বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

ধন্যবাদ খোদাকে

ধন্যবাদ খোদাকে
————–
বন্ধু একটি বই উপহার দিয়েছিল
তার জন্যে তাকে ধন্যবাদ দিলাম
স্ত্রীর ভাল রান্নার জন্যে স্ত্রীকে বারবার
ধন্যবাদ দিই
জীবনে চলার পথে কেউ কিছু দিলে
অমনি একটি ধন্যবাদ ছুড়ে দিই

আচ্ছা এমন কেউ কি আছে
যার যথাযোগ্য প্রশংসা করা হয়নি?
যার দানের মূল্যায়ন করা হয়নি?
যাকে যথার্থ ধন্যবাদ দেওয়া হয়নি?
হে তিনি খোদা, উপর থেকে তিনি
আমাকে ও অন্যদের দেখছেন

আজ ভাল করে খেয়েছি, পথ চলেছি
সুন্দর নিশ্বাস নিয়েছি, ভাল করে গত রাতে
ঘুমিয়েছি, জীবন পেয়েছি, বেঁচে আছি
চোখ দিয়ে দেখেছি, কান দিয়ে শুনেছি
কত বিপদ থেকে বেঁচেছি, সুস্থ ভাবে বেঁচে আছি

যারা খোদাকে বিশ্বাস করে না তাদের কথা আলাদা
তবে যারা আমার মত খোদাকে বিশ্বাস করে
খোদার প্রতিটি দানের জন্যে একটি করে ধন্যবাদ
দিতে হবে
তাহলে ধন্যবাদ ধন্যবাদ বলতে বলতে গলা
শুকিয়ে যাবে ,ধন্যবাদ ফুরাবে না

তবুও বলব খোদা তোমাকে ধন্যবাদ
তোমার প্রতিটি দানের জন্য
খোদা তোমাকে ধন্যবাদ।

গায়ে লাগে না

গায়ে লাগে না

————————–
এক আত্মীয়র বাড়ী গিয়েছিলাম দুপুর বেলায়
কথা বার্তা শেষে দুপুর বেলায় প্রস্থান করব
আত্মীয় বলল এই তপ্ত দুপুরে না গিয়ে বিকেলে যান
আমি বললাম- রৌদ্র কোথায়? জীবনে কোন দিন আমার গায়ে
রৌদ্র লাগেনি

প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়তে গিয়েছিলাম
প্রচণ্ড বৃষ্টি মাথায়, স্যার বলল
এই বৃষ্টি মাথায় পড়তে এসেছ?
আমি বললাম বৃষ্টি কোথায়?
জীবনেও আমার গায়ে কোন দিন বৃষ্টি লাগেনি

ঝড় মাথায় সাইকেল চালিয়ে আসছিলাম
মানুষ সবাই রাস্তা থেকে নেমে বিভিন্ন বাড়ীতে
আশ্রয় নিল, আমি মনে মনে বললাম
ঝড় কোথায়? জীবনেও আমার গায়ে ঝড় লাগেনি

বাবা মরল,একটু কাঁদছিলাম
এক আত্মীয় বলল-দুঃখ করো না ,আমরা আছি
আমি মনে মনে বললাম,দুঃখ কোথায়
স্বাভাবিক ভাবে একটু কেঁদে নিচ্ছি
দুঃখ কোন দিন আমার গায়ে লাগেনি

গায়ের জামায় ময়লা ,স্ত্রী বলল,দাড়াও
–জামাটা ধুয়ে দিয়
আমি বললাম-ময়লা কোথায়? জামাতো পরিষ্কার
জীবনে ময়লা কোনদিন আমার গায়ে লাগেনি

উল্লেখ্য রোদ বৃষ্টি ঝড় দুঃখ –সব সময়
এগুলোর মাঝেই আমি থাকি
দুর্গন্ধের মাঝে যেমন দুর্গন্ধ বোঝা যায় না
শহরের মাঝে গ্রাম বোঝা যায় না
ঘরের ভেতরে প্লাস্টিকের টবে প্লাস্টিকের গাছ
দিয়ে প্রকৃতি বোঝা যায় না
প্রকন্ড এক সমুদ্র নিয়ে ঘুরি
প্রকাণ্ড এক পৃথিবী নিয়ে ঘুর
প্রকাণ্ড ঝড় ,বৃষ্টি নিয়ে ঘুরি
তাই সবাই যেভাবে বুঝবে –আমার বোঝাটা আলাদা।

আপনি কেমন আছেন?

আপনি কেমন আছেন?
………………………………………………………….
একদিন হসপিটালের বেডে শুয়ে ছিলাম
এক আত্মীয় এসে জিজ্ঞাসা করল কেমন আছেন?
কি বলব বলেন,সবার মত করে বললাম
হে ভালই আছি?
এক বন্ধুর বাবার বাবার জানাজায় গেলায়
বন্ধুকে দেখা মাত্র মুখ ফসকে বেরিয়ে গেল
বন্ধু কেমন আছিস?
বন্ধুও মুখ ফসকে উত্তর দিয়ে ফেলল
হে ভালই আছি
যেভাবেই থাকি,যেখানেই যাই সবাই জিজ্ঞাসা করে
আপনি কেমন আছেন?
সবার মত করেই উত্তর দিই হে ভাল আছি
সবার মত করেই সবাইকে আমিও জিজ্ঞাসা করি
আপনি কেমন আছেন?
তারাও আমার মত করে বলে
হে ভাল আছি
কথা হচ্ছে এ ভাল থাকা প্রশ্নটা কি ধরণের?
এটা কি কথার সূত্রপাত,কৌতুহল নাকি প্রশ্ন
যাইহক এই প্রশ্নের বয়স কিন্তু প্রাচীন
ভবিষ্যতেও এই প্রশ্নটা টিকে থাকবে
উত্তরও ঐ একটাই
সবাই না ভেবেই প্রশ্ন করে কেমন আছেন?
না ভেবেই একটা উত্তর হে ভাল আছি।

একটি আধুনিক গান

একটি আধুনিক গান

বুকের আকাশ ছাউনি করে সাজিয়ে রাখি মাঘের সকাল
শীতের শিশির ডাকে আমায়, কুড়াতে যাই সবুজ প্রবাল।।

* যাও যদি এই জল পোহাতে আমার সাথে
দেবো কিছু শিশির তুলে তোমার হাতে,
পরখ করে ছুঁতে ছুঁতে
জড়িয়ে নেবে সব মায়াজাল।।

*জলের কাছে আছে দেখো কত দেনা
পাতায় পাতায় ভালোবাসার মুক্তকণা
তোমার জন্যে ছড়িয়ে দেবো আবার কোনো
মেঘের সাথে,
ঢেউয়ের মাঝে সবুজে লাল।।

@ নিউইয়র্ক / ১৫ জুন ২০১৭

শ্রেনীহীন কথকতা

শ্রেনীহীন সংগ্রামের কথা বলে বলে তারা সব
তারা সব গেছে চলে সূর্যাস্তের ওপারে
দিয়েছে পৃথিবীকে তচনছ করে উদার মনে
মার্কস এঙ্গেলস্ লেনিন ক্রশ্চেভ মাও
কিম চে চারু ফিদেল করে গেছে প্রতারনা
অপরিসীম নিরন্ন বুভুক্ষু মানুষের সাথে
ভ্রান্ত মতবাদ হয়েছে রফতানী সাথে মারনাস্ত্র
শুধুই মানুষ হত্যার তরে শুধুই রক্ত
বহানোর তরে করে দিয়ে বাচার আশা ক্ষীন
ফিউডাল থেকে মুক্তির আশা দিয়ে সংগ্রামে
সশস্ত্র নিধন বর্জন তর্জন শুন্য অর্জনে
নব্য ফিউডাল আরো ভয়ঙ্কর রেহাই নেই এর হাতে
চারিদিকে সেনা প্রহরা পালাবে কোন পথে

ক্ষুধায় মরো তাও ভালো তবুও থাকো শ্রেনীহীন বিশ্বাসে
ফিদেল মাও থেকেছে কি নিরন্ন জিজ্ঞাসা দেখো করে
এরাসব ভূস্বামীর সন্তান স্বার্থ রক্ষায় নেমেছে সংগ্রামে
ক্ষমতাই সব চাবিকাঠি সাথে বন্দুক থাকলে পরে
সকল অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে রাস্ট্র বসে থাকে গদির ওপরে
সময় এসে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তারে ভূতলের ধুলাতে
বলে তোকে পেতে হবে শাস্তি জাগতিক নিয়মের কারণে
নড়েচড়ে বসে সব ত্রস্তে চালায় চাকা তবুও হয়না রক্ষা
ভেঙ্গে গেল ইউনিয়ন পাতলো হাত চিরশত্রুর কাছে
বাহিরে জ্বালিয়ে আলো ভেতরটা অন্ধকারে রেখে
সংস্কারে হলো বটে উপকার তবুও অপকার রইল সেটে

সব থেকে বেশী শ্রেনীর উদ্ভব হয়েছে গনচীনে
নব্যধারায় বসে নেই চেক রুস্কি সার্বিয়া বা কোরিয়া
তৈরী হয় সেথা মারনাস্ত্র শুধুই মানুষ হত্যার তরে
যুগিয়ে চলেছে জাতিগত বিভেদ এশিয়া আফ্রিকাতে
রমরমা অস্ত্র বানিজ্যের অর্থে পোষাক হয়েছে চকচকে
কপিরাইটস ভেঙ্গে অন্যের গবেষনা থেকে
মেরে দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি মেশিন বানায় থরেথরে
একসময় এরা শেখাত সততা এখন পতিতাশৈলী

ওয়ারমেশিন নেই থেমে চলে হাজার বছর ধরে
সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সূচক ওঠে তোমার রক্তধারাতে
মার্কিন শোষকেরা নেশা দিয়ে ডুবিয়ে রেখেছে জাতিকে
সমাজতান্ত্রিক ধব্জাধারীরাও একই পথে চিয়ার্স করে সন্ধ্যাবেলাতে

ঈশ্বর বিশ্বাসে যাবে যদি লাঠিপেটা হবে জুৎসই
আসনে যিনি থাকেন তাকে ছাড়া বিশ্বাস অন্য কিছুতে নেই
মাফিয়া চালায় আন্তঃ অর্থনীতি কম্যুনিস্টিক পদ্ধতিতে
নারীমাংস সর্বশ্রেষ্ঠ সেথা মাদকতো সহচর সদাই
বালক অপহরন হয়ে যায় সাংহাইয়ের ইটভাটাতে
বিনেপয়সায় তিনবেলা খাওয়ায় শ্রম দেয় অর্থনীতিতে
হাহাকার করে ঘোরে মাতাপিতা বিশাল অঞ্চল জুড়ে
যদি পায় সন্ধান এত সহজে নয় নেয়া পুলিশী চোখের আড়ালে

গরীব দেশের গরীব শিশুরা হাতে হাতে যায় ভারতে
আহা! কিডনী খুলে অঙ্গ নিয়ে লাশ যায় ভূগর্ভে
জবরদস্তি দাসপ্রথা ছিলো এবং আছে ঘনঅধ্যুষিত রাষ্ট্রে
কি বনজঙ্গল ,ইটভাটায়,মৎস্যপল্লী এবং পতিতাবৃত্তিতে

আমেরিকা,আরব,পাক-ভারত,চীন,রাশিয়া চলেছে সমান তালেতে
মুসলিম আর তামিল শিশুকে শেখায় কিভাবে ফাটায় বোমা
বোমার আঘাতে গেলে উড়ে যাবে চলে স্বর্গে সোজা
অবুঝ শিশু বিশ্বাস করে তাই ওড়ায় মূহুর্তে নিজেকে

কোন ধারাতেই নেই শুদ্ধতা সাম্যতা শ্রেনীহীনতা অথবা মানবতা
আমি তুমি হয় ঠকি অথবা ঠকিয়ে চলি বিস্তীর্ণ সমাজের অন্তঃরালে ।।

২০০৮

হেফাযতের একটি ভাস্কর্য নিয়ে মাথা নষ্ট

দেশের যুব সমাজ ধ্বংসের অস্ত্র মাদক। মাদক কেনা বেচা আমাদের দেশে প্রকাশ্যে হয়। এরকম আরো বড় বড় সমস্যা রেখে হেফাজতের কোথায় ? একটি ভাস্কর্য আছে তা নিয়ে চুলকানি। মাদক নিষিদ্ধ হক এ বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই। তাই লড়তেই যদি হয় মাদক, ট্রাফিক জ্যাম, চাকরির নিয়োগ বাণিজ্য, কোটা বৈষম্য, প্রশ্ন ফাঁস ইত্যাদি বিষয়ে হেফাযত লড়তে পারে।

শিরক মুক্ত বাংলাদেশ চাই। কবরে সিজদাহ দিয়ে হাজারো মুসলমান শিরক করছে। কবর খানার পাশে ভক্তরা গাঁজা সেবন করছে। হাজারো মুসলমান তাবিজ কবজের জালে বন্দী। এগুলোও শিরক।আর আমাদের হেফাযতের একটি ভাস্কর্য নিয়ে মাথা নষ্ট।

অটোফেজি ও রোজাঃ একটি পর্যালোচনা

সাওম আরবি শব্দ সাওম অর্থ বিরত রাখা, বারন করা বা ফিরিয়া রাখা, সাওম এর বহু বচন সিয়াম, রোযা ফারসি শব্দ, পবিত্র কুরআনে সাওম ও সিয়াম বলে উল্লেখ রয়েছে। আমাদের দেশে ফারসি শব্দ রোযা ব্যাপকভাবে প্রচলিত।

রোযার উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আত্মিক পরিশুদ্ধি লাভ। ‘তাকওয়া’ অর্জনই হলো সিয়ামের মূল উদ্দেশ্য।

তাকাওয়া আরবি শব্দ। এর অর্থ বাঁচা, মুক্তি ভয়ভীতি সতর্কতা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষার আল্লাহর ভয়ে-ভীতি হয়ে আল্লাহ নির্দেশিত ও রাসূল (সা.) প্রদর্শিত পথে সতর্কতার সহিত জীবন যাপন করা। রমজানের রোযা পালনের উদ্দেশ্য হলো মানুষের পশু প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে নৈতিকতা বা আত্মিক উন্নতি সাধন করা।

শরীরিক উপকারের জন্য রোযা পালনের কথা কুরআান হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়। যদিও বর্তমানে রোযা প্রসঙ্গে আলোচনায় অটোফেজি প্রসঙ্গ চলে আসছে। প্রথমে সিয়াম নিয়ে কুরআন আর হাদিছ থেকে কিছু আয়াত ও আলোচনা একত্রিত করছি, পরে অটোফেজি নিয়ে আলোচনায় আসব।

সূরা বাকারাহ’র ১৮৩তম আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ (183)

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা পরহেজগারী অর্জন করতে পার।” (২: ১৮৩)

রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি রোযা রেখে ও মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা ও অন্যান্য পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারল না তার পানাহার পরিত্যাগ করা আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। (সহীহ্ বুখারী)।

সিয়াম সাধনা হলো সত্যিকার অর্থে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি লাভের সাধনা। এ সন্তুষ্টি অর্জন করা তখনই সম্ভব যখন তার দেহ ও আত্মা হবে তাওকওয়ার রঙে রঙিন। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, রোযা আমারই জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।

আল্লামা আবু ওবায়েদের ব্যাখ্যায় বলেন,
রোযাকে বিশেষভাবে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করার কারণ, অন্যান্য ইবাদতে লোক দেখানোর সম্ভাবনা থাকে কিন্তু রোযাতে তা থাকে না, রোযা শুধু আল্লাহর জন্যই হয়।

ইমাম গাজ্জালী (রা.) বলেন, আখলাকে ইলাহী তথা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল করতে হলে প্রয়োজন মানুষের পশু প্রবৃত্তিকে পরিতথ্যাগ করে তাকওয়া তথা আহারে-ব্যবহারে চাল-চলনে কথাবার্তায় সতর্কতার সহিত জীবনযাপন করা।

রাসূল (সা.) বলেছেন, রোযা জান্নাম থেকে বাঁচার ঢালস্বরূপ যতক্ষণ না সে ঢাল বিনষ্ট করে ফেলে। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, কিভাবে বিনষ্ট হয় ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বলেন, মিথ্যা এবং পরনিন্দা দ্বারা, সিয়াম বিনষ্ট হয়।
(বোখারী, তিরমিযি)

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে পাশব প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করে, যারা সত্যিকারের ফায়দা হাসিল করার চেষ্টা করেন; তাদের জন্য সুসংবাদ হলো: সকল নেক কাজই দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত সওয়াব বৃদ্ধি করা হয়। আর রোযা এর থেকে স্বতন্ত্র। এর প্রতিদান আল্লাহ নিজেই দেবেন, তা হবে নিশ্চয়ই অফুরন্ত। (মুসলিম)

রোজা বা সিয়াম সাধনা আল্লাহর অন্যতম বিধান যা শুধু ইসলামের বিধান নয়, পূর্ববর্তী ধর্মগুলোতেও রোযার বিধান ছিল।
যারা একমাস ধরে দিনের বেলায় সব ধরনের খাদ্য-দ্রব্য ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে দূরে থাকে, তারা অন্যের ধন-সম্পত্তির ব্যাপারে নিজের লোভ-লালসাকে দমন করতে সক্ষমতা লাভ করে। রোজা মানুষকে উদার হতে শেখায়। যারা একমাস ধরে ক্ষুধার যন্ত্রণা উপলব্ধি করে তারা ক্ষুধার্তদের কষ্ট বুঝতে পারে এবং তাদের সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করে ও সহানুভূতিশীল হয়। রোজা গুনাহ বা পাপ বর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করে। বেশীরভাগ পাপ পেটপূজা ও ইন্দ্রিয় পরায়ণতা থেকেই জন্ম নেয়। রোজা এই দুই প্রবৃত্তিকে দমনে রেখে সমাজে দুর্নীতি ও পাপ হ্রাস করে এবং খোদাভীরুতা বা পরহেজগারিতা বাড়ায়।

কুরআন-হাদিসের এসব আলোচনা থেকে বুঝা যায়, রোযার মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকওয়া, পরহেজগারী অবলম্বন করা, পাপ বর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

রমজানে কুরআন নাযিল হয়েছে, এ মাসে শবে কদরের রাত্রি রয়েছে ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা করা যেতে পারে। আমি একটি ভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনায় যেতে চাইছি।

সুরা বাকারার ১৮৪নং আয়াতটি উদ্ধৃতি করলাম।

أَيَّامًا مَعْدُودَاتٍ فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذِينَ يُطِيقُونَهُ فِدْيَةٌ طَعَامُ مِسْكِينٍ فَمَنْ تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَهُ وَأَنْ تَصُومُوا خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ (184)
“রোজা নির্দিষ্ট কয়েকটি দিনের জন্য ফরজ। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় ওই সংখ্যক রোজা রাখতে হবে। রোজা যাদের জন্য কষ্টদায়ক যেমন অতি বৃদ্ধদের জন্য, তারা অবশ্যই একজন অভাবগ্রস্তকে অন্নদান করবে।”
যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেশি সৎ কাজ করে, তা তার জন্য বেশী কল্যাণকর হয়। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে, তবে বুঝতে রোজা রাখাই তোমাদের জন্য বেশী কল্যাণকর। (২: ১৮৪)

এই আয়াতে একটি বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যদি আমাদের উপলব্ধিতে আসে তবে আমরা বুঝতে পারব রোজা আমাদের জন্য কল্যাণকর।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জাপানের বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওহশোমি নিয়ে এলো মানবজাতীর মানসপটে এক নতুন উপলব্ধি যার নাম অটোফেজি।

প্রাণীকোষ কীভাবে নিজের উপাদানকে পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে, এই গবেষণার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

প্রথম দিনে সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট চিকিৎসা বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী হিসেবে ওহশোমির নাম ঘোষণা করলো। পুরস্কার হিসেবে তিনি ৮ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার বা ৯ লাখ ৩৬ হাজার ডলার পাবেন।

নোবেল কমিটির মতে, ইয়োশিনোরির গবেষণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, ক্যান্সার থেকে শুরু করে পারকিনসন্স পর্যন্ত রোগগুলোর ক্ষেত্রে শরীরে কী ধরনের পরিবর্তন হয় তা বুঝতে তার গবেষণাটি সহায়তা করে।
সূত্র : বিবিসি

Autophagy কি? এবার তা বলি।

Autophagy শব্দটি একটি গ্রিক শব্দ। Auto অর্থ নিজে নিজে, এবং Phagy অর্থ খাওয়া। সুতরাং, অটোফেজি মানে নিজে নিজেকে খাওয়া।

না, মেডিক্যাল সাইন্স নিজের গোস্ত নিজেকে খেতে বলে না। শরীরের কোষগুলো বাহির থেকে কোনো খাবার না পেয়ে নিজেই যখন নিজের অসুস্থ কোষগুলো খেতে শুরু করে, তখন মেডিক্যাল সাইন্সের ভাষায় তাকে অটোফেজি বলা হয়।আরেকটু সহজভাবে বলি।
আমাদের ঘরে যেমন ডাস্টবিন থাকে, অথবা আমাদের কম্পিউটারে যেমন রিসাইকেল বিন থাকে, তেমনি আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষের মাঝেও একটি করে ডাস্টবিন আছে। সারা বছর শরীরের কোষগুলো খুব ব্যস্ত থাকার কারণে, ডাস্টবিন পরিষ্কার করার সময় পায় না। ফলে কোষগুলোতে অনেক আবর্জনা ও ময়লা জমে যায়।

শরীরের কোষগুলো যদি নিয়মিত তাদের ডাস্টবিন পরিষ্কার করতে না পারে, তাহলে কোষগুলো একসময় নিষ্ক্রিয় হয়ে শরীরে বিভিন্ন প্রকারের রোগের উৎপন্ন করে। ক্যান্সার বা ডায়াবেটিসের মত অনেক বড় বড় রোগের শুরু হয় এখান থেকেই।

মানুষ যখন খালি পেটে থাকে, তখন শরীরের কোষগুলো অনেকটা বেকার হয়ে পড়ে। কিন্তু তারা তো আর আমাদের মত অলস হয়ে বসে থাকে না, তাই প্রতিটি কোষ তার ভিতরের আবর্জনা ও ময়লাগুলো পরিষ্কার করতে শুরু করে। কোষগুলোর আমাদের মত আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই বলে তারা নিজের আবর্জনা নিজেই খেয়ে ফেলে। মেডিক্যাল সাইন্সে এই পদ্ধতিকে বলা হয় অটোফেজি।

জাস্ট এ জিনিসটা আবিষ্কার করেই জাপানের ওশিনরি ওসুমি (Yoshinori Ohsumi) ২০১৬ সালে নোবেল পুরস্কারটা নিয়ে গেল।

স্পষ্টত মুসলমানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘সিয়াম’। খ্রিস্টানরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘ফাস্টিং’। হিন্দু বা বৌদ্ধরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘উপবাস’। বিপ্লবীরা রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অনশন’। আর, মেডিক্যাল সাইন্স রোজা রাখলে তাকে বলা হয় ‘অটোফেজি’।

সিয়াম বা ফাস্টিং, উপবাস, অনসন যে নামে বা পদ্ধতিতে পালন করা হোক না কেন অটোফেজি মানুষের উপলব্ধি আসার পর আধুনিক মানুষ রোজাকে অধিকতর কল্যাণকর হিসাবে বুঝতে পারছে।

আমার সাধারণ পাপ ও সাধারণ পূণ্য

আমার সাধারণ পাপ ও সাধারণ পূণ্য
———————-
প্রতিদিন আমি কিছু পাপ করি
ইচ্ছায় ,অনিচ্ছায়,কিংবা আমার ভাগ্যে লেখা ছিল বলে

রাস্তায় হাটব –বেগানা নারীদের দিকে তাকাব
এ পাপটা না করলেও আমার কোন ক্ষতি হবে না
কিছু মিথ্যে কথা না বললেও আমার
লাভ ক্ষতির কোন প্রশ্ন নেই

জীবনের প্রয়োজনের নামে ঘুষ দেব খাব
কোন রকম মনকে বুঝিয়ে সুদের টাকাটাও
পকেটে পুরে নেব

ঘুমানোর জন্য আমার একটি রুম যথেষ্ট
কিন্তু দুতলা প্রাসাদে শুয়ে শুয়ে আমি
দশ তলার স্বপ্ন দেখি
কালকে বাঁচব কিনা জানিনা
আগামী একশ বছরের খাবার সংগ্রহ করে রেখেছি

প্রতিদিন আমি পাপ করি-ইচ্ছায় –অনিচ্ছায়

পরিষ্কার প্লেটটিতে ময়লা পড়লে যেমন ধৌত করতে হয়
শোয়ার আগে বিছানাটা ঝেড়ে ঘুমোতে হয়
এরকমভাবে আমি আমার অন্তরের যত্ন করতে পারিনি ঠিকই
তবে পাপ করি বলেই আমি মানুষ

আফসোস করি আর খোদার কাছে ক্ষমা চাই
ছাদে উঠার জন্য যেমন সিঁড়ি লাগে
প্রতিদিন পাপ করে খোদার কাছে ক্ষমা চাই
পাপ আমার ছাদে উঠা সিঁড়ি
আমি নিষ্পার হতে চায়নি
নিষ্পাপ হলে যদি খোদাকে ভুলে যায়

আবার পাপকেও যে খুব পছন্দ করি তাও নয়
যায় হক এটা খুব পরিষ্কার যে
শত চেষ্ট করেও আমি নিষ্পাপ হতে পারব না
আবার প্রতিদিন কিছু ভাল কাজও আমার দ্বারা হবে

রাস্তাতে গাড়ীর চালানোর সময় শত শত মানুষকে
অতিক্রম করেছিলাম
একটিকেও চাপা দিয়নি

প্রতিদিন আমার কানের পাশ দিয়ে আরো কত পাপ
ও অন্যায় করার সুযোগ চলে যায়-সেগুলোকে এড়িয়ে চলি
এগুলো হয়ত আমার সাধারণ পূণ্য

হাতে ছুরি থাকলে হয়ত খাবার প্রয়োজনে একটি হাঁস কিংবা
মুরগী জবাই করতে পারি
পৃথিবীতে আরো হাজার হাজার হাঁস মুরগী আছে
সেগুলো আমার ছুরির নীচে পড়েনি

কোন মানুষও আমার ছুরীর নীচে পড়েনি
গুটি কয়েক আম পেঁয়ারা ঝাল মরিচ ছাড়া
এটাও আমার সাধারণ পূণ্য

যাইহক এতগুলো পূণ্য ও এতগুলো পূণ্য নিয়ে
আমি মানুষ খোদার সামনে চুপচাপ বিনয়ী
অবাক চোখে দিখছি পাপ পূন্যের পৃথিবীকে।

ভার্চুয়াল লাইফ

চকমকি ফার্নিশে
ঝকঝকে আসবাব গুলো আমাদের ঐশ্বর্যের সনদ,
নিঃসঙ্গ সংসার পতন আর স্মার্ট ফোনে হাসি মুখের সেলফি
আজকাল আভিজাত্যের আরেক সংযোজন!
খেয়ালী মন
বিষণ্ণ দিনের পর খামখেয়ালীর ভুরিভোজ
পাণের বোতল, আধ পোড়া সিগারেট
– এ সবি দুঃখের আধুনিক সংস্করণ!
কেউ কেউ বলছে বিপ্লব-
ঘিরে ধরা আগুন আর প্রতিদিন ঘর পোড়া গল্পে
লাইক কমেন্টের ঝড়!
দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া হৃদয়, রাহু আঁচড়
পরশ্রীকাতর চোখ
বুকের আঁচল খসে পড়ার দক্ষতা নিশ্চিত করছে সভ্যতার সনদ!
এমনি এক অধম চরণে হেঁটে ছুটছে আমাদের জীবন
চরণ তলে মরা হাড় গোড়, ধর্মগ্রন্থ, চার পুরুষের ইতিহাস
বরং যত বেশী রাখা যায় মিথ্যের বাস, উলঙ্গ উল্লাস
ততো বেশী রঙ সমৃদ্ধ প্রোফাইল…
স্থায়ী আত্মার অস্থায়ী ভার্চুয়াল লাইফ!

দাউদুল ইসলাম
৬.৬.১৭

আত্মচিন্তন‬-৫

জীবন অনিশ্চিত এবং এই অনিশ্চয়তাই জীবনের সৌন্দর্য। কিন্তু জীবনের এই সৌন্দর্য সবসময় সুখকর হয় না। সুখ এবং সৌন্দর্যের এ দ্বন্দ্ব চিরকালের। সুখকে সৌন্দর্যপূর্ণ করে তোলা এবং সৌন্দর্যকে সুখময় করে তোলাই মানুষের চিরন্তন প্রত্যাশা। এ প্রচেষ্টার সফলতাই জীবনের সার্থকতা। কিন্তু সে পথ বড়ই দুর্গম !

আমার চটপট স্বভাব

আমার চটপট স্বভাব
——————–
খুব তাড়াতাড়িই লেখাপড়া শেষ করলাম
এক্বেবারে তাড়াতাড়ি চাকরি হল
তাড়াতাড়ি বিয়ে, বছর না পেরতেয় বাবা হলাম

মানে আমার সবকিছু খুব তাড়াতাড়ি
চটপট বাজার করে ঘরে ফিরি
চটপট অফিসের কাজ সারি
চটপট পেপার পড়ি,ঘুরি ফিরি

মানুষও আমাকে চিনে ফেলেছে
মানে আমি ইজি কাজে বিজি

ভাবছি চটপট -তাড়াতাড়ি মরে যাব না তো?
সব-ই যদি চটপট হয় তাহলে
মৃত্যু তোমার দেরি কিসের?

সেদিন এক লোক বলল-সব কাজ তাড়াতাড়ি
সারলে তাড়াতাড়ি মরতে হবে
আরেক লোক আরেকদিন বলেছিল
-এত ত্বরা স্বভাব ভাল নয়
এত ত্বরা করে কি করবেন?
জীবনটাকে ইনজয় করুন

যাইহক সব কথা ঝটপট শুনি
চটপট কিছু একটা বলি
আর মৃত্যু তুমি এলে –তোমাকে তো ঠেকাতে পারব না!
তবে যেদিন মরব- খোদার কাছে চটপট একটা স্বর্গ চায়।

সহীহ আধুনিক রোজার সহজ তরিকা

রোজার ইতিহাস গুরুত্ব ইত্যাদি নিয়ে মওলানা সাহেবদের দিনরাত সবক শুনতে শুনতে যারা বিরক্ত হয়ে উঠেছেন অথবা বিরক্ত হওয়ার মত শোনার সময় যাদের নাই তাদের জন্য আমার সাড়া এই কিছু তরিকা আছে যাতে করে আপনি আধুনিক কায়দায় সহি রোজা রাখতে পারবেন।

সেহরির কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে উঠবেন। উঠেই ফেসবকে লগইন করুন। সেহরি বিষয়ক স্ট্যাটাস দিন। বিশেষ কোন বান্ধবী/ বান্ধব যদি থাকে তাকে জাগিয়ে দিন। জাগিয়ে দিয়ে ঘন্টা খানেক কথা বলুন। রোজা রেখে খালি পেটে দিনের বেলা কথা বলে আরাম নেই। তাই এই সময়টি কাজে লাগান। ফজরের আগে রোজা শুরু হয় না। সুতরাং এই সময় মনের দুয়ার, মুখের লাগাম সব খুলে কথা বলুন। সব থেকে ভাল হয় সারারাত না ঘুমালে। রাতের খাবার খেয়ি ফোনালাপ শুরু করুন। নতুন নতুন বান্ধবী খুঁজে বের করুন। তাদের ইফতারির দাওয়াত দিন। সেহরির দাওয়াতও দিতে পারেন। আধুনিক রোজা সংস্কৃতির বিশেষ অনুষঙ্গ সেহরি পার্টি। তাই সেহরি পার্টী আয়োজনে ভুলবেন না। ঘুমিয়ে পড়লে পার্টি মিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই রাতে ফেসবুক, সিনেমা, পার্টি এসবে ব্যস্ত থাকলে সেহরি পার্টীতে অংশগ্রহন সুনিশ্চিত। আধুনিক সহীহ রোজার তরিকায় সেহরি পার্টির স্থান অনেক উঁচুতে। সেহরিতে চিকেন ফ্রাই, লবস্টার, ম্যাগি নুডলস, হরলিক্স মিশ্রিত দুধ, বিফকারি রাখতে পারেন। সেহরি পার্টিতে সেলফি তুলতে কোন ভাবেই ভুলবেন না। পার্টির ফাঁকে ফাঁকে সেহরি পার্টির সেলফি ফেসবুকে আফডেট করুন। খাবার কতটুকু ইয়াম্মি ছিল সে স্ট্যাটাস দিতে ভুলবেন না। সিগারেটের অভ্যাস থাকলে শেষবারের মত সিগারেট খেয়ে নিন।

সেহরি পার্টি শেষে ঘুমিয়ে নিন। রোজার অজুহাতে বেশ একটু দেরিতে অফিসে যেতে পারেন। অফিস না থাকলে বারোটার আগে ঘুম থেকে উঠার দরকার নেই। বারোটায় ঘুম ভাঙলে সাথে উঠে পড়বেন না যেন, নিদেন পক্ষে একটা পর্যন্ত গড়াগড়ি দিন। উঠে গোসল সারুন। গোসল করে পাঞ্জাবি পরে মুখে রোজাদার রোজাদার ভাব নিয়ে বের হম। পকেটে একটা টুপি রাখতে ভুলবেন না। ইফতারির সময় কাজে লাগবে। বিভিন্ন মার্কেটে যান। বন্ধু বান্ধবিদের ফোন দিয়ে তাদেরকে আসতে বলুন। বিভিন্ন মার্কেটে ঘোরাঘুরি করে ক্ষুধা লেগে গেলে, কোন একটা ফুডকোর্টে বসে খেয়ে নিতে পারেন। আর সহ্য করতে পারলে ইফতার পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

সেহরি পার্টি না থাকলে বাসায় জেগে থাকাই উত্তম। ছোট রাত, না ঘুমিয়ে একেবারে সেহরি খেয়ে ঘুমদিন। সেহরির সময় টিভি চ্যানেল গুলো একবার ঘুরে আসতে পারেন। বিরক্ত লাগলে দরকার নাই। ঘুমানোর আগে অবশ্যই বান্ধবী/ বান্ধবীদের সাথে ফোনালাপ সেরে নিবেন। এই সময় আলাপ না হলে বান্ধবী রাগ হতে পারে না। রোজা অবস্থায় কাউকে রাগানো বুদ্ধিমানের কাজ না। যাদের একাধিক বান্ধবী আছে তারা এই রাতকে কাজে লাগান। ইফতারের পরে, মাঝরাতে, সেহরির আগে-পরে এভাবে শিডিউল করে সকলের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখুন। বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতির মত সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে শত্রুতা নয় এই নিয়ম মেনে চলুন। তবে আপনার বান্ধবীর তালিকায় ভারতের মত কেউ থাকলে আপনাকে বিশেষ সাবধানে থাকতে হবে। এই ঈদে কাকে কি গিফট দিবেন সেটা ভেবে রাখুন। আপনি যদি বিশেষ চালাক প্রকৃতির হোন তাহলে কোন কোন গার্ল ফ্রেন্ডের কাছ থেকে গিফট আদায় করতে পারবেন। এমনকি আপনার গার্লফ্রেন্ড অন্য বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে পাওয়া উপহার আপনার হাতে তুলে দিয়ে বলবে, এটা আমি শুধু তোমার জন্য নিজের হাতে কিনেছি (নিজের হাতে বানিয়েছিও বলে ফেলতে পারেন)। সবই নির্ভর করে আপনি তাদের কিভাবে ম্যানেজ করতে পারেন তার উপর।

আধুনিক রোজায় ফেসবুকের গুরুত্ব অপরিসীম। সেহরি পার্টি ইফতার পার্টি এসবের খবরা-খবর, সেলফি তো আছেই তাছেড়া এই মুমিন বান্দার জন্য কয়টা লাইক? আমীন না বলে যাবেন না কেউ, মুমীন বান্দারা শেয়ার করুন মার্কা প্রচুর স্ট্যাটাস, ছবি আসে। এইগুলোতে লাইক কমেন্ট শেয়ার করতে পারেন। নিজেও এসব পোস্ট দিতে পারেন। না হলে আপনি প্রকৃত রোজাদার ফেসবুকার না।
বিভিন্ন ব্যাংক, ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠান ইফতারিতে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। চেষ্টা করুন এর প্রত্যেকটী অফার গ্রহন করতে। ইফতারি বিষয়ক স্ট্যাটাসে অবশ্যই ইফতারির দাম লিখতে ভুলবেন না। কত দামী ইফতারি খেলেন তা জাতিকে জানানোর দরকার আছে। আর যেদিন ইফতার পার্টি থাকবেনা বাসায় জম্পেশ ইফতারির ব্যাবস্থা করুন। বিভিন্ন টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠান দেখে দেখে ইফতারির আইটেম তৈরি করুন। ইফতারিতে গাজরের হালুয়া, ম্যাগি নুডলস, পুডিং, স্টার হালিম/মামা হালিম, ট্যাং/রুহ আফজা থাকা বাঞ্চনীয়। টিভি’র আজান শুনে ইফতার শুরু করুন। ইফতার এশার নামাজের আগে শেষ হওয়া সমীচীন নয়। ইফতারির সময় মাথায় টুপি থাকলে ভাল দেখাবে। মেয়েরা সারাদিন বেপর্দা ঘুরাঘুরি করলেও ইফতারির সময় মাথায় কাপড় দিন।

সারাদিনে শরীরে অনেক ধকল গেছে এবারে বিশ্রাম নিন, ফেসবুকে লগইন করুন।

আমি তোমার মাঝে পেলাম খুঁজে বাঁচার এ নিশানা

আমি তোমার মাঝে পেলাম খুঁজে বাঁচার এ নিশানা
তোমার আলোয় চোখ রেখেছি প্রাণের অভিধানে
নতুন চোখে পড়ে নিলাম এই জীবনের মানে ।।
আমি ঝড়ের মুখে শপথ পেয়ে সর্বনাশের
নতুন পাতা উল্টে গেলাম ইতিহাসের
আমি নতুন আকাশ খুঁজে পেলাম সূর্যের সন্ধানে ।।
ভালবাসার স্রোতে কখন নিভলো পরম তৃষা
পথ হারানো মনকে দিলাম পথে চলার দিশা
আমি অবিশ্বাসী এই পৃথিবীর বুকের মাঝে
শুনতে পেলাম অঙ্গীকারের কি সুর বাজে
আমি পৌঁছে দিলাম বাঁচার খবর বিস্মিত মোর প্রাণে ।।