বিভাগের আর্কাইভঃ দেশ

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরঃ কিছু তথ্য কিছু প্রতিক্রিয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতার সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে বিএনপি এবং সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো নানা ধরনের কথা বার্তা বলছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ইতিমধ্যে এটিকে ‘দেশ বিক্রির চুক্তি হিসেবে’ অভিহিত করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে এ নিয়ে তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না।

শেখ হাসিনার সফরের আগে বাংলাদেশের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়েছিল, কারণ, বাংলাদেশে সাবমেরিন পৌঁছানোর পর যেভাবে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসে চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং একের পর এক ভারতীয় কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর শুরু করেছিলেন, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। ফলে জনমনেও এ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা আছে।

এদিকে অন লাইনেে নানা সূত্র থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানো নিয়ে উঠেছিলো বিতর্ক। ভারত সরকার প্রথমে প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তরুণ বাবুল কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প প্রতিমন্ত্রী। ভারতের মৃলধারার জনপ্রিয় বাঙালি গায়ক। ‘কহনা পেয়ার হ্যায়’ গানটির জন্যে রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। এতে ঠো’ট মিলিয়েছিলো বলিউড তারকা ঋতিক রওশন। অভিনেতা রাকেশ রওশনের সন্তান, সন্জয় খানের সাবেক জামাতা। গায়ক-রাজনীতিক বাবুল সুপ্রিয় পশ্চিমবঙ্গের সন্তান, সাবেক ব্যাংকার।মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী’র ‘তারকাদখল’ প্রকল্পমুক্ত সৌখিন রাজনীতিক। বিজেপির ‘তারকা-আহরণ’ প্রকল্পের বঙ্গবাহাদুর। বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার বিশেষ ভক্ত। ।

গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। বাঙালিত্ব ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবেই ভারতের নীতিনির্ধারকেরা তাকে গুরুত্ব দিয়েছিলো। ভেবেছিলো, বাঙালি জাতীয়তাবাদের নেত্রী তাতে বিগলিত হবেন। কিন্তু বাংলাদেশের নীতি-নির্ধারকেরা তাতে বিরাগভাজন হয়েছিলেন!

অবশেষে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

একটি অন-লাইন পত্রিকা জানায় বাংলাদেশ- ভারতের সামরিক সমঝোতা স্মারকটি নিয়ে নানা কথাবার্তা হলেও এই সমঝোতা স্মারকে আসলে কি আছে- তা নিয়ে স্পষ্ট করে কেউ কোনো কথা বলেনি। ঢাকা ও নয়াদিল্লীর বিভিন্ন সূত্রে যোগাযোগ করে সমঝোতা স্মারকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে ।
প্রাপ্ত তথ্যগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে দুই দেশের সামরিক খাতে ৬টি বিষয়ে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে :

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতা (লাইন অব ক্রেডিট)
(২) সামরিক সহযোগিতা
(৩)যৌথ প্রশিক্ষণ উদ্যোগ ও বিনিময়
(৪) প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা
(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা
(৬)উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা

(১) সামরিকখাতে ঋণ সহযোগিতার আওতায় ভারত বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহযোগিতা দেবে। এই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ ভারত থেকে যে কোনো ধরনের সামরিক সরঞ্জামাদি কিনতে পারবে বলে সমঝোতা স্মারকে উল্লেখ করা হয়েছে।

সচেতন লোকেরা বলাবলি করছে,
৫০০ কোটি ডলার ইন্ডিয়া থেকে সুদে ধার নিয়ে ইন্ডিয়ার “গার্বেজ” কিনে আনা চুক্তির একটি শর্ত ?? একটি স্বাধীন দেশ কখন আর্মস কিনবে, কার কাছ থেকে কিনবে সেইটা ঠিক করের দেবে আরেকটি দেশ ??? গদি রক্ষার দালালী আর কারে কয় ?/

(২) সামরিক সহযোগিতায় বলা হয়েছে, নিজেদের দক্ষতা এবং কর্মপরিধি অনুসারে আন্তর্জাতিক আইন, নিজ নিজ দেশের জাতীয় আইন ও পরিস্থিতির আলোকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।

(৩) যৌথ প্রশিক্ষন উদ্যোগ ও বিনিময় সহযোগিতায় বলা হয়েছে,
ঢাকার সূত্রগুলো অবশ্য বলছে, এর অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে এখনো অনসৃত হচ্ছে। সমঝোতা স্বারকের ফলে এগুলো নিয়মিত এবং দাপ্তরিক কার্যকমের আওতায় চলে আসবে।

(৪) প্রতিরক্ষা শিল্পখাতের সহযোগিতায় যৌথ উদ্যোগের (জয়েন্ট ভেঞ্চার) মাধ্যমে পরষ্পরকে প্রতিরক্ষা শিল্পখাতে সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

(৫) প্রতিরক্ষা গবেষনা সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ এবং ভারত পরষ্পরকে সহযোগিতা করতে পারে। প্রশিক্ষণ,তথ্য বিনিময় এবং সংশিল্ট বিজ্ঞানী প্রকোশলীদের সফর বিনিময়ের মাধ্যমে এই সহযোগিতা হতে পারে।

(৬) উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা হিসেবে বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার পর্যায়ে বৈঠকঅনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিরক্ষা সচিব পর্যায়ে বৈঠক করে সামরিক ইস্যূ নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে মমতা ব্যানার্জির অনেক গুণ; এই মহুর্তে উনি পশ্চিম বংগের চীফ মিনিস্টার; কমপক্ষে ৬/৭টি মিনিস্ট্রি উনার অধীনে; তিনি তৃণমুল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা; এর আগে অনেক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ছিলেন; চুরিধারীর অপবাদ নেই; কঠিন জীবন যাপন করেন; নিয়মিত ব্যায়াম করেন, সাধারণ কাপড় পরেন, সুন্দর বক্তৃতা দেন, ভালো খান; পাক-ভারতের রাজনীতিতে আদর্শ।

উনি হয়তো এখনো টের পাননি যে, উনি মিথ্যা কথা বলেছেন, “তিস্তায় পানি নেই”; উনি গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে পানিকে গংগায় নিয়ে গেছেন; সবাই জানে, মোদীও জানে। সবাই জানার পরও কিভাবে এত দায়িত্বশীল, এই আদর্শবাদী মহিলা মিথ্যা বললেন?

সবমেরিন যুগে বাংলাদেশ

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সত্যি কি এগুচ্ছে? প্রশ্ন হচ্ছে কোনদিকে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। রজনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ ইত্যকার নানাবিধ প্রশ্ন তোলা যায়। তবু আমরা কিছু দিকে এগুচ্ছি বই কি। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ এটা এখন বাস্তবতা। উন্নয়নের নবযাত্রা এখন জয়যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। সাবমেরিন যুগে পদার্পন করেছে বাংলাদেশ।

সাবমেরিনের ইতিহাসঃ

ডুবোজাহাজ (ইংরেজি ভাষায়: Submarine) হচ্ছে পানির নিচে চলাচলে সক্ষম ও স্বাধীনভাবে বিচরণকারী নৌযানবিশেষ। সচরাচর ডুবোজাহাজ অনেক ক্রু অবস্থান করে থাকেন। ডুবোজাহাজকে প্রায়শঃই তার বিভিন্ন আকার-আকৃতি এবং জাহাজের সাথে তুলনা করে একে নৌকা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অনেক পূর্বকাল থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে ডুবোজাহাজ নির্মাণ করা হয়েছে এবং ঊনবিংশ শতকে বিভিন্ন দেশের নৌবাহিনীতে এর ব্যবহার অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ডুবোজাহাজ ব্যবহারের ব্যাপকতা বিস্তৃতভাবে লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে অনেক বৃহৎ আকারের নৌবাহিনীতে এর অনেক সংগ্রহ রয়েছে। শত্রুবাহিনীর জাহাজ কিংবা ডুবোজাহাজ আক্রমণ মোকাবেলায় এর ভূমিকা ব্যাপক। এছাড়াও, বিমানবাহী জাহাজ বহরকে রক্ষা করা, অবরোধ দূরীকরণ, প্রচলিত স্থল আক্রমণ ও বিশেষ বাহিনীকে গুপ্তভাবে রক্ষণাবেক্ষণে ডুবোজাহাজর কার্যকারিতা অপরিসীম।

সাধারণভাবেও ডুবোজাহাজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তন্মধ্যে – সমুদ্র বিজ্ঞান, উদ্ধার তৎপরতা, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম, পরিদর্শন এবং রক্ষণাবেক্ষন সুবিধার জন্যও ডুবোজাহাজ ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, ডুবোজাহাজকে ব্যবহারের লক্ষ্যে বিশেষায়িত কার্যক্রম হিসেবে অনুসন্ধান ও উদ্ধার তৎপরতাসহ সাগরতলে অবস্থিত ক্যাবল মেরামতেও সম্পৃক্ত করা হয়। পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সাগরতলে নিমজ্জিত প্রত্নতত্ত্ব পরিদর্শনেও ডুবোজাহাজ ব্যবহৃত হয়।


নবযাত্রা ও জয়যাত্রাঃ

নৌবাহিনীর জন্য ১ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকায় দুইটি সাবমেরিন কেনার জন্য চীনের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুইটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সি ট্রায়ালের পর চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা এবং নাবিকদের তত্ত্বাবধানে ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুইটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) সূত্র জানায়, সাবমেরিন দুইটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণ ক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসিত বক্তৃতাঃ

৯ মার্চ ২০১৭ রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের নেভাল বার্থে আধুনিক দুই সাবমেরিন (ডুবো যুদ্ধজাহাজ) ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’র কমিশনিং-কালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না। তবে কেউ আক্রমণ করলে যেন সমুচিত জবাব দিতে পারি, সেজন্য বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছি। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ দেশ হয়েই থাকবে। আমাদের ভূখ- ব্যবহার করে কাউকে সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে দেব না। আমরা পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। জনগণের সার্বিক উন্নতির জন্য আমরা এমন সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।”

শেখ হাসিনা তার রজনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যাপক আলাচিত, সমালোচিত। আমরা সেসব আলোচনায় যেতে চাই না, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশ। আর দুটি সাবমেরিন কমিশনিং এ যে বক্তৃতা দিয়েছেন শেখ হাসিনা তাতে তাকে একজন যুগপযুগি মহানায়ক হিসাবে দেখতে পাই।

বাংলাদেশ হতে পারে বিশ্ব মানচিত্রে একটি ব্যতিক্রম উদাহরণ

বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে বুঝতে কেনিয়ায় এক অনুষ্ঠানে বারাক ওবামার বক্তব্যই যথেষ্ট। সেখানে ওবামা বলেছেন, আইসিটিতে উন্নয়ন ঘটাতে হলে বাংলাদেশকে ফলো করো। কেনিয়া সরকারকে উদ্দেশ করে বলা ওবামার ওই বক্তব্য সারা বিশ্ব শুনেছে এবং বুঝেছে বাংলাদেশের অবস্থান।

২০০৮ সালে বাংলাদেশে ১২ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো। কিন্তু আজ ৬ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট সুবিধার মধ্যে এসেছে। ২০০৮ মোবাইল ব্যবহারকারী ছিল ৪ কোটি, বর্তমানে ১৩ কোটি। এসব রূপান্তর তো হয়েছে আমাদের চোখের সামনেই।

এদিকে দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে করে, অর্থনীতির উন্নয়নসহ দেশ সঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) এক জরিপে এমন তথ্য জানানো হয়।

আইআরআই বলছে, ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী। তাদের (জরিপে অংশগ্রহণকারীরা) নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। তারা আশা করছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ সক্ষমতা আরো বাড়বে।

আইআরআই এশিয়াবিষয়ক পরিচালক ড্রেক লুইটেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে অর্থনীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে হলে সব ক্ষেত্রেই স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারলে বাংলাদেশ হতে পারে বিশ্ব মানচিত্রে একটি ব্যতিক্রম উদাহরণ।

শুভেচ্ছা

শব্দনীড়ের সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা!
শব্দনীড়ে এবং কোন ব্লগে এই আমার প্রথম পদার্পন। আশা করি আপনাদের সাথে অবসরের সময়গুলি ভালই কাটবে।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আইকনিক ফিগার এবং আসাদ চৌধুরী’র বারবারা বিডলারকে

পৃথিবীতে যত যুদ্ধ হয়েছে সে যুদ্ধ গুলোর কোনটাতেই বেসামরিক মৃত্যুর কোন নাম ধরে তালিকা নাই। এমন তালিকা এখনো করা হয়না। কারণ এটা করা সম্ভব না। এসময় শুধু তথ্য সংগ্রহের সমস্যা নয়, এই অস্বাভাবিক অবস্থায় আরো অনেক ঘটনা ঘটে। যেমন, ব্যাপক সংখ্যক মানুষ দেশ ত্যাগ করে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ফেরেনা, অনেকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, পরিবার-সমাজ বিহীন ভবঘুরে মানুষরাও নিহত হন যাদের খোঁজ পাওয়া সম্ভব হয়না। এছাড়াও আছে যুদ্ধের কারণে পরোক্ষ মৃত্যু। যারা হত্যা করে তারাও অপরাধ ঢাকার জন্য মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলে। এসব কারণেই যুদ্ধে নিহতের পরিসংখ্যান সব সময় একটা সংখ্যা; একটা নামসহ পুর্নাঙ্গ তালিকা নয়।

এটাই পৃথিবীব্যাপী গৃহীত নিয়ম। যুদ্ধে মৃত বা নিখোঁজ সামরিক ব্যাক্তিদের তালিকা করা সম্ভব কিন্তু বেসামরিক ব্যাক্তিদের নয়। তবে ইতিহাসের প্রয়োজনে এবং জনগোষ্ঠীর আবেগের সাথে তাল মিলিয়ে যুদ্ধে মৃতের একটা আইকনিক ফিগার বলা হয় যেমন আমেরিকান গৃহ যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা বলা হয় ৬ লক্ষ ২০ হাজার। এটা প্রকৃত সংখ্যা নয়, একটা আইকনিক ফিগার।

১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এক সভায় জেনারেল ইয়াহিয়া খান ত্রুক্রদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘ওদের ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করো, বাকিরা আমাদের পা চাটবে!’

ইতিহাসের কবে সেই দূর-ধূসরকালে সংস্কৃত থেকে বাংলায় এসেছিলো এই শব্দটি গণ। আর, ওই শব্দের সহযোগে বাঙালির কণ্ঠে কতকাল থেকে কতই না ব্যবহৃত গণতন্ত্র, গণশক্তি, গণজাগরণ, গণনায়ক। আর, একদিন এই বাংলাদেশের আমরাই ঊনসত্তরের উত্তাল ইতিহাসের জন্যে নতুন রচনা করে উঠি গণঅভ্যুত্থান, যা আগে আর ছিলো না। গণ আর হত্যা এই শব্দ দুটির সহযোগেই কেবল যে নির্মিত এটি, তা নয়; এর ভেতরে পূরিত হয়ে আছে একটি ইতিহাস।একাত্তরে বাঙালির ওপরে পরিচালিত পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞ। (সৈয়দ শামসুল হক)

২৫ মার্চের গণহত্যার অভিজ্ঞতাই এক রাতের মধ্যে ‘পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নাকি স্বাধীনতা’ এর মধ্যে যারা তখনও দোলাচলে ভুগছিলেন তাদের এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করায়। এরপর আর থাকা চলে না পাকিস্তানের সঙ্গে এ রকম একটি সর্বজনীন বোধে মিলিত হয় বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ। অভিজ্ঞতাটা চুন্নু ডোমের চোখে এ রকম : ‘আমরা ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ শাঁখারীবাজার থেকে প্রতিবারে একশত লাশ উঠিয়ে তৃতীয়বার ট্রাকবোঝাই করে তিনশত লাশ ধলপুর ময়লা ডিপোতে ফেলেছি। ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ সকাল থেকে আমরা মিটফোর্ড হাসপাতালের লাশঘর ও প্রবেশপথের দু’পাশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিববাড়ী, রমনা কালীবাড়ি, রোকেয়া হল, মুসলিম হল, ঢাকা হল থেকে লাশ উঠিয়েছি। … আমাদের ইন্সপেক্টর পঞ্চম আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এরপর আমরা লাশঘরে প্রবেশ করে বহু যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-কিশোর ও শিশুর স্তূপ করা লাশ দেখলাম। আমি এবং বদলু ডোম লাশঘর থেকে লাশের পা ধরে টেনে ট্রাকের সামনে জমা করেছি। আর গণেশ, রঞ্জিত (লাল বাহাদুর) এবং কানাই লোহার কাঁটা দিয়ে বিঁধিয়ে বিঁধিয়ে পচা, গলিত লাশ ট্রাকে তুলেছে। লাশগুলো ঝাঁঝরা দেখেছি, মেয়েদের লাশের কারও স্তন পাইনি, যোনিপথ ক্ষত-বিক্ষত এবং পেছনের মাংস কাটা দেখেছি। … প্রত্যেক যুবতীর মাথায় খোঁপা খোঁপা চুল দেখলাম।’ ( ইতিহাসের নিস্তব্ধতা : বিনায়ক সেন)

মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে মে মাসে গ্রানাডা টিভিতে একটি ডকুমেন্টারিতে খালেদ মোশাররফ বলেন ১০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন। কবি আসাদ চৌধুরী “বারবারা বিডলারকে” নামে একটি অসাধারণ কবিতা লেখেন, সেখানে শহীদের সংখ্যা ১৫ লাখ মানুষকে হত্যা করার কথা বলা হয়েছে। লন্ডনে প্রকাশিত হ্যাম্পস্টেড এন্ড হাইগেট এক্সপ্রেস পত্রিকা, ১ অক্টোবর ১৯৭১ সালে ২০ লাখ মানুষকে হত্যার কথা বলেছে। চরমপত্রে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে এম আর আখতার মুকুল সর্বপ্রথম ৩০ লাখ মানুষকে হত্যার কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা প্রথমে বিশ্ববাসী জানতে পারে প্রভদায় ৩রা জানুয়ারি ১৯৭২ এ প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে। দুদিন পর এই খবর দৈনিক আজাদিতে ছাপা হয়। বঙ্গবন্ধু লন্ডনে এই সংখ্যাই (৩০ লাখ) উল্লেখ করেছিলেন।

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু ভারতের রাজধানীতে পৌঁছার সাথে সাথে বাংলাদেশে অপেক্ষামান লক্ষ লক্ষ মানুষের উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা আরো বেড়ে যায়। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বঙ্গবন্ধু দিল্লীতে একটি জনসভায় বক্তৃতা করেন এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে যান। এই জনসভায় বঙ্গবন্ধু প্রথমে ইংরেজিতে তার বক্তৃতা শুরু করলেও শ্রোতাদের অনুরোধে পরে বাংলায় বলেন।
ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ দীর্ঘ নয় মাস পর তাদের অবিসংবাদী নেতার বক্তৃতা শোনার জন্যে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়। ১০ জানুয়ারি অপরাহ্নে বৃটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানযোগে বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিমান বন্দরে অবতরণ করেন। অতি কষ্টে জাতির জনককে একটি খোলা ট্রাকে করে বিমানবন্দ থেকে সারা পথ প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে দিয়ে রেসকোর্সে আনা হয়। রেসকোর্সে পৌঁছুতে ট্রাকটির প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে। ১০ জানুয়ারী ১৯৭২ রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অংশবিশেষ উদ্ধৃত হলো।
…….
`যারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, যারা বর্বর বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই।
ভাইয়েরা আমার, লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ দানের পর আজ আমার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ আমার জীবনের সাধ পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার প্রতি জানাই সালাম। তোমরা আমার সালাম নাও।
আমার বাংলায় আজ এক বিরাট ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে। ৩০ লক্ষ লোক মারা গেছে। আপনারাই জীবন দিয়েছেন, কষ্ট করেছেন। আমাকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল। কিন্তু আমি জানতাম বাংলাদেশ স্বাধীন হবে। বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে-পরে সুখে থাকবে, এটাই ছিল আমার সাধনা। বাংলার এক কোটি লোক প্রাণভয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের খাবার, বাসস্থান দিয়ে সাহায্য করেছে ভারত। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী, ভারত সরকার ও ভারতবাসীকে আমাদের অন্তরের অন্তস্থল থেকে জানাই কৃতজ্ঞতা। বাংলার স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন ও সহযোগিতা দানের জন্য ব্রিটিশ, জার্মান, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন জনগণকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’

২৬ মার্চ, ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের লিখিত রূপ পাই, তাতে তিনি এই সংখ্যাটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন,`দুনিয়ার মানুষের কাছে আমি সাহায্য চেয়েছিলাম। আমার সামরিক বাহিনীতে যারা বাঙালী ছিল, তাদের এবং আমার বি ডি আর, আমার পুলিশ, আমার ছাত্র, যুবক ও কৃষকদের আমি আহবান করেছিলাম। বাংলার মানুষও রক্ত দিয়ে মোকাবিলা করেছিল। ৩০ লক্ষ লোক শহীদ হয়েছিল। লক্ষ লক্ষ মা-বোন ইজ্জত হারিয়েছিল, শত শত বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল। দুনিয়ার জঘন্যতম ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল পাকিস্তানী শোষক শ্রেণী। দুনিয়ার ইতিহাসে এত রক্ত স্বাধীনতার জন্য কোন দেশ দেয় নাই, যা বাংলার মানুষ দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা পঙ্কিলতা শুরু করলো। যা কিছু ছিল ধ্বংস করতে আরম্ভ করলো। ভারতে আমার এক কোটি লোক আশ্রয় নিয়েছিল। তার জন্য আমরা নিশ্চয়ই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করব। আমি তাদের স্মরণ করি, খোদার কাছে তাদের মাগফেরাত কামনা করি, যারা এদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে, আত্মহুতি দিয়েছে। আমি তাদের স্মরণ করব, যে সকল মুক্তিবাহিনীর ছেলে, যেসব মা-বোনেরা, আমার যে কর্মী বাহিনী আত্মাহুতি দিয়েছিল, শহীদ হয়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে। এদেশ তাদের সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর যারা জীবন দিয়েছিল বাংলার মাটিতে, আজ তাদের কথাও আমি স্মরণ করি।’

আর এভাবেই ৩০ লক্ষ হয়ে উঠেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আইকনিক ফিগার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশে ফিরে দলের নেতাদের গণহত্যার তথ্য জমা দিতে বলেছিলেন। সেই তথ্য কোথায় জমা পড়েছিল বা আদৌ কোথাও জমা আছে কিনা সেটা কারো আজ জানা নেই।

আসুন আসাদ চৌধুরী অসাধারণ কবিতাটি পড়ে দেখি।

বারবারা বিডলারকে
– আসাদ চৌধুরী—সংকলিত (আসাদ চৌধুরী)

বারবারা
ভিয়েতনামের উপর তোমার অনুভূতির তরজমা আমি পড়েছি-
তোমার হৃদয়ের সুবাতাস
আমার গিলে-করা পাঞ্জাবিকে মিছিলে নামিয়েছিল
প্রাচ্যের নির্যাতিত মানুষগুলোরজন্যে অসীম দরদ ছিল সে লেখায়
আমি তোমার ওই একটি লেখাই পড়েছি
আশীর্বাদ করেছিলাম, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক।
আমার বড়ো জানতে ইচ্ছে করে বারবারা, তুমি এখন কেমন আছ ?
নিশ্চয়ই তুমি ডেট করতে শিখে গেছ।
গাউনের রঙ আর হ্যাট নিয়ে কি চায়ের টেবিলে মার সঙ্গে ঝগড়া হয়?
অনভ্যস্ত ব্রেসিয়ারের নিচে তোমার হৃদয়কে কি চিরদিন ঢেকে দিলে।
আমার ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে বারবারা।
তোমাদের কাগজে নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খাঁর ছবি ছাপা হয়-
বিবেকের বোতামগুলো খুলে হৃদয় দিয়ে দেখো
ওটা একটা জল্লাদের ছবি
পনেরো লক্ষ নিরস্ত্র লোককে ঠাণ্ডা মাথায় সে হ্ত্যা করেছে
মানুষের কষ্টার্জিত সভ্যতাকে সেগলা টিপে হত্যা করেছে
অদ্ভুত জাদুকরকে দেখ
বিংশ শতাব্দীকে সে কৌশলে টেনে হিঁচড়ে মধ্যযুগে নিয়ে যায়।
দেশলাইয়ের বাক্সর মতো সহজে ভাঙে
গ্রন্থাগার, উপাসনালয়, ছাত্রাবাস,
মানুষের সাধ্যমত ঘরবাড়ি
সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের ফুলকে সে বুট জুতোয়
থেতলে দেয়।

টু উইমেন ছবিটা দেখেছ বারবারা ?
গির্জার ধর্ষিতা সোফিয়া লোরেনকেদেখে নিশ্চয়ই কেঁদেছিলে
আমি কাঁদিনি, বুকটা শুধু খাঁ খাঁ করেছিল-
সোফিয়া লোরেনকে পাঠিয়ে দিয়ো বাংলাদেশে
তিরিশ হাজার রমণীর নির্মম অভিজ্ঞতা শুনে
তিনি শিউরে উঠবেন।
অভিধান থেকে নয়
আশি লক্ষ শরণার্থীর কাছে জেনে নাও, নির্বাসনের অর্থ কী ?
জর্জ ওয়াশিংটনের ছবিওলা ডাকটিকেটে খোঁজ থাকবে না স্বাধীনতার
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কাছে এসো-
সাধু অ্যাবের মর্মর মূর্তিকে গণতন্ত্র আর মানবতার জন্য
মালির ঘামে ভেজা ফুলের তোড়া দিয়োনা-
নিহত লোকটি লজ্জায় ঘৃণায় আবার আত্মহত্যা করবে।
বারবারা এসো,
রবিশঙ্করের সুরে সুরে মুমূর্ষু মানবতাকে গাই
বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই, সংগঠিত হই
জল্লাদের শাণিত অস্ত্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
দর্শন ও সাহিত্যকে হত্যা করার পূর্বে
এসো বারবারা বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।

কোন রাজনৈতিক নয়

যে কোন দেশ চালায় রাষ্ট্রনেতারা। সেই রাষ্ট্রনেতা রাষ্ট্র চালায় সরকারী কর্মচারীদের মাধ্যমে। প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা চাইবে নিজস্ব ক্ষমতা দখল করে রাখার জন্য যা ইচ্ছে খুশি শাসননীতি। সেই শাসননীতি পূর্ববর্তী আইন মোতাবেক অথবা নতুন তৈরি আইন মোতাবেক করতে হয়। এই আইন বা নীতি কার্যকর সরকারী আমলাদের দ্বারাই হয়। সরকারী আমলা এবং অন্য সব শ্রেণি যদি আইন বা নীতির প্রতি সঠিক শ্রদ্ধাশীল হয় তাহলে জন প্রতিনিধি বা রাজনৈতিক নেতার পক্ষে দুর্নীতি করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে রাষ্ট্রনেতাদের পছন্দ হয় নি এমন আমলা বা সরকারী কর্মচারীকে সরিয়ে অন্য একজনকে নিয়ে আসে। সেও কিন্ত সরকারী কর্মচারী। তাহলে তাকে দিয়ে রাষ্ট্রনেতা নিজের ক্ষমতা বাঁচানোর প্রক্রিয়া করেন। যদি সমস্ত স্তরের সরকারী কর্মচারী বা আমলা শ্রেণি নীতিও আইন মোতাবেক কাজ করে এবং দৃঢ়চেতা দুর্নীতি মুক্ত থাকে তাহলে কোন সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত হতেই পারে না।
এক রাষ্ট্রনেতা কোন সরকারী জায়গায় নিজস্ব মনমানি করল। সেখানে কর্মচারী তার প্রতিবাদ করল। সেই রাষ্ট্রনেতার তা ভাল লাগল না। সেই রাষ্ট্রনেতা প্রথমেই ওই কর্মচারীকে বদলী করতে চাইবে কোন দূর প্রদেশে। কিন্তু মনে রাখতে হবে সেই কর্মচারী বদলী করতে হলে অবশ্য আর এক ওই দপ্তরের উপরওয়ালার সাহায্য নিতে হবে। অর্থাৎ অন্য উপরওয়ালা বদলীর অর্ডার করবেন ওই রাষ্ট্রনেতার কথা শুনে।
ওই উপরওয়ালা যদি রাষ্ট্রনেতাকে বাবু বাবু না করে একটু দৃঢ় মনোভাব দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী সম্বন্ধে জেনে বুঝে অর্ডার করেন তাহলে সেই প্রতিবাদী কর্মচারী নিজস্ব কাজ আরও নিষ্ঠার সঙ্গে করতে পারে। তার ইমিডিয়েট অথরিটি এবং বদলীর আদেশকারী যদি সহযোগিতা করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা হয় না। কর্মচারী বদলীর ভয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বা রাষ্ট্র পদাধিকার নেতার মনমানি মত কাজ করতে বাধ্য হয়। কেননা তার যেসব আপন সরকারী অফিসার ও আমলা সম্প্রদায় আছে তাঁরা তাকে সহযোগিতা করে না। সেই রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রনেতাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ফলে কাজকর্ম সরকারী আদেশনামা বা আইন বা নীতির ফাঁক খুঁজে ফাঁক অনুযায়ী কার্যকরী হতে থাকে। ফলে সামাজিক ও সংস্কারী উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।
সরকারী যে সব টাকা বিভিন্ন খাতে দেওয়া হয় তা কখনই কোন জন প্রতিনিধি বা রাষ্ট্রনেতার নামে আসে না। সরকারী আমলা ও অফিসারদের পদমর্যাদায় আসে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় সেই টাকার ভাগ খুব সহজে রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রনেতার কাছে পৌঁছে যায়। ফলে দুর্নীতির সোপান শুরু হয়। এবং তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। রোধ করা যায়। যদি সমস্ত স্তরের সরকারী কর্মচারী সে পিয়ন থেকে শুরু করে সচিব আমলা অফিসার সবাই একজোটে দুর্নীতিহীন ও ঘুষহীন দৃঢ়চেতা হয়।
তাহলে কি দাঁড়াল? কে দুর্নীতিগ্রস্ত। পড়াশুনা জানা সরকারী কর্মচারী না কি রাজনৈতিক নেতা ( তিনি শিক্ষিত কি না বিচার্য নয়)।
দেশ পরিচালিত হয় রাজনৈতিক বাতাবরণে। যে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতা পেলে তাকে ধরে রাখার জন্য তার মত দেশকে সে পরিচালিত করবে। এর মধ্যে দোষের কিছুই নেই। কিন্তু সেই নীতি আইন পদক্ষেপ কতটা সঠিক তা দেখার দায়িত্ব স্থায়ী কর্মচারীর। পুলিশ প্রশাসন অর্থ শিক্ষা স্বাস্থ্য সব ক্ষেত্রেই।
এই ব্যাপারে সবার উপরে দায়িত্বশীল হতে হবে অফিসার, আমলা, পদাধিকার ও ইন চার্জদের। এরা কোনভাবে কোথাও দাঁড়িয়ে পড়লে পেছনের অফিসিয়েল কোনভাবেই তা এভোয়েড করতে পারবে না। তাদেরকে আসতেই হবে। যেমন ধরুন ডাক্তারবাবু মুমুর্ষু রোগীর সামনে দাঁড়িয়ে এক্সজামিন করছেন অথচ সেখানেই নার্সিং পারসোন্যাল হেডফোনে গান শুনছে, জিডিএ চেয়ার পা তুলে র‍্যাল মারছে এটা হতেই পারে না। বরং উল্টোটা আকচার হয়। অন্য সবাই আছে ডাক্তারের খোঁজ নেই।
অফিসার সচিব ইনচার্জ কখন আসে কখন যায় ঠিক নেই কিন্তু অন্য জনকে কাজের হুমকি দেয়। কাজ দরকার, তা বলে এই নয় মাথার কোন খোঁজ থাকবে না।

স্বার্থবাদী রাজনীতি বন্ধ হোক

রাজনীতি হলো রাজ্য পরিচালনার নীতি। যে নীতি অনুসরণ করে একটি রাষ্ট্র সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে, শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা যাবে। এরিস্টটল, প্লেটোর মতো মহান দার্শনিকদের মতে রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো সাধারণ কল্যাণ, সামাজিক শুভবোধ ও নৈতিক পূর্ণতা সাধন। যারা রাজনীতি করবে তাদের লক্ষ্য হবে মানুষের কল্যাণ, সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা, দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা। এ কাজের জন্য রাজনীতিকদের অবশ্যই নিঃস্বার্থ হতে হবে। তাদেরকে অবশ্যই ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। প্রতিটি কাজ করতে হবে দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে।

কিন্তু বর্তমানে প্রচলিত ভোগবাদী, বস্তুবাদী, আত্মাহীন দাজ্জালীয় সিস্টেমটাই এমন যে এখানে প্রায় প্রতিটা মানুষই স্বার্থপর হয়ে বেড়ে উঠছে। শিশুগুলো জন্ম নিচ্ছে স্বার্থবাদী এক সমাজে, পরিবারের কাছ থেকে শিখছে স্বার্থপরতা, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শিখছে ভোগ-বিলাসিতা, সমাজ থেকে শিখছে আত্মকেন্দ্রিকতা। নিরেট নিজেকে, সর্বোচ্চ নিজের পরিবারকে নিয়ে ভাবতে শিখছে। এই মানুষগুলো থেকেই কিছু মানুষ রাজনীতিতে আসছে। তারা আমাদের এই সমাজেরই মানুষ- ফলে তারাও স্বার্থপরতার গণ্ডি থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পারছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা দেশের স্বার্থ, জনগণের স্বার্থ না ভেবে নিজের ও দলের ক্ষুদ্র স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়। আর আমরাও তাদের সেই স্বার্থপরতা হজম করে চলি।

রাজনীতি আজ সর্বাধিক লাভজনক একটি পেশাতে পরিণত হয়েছে। ভোটের সময় আসলেই রাজনীতিকদের মুখে দেশপ্রেম, দেশ ও জনগণের সেবা, দেশের উন্নয়ন ইত্যাদি আপ্তবাক্যে মাইক্রোফোন সিক্ত হয়, আকাশ-বাতাস মুখরিত হয় কিন্তু নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের অধিকাংশের ব্যস্ত সময় কাটে নিজের পকেট ভারী করতে, নিজের নানামুখী স্বার্থ ও নিজ দলের স্বার্থ উদ্ধার করতে। আবার পাঁচ বছর পর নতুন প্রলোভন নিয়ে জনগণের সামনে ভোটভিক্ষা করতে উপস্থিত হয় তারা। প্রচলিত সিস্টেমে যেহেতু নির্বাচনের সময় ব্যালটে প্রতিবাদের মাধ্যমে অন্য কোনো স্বার্থবাজ লোককে নির্বাচিত করা ছাড়া সাধারণ মানুষের আর কোনো উপায় থাকে না তাই নতুন কোনো স্বার্থবাজ নেতা পায় জনগণের সমর্থন আর নতুন উদ্যমে চলতে থাকে নবনির্বাচিত প্রতিনিধির স্বার্থ উদ্ধারের পালা। জনগণের রক্তঝরানো টাকা নেতা-নেত্রীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমতে থাকে নানা কৌশলে। সেই অর্থের ন্যূনতম লভ্যাংশও যেন জনগণের ভাগ্যে না জোটে সে জন্য সেই অর্থ আবার বিদেশি ব্যাংকে পাচার হয়ে যায়। দেশ ও জাতি সঙ্কটে পড়লে জনগণকে ছেড়ে তারা যেন উড়াল দিয়ে প্রভুদের দেশে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থাও পাকাপোক্ত করা থাকে। দেশের মানুষ বন্যায় ডুবে মরে আর তারা সাহায্যের অজুহাতে ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থলুট করে। এভাবে প্রতিটা ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলে। দেশ ও জনগণের স্বার্থ উপেক্ষিতই থেকে যায়। আমরা প্রতিদিন চোখের সামনে দুর্নীতির খবর দেখি, দেখি রাজনীতিকদের দেশ বিক্রির প্রতিযোগিতা তবুও আমরা নিশ্চুপ, নিশ্চল দর্শক হয়েই বসে থাকি। এটাকে আমরা ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছি।

রাজনীতিসংশ্লিষ্টরা নিজ দল অথবা গোষ্ঠীর ভেতর নিজেদেরকে এমনভাবে জড়িয়ে ফেলেন যে তারা আর মুক্ত মানুষ থাকতে পারেন না। দেশপ্রেমিক হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। প্রকৃত অর্থে রাজনীতির সাথে বিপ্লবের সম্পর্ক রয়েছে। মানুষের মুক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রত্যয় রয়েছে। রয়েছে দেশপ্রেমের আত্মিক সংস্পর্শ। কিন্তু প্রচলিত ব্যবস্থায় রাজনীতির যে ধারা প্রবল প্রতাপ নিয়ে বিরাজ করে তা স্বার্থবাদী দলীয় রাজনীতির গণ্ডি থেকে একচুলও বেরুতে পারে না।

আমরা মনে করি, শুধুমাত্র ক্ষমতা দখল এবং ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থ রক্ষার জন্য যে অপরাজনীতি চলছে এই স্বার্থবাদী অপরাজনীতি অচিরেই বন্ধ হওয়া উচিত। রাজনীতির নামে সংঘাত, সংঘর্ষ, জ্বালাও-পোড়াও, ভাংচুর ইত্যাদি আজ যেন নিত্য ঘটনা। নিজের নামে ছাফাই গাওয়া, অন্যের নামে কুৎসা রটনা করা, বিরোধী দলে থাকলে কারণে-অকারণে সরকারের সকল কাজের বিরোধিতা করা আর সরকারি দলে থাকলে নানা মিথ্যা অজুহাতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে হয়রানি করাই এখন রাজনীতির রীতি। এগুলোকেই মানুষ রাজনীতির অংশ হিসাবে ভাবছে। এই রীতিগুলোকে রাজনীতি থেকে বিদায় জানাতে হবে।

নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের চিন্তা বাদ দিয়ে দেশ ও জনগণের বৃহৎ স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। রাজনীতিকরা সেই কাজই করবেন যা রাষ্ট্রের প্রতিটা জনগণের জন্য কল্যাণকর হয়। রাজনীতি কোনো পেশা নয়। যারা রাজনীতি করবে তারা শুধুই মানুষের কল্যাণের জন্য তা করবে। এর কোনো বিনিময় নেওয়া চলবে না। নিজের বাড়িতে থাকবে, নিজের উপার্জিত টাকায় সংসার চালাবে, নিজের গাড়ি থাকলে নিজের টাকায় তেল খরচ করবে আর গাড়ি না থাকলে পাবলিক বাহনে চলবে, নিজের টাকায় মোবাইল খরচ করবে। একটা টাকাও জাতির কাছ থেকে তথা সরকারের কাছ থেকে নেবে না। এই রাজনীতি মানুষের শান্তি দেবে, এই রাজনীতি যারা করবেন তারা পরকালেও আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পাবেন। ব্যবসায়ীরা যদি সৎভাবে ব্যবসা করেন, মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে ব্যবসা করেন তবে সেটা তাদের এবাদত হবে। ঠিক একইভাবে রাজনীতিকরা যদি মানুষের কল্যাণে কাজ করেন তবে সেটাই হবে রাজনীতিকদের এবাদত। তারা স্রষ্টার সান্নিধ্য পাবার আশায়, মানুষের ভালোবাসা পাবার জন্য রাজনীতি করবে। মানুষের সেবা করার মধ্যেই যারা জীবনের স্বার্থকতা খুঁজে পাবে, ভোগের পরিবর্তে ত্যাগেই যারা পরিতৃপ্ত থাকবে, অর্থ-সম্পত্তির চেয়ে মানুষের ভালোবাসা, দোয়া যাদের কাছে অধিক কাম্য তারাই কেবল রাজনীতি করতে পারবে।

উর্বর চিন্তার মানুষ

আমরা আসলে বরাবরই উর্বর মস্তিস্কমনা জাতি।
খেলতে ভালোবাসি মানুষকে নিয়ে।
খেলতে ভালোবাসি মানুষের তর্ক বিতর্ক নিয়ে
মানুষের চিন্তাভাবনা নিয়ে খেলতে ভালোবাসি
অন্যের সমালোচনা করতে ভালোবাসি
অন্যকে আঘাত করতে ভালোবাসি
অন্যের দুর্বলতাকে নিয়ে উপহাস করতে ভালোবাসি
আর ভালোবাসি নিজেকে।
কিন্তু নিজের পার্সোনালিটিকে ভালোবাসি না।
নিজের বিবেক বিবেচনাবোধকে ভালোবাসি না।
নিজেকে নিয়ে প্রশ্ন করতে পছন্দ করিনা।
নিজের সমালোচনা শুনতে পচন্দ করিনা।
নিজের অযোগ্য ভাবনাগুলো কি তা নিয়ে
কেউ ভাবতে পারিনা।
অন্যের ময়লা নাড়াচাড়া করা আমাদের এএক অদ্ভুদ স্বভাব।
আমরা কি কখনো স্বাভাবিক হতে পারিনা ?
আমরা কি পারিনা নিজের মর্যাদাকে সম্মান করতে ?
আসলে আমরা সবই পারি পারিনা শুধু চিন্তা করতে
কেন আমার নিজের ব্যক্তিক্তভাবনাকে নিম্নগামী করি।
অথচ আমরা চাইলে সবই পারি পরিবর্তনের পরিবর্তন ঘটাতে।

এটা কি হলো ?

এটা কি হলো ?
ছায়াছবি দেখানোর আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজাতে হবে এবং যারা প্রেক্ষাগৃহে থাকবেন তাদের উঠে দাঁড়াতে হবে । তা-না হলে আইনি বেড়া জালে ফেসে যাবেন । চাপিয়ে দেওয়া দেশপ্রেম এই সময়েই লজিক্যাল হয়েছে । না এটা হতে পারে না। একটা গণতন্ত্র দেশে চাপিয়ে দেওয়া বড়ই বিপদ জনক । আর সেই দেশপ্রেম মেকি ছাড়া আর কি হতে পারে । এটা মিথ্যা লজিক ।

কি অদ্ভূত ব্যপার ছায়াছবি দেখানোর আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজালেই মানুষের মনে দেশভক্তি জাগ্রত হবে । সত্যি কি তাই ?
কারুর উপর চাপিয়ে দিয়ে দেশপ্রেম জাগানো যায় ? দু শো বছর ভারত পরাধীন ছিল । যারা এই দেশকে স্বাধীন করতে নীজের জীবনের পরোয়া করেনি তাদের মধ্যে এই দেশ প্রেম কি করে জাগ্রত হয়েছিল ? বলতে পারেন ।
আমি একটা দেশের কথা জানি সে দেশে ছায়াছবি দেখানোর আগে জাতীয়সঙ্গীত বাজানো হয় । কিন্তু গণতন্ত্র বলে সে দেশে এক বিন্দু নেই । চরম অশান্তির মধ্যে সে দেশ চলছে । তারা দেশকে যতটা না ভালবাসে ক্ষমতাকে তার চে ঢের বেশি ।

যাই হোক , এরপর যদি বলা হয় সেক্স করার আগে জাতীয় সঙ্গীত বাজাতে হবে তখন কি হবে ?

মেকিং অ্যান্ড আনমেকিং অফ লাভ

522

লাভ অ্যান্ড ম্যারেজ, লাভ অ্যান্ড ম্যারেজ; দে গো টুগেদার, লাইক হর্স অ্যান্ড ক্যারেজ (They go together, like horse and carriage) …হর্স অ্যান্ড ক্যারেজ। অর্থ্যাৎ প্রেম আর বিয়ে চলে ঘোড়া এবং গাড়ির মতোই।… গানটি গেয়েছেন ফ্র্যান্ক সিনাট্টা।

সমসাময়িক সময়ে যেখানে কোনো কিছুই আর পবিত্র বা অলংঘণীয় ( Sacred ) গণ্য করা হয় না। সেখানে পরিবারের ধারণাটাও সেকেলে ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে তা বোঝাটা দুস্কর কিছু নয়। প্রেম- ভালবাসা মূলতঃ আবেগ, অনুভূতির বিষয়।

এ বিষয়টা বুঝতে কারো খুব অসুবিধার কথা নয়, যেসব শিশুরা এ দুনিয়ায় আসে ভালবাসা এবং পবিত্র কোনো বন্ধনের ভিত্তিতে, তাদের জন্য সম্ভাবনাটা বেশী। তাদের জীবন ও অস্তিত্বের বাস্তবতটা নিয়ে তারা ভাববে, বুঝবে এবং সম্মানের সঙ্গে দেখবে মমতা ও পবিত্রতার প্রেক্ষাপটেই। আর যাদের আগমন ভালবাসা ও বিয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্কছাড়াই নিছক যৌনতা বা কামনা- বাসনার নাগরদোলায় চড়ে, তাদের জীবন এবং অস্তিত্বের উপলব্ধি হবে অনুরূপ দৃষ্টিকোণ থেকে।

মার্ক টোয়েইন- এর তথাকথিত সেকেলে মনোভাবের পরিচয় মেলে তার উদ্ধৃতিতে: লাভ সিমস দি সুইফটেষ্ট, বাট ইট ইজ দি স্লোয়েষ্ট অফ অল গ্রোথস। নো ম্যান অর ওম্যান রিয়েলী নোজ হোয়াট পারফেক্ট লাভ ইজ, আনটিল দে হ্যাভ বিন ম্যারেড এ কোয়ার্টার অফ এ সেঞ্চুরী। ( আপাতদৃষ্টিতে ভালবাসা মনে হয় সবচেয়ে দ্রুত বাড়ে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ভালবাসা সবচেয়ে ধীরে বাড়ে। কোনো পুরুষ অথবা নারী সিকি শতাব্দী দাম্পত্য জীবন না কাটানো পর্যন্ত জানেনই না, সত্যিকারের ভালবাসা কি ? – মার্ক টোয়েইনস নোট বুক )।

মেকিং লাভ : অর্থ পরিভাষার রূপান্তর।

সামগ্রীকভাবে বিয়ের ধারণার ক্ষেত্রে র‌্যাডিকাল পরিবর্তন এসেছে। এখনো বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের কাছে, বিয়ে অর্থ হচ্ছে একজন পুরুষ ও নারীর স্বামী- স্ত্রী হিসেবে মিলন। কিছু কিছু পুরোনো ডিকশনারীতে ( যেমন The Advanced Learner’s Dictionary of Current English- এর ১৯৭৩ সংস্করণে ) উপরিল্লিখিত একটি অর্থই রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণ বিয়ের অর্থ যে সবার কাছে এক ও অভিন্ন তা আর নাও হতে পারে। সেদিন হয়তো বেশী দূরে নয় যখন কোনো বিয়ের কথা শুনলে অথবা নিমন্ত্রণ পেলে বিনয়ের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে হবে, এটা কি ভিন্ন লিঙ্গ ( Hetero-sex ) বিয়ে না, অভিন্ন লিঙ্গ ( Same Sex ) বিয়ে।

কে জানে ভবিষ্যতে হয়তো মানুষ ও পশু – পাখিরও বিয়ে হবে এবং তার আইনানুগ ও সামাজিক স্বীকৃতির দাবি উঠবে। বস্তুত বিবর্তন তত্ব অনুযায়ী আমাদের লেজ বিশিষ্ট পূর্ব পুরুষ আত্মীয়েরা এখনো আছে এবং গাছ থেকে গাছে সদানন্দে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। নৈতিকভাবে ঠিক বা ভুল যেহেতু আপেক্ষিক হয়ে যাচ্ছে, আমাদের প্রত্যেকেরই স্বাধীনতা রয়েছে আপন আপন সজ্ঞা বেছে বা খুঁজে নেয়ার।

বর্তমান যুগে সঙ্গমের একটি ইংরেজী হচ্ছে মেক লাভ ( Make Love )। অতীতে প্রেম ভালবাসা হতো বা ঘটতো ( Love used to happen )। মানুষ প্রেম ভালবাসা বানাতো না, ( Make Love ) যেমন করে গাড়ি, বাড়ি অথবা সম্পদ বানানো হয়। এক শতাব্দীরও বেশী আগে মেক লাভ বাক্যাংশের ব্যবহার দেখা যায়। কিন্তু তার সঙ্গে যৌনতার সমার্থক হিসাবে নয়। দৃষ্টান্ত স্বরূপ শেক্সপিয়ার ম্যাকবেথ- এ খুনিদের বলেন, অ্যান্ড দেন্স ইট ইজ দ্যাট আই টু ইয়োর অ্যাসিস্টানস, ডু আই মেক লাভ। এই মেক লাভ বাক্যাংশ আরো অনেক প্রখ্যাত লেখক ব্যবহার করেছেন জন ড্রাইডেন, হেনরী ফিল্ডিং, জেইন অষ্টেন, টমাস হার্ডি, হেনরী জেমস, ডি এইচ লরেন্স প্রমুখ।

তবে বর্তমান যুগের আগে এই বাক্যাংশটা মোটামুটি বোঝাতো অনেকটা এই রকম: কারো বাসনার ঘোষনা বা প্রকাশ। তাই সমারসেট মম- এর অফ হিউম্যান বন্ডেজ উপন্যাসে এই সংলাপ দেখা যায়, ডিড হি মেক লাভ টু ইউ ? হি আস্কড। দি ওয়ার্ডস সিমড টু ষ্টিক ফ্যানিলি ইন হিজ থ্রোট, বাট হি আস্কড দেম নেভারদিলেস। হি লাইকড মিস উইল্কিনসন ভেরী মাচ, অ্যান্ড ওয়াজ থৃল্ড বাই হার কনভারসেশন, বাট কুড নট ইমাজিন এনি ওয়ান মেকিং লাভ টু হার।
হোয়াট এ কোয়েশ্চেন। শি ক্রাইড। পুওর গাই, হি মেড লাভ টু এভরি ওম্যান হি মেট। ইট ওয়াজ এ হ্যাবিট দ্যাট হি কুড নট ব্রেক হিমসেলফ অফ।
যারা অবহিত নন, এক সময় এ বাক্যাংশের ভিন্ন অর্থ ছিলো যা, তাদের জন্য এ ধরণের সংলাপ অনভিপ্রেত রস আস্বাদনের খোরাক হতে পারে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমরা ক্রমাগতভাবেই এগিয়ে চলেছি রশি’র ( Corded ) জগৎ থেকে রশিবিহীন ( Cordless ) জগতে। আরো একটি অর্থে আমরা কর্ডলেস হয়ে যাচ্ছি। আমরা সবাই জানি নবজাতকেরা জন্মলগ্নে নাড়ির মাধ্যমে মাতৃগর্ভের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই কর্ড কেটে ছিন্ন করার মাধ্যমেই মানুষ হিসাবে নবজাতকের যাত্রার শুরু হয়। এই কর্ড ছিন্ন করার অর্থ এই নয়, আবেগ অথবা সামাজিক দিক থেকে সেই কর্ডকে আমরা ভুলে যাই যা কয়েকদিনের মধ্যে শুকিয়ে গিয়ে রেখে যায় শুধু সংযোগের চিহ্ন। এটা এক ধরণের মিষ্টিক, স্বর্গীয় বা মরমী সংযোগ যা নিছক দৈহিক নয়। এক বিশেষ বন্ধনের পরিচায়ক।

পরিবার ও ঘর হওয়ার কথা নিরাপত্তা এবং আরামের আশ্রয়। বিশেষ করে মায়ের কোল। কিন্তু আধুনিক কর্ডলেস সমাজে তাতেও দূর্বলতা এসেছে। অবশ্যই এ প্রসঙ্গে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই যেসব প্রচলিত।

আমরা ভালবাসা বানাচ্ছি ( Making Love )। যেমন আরো কতো কিছু আমরা বানাই। কার, সোফা অথবা ডিসপোজাল ডায়পার। আমরা এখন ভালবাসা বানাই ( মেক লাভ )। বিষ্মিত হওয়ার কি আছে যে, নিছক অনৈতিকতার পরিবর্তে ভালবাসা যেখানে বিয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলো, কর্ডলেস সমাজের প্রভাবে ভালবাসা এখন হাওয়ার সঙ্গে গায়েব। ( Gone With the Wind- গন উইথ দি উইন্ড )।

মনে হয়, মেকিং লাভ আধুনিক অর্থে তার আনমেকিংয়ের পথ প্রশস্ত করে চলেছে।

522a
বিণীত কৃতজ্ঞতায়ঃ কায়সার আহমেদ। আমাদের রাজশাহী ডট কম।

কাশ্মীর: একটি অসমাপ্ত গল্প

kashmir-2.preview

এক সকালের কথা।
প্রতিদিনের চেনা পরিবেশে মোহাম্মদ আশরাফ বের হলেন তার গবাদি পশুগুলো নিয়ে। উদ্দেশ্য ঘাস খাওয়ানো। তার সঙ্গী চৌদ্দ বছর বয়সী ছেলে রিজওয়ান। হঠাৎ এক বিস্ফোরণে এই পরিচিত পরিবেশটির চেহারা বদলে গেলো। আশরাফের হাতের কাস্তেটি ছুটে গিয়ে অনেক উপরে উঠে নেমে এলো নিচের দিকে। আশরাফ মাটিতে পড়ে গেলেন।

চারিদিকে পাথর উড়তে লাগলো। মনে হলো ধূলি ঝড়ের সময় ধূলিকণাগুলো যেভাবে উড়ে বেড়ায় পাথরগুলোও যেন ঠিক তেমনি সহজে উড়ে বেড়াচ্ছে। এ অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলো। এখনো বেঁচে আছেন এটা নিশ্চিত হয়ে আশরাফ মাথা তুললেন। দেখলেন তার গরুগুলো মরে পড়ে আছে। এদের সঙ্গে লাশ হয়ে পড়ে আছে তার কিশোর ছেলে রিজওয়ান।

ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কালিয়ানা এলাকা থেকে আসা বোমা হামলায় ঘটে এ ঘটনা। তারিখ ২৩শে আগষ্ট ১৯৯৭।

পাকিস্তানী সৈন্যরা আশরাফের হাতে একটি স্লিপ ধরিয়ে দেয়। তারা তাতে রিজওয়ানকে চিহ্নিত করে জানায় তার মৃত্যুর ফলে সে শহীদ হয়েছে। চাকোতি এলাকায় শুধু ২৩ আগষ্টেই রিজওয়ানসহ দশ জনের মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনা হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের চারশো ষাট মাইল দীর্ঘ সীমান্তে ঘটে যাওয়া অসংখ্য ঘটনার একটি। লাইন অফ কন্ট্রোল নামে যে সীমান্ত এলাকা বেশী পরিচিত।

Jammu_Kashmir_and_Ladakh
candy007_1299931501_1-kashmir-dallake
কাশ্মীর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে। পশ্চিম অংশ আজাদ (মুক্ত) কাশ্মীর হিসাবে পরিচিত। যদিও ভারত এ অংশকে বলে পাকিস্তানের দখলকৃত কাশ্মীর। অন্য অংশ ভারতীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর যা পাকিস্তানীদের ভাষায়, ভারতের দমিয়ে রাখা কাশ্মীর।

২৬শে অক্টোবর ১৯৪৭- এ কাশ্মীরের মহারাজা ইন্দর মহিন্দর হরি সিং কাশ্মীরকে ভারতের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল লর্ড মাউন্টব্যাটনের কাছে আবেদন। এ নিয়ে দুই পক্ষের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় একই দিন। যার ফলে কাশ্মীর ভারতের নিয়ন্ত্রনে আসে। রাজা হরি সিং তার নিজস্ব সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই এই চুক্তি করেন। কোনো গনভোট এখানে অনুষ্ঠিত হয়নি। ভারতীয় দেশীয় রাজ্যগুলোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা না থাকলেও কাশ্মীর তার নিজস্বতা বজায় রাখার কিছু সুযোগ পায়। তবে কাশ্মীরের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ স্বাধীনভাবে চলতে গিয়ে বাধা পান। কেন্দ্রীয় সরকার তার বদলে বকশী গোলাম মোহাম্মদকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী করেন।

রাজনৈতিক কারণে সাবেক সোভিয়েত ও চীনের সীমানা থাকায় কাশ্মীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেয় ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের কাছেই। আবার কাশ্মীর মুসলিম প্রধান হওয়ায় তাকে নিজেদের কাছে রাখা পাকিস্তানের ইগো-র বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বৃটিশ শিক্ষাবিদ আ্যালষ্টেয়ার ল্যাম্ব লেখেন, ”ভারতীয় দেশীয় রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ছিল একজন হিন্দু মহারাজার অধীনস্থ মুসলমান প্রধান রাজ্য। সে সময়ের সাম্রাজ্যের মুসলিম এবং অমুসলিম অংশে বিভক্ত হওয়ার পেছনে যে যু্ক্তি আছে, তাতে প্রস্তাব করা হয় কাশ্মীরের পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।”

অনেকে মনে করেন কাশ্মীর সমস্যা সৃষ্টির জন্য বৃটিশদের দূর্বলতাই দায়ী। তারা এর সঠিক সমাধান করে যায়নি। তবে কাশ্মীর একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন দেশ হিসাবে বেঁচে থাকতে চায় এই ধারণাও পোষন করেন অনেকেই।

কাশ্মীরে আরো যে বিষয়টি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে জিম্মি সংকট। সেখানকার নানা বিদ্রোহী গ্রুপ এ ধরনের কান্ড ঘটিয়ে থাকে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনে সন্ত্রাসী দল হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আজাদ (মুক্ত) কাশ্মীরের একটি দল হারাকাত-উল-আনসার। শ্রীলংকার তামিল টাইগার্সসহ এ এলাকার বড় সন্ত্রাসী দল হিসাবে এটি জায়গা করে নিয়েছে।

কাশ্মীরের জন্য ১,০০০ বছর যুদ্ধ চলবেঃ জারদারি।

পাকিস্তান মুখে কাশ্মীর নিয়ে শান্তির বানী প্রচার করলেও আসলে যে যুদ্ধ্বের নীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে তা আরও একবার পরিস্কার হয়ে গেলে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির কথায়। জারদারি আজাদ জম্মু-কাশ্মীর অ্যাসেম্বলী অধিবেশনে ভাষণ দিতে এসে জানান, কাশ্মীর সমস্যার ব্যাপারে ভারত আন্তরিক হয়ে সমাধান চাইলে তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

যে ভাবে ভারত সমাধানের রাস্তা খুঁজছেন তাতে যে বিশেষ কাজ হবে না তা পরিস্কার করে দিয়েছেন জারদারি। এর পরে জানান, সমস্যার সমাধানে আরও এক হাজার বছর লড়াই করতে প্রস্তুত পাকিস্তানের জনগন। তারা যে ভাবে হোক আজাদ কাশ্মীর গঠন করে ছাড়বেন। এর জন্য সমস্ত ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে রাজি পাকিস্তানের জনগন।

কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে যখন দিল্লির পক্ষ থেকে আলোচনা আশ্রয় করে রাস্তা খোঁজা হচ্ছে তখন পাকিস্তানের এমন মনোভাব বিষয়কে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে অনুমান। এমন কি ভারত ও পাক বিশেষঞ্জদের অনুমান জারাদারির ঘোষণা পাক মাটিতে যে সকল ভারত বিরোধী জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে তারা আরও মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে।

এদিকে জারদারির এই মন্তব্য নিয়ে সরাসরি ভাবে এখন কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি দিল্লি। তবে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে পাক অভ্যন্তরীন রাজনীতি কোনঠাসা জারদারি নিজের উপরে চাপ কমাতে এমন মন্তব্য করেছেন।

কাশ্মীরের ইতিহাস নিয়ে বিখ্যাত প্রাচীন বই ‘রাজতরঙ্গিনী’-তে এর লেখক কুলহান লিখেছিলেন, “মানুষের কামনা বাসনা শেষ হলে পুনর্জন্ম বন্ধ হয় এবং মানুষ মুক্তি অর্জন করে।”

কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য কতো বার জন্মগ্রহন করতে হবে?

p13