বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

তুমি চাইলেই

তুমি চাইলেই সাত সমুদ্র ওপার হতে তোমায় একটা সমুদ্র এনে দিতাম;
কি দরকার ছিল শরীরে এক ফোটা লোনা জল লুকিয়ে রাখার।

তুমি চাইলেই আকাশ হতে সমস্ত নীলিমা তোমায় এনে দিতাম;
কি দরকার ছিল চোখের কোনায় এক ফোঁটা নীলিমা লুকিয়ে রাখার!

তুমি চাইলে চেরাপূঞ্জির সমস্ত মেঘ তোমার গাঁয়ে জড়িয়ে দিতাম!
কি দরকার ছিল এক ফোঁটা বৃষ্টি খোপায় লুকিয়ে রাখার!

তুমি চাইলেই জোছনাকে শিশির বানিয়ে কুসুম কমলে তোমাকে ভিজিয়ে দিতাম;
কি দরকার ছিল এক ফোটা জোছনাকে আচলে বেঁধে রাখার!

তুমি চাইলেই সমস্ত আধাঁরকে ঠেলে দিতাম ব্লাক হোলের গোহিন অরণ্যে;
কি দরকার ছিল এক রতি আঁধার ঠেলে আমাকে দেওয়ার!

তুমি চাইলেই গঙ্গা, পদ্মা কর্ণফুলি সবগুলোকে এনে ধরিয়ে দিতাম তোমার হাতে;
কি দরকার ছিল পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকার!

তুমি চাইলেই পৃথিবীর সমস্ত ফুল তোমার খোপায় গুজে দিতাম!
কি দরকার ছিল গোলাপের কাঁটায় হাত দেওয়ার!

তুমি চাইলেই পাহাড় চূড়ায় তুলে দিয়ে রূপালী বরফ দেখাতাম;
কি দরকার ছিল পাথলে উষ্ঠা খেয়ে নখ কাটার!

হতাশা


এই মূহুর্তে মানসিক চাপে কে কে আছেন? হাত তুলুন..
এমন প্রশ্ন করা হলে হয়ত শতকরা আটানব্বই জনই হাত উঠিয়ে বলবেন- আমিইই…
আচ্ছা এটা কি ছোঁয়াচে রোগ? নয়ত সবাই কেন একই রোগেই আক্রান্ত?
“সংসার সাগরে সুখ-দুঃখ তরঙ্গের খেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা…”
-এই ভাব সম্প্রসারণটি না পড়ে স্কুলের গন্ডি পেরোতে পেরেছেন এমন কারও ভাগ্য হয়েছে বলে আমার মনে হয়না। সুতরাং বলা যায় খুব অল্প বয়সেই স্কুল আমাদের জানিয়ে দিয়েছিল –
‘জীবন হল সুখ-দুঃখের পালাবর্তন।’
কিন্তু এটা জানার পরও কেন আমাদের সবার মাঝে দুঃখ জয়ের দৃঢ়তা জন্ম না নিয়ে হতাশা জন্ম নেয়? সমস্যা সমাধানের উপায় না খুঁজে স্রষ্টার অপার সম্ভাবনাময় সৃষ্টি এই ‘মানব মন আর মস্তিষ্ক’ বিকল হয়ে হতাশার মাঝে ডুবে যায়?
সবচেয়ে মজার বিষয় হল আমরা মানবরা সকল প্রাণীকূলের মধ্যে বিচক্ষণ আর বুদ্ধিমান প্রাণী অথচ আজ পর্যন্ত মানুষ ছাড়া অন্য কোন প্রাণীকে হতাশা, মানসিক চাপ এসবে ভুগতে দেখা যায়নি। আমাদের জীবন আর অন্য প্রাণীদের জীবন তুলনা করে দেখুন কারা বেশি উন্নত, নিরাপদ আর আয়েশি জীবন যাপন করছে?
উত্তর- মানুষ।
তাহলে সহজ ভাবে বললে দাড়ায় মানুষ ছাড়া পৃথিবীর অন্য সকল প্রাণীরই প্রাত্যহিক জীবন নিত্য নতুন সমস্যায় ভরা এরপরও ওরা টিকে থাকে এসবের সাথে লড়াই করে। একজন মানুষকে যদি জীবনটা পাল্টে একটি কীট অথবা পাখির জীবন দেয়া হয় ভাবুন তো ফলাফল কেমন হতে পারে? দেখা যাবে ক্ষুধা-তৃষ্ণা-মৃত্যু এসবের সাথে লড়তে গিয়ে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিবে কিছুদিনের মধ্যেই।
বলতে পারেন কেন?
কারণটা আমিই বলছি।
আপনার আশে পাশে একটু চোখ বুলিয়ে নিন। আপনার চারপাশের মানুষ গুলো কি সবাই একই রকম?
-না।
আমরা মানব জাতির মাঝেই কত শ্রেণী বিন্যাস! মেধা, বংশ, গায়ের রং, পেশা, চরিত্র, টাকা-পয়সা, রুচি, শিক্ষা প্রত্যেকটা বিষয়েই ভাল-মন্দ-উঁচু-নিচু কত বৈষম্য! আপনার মেধা কম, গায়ের রং ভালোনা, তৃতীয় শ্রেণীর পেশা, কম শিক্ষা যেদিকেই আপনার ঘাটতি থাকুক না কেন আপনার সমাজ তথা সমাজের মানুষ আপনাকে প্রতিনিয়ত চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে আপনার অপূর্ণতাকে। যার যত বেশি অপূর্ণতা তাকে তত বেশি কথার খোঁচা নামক বুলেট হজম করতে হয়। আর এই বুলেটে জর্জরিত মানুষগুলোর পরিণতি দাড়ায় হতাশায়। পশু-পাখিদের মাঝে এসব বৈষম্য নেই। ওরা একজন আরেকজনকে ছোট করে মজা নেয়না। ওদের মাঝেও ঝগড়া হয়, মারামারি হয় কিন্তু উদ্দেশ্য একটাই বেঁচে থাকা…
সুতরাং দেখা যাচ্ছে আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোই একজন আরেকজনের মাঝে হতাশার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে পালা করে। কি লাভ হচ্ছে এতে বলতে পারেন? আরেকজনের অপূর্ণতাকে পুঁজি করে নিয়মিত তাকে কথার অনলে না পুড়িয়ে দিন না তাকে একটু আশার আলো…একদিন পাশে বসে তার মনে চেপে রাখা হতাশার গল্পটি শুনুন আর মাথায় হাত রেখে বলুন – তুমি পারবেই। বিশ্বাস করুন আপনার এই ছোট্ট কাজটি বদলে দিবে ঐ মানুষটির জীবন আর পুরো সমাজকে। হোক সে আপনার বোন-মা-বাবা-ভাই-বন্ধু কিংবা প্রতিবেশি। প্রতিদিন এভাবে অন্তত একটি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে দেখুন না। দেখবেন একদিন ঝলমলে সকালে পাখির কলকাকলি ছাপিয়ে চারদিক মুখরিত হতাশামুক্ত সুখি মানুষের সরব হাসিতে।
জীবনে দুঃখ-অপূর্ণতা-ব্যর্থতা এসব থাকবেই। তাই বলে নিজেকে কখনও অযোগ্য ভাববেন না। আপনি স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এটাই আপনার বড় যোগ্যতা।

NF_1_ (42) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৪

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো।
এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে।
যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই।
আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

৩১। দেশের নাম : Czech Republic চেক প্রজাতন্ত্র

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ছবি তোলার স্থান : মোঘল গার্ডেন, শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৩২। দেশের নাম : Denmark ডেনমার্ক

জাতীয় ফুলের নাম : ডেইজি
ইংরেজী নাম : Paris Daisy, Marguerite, Marguerite Daisy
বৈজ্ঞানিক নাম : Argyranthemum Frutescens

ছবি তোলার স্থান : বেতাব ভ্যালি, পেহেলগাম, ভারত।
তারিখ : ২৭/০৫/২০১৫ইং

৩৩। দেশের নাম : Ecuador ইকোয়াডর

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ছবি তোলার স্থান : মোঘল গার্ডেন, শ্রীনগর, কাশ্মীর, ভারত।
তারিখ : ২৮/০৫/২০১৫ ইং

৩৪। দেশের নাম : Egypt মিশর

জাতীয় ফুলের নাম : মিশরিয় সাদা শাপলা
ইংরেজী নাম : Lotus, White Egyptian lotus
বৈজ্ঞানিক নাম : Nymphaea Lotus
ছবি : উইকি

৩৫। দেশের নাম : Estonia এস্তোনিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : কর্ণফ্লাওয়ার
ইংরেজী নাম : Corn-flower, Bachelor’s Button Centaurea
বৈজ্ঞানিক নাম : Centaurea Cyanus
ছবি তোলার স্থান : সামরিক জাদুঘর, ঢাকা।

৩৬। দেশের নাম : Ethiopia ইথিওপিয়া

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Calla Lily, arum lily
বৈজ্ঞানিক নাম : Zantedeschia aethiopica
ছবি : উইকি

৩৭। দেশের নাম : France ফ্রান্স

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Iris, Stylized Lily
বৈজ্ঞানিক নাম :
ছবি : উইকি

৩৮। দেশের নাম : French Polynesia পলিনেশিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : তাহিতিয়ান গন্ধরাজ
ইংরেজী নাম : The Tiare
বৈজ্ঞানিক নাম : Gardenia Taitensis
ছবি : উইকি

৩৯। দেশের নাম : Finland ফিনল্যাণ্ড

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Lily-of-the-Valley
বৈজ্ঞানিক নাম : Convallaria Majalis
ছবি : উইকি

৪০। দেশের নাম : Germany জার্মানি

জাতীয় ফুলের নাম : কর্ণফ্লাওয়ার
ইংরেজী নাম : Corn-flower, Bachelor’s Button Centaurea
বৈজ্ঞানিক নাম : Centaurea Cyanus

ছবি তোলার স্থান : সামরিক জাদুঘর, ঢাকা।


ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

ছোট কুবিতা ১২৩

ছোট কুবিতা -১
জীবন একেবারে তাবিজ কবজের গল্প হয়ে
কৌটার ভিতরে মৃত্যুবান;
তরতাজা মগজের কোষে
অবারিত ভাবনাগুলো তারিত করে ।
আটপৌড়ে শাড়ির আঁচলে জরানো শুধুই সামাজিক বুনন;
উচ্চ বিলাসি যন্ত্রনা চেটেপুটে খায় সময়ের ক্ষার।
আমিও ভেসে চলি পারভাঙ্গা নদীর স্রোতে
জোয়ার কিংবা ভাটায়।

ছোট কুবিতা -২
অনন্ত প্রহর সময়ের ভাঁজে বন্ধী
অপেক্ষার আক্ষেপ বসন্ত দিন পযর্ন্ত
ঘোলা চোখে তাকিয়ে থাকে।
অব্যক্ত ভাষায় শুধুই নিস্পলক আকুতি;
প্রজাপতির পাখায় ফাগুনের রং কবে আসবে
প্রতিক্ষায় থেকে থেকে আমিও হয়ে যাই
আদিম বাসনা।

ছোট কুবিতা-৩
সেই ছেলে বেলা
সেই মারবেল খেলা, সেই ঘুড়ির সুতো
সেই চাঁদের বুড়ি, সেই ডুব সাঁতার
সেই মায়ের আচার, সেই বোনের আদর
সেই ঘোরে… সেই ঘোর
আর কাটে না।
আপনি তুমি তুই
সেই এক আকাশের নীচে
ভিন্ন জগত ছুঁই।

সময়ের সাথে সাথে পালটায় রং
পাল্টায় জীবনধারা,
প্রথাগত জীবনের আটপৌরে স্বাধীনতা
বুকের জমিন, চোখের কাজল
তবু থেকে যায়..সেই প্রথম থেকে শুরু
আপনি তুমি তুই….

পৃথিবীর সেরা দশটি রোগ প্রতিরোধক সবজি

সবজি আমাদের প্রত্যেকের খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিদিনই আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজি খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা জানি না আই সবজিগুলোর পুষ্টিগুণ কি। এই ধরনের সবজি নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে আমরা ক্যান্সার, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মত রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারি। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের শীর্ষ ১০টি সবজির গুনাগুন জানা দরকার।

টমেটো
সবজিটমেটো একটি ফল হলেও আমাদের দেশে এটি সবজি হিসেবে পরিচিত। শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা বিশ্বেই এটি একটি পরিচিত সবজি। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ সমাদৃত। টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে। টমেটোতে লাইকোপেন নামে বিশেষ উপাদান রয়েছে, যা ফুসফুস, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কোলন, স্তন, মূত্রাশয়, প্রোস্টেট ইত্যাদি অঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ব্রোকলি
সবজিব্রোকলি বাঁধাকপি পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ব্রোকলি সাধারণত সেদ্ধ বা কাঁচা খাওয়া যায়।তবে এটি কাঁচা সবজি হিসেবে জনপ্রিয়। পাতাও খাওয়া যায়। ব্রোকলিতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ,ভিটামিন বি৯,ভিটামিন কে ও বিটা-ক্যারোটিন আছে। ব্রোকলি কোষের ডিএনএ মেরামত, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, কোলেস্ট্রল নিয়ন্ত্রন ও ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে। এছাড়াও হৃদরোগ প্রতিরোধ সাহায্য করে।

ব্রাসেল স্পাউট
সবজিব্রাসেল স্পাউট দেখতে অনেকটা বাধাকপির মত। ব্রাসেলস স্প্রাউট শীতকালীন ফসল। একটি ডাঁটায় অনেকগুলো ব্রাসেল স্প্রাউট নিচ থেকে শুরু করে উপর পর্যন্ত ধরে। এটি বাধাকপি ও ব্রকলি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।, ব্রাসেলস স্প্রাউটে ফাইবার, পটাসিয়াম , ওমেগা -3, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ , ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস ও খনিজ পদার্থ আছে । ব্রাসেল স্পাউট কোলন ক্যান্সার . রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ , ত্বকের সৌন্দর্য, দৃষ্টি তীক্ষ্নতা ফুসফুস এবং মুখের ক্যান্সার,হাড়ের গঠন ও শক্তিশালীকরণ,লোহিত রক্ত ​​কণিকা গঠন করে।

গাজর
সবজিগাজর একটি শীতকালিন সবজি। গাজর বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। যেমনঃ কমলা, সাদা ,কালো,লাল,হলুদ,বেগুনি এবং রক্তবর্ণের। তবে আমাদের দেশে সাধারনত কমলা রঙের গাজরটাই বেশি পাওয়া যায়। গাজর কাঁচা এবং রান্না করা এই দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। গাজরের পুষ্টিগুন অনেক। গাজর হল বিটা- ক্যারোটিন,ভিটামিন-এ,ভিটামিন-সি এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহের সমৃদ্ধ উৎস। গাজর উন্নত দৃষ্টি প্রতিষ্ঠা,ক্যান্সার, উজ্জ্বল ত্বক,শক্তিশালী এন্টিসেপটি্‌, হার্ট ডিজিজ প্রতিরোধ,স্বাস্থ্যকর দাঁত এবং মাড়ি,স্ট্রোক প্রতিরোধ প্রভৃতি ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে। যকৃত ও পিত্তের অপ্রয়োজনীয় চর্বি হ্রাসের পাশাপাশি গাজর অনিদ্রা ও মাথাব্যথার মত অনেক জটিল সমস্যার সমাধান দিয়ে থাকে।

স্কোয়াশ
সবজিস্কোয়াশ প্রধানত চার প্রজাতির হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণত এক ধরনের স্কোয়াশ দেখা যায়। যা আমাদের দেশে মিষ্টিকুমড়া নামে পরিচিত। স্কোয়াশ গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন ফসল। স্কোয়াশে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, বিটা-ক্যারোটিন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার আছে। স্কোয়াশ হাঁপানী, অস্টিওআর্থারায়টিস এবং রিউম্যাটয়েড স্ট্রোক ওক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

মিষ্টি আলু
সবজিআমাদের দেশে ২ ধরনের আলু পাওয়া যায়। এর মধ্য মিষ্টি আলু অন্যতম। আমাদের দেশে লাল এবং সাদা এই ২ ধরনেরই মিষ্টি আলু পাওয়া যায়। মিষ্টি আলুতে ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন বি৬,ভিটামিন সি ভিটামিন ডি,খনিজ ম্যাগনেসিয়াম আছে। মিষ্টি আলু ​​হার্ট এটাক, ফ্লু ভাইরাস, ক্যান্সার, বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা থেকে আমাদেরকে মুক্ত রাখে। এছাড়াও হাড়, হার্ট, স্নায়ু, চামড়া, ও দাঁত নির্মাণ, লাল এবং সাদা রক্ত ​​কণিকা উত্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেগুন
সবজিবেগুন আমদের দেশের একটি অতি পরিচিত একটি সবজি। আমাদের দেশে অনেক প্রজাতির বেগুন পাওয়া যায়। সব ধরনের বেগুনের পুষ্টিগুণ প্রায় একই। বেগুনে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, খনিজ, ভিটামিন এ ভিটামিন বি,ভিটামিন সি পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ম্যাঙ্গানিজ এবং থায়ামাইন আছে। বেগুন রক্তে কলেস্টেরল কমায়, পরিপাক প্রক্রিয়া সাহায্য করে এবং করোনারি হার্ট রোগ প্রতিরোধ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

ক্যাপসিকাম
সবজিক্যাপসিকাম সারা পৃথিবীতে মিষ্টি মরিচ নামে পরিচিত। ক্যাপসিকাম সবুজ, লাল, হলুদ, কমলা, চকলেট রঙের হয়ে থাকে। ক্যাপসিকামে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, বিটা-ক্যারোটিন, আলফা-ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ভিটামিন কে আছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাপসিকাম ফুসফুস, কোলন, থলি এবং অগ্নাশয় ক্যান্সার থেকে মুক্ত রাখতে পারে।

পালং শাক
সবজিপালং শাক শিতকালেই পাওয়া যায়। এটিও আমাদের দেশে অধিক পরিচিত। পালং শাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই,ভিটামিন কে এবং বিটা-ক্যারোটিন আছে। পালং শাক ক্যান্সার প্রতিরোধ এ বলিস্ট ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়াও হাড়ের গঠন মজবুত করে।

সবজি পেঁয়াজ
পেঁয়াজের গুনাগুন গাজর, মিষ্টি আলুর মত একই হলেও পেঁয়াজের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য পেঁয়াজকে সেরা দশে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পেঁয়াজ আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি সাহায্য করতে পারে। পেঁয়াজ হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করে। পেঁয়াজ এলার্জি শ্বাসনালীর প্রদাহ,মুখ ও দৈনিক খাদ্যনালী ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত রাখে।
সুত্রঃ

NF_1_ (40) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০৩

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো।
এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে।
যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই।
আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

২১। দেশের নাম : Bulgariaবুলগেরিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

২২। দেশের নাম : Canadaকানাডা

কোন জাতীয় ফুল নেই।তবে Maple Leaf ওদের জাতীয় সেম্বল।

২৩। দেশের নাম : Cayman Islandsকেম্যান দ্বীপপুঞ্জ

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Wild Banana Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Schomburgkia Thomsoniana

২৪। দেশের নাম : Chileচিলি

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Copihue, Chilean Bellflower
বৈজ্ঞানিক নাম : Lapageria Rosea

২৫। দেশের নাম : Chinaচীন

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Plum Blossom
বৈজ্ঞানিক নাম : Prunus Mei

২৬। দেশের নাম : Colombiaকলম্বিয়া

জাতীয় ফুলের নাম : ক্রিসমাস অর্কিড
ইংরেজী নাম : Christmas orchid, May flower
বৈজ্ঞানিক নাম : Cattleya Trianae

২৭। দেশের নাম : Costa Ricaকোস্টারিকা

জাতীয় ফুলের নাম : বেগুনি অর্কিড
ইংরেজী নাম : Purple Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Guarianthe skinneri

২৮। দেশের নাম : Croatiaক্রোয়েশিয়া

জাতীয় ফুলের নাম :
ইংরেজী নাম : Iris Croatica
বৈজ্ঞানিক নাম : Hrvatska Perunika

২৯। দেশের নাম : Cubaকিউবা

জাতীয় ফুলের নাম : দোলনচাঁপা
ইংরেজী নাম : Butterfly Ginger Lily, White ginger lily, Mariposa
বৈজ্ঞানিক নাম : Hedychium coronarium

৩০। দেশের নাম : Cyprusসাইপ্রাসদ্বীপ

জাতীয় ফুলের নাম : গোলাপ [গোলাপী]
ইংরেজী নাম : Rose
বৈজ্ঞানিক নাম : Rosa

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

গণিতচর্চা

গণিতচর্চা

গণিত কথাটির অর্থ হল গণনা সম্পর্কীয় শাস্ত্র। এটি বিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান শাখা। গণিতের শুরু কবে ও কোথায় এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। অনেকের মতে গণিতের আদিভূমি মিশর। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে। এর কারণ সেই সময় ব্যাবিলন এবং চীন এর পাশাপাশি আমাদের ভারতবর্ষেও উন্নতমানের গণিত চর্চা হত, যার স্বপক্ষে বহু প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই অনেক পণ্ডিতের মতে ভারতবর্ষই গণিতশাস্ত্রের উৎপত্তি স্থল। প্রশ্ন আসতে পারে এমন দাবি করার পিছনে যুক্তি কী? সিন্ধু সভ্যতাকেই ধরে নেওয়া হয় ভারতের মাটিতে গণিতের পথচলার শুরুর সময়কাল। কারণ, এর আগের কোনো সভ্যতার নিদর্শন আজও আমরা খুঁজে পাইনি। সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থেকে যে লিপির নিদর্শন পাওয়া গেছে তা আজও পাঠ ও মর্মোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। তাই সে যুগের গণিতচর্চার প্রকৃত স্বরূপ আজও আমাদের অজানা। তবে ধ্বংসাবশেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন নিদর্শন দেখে একথা অনুমান করতে অসুবিধা হয় না যে, এই উপত্যকাবাসীদের গণিতজ্ঞান যথেষ্ট উন্নতমানের ছিল। এই সভ্যতার উন্মেষ হয়েছিল ৩৫০০ – ৩৩০০ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দের মধ্যে। সুতরাং ভারতীয় গণিতই প্রাচীনতম কিনা তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মিশর, সুমেরীয় বা চীনের থেকে যে পিছিয়ে ছিল না এ কথা অনস্বীকার্য।

মূলত, ভারতবর্ষে গণিত এর চর্চা সেই বৈদিক যুগ থেকে হয়ে আসছে। বৈদিক মনীষীগণ দ্বারা গণিতের পরিপূর্ণ চর্চাই ভারতবর্ষের জ্যোতির্বিজ্ঞানকে উৎকর্ষের শিখরে উঠতে সাহায্য করেছিল বলে মনে করা হয়। বৈদিক যুগে গণিতের ভিত্তি বেদে বর্ণিত ১৬ টি সূত্র ও ১৩ টি উপসূত্রে অন্তর্নিহিত ছিল। বৈদিকযুগে মূলতঃ দশমিক পদ্ধতিতেই গণনাকার্য সম্পন্ন হত। যজুর্বেদ সংহিতায় প্রাপ্ত বিভিন্ন সংখ্যা যেমন; অর্বুদ(১০০০০০০০), নর্বুদ(১০০০০০০০০), সমুদ্র(১০০০০০০০০০), পরার্ধ(১০০০০০০০০০০০০) থেকে জানা যায় যে বিশালায়তন সংখ্যার ধারণাও হিন্দু গণিতজ্ঞদের কল্পনাতীত ছিল না। সমসাময়িক কোনও জাতি সম্ভবত এত বৃহৎ সংখ্যা কল্পনা করতে সক্ষম ছিল না। নিম্নে বর্ণিত সংখ্যাপ্রবাহ দুটিকে লক্ষ্য করা যাকঃ
১, ৩, ৫,…,৯৯
২৪, ৪৮, ৯৬, ১৯২,………,৩৯৩২১৬

প্রথমটির নাম সমান্তর প্রগতি এবং দ্বিতীয়টির নাম গুণোত্তর প্রগতি। ‘তৈত্তিরীয় সংহিতা’ ও ‘পঞ্চবিংশ ব্রাহ্মণ’ এ যথাক্রমে উপরোক্ত প্রগতিগুলির উল্লেখ পাওয়া যায়। এত গেলো পাটিগণিতের কথা। ‘শতপথ ব্রাহ্মণ’ এ জ্ঞানেরও পরিচয় পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই জানি, বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানে একটি অন্যতম উপকরণ ছিল ‘মহাবেদী’; যার আকৃতি হল সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম। এই সমদ্বিবাহু ট্রাপিজিয়াম এর ক্ষেত্রফল এবং বাহু-উচ্চতার বিভিন্ন সম্পর্ক হিন্দুরা জানতেন। ঋণাত্মক রাশি সম্পর্কেও তারা অবগত ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় আরেকটি অন্যতম সূত্র হল “শুলভা সূত্র” শুলভা শব্দের অর্থ দড়ি বা ঐ ধরনের কিছু। এই শুলভা সূত্র ব্যবহার করা হত হিন্দুদের মৃত্যুর পর বেদী তৈরীর কাজে। এটি এক ধরনের বৈদিক জ্ঞান, যেখানে বিভিন্ন ধরনের আগুনে পোড়ানোর বেদীর বিভিন্ন অর্থ তুলে ধরা হয়েছিল। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, যারা স্বর্গে যেতে ইচ্ছুক, শুলভা সূত্র অনুযায়ী তাদের আগুনে পোড়ানোর বেদী হবে বকের আকৃতির। যারা ব্রাক্ষনদের মত পৃথিবী জয় করতে চায়, তাদের বেদী হত কচ্ছপ আকৃতির। এছাড়া রম্বস আকৃতির হবে তাদের বেদী, যারা অজাতশত্রু হতে চায়! বেদ থেকে প্রাপ্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্রগুলো হল:

অপাস্তমব্য
বৌধয়ন
মানব
ক্যাত্যায়ন
মৈত্রয়নী (মানব এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ)
বরাহ
বধূলা
হিরন্যকেশ (অপাস্তমব্য এর সাথে সাদৃশ্য পূর্ণ)

এই সূত্রগুলোর বেশির ভাগই আবিষ্কৃত হয় ৮০০ থেকে ২০০ খ্রীষ্টপূর্বে। যাদের মধ্যে সবচাইতে প্রাচীন সূত্র হল বৌধয়ন। মজার ব্যাপার, অপাস্তমব্য ও বৌধয়নের সাথে পীথাগোরাসের সূত্র ও পীথাগোরিয়ান এরীয়র সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন জ্যামিতিক আকৃতি, যেমন চতুর্ভূজ ও বর্গের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা গেছে বৌধয়নের ভেতর। এছাড়া আছে, একটি সুনির্দিষ্ট জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলকে অন্য একটি জ্যামিতিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলে রূপান্তর করার পদ্ধতি। আরো একটি বিস্ময়কর ব্যাপার হল, এই সূত্রের ভিতর √2 এর মান অত্যন্ত নির্ভুলভাবে বের করার উপায়ও বলা হয়েছে। যা আমরা পানিনি দ্বারা বর্ণিত ইতিহাস থেকে জানতে পারি।

এরপর প্রায় ১০০০ বৎসর গণিতের মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে হিন্দুদের বিশেষ একটা অবদান লক্ষ্য করা যায় না। পরবর্তীতে আর্যভট্ট্‌ (৪৭৬-৫৩০), ব্রহ্মগুপ্ত (৫৮৮-৬৬০ খ্রিঃ), বরাহমিহির (ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ), গলস্ন (ষষ্ঠ শতাব্দীর প্রথম ভাগে), ভাস্কর (ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষ ভাগে), মহাবীরাচার্য (নবম শতাব্দী ), শ্রীধর আচার্য (একাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ), শ্রীপতি (একাদশ শতাব্দী), ভাস্করাচার্য (দ্বাদশ শতাব্দী) প্রমুখ মনীষীবৃন্দের কর্মালোকে হিন্দু গণিতশাস্ত্র আবার বিশ্বসভায় নিজের স্থান সুদৃঢ় করে তোলে। গণিতশাস্ত্রে হিন্দু মনীষীদের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য অবদান হল দশমিক স্থানিক অঙ্কপাতন পদ্ধতি ও ‘শূন্য’ এর আবিষ্কার। অবশ্য এর আগে খ্রীষ্টপূর্ব ২০০ তে পিঙ্গলের ‘ছন্দসূত্রে’ শূন্যের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আর্যভট্ট রচিত ‘আর্যভটীয়’ নামক গ্রন্থে দ্বিঘাত প্রথম মাত্রার অনির্ণেয় সমীকরণের সমাধান ও π এর নির্ভুল মান এর উল্লেখ পাওয়া যায়। বর্গমূল নির্ণয়ের পদ্ধতিও আর্যভট্টের আবিষ্কার। এসময়ের আরেকজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলেন ব্রহ্মগুপ্ত। তিনি পিরামিড ফ্রাস্টাম এর আয়তন নির্নয় সম্পর্কিত সূত্র আবিষ্কার করেন। যাঁর কথা না বললে এই লেখা অপূর্ণ থেকে যাবে তিনি হলেন ভাষ্কর। তাঁর লেখা বিখ্যাত গ্রন্থখানি হল চারখন্ডে সমাপ্ত ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি।’ যার প্রথম ২টি খন্ড লীলাবতি ও বীজগণিত এ পাটীগণিত ও বীজগণিত এর বিভিন্ন বিষয় আলোচিত হয়েছে। “একটি ঋণাত্মক রাশিকে অপর একটি ঋণাত্মক রাশি দ্বারা গুণ করলে ধনাত্মক রাশি এবং একটি ঋণাত্মক ও অপর একটি ধনাত্মক রাশি গুণ করলে ঋণাত্মক রাশি পাওয়া যায়”, বীজগনিতের এই সিদ্ধান্ত ভাষ্কর এর আবিষ্কার। গণিত এর ছাত্র মানেই, “x=(-b±√(b^2-4ac))/2a” সূত্র সম্পর্কে অবগত। যার আবিষ্কারকের নাম শ্রীধর। দ্বিঘাত সমীকরণের মাত্রা নির্ণয়ের এই সূত্রটি ‘শ্রীধরাচার্যের উপপাদ্য’ নামে প্রচলিত। এতো গেল পাটীগণিত ও জ্যামিতির কথা। এরপর ত্রিকোণমিতি। ত্রিকোণমিতিতেও হিন্দুদের সাফল্য অনস্বীকার্য। বরাহমিহির ‘পঞ্চসিদ্ধান্তিকা’ গ্রন্থে sin30 ও sin 60 এর মান নির্ণয় করে দেখিয়েছেন। বর্তমান ত্রিকোণমিতিতে ব্যবহৃত মূল সূত্রগুলিও বরাহমিহির এর আবিষ্কৃত।

এই হল আমাদের গণিতশাস্ত্র; যার মাহাত্ম্য, যার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। হাজার হাজার বছর আগে যখন পৃথিবীতে জ্ঞান ও ধর্মকে একত্রিত করা হয়েছিল ঈশ্বরের উপাসনার জন্য, ঠিক তখন থেকেই আমাদের ভারত উপমহাদেশেও জ্যামিতি, গণিত ও ধর্মের বিভিন্ন রীতির সংমিশ্রন ঘটেছিল। সেই সময় সনাতন ধর্ম এতটাই সমৃদ্ধশালী ছিল যে, যা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভাবতেই অবাক লাগে যে সময় পৃথিবীর অধিকাংশে মানবসভ্যতার ছোঁয়া পর্যন্ত লাগেনি তখন ভারতবর্ষের বিভিন্ন আশ্রমে ঋষিগণ নিমগ্ন ছিলেন বিজ্ঞানের মহাযজ্ঞে। এর কারণ বৈদিক যুগে এদেশের সমাজ ব্যবস্থা মূলত ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। ধর্ম কর্মের জন্য প্রয়োজন হত নানা ধরণের যজ্ঞাদি ক্রিয়া কান্ড। এই যজ্ঞানুষ্ঠানের একটি অপরিহার্য অঙ্গ ছিল যজ্ঞবেদী নির্মাণ। যার জন্যই সংখ্যা ও জ্যামিতির বিভিন্ন বিস্ময়কর বৈশিষ্ট্যই গণিতবিদ ও পুরোহিতদের অনুপ্রাণিত করেছিল গণিতশাস্ত্রকে বিভিন্ন ধর্মবিষয়ক কাজে ব্যবহার করার।

___________________________________
তথ্যসূত্রঃ- ভারতীয় গণিতের ইতিহাস – প্রাচীন ও মধ্যযুগ
– কমলবিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মুক্ত আলোচনা ‘যারা কবিতা বা ছড়া লিখতে চান”

মুখবন্ধঃ
আমি কোন সাহিত্য বা ভাষা তত্বের ছাত্র নই এবং এ সম্পর্কে আমার কোন পুথিগত বিদ্যাও নেই। বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কেও আমার ধারনা বা জ্ঞান শূন্যের কোঠায়। লেখালেখি সম্পর্কে কাউকে কোন পরামর্শ দেয়ার যোগ্যতা বা শিক্ষা কিছুই আমার নেই। আপনারা অনেকেই জানেন আমি একজন Mariner কাজেই জাহাজ, নাবিক জীবন, সমুদ্র, সমুদ্রে চলাচল, আবহাওয়া এই নিয়েই আমার পড়াশুনা এবং কাজকর্ম বা পেশা। তবুও অতি সাধারণ কিছু ব্যাপার, যা আমার কাছে মনে হয় যারা নবীণ তারা প্রায় ভুল করছেন কাজেই এ নিয়ে দু’ চার কথা লিখলে আশা করছি কেউ মনে আঘাত না পেয়ে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন। ভুল হলে দেখিয়ে দিবেন।

ইদানিং অনেককেই দেখছি কবিতা লিখছেন। এটা আনন্দের কথা এবং এজন্য তাদেরকে বিশেষ আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এই জন্য যে তারা কিছু করছে সে ভাল বা মন্দ যাই হোক। এক দিনেতে শরৎ বাবু কিংবা হেমন্ত মুখার্জি কিংবা লতা মুঙ্গেশকর কিংবা হুমায়ুন আহমেদ হওয়া যায় না তা সে যতই আদা জল বা ওর স্যালাইন অথবা টেস্টি সেলাইন খেয়ে কিংবা মাজায় গামছা বা বেল্ট বেধে নামুক না কেন। লিখতে লিখতে লেখক, গাইতে গাইতে গায়ক হবে এটাই স্বাভাবিক। প্রথমত কিছু ভুলভ্রান্তি বা অসঙ্গতি থাকবে এটাও স্বাভাবিক। এদের এই সব চেষ্টা দেখে সঙ্গত কারণেই আমার বেশ ভাল লাগে তাই আমার এই সামান্য জ্ঞান দিয়ে যতটা পারি কিছু আলাপ করার জন্য আমার এই পোস্ট। যদিও আমি নিজেই কত ভুল করছি বা করি তার হিসেব না রেখে অপরকে জ্ঞান দান করার মত ঔদ্ধত্য দেখাতে চাইছি, এজন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই পোস্ট যদি কারো কোন কাজে লাগে তবে আমার এই প্রচেষ্টা সফল হবে। কোন ভুল ভ্রান্তি থাকলে যারা জানেন আশা করি তারা আমাকে শুধরে দিবেন।

আমি নিজেও বেশ কিছু দিন ধরে লিখছি। আমার বাড়ির প্রায় সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে কোন না কোন ব্লগ বা ওয়েব সাইট চালাত তবে এখন সময়ের অভাবে আর হয়ে উঠে না তাছাড়া কয়েকটা সাইট হ্যাক হয়ে যাওয়াতে উৎসাহও অনেকটা নির্জীব হয়ে গেছে। অর্থাৎ আমরা সবাই এই ওয়েব জগতের সাথে জড়িত ছিলাম। এখনো আমার নিজেরই দুইটা ব্লগ রয়েছে যাতে আমি আমার এই লেখাগুলি প্রকাশ করি বা আপলোড করে রাখি একথাও বলা যায়। আবার আমার মেয়েরা তাদের শিক্ষার বিষয় নিয়ে লেখালেখি করত, আমার স্ত্রীও বসে ছিল না। সেও বাংলা ও ইংরেজিতে রান্না বান্না নিয়ে দুইটা ওয়েবসাইট চালাত। যদিও সে আমার উপরে মোটা মুটি নির্ভর করেই এগুলি করত। এগুলি যে আমরা করছিলাম তা নিতান্ত শখের বশে করেছি সে আর বুঝিয়ে বলতে হবে না।

কাউকে শেখাবার জন্য আমার এই লেখা নয়। আমার সাথে সবাই এক মত পোষন নাও করতে পারেন। আমি শুধু আমার ভাবনা গুলি জানাচ্ছি।
এমন নানা ব্লগে লিখতে গিয়ে আমি যে সব সমস্যায় ভুগেছিঃ
১) বাংলায় টাইপ করতে না পারায় অনেক বানান ভুল দেখাত যা নিয়ে অনেক মন্তব্য পেয়েছি এবং নিজের অক্ষমতার জন্য তা মেনেও নিয়েছি। দেখি অনেকেরই এমন হয় তাই আমি অন্তত এ নিয়ে কিছু বলি না। কারন আমি জানি আমরা অধিকাংশই কেউ টাইপিস্ট নই। কলমে বানান ভুল এবং কম্পিউটারের কী বোর্ডে টাইপিং ভুলের মধ্যে অনেক তফাত। বানান নিয়ে এর আগে একটা লেখা দিয়েছিলাম হয়ত অনেকেই দেখেছেন আবার নাজমুল হুদা ভাইও একটা পোস্ট দিয়েছেন, এটাও বেশ গুরুত্ব পূর্ণ পোস্ট ছিল। যারা দেখেননি তারা দেখে নিলে উপকৃত হবেন। আজকাল বানান সংশোধন করা খুবই সহজ হয়েছে। যারা অভ্র দিয়ে লেখেন তারা লেখা শেষ করে অভ্র এর স্পেল্ চেকার দিয়ে দেখে নিন কিংবা ফায়ার ফক্সেও বাংলা ডিকশনারি আছে যা অনলাইনে বানান সঠিক না হলে নিচে লাল দাগ দিয়ে দেখিয়ে দেয় এভাবেও দেখে নেয়া যায়।
২) নিজের যা মনে আসত তাই লিখে ফেলতাম। কখনও ভেবে দেখিনি যে কারা এগুলি পড়ছে। ফলে যা হবার তাই হত। নানা কটু মন্তব্য পেয়েছি এবং তা অবলীলায় হজম করেছি। নিজেকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছি। তবুও ওই যে লেখার একটা সখ তা এড়াতে না পেরে লিখে ফেলে একটা আত্ম তৃপ্তি পাবার চেষ্টা করেছি। আমার মত আরো অনেকেই আছেন যারা নিতান্ত শখের বশেই লিখেন।

কেউ কোন ভুল লিখলে বা আরও ভাল কিছু করার থাকলে সেটা দেখিয়ে দিলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি শিখতেতো চানইনা উল্টো আরো দু কথা শুনিয়ে দেন। সম্প্রতি এমনি একটা ঘটনা আমি লক্ষ করেছি। আবার আমাদের অনেকের পরিচিত একজন অভিজ্ঞ জনকে দেখেছি এই ভুল দেখাতে গিয়ে রীতিমত সেখান থেকে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এমনটা কি আমরা আশা করতে পারি? আসুন আমরা চেষ্টা করি নিজেকে সংশোধন করে নিতে! ইদানিং আকাশ সভ্যতার সুযোগে আবার আর এক উপদ্রব শুরু হয়েছে। সে হলো বিদেশের ভিন্ন ভাষার দুই একটা শব্দ প্রয়োগ করছে অথচ বাংলা অভিধান খুজে সে সব শব্দের কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কেন ভাই এমন করার কি এমন প্রয়োজন? আমার নিজের ভাষায় কি কোন উপযুক্ত শব্দ নেই? অনেক আছে কিন্তু আমরা সেগুলা না জেনে ভিন্ন ভাষা কেন ব্যবহার করি?
৩) কবিতা লিখতে গিয়েও ওই একই অবস্থা। পরে কিছু নিজে কিছু ভেবে এবং কিছু খুজে পেয়ে যা জেনেছি তাই আজ এখানে তুলে দিলাম।
আমরা অনেকেই কবিতা নামে কিছু লেখার ইচ্ছা থেকে চেষ্টা করি কিন্তু সে কি হছে তা ভেবে দেখার সুযোগ পাই না বা দেখি না। নিজেই মনে মনে ভেবে নিই যে একটা কবিতা লিখলাম। আসলে কি তাই?

অনেকেই কবিতায় এমন সব শব্দ ব্যবহার করেন যে সাধারণের জন্য রীতিমত অভিধান সামনে নিয়ে বসতে হয়। এমন হলে কি পাঠক আসবে? আবার এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করেন যা কোন দেশের কোন ভাষার অভিধানেই হয়ত নেই। নিজের মনমত দুই একটা শব্দ বসিয়ে দেন। কেউ বুঝুক বা না বুঝুক তাতে কি এসে যায়! জিজ্ঞেস করলে বলা যাবে আরে ভাই আপনিতো কবিতার কিছুই বুঝেন না! এমন করে লিখতে আমরা চাই না যা সাধারনের বুঝতে সমস্যা হয়।
কবিতার কিছু গুন বা নিয়ম অবশ্যই আছে যা আমার ধারনা বা জানা মতে আমি বিশ্বাস করি। জানি না আপনারা আমার সাথে এক মত হবেন কি না।এ প্রসংগে বোন নীল শিখার এই পোস্ট এবং তার পরবর্তি পোস্টগুলা দেখতে পারেন।

ক) কবিতা= কথা+বিন্যাস+তান।
খ) মনের কথা মনের মত করে মনের মানুষকে বলার মনের মত উপায়কে কবিতা বলা যায়।
গ) অবসর সময়ের এলো মেলো ভাবনা গুলো কথার বিনুণীতে শৈল্পিক ঢঙ্গে প্রকাশ করাই কবিতা।
ঘ) কবিতা লিখতে গিয়ে কিছু উপাদানের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হয় এগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমনঃ উৎপেক্ষা, উপমা, চিত্রকল্প, অনুপ্রাস, এবং কাব্যময় শব্দ চয়ন। এক শব্দ বা বাক্য একাধিকবার ব্যবহার করা কোন অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য নয়। এমন হতে পারে কেবল গানের সুরের লয় মেলাবার জন্য। অথচ অনেকেই একই কথা বা শব্দের বহু ব্যবহার করে যাচ্ছে।
এগুলির উপযুক্ত ব্যবহার না হলে সমস্ত লেখাটাই একটা হ য ব র ল হয়ে যাবে যা পড়ে মানুষ বিরক্তি বোধ করবে। এটা কিন্তু আমাদের কারো কাম্য নয়, আমরা চাই লিখে কাউকে আনন্দ দিতে, কি বন্ধু গন তাই না?
আবার এর সাথে আরো কিছু দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে যেমন;

শব্দ প্রয়োগে নতুনত্বের প্রচলন, শৈল্পিক ভঙ্গিতে বাক্য গঠন, শৈল্পিক আঙ্গিকে উপস্থাপনা, প্রয়োজনিয় শব্দের অবশ্যম্ভাবী বাণি বিন্যাস, ছন্দ, সার্বজনীন, গতানুগতিকতা বর্জিত, অনুকরণ এবং প্রভাব মুক্ত, সাবলীল প্রকাশ, সুস্পষ্ট বক্তব্য, ভাবের গভীরতা, অহেতুক জটিল শব্দের প্রয়োগ না করা, পড়তে গিয়ে পাঠক হোচট খায় কি না সে দিকে লক্ষ্য রাখা। পাঠক যেন সহজেই পড়ে যেতে পারে সে দিকে বিশেষ লক্ষ রাখতে হবে। এখানে আপনি নিজস্ব ঢং বা স্টাইল তৈরী করে নিতে পারেন তবে তা অবশ্যই সর্বজন নন্দিত হতে হবে। আপনি নিজস্ব ঢং বা স্টাইল তৈরী করে যুগান্ত সৃষ্টি করে নিতে পারেন যা পরবর্তীতে সবাই অনুসরন করবে। শুধু নিজের কাছে ভাল লাগলেই হবে না। নিচে ছোট্ট একটু উদাহরন দিচ্ছি, যেমনঃ

“বসন্ত বাঁধনে বল্লরী
মাতাল সুরভী ছড়াল মাধুরী”

আবার

“কোয়েলা কোকিলা কাজরী গায় শোনে বনানী
কি মায়া ছড়াল পথের পাশে শিরিশ মেহগিনি!”

এখানে একটু লক্ষ করে দেখুন কেমন লাগছে।
কোন লেখা লিখা শেষ হবার সাথে সাথে পোস্ট করবেন না। কয়েকদিন রেখে দিন। যখন আপনি এই লেখার আবহ বা রেশ সম্পূর্ণ ভুলে যাবেন তখন আবার পড়ে দেখুন কি লিখেছেন। দেখবেন আপনার নিজের কাছেই অনেক ভুল ধরা পরেছে। সম্ভব হলে কাউকে দেখিয়ে বা শুনিয়ে তার মতামত নিয়ে নিন। কোন গান বা কবিতা লিখতে গিয়ে মনের মত শব্দ বা বাক্য না পেয়ে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি, আবার একটা উপন্যাসের শেষ অনুচ্ছেদ কিছুতেই মনের মত হচ্ছিল না বলে ৮ বছর অপেক্ষা করে পেয়েছি আমার এমন দৃষ্টান্তও আছে।

কবিতার মাঝে পেতে চাই জীবনের ছন্দ
তাই বুঝি নেচে ওঠে এই হৃৎপিণ্ড।
হাসি আর গানে ভরে হবে উদ্ভাস
তাই বুঝি মনে আজ এত উচ্ছ্বাস।
পড়েছ কি, যা লিখেছে কবি কাজী গুরু
তাই দিয়ে আজ কর কবিতার শুরু।
এপাশে ওপাশে রেখো কিছু অনুপ্রাস
ছন্দে গন্ধে বর্ণে ভরা সাবলীল প্রকাশ।
তুমি আমি চল আজ লিখে যাই কিছু পংতি
সুরে তালে পড়ে যেন নেচে ওঠে ধমনী।
কোথা গেলে যুঁই কামিনী নিয়ে এস বরষা
যামিনী যেন গুনগুন গেয়ে ওঠে সহসা।
তাই জেনো রিমঝিম দোলা দেয় বৃষ্টি
ধরণীর বুকে যেন এক অপরূপ সৃষ্টি।
মাঠে ঘাটে চারিদিকে ঝরে কত সুর
মন বলে, স্বপ্ন পুরী যেন বেশী নয় দূর।

কোন উপযুক্ত শব্দ খুজে পাচ্ছেন না? কয়েকদিন অপেক্ষা করুন দেখবেন সমার্থক সুন্দর ছন্দময় শব্দ আপনি যা খুজছেন অবশ্যই পাবেন। অস্থির হবার কোন দরকার নেই। আস্তে ধীরে লিখুন সুন্দর লিখুন।

আপনি যা লিখছেন তা যত্ন করে সংরক্ষণ করুন, আমি যেমন করে থাকি। আমার নিজস্ব যে দুইটা ব্লগ রয়েছে কিছু লেখার সঙ্গে সঙ্গে ওখানে আপলোড করে রাখি যাতে করে আমার কম্পিউটার ক্রাস করলেও আমার এত কষ্টের লেখাগুলি যেন হারিয়ে না যায়। নীচে এগুলার লিংক দিয়ে দিলাম ইচ্ছে হলে দেখে নিতে পারেন। আপনি চাইলে এমন করে নিজের জন্য করে নিতে পারেন। আপনি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসেই লিখুন না কেন আপনার লেখা সঙ্গে করে বয়ে নিতে হবে না। যখন যেখানে যাবেন সেখানেই দেখে নিন বা এডিট করুন বা পরের অংশ লিখতে থাকুন বা যা যা প্রয়োজন তাই করে নিতে পারবেন।

আমাদের প্রাণ প্রিয় বাংলা কোন কঠিন ভাষা নয় এবং পৃথিবীতে বাংলা ভিন্ন অন্য কোন ভাষা যুদ্ধ করে রক্ত দিয়ে কিনে নিতে হয়নি। অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ মধুর ভাষা। বিশ্বের অনেক বিদেশি সভ্যতা যে কারনেই হোক বাংলা শিখে নিয়েছে কাজেই আর দেরি কেন, আসুন আজ থেকেই আমরা বাংলাকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিই এবং নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিয়ে গর্ববোধ করি।
এর পরে আলাপ করব গান ও কবিতা নিয়ে।

সবার কলম বা কি বোর্ড থেকে বেরিয়ে আসুক বিখ্যাত কোন কবিতা বা কাব্য বা গল্প বা উপন্যাস, এমন শুভ কামনা সবার জন্য। ভাল থাকুন, ভাল লিখুন এবং সবার মাঝে তা বিলিয়ে দিন। ব্লগিং হোক জীবনের নিত্য সঙ্গী।

KB-01- 00 - Copy

অধিবর্ষের আদি-অন্ত

অধিবর্ষ বা লিপইয়ার
Leap year

২০২০ সালটা হবে লিপইয়ার।
সাধারণ সৌর বছর গুলি ৩৬৫ দিনে হয়ে থাকে, কিন্তু লিপইয়ার হয় ৩৬৬দিন। ফেব্রুয়ারি মাস সাধারণত ২৮ দিনে হলেও লিপইয়ারের এই অতিরিক্ত ১দিন ফেব্রুয়ারি মাসে যোগ করে ২৯দিনে ফেব্রুয়ারি মাস গোনা হয়।

বর্তমানে আমরা যেই ক্যালেন্ডার ব্যবহার কি সেটি হচ্ছে গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডার। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৪ বছর পর পর ফেব্রুয়ারি মাসে অতিরিক্ত ১টি দিন যোগ করে আমরা তাকে অধিবর্ষ বা লিপইয়ার বলি।

কিন্তু কেন এই লিপইয়ার?

আমরা হিসাব করি ৩৬৫ দিনে এক বছর অর্থাৎ পৃথিবী সূর্যের চার দিকে একবার ঘুরে আসে ৩৬৫ দিনে। কিন্তু বছরের প্রকৃত দৈর্ঘ্য হল ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড , অর্থাৎ পৃথিবীর এই সময়টুকু লাগে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে। তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রতি বছর আমরা ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড সময় পিছিয়ে যাচ্ছি হিসেবে না ধরার দরুন। ফলে ৪ বছর পরে এই বাদ যাওয়া সময়টুকু দাঁড়ায় ২৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা প্রায় ২৪ ঘণ্টা। এই প্রায় ২৪ ঘণ্টাকে সমন্বয় করার জন্যই লিপইয়ারের আবিষ্কার।

লিপইয়ারের প্রচলন।

খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০ সালের পূর্বে ধরে নেয়া হয়েছিল ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টায় ১ সৌর-বছর হয়। গ্রীক জ্যোতির্বিদ হিপার্কাস খুব বেশী সম্ভব খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০ সালের দিকে ত্রিকোণমিতির সাহায্যে বের করেন পৃথিবী ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট ১২ সেকেন্ডে সময়ে সূর্যকে একবার ঘুরে আসে।

খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার এবং তার সহকারী জ্যোতির্বিদ সোসিজেনিস ৩৬৫ দিনে এক বছর হবে এবং প্রতি ৪ বছরে ১ দিন যোগ করে ৩৬৬ দিনে বছর গণনা হবে বলে নতুন গণনা পদ্ধতি শুরু করেন। সেটাই আজকের এই লিপইয়ার।

বেচারা ফেব্রুয়ারি

তখনকার নিয়মানুযায়ী বছরের ৭টি মাস হত ৩০ দিনে আর বাকি ৫টি মাস হত ৩১ দিনে। জুলিয়াস সিজার তৎকালীন পঞ্চম মাস কুইন্টালিসকে নিজের নামানুসারে জুলিয়াস নাম দেন, সেইটাই আজকের সপ্তম মাস জুলাই।

জুলিয়াস সিজার তখনকার প্রচলিত মাসের ক্রম পরিবর্তন করে তৎকালীন একাদশ মাস জানুয়ারিয়াস থেকে বছর গণনা শুরু করে। পরবর্তী রোমান সম্রাট অগাস্টাস পূর্ববর্তী ষষ্ঠ মাস সেক্সটিলিস এর নাম পাল্টে রাখেন অগাস্ট।

দুই রোমান সম্রাটই নিজেদের নামের মাস দুটিকে ৩১ দিন করে বরাদ্দ দেন । দুঃখজনক ভাবে এই দুটি দিনই দুই সম্রাট কেটে নেন বেচারা ফেব্রুয়ারির কোঠা থেকে, ফলে ফেব্রুয়ারির ৩০ দিনের দৌড় গিয়ে থেমে যায় ২৮ দিনে। এই জন্যই বেচারা ফেব্রুয়ারির প্রতি দয়া দেখিয়ে লিপইয়ারের অতিরিক্ত ১টি দিন গিয়ে তার ভাগ্যে জোটে।

আরও কিছু সমস্যা

সম্রাট জুলিয়াস সিজার এর তৈরি এই লিপইয়ারও কিন্তু সময়ের সমস্যা পুরোপুরি দূর করতে পারেনি, কারণ সেখানে ৩৬৫ দিন ৬ ঘণ্টায় এক সাধারণ সৌর-বছর ধরেছিলেন আর প্রতি চার বছর পরপর ৬×৪ = ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে ৩৬৬ দিনে লিপইয়ার ধরেছিলেন। ফলে প্রতি বছরেই অতিরিক্ত কয়েক মিনিট যোগ হতে থাকে।

পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী দেখেন যে ৩৬৫ দিনে বছর ধরলে চার বছরে ২৩ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৪ সেকেন্ড সময় অতিরিক্ত থেকে যায়, আবার ১ দিন বাড়ালেও কিছুটা অতিরিক্ত বাড়ানো হয়।

তিনি হিসাব করে দেখলেন যে ৪০০ বছরে মোট ৯৬ দিন ২১ ঘণ্টা ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ড বাড়ানো দরকার, কিন্তু ৪ দিয়ে বিভাজ্য সাল গুলিকে লিপইয়ার ধরলে দিনের সংখ্যা হয় ১০০টি। দেখা যাচ্ছে ৪০০ বছরে ১০০টি লিপইয়ার না হয়ে ৯৭টি লিপইয়ার হলেই সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা যায়। তাই তিনি ঠিক করলেন যে সমস্ত সাল গুলি ১০০ দিয়ে বিভাজ্য হবে সেগুলিকে লিপইয়ার হতে হলে অবশ্যই ৪০০ দিয়েও বিভাজ্য হতে হবে। এই হিসাব অনুযায়ী ২১০০, ২২০০, ২৩০০ সাল লিপইয়ার হবে না তবে ২৪০০ সাল লিপইয়ার হবে ।

১৫৮২ খ্রিষ্টাব্দে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরী হিসাব করে দেখলেন যে, সম্রাট জুলিয়াস সিজারের ক্যালেন্ডারে চলতে চলতে সূর্যের সাথে সঠিক সময় না মানায় আমরা প্রায় ১০ দিন এগিয়ে আছি। তাই তিনি সূর্যের সাথে প্রকৃত সামঞ্জস্য আনার জন্য ক্যালেন্ডার থেকে ১০ দিন বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন । কিন্তু তার সেই প্রস্তাব তখন আমলে আনা হয় না, পরবর্তীতে ১৭৫২ সালে যখন ইংল্যান্ডে ক্যালেন্ডার সংশোধন করা হয় ততদিনে ১০ দিনের জায়গায় ১১ দিন বাদ দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ফলে ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে ২রা সেপ্টেম্বরের পরে ১১ দিন বাদ দিয়ে সরাসরি ১৪ সেপ্টেম্বরে চলে যেতে হয়। আর রাশিয়াতে এই সংস্কার করা হয় গত শতকে ১৩ দিন বাদ দিয়ে ।

কিন্তু এখানেই হিসাবের শেষ নয়।
উপরের হিসাবে ৪০০ বছরে মোট ৯৬ দিন ২১ ঘণ্টা ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ড এর বদলে আমরা বাড়িয়েছি ৯৭ দিন। তাহলে ৪০০ বছরে ২ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট ২০ সেকেন্ড ঘাটতি রয়ে যায়। এই হিসাবে প্রতি ৩৩০৫ বছরে ১ দিন কম পড়েগ্রেগরীর সংস্কার ১৬০০ সাল থেকে কার্যকর ধরে ৪৯০৫ সালে ১ দিন পুরো হয়ে যাবে। এই ১ দিনকে সমন্বয় করতে ৪৯০৪ অথবা ৪৯০৮ সালকে নন-লিপইয়ার ধরতে হবে । যদি ৪৯০৪ সালের লিপইয়ার বাদ দেওয়া হয় তবে ৪৮৯৬ সালের পর লিপইয়ার হবে ১২ বছর পর ৪৯০৮ সালে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে লিপইয়ারের ২টি সূত্র রয়েছে।
১। যে সালগুলি ৪ দ্বারা বিভাজ্য হবে সেগুলি লিপইয়ার।
২। যে সমস্ত সাল গুলি ১০০ দিয়ে বিভাজ্য হবে সেগুলিকে লিপইয়ার হতে হলে অবশ্যই ৪০০ দিয়েও বিভাজ্য হতে হবে।

শীতলক্ষ্যা এখন কুষ্ঠরোগী

শীতলক্ষ্যা এখন কুষ্ঠরোগী

শীতলক্ষ্মা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী
শুয়ে কাতরাচ্ছ মৃত্যু শয্যায়,
বিষাক্ত কেমিক্যালের পানির ছোবলে
তোমার সাথে আমাদেরও জীবন যায়।
শীতলক্ষ্যা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী,
তোমার পানি পান করে আমরাও ভুগি।

একসময় তোমার ছিল ভরা যৌবন
ছিল তোমর স্বচ্ছ পানি,
তোমার স্বচ্ছ পানি দিয়ে হতো ঔষধ
তা দুনিয়ার সকলেই জানি।
শীতলক্ষ্যা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী,
তোমার পানি পান করে আমরাও ভুগি।

সেদিনও দেখেছি তোমার দুই পাড়ে
সহস্র নারী পুরুষের কোলাহল,
আজ দেখি তোমার দু-পাড় জনশূণ্য
দুর্গন্ধময় বিষাক্ত পানিতে করে কলকল।
শীতলক্ষ্যা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী,
তোমার পানি পান করে আমরাও ভুগি।

একসময় দেখেছি জেলেদের মাছধরা
হতো দু-পাড়ে সবজির চাষ,
দেখা যেতো পালতোলা গহনার নৌকা
এখন সবই স্মৃতি আর ইতিহাস।
শীতলক্ষ্যা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী,
তোমার পানি পান করে আমরাও ভুগি।

তোমার সামনে এখন কেউ আসে না
বিষাক্ত কেমিক্যালে পঁচা দুর্গন্ধে,
তবুও কেউ ভাবে না তোমার কথা
স্বয়ং রাষ্ট্রই রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্বে।
শীতলক্ষ্যা তুমি এখন কুষ্ঠরোগী,
তোমার পানি পান করে আমরাও ভুগি।

NF_1_ (21) - Copy

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০২

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো। এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানিক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে। যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই। আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে। প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে। দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

১১। দেশের নাম : Barbados বার্বাডোস

জাতীয় ফুলে নাম : রাধাচূড়া
ইংরেজী নাম : Pride of Barbados, Dwarf Poinciana, Flower Fence
বৈজ্ঞানিক নাম : Caesalpinia pulcherrima

১২। দেশের নাম : Belarus বেলারুশ

জাতীয় ফুলে নাম : তিসি ফুল
ইংরেজী নাম : Flax , linseed
বৈজ্ঞানিক নাম : Linum Usitatissimum

১৩। দেশের নাম : Belgium বেলজিয়াম

জাতীয় ফুলে নাম : লাল পপী ফুল
ইংরেজী নাম : Red Poppy
বৈজ্ঞানিক নাম : Papaver Rhoeas

১৪। দেশের নাম : Belize বেলিজ

জাতীয় ফুলে নাম : কালো অর্কিড
ইংরেজী নাম : Black Orchid
বৈজ্ঞানিক নাম : Trichoglottis Brachiata

১৫। দেশের নাম : Bermuda বারমুডা

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Blue-eyed Grass
বৈজ্ঞানিক নাম : Sisyrinchium Montanum

১৬। দেশের নাম : Bhutan ভুটান

জাতীয় ফুলে নাম : নীল পপী ফুল
ইংরেজী নাম : Blue poppy , Meconopsis baileyi, Himalayan blue poppy
বৈজ্ঞানিক নাম : Meconopsis Betonicifolia

১৭। দেশের নাম : Bohemia বোহেমিয়া

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Thyme, German thyme, Garden thyme
বৈজ্ঞানিক নাম : Thymus Vulgaris

১৮। দেশের নাম : Bolivia বোলিভিয়া

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Kantuta, Qantu, Qantus, Qantuta
বৈজ্ঞানিক নাম : Cantua Buxifolia

১৯। দেশের নাম : Brazil ব্রাজিল

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Cattleya Orchid, Crimson Cattleya or Ruby-lipped Cattleya
বৈজ্ঞানিক নাম : Cattleya Labiata

২০। দেশের নাম : British Columbia ব্রিটিশ কলাম্বিয়া

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Dogwood Tree Flower, Pacific dogwood, Mountain dogwood, Western dogwood, California dogwood
বৈজ্ঞানিক নাম : Cornus Nuttalli

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

সৌজন্য সংখ্যা ও আলোচনা (পাঠ্যসূচি বহির্ভূত পাঠ)

সৌজন্য সংখ্যা ও আলোচনা
(পাঠ্যসূচি বহির্ভূত পাঠ)

এক সাদা ঘোড়া অবসরে হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে এলো। অন্য গ্রাম। সরু পথ দিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে পুকুরের পাঁশে বাঁশঝাড়ের পার হলো। সেখানে চারপাশ খোলা এক ছোট্ট ঘর। মিঠেল দুপুর। আচমকা হিমেল বাতাস। সেই ঘরের নিমছায়ায় একটি ঘোড়া কচিঘাস চাবায়। তার গায়ের রং তেল চকচকে খয়েরি-কালো। সাদা ঘোড়া চমকে উঠল। হায় এত সুন্দর একজন রয়েছে, আর সে জানে না! সে পায়ে পায়ে কাছে গিয়ে বলল, –

‘কী করো সুন্দরী?’
‘কেন ঘাস খাই।’
‘তাই তো…তাই তো! তা তুমি আজ আউটিং-এ যাওনি?’
‘মালিকের ভাব এসেছে। কবিতা লিখছে।’
‘তোমার মালিকও কবিতা লেখে?’
‘তিনি এই জেলার বিখ্যাত কবি। তোমার মালিক কী করে?’
‘তিনি গরুর দালাল। তিনি গ্রাম থেকে গরু কেনেন, শহরের বাজারে বেচেন। মাঝে মধ্যে তিনি কবিতা পড়েন এবং লেখেন।’
‘তার কাছে আমার মালিকের কাব্য আছে?’
‘সেইটা আবার কী?’
‘বই গো বই। আইসো তোমারে বই চিনাইয়া দি।’

সাদা ঘোড়া কালো ঘোড়ার কাছে গেল। কালো ঘোড়া একমুঠো ঘাস মুখে নিয়ে জোড়া পায়ে জোর লাথি ছুড়ল। সাদা ঘোড়া ছিটকে পুকুরে পড়ে গেল।

‘বন্ধু ইহাকে সৌজন্য সংখ্যা কহে।’
‘হাঁ হাঁ বুঝেছি। নিশ্চয়ই আলোচনা লিখিব আমি।’

অতপর সাদা ঘোড়া পুকুর হতে উঠে গা-ঝাড়া দিয়ে হাঁটতে শুরু করল।

(গুলতাপ্পি)

NF_1_ (20)

বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুল – ০১

বলুনতো বাংলাদেশের জাতীয় ফুল কোনটি?
যদি আপনার উত্তর হয় “শাপলা” তাহলে আপনার উত্তর ভুল হয়েছে।
বাংলাদেশের জাতীয় ফুলের নাম “সাদা শাপলা”

পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুল রয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি দেশ তাদের জাতীয় ফুল নির্বাচন করেনি এখনো।
এই লেখায় পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই জাতীয় ফুলের ইংরেজী নাম, বৈজ্ঞানীক নাম ও ফুলের ছবি দেয়া হবে।

যে ফুল গুলির বাংলা নাম আমার জানা আছে সেগুলির বাংলা নামও দেয়া থাকবে।
যে ফুল গুলির বাংলা নামের ঘর ফাঁকা থাকবে বুঝতে হবে সেটির বাংলা নাম আমার জানা নেই।
আপনাদের কারো জানা থাকলে মন্তব্যে জানালে সেটি যোগ করে দেয়া হবে।

প্রতি পর্বে ১০টি করে দেশের নাম ও তাদের জাতীয় ফুল দেখানো হবে।
দেশের নামগুলি ইংরেজী বর্ণানুক্রমিক সাজানো হবে।

১। দেশের নাম : Antigua & Barbuda অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Dagger’s Log
বৈজ্ঞানিক নাম : Agave Karatto Miller

২। দেশের নাম : Argentina আর্জিণ্টিনা


জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Ceibo
বৈজ্ঞানিক নাম : Erythrina Crista-galli

৩। দেশের নাম : Armenia আরমেনিয়া
আরমেনিয়ার কোন জাতীয় ফুল নেই।

৪। দেশের নাম : Australia অস্ট্রেলিয়া

জাতীয় ফুলে নাম : সোনালী একাসিয়া, সোনালী আকাশমনি
ইংরেজী নাম : Golden Wattle
বৈজ্ঞানিক নাম : Acacia Pycnantha

৫। দেশের নাম : Austria অস্ট্রিয়া

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Edelweiss
বৈজ্ঞানিক নাম : Leontopodium Alpinum

৬। দেশের নাম : Azerbaijan আজেরবাইজান
আজেরবাইজানের কোন জাতীয় ফুল নেই।

৭। দেশের নাম : Bahamas বাহামা

জাতীয় ফুলে নাম : চন্দ্রপ্রভা, হলদে চন্দ্রপ্রভা, সোনাপাতি
ইংরেজী নাম : Yellow bells, Yellow trumpet, Yellow-Elder
বৈজ্ঞানিক নাম : Tecoma Stans

৮। দেশের নাম : Bahrain বাহরাইন
বাহরাইনের কোন জাতীয় ফুল নেই।

৯। দেশের নাম : Balearic Islands

জাতীয় ফুলে নাম :
ইংরেজী নাম : Carnation, clove pink
বৈজ্ঞানিক নাম : Dianthus Caryophyllus

১০। দেশের নাম : Bangladesh বাংলাদেশ

জাতীয় ফুলে নাম : সাদা শাপলা
ইংরেজী নাম : Water Lily
বৈজ্ঞানিক নাম : Nymphaea nouchali

ঘোষণা : প্রায় সবগুলি ফুলের ছবি নেট থেকে, বিশেষ করে উইকি থেকে সংগ্রহ করা হবে। কিছু ছবি আমার নিজের তোলা আছে।

উপস্থাপনার পূর্বপ্রস্তুতি

যারা শিল্পসাহিত্য, আবৃত্তি, সঙ্গীত, অভিনয়, রাজনীতি এমন কি শিক্ষকতা বা প্রশিক্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের কোনো না কোনো সময় মঞ্চে উঠতে হয়। লাইমলাইটে দাঁড়াতে হয়। মাইক্রোফোনে কথা বলতে হয়। এই কথা বলা বা উপস্থাপনা যদি দর্শক-শ্রোতাকে আকৃষ্ট বা মুগ্ধ করে তাহলে তো সমস্যা নেই। কিন্তু একটু অমনোযোগ বা সামান্য অসতর্কতায় যদি দর্শক-শ্রোতা বিরক্তবোধ করেন তাহলে সকল প্রস্তুতি ও উদ্যোগ পণ্ড হতে বাধ্য। তখন যিনি উপস্থাপনা করলেন, নিজেকে ক্ষমা করতে পারেন না। আত্মদংশনের শত হুল মনের মধ্যে বিঁধতে থাকে। যতদিন মনে পড়ে ততদিন নিজের মনে বিব্রত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তাই উপস্থাপনার ক্ষেত্রে পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া ও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

উপস্থাপনা কি?
উপস্থাপনা একটি শিল্প। কেউ কেউ একটু আধটু উপস্থাপনা করতে করতে সময়ে বেশ দক্ষ হয়ে উঠেন। ঘন্টার পর ঘন্টা দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে রাখতে পারেন। এটি কোনো মায়াজাল বিস্তারকারী ব্যাপার নয়। যে-কেউ খুব সহজভাবে উপস্থাপনা করতে পারেন। দিনযাপনে যেমন স্বাভাবিকভাবে কথা বলেন ঠিক তেমনভাবে বেশ সহজে উপস্থাপনা চালিয়ে যেতে সক্ষম। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আড্ডা বা আসরে চমৎকার কথা বলে চলেন। আড্ডা জমিয়ে রাখার ক্ষমতা অপরিসীম; কিন্তু মঞ্চে উঠতে ইতস্তত করেন। ভয় পান। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বোকা হয়ে তোতলাতে থাকেন। পরবর্তীতে এই কাজ করতে আর আগ্রহী থাকেন না। অথচ কিছু প্রস্তুতি নিলে যে-কেউ চমৎকার ও আকর্ষণীয় উপস্থাপনা করতে সক্ষম হতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

সাধারণভাবে উপস্থাপনা হলো সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য সামনে রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো তথ্য বা অনুভূতির প্রকাশ। এই তথ্য বা অনুভূতি নানান মাধ্যমের হতে পারে এবং তা একটি ধারানুক্রমের নিয়ম অনুসরণ করে সম্পাদিত হয়। এটি মৌখিক হতে পারে। দর্শনযোগ্য হতে পারে, যেখানে ছবি বা চিত্র বিশ্লেষণমূলক বর্ণনা থাকতে পারে। এছাড়া উপস্থাপনা হতে পারে, লিখিত, সঙ্গীত, আবৃত্তি, অভিনয় অথবা সার্বিকভাবে অডিও-ভিজুয়াল। উপস্থাপনা একইসঙ্গে শোনা ও দেখার বিষয় হলেও বেতারে শুধুমাত্র শোনার বিষয়টি থাকে। মঞ্চ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে দর্শকশ্রোতার সরাসরি যোগাযোগ ঘটে। আপনি একটু সতর্ক দৃষ্টি রাখলে তাঁদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া খুব সহজে অনুধাবন করতে পারেন। তাদের ইতিবাচক অবস্থান আপনাকে উৎসাহিত করে তোলে। বিপরীত অবস্থান হতোদ্যম করে দেয়। সেক্ষেত্রে আপনার চলমান উপস্থাপনা আরও খারাব হয়ে যেতে বাধ্য।

উপস্থাপনার উদ্দেশ্য:
যেভাবেই বিশ্লেষণ করা যাক না কেন প্রতিটি উপস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। এগুলোকে এভাবে বলা যেতে পারে। ১. কোনো ঘটনা, গবেষণা, আবিষ্কার কিংবা অভিজ্ঞতা শেয়ার করা। ২. কোনোকিছুর সেবা প্রদান উপলক্ষ্যে অর্থাৎ সার্ভিস ডেলিভারির বিষয় প্রতিপাদন করা। ৩. কোনোকিছুর প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা এবং একইসঙ্গে অঙ্গীকার ব্যক্ত করা। ৪. কোনো পণ্য সম্পর্কে বিক্রয় ও সেবার উপর বিস্তারিত ধারনা প্রদান। ৫. কোনো সংঘ বা দল বা এজেন্সি বা দপ্তর সম্পর্কে প্রতিনিধিত্বমূলক বক্তব্য প্রদান। ৬. কোনো বিশেষ বিশ্বাস ও মনমানসিকতার বিষয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু বলা। ৭. কোনো বিশেষ দাবি, সমাধান প্রস্তাব, চিন্তা বা কাজের পথ নির্দেশনার জন্য বক্তব্য প্রদান এবং ৮. কোনো বিনোদনমূলক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মনোজ্ঞ উপস্থাপনা।

উপস্থাপনার সাত দিক:
যে-কোনো উপস্থাপনার ক্ষেত্রে আয়োজনকারীকে কতগুলো বিষয় বিবেচনায় আনতে হয়। এগুলোকে পর্যায়ক্রমে এভাবে বলা যায় যে, উপস্থাপনাটি কেন বা কী জন্য নির্ধারণ করা হচ্ছে? সেটি কে বা কারা করবেন? উপস্থাপনাটি কাদের বা কোন লক্ষ্যভুক্ত জনগোষ্ঠীর জন্য? কী বিষয়ে উপস্থাপনা? সেটি কোন সময়ে করা হবে? কোন স্থানে বা কোথায় এই আয়োজন? উপস্থাপনাটি কোন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হবে?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের সামনে খুব সহজে একটি প্রোগ্রামের সার্বিক দিক দৃশ্যমান হয়ে উঠে। যেমন ধরা যাক, একটি কবিতাপাঠের প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করা হবে। তাহলে দেখা যায়, অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনা কোনো একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে করা হয়েছে। তাহলো কবি ও তার কবিতাকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করা। অন্যতম এই লক্ষ্যের সঙ্গে দ্বিতীয় বা পরোক্ষ উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণের মধ্যে কবিতাকে জনপ্রিয় করে তোলা। এই প্রোগ্রামের বিভিন্ন অংশে প্রমুখ ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট করা আছে। তাঁরা কবির অথবা একাধিক কবির কবিতা পাঠ করবেন। কবি নিজেও তাঁর কবিতা পাঠ করতে পারেন। যিনিই করুন এক বা একাধিক উপস্থাপক সার্বিক অনুষ্ঠান দর্শকশ্রোতার মাঝে তুলে ধরেন। এই অনুষ্ঠান কবিতাপ্রেমিক সকল ব্যক্তির জন্য উন্মুক্ত। অনুষ্ঠানের মূল বিষয় জনৈক কবির কবিতা পাঠ এবং প্রাসঙ্গিকভাবে বিষয়সংশ্লিষ্ট আলোচনা থাকতে পারে। অনুষ্ঠানটির একটি নির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ ঠিক করা থাকে যেমনভাবে কোথায় অর্থাৎ কোন্ ভেন্যুতে হবে সেটিও নির্ধারিত। এখন বিবেচ্য বিষয় কবিতপাঠের এই আয়োজন কোন প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করা হবে যা দর্শকশ্রোতাকে আনন্দ দেবে একইসঙ্গে তাঁকে ভাবার ও স্ব-ভূমিকা রাখার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। অনুষ্ঠানটি কি সাধারণভাবে করা হবে নাকি কিছু অলঙ্করণ করা হবে? যেমন: ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এফেক্ট, ভিজুয়ালাইজেশন এবং অংশ্রগহণমূলক পদ্ধতি রাখা হবে কি না? বস্তুত একটি অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রাম আয়োজন করার ক্ষেত্রে আয়োজক বা আয়োজকগণের নিজস্ব মেধা পছন্দ-অপছন্দ, দক্ষতা ও দূরদৃষ্টি অনেক কাজ করতে পারে। দক্ষ আয়োজক বা উদ্যোক্তার জন্য যেমন একটি অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হতে পারে তেমনভাবে একজন দক্ষ উপস্থাপকের মাধ্যমে দুর্বল অনুষ্ঠান বিশেষভাবে প্রশংসা কুড়িয়ে আনতে পারে ও জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

উপস্থাপকের পূর্বপ্রস্তুতি:
যে-কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে উপস্থাপকের পূর্বপ্রস্তুতি থাকে। এটি করা থাকলে উপস্থাপনার গুণে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও সফল হয়। উপস্থাপনার সাতদিক বিবেচনায় এনে আমরা যদি নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি একটু দৃষ্টি দিই তাহলে উপস্থাপনা সাবলীল হবে এবং যে-কোনো ভঙ্গুরতা এড়ানো সম্ভব। যেমন:

১. নিজের পোশাক ও অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। কোন ধরনের পোশাক পরবেন, আপনার হাঁটাচলা, নড়াচড়া, কথা বলা সবকিছুতে স্বাচ্ছন্দ্য আছে কি না পরখ করুন। গলা শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে পানি খেয়ে নিন। অহেতুক উষ্ণতা বা গরমবোধ যাতে না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিন। উত্তেজক খাদ্য পরিহার করুন। অতিরিক্ত মেকআপ না নেয়া সবচেয়ে ভালো। আত্মবিশ্বাসী থাকুন। তবে কখনো জ্ঞানীর ভূমিকা নিতে যাবেন না।
২. যে বিষয়ে উপস্থাপনা করবেন সে সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা নিন। যদি অতিরিক্ত গবেষণার আবশ্যক হয় তা সম্পন্ন করুন। সময় সম্পর্কে সচেতন থাকুন অর্থাৎ কতটুকু সময় ধরে কথা বলা দরকার তা ঠিক করুন। এই উপস্থাপনার মাধ্যমে আপনি কি একটি অথবা তারও বেশি বার্তা পৌঁছুতে আগ্রহী?
৩. কারা এই অনুষ্ঠানের দর্শক শ্রোতা হয়ে এসেছেন? কী জন্য এবং কিসের আগ্রহে তাঁরা এসেছেন? সংখ্যায় তাঁরা কত হতে পারে? তাঁরা কি আপনার ভাষা ও কথা সহজভাবে বুঝতে পারেন অর্থাৎ আপনি কি তাঁদের কাছে আপনার বক্তব্য সঠিকভাবে নিয়ে যেতে সক্ষম?
৪. প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানটি কোথায় আয়োজিত হচ্ছে? সেখানের আসন ব্যবস্থা ও মঞ্চ কেমন? দর্শক-শ্রোতাদের প্রতি আপনার বক্তব্য সঠিকভাবে পৌঁছুনোর সুব্যবস্থা আছে কি না? বিদ্যুৎ ও আনুষঙ্গিক সহযোগগুলো আছে কি না? উপস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় অডিও-ভিজুয়াল মাধ্যমগুলো সচল বা কর্যকর আছে কি? প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান ঘোষিত সময়ে আয়োজন করা গেলে দর্শক-শ্রোতাকে বিরক্তির হাত থেকে রক্ষা করে যা একজন উপস্থাপকের জন্য একটি ইতিবাচক সুবিধা।
৫. অনুষ্ঠানের সঙ্গে আপনার উপস্থাপনার বিষয়টি মানানসই আছে কি এবং কিভাবে তা ভেবে দেখা দরকার। দর্শক-শ্রোতা যাতে ক্লান্তি বোধ না করেন তা দৃষ্টিতে রাখা। যদি তেমন হয়ে থাকে তাহলে তাঁদের উজ্জীবিত করার জন্য অনুষ্ঠানের সঙ্গে মিলে যায় এমন বিকল্প উপস্থাপনার প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
৬. কিভাবে উপস্থাপনা করছেন? মাইক্রোফোনে? কোনো ওভারহেড প্রজেক্টর বা অন্যকোনো অডিও-ভিজুয়াল ব্যবহার করে থাকলে আগে থেকে তার অপারটিং পদ্ধতি শিখে রাখুন।
৭. দর্শকশ্রোতাদের কাছ থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছেন তার একটি আনুমানিক চিত্র মনে মনে আঁকতে পারেন। অথবা তাঁদের মাঝে যে প্রতিক্রিয়া তৈরিতে উপস্থাপনা করছেন তা অনুমান করুন ও উদ্বুদ্ধ হোন।

মূলত যিনি উপস্থাপনা করবেন তাকে সবদিক থেকে চিন্তা করে সাবলীল হতে হবে। নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস আনতে হবে। মঞ্চে এমনভাবে দাঁড়ানো যাবে না যাতে আপনাকে বোকা বোকা লাগে আবার খুব বেশি অহংকারি মনে হয়। সাধারণত উপস্থাপনারে ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয় যে, মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা যাচ্ছে, নিজেকে বোকা দেখাচ্ছে বলে ধারনা হতে থাকে, অহেতুক তাড়াহুড়োভাব এবং ভুল হয়ে যায়। সর্বোপরি দর্শকশ্রোতা বিরক্তবোধ করছেন বলে মনে হতে থাকে।

সেক্ষেত্রে আপনি নিজের জন্য আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এই ব্যবস্থা নিতে পারেন: ১. আপনি যোগ্য এবং দক্ষ বলে উপস্থাপনার কাজটি করতে এসাইন্ড হয়েছেন। ২. দর্শক-শ্রোতা আপনার কথা শুনতে আগ্রহী। ৩. তাঁদের মধ্যে আপনার চেয়ে অনেক জ্ঞানী ও দক্ষ ব্যক্তি থাকলেও আজ তাঁরা আপনার পক্ষে আছেন। ৪. কোনো বিষয়ে মতদ্বৈততার মানে এই নয় যে, তাঁরা আপনাকে আক্রমণ করছেন।

যা করবেন:
১. মঞ্চে উঠে সবচেয়ে আগেই দর্শকশ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানের বিষয়ে দুটো কথা বলবেন।
২. যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী এবং ইতিবাচক মনোভঙ্গীর প্রকাশ করবেন।
৩. শুরু করার আগেই মনে মনে একটি ধারানুক্রম সাজিয়ে নিন যে, কী কী বিষয় এবং কখন কখন বলবেন।
৪. মূল অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ সময়ের কতটুকু অংশে নিজের উপস্থাপনা রাখবেন তা পরিমাপ করে নিন।

যা করবেন না:
১. কখনো ওজর তুলবেন না। দুঃখ প্রকাশ করবেন না। কিংবা নিজের দুর্বলতা বা সবলতা সম্পর্কে বলবেন না। নিজেকে হাস্যকর রূপে হাজির করবেন না।
২. এলোমেলো এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে কথা বলবেন না।
৩. দর্শক-শ্রোতাদের প্রতি কোনো অভিযোগ করবেন না। তাঁদের কোনো কৃত কাজের উল্লেখ করবেন না।
৪. সমাজে বলা অসঙ্গত এমন কৌতুক বা উপকরণ পরিবেশন করবেন না।
৫. এভাবে উপস্থাপনা শুরু করবেন না যে, ‘প্রিয় দর্শক-শ্রোতা এবার আমি আপনাদের সে বিষয়টি বলতে যাচ্ছি যা আমাকে বলতে বলা হয়েছে যে,… ইত্যাদি ইত্যাদি।’
৬. এমন ভাব নেবেন না যাতে বোঝানো হয় যে, আপনি সবকিছু জানেন। এমন কি যে-কোনো যুক্তিতর্কে আপনি অবশ্যই বিজয়ী হবেন।
৭. দর্শকের সারিতে থাকা সুধিসমাজের প্রতি কোনো প্রশ্ন বা উক্তি ছুঁড়ে দেবেন না যা অত্যন্ত বিব্রতকর ও বিরক্তিকর।

পরিশেষে:
উপস্থাপনার বিষয়ে কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। যেমন: অনেকে বলে থাকেন, উপস্থাপনার বিষয়টি সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত একটি মেধা। এটি সহজে কেউ পারেন না। প্রথমেই যখন পারলাম না তখন কোনোসময়ে পারব না। অনেকে শুনলেন কিন্তু কেউ সাধুবাদ দিল না, অর্থাৎ উপস্থাপনা ভালো হয় নি। অন্যেরা চমৎকার ও সার্থক উপস্থাপনা করেন। আমার দ্বারা এটি হবে না। ইত্যাদি। কিন্তু সার্বিকভাবে বলা যায় যে, উপস্থাপনার বিষয়টি চমৎকার এবং উপভোগ্য। শুধু একটু সতর্ক প্রস্তুতি ও নিয়ম রক্ষা করলে যে-কেউ একজন সফল ও জনপ্রিয় উপস্থাপক হতে পারেন। তখন এই কাজে সবকিছুই আনন্দদায়ক হয়ে উঠে।

সূত্র: ছোটগল্পের নির্মাণশৈলী_মাহবুব আলী