বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

ছারপোকা

রাত গভীর হলে ওরা বেরিয়ে আসে।
শত যুগের ক্ষুধা নিয়ে বেরিয়ে আসে।
কফিনের পেরেক খুলে ঢুকে পড়ে নিঃশব্দে
আঁতুড়ে নগরের বিক্ষিপ্ত কবরের কোণায় কোণায়।

অস্থিমজ্জার সবটুকু রস চুষে খায় ওরা
সিডর,আইলা,ফণীর মতন দারালো দাঁত বসিয়ে।
নারীর অঙ্গ ছুঁয়ে যে দেহ কফিনে শয়–আর,
যে দেহ মরবার আগেই মরে যায় তারও রক্ত খায়।

২২/০৬/১৯

স্বপ্নভঙ্গের নিঃশব্দ আর্তনাদ

আমি ছোট একটা শহরের রাস্তায়, একটা পাগলী কে কয়েকবার দেখেছিলাম। একটা ভ্যানিটিব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে, সম্ভব সুন্দর ভাবে সালোয়ার কামিজ পড়ে, যতটা সম্ভব সেজেগুজে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতো। খুব ছোট মেয়েরা যেমন ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়, শাড়ি পড়তে চায়, বড়দের মত আচরণের অভিনয় করে। সেই প্রবৃত্তিই হয়তো তাকে এভাবে তাড়িত করতো। খুব ছোটবেলায় সে যখন দেখতো, মেয়েরা কত সুন্দরভাবে সেজেগুজে কলেজ, ভার্সিটি বা অফিস যায়। তখন তারও হয়তো ইচ্ছা হতো তেমনি সেজেগুজে রাস্তা দিয়ে হাঁটার, এই সমাজে তেমনই সুন্দর অভিজাত ভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার।

বাস্তবতা যখন সেই দুর্নিবার ইচ্ছাকে ছাড়খার করে দিলো, তখনো সে হয়তো অভিনয় বা কল্পনায় ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করে গেছে। ইচ্ছা বা স্বপ্ন ছাড়া মানুষ বাঁচে না, বা যেভাবে বাঁচে তাকে বাঁচা বলেনা। তখন অনেকে ইচ্ছামৃত্যু বেছে নেয়, অনেকে অনুভূতিহীন উদাস হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে, কেউ কেউ আমার মত ঐশ্বরিক সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করতে থাকে। মার্টিল লুথার কিং এর “আই হ্যাড এ ড্রিম”ই শুধু নয়। পৃথিবী সব মানুষই একেকজন মার্টিন লুথার কিং।

কেউটে সাপের, ঢোড়া সাপ ভীতি

কেউটে সাপ বলছে,

“ঢোড়া সাপ এই অঞ্চলের জন্য ভয়ংকর হুমকি স্বরূপ। এদের এলাকা ছাড়া করতে না পারলে সব কিছুই ধ্বংস করে ফেলবে। ঢোড়া সাপের বিষ যে কত সাংঘাতিক, সেটা আমাদের মত সাপ জাতের চেয়ে ভালো কে বুঝবে?

মনে নাই ইতিহাসের সেই সত্য ঘটনাটা? এক দেশে ছিল এক রাজা। সেই দেশের শতকোটি মানুষ কে ছোবল দিয়ে একরাতে মেরে ফেললো ঢোড়া সাপ? এরা গরীর চাষির ঘরে ঢুকে হাঁস-মুরুগীর ডিম খেয়ে ফেলে, পুকুরের মাছ খেয়ে ফেলে। মানুষ কে বিষাক্ত ছোবল দিয়ে মেরে ফেলে।

এখানে ঢোড়া সাপে গিজগিজ করছে। সবখানে ওৎ পেতে আছে অসংখ্য ঢোড়া সাপ। আমরা এই এলাকায় কোন ঢোড়া সাপকেই থাকতে দিবো না। এই অঞ্চলের কল্যাণই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। আমাদের অন্য কোন স্বার্থ নাই। যে কেউটে শিরোমণি কালনাগিনীর বিরোধিতা করবে, তাকেই ছোবল দিয়ে শেষ করে দেয়া হবে।”

সৃষ্টির আদিকাল থেকেই কেউটে সাপরা এই বলে প্রত্যেকটি এলাকায় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে আসছে। তবে সব সময়ই খুব অল্প প্রবীণ বাসিন্দারা কৌশলটা ধরতে পারে। তবে তাদের এই উপলব্ধি বাস্তবতার উপর কোনই প্রভাব ফেলেনা।

মৌন মিছিলের দেশে

একজন ছাত্র ক্ষোভে দুঃখে বলেছিলেন, “ঢাকা ভার্সিটি অনশনের ভার্সিটি হয়ে গেছে। প্রতিদিন অনশন।”

যারা প্রতিদিন অনশন বা রাজু ভাস্কর্য করে তারাও জানে রোজরোজ একই কাজ করলে মানুষের আগ্রহ কমে যায়। কিন্তু বালিশ কাণ্ড, ওসি মোয়াজ্জেম, দেশে ধানের কেজি ৮টাকা কিন্তু ভারত থেকে অবাধে চলছে চাল আমদানি, প্রশ্নপত্র ফাঁস, দুদক পরিচালক কে ডিআইজি মিজানের ৪০ লক্ষ টাকা ঘুষ প্রদান। এসব খবর প্রতিদিন আসতেই থাকে। এদের জায়গায় আমি হলো 24×7 রাজুতে থাকতাম হয় তো। কি করার আছে ভাই, আমরা তো আছিই বারোমাসি মৌন মিছিলের দেশে।

বসন্ত যে এলো আজ মধু ফাল্গুনে

রাধা শুনছ!
শুনছি, কি বলবে বল-
আজ যে বসন্ত এসেছে!
কী যে বল কৃষ্ণ, তা কি আর আমি জানি না ভেবেছ সখা?
কি করে জানলে সখী?
কেন? আমার মনে রঙ ধরেছে, তোমাকে দেখতে ভাল লাগছে, কত সুন্দর করে তুমি সেজেছ, টকটকে লালে লালে একাকার হচ্ছে তোমার রূপ তাইতো শুধু তোমাকে বুকে চেপে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছে আর চেয়ে দেখ আমার কলিগুলিও ফুটতে শুরু করেছে, আশে পাশে চেয়ে দেখ ওই যে শিমুল পলাশ ওরাও কেমন ফুটি ফুটি ভাব ধরেছে। মনে হচ্ছে এখনই ফুটবে। গাছে গাছে কেমন নতুন পাতা উকি দিচ্ছে, নতুন আলোর বাহার দেখতে চাইছে।
ঠিক বলেছ রাধা, পঞ্জিকার হিসাবে আজকে বসন্তের শুরু হলো। সবাই এখনও ফুটে ওঠেনি কিন্তু সবার মনে রঙ লেগেছে দেখবে কয়েক দিনের মধ্যেই রূপে রঙ্গে গন্ধে ভরিয়ে দেবে এই ধরনী। এরই নাম বসন্ত। একটা গান করনা সখী!

গান শুনবে? তাহলে শোন-

ঝরা পাতার নূপুর পায়ে
দুরন্ত ওই পলাশ বনে কোকিলের ডাকে
এলো বসন্ত এলো আজ মৌ বনে।।

আকাশে গোধূলি রঙের মেলা
তুমি আর আমি শুধু বলব কথা
কানে কানে বাঁশরীর গানে গানে।।

সুরে সুরে মন হবে মধুময়
আখির স্বপনে দুজনা হব যে তন্ময়
এ সময় কেন থাক দূরে দূরে
এসো না কাছে এই মধু ক্ষণে।।


কাঠ ফাটা এই রোদ্দুরে বসন্ত আসেনি কিন্তু কেন যেন হঠাত করেই মনে এলো তাই লিখে ফেললাম, দয়া করে কেও পাগল ভাববেন না প্লিজ!

জীবের সেরা মানুষ আমরা

জীবের সেরা মানুষ আমরা

পৃথিবীতে কি নেমে আসছে অন্ধকার?
চারদিকে দেখি হিংসা, নিন্দা, অহংকার!
দেশে দেশে মানবতার করুণ হাহাকার!
চলছে গুলিবর্ষণ, খুন, ধর্ষণ, বলাৎকার!

চলছে টিকে থাকার স্বার্থরক্ষার প্রতিযোগিতা!
করছে হিংস্র জালেমদের রক্ষার সহযোগিতা!
করছে সদা মন্দরা ভালোকে অসহযোগিতা!
ধর্মীয় উপাসনালয় হচ্ছে রক্তমাখা, অপবিত্রতা!

ধর্মের নামে মৌলবাদী হাকছে হুংকার!
করছে বিতাড়িত, পুড়িয়ে করছে ছারখার!
উপকূলে লক্ষলক্ষ মানুষের আর্তচিৎকার!
একী করুণ, নিদারুণ, নির্মম, অত্যাচার?

শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, অবৈধ অস্ত্রের ঝংকার!
শীর্ষ সন্ত্রাসী অপরাধের দিচ্ছে পুরস্কার!
গুণীজন, সম্মানী ব্যক্তিদের করছে তিরস্কার!
এটা কি জীবের সেরা মানুষের কারবার?

লেখকের বিড়ম্বনা

আমি কোন লেখক বা সাহিত্যিক হবার জন্য হাতে কলম ধরিনি বা এই বিজ্ঞানের যুগে যেহেতু কলম দিয়ে লেখার প্রচলন উঠেই গেছে তাই বলা যায় কম্পিউটারের কি বোর্ডে হাত দেইনি। তবে মনের গোপন কোণে যে এমন একটা সাধ সুপ্ত নেই সে কথাও জোর দিয়ে বলতে চাই না। নিতান্তই চাকরি থেকে অবসর নিয়ে সময় কাটাবার জন্য বিশেষ করে কারো মুখের গ্রাস কেড়ে নেয়ার চেষ্টা বা দলিল, নোট জাল করা বা কাউকে গুম করে মুক্তিপণ আদায় করা বা ডাহা মিথ্যে সাক্ষী দেয়া কিংবা কারো মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবার চিন্তা কিংবা কি করে মানুষের খাবারের সাথে ইট পাথরের গুড়ি কিংবা কাপড়ে দেয়ার রঙ কিংবা নর্দমার পানি বা নিদেনপক্ষে মানুষের খাবার অযোগ্য পদার্থ মেশানোর চিন্তা গুলি মাথায় এসে ভর না করে আমাকে রাতারাতি কোন বিখ্যাত আধুনিক মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী না করে ফেলতে পারে সেই চেষ্টা করতে চাই।

ফরমালিন এবং কার্বাইড দিয়ে পচা খাবার তাজা রাখা এবং ফলমূল পাকিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরার মহান চেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্যেই এই কাজে হাত দিয়েছি। আটা ময়দা দিয়ে এন্টিবায়োটিক বানানো, খড়ি মাটি দিয়ে স্যালাইন বানাবার প্রক্রিয়া শেখার আগ্রহ যাতে আমার মাথায় চেপে বসতে না পারে সেই অপ চেষ্টা করার জন্যেই এই কাজে রত থাকার চেষ্টা করি। এগুলি নাকি আধুনিকতা। তা ভাই আমি কিন্তু এত আধুনিক হতে চাই না সে কালের মানুষ সেকেলে থাকতে পারলেই ভাল। আমার যুগে আমার চাচাত ভাইকে দেখেছি ঝিটকার হাটে পাঁচ টাকায় একটা আধ মনি খাসি বিক্রি করে আট আনার রসগোল্লা কিনে এনেছিল তখন একশ টাকায় গরু পাওয়া যেত। আমি নিজেও আট আনা কেজি গরুর মাংস কিনেছি। যাক সেসব কথা, ওগুলি বললেতো বিশ্বাস করবেনই না উলটা আমাকে পা কিংবা মাথা গোল মনে করে সন্দেহের চোখে তাকাবেন তাই কি দরকার সেকালের কাহিনী গাইবার? নিজেই লিখি নিজেই পড়ি এসব কিছু করি আর সময় গুলা বেশ তর তর করে চলে যায়। ব্যাস আর কি?

আগে আমরা কলম দিয়েই লিখতাম কিন্তু মেয়েদের দেখতাম ওরা কি সুন্দর করে কি বোর্ড চেপে চেপে নানা কিছু লিখে ফেলছে। তাই দেখে দেখে ভীষণ লোভ হচ্ছিল ইশ আমিও যদি এমনি করে লিখতে পারতাম! ওদিকে লজ্জায় কাওকে বলতেও পারছিলাম না আবার শেখার ইচ্ছেটাকেও দমিয়ে রাখতে পারছিলাম না তাই একদিন নিজের ছোট মেয়েটাকেই বললাম আমাকে একটু এই কি বোর্ড চালানো শিখিয়ে দিতে পার মা? মেয়ে তার মনের মত ছাত্র পেয়ে মহা খুশি।

এসো বাবা আমি তিন দিনেই তোমাকে শিখিয়ে দিচ্ছি, তুমি সবই পারবে। তোমাকে প্রথমে কম্পিউটার অন অফ করা থেকে শুরু করব পরে ওয়ার্ডে কাজ করা শেখাব তারপরে ইন্টারনেট ব্যবহার করা, নানা কিছু সার্চ করে ইন্টারনেট থেকে দেখে নেয়া, ই মেইল করা এগুলি আস্তে আস্তে সব শিখিয়ে দেব।
বাহ! মনের আনন্দ চেপে রাখা কষ্ট হলেও কিছু করার ছিল না তাই চুপচাপই রইলাম। মেয়ে তার কাজ শুরু করে দিল। অনেক কিছুই শেখাল আমিও শিখলাম। ফল যা হল তা একেবারে মন্দ বলার উপায় নেই।
কি বোর্ড চেপে চেপে, ছড়া, পদ্য, গল্প এমনকি উপন্যাস পর্যন্ত লিখতে পারছি। আমার শিক্ষা গুরুও খুশি আমিও মহা খুশি। ক্রমে ক্রমে আমার নিজের ওয়েব সাইট, ব্লগ বানানো শিখে ফেললাম।

এই যে এতক্ষণ ভরে সাতকাহন গীত গাইলাম সে যে কেন গাইলাম তা কি কিছু বুঝতে পেরেছেন? এটা হল মাত্র ভূমিকা এবার শোনেন আসল ঘটনা। একটা কথা কানে কানে বলে যাই, দেখবেন কাওকে বলবেন না, আমি কিন্তু আমার প্রিয়তমা পত্নী দেবীকে মোটেই ভয় পাই না। (সত্য না মিথ্যা জানি না)।

সেদিন এমনি করে কি বোর্ডের বোতাম চেপে চেপে একটা গল্প লিখছি আর প্রিয়তমা এসে বললেন
এই, দোকান থেকে নুডলস নিয়ে এসো বিকেলে রান্না করব। লেখা ছেড়ে উঠে গিয়ে পাশের দোকান থেকে এনে দিলাম। ফিরে আবার বসেছি তখন
এই, যাওতো দেখ রান্না ঘরের জানালাটা খোলা আছে কিনা দেখে এসো খোলা থাকলে বন্ধ করে দিও মাছ ভেজে রেখেছি বিড়াল ঢুকলে সব খেয়ে ফেলবে যাও এক্ষণই যাও।
আমি গল্পের নায়িকাকে নৌকা ডুবি থেকে বাচাতে গিয়ে জানালা বন্ধ করার কথা ভুলে গেলাম আর অমনি একটু পরেই আবার তাড়া
কি হল জানালা বন্ধ করে এসেছ?
না ভুলে গেছিলাম
যাও এক্ষণই যাও। সারাদিন বসে বসে কি কর? তোমাকে দিয়ে কোন কাজ হয় না। তোমার কম্পিউটার বন্ধ করবে নাকি আমাকে উঠতে হবে?
ভয়ে আমার প্রাণ পাখি প্রায় খাঁচা ছেড়ে যাবার উপক্রম হল কিন্তু অনেক সাহস করে বললাম
আহা রাগ করছ কেন অন্তত কিছু অন্ন ধ্বংস তো হচ্ছে
হ্যাঁ শুধু তাই হচ্ছে , যাও কথা না বাড়িয়ে জানালা বন্ধ করে এসো
অগত্যা উঠে গেলাম। জানালা বন্ধ করে দেখি পানির ফিল্টার থেকে পানি লিক করে ডাইনিং স্পেসের মেঝে ভেসে যাচ্ছে। গিন্নিকে বলার সাহস না পেয়ে (বললেও সে আমাকেই মুছতে বলবে) ঘর মোছার ন্যাকরা আর বালতি কোথায় জিজ্ঞেস করলাম আর অমনি তিনি রেগে এক ঝারি দিয়ে বললেন ঘুমটা মাত্র লেগে আসছিল দিলেতো ভেঙ্গে! কি হয়েছে?
কাঁচুমাচু করে ওগুলির ঠিকানা জানতে চাইলাম
এগুলি দিয়ে এখন কি করবে?
কাহিনী শোনালাম।

যাও দেখ রান্না ঘরের সিংকের নিচে ন্যাকরা আর বাথ রুমে কাল বালতি আছে, দেখবে লাল বালতি কিন্তু নিও না।
আমার মনে কিন্তু তখন গল্পের নায়ক নায়িকা এখন কি করবে কোথায় যাবে তাই নিয়ে একটু ভাবনা কাজ করছে আর আমি ভুলে গিয়ে বাথরুম থেকে বিপদ জনক রঙ লাল মনে করে লাল বালতি আর ন্যাকরা নিয়ে ফ্লোর মুছে ওখানেই রেখে চলে এসে আবার মাত্রই কি বোর্ডের সামনে বসেছি আর গিন্নি তখন বাথরুমে যাবার জন্য উঠেছেন। তিনি রুম থেকে বের হয়ে লাল বালতিতে ঘর মোছার ন্যাকড়া দেখে তেলে বেগুনে ঝাঁজ করে উঠলেন
করেছ কি এটা, এই কাপড় ধোয়ার বালতি এখানে কেন?
নিজে ভুল করেছি এখন স্বীকার না করে উপায় নেই। সাহস করে অকপটে (সত্যের নাকি জয় হয়) বললাম ওটায় ফ্লোর মুছে রেখেছি!
সারা দিন কি কর? একটু চোখেও দেখ না যে কাল বালতিতে ঘর মুছে? কর কি? (ঘর মোছার বালতির দিকেও আমাকে নজর দারি করতে হবে কখনও কি ভেবেছিলাম?)
হ্যাঁ তাইতো ভুল হয়ে গেছে। আচ্ছা আবার হলে এমন হবে না এবার একটু থাম। ওদিকে নায়কের যাবার কথা ছিল পার্কে কিন্তু এই হাঙ্গামায় তাকে নিয়ে গেলাম নদীর পাড়ে। যা হবার তাই হল। কাহিনীর বিভ্রাট। আবার সেখান থেকে নতুন করে লিখতে হল।

সন্ধ্যার পর লিখতে বসেছি আর তিনি টিভি দেখছেন। আমি বললাম কি দেখ আমি তোমার এক মাত্র সোয়ামী, আমি একটু আধটু লিখালিখি করে মনের সুখ পাবার চেষ্টা করি, আমি যখন লিখতে বসি তখন দয়া করে আমাকে কিছু বল না। লিখতে লিখতে গল্পের ক্লাইমেক্সে এসে পড়েছি একটু পরেই শেষ হবে এমন সময় খোঁচা দিয়ে বলল
কি হয়েছে চশমাটা চাইছি না?
আচ্ছা চশমাটা এগিয়ে দিলাম। আবার লেখা শুরু করেছি লেখার গভীরে চলে গেছি আবার এক ধমক
কি হল সাউন্ড কমিয়ে দিতে বলছি শুনছ না।
সাউন্ড কমিয়ে দিয়ে এবার মধুর সুরে বললাম ওগো প্রিয়তমা, তুমি হলে আমার ঘরের সু গৃহিণী আমার প্রিয়তমা রমণী, জানত সংসার সুখের হয় রমণীর গুনে
হুম, বুঝলাম কিন্তু এত মধুর কথা কিসের জন্যে?
দেখ তোমার একমাত্র সোয়ামী একজন লেখক, কত কি লিখছে তুমিতো আর এগুলি পড়ে দেখ না কাজেই বুঝতে পার না কত কি অমূল্য লিখা লিখছি, কাজেই বলছিলাম কি লেখার সময় অন্তত আমাকে বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকলে ভাল বৈ মন্দ হবে না। জান না, মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন লিখতেন তখন তার স্ত্রী ডরোথি দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেন, আমার মাইকেলের কাগজ বা কলমের কালি ফুরিয়ে যায় তাহলে কে এনে দিবে? ও যে সারা রাত ধরে সাদা কাগজে লিখে যাবে! ভয়ে বসত না যদি ঘুমিয়ে পড়ে!
হুমায়ুন আহমেদের কুসুম কুমারি শাওন বলেছিল “একজন লেখক লিখছেন, তার থেকে পবিত্র দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না।”

তাই বলছিলাম কি একজন লেখককে একটু সাহায্য কর! বলা যায় না দেখবে আমি হয়ত একদিন হুমায়ুন আহমেদ হয়ে যাব তখন কি হবে? ভেবে দেখেছো? ভাবতো একবার, সবাই যখন আমার প্রশংসা করবে, অটোগ্রাফ নেয়ার জন্যে বাড়িতে লাইন পড়ে যাবে, টিভিতে আমার ইন্টারভিউ নিবে তখন গর্বে অহংকারে তোমার পা মাটিতেই পড়তে চাইবে না!
তোমাকে কত কি কিনে দিব তার কি কোন হিসেব আছে? হুমায়ুন আহমেদ শাওনকে সেন্ট মার্টিনে বাড়ি করে দিয়েছিল আর আমি তোমাকে কাশমীরে বাড়ি করে দিব, তুমি মনের সুখে পায়ের উপরে পা রেখে সামনের ঝুর ঝুর করে ঝরা তুষার দেখবে আর কফি খাবে!
হ্যাঁ বুঝেছি, এখন যাওতো আধা কেজি কাঁচামরিচ নিয়ে এসো।
হাত থেকে চিনামাটির পেয়ালা পাকা মেঝেতে পড়ে যেমন খান খান হয়ে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙ্গে যায় আমার লেখক হবার সাধ বাসনাও তেমনি করে ভেঙ্গে গেলো।
লেখকের এমন বিড়ম্বনা সইবার কোন উপায় আছে কি না তার কোন সন্ধান দিতে পারেন কেও?
এর থেকে পরিত্রাণের কোন উপায় বলতে পারেন? অন্তত সবাই মিলে একটু চেষ্টা করেই দেখুন না!

সাভার হতে নেয়া – যে কাহিনীর শুরু নেই, শেষ নেই….

ফিরে দেখা নিজের লেখাঃ

জনাব সোহেল রানা কি রাজনীতিতে নাম লেখানোর পর রানা ভবন গড়ে তুলেছিলেন, না ভবন সহ আলিশান সম্পত্তি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন? অনেকটা ’মুরগী আগে না ডিম আগে’ প্রশ্নের মতই শোনাবে প্রশ্নটা। দুভাবেই সম্ভব বাংলাদেশে। কেউ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠেন, কেউবা আবার হেলিকপ্টারে চড়ে সিঁড়ির শীর্ষে পা রাখেন। যেহেতু যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাই ধরে নেব ক্ষমতার বিভিন্ন ধাপ পেরিয়েই এ পর্যন্ত এসেছেন। নাম, প্রতিপত্তি, যশ, সম্পদের বাহারী সমাহার সহ খ্যাতিমান হতে চাইলে রাজনীতিতে নাম লেখাতে হয়, আবার রাজনীতিতে নাম লিখিয়েও এসবের মালিক হওয়া যায়। এরও হরেক রকম কারণ থাকে। রাজনীতির সাইড লাইনে বসে বৈধ পথে আয়কৃত সম্পদ রক্ষা করা আর আবাবিল পাখির পীঠে চড়ে সৃষ্টিকর্তার সাথে দেখা করা প্রায় সমান দুরুহের কাজ। তাই সম্পদের সাথে বাংলাদেশের রাজনীতির সম্পর্ক অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মত। একজন আরেক জনের পরিপূরক। সোজা বাংলায়, কেউ চুরি করে বড় হয়, কেউ আবার বড় হয়ে চুরি করে। চুরি এখানে অবধারিত, বাধ্যতামূলক। রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হতে শুরু করে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সবাই এখানে চোর। ’জীবন থেকে নেয়া’ নামের সুন্দর একটা সিনেমা দেখেছিলাম ছোটবেলায়। নির্মাতা বোধহয় মরহুম জহির রায়হান। কাহিনীর সবটা মনে করতে পারবো না, যতদূর মনে হয় পারিবারিক একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের একনায়কতন্ত্রকে রূপক অর্থে তুলে ধরেছিলেন নির্মাতা। আন্দোলন, বিদ্রোহ, পতন সহ সবই ছিল ছবিটায়, তবে তা রাস্তার চাইতে ঘরেই ছিল বেশি প্রাধান্য। চাইলে সোহেল রানা নামের মধ্যসারির নেতাকে কেন্দ্রীয় চরিত্র বানিয়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার একটা রূপক ছবি আঁকা যায়। এই নেতার উত্থান লাখ লাখ নেতার উত্থানেরই কার্বন কপি, মুদ্রার এ পীঠ ও পীঠ। আসুন সীমিত পরিসরে সে চেষ্টাটাই করি। উদ্দেশ্যটার আরও একটা কারণ আছে। নিউ ইয়র্ক হতে এক বন্ধু ফোন করে আগ বাড়িয়ে সাবধান করে দিয়েছেন সাভার ট্রাজেডির জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করে যেন ব্লগ না লিখি। বেডরুম পাহারা দেয়ার মত ইমারত পাহারা দেওয়া-ও নাকি মন্ত্রি প্রধানমন্ত্রীদের কাজ নয়। আসুন সে কাজটাই করি, খোদ প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করার চেষ্টা করি। নামও একটা দেয়া যাক সে চেষ্টার, ’সাভার থেকে নেয়া।’

শুরুটা বোধহয় এভাবেইঃ বাবা আবদুল খালেক। তেল মিলের মালিক। মিলে সরষে ভাঙ্গিয়ে তেল করা হয়, না বিদেশ হতে কাঁচামাল আমদানি করে ভোজ্যতেল তৈরী করেন সেটা জানা জরুরি নয়। আবদুল খালেকেরই ছেলে আমাদের সোহেল রানা। যুবক এবং হাতে কাজকর্ম বলতে বিশেষ কিছু নেই। করার প্রয়োজনও হয়না। বাবার যা আয় রোজগার তা দিয়েই চলে। বেশির ভাগ সময় কাটে ইয়ার দোস্তদের সাথে মৌজ ফুর্তি করে। মদ, গাঁজা, চরস, ভাং, ফেন্সি, হিরোইন, এলএসডি, ইয়াবা, ভায়াগ্রা সহ সবকিছুতে বেজায় আসক্তি। এলাকার তরুণদের আড্ডায় খুব জনপ্রিয় আমাদের এই সোহেল। এ নিয়ে বাবাও বেশ গর্বিত। আপন মেয়ের স্বামী জাকির হোসেনের সাথে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ বাধে শ্বশুর খালেক সাহেবের। গর্জে উঠে আরেক সন্তান ও ভবিষত্যের তরুন রাজনৈতিক নেতা জনাব সোহেল রানা। বোনের স্বামীকে ধামরাই এলাকার ধুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডে প্রকাশ্য দিবা লোকে শত শত মানুষের সামনে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। আগুনের লেলিহান শিখার মত খবরটা পৌঁছে যায় স্থানীয় আওয়ামী নেতা জনাব মুরাদ জংয়ের দরবারে। ভ্রমরে ভ্রমর চেনার মতই একে অপরকে চিনতে পারে। জনাব জং গাঁটের পয়সা ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে জেলহাজত হতে দুরে রাখেন খুনি সোহেলকে। সামনের সংসদ নির্বাচনে জং’এর হয়ে ’জং’ করার চুক্তিতে প্রকাশ্য রাজনীতিতে নাম লেখান ’সাভার থেকে নেয়া’ গল্পের নায়ক। মূর্তিমান আতংক হয়ে ক্ষমতার রাজনীতিতে নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন নিজ এলাকায়।

বাবা খালেক সাহেবের তেলের মিলের পাশেই দুই একর পতিত জমি। বিশাল দুটি পুকুর ও খালি জায়গা সহ সম্পত্তিটার দিকে অনেকদিনের নজর খালেক সাহেবের। ছেলের গায়ে গতরে জোর হওয়ায় নজরটা শকুনের নজরে রূপ নিতে সময় লাগেনি। সম্পত্তির মালিক পাগলা নাথ। আওয়ামী ভোটব্যাংকের স্থায়ী ভোটার এই নাথের সম্পত্তি ক্রোক দিতে সাত পাচ ভাবতে হয়নি সংখ্যালঘুদের রক্ষক ও ত্রাণকর্তা সোহেল সাহেবের। কারণ শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ক্ষমতা তার জন্যে এনে দিয়েছে নাম, যশ, প্রতিপত্তি ও অঢেল অর্থ। কেনা হয়ে গেছে প্রশাসন। আইন আদালতের উপর শৌচাগার বানিয়ে নিয়মিত মলমূত্র ত্যাগ করার আইনী বৈধতাও পেয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। তাই পাগলা নাথের ঠুকে দেয়া মামলা বানের জলের মত ভেসে যায় সোহেল রানার ক্ষমতার জোরে।

২০০৭ সালের কথা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে ততদিনে। বস সর্বজনাব মুরাদ জং মুজিব কোট লাগিয়ে সংসদে আসা যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স পেয়ে গেছেন ইতিমধ্যে। তাই আর দেরি করতে রাজী ছিলেন না রানা সাহেব। ডোবার উপর কোন রকমে মাটি ভরাট করে শুরু করে দেন ১০ তলা ইমারতের কাজ। ঠিকমত পাইলিং ও কম্পাক্টিং না করে সস্তা মালামাল দিয়ে এত বড় দালানের কাজ করতে বলায় বেঁকে বসে ঠিকাদার। ক্ষমতার সোনালী হরিন ততদিনে রানাদের হাতের মুঠোয়। চাইলে ১৬ কোটির সবাইকে শায়েস্তা করার ক্ষমতা ও অধিকার রাখে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ তথা বঙ্গবন্ধু সৈনিকেরা। এ যাত্রায় ঠিকাদারকে শায়েস্তা করার ভেতর ক্ষমতা সীমিত রাখেন যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ধানমন্ডিতে ডেকে নিয়ে থেতলে দেন ঠিকাদারের পা হতে মাথা পর্যন্ত। কেড়ে নেন ব্যবহারের গাড়ি। কেস কোর্টে উঠলে বিচারক রায় দেন রাজনৈতিক প্রতিশোধের কারণে বিরোধী দলের করা এ মামলা আইনের চোখে অবৈধ। ২০০৭ সালে শুরু করা দালানের কাজ শেষ হয় ২০১০ সালে। এবং তিন বছরের মাথায় মাটিতে লুটিয়ে পরে অন্যায় ও অবিচার সমুদ্রের উপর দাঁড়ানো রানা প্লাজা। সাথে নিয়ে যায় দেড় শতাধিক খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণ। বিরোধী দলের হরতাল, তাই সাংসদ মুরাদ জংকে নেত্রীর কাছে প্রমাণ করতে হবে সাভারের জনগণ বিরোধী দলের হরতালে সাড়া দেয়নি। নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য এসব নেত্রীর বাধ্যতামূলক শর্ত। মুরাদ জং মানেই কতিপয় সোহেল রানা। তাদের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয় উপরওয়ালার চাহিদা। তাই হরতালের ব্যর্থতা সফল করতে জং সাহেব হাত বাড়ান সোহেলের দিকে। ফাঁটল দেখা দেয়ায় ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করতে বাধ্য হয় রানা প্লাজার ভাড়াটিয়ারা। দুদিন বন্ধের পর তৃতীয় দিন মাঠে নামে সাংসদের পেশি শক্তির দল। ভয় দেখিয়ে পোষাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের কারখানায় ঢুকানো হয়। বলা হয় ফাঁটল কোন সমস্যা নয়। এর পরের ইতিহাস আমাদের সবার জানা। এর ভয়াবহতা বর্ণনা করার মত স্ক্রীপ্ট নেই লেখকের হাতে।

অনেকে প্রশ্ন করবেন এখানে শ্রমিক মৃত্যুর সাথে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কটা কোথায়? প্রথমত, রানা প্লাজা তৈরী করার এত টাকা কোথায় পেল সোহেল? উওর, রাজনৈতিক ক্ষমতা অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট। সমীকরণটা এ রকম, কেবল মুরাদ জং’দের বিজয়ই নিশ্চিত করতে পারে বিশেষ পরিবারের ক্ষমতা। আর একজন মুরাদ জংয়ের বিজয় নিশ্চিত করতে সোহেলদের প্রয়োজনীয়তা বাধ্যতামূলক। এরা বিনা পয়সায় চ্যারিটি করার আদম নয়। তাই চাঁদাবাজী, হত্যা, গুম, খুন, টেন্ডারবাজী সহ ভাগ্য ফেরানোর সব রাস্তা খুলে দেয়া হয় রাজনীতির ছত্রছায়ায়। খুন করলে ওদের কিছু হয়না, কারণ আদালতে আছেন বিচারক লীগের একদল গৃহপালিত ভৃত্য। থানা-পুলিশের জন্য প্রতিটা খুন খুলে দেয় ভাগ্য ফেরানোর নতুন দরজা। রাষ্ট্রযন্ত্রের সবকটা গলি উন্মুক্ত থাকে সোহেলদের জন্য। আইন আদালত, থানা-পুলিশ, মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী সহ প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত উন্মুখ হয়ে থাকেন সেবা দানের জন্য। এভাবে সবকিছু আবর্তিত হয় বিশেষ একজনের ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে। এ আবর্তনের গলিতেই জন্ম নেয় একজন সোহেল রানা, দস্যু, তস্কর ও শতাধিক সহজ সরল খেটে খাওয়া বাংলাদেশির খুনি। বাংলাদেশে এমন কি কেউ আছেন যিনি সোহেলকে ২০০ মানুষ হত্যার দায়ে বিচার করার ক্ষমতা রাখেন? চেষ্টা করে দেখতে পারেন। এমনকি ফাঁসির মঞ্চ হতে সসম্মানে ফিরে আসার রাস্তা তৈরী আছে সোহেলের জন্য। এ জন্যেই নিয়োগ দেয়া হয় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি প্রেসিডেন্টকে।

রাষ্ট্রকে যদি মানব শরীর হিসাবে কল্পনা করা হয় বলতে অসুবিধা নেই সবকটা অঙ্গে পচন ধরেছে আমাদের। একজন সোহেল রানাকে শাস্তি দিয়ে এ রোগ দুর করার ভাবনা হবে অনেকটা আকাশ কুসুম কল্পনার শামিল।

দেহের দূরভাষ

দেহের দূরভাষ

সবশেষে গৃহীত থেকে যায় দেহের দূরভাষ
দূরত্ব পরখ করে পাখি দেখে– এই বিকেলের গায়ে
লেপ্টে আছে আমাদের দেহধর্ম, আর উষ্ণতার
আলো জমা হতে হতে যে অতীত হয়েছে বিগত,
সেও কাছে এসে দেখায় সম্মোহন, বলে —
হে জীবন চলিষ্ণু হও, পুনরায় আঁকো চুম্বনের গতিরেখা।

এঁকে রাখো এমন কোনও গ্রহের নাম
যেখানে মৃত্যু নেই, মড়ক নেই
যেখানে প্রাণ বাঁচে বিশ্বাসে, আর ভালোবাসায়-
যেখানে দেহ দেখে আকুল নদী বলে
আমার যৌবন দেখো ঢেউ,
কীভাবে যুগে যুগে বিলীন হয়ে যায়।

ঈদ শপিং

নিউ মার্কেট আর গাউসিয়াতে চলছে কেনা কাটা
দেশটি জুরে কোথাও আর নেই যে কোন ফাকা।
এখান থেকে ওখানেতে চলছে ছোটাছুটি
কোন বাজারে পাবে পোশাক হবে মোটামুটি।

দামে কম লাগবে ভাল দেখতে হবে খাসা
পড়শিরা সব বলবে ভাল এইতো এখন আশা।
চমকে দেব নতুন কাপড় নতুন ডিজাইন
হাল ফ্যাশনের ছড়াছড়ি কোনটা হবে ফাইন।

এখানে নয় ওখানে চল গিন্নী ধরে বায়না
হাটা হাটি ঘোরা ঘুরি আর যে দেহে সয় না।
ভিউ প্যালেসে এসে বধূ শাড়ি নিয়ে হাতে
দাম শুধাল দোকানীরে আমায় নিয়ে সাথে।

ষাট হাজারে দিতে পারি, প্যাকেট করব নাকি
এটাই আসল বেনারসি আর যে সকল মেকি।
দামটি শুনে আঁতকে উঠি, একি হলো হায়
পকেট কখন উবে গেছে প্রাণটা বুঝি যায়!

গিন্নী আমার অতি ভাল সাহস করে বলি তারে
চটপটি আর ফুচকা খেয়ে এবার চল ঘরে।
কালকে তোমায় শাড়ি দেব, আর যা আছে কিছু
কেন তুমি মিছে আমায় মন ভুলিয়ে আনলে পিছু?

কেমন করে বলি তাকে পকেট আমার ফাঁকা
কোথা থেকে পাব এখন এত গুলি টাকা?
চুপটি করে বসে আছি মাথায় দিয়ে হাত
বুঝতে তিনি চায়না মোটে কোন অজুহাত।

চারিদিকে লাল নীল জ্বলছে বাতির বাহার
এবার বুঝি ভাঙবে আমার এত দিনের সংসার।

বিঃদ্রঃ দয়া করিয়া আপা এবং ভাবী সাহেবরা মনে কোন সংশয় রাখিবেননা কিংবা কাওকে এমন করে কষ্টে ফেলিবেননা ইহা কেবল মাত্র হাসির ইন্ধন হিসেবেই মনে করিবেন। ক্ষমা প্রার্থী!

ঋণ

ঋণ

কখনও কখনও এমন রাত আসে, যেসব রাতে, একলা চাঁদের চুপচাপ বসে থাকতে ইচ্ছে করে। এখনও সেসব রাত আসে, গতকালও এসেছিল। মান, অপমানের তুলাদণ্ডে অপমানের পাল্লাই ভারি থেকেছে সবসময়। সময়ের নদী তিরতির করে পায়ের পাতার নীচে আকুল হয়ে দাঁড়ায়। স্রোতের মতো এগিয়ে যায় সময়, বাঁধের পর বাঁধ দিয়ে যাই। বড্ডো ভিড় জমে গেছে অবহেলার।

অপমানের আগুনে ভস্মীভূত অভিমান। বুকের ভিতর উপচে ওঠে আকাশ, ঢেউ এর মাথায় বজরা ভাঙে তুফান। ঝড় উঠে মনকে গুঁড়ো করে। মাথার ভিতর গর্জে ওঠে সাপ, অভিশাপে ছাই হয়ে যাক শরীর, আগুন নয়, দাবানলের মতো সব কিছু নিঃশেষ হোক।

মাঝে মাঝে চুপচাপ হয়ে যাই। যেমন গতকাল ছিলাম।একলা জাগা রাত, ছাদে বসে কতক্ষণ যে কেটে গেছে! এইসব সময় গুলো দাদুকে বড্ডো মনে পড়ে। মন খারাপের সময়ে দাদুর কোলে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে থাকতাম। চোখের জল দাদু মুছিয়ে মাথা হাত বুলিয়ে দিতো। ভীষণ খটখটে রোদ চারপাশে। ছায়া দেওয়ার গাছটাই যে নেই। কখনও কখনও সব কিছু অসহ্য হয়ে ওঠে, মনে হয় আগুন জ্বেলে ছাই হয়ে যাই।

আগুনে তো শুধু নিজেকেই পোড়াতে চেয়েছি। দাদু বলতেন, “আত্মাকে কষ্ট দিওনা কখনও”, আত্মা কে তাতো জানি না, তাকে কি ভালোবাসতে ভুল হয়ে গেল? তার কষ্টে আজ তাই এ দূর্বিষহ প্রায়শ্চিত্ত। একটু একটু করে মুছে গেছে চাওয়া, স্বপ্ন, ইচ্ছেনদী। চুপ থেকে আরো বেশি নিস্তব্ধতায় ডুবি। আলো চেয়েছিলাম, যাতে ভুলে থাকতে পারি সব যন্ত্রণা। বেশ তবে, অন্ধকার গাঢ় হয়ে আসুক। এ শুধু আমার প্রায়শ্চিত্ত, তাই আমি পরীক্ষা দিই। শুধু যন্ত্রণায় জ্ঞান হারাবার আগে মৃত্যুর মুখোমুখি বসতে চাই।

কোটি জন্ম অব্যক্ত চোখের জল, লক্ষ জন্ম ছটফট যন্ত্রণার, হাজার জন্ম পাপস্খলণ শেষে, শতেক জন্মে কৃতজ্ঞতা, ঋণশোধ!

এজন্মটা এভাবেই কাটুক নাহয়।

___________
রিয়া চক্রবর্তী।

গোশ্ত কেনার সহজ উপায়

আমি যখন এফ রহমান হলে থাকতাম রাতের বেলা পালে পালে মহিষ নীলক্ষেত দিয়ে যেতে দেখতাম। একপাল মহিষের সাথে দু একটা গরুও থাকত। রাতের বেলা পালে পালে মহিষ দেখলেও সকাল বেলা সারা ঢাকা শহরের কোথাও মহিষের মাংস বিক্রি হয় শোনা যেত না। সব জায়গায় গরুর গোশ্ত বিক্রি হয়। এই মহিষগুলোর জন্য আমার দুঃখও হত। বেচারারা নিজ পরিচয়ে মরতেও পারে না। আজীবন মহিষ থেকে মরার পরে হয়ে যাচ্ছে গরু। বেওয়ারিশ লাশের মত অবস্থা। হবে না কেন? স্বাদের বিচারে গরুর গোশতের উপর কোন গোস্ত নাই। বিক্রেতারা মহিষের গোস্তকে গরুর গোস্ত বলে চালিয়ে দেয়। এছাড়াও আরো নানা ধরনের ঠকবাজী তারা করে। সেইসব ঠগবাজী থেকে বাঁচার জন্য ইন্টারনেট ঘেঁটে-টেঁটে আপনাদের জন্য নানা টিপস হাজির করলাম। আমার ধারনা এই টিপস গুলো মেনে চললে মাংস কেনার পর বাসায় এসে ঝাড়ি খাওয়া থেকে বাঁচবেন।

– গোশত কসাইকে দিয়ে টুকরো করাবেন না। আস্ত টুকরা কিনবেন এবং বাসায় এসে নিজেরাই টুকরো করে নেবেন। কারন গোশত বিক্রির মূল ঘোটঝালাইটা হয় টুকরো করার সময়ই। উল্লেখ্য যে, গরুর গোশত টুকরো করা তেমন জটিল কিছু নয়। কোরবানীর ঈদের সময় আমরা অনেকেই তা করে থাকি। আস্ত গোশত কিনে ঘরে ফেরার পর যদি মা কিংবা বৌ আপনাকেই কোপাতে চায় তবে দেরী না করে ইয়া আলী বলে নিজেই বটি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারেন – অবশ্যই গরুর গোশের উপর।

– যে স্থানের গোশত পছন্দ বলবেন সে স্থানের এক তাল গোশত কেটে দিতে। পরে বাসায় এনে নিজে টুকরো করবেন। (শুধুমাত্র হাড় আলাদা করে কুপিয়ে দিতে বলবেন)

– হাড় কুপিয়ে দিলে তারপর বলবেন ওজন করতে, তার আগে নয়। ভুলেও আগে বলবেন না যে গোশ বাসায় টুকরো করবেন। তাহলে তারা ঘটনা বুঝে ফেলে অন্য পন্থায় দুই নম্বরী শুরু করবে।

– যদি আপনার দরকার হয় ৫ কেজি, আপনি বলবেন ৩ কেজি। বেশী বিক্রি করার জন্য তারা ইচ্ছে করে বেশী করে কাটে। ৩ কেজি কাটতে বললে তারা ঠিক ৫ কেজিই কাটবে – যা আপনার প্রকৃত প্রয়োজন।

– গরুর গোশত বলে মহিষের গোশত দেয়া কসাইদের জন্মগত অভ্যাস। মনে রাখবেন, গরুর গোশের রোয়াগুলো চিকন হয় আর মহিষের গোশের রোয়া হয় মোটা মোটা।

– গরুর গোশত একটু লালচে ধরণের আর মহিষের গোশত কালচে।

– গরু আর মহিষের গোশত চেনার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চর্বি। গরুর চর্বির রং হয় ঘোলাটে হলুদ আর মহিষের চর্বির রং হয় সাদা।
– নিয়মিত নির্দিষ্ট কসাইয়ের কাছ থেকে গোশত নিলে বাধা কাষ্টমার হারাবার ভয়ে তারা পারোতপক্ষে ঠকবাজী করার চেষ্টা কম করে।

– ভালভাবে চিনে কিনতে পারলে সুপার সপে বিক্রি হওয়া গোশতের চেয়ে কশাইয়ের গোশত অপেক্ষাকৃত ফ্রেশ ও ভাল মানের হয় (ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা)

– সকাল ৭-৮ টার মধ্যে গোশত কেনাটাই সবচেয়ে ভাল। তাতে গোশত ফ্রেশ থাকে আর ভাল অংশগুলোও সহজপ্রাপ্য হয়।

সবচেয়ে বড় টিপস হলো – নিজের সবোর্চ্চ বুদ্ধি খাটিয়ে ও পূর্ব পরিকল্পনা নিয়ে যে কোন শপিং করলে তার মান অবশ্যই উন্নততর হবে।

মানব জীবনের প্রকৃত সফলতা

প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে মানুষ নিজেকে ব্যর্থ মনে করে, অপমানিত বোধ করে, হীনম্মন্যতায় আপ্লুত হয়। ব্যর্থতার গ্লানি সহ্য করতে না পেরে অনেকে আত্মহননের পথও বেছে নেয়।

ব্যবসায় বড় ধরনের লোকসান হলে মানুষ এতটাই ভেঙ্গে পড়ে যে, বেঁচে থাকাকেই নিরর্থক মনে করে। তাই এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই আত্মহত্যার পথে পা বাড়ায়।

পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী নিজেকে শুধরানোর পরিবর্তে নিজের প্রতি প্রচণ্ড ঘৃণা সৃষ্টি করে, অন্যের মুখোমুখি হতে লজ্জাবোধ করে, পৃথিবীকে ভাবতে থাকে নরককুণ্ড। বেছে নেয় নিজেকে শেষ করে দেবার ঘৃণ্য পন্থা।

দীর্ঘ সময় ধরে যারা তার পরিচিত-পরিমণ্ডলে, সাধারণ মানুষের কাছে একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি (Clean Image) তৈরি করেছে তারা যখন ইমেজ সঙ্কটে পড়ে, বিশেষ কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে যখন তাদের মুখোশ খুলে পড়ে তখন তারা নিজেদেরকে সংগোপনে ধিক্কার দিতে থাকে। ঐ ঘটনার পেছনে তাদের ত্রুটিগুলো নিয়ে সে আফসোস করতে থাকে। জনসম্মুখে আসতেও সে লজ্জাবোধ করে। জীবনটা হয়ে যায় অসহনীয়। এমতাবস্থায় কেউ কেউ নিজের জীবনের ইতি টানারও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।

এভাবে যখন কেউ যুদ্ধে হেরে যায়, ভোটে হেরে যায়, প্রতিযোগিতায় হেরে যায় তখনই নিজেকে চূড়ান্ত এক ব্যর্থ মানুষ হিসেবে ভাবতে থাকে। ব্যর্থতার গ্লানি থেকেই জন্ম নেয় হতাশা, বিষাদ। জীবনটা হয়ে যায় দুর্বিষহ। জীবনকে উপভোগের পরিবর্তে তখন কেবলই কষ্টের, যন্ত্রণার এ বিষাদসিন্ধু থেকে মুক্তি পেতে চায়, বেছে নেয় নিজেকে শেষ করে দেবার ঘৃণ্য এক পথ।

এই কথাগুলো সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ আমাদের মাঝে যারা সফল তারা কিন্তু প্রতিনিয়ত এমন অনেক বিফলতার বাধা টপকিয়ে, নিন্দা, কটূকথার পাহাড় মাড়িয়েই সফল হয়েছেন। কাজেই এই কথাগুলো একটা নির্দিষ্ট শ্রেণির উপরই বর্তাবে।

যাইহোক, এবার মূল কথায় আসি। আমরা যারা নিজেদেরকে সফল ভাবছি একটা রেসে (পড়ালেখা, চাকরি, খেলাধুলা, ব্যবসা, নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতা, ভোট, যুদ্ধ ইত্যাদি) জিতে তারা কি সত্যিই সফল?

আর যারা নিজেদেরকে ব্যর্থ ভাবছি ঐ একই রেসে হেরে যাওয়ার কারণে তাদের ব্যর্থতার মূল জায়গাটাকি এটাই?

না, ওগুলো আসলে আমাদের সফলতা বা ব্যর্থতার আসল জায়গা নয়। আমাদের সমগ্র মানব জীবন একটা রেস। আমাদের ব্যক্তিজীবন কেবল ঐ রেসের একটা পদক্ষেপ মাত্র। এই রেসে আমরা সমগ্র মানবজাতি আজ পরাজিত। ব্যর্থতার গ্লানিতে আজ আমাদের প্রত্যেকের জীবন পূর্ণ। আমরা সে উপলব্ধিই করছি না।

প্রকৃত অর্থে আমরা সফল হব সেদিন যেদিন সমগ্র মানবজাতি হবে এক পরিবার। প্রত্যেকটা মানুষ পথ চলবে আল্লাহর হুকুম মেনে, ন্যায়-অন্যায়ের মানদণ্ড দেখে। দেশে দেশে কাঁটাতারের সীমানা থাকবে না, মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব থাকবে না, কেউ কারো উপর জবরদস্তি করবে না। কেউ না খেয়ে থাকবে না, সুচিকিৎসার অভাবে কেউ মৃত্যুবরণ করবে না, ভেজাল যুক্ত খাবার খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়বে না, বাতাস হবে নির্মল, পানি হবে দূষণমুক্ত। মানুষে মানুষে ঘৃণা-বিদ্বেষ থাকবে না, কেবলই মায়া-মমতা, ভালোবাসা, সহযোগিতা, সহমর্মিতায় পূর্ণ থাকবে হৃদয়। মানবতা, মনুষ্যত্ব হবে বিজয়ী, আল্লাহ হবেন বিজয়ী, ইবলিস হবে পরাজিত।

ঈশ্বর

জীবনভর আমি বিশ্বাস করেছি তোমাকে, কিম্বা হয়তো করিনি। হয়তো একদিন সত্যি সত্যি আমি তোমার অন্তরীক্ষ থেকে নেমে আসবার অপেক্ষায় ছিলাম, কিম্বা হয়তো ছিলাম না। হয়তো সবসময় তুমি পাশেই ছিলে, হয়তো ছিলে না। আমি দ্বিধাগ্রস্থ।

একদিন শহরের একটি কোলাহলময় সড়ক পেরোতে গিয়ে, অকস্মাৎ লাঠি হাতে জনৈক অন্ধ পথচারীর পাশে আমি তোমাকে গুটিসুটি বসে থাকতে দেখেছিলাম, ব্যথিত লজ্জাবনত মুখে। কিন্তু তুমি হাঁটছিলে না, শূন্যে ভেসে যাচ্ছিলে। আর এক পর্যায়ে খুব সম্ভবত সেই একই অজ্ঞাত কারণে যারপরনাই লজ্জায় দুহাতে মুখ লুকিয়েছিলে।

আমি তোমাকে আরও একদিন দেখেছিলাম, ভীষণ ঝর শেষে আলো নিভে যাওয়া থমথমে কালো রাতে, শহরের কোনও এক সুনির্জন সড়কে ঘুমন্ত শিশু কোলে নিয়ে একাকী হাঁটছিল জনৈকা তরুণী মা; ভীত অবিন্যস্ত মুখ। আর আমি আচানক তোমাকে আবিষ্কার করলাম, সেই দেবশিশুর পাশে শুয়ে থাকতে পরম নির্ভরতায়।

হয়তো সত্যিই তুমি ছিলে, কিম্বা হয়তো সবটাই নিছকই আমার ভ্রম, তুমি আদৌ ছিলে না কোথাও।