বিভাগের আর্কাইভঃ অন্যান্য

আধুনিক রোজার সাড়া জাগানো কিছু সহীহ তরিকা

রোজার ইতিহাস গুরুত্ব ইত্যাদি নিয়ে মওলানা সাহেবদের দিনরাত সবক শুনতে শুনতে যারা বিরক্ত হয়ে উঠেছেন অথবা বিরক্ত হওয়ার মত শোনার সময় যাদের নাই তাদের জন্য আমার সাড়া এই কিছু তরিকা আছে যাতে করে আপনি আধুনিক কায়দায় সহি রোজা রাখতে পারবেন।

সেহরির কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে উঠবেন। উঠেই ফেসবুকে লগইন করুন। সেহরি বিষয়ক স্ট্যাটাস দিন। বিশেষ কোন বান্ধবী/ বান্ধব যদি থাকে তাকে জাগিয়ে দিন। জাগিয়ে দিয়ে ঘন্টা খানেক কথা বলুন। রোজা রেখে খালি পেটে দিনের বেলা কথা বলে আরাম নেই। তাই এই সময়টি কাজে লাগান। ফজরের আগে রোজা শুরু হয় না। সুতরাং এই সময় মনের দুয়ার, মুখের লাগাম সব খুলে কথা বলুন। সব থেকে ভাল হয় সারারাত না ঘুমালে। রাতের খাবার খেয়ি ফোনালাপ শুরু করুন। নতুন নতুন বান্ধবী খুঁজে বের করুন। তাদের ইফতারির দাওয়াত দিন। সেহরির দাওয়াতও দিতে পারেন। আধুনিক রোজা সংস্কৃতির বিশেষ অনুষঙ্গ সেহরি পার্টি। তাই সেহরি পার্টী আয়োজনে ভুলবেন না। ঘুমিয়ে পড়লে পার্টি মিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই রাতে ফেসবুক, সিনেমা, পার্টি এসবে ব্যস্ত থাকলে সেহরি পার্টীতে অংশগ্রহন সুনিশ্চিত। আধুনিক সহীহ রোজার তরিকায় সেহরি পার্টির স্থান অনেক উঁচুতে। সেহরিতে চিকেন ফ্রাই, লবস্টার, ম্যাগি নুডলস, হরলিক্স মিশ্রিত দুধ, বিফকারি রাখতে পারেন। সেহরি পার্টিতে সেলফি তুলতে কোন ভাবেই ভুলবেন না। পার্টির ফাঁকে ফাঁকে সেহরি পার্টির সেলফি ফেসবুকে আফডেট করুন। খাবার কতটুকু ইয়াম্মি ছিল সে স্ট্যাটাস দিতে ভুলবেন না। সিগারেটের অভ্যাস থাকলে শেষবারের মত সিগারেট খেয়ে নিন।

সেহরি পার্টি শেষে ঘুমিয়ে নিন। রোজার অজুহাতে বেশ একটু দেরিতে অফিসে যেতে পারেন। অফিস না থাকলে বারোটার আগে ঘুম থেকে উঠার দরকার নেই। বারোটায় ঘুম ভাঙলে সাথে উঠে পড়বেন না যেন, নিদেন পক্ষে একটা পর্যন্ত গড়াগড়ি দিন। উঠে গোসল সারুন। গোসল করে পাঞ্জাবি পরে মুখে রোজাদার রোজাদার ভাব নিয়ে বের হম। পকেটে একটা টুপি রাখতে ভুলবেন না। ইফতারির সময় কাজে লাগবে। বিভিন্ন মার্কেটে যান। বন্ধু বান্ধবিদের ফোন দিয়ে তাদেরকে আসতে বলুন। বিভিন্ন মার্কেটে ঘোরাঘুরি করে ক্ষুধা লেগে গেলে, কোন একটা ফুডকোর্টে বসে খেয়ে নিতে পারেন। আর সহ্য করতে পারলে ইফতার পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

সেহরি পার্টি না থাকলে বাসায় জেগে থাকাই উত্তম। ছোট রাত, না ঘুমিয়ে একেবারে সেহরি খেয়ে ঘুমদিন। সেহরির সময় টিভি চ্যানেল গুলো একবার ঘুরে আসতে পারেন। বিরক্ত লাগলে দরকার নাই। ঘুমানোর আগে অবশ্যই বান্ধবী/ বান্ধবীদের সাথে ফোনালাপ সেরে নিবেন। এই সময় আলাপ না হলে বান্ধবী রাগ হতে পারে না। রোজা অবস্থায় কাউকে রাগানো বুদ্ধিমানের কাজ না। যাদের একাধিক বান্ধবী আছে তারা এই রাতকে কাজে লাগান। ইফতারের পরে, মাঝরাতে, সেহরির আগে-পরে এভাবে শিডিউল করে সকলের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখুন। বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতির মত সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে শত্রুতা নয় এই নিয়ম মেনে চলুন। তবে আপনার বান্ধবীর তালিকায় ভারতের মত কেউ থাকলে আপনাকে বিশেষ সাবধানে থাকতে হবে। এই ঈদে কাকে কি গিফট দিবেন সেটা ভেবে রাখুন। আপনি যদি বিশেষ চালাক প্রকৃতির হোন তাহলে কোন কোন গার্ল ফ্রেন্ডের কাছ থেকে গিফট আদায় করতে পারবেন। এমনকি আপনার গার্লফ্রেন্ড অন্য বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে পাওয়া উপহার আপনার হাতে তুলে দিয়ে বলবে, এটা আমি শুধু তোমার জন্য নিজের হাতে কিনেছি (নিজের হাতে বানিয়েছিও বলে ফেলতে পারেন)। সবই নির্ভর করে আপনি তাদের কিভাবে ম্যানেজ করতে পারেন তার উপর।

আধুনিক রোজায় ফেসবুকের গুরুত্ব অপরিসীম। সেহরি পার্টি ইফতার পার্টি এসবের খবরা-খবর, সেলফি তো আছেই তাছেড়া এই মুমিন বান্দার জন্য কয়টা লাইক? আমীন না বলে যাবেন না কেউ, মুমীন বান্দারা শেয়ার করুন মার্কা প্রচুর স্ট্যাটাস, ছবি আসে। এইগুলোতে লাইক কমেন্ট শেয়ার করতে পারেন। নিজেও এসব পোস্ট দিতে পারেন। না হলে আপনি প্রকৃত রোজাদার ফেসবুকার না।
বিভিন্ন ব্যাংক, ফাইনান্সিয়াল প্রতিষ্ঠান ইফতারিতে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। চেষ্টা করুন এর প্রত্যেকটি অফার গ্রহন করতে। ইফতারি বিষয়ক স্ট্যাটাসে অবশ্যই ইফতারির দাম লিখতে ভুলবেন না। কত দামী ইফতারি খেলেন তা জাতিকে জানানোর দরকার আছে। আর যেদিন ইফতার পার্টি থাকবেনা বাসায় জম্পেশ ইফতারির ব্যাবস্থা করুন। বিভিন্ন টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠান দেখে দেখে ইফতারির আইটেম তৈরি করুন। ইফতারিতে গাজরের হালুয়া, ম্যাগি নুডলস, পুডিং, স্টার হালিম/মামা হালিম, ট্যাং/রুহ আফজা থাকা বাঞ্চনীয়। টিভি’র আজান শুনে ইফতার শুরু করুন। ইফতার এশার নামাজের আগে শেষ হওয়া সমীচীন নয়। ইফতারির সময় মাথায় টুপি থাকলে ভাল দেখাবে। মেয়েরা সারাদিন বেপর্দা ঘুরাঘুরি করলেও ইফতারির সময় মাথায় কাপড় দিন।

সারাদিনে শরীরে অনেক ধকল গেছে এবারে বিশ্রাম নিন, ফেসবুকে লগইন করুন।

এলেবেলে – ৩৬

মনে হয় এই রকম কথা আগেও লিখেছি।
আমি যখন এসএনএস শুরু করেছি তখন জাকারবাগ স্কুলে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় জাকারবাগ প্রেমিকার সাথে বিচ্ছেদ হবার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার হ্যাক করে যাত্রা শুরু তার…. বিস্তারিত জানতে হলে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক নামে একটা মুভি আছে দেখে নিতে পারেন।

আমাদের প্রথম যুগের এসএনএস এর সাথে যারা পরিচিত তারা এসএনএস এর বেসিক বিষয় মেনে চলেন। এই গুলো আপনার প্রাইভেসীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুকে আপনার বন্ধুর ষ্টাটাস গুলো গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন। এদের মধ্যে কেউ কেউ কখনো তার ব্যক্তিগত কোন তথ্য শেয়ার করে না।

ধরা যাক আপনি আপনার প্রোফাইল এ আপনার মোবাইল নম্বর যোগ করছেন। কিন্তু আমি করিনি ফেবু আমাকে বারবার বলবে তোমার অমুক অমুক বন্ধু ফেবু প্রোফাইল এ মোবাইল নম্বর যোগ করছে।
জন্মদিনও সেরকম।

আপনি যেমন নিজের কথা পরিবারের কথা রাখডাক না রেখে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারেন অন্যের ব্যাপারে আপনার আপত্তির কারন দেখি না। আপনি যেমন নিজের স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, মা বাবার কথা ফেসবুক এ শেয়ার করতে পারেন অন্যেরও সেই অধিকার আছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো তিনি আপনার ডাটা বা সার্ভার ব্যবহার করছে না। সুতরাং অহেতুক বিব্রতবোধ করে নিজেকে হাস্যকর করার মানে নেই।

আমাদের সেই যুগের এসএনএস এ ভয়েস চ্যাট ই বেশি আনন্দের ছিল। ভয়েস চ্যাট করার সময় আমি একটা কথা সব সময় বলতাম “অন্যের মুখ বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নেই, কিন্তু নিজের কানে আঙ্গুল দিতে পারি শুনতে না চাইলে!”

ফেসবুক এ যাদের লেখা ভালো লাগে না, সম্ভব হলে আনফলো করি। ফেসবুক একটা বিনোদন মাধ্যম। এখানে কেউ নীতি শিখতে আসে না। মজা করতে আসে। আমি নিজেও এখানে মজা করতে আসি, হয়তো আপনিও। অন্যের স্ট্যাটাস কে উপহাস করার আগে নিজের টাইম লাইনে গিয়ে অন্যের চোখে আপনার স্ট্যাটাস গুলো দেখুন। দেখলে বুঝবেন আপনি যাকে নিয়ে উপহাস করছেন আপনার স্ট্যাটাস এও সেরকম অনেক কিছু আছে যা অন্যের চোখেও হাস্যকর!

ফেসবুক এ থাকুন।
থাকলে আপনারও লাভ, এমনকি ফেসবুক কর্তৃপক্ষেরও!

শিরোনামহীন

সড়কের পাশে ওখানে ছোটো একটি খেলার মাঠ ছিলো, টেনিস কোর্ট আকৃতির বা আরেকটু বৃহদায়তন। ইতিউতি ছড়ানো মলিন হলদেটে ঘাশ, এক প্রান্তে লাল ইটের পলেস্তারা খসা খর্বাকায় দেয়াল। ওতে ক্রিকেট খেলতো স্থানীয় শিশু কিশোররা। বর্ষা মৌসুমে এঁদো কাদায় ভরে যেতো। তখন ক্রিকেটের পরিবর্তে ফুটবল খেলতো তারা। কাদায় মাখামাখি টিশার্ট হাফ প্যান্ট গা’য়ে সে কী হুলস্থূল বল নিয়ে! হ্যা, দিব্যি মনে করতে পারছি, (ইত্যবসরে প্রায় এক যুগ কেটে গেছে যদিও) ওখানেই ছিলো মাঠটি, আজ বহুতল আবাসিক ভবন দাঁড়িয়ে আছে। অনেকদিন পর এলাম। মাঝেও দুয়েকবার এসেছিলাম সম্ভবত কিন্তু ইতিপূর্বে সেভাবে লক্ষ্য করিনি। আদতেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় এটা। এভাবেই মানুষের নগর বন্দর গড়ে ওঠে, উঠে আসছে। কিন্তু কেন জানি না, এ মুহূর্তে আমার বড্ড অনুতাপ হচ্ছে মাঠটির জন্য। মনে হচ্ছে, মাঠটিকে যেনো জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছে ইট কাঠ পাথরের ওই অতিকায় দালানের নিচে। আহা, সত্যিই আমি দারুণভাবে চাই যে, আবার বহুদিন পর এলে দেখবো, সেই মাঠটিই আছে। ওতে ক্রিকেট খেলছে ঘেমেনেয়ে একাকার প্রাণোচ্ছল একদল শিশু। আর যদি বর্ষায় আসি তবে এঁদো কাদায় ধুন্ধুমার ফুটবল… আরও এক যুগ পর!

গল্পের শুরু

শুরুর কথা ভাবি। সেই দিনইতো শুরু হয়েছিলো, যেদিন সূর্য দেবতা ডানা মেলেছিলো আংশিক! যুঁথিবদ্ধ আলো থেকে তুলে এনে বর্তমান; শীতের শেষে পুরনো ওমবস্ত্রের মতো বেচে দিয়েছিলাম সমুদয় ডাকনাম। বেচে দিয়েছিলাম আমিত্বের সুতোয় বোনা সৌখিন জামা আর পরিত্যক্ত চিলেকোঠা। সেদিনইতো শুরু হয়েছিল, যেদিন থেকে আমার আর কোনো ডাকনাম নেই, মাছ বাজারের আঁশটে ঝুড়িটির মতো পড়ে থাকি প্রতিটি মধ্যরাতে। এভাবেই ইথারের ধূর্ত ইশারায় একের পর এক এঁকে চলি প্রতিটি দিনের মৌলিক উড়াল।

না, আমি আজ শুরুর গল্প বলতে আসিনি, এসেছি তোমাদেরকে বিদায়ের কথা জানাতে। আমি আজ আকাশের একমাত্র বার্তাবাহক। জলের খামে পুরে দেয়া প্রতিটি বার্তা পৌঁছে দিতে হবে মাটির গহ্বরে। সেগুনবনে, জোড়াজোড়া সবুজ পাতায় পৌঁছে দিতে হবে নীলের আবেদন। শাহরিক জানালা পেরিয়ে কখনো যেতে হবে যুগল দীঘির পাড়ে কখনো বা অবিশ্রাম জলপ্রপাতে।

লহ কবি প্রণাম

লহ কবি প্রণাম
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

বরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ তিনি কবিগুরু,
বাংলার কাব্যে তিনি কাব্য কল্পতরু।
অজস্র কবিতা আর লিখেছেন গান,
নোবেল বিজয়ী কবি, বাংলার মান।

বিশ্বকবি নামে তিনি খ্যাত চরাচরে,
রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনে মন যায় ভরে।
গীতিনাট্য, ছোটগল্প, অজস্র নাটক,
গীতাঞ্জলি করে পাঠ সকল পাঠক।

নোবেল বিজয়ী তিনি বাংলার গর্ব,
ধন্য তীর্থ জোড়াসাঁকো হয়ে রত্নগর্ভ।
পঁচিশে বৈশাখ আসে নব কলেবরে,
চির উদ্ভাসিত রবি দিব্য দিবাকরে।

পঁচিশে বৈশাখে করি কবিরে প্রণাম,
সঙ্গীতের সুরে ভাসে বাংলার গান।

অামাদের খালেদ

অামাদের একটা খালেদ ছিল ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে
সেইখানে ছিল উত্তাল হাওয়া লাগত এসে গায়ে।
সবুজ শিশির বিন্দু জলে চলত খালেদ হেসে
নবীন সূর্যের নবীন অালোয় মিশ তো সবার সাথে।
ধানের শীষে ধূলোয় মাখা দেখত গাঁয়ে গাঁয়ে
রঙিন রৌদ্রের মিষ্টি হাসি দেখত ফিরে ফিরে।
নাচত খালেদ দেখত খালেদ যমুনার ই জল
তাহার কূলে পাইত খালেদ অানন্দেরই ঢল।

কাঁদত খালেদ বুঝত খালেদ গরীব-দুঃখির ব্যাথা
তাদের জন্য করত পণ অাছে যত সদা।
গাঁয়ের ছেলে ছিল খালেদ বক্ষে ছিল বল
তাহার পানে চলত ছুটে গরীবেরই দল।
অাসত বন্যা লাগত খরা যমুনারই পাড়ে
মন্দা অাসত শত শত দশানিরই কূলে।
অভাব ছিল নিত্য সঙ্গী ব্রহ্মপুত্রের ধারে
তাইতো খালেদ অাসত সেথাই খাদ্য হাতে নিয়ে।

শাসন করল শোষণ করল পাকিস্তানির দল
সেই শোষনে ধ্বংস হল বাংলাদেশের গণ।
কুলি মজুর মরল সবাই তাদেরই না হাতে
তাই না দেখে খালেদ কাঁদে ঘরের কোণে বসে।
সোনার দেশের সোনার ফসল নিয়ে গেল তারা
মানুষ মরে নিত্য নিত্য দেশের হলো সারা।
প্রতিবাদের নেশায় খালেদ খেপে উঠল ক্ষোভে
স্বাধীন করবে মুক্ত করবে বুড়িগঙ্গার ধারে।

হঠাৎ স্বাধীনতার ডাক অাসিল বেতার কেন্দ্র থেকে
তাই তো খালেদ ছুটল দমে বন্দুক কাঁধে নিয়ে।
মারল খালেদ ছুটল গুলি শত সেনার বুকে
স্বাধীনতার স্বপ্ন বুনতো তাঁরই রঙিন চোখে।
মরছে মানুষ ধুকছে মানুষ তাঁরই অাশেপাশে
হাহাকারের সুর নিয়ে চলছে দিনে দিনে।
হঠাৎ একদিন পেল খালেদ সেক্টরেরই কাজ
দিনে দিনে বাড়ল তাহার মুক্তিযুদ্ধের চাপ।

সঙ্গী সাথী সবাই মরে খবর অাসে কানে
তবুও উদ্যম হয়ে ছুটছে খালেদ দেশ স্বাধীনের টানে।
কাঁধে কাঁধে কাধ মিলিয়ে স্বাধীন করল দেশ
স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ লাগল তাঁর বেশ।
দেশের হাসি বিজয় পতাকা উড়ে উর্ধ্বাকাশ
তাই না দেখে খালেদ হাসে ছাড়ে দীর্ঘশ্বাস।
একদিন দু’দিন পরে শাসক গোষ্ঠী অাসে
তাই না দেখে ঘাতকেরদল ষড়যন্ত্র বুনে।

হঠাৎ একদিন শুনে খালেদ শাসক গোষ্ঠী শেষ
সেই বেদনায় চোখে-মুখে অশ্রু নিয়ে গদিতে বসে বেশ।
একদিন দু’দিন তিনদিন পর অামাদের বীর উত্তম নাই
অার্তনাদের অশ্রুর সাথে অাসে মুক্তিযুদ্ধের ছাই।
স্বাধীন স্বাধীন করছেন যিনি অামাদের জন্য ভাই
সেই খালেদের কথা অামাদের স্মরণে নাই।

[ বীর উত্তম খালেদ মোশাররফের স্মরণে ]

ইসলামী হামদ্ || || মাফ করে দাও প্রভু

মাফ করে দাও প্রভু আমায়
মাফ করে দাও তুমি,
গুনাহগার এই বান্দা আমি
মাফ করে দাও তুমি।

দম ফুরালে যাইতে হবে
এই দুনিয়া ছাড়ি,
করছি তবুও দিনে রাতে
পাপের বোঝা ভারি।

শয়তানের’ই ধোঁকা থেকে
আমায় বাঁচাও তুমি,
চোখের জলে ডাকি তোমায়
পাপী বান্দা আমি।

মাফ করে দাও প্রভু আমায়
মাফ করে দাও তুমি।

সত্য পথের দাও গো দিশা
করি মোনাজাত,
সকল পাপের আজাব থেকে
দিও গো নাজাত।

একটু আলো দাও গো মনে
জ্বলুক নূরের মমি,
চোখের জলে ডাকি তোমায়
পাপী বান্দা আমি।

মাফ করে দাও প্রভু আমায়
মাফ করে দাও তুমি।

০৪/০৫/১৯

ব্রেকিং: শোক সংবাদ

ফেসবুক সেলেব্রেটির হার্ট আট্যাকে মৃত্যুঃ দায়ী ফেসবুক!
|নিজস্ব সংবাদদাতা|

বিশিষ্ট ফেসবুক সেলেব্রেটি, অনলাইন একটিভিস্ট ও ব্লগ কিংবদন্তী ম. গা. চৌধুরী আজ রাত ৯:৪৫ মিনিটে হার্ট আট্যাকে মৃত্যুবরন করেছেন। তুমুল জনপ্রিয় এই ফেসবুক সেলেব্রেটি মৃত্যুকালে স্ত্রী, ফ্রেন্ড লিস্টে ৫০০০ ফ্রেন্ড, লক্ষাধিক ফলোয়ার এবং কয়েকশো ব্লগ পোস্ট আর কয়েক হাজার স্ট্যাটাস রেখে গেছেন।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায় তিনি প্রতিদিনের মত আজ সন্ধ্যায় ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করেন। উল্লেখ্য, আপলোডের সাথে সাথে তার অতি দীর্ঘ পোস্টেও লাইকের সংখ্যা ৩৮৮টা ছাড়িয়ে যেত। প্রথম দশ মিনিটে লাইকের সংখ্যা ১০,০০০ হাজারের সীমা অতিক্রম করত। কিন্তু আজকের পোস্টে প্রথম বিশ মিনিটে কোনো লাইক না দেখে তিনি তীব্র মানসিক আঘাতে ভারসাম্য হারালে অচেতন অবস্থায় স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।

ভক্তরা অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে ক্ষোভের সাথে জানান আজ সন্ধ্যায় তারা অপেক্ষায় থাকলেও ফেসবুকে ম. গা. চৌধুরীর নতুন পোস্ট দেখতে পান নাই। এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে। ভক্তরা ফেসবুককে দায়ী করে জুকারবার্গের পদত্যাগ ও তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবীতে ফেসবুকেই শতাধিক ইভেন্ট খুলেছে এবং জার্মানীর দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে।

অপরদিকে ম. গা. চৌধুরীর ছোটো ভাই বলেন, “আজ সকালে ভাবী রাগ করে বাপের বাড়ি চলে যান। ভাইয়া জাতির স্বার্থে খালি বাসায় পুরানো বান্ধবীকে নিয়ে জীববিজ্ঞান ও সহজিয়া দেহতত্ব নিয়ে গভীর গবেষণায় লিপ্ত হন। সন্ধ্যায় ‘ডারউনের উপর লালনের প্রভাব’ বিষয়ে একটি জ্ঞানগর্ভ স্ট্যাটাস শেয়ার করেন। কিন্তু দিনভর গবেষণা কাজের ক্লান্তি আর রাতেই ভাবীর ফিরে আসার ফোন পেয়ে ভাইয়া প্রাইভেসি সেটিংসের ‘অনলি মি (only me) কে ‘পাবলিক (public) না করেই স্ট্যাটাস পোস্ট করেছিলেন। ফলে তিনি ছাড়া অন্য কেউ পোস্ট দেখতে পায় নাই। ভাইয়া নিজের পোস্টে বিশ মিনিটে লাইক না দেখে এতটাই উত্তেজিত হয়ে পরেন যে প্রাইভেসি সেটিংসের ব্যাপারটা তার চোখ এড়িয়ে যায়। তিনি তিন চারবার “ছাগু জুকারবার্গ, লেঞ্জা ইজ এ ভেরি ডিফিকাল্ট থিং টু হাইড”- বলে জ্ঞান হারান। রাত ৯:৪৫ মিনিটে চিকিতসকেরা তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

তার মৃত্যুতে ফেসবুক আর ব্লগ জুড়ে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে কেন্দ্র করে পোস্টে পোস্টে ভরে উঠছে ব্লগ আর ফেসবুক। আগামীকাল সকাল ১০টায় ফেসবুকের জানাজা গ্রুপে তার ভার্চুয়াল জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। নিখিল বাংলাদেশ আঁতেল পরিষদ ও সম্মিলিত ঢংস্কৃতিক জোট এক বিবৃতিতে তাকে শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে দাফনের দাবী জানিয়েছে।

কুৎসিত সুন্দর

মাতৃগর্ভের অন্ধকার নেমে এসেছে
স্থবির বৃক্ষের মতো শব্দহীন
কি নিদারুন বিষাদে মানুষ মৃত্যুশাসিত চারপাশ
একাই বয়ে চলছে দৃশ্যমান রক্তস্রোত।

কেউ সুস্থ হচ্ছে আল্লাহর অলৌকিকতায়
কেউবা আত্মগরিমায়
বিকলাঙ্গ করছে শিল্পকলার হৃদয় ।

আমি উৎপীড়িত বলেই
তোমার চোখ এতো কুৎসিত সুন্দর !

পরীক্ষা

একাডেমিক পরীক্ষা হলে তিন ধরনের পরীক্ষার্থী থাকে।
এক, যারা পুরো বই পড়ে পরীক্ষা দিতে আসে না। শুধু মাত্র সাজেশনের উপরে ভরসা করে।
দুই, যারা সম্পূর্ণ বই পড়ে পরীক্ষা দিতে আসে। কিন্তু সঠিক উত্তর দিতে বার বার গুলিয়ে ফেলে।
তিন, যারা সম্পূর্ণ বই ও রেফারেন্স পড়ে আসে এবং সঠিক উত্তর লেখে।
পরীক্ষা হলে এই তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষার্থী কখনই দশ পনের শতাংশের বেশি হয় না। তাই একাডেমিক পরীক্ষায় কখনই কোন ছাত্রছাত্রীকে খুব কম বা ফেল করার মত প্রশ্ন অনুযায়ী নম্বর দেওয়া উচিত নয়। আর প্রশ্ন যেন মোটামুটি সহজ ও প্রাঞ্জল হয়। ঘোরানো প্যাঁচানো প্রশ্ন না করাই উচিত। যেখানে এই নম্বরের উপর ভিত্তি করে কোন শিক্ষার্থী তার ভবিষ্যৎ গড়ে। যার পাওয়া উচিত সে যেন সর্বোচ্চ নম্বর পায়।
তাহলে সেই পরীক্ষার্থীর মধ্যে ব্যক্তি কনফিডেনস গড়ে উঠবে। ভবিষ্যতে সে অনেক বড় কিছু করতে পারবে।
যদি সে একটু কঠিন ঘোরানো প্যাঁচানো প্রশ্নের জন্য ভালো নম্বর না পায় তাহলে ভবিষ্যতে আরো ভালো কিছু পড়ার সুযোগ সে পাবে না। দেখা গেছে, এ রকম বহু ছাত্রছাত্রী আছে যারা দশম দ্বাদশে ভালো নম্বর পায় নি কিন্ত যাই হোক করে ভালো কিছু পড়াশুনা করার সুযোগ পেয়ে গেল। তারপর সেই ছাত্রছাত্রী বিশ্ব জয় করেছে। এবং সব দিক দিয়ে সেরা হয়েছে।
কোন ছাত্রছাত্রী যদি এই একাডেমিক নম্বরের জন্য কোন ভালো সুযোগে থেকে বঞ্চিত হয়ে যায় তাহলে তার চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না।
সহজ করে বলা যায় একবার জয়েন্টে সাফল্য পাওয়া অনেক ছাত্রছাত্রী একাডেমিক পরীক্ষায় দু একটা বিষয় অনুপাতে ৭৫ শতাংশ নম্বর পায় নি ফলে সে সারা জীবনের জন্য ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়া থেকে বঞ্চিত হয়ে গেল। সেইসব ছাত্রছাত্রী খারাপ পরীক্ষার্থী তা কিন্তু বলা যায় না। বরং বলা যেতে পারে সেবার প্রশ্নপত্র ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে কঠিন করে করা হয়েছিল। মোট পরীক্ষার্থীর প্রায় ২০/২৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী প্রায় প্রতি বছর এই রকম অবস্থার মধ্যে পড়ে।
মনে রাখতে হবে, শুধুমাত্র একাডেমিক নম্বরের উপর ভিত্তি করে কোন কাজ পাওয়া সম্ভব নয়। বরং একাডেমিক পরীক্ষার নম্বরের উপর ভিত্তি করে কাজ পাওয়া যাবে এরকম বৃত্তিমূলক পড়াশুনা করতে পারে। যা সম্পূর্ণরূপে অন্যধারার পড়াশুনা। তাই একাডেমিক পরীক্ষায় কঠিন ঘোরানো প্যাঁচানো প্রশ্ন করা উচিত নয়।

অবজ্ঞা

ও চাদ তুই ফিরে যানা বাড়ী
আধার এখন একান্ত আমারি।
পুরে যাব আমি
স্মৃতির আগুনে
তোর সাথে আমার আড়ি।
কেন যে ফুলের গন্ধ টানছ আমাকে
জান না কেন ভালো থাকি কাটার আঘাতে।

…….. অসমাপ্ত

বসন্ত এসেছে, তাই

অরিত্রিকা,
দেখো, বসন্ত এসেছে
পাখিদের কানাকানি ডালে ডালে পাতার আড়ালে
মধুলোভী ভ্রমরের আনন্দে কাটছে দিন বেশ
বসন্ত এসেছে, তাই কোকিলের ঘুম নেই চোখে
(অলক্ষ্যে দারুণ রেওয়াজ চলে রাত-দিন)
মধুর পরাগ লেগেছে ফুলে-ফুলে
বৃন্তে-বৃন্তে ধূম রঙিন বসন্তের,
তোমার বড়ির সড়কের পাশে বয়েসী কৃষ্ণচূড়াটা-
দেখো, ফুলে-ফুলে-লালে-লালে সয়লাব আজ
তুমি কী দেখো না!

অরিত্রিকা,
বসন্ত এসেছে, তাই ফেলে সব কাজ
আমি লিখছি তোমাকে নিয়ে-
আমার প্রেমের কবিতা।

জীবনের জন্য পঙ্ক্তিমালা – দশ

|বালুঘর ভেঙে যায়|

বালুঘর ভেঙে যায়
সমুদ্রের নোনা জল;
তবু জলে লিখি কবিতা,
আঁকি জীবনের পরিমন্ডল।

ক্যানভাস ভেঙে যায়
বৈশাখের কালো ঝড়,
তবু ঝড়ে আনি সবিতা,
গাহি প্রভাতি নিরন্তর।

/ড. মোঃ সফি উদ্দীন

কোথাও কেউ জেগে নেই

একটু আগে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমেছিল। এখন ঝিরঝির বাতাস বইছে। কোথাও কেউ জেগে নেই; শুধু রিভার নাইল ছাড়া। অদ্ভুত এক অনভূতি কাজ করছে। কোন কিছুর জন্য নয়; কারো জন্য নয়! তার জন্যও নয়!

এমন রাতে আমি নিজেকে চিনি!