বিভাগের আর্কাইভঃ বিবিধ

গোশ্ত কেনার সহজ উপায়

আমি যখন এফ রহমান হলে থাকতাম রাতের বেলা পালে পালে মহিষ নীলক্ষেত দিয়ে যেতে দেখতাম। একপাল মহিষের সাথে দু একটা গরুও থাকত। রাতের বেলা পালে পালে মহিষ দেখলেও সকাল বেলা সারা ঢাকা শহরের কোথাও মহিষের মাংস বিক্রি হয় শোনা যেত না। সব জায়গায় গরুর গোশ্ত বিক্রি হয়। এই মহিষগুলোর জন্য আমার দুঃখও হত। বেচারারা নিজ পরিচয়ে মরতেও পারে না। আজীবন মহিষ থেকে মরার পরে হয়ে যাচ্ছে গরু। বেওয়ারিশ লাশের মত অবস্থা। হবে না কেন? স্বাদের বিচারে গরুর গোশতের উপর কোন গোস্ত নাই। বিক্রেতারা মহিষের গোস্তকে গরুর গোস্ত বলে চালিয়ে দেয়। এছাড়াও আরো নানা ধরনের ঠকবাজী তারা করে। সেইসব ঠগবাজী থেকে বাঁচার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে-টেঁটে আপনাদের জন্য নানা টিপস হাজির করলাম। আমার ধারনা এই টিপস গুলো মেনে চললে মাংস কেনার পর বাসায় এসে ঝাড়ি খাওয়া থেকে বাঁচবেন।

– গোশত কসাইকে দিয়ে টুকরো করাবেন না। আস্ত টুকরা কিনবেন এবং বাসায় এসে নিজেরাই টুকরো করে নেবেন। কারন গোশত বিক্রির মূল ঘোটঝালাইটা হয় টুকরো করার সময়ই। উল্লেখ্য যে, গরুর গোশত টুকরো করা তেমন জটিল কিছু নয়। কোরবানীর ঈদের সময় আমরা অনেকেই তা করে থাকি। আস্ত গোশত কিনে ঘরে ফেরার পর যদি মা কিংবা বৌ আপনাকেই কোপাতে চায় তবে দেরী না করে ইয়া আলী বলে নিজেই বটি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারেন – অবশ্যই গরুর গোশের উপর।

– যে স্থানের গোশত পছন্দ বলবেন সে স্থানের এক তাল গোশত কেটে দিতে। পরে বাসায় এনে নিজে টুকরো করবেন। (শুধুমাত্র হাড় আলাদা করে কুপিয়ে দিতে বলবেন)

– হাড় কুপিয়ে দিলে তারপর বলবেন ওজন করতে, তার আগে নয়। ভুলেও আগে বলবেন না যে গোশ বাসায় টুকরো করবেন। তাহলে তারা ঘটনা বুঝে ফেলে অন্য পন্থায় দুই নম্বরী শুরু করবে।

– যদি আপনার দরকার হয় ৫ কেজি, আপনি বলবেন ৩ কেজি। বেশী বিক্রি করার জন্য তারা ইচ্ছে করে বেশী করে কাটে। ৩ কেজি কাটতে বললে তারা ঠিক ৫ কেজিই কাটবে – যা আপনার প্রকৃত প্রয়োজন।

– গরুর গোশত বলে মহিষের গোশত দেয়া কসাইদের জন্মগত অভ্যাস। মনে রাখবেন, গরুর গোশের রোয়াগুলো চিকন হয় আর মহিষের গোশের রোয়া হয় মোটা মোটা।

– গরুর গোশত একটু লালচে ধরণের আর মহিষের গোশত কালচে।

– গরু আর মহিষের গোশত চেনার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চর্বি। গরুর চর্বির রং হয় ঘোলাটে হলুদ আর মহিষের চর্বির রং হয় সাদা।
– নিয়মিত নির্দিষ্ট কসাইয়ের কাছ থেকে গোশত নিলে বাধা কাষ্টমার হারাবার ভয়ে তারা পারোতপক্ষে ঠকবাজী করার চেষ্টা কম করে।

– ভালভাবে চিনে কিনতে পারলে সুপার সপে বিক্রি হওয়া গোশতের চেয়ে কশাইয়ের গোশত অপেক্ষাকৃত ফ্রেশ ও ভাল মানের হয় (ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা)

– সকাল ৭-৮ টার মধ্যে গোশত কেনাটাই সবচেয়ে ভাল। তাতে গোশত ফ্রেশ থাকে আর ভাল অংশগুলোও সহজপ্রাপ্য হয়।

সবচেয়ে বড় টিপস হলো – নিজের সবোর্চ্চ বুদ্ধি খাটিয়ে ও পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে যে কোন শপিং করলে তার মান অবশ্যই উন্নততর হবে।

শিরোনামহীন

সড়কের পাশে ওখানে ছোটো একটি খেলার মাঠ ছিলো, টেনিস কোর্ট আকৃতির বা আরেকটু বৃহদায়তন। ইতিউতি ছড়ানো মলিন হলদেটে ঘাশ, এক প্রান্তে লাল ইটের পলেস্তারা খসা খর্বাকায় দেয়াল। ওতে ক্রিকেট খেলতো স্থানীয় শিশু কিশোররা। বর্ষা মৌসুমে এঁদো কাদায় ভরে যেতো। তখন ক্রিকেটের পরিবর্তে ফুটবল খেলতো তারা। কাদায় মাখামাখি টিশার্ট হাফ প্যান্ট গা’য়ে সে কী হুলস্থূল বল নিয়ে! হ্যা, দিব্যি মনে করতে পারছি, (ইত্যবসরে প্রায় এক যুগ কেটে গেছে যদিও) ওখানেই ছিলো মাঠটি, আজ বহুতল আবাসিক ভবন দাঁড়িয়ে আছে। অনেকদিন পর এলাম। মাঝেও দুয়েকবার এসেছিলাম সম্ভবত কিন্তু ইতিপূর্বে সেভাবে লক্ষ্য করিনি। আদতেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় এটা। এভাবেই মানুষের নগর বন্দর গড়ে ওঠে, উঠে আসছে। কিন্তু কেন জানি না, এ মুহূর্তে আমার বড্ড অনুতাপ হচ্ছে মাঠটির জন্য। মনে হচ্ছে, মাঠটিকে যেনো জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছে ইট কাঠ পাথরের ওই অতিকায় দালানের নিচে। আহা, সত্যিই আমি দারুণভাবে চাই যে, আবার বহুদিন পর এলে দেখবো, সেই মাঠটিই আছে। ওতে ক্রিকেট খেলছে ঘেমেনেয়ে একাকার প্রাণোচ্ছল একদল শিশু। আর যদি বর্ষায় আসি তবে এঁদো কাদায় ধুন্ধুমার ফুটবল… আরও এক যুগ পর!

গল্পের শুরু

শুরুর কথা ভাবি। সেই দিনইতো শুরু হয়েছিলো, যেদিন সূর্য দেবতা ডানা মেলেছিলো আংশিক! যুঁথিবদ্ধ আলো থেকে তুলে এনে বর্তমান; শীতের শেষে পুরনো ওমবস্ত্রের মতো বেচে দিয়েছিলাম সমুদয় ডাকনাম। বেচে দিয়েছিলাম আমিত্বের সুতোয় বোনা সৌখিন জামা আর পরিত্যক্ত চিলেকোঠা। সেদিনইতো শুরু হয়েছিল, যেদিন থেকে আমার আর কোনো ডাকনাম নেই, মাছ বাজারের আঁশটে ঝুড়িটির মতো পড়ে থাকি প্রতিটি মধ্যরাতে। এভাবেই ইথারের ধূর্ত ইশারায় একের পর এক এঁকে চলি প্রতিটি দিনের মৌলিক উড়াল।

না, আমি আজ শুরুর গল্প বলতে আসিনি, এসেছি তোমাদেরকে বিদায়ের কথা জানাতে। আমি আজ আকাশের একমাত্র বার্তাবাহক। জলের খামে পুরে দেয়া প্রতিটি বার্তা পৌঁছে দিতে হবে মাটির গহ্বরে। সেগুনবনে, জোড়াজোড়া সবুজ পাতায় পৌঁছে দিতে হবে নীলের আবেদন। শাহরিক জানালা পেরিয়ে কখনো যেতে হবে যুগল দীঘির পাড়ে কখনো বা অবিশ্রাম জলপ্রপাতে।

কোথাও কেউ জেগে নেই

একটু আগে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমেছিল। এখন ঝিরঝির বাতাস বইছে। কোথাও কেউ জেগে নেই; শুধু রিভার নাইল ছাড়া। অদ্ভুত এক অনভূতি কাজ করছে। কোন কিছুর জন্য নয়; কারো জন্য নয়! তার জন্যও নয়!

এমন রাতে আমি নিজেকে চিনি!

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই …

মৃত্যু অনিবার্য সত্য। তাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সে মৃত্যু স্বাভাবিক হোক এটুকু অন্তত মানুষের মানবিক অধিকার। আমরা এখন পদে পদে অধিকার হারাচ্ছি, হারাচ্ছি স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

চকবাজারের ঘটনার মাত্র সাঁইত্রিশ দিনের মাথায় বনানীর ভয়বহ প্রাণঘাতি আগুন। এদেশ যেন এক অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কেনো? কারা এর জন্য দায়ী? কে নেবে এসব মৃত্যুর দায়? যারা দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালো তাদের অপরাধটা কি ? এসব প্রশ্ন এখন গোটা জাতির।

বেঁচে থাকার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে, জীবন নিয়ে ভাবে, সমাজকে উপলব্ধি করে, আর জীবন সায়াহ্নে এসে অপেক্ষা করে স্বাভাবিক মৃত্যুকে বরণ করার জন্য। কিন্তু সায়াহ্নের আগেই তাকে প্রাণ দিতে হয় পদে পদে ফাঁদ পাতা অপঘাতে।

এদেশের মাটিতে প্রতিমুহূর্তে পাখির মতো অকালে ঝরছে প্রাণ। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জীবন। অথচ তার কোন সুরাহা হচ্ছে না। দুর্ঘটনার পরের কিছুদিন ফেইসবুকে স্ট্যাটাস, কাগজে কিছু প্রচার-প্রচারণা, মিডিয়ায় টকশো, সংবাদমাধ্যমে মৃত্যুর আপডেট, অতঃপর আবার সেই নীরবতা।

কতৃপক্ষের গাফিলতি কতটা নির্মম তা আজ আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা গেলেও তার প্রতিকার ফাইলচাপা পড়ে থাকে। তদন্ত কমিশন গঠন হলেও তদন্তরিপোর্ট হয় না, আর হলেও বা তা থাকে সাধারণের জানার বাইরে।

আমাদের দেশে পরিবহন দুর্ঘটনায়, বিল্ডিং ধ্বসে পড়ে এবং আগুন লেগে মৃতের সংখ্যা স্মরণকালের সকল রেকর্ড অতিক্রম করে চলেছে। সন্দেহাতীতভাবে এটা মানবতার মহাবিপর্যয় ।

মৃত্যু অবধারিত বলেই মানুষ শতবেদনায়ও তা মেনে নেয়। কিন্তু আকস্মিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু, যে মৃত্যুর জন্য মানুষের প্রস্তুতি নেই, যা মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক অথচ সতর্ক হলে অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব, তা কি করে মেনে নিতে পারে মানুষ ?

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা পেতে কি তাহলে পথে নামতে হবে ? অন্য সব অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মতোই কি এটাও আন্দোলন করে আদায় করতে হবে? তাহলে জনগনের অর্থ ব্যয়ে নগর রক্ষার দায়িত্বে কতৃপক্ষকে কি অশ্বডিম্ব পাড়ার জন্য নিয়োজিত করা হয়েছে?

আমরা আর কোন মৃত্যু চাইনা, অপঘাতে মৃত্যু নিষিদ্ধ হোক, আমরা স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা চাই। এটুকু অধিকার তো আমরা চাইতেই পারি।

এফ আর টাওয়ারে অগ্নিদগ্ধ আহত ও নিহতদের জন্য গভীর সমবেদনা।

r:আমার দেখা ব্লগের সাড়ে তিন বছরঃ ব্লগারদের ধরণ-

আমি নিজে বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরিয়া। এই বেশ একটা সময়ে নানা ধরনের ব্লগারের দেখা পাইয়াছি। তাহাদের নানা ধরণ লইয়াই আজকের পোষ্ট!

বাংলা ব্লগে মোটামুটি পাঁচ ধরনের ব্লগার আছেন। (মতান্তরে ছয় ধরনের)। যাহারা সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে ব্লগে উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে যাইতেছেন।

১. আম জনতার ব্লগারঃ
ইহারা রেগুলার পোষ্ট করিয়া থাকেন, কখনো দিনে দুইটা কিংবা তিনটাও হইয়া যায়। অন্যের ব্লগে মন্তব্য করিয়া থাকেন, নিজের ব্লগেও মন্তব্যের জবাব দিতে বিলম্ব করেন না। খুঁজে খুঁজে অন্যের পুরানো লেখায়ও মন্তব্যে করেন। ইহারা মোটামুটি আমুদে, তেমন কোন কাজকর্ম ইহাদের থাকে না বলে ইহারা সারাদিন ব্লগে পড়ে থাকতে পারেন।

২. জনতার মাঝে নির্জনতার ব্লগারঃ
ইহারা শুধুমাত্র নিজের পোষ্টে মন্তব্য পেলে অমনি ধরে সেটাতে উত্তর দেন। অন্যের পোষ্টে মন্তব্য করেন না। ইহারা এক সময়ের সেলিব্রেটি ব্লগার ছিলেন, তবে এক্ষন আর তাহাদের ব্লগে মাক্ষীও বসেন না।

৩. উদাস ব্লগারঃ
ইহারা যে কবে কোনদিন ব্লগে লগিন দিয়েছিল ভুলিয়া যান, যখন মনে হয় অনেকদিন ব্লগে যাওয়া হয় না তখন পোষ্ট দিয়ে সাথে সাথেই আবার লগ আউট করিয়া দেন এবং ইহা নিশ্চিত থাকে যে আগামী ঈদের চাঁদ দেখিবার পূর্বে তাহাদের মুখ আর দেখা যাইবে না।

৪. ওয়াচম্যান ব্লগারঃ
ইহারা সারাদিন সারারাত ব্লগে লগিন দিয়ে থাকেন– কিন্তু না কোন পোষ্ট করেন, না কোন মন্তব্য করেন- না কারও লেখায় লাইক দেন ! ইহারা যে কাহার উপর এমন অভিমান করিয়া থাকেন আর কে যে আসিয়া উহাদের রাগ ভাঙ্গাইবেন তাহা কেহ না জানে।

৫, আপদকালীন সময়ের ব্লগারঃ
ইহাদের নাম যেমন উদ্ভট হয় কাজকর্মও তেমন উদ্ভট হয়। সারা বছর এদের কোন হদিস থাকে না, কিন্তু যদি দেখা যায় যে ব্লগে কোন ধরনের কোন ক্যাচাল লাগিয়াছে তাহলেই কেবল ইহাদিগকে দেখা যায়। এরা যে কে কার পক্ষ হয়ে কথা বলে সেটাও বোঝা দায় ! ইহারা যে মাল্টিধারী ব্লগার তাহা বুঝিতে রকেট সায়েন্স পড়িতে হয় না।

ফেসবুকের লাইক কমেন্ট সাহিত্যের গুণমান নির্ধারণ করে না

বিতর্ক – বিপক্ষে
______________

কোন লেখা কিংবা ভাবনা অথবা ছবি আমরা কেন ফেসবুকে পোস্ট করি? লাইক কমেন্ট পাওয়ার জন্য। তাহলে লাইক কমেন্ট লেখার গুণমান নির্ধারণ করবে না কিভাবে? ছবির মর্যাদা বাড়াবে না কিভাবে?

যে লাইক কমেন্টের জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকি, লেখাটি পোস্ট করে একটু পরে পরে ফেসবুক খুলছি আর বন্ধ করছি শুধু লাইক কমেন্ট দেখার জন্য, ধন্যবাদ জানানোর জন্য সেখানে লেখার গুণমান কিভাবে নির্ধারিত নয়?

যে লেখে সেইই জানে তার লেখা কেমন। পোস্ট করার সাথে সাথে তার লেখায় লাইক কমেন্টের উপর সে আন্দাজ করতে পারে লেখাটি কেমন। নেট খরচ করে না পড়ে লেখায় কমেন্ট বা লাইক দেয় দু চার শতাংশ। তাও মুখ চেনা কিংবা পরিচিতির জন্য। বাদ বাকী অনেকেই না পড়ে লাইক দিলেও কমেন্ট করে না।

তাছাড়া কমেন্টের মধ্যে কিছু কমেন্ট অসাধারণ দারুণ খুব ভালো ইত্যাদির বাইরেও কিছু বিরূপ কমেন্ট থাকে। যা দেখে লেখক ঠিক বুঝে নেয় তার কী করা উচিত। বেশির ভাগ লেখক নিজেদের ইয়ে ভাবে। তারা যা লেখে তাই ঠিক এবং সেরা। সেসব হাতে অবশ্য গোনা। যারা সবে শিখছে লিখছে আর ভালো লিখতে চায় তাদের জন্য এই ফেসবুকের লাইক কমেন্ট আশীর্বাদের মত। চেনা নেই জানা নেই শুধু লেখা পড়ে নেট খরচ করে যে একটা লাইক দিল একটা ছোট্ট কমেন্ট ‘দারুণ’ লিখল সে আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয়।

আর একটু বিরূপ কমেন্ট করলে আরও বেশি আনন্দ হয় যে তিনি লেখাটি পুরো পড়েছেন তাই আমাকে লেখক হিসেবে গ্রাহ্য করেন না। বা আমার লেখাটি সাহিত্য নয়। কিংবা লেখাটিতে কোন লাইক কমেন্ট নেই তার মানে আমি আমার লেখাটি সাহিত্যের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি নি। তাহলে গুণমানের হিসেবে লাইক কমেন্ট একশত ভাগ এগিয়ে।

আর যারা সুখ্যাত বিখ্যাত লেখক সাহিত্যের ধারণ বাহক মনে করেন তারা লাইক কমেন্টের আশা যেমন করেন না, তেমনি তাদের বই বিক্রি নিয়েও তারা ভাবেন না। তারা লিখতেই থাকেন। আর ফেসবুকে পোস্ট করেন অথবা করেন না।

শুভ জন্মদিন

শুভ জন্মদিন
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

এসো হে পঁচিশে জানুয়ারী! পুনর্বার,
শুভবার্তা পৌঁছে দাও কর্ণে সবাকার।
আজিকার দিনে মোর হইল জনম,
কবিতায় লিখে কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।

শীতের কুয়াশা যত কাটুক এবার,
পুলক জাগুক মনে আজি সবাকার।
বসন্তের আগমনে কবি আজি কয়,
মনে দাও সুখ শান্তি, সাহস দুর্জয়।

পুলকিত ধরা আজি শুভ জন্মদিনে,
আলোময় সারাবিশ্ব আঁধার বিহনে।
তরুশাখে বিহগেরা করিছে কুজন,
সোনালী কিরণ আজি ছড়ায় তপন।

এসো হে পঁচিশে জানুয়ারী বারেবার,
মুছে যাক সব কালো কাটুক আঁধার।
শীতের জড়তা যত কাটুক এবার,
আনো কঠিন উত্তাপ বসুধা মাঝার।

শুভ জন্মদিন আজি সকলেই কয়,
আপনবেগেতে হেরি বহিছে অজয়।
শুভেচ্ছার বিনিময়ে দিন হয় শুরু,
সবাকারে তাই আমি কহি জয়গুরু!

ঘন ঘন আসে বার্তা কেহ ফেসবুকে,
শুভ জন্মদিন কেহ কহে হাসিমুখে।
শুভ জন্মদিন যেন আসে বারেবার,
সৃষ্টি হোক নব-রূপে নব কবিতার।

কবিতার আসরের যত কবিগণ,
শ্রদ্ধা আর নমস্কার করুন গ্রহণ।
এসো হে পঁচিশে জানুয়ারী বসুধায়,
লিখেন লক্ষ্মণ কবি তাঁর কবিতায়।

ভাবনা

আপনার ভাবনাকে আপনি কতদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন? যতদূর আপনি ভাবনার গণ্ডি তৈরি করতে পারবেন।
এই ভাবনার গণ্ডি আপনি কতদূর প্রসারিত করতে পারবেন? যতদূর আপনি আপনার জ্ঞান বোধ বুদ্ধি প্রসারিত করতে পারবেন।
এই জ্ঞান বোধ বুদ্ধি আপনি কতদূর প্রসারিত করতে পারবেন? যতদূর যত বেশি আপনি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন।
এই শিক্ষা আপনি কতদূর কতটা বেশি প্রসারিত বা জমা করতে পারবেন। যতদূর বা যতটা বেশি আপনি প্রকৃতির থেকে মানুষের থেকে বই থেকে আপনার দুচোখ খোলা জীবন থেকে গ্রহণ করতে পারবেন।
ভাবনা হল পুঞ্জীভূত জীবনের দু এক ফোঁটা রস। সেই ভাবনার মধ্যে সৃষ্টি থাকলে অথবা সৃষ্টিমূলক কিছু ভাবলে তার অনেকদিক অনেক মুখ তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু ভাবনার মধ্যে ধ্বংসমূলক কিছু থাকলে তার মুখ একটা। শুধু ধ্বংস বা শেষ। যার আর অন্য কোন ভাবনা নাই। দিক নাই। দিশা নাই।
কিন্তু সৃষ্টির শুরু নাই শেষ নাই শুধু তৃপ্তি আছে। আদিগন্ত জীবন আছে। তাই ভাবুন। ভাবার জন্য জীবন সঞ্জয় করুন। তার থেকে ভাবনার নির্যাস বের করে জীবনকে রসসিক্ত করুন।

আপনার নাম আপনার সম্বন্ধে ঠিক কী বলছে দেখে নিন

আপনার নাম আপনার সম্বন্ধে ঠিক কী বলছে দেখে নিন

নিউমেরলজি’র কথা হয়ত সকলেই শুনেছেন। অনেকেই এই বিদ্যাকে বিশ্বাস করেন। আবার অনেকেই মনে করেন যত সব ভুল ভাল কথা। কিন্তু সব থেকে বড় কথা হল বিশ্বাস না থাকলে যে কোনও কাজই সঠিকভাবে করা যায় না। শুধুমাত্র নিউমেরলজির ক্ষেত্রেই নয়। জীবনের প্রতিটা পরীক্ষাতেই যদি আপনার নিজের প্রতি বিশ্বাস না থাকে তাহলে সেই কাজে সফল হওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। ধরুণ আপনি চাকরির পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন, তখন নিশ্চয়ই বেরনোর সময় বাবা-মায়ের আশির্বাদ অবশ্যই নেবেন। কারণ আপনি জানেন এই আশির্বাদের প্রতি আপনার বিশ্বাস আছে। আবার ঠিক তেমন ভাবেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হওয়ার দিনটি কেমন যাবে। সেটাও আগের দিন ইন্টারনেট থেকে পাওয়া সহজলভ্য জ্যোতির্বিদ্যার বিভিন্ন সাইট থেকে দেখে নেন অনেকেই।
এবার দেখে নিন ঠিক কীভাবে গণনাটি করা হয়ে থাকে…
ধরুন আপনার নাম হল ARUN
A=১, R=২, U=৬, N=৫

এবার এই সংখ্যাগুলিকে যোগ করতে হবে, ১+২+৬+৫= ১৪
যোগফল দুই সংখ্যার হলে তাকে আবার যোগ করতে হবে। যেমন ১+৪=৫। তাহলে আপনার নামের সংখ্যাটি হল ৫।
এবার দেখে নিন নিউমেরলজি আপনার নাম সম্পর্কে ঠিক কি বলছে…

নামের সংখ্যা ১ হলে
খুবই উচ্চাকাঙ্খী হলেন আপনি। চলতে গিয়ে আপনাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়ে হয়। কিন্তু আপনার মধ্যে সেই বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার প্রবল ক্ষমতা বর্তমান। যাতে কেউই আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারে না।

নামের সংখ্যা ২ হলে
আপনাকে চাঁদের সঙ্গে তুলনা করা হয়। অনেক সময় আপনি নিজের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। যার ফলে আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে এবং ব্যক্তিগত জীবনে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

নামের সংখ্যা ৩ হলে
কাজও যেমন করেন, তেমন সফলতাকে উদযাপনও করেন সফলভাবে। অন্যদের থেকে তাড়াতাড়ি নিজের লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার এক অদ্ভুত দক্ষতা আছে আপনার মধ্যে।

নামের সংখ্যা ৪ হলে
আপনি চট জলদি কাউকে আপনার বন্ধু বানান না। কিন্তু যখন কাউকে আপনি নিজের বন্ধু বানিয়ে ফেলেন তার জন্য জীবনও দিতে পারেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৫ হলে
আপনি খুবই বুদ্ধিমান এবং সমস্ত কাজ খুব চট জলদি করে ফেলতে পারেন। যে সব কাজ করতে খুব বেশি সময় লাগে, সেই কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতেই বেশি পছন্দ করেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৬ হলে
আপনার আশে পাশের সকলের থেকেই সম্মান পেতে চান আপনি। আবার অনেক সময় সেই সম্মান খুইয়ে ফেলার মতো কাজও করেন। উচ্চাভিলাষী হওয়ার জন্য প্রচুর অপব্যয়ও করে ফেলেন।

নামের সংখ্যা ৭ হলে
আপনার উদ্ভাবনী শক্তি প্রবল। তবে শিল্পকলার প্রতি আগ্রহ সব থেকে বেশি। কিন্তু পুরনো পন্থাকে অবলম্বন করে চলতে প্রবল দ্বিধা আপনার।

নামের সংখ্যা ৮ হলে
আধ্যাত্মিকতার প্রতি অদ্ভুত ইচ্ছা আছে আপনার। এছাড়া যেকোনও দায়িত্বপূর্ণ কাজকে সুদক্ষভাবে করে তুলতে পারেন আপনি।

নামের সংখ্যা ৯ হলে
রাগ যেন আপনার ঠিক নাকের ডগায় থাকে। আবার খুব তাড়াতাড়ি রাগ ভেঙেও যায়। যতই রাগ করুন না কেন যে কোনও কাজকে সঠিক সময় শেষ করার জন্য আলাদা একটা খ্যাতি আছে আপনার।

তাহলে এবার দেখে নিন ঠিক কীভাবে নিউমেরলজিতে হিসেব করা হয়। এখানে কোন বর্ণমালার সঙ্গে কোন সংখ্যা যায় তার লিস্ট দেওয়া হল…

_____________
তথ্য সুত্র : ২৪ ঘন্টা

শিশু তো শিশুই

এই তো মাসখানেক আগের একটি ঘটনা। রাত আটটা বেজে থাকবে। ঢাকার কোথাও সরু একটি গলি পেরচ্ছিলাম। এ সময় দেখলাম, বাঁ দিকে একটা সাইকেল হঠাৎ তীব্র গতিতে সড়কের মোর ঘুরে আমার দিকে আসতে লাগলো। সাইকেল আরোহী এগারো বারো বছরের শিশু। বেশ খানিকটা দূরেই ছিল, তারপরও অস্বাভাবিক দ্রুত গতি দেখে আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লাম। চেয়েছিলাম, ও ওর মতো পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে নিয়ে যাক। দেখলাম, ও আরে আরে করতে করতে বেসামাল হয়ে সবেগে সাইকেলটা আমার ঠিক উরুতে লাগিয়ে দিলো। আমি উপস্থিত মুহূর্তে কিঞ্চিত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম, এরকম কিছু একটা হতে পারে, এ জন্য পা যথাসম্ভব দৃঢ় করে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম। আর যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই হলো। ওর অসাবধানী বেপরোয়া সাইকেল চালানোর কারণে সরাসরি দুর্ঘটনার স্বীকার হলাম। ব্যায়াম করা শক্তিশালী পা হবার দরুণ খুব বড় কোনও বিপদ হয়নি যদিও, তারপরও অতো গতিসম্পন্ন সাইকেলের ধাক্কা, সমস্ত পা ব্যথা করতে লাগলো। সামনে কাচুমাচু মলিন পাণ্ডুর মুখে দাঁড়ানো এগারো বারো বর্ষীয় শিশু সাইকেল আরোহী। আমি ওকে বললাম, ‘পুরো রাস্তার দুদিকে সম্পূর্ণ খালি আর আমি একা এখানে একজন মানুষ দাঁড়ানো। সাইকেলটা কি না লাগিয়ে নিয়ে যেতে পারতে না? আর তোমার সাইকেলে কি ব্রেকও নাই নাকি? যথেষ্ট সময় পেয়েছিলে ব্রেক করার।’ ও সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার। ভীত শীতল মুখে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। দেখলাম, পাশের দুয়েকজন লোক হইহই করে ছেলেটিকে ভর্ৎসনা করতে লাগলো। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে ভেবে আমি বললাম, ‘যাও। সাবধানে দেখে শুনে সাইকেল চালাও। মোরে টোরে একটু স্লো চালিয়ো।’ ও সাইকেলে উঠতে লাগলো। এ পর্যন্ত কিন্তু একবারের জন্যে আমাকে সরিও বলেনি পিচ্চি! হা হা হা। আবার বললাম, ‘সাবধানে চালিয়ো। ঢাকা শহর, সবখানেই মানুষ।’ এবার দেখলাম ও উল্টো আমার ওপরই বিরক্তিসহকারে ‘উহ্’ শব্দ করলো। তারপর সা সা করে আগের থেকেও আরও দ্রুত বেগে সাইকেল চালিয়ে মুহূর্তেই অনেকটা দূরে চলে গেল। আমি কিঞ্চিত আহত পা’য়ে খুরিয়ে খুরিয়ে নিজের মতো সড়কে হাঁটতে লাগলাম। এ সময় পাশের একজন পথচারী বললো, ‘থাবরাইলেন না কেন?’
‘না না একদম বাচ্চা মানুষ। কী করবো!’ বললাম আমি।
‘ধুর মিয়া, কীয়ের পোলাপাইন মিয়া। জানেন ওইগুলার মইধ্যে শয়তানি দিয়া ভরা। বাইরাইয়া সোজা করন লাগতো।’ রাজ্যের বিরক্তি ও উষ্মা নিয়ে আবার বললো ভদ্রলোক। আমি আর কথা বাড়ালাম না, নীরবে হাঁটতে লাগলাম।

হতাশা


এই মূহুর্তে মানসিক চাপে কে কে আছেন? হাত তুলুন..
এমন প্রশ্ন করা হলে হয়ত শতকরা আটানব্বই জনই হাত উঠিয়ে বলবেন- আমিইই…
আচ্ছা এটা কি ছোঁয়াচে রোগ? নয়ত সবাই কেন একই রোগেই আক্রান্ত?
“সংসার সাগরে সুখ-দুঃখ তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা…”
-এই ভাব সম্প্রসারণটি না পড়ে স্কুলের গন্ডি পেরোতে পেরেছেন এমন কারও ভাগ্য হয়েছে বলে আমার মনে হয়না। সুতরাং বলা যায় খুব অল্প বয়সেই স্কুল আমাদের জানিয়ে দিয়েছিল –
‘জীবন হল সুখ-দুঃখের পালাবর্তন।’
কিন্তু এটা জানার পরও কেন আমাদের সবার মাঝে দুঃখ জয়ের দৃঢ়তা জন্ম না নিয়ে হতাশা জন্ম নেয়? সমস্যা সমাধানের উপায় না খুঁজে স্রষ্টার অপার সম্ভাবনাময় সৃষ্টি এই ‘মানব মন আর মস্তিষ্ক’ বিকল হয়ে হতাশার মাঝে ডুবে যায়?
সবচেয়ে মজার বিষয় হল আমরা মানবরা সকল প্রাণীকূলের মধ্যে বিচক্ষণ আর বুদ্ধিমান প্রাণী অথচ আজ পর্যন্ত মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীকে হতাশা, মানসিক চাপ এসবে ভুগতে দেখা যায়নি। আমাদের জীবন আর অন্য প্রাণীদের জীবন তুলনা করে দেখুন কারা বেশি উন্নত, নিরাপদ আর আয়েশি জীবন যাপন করছে?
উত্তর- মানুষ।
তাহলে সহজ ভাবে বললে দাড়ায় মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য সকল প্রাণীরই প্রাত্যহিক জীবন নিত্য নতুন সমস্যায় ভরা এরপরও ওরা টিকে থাকে এসবের সাথে লড়াই করে। একজন মানুষকে যদি জীবনটা পাল্টে একটি কীট অথবা পাখির জীবন দেয়া হয় ভাবুন তো ফলাফল কেমন হতে পারে? দেখা যাবে ক্ষুধা-তৃষ্ণা-মৃত্যু এসবের সাথে লড়তে গিয়ে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে কিছুদিনের মধ্যেই।
বলতে পারেন কেন?
কারণটা আমিই বলছি।
আপনার আশে পাশে একটু চোখ বুলিয়ে নিন। আপনার চারপাশের মানুষ গুলো কি সবাই একই রকম?
-না।
আমরা মানব জাতির মাঝেই কত শ্রেণী বিন্যাস! মেধা, বংশ, গায়ের রং, পেশা, চরিত্র, টাকা-পয়সা, রুচি, শিক্ষা প্রত্যেকটা বিষয়েই ভাল-মন্দ-উঁচু-নিচু কত বৈষম্য! আপনার মেধা কম, গায়ের রং ভালোনা, তৃতীয় শ্রেণীর পেশা, কম শিক্ষা যেদিকেই আপনার ঘাটতি থাকুক না কেন আপনার সমাজ তথা সমাজের মানুষ আপনাকে প্রতিনিয়ত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে আপনার অপূর্ণতাকে। যার যত বেশি অপূর্ণতা তাকে তত বেশি কথার খোঁচা নামক বুলেট হজম করতে হয়। আর এই বুলেটে জর্জরিত মানুষগুলোর পরিণতি দাড়ায় হতাশায়। পশু-পাখিদের মাঝে এসব বৈষম্য নেই। ওরা একজন আরেকজনকে ছোট করে মজা নেয়না। ওদের মাঝেও ঝগড়া হয়, মারামারি হয় কিন্তু উদ্দেশ্য একটাই বেঁচে থাকা…
সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোই একজন আরেকজনের মাঝে হতাশার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে পালা করে। কি লাভ হচ্ছে এতে বলতে পারেন? আরেকজনের অপূর্ণতাকে পুঁজি করে নিয়মিত তাকে কথার অনলে না পুড়িয়ে দিন না তাকে একটু আশার আলো…একদিন পাশে বসে তার মনে চেপে রাখা হতাশার গল্পটি শুনুন আর মাথায় হাত রেখে বলুন – তুমি পারবেই। বিশ্বাস করুন আপনার এই ছোট্ট কাজটি বদলে দিবে ঐ মানুষটির জীবন আর পুরো সমাজকে। হোক সে আপনার বোন-মা-বাবা-ভাই-বন্ধু কিংবা প্রতিবেশি। প্রতিদিন এভাবে অন্তত একটি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে দেখুন না। দেখবেন একদিন ঝলমলে সকালে পাখির কলকাকলি ছাপিয়ে চারদিক মুখরিত হতাশামুক্ত সুখি মানুষের সরব হাসিতে।
জীবনে দুঃখ-অপূর্ণতা-ব্যর্থতা এসব থাকবেই। তাই বলে নিজেকে কখনও অযোগ্য ভাববেন না। আপনি স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এটাই আপনার বড় যোগ্যতা।

উপস্থাপনার পূর্বপ্রস্তুতি

যারা শিল্পসাহিত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, অভিনয়, রাজনীতি এমন কি শিক্ষকতা বা প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের কোনো না কোনো সময় মঞ্চে উঠতে হয়। লাইমলাইটে দাঁড়াতে হয়। মাইক্রোফোনে কথা বলতে হয়। এই কথা বলা বা উপস্থাপনা যদি দর্শক-শ্রোতাকে আকৃষ্ট বা মুগ্ধ করে তাহলে তো সমস্যা নেই। কিন্তু একটু অমনোযোগ বা সামান্য অসতর্কতায় যদি দর্শক-শ্রোতা বিরক্তবোধ করেন তাহলে সকল প্রস্তুতি ও উদ্যোগ পণ্ড হতে বাধ্য। তখন যিনি উপস্থাপনা করলেন, নিজেকে ক্ষমা করতে পারেন না। আত্মদংশনের শত হুল মনের মধ্যে বিঁধতে থাকে। যতদিন মনে পড়ে ততদিন নিজের মনে বিব্রত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তাই উপস্থাপনার ক্ষেত্রে পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া ও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

উপস্থাপনা কি?
উপস্থাপনা একটি শিল্প। কেউ কেউ একটু আধটু উপস্থাপনা করতে করতে সময়ে বেশ দক্ষ হয়ে উঠেন। ঘন্টার পর ঘন্টা দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে রাখতে পারেন। এটি কোনো মায়াজাল বিস্তারকারী ব্যাপার নয়। যে-কেউ খুব সহজভাবে উপস্থাপনা করতে পারেন। দিনযাপনে যেমন স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন ঠিক তেমনভাবে বেশ সহজে উপস্থাপনা চালিয়ে যেতে সক্ষম। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আড্ডা বা আসরে চমৎকার কথা বলে চলেন। আড্ডা জমিয়ে রাখার ক্ষমতা অপরিসীম; কিন্তু মঞ্চে উঠতে ইতস্তত করেন। ভয় পান। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বোকা হয়ে তোতলাতে থাকেন। পরবর্তীতে এই কাজ করতে আর আগ্রহী থাকেন না। অথচ কিছু প্রস্তুতি নিলে যে-কেউ চমৎকার ও আকর্ষণীয় উপস্থাপনা করতে সক্ষম হতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

সাধারণভাবে উপস্থাপনা হলো সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য সামনে রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো তথ্য বা অনুভূতির প্রকাশ। এই তথ্য বা অনুভূতি নানান মাধ্যমের হতে পারে এবং তা একটি ধারানুক্রমের নিয়ম অনুসরণ করে সম্পাদিত হয়। এটি মৌখিক হতে পারে। দর্শনযোগ্য হতে পারে, যেখানে ছবি বা চিত্র বিশ্লেষণমূলক বর্ণনা থাকতে পারে। এছাড়া উপস্থাপনা হতে পারে, লিখিত, সঙ্গীত, আবৃত্তি, অভিনয় অথবা সার্বিকভাবে অডিও-ভিজুয়াল। উপস্থাপনা একইসঙ্গে শোনা ও দেখার বিষয় হলেও বেতারে শুধুমাত্র শোনার বিষয়টি থাকে। মঞ্চ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে দর্শকশ্রোতার সরাসরি যোগাযোগ ঘটে। আপনি একটু সতর্ক দৃষ্টি রাখলে তাঁদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া খুব সহজে অনুধাবন করতে পারেন। তাদের ইতিবাচক অবস্থান আপনাকে উৎসাহিত করে তোলে। বিপরীত অবস্থান হতোদ্যম করে দেয়। সেক্ষেত্রে আপনার চলমান উপস্থাপনা আরও খারাব হয়ে যেতে বাধ্য।

উপস্থাপনার উদ্দেশ্য:
যেভাবেই বিশ্লেষণ করা যাক না কেন প্রতিটি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। এগুলোকে এভাবে বলা যেতে পারে। ১. কোনো ঘটনা, গবেষণা, আবিষ্কার কিংবা অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। ২. কোনোকিছুর সেবা প্রদান উপলক্ষ্যে অর্থাৎ সার্ভিস ডেলিভারির বিষয় প্রতিপাদন করা। ৩. কোনোকিছুর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা এবং একইসঙ্গে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা। ৪. কোনো পণ্য সম্পর্কে বিক্রয় ও সেবার উপর বিস্তারিত ধারনা প্রদান। ৫. কোনো সংঘ বা দল বা এজেন্সি বা দপ্তর সম্পর্কে প্রতিনিধিত্বমূলক বক্তব্য প্রদান। ৬. কোনো বিশেষ বিশ্বাস ও মনমানসিকতার বিষয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু বলা। ৭. কোনো বিশেষ দাবি, সমাধান প্রস্তাব, চিন্তা বা কাজের পথ নির্দেশনার জন্য বক্তব্য প্রদান এবং ৮. কোনো বিনোদনমূলক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মনোজ্ঞ উপস্থাপনা।

উপস্থাপনার সাত দিক:
যে-কোনো উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আয়োজনকারীকে কতগুলো বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়। এগুলোকে পর্যায়ক্রমে এভাবে বলা যায় যে, উপস্থাপনাটি কেন বা কী জন্য নির্ধারণ করা হচ্ছে? সেটি কে বা কারা করবেন? উপস্থাপনাটি কাদের বা কোন লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীর জন্য? কী বিষয়ে উপস্থাপনা? সেটি কোন সময়ে করা হবে? কোন স্থানে বা কোথায় এই আয়োজন? উপস্থাপনাটি কোন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের সামনে খুব সহজে একটি প্রোগ্রামের সার্বিক দিক দৃশ্যমান হয়ে উঠে। যেমন ধরা যাক, একটি কবিতাপাঠের প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করা হবে। তাহলে দেখা যায়, অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা কোনো একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে করা হয়েছে। তাহলো কবি ও তার কবিতাকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা। অন্যতম এই লক্ষ্যের সঙ্গে দ্বিতীয় বা পরোক্ষ উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের মধ্যে কবিতাকে জনপ্রিয় করে তোলা। এই প্রোগ্রামের বিভিন্ন অংশে প্রমুখ ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট করা আছে। তাঁরা কবির অথবা একাধিক কবির কবিতা পাঠ করবেন। কবি নিজেও তাঁর কবিতা পাঠ করতে পারেন। যিনিই করুন এক বা একাধিক উপস্থাপক সার্বিক অনুষ্ঠান দর্শকশ্রোতার মাঝে তুলে ধরেন। এই অনুষ্ঠান কবিতাপ্রেমিক সকল ব্যক্তির জন্য উন্মুক্ত। অনুষ্ঠানের মূল বিষয় জনৈক কবির কবিতা পাঠ এবং প্রাসঙ্গিকভাবে বিষয়সংশ্লিষ্ট আলোচনা থাকতে পারে। অনুষ্ঠানটির একটি নির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ ঠিক করা থাকে যেমনভাবে কোথায় অর্থাৎ কোন্ ভেন্যুতে হবে সেটিও নির্ধারিত। এখন বিবেচ্য বিষয় কবিতপাঠের এই আয়োজন কোন প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করা হবে যা দর্শকশ্রোতাকে আনন্দ দেবে একইসঙ্গে তাঁকে ভাবার ও স্ব-ভূমিকা রাখার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। অনুষ্ঠানটি কি সাধারণভাবে করা হবে নাকি কিছু অলঙ্করণ করা হবে? যেমন: ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এফেক্ট, ভিজুয়ালাইজেশন এবং অংশ্রগহণমূলক পদ্ধতি রাখা হবে কি না? বস্তুত একটি অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রাম আয়োজন করার ক্ষেত্রে আয়োজক বা আয়োজকগণের নিজস্ব মেধা পছন্দ-অপছন্দ, দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি অনেক কাজ করতে পারে। দক্ষ আয়োজক বা উদ্যোক্তার জন্য যেমন একটি অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হতে পারে তেমনভাবে একজন দক্ষ উপস্থাপকের মাধ্যমে দুর্বল অনুষ্ঠান বিশেষভাবে প্রশংসা কুড়িয়ে আনতে পারে ও জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

উপস্থাপকের পূর্বপ্রস্তুতি:
যে-কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে উপস্থাপকের পূর্বপ্রস্তুতি থাকে। এটি করা থাকলে উপস্থাপনার গুণে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও সফল হয়। উপস্থাপনার সাতদিক বিবেচনায় এনে আমরা যদি নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি একটু দৃষ্টি দিই তাহলে উপস্থাপনা সাবলীল হবে এবং যে-কোনো ভঙ্গুরতা এড়ানো সম্ভব। যেমন:

১. নিজের পোশাক ও অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। কোন ধরনের পোশাক পরবেন, আপনার হাঁটাচলা, নড়াচড়া, কথা বলা সবকিছুতে স্বাচ্ছন্দ্য আছে কি না পরখ করুন। গলা শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে পানি খেয়ে নিন। অহেতুক উষ্ণতা বা গরমবোধ যাতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিন। উত্তেজক খাদ্য পরিহার করুন। অতিরিক্ত মেকআপ না নেয়া সবচেয়ে ভালো। আত্মবিশ্বাসী থাকুন। তবে কখনো জ্ঞানীর ভূমিকা নিতে যাবেন না।
২. যে বিষয়ে উপস্থাপনা করবেন সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা নিন। যদি অতিরিক্ত গবেষণার আবশ্যক হয় তা সম্পন্ন করুন। সময় সম্পর্কে সচেতন থাকুন অর্থাৎ কতটুকু সময় ধরে কথা বলা দরকার তা ঠিক করুন। এই উপস্থাপনার মাধ্যমে আপনি কি একটি অথবা তারও বেশি বার্তা পৌঁছুতে আগ্রহী?
৩. কারা এই অনুষ্ঠানের দর্শক শ্রোতা হয়ে এসেছেন? কী জন্য এবং কিসের আগ্রহে তাঁরা এসেছেন? সংখ্যায় তাঁরা কত হতে পারে? তাঁরা কি আপনার ভাষা ও কথা সহজভাবে বুঝতে পারেন অর্থাৎ আপনি কি তাঁদের কাছে আপনার বক্তব্য সঠিকভাবে নিয়ে যেতে সক্ষম?
৪. প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানটি কোথায় আয়োজিত হচ্ছে? সেখানের আসন ব্যবস্থা ও মঞ্চ কেমন? দর্শক-শ্রোতাদের প্রতি আপনার বক্তব্য সঠিকভাবে পৌঁছুনোর সুব্যবস্থা আছে কি না? বিদ্যুৎ ও আনুষঙ্গিক সহযোগগুলো আছে কি না? উপস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় অডিও-ভিজুয়াল মাধ্যমগুলো সচল বা কর্যকর আছে কি? প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান ঘোষিত সময়ে আয়োজন করা গেলে দর্শক-শ্রোতাকে বিরক্তির হাত থেকে রক্ষা করে যা একজন উপস্থাপকের জন্য একটি ইতিবাচক সুবিধা।
৫. অনুষ্ঠানের সঙ্গে আপনার উপস্থাপনার বিষয়টি মানানসই আছে কি এবং কিভাবে তা ভেবে দেখা দরকার। দর্শক-শ্রোতা যাতে ক্লান্তি বোধ না করেন তা দৃষ্টিতে রাখা। যদি তেমন হয়ে থাকে তাহলে তাঁদের উজ্জীবিত করার জন্য অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলে যায় এমন বিকল্প উপস্থাপনার প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
৬. কিভাবে উপস্থাপনা করছেন? মাইক্রোফোনে? কোনো ওভারহেড প্রজেক্টর বা অন্যকোনো অডিও-ভিজুয়াল ব্যবহার করে থাকলে আগে থেকে তার অপারটিং পদ্ধতি শিখে রাখুন।
৭. দর্শকশ্রোতাদের কাছ থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছেন তার একটি আনুমানিক চিত্র মনে মনে আঁকতে পারেন। অথবা তাঁদের মাঝে যে প্রতিক্রিয়া তৈরিতে উপস্থাপনা করছেন তা অনুমান করুন ও উদ্বুদ্ধ হোন।

মূলত যিনি উপস্থাপনা করবেন তাকে সবদিক থেকে চিন্তা করে সাবলীল হতে হবে। নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আনতে হবে। মঞ্চে এমনভাবে দাঁড়ানো যাবে না যাতে আপনাকে বোকা বোকা লাগে আবার খুব বেশি অহংকারি মনে হয়। সাধারণত উপস্থাপনারে ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় যে, মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা যাচ্ছে, নিজেকে বোকা দেখাচ্ছে বলে ধারনা হতে থাকে, অহেতুক তাড়াহুড়োভাব এবং ভুল হয়ে যায়। সর্বোপরি দর্শকশ্রোতা বিরক্তবোধ করছেন বলে মনে হতে থাকে।

সেক্ষেত্রে আপনি নিজের জন্য আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এই ব্যবস্থা নিতে পারেন: ১. আপনি যোগ্য এবং দক্ষ বলে উপস্থাপনার কাজটি করতে এসাইন্ড হয়েছেন। ২. দর্শক-শ্রোতা আপনার কথা শুনতে আগ্রহী। ৩. তাঁদের মধ্যে আপনার চেয়ে অনেক জ্ঞানী ও দক্ষ ব্যক্তি থাকলেও আজ তাঁরা আপনার পক্ষে আছেন। ৪. কোনো বিষয়ে মতদ্বৈততার মানে এই নয় যে, তাঁরা আপনাকে আক্রমণ করছেন।

যা করবেন:
১. মঞ্চে উঠে সবচেয়ে আগেই দর্শকশ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানের বিষয়ে দুটো কথা বলবেন।
২. যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী এবং ইতিবাচক মনোভঙ্গীর প্রকাশ করবেন।
৩. শুরু করার আগেই মনে মনে একটি ধারানুক্রম সাজিয়ে নিন যে, কী কী বিষয় এবং কখন কখন বলবেন।
৪. মূল অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ সময়ের কতটুকু অংশে নিজের উপস্থাপনা রাখবেন তা পরিমাপ করে নিন।

যা করবেন না:
১. কখনো ওজর তুলবেন না। দুঃখ প্রকাশ করবেন না। কিংবা নিজের দুর্বলতা বা সবলতা সম্পর্কে বলবেন না। নিজেকে হাস্যকর রূপে হাজির করবেন না।
২. এলোমেলো এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে কথা বলবেন না।
৩. দর্শক-শ্রোতাদের প্রতি কোনো অভিযোগ করবেন না। তাঁদের কোনো কৃত কাজের উল্লেখ করবেন না।
৪. সমাজে বলা অসঙ্গত এমন কৌতুক বা উপকরণ পরিবেশন করবেন না।
৫. এভাবে উপস্থাপনা শুরু করবেন না যে, ‘প্রিয় দর্শক-শ্রোতা এবার আমি আপনাদের সে বিষয়টি বলতে যাচ্ছি যা আমাকে বলতে বলা হয়েছে যে,… ইত্যাদি ইত্যাদি।’
৬. এমন ভাব নেবেন না যাতে বোঝানো হয় যে, আপনি সবকিছু জানেন। এমন কি যে-কোনো যুক্তিতর্কে আপনি অবশ্যই বিজয়ী হবেন।
৭. দর্শকের সারিতে থাকা সুধিসমাজের প্রতি কোনো প্রশ্ন বা উক্তি ছুঁড়ে দেবেন না যা অত্যন্ত বিব্রতকর ও বিরক্তিকর।

পরিশেষে:
উপস্থাপনার বিষয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। যেমন: অনেকে বলে থাকেন, উপস্থাপনার বিষয়টি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি মেধা। এটি সহজে কেউ পারেন না। প্রথমেই যখন পারলাম না তখন কোনোসময়ে পারব না। অনেকে শুনলেন কিন্তু কেউ সাধুবাদ দিল না, অর্থাৎ উপস্থাপনা ভালো হয় নি। অন্যেরা চমৎকার ও সার্থক উপস্থাপনা করেন। আমার দ্বারা এটি হবে না। ইত্যাদি। কিন্তু সার্বিকভাবে বলা যায় যে, উপস্থাপনার বিষয়টি চমৎকার এবং উপভোগ্য। শুধু একটু সতর্ক প্রস্তুতি ও নিয়ম রক্ষা করলে যে-কেউ একজন সফল ও জনপ্রিয় উপস্থাপক হতে পারেন। তখন এই কাজে সবকিছুই আনন্দদায়ক হয়ে উঠে।

সূত্র: ছোটগল্পের নির্মাণশৈলী_মাহবুব আলী

অসহায় জনতা

দেশ আটকে গেছে
যানবাহনের চাকার পিষে,
মানুষ না গরু ছাগল
মনবিকতায় টের পাবি কবে।

দেশ আটকে গেছে
যানবাহনের চাকার পিষে,
ভন্ড যত মাতাল তত অর্থ ধান্দায় রাজনিতী
আদালতের রায়কেও তারা দেখাচ্ছে বৃদ্ধাঙ্গলী।

দেশ আটকে গেছে
যানবাহনের চাকার পিষে,
অন্ধ আমি নেতা খেতা,বোবা আমি ওমুক কর্তা
পুলিশী তান্ডবে রক্তে লাল কেবলি কিশোর যুদ্ধা।

দেশ আটকে গেছে
যানবাহনের চাকার পিষে;
রাষ্ট্র হাসে অট্ট্রো হাসিতে।

এইতো আমার সোনার বাংলা
আমি কাঙ্গাল মরি তোমায়,
ভাল বাসিতে বাসিতে।

The Albert Nelson Marquis Lifetime Achievement Award

29 October 2018

Academic Editor Prof. Dr. Md. Safiuddin Recognized with the Albert Nelson Marquis Lifetime Achievement Award 2018

Congratulations to Prof. Dr. Md. Safiuddin, an Academic Editor of the journals Sustainability, Buildings, and Infrastructures, for being recognized with the Albert Nelson Marquis Lifetime Achievement Award 2018 by the Marquis Who’s Who.

Dr. Safiuddin has received the Albert Nelson Marquis Lifetime Achievement Award 2018 as a result of his hard work and dedication to his profession. From numerous professionals, the Marquis Who’s Who chooses only a limited number of awardees who own outstanding biography; this year, Dr. Safiuddin is one of the recipients.

The Albert Nelson Marquis Lifetime Achievement Award is “an honor reserved for Marquis Biographees who have achieved career longevity and demonstrated unwavering excellence in their chosen fields” as per the Marquis Who’s Who. Only a small percentage of more than 1.5 million of the most renowned experts from around the world is considered for this prestigious award, and this year Dr. Safiuddin has won a place within that small percentage.

Dr. Safiuddin is a Professor of Angelo DelZotto School of Construction Management at George Brown College, Toronto, Canada and Adjunct Professor of Department of Civil Engineering at Ryerson University in Toronto. You can read about his career and research accomplishments at
•George Brown Faculty Profile
•GoogleScholar
•Research Gate

News link: https://www.mdpi.com/about/announcements/1414