বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

কোভিড ১৯

images

কোভিডের উচ্ছাস
বিশ্ব বাসির নাভিশ্বাস।
ভয় আর ত্রাস করাল গ্রাস
দীগ্বি জয়ীরাও আজ হচ্ছে লাশ।

সাফ সাফাই কারসাজ
মাস্কের মারকাজ।
কোয়ারান্টাইনের আবাস
পক্ষকালের কারাবাস।

লক ডাউনের সারকাস
নিম্ন বিত্তের দীঘ শ্বাস।
ত্রাণের মারপ্যচে
জীবন রূদ্ধ শ্বাস।

আই সি ইউর কেবিনে
রোগীদের হাস ফাস
অক্সিজেনের অভাবে
বন্ধ নিশ্বাস।

নিকট জনের রোণাজারি
মানবতার আহাজারি।
কেউ নেই কাছে
সবার উদ্ধশ্বাস।

জীবনের সাতপাক
ফিরে গেলে খালি হাত।
পরপারে যাত্রীর রূদ্ধ পথ
কঠিন কেয়ামত।

সৃষ্ট করোনার যত
বহুরূপী অভিলাষ।
স্রষ্টার অসীম ক্ষমতা
ফেরাতে পরবাস।

করোনাকে নয় ভয়
চেতনায় বিশ্বাস।
এপার মিলবে দয়া
ওপারে বিলাবে আশ্বাস।

সম্পর্কের বৈপরীত্য

gyuio

চরিত্রের বৈপরীত্য দেখেছ?
ব্যবহারের?
সম্পর্কের?
সংসারের?
মানুষের?

বৈপরীত্যগুলো খুব প্রকট
বিশেষ করে একান্নবর্তী পরিবারে
বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে
কার কার চরিত্রের বৈপরীত্যের কথা বলব?

চরিত্রের বৈপরীত্য কখন থেকে শুরু হয় জানো?
যখন স্বার্থ নখদন্ত বিকশিত করে ফেলে
যখন সম্পত্তির ভাগাভাগি সম্পর্ক ভাগ করে
যখন বাবা-মায়ের ভাগাভাগি সন্তানদের মাঝে;

শাশুড়ি বৌ এর কীর্তন শুনেছ!
সে তো ঘরে ঘরে,
আমি সর্বংসহা শাশুড়ি দেখেছি এক ঘরে
সর্বংসহা বৌ দেখেছি ঠিক পাশের ঘরে,
আমি অত্যাচারী ভাবী দেখেছি এই ঘরে
ননদদের অত্যাচার দেখেছি ঐ ঘরে,
শাশুড়ি-বৌ আর ননদ-ভাবীর রামায়ণ ঘরে ঘরে
রামায়ণই মহাভারত হয়ে যায় দেবর ভাসুর যোগ হলে
ওরা তো যার যার সংসারে নীরব হয়েই রয়!
ভাইটা নরম হয়েছে তো ভাই বৌ এর সাথে যত ঘেউ ঘেউ কয়,
বৈপরীত্য সম্পর্কে সম্পর্কে
বৈপরীত্য একান্নবর্তী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে;

বাবা-স্বামী আর ছেলেরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দর্শক মাত্র
অথবা বার্গারের অসহায় চীজ
কিংবা স্যান্ডউইচ এর মেয়নিজ,
বাবা! উনিও তো ছিলেন একসময় স্বামী!
শাশুড়ি বৌ এর কীর্তন! মনে মনে হেসে বলেন খুব ভালো জানি
কীর্তন শুরু হলেই জায়নামাজ বিছিয়ে রয়
আর নয় তো কোথাও থেকে ঘুরে আসে যতক্ষণ ঝড় বয়
জানে থেমে যাবে যথা সময়,
স্বামী! ও তো মা বোনের কাছে স্ত্রৈণ খেতাব পাওয়া প্রাণী
বৌ এর কাছে? মা বোনই তো তোমার সব, খুব জানি!
ছেলে সন্তানগুলো! কুরুক্ষেত্র দেখতে দেখতে অভ্যস্ত
আর নয়তো চরম হতাশাগ্রস্ত হতে হতে নেশাগ্রস্ত,
মেয়েগুলোই মায়ের পক্ষ নেয়
খুব বেশি কুলোতে পারে না দাদী ফুপুদের তোড়ে
তবু প্রায়শই ওদের সাথে গলা চড়া করে চেঁচায় সমস্বরে,
বৈপরীত্য সম্পর্কে সম্পর্কে
বৈপরীত্য একান্নবর্তী পরিবারগুলোর ঘরে ঘরে।

.
২০ এপ্রিল, ২০২১

হামিদ সাহেব

angry-wife-2

স্ত্রীর নানারকম কটুবাক্য, গালাগালি, নির্যাতন সহ্য করিতে না পারিয়া হামিদ সাহেব গৃহ ত্যাগ করিলেন। সারাদিন শুধু ফোঁস ফোঁস ঘুম আর ঘুম সংসারের একতা কাজও তাকে দিয়ে করার উপায় নাই, যাবে কোথায় যাক। রাত হলেই সুরুসুর করে এসে হাজির হবে।

না, ঘন্টা, রা্ত, দিন, সপ্তাহ পেরিয়ে যাবার পরেও যখন হামিদ সাহেবের প্রত্যাবর্তনের কোন চিহ্ন দেখা গেলনা তখন গিন্নী অবলা বেগম মনে মনে কিঞ্চিত আতঙ্গকগ্রস্ত হইল বটে; শত হইলেও স্বামী কিনা। কতক্ষণ রাগ করিয়া থাকা যায়। চারিদিকে ঢাক ঢোল পিটাইয়া ঘোষনা করাইয়া দিল ৪০ উর্ধ্ব হালকা পাতলা গড়নের ফর্সা গায়ের রঙ্গের হামিদ সাহেব নিখোঁজ, যে তাহার খবর দিতে পারিবে তাহাকে পুরস্কৃত করা হবে।

চতুর্দিক হইতে যে যাকে পায় তারই মাজায় কিংবা হাতে রশি বাধিয়া টানিতে টানিতে হামিদ গিন্নীর দরজায় কড়া নাড়ে। হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে এইতো দেখেন। ওমা বলে কি? ইনি হামিদ সাহেব নন। যান যান আসল মানুষকে খুঁজিয়া আনুন।

পরেরদিন এক লোক সত্যি সত্যি ইয়া গোঁফ আর ভুড়ি সজ্জিত গায়ে গতরে বিশাল বপুর হাফ প্যান্ট পরা সারা গায়ে কালিঝুলি মাখানো এক লোককে আনিয়া দরজায় কড়া নাড়তে হামিদ সাহেবের ছোট ছেলে দরজা খুলিয়া জিজ্ঞাসা করিল কি চাই। আগন্তুক রশির এক প্রান্ত বালকের দিকে আগাইয়া দিয়া কহিল এই যে বাবা হামিদ সাহেবকে অনেক কষ্ট করিয়া ধরিয়া আনিয়াছি নাও ধর।

দাঁড়ান আমি মাকে ডাকিয়া আনিতেছি। বালক ভিতর বাটিতে গিয়া আনন্দ সহকারে মাকে কহিল মা শীঘ্র আইস হামিদ সাহেবকে পাওয়া গিয়াছে। মা পুলকিত চিত্তে দরজায় আসিয়া এই বপু দেখিয়া হতভম্ভ হইয়া পুত্রের কান ধরিয়া গালে এক চপেটাঘাত করিয়া কহিল হারামজাদা নিজের বাপকেও চিনিস না?

এমন বৃষ্টি রৌদ্রময়

অনেক দিন আগেকার এক বাণী
আমি জানি
আসে নীরবতা ঝড়ের আগে
সল্প সময়ের তরে, সবেগে
তারপর ঢল নামে, তখন তোমরা বলো
রোদমাখা দিন বৃষ্টি হয়ে এলো
রিনিঝিনি
আমি জানি।

তুমি কি দেখেছো বৃষ্টি ঝরে এমন অঝোরে
উজ্জ্বলতা নেমে আসে , জলে ভর করে?
আমি জানতে চাই, তুমি কি কখনও দেখেছো বৃষ্টি
রূপ নেয় রৌদ্রময় দিনে?
গতকাল, এবং গত পরশু
সূর্য শীতল হয় এবং বৃষ্টি কঠিনে?

গতকাল, এবং গত পরশু দিনে
সূর্য শীতল হয় এবং বৃষ্টি কঠিনে
আমি জানি
এভাবেই চলে আমার সময়, মানি
এভাবে চলে যায় হয়ে বৃত্তে বন্দি
এভাবে হয় গতি আর স্থবিরতায় সন্ধি
আমি থামাতে পারি না, থাকে কেবল বিস্ময়
তুমি কি দেখেছো এমন বৃষ্টি রৌদ্রময়!

রূপান্তরিত লাশ

পৃথিবী এক ফাঁদ চক্র- কারো মুক্তি নেই। মৃত্যু কিছু নয়, রূপান্তর প্রণালীসম্মত বিজ্ঞান। প্রতিটি জন্ম পৃথিবীকে মুখর করে, মৃত্যু উর্বর করে। শরীরের সব রস শুষে পুষ্ট হয় মৃত্তিকার প্রাণ, বেড়ে ওঠে বৃক্ষ, পুষ্পে ও পত্রে, শস্যে শস্যে।

মাটির রস বাষ্প হয়, মিশে হাওয়ায় হাওয়ায়। আকাশে জমে মেঘ- মেঘে মেঘে গর্জায় বজ্রসর্প, বৃষ্টি ঝরে টাপুর টুপুর, বৃষ্টি ঝরে ইলশেগুঁড়ি, বৃষ্টি ঝরে মুষলধারায়- নদী ও সমুদ্রে, ঢেউ হতে ঢেউয়ে, সমতল হতে পাহাড়ে পাহাডে। বৃষ্টিতে অঙ্কুরিত শ্যামলে সবুজ। বর্ষণে উদ্দীপিত স্রোতে প্লাবিত ভূমি- পললে পললে শস্যের সুপ্ত উদ্ভাস।

ফাঁদ চক্রে বন্দী মানুষ আত্নায় শোনে আকাশের ডাক, সমুদ্রের আহ্বান, শস্যের গান, অনুভব করে নদীর চোরাটান ও নক্ষত্রের সুর- মূলত এসব নিয়েই মানুষ।

প্রিয় রাপুনজেল, এসব কথা থাক, তোমার চুলের উজ্জ্বলতায় যে হাওয়া দোল খায়, সবুজ পাতায় মর্মরিত হয়, ভোরের প্রথম আলোয় শিশিরের বিষন্নতা নিয়ে জেগে ওঠে ঘাস, জেনো ওতে মিশে আছি আমি, আমার সকল জন্মের রূপান্তরিত লাশ।

#অকবিতা

স্বপ্নের ভালোবাসা

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
একরাশ জনতার মাঝে
একটি সুগন্ধি ফুল হাতে
একদিন বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
কোন এক শরৎ পূর্ণিমাতে
তুষার শুভ্র মুকুটধারী হিমাদ্রিকে
সাক্ষী রেখে বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
সুরের মুর্ছনায় প্রাণবন্ত রেস্তোরাঁর
আলো আঁধারি কক্ষে
আমার হাতে হাত রেখে
ফিসফিসিয়ে বলবে,” ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
হঠাৎ কোন বর্ষণমুখর সন্ধ্যায়
মেঘের গর্জনে ভীত আমাকে
বুকে জড়িয়ে বলবে, “ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন..
নক্ষত্রময় রাতে নিস্তব্ধ বালুকা বেলায়
কপালে উষ্ণ চুম্বন এঁকে দিয়ে
চিৎকার করে বলবে,”ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন
সকল অপূর্ণতাকে তুচ্ছ করে
নির্ঘুম রাতের অশ্রু মুছে
চাপাস্বরে বলবে, ” ভালোবাসি তোমাকে”।

স্বপ্ন ছিল কেউ একজন
ভালবাসবে চিরন্তন।

যাপিত জীবন দেশ বিদেশ -২

*** কোভিড ভ্যাক্সিন

গতকাল কোভিড ভেক্সিন নিতে গেলাম। আমি একটা ইভেন্টস এর সাথে মাঝে মাঝে কাজ করি। ইভেন্টস এর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য ফ্রী ভ্যাক্সিন প্লাস চার ঘন্টার পেমেন্ট দেয়া হবে। যাই হোক গেলাম ভ্যাক্সিন নিতে। প্রথমে আমাদের বিশাল এক হলরুমে অনেকটা অডিটোরিয়ামের মতো সেখানে বসানো হলো। প্রতিটা রোতে চারজন করে বসা। কিছুক্ষণ পরে ডাকা হলো আমাদের চারজনকে।

কিউ তে অপেক্ষা করে আমাদের সবার সব ধরনের ইনফরমেশন নেয়া হলো। এরপর যেতে হলো আর একটা রুমে। সেখানে আর একজনের সাথে বৈঠক। যেমন আমাকে বলা হলো ৮ নাম্বারে যাও। সেখানে একজন বসে আছেন যিনি আমার সব ইনফরমেশন ঠিক আছে কিনা সেগুলা চেক করে পাঠানো হলো আর এক রুমে। এবার সময় হয়েছে ভ্যাকসিন নেবার।
নার্স মহিলা বললেন রিলাক্স। ভয় পেয়োনা।
ভয় পেলাম না। কাজ সারা হলে এরপর আর এক রুমে যেয়ে আরো অনেকের সাথে বসতে হলো। সেখানে প্রত্যেকে ২.৫ মিটার দূরত্বে বসে আছে। টিভির হালকা মিউজিকের শব্দ ছাড়া এতোগুলা মানুষের একটা শব্দও নাই। যেনো পিন পতন নিরবতা নেমেছে সেখানে। আধা ঘন্টা পরে সেখানে অবজার্ভ করছিলেন যে মহিলা উনি জিজ্ঞেস করলেন কোনো সমস্যা ফিল করছো না তো! আমি মাথা নাড়ালাম। এরপর উনি হাতের ব্যাজ কেটে নিলেন। এরপর দেখিয়ে দিলেন কিভাবে আমাকে আবার যেতে হবে।

একটা ভ্যাক্সিন নেয়া নিয়ে এতো কথার অবতারণা করলাম এই কারণে যে – দেশে এই ভ্যাক্সিন নিয়ে যে হুলস্থুল যাচ্ছে আবার ভ্যাকসিন নেয়ার পরে ছবি তোলার যে কাণ্ডকারখানা – এটা দেশের জন্য হয়তো নরমাল। এখানে সেটাই এবনরমাল। সবকিছু এতো সুশৃঙ্খল ভাবে বিন্যস্ত করা যে মানুষেরাও অভ্যস্ত হয়ে গেছে সিস্টেমের সাথে- বাংলাদেশের উশৃংখল অনিয়মের মানুষ অন্য দেশগুলাতে এসে খুব ভালো ভব্য হয়ে যায়। ভাবছি এটা কাদের দোষ! মানুষ নাকি দেশের সিস্টেমের দোষ!

ব্যাংক্সটাউন বাসস্ট্যান্ড
——————
দুপুর ২/৩ টা বাজে সব স্কুলের বাচ্চারা বাস স্ট্যান্ডগুলাতে ভির করে। স্কুলের বাচ্চাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় ব্যাংকসটাউন বাস স্ট্যান্ড। ভালো লাগে দেখতে। আমার কলিগ এক আফগানী ভদ্রলোক। আমাকে বললো, দেখছেন এই ছেলেমেয়েগুলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আমি তো নষ্ট হবার মতো কিছু দেখলাম না। জিজ্ঞেস করলাম – কেন একথা বললেন?
এই বয়সে বাচ্চারা সিগারেট খাচ্ছে।
আমি অবশ্য দেখেছি – পিচ্চি কিছু ছেলেমেয়ে একধরনের পাইপ টানছে।
ভদ্রলোক বললেন – জানিনা তোমাদের দেশে কি অবস্থা কিন্তু আমাদের দেশে কোনো মুরুব্বীর সামনে এরকম সিসা টানতে দেখলে কারো পারমিশন ছাড়াই সেই মুরুব্বি মারবেন এসব বাচ্চাদের।

আমি চুপ রইলাম। কেননা ভদ্রলোক যেভাবে অভিযোগে করছিলেন সেভাবে বাচ্চাদের দেখিনি শিশা টানতে। দুই একজনের বিষয় উদাহারণ হতে পারে না। ভাবছিলাম আফগানিস্তান ছেড়ে আসলেও মাথাটা এখনো সেখানেরই রয়ে গেছে বেচারার।
—–

পিচ্চি এক বাচ্চাকে (৯/১০ হবে বয়েস) দেখলাম মোবাইলে গেম খেলছে। কি কি যেনো পট পট করে বলছিলো। সব বোঝা যাচ্ছিলো না। জিজ্ঞেস করলাম কি খেয়েছ?.
বললো – কিছু খাইনি। মা অবশ্য আমাকে ৫ ডলার দিয়েছে টিফিন করার জন্য। আমি খরচ করিনি। জিজ্ঞেস করলাম তোমার বাবা মা কি তোমাকে স্কুলে আনা নেয়া করেন! নো নো – আই এম লারনিং।
বাব্বাহ! এই টুকু পিচ্চির কথায় চমতকৃত হলাম।
––—

Mardigras day

আজ মার্ডিগ্রাস ডে। আজকের দিন গে আর লেসবিয়ানদের জন্য বিশেষ দিন। মুরপার্কে দলে দলে মানুষ যাচ্ছে ওদের প্রোগ্রাম দেখতে। ওদের পোশাক আশাক এমন ঝলমলে, মুখে গালে গলায় শরীরে চকচকে রঙ, গ্লিটার – এসব দেখে মনেই হয়েছে আজ বিশেষ দিন। স্পেশাল লাইট ট্রেনের ব্যবস্থা, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স, পুলিশ সব মিলে সাজ সাজ রব। এক ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কি ব্যাপার। এতো মানুষ কোথায় যাচ্ছে? বললাম – আজ মার্ডিগ্রাস ডে। সবাই স্পেশাল ইভেন্টে যাচ্ছে।

প্রায় ছেলে স্কার্ট পড়েছে। এক ছেলের এতো সুন্দর লম্বা চুল, আবার এতে সে দিয়েছে গ্লিটার। ভাবছিলাম একটা মেয়েকে এই সাজে দারুন লাগতো। ছেলেরা যতই মেয়ের মতো সাজুক ওদের শক্ত পোক্ত ভাবটা যায় না।

পাকিস্তানিরা বেশির ভাগই কট্টরপন্থী। আমার পাকিস্তানি সুপারভাইজার বললো, আল্লাহ লুত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিলেন সমকামের জন্য। এদেরও ধ্বংস করবে। তোমার কি মনে হয়?
আমি চুপ করে রইলাম।
মানুষ প্রকৃতির অংশ। তার ভেতরে তার যে স্বাভাবিক ইচ্ছে তা কিছুতেই আসলে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। একটা ছেলের পরনে ফুলেল স্কার্ট ফুলে ফুলে উঠছিলো। আমার মনে হচ্ছিলো আসল এই মানুষটাই সে। প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় বাইরের মানুষ যা দেখছে সে তা নয়।
তবু মানুষের জয় হোক।

একটা পোষ্ট = একটা দায়িত্ব … আপনার আমার সকলের

index

আমরা যারা নিয়মিত কিংবা অনিয়মিত লিখি
প্রবীণ হই কিংবা আধা প্রবীণ হই –
আমরা আমাদের নিয়ে থাকি সর্বদা ব্যস্ত।
নবীন ব্লগারদের লিখা চোখে পরলেও সযত্নে এড়িয়ে যাই।
আমরা কি ঠিক কাজটি করছি?

আমরা অবশ্যই যেমন সুস্থ্য আলোচনা চাইবো বা আশা করবো, তেমনি ভুল বা দৃষ্টি নিন্দিত হলেও তা প্রকাশ করবো। এবং সেটাই উচিত করণীয়।
নইলে লেখক তাঁর লিখার মানের অবস্থান নিয়ে শঙ্কায় থাকতে বাধ্য।

মন্তব্য।
লিখক মাত্রই সেটার আশা কিংবা অপেক্ষা করেন।
www

ইদানীং ব্লগে নাম মাত্র কয়েকজন ছাড়া অনেকেই আমরা ঝাড়া গদ বাঁধা ছোট্ট স্তুতি মন্তব্য সাজিয়ে হারাই। যেন নিরবে সরব উপস্থিতি জানিয়ে যাই, আমার একটা লিখা আছে – দয়া করে পড়বেন। বিকিকিনির ঘরে ক্রেতাকে জানাই নিমন্ত্রণ। বিনয়ের সঙ্গে বলছি, আমার মতের সাথে অন্যের দ্বিমত থাকলে থাকতেও পারে। ফিরেও আমরা আর সেই ফেলে আসা ব্লগটিতে খুব কম জনেই ফিরি। নতুন ব্লগার বন্ধুদের ঘরে ঢুকতেও আমাদের দ্বিধা কাজ করে প্রচুর। অথচ আমাদের অন্তঃপ্রাণ চেষ্টাই বলুন আর উত্তরসুরীই বলুন তারা এই নতুন প্রজন্ম।

ব্লগের অধিকাংশ লেখক এখনো নতুন। ব্লগিং ব্যাপারটির সঙ্গে তারা সবে পরিচিত হতে শুরু করেছেন। নানা কারিগরী দিকগুলো আয়ত্তে না আনার অলসতা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তবু নিজেকে জানান দেয়ার এবং নিজের লেখা প্রকাশ করার দিকে তাঁদের একটা ঝোঁক থাকবে এটা স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই তাঁরা অন্যদের লেখার দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন। অন্যদের লেখা পড়ে সে বিষয়ে তাঁদের অভিমত জানাবেন। সেজন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

shutterst কমিউনিটি ব্লগিংয়ে সামাজিকতা যোগাযোগ ব্যবস্থা জানা-বোঝার ব্যাপারগুলো আয়ত্তে আসতে কিছু সময় লাগবে। পারস্পারিক কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর ও অর্থপূর্ণ আলোচনা গড়ে উঠবে। সকলের এ আকাঙ্খা যুক্তিসঙ্গত। ব্লগিং-প্লাটফর্ম হিসেবে ব্লগ একটি অবাধ আলোচনার ক্ষেত্র হয়ে উঠুক এটি আমরা চাই। কিন্তু রাতারাতি তার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পারস্পারিক বোঝা পড়া, চেনাজানার মধ্য দিয়েই ধীরে ধীরে সেটি গড়ে উঠবে।

আমরা চাই একটি সুন্দর এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্লগিং প্লাটফর্ম। নিজের প্রিয় লিখাটি শব্দনীড় এ দিন। সহ-ব্লগারদের লেখা পড়ুন। কিছু বলার থাকলে মন্তব্য করুন। আপনার মন্তব্য তাঁকেও হয়তো টেনে আনবে আপনার ব্লগে। তিনি আপনার লেখা পড়বেন এবং হয়তো মূল্যবান একটি মন্তব্যও করবেন। পরস্পরকে চিনুন। সমমনাদের খুঁজে বের করুন। সবার অংশগ্রহণে ব্লগ হোক মুখরিত।

Slide1-1
যে কোন লিখা ছাপার অক্ষরে এলে- লিখকেরও একটা দায় বর্তে যায়,
“জবাব দিন” শব্দটার কাছে।
লিখককে তড়িৎ না হলেও ভেবে সুস্থির হয়ে একটা উত্তর সাজাতে হয়।
হোক তা সৌজন্য কিংবা ব্যাখ্যা।
আমি মনে করি ‘একটা পোষ্ট = একটা দায়িত্ব’।

can
আমরা যেন অন্যকে ফাঁকি দিয়ে
আগামীতে নিজের বা নিজেদের শূন্যের মধ্যে ফেলে না দিই –
শ্রদ্ধা দিয়ে সবাইকে উৎসাহ দেয়ার নামই হলো শুভ ব্লগিং।

লাইক আনলাইক এবং রেটিং চর্চা অব্যহত রাখুন। ধন্যবাদ।
storyenda

বিশ্ব নারী দিবস ২০২১

IWD_16

বিশ্ব নারী দিবস ২০২১
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আজ আন্তর্জাতিক বিশ্ব নারী দিবস। নারী শক্তি-র জোট বাঁধার আহ্বান দিকে দিকে। দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ড, হায়দ্রাবাদের প্রিয়াংকা কাণ্ড থেকে রাজ্যের কামদুনি-ধূপগুড়ি। একের পর এক গণধর্ষণ, নারী নির্যাতনের অভিযোগ তোলপাড় করে ভারতের নারী শক্তিকে জেগে ওঠার প্রেরণা দেয়। জাগো জাগো। অভয়া শক্তি মায়ের দল। তোমরা না জাগলে বিশ্ব জাগবে না। আসুন, বিশ্ব নারী দিবসে তাদের সম্মান জানাই।

প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়। সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মহিলাদের কৃতিত্বকে চিহ্নিত করতে মার্চ মাসের ৮ তারিখটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কিংবা পেশাদার জীবনে মহিলাদের নানান সমস্যার মোকাবিলা করতে হয়। এই দিন পালনের মধ্য দিয়ে এই বিষয়টিকেও সকলের সামনে তুলে ধরে সচেতনতা প্রসারের চেষ্টা চালানো হয়ে থাকে।

করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে চলতি বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১-এর থিম:
প্রতি বছরই পৃথক পৃথক থিমে পালিত হয় এই দিনটি। প্রথমবার ১৯৯৬ সালে নির্দিষ্ট থিমে পালিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। চলতি বছরের থিম হচ্ছে Women in leadership: an equal future in a COVID-19 world (নেতৃত্বে নারী: কোভিড ১৯ পৃথিবীতে সমান ভবিষ্যৎ লাভ)। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, বিশেষত নীতি নির্ধারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় মহিলারাও সমান অংশীদার হতে পারেন, তাই এই থিমের মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী, সমান ভবিষ্যৎ এবং অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য মহিলাদের চেষ্টাকে সকলের সামনে তুলে ধরাও এই থিমের অন্যতম উদ্দেশ্য।

রাষ্ট্রসংঘের মতে, পৃথিবীতে শুধুমাত্র তিনটি দেশের সংসদে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মহিলা রয়েছেন। শুধুমাত্র ২২টি রাষ্ট্রের প্রধান পদে আসীন আছেন মহিলারা। এমনকী পৃথিবীর ১১৯ টি দেশে কখনও মহিলারা রাষ্ট্রপ্রধানের ভূমিকা পালনের সুযোগ পাননি। রাষ্ট্রসংঘও জানিয়েছে যে, বর্তমান উন্নয়নের হার এবং লিঙ্গসাম্যের বিষয়টি বিবেচনা করে বোঝা যাচ্ছে যে, ২০৬৩ সালের আগে সংসদে নিজের স্থান পাকা করতে পারবেন না মহিলারা।

কোভিড ১৯ অতিমারি এবং মহিলাদের ভূমিকা:
এই অতিমারি দেখিয়েছে মহিলাদের নেতৃত্ব প্রদানের ইতিবাচক ফলাফল। করোনা ভাইরাস অতিমারির সময় কয়েকটি সফল ও দক্ষ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব প্রদান করেছেন মহিলারা। অতিমারীর সঙ্গে মানব সভ্যতার যুদ্ধে তাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত হোক বা বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, সেবিকা— সব ক্ষেত্রেই তাঁদের উপস্থিতি পরিস্থিতিকে উন্নত করেছে। তবে রাষ্ট্রসংঘের প্রকাশিত একটি রিপোর্ট জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী নিজের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় ১১ শতাংশ হারে কম বেতন পাচ্ছেন প্রথমসারির করোনা মহিলা যোদ্ধারা। যা বেতন কাঠামোর বৈষম্যকেই প্রকাশ করে।

২০২১ সালের ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে জানা গিয়েছে, ৪৩.৫ কোটি মহিলা ও মেয়েরা দিনে প্রায় ১৩৫ টাকার চেয়েও কম উপার্জন করছেন। আবার করোনা অতিমারির সময়কাল ৪.৭ কোটি মহিলাদের দারিদ্রের মুখে ঠেলে দিয়েছে। রিপোর্টে এ-ও বলা হচ্ছে যে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের চাকরি ১৯ শতাংশ বেশি ঝুঁকির মুখে থাকে। শুধু তাই নয়, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম অনুযায়ী, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ মহিলারা কাজ করলেও শুধুমাত্র ২৪.৭ শতাংশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীই একজন নারী।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য:
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মধ্য দিয়ে নারীত্বের উৎসব পালিত হয়। জাতি, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে মহিলাদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতি জানানোর জন্য এই দিনটি পালিত হয়। এই দিনে প্রত্যেককে নারী অধিকার, লিঙ্গ সমতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হয়। পাশাপাশি মহিলাদের সমান অধিকারের লড়াই জোরদার করা এই দিনটি পালনের অন্যতম উদ্দেশ্য।

আসুন, প্রচলিত সমাজব্যবস্থা ও রাষ্ট্রঐক্যকে সুসংহত করতে নারীর অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে তুলতে হলে নারী সশক্তিকরণ আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হোক। নারী শুধু মা নয়, মেয়ে নয়, ভার্যা নয়, সহোদরা নয়, তিনি দেবী মহামায়ার অংশ। তাই মায়ের জাতিকে সম্মান না করতে পারলে দেশ কভু প্রগতির পথে এগোবে না। জয়গুরু।

ভালোবাসি তোমায়

আমি তো তোমাকে ভালোবাসতে চাইনি
তুমি তো আমাকে সেই বিদীর্ণ প্রহরে,
প্রপোজ করেছিলে।
আমি তো তোমাকে ভালোবাসতে চাইনি
সত্যি সত্যি আমি চাইনি,
কারণ বর্তমান ভালোবাসা রিয়েল না,
টাইম পাস।

তুমি তো আমাকে স্বপ্ন দেখিয়ে
হৃদয়ের গহিনের সুপ্ত ভালোবাসা জাগ্রত করেছিলে
স্বার্থপরের মতো অন্যের হাত ধরে চলে গেলে।
শুধু ধোঁকা পাব তার জন্য আমি
কখনো ভালোবাসার অদৃশ্য মায়া জালে
বদ্ধ হতে চাইনি,
সত্যি সত্যি আমি তো চাইনি,
তোমাকে ভালোবাসতে।

বসন্তের আগমনে সুন্দর তোমার লেখা কবিতা খানি,
আজও আমার মনে আছে,
তুমি তো সদা বসন্তকালে
মাথায় পড়তে বাসন্তী ফুলের খোঁপা,
আমি তো তোমার জন্য অসংখ্য বাসন্তী ফুল এনেছি,
তোমার স্মৃতি বিজড়িত সব আজ আমারে কাঁদায়
নিশ্চুপ থাকতে দেয় না তো কখনো।

সত্যি ইচ্ছে ছিল আমার হৃদয়ে সুপ্ত ভালোবাসা দিয়ে,
তোমায় সারাজীবনের জীবনের অংশ করে নিতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু তুমি তো আমার সকল আশা ভস্ম করেছে,
ভালোবাসায় প্রতারণা
তার জন্য আমি তো তোমাকে ভালোবাসতে চাইনি,
সত্যি, সত্যি, সত্যি আমি তো ভালোবাসতে চাইনি,
তুমি তো আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছিল।

তোমার জন্য আমার হৃদয় ধূ ধূ মরুভূমির মতো
যেখানে নেই হয় না কো কোনো কিছু,
বালুকার রাশির মতো করে চিকচিক,
তুমি তো আমার জীবনকে তেমন করেছ
আজ তুমি অন্যকে নিয়ে সুখে আছো
আজও ভালোবাসায় তোমায় ওগো প্রেয়সী।

রচনাকালঃ
১৮/০২/২০২১

কর্তৃপক্ষের করোনা চিন্তা ও আদু ভাই তৈরি

2338

দেশের সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে, অফিস-আদালত, ব্যাংক, হাট-বাজার ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি…
কেবল মাত্র বন্ধ থাকবে শিক্ষাকার্যক্রম কারণ এক গবেষণায় দেখা গেছে শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হলেই করোনা ভাইরাস ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং ইহা মহামারি আকার ধারণ করবে। আর তাই আমাদের দেশের শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর তা হলো ঢা.বি‘র অধিভুক্ত সাত কলেজ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান সকল পরীক্ষা পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে অন্য স্তরের শিক্ষাকার্যক্রমও যথারীতি এক বছর ধরে টানা বন্ধ থাকার কথা আপনারাতো জানেনই। উল্লেখ্য যে, কর্তৃপক্ষের ঘুমের সুযোগে অনার্স ৪র্থ বর্ষের প্রথম কিস্তির লিখিত স্থগিত পরীক্ষা কিন্তু ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে শেষ হয়ে গেছে, কর্তৃপক্ষ আবার জেগে উঠায় নতুন এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
.
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এভাবেই সুরক্ষিত থাকবে, ঘরে ঘরে তৈরি হবে শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত আদু ভাইরা, বেকারত্বের উল্লাসে মেতে উঠবে অগনিত তরুণ-যুবক, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে, দেশের আগামী প্রজন্মকে নিয়ে কর্তৃপক্ষের এমন সুচিন্তিত তামাশাকে আমি সম্মান জানাই এবং কর্তৃপক্ষকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা…
.
শুভেচ্ছান্তে
-মাসুদুর রহমান (শাওন)
২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের একজন প্রবীণ ছাত্র, অনার্স ৪র্থ বর্ষের ভাইভা পরীক্ষার জন্য লটকে যাওয়া একজন সৌভাগ্যবান আদু ভাই…
২৩/০২/২০২১

চিঠি

IMG_20190511_131733509

আন্তরিক
আমাদের এখানে একটাও কৃষ্ণচূড়া পলাশ নেই। অন্য কিছু ফুল ফোটানোর লোভে মাটি খুঁজতে খুঁজতে পেরিয়ে যাচ্ছে যুগান্তর। ভাবছি রুক্ষ মাটিতে গোলাপ চাষ অসম্ভব হলেও অসাধ্য নয়। শুধু তুমি হৃদয় হয়ে দাঁড়ালে।

তুমি তো জানো, আমি গোলাপ ছাড়া কিছু পারি না। একে বাঁচানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। সবাই বলেছে তুমি এ যুগের অচল।

তুমি আমি আছে, অথচ গোলাপ নেই তা কখনও হয়? ঝিমিয়ে পড়া, নুয়ে পড়া, ছিঁড়ে ফেলা, উৎসাহ হয়ে যাওয়া গোলাপ দেখে আমিও যে বারে বারে আহত হই, হয়তো বা নিহত। কিন্তু আমরাই তো বাঁচাবো, তাই বাঁচব।

আমি নেই তুমি আছো, তার মানে তুমিই আমি। আবার তুমি নেই আমি আছি। এ তো ধ্বংসলীলা। তাই তোমাকে পাশে পেতে চাই। রোজ তোমার সাথে আমার দেখা হয়, কিন্তু এসব বলতে পারি না। এ তো তোমার হৃদয়ে আছে, তাকে তুমিই জাগাবে। আমি বলে বলে জাগাতে পারি। তাই আমি এই। ভালো থেকে। পাশে এসো।
গোলাপচাষী

শব্দনীড় ব্লগের অতি সাধারণ একজন আমি

2021021

শব্দনীড়ঃ কয়েকটা বর্ণের সমষ্টিতে একটা শব্দ হয় এইটা আমরা সবাই জানি। নীড় অর্থ বাসা এইটাও অজানা নয় ব্লগারদের। অর্থাৎ শব্দনীড় হলো বাংলা বর্ণের বাসা। এখানে বর্ণের সমষ্টিতে আমরা শব্দের চাষ করি যা হতে বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধি লাভ করছে। তাই প্রতিটি ব্লগারই সাহিত্যের একজন কৃষক।

ব্লগঃ আধুনিক জামানায় ব্লগ হলো লেখালেখির সবচেয়ে উত্তম ও উৎকৃষ্ট মাধ্যম। এই জন্যই ব্লগের লেখা সমাজকে নাড়া দেয়, ঝাকানো দেয়। লেখার পক্ষে বিপক্ষে মত গড়ে উঠে। তবে আপনি কী ধরনের লিখা লিখবেন তা একান্ত আপনার ব্যক্তিগত। ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমরনীতি, বিজ্ঞান নাকি সাহিত্য যে কোন বিষয় আপনার পছন্দীয় হতে পারে। সব বিষয় লিখার খোলা আকাশ বা জমিন এই ব্লগ।

ব্লগারঃ সৃজনশীল, মননশীল, সৎ, সততা, মানবিক ও ন্যায়পরায়ণ আধুনিক লোকটিই ব্লগার। শব্দনীড়ে বর্তমানে অনেক লেখা আসে তবে বেশীর ভাগ সাহিত্য বিভাগের। “লেখকের লিখনী সমাজ পরিবর্তনের বলিষ্ঠ হাতিয়ার।” সাহিত্যের মাধ্যমেও সমাজের অন্যায়-অবিচার ও বন্ধ্যাত্ব দূর করা সম্ভব। এখানের প্রতিটি লেখা তাই বলে অন্তত।

অথচ এই লোকগুলি অন্যের লেখা পড়ে না। লেখা পড়লেও কোন মন্তব্য করে লেখককে উৎসাহ দেয় না। কেউ মন্তব্য করলেও প্রতিউত্তর অনেকেই দেয় না। যেমন বাচ্চা জন্ম দেওয়াই শেষ, লালন-পালন ও শিক্ষা-দীক্ষার দরকার নেই এমনিই বড় হয়ে যাবে। বাচ্চা বড় হয় ঠিকই সেই বাচ্চা মানুষের চেহারায় হলেও কাজে মানুষ নাও হতে পারে। ব্লগার মনগত এত কৃপণ কেন হবে এত হীনম্মন্য কেন হবে। আসুন সব অলসতা ঝেড়ে ফেলে মন্তব্য করি, প্রতি-মন্তব্য করি। একে অপরের সাথে বন্ধুতা গড়ে তুলি। আলোচনা সমালোচনা করে নিজেকে এবং ব্লগকে বিকশিত করি। কৃষক জমিতে ভালো ফলন পেতে যাই করে শব্দচাষীও তাই করা উচিত। শুধু উর্বর মাটি ও ভালো বীজ হলে ভালো ফলন হয় না। মেধাবী কৃষক মানে চাষে নতুনত্ব আনে।

বিঃদ্রঃ এইটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনার পছন্দ নাও হতে পারে। তাই ক্ষমা করবেন।

জাগো চরবাসী জাগো

জাগো চরবাসী জাগো
……….

প্রতিদিন হতাশার কালো চিল আমার হৃদয়ে ডানা ঝাপটে চলে যায়। কিন্তু আমাকে ধরতে পারে না।

একদিন ছিল।
কঠিন সে দিন।
মঞ্চে স্বরচিত কবিতা আবৃতি করতে হবে বলে ছুটে যেতাম ধ্যাধধেরে ছ্যাঙার চরে।
গিয়ে দেখতাম যে ছেলেটা আমার কবিতার ভক্ত সে আয়োজকদের সাথে ঝগড়া করে ঢাকা চলে গেছে।
রাস্তায় ছুটে বেড়াতাম।
স্থানীয় ডাক্তার, উকিল, শিক্ষক আর সাংস্কৃতিক কর্মীদের দরজায় দরজায় ধরনা দিতাম।
যখন দেখতাম তারা কেউ চিনতেই পারেনি,
তখন হতাশার অন্ধকার গ্রাস করতে চাইত।
ঠিক সেইসময়
আমার বুকের ভিতরের ঈগলটা জেগে উঠতো,
আমি আকাশে আকাশে উড়াল দিতাম,
সাদা কাশবনের মাঝে অনন্য সুন্দরের দিকে
নিচে তাকিয়ে দেখতাম
ধূর্ত শিয়াল একঝাঁক হাসকে
তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে চরের পাড় ঘেঁষে।
হাসগুলি ডানা ঝাপটে উড়াল দিতো।
তাই দেখে জেগে উঠতো চরবাসী।
আমার ঈগল বুকে জেগে উঠতো নতুন একটা কবিতা।
জাগো চরবাসী জাগো।
জাগো চরবাসী জাগো।

তখন আমি ধ্যাধধেরে ছ্যাঙার চর হতে নতুন কবিতা নিয়ে ভক্ত ছেলেটাকে আবৃত্তি করে শুনাব বলে
সারা ঢাকা চষে বেড়াই।
প্রতিদিন হতাশার কালো চিল আমার হৃদয়ে ডানা ঝাপটে চলে যায়। কিন্তু আমাকে ধরতে পারে না।

বইমেলা

বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য বই। তবে অন্যান্য বই খুব সামান্য বিক্রি হয়।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? এবং কখন পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে। যারা সাহিত্য চর্চা করে। যারা সাহিত্য ভালোবাসে এবং অবসর পায়। এরকম মানুষ পাঁচ দশ শতাংশের বেশি নয়।
এর বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ আছেন যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন পড়েন পড়তে বাধ্য হন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। প্রয়োজনে ও জীবনের টানে কিনতে হয় ও বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর দরকার হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ জীবনের বই নিয়ে।
ক’টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক’টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া সিক্স সেভেন থেকে বিএ বিএসি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কত আর আধুনিক কবিতা গল্প পড়বে?
ফেসবুক আসার পরে আবার কতশত কবি সাহিত্যিক। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও বিখ্যাত আসছে! যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছে। দিয়েই চলেছে। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাবা যায়!
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। কিন্তু গল্প কবিতার বই আমাদের মত সাধারণের কাছে নৈব নৈব চ।
যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কবিতা গল্প লিখি। সেই জীবন সচেতনতা যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্ল্যারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে।