বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

গন্ধ ছড়ুক

908

মেজ ছেলে তুরজাউল সরকার আকুক
তুমি কি জানো এই দিনে উয়া- উয়া শব্দ
আওয়াজ,পৃথিবীকে আলোকিত করেছে?
গ্রাম বাংলার ধূলি বালি, শহরে অট্টালিকার ইট
পাথরে ঘসে- ঘসে আটটি বছরে পা দিলে !
জন্মদিন উপলক্ষ্যে নতুন কাপড় জুতা কিনলে।
অথচ গত বছরের কথা ভুলে গেলে শুধু
চোখে মুখে দুরন্তপনা, চঞ্চল রাতে কি স্বপ্ন দেখো?
বড় হচ্ছো বেশ, তোমার জন্মদিনে অনেক কিছু
প্রত্যাশার ফুল জমা হচ্ছে- অনেক বড় হবে! অপেক্ষা শুধু
সময়; হাজার জন্মদিন এভাবে ভাল কাজে গন্ধ ছড়ুক!
দোয়ার সাথে শুভ জন্মদিন তুরজাউল সরকার আকুক।

১৪ আশ্বিন ১৪২৯, ২৯ সেপ্টেম্বর ’২২

পরিচয়

এখনো আছে বহু বিভেদ সমাজে
শিক্ষিত যারা পায় না মান
মূর্খেরা আজ পাচ্ছে সম্মান
অসৎ করছে সুবিধা ভোগ রাজে।

রক্ত তবে সবার একই, ওই লাল
হৃদয় হয়ত বা একই নয়
কেউ শক্ত কেউ নরম হয়
অন্তরে কারো, শুধু প্যাঁচের জাল।

হিন্দু আর মুসলিমে ভেদ ঐ ধর্মে
মানুষের রক্ত, তবে এক
পৃথক শুধু মন ও বিবেক
কেউ মুচি মেথর প্রভেদ শুধু কর্মে।

আল্লাহ বা ঈশ্বর সব এক জিনিস
আমি বলি, ‘আল্লাহ’ যারে
তুমি ‘ঈশ্বর’ ডাকো তারে
প্রভু সে এক, হয় না ঊনিশ বিশ।

বৌদ্ধ বা খৃষ্টান, কেউ আলাদা নয়
মানুষ উপরে, সত্য জেনো
মানব ধর্ম এক, সে মেনো
আমরা মানুষ এই মোদের পরিচয়।

কথিকা ০৯

ঘাসের ডগায় শিশির কণা সূর্য হয়ে হাসে
মনের যত দুঃখ স্মৃতি খেয়ার স্রোতে ভাসে।

জোছনা মাখা রুপালী চাঁদ হাত বাড়িয়ে ডাকে
কি হবে সুখ-স্মৃতি খুঁড়ে, দুঃখ নদীর বাঁকে।

সৈয়দপুত্র, তোমাকে

তুমি বংশী বাজাচ্ছো নদী! তুমি গাইছো বিচ্ছেদী গান!
এখন এখানে রাত হচ্ছে,জোনাকীরা আরও কিছু আলো
দেবে বলে, লুকাচ্ছে পাতার আড়ালে।পদ্মা তার প্রণয়
সাজিয়ে প্রতীক্ষা করছে পানশীর।মাঝি এসে
ছলাৎছলাৎ শব্দে- যে ঢেউয়ে ফেলবে বৈঠার বিনয়।

তুমি নক্ষত্র সাজাচ্ছো চাঁদ! তোমাকে মধ্যমণি করে
বিলাপ কীর্তনে, মাতবে যারা- দ্যাখো, তার জন্য কারা
সাজাচ্ছে শরতের শোকপত্র।

আমি বহুদূরে দাঁড়িয়ে একটি পাখিকে….
না, বিদায় জানাচ্ছি না। বলছি, এভাবে যেতে নেই বন্ধু!
দেহেরক্ষা মানেই, প্রাণ থেকে প্রাণের বিচ্ছেদ নয়।

কবিতার দ্রোহ ও সুরূপা

কবিদের শহরে আজ বসন্ত নেই,
বড্ড ক্লান্ত আমি-
পাণ্ডুলিপির পাতাগুলো অনাদরে,
পড়ে আছে বেনামি প্রকাশনীর দোকানে।

কবিতার চাষাবাদে শৈল্পিক আবহ নাই,
নাই, কথাদের সহাস্য মেলবন্ধন!
বিরহ-বিরস বদনে কবি সত্তা-
মস্তিষ্কের বেকার খাটুনি।

কবিতার শহরটা টানছে না দিন কয়েক,
বোবা শব্দে প্রেমানুভূতি অলীক,
পাণ্ডুলিপি পড়ে থাক দোকানে-
অসাড়তা আঁকড়ে ধরেছে।

মিথ্যার চর্চা শিখে গেছি আমি,
দু’চারি কথায় বেশ ভালো থাকি বলি-
কবিতায় মন্দ স্বভাবের বিরুদ্ধাচারণ,
কবিতার শব্দ ঠিক যেন সাজে না। 

যে কবিতা আমার সুরূপার কথা বলতো-
কোন দ্রোহে কলহ করেছে শব্দগুলো, 
নাকি ভুলে যাওয়ার-
আচ্ছা, ভুলে গেছে সুরূপা!

এইতো সেদিন বলেছিলাম,
সুরূপা ভুলে গেছে হয়তো,
কবিতার আসরে শব্দের অনুপস্থিতি-
জানান দিচ্ছে এমনই হয়েছে।

বিছানায় পড়ে আছি মরার মতো,
দুই লাইনের পঙক্তিতে আমার ব্যর্থতা,
সুরূপা ভুলে বসেছে-
তাই, কবিতার বিদ্রোহ!

সুরূপা,
ফিরে এসো পাণ্ডুলিপির অঙ্গজুড়ে,
কবিতায় আবার বসন্ত আসুক,
কবিদের শহরে ছড়িকে পড়ুক প্রেমানুভব।

আমি জানি তুমি আসলেই,
আবার কবিতায় বিপ্লব হবে,
সুরারোপিত হবে কবিতার ভাবে-
তুমি আসলেই।

বোবা শব্দের করুণ চাহনিতে,
প্রেম আসবে,
সুরূপা ফিরলেই,
নতুন পাণ্ডুলিপি জমা দিবো প্রকাশনীতে।

ক্যাসেটের গান

সন্ধ্যার আকাশে উড়ছে প্রখর চাঁদ
থকথকে প্রসূত প্রহর যেন হলদেটে
লোকালয়-দূরের নৈঋত গুল্মবীথি
আস্তবাড়ির ওধারে চৈতি জ্যোৎস্না-
সবুজ কিশোরী, শহরজুড়ে আজ
পেপারওয়েটে চাপানো চশমার কাঁচ
অনিদ্রা বিষাদের অলীক মুখ ছুঁয়ে
অনার্য ভালোবেসে ক্যাসেটের গান
এখানে বুনেছে সুখ, সখের দাগ-

এইসব অন্তহীন ঠিকানা ফের আসে
শীতল বার্তায়-শব্দহীন, নিজেদের হাড়ে
জ্বলে ওঠে সুরের অতিথি-ক্রন্দসী জ্বর

পাখির জোড়া ঠোঁট

খুটখুট করে করে ঠোকরে ঠোকরে খায় পাখিদের
জোড়া ঠোঁট..ঘুঁটঘুঁটে আঁধার অথবা অলৌকিক
আলোতে কখনও খায় একলা আবার কখনও হয়
জোট; তাবত পৃথিবীর সবাই জানে…ওরা কী খায়
আর কী কী ফেলে যায়…চোট আর গণভোট!

ওরা খায় নতুন-পুরাতন সব দাগ, সুসময়ের অগ্রভাগ;
তবু সূঁচালো কাল ওদেরও হিসাব কষে সকাল-বিকাল,
একদিন বিলুপ্ত হয় পৈশাচিক ধ্বনি..আজকে যার
সবে বৃহস্পতিবার আগামীকালই হতে পারে শনি!

তবুও আমরা খুব কমই মনে রাখি অর্জুনের ছাল,
হাঁটিহাঁটি পা পা করে বাড়-বাড়ন্ত দেখি করোনাকাল..
আবারও আসছে মহিয়সী শীত; কোকিল পাখির
জোড়া ঠোঁট আবারও গাইবে… লকলকে জিবের..
একদা আসন্ন বসন্তের আগমনী রাগসংগীত….!!

অনেক বড় হও

69605

71889

মোঃ ওয়াসিউন সরকার আফিক
এই দিনে উয়া- উয়া শব্দ আওয়াজ করেছো;
আর বড় বড় অট্টালিকা, ইট পাথরে সাথে
ঘসে- ঘসে চার বছরে পা দিলে! নতুন কাপড় জুতা কিনেছো।

আরও জোরে জোরে হাঁট বলে- ভাইয়ের স্কুলে যাবে;
জন্মদিনের আনন্দটা ভাগ করবে মেজ ভাইয়ের জন্মদিনে
তার কষ্ট নেই- দুঃখ নেই দুরন্ত চঞ্চল! স্বপ্নের
কোন নির্দিষ্ট নেই; দোয়া কালাম কিছু বুঝে না আনন্দটাই মুখ্য
অনেক বড় হবে এটাই আর প্রত্যাশা! তোর ইচ্ছা
পুরোন হোক- শুভ শুভ জন্ম দিন-অনেক অনেক বড় হও।

১৩ আশ্বিন ১৪২৯, ২৮ সেপ্টেম্বর ’২২

যদি ফিরে বৃষ্টির আচমকা প্রলাপ

________যদি ফিরে বৃষ্টির আচমকা প্রলাপ

ঝর ঝর বৃষ্টির ফো্টা
ধরতে গিয়ে আঁজলা পেতেছিলে বৃষ্টির শরীরে
আঁজলা ভরেছ বার বার
সিক্ততার কৌতূহলে ঢেলে দিয়েছ তা বার বার।
আর এখন বর্ষা;
সে কথা মনে আছে তোমার?
নাকি এখনও সেই রকম আঁজলা ভরো
যদি বৃষ্টি আসে ঝাঁপিয়ে
কিংবা বারান্দায় আসতে আসতে মেঘ বৃষ্টি
ছুটে পালিয়ে গেল তোমাকে না দেখে;

সে দিন চট পটিয়ে বৃষ্টি এলো সাঁঝ বিকেলে
ভিজতে ভিজতে বকুল তলায় আধেক ভেজা
জলে ভেজা বকুলের সে কি বাসনা?

বৃষ্টি যেন আঁজলা ভরে দিয়ে গেল
মুঠো মুঠাে বিরহী আকর ভেজা কবিতা
আওরাতেই তুমি এসে দাঁড়িয়ে গেলে সমুখে।
তোমার পাদুকায় মাড়িয়ে যাওয়া লজ্জাবতী
জলে ভিজে লক লকে ডগায় কুঁকড়ে আছে
যেমন তুমি আঁজলা ভরা জলে ভিজে থৈ থে।

আষাঢ়ে মেঘ ভরা গগন
বৃষ্টির আঁচলে ছন্ন ছড়া মেঘমালা; তোমার মতো
ব্যাকুলতা সাঝঘনালে মেঘের আঁচলে ঢেকে থাকো
যদি ফিরে বৃষ্টির আচমকা প্রলাপ।

১৪২৯/আষাঢ়/ বর্ষাকাল।

ডুবে আছি

3003

আমি কোথাও যাইনি
জেগে আছি
রাতের পাঁজরে চন্দ্রিকা বনে
একটি নক্ষত্রের ভালোবাসা অন্বেষণে

আমি জানি সে আসবে
আছি সত্তার নিবড়ে
চেয়ে আছি কণ্টক বিস্তর সড়কের পাণে
একটি স্নিগ্ধ গোলাপের প্রত্যাশায়।

রাতের তৃতীয়া পক্ষের অভিসারে
ডুবে আছি
একটি অমর্ত্য প্রেমের আশায়

বিনম্র প্রতিচ্ছবি

সম্ভব হলে নির্জলা দাঁড়িয়ে যাও
একটা নতমুখ গাছের মতো;

ভয়-ডরহীন এই শিস ফোটানো
সিকি পয়সার আদলে-
জীবনের পাশে। নীল বিষণ্ণ মিলিয়ে
– দেখি-সারা শরীরের রূপাহিম
ঘূর্ণায়িত শেকড়ের ভেতরে
তুমি বেঁচে আছ কিনা, অথবা
সেইসব নরম অহংকারে সুন্দরগুলো

বরং তোমার পাশে নতুন শতাব্দী লিখি
রাতভর-গভীর থেকে বিনম্র প্রতিচ্ছবি।

আশ্বিনের সকাল

308

কতদিন দেখি না তোমায়
কতদিন কথা বলি না তোমার সাথে
হিসেব নেই – নেই কোনো ছেঁড়া ডায়েরির পাতাও।

তবুও যেন মনে হয় রোজ দেখি তোমায়
আর রোজ কথা বলি তোমার সাথে৷

এই যে এখানে সীমাহীন আকাশ
স্নিগ্ধ ভালোবাসা অবিরাম বিলায় আর হাত বাড়িয়ে
কাছে ডাকে আমায় একটি অস্ফুট ফুলের কুঁড়িতে
মায়ায় বাঁধা বিষণ্ণ অতীতে।

তবুও তাকে ভুলে থাকি এই আশ্বিনের দিনে
ঘাসের ডগায় শিশিরের ফোঁটায় জ্বলন্ত চাঁদের মতন
এক বিন্দু সকাল দেখে।

স্বপ্ন বাজ পথিক

______স্বপ্ন বাজ পথিক

বিদ্রূপে কাঠিতে আগুন জ্বলে
অথচ দেখো সময় কালে কি চমৎকার খেলা?

বিদ্রূপ ঘুটে এখন সর্ব সহা
নিস্তব্ধ নির্বাক আকল হারা
বে বস,
মস্তিষ্ক বিকৃত পাগল প্রায় মানুষের মতো
বোধ, খাটো থেকে খাটো তরো হচ্ছে।

যাপিত কালে ধাবিত পথে, কৈশোর, যৌবন
মধ্যে বয়সে প্রারম্ভে নিত্য নতুন পথ এসে সমুখে;
পথের খতিয়ান,
বড্ড বেশী যেন ছত্রাকের জ্বাল বিছানো
বুঝতে হয়, খুঁজতে হয়, জলের নুন চেকে
জলের নৈতিকতা পানে সদা তৎপর।

মোহ নেশা ছাপিয়ে গেল; পথহারা সর্বনাশে
খানিক বিষন্ন যাতনা বিদ্রূপ আঁকা পথ থমকে দেয়
অসম কোলাহল; স্বপ্ন ঝুলি কাঁধে বেরিয়ে এলো
স্বপ্ন বাজ পথিক।

=====১৪২৯

অমাবস্যার মোড়

images (3)৪৫৬৭৬৫৪

রঙ্গমঞ্চে জীবনের রাস্তা মোড়!
কখন ধূলি বালির সাথে মিশে যাই!
জ্যামিতি কিংবা পরিমাপ
যন্ত্র কেউ হার মানায়;
কোন মেঘের বজ্রপাতে
পাড়াপড়শী জেগে উঠে না।
খিড়কি মনের দরজা জানালা বন্ধ-
রাগ অভিমানে সবই অন্ধ;
হয় তো কিছু ক্ষণের জন্য
পাড়াপড়শীদের বিবেক জেগে উঠবে-
কিন্তু মন আনন্দে স্পর্শ ছুঁইবে না
কারণ মাটির প্রেমেই শেষ; এই হলো
জীবন! চারপাশে অমাবস্যার মোড়।

১০ আশ্বিন ১৪২৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ’২২

কবিতা গুচ্ছ

তৃষ্ণা এক রাত্রিরের চাপা আবেগ; আর্তনাদ-আত্মদণ্ড

গভীর রাত্রিরে ঠোঁট চেপে তৃষ্ণার্ত অন্তর্দাহকে আরো চুল্লিতে ডুবিয়ে রাখি,
যতক্ষণ না ভেতরটা কেটলিতে টগবগ করে ফুটতে থাকে রক্ত!
সকালে একটি কাক, শিশির মেখে উড়ে এসেছিল নালায় মুখ গুজে জল টানতে,
হাড়ের মালা বসন পালক ঝলসে উঠেছে পঙ্কে এঁটো ত্রাণ,
গিলে খানিক ছুড়ে ফেলে, তারপর অদৃশ্য!

আমি বুক চেপে করুণ তৃষিত সত্বাকে বিসর্জন দেবার চেষ্ঠা করি।
তবু তৃষ্ণা-তৃষ্ণা,
ভালবাসি, আমার হাতের তালুতে আজব কারুকার্য, মৃত্যু অমোঘ সত্য,
ভালবাসি বুঝবার এবং বোঝাবার পর মনে হয় আমি সহস্র বৎসর অব্দি গলাকে শুদ্ধ করতে চাইছি,
প্রাণ কণ্ঠে একটি বিলাপ বার্তার মতো করে ছুটছে,
বিপুল সমারোহে প্রারম্ভিক কুঁজো হৃদয়টাকে হাতুরি পিটিয়ে ওই কামারশালায় সাঁটিয়ে দিয়েছি,
ধূপছায়ার মতো,
স্বপ্নকাতরতা থেকে খসে পড়লে যেমন হয়, তেমনি ফ্যাকাশে।

অস্পষ্ট থেকে বেরিয়ে ছোট গলিটার ভেতরে দাড়িয়ে দেখি সময়টা বিগ্রহসেবা করছে,
তথাপি অপেক্ষা করি, এই গলিতে আরেকজন পথিকের,
স্বপ্নদ্রষ্টা হেসে চলেছে, ভারিক্কি তার সুর মূর্ছনা,..
আমি সোজা সাপটাই বলতে জানি…
আমি বুকে কিন্তু, তোমার বুকে,আঁকতে পারি
গলিটার মুমূর্ষু চিত্র, স্তন-অধস্তন
সব যদি এক ঘেয়ে, তৃষ্ণার কাঠে আগুন জ্বলে আমি তবু দণ্ডায়মান
দেখি কে আসে আগে!

দূর, না,
কিছু নেই,
জনকাতারে
দৃঢ় অবস্থান
নিখুঁত বললে, আমি দুঃখিত!
আমার দণ্ড; হৃদয় ফাঁসিতে।

কষ্ট বেলুন

আকাশের স্তরে স্তরে স্তুপাকৃত ধবল মেঘ, গভীরে নীল বেদনার ঔরস
খুঁড়ে দেখি গাঢ় অতি বিষণ্ন অম্ল; হৃদয়ের পক্ষাঘাত
অনেক ব্যালাডের মাঝ থেকে তুলে এনেছি সবুজ রঙা কষ্টের বেলুন।

কৃষ্ণ পক্ষের আধুলি মেপে রাখি শিকেয় তুলে, চগোয় জং ধরা কাঠের পেড়েকে ঝুলে
থাকি ক্রুশবিদ্ধ বুক নিয়ে; নখের ভেতরে ছেঁড়া চামড়া তত্ত্ব
নেল পলিশে ডোরাকাটা চির, থকথকে চর্বি অথবা ভগাঙকুর কষ্ট অর্জিত এক বখে যাওয়া দিন।
নীল জল পুকুরে ছুঁয়েছি মদ্যপ শাপলা, দুঃস্বপ্নের বিগত দিনে ঠোঁটের শাসন!
কষ্ট ভর্তি বেলুন ওড়াবো বেদখলি আকাশে
বাতাসের আছে মিত্রতা ভাব, কেউ জানেনা-রাত কাটে দিবালোকের মুমূর্ষুতায়।

স্বাদ কিনবো তবু ঠোঁটের ডগায়
গাইবো গান বেসুর সাধনে তবু ফুৎকার দেবে শাব্দিক অন্তরা, সখ্যতা শুভ্র
মার্জিত বেহালায় কনকনে শীত আছড়ে পড়বে দেয়ালে,
মুক্ত করবো নিজেকে নিজের থেকে
বেলুন এক ছত্রে উড়ে যাবে গৃহত্যাগী সন্ন্যাসীর বেশে; ওড়ানো আমার কালজয়ী উপাখ্যান।

রঙের পর্দা

সোনালী আখরে ঢুকে যাবে কিন্নর প্রজাতি, মেছোপট্টি থেকে চিল উড়ে খুঁড়ে আনবে
ধবল মাটি। সবুজ পাতা ঘিরে আমার বসবাস, ক্লান্ত নগরী-চোখে মেরুন রঙের
পর্দাটা সরে গেলে বেঁচে যাবে তাবৎ বিপ্লবী।
শোন তবে, গভীর রাত্রিরে ডাক আউটে সফেন তুমুল ঝড়, খড়ের আলুথালু
প্রশাখাবৃত্তে ফুলেল প্রচ্ছন্ন কর, লাল আভায় অগ্নি ফুৎকারে, মানব এবার এগোও
তবে!ভিড় ঠেলে শকুন ফের উড়ে এলো ভাগাড়ে, ক্রমশ কালো পর্দা খুলে মুখোশ
উন্মোচিত হলে অপরাহ্ণে সবাই ভালবাসা বয়কট করল। মরে গেলে ছাইচাপা কুলোয়
সন্ধি আঁটে মগজে কৃমি। ক্রন্দন শোনা যায় স্বহাস্যে।
রঙিন মঞ্চে নিত্যকার নাটক।

নিঃসীম

শ্যামলিমা দুরন্ত পাথারে ডুবে গেছে রসে, সন্নিকটে সাজঘর ফিরে তাকাবার এই
এক মোক্ষম সময়, যখন এসেছিল, ভালবাসা তখন তৃতীয় বিশ্বের মতো ক্ষুধার্ত
কিম্বা ন্যাংটো নয়!

হৈরৈ শব্দের মাঝ থেকে তুলে আনা হলো থলে পুরে ব্যক্তিগত দুঃখ, সে রকম
শুন্যগর্ভ থলে থেকে ভালবাসা কিপটের মতো কবাট বন্ধ করে ঘুমোয় শহুরে
মধ্যবিত্ত বাঙালির মতো ভরদুপুরে।

ভিক্ষে এখন দূর্ভিক্ষের টান, এখানে ত্রাণের বিপরীতে পরিত্রাণ পাওয়া ঢের
ভালো, মুরমুরে দুটো কথা কওয়া যায়, সওয়া যায় তার দ্বিগুন। কান্ত বাবুর স্টেশন
বেহাল, কলের জলে নমঃ নমঃ অতিমাতাল তবু তার তাঁবুতে মেগাশিশি, সেই যে কিনা
বেরিয়েছিল ভালবাসা কুড়োতে, বকুল তলা থেকে মিশিগান অব্দি! ভাবো। যেখানে
দিগন্ত ছুঁয়ে চুঁয়ে পড়ছে পাথারের গায়, সেখানে সীমাহীন ভালবাসা খুঁজতে
হারিয়ে যাই কান্ত বাবুর মতো।অতলে।
থলেটা আদিকালের মতোই ঝোলানো।ঝোলানো।