গোপন সুর

br

বৃষ্টি.. পতনোন্মুখ পরাগকে উসকে দেয়
স্খলনের নেশা, লাজুক রেণু ঝেড়ে
ধূম্রল আড়ালে খুলে দেয় সঙ্কোচের ফটক,
কামান্ধ প্রলয়ের সৌষ্ঠবে বাজে বজ্রনিনাদ,
তুলে নেয় আদ্রক চুম্বন
ঘামের ঝর্নায় রচনা করে সায়েরি, প্রেম-প্রবাদ!

রাগিনীর অক্ষিসারে জ্বলজ্বলে কবিতা,
বৃষ্টির নন্দনে একাকার নদীটির আপন নাগমা
একজীবনের সমস্ত ব্যাকুলতা বয়ে
হয়েছে পরিনিতা খরস্রোতা!..

দহনের পরিক্রমা আর-
অজস্র উন্মাষিক মেঘের পাহাড় ডিঙিয়ে
নিশি ক্লান্ত বকের চোখে এঁকে দেয় পূর্ণিমা চুম্বন!…

কবিতার কবি’রাও উন্মত্ত হ্রেষা
ছন্দবদ্ধ শৃঙ্গারে আজকাল ঠিক পুষে না যাদের
ছুটে চলে দূর.. সমুদ্দুর..
ধ্রুপদী বুকে প্রলুব্ধ আলিঙ্গন তৃষ্ণায় আকণ্ঠ মন
স্বর্গীয় হুরেরাও
পুরুষের তাম্রতামাটে ঠোঁটে খুঁজে জীবনের গোপন সুর।

.
দা উ দু ল ই স লা ম।
১৮/৮/২৩

প্রতীক্ষা

ria

ইচ্ছে তোমার, ইচ্ছে আমার
ইচ্ছে ভালোবাসার,
ইচ্ছে স্বপন, ইচ্ছে কাঁপন
ইচ্ছে কাঁদা হাসার।

আমার তুমি ভীষণ প্রিয়
আমার বাঁচার আশা
হৃদয় থেকে হৃদয় জুড়ে
আমার ভালোবাসা

সন্ধ্যে এলে তুমিও এসো
দোলা লাগুক মনে
সেই আশায় গুনছি প্রহর
স্বপ্নে জাগরণে

বৃষ্টি নামুক বৃষ্টি ঝরুক
আমার ভুবন জুড়ে।
হাতটা ধরে নিয়ে চলো
ভিজতে বহুদূরে।

মধ্য আয়ের দেশ

366

উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে দেশ,
দুর্মূল্যের বাজারে মানুষ হচ্ছে নিঃশেষ।
নেতারা খাচ্ছে পোলাও কাচ্চি বিরিয়ানি,
খেটে-খাওয়া মানুষ দিনদিন হচ্ছে ঋণী।

উন্নয়নের কারিশমা মাথায় ঋণের বোঝা,
জনগণ মরছে নেতা সাজে ওঝা।
দুর্মূল্যের বাজারে ভোজ্যদ্রব্য লাগামহীন ছুটছে,
অখাদ্য-কুখাদ্য গরিবের কপালে জুটছে।

নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায়,
তাদের নাভিশ্বাস উঠেছে নাকে ডগায়।
দেশ উন্নয়নে আলোকিত হচ্ছে চারদিক,
বিদ্যুৎ বিহীন অন্ধকার এদিক-সেদিক।

গরিবের মাথার ঘাম গড়াচ্ছে পায়,
কৃষকের আর্তনাদ ধ্বনি মুখরিত গাঁয়।
মেহনতি মানুষের শরীর হচ্ছে রক্তশূণ্য,
দুর্নীতিবাজ নেতাদের জীবন হচ্ছে ধন্য।

দেশের টাকা মানে জনগণের রক্ত,
দুর্নীতিবাজরা তা বিদেশে পাচারে রপ্ত।
নেতারা বিদেশে বানাচ্ছে আলিসান বাড়ি,
দেশেও থাকে তাদের বুলেটপ্রুফ গাড়ি।

গরিব মরে মরুক না খেয়ে থাকুক,
করোনা রোগে ভুগে ডেঙ্গুতে মরুক।
যত রোগের পাদুর্ভাব নেতাদের লাভ,
রিলিফ মেরে দেখায় মানবতার ভাব!

দুর্নীতির রাহু গলা টিপে ধরছে,
রাহুগ্রাসে গরিবেরা ধুকে ধুকে মরছে।
উন্নয়ন আর দুর্নীতি সমানতালে চলছে,
তবুও নেতাগণ মধ্য আয়ের দেশ বলছে।

.
নিতাই বাবু
১৪/০৮/২০২৩ইং।

চেতনাহীন কবিতা ও একটি জীবন্ত লাশ!

জন্ম আর মৃত্যু সব সময় মুখিয়ে থাকে
সে ব্রহ্মপুত্রের নাদান চর হোক কিংবা রাজপ্রাসাদ!
কালেভদ্রে কেউ কেউ দ্বিগুণ হয় জন্মসাল
আর কেউ জন্মের আগেই কুড়িয়ে নেয় মহাকাল!

প্রতিটি জন্মের মতো কবিতারও জন্ম হয়
প্রসব বেদনায় শিরোনাম খুঁজে নেয় পাগল পাঠক
শব্দ ও ভাবের কারাগারে যখন হয় সে আটক!
অতঃপর আসে কবিতার মৃত্যু স্বাদ…
পাঠকহীন কবিতাগুলোও তেমনি বারবার মরে
পড়ে থাকে যুদ্ধের মাঠে চরম বিস্বাদ!

যেভাবে লড়াইয়ের ময়দানে মরে পড়ে থাকে
পলায়নপর আহত কাপুরুষ সৈনিক,
যেভাবে অলসের প্রতিটি ক্ষণের মৃদু মৃত্যু হয়
সেভাবেই চেতনাহীন কবিও জিয়ন্তে লাশ হয়!

বৃষ্টি ভেজা দিনে এক কাপ উষ্ণতা চাই

ch

ঝুম বৃষ্টির এই দিনে মন যেন ডানা মেলা পাখি
এমন সুখের দিনে সময় দিয়ে যাক ফাঁকি
এক কাপ চা হাতে আজ বৃষ্টি বিলাসী
টুপটাপ ঝরুক বৃষ্টি, আমি বৃষ্টি ভালোবাসি।

ঝুপঝাপ রিনিঝিনি আয় বৃষ্টি আয়
ঘিরে রাখ আজ আমায় ভীষণ মায়ায়,
ও বৃষ্টি চা খাবি, এসে বস চায়ের কাপে
নে করে নে স্নান চায়ের উত্তাপে।

আয় বৃষ্টি আয়, ঝমঝমিয়ে আয় না
আশা করি রাখবি আমার বায়না,
চা দেব আজ খেতে
দে বৃষ্টি আজ তোর বুক পেতে।

পাখি আমি ডানা মেলা পাখি, উড়ি মেলে ডানা
আজ আমার অফিস পাড়ায় যেতে আছে মানা,
চায়ের কাপে বৃষ্টির জল
বৃষ্টি থামিস না, করিস না আজ ছল।

ঝুমঝুমিয়ে নাম রে বৃষ্টি আকাশ ভেঙ্গে ঝর
দে কাঁপিয়ে বৃক্ষ লতা, টিনের চাল থত্থর,
উষ্ণ জলে ভেজাচ্ছি ঠোঁট
আয় বৃষ্টি আয় আরাম করবো কিছু লোট।

.
(স্যামসাং এস নাইন প্লাস, ঢাকা)

এই আষাঢ়ের চিঠি

দূরের পাখিরা জানে এই আষাঢ়ের অন্যনাম- তোমার চিঠি। অথবা ভালোবাসার
পুরনো খাম- নতুন অক্ষরে সাজানো একটি কদমফুল। ভুল করে উজানে বয়ে
যাওয়া নদীর প্রশ্বাস জমা রাখা দুপুর।

হতে পারে ভোর- কিংবা বাঁশির সুর। যে সময়ের কাছে রেখে এসেছি আলোর অতীত।
মনে পড়ে ? এই আষাঢ়েই আমরা গেড়েছিলাম আরেকটি বিশ্বাসের ভিত !

আর জীবনের সপ্তকলায় পরস্পরের
মুখ দেখে দেখে-
ঝড়ের প্রতীক্ষায় কাটে দিন- মাস
নতুন কোনো সংগ্রামের
মানচিত্র এঁকে।

পাখি না ব্ল্যাকবোর্ড

কতদূর সুনামগঞ্জ, পারাবত ঘুম খুলে পৌছে যাই।
মান্দারফুলের কেকাধ্বনি যদি রেখে দেয় একবার
শুক্রবারের সৌন্দর্য—তাতে দূরের পথ এসে
ছড়িয়ে—ছিটিয়ে দেবে শহর। বাদামজাত বিকেল—
চেয়ে দেখা যাবে পেছনের ব্ল্যাকবোর্ড, একখণ্ড চক
এঁকেছিল নেচে ওঠা পাখিদের গীতরত জীবনভার
দেখি—ভেতরে ক্রীতদাস প্রাণ ছড়ায়—অনেকখানি

জেনেছি মানুষ—জীবন চূড়ান্ত জুয়াঘর, ইশারাগুলো
নিশ্চুপ পড়ে থাকে কাটা সিঁড়ির মতো; কেউ ফলে—
কেউ ফলায়—কুহুক ডাক, উপশম; তোমার দোস্তি
প্রণয়ে—পায়চারি করে সাইবার চাঁদ, দূরবিন আত্মা।

সয়ে যায় শান্ত ক্রোধ, ভেতরে ছুটে আসে হামাগুড়ি
বসে থাকি—কুয়াশার মতো; একা—যেতে যে হবে!

.
১৩ আগস্ট ২০২৩

প্রসঙ্গ: শব্দনীড় ব্লগ বন্ধ হবে … আপনার লেখার অনুলিপি নিন

14shobdonir

সৌহার্দ্য সম্প্রীতিতে মুখরিত থাক শব্দনীড়। থাকুক সর্বজনীনতা; থাক মুক্ত বাক্ স্বাধীনতার অনন্য একটি মঞ্চ যেখানে অনালোকিত নক্ষত্ররা হাতে হাতে রেখে তৈরী করবে ছায়াপথ … এই আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে শব্দনীড়ের পথচলা শুরু।

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় শব্দনীড় আপনাদের পাশে থাকতে চেয়েছে এবং থেকেছে। অতঃপর দিনদিন পাঠক সংখ্য, ব্লগার সংখ্যা, মতামতের অনুপাত; ক্রমহারে হ্রাস পেতে থাকায় শব্দনীড় আর অন্তর্জালে থাকবে কিনা অথবা রাখা সম্ভব কিনা সেই প্রশ্নের দরোজায় বিনা বাক্যে দাঁড়িয়ে যায়।

চলতি প্লাটফর্মটি কয়েকজন সু হৃদের শাব্দিক আশ্বাসের ভিত্তিতে চালু হয়। পারস্পরিক সম্পর্ক বা আর্থিক বিষয়টি নিয়মিত না থাকলে এই সাইট কতদিন চালু রাখা সম্ভব সেই প্রশ্নটিও নিরব ছিলো। সকল আশ্বাস এবং নিয়মিত বা অনিয়মিত সহযোগিতা যখন ধীরে ধীরে শূন্যের কোঠায় পৌঁছায় তখন একজন সুহৃদ ব্লগের হাল ধরলে শব্দনীড় তার পথচলা দিনে/দুর্দিনে সুগম রাখতে পেরেছে।

Divider-7aa

প্রিয় ব্লগার এবং লেখকবন্ধু।
শব্দনীড় আজ বাস্তব এক দিনক্ষণের মুখোমুখি। বন্ধ করে দিতে হচ্ছে শব্দনীড়কে।

আগামী ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩।
এর মধ্যে আপনার মূল্যবান লেখার অনুলিপি সংরক্ষণ করুন।
www

আপনারাই আমাদের বিকল্প এবং সর্বদা আমরা পরস্পর একে অন্যের পরিপূরক। আপনাদের ঐকান্তিক অংশগ্রহণে শব্দনীড় আজীবন কৃতজ্ঞ।

পরিশেষে সকলের প্রতি আমার হার্দিক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন। আনন্দে থাকুন। ধন্যবাদ। সবার জন্য শুভকামনা।

aaa_3

এক নজরে ব্লগ পরিসংখ্যান :
search_btn * নিবন্ধিত ব্যবহারকারী সংখ্যা : ৪০৮ জন।
search_btn * পোস্ট সংখ্যা : ১৫,৮৫০ টি।
search_btn * মন্তব্য সংখ্যা : ৯১,৮২৬ টি।

দেদার ঢর

635771073297014161-oriental-plum-tree

বানভাসি ভাদ্রের আগমন
সামান্য কদমের হাসিটা প্রায়
শেষ প্রান্তর, রৌদ্রোজ্জ্বল কান্না
শুধু জমে বরফ হলো শ্রাবণ;
তবু কোথায় প্রশ্ন থেকে যায়
দেহ কম্পন আমরণ গন্ধ!
ভাদ্রের দেখা- এই শুরু বজ্রপাত
খালে বিলে- বনে জঙ্গলে
পথে ঘাটে- ঘরে ফিরে
আর কত কি- এখন আমি
বর্ষার পুজারী অনেক খানি-
যখন তখন নামে দেদার ঢল।

০৫ ভাদ্র ১৪২৯, ২০ আগস্ট ২৩

সুরে সুরে ঋতু

পিয়ানোর রিডগুলি সুরের মূর্ছনায় ভেঙে পড়ে
শিল্পী তাঁর মনোহর সুর ও তালে
প্রকৃতির ঋতু পরিবর্তনের মহিমা গেঁথে যান।

তাঁর সুরের বিস্তারে গাছের ডালে ডালে
সঞ্জীবনী মন্ত্র ঢেলে দেয় শরৎ,
সবুজ পাতায় পাতায় ভরে ওঠে গাছের শাখা প্রশাখা।

সুরের মোহময় আকুতি গাছের পাতা ঝরানোর সুর তোলে
হলুদ, লাল শুকনো পাতা খসে গাছের তলায় জমা হয়,
কিছু বা হাওয়ার ঘূর্ণিতে ঘুরপাক দেয়,
শুকনো ডালপালার ফাঁক দিয়ে রোদের সোনালী আলো
বন বনান্তরে ছড়িয়ে যায়।
মলিন পৃথিবী যেন উত্তাপ পেয়ে হেসে ওঠে।

শিল্পীর সুর উঁচু লয় তুলে আবার নিচু হয়ে আসে।
পিয়ানোর রিড লয় কমিয়ে শীতের আহ্বান করে।

হে আমার সন্ন্যাসীরা…

আজ আপনাদের এই শেষ কথা বলার ছিল যে,
দর্শনের গতি চক্রাকার
রাতের জুঁইফুল, তবু সারাদিন যে-গন্ধের শবদেহ
বয়ে বেড়াতে হবে তার নাম যৌনতা
পা টলমল করছে, অথচ মাথা নীচু
সে হচ্ছে সন্তান

একদিন দৈবাৎ গেলাস উঁচু ক’রে জল খেতে গিয়ে
মানুষের চোখে আকাশ পড়ে গেছে
ওমনি আকাশ-সাঁতলানো হাওয়া নেমে এসে
কিছুটা কচুপাতার চিবুকে, তো কিছুক্ষণ ফুসফুসে
আর বাকি অংশ সাইকেলের গতির ভেতরে।
জানানোই শ্রেষ্ঠ জানা ভেবে মানুষ বাক্য লিখে গেছে
আমাদের সব ভাষা অন্যের, কৃত্রিম
আমাদের যত গল্প নিজের, পুরনো

তাই আগামিকাল যেভাবে শেষ হল,
গতআজও তেমন অস্ত যাবে
কাকের মধ্যে বায়স, পায়রার দেহে কবুতরকে
আবিষ্কার করব আমরা
উঠোনের দুপাশে ফুল আর কুড়ুলে
ভেঙে পড়া দুই গাছ
মাঝখানে যে খর্বকায় মুক্তির দেবতা
তার ডানায় শেষ চুম্বন রাখব
যেভাবে সন্ত্রাসবাদী তার বিস্ফোরকে চুমু খায়

.
[‘তিনটি ডানার পাখি’ কাব্যগ্রন্থ থেকে]

অকবিতা

বাড়ছে বয়স চর্যাপদের গীতে
বনস্পতির ছায়ায় শুকোই ঘাম,
বোতাম ছেড়া শার্ট
ভীষণ আনস্মার্ট
হয়নি শেখা বাঁধতে জুতোর ফিতে,
পারফিউমের দেইনি কোনো দাম।

আমার নেশা কাঁঠালচাঁপার ঘ্রাণে
ঘোড়ার চালেই কিস্তি বাজিমাৎ,
আগুন বনে একা
ফুলকি ছুঁয়ে দেখা
ভস্ম করার খায়েশ প্রবল প্রাণে,
পুড়তে পুড়তে পোড়াই অকস্মাৎ।

কলার জুড়ে ঘামের মলিন দাগ
কলব ভরা অনেক হিসেব ঋণে,
তোমার চোখে রাখা
ইকারুসের পাখা
আমারও চাই ভালবাসার ভাগ,
উড়ালকাতর আলিঙ্গনের দিনে।

.
অকবিতা/২০১৭

এই অনল

images (3)

যত দেখি বাড়ে তৃষ্ণা
নদীর তো নেই কোন সীমানা
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভাসবো বলে
ঝাঁপ দিয়েছি গহিন জলে।

বসন্তে সেজেছে কার আঙিনা
ফুলের গন্ধে আর ঘুম আসে না
জোস্নার সাথে রাত জাগবো বলে
পথহারা হয়েছি তার কবলে।

জলপরী যখন মেঘকন্যা
উড়ে যেতে তার নেই তো মানা
বৃষ্টিতে একদিন ভিজবো বলে
আটকে থাকি ওই মায়াকাজলে।

হাসছে কে সে অনন্যা
মনে হয় যেন পাহাড়ি ঝর্না
সত্যি সত্যি বুনো হবো বলে
পুড়ছি নিশিদিন এই অনলে।

অনাগত রূপ

এই বৃষ্টির দিনে— শহর ঘুমায়, পাখিদের গাছ
কোনো এক সন্ধ্যায় ডাইনিপনা নাচ এনে
দূরের জানালায় ছড়িয়েছে রামধনু আলো
হলুদনির্জন নেমে যায় দো—ছায়া শাদা তোড়
অথচ তুমি নামছ না, পাতার চিরকুট এখানে
তুড়িয়া বাজায়—এক গোসলে—এক পৃথিবী

খালি পায়ে—নিরক্ষর হাওয়া, মৃত তারাদের
হরবোলা তির্থনাচ এমন—পোড়া সবুজ
আমার গানের হল্লাসুরে কেঁপে ওঠে—ফুল
গীত শিরার গহিনে চেঁচিয়ে যায় চলন্ত ট্রেন
দুপাশ দাঁড়ানো ঝরে পড়ছে অনাগত রূপ—
বহুদূরে ছেড়ে যায় বেড়ালের ডাক, প্রেতনৃত্য;

এত রক্তপাতের পরও

যে কাঁটা গলায় বিঁধার কথা ছিল, তা বিঁধেছে চোখে
কিছুই দেখছি না আর,
কিছুই মনে করতে পারছি না, আদৌ
মানুষ ছিলাম কী না, কোনো জনমে
দাঁড়িয়েছিলাম কী না- কোনো মানুষের পাশে।

উড়ে যাচ্ছে পাথর। উড়ছে রক্ত- বাষ্প হয়ে
তারপরও আমাদের নিষ্ক্রিয় নাসারন্ধ্র, পাচ্ছে না
কোনো গন্ধ, পরখ করতে পারছে না বর্ণের ভাষা।
আর আমাদের পবিত্র(!) জনেরা বসে আছেন
যে পিঁড়িতে,
সে স্থান বড় উঁচু, যেখান থেকে মোটেও
দেখা যায় না সমতল পৃথিবী। তাদের মুখে
এঁটে আছে যে কুলুপ, সেটাও প্রাগৈতিহাসিক,
কালো কোনো দৈত্যের মৃত দাঁতখণ্ড।