বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

শব্দনীড় ব্লগে ঠিক এই মূহুর্তে কতজন উপস্থিত জানতে চাই …

শব্দনীড় ব্লগে ঠিক এই মূহুর্তে কতজন উপস্থিত বলুন তো !! অনেকদিন শব্দনীড়ে ব্লগাদের উপস্থিতির এমন স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখা যায় নি। এসে ফিরে যান।

সেই কাকভোর থেকে বিরামহীন বৃষ্টি আর সাপ্তাহিক ছুটির এই অবসরে আমার মতো ঘরে বাইরে থেকে যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী শব্দনীড় এর সঙ্গে আছেন দেখে ভালো লাগছে। ঠিক এই অনুভূতি পারস্পরিক ভালোবাসার বন্ধনকে সুদৃঢ় করে।

প্রশ্ন হচ্ছে উপস্থিতির যেমন সংখ্যা দেখতে পাচ্ছি সেটা কি কেবল আমিই দেখতে পাচ্ছি নাকি আপনারাও পাচ্ছেন জানতে চাই। জানতে পেলে ভালো লাগবে।

যদি থাকেন আপনার একটি মন্তব্য চাই।

সাযযাদ কা‌দির

বাংলা সাহিত্যাকাশের নক্ষত্র
অন্ধরা তোমার আলো দেখেনি

দেখবেও না, এটাই স্বাভাবিক

পেঁচার এক চোখ কোটরে থাকে
লক্ষীর ভাড় তো দেখেনা

সুন্দর-শুদ্ধতার পূজারী
সাহিত্যের মহান সাধক
তোমার রয়েছে শুদ্ধ পাঠক

আসুন সবাই মিলিত হই কোথাও


শব্দনীড় বন্ধুরা। আমরা যারা শব্দনীড়ে ব্লগিং চর্চা করি তাদের একটা গেট টুগেদার এর ব্যবস্থা হলে কেমন হয়? পরিচিত হবো, কথা বলবো, আমরা আড্ডা দেবো।

আমরা অনেকেই অনেককে চিনি না জানি না। ব্লগের বাইরে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। তাই আমাদের ব্লগীয় সম্পর্কটাকে আরো গভীর, বন্ধুত্বের ছায়া আরো নিবিড় করার লক্ষ্যে আসুন সবাই কোথাও মিলিত হই।

সম্মতিক্রমে ঢাকার কোন এক জায়গায় আমরা মিলিত হতে পারি। যেমন, ঢাকা ইউনিভার্সিটির টিএসসি বা হাতির ঝিল অথবা এরকম সুয়্যেটাবল অন্য কোথাও।

তাই সব সম্মানিত ব্লগারদের অনুরোধ করব আপনার যারা থাকতে আগ্রহী নিজেদের মোবাইল নাম্বার মন্তব্যের মাধ্যমে জানান। আপনারা কোন ভেনু যদি প্রস্তাব করতে চান তাও করতে পারেন।

আশাকরি আপনাদের সকলের অংশগ্রহণে কোন একটা সপ্তাহান্তে (Weekend) আমরা নিজেরা নিজেদের মাঝে ভাব বিনিময়ের সুযোগ তৈরী করতে পারব।

কথা হবে না

কথা হবে না
——–
কি আশ্চর্য ব্যপার ,তোমার সাথে দেখা হলে
তোমার আমার আর কথা হবে না
অথচ তোমার হাত দুটো আমি দীর্ঘসময় ধরে থাকতাম
তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম
কোন বাধা থাকত না
দীর্ঘ সময় তোমার সাথে কথা বলতাম
প্রীয়সী বিচ্ছেদ কতটা সহজ আবার সহজ না
ভোলা যায় ,ভোলা যায় না
পাওয়া যায় ,পাওয়া যায় না
তোমাকে স্পর্শ করা আমার এখন নিষেধ
অথচ এক সময় তোমাকে স্পর্শ করতাম
কি এক হিংসে আমার তোমাকে কেড়ে নিল
কি এক ঝড় তোমাকে আমাকে আলাদা করল
গাছ ভেঙ্গে গেল ,ছাদ ভেঙ্গে গেল
মাঠ ময়দান ঘুরে গেল ,পথ পাল্টে গেল
তোমার সাথে দেখা হবে না
যদি দেখা হয় ,কথা হবে না

এত ভাববার কি আছে?

এত ভাববার কি আছে?
———
তোমাকে দেখতে গিয়ে আর কি হবে
কোন না বাড়ী উঠানে গৃহস্থলির কাজে তুমি ব্যস্ত
জান প্রিয়সী –তোমার আমার খুব মিল

তুমি আমি একই আকাশের নীচে
প্রতিদিন এক-ই চাঁদের মুখ দেখি দুজনে সন্ধ্যে হলে
তা কি কম পাওয়া বল?
প্রতিদিন পৃথিবীর মানুষগুলো ব্যস্ত হবে
ঘুমোবে,খাবে,হাসবে,কাঁদবে
আমি ও তুমি সেরকম-ই মানুষ
ভাববার কি আছে এত ?

সব-ই তো ঠিক আছে
পৃথিবীর সব গাছ আজ পাতা ধরাবে,পাতা গজাবে
রাস্তা সব মানুষ ব্যস্ত হয়ে হেটে যাবে
আমি ও তুমি নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত থাকব
যথেষ্ট মিল আছে
আর ভাববার কি আছে?

আরণ্যককে মাপা যাবে না

———
আরণ্যকের বিনয়ী হাসির মূল্য হবে কি?
কে দিবে আরণ্যকের কান্নার মূল্য?
এ পৃথিবীতে মানুষের কান্নার ভাবনার মূল্য কি মাপা যায়?
আরণ্যক বাসের জানালা দিয়ে বিশাল পৃথিবী দেখবে
কিছু বাতাস আরণ্যকের চুল উড়াবে
আরণ্যক চুপ হয়ে বসে রইবে
হয়ত সময় পেলে কারোর সাথে কথা বলবে
হেটে যাবে আরণ্যক তার রীতিমত প্রয়োজনীয় জায়গায়
বাজারে ঘাটে
আমি আরণ্যকের স্বর্গীয় স্বভাবকে মাপতে চেয়েছিলাম
অনেক দূর থেকে আরণ্যক ফিরে আসবে ঘরে
আমি তার দূরত্ব মাপতে চেয়েছিলাম
আসলে মানুষের ভাষা ,কথা ,ভাবনা,ব্যথা,হাসি ,কান্না
মাপা যাবে না
মাপা যাবে না
মানুষকে মাপা যাবে না
আরণ্যককে মাপা যাবে না।

শব্দনীড় ব্লগকে প্রাণবন্ত করতে আমার কয়েকটি প্রস্তাব

আমি শব্দনীড়ের একজন পুরাতন সদস্য ছিলাম। নতুন করে শব্দনীড় চালু হওয়ায় আবার নতুন রূপে শব্দনীড়ে আসছি। ইদানিং শব্দনীড়কে আগের মতো প্রাণবন্ত দেখছি না। বর্তমানে ব্লগারকে মধ্যে তেমন কোন আন্তরিকতা দেখছি না। আমি লক্ষ্য করে দেখছি দুয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই কিছুক্ষণের জন্য ব্লগে প্রবেশ করে একটি কবিতা পোস্ট করে কয়েকদিনের জন্য গায়েব হয়ে যায়! ওনি নিজেতো অন্যের পোস্টে মন্তব্য করেনই না, এমনকি নিজের পোস্টের মন্তব্যেরও প্রতি উত্তর দেন না। এই বিষয়টা আমার কাছে খুবই দুঃখজনক মনে হলো। যেখানে শব্দনীড় একটা সময় ব্লগারদের পদচারণায় মুখরিত ছিল সেখানে এমন করুণ অবস্থা হবে তা আমি ভাবতে পারি না। এভাবে নিষ্প্রাণ হয়ে ব্লগ চলতে পারে না। ইদানিং অনেক ব্লগই বন্ধ হয়ে গেছে। শব্দনীড়ও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শব্দনীড় পূনরায় সচল হয়েছে। এমন অবস্থায় শব্দনীড় নতুন রূপে পুনরায় আসতে পারায় ব্লগারদের জন্য আশার আলো হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাস্তবে তা দেখছি না।

শব্দনীড় আমার প্রাণের ব্লগ। সারাদিন কাজের ফাঁকে যখনই সময় পাই তখনই শব্দনীড়ে ঢু মারি। তাইতো দিন যতই যাচ্ছে ততই শব্দনীড়ের প্রতি আমার দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে। সেই দায়িত্ব থেকে শব্দনীড়কে আরো প্রানবন্ত করতে কয়েকটি প্রস্তাব দিচ্ছি।

১। ‍প্রতি মাসে একজন সেরা মন্তব্যকারী ও একজন সর্বোচ্চ মন্তব্যকারীকে পুরস্কার প্রদান। সেই পুরস্কার হতে পারে বই বা অন্যকিছু। যাহা ফলাফল ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে কুরিয়ার করে পুস্কার প্রাপ্ত লেখকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।

২। বৎসরে অনন্ত একবার সৃজনশীল ব্লগিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। আনুষ্ঠানিকভাবে সেই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা। (সেটা ফেব্রুয়ারি মাসে হলে ভালো হয়।)

২। প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ঢাকাতে নির্দিষ্ট স্থানে ব্লগারদের আড্ডা ও মত বিনিময়ের ব্যবস্থা করা।

৩। প্রতি বছর শীত অথবা বর্ষাকালে শব্দনীড়ের সদস্যদেরকে নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করা।

৪। বছরে দুই ঈদ ও বাংলা নতুন বছরে ই-ম্যাগাজিন বের করা।

আশা করি উপরোক্ত প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করলে শব্দনীড় আগের মতো প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে। শুভ ব্লগিং।

কম করে ভালবেসো

এত সুন্দর ভালবাসা তোমার অন্ধকারেরও হিংসে হতে পারে
প্রতিদিন ভালবাসা কম করে বেস,নইত চুলের খোপারাও
হিংসে করবে
আলোতে ভালবাসা হিংসে করবে
মানুষ হিংসে করবে
শয়তান হিংসে করবে
প্রিয় প্রেমিক তোমার ভালবাসা টিকবে না
এত ভালবাসলে সে ভালবাসা টিকে না, চলে যাবে
মরা লাশের মত ভেসে সমুদ্রের স্রোতে
আকাশের মেঘের মত করে
ঝড়ে উড়ানো শুকনো পাতার মত
প্রিয় তরুণ কম করে ভালবেসো প্রিয়সিকে।

বাঘ মামার ডায়েরী, চ্যাপ্টার-০২ঃ হিংস্র লালসা


বাঘিনী বাড়িতে নেই প্রায় দু’মাস হলো, সে বাপের বাড়ি বেড়াতে গেছে। বাঘিনী না থাকায় শরীর ও মন, দু’টোই উথাল পাতাল করছিলো। তাই বিকেলের মনোরম রোদে নিজের ডেরা ছেড়ে নদীর দিকে এগিয়ে গেলাম। ওমা! নদীর ওপারে দেখি সুন্দরী হরিনীর দল উদ্দাম হয়ে হুশ হারিয়ে খেলছে। জিভে পানি এসে গেল। ইসস! যদি একটা’র ঘাড় মটকাতে পারতাম! কিন্তু খরস্রোতা নদীর কারনে আমার আশা, নিরাশায় পরিণত হলো।

নদীর এপারে দেখি মহিষের বিশাল এক পাল পানি খাচ্ছে। এর ভেতর নাদুস নুদুস কয়েকটি মহিষ দেখে বেশ লোভ হলো। কিন্তু আমার একার পক্ষে মহিষের বিশাল পালের সাথে পেরে উঠা সম্ভব নয়, জানের ভয়ে বাধ্য হয়ে লোভ সামলালাম।

ডেরায় ফেরার পথে দেখি গাছের ডালে কতগুলো সুন্দরী টিঁয়া পাখি মনের আনন্দে ব্যালো ড্যান্স করছে। নাহ! ক্ষুধাটা আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠলো। লোভের জ্বালায় অস্থির হয়ে পড়লাম।

অবশেষে ডেরার কাছে এসে দেখি, একটা অবুঝ ও কচি খরগোশ ছানা ঘুরে বেড়াচ্ছে আর মনের আনন্দে খেলছে। এতক্ষনের চাঙানো ক্ষুধা পেটে রেখে আর কি লোভ সামলানো যায়! অবশেষে এই অসহায় ও নিরাপদ শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ক্ষুধা মেটালাম।

[প্রসঙ্গঃ নারীর বেপর্দা-উশৃঙ্খল চলন, অশ্লীল পোষাক ও ধর্ষণ।]
পূর্ব প্রকাশিত এখানে।

বন্ধুকে শুভেচ্ছা…কিন্তু বন্ধু কে, কে বন্ধু?…


কপি পেষ্ট মেসেজের মতো আজকাল
বন্ধুতায় আর হৃদিতা নাই।
এই যেন অনুভব হীন ফ্যাকাসে ও গতানুগতিক সম্পর্ক!
মন, মননের বালাই নাই
দায় নাই, দায়িত্ব নাই.. আবেগ, আকুতি কিছুই নাই ;
তবু আমরা কাউকে কাউকে বন্ধু ভাবি, বন্ধু বলি..
কারণ পৃথিবীতে এই একাটাই সম্পর্ক যা রক্তিয় বা আত্মীয় নয়..
এটি একটি নিখুঁত আত্মিক সম্পর্ক যা মানুষ নিজে তৈরি করে; আর তা একেবারেই নির্মোহ… নিঃস্বার্থ ভাবনায়।

শুভেচ্ছা বন্ধুকে-
কি বন্ধু কে, কে বন্ধু?

বাঘ মামার ডায়েরী, চ্যাপ্টার-০১ঃ প্রপোজ


সেদিন এক তরুণী জিরাফের অদ্ভুত বাহারী রঙে মুগ্ধ হয়ে তাকে “লাভ ইয়্যু” বললাম। জিরাফটি সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করলো, আমি তার চেয়ে বেজায় খাটো বলে।

তারপর এক হরিণীকে ফুল দিয়ে প্রপোজ করলাম। সে হুট করে দৌড়ে পালিয়ে গেলো। যেতে যেতে বলে গেলঃ “ফুল দিলেই কেউ ভালো হয়ে যায় না বন্ধু! তোমার লোভের কথা আমি জানি না বুঝি!”

কষ্ট পেয়ে টিঁয়া পাখির কাছে গেলাম এবং তাকে বেলি ফুলের মালা নিবেদন করলাম। নবাবের বেটি গাছের ডালে কিছুক্ষন ক্যাটওয়াক করে বললোঃ “বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়াও কোন সাহসে!”

মেজাজ খারাপ করে ময়ূরীর কাছে গেলাম, বললামঃ “তোমার বাহারী পেখমের বাতাসে, মন জুড়িয়ে আসে, আরো কিছু সময় তুমি, থাকো আমার পাশে…।” ছলনাময়ী ফরফর করে তার পেখম গুটিয়ে বললোঃ “জলের ধারে গিয়ে নিজের চেহারাটা দেখে আয় বেটা!”

মনের দুঃখে জলের ধারে গেলাম চেহারা দেখতে। জলের উপর উঁকি দিতেই দেখি, একখানি অগ্নিশর্মা বাঘিনীর মুখ! বুঝলাম বাঘিণী আমার প্রেমিক মনের খবর পেয়ে, আমায় প্যাঁদানোর জন্যে পেছনে অপেক্ষা করছে! তারপর…! বাকিটা বাঘ আর বাঘিনীর সংসারের নিত্যদিনকার ইতিহাস…! দৌড়…. দৌড়… দৌড়….।

[ইয়ং জেনারেশনের তরুন-তরুনী, বিবাহিত-অবিবাহিতদের নিয়ে এটি একটি হাস্যরসাত্বক স্যাটায়ার। “বাঘ মামা” সিরিজের এটাই প্রথম স্যাটায়ার, ক্রমান্বয়ে আরো আসবে ইন শা আল্লাহ।]

সেলফ টেষ্ট

প্লিজ, একটু দাঁড়ান। যাষ্ট কয়েক মিনিটি সময় নিন। চলুন, হয়ে যাক একটা সেলফ টেষ্ট!

”নিঃসন্দেহে (সেসব) ঈমানদার মানুষরা মুক্তি পেয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাযে একান্ত বিনায়বনত (হয়), যারা অর্থহীন বিষয় থেকে বিমুখ থাকে, যারা (রীতিমতো) যাকাত প্রদান করে, যারা তাদের যৌন অংগসমূহের হেফাযত করে। তবে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী কিংবা (পুরুষদের বেলায়) নিজেদের অধিকারভুক্ত (দাসী)-দের ওপর (এ বিধান প্রযোজ্য) নয়, (এখানে হেফাযত না করার জন্যে) তারা কিছুতেই তিরস্কৃত হবে না। অতপর এ (বিধিবদ্ধ উপায়) ছাড়া যদি কেউ অন্য কোনো (পন্থায় যৌন কামনা চরিতার্থ করতে) চায়, তাহলে তারা সীমালংনকারী (বলে বিবেচিত) হবে। এবং যারা তাদের (কাছে রক্ষিত) আমানত ও (অন্যদের দেয়া) প্রতিশ্রুতিসমূহের হেফাযত করে। এবং যারা নিজেদের নামাযসমূহের ব্যাপারে (সমধিক) যত্নবান হয়। এ লোকগুলোই হচ্ছে (মূলত যমীনে আমার যথার্থ) উত্তরাধিকারী। জান্নাতুল ফেরদাউসের উত্তরাধিকারও এরা পাবে; এরা সেখানে চিরকাল থাকবে।” -(সূরা আল মোমেনুন, আয়াত ০১-১১)

এবার, একটু চোখ বন্ধ করে ভাবুন, আর নিজেকে এই আয়াতগুলো দিয়ে যাছাই করুন। দেখুনতো, আপনি আল্লাহর যথার্থ উত্তরাধিকরী কিনা! আপনি মুক্তি পাবেন কিনা? আপনি জান্নাতের উত্তরাধিকার পাওয়ার যোগ্য কিনা? কোন স্তরে আছেন আপনি? কি করছেন? (এই আয়াতগুলো মোতাবেক) আপনি জান্নাত পাওয়ার টেষ্টে উত্তীর্ণ হতে পারবেন তো? ভাবুন… ভাবুন… ভাবতেই থাকুন…। বিশ্বাস করুন! আজকের ভাবনাতে কোন লস হবে না। আজ আপনার হিসাব নেয়ার জন্যে আপনি নিজেই যথেষ্ট।

এখনো কি আপনার রবের কাছে মাথা নত করে ফিরে যাবার সময় হয় নি? তওবা করার সময় আসে নি? আগামীকাল থেকে ভালো হয়ে যাবেন? আসলেই? সময় পাবেন তো? আগামীকাল থেকে ভালো হয়ে যাবার ইচ্ছে পোষণ করা অনেকেই এখন কবরে শুয়ে আছে। আগামীকাল তাদের জীবনে আর আসে নি। আপনি কি নিশ্চিত আগামীকাল আপনার জীবনে আসেবে? কে জানে! হয়তো আপনার মৃত্যুর আর ক’সেকেন্ড বাকী!

এই টেষ্টে আমি ফেল করেছি, চরমভাবে ফেল করেছি… চরমভাবে…

সাহিত্য আড্ডা-৬ (আবৃত্তিঃ বনলতা সেন)

বনলতা সেন

জীবনানন্দ দাশগুপ্ত বা জীবনানন্দ দাস ছিলেন প্রকৃতির কবি, নিসর্গের কবি, নিস্তব্ধতার কবি, নীরবতার কবি, নিঃশব্দের কবি, বিষন্নতার কবি। তাকে বাংলাভাষার “শুদ্ধতম কবি” বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তাঁর ঘরোয়া নাম ছিল মিলু। মিলু ছিলেন আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) কবিতার রচয়িতা কুসুমকুমারী দাশের জ্যেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু জীবদ্দশায় কথাসাহিত্যিক হিসাবে জীবনানন্দের কোনোও পরিচিতি ছিল না। তিনি ছিলেন বিবরবাসী মানুষ। তাঁর মৃত্যুর পর উপন্যাস-গল্পের পাণ্ডুলিপির খাতাগুলো আবিষ্কার হয়। কবিতায় যেমনি, কথা সাহিত্যেও তিনি তাঁর পূর্বসূরিদের থেকে আলাদা, তাঁর সমসাময়িকদের থেকেও তিনি সম্পূর্ণ আলাদা।

জীবনানন্দ কবিতা ও কবিদের নিয়ে তাঁর ‘কবিতার কথা’ প্রবন্ধে বলেছিলেন –

“সকলেই কবি নয়। কেউ কেউ কবি ; কবি—কেননা তাদের হৃদয়ে কল্পনার এবং কল্পনার ভিতরে চিন্তা ও অভিজ্ঞতার সারবত্তা রয়েছে, এবং তাদের পশ্চাতে অনেক বিগত শতাব্দী ধরে এবং তাদের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক জগতের নব নব কাব্যবিকীরণ তাদের সাহায্য করেছে। কিন্তু’ সকলকে সাহায্য করতে পারে না ; যাদের হৃদয়ে কল্পনা ও কল্পনার ভিতরে অভিজ্ঞতা ও চিন্তার সারবত্তা রয়েছে তারাই সাহায্যপ্রাপ্ত হয় ; নানারকম চরাচরের সম্পর্কে এসে তারা কবিতা সৃষ্টি করবার অবসর পায়।”

নিজের প্রবন্ধের এই কথাগুলো যেন কবি হিসেবে তার নিজের জন্যই সবচেয়ে বেশী প্রযোজ্য।

তার রচিত বনলতা সেন কবিতাটি আজ আপনাদের উপহার দিচ্ছি আবৃত্তিকার লেনিন জামান-এর দরাজ কণ্ঠে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতাটির এই সুন্দর আবৃত্তিটি শোনার পর আপনাদের মতামত জানাতে কার্পণ্য করার কোন চেষ্টা থাকবে না এই আশা তো করতেই পারি। তাই না ?

www.youtube.com/watch?v=Y8J1Q9t2aiw

বনলতা সেন – জীবনানন্দ দাশ

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধুসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন।

চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য; অতিদূর সমুদ্রের’পর
হাল ভেঙে যে নাবিক হারায়েছে দিশা
সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি দেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‌‌‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন।

সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে-সব নদী-ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।

আত্মচিন্তন-১১ (ভাবভঙ্গি)

ভাবভঙ্গি !!!

বর্তমান ভাবের এই ভুবনে ভাবুকেরা আর ভাব দেখায় না। যারা ভাবে চলে তাদের ভাবের অভাব থাকলেও ভঙ্গির অভাব নেই। ভাবনার দৈন্যতায় ভাবের ভঙ্গি পরিবর্তন হয়ে গেছে ভীষণ ভাবে। কিন্তু ভাবুকদের ভাবের সাথে ভঙ্গির অভাবে ভুল ভাবে ভাবের সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠিত করতে ভাব নেয়া ভাবুকদের কোন বৈরী ভাবের মুখে পড়তে হয় না। ভাবভঙ্গিতে যে যত এগিয়ে, ভাবের দুনিয়া তার ততোটাই আয়ত্বে। তাই প্রকৃত ভাবুকদের ভাবনা ও ভাব নিয়ে এই ভাবভঙ্গির ভবে টিকে থাকাও আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে দিনকে দিন। এখন ভাবুকদেরও ভাবতে হচ্ছে, তারা কি নিজেদের ভাব নিয়ে থাকবে নাকি ভঙ্গি ধারন করে যুগের উপযোগী ভাবুক হয়ে উঠবে। ইতিমধ্যে অনেক ভাবুককেও ভাব বিসর্জন দিয়ে ভঙ্গিতে মাততে দেখা গেছে। স্বভাবে ভঙ্গিবাজ না হওয়ার কারনে তারা ভাবও ছাড়তে পারেনি আবার ভঙ্গিও শিখতে পারেনি ভালোভাবে। এরা ভাব ও ভঙ্গি দুই দিকেই ব্যার্থ। যারা সার্থক তারা ভাবুক হিসেবে ভণ্ড হলেও ভঙ্গিবাজ হিসেবে যথার্থ। এই ব্যর্থতা ও সার্থকতার হিসেবে ভাবুক সমাজ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। অগভীর ভাবুকেরা আজ “ভাব বড় না ভঙ্গি বড় ?” সেই হিসেব মেলাতে ব্যাস্ত। প্রকৃত ভাবুকদের এই সব ভাবভঙ্গিতে কোন আগ্রহ নাই। তারা আজ আত্মসম্মান বাঁচাতে নিশ্চুপ। এই সুযোগে ফায়দা লুটছে ভাবভঙ্গিতে ভাবের চেয়ে ভঙ্গি বেশী ধরনের ভাবুকেরা। এই হচ্ছে আমাদের সমাজের বর্তমান ভাবভঙ্গি !

আত্মচিন্তন শিরোনামের অন্যান্য লেখাঃ

আত্মচিন্তন-১
আত্মচিন্তন-২
আত্মচিন্তন-৩
আত্মচিন্তন-৪
আত্মচিন্তন-৫
আত্মচিন্তন-৬
আত্মচিন্তন-৭
আত্মচিন্তন-৮
আত্মচিন্তন-৯
আত্মচিন্তন-১০