বিভাগের আর্কাইভঃ সাহিত্য

দাঁড়িয়েছো বৃষ্টিতে, অথচ ভিজে যাচ্ছো না

যারা পেয়ে যায় আন্তর্জাতিক প্রবেশাধিকার শুধু তারাই বলতে পারে আমার
কোনো দেশ নেই। পৃথিবী স্বদেশ আমার- এমন উচ্চারণে কাব্যপংক্তিমালায়
কন্ঠ মিলায় কবিও। আর প্রকৃতই উদ্বাস্তু যারা, তারা একটুকরো ভিটের স্বপ্ন
দেখে কাটিয়ে দেয় ভিনগ্রহের জীবন। মার্কিনী নীল পাসপোর্ট পাবার পর যাদের
জন্য উঠে গেছে সিংহভাগ রাষ্ট্র সীমান্তের ব্যারিকেড, তারা বলতেই পারে তাদের
নাম বিশ্বনাগরিকের খাতায়। উড়ে যেতে পারছে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে।
এক দেশ থেকে অন্য দেশে-ভিসাপত্রহীন।এসব দৃশ্যবিন্দু দেখতে দেখতে যে তুমি
বৃষ্টিতে দাঁড়িয়েছিলে- আমি দেখছি, ঠিক সেখানেই দাঁড়িয়ে আছো। অথচ ভিজে
যাচ্ছো না। বর্ষণকন্যারা ছুঁতে পারছে না তোমার আঙুল। তোমার চিবুকে,
চুম্বনরেখা এঁকে দিতে পারছে না কোনো বজ্রপুত্র। আর সমান্তরাল বৃষ্টির ছায়াগুলো
ঝরে পড়ছে, পৃথিবীর সব মানুষের উপর।

নিদ্রা

fgh

দীর্ঘ অনিদ্রার পর ঘুমাতে যাই
কাঙ্ক্ষিত নিদ্রার কোলে ঢলে পড়লে
আমিও পেয়ে যাই নির্ভার গমন
জ্যোৎস্না…. জল… নদী
ডুবসাঁতারে পৌঁছে যাই অতলে
সুরম্য প্রাসাদে
ডুবেই থাকি আরেকবার না পাই যদি!…

জিতে যাবার উৎসব

বসে থেকো ঘড়ি, দেয়ালের কাছ থেকে পৃথিবী।
এখানে সবাই লাফিয়ে পড়ে। সাম্রাজ্য দাগে…
সেসব পুঁই ডগার মতো; রিভার্স করে। বাজি ধরে।
একে একে জিতে যাবার উৎসবে, থিয়েটারপ্রেমী।
ছায়ার পেছন থেকে যাত্রা গোছাতে ঠাণ্ডা কুয়ো
নিজেকে আরো খুঁড়তে থাকে, কলে-কব্জায় এসে
তুমি বরং বাহন সাজো, সকলে চড়ে বসুক। তন্দ্রায়…

.
১১ জুন ২০২৩

ওগো সুকন্যা

তুমি কোন দেবতা প্রেরিত ওগো সুকন্যা ?
সুরেলা গানে স্পর্শ করে যাও আমাদের শহর
এতদিন তোমায় বালিকা ভেবে অন্য এক
অপরাজিতা ফুলের সাথে সম্বচ্ছরের প্রেম।

এই যে তুমি ফুলের মত হেসে হেসে ওঠো,
নির্জনতার প্রহরে টুপটুপিয়ে চাঁদের আলোয়
নক্ষত্রদের জেগে ওঠা দেখতে অভ্যস্ত আমি
মধ্যরাত্রে মোমবাতি প্রহরে নেশা খুঁজে ফিরি।

জানো না কোনো সদ্যজাগা প্রহরে তোমায়
ছোঁব বলে তোমার ছবি কর্নিয়াতে গেঁথেছি?
আর সেই মুহূর্তেই একটি শুকতারা তোমায়
চোখ থেকে খুলে নিয়ে আলোয় ধুয়ে নিল।

জানলা দিয়ে হাত ছুঁয়ে যায় সোনা রোদ্দুর,
বিটপী শাখায় তোমার মুখটি যেন পদ্মফুল,
আনমনে তোমার ঠোঁটে আল্পনা এঁকে নি,
অবশিষ্ট রসটুকু চোখের পাতায় ছুঁয়ে দিই।

সুকন্যা, পাললিক শিল্পের শেষ প্রতিভাস
তোমার শরীরেই লিখে রাখবে আমার স্বপ্ন।
সাগর ছেঁচে পাওয়া যে মুক্ত, তোমার চুলে
কাঁটার সাথে জড়িয়ে নেব শেষবারের মত।

দৃশ্যতঃ

আজ তোমাকে সাগর দেখাতে নিয়ে যাব
বাড়ীর পাশে যেমন দেখছ তেমন নয় মোটেও
সিগারেটে আচমকা হাত লেগে যাওয়া অনুভুতির মত
তোমার চোখেও ভয় জাগবে
এ জন্যেই গুরুজনেরা বলেন, সাগর দেখে খুশি হবার কিছু নেই
ও তো এক লহমায় উড়িয়ে নেবেই সব
কেবল ডুববে তুমি—

না হয় চলো তোমাকে পাখির পালকে লুকানো পোকা দেখাই
একটু একটু করে কেমন কেটে দেয় শক্ত মায়া
তুমি যেমনটা ভাবো, এ কিন্তু তেমন নয় মোটেও
যে কোন পোকাতেই রেশম হয় না
রঙের ঝিলিক দেখতে চাইলে কূল ছাপানো বন্যা দেখাই ভাল
কীটের যোগ্য শাস্তি কীটকুলেই আছে
তুমি পাখির পালকে লেপ্টে থেকে দুঃখ ভুলে যাও।

চাইলে তোমাকে দেখাতে পারি আকাশের শূন্যতা
রঙধনুর বিবর্ন আলো আর বুনো মহিষের মাতাল দৌরাত্ম্য
কিছুই দেখানো হয় না—সব ভুলে তুমি যাও সাগরের দিকে
আমি চেয়ে চেয়ে দেখি লোনা ফেনায় গলে যাওয়া ঐ শূন্য অবয়ব।

দুপুর ও দীনতা

পাতাগুলো ফুটে আছে, ফুটবে ফুলও
ভালোবাসায় তুমি মোচন করে দেবে আমার ভুলও
অথচ আমি সারাজীবন সাধনা করেছি ভুল সমুদ্রের গান-
তবে কি ঢেউগুলো ছিল, আমার চেয়ে আরও পাষাণ!

তবে কি এই ভবের ইন্দ্রজালে
মেঘ প্রেমিকা হয়ে সূর্যকে, ঢেকেছিল আরাধ্য সকালে
আর তুমি ছিলে তার সহযাত্রী – সখি
আমিতো তোমার ছায়া ভেবেই, জড়াতে চেয়েছি দুপুরের পাখি।

দীনতার মিছেঘোরে, পারিনি অনেক কিছুই ভবে
তবু বলি- পাতা ও পুষ্পের মায়া একান্ত আমারই র’বে।
#

বিশ্বাস

নিজের ওপর নজর রেখো
চুরি হতে পারে হরিণী চোখ
গোলাপি ঠোঁট
দুরন্ত ইচ্ছে
পাখি মন।

নিজের ওপর নজর রেখো
নষ্ট হতে পারে জীবন
কষ্ট পেতে পারে মন।
বিশ্বাস বাঁচিয়ে রেখো
যে হাত ধরেছো তুমি সে হাত মানুষের।

আমি হিংসা পূজারী নই
নিরীহ পাখির মতো যার স্বভাব
নষ্ট পথের ধুলি তাঁর জন্যে নয়।

দেহের কান্না

kanna

আকাশের গায়ে মেঘ বৃষ্টি নাই
কাঁদতে ভুলে গাছে- তাই চোখ
আর কাঁদে না! দেহ জুড়ে যত
কান্নার স্লোগান; প্রভুর প্রেমে
শোকাহত- হইতো এভাবেই
চলছে- মেঘ বৃষ্টি নাই- বৃষ্টি নাই
শুধু শুধু প্রেম সাগরে বালুচর
এই দেহের চারপাশ পুড়া তাপদাহ
কৃত্রিম বাতাসও বন্ধ মহাবিপদ
প্রভু তুমি ছাড়া বাঁচার সাধ্য নাই
রক্ষা করো, থামাও এই দেহের কান্না!
বাতাস দাও মেঘ বৃষ্টি শান্তির কয়লা।

২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ০৭ জুন ২৩

একটা বিকেল

একটা পাখি গোলাপ চুরি কইর‍্যা
দূর আকাশে উইড়্যা যায়…
বিস্তীর্ণ নীলের ভেতর; মৃত কুয়াশা
কাচ ঘামানো মেঘ কোনো এক
ধানখেতের মাঠ ঘাসের মতো
সেখানে-সারাদিনক্ষণ ফিসফিসে
রাজকন্যার হাত, নারীর মতো রূপ
মুক্ত হাসি বন-নগরে; চারদিকে খুব

ভিন্ন ভাষা-আচার রুচি একেবারে
ভীষণরকম মিল স্নিগ্ধ বৃষ্টির মতো
নেমে আসে ঘুমহীন লেবুর গন্ধ, রাই-
আলো ছড়ায়ে যায় বর্ণতরী চিল!

.
৭ জুন ২০২৩

তবুও জন্মমাটির দিকে

কালঝড়ের প্রশাখার দিকে তাকাই। আজ মন
ভালো নেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি কন্যার। কয়েক দফা
গুড়িগুড়ি বৃষ্টির পর খুব মন ভারী করে আছে আকাশ
পাখিদের নীরবতা দেখে, অনুমান করছি – পৃথিবীর
অন্য কোথাও এই ঝড় রেখে যাচ্ছে তার দাগ,
মানুষ ছুটছে, মানুষ ছুটছে, মানুষ ছুটছে…

নীরব আরাধনায় যেখানে বসে আছেন আমার মা,
আমি ফিরে তাকাচ্ছি সেই মাটির দিকে।
‘মোরা’ কোনও আর্তনাদ দেখতে চাই না আর-
বলতে বলতে আমিও কাঁপছি,
প্রকৃতি হে,
তুমি প্রেমময় হও, তুমি আমাদের হাত ধরো পুনরায়।

দূরের গাঁয়ে আকাশ পড়েছে নেমে

vv

ক্ষেতের আলে হেঁটে আকাশে তাকাই
ঐ যে দেখ আকাশ পড়েছে নুয়ে
ঐ দূরের গাঁয়ে, চলো আকাশ ছুঁয়ে আসি।

মেঘগুলো ঐ যাচ্ছে উড়ে
থাকছে না আর এ আকাশে,
চলো মেঘদের করি তাড়া
ফিরিয়ে নিয়ে আসি আমাদের আকাশে।

যদি হাঁটতে না লাগে ভালো
চলো মেঘের ভেলায় রাখি পা
ভেসে যাই দুজনে আজ, দূর বহুদূরে,
যেখানে কেবল শুভ্র মেঘেদের মেলা বসেছে।

এই দুপুরে গা বেয়ে চলো উঠি
শুভ্র মেঘের পিঠে
নীল ছুঁয়ে ভেসে বেড়াই এ আকাশ হতে অন্য আকাশে
কিছু মুগ্ধতা রেখে দিয়ো বুক পকেটে।

সময় তো থামছে না, আমরাও যাই সময়ের পিছে
গিয়ে দেখি কোথায় গোধূলিয়া হাসে
কোথায় শুভ্র মেঘগুলো হয়ে গেলো রক্তিম
একটুখানি রঙ আভায় আমাদের মন করে নেই রঙ্গিন।

.
(স্যামসাং এস নাইন প্লাস, চুনারুঘাট)

পর্ব

একদিন গাছগুলো বিশ্রামের কৌশল শিখবে।
রোদ শেষে, শরীরে জড়ায় রাখবে সমস্ত ঘুম
সন্ধ্যার ট্রেন চেপে পার হবে ধানপাকা মাঠ
অন্ধ বাঁদুড় একসঙে উড়বে, দূর থেকেও চাঁদ
আশ্চর্য সবকিছু। অথচ কোনো এক গলিতে
আলাদা হবার ভ্রমণ লেগে থাকবে। সমতলে-

তুমি ঢুকে পড়বে, কাচ জারের কিছু মাছ
আলাপ নিয়ে, আর বেড়ালের তাড়া খেয়ে
ওসব গ্রন্থাগারিকে পাঁচদিন লিখতে থাকবে
ম্যাগাসিটি ম্যাগাজিনের অচেনা শিরোনাম।

কেউ জিতে যাবে একটা উৎসুক পর্ব এনে
এসবে মুখোমুখি তিনটে মিনিট বসতে গিয়ে
সেদিনও সন্ধ্যা ছাড়াই বৃষ্টি নেমেছিল কেবল
তাতে লেগেছিল দুপুর, গুনে রাখা তীব্র তাপ!

পাতারা বুড়ো হয়ে যায়

ddg

তোমার আমার মতই পাতারাও বুড়ো হয়ে যায়,
হলুদ কমলা পাতা হৃদয় তারে বিষাদের বাজনা বাজায়,
মনে হয় এই বুঝি সময় এলো ফুরিয়ে,
এই যেটুকু সময় আছে বাকী, এসো প্রেমে ভালোবাসায়
নেই মন জুড়িয়ে!

পাতারা তবুও দোলে হাওয়ার প্রেমে
পাতারাও বিমর্ষ হয় বুঝি, রোদ্দুর আসলে নেমে?
তুমি যেন চৈত্রের রোদ্দুর, মাথার উপর জ্বলো,
এমন খাঁখা মনে প্রেম থাকে? বলো তুমিই বলো?

হলুদ কমলা পাতার উপর লিখা আছে আয়ূ
হাওয়ার বেগ বাড়লেই পাতা ঝরবে বন্ধ হবে তাদের স্নায়ু।
পথিকের পায়ের তলায় সুর তুলবে ওরা মর্মর
সবাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তুমি আমিও হবো তাই
আমরা তো কেউ নই অমর!

এত অল্প আয়ূর জীবন নিয়ে আছি এখানে
কেন বলো তো বিষাদের মেলা বসিয়েছি মনের দোকানে
ক্রেতা হও তুমি বিষাদ কিনো কিছু
অযথাই কেন দৌঁড়াচ্ছো সুখের পিছু।

আমি ছাড়া তোমার সুখ কীসে শুনি, কড়িতে?
কী হবে এত বিত্ত বৈভবে, চোখ রাখো তো দেয়াল ঘড়িতে
নিমেষেই উধাও করে দিয়ে সময় ঘড়ি
হয়ে ওঠে যেন আমার বিষের বড়ি।

তুমি আমি যেন এখন লাল কমলা পাতা
ফুরিয়ে যাবো, তবুও খুলছি না কেন প্রেমের খাতা?
কিছু ভালোবাসার কথন মন উঠোনে গেঁথে দাও
অযথাই বুক দেয়ালে বিষ কথার কাঁটা বিধাও।

(ক্যানন ৬০০ডি, জিন্দাপার্ক, নারায়ণগঞ্জ)

আদার ব্যাপারীর জাহাজ কেনা

ddfg

যেদিন থেকে ব্যবসা খুলে
হোন ব্যাপারী আদার
সেদিন থেকে জাহাজ কেনার
শখ যে ছিলো দাদার!
আদার ব্যাপার করে তো আর
জাহাজ যায়না কেনা
নুন আনতে পান্তা ফুরায়
বাকি লেনা-দেনা!

আদার ব্যাপারীদের নিতে–
নাই জাহাজের খবর
দুঃখ বুকে চেপে দাদা
বরন করে সবর।
হঠাৎ করে আদা হলো
পাঁচশ টাকা কেজি
খুশির ছুটে দাদা ফোনে
করছে হ্যেঁ জি, হ্যেঁ জি।

আদার ব্যাপার করে ও যে
জাহাজ কেনা যায়
গতকালের ঐ দাদারে
আজকে চেনা দায়।
পাঠ্য বইয়ের প্রবাদ বাক্য
ভুল’ বলেছেন দাদা
তখন থেকেই স্বপ্নে বিভোর
আরো কিছু গাধা।

সংশোধিত গ্রহতন্ত্র

মানুষের কাতারে দাঁড়াবার দৌড়ে আমি বারবারই পরাজিত হই।
আমার শয়নকক্ষে যে অর্ধভাঙা ঝাড়বাতি দু’দশক থেকে ঝুলে
আছে, তা বদলাবার সাধ্য আমার জুটেনি এখনও। তাই মাঝে
মাঝে বাতিটির অর্ধ আলোয় নিজেকে চিনতে বার বার ভুল করি।
নিজস্ব কোনো ইমেজ না থাকায় কখনও ঢেউ, কখনও ধ্বনির কাছ
থেকে ধার নিই উত্থান অথবা পতনের সর্বশেষ সংজ্ঞা।

যে ঘরের সামনে আমি এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছি, এই ঘরের
বা’পাশে বহুকাল আগে একটি গ্রহগাছ ছিল। সে গাছের ছায়ায়
দাঁড়িয়ে যে কয়েকজন বালক-বালিকা বাল্যশিক্ষার পাঠ নিতেন,
তাদের একজন ছিলেন আমার প্রপিতামহ। তার রোজনামচা পড়ে
জেনেছি, গাছটি নিজের পাতায় ধরে রাখতো গ্রহণকাল। তাই
গাছটিকে ‘গ্রহগাছ’ বলেই আখ্যা দিয়েছিলেন পাড়া-প্রতিবেশী।
এটাও জেনেছি, সেকালের মানুষ আলোর উৎস সন্ধানে খালি পায়ে
হাঁটতেন মাঠের পর মাঠ। গ্রামের পর গ্রাম।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি যখন গ্রামশূন্য ভূখণ্ডের মধ্যপ্রদেশে দাঁড়াই—
তখন দেখি, দু’টো পালকহীন পাখি আমার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে।
চামড়াশূন্য মানুষের দৌড়দৃশ্য আবারও আমার চোখে ভাসে। যারা অন্ধকারকে
স্বাগত জানিয়ে নগর থেকে আলোবিন্দুকে বিদায় জানিয়েছিল—
তাদের প্রতি আমার করুণা হয়।

জগতে যারা গ্লানি কিংবা ধিক্কারের করুণা নিয়ে বাঁচে, তারা কি
আদৌ কোনোদিন দৌড়াতে পারে !

আমি পুনরায় দৌড়াবার জন্য পায়ের পেশিগুলো শক্ত করতে থাকি।
দেখি— আমার প্রতি ধেয়ে আসছে অন্ধকার। যে সংবিধান মানুষের
কল্যাণে নিবেদিত হবার কথা ছিল— তার শরীরের ক্ষত দেখে আমি
আঁতকে উঠি। যুথবদ্ধ সংশোধনী হরণ করেছে আমার চেতনার স্বাধীনতা।
মৃত্তিকায় নত হবার প্রগাঢ় মূল্যবোধ।

আমি সবগুলো সংশোধনীকে অমান্য করে একটি গ্রহের ঈশান কোণের
দিকে দৌড়াতে থাকি। আমার রক্তের পরতে পরতে বাজতে থাকে
সংঘর্ষ বিষয়ক দ্বৈত সেতার।