বিভাগের আর্কাইভঃ বিবিধ

শোক সংবাদ

শোক সংবাদ
………………………..
আমাদের সবার প্রিয় মানুষ ব্লগার ও মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। সংবাদটি জানলাম ফেসবুকের মাধ্যমে উনার ওয়ালেই। খুব ছোট ছোট বাক্যে তিনি জীবনের কথা লিখেছেন। শব্দনীড় ব্লগের মাধ্যমেই উনার সঙ্গে পরিচয় কিন্তু আজ জানতে পারলাম উনি আর নেই। বাস্তবে উনার সঙ্গে আমার কখনো দেখা হয়নি কিন্তু খুব আপনজন মনে হতো । কবিতার ছন্দে তিনি ফেইসবুকে ইসলামের অনেক গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়ের উপর আলোকপাত করে গেছেন। ব্লগে আমার যে কোন লেখায় উনি আমাকে আঙ্কেল বলে সম্বোধন করতেন। আমাকেও বলেছিলেন আঙ্কেল বলে ডাকতে। আঙ্কেল নেই! মেনে নিতে পারছি না। বুকটা যেন কেমন মোচড় দিয়ে উঠছে। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা ও জান্নাত দান করুন।

উনার সর্বশেষ কয়েকটি লেখা ছিল এমনঃ (লেখাগুলো উনার ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া।)

অণুকাব্য
১.
জাতির উন্নত করে শির
দাঁড়ায় রয় বিজয়ী বীর।
২.
জাতি করবে জয়
যদি সত্যেই রয়।
৩.
জীবনের পরম প্রত্যাশা
ফল এবং ফুলের ভাষা।

অণুকাব্য
………………..
আমরা মুসলমান
পড়বো কুরআন।
ইসলামই প্রকৃত ধর্ম
ধর্ম মতে করব কর্ম।
ইসলামই আল্লাহর ধর্ম
এই মতো করব কর্ম।

অণুকাব্য
……………….
অনেক পিতা মাতা
হয়ে থাকেন ছাতা।
সন্তান লালন পালন
হয়ে থাকেন উদাহরণ।

খাওন (একটি ভিন্নধর্মী উপলব্ধি)

মানুষের অসাধারণ কিছু গুণাবলির মধ্যে খাবার খাওয়া একটি গুন। খাবার খাওয়ার সময় মুখের অঙ্গ ভঙ্গিগুলো আমি খুব তীক্ষ্ণ ভাবে অবলোকন করি। কি যতন করে যে তার খাবারগুলো মানুষ চর্বন করে তা সত্যিই বিস্ময়কর। প্রথম যখন প্লেটে কেউ ভাত নেয় তখনই দেখবেন মুখের অবয়বটা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়। তরকারি কয়েক প্রকারের থাকলে সবার আগে দেখে নেয় তার পছন্দের কোনটা। ওটা একটু পরে খাওয়া হবে। শুরু হয় চামিচ দিয়ে যেকোন এক ধরণের তরকারি নেওয়া থেকে। খাবার চর্বনের সময় ঠোঁটের ভাঁজের পরিবর্তন, গালে খাবার আটকে যাওয়ার পর জিহবা দিয়ে ভিতর থেকে এনে তা আবার চিবানো এবং কোন বাড়তি কিছু তরকারির সাথে যোগ করে খাওয়ার স্বাদ বাড়ানো যেন এক অসাধারণ সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে।

লেবু নেওয়ার সময় দেখবেন মুখের পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য। যখন লেবু চিপে রস বের করে ভাতে মাখানোর সময় হয় তখন ঠোঁটের আকুতিই বলে দেবে এখানে টকের উপস্থিতি আছে বলেই তার ঠোঁটের ভাঁজটা এমন ! তারপর ঝাল বা কাঁচা মরিচ খাওয়ার সময় ঠোঁট একটু চোখা করে ভেতরের দিকে বাতাস টান দেওয়াও আলাদা প্রশান্তি আছে।

ডাল বা তরল কিছু দিয়ে খাবার যখন শেষ করার মুহূর্ত আসে তখন যেন আলাদা আনন্দ । পুরো প্লেট থেকে রস নিয়ে তা চেটে খাওয়া ! তারপর একটু পানি ও শান্তির ঢেকুর ! আমার মনে হয় মানুষ যতগুলো সময় একেবারে পবিত্র হয়ে ওঠে তারমধ্যে খাবার খাওয়ার সময়টা অন্যতম। এই অন্যতম পবিত্র হয়ে ওঠার সময়টিকে উদযাপন করুন এবং প্রতিটি খাবারই স্বাদ নিয়ে গ্রহন করুন দেখবেন মনের প্রশান্তিতে আলাদা কিছু যোগ হয়েছে।

অথবা যখন আপনার কোন খাবারই মন ভরাতে পারেনা তখন একজন সুবিধা বঞ্চিত মানুষের খাওয়ার আকুতির কথা ভাবুন দেখবেন খাবার ভালো লাগছে এবং আপনি আর খাবার অপচয়ও করছেন না। শিক্ষার জায়গা অনেক এবং আনন্দেরও। আসুন প্রতিটি শিক্ষা নেই আনন্দের কাছাকাছি গিয়ে।

কবি অথবা সার্কাসের জোকার

কবিতা সবার পড়ার দরকার নাই। আমি অনেককে চিনি জানি যারা স্কুলের বই ছাড়া আর কোন কবিতা পড়েন নাই এবং তারা দিব্যি ভালো আছেন। আমার থেকে ভালো আছেন। তাই, সকলের কবিতা পড়ার দরকার নাই। সাধারণ পাঠকের কোন দায় ও দরকার নাই কবিতা পড়বার। কবিতার যে অত গভীরতা সেটা আর কে বুঝবে কবি ছাড়া। সত্যি কথা বলতে, আমি কিছু কিছু কবিতা সাধারণ পাঠকের জন্য লিখি না। কেবল কবিদের জন্যই লিখি। আমার তো মনে হয়, যিনি কবিতা লিখেন একমাত্র তিনিই কবি নন, যিনি কবিতা পড়তে জানেন তিনিও কবি। কেননা, সবাই কবিতা পড়তেও জানেন না।

কবিতার মধ্যে বিষণ্ণতা থাকে, কিন্তু যখন আমি লিখছি তখন আমার মন ভালো থাকে। কবিতার এই দ্বি-মুখী আচরণটা তো একজন সাধারণ বা গণ পাঠক ধরতে পারবেন না। ধরতে পারার কথাও না। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতার কয়েকটা লাইন পড়ার পরে আমার যদি মনে হয় এই বিচ্ছেদটা আমার, কবি আমার জন্যই লিখেছেন; তাহলে সেটা পাঠ করে আমি আমার তৃপ্তি টুকোই কেবল পাব। কবি যে সত্ত্বা থেকে লিখেছেন সেটা পাব না। সেটা পেতে হলে আমাকে কবিতার মধ্যে ঢুকে যেতে হবে, কবিতার শব্দ অক্ষর অলিগলি ঘুরে পৌঁছে যেতে হবে রবীন্দ্রনাথের বেডরুমে। লাবণ্যকে বিদায় জানিয়েছে অমিত, কিন্তু সেই অমিতকে ধারণ করতে কবির যে কষ্টটা হচ্ছে সেটা অনুভব করতে হবে।

ডেসডিমোনাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পরে ওথেলো তো আত্মহত্যা করে মুক্তি পেয়ে গেল কিন্তু দুই দুইটা খুন করে শেকসপিয়রের যে অপরাধ-বোধ নেই সেটা কে বলবে? সেই যন্ত্রণাটা অনুভব করতে হবে না প্রিয় পাঠক?
প্রেমের কবিতা যিনি লিখেন তিনি নিজে কতটা অপ্রেমে আছেন সেটা আগে অনুভব করতে হবে-
ক্ষুধার কাব্য যিনি লিখেন তিনি নিজে কতদিন না খেয়ে থেকেছেন- কত রাত তিনি নিজে জল খেয়ে কাটিয়েছেন সেটাও জেনে নিতে হবে। সাহিত্য বিচার লেখা বই না নভেল দিয়ে করা হলেও লেখকের ব্যক্তিগত জীবনকে উপেক্ষা করা একেবারেই উচিত নয়।
সবাই যদি বলেন যে,
কবির ব্যক্তিগত জীবন অচ্ছুত অস্পৃশ্য; ওটা ছোঁয়া যাবে না– তাহলে ঐ বেচারা কবিকে মরতে হবে না খেয়ে, প্রেমের কবিতা লিখতে হবে প্রেম না করেই। মৃত্যুর পরে তোমরা ব্যবচ্ছেদ করলে করবে- তোমাদের কৃপা।

রবীন্দ্রনাথ এত যে প্রেমের গান লিখেছেন তিনি নিজে কতটা প্রেম পেয়েছেন সেটাও ভেবে দেখতে হবে। কিংবা তিনি এই যে এত প্রেম পেয়েছেন, সেগুলো সত্যিই কি প্রেম? ঠিক তিনি যে রকম প্রেম চেয়েছেন সেই রকম প্রেম? মনে তো হয় না। পেলে আর এত কেন লিখবেন? যেটা পাওয়া যায় না সেটাই চাওয়া হয় কবিতায় গানে।
বলা হয়ে থাকে যে, বাংলা গানে রবীন্দ্রনাথ একই সাথে সর্বস্ব ও সর্বনাশ—
সর্বনাশের মাথায় বাড়ি দেয়ার আগে অবশ্যই অবশ্যই ভাবতে হবে সর্বনাশটা যে হলো, কেন হলো? এত আকুতি আর কারও গানে নেই কেন? রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল-সংগীত, লালনগীতি এরপরে আমরা আর কোন গীতির নাম শুনি না কেন?
আমাদের চাহিদা কি তবে মিটে গেছে? কে মিটিয়ে দিয়ে গেল?
আমার দেখা দশ জন কবির মধ্যে আট জন কবিতা লিখতে চান না। তারা এককথায় শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে লিখেন। এবং সেগুলো গার্বেজ ছাড়া আর কিছুই না।

এইবার, কবির কথা বাদ দিলে আমাদের কথা অর্থাৎ পাঠকের কথা ভাবতে হয়।
পাঠক কারা? যারা পড়েন তারা সবাই কি পাঠক?
যিনি দুই-চারটা কবিতা লিখে ফেললেন তিনিই কি কবি? হাজার হাজার কবিতা লিখে রেকর্ড করতে পারলেই কি তিনি কবি?
ধরুন, কোন একটা কারণে আপনার মনটা বেশ ভারী হয়ে আছে। একটা খাতা কলম টেনে কয়েকটা লাইন লিখলেন। তারপর আপনার মনে হলও যে, “নাহ ! খারাপ হয়নি”।
খারাপ যে হয়নি সেটা তো আপনিই বুঝলেন, কিন্তু কি হয়েছে সেটা কি জানেন? আপনি কি এটাকে কবিতা বলেই ভেবে নিয়েছেন? যদি ভেবে নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার এই কবিতার পাঠক হবে তারাই যারা ঐভাবেই নিজেদের পাঠক ভাবেন।
আজকাল এই যত্রতত্র কবি গজিয়ে ওঠার দায় আর কারও নয়, কেবল ও একমাত্র পাঠকের।

কবিতা তো আসলে চাইলেই কেউ লিখে ফেলতে পারে না, সেটা একটা নিজস্ব কিছু, নিজের মধ্যে ধারণ করার মত।
সবাই প্রেম করছে – প্রেমিকা নিয়ে হাত ধরে ঘুরছে তাহলে আমারও একটা প্রেম করা দরকার; এটা ভেবে নিয়ে কাউকে ভালোবাসার কথা বললে সেটা যেমন শুধু প্রেমই হবে ভালোবাসা হবে না, তেমনি সবাই লিখেছে বলে আমিও লিখব এবং খারাপ তো লিখছি না, এটা ভেবে লিখলে আসলে সেটা সত্যিই হিজিবিজি ছাড়া আর কিছুই হবে না।
ভালো যেমন সবাই বাসতে পারে না, দুই একজন পারে। বাকীরা প্রেম করে, রিলেশনশিপ করে। তেমনি কবিতাও সবাই লিখতে পারেন না, এক আধজন পারেন বাকীরা খিস্তিখেউড় করেন।

কবিতা কেন লিখতে হয়, কিভাবে লিখতে হয়, কতটুকু লিখতে হয় এসব যেমন ভাববার কোণ বিষয় নয়, তেমনি না ভেবেও লেখা উচিত না। আপনি আপনার কবিতার আয়ু কতটা চান সেটা আপনার ফুসফুসের দমের উপরেই নির্ভর করে।

এত এত কথা কেন লিখলাম সেটা একটু বলা উচিত। আমার এই বালখিল্য-পনা তো কেউ শুনতে বা পড়তে চায় নি। অনেক গার্বেজ তো লিখে ফেলেছি। আসলে এতকিছু লিখলাম কারণ, প্রায় দুই দিন ধরে একটা কবিতা লেখার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ফলাফল লবডঙ্কা।

আপনারা যারা বই-টই বের টের করছেন, তারা একটু বলবেন, কার পয়সায়? নিজের নাকি প্রকাশকের?
আমি তেমন বিশেষ কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কবিতা লিখি না। লেখালেখি করে দেশটাকে পালটে দেয়ার মত মহৎ কোন ইচ্ছে আমার নেই। আমি লিখি কারণ আমার লিখতে ইচ্ছে করে। মন খারাপ থাকলে লিখি, মন ভালো থাকলেও লিখি।
আপনারাও লেখেন, আপনাদের লেখাগুলো পড়ি। ভালো লাগলে জানাই। ভালো না লাগলেও মাঝেমধ্যে জানাই।
আপনারাও আমার লেখা পড়েন, ভালো লাগলে হাতে তালি দিবেন আর খারাপ লাগলে জানাবেন- সার্কাসের জোকার না হয়ে আর থাকতে পারলাম কই?


পুনশ্চঃ কবির মাহাত্ম্য দেখাতে গিয়ে এখানে সার্কাসের জোকারকে কোনভাবেই হেয় করা হয়নি। কেবল সঙ সাজা যে কবিদের সাজে না সেটাই লেখা হয়েছে। ক্লাউন নিশ্চয়ই একটি অন্য প্রাণ। জোকারের মূল্যও কোনো অংশেই কম নয় ।

————————-
কবি অথবা সার্কাসের জোকার
@জাহিদ অনিক

মন্তব্য

আমার ফেসবুক জীবনের আলোকে এবং ব্লগিং জীবনের আলোকে মন্তব্য বিষয়ে কিছু অভিজ্ঞতার কথা আলোকপাত করতে চাই।
শব্দনীড়েরও একটি অপশন আছে যেটা হচ্ছে “মন্তব্য প্রদানের প্রকৃতি”।

আমি দেখেছি বিশেষ করে কবি/লেখকদের ক্ষেত্রে ফেসবুকে অনেকে শুধু মন্তব্যের কারণে অনেকদিনের পুরোন বন্ধুকে ব্লক করা হয়েছে এবং তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্কে টানা পোড়েন শুরু হয়েছে। এটা কবি/লেখকদের ক্ষেত্রে হওয়াটা দোষের কিছু আমার কাছে মনে হয় নি। কারণ ফেসবুকে এমন অনেক কবি/লেখক আছেন যাঁদের বন্ধুর সংখ্যা ৫০০০ হয়ে গেছে। তারপর নতুন আইডি খুলতে হয়েছে। সেটাতেও ৫০০০ হয়ে গেছে। আমাদের বাংলাদেশে এমন কয়েকজন কবি/লেখক বন্ধু আছেন যাঁদের ৫টা আইডিতে ৫০০০ ফ্রেন্ড হওয়ার পর ৬ষ্ঠ আইডি ওপেন করতে হয়েছে। ভারতে আমার এক কবি বন্ধু আছেন যাঁর ৩টি আইডি ৫০০০ হওয়ার পর তিনি ৪র্থ আইডি ওপেন করেছেন। এগুলো তাঁদের করতে হয়েছে জনপ্রিয়তার জন্য।

একজন জনপ্রিয় কবি বা লেখকের কাছে যদি কেউ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান আর তিনি যদি সেই ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট এক্সেপ্ট না করেন তাহলে তিনি একজন অহংকারী কবি/লেখক হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন বিধায় তাঁরা এক্সেপ্ট করে থাকেন। তবে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করার ক্ষেত্রে তাঁরা অবশ্যই দেখে নেন মিউচুয়াল ফ্রেন্ড হিসেবে কারা আছেন।

তাই ৩০,০০০ ফ্রেন্ড যাঁর আছে এবং যেহেতু তাঁর টাইমলাইন পাবলিক করা থাকে তাই কেউ তাঁর লেখায় মন্তব্য করলে কমপক্ষে ৪/৫ লাখ ভিউয়ার তা দেখতে পান। আর যদি সেই মন্তব্য এমন হয় যার কারনে উক্ত কবি/লেখক তার ইমেজ নষ্ট হবে বলে মনে করেন তাহলে তিনি উক্ত মন্তব্যকারীকে ব্লক করতেই পারেন।

ধরুন আপনি ভালো লিখতে পারেন এবং তার প্রমাণ বিভিন্ন ভাবে পাচ্ছেন। তখন আপনার মনে একটা আকাঙ্ক্ষা জাগতেই পারে যে, কোনও দিন হয়তো আপনার এই লেখালিখি আপনাকে বিশেষ একটি পর্যায় নিয়ে যেতে সক্ষম। এই ক্ষেত্রে ধরুন আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে ১৫০০ ফ্রেন্ড আছেন আর আপনার টাইমলাইন পাবলিক করা আছে তাহলেও আপনার লেখা ও মন্তব্য কমপক্ষে ১ লাখ ভিউয়ার দেখতে পারবে। এখন আপনার কবিতায় বা লেখায় কেউ যদি আক্রমনাত্মক মন্তব্য করে বা আপনার ভালো চায় না অথচ আপনার অনেক পুরোন দিনের বন্ধু আপনার অতীতের কিছু খারাপ দিক নিয়ে মন্তব্য করে বা তার ইংগিত দেয় যা আপনার লেখালিখির প্রতিভাকে পুরোপুরি বিনষ্ট করে দিতে পারে তাহলে আপনি কি করবেন?

পৃথিবীটা আসলে একটা অভিনয়ের মঞ্চ আর প্রতিটি মানুষ একেকটি ক্যারেক্টার। তাই মানুষকে জীবনের প্রয়োজনীয় মুহুর্তে বিভিন্ন ধরণের অভিনয় করতে হয়। অনেকে জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার আগে না বুঝে অনেক অসামাজিক কার্যকলাপ করে থাকতে পারেন। অনেকে সঙ্গদোষেও তা করে থাকতে পারেন। অনেকের বিভিন্ন ধরণের শারিরীক কিংবা মানসিক অসুস্থতা থেকে থাকতে পারে যা হয়তো এখন নেই অথবা চিকিৎসার কারণে কন্ট্রলে থাকতে পারে। আর এখন সেই আপনি আপনার নিজের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে সামাজিক/আর্থিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত বা জনপ্রিয়তা পাবেন! তা হয়তো পুরনো বন্ধুদের অনেকেই নাও চাইতে পারে।

হয়তো বলতে পারে, “আরে! এই সেই বারাইক্যা না? হ্যাতে আবার কবি হইলো কবে?”

কিন্তু এখন বলবো, একটু ভিন্ন বিষয়ে আর তা হচ্ছে, আপনার পুরনো ইতিহাস জানেন না এমন অনেক কবি/লেখকের সাথে আপনার এখন পরিচয় হয়েছে আপনার সৃষ্টিশীলতা এবং মেধার কারণে। এর মধ্যে অনেকে থাকতে পারেন একটু সহজ সরল তাই তিনি হয়তো আপনার কবিতা বা লেখার অর্থ উপলব্ধি করতে পারেন নি তাই তিনি মন্তব্য করে বসলেন, “আপনার কবিতা বুঝি নি”। উনি কিন্তু সরল মনেই বলেছেন কিন্তু আপনার কাছে এই মন্তব্য পছন্দ নাও হতে পারে। আমিও অনেক সময় সরল মনে বেশ কটি মন্তব্য করেছিলাম কিন্তু তাৎক্ষনিক লেখক রিঅ্যাক্ট করেছেন এবং এটাই স্বাভাবিক।

অথবা এমনও অনেক কবিতা আছে যা একেক সময় পড়লে একেক রকম অর্থ মনে হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে নেগেটিভ বা পজেটিভ বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য হতে পারে। আবার এমন অনেক পাঠক আছেন যাঁরা লেখালিখি করেন না কিন্তু কবিতা/গল্প পড়তে পছন্দ করেন এবং তাঁদের অনেকেই কবিতা না বুঝেও মন্তব্য করতে পারেন। এক্ষেত্রে আমরা যাঁরা লেখালিখির সাথে জড়িত তাঁদের মন্তব্য কেমন হওয়া প্রয়োজন?

আমরা অনেকে ভালো লিখে থাকতে পারি এবং সে কারণে এক ধরণের অহংকার জন্ম নিয়ে থাকতে পারে। যেমন মনে হতে পারে, “অন্যান্যদের চেয়ে আমিই সবচেয়ে ভালো লিখি এই সময়ে”। তাহলে বুঝতে হবে আপনি জ্ঞানের প্রথম স্তরে আছেন এবং এই স্তরটা অত্যন্ত ভয়ংকর। মানুষ যখন জ্ঞানের প্রথম স্তরে প্রবেশ করে তখন মনে করে আমি সব জেনে ফেলেছি। তখন সে অন্যান্যদের থেকে নিজেকে সেরা মনে করতে থাকে এবং এই স্তরে সে লেখালিখির জগত থেকে ছিটকে পড়ে যেতে পারে। জ্ঞানের দ্বিতীয় স্তরে প্রবেশ করলে একটু শান্ত হয়, অন্যকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এবং নিজেকে জাহির করা থেকে বিরত থাকতে চায় কারণ যে তখন বুঝতে পারে তার আরও অনেক কিছু জানার বাকি আছে।

আর যখন তৃতীয় স্তর অর্থাৎ শেষ স্তরে প্রবেশ করে তখন নিজেকে রিয়েলাইজ করতে শুরু করে। এগুলো বই থেকে পড়ে বলছি, আমার কথা নয় কারণ আমি অবশ্য এখনো জ্ঞানের প্রথম স্তরের শুরুতেই ঢুকতে পারি নি। আসলে বলতে চাচ্ছিলাম, আমারা যাঁরা লেখালিখির সাথে জড়িত তাঁদের মন্তব্য অন্যান্য কবি/লেখকদের ক্ষেত্রে কেমন হওয়া প্রয়োজন?

এক্ষেত্রে মন্তব্য করতে গেলেও ঝুঁকি আছে আবার মন্তব্য না করলে আপনি অহংকারী হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন। ◾ অনেকে জাস্ট পছন্দের লাইন কোট করে চলে যান কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এটা লেখকের লেখার মান উন্নয়নে কতটুকু সহায়ক?

◾ অনেকে বেশ কবার পড়ে একটি মন্তব্য করেন। প্রশ্ন থেকে যায়, এখানে মন্তব্য ভেবে চিন্তে কৌশলে করা প্রয়োজন কি?

◾ অনেকে শুধু কিছু উৎসাহ মূলক কমোন কথা বলে চলে যান। প্রশ্ন থেকে যায়, এটার গ্রহন যোগ্যতা কতোটুকু?

◾ অনেকে সরল মনে যা বোঝেন তাই বলেন কিন্তু তা লেখকের পছন্দ নাও হতে পারে। প্রশ্ন থেকে যায়, এ ক্ষেত্রে কি করণীয়?

◾ অনেকে সরল মনে বলেই ফেলেন, আমি বুঝি নি। প্রশ্ন থেকে যায়, এমন মন্তব্য না করে চুপ থাকাই কি ভালো?

◾ আবার যে লেখাটি পড়তে কমপক্ষে ১০ মিনিট লাগার কথা সেই লেখায় অনেকে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে মন্তব্য দিয়ে থাকেন। প্রশ্ন থেকে যায়, এ ক্ষেত্রে মন্তব্যকারী কি জানেন না উনি কয় মিনিট সময় নিয়েছেন এটা দেখা যায়?

◾ আবার কে কতো মন্তব্য করলেন, কে কতো রেটিং করলেন এদিকেও নজর রাখতে হয়।

তাহলে এ ক্ষেত্রে কি করার আছে?

আমার স্বল্প জ্ঞানে মনে হয় মন্তব্যে কৌশলী হওয়া প্রয়োজন এবং আমরা যাঁরা লেখালিখি করি তাঁদের গঠন-মূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানানো প্রয়োজন। আমি মনে করি এখানে অনেক অভিজ্ঞ ব্লগার আছেন উনারা হয়তো মন্তব্যের ঘরে উনাদের মতামত জানিয়ে সহায়তা করবেন এ আশা পোষন করছি।

শুভকামনা শব্দনীড়ের সকল নিবন্ধিত, অনিবন্ধিত, কবি, লেখক ও পাঠকগনকে!

মা দিবসঃ ইতিহাস – ইতিবৃত্ত

মা দিবস ( Mother’s Day) হল একটি সম্মান প্রদর্শন জনক অনুষ্ঠান যা মায়ের সন্মানে এবং মাতৃত্ব, মাতৃক ঋণপত্র, এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবের জন্য উদযাপন করা হয়। এটি বিশ্বের অনেক অঞ্চলে বিভিন্ন দিনে, সাধারণত মার্চ, এপ্রিল বা মে উদযাপন করা হয়।
বিশ্বের সর্বত্র মায়ের এবং মাতৃত্বের অনুষ্ঠান উদযাপন করতে দেখা যায়। এ গুলোর অনেকই প্রাচীন উৎসবের সামান্য প্রামাণিক সাক্ষ্য, যেমন, সিবেল গ্রিক ধর্মানুষ্ঠান, হিলারিয়ার রোমান উত্সব যা গ্রিকের সিবেল থেকে আসে, অথবা সিবেল এবং হিলারিয়া থেকে আসা খ্রিস্টান মাদারিং সানডে অনুষ্ঠান উদযাপন। কিন্তু, আধুনিক ছুটির দিন হল একটি আমেরিকান উদ্ভাবন যা সরাসরি সেই সব অনুষ্ঠান থেকে আসেনি। তা সত্ত্বেও, কিছু দেশসমূহে মা দিবস সেই সব পুরোনো ঐতিহ্যের সমার্থক হয়ে গেছে।
ছুটির দিনটি ক্রমে এত বেশি বাণিজ্যিক হয়ে পড়ে যে এটির স্রষ্টা আনা জার্ভিস এটিকে একটি “হলমার্ক হলিডে” অর্থাৎ যে দিনটির বাণিজ্যিক প্রয়োজনীয়তা অভিভূত করার মতো, সেই রকম একটি দিন হিসাবে বিবেচিত করেন। তিনি শেষে নিজেরই প্রবর্তিত ছুটির দিনটির নিজেই বিরোধিতা করেন।

ইতিহাসঃ
———
একটি গোষ্ঠীর মতে এই দিনটির সূত্রপাত প্রাচীন গ্রীসের মাতৃ আরাধনার প্রথা থেকে যেখানে গ্রিক দেবতাদের মধ্যে এক বিশিষ্ট দেবী সিবেল-এর উদ্দেশ্যে পালন করা হত একটি উৎসব। এশিয়া মাইনরে মহাবিষ্ণুব -এর সময়ে এবং তারপর রোমে আইডিস অফ মার্চ (১৫ই মার্চ) থেকে ১৮ই মার্চের মধ্যে এই উৎসবটি পালিত হত।
প্রাচীন রোমানদের ম্যাত্রোনালিয়া নামে দেবী জুনোর প্রতি উৎসর্গিত আরো একটি ছুটির দিন ছিল, যদিও সেদিন মায়েদের উপহার দেওয়া হত।
মাদারিং সানডের মতো ইউরোপ এবং যুক্তরাজ্যে দীর্ঘকাল ধরে বহু আচারানুষ্ঠান ছিল যেখানে মায়েদের এবং মাতৃত্বকে সম্মান জানানোর জন্য একটি নির্দিষ্ট রবিবারকে আলাদা করে রাখা হত। মাদারিং সানডের অনুষ্ঠান খ্রিস্টানদের অ্যাংগ্লিকানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পঞ্জিকার অঙ্গ। ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী এটিকে বলা হয় লেতারে সানডে যা লেন্টের সময়ে চতুর্থ রবিবারে পালন করা হয় ভার্জিন মেরি বা কুমারী মাতার ও “প্রধান গির্জার” সম্মানে। প্রথানুযায়ী দিনটিকে সূচিত করা হত প্রতিকী উপহার দেওয়া এবং কৃতজ্ঞতাস্বরূপ রান্না আর ধোয়া-পোছার মত মেয়েদের কাজগুলো বাড়ির অন্য কেউ করার মাধ্যমে।
জুলিয়া ওয়ার্ড হোই রচিত “মাদার্স ডে প্রক্লামেশন” বা “মা দিবসের ঘোষণাপত্র” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের গোড়ার দিকের প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে অন্যতম। আমেরিকান গৃহযুদ্ধ ও ফ্রাঙ্কো-প্রুশীয় যুদ্ধের নৃশংসতার বিরুদ্ধে ১৮৭০ সালে রচিত হোই-এর মা দিবসের ঘোষণাপত্রটি ছিল একটি শান্তিকামী প্রতিক্রিয়া। রাজনৈতিক স্তরে সমাজকে গঠন করার ক্ষেত্রে নারীর একটি দায়িত্ব আছে, হোই-এর এই নারীবাদী বিশ্বাস ঘোষণাপত্রটির মধ্যে নিহিত ছিল।

ঘোষণাঃ
——–
১৯১২ সালে আনা জার্ভিস স্থাপন করেন মাদার’স ডে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোশিয়েশন্ (আন্তর্জাতিক মা দিবস সমিতি) এবং “মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার” আর “মা দিবস” এইসব শব্দবন্ধের বহুল প্রচার করেন।
মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে “মা দিবস” হিসাবে উদযাপনের ঘোষণা দেয়া হয় ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেসে। আর তখন থেকেই এই দিনে সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে মা দিবস। বিশ্বের প্রায় ৪৬টি দেশে প্রতিবছর দিবসটি পালিত হয় হয়। কথিত আছে, ব্রিটেনেই প্রথম শুরু হয় মা দিবস পালনের রেওয়াজ, কেননা সেখানে প্রতিবছর মে মাসের চতুর্থ রোববারকে মাদারিং সানডে হিসাবে পালন করা হতো। তবে সতের শতকে মা দিবস উদযাপনের সূত্রপাত ঘটান মার্কিন সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্টস। মায়ের সঙ্গে সময় দেয়া আর মায়ের জন্য উপহার কেনা ছিল তাঁর দিনটির কর্মসূচিতে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়াতে প্রথম মা দিবস পালন করা হয় ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২ জুন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট উড্রো উহলসন সর্বপ্রথম মা দিবসকে সরকারি ছুটির দিন হিসাবে ঘোষণা করেন। মা দিবসের উপহার সাদা কার্নেশন ফুল খুব জনপ্রিয়। আর বাণিজ্যিকভাবে, “মা দিবস” বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্ড আদান-প্রদানকারী দিবস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে “মা দিবস”-এ অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি ফোন করা হয়।

আন্তর্জাতিক ইতিহাস ও আচারানুষ্ঠানঃ
———————————–
বেশিরভাগ দেশেই মা দিবস হল একটি সাম্প্রতিক রীতি, যা উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে ছুটির দিনটির রীতি অনুসারে চলে এসেছে। যখন অনান্য বহু দেশ ও সংস্কৃতি এটিকে গ্রহণ করে তখন এই দিনটিকে একটি অন্য মাত্রা দেওয়া হয়, বিভিন্ন পর্বের (ধর্মীয়, ঐতিহাসিক বা পৌরানিক) সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়, এবং একটি একদমই অন্য দিন বা বিভিন্ন দিনে এটিকে পালন করা হয়।
কিছু কিছু দেশে বহু আগে থেকেই মাতৃত্বের প্রতি উত্সর্গিত কয়েকটি অনুষ্ঠান ছিল এবং সেইসব অনুষ্ঠানে মার্কিন মা দিবসের মত মায়েদের কার্নেশন (গোলাপী ফুল) এবং আরো অন্য উপহার দেওয়া হত।
অনুষ্ঠান পালনের রীতিটি অনেক রকম। অনেক দেশে মা দিবস পালন না করলে এটিকে প্রায় একটি অপরাধ গণ্য করা হয়। অনেক দেশে আবার মা দিবস একটি স্বল্প-পরিচিত উত্সব যা মূলত প্রবাসী মানুষেরা পালন করে থাকে বা বিদেশী সংস্কৃতি হিসাবে মিডিয়া সম্প্রচার করে থাকে।

বিভিন্ন ধর্মে মাঃ
—————
ইসলাম ধর্মে ‍মা-
আল কুরআনে বলা হয়েছে আমি মানুষকে তাদের পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করার জোর নির্দেশ দিয়েছি। যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার জোর প্রচেষ্টা চালায়, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের আনুগত্য করো না। আমারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর আমি তোমাদেরকে বলে দেব যা কিছু তোমরা করতে। একটি হাদীসে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, মাতার পদতলে সন্তানের বেহেশত (স্বর্গ)।

হিন্দু ধর্মে ‍মা-
সনাতন ধর্মে উল্লেখ আছে স্ববংশবৃদ্ধিকামঃ পুত্রমেকমাসাদ্য..”। আবার সন্তান লাভের পর নারী তাঁর রমণীমূর্তি পরিত্যাগ করে মহীয়সী মাতৃরূপে সংসারের অধ্যক্ষতা করবেন। তাই মনু সন্তান প্রসবিনী মাকে গৃহলক্ষ্মী সম্মানে অভিহিত করেছেন। তিনি মাতৃ গৌরবের কথা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন এভাবে- উপাধ্যায়ান্ দশাচার্য্য আচায্যাণাং শতং পিতা। সহস্রন্তু পিতৃন্মাতা গৌরবেণাতিরিচ্যতে” [ (মনু,২/১৪৫) অর্থাৎ “দশজন উপাধ্যায় (ব্রাহ্মণ) অপেক্ষা একজন আচার্য্যরে গৌরব অধিক, একশত আচার্য্যরে গৌরব অপেক্ষা পিতার গৌরব অধিকতর; সর্বোপরি, সহস্য পিতা অপেক্ষা মাতা সম্মানার্হ।”

ক্যাথলিক ধর্মে, দিনটি বিশেষভাবে ভার্জিন মেরি বা কুমারী মাতার পূজায় সমর্পিত।

বিভিন্ন দেশে মা দিবসঃ
——————–
আফ্রিকীয় দেশসমূহঃ
বহু আফ্রিকীয় দেশ ব্রিটিশ প্রথানুযায়ী মা দিবস পালন করে, যদিও আফ্রিকার বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মধ্যে মায়েদের সম্মানে এমন অনেক অনুষ্ঠান এবং উত্সব আছে যা আফ্রিকায় ইউরোপীয় উপনিবেশ গড়ে ওঠার বহু যুগ আগে থেকেই চলে আসছে।

বলিভিয়াঃ
বলিভিয়ায় ২৭শে মে মা দিবস পালিত হয়। অধুনা কোচাবাম্বা শহরে ১৮১২ সালের ২৭শে মে সংঘটিত করনিলার যুদ্ধের স্মৃতিস্মারক হিসবে এই দিনটিকে মা দিবসরূপে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয় ৮ই নভেম্বর, ১৯২৭ সালে। এই যুদ্ধে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত অনেক মহিলাকে স্পেনীয় সৈন্যবাহিনী নৃশংসভাবে হত্যা করে।

চীনঃ
চীনের মা দিবস ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, কার্নেশন সেখানে জনপ্রিয়তম উপহার এবং সবথেকে বেশি বিক্রিত ফুল। ১৯৯৭ সালে দরিদ্র মায়েদের সাহায্য করার জন্য, বিশেষ করে পশ্চিম চীনের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মায়েদের কথা মানুষকে মনে করানোর জন্য, এই দিনটিকে চালু করা হয়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র, পিপিল’স ডেইলি’র একটি নিবন্ধে ব্যাপারটির বিষয়ে লেখা হয় যে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলেও, চীনের মানুষ বিনা দ্বিধায় এই দিনটিকে গ্রহণ করেছে কারণ এটি একদমই এই দেশের রীতি মাফিক – মানে গুরুজনদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা”।

গ্রিসঃ
গ্রীসে, যিশু কে মন্দিরে পেশ করার ইস্টার্ন অর্থডক্স ফিস্ট ডের সঙ্গেই পালন করা হয় মা দিবস। যেহেতু থিওটকস ( ঈশ্বরের মাতা) যিনি এই ফিস্টের (ভোজ) বিশিষ্ট চরিত্র এবং তিনিই যিশু কে জেরুসালেমের মন্দিরে এনেছিলেন, তাই জন্য এই পরবটি মায়েদের সঙ্গে সংযুক্ত।
ইরানঃ
২০ জুমাদা আল-থানি, মহম্মদ (সঃ) -এর কন্যা ফাতিমা(রাঃ)র জন্মবার্ষিকীর দিন ইরানে পালন করা হয় মা দিবস।

জাপানঃ
প্রাথমিক ভাবে শোয়া যুগ -এ রানী কজুন -এর (রাজা আকিহিতো’র মা) জন্মদিনটিকেই মা দিবস হিসাবে পালন করা হত জাপান। এখন এটি একটি জনপ্রিয় দিন। বিশেষত কার্নেশন আর গোলাপ উপহার হিসবে দেওয়া হয় এই দিন।

নেপালঃ
বৈশাখ(এপ্রিল) মাসে হয় “মাতা তীর্থে অনুসি ” বা “একপক্ষব্যাপী মাতৃ তীর্থ যাত্রা”। এই উত্সবটি পালিত হয় অমাবস্যার সময় যার জন্য এটির নাম “মাতা তীর্থে অনুসি “। “মাতা” মানে মা, “তীর্থ” মানে তীর্থযাত্রা। উত্সবটিতে মৃত মায়েদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং জীবিত মায়েদের উপহার দেওয়া ও সম্মান জানানো হয়। কাঠমান্ডু উপত্যকার পূর্বদিকে অবস্থিত মাতা তীর্থে যাওয়া এই উত্সবের একটি অঙ্গ।
এই তীর্থযাত্রাটি ঘিরে একটি কিংবদন্তি আছে। প্রাচীন কালে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মা দেবকী ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। তিনি বহু জায়গা ঘুরে বাড়ি ফিরতে ভীষণ দেরী করেন.ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মায়ের অবর্তমানে খুবিই দুঃখিত হয়ে ওঠেন। উনি তখন মা কে খুঁজতে বেরিয়ে অনেক জায়গায় খোঁজেন কিন্তু খুঁজে পান না। শেষে যখন তিনি “মাতা তীর্থ কুন্ড”- তে পৌঁছন তখন তিনি মা কে দেখতে পান পুকুরে স্নানরত। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আনন্দিত হয়ে ওঠেন মা কে খুঁজে পেয়ে এবং মা কে তিনি মায়ের অবর্তমানকালীন সব দুঃখের কথা বলেন। মা দেবকী ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কে বলেন “আহা! তাহলে এই স্থানটিকে আজ থেকে প্রত্যেক সন্তানের তাদের ছেড়ে আসা মায়েদের সঙ্গে মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠুক”। সেই থেকে এই জায়গাটি মৃত মায়ের সঙ্গে সাক্ষাত প্রাপ্তির এক দ্রষ্টব্য ও পবিত্র তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে। এও কিংবদন্তি আছে যে এক পুন্যার্থী পুকুরের জলে নিজের মায়ের প্রতিকৃতি দেখে প্রায় জলে পরে মারাই যাছিলেন। এখনও সেখনে পুকুর ধারটিতে লোহার বেঁড়া দেওয়া আছে। পুজার্চনার পরে পুন্যার্থীরা সেখনে নৃত্য, গানের মাধ্যমে নিজেদের মনোরঞ্জন করে। কিংবদন্তিগুলোর সত্যতা যাচাই করে দেখার অবকাশ নেই যেহেতু এগুলো প্রাচীন পুঁথির অনুযায়ী লোকমুখে চলে আসা সব ঘটনা সব।

থাইল্যান্ডঃ
থাইল্যান্ডে মা দিবস পালিত হয় থাইল্যান্ডের রানীর জন্মদিনে।

রোমানিয়াঃ
রোমানিয়া-তে দুধরনের আলাদা ছুটির দিন আছে: মা দিবস আর মহিলা দিবস।
ইউনাইটেড কিংডম এবং আয়ারল্যান্ডঃ
ইউনাইটেড কিংডম ও আয়ারল্যান্ড-এ , ইস্টের সানডে(২৭শে মার্চ, ২০০৯)-র ঠিক তিন সপ্তাহ আগে, লেন্ট-এর চতুর্থ রবিবার মাদারিং সানডে পালিত হয়.খুব সম্ভবত ষোড়শ শতকের বছরে একবার নিজের মাদার চার্চ বা প্রধান গির্জায় যাওয়ার খ্রিস্টীয় রেওয়াজ থেকেই এর উত্পত্তি. এর মূল তাত্পর্য হল যে মায়েরা তাদের সন্তানদের সঙ্গে মিলিত হবেন.অনেক ঐতিহাসিক -এর মতে যুবতী শিক্ষানবিশ-দের এবং অন্য যুবতীদের তাদের মালিকরা কাজ থেকে অব্যহতি দিত তাদের পরিবারের সাথে দেখা করার জন্য। ধর্মনিরিপেক্ষিকরণের ফলে এখন এই দিনটি মূলত মায়ের প্রতি সম্মান জানানোর দিন যদিও বহু গির্জা এটিকে এখনও সেই ঐত্তিহাসিক ভাবে দেখতেই পছন্দ করে যেখানে থাকে যিশু খ্রিস্ট -এর মা মেরি ও “মাদার চার্চ”-এর মত ঐতিহ্যবাহী রীতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।
মাদারিং সানডে সর্বাগ্রে পড়তে পারে ১লা মার্চ(যে বছরগুলিতে ইস্টের পরে ২২শে মার্চ) ও তারপর পড়তে পারে ৪ঠা এপ্রিল(যখন ইস্টের ২৫শে এপ্রিল পরে)।

ভিয়েতনামঃ
ভিয়েতনামে মা দিবসকে বলা হয় লে ভূ-লান এবং চান্দ্র পঞ্জিকা অনুযায়ী সপ্তম মাসের পঞ্চদশ (পনেরো) দিনে এটি পালিত হয়। যাদের মায়েরা জীবিত তারা ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা জানায় আর যাদের মায়েরা পরলোক গমন করেছেন তারা প্রার্থনা করে মৃত মায়েদের আত্মার শান্তি কামনা করে।

মা দিবসের বাণিজ্যিকিকরণঃ
————————-
সরকারী মা দিবস পালনের ন’ বছরের মাথায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দিনটি এতটাই বাণিজ্যিক হয়ে পরে যে আনা জার্ভিস নিজেই এই তাত্পর্য পাল্টে যাওয়া দিনটির ঘোর বিরোধী হয়ে যান এবং নিজের সমস্ত সম্পত্তি ও জীবন দিনটির এইরকম অবমাননার প্রতিবাদে ব্যয় করেন।
মা দিবসের বানিজ্যিকরণ ও দিনটিকে বানিজ্যিক স্বার্থে কাজে লাগানোর প্রতিবাদে আনা তার সময়ে বহু সমালোচনা করেন। তিনি সমালোচনা করেন হাতে লেখা চিঠি না দিয়ে কার্ড কেনার নতুন প্রথাকে যেটিকে তিনি আলসেমি হিসাবে গন্য করতেন। ১৯৪৮ সালে আনাকে গ্রেপ্তার করা হয় মা দিবসের বানিজ্যিকরণের প্রতিবাদ করা কালীন এবং অবশেষে বলেন যে তিনি “ভাবেন যে এই দিনটির সূচনা না করলেই ভালো হত কারণ এটি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে…
মা দিবস এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বানিজ্যিকভাবে সবথেকে সফলতম পরব. ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোশিয়েশনের মতে রেস্টুরেন্টে ডিনার করার অন্যতম জনপ্রিয় দিন হল মা দিবস।

সূত্রঃ বাংলা উইকপিডিয়া

ব্যস্ততা কেড়ে নিচ্ছে সব

তারপর কেটে গেছে অনেকদিন। কিন্তু ব্যস্ততার হাত থেকে আমি এখনো রক্ষা পাইনি। কি বাসায়, কি অফিসে শুধুই ব্যস্ততা। এমন ব্যস্ত খুব কমই ছিলাম। অথচ এই আমাকে দেখে কে বলবে, অজপাড়া গাঁয়ের এই ছেলেটি, যার কিনা নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা ছিল এককালে সে কিনা এখন ঢাকায় থাকে, সার্কের মতো একটা বহুজাতিক সংস্থায় জবও জোগাড় করে নিয়েছে নিজের যোগ্যতায়। কোন রকম চেষ্টা-তদবির ছাড়াই।

সেই হারানো দিন। সেই ছোটবেলা। সেই পুকুর, আমতলা, খেলার মাঠ। বাড়ির উঠোন। যেখানে শীতের সকালে রোদ পোহাতে বসতাম সবাই। এখনো মাঝেমধ্যে হাতছানি দিয়ে ডাকে। আর সেই ডাকে সাড়া দিতে গেলেই কেন যেনো গলাটা ধরে আসে। কোথায় থেকে যেনো একটা অস্ফুট কান্না বেরিয়ে আসে।

আহা সেই শৈশব! কৈশোর! এখন কোথায়? আর এই আমি? আমার ব্যস্ততা?

ঠিক হয়ে যাবে সব। আশা করছি খুব দ্রুতই হয়ে যাবে। শব্দনীড়কে বড় মিস করছি। মিস করছি প্রিয় লেখকদের লেখা সেই হারানো শৈশবের মতো। আসবো! খুব দ্রুতই ফিরে আসবো। আর মাত্র কয়েকটা দিন।

আবার ফিরে এলাম আপন নীড়ে

কয়েকদিন আগে প্রিয় কবি দাউদুল ইসলাম ভাইয়ের সাথে দেখা হল bangla-kobita.com এ। সেখানে তার মন্তব্যে জানতে পারলাম শব্দনীড় আবার ফিরে এসেছে, তবে তা প্রিয় মুরুব্বীর কল্যাণে। শব্দনীড় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেকবার shobdoneer.com লিখে log in করার চেষ্টা করে দেখেছি কারণ যখনই মনে হয়েছে প্রিয় শব্দনীড়ের কথা, তখনই মনে হয়েছে প্রিয় ব্লগটি এভাবে ব্ন্ধ হয়ে যেতে পারে না। অবশেষে, তা সত্যি হল। তবে জানতে দেরি হয়েছে shobdoneer.com নামে না হয়ে shobdonir.com নামে নতুন যাত্রার কারণে।

প্রিয় মুরুব্বীর প্রতি শত সহস্র কৃতজ্ঞতা তিনি প্রিয় ব্লগখানিকে আপন সন্তানের মত আগলে রেখেছিলেন। তাই শব্দনীড়কে আমরা আগের মত করে পেয়েছি।
শব্দনীড়ের বিদায় লগ্নে আমার সর্বশেষ পো‍ষ্ট ছিল একটি আবেগঘন কবিতা। আজ এই শুভক্ষণে আবার সেই পোষ্টের কথা মনে পড়ে গেল। তাই শেয়ার না করে পারছি না-

আবার দেখা হবে বন্ধু
এস. এম. কামরুল আহসান

আবার দেখা হবে বন্ধু
হয়ত কোন পথে-অচেনা,
অথবা, কোন এক ব্লগে-
নতুন নিকে, থেকে অজানা।

হয়ত কথা হবে-লেখায়
মন্তব্যে হবে ভাব, আবার;
শেয়ার হবে আরো-কতকি
না চিনে অপরে, পুনবার।

অথচ একদিন ছিলাম,
একই নীড়ের ছায়াতলে!
কতনা আপন হয়ে; রয়ে
পোষ্টের ঘন কোলাহলে।

আজ সাথী কেমনে, জনম
উথলিয়া উঠে, পোড়ে মন!
বন্ধ হবে, হবে! বলে যে-
শব্দনীড়ের বেলা পতন।

যদি তাই হয়, তব ভাবি
শব্দনীড় রবে, অনুক্ষন
লেখক-পাঠক-মনে, হয়ে
নব লেখার অনুরণন।

হয়তো আবার কোনদিন
দেখা হবে বন্ধু! নেটেতে;
দেখা হবে কোন শুভক্ষনে-
ভার্চুয়াল সেই পাতাতে।

ছন্দ: মাত্রাবৃত্ত
মাত্রা কাঠামো: ১০

এপ্রিল ২০, ২০১৬, বিকাল: ৫:২৪
৯/ই, মতিঝিল বা/এ, ঢাকা-১০০০

যদিও নিত্যদিনকার কর্তব্য ও কাজের চাপে আমি ব্লগে খুব কমই নিয়মিত ছিলাম তবে মনটা ঠিকই প্রিয় ব্লগে পড়ে থাকত। যখনই সময় পেতাম ছুটে আসতাম, দু একটা মন্তব্য দিতে চেষ্টা করতাম। এবারের যাত্রায় আগের চাইতে বেশি চেষ্টা থাকবে পাশে থাকার।

নতুন ও পুরাতন সকল সহব্লগারদের প্রতি রইল ‍শুভেচ্ছা।

শুভ ব্লগিং

বাঘ মামার ডায়েরী, চ্যাপ্টার-০২ঃ হিংস্র লালসা


বাঘিনী বাড়িতে নেই প্রায় দু’মাস হলো, সে বাপের বাড়ি বেড়াতে গেছে। বাঘিনী না থাকায় শরীর ও মন, দু’টোই উথাল পাতাল করছিলো। তাই বিকেলের মনোরম রোদে নিজের ডেরা ছেড়ে নদীর দিকে এগিয়ে গেলাম। ওমা! নদীর ওপারে দেখি সুন্দরী হরিনীর দল উদ্দাম হয়ে হুশ হারিয়ে খেলছে। জিভে পানি এসে গেল। ইসস! যদি একটা’র ঘাড় মটকাতে পারতাম! কিন্তু খরস্রোতা নদীর কারনে আমার আশা, নিরাশায় পরিণত হলো।

নদীর এপারে দেখি মহিষের বিশাল এক পাল পানি খাচ্ছে। এর ভেতর নাদুস নুদুস কয়েকটি মহিষ দেখে বেশ লোভ হলো। কিন্তু আমার একার পক্ষে মহিষের বিশাল পালের সাথে পেরে উঠা সম্ভব নয়, জানের ভয়ে বাধ্য হয়ে লোভ সামলালাম।

ডেরায় ফেরার পথে দেখি গাছের ডালে কতগুলো সুন্দরী টিঁয়া পাখি মনের আনন্দে ব্যালো ড্যান্স করছে। নাহ! ক্ষুধাটা আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠলো। লোভের জ্বালায় অস্থির হয়ে পড়লাম।

অবশেষে ডেরার কাছে এসে দেখি, একটা অবুঝ ও কচি খরগোশ ছানা ঘুরে বেড়াচ্ছে আর মনের আনন্দে খেলছে। এতক্ষনের চাঙানো ক্ষুধা পেটে রেখে আর কি লোভ সামলানো যায়! অবশেষে এই অসহায় ও নিরাপদ শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ক্ষুধা মেটালাম।

[প্রসঙ্গঃ নারীর বেপর্দা-উশৃঙ্খল চলন, অশ্লীল পোষাক ও ধর্ষণ।]
পূর্ব প্রকাশিত এখানে।

বাঘ মামার ডায়েরী, চ্যাপ্টার-০১ঃ প্রপোজ


সেদিন এক তরুণী জিরাফের অদ্ভুত বাহারী রঙে মুগ্ধ হয়ে তাকে “লাভ ইয়্যু” বললাম। জিরাফটি সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করলো, আমি তার চেয়ে বেজায় খাটো বলে।

তারপর এক হরিণীকে ফুল দিয়ে প্রপোজ করলাম। সে হুট করে দৌড়ে পালিয়ে গেলো। যেতে যেতে বলে গেলঃ “ফুল দিলেই কেউ ভালো হয়ে যায় না বন্ধু! তোমার লোভের কথা আমি জানি না বুঝি!”

কষ্ট পেয়ে টিঁয়া পাখির কাছে গেলাম এবং তাকে বেলি ফুলের মালা নিবেদন করলাম। নবাবের বেটি গাছের ডালে কিছুক্ষন ক্যাটওয়াক করে বললোঃ “বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়াও কোন সাহসে!”

মেজাজ খারাপ করে ময়ূরীর কাছে গেলাম, বললামঃ “তোমার বাহারী পেখমের বাতাসে, মন জুড়িয়ে আসে, আরো কিছু সময় তুমি, থাকো আমার পাশে…।” ছলনাময়ী ফরফর করে তার পেখম গুটিয়ে বললোঃ “জলের ধারে গিয়ে নিজের চেহারাটা দেখে আয় বেটা!”

মনের দুঃখে জলের ধারে গেলাম চেহারা দেখতে। জলের উপর উঁকি দিতেই দেখি, একখানি অগ্নিশর্মা বাঘিনীর মুখ! বুঝলাম বাঘিণী আমার প্রেমিক মনের খবর পেয়ে, আমায় প্যাঁদানোর জন্যে পেছনে অপেক্ষা করছে! তারপর…! বাকিটা বাঘ আর বাঘিনীর সংসারের নিত্যদিনকার ইতিহাস…! দৌড়…. দৌড়… দৌড়….।

[ইয়ং জেনারেশনের তরুন-তরুনী, বিবাহিত-অবিবাহিতদের নিয়ে এটি একটি হাস্যরসাত্বক স্যাটায়ার। “বাঘ মামা” সিরিজের এটাই প্রথম স্যাটায়ার, ক্রমান্বয়ে আরো আসবে ইন শা আল্লাহ।]

সেলফ টেষ্ট

প্লিজ, একটু দাঁড়ান। যাষ্ট কয়েক মিনিটি সময় নিন। চলুন, হয়ে যাক একটা সেলফ টেষ্ট!

”নিঃসন্দেহে (সেসব) ঈমানদার মানুষরা মুক্তি পেয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাযে একান্ত বিনায়বনত (হয়), যারা অর্থহীন বিষয় থেকে বিমুখ থাকে, যারা (রীতিমতো) যাকাত প্রদান করে, যারা তাদের যৌন অংগসমূহের হেফাযত করে। তবে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী কিংবা (পুরুষদের বেলায়) নিজেদের অধিকারভুক্ত (দাসী)-দের ওপর (এ বিধান প্রযোজ্য) নয়, (এখানে হেফাযত না করার জন্যে) তারা কিছুতেই তিরস্কৃত হবে না। অতপর এ (বিধিবদ্ধ উপায়) ছাড়া যদি কেউ অন্য কোনো (পন্থায় যৌন কামনা চরিতার্থ করতে) চায়, তাহলে তারা সীমালংনকারী (বলে বিবেচিত) হবে। এবং যারা তাদের (কাছে রক্ষিত) আমানত ও (অন্যদের দেয়া) প্রতিশ্রুতিসমূহের হেফাযত করে। এবং যারা নিজেদের নামাযসমূহের ব্যাপারে (সমধিক) যত্নবান হয়। এ লোকগুলোই হচ্ছে (মূলত যমীনে আমার যথার্থ) উত্তরাধিকারী। জান্নাতুল ফেরদাউসের উত্তরাধিকারও এরা পাবে; এরা সেখানে চিরকাল থাকবে।” -(সূরা আল মোমেনুন, আয়াত ০১-১১)

এবার, একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন, আর নিজেকে এই আয়াতগুলো দিয়ে যাছাই করুন। দেখুনতো, আপনি আল্লাহর যথার্থ উত্তরাধিকরী কিনা! আপনি মুক্তি পাবেন কিনা? আপনি জান্নাতের উত্তরাধিকার পাওয়ার যোগ্য কিনা? কোন স্তরে আছেন আপনি? কি করছেন? (এই আয়াতগুলো মোতাবেক) আপনি জান্নাত পাওয়ার টেষ্টে উত্তীর্ণ হতে পারবেন তো? ভাবুন… ভাবুন… ভাবতেই থাকুন…। বিশ্বাস করুন! আজকের ভাবনাতে কোন লস হবে না। আজ আপনার হিসাব নেয়ার জন্যে আপনি নিজেই যথেষ্ট।

এখনো কি আপনার রবের কাছে মাথা নত করে ফিরে যাবার সময় হয় নি? তওবা করার সময় আসে নি? আগামীকাল থেকে ভালো হয়ে যাবেন? আসলেই? সময় পাবেন তো? আগামীকাল থেকে ভালো হয়ে যাবার ইচ্ছে পোষণ করা অনেকেই এখন কবরে শুয়ে আছে। আগামীকাল তাদের জীবনে আর আসে নি। আপনি কি নিশ্চিত আগামীকাল আপনার জীবনে আসেবে? কে জানে! হয়তো আপনার মৃত্যুর আর ক’সেকেন্ড বাকী!

এই টেষ্টে আমি ফেল করেছি, চরমভাবে ফেল করেছি… চরমভাবে…

বাল্য বিবাহের একটি চিত্র

বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের বর্তমান প্রেক্ষাপট, কারন এবং এর প্রতিকার ও তার আইন

“একটি সুস্থ জাতি পেতে প্রয়োজন একজন শিক্ষিত মা”— এই উক্তিটি প্রখ্যাত মনীষী ও দার্শনিক নেপোলিয়ন বোনাপার্টের। কিন্তু আমরা আজ এই একুশ শতকে এসেও বাংলাদেশের ৬৬ শতাংশ নারী এখনো শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, আর এর প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ।গত এক দশক ধরে কিশোরী মাতৃত্বের হারের দিক থেকে পৃথিবীর শীর্ষ তিনে রয়েছে বাংলাদেশ। যেটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এবং Digital Bangladesh অর্জনের পথে বাংলাদেশের জন্য বড় বাধা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। চিকিৎসকরা মনে করেন, কিশোরী বয়সে মা হলে, মা ও সন্তান দুজনেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যায়।দেশে ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের মধ্যে প্রজনন হার প্রতি এক হাজারে ১৩৫ জন। যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। কিশোরী মাতৃত্বের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে শীর্ষ দশে রয়েছে বাংলাদেশ ।
বাল্য বিবাহ কি ? :
বাল্য বিবাহ বলিতে সেই বিবাহকে বুঝায় যাহাতে সম্পর্ক স্থাপনকারী পক্ষদ্বয়ের যেকোনো একজন শিশু। শিশু বলিতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝাইবে যাহার বয়স পুরুষ হইলে একুশ বৎসর কম এবং নারী হইলে আঠার বৎসরের কম।
বাল্যবিবাহের তথ্য:
১. জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৮ বছরের আগে ৬৬ শতাংশ মেয়ে এবং একই বয়সের ৫ শতাংশ ছেলের বিয়ে হচ্ছে ।মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে – মাত্র একহাজার টাকার দেনমোহরে বিয়ে হচ্ছে এই সব সুবিধা বঞ্চিত মেয়েদের যাদের বয়স ১২ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে – কোন দেন মোহরই ধার্য করা হয়নি এমনকি বিয়ের রেজিষ্ট্রেশনও করা হয়নি। কোন কোন ক্ষেত্রে বড় অংকের যৌতুক দাবী করছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির পরিবার।
২. ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ১০-১৯ বছর বয়সের দুই তৃতীয়াংশ কিশোরী বাল্য বিবাহের শিকার হয় ।
৩. সেভ দ্যা চিলড্রেন এর ২০১০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের ৬৯ শতাংশ নারীর ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ।
৪. জাতীয় কন্যা শিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের হার ২০০৯ সালে ছিল ৬৪ শতাংশ, যা ২০১১ সালে এসে দাড়িয়েছে ৬৬ শতাংশে।
৫. বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ সার্ভে এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে নারীর বিয়ের গড় বয়স ১৫ বছর ৩ মাস ।
৬. ইউনিসেফের পাপ্ত তথ্য মতে দেশে আঠারো বছর পূর্ন হবার আগে বিাহের হার ৬৬% এবং ১৫ বছরের আগে বিবাহের হার ৩২%। ৭. বাংলাদেশে গর্ভবতি নারীদের মধ্যে ৫৭% বয়স উনিশ এর নিচে। বাল্য বিয়ের কারনে ৪১% মেয়ে স্কুল ত্যাগ করে।

বাল্য বিবাহের কারনসমূহ:
১.সাধারনত মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বাল্যবিবাহে উৎসাহিত করে ছেলেদের পরিবার।
২.কখনও কখনও তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়ার প্রবনতা থেকেও বাল্য বিবাহের দিকে ঝুকে পড়ে গ্রাম্য পরিবারগুলো।
৩.ভবিষ্যতে ‘কন্যাদায়’ যেন বড় খরচের দায় হয়ে না দাঁড়ায় সেকথা মাথায় রেখে অল্পবয়সে বিয়ে সেরে ফেলতে পারলে একটা “খরচের দায়” কমে গেল, এই ভাবে ।
৪. ইভটিজিং এ দেশের সমাজ ব্যবস্থা এখনও নারীকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারে না, তাই তারা তারি মেয়েদের বিয়ে দেন।
৫.অধিকাংশ পিতামাতা ছেলেকে শিক্ষিত ও উপার্জনক্ষম করায় যতটা মনযোগ দেন মেয়ের জন্য ততটা দেননা, বরং তাকে ‘বিদায়’ করতেই আগ্রহী থাকেন, যা বাল্য বিবাহের অন্যতম কারন

বাল্য বিবাহের প্রধান কুফলঃ
১.নারী শিক্ষার অগ্রগতি ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বাল্য বিবাহের কারনে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ মা হতে গিয়ে প্রতি ২০ মিনিটে একজন মা মারা যাচ্ছেন।
২. প্রতি ঘন্টায় মারা যাচ্ছে একজন নবজাতক৷ নবজাতক বেঁচে থাকলেও অনেকসময় তাকে নানা
শারীরিক ও মানষিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়৷
৩. অপ্রাপ্তবয়স্ক মা প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদান করতে পারে৷
৪.বাল্য বিবাহের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের আশংকা তৈরী হওয়া ছাড়াও নানা পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়৷ ।
৫. বাল্যবিবাহ শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি করে না, পারিবারিক, সামাজিক এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনেও সহায়ক হয় । যেমন, শিক্ষার আলো এবং স্বাস্থ্যগত কারণে অল্প বয়সের মেয়েটি তার নিজের সম্পর্কে সচেতন নয়, সুতরাং পরিবার সম্পর্কে তার ধারণা না থাকায় স্বাভাবিক বিষয়।

বাল্য বিবাহ নিবারণ করার জন্য আইন

বাল্য বিবাহকারীর শাস্তি:
যে কেউ একুশ বত্স র বয়সোর্ধ্ব পুরুষ বা আঠারো বয়সোর্ধ্ব মহিলা হয়ে কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, একমাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ শাস্তিযোগ্য হবে।
৫। বাল্যবিবাহ সম্পন্নকারীর শাস্তি :
যে কেউ যেকোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান, পরিচালনা বা নির্দেশ করলে তিনি এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে, এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করেন যে, তার বিশ্বাস করার কারণ ছিল যে, উক্ত বিবাহ কোন বাল্যবিবাহ ছিল না।
৬। বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতার বা অভিভাবকদের জন্য শাস্তি :
যেক্ষেত্রে কোন নাবালক কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে ঐ নাবালকের ভারপ্রাপ্ত যেকোন ব্যক্তি, পিতা-মাতা হইক বা অভিভাবক হইক বা অন্য কোন সামর্থ্যে হউক, আইনসম্মত হউক বা বেআইনী হউক যদি উক্ত বিবাহে উত্সাহ প্রদানের কোন কাজ করেন, অথবা উহা অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুন ব্যর্থ হন, তিনি এক মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য বিনাশ্রম কারাবাসে বা একহাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাই কারাবাসে শাস্তিযোগ্য হবে না।
এই ধারার উদ্দেশ্যে যদি না এবং যতক্ষণ না বিপরীত কিছূ প্রমাণিত হয়, এই অনুমান করতে হবে যে, যেক্ষেত্রে কোন নাবালকের বাল্যবিবাহের চুক্তি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে উক্ত নাবালকের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঐ বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুণ ব্যর্থ হয়েছেন।

বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের উপায়ঃ
১. বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনটি বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রচার/প্রচারনা করা প্রয়োজন৷
২. রেডিও, টেলিভিশনে ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করা যেতে পারে৷
৩. গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠক ও মা সমাবেশ এক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হবে৷ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনে প্রশাসনের পক্ষ করা যেতে পারে৷
৪. জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যতীত কোন অবস্তুায়ই নিকাহ রেজিষ্টার যেন বিবাহ নিবন্ধন না করেন, সেরূপ আইন প্রণয়ন করা যেতে পারে৷
৫. প্রতিটি ইউনিয়নে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷
৬. নবম ও দশম শ্রেনীর পাঠ্য বইতে এ বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা হলে এর সুফল পাওয়া যাবে৷
৭. জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বেসরকারী সংস্তুাগুলোও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে৷ আমরা যারা উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছি- পরিসংখ্যান ও বাস্তবতার দিক থেকে সফলতা দেখালেও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে শিশু বয়সী মেয়েদের বিবাহের মাত্রা সামাজিক অস্থিরতা, নিরাপত্তার অভাব, বেকারত্ব, দুর্যোগপ্রবণ এলাকা, পারিবারিক ভাঙন ও অবক্ষয়ের কারনে। যে সব সুবিধাবঞ্চিত মেয়েরা স্কুলগামী হচ্ছে তারা ঝরে পড়েছে এবং তাদেরকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে একটা অনিশ্চত জীবনের দিকে। দেখতে হবে শিশুবান্ধব স্কুলের জন্য যে যে অপরিহার্য শর্ত রয়েছে তা আছে কিনা।এই প্রয়াসে আমাদের জানা প্রয়োজন “শিশুবান্ধব স্কুল” (Child Friendly School)কি? কি কি বিষয়ের উপর আমাদের নজর দিতে হবে। আইনকে কার্যকর করার সাথে সাথে মেয়ে শিক্ষার সুফল প্রকাশ্যে দেখানোর জন্য যে কোন ভাবে সরকারের আরো উদার নীতি গ্রহন করার প্রয়োজন । গ্রাম্য কৃষি উন্নয়নে শিক্ষিত মেয়েদের সংশ্লিষ্টতা বাড়ানো, স্বাস্থ্যখাতে মেয়েদের আরো সম্পৃক্ততা এবং শিক্ষার হার বাড়ানোতে মেয়েদের মেধা কাজে লাগিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করায় মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে । মেয়েদেরকে এবং অসহায় পরিবার সমুহকে বাল্য বিবাহ থেকে মুখ ফেরাতে হলে অবশ্যই মেয়েদের আত্ননির্ভরশীল করার প্রতি জোর দিতে হবে । এজন্য গ্রামে গ্রামে কারিগরি ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন পদ্ধতি চালু করা খুবই কার্যকরি পদক্ষেপ হতে পারে । ইলেক্ট্রনিক পন্যের প্রসারে কারিগরি শিক্ষা সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হতে পারে মেয়েদের আত্ননির্ভরশীলতার ক্ষেত্রে ।

শেষ কথাঃ
দিন বদলের অঙ্গীকার রয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা হবে৷ ২০২১ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩.৮ থেকে কমিয়ে ১.৫ করা হবে৷ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা না গেলে এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না৷ বাল্য বিবাহ সংকুচিত করে দেয় কন্যা শিশুর পৃথিবী৷ আমরা যদি সবাই সচেতন হই তাহলে কন্যা শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে৷ দেশে মা ও শিশুর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে৷ সমাজের উঁচুস্তর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের; বিশেষ করে আমাদের রাষ্ট্এবং প্রশাসনকে এ ব্যাপারে সবার আগে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।

আমার ব্যক্তিগত বইয়ের কিছু সংগ্রহ

বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য রেফারেন্স বুক হিসেবে বেশ কিছু বই থাকা আবশ্যক। আমার সংগ্রহে থাকা প্রায় সবগুলো বই রকমারি ডট কম থেকে কিনেছি। রকমারি ডট কমের সুবিধা হলো এই যে এখান থেকে বিষয়ভিত্তিক বইগুলো খুঁজে পেতে বেশ সুবিধা হয়। কিছু বইয়ের তালিকা দিচ্ছি।

বিষয়: বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ

১। নাম: Anthology of Bengali Proverbs and And Bachan by Muhammad Zamir
কি কাজে লাগবে: বাংলা প্রবাদ-প্রবচন
ভাল দিক: প্রবাদের ইংরেজি অর্থ দেওয়া আছে
খারাপ দিক: বইয়ের শেষে নির্ঘন্ট বা ইনডেক্স নাই। এতো প্রবাদের মধ্যে নির্দিষ্ট কোন প্রবাদ খুজে পাওয়া মুশকিল

২। নাম: বাংলা লেখার নিয়ম কানুন, হায়াত মামুদ
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও বানানের নিয়ম
ভাল দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম নির্ঘণ্ট আছে
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৩। নাম: বাংলা প্রয়োগ অভিধান, সুভাষ ভট্টাচার্য।
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও শব্দের অপপ্রয়োগ
ভাল দিক: বাংলা শব্দের বানানের নিয়ম অভিধানের ন্যায় এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৪। নাম: বাংলা শব্দের উৎস অভিধান
কি কাজে লাগবে: বাংলা বাগধারা, প্রবাদ-প্রবচন
ভাল দিক: অভিধানের ন্যায় এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৫। নাম: বাংলা বানান ও শব্দের জগৎ, দিলীপ দেবনাথ।
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও বানানের নিয়ম।
ভাল দিক: প্রতিষ্ঠিত কিছু ভাল বইয়ের অনুকরণের চেষ্টা আছে।
খারাপ দিক: একই রকম বই বাজারে আরও আছে।

৬। নাম: বানান বোধিনী, পবিত্র সরকার
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও বানানের নিয়ম
ভাল দিক: প্রথম অংশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বানানের নিয়ম আছে। অন্যসব বইয়ের অনুকরণ নয়। দ্বিতীয় অংশে অভিধানের ন্যায় এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: শব্দের সংখ্যা অপ্রতুল

৭। নাম: প্রবাদের উৎস সন্ধান, সমর পাল
কি কাজে লাগবে: বাংলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবাদ
ভাল দিক: প্রবাদের উৎস বিস্তারিত আলোচনা
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৮। নাম: লেখালেখির ব্যাকরণ, ফারুক নওয়াজ।
কি কাজে লাগবে: সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় যেমন ছন্দ, ছোট গল্প, ছড়া, সাহিত্য সমালোচনা ইত্যাদি
ভাল দিক: বিভিন্ন বিষয়ের সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা।
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৯। নাম: বাংলা ভাষার প্রয়োগ অপপ্রয়োগ, আনিসুজ্জামান ও অন্যান্য
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও শব্দের অপপ্রয়োগ
ভাল দিক: চোখে পড়ে নাই।
খারাপ দিক: গতানুগতিক

১০। নাম: প্রবাদ প্রবচন ধাঁধাঁ ও বিশিষ্টার্থক শব্দের অভিধান।
কি কাজে লাগবে: বাগধারা, প্রবাদ ও প্রবচন
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি অভিধানের মতো সাজানো।
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

১১। বাংলার প্রবাদ, সুদেষ্ণা বসাক
কি কাজে লাগবে: বাগধারা, প্রবাদ ও প্রবচন
ভাল দিক: অন্য বইয়ের অনুকরণ নয়।
খারাপ দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম নির্ঘণ্ট নাই, খুজেঁ পেতে সমস্যা

১২। প্রথম আলো ভাষারীতি
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান
ভাল দিক: প্রথম আলো যে বানান মেনে চলে সেগুলো জানা যাবে
খারাপ দিক: কিছু বানাননে আধুনিকায়নের প্রচেষ্টা থাকলেও ব্যাকরণসিদ্ধ নয়।

১৩। বাংলা বানান কোথায় কি লিখবেন, ড. মোহাম্মদ আমীন (Look Inside)
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান ও অপপ্রয়োগ
ভাল দিক: প্রতিষ্ঠিত কিছু বইয়ের অনুকরণের প্রচেষ্টা
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

১৪। ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমী
কি কাজে লাগবে: বাংলা পড়তে হলে কাজে লাগবেই
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

১৫। সংসদ বাংলা অভিধান, সাহিত্য সংসদ।
কি কাজে লাগবে: বাংলা অভিধান হিসেবে
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

১৬। ব্যাকরণ অভিধান, অশোক মুখোপাধ্যায়
কি কাজে লাগবে: ব্যাকরণ পড়ার জন্য খুবই কার্যকরী বই
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

১৭। শব্দকল্পদ্রুম, হায়াত মামুদ
কি কাজে লাগবে: বাংলা বানান
ভাল দিক: সুখপাঠ্য গল্পের বই
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

১৮। বাংলা একাডেমী চরিতাবিধান
কি কাজে লাগবে: বাংলা সাহিত্য, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের বিবরণ
ভাল দিক: অভিধানের মতো সাজানো
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

বিষয় মুক্তিযুদ্ধ:

১। সাক্ষ্মী ছিলো শিরোস্ত্রাণ, সুহান রিজওয়ান
কি কাজে লাগবে: মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু হত্যা, সেনা অভ্যুত্থান বিষয়ক প্রশ্নোত্তর।
ভাল দিক: সুখপাঠ্য উপন্যাস
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

২। বিস্কুটের টিন, সাইফুল ইসলাম (Look Inside)
কি কাজে লাগবে: ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কিত তথ্য
ভাল দিক: সুখপাঠ্য উপন্যাস
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই।

৩। মূলধারা ৭১, মঈদুল হাসান
কি কাজে লাগবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তথ্যসমৃদ্ধ বই
ভাল দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম নির্ঘন্ট আছে, তথ্য সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

৪। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর, কর্নেল শাফায়াত জামিল
কি কাজে লাগবে: ৩ নং সেক্টরে যুদ্ধের বিবরণ, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও সেনা অভ্যুত্থান
ভাল দিক: সেক্টর কমাণ্ডারের চোখে মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ
খারাপ দিক: বইয়ের প্রথম অংশ অর্থাৎ যুদ্ধের বর্ণনা কিছুটা একঘেয়ে

৫। সেক্টর কমান্ডাররা বলছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মরণীয় ঘটনা
কি কাজে লাগবে: প্রতিটি সেক্টরের যুদ্ধের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
ভাল দিক: সেক্টর কমাণ্ডারদের চোখে মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

বিষয় সরকারি চাকুরিজীবীদের স্মৃতিচারণা:

১। যখন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলাম, আলম তালুকদার
কি কাজে লাগবে: বিসিএস প্রশাসন সম্পর্কে ধারণা
ভাল দিক: স্মৃতিচারণের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় ও দায়িত্ব সম্পর্কিত অবতারণা
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

২। যখন পুলিশ ছিলাম
কি কাজে লাগবে: আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সম্পর্কে ধারণা
ভাল দিক: স্মৃতিচারণের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় ও দায়িত্ব সম্পর্কিত অবতারণা
খারাপ দিক: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রচিত নয়।

বিষয় আন্তর্জাতিক

১। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূলনীতি, মো: আব্দুল হালিম
কি কাজে লাগবে: লিখিত আন্তর্জাতিক পরীক্ষায়
ভাল দিক: কনসেপচুয়াল বিষয়ে ভাল লিখেছে
খারাপ দিক: চোখে পড়ে নাই

২। কূটনীতি কোষ: মো: শামীম আহসান
কি কাজে লাগবে: লিখিত আন্তর্জাতিক পড়ার সময় কাজে লাগে
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৩। ছোটদের রাজনীতি ও অর্থনীতি, ডা নীহার কুমার সরকার
কি কাজে লাগবে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপূর্ব ও পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা
ভাল দিক: ছোটদের জন্য লিখিত বলে বড়দের জন্য পড়া সহজ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৪। ছোটদের বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতি, ড তারেক শামসুর রেহমান
কি কাজে লাগবে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপূর্ব ও পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা
ভাল দিক: ছোটদের জন্য লিখিত বলে বড়দের জন্য পড়া সহজ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৫। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, মো আবিদুল হালিম
কি কাজে লাগবে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা
ভাল দিক: বিস্তারিত বিবরণ
খারাপ দিক: বইটা এখনো পড়িনি

৬। নয়া বিশ্বব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, তারেক শামসুর রেহমান
কি কাজে লাগবে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপূর্ব এবং পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা
ভাল দিক: বিস্তারিত বিবরণ
খারাপ দিক: কিছু চ্যাপ্টার সহজপাঠ্য নয়

৭। বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর, তারেক শামসুর রেহমান
কি কাজে লাগবে: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপূর্ব এবং পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা
ভাল দিক: বিস্তারিত বিবরণ
খারাপ দিক: কিছু চ্যাপ্টার সহজপাঠ্য নয়

বিষয় বাংলাদেশ

১। পার্লামেন্টারি শব্দকোষ, জালাল ফিরোজ
কি কাজে লাগবে: বাংলাদেশ বিষয়াবলি পড়ার সময় বিশেষ করে সংবিধান পড়ার সময় কাজে লাগে
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

২। অর্থ-বাণিজ্য শব্দকোষ, মুনীর তৌসিফ
কি কাজে লাগবে: বাংলাদেশ বিষয়াবলি (লিখিত) পড়ার সময় কাজে লাগে
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: কিছু শব্দের সঙ্গা যথাপুযুক্ত নয়

৩। রাজনীতিকোষ, হারুনুর রশীদ
কি কাজে লাগবে: বাংলাদেশ বিষয়াবলি (লিখিত) পড়ার সময় কাজে লাগে
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: শব্দ অপ্রতুল

৫। রাজনীতি ও কূটনীতিকোষ, ড সুলতান মাহমুদ, বিবি মরিয়ম
কি কাজে লাগবে: বাংলাদেশ বিষয়াবলি (লিখিত) পড়ার সময় কাজে লাগে
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: শব্দ অপ্রতুল

৬। আইনকোষ, মো: আবদুল হামিদ
কি কাজে লাগবে: বাংলাদেশ বিষয়াবলি (লিখিত) পড়ার সময় কাজে লাগে
ভাল দিক: এ্যলফাবেটিক্যালি সাজানো
খারাপ দিক: শব্দ অপ্রতুল, কিছু শব্দের অর্থ বাংলাদেশ আইনের প্রেক্ষাপটে উপযুক্ত মনে হয়নি।

বিষয় ইংরেজি

১। Practical English Usage by Micheal Swan
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য
ভাল দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম ইনডেক্স (নির্ঘন্ট) আছে; বেশ সমৃদ্ধ
পিডিএফ: পাওয়া যায়
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

২। Oxford Guide to English Grammar by John Eastwood
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য
ভাল দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম ইনডেক্স (নির্ঘন্ট) আছে; বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৩। Common Mistakes in English by TJ Fitikides
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য
ভাল দিক: বইয়ের শেষে সূক্ষ্ম ইনডেক্স (নির্ঘন্ট) আছে;
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৪। Oxford Advanced Learners Dictionary
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য, বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৫। Cambridge Advanced Learners Dictionary
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য, বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৬। Longman Dictionary of Contemporary English
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য, বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৭। Macmillan English Dictionary for Advanced Learners
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য, বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৮। Collins Cobuild English Dictionary for Advanced Learners
কি কাজে লাগবে: এমসিকিউ প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা বের করার জন্য, বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ; সম্পূর্ণ বাক্যে সঙ্গা
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

৯। Illustrated Oxford Dictionary
কি কাজে লাগবে: বাক্যের গঠন ও অর্থ বোঝার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ; ইলাস্ট্রেশন দেওয়া আছে
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

১০। Chambers Thesaurus
কি কাজে লাগবে: সিনোনিম, এনটোনিম পড়ার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

১১। Applied English Grammar and Composition, PC Das
কি কাজে লাগবে: থিওরেটিকাল গ্রামার পড়ার জন্য
ভাল দিক: বেশ সমৃদ্ধ
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

নিজ জেলা ও সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত:

১। বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা
কি কাজে লাগবে: নিজ জেলার সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কিত।
ভাল দিক: বাংলাদেশের প্রায় সব জেলার জন্যই আলাদা বই আছে
খারাপ দিক: চোখে পড়েনি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বই:

১। অসমাপ্ত আত্মজীবনী, শেখ মুজিবুর রহমান (Look Inside)
কি কাজে লাগবে: ভাইভাতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত জিজ্ঞাসা
ভাল দিক: নির্ভরযোগ্য তথ্য
খারাপ দিক: আনাড়ি পাঠকদের বইয়ের প্রথম অর্ধেক পর্যন্ত আগ্রহ ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে।
পিডিএফ: আছে

২। ছোটদের বঙ্গবন্ধু, রফিকুজ্জামান (Look Inside)
কি কাজে লাগবে: সহজ এবং সংক্ষিপ্ত পরিসরে বঙ্গবন্ধুকে জানতে। ভাইভার পূর্বমুহূর্তে বংঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ঝালিয়ে নিতে।
পিডিএফ: নাই

আশাকরি পোস্টটি আপনাদের ভাল লাগবে।

violence-against-children-73753550

শিশু নির্যাতন কি বেড়েই চলবে?

আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশু নির্যাতন রোধে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও ভয়াবহ যৌন নির্যাতন ও নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে পারছেনা শিশুরা। দেশের ভবিষ্যৎ ফুলের মতো শিশুদের মমতা আর ভালোবাসা দিয়ে সমাজের প্রতিটি নাগরিকের যেখানে গড়ে তোলার কথা সেখানে এই সমাজেরই কিছু বিকৃত রুচি সম্পন্ন মানুষ রুপি পশু তাদের ওপর চালাচ্ছে জঘন্যতম নির্যাতন। এমনকি ঘৃণ্য এই অপরাধের হাত থেকে মানসিক প্রতিবন্ধি শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। দেশব্যাপী শিশুদের ওপর হওয়া নির্যাতনের ধরণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায় শুধু অপরিচিত ব্যক্তি নয় পরিচিত, নিকটাত্মীয় প্রতিবেশীর দ্বারাও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এদের কেউ শিশুদের জোর করে আবার কেউবা খাবার বা খেলনার প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে এ অত্যাচার চালাচ্ছে।

শিশু নির্যাতনঃ
শিশু নির্যাতন দুইভাবে হয়ঃ
ক্স মানসিকভাবে, ও
ক্স শারীরিকভাবে
মানসিকভাবে নির্যাতনগুলো হয় শিশুকে নানাভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোন কিছু দ্বারা চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন লাঠি/অস্ত্র দিয়ে তাকে নানাভাবে আঘাত করা হলে শারীরিকভাবে শিশু নির্যাতিত হয় এবং একই সাথে মানসিকভাবেও। বাংলাদেশের শিশু নির্যাতনের অন্যতম চিত্র দেখা যায় রাস্তায় বড় হওয়া শিশু, যৌনকাজে যারা নিযুক্ত তাদের সন্তান এবং যাদের বাবা-মা ডিভোর্স তাদের এবং যেসব শিশু অন্যের ঘরে কাজ করে।

শিশু নির্যাতনের ধরণঃ
শিশু নির্যাতনের মধ্যে অন্যতম কারণ হল দরিদ্রতা। বাংলাদেশে দরিদ্র পরিবারের শিশুরা বেশীরভাগ সময়ই অর্থাভাবে শিক্ষার সুযোগ পায় না। ফলে অর্থের যোগান দিতে গিয়ে অল্প বয়সেই রোজগারের জন্য নামতে হয়। শিশুদেরকে মালিকরা কম বেতন দিয়ে থাকে এবং অনেক সময়ই তাদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়।
আর একটি কারণ আছে, তা হলো অবাদ যৌনাচার আচরণ শিশুদের দিয়ে। বেশিরভাগ শিশুদেরকে ক্রেতার কাছে বিক্রয় করা টাকার বিনিময়ে এবং ক্রেতারা তাদেরকে যৌনতার কাজে বাধ্য করে। এমনকি শিশু হত্যার চিত্রও অত্যন্ত ভয়াবহ। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিসংখ্যান অনুযায়ী। চলতি বছরের প্রথম দেড় মাসে সারাদেশে বিভিন্নভাবে খুন হয়েছে ৪৫ জন শিশু। গেল বছরের বছরের প্রথম দুইমাসে শিশু হত্যার সংখ্যা ছিল ৪৮। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে একজন করে শিশু খুন হচ্ছে।
পরিসংখ্যাণ থেকে দেখা যায়, বাড়ছে শিশু ধর্ষনের প্রবণতা। ২০১৬ সালে তিন শতাধিক শিশু ধর্ষনের শিকার হয়ে যায় বছরের ওেমাট ধর্ষনের মোট অর্ধেকের। ধর্ষনের শিকার হওয়া শিশুদের অর্ধেকের বয়স ১২ বছরের নিচে। এদের মধ্যে ছয় বছরের কম বয়সী শিশুও রয়েছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনাও বাড়ছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র বলছে, ২০১৬ সালে ধর্ষনের ঘটনা ৭২৪টি। এর মধ্যে ৩০৮টি শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫৭টি শিশুর বয়স ১২ বছরের কম। ছয় বছরের নিচে আছে ৪৬টি শিশু।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে শিশু অধিকার সুরক্ষায় আইন-২০০৩ থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। পথশিশুরা তো বটেই। এমনকি পরিবারের নিরাপদ গন্ডির মধ্যে থেকেও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাছাড়া গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদেরও এ নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। মূলত এ বিষয়গুলোর প্রতি নজরদারী এবং নির্যাতন রোধে দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ না থাকায় শিশুদের ওপর হওয়া এই নৃশংসতা রোধ করা যাচ্ছে না।
আসুন আমরা সবাই শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করি। এবং সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ কাজে লাগিয়ে সুষ্ঠ সমাজ গঠনে উৎসাহিত হই এবং অন্যকেও উৎসাহিত করি