বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

চাই আশা ॥ আশাই জীবনের মূল চালিকাশক্তি

চাই আশা ॥ আশাই জীবনের মূল চালিকাশক্তি

দুই বন্ধুতে গল্প হচ্ছে।
একজন বলছে : সভ্যতার এই অভাবনীয় অগ্রগতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আজকের যে অভূতপূর্ব উত্থান, এর মূলে রয়েছে আশাবাদী ও নৈরাশ্যবাদী দুদলেরই সমান অবদান।
অন্যজনের উৎসুক প্রশ্ন : আশাবাদীদের ভূমিকা আছে তা তো বুঝলাম, কিন্তু নৈরাশ্যবাদীর ভূমিকাটা কেমন? প্রথমজনের উত্তর : আছে, নৈরাশ্যবাদীদের কৃতিত্বও আছে বৈকি-আশাবাদীরা ছিল বলে এরোপ্লেন আবিষ্কৃত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু নৈরাশ্যবাদীরা ছিল বলেই তো আবিষ্কৃত হয়েছে প্যারাসুট!

পাঠক, জোকসটা পড়ে নিশ্চিত হেসে নিয়েছেন জানি। কিন্তু একটু ভাবুন তো, প্যারাসুট যিনি আবিষ্কার করেছেন, আসলেই কি তিনি নৈরাশ্যবাদী, নাকি বরং আশাবাদের দিক থেকে আরো একধাপ এগিয়ে? বাঁচার আশা তীব্র বলেই না প্যারাসুট আবিষ্কারের কথা তিনি ভেবেছেন- এরোপ্লেন দুর্ঘটনা-কবলিত হলেও যাতে বাঁচার একটা উপায় অন্তত থাকে। তাহলে এদের আর নৈরাশ্যবাদী বলে গাল দেয়ার অধিকার আছে কার?

আসলেই তা-ই। আমাদের চারপাশের মানুষ- যাদের আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি, যাদের সাথে আমাদের নিত্যদিনের ওঠা-বসা, তাদের সবাই-ই আসলে কমবেশি আশাবাদী। আশা নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকা। একজন মানুষ বেঁচে আছেন, তার জীবন আছে, কাজকর্ম করছেন মানেই তার আশা আছে। কারণ আশাই জীবনের মূল চালিকাশক্তি। আশা ছাড়া জীবন নেই। জীবন মানেই আশা।

এই আশা হয়তো কারো মধ্যে দৃশ্যমানভাবে বেশি, কারো মধ্যে হয়তো-বা কম কিংবা খানিকটা ঝিমিয়ে গেছে। যিনি উদ্যমে সর্বক্ষণ অনুপ্রাণিত, তাকে আমরা আশাবাদী বলে বাহবা দিচ্ছি; আর যার মধ্যে এর প্রকাশটা তুলনামূলক কম, তাকে আশাহীন কিংবা নৈরাশ্যবাদী আখ্যা দিয়ে কার্যত আরো সেদিকেই ঠেলে দিচ্ছি।

যদিও হওয়া উচিত ছিল এর উল্টোটা- তাকে একটু বুঝিয়ে, উৎসাহিত করে বা আর কিছু না-হোক, নিতান্তই একটু পিঠ-চাপড়ে সাহস দেয়া, একটুখানি শক্তি যোগানো। ধর্ম আর মহামানবদের শিক্ষা তো আমাদের তা-ই বলে।

আর একজন মানুষকে নৈরাশ্যবাদী বলিই বা কী করে? যিনি বেঁচে আছেন, পরের মুহূর্তটিতেও বেঁচে থাকার জন্যে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন (ইচ্ছে করলে এটা বন্ধের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তও তো তিনি করতে পারতেন। যারা এটা করে, তাদের আশা বোধহয় শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকে বলেই তা করে), খাওয়াদাওয়া করে শক্তি সঞ্চয় করছেন, পড়াশোনা করছেন বা পেশাগত দৈনন্দিন কাজকর্ম করছেন- তাকে আর যা-ই হোক, ‘নৈরাশ্যবাদী’ বলে আখ্যা দেয়াটা অযৌক্তিকই বটে।

কারণ জীবন আর আশা সমার্থক। জীবন আছে, তার মানে আশা হারিয়ে যায় নি। সে আশা হতে পারে পড়াশোনা বা কর্মক্ষেত্রে আরাধ্য সাফল্যের, স্বপ্ন পূরণের বা বৈষয়িক সমৃদ্ধির। অর্থাৎ আশা আছেই-হতে পারে কম কিংবা বেশি। আমাদের কাজ এখন একটাই- চিরন্তন এ আশার শক্তিকেই আরো বাড়িয়ে তোলা, নিজেদের আশার সল্তেটাকে একটু ভালো করে জ্বালিয়ে নেয়া-যাতে সাফল্য আর আনন্দময় জীবনের দিকে পথচলা হয় সহজ। এবং তা সম্ভবও।

কেনই-বা আমাদের আশা আর উদ্যমে ভাটা পড়ে? প্রতিদিনকার নানা স্ট্রেস বা টেনশন অস্থিরতা ভয় আলস্য দীর্ঘসূত্রিতা এবং মূলত নেতিবাচক জীবনদৃষ্টিকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। মূলত এসবই একজন মানুষের ভেতরের উদ্যম ও চিরায়ত আশার বোধটিকে ক্রমশ দুর্বল করে দেয়, পরিণত করে তথাকথিত নৈরাশ্যবাদী মানুষে।

মুক্তির উপায়? ধরা যাক, ঘুটঘটে অন্ধকার একটি ঘর, আলোর লেশমাত্র সেখানে নেই। এখন এ ঘরটিতে কেন আলো নেই, কীভাবে আলো নিভে গেল, কীভাবে আবার আলোকিত করা যায়, ঘরটি আলোকিত করতে কত আলো প্রয়োজন এবং কীভাবে তার যোগাড় হবে-এসব নিয়ে নানা আলোচনা, মিছিল-মিটিং, বৈঠক-সভা-সমিতি (প্রয়োজনে তদন্ত কমিটিও) করা যেতে পারে। কিন্তু আবার এটাও সত্য যে, এতকিছু না করে একটি মোমবাতি জ্বেলে দিলেই ঘরটি পুনরায় আলোকিত হয়ে উঠতে পারে।

জীবনঘাতী নেতিবাচকতা আর নৈরাশ্যবাদীতার বৃত্ত থেকে এক ঝটকায় বেরিয়ে আসার সহজ পথও এমন একটাই-তা হলো, কাজে নেমে পড়ুন। টেনশন অস্থিরতা ভয় আলস্য দীর্ঘসূত্রিতা-আপনার মধ্যে যা-ই থাকুক না কেন, এসব কীভাবে তাড়াবেন বা ঠেকাবেন সে চিন্তা পরে হবে। যা আছে, যেটুকু শক্তি আর সক্ষমতা আপনার আছে তা নিয়ে আগে কাজে নেমে পড়ুন। শ্রমানন্দময় কাজ-যেখানে কাজের আনন্দ আছে, বেঁচে থাকার আনন্দ আছে, দেয়ার আনন্দ আছে, সেবার আনন্দ আছে-যত স্বল্প আর ক্ষুদ্র পরিসরেই তা হোক।

প্রশ্ন করে বসতে পারেন, শুধু কাজ কীভাবে একজন মানুষকে আশাবাদী করে তুলতে পারে বা তার আশার শক্তিকে বাড়িয়ে দিতে পারে? অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের খুব সুন্দর একটি কথা আছে-‘কাজ হচ্ছে গঙ্গাজল। কাজের মধ্যে থাকলে পরে ক্লেদ, গ্লানি, বিষণ্নতা, হতাশাসহ সমস্ত নেতিবাচকতা ধুয়ে-মুছে একজন মানুষ হয়ে ওঠেন ঝকঝকে, তকতকে আর নির্মল। আক্ষরিক অর্থেই তিনি হয়ে ওঠেন সুস্থ দেহ আর প্রশান্ত মনের অধিকারী। তার জীবনের পরতে পরতে তখন থাকে শুধু আশা, আশা আর আশা-যা বাড়িয়ে দেয় তার উদ্যম ও কর্মস্পৃহা। ফলে সাফল্য আসে সহজ স্বতঃস্ফূর্ততায়।’

কারণ কাজের নিজস্ব একটি শক্তি আছে, যা একটি ইতিবাচক বৃত্ত সৃষ্টি করে। এ বৃত্ত আশার, এ বৃত্ত উদ্যমের, এ বৃত্ত শ্রমানন্দের। আর সে কাজ যদি হয় মানুষের কল্যাণের নিমিত্ত, তবে একটা আলোকিত আনন্দময় জীবনই তো তার প্রাপ্য।

শ্রমানন্দময় কর্মপ্রচেষ্টার পাশাপাশি নিজের অন্তর্গত আশাবাদ ও ইতিবাচকতার ভিত্তিটিকে আরো সংহত করে তুলতে জীবন থেকে নেতিবাচক সমস্ত কথা, আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি সচেতনভাবে পরিহার করুন। নিজেকে ক্রমাগত আশা ও ইতিবাচকতার কথা শোনান। দিনে অন্তত শতবার বলুন, সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন। তাহলে আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে সেভাবেই পরিচালিত করবে এবং আপনি নিজেই হয়ে উঠবেন অমূল্য এ বাণীর একজন অনন্য ও সার্থক উদাহরণ।

সূত্রঃ quantum method.

সময়ের রং

দূর থেকে আসছে যে ভেসে
বুনো শিয়ালের হাঁক;
অলিগলির ঐ মোড়ে মোড়ে
শুনি কত কুকুরের ডাক।

কয়জনেরই বা থাকে তবে
রুটি রুজির আয়োজন ?
দোকানির হিসেব খাতায়
দেনার অঙ্ক থাকেই লিখন।

দুশ্চিন্তা ঘুরপাক খায় মগজে
কবে ধারদেনা মিটিয়ে দেব;
প্রতিদিন মনে জাগে আশা
কাল হয়ত একটা কাজ পাব।

ওষধের দোকানির প্রশ্ন
কি মশাই, আছেন ভালো ?
শুনি, রাতে প্রহরীর বাঁশি
যদিও সেথা আলোয় আলো।

সময় কখনো নেই থেমে
কেউ নিশ্চিন্ত কেউ শান্তি শয়নে;
তবে কেউ আর তুমি আমি
শুধু যে রত স্বপ্ন জাল বুননে।

নিদ্রার ভান করি প্রতিদিন
শুইয়ে শুইয়ে দেখি আড়চোখে;
ঘর্মাক্ত মুখে মালতির ফেরা
বাবুকে স্কুলে রেখে অশ্রুচোখে।

লিলিথ

চলুন অধ্যাপক সাহেব আর একবার ঘুরে আসি ইতিহাসের পাতা ধরে।
ধরুন কমলালেবু একটা স্বর্গ। আপনি একটা নরক।
আপনি লিলিথের হাত ধরে চলে গেলেন স্বর্গের মধুর নহরে।
ওই যে দেখুন উলটো করে শুয়ে আছে আঙ্গুর গাছ।
তাকালেন না সেদিকে। কেননা আর একটা চিৎ হওয়া গাছে ঝুলে আছে হুরীর নগ্ন শরীর।
আপনি নহরের ধার ঘেঁসে মুসার লাঠিকে বাহন করে
ওর হাত ধরে ভাবছেন সিসিলি উপত্যকায় বাতাস খেতে খেতে স্বর্গের স্বাদ নেবেন।
তাও হলো না, কেননা আপনি ভাবছেন যতটা দূরত্ব পোল্যান্ড ততটা দূরত্ব কি স্বর্গ ?
রাশি রাশি ডলার আর মুদ্রাতেই যদি পার্থিব স্বর্গ কেনা যায়
তবে ভাবছিলেন এই নরক কাম্য হোক।
একদিন এই নদী আর মধুর নহর সবই বিষের মতোন লাগে।

বিলেটেড হ্যাপি নিউ ইয়ার

ইংরেজি নববর্ষে তোমাকে শূন্য ই-কার্ড কেন?
বর্ষ বরণের উত্তাল রাতে পাইন বনের মাথার ছিল কোমল চাঁদ।
তোমাকে কার্ডটা পাঠাবো বলেই সেই মায়াবী রাতে,
ল্যাপটপ খোলা …তারপর অবাধ্য মনে কত যে স্বপ্ন আঁকা!
ইচ্ছে করছিলো নবম সিম্ফোনির মতো সুর উঠাই কি বোর্ডে,
তোমার কার্ডে লিখি পেত্রাকের মতো কোনো সনেট!
রবি ঠাকুর থেকে হাল আমলের নির্গুণ কবির কবিতার গুঞ্জন মনে,
কিন্তু এক দিন আগে খুন হয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের শোকে কিবোর্ড হলো স্তব্ধ !
আমার মধ্যরাত, তোমার সকালে আছে এখন আলোর মিছিল?
কাঁচা কাঁচা রোদে ভেজা সকাল আসে কি দেশে এখনো?
দেশের নীল আকাশে নেই কোনো সাদা মেঘের ভেলা,
আকাশ জোড়া ঘন কালো মেঘ ঘিরে ধরেছে দেশ।
উচ্চকণ্ঠ ব্যক্তি পূজা আর স্তবে অভ্যস্ত চারদিক,
শুধু নিভৃতে নৈঃশব্দ্যে কাঁদে সত্য ও সুন্দর।

তোমার কার্ডে লিখতে চেয়েছিলাম তাই মিথ্যা মুক্ত জীবনের সার সত্য,
‘পরাজিত গণতন্ত্রেও আমার বিধ্বস্ত মনের অস্তিত্ব করেছো স্বাধীন।
আকাশের ব্যাপ্তিতে ছড়িয়ে দিয়েছো আমার ভালোবাসা স্বপ্ন,
পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পেরিয়ে অসীম করেছো ভালোবাসার মানস রাষ্ট্র ।
আমার ভালোবাসা কল্যাণ রাষ্ট্রের জনক, সর্বকালের সেরা মানবী
গলা চিপে ধরা গণতন্ত্রের নাভিশ্বাসেও তোমাকে নবর্ষের শুভেচ্ছা’।
কিন্তু জানোতো সাংবিধানিক বাধ্যকতায় নিষিদ্ধ,
আমার এই বিশুদ্ধ ভালোবাসা উচ্চারণ !
ফেসবুকে তোমার লাইক ধরে স্থায়ী অস্থায়ী সব ঠিকানায় যদি
পৌঁছে যায় সাতান্ন ধারার হুলিয়া নিয়ে জেল,জুলুম বা মৃত্যু!
গুম, খুনের অবিরল জলের ধারায়,তোমাকে হারাবার অশ্রুবন্যায়
কেমন করে আমার নিউ ইয়ারের শুভেচ্ছা ভেলা ভাসাই, বলো?
সেই আশংকায় শূন্য ই-কার্ড তোমার ঠিকানায়,
স্যরি, বিলেটেড হ্যাপি নিউ ইয়ার!

(এই রকম একটা কবিতা বছর তিনেক আগে লিখেছিলাম দেশের কিছু কষ্টকে ভেবে। সেই একই কষ্ট থেকে এই কবিতাও । এছাড়া গত কয়েক দিনে ব্লগে প্রিয় ব্লগারের চমৎকার কিছু ভালোবাসার কবিতা দেখে আমার একটা ভালোবাসার কবিতা লিখার ইচ্ছে হয়েছিল । আমার যে হতচ্ছড়া কবিতার হাত,মাথা। ভালোবাসার কবিতা লিখতে গিয়ে কি ছাইপাশ হলো কে জানে ! তবুও এটাই কিন্তু আমার ভালোবাসার কবিতা সৌমিত্র দা, রিয়াদি,নাজমুন আপা আপনারা যাই বলুন না কেন!)

গুগল স্ট্রিট ম্যাপ

প্রবাসের জীবন জঠরে দিনগুলো যায় গুগল স্ট্রিট ম্যাপ দেখে,
আকাশের ঠিকানা থেকে তোলা পৃথিবীর কত ছবি !
আটলান্টিকের এপার ওপর কসমোপলিটান নিউয়র্ক.
লন্ডন, প্যারিস, রোম, স্টকহোম কত শহর!
প্রশান্ত পারের লস এঞ্জেলস পার হয়ে দৃষ্টি ফেরাই অন্য পারে
সব ছাড়িয়ে দৃষ্টি খোঁজে ফেরে আমার প্রিয় দেশটা।
ছোট বেলা থেকে চেনা জানা দেশটার গ্রামীণ সবুজ,
হলুদের চাদোয়া ঢাকা ধান, সর্ষের ক্ষেত, রাঙা মাটির পথ!
মফস্বলের ব্যস্ত সরু রাস্তা, পলেস্তরা খসে যাওয়া বাড়ি,
রিকশা সেই আগের মতোই আছে।
রাজধানীর এলো পাথাড়ি উড়াল সেতু, স্কাইস্ক্র্যাপার,
বদলে যাওয়া বিমানবন্দরের নাম প্রথমেই চোখে পরে।
অভিজাত পাড়ার প্রশস্থ রাজপথ, সারি সারি আলিশান বিল্ডিং,
জাক জমকপূর্ণ সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বঙ্গভবনের জেল্লায়
এখনো চোখ জুড়ায়।
আহা মধ্যম আয়ে উন্নীত আমার জন্মভূমি !

আমার চোখ খোঁজে বাংলাদেশের শহর, বন্দরে কিছু হারানো মুখ,
যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ।
ঢাকা ইউনিভার্সিটির উচ্ছল দিনগুলোর সৃষ্টি কিছু বুক চেতানো যুবক,
তাদের খোঁজে আমার এই চোখ গুগুল স্ট্রিট ম্যাপের নিরপেক্ষ ঠিকানায়।
তাদের শাব্দিক উচ্ছাসে মুখরিত হয়না দেশের কোনো
নগর, রাজপথ বা গ্রামীণ সবুজ।
ছদ্মবেশী গণতন্ত্রের আড়ালে কালো মেঘের কালবৈশাখী আজ
আইনশৃঙ্খলা ও বিশেষ বিশেষ বাহিনী।
অপশাসনের গুম, খুনের কালবৈশাখীতে,
ঝরে গেছে সেই অপাপবিদ্ধ কলিগুলো বড় অসময়ে।
মা’র অশ্রুজল আজও বয় বন্যা ধারায় না ফেরা খোকার খোঁজে।
গাঙ্গেয় উপত্যাকার এই বৃহত্তম ব-দ্বীপের সবুজে, অলি গলিতে,
কোথাও তাদের কোনো খোঁজ নেই, তাদের শবের গন্ধ নেই!
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সুবোধ নিষ্পাপ প্রেসনোটে বিশ্বাসহারা মন,
তাই গুগুল স্ট্রিট ম্যাপে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে খুঁজি তাদের ঠিকানা।
কোনো ভগ্ন পরিত্যাক্ত কবরস্থানেও যদি মেলে ভাঙা তাদের নাম ফলক !

কোনো একটি পবিত্র গোলাপের সন্ধানে

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
যে গোলাপ মধুকরের গুঞ্জন শুনবে না,
অসূর্য্যস্পর্শা কোনো আধার যার পাপড়ি ছোঁবে না।
শুধু রাতের শিশির ঝরবে যার গায়ে
মুছে দিতে দিনের ধুলো, ধোয়া, ক্লান্তি এবং ক্লেদ।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের ।
যে গোলাপ স্বৈরাচারের গলায়
শুভেচ্ছা মালা হয়ে ঝুলবে না।
কোনো স্বৈরাচারের আগমনী তিথি,
যার সৌরভে হবে না সুরভিত কোনোদিন।

দেশে আজ অজস্র গোলাপের ছড়াছড়ি,
কিন্তু আজও সে গোলাপ কোনো কলি গর্ভে ধরেনি।
এই হতভাগ্য দেশের কোনো বনে বা বাগানে ফোটেনি,
রাজধানীর অভিজাত ফুলের দোকানেও অদৃশ্য সেই গোলাপ।
গোলাপ আজ ব্যক্তি পূজা, স্তব আর বাণিজ্য উপকরণ,
মিথ্যা নেতৃত্বের স্তবগানে গোলাপ হারিয়েছে তার পবিত্র সত্তা।

তোমার হাতে দেব বলে বহু দিনের অপেক্ষা আমার,
পবিত্র একটি গোলাপের।
দেশের সব গোলাপ হারিয়েছে তার সব সৌরভ, গৌরব,
সারা দেশ খুঁজে আমি পেলাম না একটিও পবিত্র গোলাপ।
যার গায়ে আঁধারের ছায়া নেই, ক্লেদাক্ত বৃষ্টির ছোয়া নেই,
যা দিয়ে করি তোমার ভালোবাসা স্তব।

A_06_ (30)

ফুলের নাম : শিবজটা

ফুলের নাম “শিবজটা”। কেম অদ্ভূত নাম, তাই না! যেমন অদ্ভূত নাম তেমনি দেখতেও বেশ অদ্ভূত।

শুধু শিবজটা নয়, আরো অনেক গুলি আঞ্চলিক নাম এর রয়েছে। যেমন – বিলাই লেজা, শিবঝুল, ব্রহ্মজটা, হারিটামুঞ্জুরি ইত্যাদি। বুঝতেই পারছেন নামের সাথে চমৎকার মিল রয়েছে দেখতে। নামকরণের কারণও এটাই।

ইংরেজি ও কমন নাম : Acalypha Cat Tail, Caterpillar Plant, Chenille Plant, Philippines Medusa, Red hot cat’s tail, Fox tail, Hispid Copperleaf, Redspike Copperleaf, Chenille Copperleaf ইত্যাদি।

বৈজ্ঞানিক নাম : Acalypha hispida

গাছটির আদিভূমি বা আদিনিবাস দক্ষিণপূর্ব এশিয়া। শিবজটা ঝোপাকৃতির ঔষধি গুণসম্পন্ন ফুল গাছ যা টবেও লাগানো যায়। নারায়ণগঞ্জের বাবা সালেহ মাজার প্রাঙ্গনে দেখেছি টবে লাগিয়ে রেখেছে। ফুলও ফুটেছে বেশ সুন্দর।

শিবজটা গাছের উচ্চতা মাটিতে১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত লম্বা আর ৩ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত বিস্তিত হতে পারে। তবে তার জন্য অনেক বছর সময় লাগে। টবে এর বারবারন্ত কিছুটা কম হলেও মাটিতে এই গাছে দ্রুত বর্ধনশীল। গাছে কোন কাঁটা নেই।

লাল বা গাঢ় লাল, কখনো কখনো কিছুটা খয়রী লাল লম্বাটে ফুল গুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়। অনেকদিন পর্যন্ত টিকে থাকে। ফুল ফোটার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই, সারা বছর জুড়েই ফুল ফুটতে পারে। একবার ফুল ফুটতে শুরু করলে পর্যায়ক্রমে ও বারবার ফুটে। তবে এই ফুল কিন্তু ফুল গন্ধহীন। ফুল গন্ধহীন বলে কোন প্রাণী বা পতঙ্গ আকর্ষিত হয় না। এর কোন ফল হয় কিনা তা আমার জানা নেই। তবে বীজ থেকে সহজেই চারা জন্মে এবং কাটিং পদ্ধতিতেও কলম করা যায়।

শিবজটা গাছে মাঝারি আকারের অনেকটা উপবৃত্তাকার সবুজ সরল পাতা হয়। পাতার কিনারা কিছুটা করাতের মত ছোট ছোট খাজকাটা থাকে। খাবার পক্ষে প্রাণীদের জন্য এই গাছের যে কোন অংশই বিষাক্ত।

ছবি : নিজ।
ছবি তোলার স্থান : বলধা গার্ডেন, ঢাকা (প্রথম ৪টি) এবং বাবা সালেহ মসজিদ, নারায়ণগঞ্জ (শেষ ৪টি)।
ছবি তোলার তারিখ : ১৬/০৩/২০১৭ ইং ও ২৪/১২/২০১৮ ইং

তথ্য সূত্র : বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহীত ও পরিমার্জিত। তথ্যে কোন ভুল থাকলে জানানোর অনুরোধ রইলো।

অবৈধ

ব্যভিচারীর লালসার স্বীকার লাঞ্চিত কোনো নারীকে,
অবৈধ সন্তান প্রসবের অভিযোগে অভিযুক্ত কোরোনা কখনো।
ব্যভিচারীর ক্ষমতা দম্ভের উল্লাস, লালসা পূরণের তৃপ্তিতে নয়
লাঞ্চিত নারীর নিঃসীম লজ্জা, অশ্রুজলেই লুকানো সভ্যতা।
লজ্জার চাদর ছাড়া সভ্যতাহীন জীবন,
মানুষের নয় স্বেচ্ছাচারীর,গা জোয়ারি হিংস্র শ্বাপদের জীবন।
ক্ষমতা দম্ভে লালসা উন্মত্ত কোনো স্বেচ্ছাচারিকে তাই,
খামোশ বলে রুখে দাঁড়াবার সময় হয়েছে এবার।

বিজয় মাসে গনতন্ত্র, সুশাসনের চাদরহারা দেশ উলঙ্গ,
ক্ষমতা সম্ভোগে উন্মত্ত শাসকের লালসায় লাঞ্চিত এবং লজ্জিত।
অবৈধ সরকার প্রসবকারী বাংলাদেশের পলি মাটিকে বলোনা ক্লেদাক্ত,
নদীর স্রোতে খুঁজোনা স্বৈরাচারের বীর্যের দাগ।
ইচ্ছে বিরুদ্ধ ক্ষমতা সম্ভোগের উন্মত্ত শাসন বীর্যপাতে,
অবৈধ সরকার প্রসবের লজ্জায় ম্রিয়মাণ দেশের সকল সবুজ।
সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বপ্নঘাতকের গণতন্ত্রের বধ্যভূমিতে আরো একবার,
বাক, ব্যক্তি, ভোটস্বাধীনতার দাবিতে প্রতিবাদের ফিনিক্স পাখি হোক বাংলাদেশ।

নতুন বৎসরের শুভেচ্ছা

অনেকদিন পর ফিরে এলুম আমার প্রিয় সাহিত্য ঘর ‘শব্দনীড়’এ। সবার সাথে শব্দছন্দে মন ও ভাবের বিনিময়ে আবারো দোল খাবো শব্দনীড়ের সর্ববৃহৎ শিবিরে। নতুন বৎসরে সমৃদ্ধ হোক আমাদের ভূবন।

মেসি তুমিই বলো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কেন দরকার …

মেসি, তোমার ফুটবল জাদুতে মুগ্ধ পৃথিবী ।
নিঝুম কত রাত নির্ঘুম কাটে ছয় মহাদেশে,
দেখতে সবুজ মাঠে তোমার অনায়াস, স্বচ্ছন্দ বিচরণ !
রক্ষণ ছিন্নভিন্নকারী তোমার চোখ ধাঁধানো গতি, ড্রিবল
কত সহজে বিজয়ী স্বপ্নের বীজ বুনে সমর্থক মনে !
শেষ মুহূর্তে জালে জড়ানো তোমার রংধনু শটগুলো
কি অপার্থিব উন্মাদনা ছড়ায় গ্যালারি জুড়ে !
যেন স্বয়ং দেবতা বর নিয়ে নেমেছে সবুজ মাঠে।
কিন্তু বলো, পারবে কি সবুজ মাঠে এমন স্বপ্ন মায়া ছড়াতে
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যদি না থাকে?

ধরো, তোমার দিকে মাঠ মসৃন, যেন সবুজ কাশ্মীরি গালিচা,
আর বিপক্ষ দিক যেন পুলিশি রিমান্ডে ক্ষত বিক্ষত
নিহত বিরোধী দলীয় নেতার বেওয়ারিশ কোনো লাশ !
সেই মাঠে সাথে থাকলেও নেইমার ও দুরন্ত এম্বেপে,
মাতাতে পারবে কি গ্যালারি তুমি বা তোমার দল?
আক্রমণে এম্বেকি কি পাবে দুরন্ত অশ্বারোহীর গতি?
নেইমারের মাটিঘেঁষা শটগুলো কি হবে না লক্ষ্যচূত?
সবুজ ক্যানভাসে আঁকা ভ্যান গগের ছবির মতো গোলগুলো
তোমার, পাবে কি তিন কাঠির সঠিক ঠিকানা?
অযোগ্য ব্যবস্থাপনায় আদৌ যায় কি খেলা নান্দনিক ফুটবল?

তেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়েছে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে,
দলদাস পুলিশ সেজেছে আক্রমণের ঘোড়া ।
ঘরে বাইরে, নগরে বন্দরে অননুমোদিত গ্রেফতার, পুলিশি রিমান্ড,
নির্বাচনে প্রতিপক্ষের প্রাপ্য আজ জেল,গুলি,এবং নির্বিচার সন্ত্রাস।
শ্বাপদ হিংস্রতায় ছিন্নভিন্ন ঘর বাড়ি,পোস্টার,নির্বাচনী আশ্বাস,
গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে স্বৈরাচারের দিচ্ছে আজ প্রকাশ্যে উঁকি ঝুঁকি !
যে গণতন্ত্র থাকার কথা ছিলো দেশের সবুজ মাঠে, গ্রামে ও শহরে,
সে গণতন্ত্র আজ মিটি মিটি জ্বলে হয়ে দূর আকাশের শুকতারা ।
তবুও ইসি লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড গড়েছে বলে আনন্দে বাগবাগ,
সিইসি গর্বিত নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে, সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ !

মেসি, বলো এইরকম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে পারতে কি তুমি,
লা লীগার রেলিগেটেড কোন দলকেও হারাতে?

টেন্টালাসের তৃষিত জীবন আজ বাংলাদেশ

দিগন্ত জোড়া সাগর জলে ভাসা জীবন ছিল তোমার
তবুও এতটুকু তৃষ্ণা মেটেনি, টেন্টালাস !
হাত বাড়ালেই সাগর,
তবুও কি দুর্লভ জলহীন তৃষিত এক জীবন কাটলো !
তাই বুঝি হাজার বছর পরে পুনর্জন্ম নিলে টেন্টালাস,
ষোলো কোটি জনগণের প্রতিচ্ছবি হয়ে এই বাংলাদেশে?
নদীমাতৃক এই বাংলাদেশে জল হয়তো পেতেও পারো একটু,
কিন্তু জল খাবার স্বাধীনতা পাবে কি এই পুনর্জন্মে?
ছদ্মবেশী দেবী কি দেবে এবারও জীবন বাঁচাবার স্বাধীনতা?
করুণার বারিধারায় ভিজবে কি তার জিঘাংসু হৃদয়?

একশো তিপ্পান্ন অনির্বাচিত সাংসদের অবৈধ খুঁটিতে
গড়া দেবীর ক্ষমতার প্রাসাদ।
ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার লুটেপুটে খেয়েছে সব চেলা চামুণ্ডা,
সুইস ব্যাংকে স্ফীত লক্ষীর প্রসাদ।
দেবী শাসনে উন্নয়নের সুনামিতে নাকি ভাসে নগর বন্দর!
মধ্যম আয়ের দেশে আমজনতার নুন আন্তে পান্তা ফুরোয়।
তবুও চাইনি ছিনিয়ে নিতে দেবীর অবৈধ লক্ষীর ঝাঁপি,
অথবা অবৈধ ক্ষমতার বিলাসী প্রাসাদ।
চেয়েছিলাম শুধু গণতন্ত্রের একটু মৌল আশাবাদ,
চাওয়া ছিল একটা সুষ্ঠু নির্বাচনী আশ্বাস।

সেই সামান্য চাওয়াতেই দেখি দেবীর শাসন উত্তাল,
বিলীন গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচনের মৌল সব চাওয়া।
বিলীন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়বার সব আশ্বাস,
দেবী দুঃশাসনে নির্বাসিত গণতন্ত্র আজ দূর দ্বীপবাসিনি।
সে দ্বীপে যাবার সহজ কোনো ভেলা নেই,
শুধু রক্ত নদীতে নিরন্তর ভেসে চলা।
দলদাস আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা মামলায়,
বিপর্যস্থ বহুদলীয় সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল পথ ও প্রান্ত।
টেন্টালাস, দিগন্ত জোড়া সাগরেও তোমার ছিল তৃষিত জীবন,
গণতন্ত্রের দেবীর সুশাসনেও আমার তৃষ্ণা অধরা গণতন্ত্রের!

তবুও টেন্টালাস, ষোলো কোটি মানুষ তৃষিত জীবন বয়ে চলি,
বিজয়ের মাসে অধরা গণতন্ত্রের গভীর আশ্বাসে।

মনকথা ১

ক্ষুদ্র আমার এই বিশাল পৃথিবী,
তাইতো পরের মুখে খুঁজি প্রিয় মানুষের মুখ..

টোল পড়া গালে, ঠোঁটের কোণঘেঁষা একটা তিল, কপালের একপাশে একগোছা চুল ঝুলে আছে ঠিক যেন আত্মহত্যার প্রবনতা নিয়ে…

জাহাজ ডুবির পর

তুমি যাকে ঈশ্বর বলো। আমি তাকে আল্লাহ বলি। সে ভগবান বলে। সে মহামতি বুদ্ধকেই তাঁর প্রতিভূ মনে করে। সে সূর্যকে। সে শাপকে। সে গাছকে। আর আমরা সবাই সেদিন শুদ্ধ বিশ্বাসী ছিলাম সেই জাহাজে। আমরা মনেপ্রাণে তীব্র ঘৃণা করতাম পৃথিবীর সমস্ত শাপগ্রস্ত নির্বোধ অবিশ্বাসীদের। কিন্তু আচানক মাঝ সমুদ্রে আমাদের জাহাজটা বেমক্কা ঝরের কবলে ডুবে গেল আর আমরা কোনওরকমে ছোটো একটি বাঁশের ভেলায় চেপে প্রাণ বাঁচালাম। আমরা ভীষণ ক্লান্ত ক্ষুধার্ত ও তৃষিত ছিলাম। বেঁচে থাকার জন্য রসদ ও সুপেয় জল অনিবার্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু চারিদিকে তখন সমুদ্রের নিঃসীম নোনা জল ছাড়া আর কিছু নেই।
এভাবেই তিন তিনটি দিন কেটে গেল অনাহারে। তারপর চতুর্থ দিনে এসে সবাই উপলব্ধি করলাম যে, আমরা যারপরনাই ক্ষুধার্ত ও তৃষিত হয়ে পড়েছি। রাজ্যের ক্ষুধা তৃষ্ণা ক্লান্তিতে আমরা মৃতপ্রায়। সত্যি আমাদের বড্ড দুর্ভাগ্য যে, সেদিন একজনও অবিশ্বাসী ছিল না আমাদের মাঝে। কিন্তু আমাদের তো বাঁচতেই হতো। আমাদের মতো শুদ্ধ বিশ্বাসীরা এভাবে মরতে পারে না। মরে যাক পৃথিবীর সমস্ত কূপমণ্ডূক অভিশপ্ত অবিশ্বাসীরা।
কিন্তু ভাবাবেগের সময় সেটা ছিল না। বাঁচার জন্য তখন আমাদের অনিবার্য সুপেয় জল ও রসদ চাই। আর এভাবে এক পর্যায়ে আমরা পরস্পরের দিকে লোভাতুর চোখে তাকালাম। সত্যি বড্ড পরিতাপের বিষয় যে, সেদিন আমাদের মাঝে একজনও অবিশ্বাসী ছিল না। কিন্তু আমাদের তো বাঁচতেই হতো। আমাদের মতো শুদ্ধ বিশ্বাসীরা এভাবে মরতে পারে না। সূর্যের ঝা চকচকে উজ্জ্বল আলোয় আমাদের রক্তাভ, লোলুপ চোখগুলো ততোধিক ঔজ্জ্বল্য নিয়ে ঝলমলাতে লাগলো খাবার ও জলের ঘ্রাণে। আমরা একে অন্যের দিকে তাকালাম লোভাতুর চোখে।

আপনার নাম আপনার সম্বন্ধে ঠিক কী বলছে দেখে নিন

আপনার নাম আপনার সম্বন্ধে ঠিক কী বলছে দেখে নিন

নিউমেরলজি’র কথা হয়ত সকলেই শুনেছেন। অনেকেই এই বিদ্যাকে বিশ্বাস করেন। আবার অনেকেই মনে করেন যত সব ভুল ভাল কথা। কিন্তু সব থেকে বড় কথা হল বিশ্বাস না থাকলে যে কোনও কাজই সঠিকভাবে করা যায় না। শুধুমাত্র নিউমেরলজির ক্ষেত্রেই নয়। জীবনের প্রতিটা পরীক্ষাতেই যদি আপনার নিজের প্রতি বিশ্বাস না থাকে তাহলে সেই কাজে সফল হওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। ধরুণ আপনি চাকরির পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন, তখন নিশ্চয়ই বেরনোর সময় বাবা-মায়ের আশির্বাদ অবশ্যই নেবেন। কারণ আপনি জানেন এই আশির্বাদের প্রতি আপনার বিশ্বাস আছে। আবার ঠিক তেমন ভাবেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার দিনটি কেমন যাবে। সেটাও আগের দিন ইন্টারনেট থেকে পাওয়া সহজলভ্য জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন সাইট থেকে দেখে নেন অনেকেই।
এবার দেখে নিন ঠিক কীভাবে গণনাটি করা হয়ে থাকে…
ধরুন আপনার নাম হল ARUN
A=১, R=২, U=৬, N=৫

এবার এই সংখ্যাগুলিকে যোগ করতে হবে, ১+২+৬+৫= ১৪
যোগফল দুই সংখ্যার হলে তাকে আবার যোগ করতে হবে। যেমন ১+৪=৫। তাহলে আপনার নামের সংখ্যাটি হল ৫।
এবার দেখে নিন নিউমেরলজি আপনার নাম সম্পর্কে ঠিক কি বলছে…

নামের সংখ্যা ১ হলে
খুবই উচ্চাকাঙ্খী হলেন আপনি। চলতে গিয়ে আপনাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়ে হয়। কিন্তু আপনার মধ্যে সেই বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার প্রবল ক্ষমতা বর্তমান। যাতে কেউই আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।

নামের সংখ্যা ২ হলে
আপনাকে চাঁদের সঙ্গে তুলনা করা হয়। অনেক সময় আপনি নিজের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যার ফলে আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে এবং ব্যক্তিগত জীবনে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

নামের সংখ্যা ৩ হলে
কাজও যেমন করেন, তেমন সফলতাকে উদযাপনও করেন সফলভাবে। অন্যদের থেকে তাড়াতাড়ি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার এক অদ্ভুত দক্ষতা আছে আপনার মধ্যে।

নামের সংখ্যা ৪ হলে
আপনি চট জলদি কাউকে আপনার বন্ধু বানান না। কিন্তু যখন কাউকে আপনি নিজের বন্ধু বানিয়ে ফেলেন তার জন্য জীবনও দিতে পারেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৫ হলে
আপনি খুবই বুদ্ধিমান এবং সমস্ত কাজ খুব চট জলদি করে ফেলতে পারেন। যে সব কাজ করতে খুব বেশি সময় লাগে, সেই কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতেই বেশি পছন্দ করেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৬ হলে
আপনার আশে পাশের সকলের থেকেই সম্মান পেতে চান আপনি। আবার অনেক সময় সেই সম্মান খুইয়ে ফেলার মতো কাজও করেন। উচ্চাভিলাষী হওয়ার জন্য প্রচুর অপব্যয়ও করে ফেলেন।

নামের সংখ্যা ৭ হলে
আপনার উদ্ভাবনী শক্তি প্রবল। তবে শিল্পকলার প্রতি আগ্রহ সব থেকে বেশি। কিন্তু পুরনো পন্থাকে অবলম্বন করে চলতে প্রবল দ্বিধা আপনার।

নামের সংখ্যা ৮ হলে
আধ্যাত্মিকতার প্রতি অদ্ভুত ইচ্ছা আছে আপনার। এছাড়া যেকোনও দায়িত্বপূর্ণ কাজকে সুদক্ষভাবে করে তুলতে পারেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৯ হলে
রাগ যেন আপনার ঠিক নাকের ডগায় থাকে। আবার খুব তাড়াতাড়ি রাগ ভেঙেও যায়। যতই রাগ করুন না কেন যে কোনও কাজকে সঠিক সময় শেষ করার জন্য আলাদা একটা খ্যাতি আছে আপনার।

তাহলে এবার দেখে নিন ঠিক কীভাবে নিউমেরলজিতে হিসেব করা হয়। এখানে কোন বর্ণমালার সঙ্গে কোন সংখ্যা যায় তার লিস্ট দেওয়া হল…

_____________
তথ্য সুত্র : ২৪ ঘন্টা