বিভাগের আর্কাইভঃ কবিতা

ভূমিকম্পের আগে

323

তোমার কাঁপন দেখলেই বুঝতে পারি, কেউ
সমুদ্রে গভীর রাতে খেলেছে ঢেউখেলা। দিগন্তের
আড়মোড়া ভেঙে উঠছে পূবের সূর্য। কামকুয়াশায়
ভেজা পৌষের শেষ সন্ধ্যা- কয়েকটি রক্তজবা হাতে
অপেক্ষা করেছে আরেকটি কাঁপনের।

পৃথিবী কেঁপে উঠলে ভয় পায় মানুষ। মানুষ কেঁপে
উঠলে গোলাপ ছড়িয়ে দেয় তার প্রথম পরাগ।

পরাগায়ণের প্রথম নিশীতে- একটি উটপাখি কাঁধে
তুলে নিয়েছিল পৃথিবীর ভার। সেই পাখিটির একটি
পালক খসে পড়লেই আমাদের চারপাশে ভূমিকম্প
হয়। আমাদের প্রেমিকারা স্পর্শের বিজলীতে আবার
খুলে দেয় তাদের খোঁপার সম্ভার।

শুভ্র শূন্যতা

আয়না তোমাকে পরিচিত করে তোমার মুখের রেখাগুলোর সাথে অথবা জাগিয়ে তুলে সুপ্ত নার্সিসিজম, নির্ভর করে তুমি কিভাবে ব্যাবহার করছো তোমার নিজস্ব দর্পণটাকে। তবে তুমি যা নও তা দেখতে চেয়োনা। ঠকে যাবে । তোমার বুঝতে হবে, নার্সিসিজমেরও একটা সীমা আছে।

বরং তোমার প্রতিবিম্বটাকে রেখে দাও পাখির চোখের ভেতরে।

কানামাছি খেলায় তোমার চোখে বাঁধা রুমালটা প্রজাপতি হয়ে গেলে, হারজিতের কথা মনে থাকেনা। সামনে তখন কেবল কতগুলো রং অথবা মিলিত বর্ণচ্ছটার রংধনু। রংগুলো আলাদা করে ফেলো। তুমিতো জানোনা কোনটা আসল রং। খুঁজে নাও। কিন্তু মুছে ফেলোনা ডানার পরাগ। সব রংয়ের উৎসতো এটাই।

আয়নার কাচে যখন বিম্বিত হবে রংগুলো তখন দেখবে সব বর্ণসমন্বয়েই ফোটে ওঠে —-শুভ্র শূন্যতা।

অন্নকূট

যে খেতে দেয়, তার তত ক্ষিদেই থাকে না
দানে-দানে পাদুটো ভেজায়
এই দেখে সব্বাই দল বেঁধে তার
গোড়া খুঁড়তে বসে —
“আছে, মিষ্টিআলু আরও আছে!”

স্বাদ-গন্ধ ঘেঁটে ঘেঁটে জেনে গেছে খাবারের শিরাউপশিরা
চব্বিশ ঘন্টাকে বিতরণে বদলে দিয়েছে শুধু প্রস্তুত দাঁড়িয়ে থেকে…
থাকা বড় ক্ষণস্থায়ী — হাসি, ভেলকি, অস্ফুট কুকুর।
তাই তো সে দিয়েথুয়ে হাত-অবসর।
দেহ থেকে দুঃখী রক্ত চলে গেলে আরাম হবে না? তারপর সহাস্য খবর আসে, রোগি বেঁচে গেছে।

বেডরুম থেকে বড় সমর্পণ রান্নাঘরে।
অভিশাপ মাথায় নিয়েও ময়লা হাত —
গোটা গোটা গ্রাস মুখে তোলো।
একদম খারাপ হওয়া অব্দি মানুষ গিলতে পারে,
অসীম জাদুতে কোথাকার শস্যদানা জলতরংগের মতো কোন সবজিতে মিশে যায়…

যে দেয় সে হালকা হেসে শূন্য থালা গোছাতে গোছাতে বলে, পরে খাব। আছে!

কবিবৃক্ষ- ১

32

কবি হতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে কবিতার আঙ্গিনার কোন এক কোণে মাতৃআচঁলে ঘুমিয়ে পড়ি
শুনেছি সমৃদ্ধ কবিতা মানুষকে মানুষ করে গড়ে তোলে
সত্যকে সত্য, মিথ্যেকে মিথ্যে আর অন্যায়ের প্রতিবাদী হতে শেখায়
এসো কবিবৃক্ষ হই, সত্য ও সুন্দর পৃথিবী গড়ি।

গতকালকের রাত

শহরে বসে ঝিঁঝিঁর ডাক শোনা যায় না বলে
ইজিচেয়ারের পাশে চারটি কোরাস গানের
সমস্ত দিন কুড়োতে থাকে গতকালকের রাত-
আর নিঃসঙ্গতার সায় পুঁতে এখানে রাত গলে
ঝুলবারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা অর্কিডের টবগুলো;
গ্রীবা উঁচু করে নেচে যায় বর্ণহীন শহর, রাতভর-

ছিটকে আসে বেডরুমের কাউন আলো,নীরবে-
অপেক্ষায় লিখতে থাকে-এসো, ভাবতে পারো
আমি মৃত্যুর দ্বিতীয় চুমু খেয়ে পুনরায় উৎসব
পালন করি এখানে কেবল কুড়োতে হয় চিরকুট
প্রতীক্ষায় তাকানো অধিক স্বপ্নের ভেতরে
হলুদ পাতার বিবাদঋতু আর মুচকি হাসির জেরে
করতালির ওধারে বিলাসবহুল ত্রিসীমানা কেবল
সঙিন করেছে নিজের ইশারা, সারারাত তাই যেন…

ক্যান সে বাজায়! (গীতিকাব্য)

fty

বসে আমি এই নিরালে
ডাকি তোমায় চোখের জলে
কও তো দয়াল অবিরাম দিন রজনী –
ক্যান সে বাজায় মনের ঘরে খঞ্জনী!

মন্দে গড়া অরির সারি
ভেবে সোনা হীরে,
দিয়েও মোরে সাচ্চা কথা
ফেললো শেষে ছিঁড়ে।
রচে অগাধ স্বপ্ন আশা
টানলো যদি বন্ধনী –
ক্যান সে বাজায় মনের ঘরে খঞ্জনী!

চুপটি দিয়ে আমায় ফাঁকি
শূন্যে যেতে উড়ে,
মজলো সে যে রিপুর ছানা
ডাকাতিয়া সুরে।
যত্নে রোপে এই বুকে গান
কাড়লো যদি ছন্দনী –
ক্যান সে বাজায় মনের ঘরে খঞ্জনী!

কেমন আছি

কেমন ছিলাম? কে জানে! চক্ষুহীন-আত্মমগ্ন,
হঠাৎ কিসের ছোঁয়া এসে জাগিয়ে তোলে
কে জানে!

যেমন ছিলাম, এদিক ওদিক, আকাশ পাতাল, ধানের গাছ, সূর্যাস্ত সূর্যোদয়,
গভীর অতল জলের মাছ।যেমন ছিলাম-তেমন ছিলাম,
সুরকি পথের ছোট্টো নুড়ি, পায়ের ঘায়ে জগৎ চেনা,
হরিণ-বাঘ-পুকুর ঘাট, চরকা কাটা চাঁদের বুড়ি।
কেমন ছিলাম? ভাল ছিলাম?
কে জানে!

হঠাৎ কিসের ছোঁয়া লেগে…
কিছু ছবি-একটু গান, হাল্কা কথা ভারী কথা, সংস্কারের আঁতুরকথা-
কোথায় যেন নাড়ীর টান। কিসে যেন সময় কাটে, ঘুনপোকাতে?
পাইনা টের
সময় গুলো কোথায় যে যায়! কোন চুলোতে,
কোন মেলাতে! গল্প শিখি
রাত বেলাতে নিজের মাঝে ডুব দিয়ে।
কেমন ছিলাম! দূর ছাই
সব, যেমন ছিলাম-তেমন ছিলাম।

হঠাৎ কিসের…
দেখতে হবে কেমন আছি, বয়স যেন পর্ণমোচী, পাতার নিচে
পাতার ভ্রুণ, রঙের গায়ে রঙ লাগে। আমি আছি-
আমিও আছি, আছি-আছি-থাকব বলে। এখন আছি, ভাল আছি।
ভাল আছি…! সত্যি আছি!
ভালো আছি? কে জানে…!

আজকের দিনে মা যে আমার

a7-

____আজকের দিনে মা যে আমার
আজকের দিনে মা যে আমার
হারিয়ে গেল কোন সুদূরে?
বাতাস তোরা জানিস নাকি?
সব খানে যে তাঁরেই খুঁজি
আকাশ কি তোর শুন্য নীলে?
আমার মাকে লুকিয়ে নিলি
দিগন্তের ঐ কোন সে দূরে?
মা যে আমার রইল পরে।
সাঁঝের মায়া ঐ সন্ধ্যা তারা
মা কি আমার তারার মায়া?
সেই মায়াতেই মা কি আমার?
জনমের মতো হারিয়ে গেল।
রাতের মায়া লক্ষ তারা মিটি মিটি জ্বলে
ঘুম পারানি গানের মায়া শৈশব টেনে আনে।

______নন্দ তোমার নদের চাঁদ
সিন্ধু পাড়ের অতল তলে,
আর পাবনা খুঁজে তারে
সাগর জলে গহিন তলে, নিত্য খুঁজি স্বপ্নঘোরে।
বিরহ ব্যথায় কষ্ট হলে,
ঠোঁট কয় যে, ওমা বলে
শান্তি কোথাও না পাই যখন, মা তোমায় মনে পরে।
মা তোমার কত স্মৃতি?
শৈশব কৈশর জীবন বোধি
বয়ে বেড়াই অষ্ট প্রহর, নন্দ তোমার নদের চাঁদ।
কোলাহলে মেঘ ভেসে যায়
বাতাস বনে চুপি চুপি দেখলে চেয়ে একটুখানি
সন্তান তোমার কেমন আছে? পৃথিবী নামের আজব ভূমে।

________ মা যে তোমায় মনে পড়ে
উবু হয়ে, চিৎ হয়ে, রইছি শুধু ঘুমে ঘুমে। মায়ের দুধের বাটটি চেঁপে শৈশব কাটে হেসে হেসে। মায়ের বুকে বসে কত হাসি? কাতু কুতু খুনসুঁটি, সে তো ইশারাতে। হাসতে হাসতে মায়ের আদর সোনা মুখে হাজার হাজার। কইতে কথা একটু একটু? পা টলে যায় হাঁটতে বলা। মা বলে উঠলে ডেকে, আদর সোনার যায় যে বেড়ে। আঁচল টেনে বায়না কবে? মা যে তোমায় মনে পড়ে।

==============
১৪২৪/১৯ পৌষ/শীতকাল।

অংকবাজি

3179

জীবনে
অংকবাজি শিখিনি
কাউকে ভালবাসলে অন্তর থেকে ভালবেসেছি
ঘৃণা করলেও অন্তর থেকে…
যদিও ঘৃণার মানুষ নাই আমার
কাউকে ভাল না বাসি, ঘৃণা করিনা।
করলেও তাকে জানিয়ে দিই!
সে জানুক কেউ তাকে ঘৃণা করে…
ভালবাসি নিভৃতে
জানাই কম।
কাউকে শ্রদ্ধা করলে অন্তর থেকেই করি।
তেল মারিনা
খুশি করতে রঙ মাখি না!
খুব কম মানুষ কে অশ্রদ্ধা করি-
যারা দ্বিমুখী স্বভাবের তাদের সবচেয়ে বেশী অশ্রদ্ধা করি।
তবু যে তাকে ঘৃণা করি তা নয়।
যাকে আপন ভাবি তাকে কখনোই পর ভাবি না।
ভাবলে নিজেকে বেঈমান মনে হয়।
আমার ঈমান ততটাই শক্ত যতটা বেঈমানের জন্য আমি কঠিন হই।
ধর্না ধরি না
নিজের মত করে এগোই…
তবে একবার ধর্না ধরেছিলাম- বিশ্বাস, ভালবাসা আর শ্রদ্ধার অধিকারে
কিন্তু সে অংকে আমি ফেল!
যে অংকবাজিতে তারা সেরা-
সে অংকবাজি নির্লজ্জ বেঈমানি, কৌশলিক, ঘৃণিত!
আমি নিরীহ সেই সবের সামনে।
আমি পরাজিত স্বার্থপরতার চালবাজিতে…
আর একারণেই
আমি পেছনের কাতারে, লাস্ট বেঞ্চে
আমি উপেক্ষিত
যদি সবার মত ভেসে যেতাম,
যদি একিই তেলে মর্দন যোগ্যতা অর্জন করতাম,
যদি মাথা নোয়াতাম,
যদি কুকুর ছানার মত কুই কুই করে যেতাম-
তবে আমার সব হতো-
বাড়ি হত, গাড়ি হত, তালিয়া বাজতো, মদ- মাতাল- তোষামোদ হতো!…
কিন্তু আমি অকর্মা
আমি বেখাপ্পা
আমি জোয়ার চিনি না
স্রোতে ভাসি না
বৃষ্টির দিক বুঝি না, ছাতা ধরি না…
আর সে জন্যই আমি বৃষ্টিতে ভিজি, রোদে পুড়ি!
ব্যথা লাগে
উহ! করে কঁকিয়ে উঠি না
ব্যথা সয়ে যাই নতুবা ব্যথা না লাগার উপায় বের করি।
তবু ব্যথা লাগে
খুব ব্যথা লাগে- বিশ্বাসে… ভালবাসায়…শ্রদ্ধায়…
এক সময় ব্যথার স্থলে দাগ লাগে
দাগ রুঢ় হয়
প্রবীণ চাপ পড়ে
দাগে দাগ লেগে কলঙ্কিত হয়!
তবু ঘৃণা করিনা
ভাবি,
বুঝি,
আর ভিন্ন পথ খুঁজি…।

কখনো কখনো হতাশ হইনা এমন নয়। তবু লড়াই জারি থাকে
কারো বিশ্বাস কলুষিত বলে-
আমার বিশ্বাস দৃঢ় হবেনা কেন?
আমি বিশ্বাস করি
দাগ না মোচন করে দাগের পরিধি, দাগের দ্রাঘিমায় সরল রেখা আঁকি
কখনো বৃত্ত
কখনো প্রবৃত্ত
ঘুরে ফিরে আবার উঠে দাঁড়াই…
কারণ
আমি তো জানি আমি কি
না
বিত্ত ভৈবব এর নেশা নেই,
মোহ নেই
কিন্তু আমি জানি আমি কি চাই।
আমাকে কোন পথে এগুতে হবে।
জানি,
সব কিছু ভেস্তে যাবে
থাকবে -আমার বিশ্বাসের আলো… ভালবাসার ছন্দ…শ্রদ্ধার মহিমা…
ততদিন অপেক্ষা- যতদিন এই অবারিত রাত ভোর না হচ্ছে
একদিন সকাল হাসবে
একদিন পাখি গাইবে
একদিন বাতাস আমার হবে
বৃষ্টি আমাকে ছোঁবে
একদিন রোদ্দুর আমাকে আলিঙ্গন দেবে
একদিন জাগবে কবিতা
একদিন ফুটবে স্পর্ধা!…
একদিন রঙ, একদিন বুননে হাসবে আড়ং
একদিন জানবো নিজেকে
জানবো তোকে,তাকে, তাহাদেরকে
একদিন জানাবো
একদিন দেখবো আলোর ঊষা
একদিন হবো আলো
একদিন পৃথিবী ডাকবে আমাকে
তাবৎ অপেক্ষাকে জিইয়ে রাখছি তাই…
চন্দ্রমল্লিকা ছোঁবে শিশির
থামবে অশ্রু… অধীর!

ফড়িং দিনগুলো হারাচ্ছি ধীরে

31

সেই যে উড়ে বেড়ানোর দিনগুলো
অতীত হলো বর্তমান পথের উড়িয়ে ধুলো
সেই যে আমার ডানা মেলা দিন
সু দিন ছিলো…….. ধীরে ছুঁয়ে রই দুর্দিন।

কী সবুজাভ মন নিয়ে উড়ে বেড়িয়েছি দিনভর
মনের জমিন প্রেমে ভালোবাসায় সুখে কতই না উর্বর
বুড়ো হয় সময়… ভেঙ্গে যায় ডানা,
এবেলা এসে দেখি উড়তেই আমার শত মানা।

সেই যে পুকুর পাড় অথবা ডোবার কিনার ঘেঁষে
ছিপ ফেলে ধরেছিলাম মাছ, গান গয়ে হেসে
উড়ন্ত বেলা আমার গিয়ে ঠেকলো পড়ন্ত বেলায়,
কত ভুলভাল কষেছি জীবনের অঙ্ক, জীবন রেখেছি অবহেলায়।

অগোছালো জীবনের বাঁকে জমা হয় জরাজীর্ণতা
টের পেলাম না কখন নেমে এলো জীবনের পরতে সুখের দৈন্যতা
এখানে ফড়িং হতে গিয়ে দেখি ডানা নেই,
হোঁচট খেয়ে জীবনের পথে হারাই স্বস্তির খেই।

কখন যে বেলা পড়ে গেল, কখন যে ডানা হলো অদৃশ্য
আহা আমার ফড়িং বেলা সুখগুলো আজ অস্পৃশ্য
দুঃখ সুখে তবুও হেসে উঠি, কেঁদে ফেলি নিদ্বির্ধায়,
অমোঘ সত্য সময়কে জানাতে হবেই তো বিদায়।

আমার ফড়িং দিনগুলো স্মৃতি হয়ে আছে মনের কোণে
সেই সব স্মৃতি নিয়েই মন ঘরে যাই স্বপ্ন বোনে;
সবুজ মন আজও অবুঝ…. অশীতিপরেও আছি কুড়ি,
এখনো আমি নবাগত মন নিয়ে সুখ আকাশে ডানা মেলে উড়ি।

(ক্যানন ডি৬০০, চুনারুঘাট)

তোমার ছবি

হার্টের এক্সরে ফ্লিমে তোমার ছবি দেখা যায়
রাজধানী মেডিকেল ডাক্তার বার্তা দিল
এর চেয়ে আর কোনো বড় রোগ নেই
অথচ তুমি উড়ে যাচ্ছ, ফুরিয়ে যাচ্ছ
বৈদ্যুতিক আলোর মতো; টাটকা বিচ্ছিন্ন-
আর উৎখাত এই ব্যাপারটি নিয়ে
প্রকরণ সব স্বভাবের নিয়ম টেনে হাসছে

যা কিছু সংশয়ে প্রোথিত হয়ে ওঠে
যেন মালোপাড়ার চাঁদ-ব্রিজ পার হলে
রোগা রোদ, কুয়াশা ভেজা পতঙ্গ, পাখি-
বনের ছায়া কাঁধে নিয়ে বেপরোয়া বাতাস
জলপ্রপাতে অনাহুত পাহাড় বন্দী মাতাল
ফের কাগুজের জাহাজে পরান হাসানো মুখ
ফেরত আসে প্রশ্নবোধক বয়ান সমগ্রে, যদিও…

অর্বাচীন পৃথিবী

rrtty

কবি তার কবিতা হারিয়ে ফেলেছে অর্বাচীন পৃথিবীর মায়ায়
যেমন করে পার্থক্য গুলো আজ হারিয়েছে আপন ব্যবধান..
যেভাবে যুক্তি আর যুক্তিবিদ্যায় বিজ্ঞ বুদ্ধিজীবীরা ঘুমান
ধর্মগুরুরা যেভাবে ধর্মকে বিভক্তির চূড়ায় পৌছে দ্যায়…
ঠিক তেমন করে….

০৪.০১.২০২৩

বিনম্র বিষের মায়া

323

সাক্ষী দিতে গিয়ে দেখি আমার ছাউনি সরিয়ে নেয়া হয়েছে
বেশ আগে। দংশনের বিপক্ষে কথা বলার আগে, আমিই হয়েছি
দংশিত লখিন্দর। বিনম্র বিষের মায়া আঁকড়ে ধরেছে আমার
সর্বাঙ্গ।ভঙ্গ করে সকল অঙ্গীকার আমি দাঁড়িয়েছি জলের
কাটগড়ায়। বৃষ্টিতে ভিজে একটি আশ্বিন খুঁজে বার বার গিয়েছি
সমবেত শরতের কাছে। এভাবে চিনে নিতে হয়, ঠিক এভাবে
অতিক্রম করে যেতে হয় সময়ের দংশনকাল। মহাল করায়ত্ব
না-ই বা হলো। তবুয়ো নীল অমরতা এলে তাকেই দেখানো
যাবে শবদেহের মুখ। স্তরে স্তরে সাজানো প্রেমের শববৃত্তান্ত।

স্পর্শ রঙ

wTs

এক রাত-ভাবতে ভাবতে ভোর
দিনের খরা উত্তাপ বর্ণ গুলো
কষ্টদায়ক; রাত কিছু বুঝে না
নীরবতা তারার আকাশ শুধু
বৃষ্টি বাদল, দুপুর রঙধনু মেঘ
তারপরও সুখ মনে করে না রাত
ভোরের শিশির সিক্ত স্পর্শ রঙ
ছড়ে যায় সমস্ত মাটির কিনারায়;
গন্ধ মাতাল চলছে তুফান গতি
দৃষ্টির জানালায় পর্দা নাই, সমাপ্তি।

১৯ পৌষ ১৪২৯, ০৩ জানুয়ারি’২৩

শেষ পংক্তি

KA1

শেষ পংক্তি উচ্চারণের আগে একবার মাছ হতে চাই।
নদীর গভীরে নদী আমি তার গভীরে যেতে চাই
বর্ষায় ভিজে শাখা প্রশাখা ছড়ায় যে কদম বৃক্ষ
আমি তার কাছে উৎসের ঠিকানায় নতজানু হতে চাই।
আমি দেবী হত্যা হুলিয়ায় ফেরারী কয়েদী আজ
তোমার কাছে আশ্রয় চাই।
শব্দরা সব সূর্যস্নানে মায়ামি কিম্বা রিমিনি বীচে।
কবিতার ঠোঁট এখন স্পিন বলের উইকেট
মিডিয়াম পেসের বদলে চাই দারুন এক অফ ব্রেক স্পেল।
মাছ হতে চাই,
শেষ পংক্তি উচ্চারণের আগে মাছ হয়ে শিখে নিতে চাই
নদীর গভীরে জলজ ভাষায়
মাছেরা কিভাবে কবিতা লিখে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে।।