা আছে
ভদ্রলোক: কিসের নাম?
কণ্ঠ: সবার নাম। যে পাতাটা হলুদ হয় আমার নজর সেটার দিকে
ভদ্রলোক: কেনো?
কণ্ঠ: পাতাটা যখন শুকিয়ে ঝড়ে পড়ে যায়, আমি যাই তার কাছে
ভদ্রলোক: যেয়ে কি করো?
কণ্ঠ: তাকে নিয়ে আসি
ভদ্রলোক: কে তুমি?
কণ্ঠ: মুসলমানরা আমাকে আজরাইল নামে চেনে
ভদ্রলোক: হিন্দুরা তোমাকে কী নামে চেনে?
কণ্ঠ: যম
ভদ্রলোক: তোমার সাথে আমার কথা বলার দরকার নাই। তুমি এক্ষুনি চলে যাও
কণ্ঠ: তোমার নাম যে পাতায় লেখা আছে সেটা হলুদ হয়ে এসেছে
ভদ্রলোক: ভাই, ঐ টেবিলের জগে পানি আছে। আমাকে এক গ্লাস পানি দিতে পারবেন? গলাটা মনে হচ্ছে শুকিয়ে গেছে
কণ্ঠ: কাউকে পানি দেয়া আমার কাজ না। আমার কাজ একটাই

ভদ্রলোক কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো, আচ্ছা! বুঝলাম। হলুদ না হলে কি তোমার ঐ গাছের কোনও পাতা ঝড়ে পড়ে?
কণ্ঠ: না, তবে অনেক পাতা বড় হওয়ার আগেই হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়ে
ভদ্রলোক: তোমার ঐ গাছের কোনও পাতায় কি তোমার নিজের নাম লেখা আছে?
কণ্ঠ: আছে
ভদ্রলোক: ঐ পাতাটার রঙ কি?
কণ্ঠ: সবুজ
ভদ্রলোক: ওটা কি কখন হলুদ হবে?
কণ্ঠ: হবে হবে
ভদ্রলোক: কখন?
কণ্ঠ: ওটা সবার শেষে হলুদ হবে
ভদ্রলোক: ওটা কি ঝড়ে পড়বে?
কণ্ঠ: পড়বে
ভদ্রলোক: তখন ঐ পাতাটা কে আনতে যাবে?
কণ্ঠ: সেটা কি তোমার জানা খুব প্রয়োজন?
ভদ্রলোক: হ্যাঁ, আমি জানতে চাই। আমার হাতে কিন্তু লোহার রড আছে। তোমার মাথায় মেরে আগে তোমার নাম লেখা পাতাটা হলুদ করে দেবো।
কণ্ঠ: ভয় নামক জিনিস টা আমাকে দেয়া হয় নি। আমরা ভয় পাই না।
ভদ্রলোক: ঠিক আছে বুঝলাম। আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। তোমার নাম লেখা পাতাটা ঝড়ে পড়লে ওটা কে আনতে যাবে?
কণ্ঠ: ঐ পাতাটাও আমিই আনবো
ভদ্রলোক: অর্থাৎ তোমার জান তুমি নিজেই কবোজ করবে?
কণ্ঠ: হ্যাঁ, আমিই করবো
ভদ্রলোক: জান কবোজ করার সময় মানুষ কেমন কষ্ট পায় তুমি জানো?
কণ্ঠ: কষ্ট নামক জিনিস টা আমাকে দেয়া হয় নি। আমার কাজ একটাই
ভদ্রলোক: আচ্ছা বলতো, তুমি একসাথে কতোগুলো পাতা নিতে পারো?
কণ্ঠ: ইসরাফিল শিঙায় ফুঁক দেওয়ার সময় যতগুলো পাতা থাকবে ততগুলো
ভদ্রলোক: কতো হতে পারে?
কণ্ঠ: পৃথিবীর ধারণ ক্ষমতা য্তো
ভদ্রলোক: পৃথিবীর ধারণ ক্ষমতা কতো?
কণ্ঠ: উনিশ-শত কোটি
ভদ্রলোক: এখন পৃথিবীতে সাত শো কোটি মানুষ আছে। যে হারে মানুষ বাড়ছে তাতে আগামি একশো বছরের মদ্ধ্যে যদি উনিশ শো কোটি মানুষ হয় তাহলে আর মাত্র একশো বছর পর কিয়ামত হবে?
কণ্ঠ: হিসাব নিকাশ করার কাজ আমাকে দেয়া হয় নি। আমার কাজ একটাই
ভদ্রলোক: তুমি যাওতো এখন, অযথা বকবক করো নাতো! হুদাই প্যাঁচাল পারে!
কণ্ঠ: ঠিক সময়ে দেখা হবে। তোমার নাম লেখা পাতাটা ঝড়ে পড়লেই আমি তোমার কাছে চলে আসবো। তখন তোমাকে দেখা দেবো। খোদা হা-ফেজ!

ভদ্রলোক খেয়াল করলো মোলায়েম কণ্ঠটা এখন আর শোনা যাচ্ছে না। পায়ে হাটার শব্দটাও এখন নেই। খুব পিপাসা লেগেছে পানি খাওয়া দরকার। শরীরটা পুরোই ঘেমে গেছে। ফ্যানের সুইচটা অন করা দরকার। কিন্তু উঠে লাইট জ্বালাতে হবে।
আবার কি পায়ের শন্দ শোনা গেলো নাকি? পানি-ফ্যান কিছুই লাগবে না। শরীর ঘামে ঘামুক। কাথা দিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে দিতে হবে। ফজরের আযান না শোনা পর্যন্ত আর চোখ খোলাই ঠিক হবে না।

কাচ্চি বিরিয়ানি

যা যা প্রয়োজনঃ
১, ২ কিলো ছাগলের মাংশ
২, ১ কিলো চাউল
৩, দেশি ১০/১২ টা বা বিদেশি ৩/৪ টা পিয়াজ
৪, ২০০ এমএল ঘি
৫, টেবিল চামচ আদা
৬, ২ টেবিল চামচ রসুন
৭, ১ টেবিল চামচ জিরা গুড়া
৮, ৬/৭টা এলাচ
৯, ৪/৫ টা ছোট টুকরা দারচিনি
১০, ২ টা তেজপাতা
১১, ৫/৬ টা লবংগ
১২, ১ চা চামচ ভাজা জয়ফল গুড়া
১৩, সামান্য ভাজা যৈত্রি গুড়া
১৪, ১ টেবিল চামচ শুকনা মরিচ গুড়া
১৫, ২০/২৫ টা কিসমিস
১৬, ২০/২৫ টা পেস্তা এবং আলমন্ড বাদাম
১৭, ৭/৮ টা আলুবুখারা
১৮, ২ টেবিল চামচ লবন
১৯, ১ টেবিল চামচ পুদিনা পেস্ট
২০, ৭/৮ টা কাচা মরিচ পেস্ট
২১, ২০০ এমএল টক দৈ
২২, ১০/১২ টা জাফরান পাপরি
২৩, ২ টেবিল চামচ কেওড়া জল
২৪, সামান্য জর্দা রঙ (আমি কেমিক্যাল রঙ এড়িয়ে চলি বলে কাওকে পরামর্শ দেই না)
২৫, ২ টেবিল চামচ সিরকা
২৬, ৪/৫টা আলু(ইচ্ছা হলে)
২৭, ১ টেবিল চামচ ভাজা জিরা গুড়া
২৮, ১ চা চামচ গোল মরিচ গুড়া
করনীয়ঃ
১, মাংশ ধুয়ে সামান্য একটু লবন এবং দুই টেবিল চামচ সিরকা মাখিয়ে ঘন্টা খানিক রেখে আবার ধুয়ে পানি ঝড়িয়ে নিন
২, অর্ধেক পিয়াজের বেরেস্তা ভেজে ঠান্ডা করে একটু বেটে রাখুন
৩, আলু ধুয়ে ছিলে একটু বড় করে কেটে ভেজে রাখুন
৪, অর্ধেক টক দোইয়ের সাথে, কাচা মরিচ, অর্ধেক পুদিনা পাতা, অর্ধেক জয়ফল যৈত্রি, ভাজা জিড়া গুরা, কেউড়া জল, জাফরান এবং গোল মরিচ গুরা মিশিয়ে রাখুন
৫, একটা গামলায় মাংশের সাথে বাকী সব মশলার অর্ধেক পরিমান নিয়ে মাখিয়ে ঘন্টা খানিক রেখে দিন
৬, এবার মাংশ চুলায় দিয়ে ভুনে নিন
৭, মাংশ গলে সেদ্ধ হলে নামিয়ে রাখুন
৮, যে পাত্রে বিরিয়ানী রান্না করবেন সেই ডেকচি চুলায় দিয়ে ঘি দিন
৯, ঘি গড়ম হলে পিয়াজ, লবন, তেজ পাতা দিয়ে হালকা বাদামী রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন
১০, এবার আদা, রসুন, গড়ম মশলা দিয়ে একটু কষিয়ে নিন
১১, মশলা কষানো হলে চাউল ছেড়ে সাবধানে নেড়ে কষিয়ে নিন
১২, চাউল কষানো হলে গড়ম পানি দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন
১৩, চাউলের পানি ফুটে উঠালে জ্বাল কমিয়ে দিন
১৪, পানি কমে চাউল পাটে পরলে ভেজে রাখা আলু সহ ভুনা মাংশ ঢেলে, মিশিয়ে রাখা টক দৈ উপরে ছিটিয়ে হালকা করে নেড়ে জ্বাল কমিয়ে মিনিট ১০/১৫ ঢেকে রাখুন, লবন দেখতে চাইলে এখন দেখে নিন
১৫, ঢাকনা খুলে দেখুন চাউল সেদ্ধ হয়েছে কিনা, না হলে আরো কিছুক্ষন ঢেকে রাখুন।
১৬, তলায় লেগে যাবার ভয় থাকলে ডেকচির নিচে তাওয়া দিয়ে তার উপর ডেকচি বসিয়ে দিন
যাদের ওভেন আছে তারা আগে থেকে ১৮০ ডিগ্রী সেঃ তাপে ওভেন গড়ম রেখে তার ভিতর ডেকচি সহ ঢুকিয়ে মিনিট দশেক দরজা বন্ধ করে রাখতে পারেন।
১৭, এবার শক্ত কাঠি দিয়ে হালকা করে নেড়ে ঝর ঝরে দিন।
আশা করি এতোক্ষনে কাচ্চি বিরিয়ানি হয়ে গেছে। এবং বিরিয়ানির ঘ্রানে অতিথীদের ক্ষুধা বেড়ে গেছে, আর অপেক্ষা করা যাচ্ছে না, শামি কাবাব, বোরহানি, স্যালাদের সাথে পরিবেশন করুন।
বিঃদ্রঃ বিরিয়ানি রান্নার বিভিন্ন রকম কৌশল দেখেছি বিভিন্ন দেশে। আমার কাছে এটাই সবচেয়ে সহজ এবং সুস্বাদু মনে হয়েছে তাই দিলাম। ভারতের কোলকাতায় এক রকম, কেরালা বা মুম্বাইতে আর এক রকম। আবার ওদিকে ইরানে একরকম পাকিস্থানে আর এক রকম আবার সৌদি আরব, সোমালিয়াতে সম্পুর্ন ভিন্ন রকম। এখানে যেটা দিয়েছি এটা আমি আমার শাসুরির কাছে শিখেছি উনি আবার এটা শিখেছিলেন পাকিস্তান থেকে, আমার শসুর যখন ওখানে চাকরী করতেন। কাজেই কারো মনে কোন সন্দেহ দেখা দিলে আমাকে জানাবেন তবে আমি এ ব্যাপারে কোন বিতর্কে যেতে চাইনা, তবুও অনুরোধ করছি কেও যদি ভিন্ন মত পোষন করেন তা হলে দয়া করে আমাকে জানাবেন। রান্না বান্না আমার নেশা, নিত্য নতুন কিছু শিখতে আমি সব সময়ই আগ্রহী।

ফিরে দেখা একাত্তর ও আজকের বাংলাদেশ অতীত এবং বর্তমানের এপিঠ ওপিঠ

এই দেশ কোনো রক্ষীবাহিনীর না একাত্তরের পুনরাবৃত্তি ঘটবে বাঙালি সেটা দেখে আঙ্গুল চুষবে সেটা আর হতে পারেনা! এদেশের কোটি কোটি জনগন সাক্ষী একরামুল কমিশনার নির্দোষ অপরাধীরা তাঁর বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে একজন মানুষের মৃত্যুর পরওয়ানা হুকুমদাতা কেউ দিতে পারেনা; জনগনের চেয়ে বড় বিচারক আরকি পৃথিবীতে আছে? তাহলে আর দেরী কেন!

এদেশের ২০ কোটি মানুষ যখন বলছে, এটা অন্যায়, জনগন যদি বুঝতে পারে ভিকটিম নির্দোষ ক্রসফায়ার একটা স্রেফ রাজকীয় নাটকীয়তা জনগন যদি হয় সঠিক ও নিষ্ঠাবান তদন্তকারী তাহলে অপরাধী কে সেই রায় যখন জনগন দিতে পেরেছে। তাহলে কিসের জন্য দেরী করা হচ্ছে? এখন দরকার হুকুমদাতা আর খুনিদের। খুনি ও খুন আর হুকুমদাতা একই। ভিকটিম শুধু বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে কেন? সাধারণ মানুষের যদি জীবনদাতা কেউ না হতে পারে তাহলে খুন করার হুকুমদাতা কে? এদেশের সাধারণ জনগন তাঁদের দেখতে চায়।

হে আবাল বাঙালি তোমরা সাবধান থেকো, সাবধান বাঙালি সাবধান; রক্ষীবাহিনী আবারও ফিরে এসেছে। আমাদের সামনে আরেকটি একাত্তর। একাত্তরের সেই দাঁতাল গোপন হত্যাকারীদের এখন পুনরুত্থান ঘটেছে। লড়াই করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আপনার বেঁচে থাকার অধিকার কেউ মৃত্যুর পরোয়ানা দিয়ে কেড়ে নিতে পারেনা। প্রকৃতি প্রদত্ত জীবনের মুল্য কেউ দিতে পারবেন একটি জীবন সৃষ্টির উপাখ্যান যেমন কেউ তৈরি করতে পারেনা তেমনি একটি প্রাণের হত্যার হুকুমদাতা কেউ হতে পারেনা লড়াইই করার জন্য প্রস্তুত হোন কয়েক হাজার দাঁতালের কাছে বিশ কোটি মানুষ জিম্মি থাকতে পারেনা। কয়েক হাজার দাঁতালের জন্য বিশ কোটি মানুয কোনো অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেনা।

একজোট হও রুখে দাঁড়াও আর রুখে দাও সাহস না করলে জয়ের স্বাদ পাওয়া দুরূহ আরেকবার পাগলাটে হও কাঁপিয়ে তোলো অপরাধীর ভীত।

একটাই তুমির জন্য

শ্রতি,
গল্পটা আমার জীবনের,সেখানে একটা চরিত্র সে তুমিই….
যদিও তুমি হলে,অন্য সব প্রেমিকের মনে বেড়ে ওঠা হাজার তুমি থেকে আলাদা…
কেননা,আমার গল্পে আমি তোমার প্রেমিক নই বা তুমি আমার প্রেমিকা নও…
তাহলে গল্পের এই তুমিটা আসলে কে….!
তুমি আসলে আমার ভালোলাগা একটা মুখ, বাকিটুকু কল্পনা… কথায় আছে তো, মানুষ বাঁচে কল্পনায়। ঠিক তেমনই আমি, আমি বেঁচে আছি হাজারটা না বলা কথা নিয়ে,তুমি নামক এক চরিত্র নিয়ে…
ভালো আছি, ঠোটের কোনে এক চিলতে মিষ্টি হাসি নিয়ে- মিথ্যে ভালো থাকার অভিনয়ে…..

ASOK - (2)

অশোক সমগ্র

বাংলাদেশে ৩ ধরনের অশোক ফুল আছে।

সাধারন “অশোক” ফুল হয় লালচে কমলা রঙ্গের থোকায়।

“হলুদ অশোক” বা “স্বর্ণ অশোক” এর রং হলুদ আর সাধারান অশকের চেয়ে কিছুটা ছড়ানো।

“রাজ অশোক” বা “উর্বশী” ফুলের রং লাল, ঝালরের মত ঝুলে থাকে।

এই ৩টি অশোক ফুলই দেখার এবং ছবি তোলার সৌভাগ্য আমার হয়েছে।

মজার বিষয় হচ্ছে এই তিনটি ফুল ছাড়াও আরেকটি গাছ আছে যাকে অশোক গাছ বলা হয়। আপনারা সবাই তাকে চিনেন। তার নাম “দেবদারু”। দেবদারু গাছের আরেক নাম “False ashoka tree” or “Ashoka tree”।

ফুলের নাম : অশোক

সংস্কৃত : ashoka, Sita-ashoka, anganapriya, ashopalava, ashoka, asupala, apashaka, hemapushpa, kankeli, madhupushpa, pindapushpa, pindipushpa, vanjula, vishoka and vichitra
ইংরেজি ও কমন নাম : Ashoka, Sorrowless
বৈজ্ঞানিক নাম : Saraca indica
ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ০৬/০৩/২০১৭ ইং

ফুলের নাম : হলুদ অশোক

অন্যান্য নাম : স্বর্ণ অশোক
ইংরেজি ও কমন নাম : Yellow Ashoka and Yellow Saraca
বৈজ্ঞানিক নাম : Saraca thaipingensis
ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, ময়মনসিংহ।
ছবি তোলার তারিখ : ০৮/১২/২০১৭ ইং

ফুলের নাম : রাজ অশোক

অন্যান্য নাম : উর্বশী
ইংরেজি ও কমন নাম : Pride of Burma, Orchid tree, Tree of heaven
বৈজ্ঞানিক নাম : Amherstia nobilis
ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বলধা গার্ডেন, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ১৬/০৩/২০১৭ ইং

গাছের নাম : দেবদারু

ইংরেজি ও কমন নাম : False ashoka tree, Ashoka tree
বৈজ্ঞানিক নাম : Polyalthia longifolia
ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর, ঢাকা।
ছবি তোলার তারিখ : ০৬/০৩/২০১৭ ইং

ভেজিটেবল রাইস

ছবিঃ শব্জী পোলাও, এখানে কিছু চিংড়ী মাছ দেয়া হয়েছে।

শব্জী পোলাওঃ
যা যা প্রয়োজনঃ ৫০০ গ্রাম পোলাওর চাউল, শব্জি (মটর সুটি, ফুল কফি, আলু, গাজর) ৭৫০ গ্রাম, ঘি ১০০ গ্রাম, একটা তেজপাতা, ৩/৪টা এলাচ, ৩/৪টা লবঙ্গ, ছোট ৩/৪ টুকরা দারচিনি, ৪/৫টা পিয়াজ কুচি, আদা রসুন পেস্ট এক টেবিল চামচ, লবন প্রয়োজন মত (এক টেবিল চামচ), আধা চা চামচ গোল মরিচের গুড়া, ৭/৮টা কাচামরিচ।

করণীয়ঃ
শব্জী গুলি ছিলে ধুয়ে টূকরা করে গরম পানিতে ৪/৫ মিনিট সেদ্ধ করে নিন।

ডেকচিতে ঘি দিন, গরম হলে অর্ধেক পিয়াজ বেরেস্তা করে বেরেস্তা গুলি তুলে রাখুন। শব্জী গুলি হালকা ভেজে আলাদা করে তুলে রাখুন। দেখুন যথেষ্ট ঘি আছে কি না, দরকার হলে আরও একটু ঘি নিন, গরম হলে গরম মশলা গুলি দিয়ে দিন সাথে লবন, তেজপাতা, আদা রসুন দিন, চাউল কষিয়ে নিন। এবার চাউলের দ্বিগুন পরিমান গরম পানি ঢেলে দিয়ে শব্জী মিশিয়ে একটু হালকা নেড়ে জ্বাল কমিয়ে ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ পর পানি কমে চাউল যখন পাটে পরবে তখন উপরে কাচা মরিচ ছড়িয়ে দিয়ে আবার ঢেকে রাখুন, জ্বাল আরও কমিয়ে একেবারে মৃদু করে দিন। ১৫/২০ মিনিট পর আবার ঢাকনা খুলে দেখুন, চাউল গলে গেলে বেরেস্তা আর একটু কেওরা জল ছিটিয়ে দিয়ে মিনিট ৩/৪ ঢেকে রাখুন, জ্বাল নিভিয়ে দিন। আপনার শব্জী পোলাও রেডি। যে কোন মাংশের সাথে পরিবেশন করুন।

ইফতারির উপযুক্ত (এখানে সব শব্জীর পরিবর্তে শুধু মটর সুটি দিলেই তা হয়ে যাবে মটর পোলাও) এই একই ভাবে শব্জীর পরিবর্তে আপনি ছোলা সেদ্ধ করেও দিতে পারেন।