মরণের ইচ্ছা জাগিছে আজি,
কোনোমতে বেঁচে থাকার বহু চেষ্টা গেলো জলে,
জগতে বিশ্বাস নাই,
ঈর্ষাবশত অমূলক দোষারোপে সমাজচ্যুত আমি।
মৌনাবলম্বনে অনেক হইলো দিনগুজরানো,
ইহাতে সুখ নাই-
বেদনার্ত অনুভূতির কবলে কত রাতের অবসান,
মুক্তির প্রতিজ্ঞা করেছি আজ-
দেশান্তরে জীবন পার করবো না,আত্মহুতি।
বিজন প্রান্তরে সন্ন্যাসজীবন নিবো না,
অথবা,
সমাজের অবিচারে প্রতিবাদীও হবো না!
ভয় হয়-খুব ভয়!
সাহসী যুবক রুইতনের মতো মারা পরবো নাতো,
নাকি,
ষোড়শীর হত্যাকে আত্মহত্যা নামে চালিয়ে দিবে?
ওরা সমাজের মানুষ,
সমাজচ্যুত আমিতে তাদের মাথাব্যথা নেই-
মিথ্যা দোষারোপে এমনিতেই দুরাচারী।
আমি জনসমাবেশে মরণের সুধাপান করিবো,
রোষারক্ত নয়নে দেখুক সমাজপতিরা,
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে প্রতিবাদ হউক,
অমূলক দোষারোপে আর কত প্রাণের বিসর্জন?
রুইতনের বিদেহী আত্মার করুণ চিৎকার,
কর্ণগোচর হয় আজ,
সমাজচ্যুত জীবনে বাঁচিবার শখ জাগে কার?
প্রত্যাবর্তন হবে নতুন মানুষের,
দুর্দিনের যত অবিচারের নিষ্কৃতি হবে-
নতুন মানুষে আবার সমাজ হবে,
তখন আর,
মিথ্যা দোষারোপে সমাজচ্যুত হবে না মানুষ।
বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য
ক্যাটায়ারের ক্যাটগুলো ♣
ক্যাটায়ারের ক্যাটগুলো ♣
দারোয়ানরা তাহার ঘাড় ধরিয়া বাহির করিয়া
দিতে দিতে বলিল, তুমি তাড়াতাড়ি চলিয়া যাও।
‘আই এম দ্যা গ্রেট, আই এম দ্যা গ্রেট বলিতে বলিতে
সে বাহির হইলো। এবং বলিল, তাহারা আমার হাতে
ধরে নাই। পিটাইতে পারিত। তাহাও করে নাই। বরং
সম্মানের সাথেই বাহির করিয়া দিয়াছে।
অথচ এই সিনারিও যাহারা দেখিল, তাহারা কেন
মৌন থাকিল- ইহা ভাবিতে ভাবিতে তাহার মনে
পড়িল, কতক বৎসর আগে তাহার গুরু লুঙ্গিবাবা’কেও
এই পানশালা হইতে অর্ধচন্দ্র দিয়া বাহির করিয়া
দেওয়া হইয়াছিল।
সে আরও বলিতে থাকিল, আমি তাহাকে ভয়
পাইয়াছি। তাই নাম বলিব না। মে বি আমি
তাহাদের চাইতে অধিক মেধাবী, তাই তাহারা
আমাকে সহ্য করিতে পারিতেছে না।
… তবে যাহারা দেখিল, তাহারা কেন কেউ
কিছু বলিল না। তাই আমি তাহাদিগকে
ব্লকিং করিতেছি। অন্য কোনো মদখানায় তাহাদের
সাথে দেখা হইলে হইতেও পারে!
তাহার পর সে ক্যাট ওয়াকের জন্য তৈরি হইতে
হইতে কহিল, তোমরা ইহার জন্য কেউ কোনো
দুঃখ করিও না। বন্ধুরা, ইহা কোনো স্যাটায়ারও
নয়। নয় কোনো সুবোধ কাহিনী।
আমরা যারা একসাথে ক্যাটায়ার করিতাম,
তাহাদের নীরবতা আমার মাথার উপর ভাঙিয়া
ফেলিয়াছে, কালিদাসের আকাশ।
আমরা হয়তো এখন হইতে পাশাপাশি টেবিলে
বসিয়াই সুরা পান করিব
কিন্তু কেহ আর কাহারো মুখের দিকে তাকাইব না!
@
৪ নভেম্বর ২০১৭
[ ** নোট- ইহা কোনোদিনই কোনো গ্রন্থভূক্ত হইবে না। তাই যে কেউ চাহিলে কপিপেস্ট, নকল, ভাবানুবাদ, রূপান্তর করিয়া নিজের নামে চালাইয়া দিতে পারেন। তাহাতে মূল চিঁন্তক/অলেখকের কোনো দাবি+দাওয়া থাকিবে না। **]
নিজকিয়া ৯
আমি কি বিষণ্ন হয়ে আছি?
আমি তো বিষণ্ন হয়ে আছি।
ঠোঁটের ওপরে ভ্যানিশিং জলরংয়ে
এঁকে রাখা হাসির নকল টুকরো
হাতের মুঠোয় এগিয়ে দেওয়া
শুভেচ্ছা সন্দেশ কেউই বোঝেনি
ঠিক কতখানি ভেজাল ছিল।
আমি তো বিষগমণ করেছি
এই পান্থবেলায়, দুহাত জড়ো করে
ওয়েলকাম করেছি তোমার
অনাকাঙ্খিত গমণ; এই অবেলায়
দরজার বাইরে জুতো খুলে
কথারা অকালমৃত হয়:আমি তো
বিষণ্নই আছি, বিষণ্ন থাকবো
আমার বয়ে নেওয়া বাকী
অবসাদগ্রস্ত হলুদ বিকেল সময়।
কোর’আনের একটি অলৌকিক বৈশিষ্ট্য
ইসলামবিদ্বেষীরা ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে গিয়ে বলে থাকেন যে, “কোর’আন আল্লাহর রচনা নয়, আল্লাহ বলে কেউ নেই। এটি মোহাম্মদ (সা.) রচনা। তিনি একজন সাংঘাতিক চতুর ও প্রতিভাবান লোক ছিলেন। তিনি নিজে এটি লিখে আল্লাহর কেতাব বলে প্রচার করেছেন যেন মানুষ তাঁকে রসুল হিসাবে মেনে নেয়, তাঁর অনুসারী হয় (নাউযুবিল্লাহ)।” আমরা যারা আল্লাহ, তাঁর রসুল এবং আল্লাহর কেতাব আল কোর’আনের উপর পূর্ণ ঈমান এনেছি, আমাদের ঈমানী কর্তব্য হলো এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগের জবাব দেওয়া।
তাদের এই অভিযোগের জবাবে আমাদের বক্তব্য হলো, আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপনের জন্য মানুষকে যুক্তি ও বুদ্ধিকে ব্যবহার করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ আল্লাহ কখনোই আমাদের বিশ্বাস উৎপাদনের জন্য সামনে এসে দাঁড়াবেন না। তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে তাঁর নিদর্শন (আয়াত) থেকে। একইভাবে নবী রসুলগণ যে সত্যিই আল্লাহর প্রেরিত তার প্রমাণস্বরূপ আল্লাহ তাঁদেরকে কিছু মো’জেজা বা অলৌকিকত্ব দান করেছেন যেন সেগুলো দেখে মানুষ তাদেরকে বিশ্বাস করে। সকল নবীর মতো শেষ নবীর (সা.) বেলাতেও প্রশ্ন উঠল, ইনি যে সত্যই নবী, আল্লাহর প্রেরিত তার প্রমাণ কী, চিহ্ন কী? কেউ এ প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দিতেন- আমার মো’জেজা কোর’আন। যদিও কোর’আন তার (দ.) একমাত্র মো’জেজা নয়। কিন্তু সত্যই তাঁর সর্ব প্রধান মো’জেজা কোর’আন।
কোর’আনে আগামী সমস্ত সময়ের জন্য মানুষের যা কিছু প্রয়োজন হবে সবই দেয়া আছে। মানুষের জ্ঞান ধীরে ধীরে যতই বাড়তে থাকবে ততই কোর’আনের আয়াতগুলির অর্থ বোঝা যেতে থাকবে। সম্পূর্ণ কোর’আন যে আজ বোঝা যেতে পারে না, কারণ অনাগত ভবিষ্যতের মানুষের জন্য অনেক তথ্য আল্লাহ এর মধ্যে দিয়ে দিয়েছেন, এই সত্যটি আমাদের পণ্ডিতরা, মুফাস্সিররা উপলব্ধি করতে পারেন নি। ফলে তারা এর প্রতিটি আয়াতের তফসীর অর্থাৎ ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন মুফাস্সির বিভিন্ন অর্থ, ব্যাখ্যা করেছেন, ফলে নানা মত-অভিমত সৃষ্টি হয়ে জাতির ঐক্য নষ্ট হয়ে গেছে এবং কোন কোন ব্যাখ্যা অদ্ভুত ও অগ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে।
স্রষ্টা আল্লাহ তার বাণী, আয়াতগুলি যখন তার সর্বশেষ, সর্বশ্রেষ্ঠ দূতের (দ.) উপর অবতীর্ণ করতে আরম্ভ করলেন তখন প্রথম দিকেই মুদাস্সার অধ্যায়ে (সুরা) মানব জাতিকে সাবধান করে দিলেন যে, তারা যেন একে মানুষের রচনা বলে মনে না করে। বললেন- “যারা এই আয়াত সমষ্টি অর্থাৎ কোর’আনকে অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যান করবে, এর প্রতি ভ্রু কুঞ্চিত করে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাবে এবং বলবে এসব পুরনো যাদু এবং মানুষের তৈরি রচনা- তাদের আমি এমন আগুনে নিক্ষেপ করব, যে আগুন তাদের না ছাড়বে, না এতটুকু রেহাই দেবে (সুরা আল মুদাস্সির-২১-২৮)।
এটুকু বুঝলাম, না বোঝার কিছু নেই। যখন কোর’আন অবতীর্ণ হয়েছিল তখন যারা ছিলেন তারাও বুঝেছেন। কিন্তু ঠিক তার পরের আয়াতটিতে বলেছেন- “এর উপর উনিশ” (সুরা আল মুদাস্সির ৩০)। এ কী কথা? আগের কথার সাথে, আগের আয়াতগুলির অর্থের সাথে মিল, সামঞ্জস্য কিচ্ছু নেই, হঠাৎ বলছেন, “এর উপর উনিশ”। কিসের উনিশ, কার উপর উনিশ? গত চৌদ্দশ বছর যারা কোর’আন পড়েছেন তারা এই আয়াতে এসে থমকে দাঁড়িয়েছেন। এ আবার কি? আপাতদৃষ্টিতে বেখাপ্পা এই আয়াতকে কোর’আন থেকে বাদও দেয়া যায় নি। কারণ স্বয়ং আল্লাহ এর রক্ষক, হেফাযতকারী। অন্য সব আয়াতের মত মুফাস্ফিররা এরও ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেছেন, কারণ তারা এটা উপলব্ধি করেন নি যে ঐ আয়াত চৌদ্দশ’ বছর পরের মানুষের জন্য আল্লাহ দিয়েছেন, যখন মানুষ কম্পিউটার নামে এক যন্ত্র তৈরি করবে। তার আগে ঐ আয়াতের অর্থ বোঝা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এই সত্য না বোঝার ফলে মুফাস্সিররা এর ব্যাখ্যার চেষ্টা করেছেন এবং স্বভাবতই এক একজন এক এক রকম ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন দোযখের উনিশ জন মালায়েক আছে ইত্যাদি। জাহান্নামে মাত্র উনিশ জন মালায়েক? ওখানে কোটি কোটিরও বেশি মালায়েক। মহানবীকে (দ.) ঐ আয়াতের অর্থ জিজ্ঞেস করা হয়ছিল কিনা জানিনা, হাদীসে পাইনি। জিজ্ঞেস করা হলেও তিনি তার জবাব দিতেন না বোধহয়, কারণ ঐ আয়াত তদানীন্তন মানুষের জন্য ছিল না, ছিল কম্পিউটারের যুগের মানুষের জন্য, যেমন আরও বহু আয়াত আছে যেগুলো আজ থেকেও ভবিষ্যতের মানুষের জন্য এবং যেগুলোর অর্থ আমরা আমাদের বর্তমানের জ্ঞান দিয়ে হাজার চেষ্টা করলেও বুঝবনা।
কিছুদিন আগে আরেক গবেষক মহাপণ্ডিত ড. রাশাদ খলিফা এই আয়াতের উপর গবেষণা আরম্ভ করলেন আমেরিকায়। আগের মুফাস্সিরদের গবেষণার সঙ্গে এর গবেষণার একটা বড় তফাৎ রইল। সেটা হল ড. খলিফা বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার কম্পিউটারকে কাজে লাগালেন। কম্পিউটারের মাধ্যমে নানা রকম হিসাব করে ড. খলিফা এক আশ্চর্য আবিষ্কার করলেন। তিনি যা আবিষ্কার করলেন তা অতি সংক্ষেপে হল এই- সমস্ত কোর’আন এই উনিশ সংখ্যার একটা আশ্চর্য হিসাবে বাঁধা। কোর’আনের প্রধান প্রধান তো বটেই এমনকি অনেক ছোট খাট বিষয়গুলি পর্যন্ত এই উনিশ সংখ্যার হিসাবে বাধা। ওগুলো সব উনিশ সংখ্যা দিয়ে বিভাজ্য।
প্রথমে ধরুন কোর’আন যে বাক্যটি দিয়ে আরম্ভ হয়েছে অর্থাৎ ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম’ এতে উনিশটি অক্ষর আছে। এই বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম বাক্যটি কোর’আনে ১১৪ বার আছে, প্রত্যেক সুরার আরম্ভে এবং সুরা নামলের মধ্যে। এই ১১৪ সংখ্যা উনিশ দিয়ে বিভাজ্য। (১৯ X ৬) = ১১৪। সম্পূর্ণ কোর’আন কেমন করে এই উনিশ সংখ্যার হিসাবে বাধা, এমন কি এর কতকগুলি অধ্যায়ের (সুরার) আরম্ভে যে মুকাত্তায়াত অর্থাৎ অক্ষরগুলি আছে সেগুলির হিসাবও এই উনিশ সংখ্যার হিসাবে বাধা তা সবিস্তারে এখানে লেখা সম্ভব নয়। এজন্য ড. রাশেদ খলিফার The Perpetual Miracle of Muhammad বইটি পড়লে হিসাবটির পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যাবে।
প্রশ্ন হচ্ছে প্রায় সাড়ে ছিয়াশি হাজার শব্দের একটি বই তেইশ বছর ধরে যদি কোন মানুষ রচনা করেন তবে তার মধ্যে নিজের বক্তব্য, ভাষার সৌন্দর্য্য ইত্যাদি ঠিক রেখে সমস্ত বক্তব্যের মধ্যে কোথাও অমিল, বিরোধিতা না থাকে সেদিকে লক্ষ রেখে সেই সঙ্গে এই বিরাট বইটিতে উনিশ সংখ্যার একটা আশ্চর্য বাঁধনে বেধে দেয়া কোন মানুষের পক্ষে কি সম্ভব? বিশেষ করে ঐ মানুষটি যদি ইতিহাসের ব্যস্ততম মানুষ হন যিনি নিরবচ্ছিন্ন প্রবল প্রতিরোধের মুখে একটি সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে ফেলে নতুন সমাজ, নতুন জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, মানব জাতির ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করেছিলেন, দশ বছরে আটাত্তরটি যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন, ২৭ টিতে নিজে অংশ গ্রহণ করেছিলেন, বিশেষ করে ঐ মানুষটি যদি নিরক্ষর হন?
যদি সম্ভব না হয় তবে দু’টি মাত্র সম্ভাবনা থাকে। সেই বিশ্ব সৃষ্টির প্রশ্নের মত অর্থাৎ এই হিসাবটা আকস্মিকভাবে (Accidentally) হয়ে গেছে, আর যদি তা না হয়ে থাকে তবে অবশ্যই এই কোর’আনের রচয়িতা হলেন স্বয়ং আল্লাহ। এই প্রশ্ন সমাধানে ড. রাশেদ খলিফা এ যুগের বিস্ময় কম্পিউটারের সাহায্য নিয়েছেন, যে যন্ত্রের হিসাবের উপর নির্ভর করে আজকের যান্ত্রিক সভ্যতা চলছে, যে যন্ত্রের হিসাবের উপর নির্ভর করে মানুষ চাঁদে গেছে, মঙ্গল গ্রহে, শনি গ্রহে এবং মহাকাশে রকেট পাঠিয়েছে। তিনি এই সমস্ত তথ্য কম্পিউটারে প্রবিষ্ট করিয়ে প্রশ্ন রাখলেন সমস্ত বইটাতে ওমুক ওমুক ভাবে উনিশ সংখ্যার হিসাবে বেধে যাওয়াটা আকস্মিকভাবে (Accidentally) হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? কম্পিউটার হিসাব করে জবাব দিল ৬২৬০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ এর মধ্যে ১, অর্থাৎ ৬২৬ লিখে তারপর চব্বিশটা শূণ্য যোগ করলে যে সংখ্যা হয় ততবারের মধ্যে মাত্র এক। এক কথায় অমনটি আকস্মিকভাবে হওয়াটা অসম্ভব। বাকি রইল এই হিসাবে সমস্ত কোর’আনকে বেঁধে দেয়ার কাজটা করেছেন হয় রসুলাল্লাহ (দ.) আর না হয় আল্লাহ। পেছনে দেখিয়ে এসেছি এটা কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, কাজেই একমাত্র সিদ্ধান্ত হল এটা করেছেন স্বয়ং স্রষ্টা। এবং তাই এত বড় প্রমাণ সত্ত্বেও যারা একে আল্লাহর মুখের কথা বলে বিশ্বাস করবে না তাদের জন্য বলেছেন- তাদের আমি এমন আগুনে নিক্ষেপ করব যে আগুন তাদেরকে না ছাড়বে, না এতটুকু রেহাই দেবে (সুরা আল মুদাস্সির ২৮)।
আলাপন-৫০
কাজল সাহেবের ঘুম আসছে না। অহেতুক মন খারাপ। মাঝে মধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ হয়ে থাকে। অথচ বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ বলেছেন প্রকৃতিতে কোনো কারণ ছাড়া কিছুই হয় না। কাজল সাহেব ভাবছেন, তাহলে উনার এই মন খারাপের কারণ কি?
কেউ একজন ফিস ফিস করে বললো, তোমার মন খারাপ হওয়ার কারণ হচ্ছে এই যে, তোমার কাছে মেসেজ আসছে কিন্তু তুমি তা ধরতে পারছো না।
ঘরে লাইট অফ করা আছে। বিছানা থেকে উঠে লাইট জ্বালাবেন কি না বুঝতে পারছেন না। একটু ভয় ভয় লাগছে। কাজল সাহেব একটু রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন, কে ফিস ফিস করে কথা বলে?
আবার সেই ফিস ফিসঃ আমি ডুডুভব ভ্রল্ল।
কাজল সাহেব বললেন, “তোমরা ডুডুভন’রা কি পেয়েছো? তোমরা কি আমাকে জ্বালাতন করেই যাবে? কিছুদিন পর পর তোমরা এসে কি সব আজব আজব কথা বলো?”
ডুডুভন ভ্রল্লঃ আপনি ঠিকই ধরেছেন।
কাজল সাহেবঃ কি ঠিক ধরেছি?
ডুডুভন ভ্রল্লঃ আপনার কাছে আমি একটি ম্যাসেজ নিয়ে এসেছি এই জন্য আপনার মন খারাপ।
– কি ম্যাসেজ?
– মিলিট্যান্ট হামলা হবে
– কি? মিলিট্যান্ট আবার কি?
-মিলিট্যান্ট হলো এক্সট্রিমিস্ট
– এর মানে কি?
– এই যুগে কেউ ডিকশনারি তেমন ঘাঁটে না, গুগোল ট্রান্সলেটে যান মানে পেয়ে যাবেন
– যাইহোক, সেই মিলিট্যন্ট বা এক্সট্রিমিস্ট হামলা কেন হবে?
– এটা ওদের এমন একটা স্ট্র্যাটেজি যখন কোনো ভাবে মানুষকে, জনগণকে, দেশকে বিব্রত করতে পারে না তখন এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে।
-কিন্তু এরা কারা?
– এরা বেশ কিছুদিন আগে গুজব সন্ত্রাস করেছিলো – জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলেছিলো একটি সেতুতে অগণিত মানুষের মাথা লাগবে তাই ভয়ে কেউ ওই সেতুর কাছে যেতো না।
– আচ্ছা!
– ওই স্ট্রাটেজি যখন বিফলে গেলো তখন জার্নাল সন্ত্রাস করেছিলো
-সেটা কেমন?
-একটি গণমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়েছিলো যেন দেশের প্রধান এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধে। দেশের প্রধানকে খুশি রেখে একটি বাহিনীর প্রধানের নামে মিথ্যাচার করেছিলো
-কিন্তু ওরা এমন করছে কেন?
– দেশের শাসনভার নেয়ার জন্য
– ও, আর কি করেছে?
– কিছুদিন আগে উনারা ঘরে থেকে মাঠে নামিয়েছিলো একটি ধর্মীয় দলকে যারা ধর্মকে ব্যাবহার করে তান্ডব চালায়।
– কি তান্ডব করেছিলো?
-তারা অগ্নি সন্ত্রাস, ভাংচুর সন্ত্রাস ইত্যাদি করে সরকার পতন করে নিজেরা এবং যারা ঘরে থেকে ওদের মাঠে নামিয়েছিলো তারা মিলে দেশের শাসনভার নেয়ার চেষ্টা করেছিলো।
– ও, বুঝতে পেরেছি
– কিন্তু সেটাতেও যখন সফল হলো না এখন তাই মিলিট্যান্ট হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে
– ও, এই মিলিট্যান্ট মানে কি যেন?
– এক্সট্রিমিস্ট
– ও হ্যাঁ এটার অর্থ খুঁজতে আবার গুগোল ট্রান্সলেটে যেতে হবে
– ওরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু শক্তিশালী বোমা তৈরি করেছে
– হোয়াট? টার্গেট কারা?
– টার্গেট দেশের প্রধান, সেখানে সফল না হলে সাধারণ মানুষকে রক্তাক্ত করে দেশের প্রধানকে বিব্রত করবে
– এতো রক্তপাত ঘটাবে কি করে?
– কেন আপনাদের দেশে এর আগেও তো সিরিজ বোমা হামলা হয়েছিলো
– সিরিজ বোমা হামলা করবে তাহলে গোয়েন্দা বিভাগ কি করছে?
– তারা বিষয়টা একটু আধটু আঁচ করতে পেরেছে কিন্তু শিওর হতে পারছে না কারণ ওই এক্সট্রিমিস্টদের আস্তানা অনেক গোপনে আছে
– কোথায় আস্তানা আপনি বলুন তো ডুডুভন ভ্রল্ল
– কি করে বলবো? মোবাইল ট্র্যাক করে বা অন্যান্ন ডিভাইস ট্র্যাক করে তাদের আস্তানা লোকেট করতে যে সময় লাগে সেই সময় পর্যন্ত তারা এক স্থানে থাকে না
– ট্র্যাক করতে কতো সময় লাগে?
– মিনিমাম ২২ মিনিট কিন্তু তারা ২১ মিনিটের বেশি কোথাও থাকে না
কাজল সাহেব বললেন, শুনুন ডুডুভন, আপনার এইসব গাল গল্প কবি সাহিত্যিকদের কাছে গিয়ে বলুন তাহলে উনারা খুব সুন্দর প্লট পাবে এবং এডভেঞ্চার এবং ডিটেক্টিভ কাহিনী লিখে ফেলবে, আমাকে এই রাত দুপুরে অহেতুক ডিস্টার্ব করতে আসবেন না।
কাজল সাহেব বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আর ওই ফিস ফিস শব্দ শুনতে পেলো না। এখন কাজল সাহেবের অহেতুক মন খারাপ ভালো হয়ে গেছে। বরং হাসি আসছে – এই ডুডুভন যে কবে থেকে কাজল সাহেবের কাছে আসা বন্ধ করবে সেটাই ভাবছে। না কি কোনো সাইক্রিয়াটিস্টের কাছে সব খুলে বলবে তা বুঝতে পারছে না।
আবার ফিস ফিস শব্দঃ সাইক্রিয়াটিস্ট আপনার সমাধান করতে পারবে না। কি ভেবেছেন? আপনাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুমিয়ে রাখবে আর ডুডুভন আসতে পারবে না? ওসব চিন্তা বাদ দিয়ে এখন ঘুমান। আমি আবার সময় মতো আসবো।
পাঠ প্রতিক্রিয়ায় পাঠক থাক ক্রিয়াহীন
আজকাল নিজেকে মাঝে মাঝে সপ্তাহখানিক এর জন্য ছুটি দিয়ে ফেলি। ভালো লাগে দূরে থাকতে। শব্দনীড় ব্লগের একজন একনিষ্ঠ ভক্ত এবং বিরাজমান সকল গুণী শব্দ স্রষ্টাদের শব্দ পাঠক হিসেবে ইতিমধ্যেই আমি বেশ সুনাম কুড়িয়ে ফেলেছি। ভালোই লাগে। একটি ব্লগ অথবা একটি পোস্ট; পোস্ট দাতা নেই; কখনও কখনও উঁকিঝুকি মারছেন এখান ওখান থেকে …. ভিন্নজন না বুঝলেও বোঝার বিশেষ ক্ষমতা নামক তৃতীয় অক্ষি নিয়ে ঝিম মেরে থাকা ব্যক্তিটি মুরুব্বী। মানে আমি মুরুব্বী।
আদিনমান এই ব্লগ সেই ব্লগ। মানে বলতে এটা কিন্তু ধরে নেবেন না যে ভিন্ন কোন ব্লগ; বলতে চাইছি শব্দনীড় ব্লগেরই বিভিন্ন ব্লগে চোখ বুলিয়ে বেশ কেটে যেতো আমার কাজের পাশাপাশি বিশ্রাম সময়। ঘুমেও আমি যেন জেগে থাকি। রাত-বিরাতের অনুচর হানা দিলেও টের পাই কে এলো আর কে গেলো। কে লিখা নিয়ে এলো আর কে বাহারি বিজ্ঞাপনের ডালি নিয়ে এলো। ডালি এনে ফেললেও এটা সেটা ঘাঁটাঘাঁটি করাই অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গেছে। কি করা। আমি যে পাঠক। ক্রিয়া থাকা চাই।
দূর্বার গতিতে চলতে থাকে ব্লগ পড়া। সতর্ক থাকি কোন অক্ষর যেন চোখ ফাঁকি না দেয়। দেবে বা দিতে পারে এটা আপন জেনেই চোখকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলি গুণীদের শব্দ দর্পণে। ধন্যবাদ শুভেচ্ছা অভিনন্দন নিয়মিত আছি লিখে যান পড়বো নানা ধরনের আপোষ কামী মন্তব্য। লিখক যখন কিছু লিখেন নিজের সাথে কম্প্রোমাইজ করলেও পাঠক কিন্তু ঠিক ঠিকই বুঝে ফেলেন লিখক তাঁর দায়ভার কোথায় অন্তত সামান্য অ মনযোগে নিজেকে সরিয়েছেন। পাঠক পাঠকই। পাঠের সঙ্গেই যার সহবাস।
মিনমিন থেকে এবার খানিকটা সোচ্চার হই। আমার এই পোস্ট যারা করুণাভরা দৃষ্টিতে পড়ছেন তাদের কেউ কি বলবেন … যাদের ব্লগ নিয়মিতভাবে শব্দনীড় এ প্রকাশিত হয়ে চলেছে তাঁরা কয়টি স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র ব্লগে নিজের উপস্থিতি জিইয়ে রেখেছেন !! শব্দনীড়ে আপনার পাঠক এসে আপনার ব্লগে কথা বলে চলে গেলেও আপনাকে পায় না, ঠিক এমনি করে কি স্বতন্ত্র সেই ব্লগের পাঠকরাও কি আপনাকে এখানকার মতো করে মিস করে !! সত্য পাঠক নিশ্চয়ই মিস করবেন। নইলে পাঠক কিসের !!
একটি পোস্টের সাথে লিখকের তাৎক্ষণিক সম্পৃক্ততা থাকলে লিখক নিশ্চয়ই অন্যের পোস্টে যাবেন। পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন। আমন্ত্রণ জানাবেন। করবেন মূল্যায়ণ। তবেই না আসবে ব্লগ লিখার সুপ্ত প্রাপ্তির প্রাথমিক অর্জন। অর্জন আজকাল আমাদের তেমন করে সিরিয়াস করে তোলে না। শব্দনীড় এর আহবান আমার কাছেও আজকাল দুর্বোধ্য বা নিছক মনে হয়, যখন ব্যানারে স্পষ্ট করে লিখে রাখে ‘সহ-ব্লগারের লিখায় আপনার মন্তব্য দিন। মন্তব্য এবং প্রতি-মন্তব্যে ব্লগিং হোক আনন্দের।’
আনন্দ দূরে থাক। আমারও এখন ইচ্ছে করে মহান সব শব্দ স্রষ্টাদের মতো করে চুপচাপ থাকতে। নিজেকে নিয়ে তাঁরা লিখুন। তাঁদের লিখায় শব্দনীড় পাতা অলঙ্কৃত থাক। লগিন বা অতিথি হয়ে বসে থাকুন। যখন ইচ্ছে তখন আসুন। নিজের পোস্ট প্রকাশ করে নিজের মতো করে থাকুন। কারু সাথে কারু সম্পর্কের বালাই না থাক। আমি পাঠক আপনার পোস্টে যাব কি যাবো না তা আমার ‘পরেই থাক। শূন্য থেকে একটি মন্তব্য নিয়ে স্রষ্টা যদি সুখি হোন পাঠকের কী আসে যায়। পাঠক থাক ক্রিয়াহীন।
শব্দনীড় আপনার সহযোগীতা কামনা করছে
এপার বাংলা অথবা ওপার বাংলার স্বনামখ্যাত ব্লগ, ব্লগস্পট অথবা শব্দনীড়ের মতো ওয়ার্ডপ্রেস এ তৈরী অন্যান্য ব্লগের তুলনায় শব্দনীড় সেখানে অহংকার নয়; গৌরব বোধ করতে পারে। এই সাফল্য শব্দনীড় এর নয়; শব্দনীড় এ যারা শব্দ চর্চা করেন তাদের সকলের। শব্দনীড়ে অংশগ্রহণকারী ছোট বড় সকল লিখিয়ের।
ব্লগার বলতে শব্দনীড় কখনও কাউকে ছোট বড় মাঝারি মনে করে না। সবার জন্যই এই ব্লগ। সকলের অধিকার সমান এমনতর স্বতন্ত্র চেতনায় বিশ্বাস করে। কাউকে অতিরিক্ত সুযোগ দেয়া বা নেয়ায় শব্দনীড় কখনো কল্পনাও করে না। এই ব্লগ সর্বজনীন। সর্বজনীনতা ধরে রাখতে শব্দনীড় অসম্ভব আপোস করতে নারাজ।
শব্দনীড়কে বাঁচিয়ে রাখতে আপনাদের সঙ্গ এবং আর্থিক অনুদান দুটোই প্রয়োজন। যা সম্ভব দশের সহযোগিতা এবং আন্তরিকতা ভালোবাসায়।
জানুয়ারী ২০১৭ মাস থেকে শব্দনীড়কে পুনরায় চালু করা হয়েছে সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে শব্দনীড় চালু আছে। শব্দনীড়ের আয়ের নির্দিষ্ট কোন উৎস নেই। দুই একজন সহৃদয় মানুষের সাহায্যের কারণে শব্দনীড় চালু আছে। সার্ভার কোম্পানী অনেকটা ফ্রীতেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনাকালে শব্দনীড়ও আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন !
আপনার অনুদান ছোট হলেও ক্ষতি নেই। শব্দনীড় এর হিসাব খাতে স্বনাম প্রকাশ অথবা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিসেবেও আপনি থাকতে পারেন শব্দনীড়ের পাশে। যে কোন অনুদান পাঠাতে শব্দনীড় এর অফিশিয়াল এবং পার্সোনাল হিসাব নাম্বার সংগ্রহে রাখুন। শব্দনীড় সর্বজনীন। মুক্ত বাক্ স্বাধীনতায় শব্দনীড় সকলের পাশে।
প্রবাস থেকে :
Azad Kashmir Zaman.
Mobile # +880 1743 918 919
NID : 464 228 1986
প্লাটিপাস
প্লাটিপাসরা স্তন্যপায়ী
মানুষও তাই…
ওরা মোটেই পাখি বা মাছ নয়,
তবে সন্তান প্রসব করে,
দুধ খাওয়ায় সন্তানদের…
হাঁসের মতো চোখ চঞ্চু ও পা
বাদামী রংয়ের ছোট্ট এক প্রাণী!
মানুষের চোখ ও পা আছে
কিন্তু চঞ্চু নেই…
প্লাটিপাসদের নেই বাড়ি,
সাদু পানিই তাদের বাসা!
নিঃসঙ্গ অবস্থায় ঘোরাঘুরি,
দিনের বেলায় ঘুম আর
রাতের বেলা চলাফেরা,
খাওয়া ঘুম এগুলোতেই
কাটিয়ে দেয় তাদের ১৫-২০
বছরের জীবনটা!
পানি এদের শরীরে লোমগুলোর জন্য
সেটাকে ভেদ করে পারেনা ঢুকতে,
সারাদিন পানিতে থাকায় লাগেনা গরমও
আবার লোমস-চামড়ায় তাপ থাকে বলেই
শীতে বা ঠাণ্ডায় শরীর যায় না জমে!
মানুষের কিন্তু…
মানুষের মত দাঁত নেই তাদের,
ঐ এক চঞ্চুই সব কিছু করে!
চ্যাপ্টা এটির গায়ে আছে
অনেকগুলো সংবেদনশীল স্নায়ু…
তা দিয়েই পানির নীচ থেকে
চামচের মতো গুগলি শামুক জেলিফিশ
লার্ভা কৃমি সবই তুলে নিয়ে আসে…
সঙ্গে তুলে আনে নুড়ি আর মাটি!
নুড়িগুলোই দাঁতের মতো কাজ করে,
শক্ত খোলসের ভেতরের মাংসল অংশ
চিবিয়ে খেতে সাহায্য করে নুড়িগুলো,
কতই না বুদ্ধি ওদের!
নেই বাড়ি, নেই খাবার
আছে গরম, আছে শীত
কাজ আছে, কাজ নেই কখনো,
বিহার নেই, খাদ্য নেই!
মানুষ প্লাটিপাস হলে কেমন হত?
==================o
উত্তর আমেরিকা
১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নামের পূর্বে শ্রী ব্যবহারের মর্মার্থ
“শ্রী” একটি বিশেষ্য পদ। ‘শ্রী’ শব্দটি সংস্কৃত শব্দ। ভারত উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ করে সনাতন ধর্মে নামের পূর্বে ‘শ্রী’ লিখে থাকেন। তা নারীপুরুষ সকলের নামের সাথেই শ্রী যুক্ত করা হয়। যেমন: পুরুষের নামে পূবে ব্যবহার করা হয়, “শ্রী লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস” আর একজন বিবাহিত নারীর নামের পূর্বে “শ্রী মতি কল্পনা রাণী দাস” এভাবেই ‘শ্রী’ শব্দটির ব্যবহার। তবে আধুনিক সমাজে অনেকেই মনে করে থাকে এটি জনাব- জানাবা’র বিকল্প ব্যবহার। আসলে কিন্তু তা নয়। এটি সনাতন ধর্ম সৃষ্টিলগ্ন থেকেই। যেমন: সনাতন ধর্মের ৩৩ প্রকারের দেবদেবীর নামের পূর্বেও ‘শ্রী’ শব্দটি অন্তত দুইবার “শ্রীশ্রী” ব্যবহার করা হয়। ‘শ্রী’ শব্দটি তিনটি অক্ষরে গঠিত। এটি সংস্কৃত ভাষার সবচেয়ে ছোট শ্লোক।
আবার হিন্দু ধর্মমতে বিশেষভাবে লক্ষীদেবী এবং সরস্বতী দেবীকে ‘শ্রী’ সম্মোধন করা হয়। এছাড়াও বাংলাতে ঐশ্বর্য, সৌভাগ্য, সৌন্দর্য এবং রূপ-লাবণ্যকেও ‘শ্রী’ বলে। অর্থাৎ নামের আগে ‘শ্রী’ লেখার অর্থ আপনি উপরোক্ত বিশেষণে ভূষিত। ‘শ্রী’ সম্মানের প্রতীক। ‘শ্রী’ সুন্দরের প্রতীক। অন্যার্থে আপনি উপরোক্ত অর্থে শ্রীযুক্ত হোন বলে আশীর্বাদ। শ্রদ্ধা এবং ভক্তি প্রকাশের জন্যও নামের পূর্বে ‘শ্রী’ যুক্ত করা হয়।
তবে অনেক বিখ্যাত পণ্ডিতগণ মনে করে থাকেন যে, ‘শ্রী’ লেখা কোনও শাস্ত্রীয় বিধান নয়। ধর্ম চিহ্নও নয়। বরং দেবদেবীদের নামের পূর্বে “শ্রীশ্রী” থেকে প্রাচীন যুগ থেকেই হিন্দু সমাজে এই ‘শ্রী’ ব্যবহার প্রচলিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ মনে করে থাকেন সংস্কৃত থেকে আগত বলেই ‘শ্রী’ শব্দটি হিন্দু সমাজে ব্যবহৃত।
অভিধান ঘেঁটে দেখা যায়, নামের আগে ব্যবহৃত ‘শ্রী’ মূলত ‘শ্রীযুক্ত, শ্রীযুত, শ্রীল এগুলোর সংক্ষিপ্ত রূপ। যেমন: “শ্রীযুক্ত, শ্রীযুত-বিণ. সৌভাগ্যযুক্ত, মহাশয় (মান্য পুরুষের নামের পূর্বে প্রযুক্ত)। শ্রী-বিণ. সৌভাগ্যবান, লক্ষ্মীমন্ত (বিশেষত মান্য পুরুষের নামের পূর্বে প্রযুক্ত)। শ্রীমান-বিণ. 1 সুন্দর, ক্লান্তিময়; 2 সৌভাগ্যশালী; 3 লক্ষ্মীমন্ত”। এতেই বোঝা যায় যে নামের পূর্বে ‘শ্রী’ মানে সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলেই শোভিত হোন। সৌভাগ্যবান হোন।
এজন্যই সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলে নিজ নামের পূর্বে সম্মানসূচক সম্মোধন বিশেষ ‘শ্রী’ ব্যবহার কর থাকে।নিজের নাম স্বাক্ষরের পূর্বে ‘শ্রী’ লেখা সঙ্গত। কারণ ‘শ্রী’ কেবল জীবিত ব্যক্তির নামের পূর্বেই বসে। যে ব্যক্তি নিজেই স্বাক্ষর করবে, সে তার নামের জীবদ্দশায় সহি করেছে এটা তার প্রমাণ হবে।
সর্বে ভবস্ত্ সুখিনঃ সর্বে সন্ত নিরাময়াঃ।
সর্বে ভদ্রাণি পশ্যন্ত, মা কশ্চিদ দুঃখভাগ্ ভবেৎ।।
সকলেই সুখী হোক, সকলেই নিরাময় থাকুক।
সকলের মঙ্গল হোক, কেউ যেন দুঃখ ভোগ না করে।
সোর্স: উইকিপিডিয়া ও বাংলা পঞ্জিকা নিবেদিত। ইষত পরিমার্জিত সংশোধিত।
যেসব কারণে সনাতন ধর্মে মুখাগ্নি করা হয়!
মুখাগ্নি বা অন্ত্যোষ্টি বা অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া হলো, জীবনের শেষ যজ্ঞ। অন্ত+ইষ্টি=অন্ত্যোষ্টি বা অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া। অন্ত মানে শেষ আর ইষ্টি মানে যজ্ঞ আর ক্রিয়া মানে কার্য। আমরা জানি আমাদের সুপ্রাচীন পূর্বপুরুষদের বৈদিক সমাজ ছিল যজ্ঞপ্রধান সমাজ। জীবনের শুরু থেকে শেষাবধি সবই হতো যজ্ঞের মাধ্যমে ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে। অশ্বমেধ যজ্ঞ, অগ্নিহোত্র যজ্ঞ ইত্যাদি যজ্ঞে ইশ্বরের উদ্দেশ্য হবি উৎসর্গ করা হতো।
এ হলো ঈশ্বরের দেয়া জীবন ও দেহ দ্বারা ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রকৃতির উপাদান সমুহ ভোগ করার প্রেক্ষিতে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তার উপাসনা করা। তাই অন্ত্যোষ্টি তথা জীবনের শেষ যজ্ঞে ঈশ্বর প্রদত্ত দেহ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই হবি রূপে উৎসর্গ করা। এটা সত্যিই একটা চমৎকার ব্যাপার!
কথায় আছে ও সবারই জানা আছে যে, “জন্মিলে মরিতে হয়” এ কথা ধ্রুব সত্য। এটা আমরা অস্বীকার করতে পারি না। এ পৃথিবীতে যে কয়টি ধ্রুব সত্য আছে তারমধ্যে অন্যতম সত্য হলো প্রাণী বা জীবের মৃত্যু। যে প্রাণী জন্মগ্রহণ করবে, প্রকৃতির নিয়মানুযায়ী তাকে একসময় মরতেই হবে। অর্থাৎ দেহ ত্যাগ করতে হবে।
এই দেহ ত্যাগের জন্য সনাতন ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করে যে, মানুষ মৃত্যুর পর স্বর্গবাসী হয়। অর্থাৎ দেবলোকে যায়। কিন্তু, তিনি স্বর্গে বা দেবলোকে যাবেন কীভাবে?
বৈদিক নিয়মানুসারে দেবলোকে বা স্বর্গলোকে পাঠাতে হলে দেবতাদের পুরোহিত অগ্নিতে আহুতি দিতে হয়। অগ্নিদেবই সে অর্চনা বা আহুতি দেবলোকে নিয়ে যান। কাজেই যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন বা দেহ ত্যাগ করেছেন তার প্রাণবায়ু অগ্নিদেবকে আহুতি না দিলে তিনি কি করে স্বর্গবাসী হবেন? প্রাণবায়ু মুখ দিয়ে বের হয় বলে মুখে অগ্নিসংযোগ করে মন্ত্রপাঠ করতে হতে হয়।
“ওঁ কৃত্বা তু দুষ্কৃতং কর্মং জানতা বাপ্য জানতা।
মৃত্যুকাল বশং প্রাপ্য নরং পঞ্চত্বমাগতম্
ধর্মাধর্ম সমাযুক্তং লোভ মোহ সমাবৃতম্
দহেয়ং সর্বগাত্রানি দিব্যান্ লোকন্ স গচ্ছাতু”
(ক্রিয়াকান্ড বারিধি)
অনুবাদ: তিনি জেনে বা না জেনে অনেক দুষ্কর্ম করে থাকতে পারেন। কালবশে মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। এ দেহ ধর্ম, অধর্ম্, লোভ, মোহ প্রভৃতি দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। হে অগ্নিদেব, আপনি তার সকল দেহ দগ্ধ করে দিব্যলোকে নিয়ে যান।
সনাতন ধর্মাবলম্বী কেউ মৃত্যুবরণ করলে মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। যা সনাতন ধর্মে বলা হয় শবদাহ। এর আধ্যাত্মিক কারণ হলো: সনাতন ধর্মের অনুসারীরা পুনর্জন্মে বিশ্বাসী। এই ত্রিতাপদগ্ধ সংসারে পুনরায় জন্মগ্রহণ করে মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করুক এটা কেউ চায় না।
যে দেহে তিনি এতদিন বাস করেছেন, তাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন, পৃথিবীর যাবতীয় সুখের স্বাদ তাকে দিয়েছেন, ঐ দেহের প্রতি আকর্ষণ ও মায়া থাকা স্বাভাবিক। মনে করা হয় মৃতব্যক্তি তার দেহের প্রতি আকর্ষণে পুনঃ দেহ ধারণে তার আকাঙ্ক্ষা জাগতে পারে। তাই ঐ আকাঙ্ক্ষা দূর করার উদ্দেশেই আকর্ষণের বস্তু দেহটাকে পোড়ানো হয়।
সামাজিক কারণ: আর্য ঋষিদের ভবিষ্যৎ চিন্তা এতে প্রতিফলিত হয়েছে। মানুষ সৃষ্টি হবে এবং এমন একদিন আসতে পারে যখন স্থানাভাব দেখা দেবে। মানুষের দেহ না পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে রেখে দিলে ক্রমশ মাটিতে রাখার জায়গার অভাব দেখা দিতে পারে। আবার মানুষ মরণশীল। যেকোনো একভাবে না একভাবে মানুষকে মরতে হয়। এরমধ্যে বেশিরভাগ মৃত্যু হয় রোগে। এইসকল রোগব্যাধিতে মরা মরদেহ মাটিতে পচন ধরলে পরিবেশের উপর বিভিন্ন রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব চিন্তা মাথায় রেখেই হয়তো আর্য ঋষিগণ শবদেহ পোড়াবার বিধি দিয়েছেন।
পরিশেষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জেনে রাখা ভালো:
পুরুষের মৃত্যু সংবাদ শ্রবণে বলুন– “দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছাতু”।
কোনও নারীর মৃত্য সংবাদ শ্রবণে বলুন– “দিব্যান্ লোকান্ সা গচ্ছাতু”।
সোর্স: sonatonvabona
অমীমাংসিত
আজ বিকেলে নামিরার সাথে দেখা হবে। নামিরার সবচেয়ে বড় অভিযোগ আমি তাকে কখনো ফুল কিনে দিই না। দিই না ব্যপারটা একেবারে সেরকম না। যতবার ফুল কিনে দিই, নামিরা বলার পরে দিই। আগে থেকে কিনে নেয়ার কথা আমার মনে থাকে না। নামিরা বলে, নিজে থেকে কিনে না দিলে ফুলের কোন মান থাকে না। এই নিয়ে ছোট বড় মাঝারি সব ধরনে ঝগড়া হয়ে গেছে। আমি আগের মতই আছি। যাচ্ছিলাম চেরাগী পাহাড় থেকে নিউমার্কেটের দিকে। নজরুল স্কোয়ার আসতেই মনে হল চেরাগী পাহাড়ের ওখান থেকে তো ফুল কিনতে পারতাম।
রাস্তা ফাঁকা শুক্রবার দুপুরের রাস্তা। জুম্মার নামাজের পর রাস্তা আরো বেশি ফাঁকা থাকে। সুতরাং ঘুরে গিয়ে ফুল কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ইউ টার্ন নেয়ার জন্য গাড়ি স্লো করেছি, কোত্থেকে এক লোক উদয় হয়ে বাঁ পাশের লুকিং গ্লাস টা কট করে ভেঙে নিল। গ্লাস চোরেরা গ্লাস ভাংগাকে মোটামুটি শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এই নিয়ে তৃতীয় বার গাড়ির গ্লাস ভাঙল। আগের দুইবার ছিল অগোচরে। একবার নিউ মার্কেটে পাঁচ মিনিটের জন্য গাড়িটা রেখে ভেতরে গেছি আর আসছি, এসেই দেখি লুকিং গ্লাস টা নাই। পরের বার চকবাজারে। কিছুই করার নেই পকেটের গচ্ছা দেয়া ছাড়া। কিন্তু এইবার শালারে পাইছি সামনে। হার্ড ব্রেক কষে যখন নামলাম তখনো দেখি লোকটা দাঁড়িয়ে আছে। এই ক্ষেত্রে সাধারনত যা হয় নিমিষেই তারা পগার পার হয়ে যায় ( এই পগার পারটা কোথায়, তা অবশ্য আমি জানিনা)। এই রকম হাবলার মত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমিও যেন কিংকর্তব্যবিমূড় হয়ে গেলাম। সে দৌড় দিলে আমিও পিছু পিছু দৌড় দিয়ে তাকে ধরতাম, কিন্তু যেভাবে দাঁড়িয়ে আছে তাতে কি করি! নিজেকে সামলে নিয়ে কলার চেপে ধরে টেনে হিঁচড়ে এনে গাড়িতে ঢোকালাম। সে বেশ নির্বিকার। গাড়িতে ঢোকানোর সময় বা টেনে আনার সময় কোন বাধা দেয়নি। গাড়িতে এমন ভাবে বসল যেন তাকে আমি লিফট দিচ্ছি। লোকটার দিকে ভালকরে তাকালাম এবার। টেকো মাথা। ভদ্র চেহারা, নাকের আগায় একটা দাগ আছে। খোঁচা খোঁচা তিন চার দিনের দাঁড়ি। গায়ে ফতুয়া। বুকের বোতাম খোলা। কিন্তু তার ভাবভঙ্গিতে মনে হচ্ছে যেন কিছুই হয় নি।
বনিকে ফোন দিয়ে বললাম, “তাড়াতাড়ি আমাদের বাসার গেটে আয়, সাথে বিটুকেও নিয়ে আয়।” আমাদের যাবতীয় কর্মকান্ডের অপারেশন মাস্টার বিটু। শুক্রবারের রাস্তা, সুতরাং নিমিষেই নিয়ে বাসার গেটে পৌঁছে গেলাম। বনি আর বিটু রেডিই ছিল, ‘ব্যাপার কি?’
সংক্ষেপে বললাম, ব্যাপার কি। বিটু বলল, মামাকে ছাদে নিয়ে চল। কিন্তু লোকটা এখনো নির্বিকার। চেহারার দিকে তাকালে মনে হয় যে আমাদের কর্মকান্ডে সে বেশ মজা পাচ্ছে। বনি তাকে কলার চেপে ধরে টানতে টানতে গাড়ি থেকে নামাল। দুগালে ঠাস ঠাস কয়েকটা বসিয়ে দিল। আমি বললাম, এখন থাক। ছাদে নিয়ে চল।
বনি আর বিটুর পরিকল্পনা হল ছাদে মুখ বেঁধে আচ্ছা মত বানানো। এর আগেও এ ধরনের অপারেশন আমরা ছাদেই করেছি। আমরা বলতে আসলে বনি আর বিটুই। মারামারি করার মত অত বেশি সাহস আমার নেই। অপারেশন আসলে বনি আর বিটুর। তারা মারামারি করে ঈদের আনন্দ পায়। শিকার ধরে এনে দিয়েছি আমার কাজ শেষ। সত্যি বলতে আমি যে ধরে আনতে পেরেছি এটাই বেশ। ছাদের নেয়ার জন্য কোন জোরজারি করা লাগেনি। নিজের মত স্বচ্ছন্দে ছাদে উঠে গেল।
ছাদে এসে লোকটা লুকিং গ্লাসটা খাওয়া শুরু করল। আমরা যেভাবে বার্গার খাই ঠিক সেভাবে। খাওয়ার সময় মুড়ি খাওয়ার মত কুড়মুড় আওয়াজ হচ্ছিল। খাওয়া শেষে লোকটা বলল, একটু পানি খাওয়ান। গলায় আটকে গেছে মনে হয়। আপনারা যেভাবে তাকিয়ে ছিলেন, নজর লাগছে কিনা কে জানে। বিটু মারবে কি, নিজেই গিয়ে একগ্লাস পানি নিয়ে এল। পানি খেয়ে লোকটা বলল, বাথরুমে যাব। বাথরুমে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন, প্লিজ। আমি বাসায় বাথরুমে নিয়ে গেলাম। এতক্ষন পরে বনি বলল, জিনিস একখান। ওস্তাদ আদমি। কওয়া দরকার ফ্লাশ যাতে না করে। গ্লাস খাওয়ার পরে হাগামুতা কেমন হয় তা দেখা দরকার। তার কথাতে আমরা কেন জানি কেউই হাসলাম না।
এই দিকে নামিরা ফোন দিচ্ছে বারবার। আমি বের হলে সে রেডি হবে। বার বার শাসাচ্ছে দেরি করলে ফাইনাল বোঝাপোড়া হবে আজকে। বিটু আমাকে ধমক দিল, হারামজাদা! এইসময় পিরীতি না করলে হয় না! কিন্তু বনির ওস্তাদ আদমির তো বাথরুম থেকে বের হওয়ার কোন নাম নাই। আমরা ডাকাডাকি করলাম, ধরজা ধাক্কা দিলাম। কোন সাড়া নাই। শেষে মিস্ত্রী ডেকে দরজা ভাঙলাম।
দরজা ভেঙে দেখি ভিতরে কেউ নাই। কেউ ছিল, সে চিহ্নও নাই।
-০-
প্রিয় পাঠক, পেন্সিলে পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত আমার গল্পগ্রন্থ প্রত্যুষের গল্প পাওয়া যাচ্ছে রকমারি ডটকম এ https://www.rokomari.com/book/210151/prottusher-gollpo । অন্যান্য অনলাইন বুক শপেও পাবেন।
কোভিড ১৯
কোভিডের উচ্ছাস
বিশ্ব বাসির নাভিশ্বাস।
ভয় আর ত্রাস করাল গ্রাস
দীগ্বি জয়ীরাও আজ হচ্ছে লাশ।
সাফ সাফাই কারসাজ
মাস্কের মারকাজ।
কোয়ারান্টাইনের আবাস
পক্ষকালের কারাবাস।
লক ডাউনের সারকাস
নিম্ন বিত্তের দীঘ শ্বাস।
ত্রাণের মারপ্যচে
জীবন রূদ্ধ শ্বাস।
আই সি ইউর কেবিনে
রোগীদের হাস ফাস
অক্সিজেনের অভাবে
বন্ধ নিশ্বাস।
নিকট জনের রোণাজারি
মানবতার আহাজারি।
কেউ নেই কাছে
সবার উদ্ধশ্বাস।
জীবনের সাতপাক
ফিরে গেলে খালি হাত।
পরপারে যাত্রীর রূদ্ধ পথ
কঠিন কেয়ামত।
সৃষ্ট করোনার যত
বহুরূপী অভিলাষ।
স্রষ্টার অসীম ক্ষমতা
ফেরাতে পরবাস।
করোনাকে নয় ভয়
চেতনায় বিশ্বাস।
এপার মিলবে দয়া
ওপারে বিলাবে আশ্বাস।
সম্পর্কের বৈপরীত্য
চরিত্রের বৈপরীত্য দেখেছ?
ব্যবহারের?
সম্পর্কের?
সংসারের?
মানুষের?
বৈপরীত্যগুলো খুব প্রকট
বিশেষ করে একান্নবর্তী পরিবারে
বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে
কার কার চরিত্রের বৈপরীত্যের কথা বলব?
চরিত্রের বৈপরীত্য কখন থেকে শুরু হয় জানো?
যখন স্বার্থ নখদন্ত বিকশিত করে ফেলে
যখন সম্পত্তির ভাগাভাগি সম্পর্ক ভাগ করে
যখন বাবা-মায়ের ভাগাভাগি সন্তানদের মাঝে;
শাশুড়ি বৌ এর কীর্তন শুনেছ!
সে তো ঘরে ঘরে,
আমি সর্বংসহা শাশুড়ি দেখেছি এক ঘরে
সর্বংসহা বৌ দেখেছি ঠিক পাশের ঘরে,
আমি অত্যাচারী ভাবী দেখেছি এই ঘরে
ননদদের অত্যাচার দেখেছি ঐ ঘরে,
শাশুড়ি-বৌ আর ননদ-ভাবীর রামায়ণ ঘরে ঘরে
রামায়ণই মহাভারত হয়ে যায় দেবর ভাসুর যোগ হলে
ওরা তো যার যার সংসারে নীরব হয়েই রয়!
ভাইটা নরম হয়েছে তো ভাই বৌ এর সাথে যত ঘেউ ঘেউ কয়,
বৈপরীত্য সম্পর্কে সম্পর্কে
বৈপরীত্য একান্নবর্তী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে;
বাবা-স্বামী আর ছেলেরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দর্শক মাত্র
অথবা বার্গারের অসহায় চীজ
কিংবা স্যান্ডউইচ এর মেয়নিজ,
বাবা! উনিও তো ছিলেন একসময় স্বামী!
শাশুড়ি বৌ এর কীর্তন! মনে মনে হেসে বলেন খুব ভালো জানি
কীর্তন শুরু হলেই জায়নামাজ বিছিয়ে রয়
আর নয় তো কোথাও থেকে ঘুরে আসে যতক্ষণ ঝড় বয়
জানে থেমে যাবে যথা সময়,
স্বামী! ও তো মা বোনের কাছে স্ত্রৈণ খেতাব পাওয়া প্রাণী
বৌ এর কাছে? মা বোনই তো তোমার সব, খুব জানি!
ছেলে সন্তানগুলো! কুরুক্ষেত্র দেখতে দেখতে অভ্যস্ত
আর নয়তো চরম হতাশাগ্রস্ত হতে হতে নেশাগ্রস্ত,
মেয়েগুলোই মায়ের পক্ষ নেয়
খুব বেশি কুলোতে পারে না দাদী ফুপুদের তোড়ে
তবু প্রায়শই ওদের সাথে গলা চড়া করে চেঁচায় সমস্বরে,
বৈপরীত্য সম্পর্কে সম্পর্কে
বৈপরীত্য একান্নবর্তী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে।
.
২০ এপ্রিল, ২০২১
হামিদ সাহেব
স্ত্রীর নানারকম কটুবাক্য, গালাগালি, নির্যাতন সহ্য করিতে না পারিয়া হামিদ সাহেব গৃহ ত্যাগ করিলেন। সারাদিন শুধু ফোঁস ফোঁস ঘুম আর ঘুম সংসারের একতা কাজও তাকে দিয়ে করার উপায় নাই, যাবে কোথায় যাক। রাত হলেই সুরুসুর করে এসে হাজির হবে।
না, ঘন্টা, রা্ত, দিন, সপ্তাহ পেরিয়ে যাবার পরেও যখন হামিদ সাহেবের প্রত্যাবর্তনের কোন চিহ্ন দেখা গেলনা তখন গিন্নী অবলা বেগম মনে মনে কিঞ্চিত আতঙ্গকগ্রস্ত হইল বটে; শত হইলেও স্বামী কিনা। কতক্ষণ রাগ করিয়া থাকা যায়। চারিদিকে ঢাক ঢোল পিটাইয়া ঘোষনা করাইয়া দিল ৪০ উর্ধ্ব হালকা পাতলা গড়নের ফর্সা গায়ের রঙ্গের হামিদ সাহেব নিখোঁজ, যে তাহার খবর দিতে পারিবে তাহাকে পুরস্কৃত করা হবে।
চতুর্দিক হইতে যে যাকে পায় তারই মাজায় কিংবা হাতে রশি বাধিয়া টানিতে টানিতে হামিদ গিন্নীর দরজায় কড়া নাড়ে। হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে এইতো দেখেন। ওমা বলে কি? ইনি হামিদ সাহেব নন। যান যান আসল মানুষকে খুঁজিয়া আনুন।
পরেরদিন এক লোক সত্যি সত্যি ইয়া গোঁফ আর ভুড়ি সজ্জিত গায়ে গতরে বিশাল বপুর হাফ প্যান্ট পরা সারা গায়ে কালিঝুলি মাখানো এক লোককে আনিয়া দরজায় কড়া নাড়তে হামিদ সাহেবের ছোট ছেলে দরজা খুলিয়া জিজ্ঞাসা করিল কি চাই। আগন্তুক রশির এক প্রান্ত বালকের দিকে আগাইয়া দিয়া কহিল এই যে বাবা হামিদ সাহেবকে অনেক কষ্ট করিয়া ধরিয়া আনিয়াছি নাও ধর।
দাঁড়ান আমি মাকে ডাকিয়া আনিতেছি। বালক ভিতর বাটিতে গিয়া আনন্দ সহকারে মাকে কহিল মা শীঘ্র আইস হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে। মা পুলকিত চিত্তে দরজায় আসিয়া এই বপু দেখিয়া হতভম্ভ হইয়া পুত্রের কান ধরিয়া গালে এক চপেটাঘাত করিয়া কহিল হারামজাদা নিজের বাপকেও চিনিস না?
এমন বৃষ্টি রৌদ্রময়
অনেক দিন আগেকার এক বাণী
আমি জানি
আসে নীরবতা ঝড়ের আগে
সল্প সময়ের তরে, সবেগে
তারপর ঢল নামে, তখন তোমরা বলো
রোদমাখা দিন বৃষ্টি হয়ে এলো
রিনিঝিনি
আমি জানি।
তুমি কি দেখেছো বৃষ্টি ঝরে এমন অঝোরে
উজ্জ্বলতা নেমে আসে , জলে ভর করে?
আমি জানতে চাই, তুমি কি কখনও দেখেছো বৃষ্টি
রূপ নেয় রৌদ্রময় দিনে?
গতকাল, এবং গত পরশু
সূর্য শীতল হয় এবং বৃষ্টি কঠিনে?
গতকাল, এবং গত পরশু দিনে
সূর্য শীতল হয় এবং বৃষ্টি কঠিনে
আমি জানি
এভাবেই চলে আমার সময়, মানি
এভাবে চলে যায় হয়ে বৃত্তে বন্দি
এভাবে হয় গতি আর স্থবিরতায় সন্ধি
আমি থামাতে পারি না, থাকে কেবল বিস্ময়
তুমি কি দেখেছো এমন বৃষ্টি রৌদ্রময়!