মাসুদুর রহমান (শাওন) এর সকল পোস্ট

মাসুদুর রহমান (শাওন) সম্পর্কে

মাসুদুর রহমান (শাওন) এর জন্ম ১৯৯৭ সালে, টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার সবুজে ঘেরা ছায়াঢাকা পঞ্চাশ গ্রামে। পিতার নাম মোঃ মজনু মিয়া, মাতা মোছাঃ খুকুমণি। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, বর্তমানে আনন্দমোহন কলেজ'এ (ময়মনসিংহ) বাংলা সাহিত্যে অনার্সে অধ্যায়নরত। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় ছড়া লেখার মাধ্যমে সাহিত্যে প্রবেশ। কবিতা ছাড়াও ছোট গল্প লিখে থাকেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ দ্বারা প্রভাবিত।

তোমার প্রতিফলে


আমার একাকীত্বের সময়গুলো কত যে বিষণ্ণ মনে হয়,
অথচ তুমি ভালোবাসি বলতেই সবটা সময় হয়ে যায় সজীব প্রাণ এক।
আমার শূন্যতা ঘেরা চারপাশ কত যে নির্জন মনে হয়,
অথচ তোমার গোপন স্পর্শে ফিরে পাই এক ভোর কোলাহল।
যখন আমার বিকেলগুলো ঝরে পড়ে শুকনো পাতার মতো,
তখন তোমার চোখদুটো; বিকেলগুলো রাঙিয়ে দেয় হাজার রঙে।
কেবল তুমি আছো বলেই আমার পুরোটা হৃদয় জুড়ে এত গান, এত ভালোবাসা,
যেন শুভ্র আবেশের ঝুম বৃষ্টিতে ভেজা প্রতিটা প্রহর।।
.
২৪/০১/২০২০

১৪ আগস্ট আমার জীবনে একটা বিশেষ দিন আর সেই দিনকে উপলক্ষ্য করে এই কবিতা পোস্ট করলাম…

অণু কবিতা- ২১০

মনে কি পড়ে…?
চেনা পথে দাঁড়িয়ে ছিলাম…
নত চোখে তাকিয়ে ছিলাম…
হারিয়ে যাওয়ার প্রবল স্রোতে…
তোমার নামটি ডেকেছিলাম…
ব্যর্থ বুকে সকল চেপে…
আমার দুহাত বাড়িয়েছিলাম…
.
৩১/০৫/২০১৯

মেঘ

তোমাকে ভালোবেসে মেঘ বলে ডাকতাম আমি,
অনেকদিন হলো তোমাকে মেঘ বলে ডাকিনা।
তোমাকে এখন আর অন্যকেউ মেঘ নামে ডাকে কিনা তাও জানিনা,
জানিনা এখন অন্যকারো বুকের ঠিক কতটা জুড়ে মেঘ হয়ে আছো।।
.
তবে আজকাল আকাশ মেঘলা হলে খুব জোড়ে জোড়ে ঐ মেঘেদের মেঘ বলে ডাকি,
ঐ মেঘেরা আমার ডাকে সাড়া দিয়ে অঝোর বর্ষণে ভিজিয়ে দেয়।
মুছে দেয় আমার কান্না ঠিক যেন তোমার মতোই আদরের হাতে,
তখন মনে হয় এই মেঘ আর তুমি মেঘের মাঝে কোন ফাঁক নেই।
আজ এই ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘের দিনে তোমাকে খুব মনে পড়ছে,
এমন হাজারো মেঘের দিনে তোমাকে খুব বেশি মনে পড়বে মেঘ।।
.
০৬/০৭/২০১৯

বোন

বোন…!
জীবনে এই একটা সম্পর্কের অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি আমার। তবে অনেকের জীবনে বোনের প্রভাব, স্নেহ, ভালোবাসা দেখে কতদিন আর কতরাত যে মন খারাপ করে কাটিয়েছি জানিনা, কখনো কখনো কেঁদেছিও। এইতো কয়েক বছর আগেও আম্মার সাথে বোন নিয়ে ঝগড়া করতাম। সবার বোন আছে আমার কেন নেই ? আম্মা হাসতো আর বলতো তাড়াতাড়িই বোন এনে দেবে যদি তাকে অনেক আদর করি এই শর্তে আর আব্বা বলতো পালক বোন এনে দেবে। এখন বড় হয়েছি তাই এসব আর বলিনা।
.
যখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়তাম তখন আমার এক ক্লাসমেটের বাড়িতে যেতাম মাঝে মাঝেই। দেখতাম ওর বড় বোন ওর জন্য কোনদিন আম ভর্তা করে রেখে দিতো, কোন দিন বড়ই বা জলপাই। তাছাড়া ওর স্কুল ড্রেস ওর বোনই ধুয়ে আয়রন করে রাখতো। কোনদিন সময় না থাকলে খাইয়ে দিতো আর টিফিন রেডি করে রাখতো তাছাড়া ওর হাত খরচের টাকাও ওর বোন দিতো। এতো গেলো স্নেহের কথা আবার অকারণে ঝগড়া করাটাও চোখে পড়তো, সম্পূর্ণ দোষ ভাইয়ের থাকলেও বকা খেতো বোনটা আর আশ্চর্যের বিষয় যে, সে মেনেও নিতো এমনকি কোন প্রতিবাদ বা প্রতিরোধও করতোনা অথচ যেখানে বোনটার এক থাপ্পড়ের উপর কিছু করতে হতোনা সেখানে হামেশাই বোনটাই মার খেতো কিন্তু কখনোই ছোট ভাইটাকে মারতোনা। চোখের সামনে ওর বড় বোনের আদর দেখতাম, ঝগড়ার মাঝেও একটা বিশাল স্নেহের আকাশ ছিলো। সেই স্নেহগুলো ঠিক অন্যরকম, অন্যভাবে সংজ্ঞায়িত করতে হবে সেগুলোকে।
.
এছাড়া আরেক বন্ধুর ছোট বোনের প্রতি ভালোবাসাটাও উল্লেখ করার মতো। একবার আমরা পিকনিকে যাই আমার ঐ বন্ধু ওর বোনের জন্য অনেকগুলো খেলনা কিনেছিলো আর আমি কিনতে পারিনি কারণ কাকে দেবো ? তখন আমার ছোট কোন কাজিনও ছিলোনা। তবে ওকে পছন্দ করে দিয়েছিলাম আর মনে মনে কষ্ট পেয়েছি এই ভেবে যে, যদি আমারও ছোট একটা বোন থাকতো।
.
এরপর যখন কলেজে গেলাম তখনও এমন অনেক ভাইয়ের জীবনে বোনদের ভালোবাসাটা অন্যরকমভাবে প্রতিফলিত হতে দেখেছি। সব কথা যেন অকপটে বোনের কাছে বলা যায়, গোপনীয়তা যেন একমাত্র বোনের কাছে এসেই ঠাঁই পায়, কিন্তু আমি আমার মনের কথা অভিভাবক স্বরূপ কাউকে বলতে পারিনি বড় বোন না থাকায়। অনেক দোষত্রুটি বোনের কারণে হাওয়া হয়ে যেতে দেখেছি অনেকের। একবার আমরা কয়েকজন ক্রিকেট খেলা নিয়ে ঝগড়া করেছিলাম তারপর আমার এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে লুকিয়েছিলাম। যখন বিচারটা ওদের বাড়ি পর্যন্ত গেলো তখন ওর বোন অনেককিছু বলে বিষয়টা মিটমাট করে দিলো। ওকে ঘরে রেখেই বললো আজকে আসুক হারামজাদা ওর ঠ্যাং ভাঙ্গমু, অথচ বাদীপক্ষ চলে গেলে ওকে শুধু শাসিয়ে দিলো আর কিছুই করলোনা এমনকি আমাদের সবাইকে মুড়ি ভর্তা করে খাওয়ালো সেদিন। দূরে কোথাও গেলে বোনের বারবার খোঁজ নেয়া দেখেছি তবে এগুলো অন্যদের জীবনে দেখা।
.
কেউ বিশ্বাস করুক আর না করুক আমি বিশ্বাস করি ভাই আর বোন কখনো এক না। ভাইয়ের সাথে খুব একটা বন্ধুত্ব হতে দেখিনি কারো জীবনে আর নিজের জীবনেতো নয়ই, নিজের ভাই থাকলেও আমার থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত সে। ভাইয়ের সাথে সর্বোচ্চ যেটা হয় সেটা সাময়িক মিল। ভাইয়ে ভাইয়ে অনেক মিল থাকলেও বছর কয়েক পরেই জমিজমা নিয়ে ভাইয়ে ভাইয়ে বিরোধ হতে দেখেছি কতশত তার কোন হিসেব নেই কিন্তু বোনের সাথে বোনের বা ভাইয়ের সম্পর্কটা স্বার্থের কারণে হতে বা ভাঙ্গতে দেখিনি কখনো।
.
নিজের বোন বলতে কয়েকটা কাজিন আছে তবে কোন এক অজানা কারণে ওরা আপন করে নিতে পারেনি আমাকে। এইতো একবার এক কাজিনের কাছে চিপস চেয়েছিলাম সে বলেছিলো তুমি কি আমার আসল ভাই? তোমারে দিমুনা (যদিও না বুঝেই বলেছিলো তবে কথাটায় গভীরে আঘাত পেয়েছিলাম)। বাবা আর চাচাদের মধ্যে সামান্য ঝগড়া বা কথা কাটাকাটি কাদের বাড়িতে হয়না? এসবের কারণে অনেক সময় ওরা আমার কাছেও আসেনা।
সে যাই হোক এসব ব্যপারে আমি অভিমান করেও করিনা কারণ লাভ নেই।
.

আজ সকালে এক কাজিন কোথা থেকে কিছু খেঁজুর এনেছে জানিনা। আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছে আর আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে খেঁজুরগুলো খাচ্ছে। আমি কেন জানিনা বাচ্চাদের মতো চেয়ে বসলাম কিন্তু ও দিবেনা। অনেক জোরাজুরির পরও রাজী হলোনা। পরে পাঁচ টাকা দিয়ে এই একটা খেঁজুর কিনে নিলাম ওর থেকে…!
.
২৭/০৬/২০১৯

সেই দিনগুলো

আমার এক বন্ধু ক্লাস এইটে পড়ার সময় ক্লাস সেভেনের এক মেয়েকে খুব পছন্দ করতো। আমাদের ক্লাসের পিছনেই ছিলো সেভেন ক্লাস আর দুই ক্লাসের মাঝখানে পার্টিশন ছিলো টিনের বেড়ার। আমার বন্ধু সর্বদা ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসতো আর যেখানে বসতো সেখানে খানিকটা টিন কেটে জানালার মতো করেছিলো তাছাড়া বেড়া অনেকটাই ভাঙ্গা ছিলো তখন। আর সেখান দিয়ে ও পিছনের ক্লাসের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মেয়েটাকে দেখতো। যদিও অনেকভাবে মেয়েটাকে বুঝাতে চাইতো কিন্তু মেয়েটা কিছুতেই ওকে পাত্তা দিতোনা। তারপরও ওর সাধ্যমত আমলে লেগেই ছিলো।
.
ঐ সময় লাল রঙের স্প্রিন্ট মোবাইল আসে বাজারে। ২০০৯/১০ এর দিকে যারা মাল্টিমিডিয়া মোবাইল দেখেছেন তারা হয়তো মোবাইলটা সম্পর্কে জানেন। তো আমাদের ক্লাসের এক বন্ধু ঐ মোবাইল একটা কিনে ক্লাসে নিয়ে আসে। মাল্টিমিডিয়া মোবাইল তখন বাজারে একেবারে নতুন। ঐ একটা মোবাইল দিয়েই ক্লাসের সবাই ছবি তোলা, গান শোনা, ভিডিও দেখা ইত্যাদি খুব উৎসাহের সাথে এনজয় করতাম। আমার ঐ বন্ধু ঠিক করলো মোবাইলে মেয়েটার ছবি তুলবে যেমন কথা তেমন কাজ। ও ভাঙ্গা টিনের ফাঁক দিয়ে মেয়েটার ছবি তোলে আর সেটা ঐ মেয়েটা বুঝতে পারে। আমার বন্ধুও বুঝতে পারে যে মেয়েটা বুঝে গেছে। এর কয়েক মিনিটের মাথায় আমাদের গরম হুজুরের কাছে মেয়েটা আমার বন্ধুর নামে বিচার দেয়। এই হুজুরকে সবাই খুব ভয় পেতো আর খুব রাগি ছিলো তাই আমরা সবাই উনাকে গরম হুজুর বলতাম। উনার নাম ছিলো মাওঃ আঃ বারি (হাফি)।
.
এর মধ্যে পিয়ন আঃ আজিজ ভাইয়ের মারফতে জানতে পারি যে, টিফিন পিরিয়ডে বিচার হবে। সবাইতো খুব ভয় পেয়ে যাই, কেউ কেউ ওকে পালিয়ে যাওয়ার বুদ্ধি দিতে থাকে ও বলে আমি যামুনা ও যদি আমারে মাইর খাওয়াইয়া খুশি হয় তবে আমি মাইর’ই খামু। আর মোবাইলটা যার ছিলো সে আগেই ভয় পেয়ে মোবাইল নিয়ে ভেগে যায়। তখন বিপদের আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। কী করবো ভাবতে থাকি, একেকজন একেক বুদ্ধি দিতে থাকে কেউ কেউ মেয়েটার কাছে ওকে মাফ চাইতে বলে। এর মাঝে আমার মনে পড়ে আমাদের মাদ্রাসার কাছেই একটা ফ্লেক্সিলোডের দোকান আছে যেখানে তখন মোবাইলের ক্যাচিংও বিক্রি করা হতো। তো আমি নিজে গিয়ে সেখানে খোঁজ করে ঐ লাল স্প্রিন্ট মোবাইলের ক্যাচিং পাই আর বলি যে, এটা গরম হুজুর দেখতে চাইছে পছন্দ হলে এই মডেলের একটা মোবাইল কিনবে আমাকে পাঠিয়ে দিছে এটা নেয়ার জন্য। গরম হুজুর আবার ঐ দোকান থেকে মাঝে মাঝে বাকিতে ফ্লেক্সিলোড করতে আমাকে পাঠাতো তাই উনার কথা বলি যাতে দোকানদার দেয় কারণ আমাদের কারো কাছে তখন টাকা ছিলোনা।।
.
এরপর টিফিন পিরিয়ডে আমাদের ডাকা হয় আমাদের ক্লাস থেকে আমি, ঐ বন্ধু আরও দুজন যাবার অনুমতি পাই। আর ঐ মেয়ের সাথে ঘটনার সাক্ষী স্বরূপ দু/চারজন মেয়েকেও ডাকা হয়। যথারীতি বিচার শুরু হয় আমি আগেই আমার বন্ধুকে শিখিয়ে দেই তুই কিছু বলবিনা যা করার আমি করবো। ও আমার কথা মতো চুপ থাকে, বিচারের এক পর্যায়ে আগে জানতে চাওয়া হয় মোবাইলটা কার? তখন আমি বলি হুজুর, মোবাইলতো বড় ভাইয়ের আর ওর হাতে যেটা ছিলো সেটাতো ক্যাচিং বড় ভাই কিনে নিয়ে যেতে বলেছে। এইযে দেখুন, এই বলে হুজুরকে লাগানো ক্যাচিংটা দেই (যারা মোবাইলটা সম্পর্কে জানেন তারা এটাও জানেন যে পুরো ক্যাচিংটা লাগালে হুবহু মোবাইল’ই মনে হতো)। হুজুর কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে দেখে বলে আরে এটা দিয়েতো ছবি তোলা যায়না। আমিও বলি জ্বি হুজুর, এটা ক্যাচিং আমার বড় ভাই কিনে নিতে বলছিলো। তখন হুজুর উল্টা মেয়েটাকে ধমক দিয়ে বলে আজাইরা বিচার যেন আর দেওনা। মেয়েটা ভয়ে কাঁদোকাঁদো হয়ে যায় তখন আমার বন্ধু সব বলে দিতে চায়। আমি তখন ওকে ধাক্কা দিয়ে বের করে এনে বলি আর জানি আজাইরা কাম করস না…!!
.
০৭/০৭/২০১৯

রবীন্দ্রনাথ নিয়ে আমার কথা


রবীন্দ্রনাথের কোন এক জন্ম বার্ষিকীতে আমার এক বন্ধুকে বলেছিলামঃ দোস্ত, আমার তো টু-জি নেটওয়ার্ক আর তোর তো থ্রি-জি নেটওয়ার্ক আছে, কয়েকটা রবীন্দ্র সঙ্গীত ডাউনলোড করতো শুনবো।
বন্ধুটি বলেছিলোঃ কিরে হঠাৎ ঠাকুরের গান কেন ?
আমি বলেছিলামঃ আরে হঠাৎ না, আমি মাঝে মাঝেই রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনি। তাছাড়া আজ তাঁর জন্মদিন তাই কিছু নতুন কালেকশন শোনতাম আরকি। আর উনি সম্মানিত মানুষ নামটা ভালোভাবে নিতে পারিস না ?
আমার বন্ধু উত্তরে বলেছিলোঃ রাখ তোর নাম, তুইও কি বাংলা সাহিত্য পড়ে পড়ে ঠাকুরের মুরিদ হয়ে গেলি নাকি ? আর শালায় বছরে কয়বার জন্ম নিছে ? কয়দিন আগেও না টিভিতে শোনলাম ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতেছে। (জানিনা ও টিভিতে কী দেখেছিলো, সম্ভবত রবীন্দ্র সঙ্গীতের অনুষ্ঠান দেখেছিলো।)
তারপর আমি আর ওর সাথে এই বিষয়ে কোন কথাই বলিনি কারণ ওকে রবীন্দ্রনাথ বুঝানো আমার কাজ না আর ও জানেও না যে, এক রবীন্দ্রনাথ ছাড়া শুধু বাংলা সাহিত্য পুরোটা অপূর্ণই থাকেনা বরং বিশ্বসাহিত্যও ষোল কলায় পূর্ণ হয়না।
.
এরপর একদিন রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকী আসলো (২০২০ এ), দেখি আমার ওই বন্ধু রবীন্দ্রনাথের “অনন্ত প্রেম” কবিতাটি পোস্ট করে তার বিশেষ কাউকে ট্যাগও করেছে। (গভীর ভালোবাসা বুঝানোর জন্য অথবা তাকে মুগ্ধ করবার জন্য।)
আসলে রবীন্দ্রনাথের প্রতি এমন লোক দেখানো প্রেমিক/প্রেমিকা হাজারো আছে। সমান্য স্বার্থের জন্য এরা রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে পারে আবার ধর্মান্ধতার বসে তাঁকে গালিগালাজও করতে পারে। এদের আমি এড়িয়ে চলি কারণ যারা রবীন্দ্রনাথের মতো মহান ব্যক্তিত্বের ভালোবাসা নিঃস্বার্থভাবে বুকে ধারণ করতে পারেনা তারা কখনোই নিঃস্বার্থ প্রেমিক/প্রেমিকা হতে পারেনা।
.
অনেক আগে রবীন্দ্রনাথকে উৎসর্গ করে একটি কবিতা লিখেছিলামঃ
.
তোমার সৃষ্টি ধারায় খুঁজে পাই প্রেমের ঐকতান,
তুমি প্রেমে বেঁচে আছো, প্রেমেই হয়েছ মহান।
দিয়েছ তুমি ব্যথিত হিয়ায় প্রেমের চির সুর,
করেছ তুমি শানিত প্রাণ করে হিংসা দূর।।
.
আজও তুমি আছ সবার স্মরণে একই নামে,
চলে যাওনি রয়েছ মিশে ‘অনন্ত প্রেম’ শিরোনামে।
যেখানে ভুলের সয়লাব, আপন হতে চায় পর বারেবার,
সেথায় জাগাও উদার মানস আনন্দ সুখাধার।।
.
তোমাকে তাই রেখেছি মনের গহীন অন্দরে,
তুমি রবীন্দ্র, প্রেমের গান গেয়েছ ভুবন জুড়ে।
এ আমার যত প্রেমের সুর, দিলাম তোমার তরে,
‘সোনার তরী’তে মহাকাল পরে তুলে দিও থরে থরে।।
.
প্রেমে রবীন্দ্র রবীন্দ্রে প্রেম
০৬/০৮/২০১৬
.
আসলে রবীন্দ্রনাথের অংকিত নায়িকা চরিত্রের মতো শাড়ি পড়ে, কপালে ইয়া বড় টিপ পড়ে অথবা পাঞ্জাবি আর ধুতি পড়ে রবীন্দ্রনাথের নায়ক সাজলেই রবীন্দ্রনাথের প্রতি প্রকৃত সম্মান বা ভালোবাসা প্রমাণ হয়না বরং হঠকারিতারই প্রমাণ হয়। রবীন্দ্রকে ভালোবাসতে হলে রবীন্দ্র পড়তে হবে, জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। আর তার পৃথিবীময় প্রেমের দর্শণকে অন্তরে ধারণ করতে ও তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
.
বিঃদ্রঃ রবীন্দ্রনাথের জন্ম বার্ষিকীতে পোস্টটি লেখা…
০৭/০৫/২০২০

তোমার প্রেমে পড়বার পর

তোমার প্রেমে পড়বার আগে,
সুন্দর চোখ, সুদর্শন মুখের রমণীদের খুটে খুটে দেখতাম।
আর ভিতরে ভিতরে খুব আফসোস করতাম,
ভিতরে ভিতরে কামনা জেগে উঠতো যেন সে আমার হয়।।
.
অথচ তোমার প্রেমে পড়বার পর,
সেই চিরাচরিত অভ্যেসটা কি আমূল বদলে গেলো।
কাউকে দেখে আফসোস করা, মনে মনে কামনা করা,
এসব কিছু বদলে গেছে তোমাকে পাবার আজন্ম প্রার্থনায়।।
.
এখন আমার কাছে তোমার চোখই পৃথিবীর সুন্দরতম চোখ,
সব ছাপিয়ে কেবল তোমার ছবিই ভেসে উঠে বুকের ভিতর।
প্রতিক্ষণ শুধু তোমাকেই দেখি পরম যত্নে হৃদয়ের দেয়াল জুড়ে,
আর তুমি দেখা দাও পৃথিবীর অপার আশ্চর্য সুন্দর হয়ে।।
.
তোমার প্রেমে পড়বার পর,
কেবলই মনে হয়ে পৃথিবীর পথে আর কোন রমণী নেই।
কোন সুন্দর চোখ নেই, সুদর্শন কোন মুখচ্ছবি নেই,
কেবল তুমি আছো; পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে।।
.
২৫/০৭/২০১৯

অণু কবিতা- ২৩২

আমি এক দিকভ্রান্ত শৈবাল,
ভেসে যাই এ-কিনার ও-কিনার করে।
কী করে ছোঁবো রত্ন তোমায়…?
তুমি যে থাকো গভীর জলের পরে।।
.
৩১/০৭/২০১৯

অথচ তুমি

এতো কাছে তোমার বসবাস,
এতোটা নিকটে বুকের ভিতর তুমি।
এতো চিৎকারে তোমাকে ডেকে যাই,
অথচ আমায় শুনতে পাওনা তুমি।
হয়তো শুনেও অভিমান বুকে ধরে,
দূর দিগন্তের শেষে ছুঁয়ে আছো বিষণ্ণ মেঘ।।
.
১২/০৮/২০১৯

আমাদের মিছিল

আমরা আজন্ম একটি আলোকিত মিছিলের যাত্রী,
সেই ধুধু মরুর প্রান্তরে আমাদের এই মিছিলের গোড়াপত্তন।
আমাদের মিছিলের লক্ষ্য একটি স্থায়ী সোনালি প্রভাতের,
সেই প্রভাতের জন্য আমরা অজস্র পাঁজরের রক্তকণা ঢেলে চলেছি।।
.
আমরা অসত্যের অন্ধকারে জ্বেলেছি সত্যের উত্তপ্ত শিখা,
দুঃশাসন আর অবিচারের বিরুদ্ধে আমরা নিয়েছি দীপ্ত শপথ।
আমাদের এই মিছিলে কেবল একটি স্লোগান; কেবল একটি সুর,
এই মিছিলের সকল যাত্রীর প্রতিটি পদক্ষেপ এক অভিন্ন দৃঢ়তা।।
.
আমাদের এই মিছিল শত সহস্র বছরে এতটুকুর জন্যও থামেনি,
এই মিছিল সকল ধ্বংসের বিপরীতে কেবল নতুন করে গড়তে শেখায়।
আমাদের এই মিছিল মৃত্যুর উপত্যকা পেরিয়ে,
জীবনের পথে হেঁটে চলেছে পৃথিবীর প্রতিটি পথে প্রান্তরে দিগন্তে।।
.
আমাদের এই মিছিল প্রতিধ্বনিত হয়েছে সমগ্র প্রাচ্য ছাড়িয়ে,
পাশ্চাত্যের কনক্রিটে গড়া প্রতিটি দেয়ালে দেয়ালে।
আমাদের এই মিছিল চলেছে উত্তাল টাইগ্রিস থেকে সুউচ্চ মিনারে,
গভীর অরণ্যের অভ্যন্তর থেকে সভ্যতার আদলে গড়া নগরে।।
.
আমাদের এই মিছিলের কোন বিশ্রাম নেই; কোন ক্লান্তি নেই,
যতক্ষণ তাওহীদের আলোয় প্রস্ফুটিত না হয় ধরার প্রতিটি কণা।।
.
১৯/০৭/২০১৯

তোমার জন্য

কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমি সুন্দর সকাল দেখলাম গোটা কয়েকটা জন্ম ধরে।
আকাশ দেখতে শিখলাম অপলক নয়নে; চাঁদের সাথে রাত জাগলাম কয়েক যুগ,
দীর্ঘ ২১’টি বসন্তে দেখলাম ফুলদের ফোটার প্রক্রিয়া।
আমি বর্ষার বুক থেকে তুলে নিলাম তুমুল শিহরণ,
একটা একটা করে শব্দদের সাজালাম রংধনুর মতো।
কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
আমার প্রতিটা মুহূর্তে আয়োজন করলাম শব্দ উৎসবের।।
.
তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে ভিতরে ভিতরে জড়ো করলাম,
একরাশ গোলাপের বিদগ্ধ ধূপের ধোঁয়াটে সন্ধ্যা।
প্রকৃতির প্রতিটা বিন্দুতে ছুঁয়ে দিলাম পরম স্পর্শে,
অরণ্য দেখলাম, নদী দেখলাম, ছয়টি ঋতুকে বুঝতে শিখলাম।
কবি হতে নয় কেবল তোমার জন্য একটি কবিতা লিখবো বলে,
যাকিছু এলোমেলো সব গুছিয়ে পরিপাটি করলাম একটি কবিতার জন্য।
পৃথিবীর সমস্ত সাহিত্য সভার দ্বারস্থ হলাম কেবল তোমার নামে একটি কবিতার জন্য,
কোথাও একটি কবিতা লেখা হলোনা আমার।
তারপর ক্লান্ত অবসন্ন হয়ে তোমার কাছে ফিরে গেলাম,
তারপর তোমার হাতে হাত রাখতেই আমার আঙুল ফুরে জন্ম নিলো সহস্র কবিতা।।
.
২১/০৮/২০১৯

অনুভব


আমি জেনে গেছি,
এই পৃথিবীর অন্ধকারে তোমাকে ছাড়া আলো কতটা দুর্লভ।
আমি বুঝে গেছি,
কেবল তোমাকে ভাবতেই কতটা সহজ হয়ে উঠে অনন্ত জীবনের কামনা।।
.
আমি অনুভব করেছি,
তোমার চোখে চোখ রাখতেই কতটা শুভ্র আলো নেমে আসে পৃথিবীর প্রতিটা সকালে।
কী এক মোলায়েম আদর নেমে আসে আমার যৌবন জুড়ে,
কেবল তোমাকে খুব কাছ থেকে দু’দণ্ড স্পর্শ করতেই।।
.
আমি খুব সহজেই অনুভব করেছি,
তোমার নিশ্চুপ থাকা মানেই সমস্ত পৃথিবীর করুণ মৃত্যু।
তোমার একটু অভিমান মানে,
আমার সমস্ত জীবন ব্যাপী শোকের মিছিল।।
.
আমি খুব নিবিড়ভাবে বুঝেছি তোমায়,
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে মেলে ধরো ততক্ষণ আমার ভালো থাকা।
তুমি ঠিক যতক্ষণ আমাকে ভালোবাসো,
ঠিক ততক্ষণই আমার বেঁচে থাকা।।
.
১১/০৮/২০১৯

ব্যাথাতুর স্মৃতি

বছর ২ আগে একটা প্রাইভেট কোম্পানির বিশেষ একটা প্রজেক্টের ট্রেনিং ছিলো টানা ৬ দিন। আমাদের চিফ ট্রেইনারের নাম ছিলো মাহমুদ হাসান স্যার।

আমার সাথে আরও যারা ছিলো সবাই অন্তত একটা বিষয়ে বিরক্ত হতোই। সেটা হলো চিফ ট্রেইনারের দেরীতে আসা, আমাদের বলা হতো ৯ টায় আসতে আর প্রতিদিন চিফ ট্রেইনার আসতেন প্রায় সাড়ে ৯-টার পরে। প্রথম দুইদিন আমাদের মধ্যে কেউ কিছু বলেননি কিন্তু কতদিন আর এভাবে মেনে নেয়া যায়…? আমাদের মধ্যে একজন একদিন তার এই অভ্যাসের প্রতিবাদও করেছিলেন। জবাবে বলেছিলেন উনার আম্মা নাকি ক্যান্সারে আক্রান্ত আর প্রতিদিন উনাকে হাসপাতালে দেখে আসতে গিয়েই উনার দেরী হয়। সেদিন আমাদের সবারই কেন জানিনা তার করুণ মুখের দিকে তাকিয়ে করুণা হয়েছিলো তারপর আর তার দেরী নিয়ে আমরা কেউ কিছু বলিনি।

লোকটার আরেকটি বড় সমস্যা ছিলো আস্তে কথা বলা, কী বলতো ঠিকমতো বুঝতাম না। আর মনে হতো নেশাখোর! এত বড় শিক্ষিত মানুষ আর এত বড় চাকুরীজীবী তার চেহারা এমন হবে কেন? চোখ কেন লাল থাকবে? এসব অবশ্য আমার ব্যক্তিগত ভাবনার অংশ ছিলো। সেদিন তার মায়ের কথা জানার পরে মনে হয়েছিলো লোকটা হয়তো মায়ের দেখাশোনা করেই এমন হয়েছে। বয়স হিসেবে লোকটার কমপক্ষে ৩/৪ বছরের একটা ছেলে/মেয়ে থাকার কথা ছিলো কিন্তু লোকটা নাকি বিয়েই করেনি তখনও। আর এর পিছনেও হয়তো তার মায়ের অসুস্থতা দায়ী ছিলো। লোকটার টাক মাথা দেখে আমরা মিটিমিটি হাসতাম, তাকে একবার একজন বলেছিলো স্যার আপনার ছেলে মেয়ে কতজন…? উত্তরে তিঁনি হাসতে হাসতে বলেছিলেন আমি বিয়েই করিনি আর তার বিয়ে না করার কথা শুনেও আমরা হো হো করে হেসেছিলাম।

কথা ছিলো আমরা ট্রেনিং এর জন্য জনপ্রতি প্রতিদিন ৪০০ করে টাকা পাবো। টাকাটা শেষের দিন দেয়ার কথা ছিলো কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে লোকটা শেষের আগের দিন আমাদের জানালো তার কাছে নাকি স্থানীয় এক নেতা চাঁদা দাবী করেছেন। যার কারণে জনপ্রতি ট্রেনিং ভাতা কমে যাবে। আমরা তখন সবাই প্রতিবাদ করেছিলাম আর বলেছিলাম এসব আমরা বুঝতে চাইনা আমাদের যা পাওনা তা আপনাকে দিতে হবে চাঁদা আপনি কোথা থেকে দিবেন সেটা আপনার বিষয়। সবার তীব্রতর প্রতিবাদের মুখে উনি আর কিছু বলতে পারেননি বরং ভয় পেয়েছিলেন বেশি।

শেষের দিন আসার আগেই অনেকেই হিসেব কষে ফেলেছিলেন লোকটা হয়তো ভাগবে না হয় চাঁদার টাকা আমাদের হক্বের টাকা থেকেই দিবেন। শেষেরদিন ১০টা পার হয়ে ১১টা বেজে গেলেও মাহমুদ স্যারের কোন দেখা নেই, আদৌও তিনি আসবেন কিনা এমন একটা সন্দেহ আমাদের মনে ঝেঁকে বসলো। সময় তখন ১২টা পার হয়ে গেছে এসিসটেন্ড ট্রেইনার নিজেও সেদিন উনি আসলে উনার সাথে কেমন শিক্ষামূলক আচরণ করতে হবে আমাদের শিখিয়ে দিলেন। উনি বলতে বলতে এটাও বলে ফেললেন যে, “আপনারা শুধু গায়ে হাত তুলবেন না এছাড়া যা করা যায় করবেন।” এরমধ্যে চিফ ট্রেইনারকে ফোনের পর ফোন করা হচ্ছে রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিভ হচ্ছেনা, পুরো রুমে যেন বিস্ফোরণ হবে হবে অবস্থা সবাই উনার নাম ধরে যে পারে বলে যাচ্ছে। উনি আজকে আসলে কে কী বলবেন আর কী করবেন এসব পরিকল্পনা আঁকছেন সবাই মনে মনে।

এরমধ্যে এসিসটেন্ড ট্রেইনারের কাছে ফোন আসলো যে, মাহমুদ স্যার রাস্তায় এক্সিডেন্ট করেছেন। খবরটা কেন যেন আমরা বাহানা মনে করলাম কারণ এসিসটেন্ড ট্রেইনারই বললেন আরে এক্সিডেন্ট একটা অজুহাত আর আমরাও তার কথায় সায় দিলাম ভাবলাম হয়তো সামান্য একটু ব্যথা পেয়েছে আর সেটাকে কারণ হিসেবে দেখাচ্ছে কিন্তু এর মিনিট ১৫ পরে যে খবর পেলাম তা অপ্রত্যাশিত ছিলো। আমরা যাকে এই কয়েকদিন ঘৃণা করলাম যাকে আসামাত্র কিভাবে অপমান করবো, শায়েস্তা করবো এই হিসেব আঁকছিলাম সেদিনের সেই এক্সিডেন্টে তার মৃত্যুর খবর আমাদের সবার মনে সেদিন শোকের ছায়া ফেলেছিলো আমরা কেন জানিনা খবরটা মেনে নিতে পারছিলাম না। তার সমস্ত ভুল ত্রুটি ভুলে আমরা তাকে সেদিন দেখতে গিয়েছিলাম, তবে তিনি ততক্ষণে লাশ…!
আমার সেদিন সবথেকে বেশি কষ্ট হয়েছিলো তার ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের কথা ভেবে। আমরা সবাই কিন্তু ট্রেনিংয়ের ফুল ভাতা পেয়েছিলাম…!

আজকে কোথাও একজন ক্যান্সার আক্রান্ত মহিলার মৃত্যুর খবর শোনলাম তাই ঘটনাটা মনে পরে গেলো।
মাহমুদ স্যারের মায়ের কোন খবর আর পাইনি কখনো, আর এটাও জানিনা কতদিন তিঁনি একাকী বেঁচেছিলেন, কারণ মাহমুদ স্যারের ছোট ২ বোন ছিলো যাদের বিয়ে হয়েছে বেশ আগেই এবং একজন প্রবাসে থাকতেন তাছাড়া তার কোন ভাই ছিলোনা আর তাঁর মায়ের দেখাশোনা করবার মতো কেউই ছিলোনা…
.
২৪/০৬/২০১৯

শর্ত

আমাকে চেনার মতো করে দেখেছো কখনো…?
তবে পাবার মতো করে চাও কেন…?
আগলে রাখার মতো করে ধরেছো কখনো…?
তবে পাশে থাকার মতো করে দাঁড়াবে কী করে…?
.
আগে আমার শূন্যতা বোঝ, তারপর পূর্ণতা দিও,
আগে দেখে নাও, কতটা উত্তাপে পুড়ি প্রতিক্ষণ,
যদি সইতে পারো, তবেই কেবল দেবো,
আমার মূল, শাখা-প্রশাখার, সবটুকুন মৌন ভালোবাসা।।
.
১৮/১১/২০১৮
#StayAtHome #StaySafe