বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

গালি নিয়ে গলাগলি

গান এবং গালির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য থাকলেও দুটোর মধ্যে এক চমৎকার মিল আছে। গান সবাই যেমন গাইতে পারে না তেমনি গালিও সবাই দিতে পারে না। গানে যেমন সুর তাল লয় আছে তেমন গালিতেও আছে।

আমার স্কুল জীবনের এক বন্ধু সুন্দর গালি দিতে পারতো আমরা তাঁর গালি শুনে খুব মজা পেতাম। গালিতে সে এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করতো যা এখনো অন্য কারো মুখে শুনিনি। কাউকে গালি দিতে গিয়ে সে শুধু বাবা মায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো না। তা বিস্তৃত হতো পুর্ব পুরুষ পর্যন্ত এমন কি জন্মের পর যিনি আজান দিয়েছিলেন উনার বাবা মাকেও নিয়ে আসতেন। এ তো গেল তাঁর গালির দিক তাঁর আরেকটি ভাল গুন ছিলো সে ভালো গানও করতে পারতো। সেই কতো কাল আগের কথা খুব মনে পড়ে।

গালির মধ্যে খুব কমন হচ্ছে “শালা”, “শালার পুত”, সম্বন্ধীর পুত”। আপাত দৃষ্টিতে গালি মনে হলেও আসলে তা গালি নয় এগুলো আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক। সমস্যা হয় তখনি যখন অনাত্মীয় কাউকে এসবে সম্বোধন করা হয়।

কুকুর, বিড়াল, গাধা র বাচ্চাকে কুকুরের বাচ্চা, বিড়ালের বাচ্চা বা গাধার বাচ্চাই তো বলা হয়। মানুষের বাচ্চাকে কুকুরের বাচ্চা বা গাধার বাচ্চা বলা হলেই তা গালি হয়ে যায়।

যে সব পশুপাখিকে গালি দিতে ব্যবহার করি তাঁর মধ্যেও শ্রেণী ভেদ আছে। কাউকে “গাধার বাচ্চা” বললে খুব মন খারাপ করবেন সেই একই ব্যক্তিকে “বাঘের বাচ্চা” বলুন খুব খুশি হবে।

গালি দিতে আমরা পশু পাখি ছাড়াও দেশের নামও ব্যবহার করি। আমাদের ছোট বেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর এক পক্ষ শ্লোগান দিতো “রুশ ভারতের দালালেরা সাবধান”। আবার অন্য পক্ষ বলতো “আমেরিকার দালালেরা সাবধান”। মনে হতো আমরা সবাই দালালের জাতি কেউ রুশের কেউ বা আমেরিকার !

আর যাই হোক পশুর নাম নিয়ে গালি দেওয়া ঠিক নয়। ওরা আমাদের মতো পরিবেশ বিপন্ন করে না। আমরাই ওদের নিরাপদ ভূমিতে প্রমোদ ভবন গড়ি। আমাদের মতো বৈধ অবৈধ পথে আগামীকালের জন্য সঞ্চয় করে না। ওরা দিনে আনে দিনে খায়। ওদের ইন্টারনেট মোবাইল বা পত্রিকা নেই তবু ওরা বিপদের আঁচ করতে পারে।

হুমায়ুন আহমেদের নাটকে পাখিকে গালি দিতে দেখেছিলাম “তুই রাজাকার”, একদিন পশু পাখিরা আমাদের গালি দেবে “মানুষের বাচ্চা” বলে। হতে পারে এখনো দিচ্ছে। আমরা তো ওদের ভাষা বুঝি না।

মাঝে মাঝে মনে হয় অনেক কিছু না বোঝাই ভালো। সব কিছু বুঝতে গেলে বা পাড়লে কষ্ট পেতে হয়। মানুষের সাথে পশুর পার্থক্য হচ্ছে ওরা আদর্শের জন্য মরতে পারে না আমরা পারি।

শুভ জন্মদিন প্রিয় আজাদ কাশ্মীর জামান

আজ আমাদের প্রিয় মুরুব্বীর জন্মদিন। শব্দনীড় একটি পরিবার আর এ পরিবারের সকল সদস্যদের পক্ষ থেকে মুরুব্বীর জন্য রইল অফুরান শুভকামনা।

জার্নাল এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

জার্নাল এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা …
শব্দনীড়ে সকলের জন্য প্রাসঙ্গিক কিছু কথা।

সুপ্রিয় শব্দনীড় বন্ধু সমীপে।

শব্দনীড় আজ ৪ মাস ২০ দিন বয়স পেরুচ্ছে। সকলের শব্দনীড়ের নতুন অভিযাত্রায় প্রয়োজনীয় মাত্রাও সহযোগ করেছে। ইতিমধ্যে যেখানে ২,৫৮৯ টি পোস্ট সঞ্চিত হয়েছে। এবং ২,৩৭১ টি নতুন পোস্ট প্রকাশিত হয়েছে। বাকিরা খসড়া অথবা অপেক্ষমান ঘরে নিরাপদ জমা আছে। মন্তব্য সংখ্যা ১২,৯৪০ টি। নিবন্ধিত ব্লগার ১১০ জন। পূর্ব এখানে।

এপার বাংলা অথবা ওপার বাংলার স্বনামখ্যাত ব্লগ, ব্লগস্পট অথবা শব্দনীড়ের মতো ওয়ার্ডপ্রেস এ তৈরী অন্যান্য ব্লগের তুলনায় শব্দনীড় সেখানে অহংকার নয়; গৌরব বোধ করতে পারে। এই সাফল্য শব্দনীড় এর নয়; শব্দনীড় এ যারা শব্দ চর্চা করেন তাদের সকলের। শব্দনীড়ে অংশগ্রহণকারী ছোট বড় সকল লিখিয়ের।

ব্লগার বলতে শব্দনীড় কখনও কাউকে ছোট বড় মাঝারি মনে করে না। সবার জন্যই এই ব্লগ। সকলের অধিকার সমান এমনতর স্বতন্ত্র চেতনায় বিশ্বাস করে। কাউকে অতিরিক্ত সুযোগ দেয়া বা নেয়ায় শব্দনীড় কখনো কল্পনাও করে না। এই ব্লগ সর্বজনীন। সর্বজনীনতা ধরে রাখতে শব্দনীড় অসম্ভব আপোস করতে নারাজ।

চলতি শব্দনীড় নিয়ে শব্দনীড় যে স্থির এবং অবিচল সিদ্ধান্তে এখনও অটল রয়েছে, অতি সম্প্রতি অভিজ্ঞতার আলোকে পুনশ্চ তা সকলের সাথে শেয়ার করতে চায়।

aaa_3

পুরোনো অনেকেই অবগত আছেন যে, পূর্বের বিশাল ডেটা সম্পন্ন সার্ভার ভাড়া পরিশোধের সুনিশ্চিত উৎস বা উপায় বের করতে না পারায় শব্দনীড়কে বন্ধ হতে হয়েছিলো। পরবর্তীতে সকল ডেটা ব্যতিরেকেই জিরো ডেটায় শব্দনীড়কে পুনরায় অবমুক্ত করা হয়। যেখানে প্রথম এবং প্রধান যে নিশ্চয়তাটি ছিলো সেটা হচ্ছে, শব্দনীড় এর ব্যয়ভার মেটাতে কারু কাছ থেকে অর্থ চেয়ে সাহায্য পোস্ট আহবান করা হবে না। এর ব্যত্যয় আজও ঘটেনি, ভবিষ্যতেও সম্ভাবনা নেই।

অবমুক্তির আগে পরে স্বেচ্ছায় এবং ঐচ্ছিকভাবে পূর্ব সার্ভারের বকেয়া পরিশোধে, অনুদানের প্রতিশ্রুতিতে যারা কমবেশী এগিয়ে এসেছিলেন, এমনকি এককভাবে যিনি নির্বাহের ভার বহনেও স্বাক্ষর রেখেছিলেন সকলের প্রতি শব্দনীড় কৃতজ্ঞ।

তাদের সমন্বয়েই শব্দনীড় চলবে যারা নির্মোহে শব্দনীড় এর প্রতি হাত বাড়াবেন।

যেখানে থাকবে না কারু মালিকানা অথবা কর্পোরেট ধারণার বিশেষ কোন ছায়া। নির্বাহের ভার একক অথবা যৌথ বহন করলেও শব্দনীড়ের মালিকানা শব্দনীড় ব্লগারদের। অনুদানকারী কেবল অভিভাবক মাত্র। শর্ত নয়; পরামর্শই হবে পাথেয়।

Divider 7a

পরিশেষ : নিজে লিখুন; সহ-ব্লগারের লিখায় মন্তব্য দিন। ব্লগিং হোক সৌহার্দ্যের।
ভালো থাকুন। আনন্দে থাকুন। সর্বোপরি শব্দনীড় এর পাশে থাকুন। ধন্যবাদ।

rrr

শেষের কবিতা

নিজের সম্পর্কে জানানোর জন্য ভর করলাম রবি ঠাকুরের উপর

অমিত রায় ব্যারিস্টার। ইংরেজি ছাঁদে রায় পদবী “রয়” ও “রে” রূপান্তর যখন ধারণ করলে তখন তার শ্রী গেল ঘুচে কিন্তু সংখ্যা হল বৃদ্ধি। এই কারণে, নামের অসামান্যতা কামনা করে অমিত এমন একটি বানান বানালে যাতে ইংরেজ বন্ধু ও বন্ধুনীদের মুখে তার উচ্চারণ দাঁড়িয়ে গেল– অমিট রায়ে।
অমিতর নেশাই হল স্টাইলে। কেবল সাহিত্য-বাছাই কাজে নয়, বেশে ভূষায় ব্যবহারে। ওর চেহারাতেই একটা বিশেষ ছাঁদ আছে। পাঁচজনের মধ্যে ও যে-কোনো একজন মাত্র নয়, ও হল একেবারে পঞ্চম। অন্যকে বাদ দিয়ে চোখে পড়ে।
ওর বোনেরা ওর যে অভ্যাসটা নিয়ে ভারি বিরক্ত সে হচ্ছে ওর উলটো কথা বলা। সজ্জনসভায় যা-কিছু সর্বজনের অনুমোদিত ও তার বিপরীত কিছু-একটা বলে বসবেই।

একদা কোন্‌-একজন রাষ্ট্রতাত্ত্বিক ডিমোক্রাসির গুণ বর্ণনা করছিল; ও বলে উঠল, “বিষ্ণু যখন সতীর মৃতদেহ খণ্ড খণ্ড করলেন তখন দেশ জুড়ে যেখানে-সেখানে তাঁর একশোর অধিক পীঠস্থান তৈরি হয়ে গেল। ডিমোক্রাসি আজ যেখানে-সেখানে যত টুকরো অ্যারিস্টক্রেসির পুজো বসিয়েছে; খুদে খুদে অ্যারিস্টক্রাটে পৃথিবী ছেয়ে গেল– কেউ পলিটিক্সে, কেউ সাহিত্যে, কেউ সমাজে। তাদের কারো গাম্ভীর্য নেই, কেননা তাদের নিজের ‘পরে বিশ্বাস নেই।”

একদা মেয়েদের ‘পরে পুরুষের আধিপত্যের অত্যাচার নিয়ে কোনো সমাজহিতৈষী অবলাবান্ধব নিন্দা করছিল পুরুষদের। অমিত মুখ থেকে সিগারেট নামিয়ে ফস করে বললে, “পুরুষ আধিপত্য ছেড়ে দিলেই মেয়ে আধিপত্য শুরু করবে। দুর্বলের আধিপত্য অতি ভয়ংকর।”

সভাস্থ অবলা ও অবলাবান্ধবেরা চটে উঠে বললে, “মানে কী হল।”

অমিত বললে, “যে পক্ষের দখলে শিকল আছে সে শিকল দিয়েই পাখিকে বাঁধে, অর্থাৎ জোর দিয়ে। শিকল নেই যার সে বাঁধে আফিম খাইয়ে, অর্থাৎ মায়া দিয়ে। শিকলওয়ালা বাঁধে বটে, কিন্তু ভোলায় না; আফিমওয়ালী বাঁধেও বটে, ভোলায়ও। মেয়েদের কৌটো আফিমে ভরা, প্রকৃতি-শয়তানী তার জোগান দেয়।”

একদিন ওদের বালিগঞ্জের এক সাহিত্যসভায় রবি ঠাকুরের কবিতা ছিল আলোচনার বিষয়। অমিতর জীবনে এই সে প্রথম সভাপতি হতে রাজি হয়েছিল;
একজন সেকেলেগোছের অতি ভালোমানুষ ছিল বক্তা। রবি ঠাকুরের কবিতা যে কবিতাই এইটে প্রমাণ করাই তার উদ্দেশ্য। দুই-একজন কলেজের অধ্যাপক ছাড়া অধিকাংশ সভ্যই স্বীকার করলে, প্রমাণটা একরকম সন্তোষজনক।

সভাপতি উঠে বললে, “কবিমাত্রের উচিত পাঁচ-বছর মেয়াদে কবিত্ব করা, পঁচিশ থেকে ত্রিশ পর্যন্ত। এ কথা বলব না যে, পরবর্তীদের কাছ থেকে আরো ভালো কিছু চাই, বলব অন্য কিছু চাই। ফজলি আম ফুরোলে বলব না, “আনো ফজলিতর আম।’ বলব, “নতুন বাজার থেকে বড়ো দেখে আতা নিয়ে এসো তো হে।’ ডাব-নারকেলের মেয়াদ অল্প, সে রসের মেয়াদ; ঝুনো নারকেলের মেয়াদ বেশি, সে শাঁসের মেয়াদ। কবিরা হল ক্ষণজীবী, ফিলজফরের বয়সের গাছপাথর নেই।… রবি ঠাকুরের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড়ো নালিশ এই যে, বুড়ো ওঅর্ড্‌স্‌ওঅর্থের নকল করে ভদ্রলোক অতি অন্যায়রকম বেঁচে আছে। যম বাতি নিবিয়ে দেবার জন্যে থেকে থেকে ফরাশ পাঠায়, তবু লোকটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও চৌকির হাতা আঁকড়িয়ে থাকে। ও যদি মানে মানে নিজেই সরে না পড়ে, আমাদের কর্তব্য ওর সভা ছেড়ে দল বেঁধে উঠে আসা।
আমাদের মণিভূষণ চশমার ঝলক লাগিয়ে প্রশ্ন করলে, “সাহিত্য থেকে লয়ালটি উঠিয়ে দিতে চান?”

“একেবারেই। এখন থেকে কবি-প্রেসিডেণ্টের দ্রুতনিঃশেষিত যুগ। রবি ঠাকুর সম্বন্ধে আমার দ্বিতীয় বক্তব্য এই যে, তাঁর রচনারেখা তাঁরই হাতের অক্ষরের মতো– গোল বা তরঙ্গরেখা, গোলাপ বা নারীর মুখ বা চাঁদের ধরনে। ওটা প্রিমিটিভ; প্রকৃতির হাতের অক্ষরের মক্‌শো-করা। নতুন প্রেসিডেণ্টের কাছে চাই কড়া লাইনের, খাড়া লাইনের রচনা– তীরের মতো, বর্শার ফলার মতো, কাঁটার মতো। ফুলের মতো নয়, বিদ্যুতের রেখার মতো। ন্যুর৻ালজিয়ার ব্যথার মতো। খোঁচাওয়ালা কোণওয়ালা গথিক গির্জের ছাঁদে, মন্দিরের মণ্ডপের ছাঁদে নয়।

রবি ঠাকুরের ভক্ত আরক্তমুখে বলে উঠল, “ভালো জিনিস যত বেশি হয় ততই ভালো।”

অমিত বললে, “ঠিক তার উলটো। বিধাতার রাজ্যে ভালো জিনিস অল্প হয় বলেই তা ভালো, নইলে সে নিজেরই ভিড়ের ঠেলায় হয়ে যেত মাঝারি।… যে-সব কবি ষাট-সত্তর পর্যন্ত বাঁচতে একটুও লজ্জা করে না তারা নিজেকে শাস্তি দেয় নিজেকে সস্তা করে দিয়ে। শেষকালটায় অনুকরণের দল চারি দিকে ব্যূহ বেঁধে তাদেরকে মুখ ভ্যাংচাতে থাকে। তাদের লেখার চরিত্র বিগড়ে যায়, পূর্বের লেখা থেকে চুরি শুরু করে হয়ে পড়ে পূর্বের লেখার রিসীভস্‌ অফ স্টোল্‌ন্‌ প্রপার্টি।
সেদিনকার বক্তা বলে উঠল, “জানতে পারি কি, কাকে আপনি প্রেসিডেণ্ট করতে চান? তার নাম করুন।”

অমিত ফস্‌ করে বললে, “নিবারণ চক্রবর্তী।”

সভার নানা চৌকি থেকে বিস্মিত রব উঠল– “নিবারণ চক্রবর্তী? সে লোকটা কে।”

“আজকের দিনে এই-যে প্রশ্নের অঙ্কুর মাত্র, আগামী দিনে এর থেকে উত্তরের বনস্পতি জেগে উঠবে।”

“ইতিমধ্যে আমরা একটা নমুনা চাই।”

“তবে শুনুন।” বলে পকেট থেকে একটা সরু লম্বা ক্যাম্বিসে-বাঁধা খাতা বের করে তার থেকে পড়ে গেল–

আনিলাম
অপরিচিতের নাম
ধরণীতে,
পরিচিত জনতার সরণীতে।
আমি আগন্তুক,
আমি জনগণেশের প্রচণ্ড কৌতুক।
খোলো দ্বার,
বার্তা আনিয়াছি বিধাতার।
মহাকালেশ্বর
পাঠায়েছে দুর্লক্ষ্য অক্ষর,
বল্‌ দুঃসাহসী কে কে
মৃত্যু পণ রেখে
দিবি তার দুরূহ উত্তর।

শুনিবে না।
মূঢ়তার সেনা
করে পথরোধ।
ব্যর্থ ক্রোধ
হুংকারিয়া পড়ে বুকে,
তরঙ্গের নিষ্ফলতা
নিত্য যথা
মরে মাথা ঠুকে
শৈলতট-‘পরে
আত্মঘাতী দম্ভভরে।

পুষ্পমাল্য নাহি মোর, রিক্ত বক্ষতল,
নাহি বর্ম অঙ্গদ কুণ্ডল।
শূন্য এ ললাটপট্টে লিখা।
গূঢ় জয়টিকা।
ছিন্ন কন্থা দরিদ্রের বেশ।
করিব নিঃশেষ
তোমার ভাণ্ডার।
খোলো খোলো দ্বার।
অকস্মাৎ
বাড়ায়েছি হাত,
যা দিবার দাও অচিরাৎ।
বক্ষ তব কেঁপে উঠে, কম্পিত অর্গল,
পৃথ্বী টলমল।

ভয়ে আর্ত উঠিছে চীৎকারি
দিগন্ত বিদারি,
“ফিরে যা এখনি,
রে দুর্দান্ত দুরন্ত ভিখারি,
তোর কণ্ঠধ্বনি
ঘুরি ঘুরি
নিশীথনিদ্রার বক্ষে হানে তীব্র ছুরি।”

অস্ত্র আনো।
ঝঞ্ঝনিয়া আমার পঞ্জরে হানো।
মৃত্যুরে মারুক মৃত্যু, অক্ষয় এ প্রাণ
করি যাব দান।
শৃঙ্খল জড়াও তবে,
বাঁধো মোরে, খণ্ড খণ্ড হবে,
মুহূর্তে চকিতে,
মুক্তি তব আমারি মুক্তিতে।

শাস্ত্র আনো।
হানো মোরে, হানো।
পণ্ডিতে পণ্ডিতে
ঊর্ধ্বস্বরে চাহিব খণ্ডিতে
দিব্য বাণী।
জানি জানি
তর্কবাণ
হয়ে যাবে খান খান।
মুক্ত হবে জীর্ণ বাক্যে আচ্ছন্ন দু চোখ–
হেরিবে আলোক।

অগ্নি জ্বালো।
আজিকার যাহা ভালো
কল্য যদি হয় তাহা কালো,
যদি তাহা ভস্ম হয়
বিশ্বময়,
ভস্ম হোক।
দূর করো শোক।
মোর অগ্নিপরীক্ষায়
ধন্য হোক বিশ্বলোক অপূর্ব দীক্ষায়।

আমার দুর্বোধ বাণী
বিরুদ্ধ বুদ্ধির ‘পরে মুষ্টি হানি
করিবে তাহারে উচ্চকিত,
আতঙ্কিত।
উন্মাদ আমার ছন্দ
দিবে ধন্দ
শান্তিলুব্ধ মুমুক্ষুরে,
ভিক্ষাজীর্ণ বুভুক্ষুরে।
শিরে হস্ত হেনে
একে একে নিবে মেনে
ক্রোধে ক্ষোভে ভয়ে
লোকালয়ে
অপরিচিতের জয়,
অপরিচিতের পরিচয়–
যে অপরিচিত
বৈশাখের রুদ্র ঝড়ে বসুন্ধরা করে আন্দোলিত,
হানি বজ্রমুঠি
মেঘের কার্পণ্য টুটি
সংগোপন বর্ষণসঞ্চয়
ছিন্ন ক’রে মুক্ত করে সর্বজগন্ময়॥

মুগ ডাল দিয়ে লাউ

Muger dal Lau

কিছু বেরেস্তা ভেজে তেল বা ঘি যা দিয়েই ভাজবেন তাতেই রেখে দিবেন, তবে বেরেস্তা গুলি ঘিয়ে ভাজলে ভালো হয়। এক ভাগ ডাল দুই ভাগ লাউ। লাউ ছিলে ধুয়ে ছোট ছোট কিউব করে কেটে নিন। মুগের ডাল একটু ভেজে নিন সুন্দর গন্ধ ছড়ানো পর্যন্ত। একটা পিয়াজ কুচি, এক টেবিল চামচ আদা রসুন, একটা তেজপাতা, সামান্য হলুদ, সামান্য লবণ দিয়ে অল্প পানি দিয়ে ডেকচিতে ডাল বসিয়ে দিন। ডাল আধা ফোটা হবে পানি কমে আসবে তখন কয়েকটা আস্ত কাচা মরিচ সহ লাউ গুলি ডেকচিতে দিয়ে একটু হালকা নাড়া দিয়ে ডাল আর লাউ মিশিয়ে নিন। লবণ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে ডেকচি ঢেকে দিন। লাউ আর ডাল গলে গেলে নামিয়ে তেল/ঘি সহ বেরেস্তা উপরে ছড়িয়ে দিন, হাতের কাছে থাকলে এক চিমটি পরিমান গুড়ো জয়ফল ছিটিয়ে ঢেকে রাখুন।

আমি কমেন্ট ব্লগার, আপনি !!

আমাকে ব্লগার বলা যায় কিনা অথবা ব্লগে থাকি বলে ব্লগার উপাধি দেয়া যায় কিনা জানিনা। তবে আমি আপনার ব্লগ পড়ি। নিয়ম করে নিয়মিত পড়ি। সকালে পড়ি দুপুরে পড়ি সন্ধ্যায় পড়ি এমনকি মাঝ রাতের পরেও পড়ি। পড়তে পড়তে পড়ি। ধন্যবাদ দিতে ভুলিনা।

আপনি ব্লগার। আপনি ব্লগ লিখেন মেধা খাটান কষ্ট করে টাইপ করেন শেষে পোস্ট করেন বলেই পড়ার সুযোগ পাই। আমি খুঁজে খুঁজে আপনার লিখা আপনার মতোই বেগ আবেগ দিয়ে যত্ন নিয়ে পড়ি। আপনার লিখায় জীবন অর্থ খুঁজে পেতে চাই। আনন্দ নেই অশ্রু ঝরাই।

আপনি যখন বিপত্তি সয়ে, আমার মত ক্ষুদ্রের জন্য এতোটাই করেন আমারও কর্তব্য তখন আবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়ায় আপনার পোস্টে দুটো কথা বলতে। আমি এক সময় দুই একটা লিখা লিখেছি। এখন লিখি না। লিখা পড়তে পড়তে আমার লিখা আমি ভুলে গেছি। ধরে নিন আমার দেয়ার ক্ষমতা মেয়াদ ফুরিয়েছে। আমি পরম আনন্দ খুঁজে পাই।

যখন দেখি সুমহান পোস্ট ফেলে আমাকে দিয়ে পড়িয়ে পোস্ট ছেড়ে আপনি নির্বাসন নিয়েছেন কাঁহাতক আর আপনার পোস্টে যেয়ে আপনার প্রসংশা বা স্তুতি শব্দের প্রতিমন্তব্য দেখার অপেক্ষায় ক্ষণকালের আয়ুস্কাল এমনি করে খাটো করে ফেলি। আপনি থাকুন আপনার মেধাপ্রকাশ নিয়ে। কমেন্ট ব্লগার বলুন আমার ক্ষতি বা লাভ কোনটাই নেই।

আপনি লিখে যান আপনার মনে আপনার লিখায় আমি আছি। আয়ুদোষে অভিশপ্ত একজন কমেন্ট ব্লগারের এই অধিকার রয়েছে আপনার এহেন আচরণে এমন দুটি কথা বসিয়ে দিয়ে আসার। আমি বলবো না আপনি শুভময় ব্লগিং এ আস্থা আনুন। আপনার ব্লগিং আপনাতে থাক।

আপনার চেতনাবোধের প্রকাশে আমার হার্দিক সম্মান। থাকুক হৃদয় অভিসারে।
আপনার জন্য আমার শুভ স্ট্যাম্প কমেন্ট এ শুধু থাকবে ধন্যবাদ

আত্মচিন্তন-২

সম্পর্ক তৈরী হয়। শেষ হয় না কখনো। বিভিন্ন সম্পর্কের মানুষ গুলো বিভিন্ন সময় ঘুরে ফিরে আসে বিভিন্ন রুপে। আমাদের শুধু অপেক্ষা করতে হয় সবাইকে নতুন রুপে দেখবার। প্রতিটা সম্পর্ক প্রতিদিনই নতুন। সম্পর্কের প্রকৃতি পালটানো সম্পর্কগুলোও প্রতিদিন নতুন হয় যেমন নতুন হয় প্রকৃতি না পালটানো সম্পর্কগুলো। কেন ? কারন সম্পর্ক পাল্টায় না কখনো, পাল্টায় মানুষ !!!

প্রতিবার সমুদ্র ছুঁই

প্রতিবার সমুদ্র ছুঁই ঘুমের ঘোরে- উদাম বুকে ঘামের জোয়ার
প্রতিবার জিতে যাস তুই – নোনতা চুম্বনে নিশ্ছিদ্র সাতার

প্রতিবার বর্ষা নামে – অকর্ষিত জমিনে শাণিত লাঙ্গলে
প্রতিবার বীজ বুনি- জ্যোৎস্নার শোভায় হিজলের তলে

প্রতিবার উৎসারিত হও তুমি- কুয়াশার জালে বর্ণীল সকাল
প্রতিবার চমকিত আমি- স্বপ্ন নিনাদে উড়ছে বিহঙ্গীর পাল

প্রতিবার ভুলে যাই- ক্ষুধাক্লিষ্ট রাতে চিবিয়েছি অন্ধকার
প্রতিবার স্মরণ করি- দুষ্টুমির হাতে ছুঁয়েছি লাজুক লতার অভিসার

প্রতিবার কেঁপে উঠি- স্পর্ধিত রাতে স্খলনের শীৎকারে
প্রতিবার আবৃত্তি করি সেই একিই কবিতা- ছন্দে ,তালে, হুংকারে…

প্রতিবার নতুন আমি- ঋত, পবিত্র, সতত নদী
তবু পুরনো ক্ষত ফুসে উঠে – দহনে রোদনে ঘুম না আসে যদি…।

দা উ দু ল ই স লা ম
২৫/৫/১৭

শব্দনীড় রঙ্গমঞ্চ-আমাদের এইসব দিনরাত্রি-৭ (এপার ওপার)

195347ID - Copy

মুখে বলিঃ গেলুম, খেলুম, এলুম, দেখলুম, গেলাম, আসলাম, খাইলাম, দেখলাম
খাইঃ ইলিশ মাছ, পুই ডাটা, চিংড়ী মাছের মালাই কারি, টেংড়া পুটি আর পাবদা মাছের ঝোল, খিচুরি আর ডিমভাজি
পরিধান করিঃ ধুতি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, শারি-ব্লাউজ
বই পড়িঃ সমরেশ, নিমাই, মানিক, জসিম উদ্দিন, জীবনানন্দ, হুমায়ুন, সুনীল, মিলন, খালিদ উমর।
কালপুরুষ, সাড়েচুয়াত্তর, চৌরঙ্গী, পদ্মা নদীর মাঝি, নক্ষত্রের গোধূলি।
ছড়া পড়িঃ আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা মামা বাড়ি যাই, আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে
গান গাইঃ এসো হে বৈশাখ, আকাশে হেলান দিয়ে পাহার ঘুমায় ওই, কফি হাউজের আড্ডা, একটা গান লিখ আমার জন্য, কারর ঐ লৌহ কপাট
ভাবনাঃ মা-বাবা, ভাই-বোন সংসার সুখের করতে হবে

এ ব্যাপারে আপনার ভাবনা কি?

বিশ্ব কাপ ২০১৫

111 ডিগ্রী জ্বরে কাঁপছিল যখন সারা বিশ্ব।
পূর্ব প্রস্তুতি তৈরী ছিল করবে কারে নিঃস্ব।
বাঘেরা রাজাদের তাড়া করলে পরে,
নাখোশ হয়ে নাশকতার শিকার হয়ে পড়ে।
উইলো যুদ্ধে অজিরা বিশ্ব সেরা যে।
কথায় কাজে প্রমান করলো,মওকা মরে লাজে।
বৃত্ত ছেড়ে বিত্তের দিকে আইকনরা সাজে।
ক্রিকেট বাণিজ্য জয় জয়কার বিপননের কাজে।
চিত্তের চেয়ে বিত্ত যেথায় ছুটছে মহানন্দে।
সেথায় পদদলিত হয় সুবিচার, সৌন্দর্য ,ছন্দে।

আহ্বান

অভিমান যে আমারও হয়না তা নয়!
যখন দেখি অনেকগুলো প্রিয় মুখ সাথে আছেন অথচ সহব্লগারের লেখায় চোখ বুলিয়ে নেয়ার তাগিদও বোধ করেন না! আবার মন্তব্যের উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রেও কুন্ঠিত। চুপচাপ সয়ে যাই, হারিয়ে যাই নীরবে!!

একদা মন্তব্য দেয়ার প্রতিযোগিতা হত। কে আগে মন্তব্য দিতে পেরেছি! কিছু না হোক শুভেচ্ছা বার্তায় কৃপণতা ছিলোনা কখনো। আমরা কি সেই সৌজন্যবোধ হারাতে বসেছি!!!

আসুন আমরা আমাদের প্রিয় শব্দনীড়কে প্রাণবন্ত করে তুলি।
লেখা পোস্ট করার সময়ের সঙ্গে আর পাঁচটা মিনিট বাড়িয়ে দিয়ে সহব্লগারের লেখায় চোখ বুলিয়ে নিই। আপনার দেয়া উৎসাহে তৈরি হবে আগামী দিনের একজন ভালো লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক কিংবা কথা সাহিত্যিক।

কথা দিচ্ছি, শত কাজের চাপের মাঝে ক্ষণ সময়ের জন্য হলেও আপনাদের সঙ্গে দেখা করে যাবো আমাদের প্রিয় শব্দনীড়ের পাতায়…

বেঁচে থাকাটাও ইবাদত

ইশ্বর যখন আমাকে বলবেন
তুমি কি এনেছ?

ইশ্বরকে বলব-এক বুক নিশ্বঙ্গতার
কষ্ট নিয়ে হাসি মুখে বেঁচে ছিলাম
তুমি কি খুশি নও –ইশ্বর!

ইশ্বর আমি বেঁচে ছিলাম
এটাই ছিল আমার ইবাদত
তোমাকে বিশ্বাস করে বেঁচে থাকাটাই ছিল
আমার একমাত্র ইবাদত।

কামরাঙ্গার ঝাল আচার

Kamranga

উপকরনঃ
১। কামরাঙ্গা: ৮০০গ্রাম
২।এক কোয়া বিশিষ্ট রসুন: ৫০০ গ্রাম
৩। কাঁচামরিচ: ২৫০ গ্রাম
৪। শুকনা মরিচ: ৫ টা
৫। সরিষা: ৩ টেবিল চামচ
৬। জিরা: ২ টেবিল চামচ
৭। তেজ পাতা: ২/৩ টা
৮। সিরকা: ৩০০ মিলি
৯। সরষের তেল: ৫০০ মিলি
১০। চিনি: ১ টেবিল চামচ (ইচ্ছা)
১১। লবণ: প্রায় ২ টেবিল চামচ (স্বাদ অনুযায়ী কম বেশী হতে পারে)।

প্রস্তুত প্রণালীঃ
১। জিরা, সরষে, শুকনা মরিচ আলাদা আলাদা করে বেটে নিই।
২। কামরাঙ্গা ধুয়ে শির ফেলে লম্বা লম্বি করে ফালি কেটে নিই (মাঝের অংশ বাদ দিয়ে)। দুইটা কামরাঙ্গা চাক চাক করে স্টার বানিয়ে ডেকোরেশনের জন্য কেটে নিই।
৩। লম্ব ফালি গুলি এক ইঞ্চি পরিমাণ করে কেটে নিই।
৪। আস্ত রসুন ধুয়ে ছিলে নিই।
৫। কাঁচামরিচ ধুয়ে বোটা ফেলে ১ ইঞ্চি পরিমান টুকরো করে কেটে নিই।
৬। এবার কড়াইতে এক কাপ পরিমাণ সরষের তেল দিই, হাল্কা গরম হলে রসুন গুলি ঢেলে দিয়ে মাঝা্রি আঁচে ঢেকে রাখি। পাঁচ ছয় মিনিট পর পর নাড়া দিই যেন কড়াইর তলায় লেগে না যায়।
৭। পনের মিনিট পরে সিরকা এবং চিনি দিয়ে নেড়ে দিই। আরও দশ মিনিট পর লবণ, তেজ পাতা, জিরা, সরষে এবং মরিচ বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করি।
৮। এই ভাবে মিনিট দশেক মশলা কষিয়ে কামরাঙ্গা দিয়ে আবার পাঁচ মিনিট হালকা ভাবে নাড়ি। এবার মরিচ দিয়ে দুই এক মিনিট হালকা ভাবে নেড়ে নামিয়ে নিই।
৯। ঠাণ্ডা হলে পরিষ্কার শুকনো কাচের বয়ামে ঢেলে পর পর দুই তিন দিন রোদে দিয়ে ঠাণ্ডা হলে মুখ আটকে সংরক্ষণ করি।
১০। মাঝে মাঝে রোদে দিলে এক বছর এবং ফ্রীজে রাখলে প্রায় ২ বছর সংরক্ষণ করা সম্ভব।

শব্দনীড় রঙ্গমঞ্চ-আমাদের এইসব দিনরাত্রি-৮ (অফিস নাকি খিচুরি) —

6212958942_1da7f94202_b

আচ্ছা, ভাবতে পারেন, অফিসে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বের হবেন এমন সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো। আহ! কতদিন পরে এমন রিমঝিম বৃষ্টি! এমন দিনে একটু রোমান্স না হলে কি হয়? তার সাথে দুপুরে খিচুরি আর ইলিশ ভাজা! কিন্তু অফিস! মাত্র সেদিন ছুটি নেয়া হয়েছে বলে আজও যে ছুটি নিবেন তেমন সাহসও নেই। ঘরে একটা ছাতি অবশ্য আছে কিন্তু তাতে এই বৃষ্টির একটা ফোটাও ঠেকাতে পারবে না আবার ওদিকে দুই এক ঘণ্টার মধ্যে এই বৃষ্টি থামবে তেমন কোন আশা নেই।
এই অবস্থায় কি করবেন? রোমান্স আর ইলিশ খিচুরি নাকি অফিস?